অবতারত্ব কী?

19-06-2022

আমরা সবাই জানি যে দু’হাজার বছর আগে, মানুষকে মুক্তি দিতে ঈশ্বর মানুষের পৃথিবীতে প্রভু যীশুর অবতার গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রচার করেছিলেন, “অনুতাপ কর: কারণ স্বর্গরাজ্য সমাগত(মথি ৪:১৭)। তিনি বহু সত্যও প্রকাশ করেছিলেন এবং উদ্ধারের কাজ সম্পূর্ণ করতে ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন মানুষের পাপ-উৎসর্গ হিসেবে এবং এভাবেই বিধানের যুগ সমাপ্ত করে অনুগ্রহের যুগের সূচনা করেছিলেন। ঈশ্বর প্রথমবার অবতার ধারণ করে মানুষকে মুক্তি দিতে এই কাজ করেন। যদিও ইহুদি ধর্ম বেপরোয়াভাবে প্রভু যীশুর নিন্দা করার চেষ্টা করে এবং রোমের সরকারের সঙ্গে একযোগে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে, দুই হাজার বছর পরে প্রভু যীশুর সুসমাচার পৃথিবীর প্রতিটি কোণে প্রসারিত হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে প্রভু যীশুই ছিলেন ঈশ্বরের অবতার, একমাত্র সত্য ঈশ্বর ও সৃষ্টিকর্তা যিনি দেহরূপে কাজ করতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবু বহু মানুষ বুঝতে পারে না যে প্রভু যীশু ঈশ্বরের অবতার। পরিবর্তে, তারা প্রভু যীশুকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে দেখে। এমনকি বহু ধর্মাশ্রয়ী যাজক প্রভু যীশুকে ঈশ্বর হিসেবে চিনতে পারে না, এবং কেবলমাত্র তাঁকেই ঈশ্বরের প্রিয় পুত্র। যদিও আজ অগণিত ঈশ্বর বিশ্বাসী বর্তমান, স্বল্পসংখ্যক মানুষই আসলে জানে যে প্রভু যীশুই ঈশ্বর, এবং প্রভু যীশুর প্রকাশিত সত্যগুলির অর্থ ও মূল্য কেউ জানে না। তাই, ঈশ্বরকে স্বাগত জানানোর ব্যাপারে, অনেকেই বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে কারণ ঈশ্বরের কণ্ঠ তারা শুনতে পায় না। যারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনতে পায় না, বাইরে থেকে দেখে তাদের যতই প্রবল বিশ্বাসী মনে হোক, তারা যদি প্রভু যীশুর মধ্যে মনুষ্যপুত্রকে দেখে, তারা কি সত্যিই প্রভুর প্রতি বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে এবং তাঁকে অনুসরণ করতে পারবে? তারা কি প্রভু যীশুকে এক সাধারণ মানুষ হিসেবে নিন্দা করতে এবং তাঁর ঈশ্বর সত্তাকে অস্বীকার করতে পারবে? যদি তারা প্রভু যীশুকে আজ এত সত্য প্রকাশ করতে শোনে, তবুও কি তারা প্রভু যীশুকে ধর্মদ্রোহী কথা বলার জন্য নিন্দা করতে এবং পুনরায় ক্রুশবিদ্ধ করতে পারবে? ফরিশীদের প্রভু যীশুকে নিন্দা করার ঘটনার ভিত্তিতে, আমরা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি যে যারা প্রভুকে বিশ্বাস করে তারা যদি তাঁকে তাঁর মনুষ্যপুত্র রূপে সত্যিই দেখত, অনেকেরই পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, এবং তদধিক মানুষ প্রভু যীশুর বিচার ও নিন্দা করবে, ফরিশীদের মতোই, এবং তাঁকে পুনরায় ক্রুশবিদ্ধ করবে। আমি এ ভাবে বললে কেউ কেউ আপত্তি জানাতে পারে, কিন্তু আমার প্রতিটি কথা বাস্তব। যেহেতু নির্দিষ্টভাবে মানবজাতি গভীরভাবে ভ্রষ্ট এবং তাদের ঈশ্বর বিশ্বাস দৃষ্টিনির্ভর, তাই কেউ মনুষ্যপুত্র অবতাররূপে ঈশ্বরের আবির্ভাব চিনতে পারেনি। এর থেকেই বোঝা যায় অবতারত্ব এক মহারহস্য। সহস্রাধিক বছরে কেউ সত্যের এই আঙ্গিকটি বুঝতে পারেনি। যদিও বিশ্বাসীরা জানে যে প্রভু যীশু হলেন ঈশ্বরের অবতার, কেউ স্পষ্টভাবে অবতারত্ব কী তা ব্যাখ্যা করতে পারেনি এবং কীভাবে আমাদের ঈশ্বরের অবতারকে বোঝা উচিত।

তাহলে, ঈশ্বর অবতার রূপে দেহে অবতীর্ণ হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, মানবজাতির দুর্নীতির জন্যই ঈশ্বরের অবতাররূপ ধারণের প্রয়োজন। অন্য কথায়, কেবলমাত্র অবতাররূপ ধারণই মানবজাতির সম্পূর্ণ মুক্তি সম্ভব করতে পারত। মানবজাতিকে মুক্তিদান ও উদ্ধার করতে ঈশ্বর দুবার অবতাররূপ ধারণ করেন। প্রভু যীশু ছিলেন ঈশ্বরের অবতার, এবং তিনি উদ্ধারের কাজ করতে এসেছিলেন। কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারে, ঈশ্বর কেন কোনো ব্যক্তিকে উদ্ধারের কাজে ব্যবহার করলেন না? কেন ঈশ্বর অবতীর্ণ হলেন? কারণ ভ্রষ্ট মানবজাতির প্রতিটি সদস্যই পাপ বহন করে, আমরা সবাই পাপী, অর্থাৎ কোনো যোগ্য পাপস্খালনের বলি ছিল না। শুধুমাত্র অবতাররূপে মনুষ্যপুত্রই পাপমুক্ত ছিলেন, তাই ঈশ্বর স্বয়ং উদ্ধারকাজের নিমিত্ত মনুষ্যপুত্ররূপে অবতীর্ণ হন। শুধুমাত্র এর থেকেই ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা ও পবিত্রতা বোঝা গিয়েছিল, যা শয়তানকে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত করে এবং তাকে ঈশ্বরের ওপর দোষারোপ করার সুযোগ দেয়নি। এই কাজ মানবজাতিকেও তাদের প্রতি ঈশ্বরের আন্তরিক ভালোবাসা ও করুণাকে জানার সুযোগ দিয়েছিল। যখন প্রভু যীশু মুক্তির কার্য সম্পূর্ণ করেন, তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে তিনি পুনরাবির্ভূত হবেন। আজ প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অবতাররূপে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বহু সত্য প্রকাশ করেছেন এবং মানবজাতির কলুষ সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ করতে অন্তিম সময়ের বিচারকার্য করছেন, যাতে মানবজাতিকে সম্পূর্ণত পাপ ও শয়তানের প্রভাব থেকে উদ্ধার করা যায়, এবং এক সুন্দর গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও যা অপ্রত্যাশিত তা হল যদিও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বহু সত্য প্রকাশ করেছেন, তবু তাঁকে ধর্মীয় জগতে প্রচণ্ড প্রতিরোধ ও নিন্দার সম্মুখীন হতে হয় সেই খ্রীষ্টবিরোধীদের দ্বারা, যারা শাসক সিসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজকে প্রতিরোধ, ধ্বংস ও নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যে ঈশ্বরের আবির্ভূত অবতার তা অস্বীকার করে, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে সাধারণ মানুষ বলে নিন্দা ও ধর্মবিরোধিতা করে, যা ধর্মীয় জগতের খ্রীষ্টবিরোধী শক্তির কদর্য রূপ সম্পূর্ণ বেআব্রু করে দিয়েছে যারা সত্যকে ঘৃণা করে ও ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করে। যদি আমরা দুহাজার বছর পিছিয়ে যাই আমরা দেখি যে প্রধান পুরোহিত, করণিক এবং ইহুদি ধর্মের ফরীশীরা প্রভু যীশুকে মশীহ বলে স্বীকার করার থেকে মৃত্যু বরণ করতেও অধিক প্রস্তুত। তারা প্রভু যীশুকে এক সাধারণ মানুষ বলে মনে করেছিল যে ধর্মবিরোধিতা করেছে, প্রভু যীশুকে প্রতিরোধ, নিন্দা এবং কটুবাক্য বলার জন্য যা করা সম্ভব তারা করেছিল এবং অবশেষে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে এক ভয়ঙ্কর অপরাধ করে যার জন্য তারা ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত ও শাস্তিপ্রাপ্ত হয়। আজ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মনুষ্যপুত্রের রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন ও কাজ করছেন। অনেক মানুষই দেখেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্যগুলি সত্য, তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনেছে, এবং তারা সকলে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ সানন্দে স্বীকার করেছে, তবু, এমন অনেকে আছে যারা ঈশ্বরের অবতারকে জানে না, যারা এখনও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে এক সাধারণ মানুষ মনে করে, এবং তারা যারাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে স্বীকার করে তাদের বিচার ও নিন্দা করে, এই বলে যে তারা এক সাধারণ মানুষে বিশ্বাস করে। এই ব্যক্তিরা মনে করে তারা বাইবেল বোঝে, সুতরাং তারা প্রকৃত পথের সন্ধান থেকে বিরত থাকে এবং গোঁড়াভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে নিন্দা ও প্রতিরোধ করে, পুনরায় ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করার অপরাধ করে। কেন ঈশ্বরের উভয় অবতারই মানুষের দ্বারা নিন্দিত ও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে? এর কারণ মানুষ ঈশ্বরকে জানে না, বোঝে না সত্য কী, এবং অবতারত্বের মহারহস্য আরো কম বোঝে। এর কারণ মানুষের গভীর দূষণ ও শয়তানোচিত প্রকৃতিও বটে। তারা শুধু সত্যকে ঘৃণা করে তা-ই নয়, তারা উগ্রভাবে ঈশ্বর বিরোধী এবং তাদের কোনো ভয় নেই। বস্তুত, এমন কিছু ধার্মিক ঈশ্বর বিশ্বাসী আছে যারা তাদের অজ্ঞতার জন্য সিসিপির দ্বারা, দানবরাজের দ্বারা এবং ধর্মীয় খ্রীষ্টবিরোধীদের দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়েছে এবং ঈশ্ব রের প্রতিরোধের পথ বেছে নিয়েছে। তাদের ব্যর্থতার কারণ হল অবতারত্ব ও সত্য বিষয়ে তাদের জ্ঞানের অভাব, সুতরাং তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনতে অপারগ, এবং এই কারণে তারা ঈশ্বরের অবতারকে সাধারণ মানুষ গণ্য করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে নিন্দা ও কটুভাষণ করে। স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে অবতারত্বের সত্য বুঝতে গেলে প্রভুকে স্বাগত জানানো ও তাঁর দ্বারা স্বর্গরাজ্যে উত্তোলিত হওয়া আবশ্যক। এই আমাদের অন্তিম গন্তব্য সম্পর্কিত এক জরুরি বিষয়।

বহু মানুষ প্রশ্ন করবে, যেহেতু প্রভু যীশু ঈশ্বরের অবতার এবং তিনি মুক্তির কার্য করেছেন, এবং মানবজাতিকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা ও ঈশ্বরমুখী করা হয়েছে, কেন তবু ঈশ্বরকে অন্তিম সময়ে মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য বিচারের কাজ করতে অবতাররূপ ধারণ করতে হল? এর এক গভীর তাৎপর্য আছে। সহজে বলতে গেলে, ঈশ্বর যে মানবজাতিকে মুক্তি দিতে এবং আমাদের সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করতে দুবার অবতাররূপে আসবেন তা বিশ্ব সৃষ্টির বহু পূর্বেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। বাইবেলে বহু ভবিষ্যদ্বাণী আছে যে ঈশ্বর দুবার মনুষ্যপুত্র রূপে অবতীর্ণ হবেন। প্রথমবার, পাপস্খালনের বলি হিসেবে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে, তিনি মুক্তির কার্য সম্পন্ন করেছেন, যাতে মানুষের পাপ ক্ষমা করা হয়, কিন্তু মানুষ পাপমুক্ত হয়ে পবিত্রতা অর্জন করেনি। দ্বিতীয়বার, তিনি সত্য প্রকাশ করে ও বিচারের কাজের মাধ্যমে মানবজাতিকে সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ করবেন, তাদের পাপ ও শয়তানের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ উদ্ধার করবেন, যুগের অন্ত সম্পাদন করবেন, এবং মানবজাতিকে এক সুন্দর গন্তব্যে নিয়ে আসবেন। অতএব এই দুই অবতারের উদ্দেশ্য মানবজাতিকে মুক্ত ও তারপর তাদের সম্পূর্ণ উদ্ধার করা। ঈশ্বর তাঁর মানবজাতিকে উদ্ধার করার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা সম্পূর্ণ করতে দুবার অবতাররূপ ধারণ করেন। আজ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ এক দল মানুষকে জয় ও ত্রুটিমুক্ত করে, তাদের জয়ী করেছে ঈশ্বর শয়তানকে পরাজিত করে গৌরব অর্জন করেছেন, এবং বলা যেতে পারে যে ঈশ্বর তাঁর মহান কাজ সম্পাদন করেছেন। এ হল সেই সব কাজ যা ঈশ্বর ইতিমধ্যেই করেছেন। এখন আমরা অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের অবতারত্বের অবিশ্বাস্য তাৎপর্য দেখতে পাচ্ছি। একদিকে, এতে পুরনো যুগের—অনুগ্রহের যুগের অন্ত হয়েছে, এবং এক নতুন যুগ—রাজ্যের যুগের সূচনা হয়েছে। অন্যদিকে, এতে মানবজাতিকে সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করা হয় ও এক সুন্দর গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তির কার্য এবং বিচারকার্য উভয়ই ঈশ্বরের অবতারের দ্বারা সম্পন্ন হয়, তাই ঈশ্বরের দুটি অবতার সত্যিই গভীরভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। আজ, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এত সত্য প্রকাশ করেছেন এবং আমাদের পৃথিবীতে এত মহান কাজ করেছেন, তাহলে কেন আজও এত মানুষ ঈশ্বরের কাজ জানে না? অনেক মানুষ এখনও স্বীকার করতে চায় না যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ঈশ্বরের অবতার, ধর্মীয় ধারণায় বদ্ধমূল থাকে, বিশ্বাস করে যে শুধুমাত্র প্রভু যীশুই হলেন ঈশ্বর, এবং জেদ ধরে থাকে যে শুধুমাত্র বাইবেলের অনুসরণ করলেই আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারব। কি মূর্খ ও অজ্ঞ এরা! এত বোকা মানুষ কী করে ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনতে পাবে? এবং কী করে তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রকাশিত সব সত্য আবিষ্কার করবে? শেষ পর্যন্ত, এর কারণ ঈশ্বরের অবতার সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের অভাবই এবং ঈশ্বরের কণ্ঠকে না চেনা, সুতরাং তারা ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে উন্নীত হতে পারবে না। এইসব অজ্ঞ মানুষ, সব মূর্খ কুমারী, যত বছরই বিশ্বাস করুক না কেন, কখনোই ঈশ্বরের স্বীকৃতি পাবে না। স্পষ্টতই, তুমি যদি প্রভুকে স্বাগত জানাতে চাও, ঈশ্বরের অবতার সম্পর্কিত জ্ঞান ও অবতারত্বের সত্যকে বোঝা অত্যাবশ্যক! তাহলে অবতারত্ব ঠিক কী? আমাদের কীভাবে তা বোঝা উচিত? কী করে আমরা প্রকৃত ও ভণ্ড খ্রীষ্টের মধ্যে ভেদ করব? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়লে আমরা বুঝতে পারব।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “‘অবতার’ হল ঈশ্বরের দেহরূপে আবির্ভাব; ঈশ্বর সৃষ্ট মানবজাতির মাঝে দেহের প্রতিচ্ছবি হিসাবেই কার্যনির্বাহ করেন। তাই ঈশ্বরকে অবতাররূপ ধারণ করতে হলে প্রথমে তাঁকে দেহ ধারণ করতেই হবে, স্বাভাবিক মানবতা পূর্ণ দেহ; এটাই হল সবচেয়ে প্রাথমিক পূর্বশর্ত। বস্তুত, ঈশ্বরের অবতাররূপ ধারণের তাৎপর্য হল যে, ঈশ্বর দেহরূপে বাস এবং কার্যনির্বাহ করেন এবং ঈশ্বর তাঁর যথার্থ সারসত্য নিয়েই দেহরূপে, অর্থাৎ মানুষরূপে পরিণত হন(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের অধিষ্ঠিত দেহরূপের সারসত্য)। “ঈশ্বরের অবতারকে খ্রীষ্ট নামে অভিহিত করা হয়, এবং ঈশ্বরের আত্মার পরিধান করা দেহই হলেন খ্রীষ্ট। এই দেহ অন্য যেকোনো মানুষের রক্তমাংসের দেহের মতো নয়। এই পার্থক্যের কারণ এই যে, খ্রীষ্ট রক্তমাংসের নন; তিনি হলেন আত্মার অবতার। তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক মানবতা এবং সম্পূর্ণ দেবত্ব উভয়ই আছে। তাঁর দেবত্ব কোনো মানুষের অধিকারেই নেই। তাঁর স্বাভাবিক মানবতা মনুষ্যরূপে তাঁর সকল স্বাভাবিক কার্যকলাপ বজায় রাখে, অপরদিকে তাঁর দেবত্ব স্বয়ং ঈশ্বরের কার্য নির্বাহ করে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্টের সারসত্য হল স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছার প্রতি আনুগত্য)। “ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী এবং তাঁর মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বরের স্বভাব এবং প্রজ্ঞা, যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা অসাধ্য। যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্ট বলে দাবি করে, কিন্তু ঈশ্বরের কাজে অপারগ, তারা আসলে প্রতারক। খ্রীষ্ট নিছক পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রকাশ নন, বরং ঈশ্বরের অবতাররূপ, যা ধারণপূর্বক তিনি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করেন এবং তা সম্পূর্ণ করেন। এই অবতাররূপ যেকোনো মানুষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা অসম্ভব, বরং তিনি হলেন এক অবতাররূপ, যিনি যথাযথভাবে পৃথিবীতে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করতে পারেন, ঈশ্বরের স্বভাব প্রকাশ করতে পারেন, যথাযথ ভাবে ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন এবং মানুষকে জীবন দান করতে পারেন(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)। ঈশ্বরের বাক্যে স্পষ্টতই বিবৃত আছে যে অবতারত্ব হল ঈশ্বরের আত্মার দেহে বাস্তবায়ন, অর্থাৎ ঈশ্বরের আত্মা সাধারণ মানুষ হয়ে ওঠার জন্য দেহরূপ ধারণ করেন, এবং তখন মানবজগতে অবতীর্ণ হন ও কাজ করেন। সহজ কথায়, এর অর্থ ঈশ্বরের আত্মা দেহরূপ ধারণ করে মনুষ্যপুত্র হয়ে ওঠেন। বাইরে থেকে দেখলে, ঈশ্বরের অবতার এক স্বাভাবিক সাধারণ মানুষ, না উচ্চমর্যাদাবিশিষ্ট, না অসাধারণ, যিনি খান, বেশভূষা করেন এবং সাধারণ মানুষের মতো পরিবহন ব্যবহার করেন এবং এক সাধারণ জীবন যাপন করেন। খিদে পেলে তাঁর খাওয়ার প্রয়োজন হয় এবং ক্লান্ত হলে ঘুমের প্রয়োজন হয়, তিনি স্বাভাবিক মানবিক আবেগ উপলব্ধি করেন, তিনি বস্তুত এবং প্রকৃত অর্থে মানুষের মাঝে বাস করেন এবং কেউ বুঝতে পারে না যে তিনি বাস্তবিক ঈশ্বরের অবতার। এমন এক স্বাভাবিক সাধারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও, তাঁর এবং সৃষ্ট মানুষের মধ্যে গুরুত্ব পূর্ণ পার্থক্য আছে। তিনি ঈশ্বরের অবতার, এবং তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা নিহিত। তাঁর স্বাভাবিক মানবতা আছে কিন্তু সম্পূর্ণ দেবত্বও আছে, যা দৃশ্যমান ও অনুভূত। এর প্রমাণ হল তিনি যে কোনো স্থান ও কালে সত্য প্রকাশ করতে ও রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম। তিনি অভিব্যক্তি ও সাক্ষ্য দিতে পারেন ঈশ্বরের স্বভাবের, যা কিছু তাঁর ও তিনি যা, ঈশ্বরের মন ও চিন্তার, ঈশ্বরের ভালোবাসার এবং ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তা ও প্রজ্ঞার, যাতে মানুষ ঈশ্বরকে জানতে ও উপলব্ধি করতে পারে। তিনি বাইবেলের সমস্ত রহস্যও উদ্ঘাটন করতে পারেন, যার অর্থ তিনি প্রকাশিত বাক্যে কথিত ভবিষ্যদ্বাণীর পুঁথিও খুলতে পারেন। এতে প্রমাণ হয় যে তাঁর সম্পূর্ণ দেবত্ব আছে। বহিরঙ্গে খ্রীষ্ট এক সাধারণ মানুষ, কিন্তু তিনি বহু সত্য প্রকাশ করতে পারেন, মানুষকে জাগাতে পারেন এবং ভ্রষ্ট মানবজাতিকে শয়তানের প্রভাব থেকে উদ্ধার করতে পারেন। কারোর ভেতর ঈশ্বরের আত্মা না থাকলে কী করে তারা এগুলো করতে পারে? অবশ্যই কোনো বিখ্যাত বা মহান ব্যক্তি এসব করতে পারে না, কারণ কোনো বিখ্যাত বা মহান ব্যক্তি সত্য প্রকাশ করতে পারে না। কোনো সত্যই তাদের অধীত নয়। তারা এমন কি নিজেদেরও উদ্ধার করতে পারেনি, তাহলে গোটা মানবজাতিকে কী করে উদ্ধার করবে? ঈশ্বরের অবতার সত্য প্রকাশ করতে পারেন এবং বিচারকার্য করতে, মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করতে পারেন, যে ক্ষমতাগুলি কোনো মানুষেরই অধীত নয়। “বাক্য দেহে আবির্ভূত হল” গ্রন্থটি হল অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের উচ্চারণ, এবং অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারকার্যের সাক্ষ্য। যেমন ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারকার্যের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল এবং স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সিঞ্চন ও নেতৃত্বকে স্বীকার করেছে, তারা সকলে ঈশ্বরের অবতারের কাজের গভীর ব্যবহারিকতা অনুভব করেছে। ঈশ্বর বাস্তবিক ও প্রকৃত অর্থেই মানুষের মাঝে থাকেন এবং আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির ভিত্তিতে আমাদের সমর্থন ও সরবরাহ করার জন্য সত্য প্রকাশ করেন, একইসঙ্গে প্রকাশ্যে আনেন আমাদের ঈশ্বর বিশ্বাস থেকে বিচ্যূতি, ভ্রান্ত অভীপ্সা ও প্রেক্ষিত এবং আমাদের ভেতরের সবরকম শয়তানোচিত স্বভাব যাতে আমরা জ্ঞান ও পরিবর্তন অর্জন করতে পারি। ঈশ্বর আমাদের মানুষের জন্য তাঁর ইচ্ছা ও প্রয়োজনের কথাও বলেন, যাতে আমাদের সর্বাধিক বাস্তবিক ও নিখুঁত অনুসরণযোগ্য লক্ষ্য ও প্রয়োগের নীতি দেওয়া যায়, যাতে আমরা সত্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করতে পারি, ঈশ্বরের পরিত্রাণ পেতে পারি, এবং শয়তানের অন্ধকার শক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে যে-ই অনুসরণ করে সে গভীরভাবে অনুভব করে যে ঈশ্বরের অবতার সত্য প্রকাশ করে মানুষের বিচার ও শাস্তি বিধান না করলে, তারা কখনোই নিজেদের পাপী প্রকৃতিকে জানতে পারত না, তারা পাপের বন্ধন ও অবরোধ থেকে মুক্ত হতে পারত না। তারা এ-ও বুঝতে পারে শুধুমাত্র ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তিকে স্বীকার করার মাধ্যমেই তাদের ভ্রষ্ট স্বভাবের পরিশোধন হতে পারে, শুধুমাত্র ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাবের জ্ঞানসম্পন্ন হলেই তারা ঈশ্বরে ভীতি এবং মন্দ কর্ম পরিত্যাগ করতে পারে, এবং শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী জীবন ধারণ করলেই তারা প্রকৃতপক্ষে মানব সদৃশ জীবন যাপন করতে পারে, ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি ও আশীর্বাদের যোগ্য হতে পারে এবং স্বর্গরাজ্যে আনীত হতে পারে। ভেবে দেখো: ঈশ্বরের অবতার এসে অন্তিম সময়ে এত সত্য প্রকাশ না করলে, আমরা কি কখনো এই এক-জীবনে-একবার পাওয়ার মতো এই উদ্ধারের সুযোগ পেতাম? আমরা কি ঈশ্বরের বিচার, শাস্তি এবং তাঁর আশীর্বাদের প্রাচুর্য উপভোগ করতে পারতাম? অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের অবতার না থাকলে সমস্ত মানবতা ধ্বংসে বিলীন হত, এবং কেউ পরিত্রাণ পেত না। যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে বলা আছে, “এবার ঈশ্বর কার্যসম্পাদন করতে কোনো অধ্যাত্মশরীরে আসেননি, এসেছেন সাধারণ রূপে। সর্বোপরি, এটা শুধু ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতারের চেহারা নয়, এই দেহরূপের মধ্যে দিয়েই ঈশ্বর রক্তমাংসের শরীরে ফিরছেন। অত্যন্ত সাধারণ এক দেহরূপ। তুমি এমন কিছু দেখবে না যাতে তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করতে পারো, কিন্তু তুমি তাঁর থেকে এমন অনেক সত্য লাভ করতে পার, যা এতকাল অজানা ছিল। তুচ্ছ এই দেহরূপই ঈশ্বরের সকল সত্যের বাক্যধারণ করে, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং ঈশ্বরের সম্পূর্ণ স্বভাব মানুষের বোঝার মত করে প্রকাশ করে। তোমার কি স্বর্গের ঈশ্বরকে দেখতে খুব ইচ্ছা করে না? তোমার কি স্বর্গের ঈশ্বরকে উপলব্ধি করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নেই? তোমার কি ভীষণ ইচ্ছা নেই মানবজাতির গন্তব্য কোথায় দেখার? এই সমস্ত রহস্যের কথা তিনিই তোমাকে জানাবেন—সেই সকল রহস্য যে বিষয়ে অন্য কোনো মানুষ বলতে পারবে না তোমায়, পাশাপাশি তিনিই তোমায় সেই সকল সত্য জানাবেন যা তোমার বোধাতীত। তিনিই তোমার সেই রাজ্যের প্রবেশ পথ, আর তিনিই হলেন নতুন যুগের পথপ্রদর্শক। এমনই সাধারণ এক দেহরূপ ধারণ করে আছে বহু অতল রহস্য। তাঁর কার্যসমূহ তোমার কাছে হয়ত দুর্জ্ঞেয়, কিন্তু তাঁর কাজের সমস্ত উদ্দেশ্য তোমায় বোঝানোর জন্য যথেষ্ট, যে তিনি শুধুই সাধারণ দেহরূপ নন, যা মানুষ তাঁকে মনে করে। কারণ তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার এবং অন্তিম সময়ের মানবজাতির প্রতি ঈশ্বরের যত্নের পরিচয় বহন করছেন। যদিও তাঁর বাক্য শুনে তোমার মনে হবে না স্বর্গ মর্ত্য কম্পিত হচ্ছে, যদিও তাঁর দু-চোখে তুমি দেখবে না অগ্নিদৃষ্টি, যদিও তাঁর লৌহদণ্ডের শাসন তোমাকে পেতে হবে না, কিন্তু তুমি তাঁর বাক্যে শুনবে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত এবং জানবে ঈশ্বর মানবজাতির প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করছেন; দেখতে পাবে ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাব এবং তাঁর প্রজ্ঞা এবং সর্বোপরি অনুধাবন করবে সমগ্র মানবজাতির প্রতি তাঁর উৎকণ্ঠা। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ হচ্ছে মানুষকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ দেওয়া যে স্বর্গের ঈশ্বর মানুষের মধ্যে বাস করছেন, এবং মানুষকে সক্ষম করে তোলা ঈশ্বরকে জানতে, মান্য করতে, সম্মান করতে এবং ভালবাসতে। ঠিক এই কারণেই তিনি দ্বিতীয়বার দেহরূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন। যদিও বর্তমানে মানুষ ঈশ্বরকে দেখছে মানুষের মতোই, অবিকল মানুষের চেহারায় দুই চোখ, এক নাক বিশিষ্ট এক ঈশ্বর—সাদামাটা এক ঈশ্বর, পরিশেষে ঈশ্বর তোমাদের প্রত্যক্ষ করাবেন যদি এই মানুষটার অস্তিত্ব না থাকত, স্বর্গ ও পৃথিবী চূড়ান্ত এক টালমাটালে পড়ত; যদি এই মানুষটা না থাকত, স্বর্গ হয়ে উঠত নিষ্প্রভ, পৃথিবী জুড়ে বিশৃঙ্খলা চলত এবং সমস্ত মানবজাতি দুর্ভিক্ষ আর মহামারীর কবলে পড়ত। তিনি তোমাদের প্রত্যক্ষ করাবেন যদি ঈশ্বরের অবতার অন্তিম সময়ে তোমাদের উদ্ধার করতে না আসতেন তাহলে সমস্ত মানবজাতিকে অনেক আগেই নরকে পচিয়ে মারতেন ঈশ্বর; যদি এই অবতাররূপের অস্তিত্ব না থাকত, তোমরা চিরপাপী হয়ে থাকতে, আর চিরকাল তোমরা শবদেহের মতোই হয়ে থাকতে। তোমাদের জেনে রাখা দরকার এই দেহরূপের অস্তিত্ব না থাকলে সমস্ত মানবজাতি এক অনিবার্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন হত এবং বুঝতে পারত অন্তিম সময়ে মানবজাতির উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের দেওয়া ভয়ঙ্করতম শাস্তি এড়ানো সম্ভব নয়। এই সাধারণ দেহরূপ ভূমিষ্ঠ না হলে, তোমরা জীবনভর বেঁচে থাকতে না পেরে জীবনের জন্য আর মরে যেতে না পেরে মৃত্যুর জন্য করুণা ভিক্ষা করতে; এই দেহরূপের অস্তিত্ব না থাকলে আজ তোমরা সত্যকে উপলব্ধি করে ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে এসে দাঁড়াতে পারতে না, বরং গুরুভার পাপের কারণে ঈশ্বরের দণ্ড ভোগ করতে। তোমরা কি জানো দেহরূপে ঈশ্বরের আগমন না ঘটলে কেউই পরিত্রাণের সুযোগ পেত না; এই দেহরূপে অবতীর্ণ না হলে কবেই ঈশ্বর এই বার্দ্ধক্যপ্রাপ্ত যুগের অন্ত ঘোষণা করে দিতেন। এরপরও কি তোমরা ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতাররূপকে প্রত্যাখ্যান করবে? এই সাধারণ মানুষটির থেকে এত সুবিধা পাওয়ার পরেও কেন তোমরা সানন্দে আবাহন করছ না তাঁকে?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তুমি কি জানতে? ঈশ্বর মানুষের মধ্যে এক মহান কাজ করেছেন)

এই মুহূর্তে কোনো কোনো লোক প্রশ্ন করতে পারে, ঈশ্বরের অবতারের বহিরঙ্গ সাধারণ এবং তাঁর দেবত্ব দেহে লুক্কায়িত, তাহলে যদি ঈশ্বর এসে থাকেন, কীভাবে তাঁকে আমরা ঈশ্বরের অবতার বলে চিনব? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য আমাদের পথ দেখায়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী হবেন, এবং যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের অভিব্যক্তির অধিকারী হবেন। যেহেতু ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করেছেন, সেহেতু তিনি সেই কাজ নিয়ে আসবেন যা তিনি করতে চান, এবং যেহেতু তিনি দেহরূপে এসেছেন, তিনি যা তা তিনি স্বরূপ প্রকাশ করবেন এবং সেই সত্যটি মানুষের সামনে নিয়ে আসতে সমর্থ হবেন, তাকে জীবন দান করবেন এবং তার জন্য পথ চিহ্নিত করবেন। যে দেহরূপে ঈশ্বরের সারসত্য নেই তাকে ঈশ্বরের অবতার বলে গণ্য করা হয় না; এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা তা যদি মানুষ অনুসন্ধান করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই যে স্বভাব তিনি প্রকাশ করেন এবং যে সকল বাক্য তিনি বলেন, তার থেকেই তা জানতে হবে। অর্থাৎ, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা, এবং এটিই প্রকৃত পথ কিনা, তা সুনিশ্চিত করতে অবশ্যই তাঁর সারসত্যের ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। এবং তাই, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কি না, তা নির্ণয় করার মূল বিষয়টি তাঁর বাহ্যিক চেহারার পরিবর্তে তাঁর সারসত্য (তাঁর কাজ, তাঁর কথন, তাঁর স্বভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের), উপর নির্ভরশীল। মানুষ যদি শুধু তাঁর বাইরের চেহারাটাই খুঁটিয়ে দেখে, এবং এর ফলে তাঁর সারসত্যকে উপেক্ষা করে, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে সেই মানুষটি অজ্ঞানতিমিরে আচ্ছন্ন এবং অজ্ঞ(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমরা দেখতে পাই যে ঈশ্বরের অবতারের পরিচিতি তাঁর চেহারার ওপর নির্ভর করে না, তাঁর কোন বংশে জন্ম তার ওপরেও নয়, তাঁর অর্থ বা ক্ষমতা আছে কিনা, বা তাঁর ধর্মীয় জগতের মর্যাদার ওপরেও না। এসবের ওপর তা নির্ভরশীল নয়। বরং তা নির্ভর করে তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের সারসত্য আছে কিনা, তিনি সত্য প্রকাশ করতে পারেন কিনা ও স্বয়ং ঈশ্বরের কাজ করেন কিনা তার ওপর। এই হল সর্বাপেক্ষা জরুরি বিষয়। তিনি যদি সত্য প্রকাশ করতে পারেন ও মানবজাতিকে উদ্ধার করার কাজ করতে পারেন, তাহলে তিনি সাধারণ পরিবারে জন্ম নিলেও এবং সমাজে ক্ষমতা ও মর্যাদা না থাকলেও, তিনি ঈশ্বর। ঠিক অনুগ্রহের যুগের মতোই, যখন প্রভু যীশু কাজ করতে এসেছিলেন, তিনি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, এক গামলায় পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন, তিনি দীর্ঘকায় ও বলিষ্ঠ ছিলেন না, এবং তাঁর কোনো পদমর্যাদা অথবা ক্ষমতা ছিলো না, তবু তিনি সত্য প্রকাশ করতে পারতেন, মানুষকে অনুতাপের পথ দেখিয়েছিলেন এবং মানুষের পাপ ক্ষমা করতে পেরেছিলেন। তাঁর শিষ্য পিতর ও যোহনের মতো যারা সত্য ভালোবাসত, তারা প্রভু যীশুকে কাজ করতে এবং তাঁর প্রকাশিত সত্যগুলিতে দেখেছিল, যে তাঁর ঈশ্বরের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব ছিল এবং প্রভু যীশুকে মশীহ বলে চিনতে পেরেছিল, তাই তারা তাঁকে অনুসরণ করেছিল এবং প্রভুর পরিত্রাণ অর্জন করেছিল। আজ ঈশ্বর পুনরায় অবতাররূপে মানুষের পৃথিবীতে এসেছেন, এবং তাঁকে বহিরঙ্গে সাধারণ মানুষ মনে হলেও, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বহু সত্য প্রকাশ করতে পারেন এবং অন্তিম সময়ে বিচারের কাজ করেন। সব দেশে ও স্থানে বহু মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রকাশিত সত্যগুলি দেখেছে, ঈশ্বরের কণ্ঠ চিনতে পেরেছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে স্বীকার করেছে, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে উন্নীত হয়েছে। তারা ঈশ্বরের বিচার এবং শাস্তির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এবং কিছু সত্য বুঝতে পেরেছে। তাদের সকলেরই অসাধারণ অভিজ্ঞতা ও সাক্ষ্য আছে, এবং তারা সুসমাচারের প্রচার ও ঈশ্বরের সাক্ষ্য দিতে নিবেদিত প্রাণ। ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র যিনি সত্য প্রকাশ করতে পারেন, মানুষের বিচার ও পরিশোধন করতে পারেন, এবং মানবজাতিকে সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করতে পারেন তিনিই খ্রীষ্ট ও ঈশ্বরের অবতার। এ কথা অনস্বীকার্য। যদি কেউ সত্য প্রকাশ না করতে পারে, এবং শুধুমাত্র চিহ্ন ও অলৌকিক কৃতি দেখিয়ে অন্যদের ঠকায়, তবে তা হল অশুভ আত্মার কাজ। তারা যদি নিজেদের ঈশ্বর বলে, তারা ভণ্ড খ্রীষ্ট যারা ঈশ্বরের ভেক ধরেছে। ঈশ্বরের অবতারকে জানতে হলে, আমাদের কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে: শুধুমাত্র ঈশ্বরের অবতারই সত্য প্রকাশ করতে পারেন, অন্তিম সময়ে বিচারের কাজ করতে পারেন, এবং শয়তানের শক্তি থেকে মানবজাতিকে সম্পূর্ণ রূপে রক্ষা করতে পারেন।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এত সত্য প্রকাশ করেছেন এবং অন্তিম সময়ে এত মহান কাজ করেছেন, তবু বহু মানুষ আছে যারা তা দেখেও দেখে না, এবং প্রভু যীশুর প্রকাশ্যে মেঘারূঢ় হয়ে আগমনের অপেক্ষায় থাকে। বিপর্যয়ে ধ্বংস হওয়ার সময় এসব মানুষ কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে। এতে প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হবে: “দেখ, মেঘবাহনে তিনি আসিতেছেন! প্রতিটি নয়ন তাঁকে দেখবে, দেখবে তারাও যারা তাঁকে বিদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর সমস্ত মানবগোষ্ঠী তাঁর জন্য বিলাপ করবে(প্রকাশিত বাক্য ১:৭)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আরো বলেন, “যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন।” পরিশেষে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটি অনুচ্ছেদ পড়া যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যারা খ্রীষ্টের বাণীর সত্যের উপর নির্ভর না করে জীবন লাভ করতে চায় তারা পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যকর মানুষ এবং যারা খ্রীষ্ট প্রদত্ত জীবন যাপনের পথের সন্ধান পেতে চায় না তারা অলীক কল্পনার জগতে বিভোর হয়ে আছে। তাই বলছি যে যারা অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে গ্রহণ করে না তারা চিরকাল ঈশ্বরের দ্বারা ঘৃণার পাত্র হয়েই থাকে। অন্তিম সময়ে খ্রীষ্টই মানুষের কাছে রাজ্যের প্রবেশপথ, এবং কেউ তাঁকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারে না। খ্রীষ্টের মধ্যস্থতা ছাড়া কেউ ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে পারে না। তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করলে, অবশ্যই তাঁর বাক্য মেনে নেবে এবং তাঁর প্রদর্শিত পথের অনুবর্তী হবে। তুমি সত্য প্রাপ্তি না করে এবং জীবনের বিধান গ্রহণে অক্ষম হয়ে কেবল আশীর্বাদ লাভের কথা ভেবে যেতে পারো না। খ্রীষ্ট অন্তিম সময়ে আসেন, যাতে তাঁর প্রকৃত অনুরাগীদের জীবন প্রদান করতে পারেন। পুরাতন যুগের পরিসমাপ্তি ঘটানো এবং নতুন যুগে প্রবেশের উদ্দেশ্যেই তাঁর কাজ, আর যারা নতুন যুগে প্রবেশ করবে, তাঁর কাজের এই পথ তাদের গ্রহণ করতেই হবে। যদি তুমি তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করো এবং তার পরিবর্তে তাঁর নিন্দা করো, তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করো অথবা নির্যাতন করো, তাহলে তুমি অনন্তকাল জ্বলতে থাকবে এবং কখনই ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ খ্রীষ্ট স্বয়ং পবিত্র আত্মার প্রতিরূপ, ঈশ্বরের মূর্ত প্রকাশ, এমন একজন যাকে ঈশ্বর পৃথিবীতে তাঁর হয়ে কাজ করার দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তাই আমি বলছি যে অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের কর্মকাণ্ড মেনে নিতে না পারার অর্থ পবিত্র আত্মার নিন্দা করা। যারা পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তাদেরকে প্রদত্ত শাস্তির স্বরূপ সকলের কাছে স্বতঃসিদ্ধ। আমি তোমাকে এটাও বলছি, তুমি যদি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রতিহত করো, যদি তুমি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রত্যাখ্যান করো, তবে তোমার পরিণতি বহন করার মতো আর কেউ থাকবে না। উপরন্তু, আজ থেকে তুমি ঈশ্বরের অনুমোদন লাভের আর কোনও সুযোগ পাবে না; এমনকি প্রায়শ্চিত্তের চেষ্টা করলেও, তুমি আর কখনও ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য লাভ করবে না। কারণ তোমার প্রত্যাখ্যান করা, বর্জন করা ব্যক্তি কোনও মানুষ নন, তিনি খ্রীষ্ট। তুমি কি জানো এর পরিণতি কী হবে? তাহলে এটা কোনও ছোটখাটো ভুল হবে না, বরং একটি জঘন্য অপরাধ হবে। তাই আমি সবাইকে উপদেশ দিচ্ছি যে সত্যের সামনে শ্বদন্ত বিকশন কোরো না বা অযৌক্তিক সমালোচনা কোরো না, কারণ শুধুমাত্র সত্যই তোমাকে জীবন দিতে পারে, এবং সত্য ব্যতীত অন্য কিছুই পুনর্জন্ম এবং পুনরায় ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য দিতে পারবে না(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

যখন প্রভু যীশু ক্রুশের উপর বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” তখন প্রকৃতপক্ষে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?

প্রভু যীশুর প্রতি যাদের বিশ্বাস আছে তারা মনে করে যখন প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল”, তিনি বলতে চাইছিলেন ঈশ্বরের...

পরিত্রাতা কীভাবে মানবজাতিকে রক্ষা করেন, যখন তিনি আসেন?

পরিত্রাতার বিষয়ে কথা বলতে গেলে সমস্ত বিশ্বাসীরাই এটা মানবেন যে অন্তিম সময়ে মানবজাতিকে রক্ষা করতে তাঁর আগমন নিশ্চিত। অনেক নবীই বলে গেছেন যে...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন