সত্য পথ গ্রহণে এত বাধা কেন?
২০০৮ সাল থেকে, আমি আর আমার মা প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখতে শুরু করি, তারপর, স্থানীয় একটা গির্জায় সমাবেশে যোগ দিতে লাগলাম। পরে, গির্জার ডীকনও হই। প্রতিবার যখনই আমরা সমাবেশ করতাম, তখনই আরো বেশি করে ঈশ্বরের বাণী পড়ে, তার ইচ্ছা আরও ভালভাবে বুঝতে চাইতাম, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বুঝতে পারলাম যে যাজকের ধর্মোপদেশ আর আমার জ্ঞান বাড়াচ্ছে না। সমাবেশগুলো উপভোগ করতাম না, ভিতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগত। ২০২০ সালের জুনে, যখন আরও পড়াশোনা করতে একটা সেমিনারিতে যোগ দিলাম, তখন অনলাইনে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সদস্য ভগিনী গার্সিয়ার সাথে আলাপ হল। সে আমাকে অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সুসমাচার জানিয়েছিল আর আমাকে সমাবেশ-দলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী অনেক পড়েছি, দেখেছি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী কর্তৃত্বপূর্ণ আর শক্তিশালী, সেগুলো ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর, তখন নিশ্চিত হলাম যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই সেই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু যার জন্য আমরা এতদিন অপেক্ষা করছিলাম। এটা আমায় এতটাই নাড়া দেয় যে কাঁদতে থাকি। আমি অনেক ভাগ্যবান যে প্রভুর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের পরিত্রাণ পেতে পারি।
তারপর, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রভুর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে আমার ভ্রাতা আর ভগিনীদের জানাতে চেয়েছিলাম। এঞ্জেল আমাদের গির্জার প্রচারক ছিল, সে দয়ালু, দায়িত্বশীল ছিল, প্রায়ই আমাদের সবাইকে সাহায্য করত, এসব জেনেই প্রভুর প্রত্যাবর্তনের খবর নিয়ে প্রথমে তার কাছেই গেলাম তাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী জানালাম, তার সাথে আমি যা বুঝেছিলাম তা নিয়ে আলোচনা করলাম। অবাক কাণ্ড, এঞ্জেল সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বাধা দিয়ে বলল, “অসম্ভব। একমাত্র বাইবেলেই ঈশ্বরের বাণী রয়েছে। ঈশ্বরের বাণী এর বাইরে দেখা যেতেই পারে না। বাইবেলে না পাওয়া কোনোকিছু পড়া মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা!” তখনই উত্তর দিলাম: “এটা কীভাবে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হতে পারে? অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে তোমার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই, তাই তোমার অন্তত এটা খতিয়ে দেখা উচিত যাতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর কিনা জানা যায়—তারপর সিদ্ধান্ত নিতে পারো।” কিন্তু সে আমাকে আবার বাধা দিয়ে উদ্ধতভাবে বলল: “খতিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই। ধর্মোপদেশ শুনতে চাইলে শুধু আমার কথা শোনো। মনে রাখবে, যাই হোক না কেন বাইবেল ছাড়া অন্য বই পড়বে না—বাইবেল থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।” অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের প্রতি তার মনোভাবে হতভম্ব আর বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম: “আগে, সে সবসময় আমাদের বলত যে আমাদের জ্ঞানী কুমারীদের মত হওয়া উচিত একাগ্র চিত্তে অপেক্ষা না করলে প্রভুর প্রত্যাবর্তন দেখার সুযোগ হারাবে। এখন, প্রভু ইতিমধ্যেই ফিরে এসেছেন, তাহলে কেন সে খোঁজ করতে আর খতিয়ে দেখতে চাইছে না, এমনকি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী শোনা বন্ধ করার দাবি করছে? সে কি প্রভুর ফিরে আসাকে স্বাগত জানাতে চায় না?” তার এমন মনোভাব কেন বুঝতে পারলাম না। ভাবছিলাম সে বলেছিল: “বাইবেলে ঈশ্বরের সমস্ত বাণী আছে। ঈশ্বরের বাণী বাইবেলের বাইরে দেখা যায় না। বাইবেল থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।” যদিও জানতাম যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করে প্রভুকে স্বাগত জানাচ্ছি, তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি, তাও সে যা বলল তাতে বিভ্রান্ত বোধ করছিলাম।
পরে, ঈশ্বরের বাণীর কয়েকটা অনুচ্ছেদ পড়লাম, আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জায় ভ্রাতা আর ভগিনীদের আলোচনা শুনলাম, সেই থেকে আমার বিভ্রান্তি দূর হল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “বাইবেলে লিপিবদ্ধ বিষয়গুলি সীমিত আকারে রয়েছে; এগুলি ঈশ্বরের সামগ্রিক কার্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। চারটি সুসমাচারে সবমিলিয়ে একশোর থেকেও কম সংখ্যক অধ্যায় রয়েছে, যেগুলিতে সীমিত সংখ্যক ঘটনা লেখা আছে, যেমন যীশুর ডুমুর গাছকে অভিশাপ দেওয়া, পিতরের দ্বারা প্রভুকে তিনবার অস্বীকারের ঘটনা, ক্রুশবিদ্ধ হওয়া এবং পুনরুত্থানের পরে শিষ্যদের কাছে যীশুর আবির্ভাব, উপবাস সম্পর্কিত শিক্ষা, প্রার্থনা সম্পর্কিত শিক্ষা, বিবাহবিচ্ছেদ সম্পর্কিত শিক্ষা, যীশুর জন্ম ও বংশতালিকা, যীশুর শিষ্যদের নিয়োগ, এবং এমন আরও অনেক কিছু। যাইহোক, মানুষ বাইবেলে লিপিবদ্ধ এই বিষয়গুলিকে সম্পদ হিসাবে শ্রদ্ধা করে, এমনকি বর্তমানের কাজকে এগুলির বিপরীতে তুলনা করে। এমনকি তারা বিশ্বাস করে যে যীশু তাঁর জীবৎকালে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা কেবল এতটুকুই, যেন ঈশ্বর কেবল এতটুকুই করতে সক্ষম এবং এর বেশি করতে পারেন না। এটা কি অযৌক্তিক নয়?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (১))। “সর্বোপরি, কে বড়: ঈশ্বর না বাইবেল? কেন ঈশ্বরকে বাইবেল অনুসারে কাজ করতেই হবে? এ কি হতে পারে যে ঈশ্বরের বাইবেলকে অতিক্রম করার অধিকার নেই? ঈশ্বর কি বাইবেল থেকে সরে গিয়ে অন্য কাজ করতে পারেন না? কেন যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সাব্বাথ পালন করেননি? তাঁকে যদি সাব্বাথের আলোকে এবং পুরাতন নিয়মের আদেশ অনুসারে অনুশীলন করতে হতো, তাহলে যীশু কেন আগমনের পরে সাব্বাথ পালন করেননি, বরং পা ধুয়েছেন, মাথা ঢেকেছেন, রুটি টুকরো করেছেন, এবং মদিরা পান করেছেন? পুরাতন নিয়মের আদেশগুলির মধ্যে কি এই সব অনুপস্থিত নয়? যীশু যদি পুরাতন নিয়মকে সম্মান করতেন, তবে কেন তিনি এই মতবাদগুলি অগ্রাহ্য করেছেন? তোমার জানা উচিত কোনটি প্রথমে এসেছে, ঈশ্বর নাকি বাইবেল! সাব্বাথের প্রভু হওয়ার কারণে, তিনি কি বাইবেলের প্রভুও হতে পারেন না?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বাইবেল সম্পর্কিত (১))। “বাইবেলের বাস্তবতা কেউই জানে না: যে এটি ঈশ্বরের কাজের একটি ঐতিহাসিক দলিল ছাড়া আর কিছু নয়, এবং ঈশ্বরের কাজের পূর্ববর্তী দুটি পর্যায়ের এক প্রমাণপত্র, আর এটি তোমাকে ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য সম্বন্ধে কোনো জ্ঞানই দেয় না। যারা বাইবেল পড়েছে, তারা প্রত্যেকেই জানে যে এটিতে বিধানের যুগ এবং অনুগ্রহের যুগে ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের দুটি পর্যায় নথিভুক্ত রয়েছে। পুরাতন নিয়মে ইসরায়েলের ইতিহাস এবং সৃষ্টির সময় থেকে বিধানের যুগের শেষ পর্যন্ত যিহোবার কাজ বর্ণিত রয়েছে। নতুন নিয়মে রয়েছে এই পৃথিবীতে যীশুর কর্মকাণ্ডের আলেখ্য, যা রয়েছে চারটি সুসমাচারের বইতে, এবং সেইসাথে আছে পৌলের কাজের কথা—এগুলো কি ঐতিহাসিক দলিল নয়? অতীতের জিনিস বর্তমানে তুলে আনলে তা আসলে শুধুই ইতিহাস এবং তা যতই সত্য বা বাস্তব হোক না কেন, সেটি ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই নয়—ইতিহাস বর্তমানকে প্রতিফলিত করতে পারে না, কারণ ঈশ্বর ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকান না! আর তাই, যদি তুমি কেবল বাইবেলের আক্ষরিক অর্থই বোঝো এবং ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষিত কাজের বিষয়ে তোমার কিছুমাত্র জ্ঞান না থাকে এবং যদি তুমি ঈশ্বরবিশ্বাসী হয়েও পবিত্র আত্মার কাজে অনাগ্রহী থাকো, তাহলে তুমি ঈশ্বরের প্রকৃত সন্ধানের বিষয়ে কিছুই বোঝো না। যদি তুমি ইসরায়েলের ইতিহাস অধ্যয়ন করার জন্য, স্বর্গ-মর্ত্যে ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টির ইতিহাস জানার জন্য বাইবেল পড়, তবে তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী নও। কিন্তু বর্তমানে, যেহেতু তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে জীবনযাপন করছো, কেবল নিষ্প্রাণ অক্ষর, মতবাদ বা ইতিহাসের অনুসরণ না করে যেহেতু তুমি ঈশ্বরের জ্ঞানের অনুসরণ করছো, তাই তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বর্তমানের ইচ্ছার অন্বেষণ করতে হবে এবং অবশ্যই পবিত্র আত্মার কাজের নির্দেশনা পেতে হবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বাইবেল সম্পর্কিত (৪))। মনে পড়ে আমার সঙ্গে ভ্রাতা আর ভগিনীরা আলোচনার সময় বলেছিল যে বাইবেল ঈশ্বরের পূর্ববর্তী কাজের শুধু একটা ঐতিহাসিক লিপিবদ্ধকরণ। এটা ঈশ্বরের কাজের লিখিত লিপিবদ্ধ সংকলন। যেহেতু মানুষ এটা সংকলন আর সম্পাদনা করেছে, তাই অনিবার্যভাবেই কিছু জিনিস নির্বাচন করা হয়েছিল, আর অন্যগুলো সম্পাদনা করা বা বাদ দেওয়া হয়েছিল। বাইবেলে ঈশ্বরের সমস্ত বাণী আর কাজ সংকলন আর লিপিবদ্ধ করা অসম্ভব ছিল। ঠিক যেমন বাণীপ্রচারক যোহন বলেছিল: “এ ছাড়াও যীশু আরও অনেক কাজ করেছিলেন। সে সব যদি সবিস্তারে লেখা হত, তাহলে আমার মনে হয়, এত বই লেখা হত যে সারা পৃথিবীতে তার স্থান সঙ্কুলান হত না” (যোহন ২১:২৫)। এটা দেখায় যে বাইবেলে লিপিবদ্ধ ঈশ্বরের বাণী আর কাজ খুবই সীমিত। ঈশ্বর মানবস্রষ্টা আর জীবনের উৎস। কয়েক সহস্রাব্দ ধরে, ঈশ্বর কাজ করছেন আর বাণী শোনাচ্ছেন, মানবজাতির যা দরকার তাই অবিরাম দিচ্ছেন, মানবজাতিকে মার্গদর্শন করাচ্ছেন। ঈশ্বরের বাণী জলের প্রাণবন্ত ঝর্ণার মত, আবহমানকাল ধরে প্রবহমান, তাহলে ঈশ্বরের সমস্ত বাণী বাইবেলে কুলাবে কীভাবে? সব কিছুর উপরই ঈশ্বরের সার্বভৌম অধিকার, তিনি কেবল সাবাথের প্রভু নন, বাইবেলেরও প্রভু। বাইবেল অনুসারে তিনি কাজ করেন না আর তিনি বাইবেলে সীমাবদ্ধও নন। তাঁর বাইবেলের বাইরে কিছু করার, আরও নিত্যনতুন কাজ, তার নিজের পরিকল্পনা আর মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আরো কাজ করার সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব আছে। যেমন, অনুগ্রহের যুগে, প্রভু যীশু তাঁর কাজ সেভাবে করেননি যেভাবে ওল্ড টেস্টামেন্ট অনুযায়ী বিধানের যুগে করেছিলেন। তিনি আরো নতুন, আরও উচ্চকোটির কাজ করেছিলেন, অনুতাপের উপায় জানিয়েছিলেন, ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, মানবতাকে পাপ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন, যাতে লোকেদের আর শাপশাপান্ত না করা হয় আর আইন অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হয়, যাতে তারা বেঁচে থাকতে পারে। এখন ঈশ্বর অন্তিম সময়ে তাঁর কাজ করতে এসেছেন, বাইবেলে লিপিবদ্ধ তাঁর আগের কাজ আর করবেন না, নতুন বাণী প্রকাশ করবেন আর নতুন কাজ করবেন। ঠিক যেমন প্রভু যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “তোমাদের আরও অনেক কথা আমার বলার আছে কিন্তু এখন তোমাদের পক্ষে তা হৃদয়ঙ্গম করা কঠিন। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনিই তোমাদের সকল সত্যের উপলব্ধি দান করবেন” (যোহন ১৬:১২-১৩)। অন্তিম সময়ে, প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসাবে ফিরে এসেছেন। তিনি ঈশ্বরের ঘর থেকেই বিচারকার্য শুরু করেছেন, মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ করে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত সত্য প্রকাশ করে, মানুষকে সম্পূর্ণরূপে পাপের বন্ধন থেকে মুক্ত করার সুযোগ দিচ্ছেন, যাতে পরিশুদ্ধ আর নিখুঁত হয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা যায়। যারা অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করে, তারা আশীর্বাদ পায়, তাঁর বাণী প্রচার করে আর মেষশাবকের বিবাহের নৈশভোজে উপস্থিত থাকে। তারা ঠিক প্রকাশিত বাক্যের বর্ণনার মতই: “মেষশাবক যেখানে যান সেখানেই যারা তাঁকে অনুসরণ করে এরাই তারা” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৪)। এটা স্পষ্ট যে তারা মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে, প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে না। তাই “ঈশ্বর যা বলেছেন আর যা করেছেন সবই বাইবেলে লিপিবদ্ধ আছে আর বাইবেল থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা” এই ধারণা ভ্রান্ত আর তা ঈশ্বরের বাণী বা তথ্যের সাথে মেলে না। ভ্রাতা আর ভগিনীদের সঙ্গে আলোচনা করার পর, আরও পরিষ্কার করে বুঝলাম, আর এঞ্জেলের ভ্রান্ত মন্তব্যের ব্যাখ্যাও বুঝলাম।
এরপর, আমার আসল গির্জার একজন ভগিনীর সাথে সুসমাচার প্রচার করতে গেলাম। অবাক হলাম যে এঞ্জেল এটা শুনে, ভগিনীকে বাধা দিতে গেল, এটা নিশ্চিত করতে যে অন্য সদস্যরা যেন এই সুসমাচার গ্রহণ না করে, সে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নিন্দা আর অবমাননা করে বলল যে আমি অন্য সম্প্রদায়ে যোগ দিয়ে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। সে আর যাজক গির্জায় আমার সম্পর্কে গুজবও ছড়িয়েছিল, বলত যে নতুন প্রেমিক পেয়েছি বলে সমাবেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছি আর প্রভুতে আমার সত্যিকারের বিশ্বাস ছিল না, আর গির্জার অন্যান্য সদস্যদের আমাকে এড়িয়ে চলা উচিত। যখন সবাই গুজব শুনল, তখন আমাকে নিচু নজরে দেখতে লাগল, আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করল। এমনকি কেউ কেউ আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাত যেন আমি উদ্ভট কিছু। মাত্র কয়েক দিন পরেই, যাজক আমার মা-বাবাকে খুঁজে বের করে, তাদের বলল যে আমি ভুল পথে গিয়েছিলাম আর সমাবেশে অংশ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সে আমার মাকেও বলল যে আমার উপর নজর রাখতে আর আমাকে কোথাও না যেতে দিতে। যখন এসব একসাথে ঘটছিল, তখন খুব খারাপ লাগছিল, ভাবছিলাম আর সইতে পারব না। বুঝতে পারছিলাম না কেন তারা আমার সাথে এমন আচরণ করছে। শুধু প্রভুর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে তাদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছি, আর তারপর তারা কিনা আমাকে অপমান করতে এই সমস্ত গুজব তৈরি করল, এমনকি আমার মা-বাবাকেও আমায় দমন করতে উৎসাহিত করল। এই সব আমার হৃদয়ে ছুরির মতো বিঁধছিল, অসহ্য কষ্ট দিয়েছিল। চোখের জলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, তাঁর সাহায্য চেয়েছিলাম। একজন ভগিনী আমার অবস্থা জানতে পেরে, আমাকে ঈশ্বরের অনেক বাণী সম্পর্কে জানাল, আর অনেক উৎসাহও দিল।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর একটা অনুচ্ছেদ দেখলাম, এখানে বলেছে: “এখনকার দিনে, যারা অন্বেষণ করে এবং যারা তা করে না তারা সম্পূর্ণ পৃথক দুই শ্রেণীর মানুষ, তাদের গন্তব্যও সম্পূর্ণরূপেই ভিন্ন। যারা সত্যের জ্ঞান অনুসরণ করে চলে এবং সত্যের অনুশীলন করে, তাদের উদ্দেশ্যেই ঈশ্বর পরিত্রাণ নিয়ে আসবেন। যারা প্রকৃত পথ জানে না তারা দানব ও শত্রু; তারা প্রধান দেবদূতের বংশধর এবং তারা ধ্বংসের লক্ষ্যবস্তু হবে। এমনকি যারা অস্পষ্ট ঈশ্বরকে ধার্মিকভাবে বিশ্বাস করে তারাও কি দানব নয়? যারা উত্তম বিবেকসম্পন্ন অথচ প্রকৃত পথকে গ্রহণ করে না তারাও দানব; তাদের সারমর্ম ঈশ্বরের প্রতিরোধী। … যে-ই ঈশ্বরের অবতারে বিশ্বাস রাখে না, সে-ই দানবপ্রকৃতির, এবং, উপরন্তু, সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। যারা বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও সত্যের চর্চা করে না, যারা ঈশ্বরের অবতাররূপে বিশ্বাস করে না, এবং যারা ঈশ্বরের অস্তিত্বে একেবারেই বিশ্বাস করে না তারাও ধ্বংসের লক্ষ্যবস্তু হবে। যারা পরিমার্জনার কষ্ট সহ্য করেছে এবং দৃঢ় থেকেছে, তাদের সকলকে থাকতে দেওয়া হবে; এরাই হল সেই ব্যক্তি যারা প্রকৃতঅর্থেই বিচার সহ্য করেছে। যে ঈশ্বরকে চিনতে পারে না সেই হল শত্রু; অর্থাৎ, যে ঈশ্বরের অবতারকে চিনতে পারে না—তা সে এই স্রোতের ভিতরেই থাকুক অথবা বাইরে—সে খ্রীষ্টবিরোধী! ঈশ্বরে অবিশ্বাস করা সেই ঈশ্বর-প্রতিরোধকারীগণ ব্যতীত আর কে-ই বা শয়তান, আর কারা-ই বা দানব, আর কারা-ই বা ঈশ্বরের শত্রু? এরাই কি সেই ব্যক্তি নয় যারা ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যহীন?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর এবং মানুষ একসাথে বিশ্রামে প্রবেশ করবে)। আমার ভগিনীর সাথে ঈশ্বরের বাণী নিয়ে আলোচনা করে বুঝতে পারলাম যে যখন প্রভু যীশু তাঁর কাজ করতে এসেছিলেন, তখন যেসব ফরিশীরা মন্দিরে যিহোবা ঈশ্বরের উপাসনা করত, তারা স্পষ্টতই জানত যে প্রভু যীশু যা বলেছিলেন তা কর্তৃত্বপূর্ণ আর শক্তিশালী ছিল, কিন্তু তারা খোঁজ করতে আর খতিয়ে দেখতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি সব রকমভাবে তাঁর বিরোধিতা আর নিন্দা করেছিল, তারা মিথ্যা দাবি করে যে তিনি অপদেবতা বিতাড়নের জন্য বিলজেবাবের শক্তি ব্যবহার করেন, পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে ঈশনিন্দাও করে, এবং ঈশ্বরের অভিশাপ আর শাস্তি পায়। ফরিশীরা শুধু প্রভুর নিন্দা আর ঈশনিন্দাই করেনি, ধর্মবিশ্বাসীদেরও তাঁর বিরোধিতা করতে ভুল বুঝিয়েছিল, ফলে তারা ঈশ্বরের পরিত্রাণ হারায়, আর ফরিশীদের সাথে রসাতলে যায়। মনে পড়ল কীভাবে প্রভু যীশু সেই সময় ফরিশীদের অভিশাপ দিয়েছিলেন: “ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না” (মথি ২৩:১৩)। আর “ভণ্ড শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীর দল। ধিক তোমাদের! একটি লোককে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও, আর কাউকে যদি তা করতে পার তাহলে তোমরা তাকে নিজেদের চেয়েও বড় পাষণ্ড করে তোল” (মথি ২৩:১৫)। প্রভুর কথার মাধ্যমে বোঝা যায় যে ফরিশীরা ছিল ঈশ্বররোধী খ্রীস্টবিরোধী। তারা দয়ালু হওয়ার ভান করলেও সত্যকে ঘৃণা করত আর ঈশ্বরকে তাদের শত্রু ভাবত। তারা ছিল রাক্ষসের মত যারা আত্মা গ্রাস করত আর মানুষকে নরকের দিকে ঠেলে দিত। ফরিশীদের ঘৃণ্য কাজের উপর ভিত্তি করে, প্রভু যীশু তাদের সাত রকম “ধিক্কার” দেন। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে ঈশ্বরের স্বভাব কোনও অপরাধ সহ্য করে না। অন্তিম সময়ে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর কাজ করতে এসেছেন। মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ করে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত সত্য প্রকাশ করেছেন আর একদল বিজয়ী তৈরি করে ধর্মীয় জগতকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ঈশ্বর এত বড় কাজ করার পরেও, ধর্মজগতের যাজক আর প্রচারকরা খোঁজ না নিয়ে আর খতিয়ে না দেখে, এমনকি গুজব ছড়িয়ে ধর্মবিশ্বাসীদের সত্য পথে অনুসন্ধান করতে বাধা দেওয়ার জন্য ব্যাপক চেষ্টা করে। তারা ঠিক ফরিশীদের মত যাদের প্রকৃতি আর স্বভাবই ছিল সত্যকে ঘৃণা আর ঈশ্বরের বিরোধিতা করা। অন্তিম সময়ে, ঈশ্বর প্রত্যেককে তাদের প্রকার অনুযায়ী বেছে নিয়ে, মিথ্যা ধর্মবিশ্বাসীদের সামনে আনছেন আর সত্য ধর্মবিশ্বাসীদের চিহ্নিত করছেন। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করার দাবি করে, অথচ সত্য আর ঈশ্বরের অবতার মানে না, তারা প্রকৃত ধর্মবিশ্বাসী নয় আর শেষ পর্যন্ত বহিষ্কৃত হয়ে যাবে। শুধুমাত্র যারা খোলা মনে সত্য সন্ধান করে আর অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করে, তাদেরই ঈশ্বরের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়ার সুযোগ থাকবে। এঞ্জেলকে সহৃদয়, নম্র আর সহায়ক মানুষই মনে হত, কিন্তু প্রভুর ফিরে আসার কথা শুনে কিছুতেই খোঁজ নেয়নি আর অনুসন্ধানও করেনি, সে ঈশ্বরের বাণী ও কাজের বিচার করে তাঁর নিন্দা করেছিল, এমনকি গুজব ছড়িয়েছিল আর অন্য ধর্মবিশ্বাসীদের সত্য পথ অনুসন্ধান করতে বাধা দিয়েছিল। ঈশ্বরের সামান্যতম ভয়ও ছিল না। দেখলাম যদিও সে প্রভুকে বিশ্বাস করে তাঁর সেবা করত, আদতে সে সত্যবিদ্বেষী আর ঈশ্বরবিরোধী ছিল। তার আর প্রাচীনকালের ঈশ্বররোধী ফরিশীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না। এসব দেখে, এঞ্জেল আর ধর্মজগতের নেতাদের আসল রূপ কিছুটা বুঝলাম, আর তারা কেন এমন আচরণ করছিল তাও বুঝলাম। এরপর আর তেমন খারাপ লাগেনি।
এর কিছু সময় পর, গির্জার দায়িত্ব পালন করতে শুরু করি। সমাবেশে যোগ দিতাম আর অন্যদের সাথে প্রতিদিন ঈশ্বরের বাণী পড়তাম, খুব ভাল লাগত। কিন্তু যখন মা-বাবা যাজক আর প্রচারকের এই গুজব শুনেছিল, তখন তারা রেগে গিয়ে আমাকে বকেছিল। আমার পুরানো গির্জায় ফিরে যেতে বাধ্য করেছিল আর আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে বারণ করেছিল। মা-বাবার আপত্তি আর বাধার কারণে আমার দায়িত্ব নিয়মিত করতে পারিনি, এমনকি সমাবেশেও যোগ দিতে পারিনি। একদিন, বাবা আমাকে অন্য ভ্রাতা আর ভগিনীদের সাথে একটা অনলাইন সমাবেশে যোগ দিতে দেখে এত রেগে গিয়েছিল যে আমায় মারতে যাচ্ছিল। ভাগ্যক্রমে মা এসে ঠিক সময়ে তাকে থামিয়েছিল। এরপর, মা-বাবা আমাকে আরও কড়া নজরে রেখেছিল। ঘরে তালাবন্দী করে রাখত, কোথাও যেতে দিত না, তাই আর সমাবেশে যোগ দিতে পারতাম না। সেই সময়, আর পেরে উঠছিলাম না। দুর্বল বোধ করছিলাম, দায়িত্ব পালনেও আত্মবিশ্বাস ছিল না। তখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, যেন আমায় বিশ্বাস আর শক্তি দেন। এরপর, ঈশ্বরের বাণীর একটা অনুচ্ছেদ পেলাম: “ঈশ্বর মানুষের মধ্যে যে কাজ করেন, তার প্রতিটি ধাপে, বাহ্যিকভাবে মনে হয় তা হল মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ যেন তা মানুষের ব্যবস্থাপনা এবং মানুষের হস্তক্ষেপেই সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু অন্তরালে, কাজের প্রতিটি ধাপে, এবং যা কিছু ঘটছে সেই প্রতিটি ঘটনাই ঈশ্বরের প্রতি শয়তানের বাজি এবং এ জন্য প্রয়োজন ঈশ্বরের প্রতি নিজ সাক্ষ্যে মানুষের অটল থাকা। উদাহরণ হিসাবে ধরা যায়, ইয়োবের যখন বিচার চলছিলো: নেপথ্যে শয়তান বাজি ধরেছিলো ঈশ্বরের সঙ্গে এবং ইয়োবের যে পরিণতি তা হয়েছিলো মানুষের কাজে এবং হস্তক্ষেপে। ঈশ্বর তোমাদের ভিতরে যে কাজ করেন তার নেপথ্যের প্রতিটি ধাপেই চলে শয়তানের সঙ্গে ঈশ্বরের লড়াই—সব কিছুর অন্তরালেই চলে এই যুদ্ধ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরকে ভালোবাসাই প্রকৃত ঈশ্বর-বিশ্বাস)। ঈশ্বরের বাণী পড়ে বুঝতে পারলাম যে বর্তমান পরিস্থিতিতে, মনে হচ্ছে যেন মা-বাবা আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে বাধা দিচ্ছে, কিন্তু পর্দার আড়ালে শয়তানই বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। লড়াইটা ছিল আধ্যাত্মিক। অন্তিম সময়ে ঈশ্বর অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন যাতে আমরা শয়তানোচিত দুর্নীতি থেকে মুক্ত হয়ে উদ্ধার লাভ করতে পারি। কিন্তু শয়তান চায়নি ঈশ্বর আমায় রক্ষা করুন, তাই সে মা-বাবাকে ব্যবহার করে আমাকে আক্রমণ করে ঈশ্বরে আমার বিশ্বাস আর আমার দায়িত্ব পালন করতে বাধা দেয়। শয়তান চেয়েছিল আমি পুরোপুরি আমার পরিত্রাণের সুযোগ হারিয়ে যেন নরকে যাই। শয়তান সত্যিই খুব খারাপ আর কদর্য! যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দেই, তাহলে কি তার সেই কুচক্রান্তে পড়ব না?
তখন ঈশ্বরের বাণীর আরেকটা অনুচ্ছেদ পেলাম: “নিরুৎসাহিত হয়ো না, দুর্বল হয়ো না, আমি তোমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট করে তুলব। রাজ্যের পথ মসৃণ নয়; কোনোকিছুই এত সহজ নয়! তোমরা চাও খুব সহজেই তোমাদের কাছে আশীর্বাদ আসুক, তাই নয় কি? আজ, সবাইকে তিক্ত পরীক্ষাসমূহের সম্মুখীন হতে হবে। এই পরীক্ষাসমূহ ব্যতীত, আমার জন্য তোমাদের প্রেমময় হৃদয় আরো শক্তিশালী হয়ে বিকশিত হবে না এবং আমার জন্য তোমাদের প্রকৃত ভালোবাসা থাকবে না। এমনকি, যদিও এই পরীক্ষাগুলি খুব সাধারণ ঘটনা সংক্রান্তও হয়ে থাকে তাহলেও, এগুলির মধ্যে দিয়েই সকলকে উত্তীর্ণ হতে হবে; তবে পরীক্ষাগুলি কতটা কঠিন হবে তা ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করছে। পরীক্ষাগুলি আমাকৃত আশীর্বাদ, এবং তোমাদের মধ্যে কতজন আমার সম্মুক্ষে এসে নতজানু হয়ে আমার আশীর্বাদ ভিক্ষা করেছ? বোকা সন্তানের দল! তোমরা সবসময় মনে করো কয়েকটি শুভ বাক্যই আমার আশীর্বাদ। কিন্তু এটা স্বীকার করো না যে তিক্ততাও আমারই এক আশীর্বাদ। যারা আমার তিক্ততার ভাগীদার হবে, তারা অবশ্যই আমার মাধুর্যও লাভ করবে। তোমাদের কাছে এটাই আমার অঙ্গীকার এবং আশীর্বাদ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ৪১)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়ার পর, বুঝতে পারলাম যে যদিও যাজকের দমনের কারণে আর আমার মা-বাবার বাধার জন্য নিজে কিছুটা কষ্ট পেয়েছি, তবে ঈশ্বর আমার বিশ্বাস পরিপূর্ণ করতেই এই পরিস্থিতি ঘটতে দিলেন। এর পিছনে ঈশ্বরের ভাল উদ্দেশ্যই ছিল! তবে আমি দুর্বল ছিলাম আর সামান্য কষ্টের জন্য নিজের দায়িত্ব ছাড়তে তৈরি ছিলাম। বুঝতে পারলাম যে সত্য অর্জনের জন্য কষ্ট করা আর মূল্য দেওয়ার মানসিকতা আমার নেই। ঈশ্বরের প্রতি আমার আন্তরিক মনোভাব ছিল না আর মানসিক দৃঢ়তা তখনও বেশ কম ছিল। ঈশ্বরের উদ্দেশ্য বুঝে আর নিষ্ক্রিয়তা অনুভব বা ভেঙে পড়িনি। আমার ধর্মবিশ্বাস আর শক্তি জোরালো হয়েছিল আর সব পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ছিলাম, নিপীড়নের মুখে রুখে দাঁড়াতে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করছিলাম। পরে, প্রায়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম, আমার ধর্মবিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে ঈশ্বরের বাণী পড়তাম, আর ঈশ্বরকে বলতাম, তিনি যেন আমার জন্য একটা পথ খুলে দেন যাতে সমাবেশে যেতে আর আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।
এরপর, এঞ্জেল আর অন্যরা আমার সম্পর্কে যে গুজব ছড়িয়েছিল সেটা মা-বাবার উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে, আর তাই গুজবের প্রভাব থেকে বাঁচতে, তারা আমাকে ঠাকুমা/দিদার সাথে থাকতে পাঠায়। সেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমার ভ্রাতা আর ভগিনীদের সাথে যুক্ত হতে পেরেছিলাম, আবার সমাবেশে যেতে আর আমার দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলাম। মা-বাবা সেটা জানতে পেরে রেগে গেল, তবে তাদের প্রভাবে না এসে, দৃঢ়ভাবে বললাম: “প্রভুতে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে আমার সবচেয়ে বড় আশা হল তাঁর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানানো। এখন প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসাবে ফিরে এসেছেন, তাই তোমরা না বুঝলেও আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করে যাব। তারপরেও তোমরা আমাকে থামাতে জেদ করলে এই পরিবার ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আমার আর কোনো উপায় থাকবে না।” আমাকে এতটা অবিচল থাকতে দেখে মা-বাবা এ বিষয়ে আর কিছু বলেনি। তারপর থেকে, যদিও তারা প্রায়ই অভিযোগ করত বা আমাকে নিজের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করত, তবে তাদের থেকে আর কোনো বাধা আসতে দিইনি, শুধু দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাই। বারবার আমার যাজক আর পরিবারের নিপীড়ন আর বাধার সম্মুখীন হয়ে, কিছুটা কষ্ট পেয়েছি ঠিকই, তবে কিছুটা সত্য বুঝতে পেরেছি, আমার মধ্যে বিচক্ষণতাও এসেছে, আর ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বাস আরও গভীর হয়েছে। ভবিষ্যতে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হই না কেন, সেগুলো সামলাতে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করতে প্রস্তুত।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।