অন্যদের দেখার জন্য ঈশ্বরের বাক্যই আমাদের একমাত্র আতসকাঁচ

04-09-2023

শীলা আমার অনেকদিনের চেনা, আর আমি ওকে ভালোভাবেই জানি। যখনই আমাদের দেখা হতো, ও সবসময় ওর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে গল্প করতো। ও বলতো যে অন্যদের সম্পর্কে ও সবসময়েই সন্দিহান, আর অন্যরা ওর সম্পর্কে কী মনে করে সে ব্যাপারে ও যথেষ্ট সতর্ক। এটাও বলতো যে ও ভীষণ ক্ষুদ্রমনা, আর ও সবসময় বিশ্লেষণ করে অন্যরা কী বোঝাতে চাইছে। কারো মুখের সামান্যতম অভিব্যক্তি, তাদের কথার সুর, এমনকি কোনো স্বতঃস্ফূর্ত মন্তব্যেও ও বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারতো। ও যে ওরকম হতে চাইতো তা নয়, কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারতো না। প্রায়ই বলতো যে ও গভীরভাবে কলুষিত, চতুর, আর ওর মধ্যে মানবিকতার অভাব রয়েছে, সুনাম আর মর্যাদাকে ওর এত মূল্যবান মনে করাকে ও কত ঘৃণা করে, আর এসব বলতে বলতে কেঁদে ফেলতো। ওকে এত অনুতপ্ত আর নিজের প্রতি বীতশ্রদ্ধ দেখে আমি ভাবতাম ও সত্যিই বদলাতে চায়। হয়তো ওর এই ভ্রষ্ট স্বভাবগুলো গুরুতর ছিল। এটাই ওর দুর্বলতম জায়গা, আর পরিবর্তন এত সহজ নয়; তাতে সময় লাগবে। তাই আমি ভাবলাম আমার সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। নিজের কাজে যত ব্যস্তই থাকি, ও যদি কথা বলতে চাইতো, আমি নিজের কাজ সরিয়ে রেখে ওর মনের কথা শুনতাম, আর প্রায়ই ওকে উৎসাহিত করতাম, সান্ত্বনা দিতাম, ওর সাথে আলোচনা করতাম। কিন্তু আমি বুঝতে পারতাম না, যদিও শীলাকে আলাপ-আলোচনায় বেশ যুক্তিপূর্ণ মনে হতো, মনে হতো ও নিজেকে ভালোভাবে জানে, কিন্তু অন্যরা ওর সমস্যাগুলোর দিকে নির্দেশ করলে, ও কেন তারা ওকে অবজ্ঞা করছে ভেবে নেতিবাচক হয়ে যেত। এটা বারবার হচ্ছিল, কখনোই বদলায়নি। উপরন্তু, ও এই সমস্যার বিষয়ে অনেকের সাথে কথা বলেছিল, অনেকবার নিজেকে উন্মুক্ত করেছিল আর অনেকেই ওর সাথে আলোচনা করেছিল। কিন্তু বেশ কিছু বছর পরেও ওর মধ্যে উন্নতির সামান্যতম চিহ্নও দেখা যায়নি।

একবারের কথা মনে আছে, নবাগতদের জলদান করার বিষয়ে আমাদের একটা সমস্যা নিয়ে একজন সুপারভাইজার তদন্ত করছিল, বলছিল যে আমরা নবাগতদের প্রতি যথেষ্ট যত্নবান আর ধৈর্যশীল নই, এবং তারা সমাবেশে না এলে আমরা তক্ষুনি তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদেরকে সমর্থন করিনি, এটা খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাপার। সে সমস্ত জলদান-কর্মীদেরই এই কথা বলছিল, বিশেষ করে কোনো একজনকে উদ্দেশ্য করে বলেনি। কিন্তু শীলা বলল যে সেই সুপারভাইজার ওকেই অনাবৃত করছে আর ওর সুনামের ক্ষতি করছে, তাই ও সেই সমাবেশে কথা বলতে চাইলো না। আর একবার, এক ব্রাদার নিজের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করছিল, আর বলছিল যে স্বল্প যোগ্যতার লোকজনদের সামলানোর সময়ে, সে তাদের সাথে ন্যায্য আচরণ করেনি। নিজের অভিজ্ঞতার বিষয়ে, এবং কীভাবে সে উন্নতি আর প্রবেশ অর্জন করেছিল তা নিয়ে সে আলোচনা করে চললো। কিন্তু শীলা যখন এই কথা শুনলো, ও ভাবলো সেই ব্রাদার ওর সম্পর্কে বলেছে, ওর যোগ্যতাকে অপমান করেছে, আর ওকে নিচু চোখে দেখেছে। তারপর ও বেশ কিছুদিন নেতিবাচক হয়ে ছিল, সেই ব্রাদারের বিরুদ্ধে ওর মনে পক্ষপাত তৈরী হয়েছিল, তাকে পরিহার ও অবজ্ঞা করে চলতো। আর একবার, কাজ সংক্রান্ত আলোচনার সময়, শীলা কীভাবে নবাগতদের সিঞ্চন করেছে সেই বিষয়ে একটা ছোট সমস্যার কথা সুপারভাইজার তুলে ধরে, শীলা হঠাৎ কাঁদতে শুরু করে আর দৌড়ে সেখান থেকে চলে যায়, অনেকক্ষণ পর্যন্ত ফিরে আসেনি। চুপচাপ একপাশে গিয়ে বসেছিল, দুই গাল বেয়ে জল গড়াচ্ছে, যেন ওর সাথে গভীরভাবে অন্যায় করা হয়েছে। ওর চোখমুখের হাবভাব দেখে আমি আমার মনকে শান্ত করতে পারছিলাম না, আর সমাবেশটাও বিশৃঙ্খল হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত ওকে সান্ত্বনা আর উৎসাহ দেওয়া ছাড়া সুপারভাইজারের আর কোনো বিকল্প রইল না, তারপর ও অবশেষে শান্ত হল। পরে নেতা ওর সাথে আলোচনা করল, উল্লেখ করল যে ও সুনাম আর মর্যাদাকে খুব বেশি মূল্য দেয়, সবার যত্ন আর মনোযোগের কেন্দ্রে থাকতে পারলে তবেই ও নিজের দায়িত্ব পালন করে। শীলা এমনকি এটাও মেনে নিতে পারছিল না: একদিকে সে বলছিল সুপারভাইজারের সমালোচনা পক্ষপাতদুষ্ট, অন্যায্য, আবার সেইসাথে এ-ও বলছিল যে তার প্রকৃতি জটিল, সে বদলাতে চায় কিন্তু পেরে উঠছে না। সে একথাও বলল, “আমার কোনো উদ্ধার নেই। এরকম স্বভাব আমার কী করে হলো? বাকি সবাই কেন আমার চেয়ে ভালো, আর আমার চেয়ে কম জটিল চিন্তাভাবনার আশীর্বাদ পেয়েছে? ঈশ্বর কেন আমাকে ভালো স্বভাব দিলেন না?” ওর মুখে এসব কথা শুনে আমি ভাবলাম, “কী জঘন্য আর অযৌক্তিক! ও ঈশ্বরকে কীভাবে দোষারোপ করতে পারে?” কিন্তু তারপর আমার মনে হল হয়তো সম্প্রতি ও একটা বাজে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, এবং ওর সুনাম আর মর্যাদা বিপন্ন হয়েছে বলেই এইসব কথা বলেছে। হয়তো ওর অবস্থার উন্নতি হলে ও আর এরকম থাকবে না।

কিন্তু পরে আমি উপলব্ধি করলাম, ও যার সাথেই থাকে, সবসময় তার অভিব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ—যদি ওর মনে হয় কেউ ওর সাথে নিস্পৃহ আচরণ করছে বা যদি তার কথার সুরও ওর পছন্দ না হয়, ও সিদ্ধান্তে পৌঁছবে যে সেগুলো সব সে ওর উদ্দেশ্যেই করছে। ওর সাথে মেলামেশা করতে গেলে ভীষণ সতর্ক থাকতাম, সবসময় চিন্তা হতো কোনোভাবে ওকে ক্ষুব্ধ আর নেতিবাচক করে ফেলে ওর কাজে বিলম্ব ঘটাবো। শীলার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতে গেলে দমবন্ধ লাগতো, প্রায়ই ওকে এড়িয়ে যেতে চাইতাম। কিন্তু তারপর মনে পড়ল যে আমি নিজেও ভ্রষ্ট ছিলাম, তাই সবসময় অন্যের দিকে সমালোচনার দৃষ্টিতে তাকানো উচিত নয়। অন্যদের সংগ্রামের প্রতি আমায় যত্নবান ও বিবেচনাশীল হতে হবে, সহিষ্ণু ও সহানুভূতিশীল হতে হবে। তাই আমি জোর করেই নিজেকে বাধ্য করলাম ওর সাথে স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা করতে আর যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম ওকে ক্ষুব্ধ না করতে।

যেহেতু শীলা সত্যকে একেবারেই গ্রহণ করেনি, অযৌক্তিক আচরণ করছিল, আর গির্জায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল, তাই পরে নেতা ওকে বরখাস্ত করে আর ওকে বলে বিচ্ছিন্ন থেকে আত্মানুসন্ধান করতে। খবরটা শুনে আমি বেশ অবাক হয়ে গেছিলাম, কারণ যদিও শীলা নিজের সুনাম আর মর্যাদা নিয়ে খুবই সচেতন ছিল আর অন্যদের প্রতি সন্দিহান ছিল, কিন্তু ও মন খুলে আলাপ-আলোচনা করতেও বেশ আগ্রহী ছিল, আর মনে হতো ও সত্যের সন্ধান করছে। তাহলে ওকে বিচ্ছিন্ন করা হল কেন? পরে, একটা সমাবেশের সময় যখন নেতারা শীলার মূল্যায়ন পড়ে শোনালো আর ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করে ওর আচরণের ব্যবচ্ছেদ করলো, শুধুমাত্র তখনই আমি ওর সম্বন্ধে কিছুটা উপলব্ধি লাভ করলাম। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যুক্তিবোধহীন, নিরলসভাবে বিরক্তিকর মানুষেরা কাজ করার সময় শুধু তাদের নিজেদের স্বার্থের কথাই চিন্তা করে। তারা যা খুশি তাই করে, আর তাদের কথাবার্তা অবাস্তব ধর্মবিরোধিতায় পূর্ণ। তারা যৌক্তিকতার ধার ধারে না, তারা বিদ্বেষময় স্বভাবে পরিপূর্ণ। তাদের সাথে যুক্ত হতে কেউ সাহস করে না, এবং নিজের উপর বিপদ ডেকে আনার ভয়ে কেউ তাদের সাথে সত্যের আলোচনাও করতে চায় না। তাদের কাছে মনের কথা বলতে মানুষ উদ্বিগ্ন বোধ করে, ভয় পায় যে যদি একটা কথাও তাদের পছন্দমতো না হয় বা তাদের ইচ্ছার সাথে না মেলে, তারা সেই সুযোগের ব্যবহার করে নিদারূণ দোষারোপ করবে। এই ধরনের মানুষেরা মন্দ নয় কি? এরা কি জীবন্ত দানবস্বরূপ নয়? বিদ্বেষপূর্ণ স্বভাব ও অগভীর চেতনাসম্পন্ন সকলেই জীবন্ত দানব। এবং যখন কেউ কোনো জীবন্ত দানবের সাথে যোগাযোগ করে, একমুহূর্তের অসতর্কতায় সে হয়তো তার নিজের উপরেই বিপদ বয়ে আনবে। এরকম জীবন্ত দানবেরা যদি গির্জায় উপস্থিত থাকে তাহলে তা কি আশঙ্কাজনক হবে না? (হ্যাঁ, তা হবে।) তাদের বদমেজাজ দেখানো হয়ে গেলে আর ক্রোধ প্রশমিত হয়ে গেলে এই জীবন্ত দানবেরা হয়তো কিছু সময়ের জন্য মানুষের মতো কথাবার্তা বলতে পারে আর ক্ষমা চাইতে পারে, কিন্তু তারপরেও তাদের পরিবর্তন হবে না। কেউ জানে না কখন তাদের মেজাজ খারাপ হবে আর কখন তারা আবার বদমেজাজ দেখাবে, অনর্গল তাদের অবাস্তব ধর্মবিরোধী কথাবার্তা বলতে থাকবে। তাদের অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ ও তার বহিঃপ্রকাশের লক্ষ্য প্রতিবার পৃথক হয়, যেমন হয় তাদের বিস্ফোরণের উৎস এবং পটভূমিও। যেকোনোকিছু থেকেই তারা এমন করা শুরু করে দিতে পারে। যেকোনোকিছুই তাদের অসন্তুষ্ট বোধ করাতে পারে, এবং যেকোনোকিছুই তাদের কর্কশ ও যুক্তিহীনভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করাতে পারে। কী ভয়াবহ আর সমস্যাজনক! এই মন্দ লোকেরা এমন আচরণ করে যেন তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। তারা যেকোনো সময় মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে, আর কেউ জানে না তারা কী করতে পারে। এই ধরনের মানুষদের প্রতি আমার ঘৃণা সর্বাধিক। এদের প্রত্যেককে অপসারিত করা উচিত—এদের সকলে অবশ্যই বহিষ্কার করতে হবে। এদের সাথে জড়াতে আমি চাই না। এরা চিন্তাভাবনায় বিশৃঙ্খল এবং মেজাজে পাশবিক, অবাস্তব ধর্মবিরোধিতা ও অর্থহীন কথাবার্তায় পূর্ণ, আর যখন এদের উপর কোনোকিছু এসে পড়ে, এরা সেগুলোর বিষয়ে হঠকারীভাবে উদ্গীরণ করে। … এরা স্বীকার করবে না যে এদের একটা সমস্যা আছে, বরং নিজেদের দায়িত্ব অন্যের দিকে ঠেলে দেবে। এমননকি তাদের নিজেদের আচরণের দায় অন্যের উপর চাপাবে, দাবি করবে যে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, যেন তাদের সমস্ত বদমেজাজ আর চেতনাবিহীন সমস্যা-সৃষ্টিগুলো অন্য কেউ করেছে, আর তাদের এরকম করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তারা এমন ভাব দেখায় যেন তারা আত্মরক্ষার জন্যই সেসব করছিল, সেগুলো সবই অন্যদের দোষ। যে মুহূর্তে তারা অসন্তুষ্ট বোধ করে, তারা নিজেদের ক্রোধ উগরে দিতে থাকে, অর্থহীন কথাবার্তা ছুঁড়ে দেয়, আর নিজেদের অবাস্তব ধর্মবিরোধিতাকে অর্গলমুক্ত করে। তারা এমন অভিনয় করে যেন অন্য কাউকে দোষ দেওয়া উচিত ছিল, যেন তারা নিজেরাই শুধু ভালো আর বাকি সবাই খারাপ। যত বদমেজাজই তারা দেখাক, এবং যত অবাস্তব ধর্মবিরোধই তারা প্রকাশ করুক, তা সত্ত্বেও তারা চায় অন্যেরা তাদের সম্পর্কে ভালোকথা বলবে। খারাপ কিছু করে ফেললেও তারা অন্যকে তা অনাবৃত করতে বা তাদেরকে সেটার জন্য দোষ দিতে দেয় না। যদি তুমি তাদের সম্পর্কে কোনো খারাপ কথা বলো, তারা সেই বিষয়টা নিয়ে ক্রমাগত তোমাকে বিরক্ত করে যাবে, কখনোই বিষয়টা থামতে দেবে না। এরা কারা? এরা যুক্তিবোধহীন, নিরলসভাবে বিরক্তিকর মানুষজন, আর এরা সকলেই মন্দ(বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। যে মুহূর্তে কেউ এমন কিছু বলে যা তাদের স্বার্থকে বিপন্ন করে, তখনই এই ধরনের মানুষেরা অযৌক্তিক কথা বলে আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের স্বভাব এত বিদ্বেষপূর্ণ যে অন্যরা তাদের ক্ষুব্ধ করতে এবং তাদের মোকাবিলা করতে ভয় পায়। তারা ব্রাদার-সিস্টারদের আর গির্জা-জীবনকে খুব খারাপভাবে বিরক্ত করে। শীলা প্রথম থেকেই এরকম ছিল। যখন অন্যরা ওর সমস্যাগুলো দেখিয়ে দিতো, ও এটা বিবেচনা করতো না যে তারা যা বলছে তা ঠিক কি না, আর আত্ম-অনুসন্ধানও করতো না, তার বদলে তাদের কথার সুর আর আচরণের দিকে মনোযোগ দিতো। সেগুলো পছন্দমতো না হলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতো, হয় তাদের উপর বিরক্ত হতো আর তাদের সম্বন্ধে খারাপ ধারণা তৈরী করতো, ভাবতো যে তারা ইচ্ছা করে এসব করছে আর ওকে নিচু চোখে দেখছে, অথবা নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করতো কান্নার মধ্যে দিয়ে। এর ফলে অন্যরা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছিল, তাদের সবসময়েই হয় ওকে এড়িয়ে চলতে হতো অথবা ওর সাথে মানিয়ে চলতে হতো। আমাদের সুপারভাইজার আমাদের সিঞ্চনের কাজের সমস্যাগুলো বলতো যাতে আরও ভালোভাবে দায়িত্বপালন করতে আমাদের সাহায্য করা যায়, কিন্তু শীলা মনে করতো যে সে আলাদা করে শীলারই পুরোনো ভুলের কথা তুলে আনছে, তাই সুপারভাইজারের উপরেও ওর খারাপ ধারণা তৈরী হয়েছিল, আর সমানে কাঁদতো যেন ওর সাথে অন্যায় করা হয়েছে, যার ফলে সমস্ত সমাবেশটাই ব্যাহত হতো আর সবাই বিরক্ত হতো। যখন একজন ব্রাদার নিজের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করলো, বলল যে সে মানুষের সাথে ন্যায্য আচরণ করতে পারে না, শীলা ভাবলো সে তাকে অপমান করছে আর হীনদৃষ্টিতে দেখছে, তাই ও তাকে উপেক্ষা করল, এমনকি নিজের অসন্তোষ প্রকাশের জন্য চিৎকার করতে শুরু করল। তাই কেউ ওর সাথে মোকাবিলা করতে বা ওকে ক্ষুব্ধ করতে সাহস পেতো না, ওর সাথে কথা বলতো নরম ভাবে, ওকে খুশি করে, ওর সাথে তাল মিলিয়ে। একমাত্র তবেই ও নিজের কাজ করতো। শীলা বেশ কিছু বছর ধরে এরকম করছিল। যে-ই ওর সুনাম আর মর্যাদা ক্ষুন্ন করতো বা ওর স্বার্থে আঘাত হানতো, ও তার সম্পর্কেই খারাপ ধারণা তৈরী করে ফেলতো। এমনকি নিজের নেতিবাচক হওয়ার কারণ হিসাবে ওর প্রতি অন্যদের আচরণকে দায়ী করতো, যেটা একেবারেই অযৌক্তিক আর সত্যের অপলাপ। সে কি ঈশ্বরের দ্বারা অনাবৃত যুক্তিবোধহীন মানুষদেরই একজন ছিল না? শুধুমাত্র একথা উপলব্ধি করার পরেই আমি দেখতে পেলাম, অন্যকে সন্দেহ করা আর সুনামের ব্যাপারে অতিরিক্ত মনোযোগী হওয়াই শীলার একমাত্র সমস্যা ছিল না; ও সত্যকে একেবারেই গ্রহণ করেনি এবং এক বিরক্তিকর, যুক্তিবোধহীন মানুষ ছিল। ভালো করে ভাবলাম, যখন দেখতাম যে শীলা প্রায়ই নিজের অবস্থার বিষয়ে আলোচনা করছে, নিজের ভ্রষ্টতা সম্পর্কে মন খুলে কথা বলছে, সমাবেশে নিজের বিশ্লেষণ করছে, এমনকি নিজের ভ্রষ্টতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় আর অনুতাপে ভেঙে পড়ছে, তখন ভেবেছিলাম ওর নিশ্চয়ই প্রকৃত আত্মজ্ঞান আছে এবং ও একজন সত্যসন্ধানী। আমার উপলব্ধিতে ভুল কী ছিল?

পরে, ব্রাদার-সিস্টারদের সাথে ঈশ্বরের বাক্যের আলোচনা করার পর অবশেষে আমি শীলার তথাকথিত “আত্ম-জ্ঞান” নিয়ে খানিকটা ওয়াকিবহাল হলাম। “যখন কিছু মানুষ তাদের আত্ম-জ্ঞান বিষয়ে আলোচনা করে, তারা প্রথম যা বলে তা হল, ‘আমি একটা শয়তান, একজন জীবন্ত শয়তান, এমন একজন যে ঈশ্বরের প্রতিরোধ করে। আমি তাঁকে অমান্য করেছি আর তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি; আমি একটা সাপের সমান, এমন একজন মন্দ মানুষ যাকে অভিশাপ দেওয়া উচিত।’ এটা কি প্রকৃত আত্ম-জ্ঞান? তারা শুধু সাধারণভাবেই কথা বলে। কোনো উদাহরণ দেয় না কেন? তারা যে লজ্জাজনক কাজকর্ম করেছে সেগুলোকে বিশ্লেষণের জন্য দিনের আলোয় নিয়ে আসতে পারে না কেন? কিছু অবিবেচক মানুষ তাদের কথা শুনে মনে করে, ‘এই যে, এটাই প্রকৃত আত্ম-জ্ঞান! নিজেদের শয়তানরূপে জানা, এমনকি নিজেদের অভিসম্পাত করা—কতদূর উচ্চতাতেই না এরা পৌঁছে গেছে!’ অনেকেরই, বিশেষ করে নতুন বিশ্বাসীদের, এইধরনের কথাবার্তায় বিভ্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। তারা মনে করে বক্তা একজন নির্ভেজাল মানুষ এবং আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো বোঝে, এমন একজন যে সত্যকে ভালোবাসে, এবং নেতৃত্ব দেওয়ার উপযুক্ত। তবে, একবার যখন তারা এর সাথে কিছুক্ষণের জন্য আলাপ-আলোচনা করে, তখন বুঝতে পারে যে বিষয়টা সেরকম নয়, এই ব্যক্তি তেমন নয় যেমন তারা কল্পনা করেছিল, বরং অত্যন্ত ভণ্ড ও প্রতারণাপূর্ণ, ছদ্মবেশ আর ভেক ধরায় দক্ষ, যেটা বুঝে তারা প্রচণ্ড হতাশ হয়। কীসের উপর ভিত্তি করে মনে করা যেতে পারে যে মানুষ সত্যিই নিজেদের জানে? তারা যা বলে শুধু সেটুকু বিবেচনা করলেই হবে না—মূল বিষয় হচ্ছে এটা নির্ধারণ করা যে তারা সত্যকে অনুশীলন ও গ্রহণ করতে পারে কি না। যারা প্রকৃতই সত্যকে উপলব্ধি করে, তাদের শুধু যে প্রকৃত আত্ম-জ্ঞান আছে তা-ই নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, তারা সত্যকে অনুশীলন করতে সক্ষম। তারা তাদের প্রকৃত উপলব্ধির বিষয়ে শুধু মুখেই বলে না, বরং যা বলে সত্যিই সেটা করতেও পারে। অর্থাৎ, তাদের কথা ও কাজ পরস্পরের সাথে সম্পূর্ণরূপে সঙ্গতিপূর্ণ। তারা যা বলে তা যদি সুসঙ্গত ও সমর্থনযোগ্য মনে হয়, অথচ যদি তারা তা না করে, তা যাপন না করে, তাহলে এর মাধ্যমে তারা ফরিশী হয়ে উঠেছে, তারা ভণ্ড, এবং একেবারেই তেমন মানুষ নয় যারা নিজেদের বস্তুতই জানে। অনেক মানুষই যখন সত্যের আলোচনা করে তখন তাদের কথা শুনতে বেশ সুসঙ্গত মনে হয়, কিন্তু তারা বুঝতে পারে না কখন ভ্রষ্ট স্বভাবের বহিঃপ্রকাশ করে ফেলছে। এরা কি তেমন মানুষ যারা নিজেদের জানে? মানুষ যদি নিজেদেরই না জানে, তাহলে তারা কি তেমন মানুষ হতে পারে যারা সত্যকে বোঝে? যারা নিজেদের জানে না তারা সকলেই এমন মানুষ যারা সত্যকে বোঝে না, আর যারা আত্ম-জ্ঞানের শূন্যগর্ভ কথা বলে তাদের সকলেরই নকল আধ্যাত্মিকতা রয়েছে, তারা মিথ্যাবাদী। কিছু কিছু মানুষ যখন তাত্ত্বিক মতবাদের কথা বলে তখন তাদের খুবই যুক্তিসঙ্গত শোনায়, কিন্তু তাদের আত্মার অবস্থা অসাড় ও স্বল্পবুদ্ধি, তারা অসংবেদনশীল, এবং যে কোনো বিষয়ে অনুভূতিহীন। বলা যেতে পারে যে তারা অসাড়, কিন্তু কখনো কখনো তাদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় তাদের চৈতন্যবোধ তীক্ষ্ণ। যেমন, কিছু একটা ঘটে যাওয়ার পরেই তারা সোজাসুজি নিজেদের জানতে পেরে যায়: ‘এইমাত্র আমার মধ্যে একটা ধারণা স্পষ্ট হল। আমি ভেবে দেখলাম যে এটা ছিল চাতুর্য, আমি ঈশ্বরের সাথে প্রতারণা করছিলাম।’ কিছু নির্বোধ মানুষ একথা শুনে ঈর্ষান্বিত হয়, বলে, ‘এই মানুষটা কোনো দুর্নীতি করে ফেললে তক্ষুনি তা উপলব্ধি করতে পারে, আর সে বিষয়ে মন খুলে আলোচনাও করতে পারে। এর প্রতিক্রিয়া কী দ্রুত, চৈতন্যবোধ তীক্ষ্ণ, এ আমাদের থেকে অনেক উন্নত। এ সত্যিই এমন একজন যে সত্যের অন্বেষণ করে।’ মানুষকে পরিমাপ করার এটা কি একটা যথাযথ উপায়? (না।) তাহলে মানুষ সত্যিই নিজেদের জানে কি না, তা মূল্যায়ন করার ভিত্তি কী হওয়া উচিত? শুধু তাদের মুখের কথাই কখনো সেই ভিত্তি হতে পারে না। অবশ্যই দেখতে হবে যে তাদের মধ্যে কী প্রকাশিত হচ্ছে, সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল তারা সত্যকে অনুশীলন করতে পারে কি না তা দেখা—এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সত্যকে অনুশীলন করার সামর্থ্যই প্রমাণ করে যে তারা সত্যিই নিজেদের জানে, কারণ যারা সত্যিই নিজেদের জানে তারা অনুতাপ প্রকাশ করে, এবং যদি মানুষ অনুতাপ প্রকাশ করে একমাত্র তবেই তারা নিজেদেরকে জানতে পারে(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সত্যের অন্বেষণে একমাত্র সহায়ক হল আত্মজ্ঞান)। ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করার মাধ্যমে আমি শিখলাম, যারা সত্যিই নিজেদের জানে, তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে, ভ্রষ্টতা প্রকাশিত হলে লজ্জা অনুভব করে, আর প্রকৃত অনুশোচনা করে এবং পরবর্তীকালে রূপান্তরিত হয়। বিপরীতভাবে, অন্যরা সমস্ত সঠিক কথা বলে, নিজেদের শয়তান বলে অভিহিত করে, যেন তাদের গভীর আত্ম-জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু যখন কর্তনের সম্মুখীন হয়, তারা কিছুতেই তা স্বীকার করে না এবং আত্ম-অনুসন্ধান করে না, এমনকি বারংবার আত্মপক্ষ সমর্থন করে আর অসঙ্গত তর্ক করে। এমন ধরনের মানুষদের যত বেশি আত্ম-জ্ঞান আছে বলেই মনে হোক না কেন, তা সবই আসলে চাতুর্য। আমার মনে পড়লো শীলা কেমন সবসময় নিজের অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের সাথে গল্প করতো, বলতো যে ও সম্মানের ব্যাপারে অত্যধিক মনোযোগী, আর মানুষের আচরণের দ্বারা সীমাবদ্ধ। এ কথাও বলতো যে ও প্রতারণাপূর্ণ, অন্যদের প্রতি সন্দিহান। উপর থেকে মনে হতো ও বেশ স্পষ্টবক্তা, অকপট, নিজের ভ্রষ্টতাকে শনাক্ত করতে পারে এবং আত্ম-অনুসন্ধান করতে পারে, এমনকি মাঝেমাঝে কথা বলার সময় কেঁদেও ফেলে। মনে হতো যে ও সত্যিই অনুতপ্ত এবং নিজেকে ঘৃণা করে। তাই আমি মনে করেছিলাম ও একজন সত্য-সন্ধানী। কিন্তু ও আসলে বহু বছর ধরেই নিজের এই আচরণগুলো নিয়ে কথা বলতো, অথচ কখনোই বদলেছে বলে মনে হয়নি। শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের প্রকাশের মাধ্যমেই আমি দেখতে পেলাম, শীলার তথাকথিত আত্ম-জ্ঞান শুধুই একটা অভিনয়; ও আসলে সত্যকে গ্রহণ করেনি বা নিজের ভ্রষ্টতা নিয়ে আত্ম-অনুসন্ধান করেনি। প্রায়ই নিজের সম্বন্ধে এমন বিবৃতি প্রয়োগ করতো যেগুলো শুনতে বেশ জোরালো, কিন্তু আসলে শূন্যগর্ভ, বলতো যে ওর মানবিকতা নিকৃষ্ট, ও প্রতারণাপূর্ণ, বিদ্বেষপূর্ণ, একজন খ্রীষ্টবিরোধী, ওকে নরকে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। মনে হতো যেন ওর গভীর আত্ম-জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু যখন অন্যরা ওর সমস্যাগুলো উল্লেখ করতো অথবা ওর কর্তন ও মোকাবিলা করতো, তখন ও এতটুকুও স্বীকার করতো না, এমনকি ও প্রতিরোধপূর্ণ, ক্ষুব্ধ, বিরক্ত এবং যৌক্তিকতাবিহীনও ছিল। ও কান্নায় ভেঙে পড়তো আর ঠিক-ভুল নিয়ে তর্ক করতো, অন্যদের এতদূর বিরক্ত করতো যে তারা সমাবেশ করতে বা নিজেদের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারতো না। ও গির্জার জীবন আর গির্জার কাজকে প্রচণ্ডভাবে বিশৃঙ্খল করে তুলেছিল। অতীতে, আমি সত্যকে উপলব্ধি করতাম না এবং আমার বিচক্ষণতার অভাব ছিল, তাই আমি ওর বাহ্যিক আচরণে প্রতারিত হয়েছিলাম, এমনকি ওকে এক সত্য-সন্ধানীও ভেবে বসেছিলাম। আমি কী নির্বোধ আর বোকা ছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছিলাম, শীলা এই কারণে নিজের অবস্থার বিষয়ে অন্যদের সাথে কথা বলতো না যে ও নিজের সমস্যার সমাধানের জন্য বা নিজের অবস্থার সংশোধনের জন্য সত্যের সন্ধান করছে, বরং নিছকই বলতো কারণ নিজের অভিযোগগুলো উগরে দেওয়ার জন্য ওর কাউকে দরকার ছিল, যে ওকে সান্ত্বনা দেবে আর ওর কষ্টভোগের উপশম করবে। যতজনের কাছেই নিজেকে উন্মুক্ত করে থাকুক না কেন, ও সবসময় শুধু একটা উপদ্রবই ছিল। যদি ওকে বরখাস্ত না করা হতো আর ওর অবস্থার বিশ্লেষণ না করা হতো, আমি ওর সম্বন্ধে উপলব্ধি লাভ করতে পারতাম না। ওকে একজন সহিষ্ণু, ধৈর্যশীল সিস্টার হিসাবেই ভাবতাম, এমনকি হয়তো অজ্ঞাতসারে ওর দ্বারা প্রতারিতও হতাম। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে মানুষকে ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে দেখা কত গুরুত্বপূর্ণ!

পরে, আমি ঈশ্বরের বাক্যের একটা অনুচ্ছেদ পড়লাম যা আমাকে শীলার উদ্দেশ্য এবং প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “কেউ কীভাবে বুঝবে যে একজন সত্যকে ভালোবাসে কি না? একদিক থেকে, অবশ্যই দেখতে হবে যে সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের বাক্যের উপর ভিত্তি করে নিজেকে জেনে উঠতে পারে কি না, সে আত্মানুসন্ধান করতে ও প্রকৃত পরিতাপ অনুভব করতে পারে কি না; অন্যদিকে থেকে, অবশ্যই দেখতে হবে যে সে সত্যকে গ্রহণ ও অনুশীলন করতে পারে কি না। যদি সে সত্যকে গ্রহণ ও অনুশীলন করতে পারে, তাহলে সে এমন একজন যে সত্যকে ভালোবাসে এবং ঈশ্বরের কাজকে মান্য করতে পারে। যদি সে সত্যকে শুধু উপলব্ধি করতে পারে, কিন্তু কখনোই গ্রহণ বা অনুশীলন করতে না পারে, যেমন কিছু মানুষ বলে, ‘আমি সকল সত্যই জানি, কিন্তু তা অনুশীলন করতে পারি না,’ তা প্রমাণ করে যে সে এমন একজন নয় যে সত্যকে ভালোবাসে। কিছু মানুষ স্বীকার করে যে ঈশ্বরের বাক্যই সত্য এবং মেনে নেয় যে তাদের ভ্রষ্ট স্বভাব রয়েছে, এবং এ কথাও বলে যে তারা অনুতাপ করতে ও নিজেদের নতুন করে তুলতে ইচ্ছুক, কিন্তু তারপর আর কোনোই পরিবর্তন হয় না। তাদের কথা ও কাজ তখনও আগের মতোই থেকে যায়। যখন তারা নিজেদের জানার ব্যাপারে কথা বলে, মনে হয় যেন তারা কৌতুক করছে বা চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছে। তারা একেবারেই আত্মানুসন্ধান করে না বা হৃদয়ের গভীর পর্যন্ত নিজেদের জেনে উঠতে পারে না, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, তাদের মধ্যে অনুশোচনার কোনো মনোভাবই নেই। প্রকৃতভাবে আত্মানুসন্ধান করার উদ্দেশ্যে নিজেদের কলুষতার বিষয়ে তারা সহজভাবে উন্মুক্ত হচ্ছে তো আরোই পারে না। বরং, নিজেদেরকে জেনে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অভিনয় করার মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে জানার ভান করছে। তারা এমন মানুষজন নয় যারা প্রকৃতই নিজেদের জানে বা সত্যকে গ্রহণ করে। এমন ব্যক্তিরা যখন নিজেদের জানার বিষয়ে কথা বলে, তখন তারা শুধু অভিনয় করছে; ছদ্মবেশ ধারণ ও জালিয়াতি করছে, নকল আধ্যাত্মিকতায় জড়িত হচ্ছে। কিছু মানুষ চতুর, যখন অন্যদের আত্ম-জ্ঞানের আলোচনা করতে দেখে, তারা ভাবে, ‘অন্য সকলেই নিজেকে উন্মুক্ত করে আর নিজেদের শঠতাকে বিশ্লেষণ করে। আমি যদি কিছু না বলি, তাহলে সবাই মনে করবে আমি নিজেকে জানি না। সেক্ষেত্রে, আমাকে ভান করতে হবে!’ তার পর, তারা নিজেদের চাতুর্যকে মর্মান্তিক গুরুতর বলে বর্ণনা করে, নাটকীয় ভঙ্গিতে সেটাকে চিত্রিত করে, এবং তাদের আত্ম-জ্ঞানকে মনে হয় বিশেষরকম গভীর। শ্রোতারা সকলেই মনে করে যে তারা সত্যিই নিজেদের জানে, তাই তাদের ঈর্ষার দৃষ্টিতে দেখে, যার ফলে তারা মনে করে যেন তারা মহিমান্বিত, যেন সদ্যই নিজেদের অলঙ্কৃত করেছে মাথার পিছনে আলোকবৃত্ত দিয়ে। ভান করার মাধ্যমে, এবং সেইসাথে ছদ্মবেশ-ধারণ ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত এই ধরনের আত্ম-জ্ঞান অন্যদের সম্পূর্ণভাবে ভুল পথে চালিত করে। যখন তারা এই কাজ করে, তখন তাদের বিবেক কি স্বস্তিতে থাকতে পারে? এটা কি নির্লজ্জ প্রতারণা নয়? মানুষ যদি নিজেদের জানার বিষয়ে শুধুই শূন্যগর্ভ কথা বলে, তাহলে সেই জ্ঞান যতই সুউচ্চ ও ভালো মনে হোক, তা সত্ত্বেও তারা একটুও পরিবর্তিত না হয়ে ভ্রষ্ট স্বভাব প্রকাশিত করতে থাকবে, ঠিক যেমন তারা আগে করেছে। এটা প্রকৃত আত্ম-জ্ঞান নয়। মানুষ যদি সুচিন্তিতভাবে এই উপায়ে ভান করতে ও প্রতারণা করতে পারে, তাতে প্রমাণ হয় যে তারা মোটেই সত্যকে গ্রহণ করে না, এবং তারা ঠিক অবিশ্বাসীদেরই মতো। এইভাবে নিজেদের আত্ম-জ্ঞানের বিষয়ে কথা বলার মাধ্যমে, তারা শুধু প্রবণতাকেই অনুসরণ করছে এবং অন্যদের যা ভালো লাগে তা-ই বলছে। নিজেদের সম্পর্কে তাদের জ্ঞান ও বিশ্লেষণ কি প্রতারণাপূর্ণ নয়? এ কি প্রকৃত আত্ম-জ্ঞান? একেবারেই নয়। এর কারণ হল যে তারা অন্তর থেকে নিজেদের উন্মুক্ত করছে না এবং বিশ্লেষণ করছে না, এবং ভান করার স্বার্থে তারা নকল, প্রতারণাপূর্ণ উপায়ে নিজেদের জানার বিষয়ে শুধু সামান্য কিছু কথা বলছে। তার চেয়েও গুরুতর বিষয় হল, অন্যরা যাতে তাদের শ্রদ্ধা করে এবং ঈর্ষান্বিত হয়, সেইজন্য তারা আত্ম-জ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সমস্যাগুলোকে বাড়িয়ে বলে যাতে সেগুলো আরও গুরুতর মনে হয়, যার অর্থ হল, তাদের নিজেকে উন্মুক্ত করা ব্যক্তিগত অভিপ্রায় ও লক্ষ্যের দ্বারা কলঙ্কিত। এই কাজ করার সময় তারা অপরাধবোধেও ভোগে না, ছদ্মবেশ ধারণ ও জালিয়াতিতে জড়িত হওয়ার পরেও তাদের বিবেকে অস্বাচ্ছন্দ্য অনুভূত হয় না, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ঈশ্বরকে প্রতারণা করার পরেও তারা কিছুই অনুভব করে না, এবং তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনাও করে না। এই ধরনের মানুষ কি অনমনীয় নয়? তাদের যদি অপরাধবোধ না হয়, তাহলে তারা কি কখনও অনুশোচনা অনুভব করতে পারে? প্রকৃত অনুশোচনা ছাড়া কি কেউ দৈহিক ইচ্ছা ত্যাগ করতে ও সত্যের অনুশীলন করতে পারে? প্রকৃত অনুশোচনা ছাড়া কি কেউ সত্যিকারের পরিতাপ করতে পারে? অবশ্যই না। যদি তারা এমনকি অনুতপ্তও না হয়, তাহলে আত্ম-জ্ঞানের বিষয়ে কথা বলা কি অযৌক্তিক নয়? এ কি শুধু ছদ্মবেশ ধারণ ও প্রতারণাই নয়?(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সত্যের অন্বেষণে একমাত্র সহায়ক হল আত্মজ্ঞান)। ও নিজের অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করতো, আর সমাবেশে আত্ম-অনুসন্ধান করার জন্য ঈশ্বরের বাক্যকে ব্যবহার করতো। প্রচণ্ড গুরুতর শব্দের মাধ্যমে নিজেকে বর্ণনা করতো। বাইরে থেকে মনে হতো ওর গভীর আত্ম-জ্ঞান রয়েছে, ও ভীষণরকম অনুতপ্ত আর নিজেকে ঘৃণা করে, কিন্তু এগুলো ছিল অন্যের সামনে পরিধান করার মুখোশ, চালাকি করে তাদের মনে করানোর জন্য যে ও সত্যকে গ্রহণ করেছে এবং ওর আত্ম-জ্ঞান আছে। এই তথাকথিত আত্ম-জ্ঞান ছিল অন্যদের প্রতারিত করার ও বোকা বানানোর রাস্তা, অন্যদের মনে করানো যে ও কত সাহসের সাথে নিজেকে উন্মুক্ত করছে, যাতে তারা শুধু যে ওকে চিনতে পারে না তা-ই নয়, বরং ওর প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধাও জন্মায়। তাছাড়াও, প্রতিবার যখনই শীলা ভ্রষ্টতা প্রকাশ করতো, নিজেকে বর্ণনা করার জন্য ও ঈশ্বরের খ্রীষ্টবিরোধীদের উদ্ঘাটনের কথা টেনে আনতো, বলতো যে ও সুনাম আর মর্যাদার সন্ধান করছিল, খ্রীষ্টবিরোধীদের পথে হাঁটছিল, মর্যাদার আকাঙ্ক্ষা ওর জীবনকে গ্রাস করেছে, আর ও যদি অনুতপ্ত না হয়, তাহলে এই আকাঙ্ক্ষা ওকে মেরে ফেলবে। কিন্তু যখনই কোনো পরিস্থিতি ওর সুনাম ও মর্যাদাকে বিপদের মুখে ফেলে দিতো, ও নিজের পুরোনো রাস্তায় ফিরে যেত, তাই বহু বছর ধরে নিজের অবস্থার উপর আলোচনা সত্ত্বেও ও কোনো পরিবর্তন অর্জন করতে পারেনি। নেতারা অনেকবার ওর সমস্যাগুলোর দিকে নির্দেশ করেছে আর ওর সাথে আলোচনা করেছে, কিন্তু ও শোনেনি আর ওর কোনো পরিবর্তনও হয়নি। এমনকি ওর মধ্যে প্রতিরোধ সৃষ্টি হতো, ও অনর্গল তর্ক করতো আর অসঙ্গত যুক্তি দিতো। যখন দেখতো যে অন্যরা কেমন নিজেদের অহংকে সরিয়ে রেখে সত্যের সন্ধান করতে সক্ষম, তখন তাদের দক্ষতাগুলো থেকে শিক্ষা নেয়নি, বরং ভাবতো যে তারা শুধুমাত্র সৎ প্রকৃতি নিয়ে জন্মেছে, এবং ও যে সত্যের অনুশীলন করতে পারে না আর সবসময় অন্যদের প্রতি সন্দিহান তার কারণ হল ঈশ্বর ওকে একটা সৎ প্রকৃতি লাভের আশীর্বাদ প্রদান করেননি। ও নিজের শয়তানোচিত স্বভাবকে ঘৃণা করেনি, বরং ঈশ্বরকে দোষারোপ করতো, তাঁর প্রতি নিন্দাপূর্ণ মনোভাব অনুভব করতো আর বলতো যে তিনি ধার্মিক নন। এ থেকেই দেখা যায় যে শীলার সারমর্ম ছিল শয়তানের, এবং সে অবিশ্বাস্যরকম অদ্ভুত ও অযৌক্তিক ছিল। ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারা প্রকাশিত না হলে আমি তার সাথে একজন সত্য-সন্ধানীর মতোই আচরণ করতাম।

পরে, একটা সমাবেশে, ঈশ্বরের বাক্যের এই অনুচ্ছেদটা আমার সামনে এলো। “যারা সত্যকে ভালোবাসে একমাত্র তারাই ঈশ্বরের গৃহের অন্তর্ভুক্ত; শুধু তারাই প্রকৃত ব্রাদার ও সিস্টার। তুমি কি মনে করো যারা প্রায়ই সমাবেশে যায় তারা সকলেই ব্রাদার আর সিস্টার? সবসময় তা নয়। কারা ব্রাদার-সিস্টার নয়? (যারা সত্যের বিষয়ে বীতশ্রদ্ধ, যারা সত্যকে গ্রহণ করে না।) যারা সত্যকে গ্রহণ করে না আর সত্যের বিষয়ে বীতশ্রদ্ধ, তারা সকলেই মন্দ ব্যক্তি। তারা সকলেই বিবেক ও চেতনাশূন্য মানুষ। তাদের কেউই সেই মানুষদের মধ্যে পড়ে না যাদের ঈশ্বর উদ্ধার করেন। তারা মানবিকতাহীন মানুষ, তাদের কাজে অবহেলাপ্রবণ এবং আচরণে অনিয়ন্ত্রিত। তারা শয়তানোচিত দর্শনে জীবনযাপন করে, চাতুর্যপূর্ণ কৌশল প্রয়োগ করে, এবং অন্যদের ব্যবহার করে, মিষ্টি কথা দিয়ে বিভ্রান্ত করে, ও প্রতারণা করে। তারা ন্যূনতম সত্যও গ্রহণ করে না, এবং তারা ঈশ্বরের গৃহে অনুপ্রবেশ করেছে শুধুই আশীর্বাদ লাভের উদ্দেশ্যে। তাদের আমরা অবিশ্বাসী বলি কেন? কারণ তারা সত্যের বিষয়ে বীতশ্রদ্ধ, এবং সত্যকে গ্রহণ করে না। যখনই সত্যের আলোচনা করা হয়, তাদের আগ্রহ চলে যায়, তারা বিতৃষ্ণায় ভরে ওঠে, সেটা নিয়ে আলোচনা শোনা সহ্য করতে পারে না, তা একঘেয়ে মনে করে, এবং বসে থাকতে পারে না। তারা স্পষ্টতই বিশ্বাসহীন ও অবিশ্বাসী। এবং তুমি আর যা-ই করো, এদেরকে ব্রাদার-সিস্টার হিসাবে বিবেচনা কোরো না। … তারা যদি সত্যের প্রতি আগ্রহীই না হয়, তাহলে কীভাবে সত্যের পালন করবে? তাহলে কী নিয়ে তারা বাঁচে? নিঃসন্দেহে, তারা শয়তানের দর্শনে বাঁচে, তারা সবসময় কূটকৌশল ও ধূর্ততার প্রয়োগ করে, স্বাভাবিক মানবতার জীবন তাদের নেই। তারা কখনোই ঈশ্বরের প্রার্থনা করে না বা সত্যের সন্ধান করে না, বরং মনুষ্যোচিত চালাকি, কৌশল ও বেঁচে থাকার দর্শন দিয়েই সবকিছু পরিচালনা করে—ফলে তাদের অস্তিত্ব হয়ে ওঠে ক্লান্তিকর ও বেদনাদায়ক। … যারা সত্যকে ভালোবাসে না, তারা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। যারা সত্যকে একেবারেই গ্রহণ করতে পারে না তাদের ব্রাদার-সিস্টার বলে অভিহিত করা যায় না। যারা সত্যকে ভালোবাসে এবং গ্রহণ করতে সক্ষম শুধু তারাই ব্রাদার ও সিস্টার। তাহলে, যারা সত্যপ্রেমী নয়, তারা কারা? তারা সকলেই অবিশ্বাসী। যারা সত্যকে একেবারেই গ্রহণ করে না তারা সত্যের বিষয়ে বীতশ্রদ্ধ এবং সত্যকে পরিত্যাগ করেছে। আরো সুনির্দিষ্টভাবে, তারা সকলেই হল গির্জায় অনুপ্রবেশকারী অবিশ্বাসী। যদি তারা সমস্তরকম মন্দকাজ করতে সমর্থ হয় এবং গির্জার কাজে বিশৃঙ্খলা ও বিঘ্ন সৃষ্টি করে, তাহলে তারা শয়তানের সহচর। তাদের অপসারিত ও বহিষ্কৃত করা উচিত। ব্রাদার বা সিস্টার হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়। যারা এদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে তারা সকলেই অত্যন্ত মূর্খ ও অজ্ঞ(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে আমি উপলব্ধি করলাম, সত্যিকারের ব্রাদার-সিস্টার হল তারা, যারা সত্যকে ভালোবাসে এবং সত্যকে গ্রহণ করতে পারে। তারা সত্যিই ঈশ্বরের জন্য নিজেদের ব্যয় করতে পারে, এবং তাদের সত্যকে অনুশীলনের সাক্ষ্য রয়েছে। তারা হয়তো গভীর আত্ম-জ্ঞানের কথা বলতে পারে না, কিন্তু তারা সত্যপ্রেমী, এবং যত বেশি ঈশ্বরের বাক্য বোঝে ততই তা অনুশীলন করে। যদিও তারা হয়তো কখনো কখনো অধর্ম করতে পারে, ভ্রষ্টতার প্রকাশ করতে পারে এবং নেতিবাচক হতে পারে, কিন্তু যেহেতু তারা সত্যের সন্ধান করে, তাই কর্তন, মোকাবিলা, বা ব্যর্থতার সম্মুখীন হলে তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে তা গ্রহণ করতে পারে, সত্যের সন্ধান করতে পারে এবং আত্ম-অনুসন্ধান করতে পারে। যখন নিজেদের সমস্যাগুলো শনাক্ত করে, তারা ধীরে ধীরে সেগুলো সংশোধন করে উন্নত হতে পারে। শুধু এই ধরনের মানুষই প্রকৃত ব্রাদার ও সিস্টার। যারা সত্যকে গ্রহণ করে না, এমনকি ঘৃণা করে, তাদের ব্রাদার-সিস্টার বলা যায় না। যদি তারা নিকৃষ্ট মানবিকতার অধিকারী হয় এবং সবরকমের মন্দ কাজ করে যা গির্জার কাজকে ব্যাহত করে, তাহলে তারা মন্দকর্মকারী এবং খ্রীষ্টবিরোধী, এমনকি ব্রাদার বা সিস্টার বলে ডাকার যোগ্য নয়। এমনকি যদি গির্জায় থাকেও, তারা শুধুই ঈশ্বরের গৃহে অনুপ্রবেশকারী নকল বিশ্বাসী। যতদিন ধরেই বিশ্বাস করুক, শেষ পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনাবৃত ও বহিষ্কৃত হবে। বাহ্যিকভাবে, শীলা বিরাট কোনো মন্দ কাজ করেছিল বলে মনে হয়নি, কিন্তু তার সমস্ত কাজই লোকজনের চিন্তাভাবনাকে বিশৃঙ্খল করেছিল এবং তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছিল, আর সে ক্রমাগতই এটা করে চলেছিল। অন্যরা যতরকমভাবেই তার সাথে আলোচনা করুক, সমর্থন করুক, তার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি, বরং সে তর্ক-বিতর্ক করেছে আর অযৌক্তিক আচরণ করেছে। এ থেকেই দেখা গেছিল যে শীলা সত্যকে একেবারেই গ্রহণ করেনি এবং প্রকৃতিগতভাবেই ছিল সত্যের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। সে শয়তানের সমগোত্রীয়, আমাদের সিস্টারদের একজন নয়। অতীতে, সত্যের এই দিকটা আমি বুঝতে পারিনি, আমার বিচক্ষণতার অভাব ছিল। আমি ভাবতাম যতক্ষণ কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে ও তাঁর নাম স্বীকার করতে পারে, ততক্ষণ তাকে ব্রাদার বা সিস্টার হিসাবে গণ্য করা উচিত। আমি অন্ধভাবে তাদের সহানুভূতি দেখাতাম আর সহ্য করতাম, বোকার মতো তাদের দয়া দেখাতাম আর না বুঝেই সমর্থন করতাম। ফলে, আমার অনেক চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল। আমি কী বোকা আর বিভ্রান্ত ছিলাম।

এখন, যখন শীলাকে বিচ্ছিন্ন করা হল, আমি বুঝতে পারলাম ঈশ্বর কত ন্যায়পরায়ণ। যারা সত্যের সন্ধান করে না আর অযৌক্তিক আচরণ করে, তাদের গির্জায় কোনো স্থান থাকতে পারে না, এবং তারা পরিশেষে ঈশ্বরের দ্বারা অনাবৃত হবে। আমি ঈশ্বরের শুভ অভিপ্রায়ও বুঝতে পারলাম: আমার শিক্ষালাভের জন্য ঈশ্বর নানান পরিস্থিতির আয়োজন করেছেন। আমাকে সেগুলোর সদ্ব্যবহার করা আরম্ভ করতে হবে। আগামী দিনে, আমাকে অবশ্যই সত্যের প্রতি আরও সময় ও উৎসাহ অর্পণ করতে হবে, এবং ঈশ্বরের বাক্যের আতসকাঁচের মধ্যে দিয়ে বিষয়গুলোকে দেখতে ও সম্পাদন করতে হবে।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

আমি আমার বিশ্বাসে দৃঢ় ছিলাম না

আমার পরিবার সবসময়ই ছিল খুব গরিব, এবং আমি সমাজে নির্দিষ্ট মর্যাদা পাওয়ার জন্য একজন ব্যাঙ্ক এক্সিকিউটিভ হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম, যাতে টাকার...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন