সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আস্থা রাখা কি প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা?
অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাবের পর ত্রিশ বছর কেটে গেছে এবং ১৯৯১ সালে কাজ ও সত্যের প্রকাশ শুরু করেছিলেন। তিনি প্রকাশ করেছেন বাক্য দেহে আবির্ভূত হল, অনলাইনে তাঁর লক্ষ লক্ষ বাক্য প্রাচ্য থেকে প্রতীচ্যে মহান আলোকের মতো প্রদীপ্ত হয়ে উঠছে, গোটা পৃথিবীকে আন্দোলিত করছে। সম্প্রদায় নির্বিশেষে সত্যপ্রেমী বহু মানুষ দেখেছেন যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি সবই সত্য, পবিত্র আত্মার গির্জার প্রতি ভাষণ। ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনে তারা সাগ্রহে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছে। তারা ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে উন্নীত হয়েছে এবং মেষের ভোজে সামিল হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন তারা ঈশ্বরের সমকালীন বাক্যগুলি ভোজন ও পান করছে এবং প্রাণবান জলের আয়ু ভোগ করছে। তাদের হৃদয় ক্রমশ প্রদীপ্ত হয়ে উঠছে এবং তারা বহু সত্য জেনেছে। ঈশ্বর ব্যক্তিগতভাবে তাদের পথপ্রদর্শন করছেন ও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের দূষিত প্রবণতাগুলি ঈশ্বরের বিচারের দ্বারা পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং তাদের সুন্দর সাক্ষ্য আছে। তাদের ঈশ্বর প্রণীত বিপর্যয়গুলি জয় করার সামর্থ্য দেওয়া হয়েছে, ও তারা প্রথম ফলে পরিণত হয়েছে, ঈশ্বরের স্বীকৃতি ও আশীর্বাদ অর্জন করেছে। আজ বসন্তের বৃষ্টির পর নতুন চারার মতোই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা সারা পৃথিবীর দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে, এবং ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিরা তাদের সর্বস্ব পণ করে ঈশ্বরের রাজ্যমূলক সুসমাচার প্রসার করছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামের সাক্ষ্য বহন করছে। সব দেশ, অঞ্চল ও সম্প্রদায়ের মানুষ ক্রমশ ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজকে স্বীকার করছে। এই রাজ্যমূলক সুসমাচার অপ্রতিরোধ্য শক্তি ও গতিবেগসহ প্রসারিত ও পরিব্যাপ্ত হচ্ছে, এবং বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে: “এবং অন্তিম সময়ে এরকম ঘটবে, যিহোবার গৃহসমেত পর্বত সকল পর্বতের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং সকল গিরিশৃঙ্গের উপর উন্নীত হবে; এবং সকল জাতি সেদিকে স্রোতসম ধাবিত হবে” (যিশাইয় ২:২)। “বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মনুষ্যপুত্রের আগমন হবে” (মথি ২৪:২৭)। যা হোক, যদিও অনেক বিশ্বাসী সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়েছে এবং নিশ্চিত হয়েছে ও তাদের সম্পূর্ণ সত্য বলে স্বীকার করেছে, যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে সাধারণ মানুষের মতো দেখতে এবং তিনি মেঘারোহী প্রভু যীশু নন, তারা তাঁকে স্বীকার করার সাহস দেখায় না। কেউ কেউ বাইবেলের আক্ষরিক অর্থ আঁকড়ে থাকে, নিম্নোক্ত যে পদ “যীশু খ্রীষ্ট কাল যেমন ছিলেন, আজও তেমনি আছেন এবং চিরকাল একই থাকবেন” (হিব্রু ১৩:৮) তার এই মানে করে যে প্রভু যীশুর নাম কখনো বদলাবে না। যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে যীশু নামে ডাকা হয় না এবং বাইবেলে “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের” উল্লেখ নেই, তারা তাঁকে স্বীকার করবে না। তারা বলে যে যদি তারা তাঁকে স্বীকার করে এবং বাইবেলের বদলে শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ে, এবং যীশুর নামে প্রার্থনা করা বন্ধ করে দেয়, তা হবে প্রভু যীশুর প্রতি স্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা। এত বছর ধরে প্রভুর প্রতি আস্থাশীল থাকার পর, তাঁর এত করুণা অর্জন করার পর, তারা তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। এই হল তাদের যুক্তি, এবং যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাসী তাদেরও তারা প্রভু যীশুর বিশ্বাসঘাতকরূপে নিন্দা করে, ধর্মভ্রষ্ট হিসেবে দেখে। এই চিন্তা অনেককেই প্রকৃত পথের অনুসন্ধান থেকে বিরত রেখেছে, এবং তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যকে সত্য ও ঈশ্বরের স্বর বলে স্বীকার করলেও, তাঁকে স্বীকার করার সাহস দেখায় না। ফলত, তারা তাদের জীবনের বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে। এ নিতান্তই দুঃখজনক, মূর্খতা ও অজ্ঞানতা। এটি বাইবেলের অন্য এক বচনকে সার্থক করে: “জ্ঞানের অভাবে মূর্খেরা মারা পড়ে” (হিতোপদেশ ১০:২১)। “প্রজ্ঞার অভাবে আমার প্রজারা ধ্বংস হচ্ছে” (হোশেয় ৪:৬)। তবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা কি প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়? এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।
অনেকে ভাবেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। বিষয়টি পর্যালোচনার শ্রেষ্ঠ উপায় কী? আমাদের শুধুমাত্র তাঁদের নামের ভিন্নতা নিয়ে ভাবলে হবে না, বরং আমাদের বুঝতে হবে তাঁরা এক আত্মা কিনা, একই কর্মরত ঈশ্বর কিনা। বিধানের যুগে যিহোবা ঈশ্বর কাজ করেছিলেন, এবং করুণার যুগে প্রভু যীশু কাজ করেছিলেন। আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের নাম পরিবর্তন হয়েছিল, তাঁকে আর যিহোবা বলে ডাকা হত না, যীশু বলে ডাকা হত। কিন্তু তুমি কি বলতে পারো যে প্রভু যীশু যিহোবা থেকে ভিন্ন কোনো ঈশ্বর ছিলেন? প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করা কি যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা? মোটেই না। কিন্তু ইহুদি ধর্মের বেশিরভাগ মানুষ প্রভু যীশুকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিল, এই যুক্তিতে যে তা যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, এবং তারা এমনকী তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার কাজেও সাহায্য করে। কেন এমন হয়েছিল? তার কারণ তারা বোঝেনি যে প্রভু যীশু যিহোবা ঈশ্বরেরই আত্মা যিনি দেহরূপে অবতীর্ণ হয়ে কাজ করছিলেন। তাঁর নাম ভিন্ন ছিল, কিন্তু প্রভু যীশু ও যিহোবা ছিলেন একই আত্মা, একই ঈশ্বর। বাইবেলে এক অসাধারণ আখ্যান নথিবদ্ধ আছে যাতে ফিলিপ প্রভু যীশুকে বলছেন, “প্রভু, পিতাকে আমাদের দর্শন করান, তাহলেই আমরা তৃপ্ত হব” (যোহন ১৪:৮)। যীশু উত্তর দিলেন, “ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সঙ্গে আছি তবু তোমরা আমায় চিনলে না? আমায় যে দর্শন করেছে সে আমার পিতারও দর্শনলাভ করেছে। তাহলে কি করে তুমি বলছ, পিতাকে আমাদের দর্শন করান? তুমি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতার মাঝে এবং আমারই মাঝে পিতা বিরাজিত? তোমাদের কাছে আমি যা বলি, সে সব কথা নিজে থেকে বলি না। পিতা, যিনি আমার মধ্যে বিরাজ করেন, তিনিই নিজের কার্যসাধন করেছেন” (যোহন ১৪:৯-১০)। প্রভু যীশুর বাক্যগুলি অত্যন্ত স্পষ্ট ছিল। তিনি ও যিহোবা একই ঈশ্বর ছিলেন, এবং তাঁর আত্মা যিহোবারই আত্মা। প্রভু যীশু যিহোবা ঈশ্বরের, একমাত্র সত্য ঈশ্বরের মূর্ত রূপ ছিলেন। এবং তাই, প্রভু যীশুতে বিশ্বাস মানে যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়, বরং যিহোবার প্রতি সমর্পণ। এ ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে সমঞ্জস ছিল। যদি তুমি তোমার বিশ্বাসে একটি নাম ও বাইবেলের আক্ষরিক অর্থকেই আঁকড়ে রাখো আত্মা ও তাঁর কাজকে না বোঝো, তোমার পথভ্রষ্ট হওয়ার ও ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করার সম্ভাবনাই বেশি। তখন তোমার ঈশ্বরের বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রবণতা তৈরি হবে যার ফল চিন্তার অতীত। যখন ঈশ্বর অবতীর্ণ হয়েছিলেন ও কাজ করেছিলেন ইহুদিরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। সে কি যিহোবা ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ছিল না? তাদের কাজের সারাংশ হল বিশ্বাসঘাতকতা, এবং সেই কারণেই ইস্রায়েলিরা ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত হয়েছিল। তদুপরি, প্রভু যীশুর আবির্ভাব ও কাজের বহু পূর্বেই বাইবেলে তাঁর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়, “একটি কুমারী গর্ভবতী হয়ে প্রসব করবে পুত্র সন্তান, পরিচিত হবে সে ইন্মানুয়েল নামে” (মথি ১:২৩)। কিন্তু যখন সে এসেছিল, তার নাম ইম্মানুয়েল ছিল না—ছিল যীশু। ইহুদি ধর্মের ফরিশীরা শাস্ত্রের আক্ষরিক পাঠে অনড় থাকে, এবং যেহেতু ঈশ্বরের নতুন নাম মেলেনি, তারা প্রভুকে অস্বীকার ও তাঁর নিন্দা করার সবরকম চেষ্টা করেছে। প্রভু যীশুর শিক্ষায় যতই কর্তৃত্ব ও শক্তি থাকুক, তারা তাকে স্বীকৃতি দেয়নি, এবং অবশেষে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে এক জঘন্য অপরাধ করেছিল, ফলে তারা ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত ও শাস্তিপ্রাপ্ত হয়। এ সত্যিই ভাবনার উদ্রেককারী এক শিক্ষা! প্রভুকে স্বাগত জানানোর বিষয়ে, আমাদের কি শাস্ত্রের আক্ষরিক পাঠে এবং যীশু নামটিতেই অটল থাকা উচিত? তা করলে ঈশ্বরের প্রতিরোধ ও নিন্দার রাস্তাই সুগম হবে। এ হল এমন বিষয় যাতে বহু বিশ্বাসীরই অন্তর্দৃষ্টি পৌঁছয় না, তাই তারা বাইবেলের আক্ষরিক অর্থ এবং যীশুর নামকেই আঁকড়ে বসে থাকে, এবং প্রকৃত পথ অনুসন্ধান করতে গেলে বারবার প্রশ্ন করে, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামটি কি বাইবেলসম্মত? যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামটি বাইবেলে না থাকে, আমি তাঁকে স্বীকার করতে পারি না।” যদি তুমি বলো যে তুমি তাঁকে স্বীকার করবে না কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামটি বাইবেলে নেই, তাহলে তুমি প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করো কেন, তাঁর নামও তো আদিপুস্তকে নেই? এ কি বিরোধাভাস নয়? স্পষ্টত, প্রচুর মানুষপ্রকৃত অর্থে বাইবেল বোঝে না, বরং শাস্ত্রের আক্ষরিক পাঠ ও সূত্রাবলীকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে। তারা প্রার্থনা করে না, ঈশ্বরের বাক্যে সত্যানুসন্ধান করে না বা পবিত্র আত্মার কাছে অনুমোদন চায় না, এবং এর ফলেই তারা ধ্বংস হবে। বস্তুত অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজের ভবিষ্যদ্বাণী বাইবেলে আছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামে, “এবং সকল অইহুদি তোমার ন্যায়পরায়ণতা প্রত্যক্ষ করবে, আর সকল রাজা প্রত্যক্ষ করবে তোমার মহিমা: এবং তুমি অভিহিত হবে এক নতুন নামে, যে নাম হবে যিহোবার মুখনিঃসৃত” (যিশাইয় ৬২:২)। “যে জয়ী হবে আমি তাকে আমার ঈশ্বরের মন্দিরের স্তম্ভস্বরূপ করব, সে কখনও স্থানচ্যূত হবে না। তার উপরে আমি লিখব আমার ঈশ্বরের নাম। লিখব আমার ঈশ্বরের নতুন নগরীর নাম—নতুন জেরুশালেম যা স্বর্গ থেকে, আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। আর লিখব আমার নিজের নতুন নাম” (প্রকাশিত বাক্য ৩:১২)। “‘আমিই আল্ফা ও ওমেগা’। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান” (প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। “হে প্রভু পরমেশ্বর সর্বশক্তিমান তুমি অতীতে ছিলে এবং এখন বর্তমান আমরা তোমার ধন্যবাদ করি, কারণ তুমি মহান ক্ষমতায় বিভূষিত হয়েগ্রহণ করেছ রাজ্য” (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৭)। “তখন আমি বিরাট জনসমাবেশের কোলাহন, জলধি কল্লোল ও প্রচণ্ড বজ্রনাদের মত এক ধ্বনি শুনতে পেলাম, সেই ধ্বনিতে ঘোষিত হচ্ছিল: ‘হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন’” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। তুমি প্রকাশিত বাক্য ৪:৮ এবং ১৬:৭ মিলিয়ে দেখতে পারো। শাস্ত্রের এই অংশগুলি ভবিষ্যদ্বাণী করে যে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের নাম ভিন্ন হবে, “সর্বশক্তিমান”, অর্থাৎ “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর”। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বর অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামেই আবির্ভূত হবেন ও কাজ করবেন, এবং বহু পূর্বেই ঈশ্বর এই পরিকল্পনা করেছিলেন। যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে স্বীকার করেছে তারা প্রভুর কণ্ঠই শুনেছে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা প্রভুকে স্বাগত জানিয়েছে, তাঁর সিংহাসনের সম্মুখে আনীত হয়েছে, এবং মেষের বিবাহ ভোজে অংশগ্রহণ করছে। তারা হল প্রকৃত বিশ্বাসী, যাদের যথার্থ আস্থা আছে। তারা শেষপর্যন্ত প্রভুকে স্বাগত জানিয়েছে ও অর্জন করেছে। যারা ঈশ্বরকে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ তারা তাদের বিশ্বাসকে হারাবে। তারা প্রভুকে হারাবে। যারা যীশুর নামে অটল থাকে তারা প্রভু যখন আসেন তাঁর কণ্ঠ চিনতে পারে না। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রভু যীশুর আবির্ভূত ও সক্রিয় আত্মা বলে চিনতে পারে না। প্রভু যীশুর প্রত্যাবর্তনকে স্বীকার না করে, চিনতে না পেরেই তারা প্রভুতে বিশ্বাস করে। এ হল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং এরাই সেই ব্যক্তি যারা প্রকৃত অর্থে প্রভু যীশুর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছে। প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা কী? তা হল তাঁকে না চিনে তাঁকে বিশ্বাস করা। এ কথা এখন স্পষ্ট, তাই তো?
তাহলে ঈশ্বরের নাম ক্রমাগত বদলাতে থাকে কেন? প্রত্যেক যুগে তিনি নতুন নাম গ্রহণ করেন কেন? এর মধ্যেই সত্যের এক রহস্য লুকিয়ে আছে। এ বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কিছু বাক্যের দিকে তাকানো যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “ঈশ্বর প্রতিবার এই পৃথিবীতে আসার সময় তাঁর নাম, তাঁর লিঙ্গ, তাঁর প্রতিচ্ছবি এবং তাঁর কাজ পরিবর্তন করেন; তিনি তাঁর কাজের পুনরাবৃত্তি করেন না। তিনি এমন একজন ঈশ্বর যিনি সর্বদাই নতুন এবং কখনও পুরাতন নন। আগে যখন তিনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন, তাঁকে যীশু নামে অভিহিত করা হয়েছিল; এইবার যখন তিনি পুনরায় আসবেন, তখন কি তাঁকে আবারও যীশু নামে অভিহিত করা যাবে? এর আগে যখন তিনি এসেছিলেন, তিনি ছিলেন পুরুষ; আবার এই বারেও কি তিনি পুরুষ হতে পারেন? অনুগ্রহের যুগে যখন তিনি এসেছিলেন, তখন তাঁর কাজ ছিল ক্রুশবিদ্ধ হওয়া; আবার যখন তিনি আসবেন, তখনও কি তিনি মানবজাতিকে পাপ থেকে মুক্তই করবেন? আবারও কি তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা যাবে? তাহলে সেটি কি তাঁর কাজের পুনরাবৃত্তি হয়ে যাবে না? তুমি কি জানতে না যে ঈশ্বর সর্বদাই নতুন এবং কখনও পুরাতন নন? অনেকেই আছে, যারা মনে করে যে ঈশ্বর অপরিবর্তনীয়। এটি সঠিক, কিন্তু এর অর্থ হল ঈশ্বরের স্বভাব এবং তাঁর সারসত্যের অপরিবর্তনীয়তা। তাঁর নাম এবং কাজের পরিবর্তন একথা প্রমাণ করে না যে তাঁর সারসত্য পরিবর্তিত হয়েছে; অন্যভাবে বলতে গেলে, ঈশ্বর সব সময়েই ঈশ্বর থাকবেন, এবং এই বিষয়টির কোনও পরিবর্তন হবে না। তুমি যদি বলো যে ঈশ্বরের কাজ অপরিবর্তনীয়, তাহলে তিনি কি তাঁর ছয় হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা সম্পূর্ণ করতে পারবেন? তুমি কেবল জানো যে ঈশ্বর সর্বদাই অপরিবর্তনীয়, কিন্তু তুমি কি জানো যে ঈশ্বর সর্বদাই নতুন এবং কখনও পুরাতন নন? ঈশ্বরের কাজ অপরিবর্তনীয় থাকলে তিনি কি সুদীর্ঘ সময় অতিক্রম করে মানবজাতিকে বর্তমান দিন পর্যন্ত নেতৃত্ব দিতে পারতেন? ঈশ্বর যদি অপরিবর্তনীয় হতেন, তাহলে কেন তিনি দুটি যুগের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন? … আর তাই ‘ঈশ্বর সর্বদাই নতুন এবং কখনও পুরাতন নন’ এই শব্দগুলি তাঁর কাজের সম্পর্কে বলা হয়, এবং ‘ঈশ্বর অপরিবর্তনীয়’ এই শব্দগুলি ঈশ্বরের সহজাতভাবে যা আছে এবং তিনি যা, তাকে নির্দেশ করে। এই সব কিছু নির্বিশেষে, তুমি কখনও ছয় হাজার বছরের কাজকে একটি বিন্দুতে আবদ্ধ করতে পারো না, অথবা প্রাণহীন শব্দ দিয়ে তার পরিধি নির্দিষ্ট করতে পারো না। মানুষের নির্বুদ্ধিতা এমনই। ঈশ্বর মানুষের কল্পনার মতো সরল নন, তাঁর কাজ কোনও একটি যুগে বিলম্বিত হতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ, যিহোবাই সবসময়ের জন্য ঈশ্বরের নাম হয়ে থাকতে পারেন না; ঈশ্বর তাঁর কাজ যীশুর নামেও করতে পারেন। এটাই লক্ষণ যে ঈশ্বরের কাজ সর্বদাই সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
“ঈশ্বর সর্বদাই ঈশ্বর, এবং তিনি কখনোই শয়তান হয়ে উঠবেন না; শয়তান সর্বদাই শয়তান, এবং সে কখনোই ঈশ্বর হয়ে উঠবে না। ঈশ্বরের প্রজ্ঞা, ঈশ্বরের বিস্ময়কর গুণাবলী, ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা, ঈশ্বরের মহিমা কখনও পরিবর্তিত হবে না। তাঁর সারসত্য এবং তাঁর যা আছে ও তিনি যা, তা কখনও পরিবর্তিত হবে না। তাঁর কাজের বিষয়ে বলতে গেলে অবশ্য বলা যায়, তা সর্বদাই সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, সর্বদাই আরও গভীরে যাচ্ছে, কারণ তিনি সর্বদাই নতুন এবং কখনও পুরাতন নন। প্রতি যুগে ঈশ্বর নতুন নাম গ্রহণ করেন, প্রতি যুগে তিনি নতুন কাজ করেন এবং প্রতি যুগে তিনি তাঁর সৃষ্ট জীবদের তাঁর নতুন অভিপ্রায় এবং নতুন স্বভাব প্রত্যক্ষ করার অনুমতি দেন। যদি, একটি নতুন যুগে মানুষ ঈশ্বরের নতুন স্বভাবের অভিব্যক্তি প্রত্যক্ষ করতে অক্ষম হয়, তাহলে তারা কি তাঁকে চিরতরে ক্রুশবিদ্ধ করবে না? এবং তা করে, তারা কি ঈশ্বরের সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে না?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (৩))।
“ইস্রায়েলে আমার কার্য নির্বাহ করার সময় আমি ‘যিহোবা’ নাম গ্রহণ করেছিলাম, এবং এই নামের অর্থ ইস্রায়েলীদের ঈশ্বর (ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ) যিনি মানুষকে করুণা করতে পারেন, অভিশাপ দিতে পারেন, এবং তাদের জীবনযাপনকে দিশা দেখাতে পারেন; যে ঈশ্বর অসীম ক্ষমতার অধিকারী এবং জ্ঞানে পরিপূর্ণ। ‘যীশু’ হলেন ইম্মানুয়েল, যার অর্থ স্নেহ ও মমতায় পরিপূর্ণ পাপস্খালনের বলি, এবং যা মানুষকে মুক্তি দেয়। তিনি অনুগ্রহের যুগের কার্য নির্বাহ করেছিলেন, তিনিই অনুগ্রহের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন, এবং পরিচালনামূলক পরিকল্পনার কেবলমাত্র একটি অংশের কার্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। … অনুগ্রহের যুগের মানুষদের পুনর্জন্ম ও উদ্ধারের সুযোগ দিতেই যীশুর নামের উদ্ভব হয়, এবং এটি সমগ্র মানবজাতির মুক্তির এক বিশেষ নাম। ফলত, যীশুর নামটি অনুগ্রহের যুগকে চিহ্নিত করে এবং মুক্তির কার্যের প্রতিনিধিত্ব করে। ইসরায়েলের যে জনগণ বিধানের অধীনে বাস করতো, যিহোবা নামটি তাদের জন্য এক বিশেষ নাম। প্রত্যেক যুগে এবং কার্যের প্রতি পর্যায়ে আমার নাম ভিত্তিহীন নয়, বরং তা প্রতিনিধিত্বমূলক তাৎপর্য বহন করে: প্রতিটি নাম একেকটি যুগের প্রতিনিধি। ‘যিহোবা’ বিধানের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন, এবং এটি সেই সম্ভ্রমার্থক নাম যার দ্বারা ইস্রায়েলীরা তাদের আরাধ্য ঈশ্বরকে সম্বোধন করতো। ‘যীশু’ অনুগ্রহের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন, এবং এটি সেই যুগে মুক্তিপ্রাপ্ত সকলের ঈশ্বরের নাম। মানুষ যদি এখনো অন্তিম সময়ে পরিত্রাতা যীশুর আগমনের অপেক্ষা করে, এবং এখনও আশা করে যে যিহুদীয়ার রূপের প্রতিমূর্তি রূপে তিনি আবির্ভূত হবেন, তাহলে সমগ্র ছ’হাজার বছরব্যাপী পরিচালনামূলক পরিকল্পনা মুক্তির যুগেই স্তব্ধ হয়ে যেত, এবং আর অগ্রসর হতে পারত না। তাছাড়াও অন্তিম সময় কখনোই আসতো না, এবং এই যুগটি কোনোদিনই শেষ করা যেত না। এর কারণ, পরিত্রাতা যীশু শুধুমাত্র মানবজাতির মুক্তি এবং পরিত্রাণের জন্যই। কেবলমাত্র অনুগ্রহের যুগের সকল পাপীর জন্যই আমি যীশুর নাম নিলাম, কিন্তু এটা সেই নাম নয় যা দিয়ে আমি সমগ্র মানবজাতির বিনাশ ঘটাবো। যদিও যিহোবা, যীশু, এবং মশীহ, সকলেই আমার আত্মার প্রতিনিধি, কিন্তু এই নামগুলি কেবলমাত্র আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার বিভিন্ন যুগকে চিহ্নিত করে, আমার সামগ্রিক সত্তার প্রতিনিধিত্ব করে না। পৃথিবীর মানুষ আমাকে যেসব নামে ডাকে, সেগুলি আমার সম্পূর্ণ স্বভাব এবং আমার সামগ্রিক সত্তাকে স্পষ্ট করতে পারে না। এগুলি নিতান্তই কিছু নাম যার দ্বারা আমাকে বিভিন্ন যুগে সম্বোধন করা হয়। এবং তাই যখন শেষ যুগ—অন্তিম সময়ের যুগ—এসে উপস্থিত হবে, তখন আমার নাম আবার বদলে যাবে। আমাকে তখন যিহোবা, যীশু বা মশীহ নামে ডাকা হবে না—আমাকে স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলে সম্বোধন করা হবে, এবং এই পরিচয়েই আমি একটি সমগ্র যুগের অবসান ঘটাব। একসময় আমি যিহোবা নামে পরিচিত ছিলাম। আমাকে মশীহ নামেও ডাকা হত, এবং মানুষ একসময় স্নেহ ও সম্মানভরে পরিত্রাতা যীশু নামেও আমাকে সম্বোধন করত। যদিও আজ, আমি আর সেই অতীতকালের পরিচিত যিহোবা বা যীশু নই; আমি সেই ঈশ্বর যিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন, সেই ঈশ্বর যিনি যুগের অবসান ঘটাবেন। আমি স্বয়ং ঈশ্বর যিনি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে জেগে ওঠেন, সম্পূর্ণ স্বভাব নিয়ে, এবং কর্তৃত্ব, সম্মান, ও মহিমায় পরিপূর্ণ অবস্থায়। মানুষ আমার সঙ্গে কখনো যুক্ত হয় নি, আমাকে কখনো চেনে নি, এবং সর্বদা আমার স্বভাব সম্পর্কে অজ্ঞ হয়েই থেকেছে। বিশ্ব সৃষ্টির কাল থেকে শুরু করে আজ অবধি একজন মানুষও আমাকে দেখে নি। ইনি হলেন সেই ঈশ্বর, যিনি অন্তিম সময়ে মানুষের কাছে আসেন কিন্তু মানুষের মাঝেই প্রচ্ছন্ন থাকেন। তিনি সত্য এবং বাস্তব, জ্বলন্ত সূর্য এবং প্রোজ্জ্বল শিখার মতো শক্তি ও কর্তৃত্বে পরিপূর্ণ হয়ে মানুষের মাঝে বসবাস করেন। এমন একজনও মানুষ বা একটিও বস্তু নেই যাকে আমি আমার বাক্যের দ্বারা বিচার করবো না, এবং জ্বলন্ত আগুনের দ্বারা শুদ্ধ করবো না। অবশেষে সকল জাতি আমার বাক্যের দ্বারা আশীর্বাদ লাভ করবে, এবং আমার বাক্যের জন্যই খণ্ড-বিখণ্ড হবে। এইভাবে অন্তিম সময়ে সকল মানুষ দেখবে যে আমিই সেই ফিরে আসা পরিত্রাতা, এবং আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিনি সমগ্র মানবজাতিকে জয় করেন। এবং সবাই দেখবে যে একসময় আমি ছিলাম মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি, কিন্তু অন্তিম সময়ে আমি হয়ে উঠি সূর্যের লেলিহান শিখা, যা সবকিছু ভস্মীভূত করে, এবং আমিই সেই ন্যায়পরায়ণতার সূর্য, যা সবকিছু প্রকাশিত করে। অন্তিম সময়ে এটিই আমার কার্য। আমি এই নাম এবং এই স্বভাব গ্রহণ করলাম, যাতে সকলে দেখতে পায় যে আমি ধার্মিক ঈশ্বর, এক জ্বলন্ত সূর্য, এক লেলিহান শিখা, এবং যাতে সকলে একমাত্র সত্য ঈশ্বর হিসেবে আমার উপাসনা করে, এবং যাতে তারা আমার প্রকৃত রূপ দেখতে পায়: আমি কেবলমাত্র ইসরায়েলীদের ঈশ্বর নই, এবং আমি শুধুমাত্র মুক্তিদাতা নই; আমি সমগ্র আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্রের সকল জীবের ঈশ্বর” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি অত্যন্ত স্পষ্টরূপে প্রতি যুগে ঈশ্বর যে নামগুলি ব্যবহার করেন, এবং তাকে ঘিরে সত্যের যে রহস্য তা ব্যাখ্যা করেছে। ঈশ্বরের নাম যুগ ও তাঁর কাজের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরিবর্তন হয়। তাঁর প্রতিটি নামই তিনি সেই যুগে যে কাজ করছেন তার প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু ঈশ্বরের নাম ও কাজ যেভাবেই পাল্টাক না কেন, তাঁর সারসত্য কখনো পাল্টায় না—ঈশ্বর সর্বদাই ঈশ্বর। বিধানের যুগে ঈশ্বর যিহোবা নামে কাজ করেন, আইন প্রণয়ন করেন ও মানবজাতির পার্থিব জীবনকে নেতৃত্ব দেন, পাপ কী এবং যিহোবা ঈশ্বরকে কীভাবে পূজা করতে হয় তার শিক্ষা দেন। অনুগ্রহের যুগে, ঈশ্বরের আত্মা মনুষ্যপুত্রের দেহ ধারণ করে। তিনি যীশু নামে সত্য প্রকাশ করেন ও মুক্তির কাজ করেন। অবশেষে তিনি ক্রুশবিদ্ধ হন ও মানবজাতির পাপ-উৎসর্গে পরিণত হন, আমাদের নিজেদের পাপ থেকে মুক্তি দেন। এখন অন্তিম সময়ে, ঈশ্বর পুনরায় অবতাররূপে আবির্ভূত হয়েছেন এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামে অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ করছেন, মানুষের বিচার ও তাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য সত্য প্রকাশ করছেন, আমাদের পাপ থেকে, শয়তানের শক্তি থেকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করছেন, এবং এই অন্ধকার ও অশুভ পুরনো পৃথিবীর অন্ত সাধন করছেন। তিনি মানুষকে এক সুন্দর গন্তব্যে নিয়ে যাবেন। এভাবেই মানবজাতি কে উদ্ধার করার ঈশ্বরের ৬,০০০ বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা সম্পন্ন হবে। ঈশ্বরের কাজের বাস্তব রূপ আমাদের দেখায় যে যিহোবা, যীশু ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, এই তিনটি নামের প্রত্যেকটিই মানবজাতিকে রক্ষা করার ঈশ্বরের কাজের তিনটি ভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করে। বাইরে থেকে দেখলে, মনে হয় ঈশ্বরের নাম ও কাজের পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু ঈশ্বরের সারসত্যের পরিবর্তন হয় না। ঈশ্বরের স্বভাব ও তাঁর যা আছে এবং তিনি যা তা কখনো বদলায় না। তিনি সেই একেশ্বরই থাকেন যিনি মানবজাতিকে নেতৃত্ব দেন, মুক্তি দেন ও সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করেন। যখন আমরা আদিপুস্তকে যিহোবা ঈশ্বরের বিধানের যুগের বাক্যগুলি দেখি, করুণার যুগের প্রভু যীশুর বাক্যগুলি দেখি এবং এবার রাজ্যের যুগের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি দেখি, আমরা দেখতে পাই যে এই সত্য একই আত্মা থেকে আসে এবং একই আত্মার উচ্চারণ, কারণ বিভিন্ন যুগে ঈশ্বরের সমস্ত উচ্চারণেই তাঁর ভালোবাসা এবং ধার্মিক স্বভাব নিহিত থাকে। ঈশ্বরের যা আছে ও তিনি যা তা এতে নিহিত থাকে। ঈশ্বরের ভালোবাসা, ঈশ্বরের স্বভাব এবং তাঁর যা আছে ও তিনি যা এই সবই এক সত্য ঈশ্বরের সারসত্য, তাঁর অধীত বস্তুসমূহ এবং এক সত্য ঈশ্বরের অস্তিত্বকে নির্মাণ করে। অনুগ্রহের যুগে, প্রভু যীশুর কথা শোনা যিহোবা ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনার মতোই ছিল, আমরা যখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য শুনি, মনে হয় প্রভু যীশু যেন স্বয়ং আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, এবং যিহোবা ঈশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এ সম্পূর্ণত প্রমাণ করে যে ঈশ্বরের কাজের তিনটি পর্যায় আসলে একই ঈশ্বরের দ্বারা সম্পাদিত। ঈশ্বরের নাম পাল্টায়, কিন্তু তাঁর সারসত্য, তাঁর যা আছে ও তিনি যা, এবং যে ধার্মিক স্বভাব তিনি ব্যক্ত করেন তা একই থাকে, সামান্যতম পরিবর্তনও হয় না। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আজকের সব কাজই প্রভু যীশুর কাজের অনুসারী। এ হল মুক্তির কাজের ভিত্তির ওপর এক ভিন্ন পর্যায়ের কাজ যা আরো গভীর ও উন্নত—মানবতাকে সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধ ও রক্ষা করার কাজ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সুপ্রচুর পরিমাণ সত্য ব্যক্ত করেছেন, শুধু বাইবেলের রহস্যকেই উদ্ঘাটিত করেননি, বরং ঈশ্বরের ৬,০০০ বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনাকেও উন্মোচিত করেছেন, যেমন ঈশ্বরের পরিচালন প্রকল্পে তাঁর উদ্দেশ্য, কীভাবে ঈশ্বর মানুষকে রক্ষা করার জন্য তাঁর কাজের তিনটি পর্যায়কে ব্যবহার করেন, আবির্ভাবের রহস্যসমূহ, কীভাবে ঈশ্বর বিচার, পরিশোধন এবং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করেন, কীভাবে প্রতিটি ধরণের মানুষের পরিণতি ও গন্তব্য নির্দিষ্ট হয়, কীভাবে খ্রীষ্টের রাজত্ব পৃথিবীতে বাস্তবায়িত হয় ও আরো অনেক কিছু। ঈশ্বর শয়তানের দ্বারা মানুষের দূষণকেও প্রকাশ্যে এনেছেন, তিনি মানুষের শয়তানোচিত ঈশ্বরবিরোধী স্বভাবের বিচার করেন ও তা প্রকাশ্যে আনেন। তিনি মানবজাতির অনুশীলনযোগ্য সত্যগুলির প্রতিটি আঙ্গিক ব্যাখ্যা করেছেন, আমাদের দুর্নীতি দূর করার ও স্বভাব পরিবর্তনের বাস্তবোচিত পথগুলি প্রকাশ করেছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যে সত্যগুলি প্রকাশ করেন তার সবই সেই সত্য যা মানুষের পরিশোধন এবং সম্পূর্ণ মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয়, এবং যা সম্পূর্ণরূপে প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকে সার্থক করে: “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন” (যোহন ১৬:১২-১৩)। অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচারের কাজ মানবজাতিকে সম্পূর্ণ শুদ্ধ ও রক্ষা করে এবং সেই সব মানুষ, যাদের ঈশ্বর তাঁর সম্মুখে রক্ষা করার জন্য পূর্বনির্দিষ্ট করে রেখেছেন তাদের বিচার ও শাস্তির মাধ্যমে পরিশুদ্ধ করে। বিপর্যয়ের পূর্বে তিনি ইতিমধ্যেই এক দল জয়ী নির্দিষ্ট করেছেন। এখন মহাবিপর্যয়গুলি শুরু হয়েছে, এবং ঈশ্বর শুভের পুরস্কার ও অশুভের শাস্তি বিধান করতে শুরু করেছেন। সেই সকলে যারা শয়তানের অধীন ও ঈশ্বরের প্রতিরোধী তারা ধ্বংস হবে, আর যারা ঈশ্বরের বিচারের দ্বারা পরিশোধিত তাদের ঈশ্বর রক্ষা করবেন এই সকল বিপর্যয়ের মধ্যেও। বিপর্যয়গুলির পর, পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজ্য প্রতিষ্ঠা হবে, প্রকাশিত বাক্যের সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হবে: “জগতের রাজা এখন আমাদের প্রভুর অধীন, তাঁর অভিষিক্তের পদানত। রাজত্ব করবেন তিনি যুগে যুগে, চিরকাল” (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫)। “হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। “দেখ, ঈশ্বরের উপাসনালয় মানুষের মাঝে, তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন, তারা হবে তাঁর প্রজা। ঈশ্বর স্বয়ং তাদের সঙ্গে থাকবেন, হবেন তাদের ঈশ্বর। তিনি মুছিয়ে দেবেন অশ্রুধারা। থাকবে না আর মৃত্যুর অস্তিত্ব। শোক, আর্তনাদ, আর থাকবে না। পুরাতন সব কিছুই হয়েছে বিলীন” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৩-৪)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এতগুলি সত্য প্রকাশ করেছেন এবং মহান কার্য সম্পাদন করেছেন। এতে প্রমাণ হয় যে তিনি ঈশ্বরের আত্মার দেহরূপ যিনি কার্য সম্পন্ন করার নিমিত্ত মনুষ্যপুত্ররূপে আবির্ভূত। তাঁকে যীশু নামে ডাকা হয় না এবং তিনি ইহুদি প্রভু যীশুর সমরূপী নন, কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আত্মা প্রভু যীশুর আত্মা—তিনিই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, প্রভু যীশু এবং যিহোবা একই ঈশ্বর। এটা জানলে আর দাবি করতে পারবে না যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে স্বাগত জানানোই প্রভুকে স্বাগত জানানো, মেষে পদাঙ্ক অনুসরণ করা ও ঈশ্বরের সম্মুখে উন্নীত হওয়া! ধর্মজগতের অনেকেই এখনও শাস্ত্রের আক্ষরিক পাঠেই নিবিষ্ট, প্রভু যীশুর নাম আঁকড়ে আছে, তাঁর মেঘারূঢ় হয়ে আগমনের অপেক্ষারত, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজের অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণে বিরত, তিনি যতই সত্য প্রকাশ করুন না কেন, তারা একে ঈশ্বরের আত্মা থেকে উৎসৃত বলে স্বীকার করে না, প্রভু যীশুর আত্মার আবির্ভূত রূপ ও কাজের স্বীকৃতি দেয় না। তারা যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের সত্য এনে দিয়েছেন তাঁকে, এমনকী নিন্দা ও বর্জন করে। তারাও কি ফরিশীদের মতোই ভুল করছে না? তারা মনে করে এ হল প্রভু যীশুর প্রতি সমর্পণ, কিন্তু প্রভু তাঁদের অন্যায়কারী হিসেবে নিন্দা করেছেন, প্রভু যীশু বলেছেন, “সেই দিনটি যখন আসবে তখন অনেকেই আমাকে বলবে ‘প্রভু, প্রভু, তোমার নাম নিয়ে আমরা তো অনেক ভাবোক্তি করেছি, তোমার নাম নিয়ে আমরা অপদেবতা তাড়িয়েছি এবং কত অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করেছি।’ আমি তখন তাদের স্পষ্টই বলব, ‘কোন কালেই আমি তোমাদের চিনতাম না। অধর্মচারীর দল। আমার কাছ থেকে দূর হও’” (মথি ৭:২২-২৩)। এবং তাই ঈশ্বর তাদের ধ্বংস করবেন।
শেষ করার আগে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আরো কিছু বাক্য দেখে নেওয়া যাক। “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট যে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দিয়েছেন তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।