বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ কি ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশের অনুমোদন দেয়?

10-08-2022

অব্যাহতভাবে এক অতিমারী ছড়িয়ে পড়ছে, এবং ভূমিকম্প, বন্যা, কীটপতঙ্গের প্রাদুর্ভাব, দুর্ভিক্ষের প্রকোপ শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেক মানুষ ক্রমাগত উদ্বেগের অবস্থায় আছে, এবং বিশ্বাসীরা উদ্বিগ্নচিত্তে প্রতীক্ষায় আছে প্রভুর মেঘারূঢ় হয়ে এসে তাদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়ার, বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি এবং মৃত্যু এড়িয়ে যাওয়ার। তারা জানে না কেন তাদের এখনো প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য উর্ধ্বে আনয়ন করা হয়নি, এবং সারাদিন কিছু না দেখতে পেলেও আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। অনেকেরই অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, বিশেষত এই দেখে যে বহু গির্জার যাজকীয় সদস্য অতিমারীতে প্রাণ হারিয়েছেন তারা অস্বস্তি বোধ করে, যে তারা প্রভুর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং বিপর্যয় কবলিত হয়েছে, এবং তাদের অস্তিত্ত্ব অনিশ্চিত। তারা বিহ্বল ও হতবুদ্ধি বোধ করে। প্রকাশিত বাক্যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে প্রভু যীশু বিপর্যয়ের পূর্বে আসবেন ও আমাদের আকাশে নিয়ে যাবেন যাতে আমরা তাদের প্রকোপে ধ্বংস না হই। এই হল আমাদের আশা। আমাদের বিশ্বাস হল আমরা বিপর্যয়মুক্ত হব ও অনন্ত জীবন অর্জন করব। কিন্তু বিপর্যয় বর্ষিত হওয়া শুরু হয়ে গেছে, তাহলে প্রভু কেন মেঘারূঢ় হয়ে বিশ্বাসীদের নিতে এলেন না? আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা আমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, আমাদের পরিত্রাণে ভূষিত করা হয়েছে এবং ন্যায়পরায়ণতা প্রদান করা হয়েছে। কেন আমাদের স্বর্গরাজ্যে আনয়ন করা হয়নি? আমরা বহু বছর ধরে অন্তর্যন্ত্রণা নিয়ে প্রভুর জন্য অপেক্ষা করেছি এবং বহু কষ্ট সহ্য করেছি। কেন তিনি আমাদের জন্য আসেননি, তাঁর সাথে সাক্ষাতের জন্য নিয়ে যাননি এবং বিপর্যয়ের কষ্ট থেকে মুক্তি দেননি? তিনি কি সত্যিই আমাদের পরিত্যাগ করেছেন? বহু বিশ্বাসীর মনেই এসব প্রশ্ন আছে। কিন্তু, বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ কি সত্যিই আমাদের রাজ্যে নিয়ে যেতে পারে? আমি এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত বোধ কিছুটা ভাগ করে নেব।

কিন্তু এ বিষয়ে সমবেত চর্চার আগে, প্রথমে আমাদের একটি বিষয় পরিষ্কার করে নিতে হবে। বিশ্বাসের দ্বারা দোষখণ্ডন, এই পথে রাজ্যে প্রবেশের বিষয়টিতে কি ঈশ্বরের বাক্যের সমর্থন আদৌ আছে? প্রভু যীশু কি কখনো বলেছিলেন যে শুধুমাত্র বিশ্বাসের দ্বারা দোষখণ্ডন এবং পরিত্রাণের অনুগ্রহই তাঁর রাজ্যে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট? তিনি কখনোই তা বলেননি। পবিত্র আত্মা কি কখনো এর সাক্ষ্য বহন করেছে? না। সুতরাং আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে এটি সম্পূর্ণরূপে একটি মানবিক ধারণা, এবং রাজ্যে প্রবেশের জন্য আমরা এর ওপর নির্ভর করতে পারি না। বস্তুত প্রভু যীশু এ বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্ট ছিলেন যে কে রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে। প্রভু যীশু বলেছেন, “যারা আমাকে ‘প্রভু’, ‘প্রভু’, বলে ডাকে তারা সকলেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়, কিন্তু যে আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করবে সে-ই শুধু স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। সেই দিনটি যখন আসবে তখন অনেকেই আমাকে বলবে ‘প্রভু, প্রভু, তোমার নাম নিয়ে আমরা তো অনেক ভাবোক্তি করেছি, তোমার নাম নিয়ে আমরা অপদেবতা তাড়িয়েছি এবং কত অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করেছি।’ আমি তখন তাদের স্পষ্টই বলব, ‘কোন কালেই আমি তোমাদের চিনতাম না। অধর্মচারীর দল। আমার কাছ থেকে দূর হও’(মথি ৭:২১-২৩)। “তোমাদের আমি সত্যই বলছি, পাপ যে করবে সে-ই পাপের ক্রীতদাস। পরিবারে ক্রীতদাসের স্থান চিরস্থায়ী নয় কিন্তু পুত্রের স্থান চিরকালের(যোহন ৮:৩৪-৩৫)। “অতএব তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র(লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫)। “পবিত্রতা ছাড়া কোন মানুষ প্রভুকে দেখতে পাবে না(হিব্রু ১২:১৪)। প্রভু যীশু আমাদের স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে যারা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করবে শুধুমাত্র তারাই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে, শুধুমাত্র যারা পাপমুক্ত ও পরিশুদ্ধ হয়েছে, তা্রাই রাজ্যে স্থান পাবে। এই হল প্রবেশাধিকার অর্জনের একমাত্র মানদণ্ড। পাপ থেকে উদ্ধার এবং বিশ্বাসের দ্বারা দোষখণ্ডনের অর্থই কি কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করছে? এর মানে কি তারা আর পাপ বা ঈশ্বরের বিরূদ্ধে বিদ্রোহ বা তাঁকে প্রতিরোধ করছে না? অবশ্যই না। প্রভুতে বিশ্বাসী সকলেই এই বাস্তবতা দেখতে পায় যে আমাদের উদ্ধার ও বিশ্বাসের দ্বারা দোষখণ্ডন হলেও, আমরা ক্রমাগত পাপ করে চলেছি, দিনে পাপ করা এবং রাতে স্বীকার করার একটি চক্রের মধ্যে বসবাস করছি। আমরা পাপমুক্ত না হতে পারার যন্ত্রণা নিয়ে বাঁচি-আমরা নিরুপায়। সমস্ত বর্গের মধ্যেই এমন মানুষ আছে যারা ঈর্ষাপ্রবণ, এবং কলহপ্রবণ, নাম ও লাভের জন্য সংঘর্ষে রত, পরস্পরের সঙ্গে কুকথা বিনিময়ে রত। এ অতি সাধারণ ঘটনা। এবং বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাসের কারণ হল তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহের জন্য লোভী, কিন্তু তারা তিনি যা বলেন তা করে না। তারা সংকটাপন্ন হলে শশব্যস্ত হয়ে গির্জায় যায় কিন্তু শান্তির সময়ে পার্থিব রীতি অনুসরণ করে। এবং গির্জাগুলি একের পর এক পার্টি অনুষ্ঠিত করছে। কেউ সত্য নিয়ে সমবেত চর্চা করছে না বা ব্যক্তিগত সাক্ষ্য ভাগ করে নিচ্ছে না, বরং কে অধিকতম অনুগ্রহ, মহত্তম আশীর্বাদ পাবে তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে। মহাবিপর্যয়গুলি আসার সঙ্গে সঙ্গে এবং ঈশ্বর এখনো মেঘারূঢ় হয়ে এসে তাদের উন্নীত করছে না দেখে বহু মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসা শীতল হতে শুরু করেছে, এবং তারা ঈশ্বরকে দোষ দিচ্ছে ও তাঁর বিচার করছে। কেউ কেউ এমনকি তাঁকে অস্বীকার ও তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। বাস্তব ঘটনা থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে পাপ ক্ষমা হয়ে যাওয়া এবং পরিত্রাণের অনুগ্রহ প্রাপ্তির ফলে মানুষের আচরণ শ্রেয় হতে পারে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে তারা পাপ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেয়েছে, তারা ঈশ্ব রের অবাধ্যতা করে না, এবং বিশেষত, এমন তো নয়ই যে তারা পবিত্রতা অর্জন করেছে এবং রাজ্যের যোগ্য হয়ে উঠেছে। এ শুধুই অলীক কল্পনা। তাহলে এখন আমরা এই ঘটনা দেখতে পাচ্ছি এবং বুঝতে পারছি কেন প্রভু যীশু বলেছিলেন যে যারা তাঁর নাম নিয়ে প্রচার করে ও অপদেবতা তাড়ায় তারা দুষ্কর্মকারী, এবং তিনি তাদের কখনো চিনতেন না। এর কারণ মানুষ এখনো সর্বদা পাপ করছে, যদিও তাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, এবং তারা প্রভুর প্রতি দোষারোপ ও তাঁর বিচার করে। যখন তারা দেখে যে প্রভু এখনো আসেননি, তারা ভুরি ভুরি অভিযোগ করে, এবং তারা তাঁকে অস্বীকার ও তাঁর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে শুরু করেছে। কেউ কেউ এও বলে যে প্রভু যদি তাদের রাজ্যে উন্নীত না করেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে কথা বলবে। এই মানুষগুলি যারা প্রভু যীশুর ওপর অত্যাচার ও তাঁর নিন্দা করেছিল সেই ফরিশীদের থেকে কোনো অংশে ভালে নয়, বরং, সম্ভবত, এরা আরো খারাপ। অন্যেরা স্পষ্টভাবে দেখতে পায় তারা কীরকম আচরণ করছে, এবং ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, তারা সন্দেহাতীতভাবে দুষ্কৃতকারী। ঈশ্বর পবিত্র ও ধার্মিক, তাহলে কি ঈশ্বর, যারা ক্রমাগত পাপ করছে, তাঁর বিচার ও প্রতিরোধ করে, তাদেরও স্বর্গে প্রবেশের সুযোগ দেবেন? মোটেই না। এবং এইজন্য মানুষের এই বিশ্বাস যে বিশ্বাসের দ্বারা দোষমুক্তি হলেই তারা রাজ্যে প্রবেশ করবে, হল এমন এক ধারণা যা প্রভুর নিজের বাক্যের ও সত্যের বিরোধী। এটি সম্পূর্ণরূপে এক মানবিক ধারণা এবং কল্পনা যা আমাদের বাসনার আতিশয্যজাত।

এই মুহূর্তে অনেকে বলতে পারে, যে বিশ্বাসের মধ্যে দিয়ে অনুগ্রহের মাধ্যমে রক্ষা পাওয়া বাইবেলসম্মত: “কেননা অন্তরে বিশ্বাস করলে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয় এবং মুখের স্বীকারোক্তিতে লাভ করা যায় পরিত্রাণ” (রোমীয় ১০:১০)। “তাঁর অনুগ্রহে এবং তোমাদের বিশ্বাসে তোমরা পরিত্রাণ লাভ করেছ, তোমাদের নিজেদের কৃতিত্বে নয়। এ ঈশ্বরেরই দান” (ইফিসীয় ২:৮)। তাহলে, এই পথে যদি আমরা রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারি, “পরিত্রাণ” লাভের অর্থ কী? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের সত্যের এই রহস্য সম্বন্ধে জানিয়েছেন। দেখা যাক তাঁর বাক্যে এ বিষয়ে কী বলা হয়েছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যীশু যে সময়ে কাজ করতেন, তাঁর কাজ ছিল সমগ্র মানবজাতির মুক্তি দান। তাঁর ওপর যারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের সকলের পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল; যতক্ষণ তুমি তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখেছো, তিনি তোমায় মুক্তি দিয়েছেন; তুমি যদি তাঁকে বিশ্বাস করে থাকো, তাহলে তুমি আর পাপী ছিলে না, পাপের থেকে তুমি অব্যাহতি পেয়েছিলে। উদ্ধার পাওয়া এবং বিশ্বাসের দ্বারা সমর্থিত হওয়া বলতে এটাই বোঝায়। তবুও, যারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু বিদ্রোহী এবং ঈশ্বরবিরোধী থেকে গিয়েছিল, যাদের তখনও ধীরে ধীরে অপসারণ করা বাকি ছিল(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (২))। “মানুষকে তার…পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল, কিন্তু কেমন করে মানুষকে তার ভেতরের ভ্রষ্ট, শয়তানোচিত স্বভাবগুলি থেকে শুদ্ধ করা যাবে, সেই কাজ তখনও বাকি ছিল। মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং তার পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের জন্য, কিন্তু মানুষের পাপী প্রবৃত্তি ধ্বংস হয় নি এবং তা এখনো তার ভেতরে রয়ে গেছে। … মানুষের পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল, এবং তা ঈশ্বরের ক্রুশবিদ্ধকরণের কার্যের কারণে, কিন্তু এরপরেও মানুষ তার পুরনো ভ্রষ্ট শয়তানোচিত স্বভাবের মধ্যেই বেঁচে ছিল। এই কারণে, মানুষকে তার ভ্রষ্ট, শয়তানোচিত স্বভাব থেকে সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করতে হবে, যাতে তার পাপী প্রবৃত্তি পুরোপুরি নির্মূল করা যায়, আর কখনো তা বিকশিত হতে না পারে, এবং এইভাবে যাতে মানুষের স্বভাবকে রূপান্তরিত হতে সক্ষম করা যায়(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪))। এ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রভু যীশু মানুষের পাপস্খালনের বলি হিসেবে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছিলেন। আমাদের পাপের ক্ষমাপ্রাপ্তির জন্য আমাদের শুধুই প্রভুর কাছে পাপস্বীকার ও অনুতাপ করতে হবে। আমরা আর আইনের দ্বারা শাস্তিপ্রাপ্ত ও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হই না। প্রভু আর আমাদের পাপী হিসেবে দেখেন না এবং শয়তান আর আমাদের দোষ দিতে পারে না। আমরা প্রার্থনায় প্রভুর সম্মুখে আসার সুযোগ পাই এবং তাঁর প্রদত্ত শান্তি ও আনন্দ এবং তাঁর অনুগ্রহের প্রাচুর্য ও আশীর্বাদ উপভোগ করি। এই হল “পরিত্রাণ” লাভের অর্থ। বিশ্বাসের জন্য পরিত্রাণ লাভের অর্থ হল পাপের ক্ষমাপ্রাপ্তি ও আইনের দ্বারা দণ্ডিত না হওয়া। মানুষ যা কল্পনা করে, অর্থাৎ, একবার রক্ষা পেলে, তারা সততই সুরক্ষিত এবং রাজ্যে প্রবেশের যোগ্য, তেমন কিছু নয়। বাইবেলে উল্লিখিত “পরিত্রাণ” পৌলের বর্ণনার অনুসারী, কিন্তু না প্রভু যীশু, না পবিত্র আত্মা কখনো তা বলেছেন। আমরা বাইবেলে উল্লিখিত কোনো ব্যক্তির মতকে আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারি না, শুধুমাত্র প্রভু যীশুর বাক্যই নির্ভরযোগ্য। কেউ প্রশ্ন করতে পারে যে যেহেতু প্রভু আমাদের পাপ ক্ষমা করেছেন, ঈশ্বর আমাদের আর পাপের অধীনস্ত রূপে দেখেন না এবং তিনি আমাদের ধার্মিক অভিধা দিয়েছেন, তাহলে কেন আমাদের রাজ্যে নিয়ে যাওয়া যাবে না? এ কথা সত্যি যে ঈশ্বর আমাদের ধার্মিক অভিধা দিয়েছেন, কিন্তু তিনি এ কথা বলেননি যে আমাদের পাপের ক্ষমাপ্রাপ্তি আমাদের রাজ্যের যোগ্য করে তুলেছে, বা যেহেতু আমরা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়েছি, আমরা যে কোনো ধরণের পাপ করতে পারি এবং তা সত্ত্বেও পবিত্র থাকতে পারি। আমাদের বুঝতে হবে যে ঈশ্বরের স্বভাব পবিত্র ও ধার্মিক, এবং তিনি এমন কাউকে কখনোই পবিত্র বলবেন না যে ক্রমাগত পাপ করছে, বা যে এখনও পাপী তাকে পাপমুক্ত বলবেন না। এমনকি যে বিশ্বাসীর পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, ঈশ্বরকে প্রতিরোধ ও ধর্মদ্রোহীতা করলে, সেও অভিশপ্ত হবে। বাইবেলে যেমন বলা আছে, “সত্যের পরিচয় লাভ করার পর যদি আমরা স্বেচ্ছায় পাপ করি তাহলে সেই পাপস্খালনের জন্য কোন বলিদানের ব্যবস্থা নেই(হিব্রু ১০:২৬)। প্রভু যীশুর দ্বারা ফরিশীরা অভিশপ্ত হয়েছিল তাঁর বিচা র, নিন্দা ও তাঁকে প্রতিরোধ করার কারণে। এ কি সত্য নয়? সকল বিশ্বাসীই জানে যে ঈশ্বরের স্বভাব কোনো অপরাধ সহ্য করবে না, এবং প্রভু যীশু বলেন, “মানুষের সমস্ত পাপ ও ঈশ্বর নিন্দা ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দার ক্ষমা নেই। মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে সে ক্ষমা লাভ করবে: কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে যদি কেউ কোনো কথা বলে তার ক্ষমা সে কিছুতেই পাবে না—ইহকালেও নয়, পরকালেও নয়(মথি ১২:৩১-৩২)। পাপের জন্য ক্ষমা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের অনুগ্রহ, কিন্তু মানুষ যদি ক্ষমা পাওয়ার পর ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করা অব্যাহত রাখে তারা তখনো ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত হতে পারে। আমরা লযদি ঈশ্বরকে পুনরায় ক্রুশবিদ্ধ করি, তার পরিণতি হবে কঠোর। কিন্তু ঈশ্বর ভালোবাসা ও করুণাময় তাই তিনি আমাদের পাপ ও অশুভ থেকে রক্ষা করতে চান যাতে আমরা পবিত্র হতে পারি। সেই কারণেই প্রভু যীশু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তাঁর উদ্ধারকার্যের পরে তিনি আবার আসবেন। কেন তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন? মানুষকে পাপ থেকে ও শয়তানের শক্তি থেকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করতে, যাতে আমরা ঈশ্বরাভিমুখী হয়ে তাঁকে অর্জন করতে পারি। প্রভুর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানায় শুধুমাত্র এমন একজন বিশ্বাসীর ক্ষেত্রেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের আশা আছে। এই মুহূর্তে কিছু মানুষ ভাবতে পারে, যেহেতু আমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, কীভাবে আমরা প্রকৃত অর্থে পাপমুক্ত এবং পবিত্র হতে পারি ও রাজ্যে প্রবেশ করার অধিকার অর্জন করতে পারি? এবারে আমরা মূল বিষয়ে এসে পৌঁছেছি। শুধুমাত্র প্রভু যীশুর ক্ষমা স্বীকার করাই যথেষ্ট নয়। আমাদের প্রভুর আগমন ও তাঁর পরবর্তী পর্যায়ের কাজকেও স্বীকার করতে হবে এভাবেই পাপমুক্তি ও ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণ সুরক্ষা পেয়ে রাজ্যের যোগ্য হওয়া যাবে। ঠিক যেমন প্রভু যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)। “কেউ যদি আমার কথা শোনে, এবং অবিশ্বাস করে, আমি তার বিচার করি না: কারণ আমি এই জগৎকে বিচার করতে আসি নি, এসেছি জগতের উদ্ধার করতে। যে আমার বাক্য গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে, তারও বিচারকারী রয়েছে: শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক(যোহন ১২:৪৭-৪৮)। “পিতা কারও বিচার করেন না, বিচারের ভার সম্পূর্ণরূপে তিনি পুত্রকেই দান করেছেন। … তাঁকে তিনি বিচারকার্য নির্বাহের দায়িত্বও দিয়েছেন, কারণ তিনি মানবপুত্র(যোহন ৫:২২, ২৭)। এবং “বিচারের কাল সমাগত, ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে শুরু(১ পিতর ৪:১৭)। বিষয়টি নিয়ে মন দিয়ে ভাবলে আমরা দেখতে পাই অন্তিম সময়ে প্রভু যীশু মনুষ্যপুত্র হয়ে ফিরে এসে সত্য প্রকাশ করেন এবং বিচারকার্য করেন, আমাদের সব সত্যে প্রবেশের পথ প্রদর্শন করেন, যাতে আমরা সম্পূর্ণরূপে পাপ থেকে, শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ পরিত্রাণ পেতে পারি। সুতরাং অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচার এবং শাস্তিকে স্বীকার করা, এবং আমাদের দূষণের পরিশোধনই আমাদের স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের একমাত্র পথ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের আরো কিছু অংশ দেখে নেওয়া যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “মুক্তিলাভের পূর্বে শয়তানের অনেক বিষ ইতিমধ্যেই মানুষের মধ্যে রোপণ করা হয়েছিল, এবং হাজার হাজার বছর ধরে শয়তানের দ্বারা কলুষিত হওয়ার পর তার মধ্যে এক ঈশ্বরবিরোধী চরিত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। অতএব, মানুষ যখন মুক্তিলাভ করে, তা এমন এক মুক্তির চেয়ে বেশি কিছুই নয়, যেখানে তাকে উচ্চ মূল্যে ক্রয় করা হয়, কিন্তু তার বিষাক্ত চরিত্র নির্মূল হয় নি। মানুষ, যে এত অপবিত্র, ঈশ্বরের সেবা করার যোগ্য হওয়ার আগে তাকে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এই বিচার ও শাস্তিদানের কার্যের মাধ্যমে মানুষ নিজের ভিতরের কলুষিত ও ভ্রষ্ট সত্তার সম্বন্ধে জানতে পারবে, এবং সে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত ও শুদ্ধ হতে সক্ষম হবে। একমাত্র এই উপায়েই মানুষ ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে প্রত্যাবর্তনের যোগ্য হয়ে উঠবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪))। “যদিও যীশু মানুষের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সমস্ত মানবজাতির মুক্তি সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন; তিনি মানুষকে তার সমস্ত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্তি দেননি। শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য শুধু যীশুর পাপস্খালনের বলি হওয়া আর মানুষের পাপ বহন করার প্রয়োজন ছিল তাই নয়, বরং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে তার শয়তানোচিত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের আরো মহত্তর কর্মের প্রয়োজন ছিল। এবং তাই, এখন যখন মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, ঈশ্বর মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহরূপে ফিরে এসেছেন এবং শাস্তি ও বিচারের কাজ শুরু করেছেন। এই কাজ মানুষকে এক উচ্চতর জগতে নিয়ে এসেছে। যারা তাঁর রাজত্বের অধীনে আত্মসমর্পণ করে তারা উচ্চতর সত্য উপভোগ করবে এবং বৃহত্তর আশীর্বাদ লাভ করবে। তারা প্রকৃতপক্ষেই আলোতে বাস করবে, এবং তারা সত্য, পথ ও জীবন লাভ করবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি কি সবকিছু স্পষ্টতর করে দিচ্ছে না? প্রভু যীশু অনুগ্রহের যুগে মুক্তির কার্য করেছিলেন, এই কাজ ছিল মানুষের পাপ ক্ষমা করা ও আমাদের তা থেকে মুক্ত করা—এ কথা সত্য। কিন্তু মানুষের পাপী প্রকৃতির পরিবর্তন হয়নি, এবং আমরা ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করতেই থাকি, সুতরাং তা সম্পূর্ণ রক্ষা হিসেবে পরিগণিত হয় না। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এসেছেন, এত সত্য প্রকাশ করেছেন, এবং প্রভু যীশুর মুক্তিদানের ওপর ভিত্তি করে ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু করে বিচারকার্য করছেন। তিনি মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করতে, আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে যেতে এসেছেন। মানুষকে উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, সবচেয়ে বুনিয়াদি, এবং এ-ই হল আমাদের পরিশুদ্ধ হওয়ার এবং সম্পূর্ণরূপে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র পথ। এ এক সুবর্ণ সুযোগ এবং আমাদের স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার একমাত্র সুযোগ। আমরা বলতে পারি যে ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু হওয়া সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচারের কাজ হল বিশ্বাসীদের উন্নীত করার কাজ। ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তির মাধ্যমে আমাদের দুর্নীতির পরিশোধন হতে পারে, এবং তখন আমরা মহাবিপর্যয় থেকে সুরক্ষা পেয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি। এই হল প্রকৃত অর্থে উন্নীত হওয়া। আমরা যদি এই কাজ অব্যাহত না রাখি, আমাদের বিশ্বাস যতই দীর্ঘ হোক, আমরা যতই কষ্ট করি বা মূল্য দিই, সবই ব্যর্থ হবে। এ হল মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া এবং আমাদের পূর্বের সব শ্রমই অপচয় হবে। আমরা কাঁদতে কাঁদতে ও দাঁত ঘষতে ঘষতে মহাবিপর্যয়ে পতিত হব। ঈশ্বর কখনোই যে তাঁর বিরূদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারে এমন কাউকে তাঁর রাজ্যে নিয়ে আসবেন না। এ তাঁর ধার্মিক স্বভাবের দ্বারা নির্ধারিত।

কেউ প্রশ্ন করতে পারে কীভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ এবং উদ্ধার করতে এই বিচারকার্য করেন দেখা যাক এ বিষয়ে তিনি কী বলেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে শেখানোর জন্য, মানুষের উপাদান প্রকাশ করার জন্য এবং মানুষের কথা ও কাজের বিশ্লেষণ করার জন্য বিভিন্ন সত্য ব্যবহার করেন। এই বাক্যে বিভিন্ন সত্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন মানুষের কর্তব্য, কীভাবে মানুষের ঈশ্বরকে মান্য করা উচিত, কীভাবে মানুষের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা উচিত, কীভাবে মানুষের স্বাভাবিক মানবতাসম্পন্ন জীবনযাপন করা উচিত, সেইসাথে থাকে ঈশ্বরের প্রজ্ঞা এবং স্বভাব ইত্যাদি বিষয়সমূহ। এই সমস্ত বাক্য মানুষের উপাদান এবং তার ভ্রষ্ট স্বভাবের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিশেষ করে, সেই সমস্ত বাক্য, যা অনাবৃত করে মানুষ কীভাবে ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তা আসলে এ সম্পর্কে কথা বলে যে কীভাবে মানুষ শয়তানের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছে এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাঁর বিচারকার্যের সময়, ঈশ্বর কেবলমাত্র কয়েকটি বাক্যের মাধ্যমে মানুষের প্রকৃতি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন না; তিনি দীর্ঘমেয়াদে তা অনাবৃত করেন, মোকাবিলা করেন এবং তাদের অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন করেন। অনাবৃতকরণ, মোকাবিলা এবং অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তনের এই সমস্ত ভিন্ন পদ্ধতি সাধারণ শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা যায় না, সেই সত্যের দ্বারাই প্রতিস্থাপিত করা যায় যার সম্পর্কে মানুষ একেবারেই অসচেতন। শুধুমাত্র এই ধরনের পদ্ধতিকেই বিচার বলা যেতে পারে; শুধুমাত্র এই ধরনের বিচারের মাধ্যমেই মানুষ ঈশ্বরের প্রতি অনুগত হতে পারে, তাঁর সম্বন্ধে দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হতে পারে, এবং ঈশ্বর সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে পারে। এই বিচারের কাজই প্রতিফলিত করে ঈশ্বরের আসল চেহারা সম্পর্কে মানুষের উপলব্ধি, এবং তার নিজের বিদ্রোহের সত্য। বিচারের কাজ মানুষকে ঈশ্বরের ইচ্ছা, তাঁর কাজের উদ্দেশ্য এবং দুর্বোধ্য রহস্য সম্পর্কে অনেক বেশি করে বোঝার সুযোগ দেয়। এটি মানুষকে নিজের ভ্রষ্ট সারসত্য এবং সেই ভ্রষ্টাচরণের মূল চিনতে ও জানতে শেখায়, এবং সেইসাথে মানুষের কদর্যতা আবিষ্কার করতে শেখায়। এই সমস্ত প্রভাব বিচারের কাজের মাধ্যমে প্রতিভাত হয়, কারণ এই কাজের সারমর্ম হল ঈশ্বরের সত্য, পথ এবং জীবনকে তাঁর অনুগামীদের কাছে উন্মুক্ত করার কাজ। এই কাজ ঈশ্বরের বিচারের কাজ(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্ট সত্যের দ্বারাই বিচারের কাজ করেন)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে লক্ষ লক্ষ বাক্য প্রকাশ করেছেন, সেই সব সত্যই বলেছেন যা আমাদের দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার জন্য এবং পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজনীয়। তিনি আমাদের পাপী, ঈশ্বর বিরোধী শয়তানোচিত প্রকৃতি ও কলুষিত স্বভাবের সকল দিকগুলি প্রকাশ্যে আনেন ও বিচার করেন, এবং তিনি প্রকাশ্যে আনেন আমাদের সব গভীরতম, গোপনতম এবং ঘৃণ্য উদ্দেশ্য ও ধারণা। আমরা যত বেশী ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, তত বেশী এই বিচারের অভিজ্ঞতা অর্জন করি, এবং আমরা দেখতে পাই কী অবিশ্বাস্যরকম গভীরভাবে শয়তান আমাদের কলুষিত করেছে, কী উদ্ধত ও বিরোধিতাপূর্ণ আমরা। আমরা কত ধূর্ত স্বার্থপর এবং লোভী, এবং আমরা সর্ববিষয়ে শয়তানের দর্শন ও আইন মেনেই বাঁচি, সবসময় নিজেদের স্বার্থরক্ষা করি। এমনকী আমাদের বিশ্বাস ও গির্জার কাজও পুরস্কার ও রাজ্যে প্রবেশের জন্য। আমাদের কোনো বিবেক বা যুক্তিবোধ নেই, আমরা সম্পূর্ণত শয়তানের জীবন বাঁচি। ঈশ্বরের বিচার এবং শাস্তির মাধ্যমে আমরা শেষমেশ তাঁর ন্যায়পরায়ণতা দেখতে পাই যা কোনো অপরাধ সহ্য করে না। ঈশ্বর সত্যই আমাদের হৃদয় ও মনের অন্তস্থল অবধি দেখতে পান, এবং যদি আমরা কিছু না-ও বলি, ঈশ্বর প্রকাশ্যে আনবেন আমরা যা ভাবি, যে কলুষ বাস করে আমাদের হৃদয়ের গভীরে। কোথাও লুকনোর না থাকায়, আমরা অত্যন্ত লজ্জিত বোধ করি, এবং আমরা ঈশ্বরের প্রতি ভীতি বোধ করি। আমরা আমাদের হৃদয়ে যা আছে সে বিষয়ে প্রার্থনা করতে পারি, এবং আমাদের ভ্রান্ত চিন্তা ও ধারণার বিষয়ে সততার সঙ্গে খোলামেলা হতে পারি, বিবেক ও যুক্তিবোধ অর্জন করতে পারি। আমরা যদি মিথ্যে বলি, আমরা তৎক্ষণাৎ তা প্রকাশ করব, এবং সংশোধন করব। এভাবে ঈশ্বরের বাক্যের অভিজ্ঞতা লাভ করে আমাদের কলুষিত স্বভাব পরিশুদ্ধ এবং পরিবর্তিত হয়, এবং আমরা মানুষের মতো বাঁচতে পারি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার ও শোধনের মাধ্যমে, আমরা বুঝতে পারি ঈশ্বরের মানুষকে রক্ষা করার কাজ কতটা প্রায়োগিক! এ ছাড়া, আমরা আমাদের প্রকৃত দূষণ কখনো দেখতে পেতাম না, এবং আমরা কখনো সত্যিকারের অনুশোচনা করতাম না এবং পরিবর্তিত হতাম না। আমরা দেখতে পাই যে অশুভের হাত থেকে মুক্তি আমাদের নিজেদের কঠিন শ্রম ও আত্মনিয়ন্ত্রণের দ্বারা সম্ভব নয়, বরং অনিবার্যভাবেই আমাদের ঈশ্বরের দ্বারা বিচার, শাস্তি এবং পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। আমাদের অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন, মোকাবিলা ও অনুশাসন করারও প্রয়োজন হয়। এই হল একমাত্র উপায় আমাদের জীবন চরিত্রের প্রকৃত পরিবর্তন করার এবং আমাদের আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ ও তাঁকে ভয় করার। আমরা যদি শুধু প্রভু যীশুর দ্বারা মুক্তিলাভেই বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের পাপ ক্ষমা করা হবে এবং আমরা বিশ্বাসের দ্বারা ন্যায়সঙ্গত হবো, কিন্তু রাজ্যের যোগ্য হতে পারবো না। আমাদের তবুও প্রভুর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাতে হবে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচারকে স্বীকার করতে হবে যাতে আমরা দুর্নীতি ত্যাগ করতে এবং আমাদের পাপী প্রকৃতি সম্পূর্ণ মোচন করতে পারি। এবং এই কারণে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু, যিনি বিচারকার্য করছেন। তিনি হলেন সেই ত্রাণকর্তা যিনি মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করার কাজ করতে ব্যক্তিগতভাবে অবতীর্ণ হয়েছেন। সব বর্গের বহু বিশ্বাসী ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনেছে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে স্বীকার করছে। তারা জ্ঞানী কুমারী এবং মেষের বিবাহভোজে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে বর্জন করছে তারা মূর্খ কুমারী হয়ে উঠছে যারা কাঁদতে কাঁদতে বিপর্যয় কবলিত হচ্ছে। এখন আমাদের দেখা উচিত কেন ধর্মীয় বিশ্ব প্রভু যীশুকে মেঘারূঢ় হয়ে নেমে আসতে দেখেনি। তারা শাস্ত্রের আক্ষরিক পাঠকেই অনড়ভাবে আঁকড়ে থাকে, তারা নিশ্চিত থাকে যে প্রভু যীশু মেঘারূঢ় হয়ে তাদের উন্নীত করতে আসছেন। কিন্তু বস্তুত, প্রভু ইতিমধ্যেই কাজ করার জন্য গোপনে এসে পড়েছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্য প্রকাশ করেছেন যা তারা সন্ধান করতে অস্বীকার করে। তারা শোনে কিন্তু অবধান করে না এবং দেখে কিন্তু বোঝে না। তারা অন্ধভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রতিরোধ ও নিন্দা করে। তারা আকাশের দিকে চেয়ে অপেক্ষা করে কখন পরিত্রাতা যীশু মেঘারূঢ় হয়ে অবতীর্ণ হবেন। এর ফলে তারা বিপর্যয়ের কবলে পড়বে। কাকে দোষ দেওয়া যায়?

আজ, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর অন্তিম সময়ের বিচারকার্যের মাধ্যমে জয়ীদের একটি গোষ্ঠী সম্পূর্ণ করেছেন। বিপর্যয় শুরু হয়েছে, এবং ঈশ্বরের মনোনীত জনেরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের রাজ্যমূলক সুসমাচার প্রচারে নিজেদের নিয়োজিত করেছে, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজের সাক্ষ্য বহন করছে। ক্রমশ অধিকতর মানুষ প্রকৃত পথ অনুসন্ধান ও স্বীকার করছে, এবং অধিকতর দেশে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সারা বিশ্বে প্রচারিত এবং তার প্রতি সাক্ষ্য প্রদান করা হচ্ছে। যারা সত্যের জন্য তৃষ্ণার্ত এবং ঈশ্বরের আবির্ভাবের আকাঙ্খা পোষণ করে তারা একে একে তাঁর সিংহাসনের সামনে আসছেন। এ থামানো সম্ভব নয়! এটি বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্বাণীকে সার্থক করে: “এবং অন্তিম সময়ে এরকম ঘটবে, যিহোবার গৃহসমেত পর্বত সকল পর্বতের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং সকল গিরিশৃঙ্গের উপর উন্নীত হবে; এবং সকল জাতি সেদিকে স্রোতসম ধাবিত হবে(যিশাইয় ২:২)। কিন্তু ধর্মীয় জগতের যে খ্রীষ্টবিরোধী শক্তিরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরোধিতা করে, এবং সেই তথাকথিত বিশ্বাসী যারা তাদের দ্বারা বিপথে চালিত এবং নিয়ন্ত্রিত, তারা ইতোমধ্যেই বিপর্যয় কবলিত হয়েছে এবং উন্নীত হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে। তারা কাঁদছে ও দাঁতে দাঁত ঘষছে। এ সত্যিই এক ট্রাজেডি। আজকের মতো বিদায় নেওয়ার আগে আমরা ঈশ্বরের বাক্যের একটি ভিডিও পাঠ দেখে নিই। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট যে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দিয়েছেন তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

পরিত্রাতা কীভাবে মানবজাতিকে রক্ষা করেন, যখন তিনি আসেন?

পরিত্রাতার বিষয়ে কথা বলতে গেলে সমস্ত বিশ্বাসীরাই এটা মানবেন যে অন্তিম সময়ে মানবজাতিকে রক্ষা করতে তাঁর আগমন নিশ্চিত। অনেক নবীই বলে গেছেন যে...

অবতারত্ব কী?

আমরা সবাই জানি যে দু’হাজার বছর আগে, মানুষকে মুক্তি দিতে ঈশ্বর মানুষের পৃথিবীতে প্রভু যীশুর অবতার গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রচার করেছিলেন,...

“উন্নীত হওয়া” মানে আসলে কী?

২,০০০ বছর আগে, প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে তাঁর মুক্তির কাজ সম্পন্ন করার পর, তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তখন থেকে,...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন