দৈনিক অধ্যয়ন: ঈশ্বরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সহায়ক 4টি উপায়

07-03-2022

লিখেছেন চীনের জিয়াওমো

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঈশ্বরের ঘনিষ্ঠতা লাভের দ্বারা, ঈশ্বরের সাথে প্রকৃত ভাব বিনিময় দ্বারাই কেবল ঈশ্বরের সাথে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি, পবিত্র আত্মার কর্ম লাভ করতে পারি, সত্যকে বুঝতে পারি এবং বাস্তবতায় প্রবেশ করতে পারি। তাহলে কীভাবে আমরা ঈশ্বরের সাথে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি? আমাদের কেবল নিচের চারটি বিষয় উপলব্ধি করতে হবে, তাহলে ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক অবশ্যই আরও ঘনিষ্ঠ হবে।

১. সৎ হৃদয়ে প্রার্থনা করো এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হও

প্রার্থনা হল সেই প্রণালী, যার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের সাথে যোগাযোগ করি। প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের হৃদয় ঈশ্বরের সামনে আরও শান্ত থাকে, ঈশ্বরের বাক্য চিন্তা করতে সক্ষম হয়, ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসন্ধান করতে পারে এবং ঈশ্বরের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হয়। কিন্তু জীবনে, গৃহস্থালির কাজ বা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার ফলে আমরা প্রায়শই কেবল প্রার্থনার চলনের মধ্য দিয়েই যেতে পারি, এবং কয়েকটি অমনোযোগী কথার দ্বারা ঈশ্বরের সাথে মেকি আচরণ করি। যখন আমরা সকালের প্রথমদিকের কাজে ব্যস্ত থাকি, যেমন কাজে যাওয়া বা অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকি, তখন আমরা তাড়াহুড়ো করে প্রার্থনা করি: “হে ঈশ্বর! আমি আজকের কাজ তোমার হাতে অর্পণ করছি, তোমাকে আমার সন্তান এবং পিতামাতার দায়িত্ব অর্পণ করছি। আমি তোমার হাতেই সবকিছু অর্পণ করছি, আমি তোমার আশীর্বাদ চাইছি এবং আমার সুরক্ষার জন্য তোমাকে অনুরোধ করছি। আমেন!” আমরা কিছু এলোমেলো শব্দ বলে ঈশ্বরের সাথে বেপরোয়া আচরণ করি। আমাদের হৃদয় শান্ত নয়, ঈশ্বরের সাথে আমাদের প্রকৃত আদানপ্রদান তো আরোই কম। কখনও কখনও আমরা প্রার্থনায় ঈশ্বরের কাছে কিছু শ্রুতিমধুর শব্দ এবং কিছু অসার, দাম্ভিক কথা বলি, কিন্তু আমাদের হৃদয়ে যা আছে তা ঈশ্বরকে জানাই না। অথবা কখনও কখনও প্রার্থনার সময়ে আমরা কিছু মুখস্থ শব্দ আবৃত্তি করি আর প্রতিবারই সেই বাসি পুরোনো কথাগুলি আওড়াই, এবং এটি সম্পূর্ণরূপে একটি ধর্মীয় আচারের প্রার্থনায় পরিণত হয়। এই ধরনের অনেক প্রার্থনাই আমাদের জীবনে উচ্চারিত হয়—যে প্রার্থনা নেহাতই নিয়ম-মাফিক, এবং যে প্রার্থনায় আমরা ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উন্মুক্ত করি না বা ঈশ্বরের ইচ্ছার খোঁজ করি না। আমরা যখন নিরর্থক প্রার্থনা করি, ঈশ্বর তা ঘৃণা করেন, কারণ এই ধরনের প্রার্থনা শুধুমাত্র বাহ্যিক রূপে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত, এবং আমাদের আত্মায় ঈশ্বরের সাথে প্রকৃত আদানপ্রদান ঘটে না। যারা এইভাবে প্রার্থনা করে তারা ঈশ্বরের সাথে বেপরোয়া আচরণ করছে এবং তাঁর সাথে প্রতারণা করছে। অতএব, এই ধরনের প্রার্থনা ঈশ্বর শোনেন না এবং যারা এইভাবে প্রার্থনা করে তাদের পক্ষে পবিত্র আত্মার দ্বারা চালিত হওয়া খুব কঠিন হয়ে ওঠে। এইভাবে প্রার্থনার সময়ে তারা ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করতে অক্ষম হয়, তাদের আত্মা তমসাবৃত এবং দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং ঈশ্বরের সাথে তাদের সম্পর্কের দূরত্ব আরও বেড়ে যায়।

প্রভু যীশু বলেছেন: “ঈশ্বর আত্মাস্বরূপ। তাঁর উপাসনা যারা করবে, আত্মায় ও সত্যেই তাদের উপাসনা করতে হবে(যোহন ৪:২৪)। ঈশ্বরই সৃষ্টিকর্তা। তিনি সমগ্র পৃথিবীর দিকে নজর রাখছেন এবং আমাদের প্রতিটি কথা ও কাজ, আমাদের প্রতিটি চিন্তা ও ধারণা দেখছেন। যখন আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, ঈশ্বরের উপাসনা করি, তখন আমাদের অবশ্যই সৎ হৃদয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তাই, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার সময়, আমাদের অবশ্যই ধর্মভীরু হৃদয় থাকতে হবে, ঈশ্বরের কাছে আন্তরিকভাবে এবং সত্যানুসারে কথা বলতে হবে, ঈশ্বরের সামনে আমাদের বাস্তব অবস্থা, আমাদের সমস্যা এবং কষ্ট উপস্থাপন করতে হবে, সেগুলি সম্পর্কে তাঁকে জানাতে হবে এবং অবশ্যই ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং অনুশীলনের পথ অনুসন্ধান করতে হবে, কারণ শুধুমাত্র এইভাবেই আমাদের প্রার্থনা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা যখন জীবনে কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হই অথবা আমরা নিজেদের এমন একটি পরিস্থিতিতে থাকতে দেখি যেখানে আমরা ক্রমাগত পাপ করে চলি, পাপ-স্বীকার করি, এবং যন্ত্রণা অনুভব করি। এবং তাই, আমরা ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উন্মুক্ত করি, এই সমস্যা সম্পর্কে ঈশ্বরকে জানাই এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসন্ধান করি। এতেই ঈশ্বর আমাদের আন্তরিকতা দেখবেন এবং আমাদের চালিত করবেন। তিনি আমাদের বিশ্বাস প্রদান করবেন অথবা তাঁর ইচ্ছা বুঝতে আমাদের জ্ঞানপ্রাপ্ত করবেন। এইভাবে আমরা সত্য বোঝার পথে এগিয়ে যেতে থাকি। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা সত্যই স্বীকার করি যে, আমাদের প্রার্থনাগুলি কেবল নিয়মের নিগড়ে আবদ্ধ, এবং এগুলি কেবল আনুষ্ঠানিকতা হিসাবে থেকে যায়, বা আমরা দাম্ভিক ভাবে বা অসারভাবে কথা বলি, এবং ঈশ্বরের সাথে আমাদের কোনও বাস্তব আদানপ্রদান হয় না, তখন আমরা এইভাবে প্রার্থনা করতে পারি: “হে ঈশ্বর! আমি আগে যখন প্রার্থনা করতাম, তখন আমি তোমার সাথে বেপরোয়া ভাবে আচরণ করতাম। আমি যা বলেছি সবই তোমাকে প্রতারণার জন্য এবং আমি মোটেও আন্তরিকভাবে বলি নি; আমি তোমার কাছে গভীরভাবে ঋণী। আজ থেকে আমি অন্তর থেকে প্রার্থনা করতে চাই। আমি অন্তরে যা ভাবি তাই তোমাকে বলব, সৎ চিত্তে তোমার উপাসনা করব এবং তোমার নির্দেশিকা চাইব।” আমরা যখন আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে এইভাবে ঈশ্বরের কাছে উন্মুক্ত হই, তখনই আমাদের হৃদয় চালিত হয়। আমরা তখন দেখতে পাই যে আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কতটা বিদ্রোহ করেছি, আমরা আরও বেশি করে ঈশ্বরের কাছে অনুতপ্ত হতে চাই এবং তাঁর সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলতে চাই। এই সময়ে, আমরা অনুভব করতে পারবো যে ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, যেন আমরা তাঁর মুখোমুখিই রয়েছি। এটিই হল ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উন্মুক্ত করার ফলাফল।

ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উন্মুক্ত করার সাথে তাঁকে আমরা কত বেশি পরিমাণ জানাই, অথবা আমরা অতিরঞ্জিত শব্দ বা অভিনব ভাষা ব্যবহার করি কি না, তার কোনও সম্পর্ক নেই। যতক্ষণ আমরা ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয় উন্মুক্ত করি এবং আমাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তাঁকে বলি, তাঁর নির্দেশিকা এবং জ্ঞানের সন্ধান করি, ঈশ্বর আমাদের কিছু সহজ শব্দের দ্বারাও সেই কথা ঠিক শুনবেন। যখন আমরা এইভাবে ঘন ঘন ঈশ্বরের নিকটবর্তী হই, তা সমাবেশে হোক বা আধ্যাত্মিক ভক্তির সময়ে হোক, বা যখন আমরা রাস্তায় হাঁটছি বা বাসে বসে আছি বা কর্মক্ষেত্রে থাকার সময়ই হোক না কেন, আমাদের হৃদয় তখন সর্বদা নীরবে প্রার্থনার দ্বারা ঈশ্বরের কাছে উন্মুক্ত। এই বিষয়ে সচেতন না থেকেও, আমাদের হৃদয় তখন ঈশ্বরের সামনে আরও বেশি শান্ত থাকতে পারবে, আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে আরও বেশি বুঝতে পারব, এবং সমস্যার সম্মুখীন হলে আমরা জানবো কীভাবে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য সত্য অনুশীলন করতে হয়। এইভাবে, ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

২. ঈশ্বরের বাক্যগুলি পড়ার সময়, সেগুলিকে নিজের হৃদয় দিয়ে চিন্তা করো এবং তাহলেই তুমি তাদের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারবে

আমরা আধ্যাত্মিক একনিষ্ঠতার অনুশীলন করি এবং প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য পড়ি। কিন্তু যতক্ষণ আমরা তাঁর বাক্য পড়ি ততক্ষণ পর্যন্তই কি ঈশ্বরের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে পারি? অবশ্যই না। তাহলে কীভাবে আমরা ঈশ্বরের বাক্যগুলিকে এমনভাবে পড়বো যাতে একাধারে ভালো ফলাফল অর্জন করা যায় এবং ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়? ঈশ্বরের বাক্য বলেছে: “মানুষ যখন ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, ভালোবাসে, এবং তাঁকে পরিতুষ্ট করে, তখন তারা তাদের হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের আত্মাকে স্পর্শ করে ও তার ফলে তাঁর পরিতৃপ্তি অর্জন করতে পারে, তারা ঈশ্বরের সংস্পর্শে আসতে তাদের হৃদয়কে ব্যবহার করে, এবং এইভাবে তাঁর আত্মার দ্বারা চালিত হয়(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ)। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের জানায় যে, তাঁর বাক্য পড়ার সময় আমাদের অবশ্যই সেগুলি সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে এবং হৃদয় দিয়ে অনুসন্ধান করতে হবে, আমাদের অবশ্যই পবিত্র আত্মার জ্ঞান এবং প্রদীপ্তি লাভ করতে হবে এবং অবশ্যই ঈশ্বরের ইচ্ছা, এবং তিনি আমাদের থেকে কী কামনা করেন তা বুঝতে হবে। শুধুমাত্র এইভাবে ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করলেই আমাদের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে এবং আমরা ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী হবো। ঈশ্বরের বাক্য পড়ার সময়, আমরা যদি সত্যিই মনোযোগ না দিয়ে সেগুলিকে এক নজরে দেখি, যদি আমরা শুধুমাত্র নিজেদেরকে জাহির করার জন্য কিছু অক্ষর এবং মতবাদ বোঝার দিকেই মনোনিবেশ করি, এবং ঈশ্বরের বাক্যের প্রকৃত অর্থ বোঝার দিকে মনোযোগ না দিই, তাহলে আমরা তাঁর বাক্য যতই পড়ি না কেন, আমরা তাঁর ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারবো না, ঈশ্বরের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে আরোই অক্ষম হয়ে পড়বো।

তাই, ঈশ্বরের বাক্যগুলি পড়ার সময়ে আমাদের অবশ্যই নিজেদের হৃদয়কে শান্ত করতে হবে এবং ঈশ্বর কেন এমন বাক্য বলেন, ঈশ্বরের ইচ্ছা কী এবং ঈশ্বর এই ধরনের কথা বলে আমাদের থেকে কী ফলাফল অর্জন করতে চান তা চিন্তা করার জন্য আমাদের হৃদয়কে ব্যবহার করতে হবে। শুধুমাত্র এইভাবে তাঁর বাক্য গভীরভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বুঝতে পারি, তাঁর হৃদয়ের অনুগামী হতে পারি এবং এইভাবে ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা দেখতে পাই যে প্রভু যীশু বলেছেন: “আমি তোমাদের সত্যই বলছি, যদি পরিবর্তিত না হও, এবং ছোট্ট শিশুর মতো হয়ে উঠতে না পারো, তাহলে তোমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না(মথি ১৮:৩)। আমরা সকলেই এই বক্তব্যের বাহ্যিক অর্থ বুঝি, অর্থাৎ, ঈশ্বর চান আমরা যেন ছোট শিশুদের মতো শুদ্ধ এবং সৎ হতে পারি এবং ঈশ্বরের প্রয়োজন অনুসারে সৎ মানুষ হওয়ার পরেই কেবল আমরা ঈশ্বরের দ্বারা চালিত হয়ে তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি। কিন্তু সমস্যাও রয়েছে, যেমন-একজন সৎ ব্যক্তি হওয়ার কী তাৎপর্য, কেন ঈশ্বর সৎ লোকদের ভালোবাসেন, আমাদের মধ্যে অসততা এবং প্রতারণার কী অভিব্যক্তি রয়েছে এবং কীভাবে আমাদের সৎ মানুষ হওয়ার অনুশীলন করা উচিত, সেই বিষয়গুলি নিয়ে আমাদের আরও গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, আমরা নিজেদের প্রতারণার অভিব্যক্তি নিয়ে চিন্তা করলে দেখতে পাবো: অন্যান্য মানুষদের সাথে আচরণ করার সময় আমরা প্রায়শই নিজেদের স্বার্থ, খ্যাতি এবং মর্যাদা রক্ষা করার জন্য মিথ্যা বলা বা প্রতারণা করা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারি না। আমরা যখন ঈশ্বরের জন্য নিজেদের নিয়োজিত করি, তখন হয়তো আমরা প্রার্থনায় বলি, আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসতে এবং সন্তুষ্ট করতে চাই, কিন্তু যখন আমাদের সন্তান অসুস্থ হয় অথবা আমরা নিজেরা বা পরিবারের কোনো সদস্য চাকরি হারায়, তখন আমরা ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করতে শুরু করি, এতটাই বেশি, যে আমরা প্রভুর জন্য কাজ করা এবং তাঁর প্রতি নিজেকে নিয়োজিত করা ছেড়ে দিতে চাই; এতে, আমরা দেখতে পাবো, যে আমরা ঈশ্বরের জন্য নিজেদেরকে যে উপায়ে নিয়োজিত করি তা কলঙ্কিত, এবং তা যেন ঈশ্বরের সাথে চুক্তিস্বরূপ। আমরা ঈশ্বরের জন্য নিজেদের ব্যয় করি ঈশ্বরের কাছ থেকে লাভ করার জন্য, সম্পূর্ণরূপে তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয়। এগুলি আমাদের প্রতারণার অভিব্যক্তির কিছু উদাহরণ মাত্র। এই অভিব্যক্তিগুলি থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আমরা প্রকৃত সৎ মানুষ নই। আমরা আমাদের নিজেদের ত্রুটি এবং ঘাটতি স্পষ্টভাবে দেখতে পেলে, সত্যের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য আমাদের মধ্যে সংকল্প জাগ্রত হয় এবং আমরা আমাদের জীবনে ঈশ্বরের বাক্যগুলিকে আরও বেশি অনুশীলন করার চেষ্টা করি যাতে আমরা ধীরে ধীরে সৎ মানুষ হয়ে উঠতে পারি। ঈশ্বরের বাক্য চিন্তা করে এই ফলাফলই অর্জিত হয়।

অবশ্যই, ঈশ্বরের বাক্য একবার চিন্তা করেই এই ফলাফল অর্জন করা যায় না, বরং তাঁর বাক্য বারংবার চিন্তা করার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এছাড়াও, সমস্যার সম্মুখীন হলে আমাদের অবশ্যই সচেতনভাবে ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করতে হবে। সংক্ষেপে, যতক্ষণ আমরা এইভাবে আমাদের হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের বাক্যগুলিকে নিরবচ্ছিন্নভাবে চিন্তা করতে পারবো, ততক্ষণ আমরা পবিত্র আত্মার জ্ঞান ও প্রদীপ্তি লাভে সক্ষম হব। একদিন আমরা কিছু নতুন জ্ঞান লাভ করব, পরের দিন আমরা আরও কিছুটা নতুন জ্ঞান অর্জন করব এবং সময়ের সাথে সাথে আমরা ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতার বিষয়ে আরও বুঝতে সক্ষম হবো, অনুশীলনের পথ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে, আমাদের জীবনে ধীরে ধীরে প্রগতি আসবে, এবং ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ক্রমে বাড়বে।

৩. সত্যের অনুসন্ধান করো এবং সমস্ত কিছুতেই ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করো

ঈশ্বরের সাথে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সমস্যার সম্মুখীন হলে সত্যের অনুসন্ধান করা এবং তাঁর বাক্য অনুসারে অনুশীলন করা। কিন্তু জীবনে সমস্যার সম্মুখীন হলে, আমরা প্রায়শই আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করি অথবা সেগুলি পরিচালনা করতে মনুষ্য-সৃষ্ট উপায় ব্যবহার করি, অথবা আমাদের নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী সেগুলি সমাধান করি। আমরা খুব কমই ঈশ্বরের সামনে নিজেকে শান্ত করি এবং সত্যের সন্ধান করি, বা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে সমস্যাটি পরিচালনা করি। এর ফলে সত্য অনুশীলনের অনেক সুযোগ আমরা হারিয়ে ফেলি এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে আরও দূরে সরে যেতে থাকি। ঈশ্বরের বাক্যে রয়েছে, “তুমি যা করছো, তা যতই বড় বা ছোট হোক না কেন এবং তুমি যা করছ, তা ঈশ্বরের পরিবারে তোমার দায়িত্ব পালনের জন্য করছো বা নিজের ব্যক্তিগত কারণে করছো কিনা সেসব নির্বিশেষে, তোমাকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে যে তুমি যা করছো, তা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা, সেই সাথে এটি এমন কিছু কিনা যা মানবতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তির করা উচিত। তুমি যদি তোমার সমস্ত কাজে এইভাবে সত্যের অনুসন্ধান করো, তবে তুমি প্রকৃত ঈশ্বরবিশ্বাসী একজন ব্যক্তি হয়ে উঠবে(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। “যদি তোমরা আমার উপদেশ পালন কর, তাহলেই তোমরা হবে আমার প্রকৃত শিষ্য(যোহন ৮:৩১)। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের একটি সুস্পষ্ট পথ প্রদর্শন করে। আমরা গির্জায় কাজ করছি, বা আমাদের জীবনে সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলি পরিচালনা করছি, তা নির্বিশেষে আমাদের অবশ্যই সর্বদা সত্যের অনুসন্ধান করতে হবে এবং ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বুঝতে হবে, ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে এমন কোন উপায়ে বিষয়টি পরিচালনা করা যায় তা দেখতে হবে, আমাদের সামনের সম্ভাব্য সমস্ত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সত্যকে ব্যবহার করতে হবে এবং ঈশ্বরের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, আমাদের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার সময় আমাদের কীভাবে সত্য অনুসন্ধান করা উচিত তা-ই দেখা যাক। সঙ্গী খোঁজার সময়, আমরা সবসময় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী অগ্রসর হই এবং কোনো ব্যক্তির বাহ্যিক চেহারা এবং স্বভাবের উপরেই মনোযোগ দিই। আমরা একজন লম্বা, ধনী, সুদর্শন পুরুষ বা একজন ফর্সা, ধনী, সুন্দরী মহিলার সন্ধান করি, এই বিশ্বাসে যে, আমরা যদি এমন কাউকে বিয়ে করি তবেই আমাদের সুখী দাম্পত্য জীবন হবে, আর আমরা শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য, আরাম ও আনন্দময় জীবনযাপন করব এবং অন্যরা আমাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হবে। তবে, আমরা কি কখনও ভাবি যে এইরকম সঙ্গীর অনুসন্ধান আমাদের ঈশ্বর বিশ্বাস এবং জীবনের অগ্রগতির ক্ষেত্রে উপকারী কিনা? আমাদের সঙ্গী যদি ঈশ্বরে বিশ্বাস না করে এবং তারা আমাদের ঈশ্বরে বিশ্বাস করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে, তাহলে ফলাফল কী হবে? বাইবেল বলেছে, “যারা খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে না, তাদের সঙ্গে তোমরা অসম মেলবন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না” (২ করিন্থীয় ৬:১৪)। এ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের আকাঙ্ক্ষা খাপ খায় না এবং একে অপরের উপযুক্ত নয়। বিশ্বাস এবং সামাজিক প্রবণতাগুলির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে, তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং বিভিন্ন জিনিস অনুসরণ করবে: একজন বিশ্বাসী ঈশ্বর-ভীতি এবং মন্দ কর্ম পরিত্যাগ করার পথ অনুসরণ করতে চাইবে, অপরদিকে একজন অবিশ্বাসী বিশ্বের মন্দ প্রবণতাগুলি অনুসরণ করতে চাইবে। যখন আমরা একজন অবিশ্বাসীর সাথে মিলিত হই, তখন আবশ্যিকরূপেই আমরা তাদের দ্বারা প্রভাবিত হব এবং আমাদের জীবনের অগ্রগতি আটকে যাবে। অতএব, সঙ্গী নির্বাচন করার সময় আমাদের অবশ্যই ব্যক্তির মানবতা এবং চরিত্র বিবেচনা করতে হবে এবং বিবেচনা করতে হবে যে তাদের সাথে মেলামেশা করা আমাদের ঈশ্বরবিশ্বাসের ক্ষেত্রে উপকারী হবে কিনা, আমরা উভয়ই একই মানসিক অবস্থানে রয়েছি কিনা, এবং আমাদের আকাঙ্খাগুলি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা। যদি আমরা এই বিষয়গুলি বিবেচনা না করি, শুধুমাত্র ব্যক্তির বাহ্যিক চেহারা এবং তাদের পারিবারিক পরিস্থিতির উপর মনোযোগ নিবদ্ধ রাখি, তাহলে, বিবাহের পরে আমাদের মানসিক অবস্থান অনুরূপ না হওয়ার কারণে যন্ত্রণা আসবে। যদি আমাদের সঙ্গী আমাদেরও জোর করার চেষ্টা করে এবং ঈশ্বরবিশ্বাস থেকে বিরত রাখে, তাহলে এটি আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনকে আরও বিলম্বিত বা নষ্ট করবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের জীবনে আমরা যে সমস্যারই সম্মুখীন হই না কেন, শুধুমাত্র সত্য অন্বেষণ করে, ঈশ্বরের ইচ্ছাকে অবলম্বন করে এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের যত্ন ও সুরক্ষায় জীবনযাপন করতে পারি, এবং শুধুমাত্র সেই উপায়েই আমরা ঈশ্বরের সাথে আমাদের স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি।

৪. ঈশ্বরের সামনে এসো, প্রতিদিন নিজের বিষয়ে চিন্তা করো এবং ঈশ্বরের সাথে তোমার স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখো

যিহোবা ঈশ্বর বলেছেন: “তোমাদের পথের বিষয়ে বিবেচনা করো(হগয় ১:৭)। ঈশ্বরের কথা থেকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আমাদের জীবনে প্রকৃত প্রবেশের জন্য নিজেদের বিষয়ে চিন্তা করা খুবই প্রয়োজনীয়! এই চিন্তার মাধ্যমে, আমরা দেখতে পাই যে আমাদের এত ত্রুটি রয়েছে যে আমরা ঈশ্বরের প্রয়োজনীয় মানদণ্ড থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। সত্য অনুসরণ করার প্রেরণা তাই আমাদের মধ্যেই উদ্ভূত হয়, আমরা আমাদের পার্থিব মায়া ত্যাগ করার সংকল্প করি এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে অনুশীলন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। এইভাবে, আমরা আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতায় ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কাজ করার প্রতি মনোযোগ দিই, আমরা ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করি এবং ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা যারা গির্জার নেতা হিসেবে কাজ করি তারা দেখেছি যে বাইবেলে রয়েছে: “ঈশ্বরের যে মেষপাল তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে, তাদের পালন কর। বাধ্য হয়ে নয়, কিন্তু স্বেচ্ছায়, ঈশ্বর যেভাবে চান সেইভাবে। কোন স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়, কিন্তু আগ্রহভরে এই কাজ কর। যারা তোমাদের দায়িত্বে আছে তাদের উপর কর্তৃত্ব করার জন নয়, কিন্তু পালের সম্মুখে আদর্শস্বরূপ হয়ে তাদের পালন কর” (১ পিতর ৫:২-৩)। অতএব, আমাদের আত্ম-প্রতিফলনে রত হওয়া উচিত এবং নিজেদের জিজ্ঞাসা করা উচিত: আমরা কি ঈশ্বরের বাক্য এবং তাঁর ইচ্ছার প্রতি সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে যত্ন নিচ্ছি, অন্যদেরকে ঈশ্বরের সামনে এগিয়ে দেওয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছি, নাকি আমরা উপদেশ দেওয়ার সময় লোক দেখানোর জন্য এবং যাতে লোকে আমাদের উপাসনা করে তার জন্য উচ্চস্বরে অর্থহীন কথা বলছি, আর আক্ষরিক অর্থ এবং মতবাদ প্রচার করছি? যখন অন্যান্য ব্যক্তিরা আমাদের যুক্তিসঙ্গত পরামর্শ দেয়, তখন আমরা কি নিজেদের সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করি নাকি আমরা তাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে ক্রমাগত অস্বীকার করে এমন পর্যায়ে চলে যাই, যেখানে আমরা অজুহাত তৈরি করি এবং নিজেদেরকে প্রমাণ করার চেষ্টা করি? আত্ম-প্রতিফলনের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের সেবায় এখনও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে আমরা বিদ্রোহী রয়ে গেছি এবং আমাদের মধ্যে এখনও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব রয়ে গেছে যেগুলি সমাধান করতে আমাদের অবিরাম সত্য-অনুসন্ধান করতে হবে। এইভাবে, আমরা নম্রভাবে আচরণ করতে পারি, আমাদের কাজে আরও বেশি করে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসন্ধান করতে পারি এবং ঈশ্বরের চাহিদা অনুযায়ী অন্যদের নেতৃত্ব দিতে পারি। আমরা যদি বারংবার ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে এবং নিজেদের সম্পর্কে চিন্তা করতে অক্ষম হই, তাহলে আমরা নিজেদের দুর্নীতি এবং ত্রুটিগুলি চিনতে ব্যর্থ হব এবং এখনও নিজেদের সত্যের উপাসক বলে বিশ্বাস করব। ফলে, আমরা স্থির থাকাতেই সন্তুষ্ট বোধ করবো এবং আরও অগ্রগতির বিষয়ে অ-স্বীকৃত হবো। আমরা আরও বেশি অহংকারী এবং স্ব-ধর্মনিষ্ঠ হয়ে উঠব, নিজেদেরকে ঈশ্বরের হৃদয়ের অনুসারী বলে বিশ্বাস করবো। প্রকৃতপক্ষে, আমাদের কর্ম এবং আচরণ ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না এবং ঈশ্বর আমাদের ঘৃণা করবেন। তাই দেখা যায় যে বারংবার আত্ম-প্রতিফলনে রত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সত্যের অনুশীলন নিজেকে জানার ভিত্তির উপরেই প্রতিষ্ঠিত হয়। শুধুমাত্র নিজের ভ্রষ্টাচার এবং ত্রুটি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলেই অনুশোচনা জাগতে পারে এবং তারপরেই একজন সত্যের অনুসরণ করতে এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করতে ইচ্ছুক হবে। আত্ম-প্রতিফলন আমাদের জীবনের অগ্রগতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী এবং এটি আমাদের ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার এক অপরিহার্য চাবিকাঠি।

নিজেদের সম্পর্কে চিন্তা করার অনেক উপায় আছে: আমরা ঈশ্বরের বাক্যের আলোকে নিজেদের বিষয়ে চিন্তা করতে পারি; আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভুলগুলির মধ্যে দিয়ে নিজেদের প্রতিফলিত করতে পারি; অন্যদের দ্বারা আমাদের ত্রুটি এবং দুর্নীতির প্রতি ইঙ্গিতও নিজেদের সম্পর্কে চিন্তা করার একটি চমৎকার সুযোগ করে দেয়; উপরন্তু, যখন আমাদের চারপাশের মানুষদের করা ভুলগুলি আমরা দেখতে পাই, তখন আমরা নিজেদের সম্পর্কেও চিন্তা করতে পারি, তাদের ভুলগুলিকে সতর্কতা হিসাবে গ্রহণ করতে পারি, তা থেকে শিখতে পারি এবং তাদের দ্বারা উপকৃত হতে পারি, এবং এইরকমই আরও অনেক কিছু। আত্ম-প্রতিফলনের সময় দিন বা রাতে সীমাবদ্ধ নয়। যেকোনো সময় এবং যেকোনো স্থানে, আমরা আমাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারি, আমাদের নিজেদের দুর্নীতি সম্পর্কে চিন্তা করতে এবং জানতে পারি, আমরা ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে তাঁর ইচ্ছা এবং প্রয়োজনীয়তাগুলি অনুসন্ধান করতে পারি এবং উপযুক্ত সময়ে অনুতাপ করতে পারি। যাইহোক, প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে, আমরা সেই দিনে যা যা করেছি তার প্রতিফলন এবং সারসংক্ষেপ করতে হবে এবং তারপরে আমরা আমাদের অবস্থার সুস্পষ্ট উপলব্ধি করতে সক্ষম হবো, এবং জানতে পারব যে আমরা এখনও কোন জিনিসটি ঠিক করতে পারি নি। একবার এটি করা শুরু করলে, আমাদের সাধনা আরও নির্দিষ্ট হবে এবং ঈশ্বরের সাথে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে আরও উপকারী হবে।

উপরোক্ত চারটি বিষয় হল আমাদের ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার অনুশীলনীয় পথ। যতক্ষণ আমরা এই বিষয়গুলিকে অনুশীলন করবো, ততক্ষণ ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে, আমরা যে সমস্যার সম্মুখীন হব সেগুলির নিষ্পত্তি করারও পথ থাকবে, এবং ঈশ্বর আমাদের শান্তি ও আনন্দ দেবেন এবং তাঁর আশীর্বাদে জীবনযাপন করতে সক্ষম করবেন। তাহলে, আমরা এখনই কেন শুরু করছি না?

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

নোহের দিনগুলি আবির্ভূত হয়েছে: এটি কিসের পূর্বলক্ষণ?

আমরা যখন নোহের সময়ের মানবজাতির কথা বলি, সকলেই জানে যে, খুন, অগ্নিসংযোগ, ডাকাতি ও চুরি এবং উশৃঙ্খলতা তখনকার মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য হয়ে...

প্রভুর অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করার ৩টি নীতি

রচয়িতা ঝ্যাং লিয়াং খ্রিষ্টান হিসাবে, প্রার্থনা হ’ল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ এবং ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে সরাসরি...

অন্তিম সময়ের প্রতীক: 2022 সালে দেখা দেবে ফ্লাওয়ার ব্লাড মুন চন্দ্রগ্রহণ

সম্পাদকের নোট: সাম্প্রতিক কয়েক বছরে “রক্তাভ চাঁদ” এর মত মহাজাগতিক ঘটনা বারংবার দেখা গেছে। অতিমারী, ভূমিকম্প এবং দুর্ভিক্ষের মত বিভিন্ন...

মহামারী এসেছে: কীভাবে কোন খ্রিস্টান ঈশ্বরের সুরক্ষা পাওয়ার জন্য অনুতাপ করবে?

আজকাল পৃথিবী জুড়ে অভূতপূর্ব বিপর্যয় নেমে আসছে। ভূমিকম্প, অতিমারী, বন্যা, খরা, কীট-পতঙ্গের উপদ্রব ইত্যাদি খুবই ঘন ঘন হচ্ছে, এবং, বিশেষত...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন