ধর্মগুরুদের অনুসরণ করার অর্থই কি ঈশ্বরকে অনুসরণ করা?
আজ থেকে দু’হাজার বছর আগে আমাদের পরিত্রাতা প্রভু যীশু মুক্তির কার্য সম্পন্ন করতে এসেছিলেন এবং তাঁর উন্মত্ত নিন্দা করেছিল প্রধান পুরোহিত, শাস্ত্রজ্ঞ, এবং ফরিশীরা যারা ছিল ইহুদি ধর্মাবলম্বী। কারণ অধিকাংশ ইহুদি তাদের ধর্মগুরুদের পুজো করত, সেই খ্রীষ্টবিরোধী ধর্মগুরুদের সাথে তারাও প্রভু যীশুকে প্রত্যাখ্যান ও তাঁর নিন্দা করেছিল, আর শেষপর্যন্ত তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার পিছনেও তাদের হাত ছিল। এই ভয়ঙ্কর পাপের ফলে তাদের উপর ঈশ্বরের অভিশাপ ও দণ্ড নেমে আসে যা দু’হাজার বছর ধরে সমগ্র ইসরায়েলের সর্বনাশের কারণ। অন্তিম সময়ে প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অবতার হিসাবে ফিরে এসেছেন, সত্য প্রকাশ করছেন এবং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করার জন্য বিচারকার্য করছেন। তিনি ধর্মীয় নেতাদের উন্মত্ত তিরস্কার ও প্রতিরোধেরও সম্মুখীন হন। তারা সমস্ত গির্জা তালাবন্ধ করে দিয়েছে, সত্যের পথযাত্রী বিশ্বাসীদের পথরোধ করে দাঁড়িয়েছে, ফলে প্রচুর মানুষ সত্যের অনুসন্ধান করতে ও তাকে গ্রহণ করতে ভয় পেয়েছে, যদিও তারা স্পষ্টই দেখেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই প্রকৃত সত্য, শক্তিমান, নির্ভরযোগ্য এবং ঈশ্বরের মুখনিঃসৃত। এই কারণে অনেকেই প্রভুকে স্বাগত জানানোর সুযোগ হারিয়েছে এবং বিপর্যয়ের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। প্রভুকে স্বাগত জানানোর বিষয়ে কোথায় ভুল হল তাদের? কারণ তারা তাদের ধর্মীয় নেতাদের তোষামোদ করে! তারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরই ধর্মগুরুদের স্থাপন করেছিলেন এবং ঈশ্বরই তাদের ব্যবহার করছেন, তাদের মান্য করাই ঈশ্বরকে মান্য করা, তাই তারা সম্পূর্ণভাবে তাদের অনুসরণ করে চলে, তাদের কথায় নিজেকে সমর্পিত করে, যেন তা ঈশ্বরের বাক্য। অনেকে এটাও মনে করে যে প্রভু যীশু তাঁর প্রত্যাবর্তনের সময় নিশ্চয়ই গির্জার যাজকদের সর্বপ্রথমে অবহিত করবেন, তাই তাদের কাছ থেকে প্রত্যাবর্তনের কথা না শুনতে পাওয়ার অর্থই হচ্ছে তিনি ফিরে আসেননি। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজের বিষয়ে অনুসন্ধান করার চেষ্টাও করে না, বরং ধর্মগুরুদের পক্ষ নিয়ে তাঁর নিন্দা করে। আর তাই তারা উন্নীত হওয়ার সুযোগ হারিয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। এটা কার দোষ? এর কোনো সহজ উত্তর নেই। যে ফরিশীরা দীর্ঘকাল আগে প্রভু যীশুকে প্রতিরোধ ও তাঁর নিন্দা করেছিল, ঈশ্বর তাদের অভিশাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু আজকের ধর্মীয় বিশ্বের অনেকেই তাদের সেই বেদনাদায়ক পরিণতি থেকেও শিক্ষা নেয়নি। কারণ তারা তাদের যাজকদের অন্ধভাবে উপাসনা করে। এখনো তারা তাদের সাথে ফিরে আসা প্রভু যীশুর নিন্দা করছে, আবারও ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করছে। এটা খুবই লজ্জাজনক! তাহলে, ধর্মগুরুদের কি সত্যিই ঈশ্বর প্রতিষ্ঠা করেছেন? তাদের কাছে নিজেকে সমর্পিত করার অর্থই কি ঈশ্বরকে অনুসরণ করা? এই বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক বিশ্বাসী মনে করে যে ধর্মীয় নেতা, পাদ্রী, যেমন পোপ, বিশপ, যাজক এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রভু যীশুই নিযুক্ত করেছেন ও ব্যবহার করেছেন, এবং তাদের কর্তৃত্ব আছে বিশ্বাসীদের নেতৃত্ব দেওয়ার, তাই তাদের মান্য করাই ঈশ্বরের মান্য করা। এই বিশ্বাসের ভিত্তি কোথায়? প্রভু যীশু কি বলেছেন যে সকল ধর্মীয় নেতাদের ঈশ্বরই প্রতিষ্ঠা করেছেন? তিনি কখনোই বলেননি। তাদের কাছে কি পবিত্র আত্মার সাক্ষ্য, বা আত্মার কাজের প্রমাণ আছে? নেই। এর অর্থ হচ্ছে এই ধারণাটি সম্পূর্ণরূপে মানুষের কল্পনা। এ বিষয়ে একটু চিন্তা করা যাক। এই ধারণা যদি সত্যি হয় যে ধর্মীয় নেতারা ঈশ্বরের দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত, তাহলে এটা নিশ্চয়ই সেই ইহুদি প্রধান যাজক, শাস্ত্রজ্ঞ এবং ফরিশীদের জন্যেও সত্যি যারা প্রভু যীশুকে প্রতিরোধ এবং তাঁর নিন্দা করেছিল? প্রভু যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার কাজে তাদের সমর্থন করাও কি তাহলে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য? স্পষ্টতই এই দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক! আমরা বাইবেল থেকেও দেখতে পাই যে প্রত্যেক যুগেই ঈশ্বর তাঁর কাজের জন্য কিছু ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেন যাতে তাঁর কর্ম সম্পাদন সহজ হয়। ঈশ্বর স্বয়ং সেই সকল ব্যক্তিকে আহ্বান করেন ও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন এবং ঈশ্বরের বাক্যেই তা দেখতে পাওয়া যায়। তারা কখনোই অন্য মানুষের দ্বারা নিযুক্ত হয় না, এবং তারা কখনোই মানুষের কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত হয় না। বিধানের যুগের কথা মনে করে দেখুন, যখন ঈশ্বর ইসরায়েলীদের নেতৃত্ব দিয়ে মিশর থেকে বার করে আনার জন্য মোশিকে ব্যবহার করেছিলেন। যিহোবা ঈশ্বরের নিজের কথাতেই এর প্রমাণ আছে। যিহোবা ঈশ্বর মোশিকে বলেছিলেন, “ইসরায়েলীদের আর্তনাদ আমি শুনেছি, মিশরীরা যেভাবে তাদের নির্যাতন করছে, তা আমি দেখেছি। আমি এখন তোমাকে ফারাও-এর কাছে পাঠাব এবং আমার প্রজা ইসরালেয়ীদের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনব” (যাত্রাপুস্তক ৩:৯-১০)। অনুগ্রহের যুগে প্রভু যীশু পিতরকে গির্জার মেষপালক হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন, এবং তিনি নিজেও এর সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রভু যীশু পিতরকে বলেছিলেন, “যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি কি আমায় ভালোবাসো? … আমার মেষগুলিকে চরাও” (যোহন ২১:১৭)। “আর আমি তোমাকে বলছি, তুমি পিতর অর্থাৎ পাথর। এই পাথরের উপরেই আমি আমার মণ্ডলী নির্মাণ করব। পাতালের শক্তি তাকে পরাভূত করতে পারবে না। ঐশরাজ্যের চাবিগুলি আমি তোমাকেই দেব। এই পৃথিবীতে যা কিছু তুমি আবদ্ধ করবে স্বর্গেও তা আবদ্ধ হবে, আর পৃথিবীতে যা কিছু তুমি মুক্ত করবে স্বর্গেও তা মুক্ত হবে” (মথি ১৬:১৮-১৯)। প্রত্যেক যুগেই ঈশ্বর যাদের তাঁর কাজে ব্যবহার করেন, তিনি স্বয়ং তাদের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাদের হয়ে সাক্ষ্য দেন, আর সেই পবিত্র আত্মার কর্মের দ্বারাই তা প্রমাণিত হয়। বিধানের যুগে এবং অনুগ্রহের যুগে কখনো কখনো ঈশ্বর যাদের ব্যবহার করেছিলেন তারা ছিল ব্যক্তিগতভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং ঈশ্বর তাদের হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কখনো কখনো তিনি অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। যখন নিজে প্রত্যক্ষভাবে নিযুক্ত করেননি, নবীদের মাধ্যমে তিনি তা প্রকাশ করেছিলেন, অথবা পবিত্র আত্মার কাজের মধ্যেই তার প্রমাণ ছিল। এটা অনস্বীকার্য। আজকের ধর্মীয় বিশ্বে, পোপ, বিশপ, পুরোহিত, যাজক এবং প্রবীণরা যে পদে অধিষ্ঠিত, সেই পদ কে দিয়েছে তাদের? ঈশ্বরের বাক্যে অথবা পবিত্র আত্মার কর্মে কি তার কোনো প্রমাণ আছে? আত্মা কি তাদের হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছে? একেবারেই না! প্রকৃতপক্ষে, গির্জার সমস্ত ধর্মীয় নেতারাই প্রধানতঃ ধর্মীয় শিক্ষালয় ও ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন এবং ধর্মতত্ত্বে উপাধি পেয়েছেন। সেই শংসাপত্র হাতে নিয়ে তাদের বিভিন্ন গির্জায় পাঠানো হয়েছে বিশ্বাসীদের নেতৃত্ব দিতে। কেউ কেউ প্রতিভাধর এবং সুবক্তা, এবং তাদের কাজ ভালভাবে শিখে নেয়, তাই উচ্চ-নেতৃত্ব তাদের নিয়োগ বা সুপারিশ করে এবং তাদের পদোন্নতি হয়। ধর্মীয় জগতের প্রায় সমস্ত যাজকই এইভাবে তাদের পদ লাভ করে, কিন্তু তাদের অধিকাংশের মধ্যেই পবিত্র আত্মার কাজের অভাব রয়েছে। খুব সামান্য শতাংশের মধ্যে হয়ত আত্মার কাজের কিছু অংশ আছে, কিন্তু তাদের কাছেও তাঁর সাক্ষ্য নেই। তাহলে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে ঈশ্বর যাদের ব্যবহার করেন, বা যাদের সাক্ষ্য দেন, এরা সেই ব্যক্তি নয়। খুব স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে যে এরা অন্য লোকের দ্বারা নির্বাচিত এবং প্রতিপালিত, তাহলে তারা কেন এই দাবি করে যে তারা ঈশ্বরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত? এটা কি সত্যের অপলাপ নয়? এটা কি নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচরণ এবং নিজেদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া নয়? এর পরিণাম কী? এটা কি বিশ্বাসীদের ঠকানো এবং তাদের ক্ষতি করা নয়? এমনকি কিছু ধর্মগুরু পিতরের প্রতি প্রভু যীশুর বাক্যকে উদ্ধৃত করে নির্লজ্জভাবে দাবি করে যে প্রভু যীশু পিতরকে যে অধিকার অর্পণ করেছিলেন তা পোপের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে, তাই পোপ ঈশ্বর দ্বারা অনুমোদিত এবং সে প্রভু যীশুর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, আর যেহেতু যাজকেরা পোপকে অনুসরণ করে, তাই তারাও ঈশ্বরের অনুমোদিত, ফলে তারাও মানুষের পাপকে ক্ষমা করতে পারে। এটা হাস্যকর নয়? প্রভু যীশু কি কখনও পিতরকে বলেছিলেন তার কাছে প্রদত্ত কর্তৃত্ব প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাদ্রীদের গোষ্ঠীকে অর্পণ করতে? প্রভু যীশু কখনোই তা বলেননি। পিতর কি কখনো এরকম কোনো কথা জানিয়েছিল? একেবারেই না। বাইবেলে এরকম কোনো কথা লেখা নেই। সবচেয়ে বড় কথা যে সেই সময় কোনো পোপ, কোনো পাদ্রীই ছিল না। তাহলে যে ধর্মীয় নেতারা দাবি করে যে তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত এবং প্রভু যীশুর প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারী, তারা ঈশ্বর হওয়ার ভান করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, তাই তো? যারা তাদের আদেশ পালন করে এবং তাদের কাছে নত হয়, তারা কি মূর্তি পুজো করছে না? এটা কি ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করা নয়? অনেক লোক এই বিষয়টা বুঝতে পারে না, আর তারা এই মনে করে অন্ধভাবে তাদের নেতাদের উপাসনা করে যে তারা ঈশ্বরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এটা কত বড় অজ্ঞ এবং মূর্খের মতো কাজ? অবিশ্বাসীদের মূর্তিপূজার থেকে এটি আলাদা কীভাবে? যদি আপনি একজন বিশ্বাসী হন কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য অনুসরণ না করেন, ঈশ্বর ভেবে যদি আপনি অন্য মানুষদের সামনে নতজানু হয়ে তাদের উপাসনা করেন এবং তাদের কাছে নিজের পাপ স্বীকার করেন, তাহলে কি আপনি ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং অপমান প্রদর্শন করছেন না? যারা মূর্খের মতো এই কাজ করেন ঈশ্বর কি তাদের উদ্ধার করতে পারবেন? সম্ভবতঃ না। যারা মূর্খের মতো এই কাজ করে তারা ঈশ্বরের অনুমোদন পাবে না।
আমাদের পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে যে ঈশ্বর কাউকে আকস্মিকভাবে বা নির্বিচারে নিয়োগ করেন না। এর অবশ্যই প্রমাণ থাকতে হবে। ঈশ্বরের মোশিকে নিযুক্ত করার প্রমাণ ছিল, আর অন্ততঃপক্ষে ইসরায়েলীরা তা জানতো। প্রভু যীশুর দ্বারা পিতরের নিয়োগও ছিল বাস্তব, যা দূতেরা জানতো। অর্থাৎ, ঈশ্বর কাউকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এমন দাবির একটি বাস্তব ভিত্তি প্রয়োজন। কোনো মানুষ ইচ্ছামত এরকম দাবি করতে পারে না। আমরা এটাও দেখতে পাই যে ঈশ্বর যাকেই প্রতিষ্ঠা করেন, সে পবিত্র আত্মার পথনির্দেশ পায় এবং পবিত্র আত্মার অনুমোদন পায়। তাদের কর্ম ঈশ্বরের ইচ্ছার পালন করতে পারে এবং তা কতকগুলি সুস্পষ্ট ফলাফল অর্জন করবে। তারা ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব বহন করতে পারে। আসুন দেখি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কী বলার আছে। “তার কাজের সারসত্য এবং তার ব্যবহারের প্রেক্ষাপটের দিক থেকে, যে মানুষকে ঈশ্বর ব্যবহার করেন তাকে তিনি নিজেই গড়ে তোলেন। তাকে ঈশ্বর তৈরি করেন ঈশ্বরের নিজেরই কাজের জন্য। সে সাহায্য করে স্বয়ং ঈশ্বরের কাজে। তার পরিবর্তে আর কেউ তার কাজ করতে পারবে না। ঐশ্বরিক কাজের পাশাপাশি মানুষের এই সহযোগিতা অপরিহার্য। এদিকে, অন্যান্য কর্মী অথবা প্রেরিতরা যে কাজ করেন তা কেবল প্রতি যুগে গির্জাগুলোর জন্য নানা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানানো ও সেগুলো রূপায়ণ করা, অথবা গির্জার জীবন বজায় রাখার উদ্দেশ্যে জীবনের কিছু সাধারণ সংস্থানের কাজ। এইসব কর্মী এবং প্রেরিতদের ঈশ্বর নিযুক্ত করেন না। পবিত্র আত্মা যাদের কাজে লাগান এদের তা-ও বলা যাবে না। গির্জাগুলোর মধ্য থেকে তাদের বেছে নেওয়া হয়। তারপর কিছুদিন ধরে প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলনের পরে যোগ্যদের বহাল রাখা হয়। যারা অনুপযুক্ত তারা যেখান থেকে এসেছে সেখানেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যেহেতু এসব মানুষকে গির্জাগুলোর ভেতর থেকে নির্বাচন করা হয়, পথপ্রদর্শক হওয়ার পরে তাদের কারও কারও স্বরূপ প্রকাশিত হয়। এমনকি কেউ কেউ অনেক কুকর্ম করার ফলে বহিষ্কৃত হয়। অন্যদিকে যে মানুষকে ঈশ্বর ব্যবহার করেন, সে এমন এক মানুষ যাকে ঈশ্বর তৈরি করে নিয়েছেন, যার আছে বিশেষ ক্ষমতা, আছে মানবিক গুণ। পবিত্র আত্মা তাকে আগেই প্রস্তুত করেছেন এবং নিখুঁত করে তুলেছেন। পবিত্র আত্মা তাকে সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করেন। বিশেষ করে যখন তার কাজের প্রয়োজন হয় তখন পবিত্র আত্মা তাকে পরিচালনা করেন, নির্দেশ দেন। এর ফলে, যারা ঈশ্বরের নির্বাচিত তাদের পরিচালনার পথে কোনও বিচ্যুতি ঘটে না, কারণ নিশ্চিতভাবেই ঈশ্বর নিজের কাজের দায়িত্ব নিজেই নেন, এবং সবসময়ই ঈশ্বর নিজের কাজই করেন” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর যেভাবে মানুষকে ব্যবহার করেন)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমরা দেখতে পাই যে ঈশ্বর যাদের নিযুক্ত করেন ও নিজকার্যে ব্যবহার করেন, তাদের তিনি অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত করেন, তারাই সেই ব্যক্তি ঈশ্বর যাদের উত্থান ঘটান তাঁর নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তাদের কাজ এবং ধর্মোপদেশ সম্পূর্ণরূপে পবিত্র আত্মার বিধান এবং পথনির্দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ, আর স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারা যে নিযুক্ত হয়নি, সে কখনোই তাদের জায়গা নিতে পারবে না। বিধানের যুগে মোশি এবং অনুগ্রহের যুগে পিতর কঠোরভাবে ঈশ্বরের বাক্য ও প্রয়োজন মেনে তাঁর নির্বাচিত ব্যক্তিগণকে নেতৃত্ব দিয়েছিল, আর ঈশ্বর সর্বদা তাদের সাথে ছিলেন, প্রতিটি বাঁকে তাদের পথনির্দেশ দিয়েছিলেন, ঈশ্বর কখনোই কোনো ভুল ব্যক্তিকে, বা এমন কোনো ব্যক্তিকে ব্যবহার করেন না যে তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে। তিনি সর্বদাই তাঁর নিজের কাজের বিষয়ে দায়িত্ববান। ঈশ্বর যাদের ব্যবহার করেন তারা তাদের কর্ম ও বাক্যে প্রতিনিয়তই পবিত্র আত্মার দ্বারা আলোকিত হয় এবং ঈশ্বরের বাক্যের সঠিক উপলব্ধি ভাগ করে নিতে পারে যাতে ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ তাঁর উচ্চারণ, তাঁর ইচ্ছা ও তাঁর চাহিদা উপলব্ধি করতে পারে। তারা সবসময়েই ঈশ্বরের বাক্যের সত্যকে ব্যবহার করে বাস্তবিকভাবে সংগ্রামরত তাঁর নির্বাচিত ব্যক্তিগণকে সাহায্য করতে পারেন যাতে তারা ঈশ্বরের বাক্যের বাস্তবিকতায় এবং বিশ্বাসের সঠক পথে প্রবেশ করতে পারে যখন ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ ঈশ্বরের ব্যবহৃত ব্যক্তিদের প্রতিপালনকে স্বীকার করে এবং তাদের কাছে সমর্পণ করে, তখন তারা সারা জীবনের জন্য প্রকৃত স্থিতিশীলতা অর্জন করে, ক্রমশঃ তাদের সত্যের উপলব্ধি আরো বিকশিত হয়, তারা ঈশ্বরের কর্ম ও স্বভাবকে উপলব্ধি করতে পারে, এবং ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা ও বিশ্বাস আরো বিস্তৃত হয়। এই কারণেই তারা ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমর্থন লাভ করে যারা তাদের হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারে যে যে এদের ঈশ্বর তাদের স্থানে রেখেছে এবং এরাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যখন আমরা তাদের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তাদের কাছে সমর্পণ করি সেটা আসলে ঈশ্বরকেই অনুসরণ করা এবং ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করা আর সেটাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ঈশ্বরের দ্বারা যারা ব্যবহৃতদের নিজ-নিজ স্থানে রাখা হয় যাতে তারা তাঁর নির্বাচিত ব্যক্তিগণ ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং তাঁর অনুগামী হয়, আর তাদের কর্ম ও উপদেশ সম্পূর্ণভাবে পবিত্র আত্মার নেতৃত্বাধীন ও আলোকপ্রাপ্ত। তাদের নেতৃত্বকে মেনে নিয়ে সমর্পণ করাই প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করা। তাদের প্রতিরোধ করার অর্থ ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করা, যার ফল হবে ঈশ্বরের দ্বারা অনাবৃত ও বিনষ্ট হওয়া, অথবা এমনকি অভিশপ্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়া। ঠিক যেমন মোশি যখন নেতৃত্ব দিয়ে ইসরায়েলীদের মিশর থেকে বের করে আনছিল, তখন কোরহ্, দাথন ও তাদের দলবল মোশির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল ব’লে ঈশ্বর তাদের দণ্ড প্রদান করেছিলেন। এটি একটি পরিষ্কার সত্য।
চলুন, এবার আজকের ধর্মীয় নেতাদের দিকে একবার তাকানো যাক, যার মধ্যে আছে সকল পোপ, বিশপ এবং ক্যাথলিক ধর্মের পুরোহিত, এবং যাজক, প্রবীণ ও অন্যান্য খ্রীষ্টধর্মীয় পাদ্রীর দল। তারা কি ঈশ্বরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত? ঈশ্বর কখনো কি তাদের সমর্থনে কিছু বলেছেন? পবিত্র আত্মার কর্ম কি তাদের হয়ে প্রমাণ দেয়? তাদের নিজের কর্মের ফল কি আছে তাদের হয়ে প্রমাণ দেওয়ার জন্য? এর কিছুই তাদের কাছে নেই। এতেই প্রমাণ হয় যে তারা মানুষের দ্বারা নির্বাচিত, ঈশ্বর-নিযুক্ত নয়। যেহেতু আমরা দেখেছি যে তারা ধর্মীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত এবং সরকারি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিযুক্ত, আমাদের তাই খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তাদের অধিকাংশই সত্যে বিশ্বাস করে না বা ঈশ্বরে তাদের সত্যিকারের বিশ্বাস নেই। তারা বিশ্বাস করে ধর্মতত্ত্বে, তাদের পদমর্যাদা এবং পদবীতে আর যে মানের জীবনযাত্রা তারা এর ফলে উপভোগ করে তাতে। তাদের বাইবেল সম্পর্কিত জ্ঞান যতই উৎকৃষ্ট হোক, বা তাদের উপদেশ শুনতে যতই ভালো লাগুক না কেন, তাদের কাজে পবিত্র আত্মার পথনির্দেশ, বা আত্মার দীপ্তি কোনোটাই নেই। এ থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে তারা ভণ্ড মেষপালক, অবিশ্বাসী, এবং ঈশ্বর তাদের স্বীকার করেন না। তাহলে এদের উপাসনা এবং অনুসরণ করা কি অবিশ্বাস্যরকম মূর্খতা নয়? তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্যের সাক্ষ্য ও পবিত্র আত্মার দেওয়া প্রমাণের অভাব ছাড়াও, একটা জরুরি প্রামাণ্য তথ্য আছে যা তাদের স্বরূপ জানার পক্ষে সহায়ক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অজস্র সত্য প্রকাশ করেছেন, প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন মানুষের আসল রং, তারা সত্যকে ভালবাসে কি না, তারা সত্যকে স্বীকার করে কি না, সত্যকে গ্রহণ করে কি না, আর সত্যকে তারা ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করে কি না। এই সবকিছু প্রকাশিত হয়েছে। যারা স্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই হচ্ছে সত্য, তিনি অবতাররূপী ঈশ্বর, তারাই সত্যকে ভালোবাসে এবং তারাই ঈশ্বরের অনুমোদিত। তারা জ্ঞানী কুমারী যারা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পায় এবং তাঁর সিংহাসনের সামনে উত্থিত হয়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এত অজস্র সত্য প্রকাশ করেছেন, তা দেখা সত্বেও কেউ যদি তাঁর বিরোধিতা ও নিন্দা করতে থাকে, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজকে অস্বীকার করে, এর অর্থ তারা সত্যকে অশ্রদ্ধা করে এবং তারা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতিরোধ ও অপমানকারী খ্রীষ্টবিরোধী। তারা ইতিমধ্যেই বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে এবং অবশ্যই ঈশ্বর দ্বারা দণ্ডিত হতে বাধ্য। এর মধ্যে শুধু ক্যাথলিক এবং খ্রীষ্টান নেতারাই নয়, সমস্ত ধর্মের নেতা এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিই আছে, যাদের মধ্যে প্রায় সকলেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কাজ করছে। ধর্মীয় বিশ্ব এই খ্রীষ্টবিরোধী দলের কবলে পড়ে আছে। এ তথ্য সকলেই জানে, কেউ অস্বীকার করতে পারে না। তাহলে যদি আমরা বুঝতে পারি যে এই বিশপ, পাদ্রী, যাজক এবং প্রবীণেরা হচ্ছে সেই খ্রীষ্টবিরোধী দলের অংশ যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নিন্দা করে এবং তাঁর কাজে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে আমাদের কি করা উচিত? আমাদের উচিত তাদের প্রত্যাখ্যান করা এবং অভিশাপ দেওয়া, আর তাদের বন্ধন থেকে নিজেদের মুক্ত করা। এটাই বিচক্ষণ হওয়া। যদি সত্য পথের সন্ধানের জন্য আমরা তাদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকি, আশা করি যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল তা এরা আমাদের বলে দেবে, সেটা চূড়ান্ত মূর্খতা, এবং অন্ধ ও অজ্ঞানের মত কাজ। অন্ধেরা অন্ধের নেতৃত্ব দিলে তা ধ্বংস ডেকে আনবে। বাইবেলের এই স্তবকও একই কথা বলে: “জ্ঞানের অভাবে মূর্খেরা মারা পড়ে” (হিতোপদেশ ১০:২১)। “প্রজ্ঞার অভাবে আমার প্রজারা ধ্বংস হচ্ছে” (হোশেয় ৪:৬)।
এটা একদম পরিষ্কার যে সমস্ত সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের সাথে ক্যাথলিক এবং খ্রীষ্টান নেতারা একত্রে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে খোলাখুলিভাবে অপমান করছে। তারা তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মর্যাদা বজায় রাখার জন্য তারা বিশ্বাসীদের দৃঢ়ভাবে ধরে রাখছে, তাদের অর্থ অধিকার করছে, পরজীবীর মত বিশ্বাসীদের শোষণ করে বেঁচে আছে, যেমন পিশাচ শবদেহ নিয়ে ভোজনের উৎসব করে। এই খ্রিষ্টবিরোধীরা তাদের পদমর্যাদা এবং জীবিকা বজায় রাখার জন্য সমস্ত ধরণের অশুভ মিথ্যা প্রচার করে, বলে, প্রভুর আগমনের খবর মিথ্যা, প্রভু যীশুকে অবশ্যই মেঘের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে, প্রভুর দ্বিতীয় অবতারকে মেনে নেওয়ার অর্থ ভণ্ড খ্রীষ্টকে মেনে নেওয়া। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা বলে, বিশ্বাসীদেরকে প্রকৃত পথের অনুসন্ধান থেকে বিরত রাখার জন্য তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে। এমনকি রাজ্যমূলক সুসমাচার প্রচারকারীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের জন্য তারা চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি-র সাথে হাত মেলায়। কীভাবে এই ধর্মীয় নেতারা প্রভু যীশুকে যে ফরিশীরা তাঁর সময়ে বিরোধীতা করেছিল তাদের থেকে আলাদা? এরাই কি সেইসব লোক নয় যারা ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল? এরা সবাই কি ভণ্ড মেষপালক এবং খ্রীষ্টবিরোধী নয়, যারা মানুষকে পথভ্রষ্ট এবং ধ্বংস করে? ফরিশীদের নিন্দা করে প্রভু যীশুর বাক্যের কথা মনে করে দেখুন, “ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের! তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না” (মথি ২৩:১৩)। “ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের! একটি লোককে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও, আর কাউকে যখন তা করতে পার তখন তাকে নিজেদের চেয়েও বড় নরকের সন্তান করে তোল” (মথি ২৩:১৫)। আপনারা দেখতে পারেন যে আজকের দিনের অধিকাংশ ধর্মীয় নেতাই সেই ফরিশীদের থেকে কোনো অংশে পৃথক নয় যারা উন্মত্তের মতো প্রভু যীশুকে প্রতিহত করেছিল এবং বিশ্বাসীদের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা সবাই ঈশ্বরকে ঘৃণা করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করে, আর তারা হচ্ছে অন্তিম সময়ের খ্রিষ্টবিরোধী পিশাচ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের আরো কিছু অংশ দেখে নেওয়া যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নেতাদের দিকে তাকাও—তারা সকলেই অহংকারী ও নিজ নৈতিকতার বিষয়ে উদ্ধত, এবং তাদের বাইবেলের ব্যাখ্যায় প্রেক্ষাপটের অভাব রয়েছে এবং তা তাদের নিজস্ব পূর্বধারণা ও কল্পনা দ্বারা পরিচালিত। তারা সবাই তাদের কাজ করার জন্য প্রতিভা ও পাণ্ডিত্যের ওপর নির্ভর করে। তারা যদি একেবারেই প্রচারে অক্ষম হতো, তাহলে মানুষ কি তাদের অনুসরণ করত? তাদের যাই হোক, কিছুটা হলেও জ্ঞান রয়েছে, এবং তারা কিছু কিছু মতবাদের বিষয়ে ধর্মোপদেশ দিতে পারে, অথবা তারা জানে কী করে সফলভাবে অন্যকে জয় করা যায় এবং কিছু কিছু চাতুর্যের ব্যবহার করতে হয়। তারা এগুলির মাধ্যমে মানুষের সাথে প্রতারণা করে এবং তাদের নিজেদের কাছে নিয়ে আসে। এরা শুধু নামেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, কিন্তু বাস্তবে, নিজেদের নেতাদের অনুগামী। যখন তারা কাউকে প্রকৃত পথের প্রচার করতে দেখে, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, ‘আমাদের নেতাদের সাথে আমাদের বিশ্বাসের বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।’ তাহলে দেখো, ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং প্রকৃত পথ স্বীকার করার পরেও মানুষের এখনো কেমন অন্যদের সম্মতি ও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়—এটা কি সমস্যা নয়? সেই নেতারা তাহলে কিসে পরিণত হয়েছে? তারা কি ফরিশী, নকল মেষপালক, খ্রীষ্টবিরোধী, এবং মানুষের প্রকৃত পথ গ্রহণের সামনে প্রতিবন্ধকতায় পরিণত হয়নি?” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)।
“অনেকেই আছে যারা বিরাট গির্জাগুলিতে বাইবেল পড়ে এবং সারাদিন ধরে সেটি আবৃত্তি করে, তবুও তাদের কেউই ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের মধ্যে কেউই ঈশ্বরকে জানতে সক্ষম নয়, আর তাদের মধ্যে কারোর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তো আরোই কম। তারা সকলে অপদার্থ, জঘন্য মানুষ, প্রত্যেকেই ঈশ্বরকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উচ্চে দণ্ডায়মান। ঈশ্বরের ধ্বজা বহন করাকালীনও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস দাবি করেও তারা মানুষের মাংস ভক্ষণ ও রক্ত পান করে। এই ধরনের মানুষেরা হল মানুষের আত্মা-গ্রাসকারী শয়তান, সঠিক পথে পা-রাখতে চাওয়া মানুষদের ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধাদানকারী প্রধান অপদেবতা, এবং তারা হল ঈশ্বর-অন্বেষণকারীদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বাধাস্বরূপ। তাদের দেখে ‘ভালো অবস্থার’ মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা মানুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী করে তোলা খ্রীষ্টবিরোধী ছাড়া আর কেউ নয়? তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা জীবন্ত শয়তান যারা মানুষের আত্মা গ্রাস করার জন্যই নিবেদিত?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা ঈশ্বরকে জানে না তারা সকলেই ঈশ্বরবিরোধী)।
“সব থেকে বড় অবাধ্য হল তারা, যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ঈশ্বরকে অবজ্ঞা করে ও তাঁর বিরোধিতা করে। তারা সকলেই ঈশ্বরের শত্রু, খ্রীষ্টবিরোধী। ঈশ্বরের নতুন কাজের প্রতি তাদের সর্বদা একটা বৈরি মনোভাব থাকে; তাদের কখনো নিজেদেরকে সমর্পণ করার সামান্যতম আগ্রহ থাকেনা, না তারা কখনো আনন্দের সাথে নিজেদেরকে সমর্পণ অথবা বিনীত করেছে। তারা অন্যের সামনে নিজেদের বড়াই করেছে এবং কখনো কারো কাছে নিজেকে সমর্পণ করে নি। ঈশ্বরের সামনে, তারা নিজেদের বাক্য প্রচারে শ্রেষ্ঠ এবং অন্যের মধ্যে কাজ করার ক্ষেত্রে দক্ষতম হিসাবে বিবেচনা করে। তাদের দখলে থাকা ‘ধনসম্পদ’ তারা কখনই পরিত্যাগ করে না, কিন্তু তারা সেগুলিকে উপাসনার উদ্দেশ্যে, অপরের কাছে প্রচার করার উদ্দেশ্যে, এবং যে সকল মূর্খরা তাদের আদর্শ বলে মনে করে তাদের ভাষণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহারযোগ্য পারিবারিক উত্তরাধিকার হিসাবে বিবেচনা করে। গির্জায় এরকম কিছু সংখ্যক লোক অবশ্যই আছে। এমন বলা যেতে পারে যে, তারা হল, ‘অপরাজেয় নায়ক’, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ঈশ্বরের গৃহে বিরাজ করছে। তারা কথা (মতবাদ) প্রচার করাকেই তাদের সর্বোচ্চ কর্তব্য বলে মনে করে। বছরের পর বছর, প্রজন্মের পর প্রজন্ম, তারা তাদের ‘পবিত্র এবং অলঙ্ঘনীয়’ কর্তব্য সবলে কার্যকর করে চলে। কেউ তাদের স্পর্শ করার সাহস পায় না; কেউ-ই প্রকাশ্যে তাদের ভর্ৎসনা করার স্পর্ধা রাখে না। তারা ঈশ্বরের গৃহের ‘রাজা’ হয়ে ওঠে, যুগের পর যুগ ধরে তারা যথেচ্ছভাবে কাজ করে চলেছে, অপরকে সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। এই দানবগোষ্ঠী একসাথে হাত মিলিয়ে আমার কাজকে ধ্বংস করতে চাইছে; কীভাবে আমি এই জীবন্ত শয়তানদের আমার চোখের সামনে টিঁকে থাকার অনুমতি দিতে পারি?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা অকৃত্রিম অন্তঃকরণে ঈশ্বরকে মান্য করে, তারা নিশ্চয়ইঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হবে)।
আমি নিশ্চিত যে এবার আমাদের সবার কাছে পরিষ্কার প্রায় সব ধর্মীয় নেতাই খ্রীষ্টবিরোধী, যারা সত্যকে ঘৃণা করে, ঈশ্বরকে ঘৃণা করে, দুষ্ট দাস এবং ভণ্ড মেষপালক যারা মানুষকে বিপথগামী করে। তাদের কথা শোনা আর তাদের কাছে নিজেকে সমর্পণ করার অর্থ ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করা নয়, এবং ঈশ্বরকে অনুসরণ করাও নয়। এটা আসলে শয়তানকে অনুসরণ করা এবং ঈশ্বরের বিরোধিতা করা, শয়তানের সঙ্গী হওয়া, এমন কেউ হয়ে ওঠা, যাকে ঈশ্বর ঘৃণা করেন এবং অভিশাপ দেন। তাহলে বিশ্বাসী হিসাবে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, আমাদের ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করতে হবে, তাঁর ভয়ে ভীত হতে হবে, তাঁর এবং সত্যের কাছে সমর্পণ করতে হবে। আমরা কখনও কোনো মানুষকে উপাসনা বা তার অনুসরণ করতে পারি না। ঠিক যেমন প্রভু যীশু বলেছিলেন, “তুমি শুধু তোমার ঈশ্বর প্রভুরই উপাসনা করবে, একমাত্র তাঁরই সেবা করবে” (মথি ৪:১০)। একজন ধর্মীয় নেতা যদি সত্যকে ভালবাসেন, তাদের কথা যদি প্রভুর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, আর তারা যদি ঈশ্বরে ভীতি এবং মন্দ কর্ম পরিত্যাগ করার দিকে নিয়ে চলেন, তাহলে তাদের অনুসরণ করা এবং সত্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ তাদের বাক্যের কাছে সমর্পণ করার অর্থই ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করা। তাদের বাক্য যদি সত্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তারা যদি প্রভুর বাক্যের বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে তাদের আমরা পরিত্যাগ করবো। আমরা যদি তাদের অনুসরণ করতে থাকি, তা এমন একজন ব্যক্তির অনুসরণ, যা শয়তানকে অনুসরণেরই নামান্তর। যদি একজন ধর্মীয় নেতা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং অবজ্ঞা করেন এবং অন্যদের সত্য পথের অনুসন্ধান থেকে বিরত রাখেন, তবে তারা একজন খ্রিষ্টবিরোধী আর আমাদের উচিত ঈশ্বরের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের অনাবৃত ও প্রত্যাখ্যান করা, সাহস করে তাদের “না” বলে তাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসা, সত্যের পথকে অনুসন্ধান ও গ্রহণ করা, আর ঈশ্বরের পদাঙ্ক অনুসরণ করা। এটাই সত্যিকারের বিশ্বাস, ঈশ্বরের সত্যিকারের অনুগামী হওয়া, আর তাঁর ইচ্ছার পথে চলা। ঠিক যেমন পিতর বলেছিল, যখন প্রধান যাজক আর ফরিশীরা তাকে নিয়ে গেছিল, “মানুষের আদেশ নয় কিন্তু ঈশ্বরের আদেশই আমাদের পালন করা উচিত” (প্রেরিত ৫:২৯)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের আরো কিছু অংশ পড়া যাক, “ঈশ্বরকে অনুসরণ করার পথে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রতিটি বিষয় ঈশ্বরের আজকের বাক্যের অনুসারী হতে হবে; তুমি জীবনে প্রবেশ অন্বেষণ করো না ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করার তা নির্বিশেষে, সবকিছুই ঈশ্বরের বর্তমান বাক্যের উপরেই কেন্দ্র করে হওয়া উচিত। যদি আজ তোমার বার্তালাপ এবং তোমার অন্বেষণই ঈশ্বরের বর্তমান বাক্যকে কেন্দ্র করে না হয়, তাহলে, ঈশ্বরের বাক্যের জগতে তুমি নেহাতই এক আগন্তুক, এবং পবিত্র আত্মার কাজ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত। ঈশ্বর সেই সব মানুষকেই চান যারা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে। তুমি আগে যা জেনেছ, তা যতই চমৎকার বা শুদ্ধ হোক না কেন, ঈশ্বর তা চান না, আর তুমি যদি সেই সব বিষয়বস্তু বর্জন করতে অক্ষম হও, তাহলে সেগুলি হয়ে উঠবে ভবিষ্যতের প্রবেশদ্বারে দুরতিক্রম্য বাধা। পবিত্র আত্মার প্রদর্শিত বর্তমান আলো যারা অনুসরণ করতে সক্ষম, তারা সকলেই আশীর্বাদধন্য। প্রাচীনকালের মানুষও ঈশ্বরের পদাঙ্ক অনুসরণ করত, কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা অনুসরণ চালিয়ে যেতে পারে নি। এ-ই হল অন্তিম সময়ের মানুষের আশীর্বাদ। পবিত্র আত্মার বর্তমান কর্ম যারা অনুসরণ করতে সক্ষম, এবং যারা তাঁর পদাঙ্ক এমনভাবে অনুসরণ করতে সক্ষম যে, তিনি যেখানেই তাদের নিয়ে যান, তারা সেখানেই ঈশ্বরের অনুগমন করে—এরাই হল ঈশ্বরের প্রকৃত আশীর্বাদধন্য মানুষ। পবিত্র আত্মার বর্তমান কর্ম যারা অনুসরণ করে না, তারা ঈশ্বরের বাক্যের কাজে প্রবেশ করে নি, তারা যতই কাজ করুক, বা তাদের ক্লেশ কত বড়ই হোক, বা তারা যতই ছোটাছুটি করে বেড়াক না কেন, তা সকলই ঈশ্বরের কাছে অর্থহীন, এবং তিনি তাদের প্রশংসাও করবেন না। … ‘পবিত্র আত্মার কাজ অনুসরণ’ করার অর্থ হল, ঈশ্বরের বর্তমান ইচ্ছা উপলব্ধি করা, তাঁর আজকের প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করতে সক্ষম হওয়া, বর্তমানে ঈশ্বরকে মান্য ও অনুসরণ করতে সমর্থ হওয়া, এবং ঈশ্বরের নবীনতম কথন অনুসারে প্রবেশে সমর্থ হওয়া। একমাত্র তারাই এই কাজ করতে পারে যারা পবিত্র আত্মার কর্মের অনুগামী এবং পবিত্র আত্মার স্রোতের মধ্যে রয়েছে। তারা কেবলমাত্র ঈশ্বরের প্রশংসা অথবা দর্শনই পায় না, তাঁর নবীনতম কাজ থেকে তারা বুঝতে পারে ঈশ্বরের স্বভাব, এবং অবগত হয় মানুষের পূর্বধারণা ও অবাধ্যতা, এবং মানুষের প্রকৃতি ও তার নির্যাস সম্পর্কে; শুধু তাই নয়, ঈশ্বর-সেবার মাধ্যমে নিজেদের স্বভাব পরিবর্তনেও তারা সক্ষম হয়। এই ধরনের ব্যক্তি ঈশ্বরলাভ করতে পারে, এবং তারা প্রকৃত পথ খুঁজে পেয়েছে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের নবতম কর্মকে জানো এবং তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করো)।
আমি নিশ্চিত যে এবার আমাদের কাছে আরো বেশি করে স্পষ্ট হয়ে গেছে, বিশ্বাস রেখে চলা এবং ঈশ্বরের অনুসরণ করার অর্থ হচ্ছে সত্যকে গ্রহণ ও তার কাছে সমর্পণ করা, ঈশ্বরের বর্তমান কর্ম এবং বাক্যকে গ্রহণ করা এবং তাঁর পদচিহ্ন অনুসরণ করা। মানুষের কল্পনার থেকে ঈশ্বরের কাজ যত দূরেই থাকে না কেন, অথবা যত বেশি সংখ্যক মানুষ তার নিন্দা বা বিরোধিতা করুক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তা সত্য এবং ঈশ্বরের কাজ, আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে এবং তার প্রতি সমর্পিত থাকতে হবে। একমাত্র এটাই প্রকৃত বিশ্বাস রাখা এবং ঈশ্বরকে অনুসরণ করা। যেমন “প্রকাশিত বাক্য” বলছে: “মেষশাবক যেখানে যান সেখানেই যারা তাঁকে অনুসরণ করে এরাই তারা” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৪)। অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এখানে তাঁর কর্ম-সম্পাদন করছেন, এবং অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন। মন্দের ও শয়তানের শক্তির কাছ থেকে আমাদের উদ্ধার করে তিনি ঈশ্বরের ঘর থেকে আরম্ভ করে বিচারকার্য করেন মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ ও মুক্ত করার জন্য। এটি একটি অপ্রত্যাশিত সুযোগ এবং আমাদের উদ্ধার পাওয়ার ও ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার একমাত্র পথ। এখন সারা বিশ্বের আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যারা ঈশ্বরের আবির্ভাবের জন্য আকাঙ্ক্ষিত তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ অনলাইনে দেখছেন। তারা প্রত্যক্ষ করেছে যে তাঁর সমস্ত বাক্যই সত্য, তাই তা ঈশ্বরের বাক্য। ধর্মীয় নেতাদের বন্ধন থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করছে, তাদের গির্জার নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসছে, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে মেষশাবকের বিবাহের ভোজনে উপস্থিত হতে। কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বের অনেক মানুষই এখনো অন্ধভাবে সেই যাজকগোষ্ঠীর উপাসনা ও অনুসরণ করে, যারা খ্রীষ্টবিরোধী শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং আবদ্ধ। তারা মরুপ্রান্তরের মধ্যে কঠিনভাবে বদ্ধ অবস্থায় মেঘের ওপরে প্রভুর আসার জন্য বৃথা অপেক্ষা করে, তারা অনেক আগেই ঈশ্বরের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত এবং নির্মূল হয়েছে, আর বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে কাঁদছে এবং দাঁতে দাঁত ঘষছে। এভাবেই প্রভু যীশুর বাক্য সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে, “অন্ধ যদি অন্ধকে পথ দেখায়, তবে দুজনেই গর্তে পড়বে” (মথি ১৫:১৪)। তাদের দাবি অনুযায়ী তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, কিন্তু আসলে তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষকে বিশ্বাস করে। ঈশ্বরের চোখে তারা অবিশ্বাসী। প্রকৃত ঈশ্বর একজন পবিত্র ঈশ্বর যিনি অশুভকে ঘৃণা করেন, এবং তাঁর ন্যায়পরায়ণতা অপ্রতিরোধ্য। যারা নীচভাবে মানুষের প্রশংসা করে, যারা ঈশ্বরের নিন্দা এবং বিরোধিতায় খ্রীষ্টবিরোধীদের অনুসরণ করে, তিনি কখনোই তাদের উদ্ধার করবেন না। যারা সত্যকে ভালোবাসে না বা গ্রহণ করে না, অন্ধের মতো বাইবেলে আটকে থাকে, ঈশ্বর তাদের কখনোই উদ্ধার করবেন না। ধর্মীয় ব্যাবিলন থেকে মানুষকে মুক্ত করে ঈশ্বরের ইচ্ছা, তাই আমরা আর ধর্মীয় বিশ্বের খ্রীষ্টবিরোধী শক্তির বন্ধনে আবদ্ধ নই, এবং আমরা ধর্মের থেকে বেরিয়ে এসে সত্য এবং ঈশ্বরের কাজের সন্ধান করতে পারি তাই আমাদের আশা আছে ঈশ্বরের উপস্থিতি ও তাঁর কাজকে স্বাগত জানানোর।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আরো কিছু বাক্যের দিকে তাকানো যাক। “তুমি খ্রীষ্টের বিনয়ের কদর করো না, কদর করো উচ্চ পদমর্যাদায় আসীন ওই ভণ্ড মেষপালকদের। তুমি খ্রীষ্টের মাধুর্য বা বিচক্ষণতার ভজনা করো না, ভজনা করো ওই লম্পটদের যারা পৃথিবীর পাপপঙ্কে নিমগ্ন থাকে। যে খ্রীষ্টের মাথা রাখবার কোনো জায়গা নেই তাঁর বেদনায় তুমি উপহাস করো, কিন্তু তুমিই প্রশস্তি করো সেই সব শবদেহদের যারা উৎসর্গের তল্লাসে ঘুরছে আর ব্যভিচারমগ্ন জীবন যাপন করছে। খ্রীষ্টের পাশে দাঁড়িয়ে কষ্ট স্বীকারে তুমি ইচ্ছুক নও, অথচ তুমি সানন্দে ওই বেপরোয়া খ্রীষ্টবিরোধীদের হাতে নিজেকে অর্পণ করো, যদিও তারা তোমাকে কেবল দেহ, বাক্য আর নিয়ন্ত্রনেরই যোগান দেয়। এমনকী এই মুহূর্তেও তোমার হৃদয় এখনও ওদেরই অভিমুখী, ওদের খ্যাতির অভিমুখী, ওদের পদমর্যাদার অভিমুখী, ওদের প্রতিপত্তির অভিমুখী। আর এখনো তুমি এমন এক মনোভাব পোষণ করে চলেছো যে খ্রীষ্টের কার্যকে গলাধঃকরণ করা তোমার পক্ষে কষ্টসাধ্য মনে হয়, আর তাই তুমি তা স্বীকার করতে অনিচ্ছুক। এই কারণেই আমি বলি খ্রীষ্টকে স্বীকার করতে তোমার বিশ্বাসের খামতি আছে। আজ পর্যন্ত তুমি যে তাঁর অনুসরণ করেছো তার একমাত্র কারণ তোমার অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। সুউচ্চ কিছু প্রতিচ্ছবির ধারাবাহিক পরম্পরা তোমার হৃদয়ে চিরকালের জন্য সমুন্নত হয়ে আছে; তুমি ওদের প্রতিটি কথা ও কাজ ভুলতে পারো না, ওদের প্রভাবশালী বাক্য ও হস্তের কথাও তুমি ভুলতে পারো না। তোমাদের হৃদয়ে ওরা সবসময় সর্বশ্রেষ্ঠ, সবসময় নায়ক। কিন্তু আজকের খ্রীষ্টের ক্ষেত্রে বিষয়টা এরকম নয়। তোমার হৃদয়ে তিনি সবসময় তুচ্ছ, সবসময় শ্রদ্ধাপ্রদর্শনের অযোগ্য। কারণ তিনি অত্যন্ত সাধারণ, তাঁর প্রতিপত্তি খুবই কম, এবং তিনি মোটেই দাম্ভিক নন।
“আমি বলি যে, যে কোনো ক্ষেত্রেই, যারা সত্যকে মূল্য দেয় না তারা সবাই অবিশ্বাসী আর সত্যের প্রতি প্রতারক। এই ধরণের মানুষরা কখনো খ্রীষ্টের অনুমোদন লাভ করবে না। তোমার মধ্যে কতটা অবিশ্বাস, আর খ্রীষ্টের প্রতি কতটা বিশ্বাসঘাতকতা রয়েছে তুমি কি এখন তা নিরূপণ করতে পেরেছো? আমি তোমাকে এই উপদেশ দিই: যেহেতু তুমি সত্যের পথ বেছে নিয়েছো, তাই তোমার উচিৎ নিজেকে সর্বান্তঃকরণে উৎসর্গ করা; দ্বিধাগ্রস্ত বা অর্ধোৎসাহী হয়ো না। তোমার বোঝা উচিৎ যে ঈশ্বর সারা পৃথিবীর বা কোনো একজন মানুষের কুক্ষিগত নন, তিনি তাদের সবার যারা তাঁকে প্রকৃতই বিশ্বাস করে, তাদের সকলের যারা তাঁকে অর্চনা করে, আর তাদের সকলের যারা তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তুমি কি সত্যিকারের ঈশ্বরবিশ্বাসী?)।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।