ভণ্ড খ্রীষ্টের সঙ্গে প্রকৃত খ্রীষ্টের পার্থক্য করা

17-04-2023

আজ আমি কথা বলতে চাই কি ভাবে ভণ্ড খ্রীষ্টের থেকে সত্য খ্রীষ্টের পার্থক্য করা যায় সেই বিষয়ে। কেউ কেউ হয়ত প্রশ্ন করতে পারে ঈশ্বরে আমাদের বিশ্বাসের সাথে এর সম্পর্ক আছে। বেশ কিছুটা সম্পর্ক আছে। সবাই কি জানেন খ্রীষ্ট কে? যদি আপনি জানেন যে খ্রীষ্ট হলেন সেই ত্রাণকর্তা যিনি পৃথিবীতে এসেছেন, এখন যখন দুর্যোগগুলি আসছে এবং অন্তিম সময় প্রায় এসেই গিয়েছে, আপনি কি মনে করেন যে আপনার কোনো ত্রাণকর্তার প্রয়োজন আছে? যদি আপনার কোনো ত্রাণকর্তার প্রয়োজন হয়, আপনি কি জানেন যে কে আপনাকে বাঁচাতে পারবে? আপনি কি জানেন ত্রাণকর্তাকে কিভাবে স্বাগত জানাতে হয়? আপনি কি মনে করেন এটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক? উদাহরণ হিসেবে, ২,০০০ বছর আগে, আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু এসেছিলেন মানবজাতিকে মুক্ত করতে এবং অনেক সত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময় ইহুদিরা জানত যে তাঁর বাণী ছিল ক্ষমতাবান, শক্তিশালী এবং সে সবই ছিল সত্য। কিন্তু যেহেতু তাঁর নাম মসীহ ছিল না এবং তিনি তাদের রোমীয় শাসন থেকে উদ্ধার করেননি যেমন তারা কল্পনা করেছিল, তারা প্রভু যীশুকে খ্রীষ্ট হিসেবে স্বীকার করেনি। তারা তাঁকে প্রতারক বলে অপমান ও তাঁর নিন্দা করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে জীবিত ক্রুশে বিদ্ধ করেছিল। এর পরিণতি ছিল? ঈশ্বরের অবতারের ইহুদিদের দ্বারা ক্রুশবিদ্ধ হওয়া কি কোন সাধারণ বিষয় ছিল? অবশ্যই ঈশ্বরের দ্বারা তারা অভিশপ্ত হয়েছিল। সেটা আমরা জানতে পারি ৬০ বছর পরে, যখন রোমের তিতাস দ্বারা ইজরায়েলি জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ইজরায়েল কতদিন একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি ছিল? প্রায় ২,০০০ বছর! তারা ত্রাণকর্তাকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল, আর সেই কারনেই ইহুদিরা চরম মূল্য দিয়েছিল। তাহলে, ত্রাণকর্তাকে স্বাগত জানানো কি সংকটপূর্ণ? ত্রাণকর্তাকে পৃথিবীতে ক্ষুদ্ধ করার সামর্থ্য কার আছে? আপনি যদি তাঁকে না জানেন বা না গ্রহণ করেন, এমনকি তাঁর বিরোধীতা ও নিন্দা করেন, তাহলে আপনি শেষ—একেবারে শেষ, এবং আপনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। আপনি যদি উদ্ধার হতে চান এবং দুর্যোগ থেকে বাঁচতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ত্রাণকর্তাকে গ্রহণ করতে হবে! সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এখন আছেন এখানে, এবং তিনিই ত্রাণকর্তা হয়ে নেমে এসেছেন, সত্য প্রকাশ করছেন এবং অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ করছেন। মানবজাতিকে পাপ এবং দুর্যোগ থেকে উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু আপনি কি তাঁকে চিনতে পারবেন? আপনি কি তাঁকে গ্রহণ করবেন? যদিও অনেকেই স্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান, যখন তারা দেখে যে তিনি মেঘারূঢ় হয়ে আবির্ভূত হননি এবং তাঁকে প্রভু যীশু বলা হয়না, তারা অবিচলভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এমনকি তারা ধর্মীয় জগত কে অনুসরণ করে, তাঁকে অপমান ও তাঁর নিন্দা করে, এই বলে যে প্রভুর যিনি অবতার হয়ে আসবেন তিনি একজন ভণ্ড খ্রীষ্ট, এবং এটি প্রতারণা। এবং ধর্মবিরোধী খ্রীষ্টবিরোধী শক্তিগুলো কমিউনিস্ট পার্টির দুষ্টদের সাথে একই মতামত পোষণ করে, উন্মত্তভাবে খ্রীষ্টকে শিকার করছে, তাঁকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারা যারা ঈশ্বরের রাজ্যমূলক সুসমাচার ছড়িয়ে দেয়, এরা তাঁদের নিগ্রহ করে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে এবং ঈশ্বরকে মানবতা থেকে তাড়িয়ে দিতে এরা উদগ্রীব হয়ে উঠেছে। এ যেন ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করার ভয়ঙ্কর পাপ আবার ঘটানো হচ্ছে, এবং তারা অবশ্যই ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত এবং দণ্ডিত হবে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যেমন বলেছেন, “যারা ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করেছে তাদের উপর ধিক্কার বর্ষিত হোক(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অসাধু ব্যক্তিরা অবশ্যই শাস্তি পাবে)। “শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালনা করার জন্য অবতাররূপী ঈশ্বর স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন। অবতার যেখানেই আবির্ভূত হন সেই স্থানে শত্রু সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। সবার আগে নিশ্চিহ্ন হবে চিনদেশ; ঈশ্বরের হাতে তা সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে যাবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, “সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি ঈশ্বরের বাক্যে”-র রহস্যগুলির ব্যাখ্যা, অধ্যায় ১০)। সুতরাং, ত্রাণকর্তার প্রতি মানুষের মনোভাব নির্ধারণ করে যে তারা বেঁচে থাকবে নাকি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

এখন সবাই জানে যে ত্রাণকর্তাকে স্বাগত জানানোর সক্ষমতা নির্ভর করে মানুষের বিশ্বাসে সাফল্য বা ব্যর্থতার ওপর, এবং তা তাদের চূড়ান্ত ফলাফল এবং গন্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত! এবার আসি অন্য কথায়, অন্তিম সময়ে ত্রাণকর্তা কিভাবে ফিরে আসে, আসুন সে সম্পর্কে কথা বলা যাক। ধর্মীয় জগতের ঐতিহ্যগত ধারণার উপর ভিত্তি করে, প্রভু মেঘারূঢ় হয়ে আবির্ভূত হবেন এবং বিশ্বাসীদের আকাশে নিয়ে যাবেন তাঁর সাথে দেখা করার জন্য। এটা একেবারেই ভুল ধারনা। এটি একটি মানবিক ধারণা এবং প্রভুর কথার সাথে এতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রভু যীশু ব্যক্তিগতভাবে “মানবপুত্রের আগমন হবে” ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, “মানবপুত্র যেদিন স্বপ্রকাশ হবেন”, “মানবপুত্র আসবেন,” এবং “মানবপুত্র তাঁর সেই দিনে”। তিনি বারবার “মানবপুত্রের” উপর জোর দিয়েছিলেন, যা প্রমাণ করে যে প্রভু যখন ফিরে আসবেন, তিনি আবার মনুষ্যপুত্র হিসাবে অবতাররূপ ধারন করবেন, এবং এটি মানবজাতির কাছে খ্রীষ্টের রূপ। এই সম্পর্কে আর কোনো দ্বিমত নেই। কেউ কেউ হয়ত প্রশ্ন করতে পারে, “যদি তিনি মনুষ্যপুত্রের অবতাররূপ ধারন করেন, তাহলে কি তিনি আর প্রভু যীশু এক নন? তাঁকে অবশ্যই একজন সাধারণ মানুষের মত দেখতে হবে। বিশ্বজুড়ে এমন বহু লোক রয়েছে যারা দাবি করে যে তারাই খ্রীষ্ট হয়ে ফিরে এসেছে। কেউ বলে একজন খ্রীষ্ট, কেউ বলে আরেকজন। তাহলে কে সত্য, আর কে ভণ্ড? আমরা কিভাবে ত্রাণকর্তাকে স্বাগত জানাতে পারি?” এখানেই বেশিরভাগ মানুষ আটকে যায় যখন তারা সত্য পথের অনুসন্ধান করে। আসলে, এটি খুব একটি কঠিন প্রশ্ন নয়। যতক্ষণ আমরা আন্তরিকভাবে প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীগুলি কে নিয়ে চিন্তা করছি, ততক্ষন আমরা পথ খুঁজে পাবই। প্রভু যীশু বলেছিলেন, “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)। “মাঝরাতে সাড়া পড়ে গেল, ‘দেখো, বর এসেছে, তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও’(মথি ২৫:৬)। “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে(যোহন ১০:২৭)। “দেখ, আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে করাঘাত করছি। যে আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়, আমি ভেতরে তার কাছে যাব, তার সঙ্গে পানাহার করব, সেও আমার সঙ্গে পানাহার করবে(প্রকাশিত বাক্য ৩:২০)। “কেউ যদি তখন তোমাদের বলে যে খ্রীষ্ট এখানে রয়েছেন কিম্বা ওখানে আছেন সে কথা বিশ্বাস করো না। কারণ অনেক নকল খ্রিষ্ট ও ভুয়ো নবীর আবির্ভাব ঘটবে। তারা এমন সব চমকপ্রদ নিদর্শন ও অলৌকিক কাণ্ড দেখাবে যার ফলে মনোনীতরাও প্রতারিত হতে পারে(মথি ২৪:২৩-২৪)। প্রভু খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন। প্রভু যীশু যখন অন্তিম সময়ে ফিরে আসবেন, তখন তিনি আরও অনেক বাণী উচ্চারণ করবেন এবং সব মানুষকে সত্য বোঝার এবং তাতে প্রবেশ করার পথ দেখাবেন। তাই তিনি মানুষকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে প্রভুকে স্বাগত জানানোর চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনার মধ্যে। এবং আমরা যদি শুনি যে কেউ প্রত্যক্ষ্ করেছে যে “বর এসেছে”, আমাদের বুদ্ধিমতী কুমারীদের মত হতে হবে, এবং ঈশ্বরের কণ্ঠ খুঁজতে এবং শুনতে হবে। প্রভুকে অভিবাদন জানানোর এটাই একমাত্র উপায়। তাঁর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানানোর এটাই একমাত্র পথ। খ্রীষ্ট অন্তিম সময়ে এসেছেন, তাই অবশ্যই তিনি মানবজাতির মুক্তির জন্য আরো সত্য প্রকাশ করছেন, কিন্তু ভণ্ড খ্রীষ্টরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য কিছু চিহ্ন এবং অলৌকিক কাণ্ড দেখানোর উপর নির্ভর করে। সত্য খ্রীষ্টের আর ভণ্ড খ্রীষ্টদের মধ্যে পার্থক্য করতে এই মূল নীতিটি প্রভু যীশু আমাদের বলেছিলেন। এই নীতি অনুসারে, কে সত্য বা ভণ্ড খ্রীষ্ট তা আমরা জানতে পারি তারা সত্য প্রকাশ করে কিনা তার মাধ্যমে। যদি তারা তা পারে, তাহলে তারা অবশ্যই খ্রীষ্ট হবে। যারা সত্য প্রকাশ করতে পারে না তারা অবশ্যই ভণ্ড খ্রীষ্ট। যদি কেউ নিজেকে খ্রীষ্ট বলে দাবি করে কিন্তু তারা কোনো সত্য প্রকাশ করতে পারে না, পরিবর্তে নিদর্শন এবং অলৌকিক কাণ্ডের উপর নির্ভর করে, তাহলে নিঃসন্দেহে সে কোনো মন্দ আত্মার ছায়া, একজন ভণ্ড খ্রীষ্ট যে মানুষকে বিপথগামী করতে এসেছে। আমরা যখন প্রভু যীশুর কথা অনুযায়ী চলি, তখন প্রকৃত খ্রীষ্ট আর ভণ্ডদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারি, এটা খুবই সহজ, তাই না? কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ধর্মীয় অনুগতরা সত্যের সন্ধান করে না বা ঈশ্বরের কণ্ঠ খোঁজে না প্রভুর বাণী অনুসারে। ভণ্ড খ্রিস্টের দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়ার ভয় তাদের এতই যে, তারা প্রভুর রূপ এবং কাজের সন্ধান অবধিও করবে না। এটা ওই অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে নিজের নাক কাটার মত, ঠিক যেন বজ্র্র আঁটুনি ফস্কা গেরো, তাই না? তারা অন্ধের মত প্রভুর মেঘের মধ্যে আবির্ভূত হওয়ার বিষয়ে শাস্ত্রকে আঁকড়ে ধরে, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের কাজের নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করে। ফলস্বরূপ, তারা ত্রাণকর্তাকে স্বাগত জানানোর সুযোগ হারায় এবং দুর্যোগের কবলে পড়ে। এটা কি তাদের মূর্খতা ও অজ্ঞতার ফল নয়? বাইবেলের এই শ্লোকগুলো এটি প্রমাণ করে: “জ্ঞানের অভাবে মূর্খেরা মারা পড়ে” (হিতোপদেশ ১০:২১)। “প্রজ্ঞার অভাবে আমার প্রজারা ধ্বংস হচ্ছে(হোশেয় ৪:৬)

কীকিভাবে ভণ্ড আর সত্য খ্রীষ্টের মধ্যে পার্থক্য করতে হয়, আসুন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী অনুসারে বিষয়টির বিস্তারিত বিবরণে যাই। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “ঈশ্বরের অবতারকে খ্রীষ্ট নামে অভিহিত করা হয়, এবং ঈশ্বরের আত্মার পরিধান করা দেহই হলেন খ্রীষ্ট। এই দেহ অন্য যেকোনো মানুষের রক্তমাংসের দেহের মতো নয়। এই পার্থক্যের কারণ এই যে, খ্রীষ্ট রক্তমাংসের নন; তিনি হলেন আত্মার অবতার। তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক মানবতা এবং সম্পূর্ণ দেবত্ব উভয়ই আছে। তাঁর দেবত্ব কোনো মানুষের অধিকারেই নেই। তাঁর স্বাভাবিক মানবতা মনুষ্যরূপে তাঁর সকল স্বাভাবিক কার্যকলাপ বজায় রাখে, অপরদিকে তাঁর দেবত্ব স্বয়ং ঈশ্বরের কার্য নির্বাহ করে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্টের সারসত্য হল স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছার প্রতি আনুগত্য)

ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী এবং তাঁর মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বরের স্বভাব এবং প্রজ্ঞা, যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা অসাধ্য। যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্ট বলে দাবি করে, কিন্তু ঈশ্বরের কাজে অপারগ, তারা আসলে প্রতারক। খ্রীষ্ট নিছক পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রকাশ নন, বরং ঈশ্বরের অবতাররূপ, যা ধারণপূর্বক তিনি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করেন এবং তা সম্পূর্ণ করেন। এই অবতাররূপ যেকোনো মানুষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা অসম্ভব, বরং তিনি হলেন এক অবতাররূপ, যিনি যথাযথভাবে পৃথিবীতে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করতে পারেন, ঈশ্বরের স্বভাব প্রকাশ করতে পারেন, যথাযথ ভাবে ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন এবং মানুষকে জীবন দান করতে পারেন। একদিন না একদিন, খ্রীষ্টের ছদ্মরূপ ধারণকারী প্রত্যেকের পতন অনিবার্য, কারণ তারা নিজেদের খ্রীষ্ট বলে দাবি করলেও, তাদের মধ্যে খ্রীষ্টের সারসত্যের ছিটেফোঁটাও নেই। আর তাই আমি বলি খ্রীষ্টের সত্যতা মানুষ সংজ্ঞায়িত করতে পারে না, বরং তার সত্যতা বিচার এবং সংজ্ঞা নির্ধারণ স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারাই করা সম্ভব(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)

যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী হবেন, এবং যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের অভিব্যক্তির অধিকারী হবেন। যেহেতু ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করেছেন, সেহেতু তিনি সেই কাজ নিয়ে আসবেন যা তিনি করতে চান, এবং যেহেতু তিনি দেহরূপে এসেছেন, তিনি যা তা তিনি স্বরূপ প্রকাশ করবেন এবং সেই সত্যটি মানুষের সামনে নিয়ে আসতে সমর্থ হবেন, তাকে জীবন দান করবেন এবং তার জন্য পথ চিহ্নিত করবেন। যে দেহরূপে ঈশ্বরের সারসত্য নেই তাকে ঈশ্বরের অবতার বলে গণ্য করা হয় না; এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা তা যদি মানুষ অনুসন্ধান করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই যে স্বভাব তিনি প্রকাশ করেন এবং যে সকল বাক্য তিনি বলেন, তার থেকেই তা জানতে হবে। অর্থাৎ, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা, এবং এটিই প্রকৃত পথ কিনা, তা সুনিশ্চিত করতে অবশ্যই তাঁর সারসত্যের ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। এবং তাই, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কি না, তা নির্ণয় করার মূল বিষয়টি তাঁর বাহ্যিক চেহারার পরিবর্তে তাঁর সারসত্য (তাঁর কাজ, তাঁর কথন, তাঁর স্বভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের), উপর নির্ভরশীল। মানুষ যদি শুধু তাঁর বাইরের চেহারাটাই খুঁটিয়ে দেখে, এবং এর ফলে তাঁর সারসত্যকে উপেক্ষা করে, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে সেই মানুষটি অজ্ঞানতিমিরে আচ্ছন্ন এবং অজ্ঞ(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)

কিছু মানুষ মন্দ আত্মার দ্বারা অধিকৃত এবং তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে জানায়, ‘আমিই ঈশ্বর!’ তারা অনাবৃত হয়, কারণ তারা যার প্রতিনিধিত্ব করে তা ভুল। তারা শয়তানের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং পবিত্র আত্মা তাদের প্রতি কোনও মনোযোগ দেন না। তুমি নিজেকে যতই উন্নীত ভাবো, অথবা যত জোরেই চিৎকার করো, তুমি কেবলমাত্র একটি সৃষ্ট সত্তা এবং এমন একজন যে শয়তানের কবলিত। … তুমি নতুন পথের সূচনা করতে বা আত্মার প্রতিনিধিত্ব করতে অক্ষম। তুমি আত্মার কাজ বা তাঁর কথিত বাক্য প্রকাশে অক্ষম। স্বয়ং ঈশ্বরের কাজ করতে তুমি অক্ষম, এবং আত্মার কাজ করতেও তুমি অক্ষম। ঈশ্বরের প্রজ্ঞা, বিস্ময় ও অতলতা, এবংঈশ্বরের স্বভাবের সমগ্রতা যার দ্বারা তিনি মানুষকে শাস্তিপ্রদান করেন—এসব তোমার প্রকাশ করার ক্ষমতার বাইরে। তাই নিজেকে ঈশ্বর হিসাবে দাবি করার চেষ্টা অর্থহীন; তুমি হয়তো শুধু নামটুকুই পাবে কিন্তু সারবত্তার কোনোকিছুই পাবে না। স্বয়ং ঈশ্বর এসেছেন, কিন্তু কেউ তাঁকে চিনতে পারেনি, তবুও তিনি তাঁর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আত্মার প্রতিনিধি হিসাবে তা করছেন। তুমি তাঁকে মানুষ বা ঈশ্বর ডাকো, প্রভু বা খ্রীষ্ট ডাকো, বা তাঁকে বোন ডাকো, তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু তিনি যে কাজ করেন তা হল আত্মার কাজ এবং তিনি স্বয়ং ঈশ্বরের কাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। মানুষ তাঁকে কী নামে ডাকছে সে বিষয়ে তিনি পরোয়া করেন না। সেই নাম কি তাঁর কাজ নির্ধারণ করতে পারে? তুমি তাঁকে যে নামেই ডাকো না কেন, ঈশ্বরের বিষয়ে একমাত্র বিবেচ্য হলো, তিনি হলেন ঈশ্বরের আত্মার অবতাররূপী দেহ; তিনি আত্মার প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তিনি আত্মা দ্বারা অনুমোদিত। তুমি যদি নতুন যুগের জন্য পথ তৈরি করতে না পারো, বা পুরাতনের সমাপ্তি ঘটাতে না পারো বা নতুন যুগের সূচনা করতে বা নতুন কাজ করতে না পারো, তবে তোমাকে ঈশ্বর বলে অভিহিত করা যাবে না!(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (১))

যদি বর্তমানকালে এমন কেউ আবির্ভূত হয় যে সংকেত ও আশ্চর্যজনক বিষয় প্রদর্শন করতে পারে, অপদেবতা বিতাড়নে ও পীড়িতদের নিরাময়ে সক্ষম হয় এবং বিবিধ অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে পারে, আর যদি সেই ব্যক্তি দাবি করে যে সে-ই হল আবির্ভূত যীশু, তাহলে সে হল মন্দ আত্মাদের সৃষ্ট যীশুর অনুকরণকারী এক নকল সত্তা। একথা মনে রেখো! ঈশ্বর একই কাজের পুনরাবৃত্তি করেন না। যীশুর কাজের পর্যায় ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, এবং ঈশ্বর কখনোই সেই কাজের পর্যায়ের আর দায়িত্ব নেবেন না। ঈশ্বরের কাজ মানুষের ধারণার সাথে মেলে না; উদাহরণস্বরূপ, পুরাতন নিয়মে একজন মশীহের আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল এবং এই ভবিষ্যদ্বাণীর ফলাফল ছিল যীশুর আগমন। এটি ইতিমধ্যেই ঘটে গিয়েছে, অন্য মশীহের পুনরায় আগমন ঘটলে তা ভুল হবে। যীশু ইতিমধ্যেই একবার এসেছেন, আবারও যদি যীশু আসেন, তবে তা ভুল হবে। প্রতিটি যুগেরই এক-একটি নাম রয়েছে এবং প্রতিটি নামের মধ্যে সেই যুগের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মানুষের ধারণায়, ঈশ্বর অবশ্যই সর্বদা সংকেত এবং বিস্ময়কর ঘটনা প্রদর্শন করবেন, সর্বদা পীড়িতদের নিরাময় করবেন, অপদেবতা বিতাড়ন করবেন এবং সর্বদাই হুবহু যীশুর মতো হবেন। তবুও এইবার ঈশ্বর একদমই সেরকম নন। অন্তিম সময়ে এসেও, ঈশ্বর যদি এখনও সংকেত ও আশ্চর্যজনক ঘটনা প্রদর্শন করেন, অপদেবতা বিতাড়ন করেন এবং পীড়িতদের নিরাময় করেন—যদি তিনি যীশুর মতো ঠিক একই কাজ করেন—তাহলে ঈশ্বর একই কাজের পুনরাবৃত্তি করবেন এবং তাহলে যীশুর কাজের কোনো তাৎপর্য বা মূল্যই থাকবে না। এইভাবে, ঈশ্বর প্রতিটি যুগে কাজের এক-একটি পর্যায় নির্বাহ করেন। একবার তাঁর কাজের একটি পর্যায় শেষ হয়ে গেলে, শীঘ্রই মন্দ আত্মারা তা অনুকরণ করে, এবং শয়তান ঈশ্বরের পথে হাঁটা শুরু করলে ঈশ্বর তাঁর পদ্ধতি পরিবর্তন করেন। ঈশ্বরের কাজের একটি পর্যায় সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, মন্দ আত্মারা তা অনুকরণ করতে শুরু করে। তোমাদের অবশ্যই এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের বর্তমানের কার্যকে জানা)

এটি পড়ার পর, আমাদের সবার কাছেই এবার একটু পরিষ্কার খ্রীষ্ট কী, এবং সত্য খ্রীষ্টকে কীভাবে আলাদা করবেন ভণ্ডের থেকে, তাই না? খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বরের অবতার, মনুষ্যপুত্রের দেহে ঈশ্বরের আত্মা। বাইরে থেকে, খ্রীষ্ট শুধু একজন সাধারণ, স্বাভাবিক ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর সারসত্তা একজন সাধারণ ব্যক্তির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা আছে, তিনি ঈশ্বরের আত্মার মূর্ত রূপ, তাই তাঁর মধ্যে একটি ঐশ্বরিক সারসত্তা আছে। মূলত, খ্রীষ্ট হলেন সেই এক সত্য ঈশ্বর, সৃষ্টির প্রভু! খ্রীষ্ট সত্য প্রকাশ করতে পারেন, এবং ঈশ্বরের স্বভাব এবং তাঁর যা আছে এবং তিনি কে, তিনি সব প্রকাশ করতে পারেন যে কোনো জায়গায়, যে কোনো সময়ে। তিনি মানুষের মুক্তির কাজটি যেমন করতে পারেন তেমনি মানুষের বিচার ও শুদ্ধিকরণের কাজও করতে পারেন। খ্রীষ্টের বাইরে, কোনো সৃষ্ট মানুষ, দেবদূত, বা শয়তানের মন্দ আত্মা সত্য প্রকাশ করতে পারে না, মানবজাতি কে বাঁচানো তো অনেক দুরের বিষয়। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং, ভণ্ডদের থেকে সত্য খ্রীষ্টকে চেনার চাবিকাঠি হল মূলত দেখা যে তারা সত্য প্রকাশ করে কিনা, তারা মানুষের পরিত্রাণের কাজ করতে পারে কি না। এটি হল সবচেয়ে জরুরি এবং মৌলিক নীতি। আমরা সবাই জানি যে প্রভু যীশু অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন এবং অনুতাপের পথ প্রচার করেছেন, এবং তিনি অনেক চিহ্ন প্রদর্শন এবং অলৌকিক কাণ্ড ঘটিয়েছেন, এবং মানবজাতির মুক্তির কাজ সম্পন্ন করেছেন। তিনি অনুগ্রহের যুগ শুরু করেন এবং আইনের যুগ শেষ করেন। প্রভুর বাণীতে বহু শক্তি ও কর্তৃত্ব ছিল এবং সেগুলো ঈশ্বরের স্বভাব, তাঁর যা আছে এবং তিনি যা তাতে আবৃত ছিল। আমরা আমাদের অন্তরে জানি যে প্রভু যীশু ছিলেন রক্তমাংসের দেহে খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের রূপ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এসেছেন, সত্যের লক্ষ লক্ষ বাণী প্রকাশ করছেন, এবং ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু করে বিচারের কাজ করছেন। তাঁর বাণীগুলি কেবল বাইবেলের ভিতরের রহস্য উন্মোচন করেনি, সেগুলি উন্মোচন করেছে ঈশ্বরের ৬,০০০ বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা। এর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার লক্ষ্য, তাঁর তিন ধাপের কাজের ভিতরের সত্য, কীকিভাবে শয়তান মানবজাতিকে ভ্রষ্ট করে, কীকিভাবে ঈশ্বর মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য ধাপে ধাপে কাজ করেন, অবতারের রহস্য, বাইবেলের ভিতরের সত্য, প্রত্যেক ধরণের ব্যক্তির পরিণতি, কীভাবে পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজত্ব বাস্তবায়িত হয় এবং আরও অনেক কিছু। এই সব রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মানুষের পাপী, ঈশ্বরবিরোধী প্রকৃতি এবং ভ্রষ্ট স্বভাবের বিচার ও তাকে অনাবৃত করেন। তিনি ভ্রষ্টাচার পরিহার করার এবং শুদ্ধ হওয়ার পথ প্রদান করেন, ইত্যাদি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী খুবই সমৃদ্ধ, এবং এগুলি সমস্তই রহস্য এবং সত্য যা মানুষ আগে কখনও শোনেনি। সেসবই এত চোখ খুলে দেওয়ার মতো এবং তৃপ্তিদায়ক এবং যে এগুলি পড়বে তাকে স্বীকার করতেই হবে যে এগুলি প্রকৃত সত্য। ঈশ্বরের মনোনীত লোকেরা তাঁর বাণীর বিচার সহ্য করে এবং অনেক সত্য বুঝতে পারে; তারা ধীরে ধীরে ভ্রষ্টাচার থেকে পরিশুদ্ধ হয়, পাপ পরিহার করার এবং শয়তানের উপর জয় লাভের দারুণ সাক্ষী হয়ে থাকে। এটি প্রভু যীশুর এই ভবিষ্যদ্বাণীটি পূরণ করে: “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন। তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, যা তিনি শুনবেন শুধুমাত্র তা-ই বলবেন এবং সমস্ত ভাবী ঘটনার কথা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)। এটি প্রমাণ করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন “সত্যের আত্মা”। তিনি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের অবতার, যিনি ত্রাণকর্তা হয়ে পৃথিবীতে এসেছেন।

এবার আমার মনে হয় সবার কাছে এটা পরিষ্কার যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই খ্রীষ্ট, ত্রাণকর্তা। এটা শুধু কথার কথা নয়, বরং তিনি যে সত্যগুলি প্রকাশ করেন এবং তিনি যা কাজ করেন তার উপর ভিত্তি করে এটি প্রমাণিত হয়েছে। ভণ্ড খ্রীষ্টদের সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন? তারা ক্রমাগত চিৎকার করে চলেছে, “আমি খ্রীষ্ট” বলে। আপনি তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন, “আপনি কি সত্য প্রকাশ করতে পারেন? আপনি কি মানুষের ভ্রষ্টাচারের সত্য প্রকাশ করতে পারেন? আপনি কি পাপ থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করতে পারবেন?” তারা এর মধ্যে একটিও করতে পারবে না। এইসব প্রশ্নের মুখে তারা একেবারে স্তব্ধ হয়ে যায়। ভণ্ড খ্রীষ্ট শুধুমাত্র শয়তান বা অশুভ আত্মার নকল ছাড়া আর কিছুই নয়, তাদের মধ্যে ঈশ্বরের জীবন এবং সারসত্তার সম্পূর্ণ অভাব থাকে। সুতরাং, তারা কখনও সত্য প্রকাশ করতে পারে না অথবা মানবজাতিকে শুদ্ধ করার ও বাঁচানোর কাজ সম্পাদন করতে পারেনা। তারা যা করতে পারে তা হল ভণ্ড মতবাদ ছড়িয়ে দেয় যা সত্য বলে মনে হয় বা মানুষকে বোকা বানানোর জন্য কিছু চিহ্ন প্রদর্শন ও অলৌকিক কাণ্ড ঘটায়। কয়েকজন ভণ্ড খ্রিস্টের আবার কিছু গুণ আছে, এবং তারা হয়ত তাদের নিজস্ব বই লিখতে পারে, এবং বাইবেলের গভীর জ্ঞানকে ব্যাখ্যা করতে পারে। কিন্তু তারা যে সব জিনিস ভাগ করে নেয়, সেসবই হল মানুষের ভাবনা এবং তত্ত্ব, এবং সেগুলো শুনতে মানুষের যতই ভালো লাগুক না কেন, সেগুলো কিন্তু সত্য নয়। তারা কখনও মানুষের জীবনের জন্য রসদ প্রদান করতে পারে না বা মানুষকে ঈশ্বর এবং সত্য জানতে সাহায্য করতে পারে না, এবং বিশেষ করে তারা আমাদের পাপ থেকে রক্ষা করতে পারে না যাতে আমরা শুদ্ধ হতে পারি। এটি একটি স্পষ্ট তথ্য। একজন ভণ্ড খ্রীষ্টের মধ্যে সত্যের সম্পূর্ণ অভাব রয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, এবং তারা চান মানুষ তাদের ঈশ্বরের মত পূজা করুন। তো তারা কী করে? তারা ঈশ্বরের অতীতের কাজগুলির অনুকরণ করে, খ্রীষ্ট হওয়ার ভান করার জন্য কিছু সহজ চিহ্ন প্রদর্শন ও অলৌকিক কাণ্ড ঘটায়, এবং কিছু ক্ষুদ্র উপকার করে অন্যদের বিভ্রান্ত করে। কোন বিশ্বাসী যদি সত্যকে না ভালোবাসে, শুধুই নিজেদের ভাগের অংশটা খেয়ে একটু অনুগ্রহ উপভোগ করতে চায়, এবং কেউ ঈশ্বর কি না, তার চিহ্ন প্রদর্শন ও অলৌকিক কাণ্ড ঘটানোর সক্ষমতাই যদি তাদের কাছে তা বিচারের একমাত্র মাপকাঠি হয়, তাহলে তাদের বিভ্রান্ত হয়ে যাওয়া সহজ। আসলে, ভণ্ড খ্রিস্টের কৌশলগুলি কেবলমাত্র মূর্খ এবং নির্বোধদের বোকা বানাতে পারে। ঈশ্বরের মেষ, বুদ্ধিমতী কুমারীরা, কখনও ভণ্ড খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করবে না, কারণ তারা সত্যকে ভালবাসে এবং তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনতে কান পেতে রাখে। যখন তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনতে পায়, তখন তারা তা গ্রহণ এবং অনুসরণ করে। ঈশ্বর এটা অনেক আগেই নির্ধারণ করেছিলেন। ঠিক যেমন প্রভু যীশু বলেছেন, “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে(যোহন ১০:২৭)। “আমার পিতা, যিনি আমার হাতে তাদের দিয়েছেন, তিনি পরাৎপর। কেউ তাদের পিতার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না(যোহন ১০:২৯)

এবার আমার মনে হয় আমাদের কাছে এটা পরিষ্কার কীকিভাবে ভণ্ড খ্রীষ্ট আর সত্য খ্রীষ্টের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। খ্রীষ্ট হলেন দেহরূপী ঈশ্বর, তিনিই সত্য, পথ এবং জীবন। খ্রীষ্টের ঐশ্বরিক সারসত্তা মূলত প্রকাশ পায় তাঁর সত্য প্রকাশ করার এবং ঈশ্বরের নিজস্ব কাজ করার ক্ষমতার মধ্যে। তিনি যতই সাধারণ প্রতীত হন না কেন, তাঁর মধ্যে যতই ক্ষমতা ও মর্যাদার অভাব থাকুক না কেন, মানুষ তাঁকে গ্রহণ করুক বা প্রত্যাখ্যান করুক, যতক্ষণ তিনি সত্য প্রকাশ করতে পারছেন, ঈশ্বরের স্বভাব, এবং ঈশ্বরের যা আছে এবং ঈশ্বর যা তা প্রকাশ করতে পারছেন, এবং তিনি পরিত্রাণের কাজ করতে পারছেন, তিনি ঈশ্বরের রূপ। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত সত্য, মানবজাতিকে বিচার ও শুদ্ধ করার তাঁর কাজ সম্পূর্ণরূপে এটা প্রমাণ করে যে তিনি দেহরূপী ঈশ্বর, তিনি খ্রীষ্টের রূপ। আমাদেরকে অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ ও অনুসরণ করতে হবে, সত্য অর্জন করতে, সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার হতে এবং ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হলে। কিন্তু এখন অনেক লোক ধর্মযাজকদের ও নেতাদের ও কমিউনিস্ট পার্টির শয়তানি শাসনকে দেখে উন্মত্তভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরোধীতা এবং নিন্দা করতে, তাই তারা মনে করে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ সত্য পথ নয়। তাদের যুক্তি হল: যদি এটা ঈশ্বরের কাজ হতো, তাহলে সবকিছুই খুব সহজ সরল ও মসৃণ হত, এবং সবাই সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করত। এটাকে এইভাবে দেখাটা চূড়ান্ত নির্বুদ্ধিতা! তারা এটা দেখতে ব্যর্থ হচ্ছে যে মানুষ এতটাই গভীরভাবে ভ্রষ্ট হয়েছে যে সে নিজেকে ঈশ্বরের শত্রু হয়ে উঠেছে এবং তাঁর জন্য কোনো স্থান রাখেনি। প্রভু যীশু আসার সময় কি মানুষ তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল? ইহুদীরা কি রোমীয় সরকারের বাহিনীকে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্য যুক্ত করেনি? আপনি কি বলবেন যে প্রভু যীশুর কাজ সত্য পথ ছিল না? এবং লোকেরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সাথে কেমন আচরণ করছে, এখন যখন তিনি অন্তিম সময়ে এসেছেন? ধর্মীয় জগতের খ্রীষ্টবিরোধী শক্তিগুলি তাঁকে প্রতিরোধ ও তাঁর নিন্দা করার জন্য সবকিছু করছে, সিসিপির শয়তানী শাসন উন্মত্ত হয়ে তাঁকে শিকার করছে, এবং ঈশ্বরের রূপ এবং কাজ মুছে ফেলার জন্য সমস্ত কৌশল ব্যবহার করছে। এটি প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ করে: “বিদ্যুৎ ঝলকে যেমন আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, তেমনি করে মনুষ্যপুত্রও তাঁর দিনে উদ্ভাসিত হবেন। কিন্তু প্রথমে তাঁকে দুঃখ যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে এবং এ যুগের লোক তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে(লুক ১৭:২৪-২৫)। এটার মানে কি? সত্য পথ সবসময় নিপীড়িত হয়েছে! খ্রীষ্ট সত্য প্রকাশ করেন মানুষকে উদ্ধার করার জন্য, তাই এটা অনিবার্য যে, শয়তানের মন্দ শক্তির দ্বারা তাঁর বিরোধীতা ও নিন্দার হবে এবং তিনি প্রতাড়িত হবেন। যদি এমন দাবী করা হয় যে কেউ খ্রীষ্ট কিন্তু তারা সত্য প্রকাশ করে না এবং তারা এই প্রজন্ম থেকে প্রত্যাখ্যাত নয়, যদি তারা শয়তানি শক্তির উন্মত্ত নিন্দার সম্মুখীন না হয় এবং তার দ্বারা আক্রান্ত না হয়, তাহলে এটা প্রমাণ হয়ে যায় যে তারা খ্রীষ্ট নন। যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি, শয়তান ঈশ্বরের রূপ এবং কাজকে, এবং ত্রাণকর্তার আগমনকে ঘৃণা করে। শয়তান জানে যে যখন ত্রাণকর্তা আসবেন তখন মানুষের পরিত্রাণের একটা সুযোগ থাকবে, সত্য এবং শয়তানের কৌশলগুলি বুঝতে পারার সুযোগ থাকবে। তাহলে তারা বিচক্ষণতা অর্জন করতে পারবে, প্রত্যাখ্যান করতে পারবে, সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের অভিমুখী হতে পারবে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হতে পারবে। তারপর শয়তান সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়, এবং তার অন্তিম সময় এগিয়ে আসে। আপনি কি মনে করেন যে শয়তান চুপ করে এটা মেনে নেবে? এটা না বুঝে, শুধুই নিজের ধারণাকে আঁকড়ে ধরে থাকা এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ অনুসন্ধান করতে ব্যর্থ হওয়া, অথবা ধর্মীয় জগতের খ্রীষ্টবিরোধী শক্তির সাথে চলে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নিন্দা ও প্রতিরোধ করা, এই সব কিছুর ভয়াবহ পরিণতি হবে। দেখা যাক সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলছেন। “যারা খ্রীষ্টের বাণীর সত্যের উপর নির্ভর না করে জীবন লাভ করতে চায় তারা পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যকর মানুষ এবং যারা খ্রীষ্ট প্রদত্ত জীবন যাপনের পথের সন্ধান পেতে চায় না তারা অলীক কল্পনার জগতে বিভোর হয়ে আছে। তাই বলছি যে যারা অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে গ্রহণ করে না তারা চিরকাল ঈশ্বরের দ্বারা ঘৃণার পাত্র হয়েই থাকে। অন্তিম সময়ে খ্রীষ্টই মানুষের কাছে রাজ্যের প্রবেশপথ, এবং কেউ তাঁকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারে না। খ্রীষ্টের মধ্যস্থতা ছাড়া কেউ ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে পারে না। তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করলে, অবশ্যই তাঁর বাক্য মেনে নেবে এবং তাঁর প্রদর্শিত পথের অনুবর্তী হবে। তুমি সত্য প্রাপ্তি না করে এবং জীবনের বিধান গ্রহণে অক্ষম হয়ে কেবল আশীর্বাদ লাভের কথা ভেবে যেতে পারো না। খ্রীষ্ট অন্তিম সময়ে আসেন, যাতে তাঁর প্রকৃত অনুরাগীদের জীবন প্রদান করতে পারেন। পুরাতন যুগের পরিসমাপ্তি ঘটানো এবং নতুন যুগে প্রবেশের উদ্দেশ্যেই তাঁর কাজ, আর যারা নতুন যুগে প্রবেশ করবে, তাঁর কাজের এই পথ তাদের গ্রহণ করতেই হবে। যদি তুমি তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করো এবং তার পরিবর্তে তাঁর নিন্দা করো, তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করো অথবা নির্যাতন করো, তাহলে তুমি অনন্তকাল জ্বলতে থাকবে এবং কখনই ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ খ্রীষ্ট স্বয়ং পবিত্র আত্মার প্রতিরূপ, ঈশ্বরের মূর্ত প্রকাশ, এমন একজন যাকে ঈশ্বর পৃথিবীতে তাঁর হয়ে কাজ করার দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তাই আমি বলছি যে অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের কর্মকাণ্ড মেনে নিতে না পারার অর্থ পবিত্র আত্মার নিন্দা করা। যারা পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তাদেরকে প্রদত্ত শাস্তির স্বরূপ সকলের কাছে স্বতঃসিদ্ধ। আমি তোমাকে এটাও বলছি, তুমি যদি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রতিহত করো, যদি তুমি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রত্যাখ্যান করো, তবে তোমার পরিণতি বহন করার মতো আর কেউ থাকবে না। উপরন্তু, আজ থেকে তুমি ঈশ্বরের অনুমোদন লাভের আর কোনও সুযোগ পাবে না; এমনকি প্রায়শ্চিত্তের চেষ্টা করলেও, তুমি আর কখনও ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য লাভ করবে না। কারণ তোমার প্রত্যাখ্যান করা, বর্জন করা ব্যক্তি কোনও মানুষ নন, তিনি খ্রীষ্ট। তুমি কি জানো এর পরিণতি কী হবে? তাহলে এটা কোনও ছোটখাটো ভুল হবে না, বরং একটি জঘন্য অপরাধ হবে। তাই আমি সবাইকে উপদেশ দিচ্ছি যে সত্যের সামনে শ্বদন্ত বিকশন কোরো না বা অযৌক্তিক সমালোচনা কোরো না, কারণ শুধুমাত্র সত্যই তোমাকে জীবন দিতে পারে, এবং সত্য ব্যতীত অন্য কিছুই পুনর্জন্ম এবং পুনরায় ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য দিতে পারবে না(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

রক্ষাকর্তা যখন ফিরে আসবেন, তিনি কি তখনও যীশু নামেই অভিহিত হবেন?

অন্তিম সময়ে, রক্ষাকর্তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে এসে গেছেন, তিনি সত্য প্রকাশ করছেন, মানবজাতিকে সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করতে...

অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচার কার্য মানবজাতিকে কীভাবে শুদ্ধ করে এবং রক্ষা করে?

মানুষ বুঝতে পেরেছে যে পৃথিবীর ওপরে মহা বিপর্যয় নেমে এসেছে আর যারা আশা করছে প্রভু মেঘে চড়ে আসবেন তারা উদ্বিগ্ন হয়ে অপেক্ষা করছে। তবে বহু বছর...

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আস্থা রাখা কি প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা?

অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাবের পর ত্রিশ বছর কেটে গেছে এবং ১৯৯১ সালে কাজ ও সত্যের প্রকাশ শুরু করেছিলেন। তিনি প্রকাশ...

মানবজাতিকে রক্ষা এবং ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন করতে কে পারে?

ভাগ্যের উল্লেখমাত্র বেশীরভাগ মানুষ মনে করে যাদের প্রচুর অর্থ, প্রতিষ্ঠা আছে, যারা জীবনে সফল, তারাই সৌভাগ্যবান, এবং মনে করে যারা দরিদ্র,...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন