অন্তিম সময়ে ঈশ্বর কেন আত্মারূপে না এসে অবতাররূপে আবির্ভূত হন?

17-04-2023

যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, ত্রাণকর্তা, অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারের কাজের জন্য সত্য প্রকাশ করেছেন, তাই অনেক মানুষ প্রকৃত পথের সন্ধান এবং অনুসন্ধান করেছে, এবং তারপর পরিত্রাতার প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা দেখেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি কতটা অবিশ্বাস্যভাবে কর্তৃত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী, সেগুলি প্রকৃতই সত্য, এবং নিশ্চিত হয়েছে যে এটি পবিত্র আত্মার কণ্ঠস্বর, কোনো সাধারণ মানুষ এই বাক্যগুলি উচ্চারণ করতে পারে না। ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনে, তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছে, ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে আনীত হয়েছে, এবং মেষশাবকের বিবাহের ভোজে অংশ নিয়েছে। ঈশ্বরের মনোনীত মানুষরা প্রত্যহ ঈশ্বরের বাক্য ভোজন, পান এবং তার স্বাদ গ্রহণ করে, যা তাদের হৃদয়কে আরও অধিক উজ্জ্বল করে। তারা শুধুমাত্র ঈশ্বরের উপস্থিতি উপভোগ করে না, তার বাক্যর প্রদীপ্তিও লাভ করে, তা থেকে বহু সত্য শেখে এবং অনেক কিছু উপলব্ধি করে। বাইবেলের অনেক রহস্যও তারা জানতে পারে, যা খুবই আনন্দের। তারা বিশ্বাসে আপ্লুত হয় এবং আরও গভীর হয় ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা। চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির নিপীড়ন, গ্রেফতার ও নিগ্রহের মুখে ঈশ্বরের মনোনীত অনেক মানুষ আজও নির্ভীক। তারা তাদের পরিবার এবং জাগতিক বন্ধন ছেড়ে, ঈশ্বরের সাক্ষ্য হিসাবে সুসমাচার ভাগ করে নেওয়ার দায়িত্বে আবদ্ধ। তারা চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির নির্মম গ্রেফতার ও নিপীড়নের শিকার হয়, কিন্তু সাহসিকতার সাথে, নির্ভীকভাবে ঈশ্বরকে অনুসরণ করে এবং তাঁর সাক্ষ্য বহন করে চলে। তারা পরাজিত তো হয়ই নি, এবং অবশ্যই নিশ্চিহ্নও হয়ে যায় নি। তারা ঈশ্বরের সাক্ষ্য দুর্দান্তভাবে বহন করেছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার এখন বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং তার অনেকগুলিতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনেছে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দিকে ফিরে চলেছে। যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ অনলাইনে অনুসন্ধান করছে তাদের সংখ্যা বাড়ছে। এতে প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী সম্পূর্ণরূপে সার্থক হয়: “বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মনুষ্যপুত্রের আগমন হবে(মথি ২৪:২৭)। ঠিক যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছেঃ “সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে আমি আমার কাজ করছি, এবং প্রাচ্যে অবিরাম বজ্রপাত চলছে, যাতে সব রাষ্ট্র এবং সম্প্রদায় কেঁপে উঠছে। আমারই কন্ঠস্বর মানুষকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমিই সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছি, যাতে সকল মানুষ আমার কন্ঠস্বরের দ্বারা পরাজিত হয়, এই স্রোতে তারা সামিল হয়, এবং আমার কাছে তারা আত্মসমর্পণ করে। কারণ দীর্ঘদিন হল আমি আমার মহিমা সমগ্র বিশ্ব থেকে পুনরুদ্ধার করেছি এবং প্রাচ্যে তাকে নতুন করে প্রকাশ করেছি। আমার মহিমা প্রত্যক্ষ করতে কে না ব্যাকুল হয়? আমার প্রত্যাবর্তনের জন্য কে না অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে? আমার পুনরাবির্ভাবের আকুল আকাঙ্ক্ষা করে না এমন কে আছে? আমার মাধুর্যের জন্য কে না উদগ্রীব? আলোকের সম্মুখে আসতে কে না চায়? কনানের সমৃদ্ধির প্রতি কে না আগ্রহী? মুক্তিদাতার প্রত্যাবর্তনের জন্য কে না অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে? যিনি ক্ষমতায় মহান, তাঁর উপাসনা কে না করে? সমগ্র বিশ্ব জুড়ে আমার কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়বে। আমি আমার নির্বাচিত মানুষদের সম্মুখীন হবো এবং তাদের উদ্দেশ্যে আরো কথা বলবো। শক্তিশালী বজ্র যেমন পর্বত আর নদীতে আলোড়ন সৃষ্টি করে, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড আর মানবজাতির কাছে আমার উচ্চারিত বাক্যও তেমন। তাই আমার বাক্য মানবজাতির কাছে সম্পদ হয়ে উঠেছে, এবং সব মানুষই আমার বাক্য সযত্নে লালন করছে। সেই বজ্রপাতের ঝলকে পূর্ব থেকে পশ্চিম আলোকিত। আমার বাক্য এমনই যে মানুষ তা উপেক্ষা করতে পারে না, আবার একই সাথে তার গভীরতার পরিমাপও করতে পারে না, অথচ তার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পায়। আমার আবির্ভাবে সকল মানুষই আনন্দিত এবং উচ্ছ্বসিত, যেন কোনো শিশু সদ্য জন্মলাভ করেছে। আমার কণ্ঠস্বরের সাহায্যে আমি সকল মানবজাতিকে আমার সম্মুখে আনবো। এরপর আমি আনুষ্ঠানিকভাবে মানবজাতির মধ্যে প্রবেশ করব, যাতে তারা আমার উপাসনা করতে আসে। আমার মহিমার বিকিরণে এবং আমার বাক্যের সাহায্যে আমি বাধ্য করবো যাতে সব মানুষ আমার সম্মুখে আসে এবং প্রাচ্যের বজ্রপাত দেখে, এবং সেই সঙ্গে দেখতে পায় যে আমি প্রাচ্যের ‘অলিভ পর্বত’-এ অবতরণ করেছি। তারা দেখতে পাবে যে, আমি ইতিমধ্যেই দীর্ঘদিন এই পৃথিবীতে আছি এবং তা ইহুদিদের পুত্র হিসাবে নয়, প্রাচ্যের বজ্রপাত হিসাবে। কারণ অনেকদিন হল আমি পুনরুত্থিত হয়েছি, মানবজাতির মধ্য থেকে প্রস্থান করেছি, এবং তারপর মানবজাতির মধ্যে পুনরাবির্ভূত হয়েছি আপন মহিমায়। আমিই সে, যাকে অগণিত যুগ আগে থেকেই উপাসনা করা হচ্ছে, এবং আমিই সেই শিশু যাকে অগণিত যুগ আগে ইসরায়েলীরা পরিত্যাগ করেছিল। আমিই হলাম বর্তমান যুগের সর্বমহিম সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! সকলে আমার সিংহাসনের সামনে এসে আমার মহিমময় মুখাবয়ব দেখুক, আমার কন্ঠস্বর শুনুক এবং আমার কীর্তি দেখুক। এই হল আমার সার্বিক ইচ্ছা; এই হল আমার পরিকল্পনার শীর্ষবিন্দু এবং সমাপ্তি, আর আমার ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য: যাতে সব রাষ্ট্র আমার উপাসনা করে, সব মুখেই আমার স্বীকৃতি শোনা যায়, সকল মানুষের বিশ্বাস আমাতেই স্থিত হয় এবং সকলেই আমার অধীনস্থ হয়(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সপ্ত বজ্রের নিনাদ—ভবিষ্যদ্বাণী করছে যে রাজ্যের সুসমাচার মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে)

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য, এক মহান আলোর মত, ইতিমধ্যে পূর্ব থেকে পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি দেশ থেকে ঈশ্বরের মনোনীত মানুষরা সুসমাচার প্রচার করে, তাঁর সাক্ষ্য দেয়, এবং ইতিমধ্যেই শয়তানকে পরাজিত করা এবং সমস্ত গৌরব অর্জনের জন্য সানন্দে ঈশ্বরের প্রশংসা করে। দুর্যোগের আগেই ত্রাণকর্তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আবির্ভূত হন এবং কাজ শুরু করেন, এবং জয়ীদের একটি দল গড়ে তোলেন। তাঁর রাজ্যের সুসমাচার প্রতিটি জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং বিপর্যয়গুলি সেই অনুযায়ীই ঘটে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের ঘর থেকে শুরু হওয়া বিচারের কাজটি ইতিমধ্যেই দুর্দান্ত সফল, এবং তার পরে, ঈশ্বর এই বিশ্বের বিচার এবং শাস্তির জন্য সমস্ত ধরণের বিপর্যয় ব্যবহার করে চলেছেন। এই বিপর্যয়গুলি রাজ্যের সুসমাচার প্রসারিত করতে, পাপ এবং শয়তানের প্রভাব থেকে অধিক মানুষকে উদ্ধার করতে সাহায্য করে। এর আরেকটি দিক হল যে ঈশ্বর এই অন্ধকার, মন্দ যুগকে শাস্তি দিতে এবং সমাপ্ত করতে, ঈশ্বরের বিরোধী সমস্ত অশুভ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে এই দুর্যোগগুলি ব্যবহার করেন। এই হল অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারকার্যের ফল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, ত্রাণকর্তা, অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন, মহান কাজ করেছেন, এবং তিনি বিশ্বকে আন্দোলিত করেছেন। কিন্তু ধর্মীয় জগতের অনেকেই এখনও সেই অতিকায় লাল ড্রাগন, চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা বিভ্রান্ত, এবং এখনও ধর্মের মধ্যেই খ্রীষ্টবিরোধী শক্তি দ্বারা শৃঙ্খলিত। তারা এই ধারণাকেই আঁকড়ে ধরে আছে যে আত্মার আকারে মেঘে আসীন হয়ে প্রভুর নেমে আসা উচিত, মনুষ্যপুত্র হিসাবে দেহরূপে তাঁর প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়। এই কারণেই তারা নিশ্চিত যে মেঘে আসীন না হয়ে আসা যে কেউই ভুয়ো, মনুষ্যপুত্র হিসাবে তাঁর যে কোন সাক্ষ্যই মিথ্যা, এ কেবল মানুষে বিশ্বাস। গির্জার প্রতি পবিত্র আত্মার বাক্য অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে, অথবা ঈশ্বর-কণ্ঠের অনুসন্ধান এবং তা শুনতেই তারা কেবল ব্যর্থ হয় না, বরং তারা ধর্মীয় খ্রীষ্টবিরোধীদের অনুসরণ করে, ক্রমাগতই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার, অপমান, এবং আবির্ভাব ও কাজের নিন্দা করে। এই কারণেই তারা এখনও প্রভুকে স্বাগত জানায়নি, কিন্তু বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, কাঁদছে এবং আর্তনাদ করছে এবং কেউ জানে না তারা বাঁচবে নাকি মারা যাবে। এ প্রশ্ন অনেকেরই। প্রভু যীশু তাঁর পুনরুত্থানের পর চল্লিশ দিনের জন্য আত্মার আকারে আবির্ভূত হন, তাই তাঁর আত্মা রূপেই ফিরে আসা উচিত। তা হলে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কেন আত্মা হিসাবে আবির্ভূত না হয়ে, মনুষ্যপুত্র-রূপী অবতার হবেন? অনেক মানুষ এই প্রশ্ন করে, এবং অনেকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করবেন না কারণ তিনি দেহরূপে আবির্ভূত, আত্মারূপে নন। কী লজ্জার ব্যাপার! তারা তাদের পরিত্রাণের একমাত্র সুযোগ হারাচ্ছে, এ জন্য তারা অনন্তকাল অনুশোচনা করবেন। এবার আমি এই প্রশ্নটির জবাবে কিছু আলোচনা শেয়ার করব কেন ঈশ্বর দেহরূপে আবির্ভূত হয়েছেন, আত্মারূপে নন, অন্তিম সময়ে।

প্রথমত, কীভাবে প্রভু আবির্ভূত হন এবং কাজ করেন অন্তিম সময়ে, আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে প্রভু যীশু দেহরূপে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন মনুষ্যপুত্র হিসাবে অন্তিম সময়ে তাঁর কাজ সমাধা করতে। এটি প্রভু যীশুর মুখনিসৃত একাধিক ভবিষ্যদ্বাণীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, কোন মানুষের দ্বারা নির্ধারিত কিছু নয়। প্রভু প্রকৃতপক্ষে আত্মায় বা অবতার আকারে মনুষ্যপুত্র হিসাবে ফিরে আসবেন কিনা তা বহু পূর্বেই ঈশ্বরের দ্বারা নির্ধারিত, এবং এতে মানুষের কোন ভূমিকা নেই। মানুষ হিসাবে, আমরা যা করতে পারি তা হল সমর্পণ করা, আমাদের নিজেদের ধারণা এবং কল্পনার ভিত্তিতে কোন চিন্তাকে সীমাবদ্ধ না করা। এমন কি ঈশ্বরের পূর্বনির্ধারিত আবির্ভাবের ধরণ যদি মানুষের ধারণার সাথে না মেলে, তা সব থেকে ভাল, এবং আমাদের পরিত্রাণের জন্য সবচেয়ে অর্থবহ এবং উপকারী। এটি ভুল হতে পারে না। আমাদের কল্পনার ভিত্তিতে আমরা এটির সম্মুখীন হতে পারি না। আমাদের অবশ্যই জ্ঞানী কুমারী হতে হবে, মূর্খ নয়। প্রভুর আবির্ভাবকে স্বাগত জানানোর এটিই একমাত্র উপায়। মানুষ তাদের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা মেনে চলায় জোর দিতেই পারে, মেঘের উপর আসীন প্রভুর আগমন ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, অবতার-রূপী মনুষ্যপুত্রকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এই মনোভাবের ফলাফল কী হবে? তারা অবশ্যই বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে এবং দণ্ড পাবে, নিজেদের ধ্বংসকে আমন্ত্রণ জানাবে। আমরা যদি জ্ঞানী কুমারী হই, তা হলে প্রভুর ইচ্ছা অনুযায়ী আমাদের কাজ করা উচিত, প্রভুকে স্বাগত জানাতে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বরের খোঁজ করা এবং শোনা, তাঁর আকার যাই হোক না কেন, তাঁকে সানন্দে বরণ এবং তাঁর কাছে সমর্পণ করা, এবং নিজেদের পছন্দ প্রয়োগ না করা। অন্যথায় আমরা মূর্খ কুমারী প্রতিপন্ন হব, বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ব, কাঁদব এবং আর্তনাদ করব। সুতরাং, অন্তিম সময়ে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটে? ঈশ্বর কি আত্মা রূপে আবির্ভূত হন নাকি মনুষ্যপুত্র রূপে? প্রথমেই আলোচনা করা যাক, ঈশ্বরের আত্মার সাথে যোগাযোগ করা সহজ না কি মনুষ্যপুত্রের সাথে? আত্মার মাধ্যমে আমাদের সাথে কথা বলা কি তাঁর পক্ষে সহজ, নাকি দেহরূপের মাধ্যমে? অনেকের মতামত হল এই যে মনুষ্যপুত্রের পক্ষে দুইই সহজ। সেটা ঠিক। এই কারণেই ঈশ্বর দেহধারণ করে অনুগ্রহের যুগে আবির্ভুত হয়ে কাজ করেছিলেন। প্রভু যীশু ছিলেন মনুষ্যপুত্র। মানুষের মধ্যেই তাঁর জীবন যাপন, ভোজন, পান এবং বসবাস। অনেক মানুষ প্রভুকে অনুসরণ করেছিলো, সহকারিতা করেছিলো, কথা বলেছিলো এবং তাঁর সাথে আলাপ-আলোচনা করেছিলো। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং সহজে, কোনো, বাধা বা সীমাবদ্ধতা ছাড়াই। তারা সকলেই প্রভু যীশুর মাধুর্য প্রত্যক্ষ করেছিল। প্রভুর দ্বারা লালিত, পালিত এবং সমর্থিত হয়ে মানুষ অনেক সত্য শিখতে সক্ষম হয়েছিল। অনেক সত্য প্রকাশ করার পর প্রভু ক্রুশবিদ্ধ হন, মানবজাতির পাপস্খালনের বলি হয়ে ওঠেন। যে কেউ প্রভু যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের পাপের ক্ষমা পেতে পারে, স্বীকার এবং অনুতাপের মাধ্যমে। তারপর তারা তাদের পাপ ক্ষমা হওয়ার শান্তি এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারে এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করতে পারে। প্রভুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়া, পুনরুত্থান এবং তারপর স্বর্গে আরোহণের পর, আরও বেশি সংখ্যক লোক তাঁর সুসমাচার ভাগ করে নিতে শুরু করেছে, ত্রাণকর্তা হিসাবে ঈশ্বরের মূর্ত প্রতীক যীশু খ্রীষ্টের সাক্ষ্য বহন করেছে। প্রভু যীশুর সুসমাচার অনেক আগেই বিশ্বের প্রতিটি দেশে পৌঁছেছিল। এতেই প্রমাণ হয় যে মনুষ্যপুত্র হিসাবে ঈশ্বর দেহধারণ করে ঈশ্বরের মানবজাতিকে মুক্ত ও উদ্ধার করা সর্বাধিক কার্যকর হয়েছে। ঈশ্বরের আত্মাকে মানুষ দেখতে বা স্পর্শ করতে পারে না—তাঁর সাথে এইভাবে যোগাযোগ করতে পারে না। ঈশ্বরের আত্মার সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারি না। ঈশ্বরের আত্মা যখন কথা বলেন, তখন সবাই ভয়ে কাঁপতে থাকে। এই পথে কীভাবে আমরা যোগাযোগ করতে পারি? উপরন্তু, ঈশ্বরের আত্মা কোনোভাবেই ক্রুশবিদ্ধ হতে পারেন না। মানুষ যা দেখতে বা স্পর্শ করতে পারে না তেমন কিছু কীভাবে ক্রুশবিদ্ধ হতে পারে, তাই না? এটি আমাদের দেখায় যে মনুষ্যপুত্র হিসাবে কাজ করা ঈশ্বরের পক্ষে সর্বোত্তম। প্রভু যীশু যখন মানবজাতিকে মুক্ত করার কাজ সমাপ্ত করেছিলেন তখন ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করা হয়েছিল। এটি সকলের দেখার জন্য স্পষ্ট। প্রভু যীশুর কাজের তথ্য থেকে আমরা নিশ্চিত হতে পারি, যে মানবজাতিকে ত্রাণের জন্য ঈশ্বরের কাজ, তা সে তাঁর মুক্তির কাজ বা অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ হোক, অবতাররূপে মনুষ্যপুত্র হওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত। এটি সর্বোত্তম ফলাফল দেয়। তদুপরি, ঈশ্বরের অন্তিম সময়ে মনুষ্যপুত্র হিসাবে অবতাররূপ ধারণ সর্বতোভাবে প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী সার্থক করে। “মানবপুত্রের আগমন হবে”, “মানবপুত্র আসবেন”, এবং “মানবপুত্র তাঁর সেই দিনে”। বাইবেল যারা ভালো করে জানে তারা দেখতে পাবে যে প্রভুর বাক্য পূর্ণ হয়েছে। তাহলে মনুষ্যপুত্রের আবির্ভাব ও কাজের বিষয়ে কেন এত মানুষ তাদের ধারণাকে আঁকড়ে ধরে আছে? কেন অনেক মানুষ এখনও এই জেদ ধরে আছে যে আত্মার আকারে প্রভু একটি মেঘে আসীন হয়ে নেমে আসবেন? প্রকৃতপক্ষে এটি মূর্খতা ও অজ্ঞতা। ঈশ্বর আবির্ভূত হন এবং মনুষ্যপুত্র হিসাবে কাজ করেন, বিনয়ী ও প্রচ্ছন্ন ভাবে, শুধু এই কারণে নয় যে এটি সবচেয়ে কার্যকর, উপরন্তু যাতে আমরা বুঝতে পারি ঈশ্বরের স্বভাব, এবং তাঁর প্রচ্ছন্নতা ও বিনয় কত মনোরম। মনুষ্যপুত্র হিসাবে ঈশ্বর সরাসরি মানুষের সম্মুখীন হন, আমাদের সাথে মুখোমুখি, ভোজন, পান করেন এবং আমাদের সাথে জীবনযাপন করেন, আমাদের পালন, দিকনির্দেশ এবং আমাদের উদ্ধারের সত্য প্রকাশ করেন। এই হল ঈশ্বরের মহান ভালোবাসা! মানুষ কেন এটি দেখতে পায় না? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ঠিক যেমন বলেছেন: “ঈশ্বরের দ্বারা মানুষের উদ্ধার সরাসরি আত্মার পদ্ধতি ব্যবহার করে করা হয় না এবং আত্মার পরিচয়কে প্রত্যক্ষভাবে ব্যবহার করে করা হয় না, কারণ মানুষ তাঁর আত্মা দেখতে বা স্পর্শ করতে পারে না, কাছেও যেতে পারে না। তিনি যদি সরাসরি আত্মার পদ্ধতি ব্যবহার করে মানুষকে উদ্ধার করার চেষ্টা করতেন, মানুষ তাঁর পরিত্রাণ লাভ করতে পারতো না। ঈশ্বর যদি বাহ্যিকভাবে সৃষ্ট এক মানবের রূপ ধারণ না করতেন, তাহলে পরিত্রাণ লাভের কোনো উপায় মানুষের কাছে থাকত না। কারণ মানুষের তাঁর কাছে যাওয়ার উপায় নেই, ঠিক যেমন যিহোবার মেঘের কাছে কেউ যেতে পারত না। শুধুমাত্র একজন সৃষ্ট মানুষ হয়ে, অর্থাৎ তিনি যে দেহে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন সেই দেহে তাঁর বাক্য স্থাপন করে তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে বাক্য অনুযায়ী কার্য নির্বাহ করতে পারেন। একমাত্র তখনই মানুষ ব্যক্তিগতভাবে তাঁর বাক্য দেখতে এবং শুনতে পারে, এবং অধিকন্তু তাঁর বাক্যের অধিকারে প্রবেশ করতে পারে, এবং এই উপায়ে পুরোপুরি উদ্ধার পেতে পারে। ঈশ্বর যদি দেহ ধারণ না করতেন, তাহলে রক্ত-মাংসের কোনো জীব এত মহৎ পরিত্রাণ লাভ করত না, এবং একজনও উদ্ধার পেত না। ঈশ্বরের আত্মা যদি মানবজাতির মাঝে সরাসরি কার্য নির্বাহ করতেন, তাহলে হয় সমগ্র মানবজাতি ভূপতিত হত, অথবা ঈশ্বরের সংস্পর্শে আসার কোনো উপায় না থাকায়, তারা সম্পূর্ণরূপে শয়তানের বন্দী হয়ে পড়ত। … একমাত্র দেহরূপ ধারণ করেই ঈশ্বর মানুষের পাশে জীবনযাপন করতে পারেন, পৃথিবীর দুঃখকষ্ট অনুভব করতে পারেন, এবং এক সাধারণ দেহে জীবনযাপন করতে পারেন। একমাত্র এই উপায়েই তিনি মানুষকে বাস্তবসম্মত পথের যোগান দিতে পারেন, যা সৃষ্ট জীব হিসেবে তাদের প্রয়োজন। ঈশ্বরের অবতাররূপের মাধ্যমেই মানুষ ইশ্বরের কাছ থেকে সম্পূর্ণ পরিত্রাণ লাভ করে, তার প্রার্থনার উত্তর হিসেবে সরাসরি স্বর্গ থেকে নয়। কারণ, মানুষ রক্ত-মাংসের জীব হওয়ায়, ঈশ্বরের আত্মাকে প্রত্যক্ষ করার, বা তাঁর আত্মার কাছে যাওয়ার কোনো উপায় তার নেই। মানুষ কেবলমাত্র ঈশ্বরের দেহরূপেরই সংস্পর্শে আসতে পারে, এবং কেবল এই উপায়েই মানুষ সকল পথ ও সকল সত্য উপলব্ধি করতে পারে, এবং সম্পূর্ণ পরিত্রাণ লাভ করতে পারে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪))। “কলুষিত মানুষের কাছে সর্বাধিক মূল্যবান হল সেই কাজ যা নিখুঁত বাক্য, অন্বেষণের উদ্দেশ্যে সুস্পষ্ট লক্ষ্য, এবং যা দেখা যায় ও স্পর্শ করা যায়, তা সরবরাহ করে। কেবলমাত্র বাস্তবসম্মত কাজ ও সময়োচিত পথনির্দেশ মানুষের রুচির উপযুক্ত, এবং একমাত্র প্রকৃত কাজই মানুষকে তার ভ্রষ্ট ও কলুষিত স্বভাব থেকে উদ্ধার করতে পারে। এ একমাত্র অবতাররূপ ঈশ্বরের দ্বারাই অর্জন করা সম্ভব; একমাত্র অবতাররূপ ঈশ্বরই পারেন মানুষকে তার পূর্বের ভ্রষ্ট ও কলুষিত স্বভাব থেকে উদ্ধার করতে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপী ঈশ্বরের পরিত্রাণই ভ্রষ্ট মানবজাতির অধিক প্রয়োজন)

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য খুবই স্পষ্ট। শুধুমাত্র অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারের কাজের জন্য দেহধারণ করে ঈশ্বর মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধ ও উদ্ধার করতে পারেন, এবং আমাদের একটি মনোরম গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেন। আমরা ব্যক্তিগতভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে আমাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করছি, একত্রে পাশাপাশি বসবাস করছি, সত্যের সহকারিতা এবং ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বদাই তিনি আছেন। মানবজাতির অনাচার তিনি নিরীক্ষণ করেন, এবং তাঁর লিখিত বাক্যের দ্বারা আমাদের সত্যের যোগান দেন। প্রকৃতপক্ষে আমরা ঈশ্বরের বাক্য উপভোগ করি এবং আমাদের আত্মা মুক্ত হয়। ঈশ্বর যখন আমাদের সাথে সত্যের সহকারিতা করেন, তখন আমরা তাঁকে প্রশ্ন করতে পারি, এবং তিনি ধৈর্য সহকারে সাড়া দেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মানবজাতির মধ্যে বসবাস করেন, কথা বলেন এবং আমাদের সাথে সহকারিতা করেন। আমাদের প্রতিটি শব্দ, আমাদের প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি, এমনকি আমাদের প্রতিটি চিন্তা সব কিছুই ঈশ্বরের চোখের সামনে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। তিনি যে কোনো সময় বা স্থানে সত্য প্রকাশ করতে পারেন, আমাদের শয়তানোচিত স্বভাব এবং তাঁর সম্পর্কে আমাদের ধারণা ও কল্পনাকে প্রকাশ করে, তিনি আমাদের বিশ্বাসের ত্রুটি এবং সাধনা সম্পর্কে আমাদের ভুল দৃষ্টিভঙ্গি সংশোধন করেন। এইভাবে দেহরূপী ঈশ্বর ব্যক্তিগতভাবে আমাদের পালন ও পরিচালনা করেন, সরাসরি আমাদের শেখান এবং সমর্থন করেন। এটা আমাদের জন্য একটি বিস্ময়কর, হৃদয়ে সাড়া জাগানো অভিজ্ঞতা। ঈশ্বর অবিশ্বাস্যভাবে মনোরম এবং অতি সহজেই তাঁর কাছে পৌঁছানো যায়। ঈশ্বরের অগণিত মনোরম দিক আমরা দেখতে পাই এবং আমাদের হৃদয়ের গভীর থেকে তাঁকে ভালোবাসি। খ্রীষ্ট অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন এবং বহু মহান কাজ করছেন, কিন্তু তিনি অত্যন্ত বিনয়ী এবং প্রচ্ছন্ন, কখনোই নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে দেখান না বা জাহির করেন না। আমাদের সাথে ব্যবহারে তিনি খুবই সহজ এবং উষ্ণ, কখনও কাউকে তাঁর কথা শুনতে বাধ্য করেন না। দম্ভ বা অহংকারের লেশমাত্র নেই খ্রীষ্টের। খ্রীষ্টের বাক্য বিশ্বাসযোগ্য, মিথ্যা, ভান এবং কৌশল থেকে মুক্ত। আমাদের সাথে তিনি পরিবারের সদস্যদের মতো আচরণ করেন, কথা বলেন, আন্তরিকভাবে আলাপ করেন। এটি আমাদের জন্য খুব হৃদয়গ্রাহী। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে খ্রীষ্টের মানবতার মধ্যে কোন কলুষ নেই। তিনি এক স্বাভাবিক মানবতা—এক দয়ার্দ্র, পবিত্র মানবতার অধিকারী। খ্রীষ্ট যে কোন স্থানে, যে কোন সময় সত্য প্রকাশ করতে পারেন, আমাদের লালনপালন, সমর্থন এবং পরিচালনা করতে। আমরা আরও নিশ্চিত যে খ্রীষ্ট শুধুমাত্র স্বাভাবিক মানবতার অধিকারী নন, পরন্তু তিনিএক ঐশ্বরিক সারসত্যেরও অধিকারী। তিনি সত্যই ঈশ্বরের মূর্ত রূপ, দেহরূপে বাস্তবিক ঈশ্বর। এখন পর্যন্ত খ্রীষ্টের অনুসরণ করে, আমরা জানি যে খ্রীষ্টই সত্য, পথ এবং জীবন। খ্রীষ্ট ছাড়া, অন্য কোন বিশিষ্ট বা মহান ব্যক্তি সত্য প্রকাশ করতে এবং মানবজাতিকে উদ্ধার করতে পারে নি। অবতার রূপে, ঈশ্বরের যা আছে এবং তিনি যা, তার অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই। আমরা খ্রীষ্টের ঐশ্বরিক সারসত্য দেখি, এবং আমরা দেখি যে ঈশ্বরের স্বভাব পবিত্র এবং ধার্মিক। আমরা আরও দেখি যে ঈশ্বর কত বিনয়ী এবং প্রচ্ছন্ন, এবং তিনি অত্যন্ত দয়ালু এবং সুন্দর। এটি আমাদের ঈশ্বরের কাছাকাছি নিয়ে আসে, তাঁর কাছে সমর্পণ এবং তাঁকে ভালোবাসার মাধ্যমে। মানবজাতিকে উদ্ধারের জন্য দেহরূপে ঈশ্বরের কাজ খুবই অর্থবহ। এটি কেবল ঈশ্বর এবং মানুষের মধ্যে ব্যবধান ঘোচায় না, এটি আমাদের ব্যবহারিক জ্ঞান এবং ঈশ্বর উপলব্ধির সুযোগ দেয়। এটা ঈশ্বরের বাস্তব কাজের মাধ্যমে হয় যে আমরা ধীরে ধীরে সত্য উপলব্ধি করতে পারি এবং বাস্তবে প্রবেশ করি, অহংকার এবং প্রতারণার মতো অনেক কলুষিত স্বভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করি। আমরা একটি প্রকৃত মানবসদৃশ জীবন যাপন করি এবং ঈশ্বরের পরিত্রাণের অনুগ্রহ অর্জন করি। অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজের মাধ্যমে, আমরা খুব গভীরভাবে অনুভব করি দেহরূপে ঈশ্বরের কাজ কতটা ব্যবহারিক, কতটা অকৃত্রিম! ঈশ্বর যদি অবতার না হতেন, তাহলে আমরা কখনই ঈশ্বরের কাছ থেকে এমন বাস্তব সিঞ্চন এবং জীবন ধারণের সাহায্য পেতাম না, সত্যের উপলব্ধি ও অর্জন, পাপ দূরীকরণ এবং ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা তো আরোই কম হত। এটি কেবলমাত্র দেহরূপে ঈশ্বরের বিচারের কাজ সম্পাদন করার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে।

তাই এখন সকলের স্পষ্টভাবে দেখা উচিত যে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের দেহধারণ, সত্য প্রকাশ এবং তাঁর বিচারের কাজ সম্পূর্ণরূপে মানবজাতিকে শুদ্ধ করার এবং উদ্ধারের জন্য। ঈশ্বর যদি আত্মারূপে আবির্ভূত এবং কাজ করেন, আমরা, ভ্রষ্ট মানুষ, সত্য উপলব্ধি এবং লাভের সুযোগ পাব না, এবং আমরা কখনই আমাদের ভ্রষ্টাচার বন্ধ করতে এবং ঈশ্বরের দ্বারা ত্রাণে সক্ষম হব না। এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে ধর্মীয় জগতের অনেকেই দেখেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন, এবং স্বীকার করেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আছে, কিন্তু যেহেতু তিনি সাধারণ ও স্বাভাবিক চেহারার মনুষ্যপুত্র, তাই তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার ও নিন্দা করে, এই বলে যে তিনি একজন মানুষ, ঈশ্বর নন। এমনকি তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজকে উন্মাদের মতো প্রতিরোধ, নিন্দা এবং অপমান করে। আমরা নিরুপায় হয়ে ২,০০০ বছর আগের কথা ভাবতে পারি, যখন প্রভু যীশু কাজ করতে এসেছিলেন। যেহেতু প্রভু যীশুর রূপ স্বাভাবিক, ফরিশীরা তাঁর সাথে এমন আচরণ করলো যেন তিনিএকজন গড়পড়তা মানুষ, তারা বিচার করে বলে, “এ কি নাজারেথের লোক নয়?” “এ কি সেই ছুতারের ছেলে নয়?” তিনি যত সত্যই প্রকাশ বা যত অলৌকিক কাজই করুন না কেন, ফরিশীরা সে বিষয়ে কোনো খোঁজ করেনি এবং তাঁকে গ্রহণও করে নি। পরিবর্তে, তারা প্রভু যীশুর বিচার ও নিন্দা করেছিল, এই বলে যে তিনি দৈত্যদের রাজপুত্রের সাহায্যে দৈত্যদের তাড়াচ্ছিলেন, এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্রুশে বিদ্ধ করে, সবচেয়ে জঘন্য পাপ করেছিল। তারা ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত এবং দণ্ডিত হয়েছিল। ঈশ্বর এখন আবির্ভূত হয়েছেন এবং দুইবার মনুষ্যপুত্র হিসাবে দেহরূপে কাজ করেছেন। তাহলে কেন মানুষ তাঁকে চিনতে পারে না, বরং খ্রীষ্টকে প্রতিরোধ করে, নিন্দা করে এবং প্রত্যাখ্যান করে? তাদের কোথায় ভুল হচ্ছে? কারণ তারা কেবল, খ্রীষ্টের বহিরঙ্গে নজর দেয়, তাঁকে দেখে সাধারণ এক ব্যক্তি হিসাবে। অনুসন্ধান না করায় তারা খ্রীষ্টের প্রকাশ করা সমস্ত সত্যকে চিনতে পারে না। খ্রীষ্টের ঐশ্বরিক সারসত্য তারা দেখতে পায় না, কিন্তু শুধুই বিরোধিতা এবং তাদের মনুষ্যসুলভ ধারণার কারণে খ্রীষ্টের নিন্দা করে। তাই তারা এর জন্য দণ্ডিত ও অভিশপ্ত হয়। বাইবেলে বলা হয়েছে, “যে সেই পুত্রে বিশ্বাস অর্পণ করেছে, শাশ্বত জীবনে তারই অধিকার কিন্তু পুত্রের আনুগত্য যে স্বীকার করে নি, সেই জীবন লাভে সে হবে বঞ্চিত, ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসায় তার উপর(যোহন ৩:৩৬)। যে মনুষ্যপুত্র সত্য প্রকাশ করেন যে কেউ তাঁর নিন্দা এবং তাঁকে প্রতিহত করে সে পবিত্র আত্মাকে নিন্দার পাপ করছে, এবং এই দুনিয়ায় বা পরকালেও তাকে ক্ষমা করা যাবে না। জ্ঞানী কুমারীদের অবশ্যই সত্যের সন্ধান করতে এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বরে মনোযোগ দিতে শিখতে হবে। অন্তিম সময়ে প্রভুর প্রত্যাবর্তনে মানুষ্যপুত্র হিসাবে, তিনি কথা বলেন এবং কাজ করেন। যারা তাঁকে গ্রহণ করে, তারাই সত্যকে ভালোবাসে। যারা মনুষ্যপুত্রকে প্রত্যাখ্যান, প্রতিরোধ এবং নিন্দা করে তারা সবাই সত্যকে ঘৃণা করে। মনুষ্যপুত্রের আবির্ভাব ও কাজের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রত্যেককে তারা আসলে কেমন, তা প্রকাশ করেন। এটি ঈশ্বরের প্রজ্ঞা, এবং তাঁর সর্বশক্তিমানতার প্রকাশ।

শেষ করার আগে, আসুন ঈশ্বরের বাক্যের কয়েকটি অংশ দেখি।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “এবার ঈশ্বর কার্যসম্পাদন করতে কোনো অধ্যাত্মশরীরে আসেননি, এসেছেন সাধারণ রূপে। সর্বোপরি, এটা শুধু ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতারের চেহারা নয়, এই দেহরূপের মধ্যে দিয়েই ঈশ্বর রক্তমাংসের শরীরে ফিরছেন। অত্যন্ত সাধারণ এক দেহরূপ। তুমি এমন কিছু দেখবে না যাতে তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করতে পারো, কিন্তু তুমি তাঁর থেকে এমন অনেক সত্য লাভ করতে পার, যা এতকাল অজানা ছিল। তুচ্ছ এই দেহরূপই ঈশ্বরের সকল সত্যের বাক্যধারণ করে, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং ঈশ্বরের সম্পূর্ণ স্বভাব মানুষের বোঝার মত করে প্রকাশ করে। তোমার কি স্বর্গের ঈশ্বরকে দেখতে খুব ইচ্ছা করে না? তোমার কি স্বর্গের ঈশ্বরকে উপলব্ধি করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নেই? তোমার কি ভীষণ ইচ্ছা নেই মানবজাতির গন্তব্য কোথায় দেখার? এই সমস্ত রহস্যের কথা তিনিই তোমাকে জানাবেন—সেই সকল রহস্য যে বিষয়ে অন্য কোনো মানুষ বলতে পারবে না তোমায়, পাশাপাশি তিনিই তোমায় সেই সকল সত্য জানাবেন যা তোমার বোধাতীত। তিনিই তোমার সেই রাজ্যের প্রবেশ পথ, আর তিনিই হলেন নতুন যুগের পথপ্রদর্শক। এমনই সাধারণ এক দেহরূপ ধারণ করে আছে বহু অতল রহস্য। তাঁর কার্যসমূহ তোমার কাছে হয়ত দুর্জ্ঞেয়, কিন্তু তাঁর কাজের সমস্ত উদ্দেশ্য তোমায় বোঝানোর জন্য যথেষ্ট, যে তিনি শুধুই সাধারণ দেহরূপ নন, যা মানুষ তাঁকে মনে করে। কারণ তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার এবং অন্তিম সময়ের মানবজাতির প্রতি ঈশ্বরের যত্নের পরিচয় বহন করছেন। যদিও তাঁর বাক্য শুনে তোমার মনে হবে না স্বর্গ মর্ত্য কম্পিত হচ্ছে, যদিও তাঁর দু-চোখে তুমি দেখবে না অগ্নিদৃষ্টি, যদিও তাঁর লৌহদণ্ডের শাসন তোমাকে পেতে হবে না, কিন্তু তুমি তাঁর বাক্যে শুনবে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত এবং জানবে ঈশ্বর মানবজাতির প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করছেন; দেখতে পাবে ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাব এবং তাঁর প্রজ্ঞা এবং সর্বোপরি অনুধাবন করবে সমগ্র মানবজাতির প্রতি তাঁর উৎকণ্ঠা। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ হচ্ছে মানুষকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ দেওয়া যে স্বর্গের ঈশ্বর মানুষের মধ্যে বাস করছেন, এবং মানুষকে সক্ষম করে তোলা ঈশ্বরকে জানতে, মান্য করতে, সম্মান করতে এবং ভালবাসতে। ঠিক এই কারণেই তিনি দ্বিতীয়বার দেহরূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন। যদিও বর্তমানে মানুষ ঈশ্বরকে দেখছে মানুষের মতোই, অবিকল মানুষের চেহারায় দুই চোখ, এক নাক বিশিষ্ট এক ঈশ্বর—সাদামাটা এক ঈশ্বর, পরিশেষে ঈশ্বর তোমাদের প্রত্যক্ষ করাবেন যদি এই মানুষটার অস্তিত্ব না থাকত, স্বর্গ ও পৃথিবী চূড়ান্ত এক টালমাটালে পড়ত; যদি এই মানুষটা না থাকত, স্বর্গ হয়ে উঠত নিষ্প্রভ, পৃথিবী জুড়ে বিশৃঙ্খলা চলত এবং সমস্ত মানবজাতি দুর্ভিক্ষ আর মহামারীর কবলে পড়ত। তিনি তোমাদের প্রত্যক্ষ করাবেন যদি ঈশ্বরের অবতার অন্তিম সময়ে তোমাদের উদ্ধার করতে না আসতেন তাহলে সমস্ত মানবজাতিকে অনেক আগেই নরকে পচিয়ে মারতেন ঈশ্বর; যদি এই অবতাররূপের অস্তিত্ব না থাকত, তোমরা চিরপাপী হয়ে থাকতে, আর চিরকাল তোমরা শবদেহের মতোই হয়ে থাকতে। তোমাদের জেনে রাখা দরকার এই দেহরূপের অস্তিত্ব না থাকলে সমস্ত মানবজাতি এক অনিবার্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন হত এবং বুঝতে পারত অন্তিম সময়ে মানবজাতির উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের দেওয়া ভয়ঙ্করতম শাস্তি এড়ানো সম্ভব নয়। এই সাধারণ দেহরূপ ভূমিষ্ঠ না হলে, তোমরা জীবনভর বেঁচে থাকতে না পেরে জীবনের জন্য আর মরে যেতে না পেরে মৃত্যুর জন্য করুণা ভিক্ষা করতে; এই দেহরূপের অস্তিত্ব না থাকলে আজ তোমরা সত্যকে উপলব্ধি করে ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে এসে দাঁড়াতে পারতে না, বরং গুরুভার পাপের কারণে ঈশ্বরের দণ্ড ভোগ করতে। তোমরা কি জানো দেহরূপে ঈশ্বরের আগমন না ঘটলে কেউই পরিত্রাণের সুযোগ পেত না; এই দেহরূপে অবতীর্ণ না হলে কবেই ঈশ্বর এই বার্দ্ধক্যপ্রাপ্ত যুগের অন্ত ঘোষণা করে দিতেন। এরপরও কি তোমরা ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতাররূপকে প্রত্যাখ্যান করবে? এই সাধারণ মানুষটির থেকে এত সুবিধা পাওয়ার পরেও কেন তোমরা সানন্দে আবাহন করছ না তাঁকে?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তুমি কি জানতে? ঈশ্বর মানুষের মধ্যে এক মহান কাজ করেছেন)

অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের সমস্ত কাজ এই সাধারণ মানুষটির হাতেই সঞ্চালিত হবে। তিনি সমস্তই তোমার হাতে অর্পণ করবেন, তদুপরি, তোমার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত কিছুর সিদ্ধান্ত তিনিই নিতে পারেন। তোমরা তাঁকে যেমন ভাবো তেমন কি তিনি হতে পারেন, এতই সামান্য যে তাঁর কথা উল্লেখ করাই মূল্যহীন? তাঁর সত্য কি তোমাদের আস্থা অর্জনের পক্ষে যথেষ্ট নয়? তাঁর সমস্ত কর্মের সাক্ষ্য কি তোমাদের বিশ্বাস অর্জনের পক্ষে যথেষ্ট নয়? নাকি তাঁর দেখানো পথে তোমার চলা ততটা যোগ্য নয়? সবই বলা এবং করার পরেও কী কারণে তোমরা তাঁকে ঘৃণা করো, তাঁকে দূরে ঠেলে দাও, তাঁকে এড়িয়ে যাও? ইনিই সেই মানুষ যিনি সত্য প্রকাশ করেন, ইনিই সেই মানুষ যিনি সত্য সরবরাহ করেন এবং ইনিই তোমাদের অনুসরণীয় পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা এখনো এইসকল সত্যের মধ্যে ঈশ্বরের কাজের চিহ্ন খুঁজে পেতে অক্ষম—এমনটা কি হতে পারে? যীশুর কাজ ছাড়া মানব জাতি ক্রুশ অতিক্রম করতে পারত না, কিন্তু বর্তমানের অবতারের আগমন না ঘটলে ক্রুশ অতিক্রমকারীরা নতুন যুগে যাওয়ার জন্য কখনোই ঈশ্বরের অনুমোদন অর্জন করতে পারত না। এই সাধারণ মানুষটির আগমন ছাড়া তোমরা কখনোই ঈশ্বরের সত্যিকারের অবয়ব প্রত্যক্ষ করতে পারতে না, সেই যোগ্যতাও অর্জন করতে পারতে না, কারণ তোমরা সকলে এমন বস্তু যা বহু কাল আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতার আবির্ভাব হেতু, ঈশ্বর তোমাদের মার্জনা করেছেন, তোমাদের প্রতি করুণা প্রদর্শন করেছেন। পরিশেষে, তোমাদের সামনে আমাকে এই কথাগুলি বলতেই হবে: ঈশ্বরের অবতার এই সাধারণ মানুষটি, তোমাদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটিই সেই মহান কাজ যা মানুষের মধ্যে ঈশ্বর ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তুমি কি জানতে? ঈশ্বর মানুষের মধ্যে এক মহান কাজ করেছেন)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

ঈশ্বরের অবতারকে তাঁর অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ সম্পাদন করতে হবে কেন?

আমরা ইতিমধ্যেই কয়েকবার অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারের কাজ নিয়ে কথা বলেছি। আজ আমরা এই বিষয়টার দিকে দৃষ্টিপাত করতে চাই যে এই বিচারের কাজ কে...

অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচার কার্য মানবজাতিকে কীভাবে শুদ্ধ করে এবং রক্ষা করে?

মানুষ বুঝতে পেরেছে যে পৃথিবীর ওপরে মহা বিপর্যয় নেমে এসেছে আর যারা আশা করছে প্রভু মেঘে চড়ে আসবেন তারা উদ্বিগ্ন হয়ে অপেক্ষা করছে। তবে বহু বছর...

যখন প্রভু যীশু ক্রুশের উপর বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” তখন প্রকৃতপক্ষে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?

প্রভু যীশুর প্রতি যাদের বিশ্বাস আছে তারা মনে করে যখন প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল”, তিনি বলতে চাইছিলেন ঈশ্বরের...

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আস্থা রাখা কি প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা?

অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাবের পর ত্রিশ বছর কেটে গেছে এবং ১৯৯১ সালে কাজ ও সত্যের প্রকাশ শুরু করেছিলেন। তিনি প্রকাশ...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন