ধর্মে সত্য অর্জন করা যায় না

30-03-2023

আমি ছোটবেলায় প্রভুকে বিশ্বাস করার বিষয়ে আমার মা-বাবার পথই বেছে নিয়েছিলাম, আর আমি সাগ্রহে আমার বিশ্বাস মেনে চলছিলাম। আমি সক্রিয়ভাবে গির্জার সমস্ত কাজকর্মে অংশ নিতাম, সে যাই হোক না কেন। আমি ধর্মকর হিসাবে আমার আয়ের এক দশমাংশ দিতাম আর সব সময় গির্জার সেবাব্রতে যোগ দিতাম। আমার সাগ্রহে কাজের কারণে, আমি গির্জার ডীকন হলাম, এবং ৩০ বছর বয়সে, হলাম গির্জার অগ্রজ। কিন্তু বহু বছর ধরে বিশ্বাস করার পরেও, এমন একটা কিছু ছিল যা আমাকে চিন্তায় ফেলেছিল। আমি প্রভু যীশুর বাক্য দেখলাম, “যারা আমাকে ‘প্রভু’, ‘প্রভু’, বলে ডাকে তারা সকলেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়, কিন্তু যে আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করবে সে-ই শুধু স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। সেই দিনটি যখন আসবে তখন অনেকেই আমাকে বলবে ‘প্রভু, প্রভু, তোমার নাম নিয়ে আমরা তো অনেক ভাবোক্তি করেছি, তোমার নাম নিয়ে আমরা অপদেবতা তাড়িয়েছি এবং কত অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করেছি।’ আমি তখন তাদের স্পষ্টই বলব, ‘কোন কালেই আমি তোমাদের চিনতাম না। অধর্মচারীর দল। আমার কাছ থেকে দূর হও’(মথি ৭:২১-২৩)। এটা পড়ে বিভ্রান্ত হলাম। আমরাই তো প্রভুর নামে প্রচার আর কাজ করতাম, আর “প্রভু, প্রভু” বলে ডাকতাম, তাই না? তবে কেন প্রভু বললেন তিনি এমন লোকেদের চেনেন না, আর এই ধরনের লোকেরা মন্দ কর্ম সংঘটনকারী? এইভাবে তাঁর জন্য পরিশ্রম করাই কি তাঁর ইচ্ছা ছিল না? তাহলে প্রভুর ইচ্ছা কী ছিল? আমি কখনোই এর উত্তর খুঁজে পাইনি।

২০২০ সালের মার্চে, একদিন, এক ভগিনী আমাকে অনলাইনে একটা ধর্মোপদেশ শোনার আমন্ত্রণ জানাল। আমি ভাবলাম, “মহামারী চলাকালীন আমরা গির্জায় যেতে পারি না, তাই এই ভাল।” তাই খুশি মনে রাজি হয়ে গেলাম। ঐ অনলাইন সমাবেশে, ভগিনী মরিন জ্ঞানী আর মূর্খ কুমারীদের অর্থ সম্পর্কে সহকারিতা করল, খ্রীষ্ট কী, স্বর্গরাজ্য স্বর্গে না মর্ত্যে, এইসব। আমার মনে হল সে এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব ভালো করে বলছিল। এসব বিষয় নিয়ে আমি নিজের ধর্মোপদেশে স্পষ্টভাবে সহকারিতা করতে পারতাম না, তাই তাঁর সহকারিতা আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় ছিল। সে এ-ও বলে, “আমরা যারা প্রভুতে বিশ্বাসী তারা সবাই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের আশা করি, কিন্তু কোন ধরনের মানুষ স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে?” তারপর তিনি বাইবেলের এই শ্লোকগুলো পড়ল, “যারা আমাকে ‘প্রভু’, ‘প্রভু’, বলে ডাকে তারা সকলেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়, কিন্তু যে আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করবে সে-ই শুধু স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। সেই দিনটি যখন আসবে তখন অনেকেই আমাকে বলবে ‘প্রভু, প্রভু, তোমার নাম নিয়ে আমরা তো অনেক ভাবোক্তি করেছি, তোমার নাম নিয়ে আমরা অপদেবতা তাড়িয়েছি এবং কত অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করেছি।’ আমি তখন তাদের স্পষ্টই বলব, ‘কোন কালেই আমি তোমাদের চিনতাম না। অধর্মচারীর দল। আমার কাছ থেকে দূর হও’(মথি ৭:২১-২৩)। সে বলল, “প্রভু বলেন সমস্ত বিশ্বাসী স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। যারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে তারাই প্রবেশ করতে পারে। তাহলে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার অর্থ কী? অনেকে মনে করে যে আরও বেশি সেবাব্রত করা, বাইবেল পড়া, প্রার্থনা করা, এবং অনেক সৎকর্ম করা-ই হল ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা, আর ভাবে যে প্রভু ফিরে এলেই তারা রাজ্যে প্রবেশ করবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি কি সঠিক? এটা কি ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? ইহুদিধর্মের ফরিশীদের অনেক ভালো আচরণ ছিল, কিন্তু যখন প্রভু যীশু এলেন আর এত সত্য প্রকাশ করলেন, তখন তারা প্রভুকে চিনতে পারেনি, তারা উন্মত্তভাবে প্রতিরোধ করেছিল আর তাঁর নিন্দা করেছিল, এমনকি তারা প্রভু যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল আর অবশেষে মন্দ কর্ম সংঘটনকারী হয়ে উঠেছিল। তা থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে শুধু পিতার ইচ্ছা পালন, অর্থাৎ, আমাদের কল্পনামাফিক, সুসমাচার প্রচার করা, বাইবেল পড়া, প্রার্থনা করা এবং সৎকর্ম করাই সব নয়। খ্রীষ্টানদের যা করা উচিত এটা তার একটা দিক মাত্র। তাহলে পিতার ইচ্ছা পালন করার মানেটা ঠিক কি? বাইবেল বলে, ‘অতএব তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র(লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫)। ‘পবিত্রতা ছাড়া কোন মানুষ প্রভুকে দেখতে পাবে না(হিব্রু ১২:১৪)। এর থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে মানুষের থেকে ঈশ্বর চাইছেন যে তারা যেন পবিত্রতা অর্জন করে আর পাপ থেকে মুক্ত থাকে, তার মানে ঈশ্বরকে মান্য করতে পারা, তাঁর বাক্য শোনা, আর পাপ না করা, ঈশ্বরকে প্রতিরোধ না করা, ঈশ্বরের সাথে আর বিশ্বাসঘাতকতা না করা, এবং এমনকি যখন ঈশ্বরের কাজ মানুষের ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না, তখনও তা মানতে আর গ্রহণ করতে পারা। শুধুমাত্র এমন ব্যক্তিই ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে-ই ঈশ্বরের রাজ্যে থাকবে। যদিও আমরা প্রভুতে বিশ্বাস করি, প্রভুর জন্য পরিত্যাগ আর ব্যয় করি, তবুও আমরা প্রায়ই মিথ্যা বলি আর পাপ করি, সহকর্মীদের মধ্যে প্রায়ই হিংসা-বিবাদ থাকে, এমনকি যখন আমরা দুর্যোগ আর অসুস্থতার মুখোমুখি হই, তখনও আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে, তাঁর বিচার করতে, এমনকি তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি। এভাবে কি সত্যিই ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা হচ্ছে?” তার সহকারিতার পরে, হঠাৎ করে যেন জেগে উঠলাম: ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা আমরা বাহ্যিকভাবে কতটা ব্যস্ত তার উপর নির্ভর করে না, তা নির্ভর করে আমরা ঈশ্বরের বাক্য শুনি কিনা, ঈশ্বরকে মান্য করি কিনা, পাপ করাএবং ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করা বন্ধ করি কিনা, এসবের উপর। তা সত্ত্বেও আমরা প্রায়ই পাপ করি, আমরা দিনে পাপ করি আর রাতে স্বীকার করি, আমরা পাপ থেকে রেহাই পাইনি, আমরা ঈশ্বরের বাক্য পালন করতে পারি না, আর যখন অসন্তোষজনক কিছু ঘটে, তখন আমরা প্রভুর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করি আর অভিযোগ করি। তাহলে আমরা কীভাবে বলতে পারি যে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করি?

পরে, প্রতিটা সমাবেশে, মরিন আমার সাথে কিছু বাক্য ভাগ করে। এই বাক্যগুলো আমার কাছে ভালো, তরতাজা আর খুব উজ্জ্বল মনে হয়েছিল। ক্রমশ, এইরকম সমাবেশ আমার ভালো লাগতে থাকে, এবং আমি সবসময় পরের সমাবেশের জন্য মুখিয়ে থাকতাম। সেই মুহূর্তে আমি বুঝতে পারলাম যে উপদেশগুলো আমি একদিন প্রচার করেছিলাম, সেইসাথে অনেক যাজকের উপদেশও, ছিল নিছকই মতবাদমূলক কথা। আমরা মানুষকে সেসব বলে উৎসাহিত করতাম। সত্যি বলতে কি, ঈশ্বর ও সত্য সম্বন্ধে আমাদের কোনো উপলব্ধিই ছিল না। কিন্তু আমি যখন অনলাইনে ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করতাম আর তাদের বন্ধুত্বের কথা শুনতাম, তখন আমি গভীরভাবে অনুভব করতাম, যে আমায় রসদ যোগান দেওয়া হচ্ছে, এবং আমি স্বাধীনতা আর মুক্তি অনুভব করতাম। আমি শাস্ত্র না বুঝলে বা কোনো বিষয় না জানলে তা নিয়ে প্রশ্ন করতে পারতাম, আর সবসময় সেখান থেকেই উত্তর খুঁজে পেতাম। আমার গির্জার সমাবেশ থেকে আগে এতটা উপকৃত হইনি।

এক সমাবেশে, মরিন আমাকে পড়ার জন্য একটা অনুচ্ছেদ পাঠাল। “একসময় আমি যিহোবা নামে পরিচিত ছিলাম। আমাকে মশীহ নামেও ডাকা হত, এবং মানুষ একসময় স্নেহ ও সম্মানভরে পরিত্রাতা যীশু নামেও আমাকে সম্বোধন করত। যদিও আজ, আমি আর সেই অতীতকালের পরিচিত যিহোবা বা যীশু নই; আমি সেই ঈশ্বর যিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন, সেই ঈশ্বর যিনি যুগের অবসান ঘটাবেন। আমি স্বয়ং ঈশ্বর যিনি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে জেগে ওঠেন, সম্পূর্ণ স্বভাব নিয়ে, এবং কর্তৃত্ব, সম্মান, ও মহিমায় পরিপূর্ণ অবস্থায়। মানুষ আমার সঙ্গে কখনো যুক্ত হয় নি, আমাকে কখনো চেনে নি, এবং সর্বদা আমার স্বভাব সম্পর্কে অজ্ঞ হয়েই থেকেছে। বিশ্ব সৃষ্টির কাল থেকে শুরু করে আজ অবধি একজন মানুষও আমাকে দেখে নি। ইনি হলেন সেই ঈশ্বর, যিনি অন্তিম সময়ে মানুষের কাছে আসেন কিন্তু মানুষের মাঝেই প্রচ্ছন্ন থাকেন। তিনি সত্য এবং বাস্তব, জ্বলন্ত সূর্য এবং প্রোজ্জ্বল শিখার মতো শক্তি ও কর্তৃত্বে পরিপূর্ণ হয়ে মানুষের মাঝে বসবাস করেন। এমন একজনও মানুষ বা একটিও বস্তু নেই যাকে আমি আমার বাক্যের দ্বারা বিচার করবো না, এবং জ্বলন্ত আগুনের দ্বারা শুদ্ধ করবো না। অবশেষে সকল জাতি আমার বাক্যের দ্বারা আশীর্বাদ লাভ করবে, এবং আমার বাক্যের জন্যই খণ্ড-বিখণ্ড হবে। এইভাবে অন্তিম সময়ে সকল মানুষ দেখবে যে আমিই সেই ফিরে আসা পরিত্রাতা, এবং আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিনি সমগ্র মানবজাতিকে জয় করেন। এবং সবাই দেখবে যে একসময় আমি ছিলাম মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি, কিন্তু অন্তিম সময়ে আমি হয়ে উঠি সূর্যের লেলিহান শিখা, যা সবকিছু ভস্মীভূত করে, এবং আমিই সেই ন্যায়পরায়ণতার সূর্য, যা সবকিছু প্রকাশিত করে। অন্তিম সময়ে এটিই আমার কার্য। আমি এই নাম এবং এই স্বভাব গ্রহণ করলাম, যাতে সকলে দেখতে পায় যে আমি ধার্মিক ঈশ্বর, এক জ্বলন্ত সূর্য, এক লেলিহান শিখা, এবং যাতে সকলে একমাত্র সত্য ঈশ্বর হিসেবে আমার উপাসনা করে, এবং যাতে তারা আমার প্রকৃত রূপ দেখতে পায়: আমি কেবলমাত্র ইসরায়েলীদের ঈশ্বর নই, এবং আমি শুধুমাত্র মুক্তিদাতা নই; আমি সমগ্র আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্রের সকল জীবের ঈশ্বর(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)। আমার এই অনুচ্ছেদ পড়ার পর, মরিন আমাকে জিজ্ঞাসা করল, “এটা কে বলেছে বলে তোমার মনে হয়?” আমি তাড়াতাড়ি আরেকবার মনে মনে পড়লাম। অনুভব করলাম যে এই বাক্যগুলিতে রয়েছে কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা, এবং “আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিনি সমগ্র মানবজাতিকে জয় করেন,” শব্দগুলি পড়ে আমি ঈশ্বরের মহিমা অনুভব করলাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে ঈশ্বর এই বাক্যগুলো বলেছেন, কারণ কোনো মানুষই এধরনের কথা বলতে পারে না। কোনো বিখ্যাত ব্যক্তি, মহান ব্যক্তি বা ধর্মীয় নেতা এই ধরনের কথা বলতে পারে না। আমি মরিনকে বললাম, “এটা স্পষ্ট যে ঈশ্বর এই বাক্যগুলো বলেছেন, কারণ ঈশ্বর কী করতে চলেছেন তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন, আর কেউ বলতে সাহস করবে না, ‘একসময় আমি যিহোবা নামে পরিচিত ছিলাম। আমাকে মশীহ নামেও ডাকা হত, এবং মানুষ একসময় স্নেহ ও সম্মানভরে পরিত্রাতা যীশু নামেও আমাকে সম্বোধন করত।’” আমার উত্তর শোনার পর সে উত্তেজিত হয়ে বলল, “আমেন! এ-ই হল ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর! যারা ঈশ্বরের বাক্য চিনতে পারে তারা ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য।” আমি বাইবেলে এই বাক্যগুলো কখনও পড়িনি, তাই কৌতূহলী ছিলাম যে এই বাক্যগুলো কোথা থেকে এল। তখন সে আমাকে বলল যে প্রভু যীশু, উদ্ধারকর্তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর রূপে ফিরে এসেছিলেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ইতিমধ্যে গ্রন্থ খুলে সাতটা সীলমোহর ভেঙেছিলেন, এই বাক্যগুলি সেই গ্রন্থ থেকেই নেওয়া, এবং সেগুলি হল সেই সত্য যা অন্তিম সময়ে ঈশ্বর প্রকাশ করেছেন। এটা শুনে আমি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম, ভাবছিলাম, “গ্রন্থ তাহলে খোলা হয়েছে? তাহলে আমাকে তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের বাক্য পড়তে হবে!” তারপরে, সে তার সহকারিতা চালিয়ে গেল, “প্রভু যীশু অন্তিম সময়ে ফিরে আসেন। তিনি ‘সর্বশক্তিমান ঈশ্বর’ নামে আবির্ভূত হন ও কাজ করেন। তিনি অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন, এবং ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু করে বিচারকার্য সম্পাদন করেন, যা হল মানুষকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শুদ্ধ ও উদ্ধার করার কাজ। যদি আমরা ঈশ্বরের বাক্যের বিচার গ্রহণ করি কেবল তবেই আমরা পাপ ও অনাচার পরিহার করে পরিশুদ্ধ হতে পারি, উদ্ধার পেতে পারি, এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের নতুন নাম, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণী পূরণ করবেন, ‘“আমিই আল্‌ফা ও ওমেগা”। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান(প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। ‘হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন(প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। যিহোবা, যীশু ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হল ঈশ্বরেরই নাম। যদিও ঈশ্বরের প্রতি যুগে বিভিন্ন নাম রয়েছে, তবে তিনি এক ঈশ্বর আর এক আত্মা।” তার সহকারিতা শুনে তবেই আমি বুঝতে পারলাম যে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের নতুন নাম প্রকাশিত বাক্যে অনেক আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, কিন্তু আমি খেয়াল করিনি। শুধু এটুকুই জানতাম যে ঈশ্বর সহজাতভাবে সর্বশক্তিমান। এমনটা আমার কখনও মনে হয়নি যে “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর” হল সেই নাম যা ঈশ্বরের ব্যবহার করেন যখন অন্তিম সময়ে তিনি প্রত্যাবর্তিত হন। আমি খুব খুশি আর উত্তেজিত ছিলাম। দেখা গেল যে ঈশ্বর ফিরে এসেছেন, এবং তিনিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! সে আমাকে এ-ও বলে, “ত্রিশ বছর আগে ১৯৯১ সালে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আবির্ভূত হন আর কাজ শুরু করেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অনেক সত্য আর অজস্র বাক্য প্রকাশ করেছেন, সবই প্রকাশ্যে ইন্টারনেটে পোস্ট করা হয়েছে। এখন তাঁর কথা পূর্ব থেকে পশ্চিমে, বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যত দিন যাচ্ছে, আরও বেশি মানুষ ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কার্য গ্রহণ করছে। এটা প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে সম্পূর্ণরূপে মিলে যায়, ‘বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মানবপুত্রের আগমন হবে(মথি ২৪:২৭)।” কথাটা শুনে আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। বোঝা গেল যে পূর্বের বজ্রালোক হল ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং তাঁর কাজ। কয়েক বছর আগে, আমি সংবাদপত্রে পড়েছিলাম যে পূর্বের বজ্রালোক প্রভুর ফিরে আসার সাক্ষ্য দিয়েছে। কিন্তু সেই সময়, আমি দেখেছি যে বেশিরভাগ যাজক এবং অগ্রজগণ সেটির নিন্দা করেছিল, এবং বিশ্বাসীদের তাদের প্রচার শুনতে দেয়নি, তাই আমি ভেবেছিলাম এটা সঠিক উপায় নয়, আমি অন্বেষণ ও অনুসন্ধান করিনি, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যও যে পড়িনি, তা বলাই বাহুল্য। আমি কখনও কল্পনা করিনি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই ফিরে আসা প্রভু যীশু, এবং ত্রিশ বছর ধরে আবির্ভূত হয়ে কাজ করে চলেছেন। আমি একটু নার্ভাস ছিলাম, মনে হয়েছিল আমি অনেক পিছিয়ে আছি, তাই আমি আরো ঈশ্বরের বাক্য পড়তে চেয়েছিলাম। কিছু সময়কাল পরে, সমাবেশগুলির মাধ্যমে এবং আমার ভগিনীর সাথে ঈশ্বরের বাক্য আলাপ-আলোচনা করার পর, আমি আরও বুঝতে পারলাম যে কেন ঈশ্বরকে অন্তিম সময়ে কাজ করার জন্য অবতাররূপে আবির্ভূত হতে হবে, কীভাবে ঈশ্বর বিচারকার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে তাঁর বাক্য ব্যবহার করেন, কীভাবে আমাদের শুদ্ধ হতে আর স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে বিচারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, এমন আরও বিষয়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এই সমস্ত রহস্য প্রকাশ করেছেন, আর এত সত্য প্রকাশ করেছেন, যা প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকেই পূর্ণ করে, “সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনিই তখন তোমাদের পূর্ণ সত্যের উপলব্ধি দান করবেন(যোহন ১৬:১৩)। আমি আরও নিশ্চিতভাবে অনুভব করেছি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন প্রভু যীশুর দ্বিতীয় আগমন। তারপর, সে আমাকে ঈশ্বরের বাক্য সংকলিত একটা বই পাঠাল। আমি প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, এবং তাতে আধ্যাত্মিক রসদ খুঁজে পাই।

পরে, আমি প্রায় প্রতিটা সমাবেশে যেতাম। কিন্তু যেহেতু আমি তখনও আমার গির্জার সেবায় অংশগ্রহণ করছিলাম, সমাবেশের সময়ে প্রায়ই অন্য কাজ থাকত। আমি ভাবলাম, “আমি কি নিজের গির্জা ছেড়ে চলে যাব?” কিন্তু আমি আঠারো বছর ধরে একজন অগ্রজ ছিলাম। প্রতিটা মেয়াদ ছিল চার বছরের, আর আমার বর্তমান মেয়াদ শেষ হতে তখনও এক বছরের বেশি বাকি ছিল। আমি যদি আমার মেয়াদের মাঝখানে গির্জা ছেড়ে চলে যাই, তাহলে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমার সম্পর্কে কী ভাববে? তারা কি মনে করবে যে আমি খুব সহজেই ছেড়ে গেলাম, এবং প্রভুর প্রতি আমার আনুগত্য নেই? কিন্তু তারপর ভাবলাম, প্রভু তো ফিরে এসেছেন, তাহলে আমার কি ধর্মে থাকা উচিত হবে? খুব ভালো করেই জানতাম যে যাজকরা প্রচারবেদী থেকে যা বলেছিল তা আর বিশ্বাসীদের রসদ যোগান দিতে পারছিল না। তারা প্রভু যীশুর অলৌকিক সংঘটনসমূহের বিষয়ে বারবার বলত, আর তারা প্রায়শই প্রভুকে অনুকরণ করা, নিজের প্রতিবেশীকে নিজের মতই ভালোবাসা, ধৈর্যশীল হওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করত। দশকের পর দশক ধরে, যাজকরা এই পুরনো, জরাজীর্ণ মতবাদের কথা প্রচার করে আসছে। সেগুলো বাসি আর নীরস ছিল, এবং আমি ভ্রাতা ভগিনীদের রসদ যোগানও দিতে পারছিলাম না। আমি খুব ভালো করেই জানতাম যে ধর্মীয় জগত এমনিতেই জনশূন্য। সেই সময় আমি খুব দ্বন্দ্বে ছিলাম, তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, “ঈশ্বর, আমি গির্জা ছেড়ে যেতে চাই, কিন্তু আমার এখনও চিন্তা হচ্ছে যে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমাকে নিয়ে নানা পরচর্চা করবে। ঈশ্বর, আমি কী করব? দয়া করে আমাকে পথ দেখান।” প্রার্থনা করার সময় বাইবেল কী বলে তা ভাবছিলাম, “প্রত্যক্ষ করো, সেই দিন আসছে, যেদিন আমি পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ প্রেরণ করবো, রুটির দুর্ভিক্ষ নয়, তৃষ্ণার জলের দুর্ভিক্ষও নয়, বরং যিহোবার বাণী শোনার দুর্ভিক্ষ(আমোস ৮:১১)। “ফসল পাকার তিন মাস আগে আমি তোমাদের দেশে বৃষ্টি রোধ করলাম, এক নগরে অতিবর্ষণ, অন্য নগরে অনাবৃষ্টি দিলাম, কত ক্ষেত হল প্লাবিত, কোনটি বাখরায় গেল শুকিয়ে(আমোস ৪:৭)। আমি ইসরায়েলের সাত বছরের দুর্ভিক্ষের কথা ভাবছিলাম, যখন খাবার ছিল না, আর যোষেফের ভাইয়েরা সবাই মিশরে গিয়ে তার কাছে খাবার চাইল। তখন সমস্ত ধর্মীয় বিশ্ব দুর্ভিক্ষে ভুগছিল, এবং পবিত্র আত্মার কাজের অভাব ছিল সেখানে, কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জায় আমি ঈশ্বরের বর্তমান বাক্যগুলিই ভোজন ও পান করেছিলাম, এবং প্রকৃত আলোর সন্ধান পেয়েছিলাম, আমি অবশ্যই পবিত্র আত্মার মার্গদর্শন লাভ করি। তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে, পবিত্র আত্মার কার্য দ্বারা আমি বহিষ্কৃত হব। এখন, আমি খুঁজে পেয়েছি সেই গির্জা যাতে রয়েছে পবিত্র আত্মার কাজ, ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনেছি, এবং প্রভুকে স্বাগতও জানিয়েছি, তাই ধর্মের জনশূন্যতায় আর আমার থাকা উচিত নয়। এরপর, যতক্ষণ না গির্জা আমার কাজ ব্যবস্থা করত, ততক্ষণ সেখানে যেতাম না, কিন্তু আমি একজন অগ্রজ ছিলাম বলে মাঝে মাঝে উপাসনা করতে যেতাম।

দেড় বছর পর, একদিন আমি ইন্টারনেটে একটা মঞ্চনাটক দেখলাম, নাম—বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। গল্পটা আমাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। নায়ক, লি মিংঝি শহরের সরকারি কর্মী ছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরেরর অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করার পর, সে কিছু সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছিল। সে সিসিপি-তে তার চাকরির সময়কালের কথা, এবং কীভাবে সে মন্দ কর্ম সংঘটনে সেটির অনুসরণ করত, তা নিয়ে ভাবতে থাকে। সে বুঝতে পারে যে সে ধ্বংসের পথে হাঁটছে আর স্পষ্টই দেখেছে যে শুধুমাত্র খ্রীষ্টকে অনুসরণ করে, এবং ঈশ্বরের জন্য নিজেকে ব্যয় করার মাধ্যমে, সে সত্যময় জীবন লাভ করতে পারে। সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল, বলল যে সে তার চাকরি ছেড়ে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সঁপে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্ত্রী জানতে পেরে এর তীব্র বিরোধিতা করল, তারপর তার পরিবার তাকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা বন্ধ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল। গোটা পরিবারের বাধা সত্ত্বেও সে আপোষ করেনি, সে তার পরিবারের সাথে তর্ক করে, আর শেষ পর্যন্ত, দৃঢ় থেকে তার চাকরি ছেড়ে ঈশ্বরকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর নিজের কথা ভেবে দেখলাম। আমি যদি ধর্মেই পড়ে থাকি আর পূর্ণ হৃদয়ে ঈশ্বরকে অনুসরণ না করি, তবে আমি কখনই সত্য লাভ করতে পারব না, এবং হব ঈশ্বর দ্বারা বহিষ্কৃত। এছাড়াও, সত্যের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, ঈশ্বরের প্রতি ধর্মীয় জগতের প্রতিরোধের সত্য ঘটনা আমি আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পেলাম। আমি জানতাম যে সেটাই ছিল আমার ধর্ম পরিত্যাগ করার সময়।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করার পরে, আমার মনে পড়ল, কয়েক বছর আগে, ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ তাইওয়ানে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই সময়, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সংবাদপত্রে প্রকাশিত হত, কিন্তু তাইওয়ানের ধর্মীয় বৃত্তগুলোর তরফ থেকে যৌথভাবে পূর্বের আলোকে বয়কট করার কথা ঘোষণা করা হয়, সেই বিবৃতিতে অনেক যাজক সই করে। সেই যাজকরা অনেক আগে থেকেই জানত যে প্রভু ফিরে এসেছেন, কিন্তু তারা অন্বেষণ বা অনুসন্ধান করেনি, তাদের বিশ্বাসীদেরকে প্রভুর ফিরে আসার খবরও জানায়নি। তারা ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করতে আর তাইওয়ানে ঈশ্বরের রাজ্যমূলক সুসমাচারের প্রসার প্রতিরোধ করতে একত্রিত হয়েছিল। এটা আমাকে দুই হাজার বছর আগের প্রধান পুরোহিত, শাস্ত্রবিদ আর ফরিশীদের কথা মনে করিয়ে দিল। তারা স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিল যে প্রভু যীশুর বাক্য এবং কার্যের মধ্যে কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তারা স্বীকার করেনি যে প্রভু যীশুই মশীহ। কারণ তারা চিন্তিত ছিল যে সমস্ত বিশ্বাসীরাই প্রভু যীশুকে অনুসরণ করবে, আর তারা তাদের পদমর্যাদা এবং আয় হারাবে। কাজেই তারা মিথ্যা রায় দিয়েছিল আর প্রভু যীশুর নিন্দা করেছিল। আজকের ধর্মীয় জগতেও তাই হচ্ছে। পাদ্রীরা ভয় পায় যে যদি সবাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করে আর গির্জায় না যায়, কেউ অনুদান দেবে না, আর তারা বেতন পাবে না, তাই তাদের মর্যাদা এবং আয় বজায় রাখতে, তারা সম্মিলিতভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কার্যের নিন্দা এবং প্রতিরোধ করেছিল। এটা আমাকে প্রভু যীশু ফরিশীদের অভিশাপ দেওয়ার সময় কী বলেছিলেন তা মনে করিয়ে দেয়, “ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না। … ভণ্ড শাস্ত্রবিদ ও ফরিশীর দল। ধিক তোমাদের! একটি লোককে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও, আর কাউকে যদি তা করতে পার তাহলে তোমরা তাকে নিজেদের চেয়েও বড় পাষণ্ড করে তোল(মথি ২৩:১৩-১৫)। ধর্মের এইসব যাজক স্পষ্টতই জানে যে প্রভু ফিরে এসেছেন আর অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তারা অনুসন্ধান করে না, এবং অন্যদের ঈশ্বরের নতুন কার্য অনুসন্ধানে প্রবঞ্চিত ও সীমাবদ্ধ করে, এবং বিশ্বাসীদের প্রভুকে স্বাগত জানানো থেকে বিরত করে। এই ধর্মীয় নেতারা এতটাই বিদ্বেষী! তারা এমন লোক নয় যারা প্রকৃতপক্ষেই প্রভুকে অনুসরণ করে, তারা হল বর্তমান সময়ের ফরিশী।

এক সমাবেশে, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের এই বাক্যগুলো পড়লাম, “অনেকেই আছে যারা বিরাট গির্জাগুলিতে বাইবেল পড়ে এবং সারাদিন ধরে সেটি আবৃত্তি করে, তবুও তাদের কেউই ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের মধ্যে কেউই ঈশ্বরকে জানতে সক্ষম নয়, আর তাদের মধ্যে কারোর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তো আরোই কম। তারা সকলে অপদার্থ, জঘন্য মানুষ, প্রত্যেকেই ঈশ্বরকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উচ্চে দণ্ডায়মান। ঈশ্বরের ধ্বজা বহন করাকালীনও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস দাবি করেও তারা মানুষের মাংস ভক্ষণ ও রক্ত পান করে। এই ধরনের মানুষেরা হল মানুষের আত্মা-গ্রাসকারী শয়তান, সঠিক পথে পা-রাখতে চাওয়া মানুষদের ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধাদানকারী প্রধান অপদেবতা, এবং তারা হল ঈশ্বর-অন্বেষণকারীদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বাধাস্বরূপ। তাদের দেখে ‘ভালো অবস্থার’ মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা মানুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী করে তোলা খ্রীষ্টবিরোধী ছাড়া আর কেউ নয়? তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা জীবন্ত শয়তান যারা মানুষের আত্মা গ্রাস করার জন্যই নিবেদিত?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা ঈশ্বরকে জানে না তারা সকলেই ঈশ্বরবিরোধী)। যখন ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে আমি ভাবছিলাম, তখন বুঝতে পারলাম যে ধর্মীয় জগতের যাজকদের ঈশ্বরের কাছে ভ্রাতা ও ভগিনীদের দেওয়া অর্ঘ থেকে টাকা দেওয়া হয়, তবুও তারা মানুষকে ঈশ্বরের দিকে ফিরে যেতে বাধা দেয়, এবং এর ফলে তারা মানুষের প্রভুকে স্বাগত জানানোর আর স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশের সুযোগ নষ্ট করে। তারা নিছকই মানুষের আত্মাগ্রাসকারী শয়তান ছাড়া আর কী? আমি এ-ও ভেবেছিলাম যে, মহামারীর কারণে, গির্জা সব সেবা বন্ধ রেখেছে। এক সমাবেশে, যাজকরা আলোচনা করছিল যে ভ্রাতা ও ভগিনীদের কৃষিজাত পণ্য আমাদের কমিটির অফিসের বাইরে বিক্রি করতে হবে যাতে বিশ্বাসীদের আয় বাড়ে। এইভাবে, ভ্রাতা ও ভগিনীরা তাদের আয়ের এক দশমাংশ দান করা চালিয়ে যেতে পারবে। এই কথা শুনে আমি খুব রেগে গিয়ে তীব্র আপত্তি জানালাম। বললাম, “যাজক হিসাবে, তোমাদের মানুষের জীবনের যত্ন নেওয়া উচিত। তা না করে শুধু টাকা নিয়ে ভাবছ কি করে?” সাধারণ সচিব আমাকে বলল, “যখন গির্জা সমাবেশ স্থগিত করে, তখন ভ্রাতা ও ভগিনীদের কাছ থেকে আসা অনুদান কমে যায়, তাই গির্জার আয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।” আমি দেখলাম যে যাজকরা শুধু নিজেদের বেতন ও আয়ের কথাই ভাবছে, ভ্রাতা-ভগিনীদর সিঞ্চন এবং তাদের বিশ্বাসকে দৃঢ়তর করার কথা ভাবছে না। এই হল সেই ভণ্ড ফরিশীরা, যাদের কথা প্রভু যীশু বলেছিলেন। ঈশ্বরের কাছে ভ্রাতা ও ভগিনীদের দেওয়া অনুদানের প্রতিই তাদের লোভ ছিল। তারা তাদের বিশ্বাসীদের জীবনের কথা ভাবেনি, তারা প্রভুকে স্বাগত জানানোর পথেও মানুষকে বাধা দিয়েছিল, আর তারা তাদের বিশ্বাসীদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিল। আমি যাজকদের প্রকৃত স্বরূপ আরও স্পষ্ট করে দেখেছিলাম। এই ধর্মীয় যাজকরা আসলে এমন খ্রীষ্টবিরোধী ছিল যারা শুধু ঈশ্বরকে অস্বীকার আর প্রতিরোধ করে। অনেক বছর ধরে প্রভুতে বিশ্বাস করার পর, অবশেষে আমি তাদের বুঝতে পেরেছিলাম। অবশেষে জেগে উঠেছিলাম। আমি ঈশ্বরকে তাঁর করুণার জন্য, আমাকে তাঁর কণ্ঠস্বর শোনার এবং অন্তিম সময়ে তাঁর কাজ গ্রহণ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য, ধন্যবাদ জানাই। নাহলে আমি যাজকদের মন্দ কর্ম সংঘটন এবং ঈশ্বর-বিরোধিতায় অনুসরণ করতাম, এবং আমার পরিত্রাণের সুযোগ হারাতাম।

পরে, একটা ভিডিওতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের পাঠ দেখলাম। “ধর্মে বিশ্বাস এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস কী, এই মুহূর্তে তোমরা কি সেটা সত্যিই উপলব্ধি করো? ধর্মে বিশ্বাস করা আর ঈশ্বরে বিশ্বাস করার মধ্যে কি কোনো পার্থক্য আছে? সেই পার্থক্যটা কোথায়? তোমরা কি এই প্রশ্নগুলোর সমাধানের বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেছ? ধর্মে বিশ্বাসী লোকজন সাধারণত কেমন হয়? তাদের লক্ষ্য কী হয়? ধর্মে বিশ্বাস থাকাকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়? যখন লোকেরা ধর্মে বিশ্বাস করে, তখন তারা স্বীকার করে যে ঈশ্বর বলে একজন আছেন, আর তারা নিজেদের আচরণে নির্দিষ্ট কিছু পরিবর্তন করে: তারা লোকজনকে আঘাত বা গালমন্দ করে না, লোকেদের ক্ষতি করার মতো খারাপ কাজ করে না, বিভিন্ন অপরাধ বা আইন ভঙ্গ করা থেকে বিরত থাকে। রবিবারে, তারা সমবেত সভায় যায়। ধর্মবিশ্বাসী লোক এমনই হয়। সদাচারণ করা এবং সমবেত সভায় প্রায়শই উপস্থিত থাকা, এ-ই তাহলে প্রমাণ করে কেউ ধর্ম বিশ্বাসী কি না। যখন কেউ ধর্মে বিশ্বাস করে, তখন সে ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করে এবং সে ভাবে যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করাই ভালো মানুষের পরিচায়ক; যতক্ষণ না সে কোনো পাপ বা মন্দ কর্ম করছে, মৃত্যুর পরে তার স্বর্গলাভ হবে, সে সু-পরিণাম লাভ করবে। তার বিশ্বাসই তাকে আধ্যাত্মিক পরিপোষণ প্রদান করে। সেভাবে দেখলে, ধর্মে বিশ্বাস করাকে নিম্নলিখিতভাবেও সংজ্ঞায়িত করা যায়: ধর্মে বিশ্বাস করার অর্থ হচ্ছে, তোমার অন্তরে স্বীকার করা যে, ঈশ্বর বলে কেউ আছেন, এর অর্থ হচ্ছে হৃদয়ে আবেগের একটা অবলম্বন থাকা, পাশাপাশি, তোমার কিছু আচরণ পরিবর্তন-ও করা—ভালো হওয়া, এর থেকে বেশি কিছু না। যেহেতু তারা যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তাঁর অস্তিত্ব আছে কি না, সেই ঈশ্বর সত্য প্রকাশ করতে পারেন কি না, সেই ঈশ্বর তাদের থেকে কী আকাঙ্ক্ষা করেন—এই বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই, সেহেতু তারা এই সমস্ত কিছু বাইবেলের তত্ত্বের ভিত্তিতে কল্পনা করে। এ-ই হল ধর্মে বিশ্বাস। ধর্মে বিশ্বাস হল মূলত আচরণগত পরিবর্তন এবং আধ্যাত্মিক পরিপোষণের অন্বেষণ। কিন্তু এই লোকেরা যে পথে চলে—আশীর্বাদ অন্বেষণের পথ—তা পরিবর্তিত হয়নি। তাদের ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি, ধারণা এবং ঈশ্বরবিশ্বাস সংক্রান্ত কল্পনায় কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাদের অস্তিত্বের ভিত্তি, জীবনের লক্ষ্য এবং অন্বেষণের অভিমুখ প্রথাগত সংস্কৃতি ও মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে, সেগুলো কিছুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। যারা ধর্মে বিশ্বাস করে, তাদের অবস্থা এই রকমই। তাহলে ঈশ্বরে বিশ্বাস বলতে কী বোঝায়? ঈশ্বরে বিশ্বাস সম্পর্কে ঈশ্বর কী সংজ্ঞা দিয়েছেন? (ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বে আস্থা রাখা।) তা হল, ঈশ্বরের অস্তিত্বে, তাঁর সার্বভৌমত্বে আস্থাবান হওয়া—এগুলোই মৌলিকতম। ঈশ্বরের বিশ্বাস হল ঈশ্বরের বাক্য শোনা, অস্তিত্ব বজায় রাখা, জীবনযাপন করা ও দায়িত্ব পালন করা, এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে স্বাভাবিক মানবকতার সকল ক্রিয়াকলাপের সাথে জড়িত থাকা। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হল, ঈশ্বরে বিশ্বাস করা বলতে বোঝায় ঈশ্বরকে অনুসরণ করা, তিনি যা বলেন তা পালন করা, তাঁর নির্দেশমাফিক জীবনযাপন করা; ঈশ্বরে বিশ্বাস করা হল ঈশ্বরের পথ অনুসরণ করা। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তাদের জীবনের লক্ষ্য এবং অভিমুখ কি ধর্মবিশ্বাসী লোকেদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা নয়? ঈশ্বরে বিশ্বাস কীসের সাথে সম্পর্কিত? তা সম্পর্কিত মানুষ ঈশ্বরের বাক্য শুনতে, সত্য গ্রহণ করতে, ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্ত হতে, ঈশ্বরকে অনুসরণের জন্য সমস্ত কিছু ত্যাগ করতে, এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনে বিশ্বস্ত হতে সক্ষম কিনা—এগুলির সাথে। তাদের উদ্ধার করা যাবে কি না, তার সাথে এগুলির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। …ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসও তাঁর বাক্য এবং তাঁর চাহিদা অনুসারেই করা উচিত, ঈশ্বর কী চান সেই অনুযায়ীই মানুষের অনুশীলন করা উচিত; কেবল এ-ই হল ঈশ্বরের প্রতি প্রকৃত বিশ্বাস—একেই বলে বিষয়ের মূলে যাওয়া। সত্যের অনুশীলন, ঈশ্বরের বাক্য অনুসরণ এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে জীবনযাপন: এ-ই হল মানবজীবনের সঠিক পথ; ঈশ্বরে বিশ্বাস মানবজীবনের পথের সাথে সম্পর্কিত। ঈশ্বরে বিশ্বাস প্রভূত সত্যের সাথে সম্পর্কিত, এবং ঈশ্বরের অনুগামীদের অবশ্যই এই সত্যসকল উপলব্ধি করতে হবে; তারা যদি সেগুলি উপলব্ধি এবং গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে ঈশ্বরকে অনুসরণ করবে কীভাবে? যে মানুষজন ধর্মে বিশ্বাস করে, তারা শুধুমাত্র এটুকুই স্বীকার করে যে, ঈশ্বর বলে একজন আছেন, এবং তারা ভরসা রাখে, যে, একজন ঈশ্বর রয়েছেন—কিন্তু তারা সত্য উপলব্ধি করে না, সেগুলিকে গ্রহণও করে না, এবং সেহেতু, যারা ধর্মে বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের অনুগামী নয়(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, ধর্মের প্রতি বিশ্বাস অথবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ভিত্তিতে উদ্ধারলাভ সম্ভব নয়)। ঈশ্বরের বাক্য কত সত্য! আমি ভাবতাম যে আমি ধর্মের মধ্যে রয়েছি, পবিত্র আত্মার কার্য বিহনে এবং ঈশ্বরের বর্তমান বাক্য না শুনেই। আমি শুধু ধর্মীয় নিয়ম আর আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলতে পারতাম, বাহ্যিকভাবে কিছু সৎকর্ম করতে পারতাম। যখন কোনো ভ্রাতা ও ভগিনীকে নেতিবাচক দেখতাম, তখন তাদের সাহায্য করতাম। আমি প্রায়ই তাদের উপর হাত রাখতাম, প্রার্থনা করতাম এবং সক্রিয়ভাবে সেবাব্রততে অংশ নিতাম, ভেবেছিলাম এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তবে ঈশ্বরের বাক্য পড়ার পর তবেই কেবল জানতে পারলাম যে আমি ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে থেকেছি, ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনি। সেগুলো ছিল নিছকই বাহ্যিক সৎকার্যসমূহ, ঈশ্বরের বাক্য পালন করা এবং ঈশ্বরকে মান্য করা নয়, আর এতে আমার স্বভাব বদলাতো না। আমরা যে কঠোর কাজ আর পরিশ্রম করছিলাম বলে মনে করতাম, তা ছিল নিজেদেরই অলীক কল্পনামাত্র, ছিল না ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। আমার আরও মনে আছে যে আমি প্রায়ই আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের বলতাম, প্রভুকে অনুসরণ এবং প্রভুর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে। যখন তারা স্বর্গে প্রবেশ করবে, তখন তারা পাঁচ বা দশটা শহর পরিচালনা করবে। এখন, ঈশ্বরের বাক্য পড়ার পর, বুঝলাম যে আমার প্রচার ছিল অযৌক্তিক আর অবাস্তব। আমরা কেউই ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের বিচারের অভিজ্ঞতা লাভ করিনি, আমাদের ভ্রষ্ট স্বভাব শুদ্ধ হয়নি, আর আমরা আদৌ ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশের যোগ্য ছিলাম না। বাহ্যিকভাবে সৎকর্ম করা ঈশ্বরবিশ্বাসের জন্য যথেষ্ট নয়। মূল বিষয় হল ঈশ্বরের কার্য এবং বাক্যগুলি অনুভব করা, স্বভাবের পরিবর্তন অর্জন করা, ঈশ্বরকে মান্য করা তাঁর উপাসনা করা। এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। আমি দেখেছি যে আগে, ধর্মে প্রভুর প্রতি আমার বিশ্বাস আসলে বিভ্রান্তিকর ছিল, সেটা ঈশ্বরের কাছে প্রশংসনীয় ছিল না। আমি যদি ঈশ্বরে বিশ্বাস করে শুধু ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিতে থাকি, তবে আমি কখনই সত্য অর্জন করতাম না। কিন্তু তারপর ভাবলাম, একজন অগ্রজ হিসাবে আমার কাজ ছিল, তাই আমাকে তখনও গির্জায় যেতেই হত। যদি গির্জা ছেড়ে চলে যেতাম, তবে আমাকে অবশ্যই বহিষ্কার এবং তুচ্ছ করা হত, অন্যরা আমাকে অসম্মান করত, ভাবত যে আমি প্রভুর প্রতি অশ্রদ্ধাপূর্ণ ছিলাম। এই কথাটা ভাবতেই দ্বিধায় পড়ে গেলাম। আমি তাদেরকে একথা বলার বিষয়েও ভেবেছিলাম যে আমি প্রভুকে স্বাগত জানিয়েছি আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছি, কিন্তু আমি জানতাম যে, যেই মুহূর্তে এটা বলব যাজকরা আর অন্যান্য সহকর্মীরা আমাকেই পীড়ন ও প্রতিহত কর। আমি মনের মধ্যে দোলাচলে রইলাম। আমি জানতাম যে তাড়াতাড়ি ধর্ম পরিত্যাগ করব, কিন্তু কীভাবে তাদের কাছে পদত্যাগের কথা বলব, তা বুঝতে পারছিলাম না। আমি প্রায়ই এই বিষয়ে ঈশ্বরের কাছে একটা উপায় পাওয়ার প্রার্থনা করতাম।

পরে, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটা অনুচ্ছেদ পড়লাম, “যে সব মানুষ তাঁর আবির্ভাব কামনা করে, তাঁর বাক্য অনুধাবন করতে সক্ষম, যারা তাঁর অর্পিত দায়িত্ব ভোলে নি এবং নিজেদের হৃদয় ও শরীর সর্বতোভাবে নিবেদন করে, সেই সব মানুষকেই ঈশ্বর চান। যারা তাঁর কাছে শিশুর মত বাধ্য এবং কোনোভাবেই তাঁর বিরোধিতা করে না, তিনি সেই সব মানুষেরই অনুসন্ধান করেন। ঈশ্বরের আনুকূল্য এবং করুণা তোমার উপর তখনই বর্ষিত হবে যদি তুমি ঈশ্বরে নিবেদিত প্রাণ হও এবং অন্য সব প্রভাব থেকে মুক্ত থাকো। উচ্চ পদাধিকার, সম্মান, বিপুল জ্ঞান, অপার ঐশ্বর্য বা বহু মানুষের সমর্থনের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তা যদি তোমাকে ঈশ্বরের আহ্বান শুনতে ও তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে ব্যাহত না করে এবং তাঁর আজ্ঞাপালনে তুমি বিরত না হও, তাহলে তুমি যা করবে সেই সমস্ত কিছুই এই পৃথিবীর জন্য সব থেকে অর্থবহ এবং মানবজাতির সব থেকে ধার্মিক কাজ হিসাবে চিহ্নিত হবে। তোমার স্বাভিমান এবং লক্ষ্যের কারণে যদি তুমি ঈশ্বরের ডাক প্রত্যাখ্যান করো, তাহলে তুমি যে কাজই করো না কেন তা অভিশপ্ত হবে এবং ঈশ্বরের কাছে তুচ্ছ বলে বিবেচিত হবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিশিষ্ট ২: ঈশ্বর সমগ্র মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারক)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ে বুঝতে পারলাম যে আমি গির্জা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে বেশ কয়েকবার দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছিলাম কারণ অগ্রজ হিসেবে আমার পদ ছাড়তে পারিনি। আমার পদমর্যাদার জন্য, আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমার মুখাপেক্ষী থাকত আর আমাকে সম্মান দিত। তারা আমার সাথে অন্যরকম আচরণ করত, আর যখনই কোনো সুবিধা পেত, তখনই তারা আমার কথা চিন্তা করত। আমি চিন্তিত ছিলাম যে গির্জা ছেড়ে যাওয়ার সময় এসব হারাবো। আমি পদমর্যাদা আর পদমর্যাদার সুবিধাগুলি কামনা করতাম। তা সঠিক পথ ছিল না, এবং তা ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করেছিল। আমি স্পষ্ট বুঝেছিলাম যে আমাকে পদমর্যাদার শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। এসব না বদলালে আমি ঈশ্বরকে প্রতিরোধের পথে হাঁটব। এমন পরিণতি আমি চাইনি। আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের থেকে পাওয়া উচ্চ মর্যাদা নিয়ে আমি আর চিন্তিত ছিলাম না। অন্যরা আমাকে নিয়ে বিরাট কিছু ভাবে কিনা, তা আমার কাছে আর তেমন কোনো ব্যাপার ছিল না। আমি ঈশ্বরের অনুমোদন পেতে পারি কিনা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাকে ঈশ্বরের প্রতি অনুগত হতে হত, পদমর্যাদার প্রতি নয়। এটা বোঝামাত্র, আমার গির্জা পরিত্যাগের সংকল্প দৃঢ়তর হয়েছিল।

একদিন, আমি যথারীতি গির্জায় গেলাম, এবং রবিবারের সেবার পর, আমি সবাইকে বলেছিলাম যে অগ্রজ হিসেবে আমার কাজ ছেড়ে দিচ্ছি। এই কথা শুনে সবাই আশ্চর্য হয়ে গেল, আর সবাই আমাকে থাকার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করল। এর পর কয়েকজন যাজক আমাকে ডাকল, বলল যে অগ্রজ হওয়া মানে ঈশ্বরের সাথে একরকমের চুক্তি হওয়া যা ভাঙা যাবে না। আমি ভাবলাম, “প্রভু ফিরে এসেছেন, অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন এবং নতুন কাজ করেছেন। আমাকে কি প্রভুকে স্বাগত না জানিয়ে এখনও এই চুক্তি পালন করে যেতে হবে?” আমার মনে আছে প্রধান যাজক, শাস্ত্রবিদ আর ফরিশীরা কীভাবে সারা বছর মন্দিরে ঈশ্বরের সেবা করত, কিন্তু প্রভু যীশু যখন কাজ করতে এলেন, তখন তারা প্রভু যীশুর নিন্দা করেছিল, তাঁকে প্রতিরোধ এবং ক্রুশবিদ্ধ করেছিল। এটাই কি ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য? তারা আদৌ ঈশ্বরের অনুগত ছিল না। তারা ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করেছিল। আজ প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন এবং নতুন বাক্য প্রকাশ করেছেন। আমি যদি এই তথাকথিত “চুক্তি” বজায় রেখে গির্জাতেই রয়ে যাই, এবং ঈশ্বরের বর্তমান বাক্য এবং কার্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারি, তাহলে আমি ঈশ্বরের প্রতি অনুগত নই! আমি ভাবছিলাম প্রভু যীশু যা বলেছিলেন, “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে(যোহন ১০:২৭)। ঈশ্বরের মেষদের উচিত ঈশ্বরের বাক্য শোনা এবং নির্দ্বিধায় তাঁর অনুসরণ করা উচিত। তাই, যাজকরা আমাকে যেভাবেই বোঝানোর চেষ্টা করুক না কেন, আমার সঙ্কল্প টলেনি। আমি ঈশ্বরের কাছে খুব কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে ধর্ম থেকে বেরিয়ে আসার পথনির্দেশনা করেছেন, আমাকে ঈশ্বরের ব্যবহারিক বাক্য ভোজন ও পান করতে দিচ্ছেন, এবং আমাকে পবিত্র আত্মার কার্য প্রদান করেছেন, এর ফলে এক অভূতপূর্ব স্বাচ্ছন্দ্য এবং মুক্তি অনুভব করি। আমার অগ্রজ হিসাবে পদমর্যাদা চলে যাওয়ার পর, আমি আর প্রচারবেদী থেকে মতবাদের নীরস আর ফাঁপা বুলি আওড়াই না। তার পরিবর্তে, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে নিজেকে সুপ্রস্তুত করে তোলায় মনোযোগী হলাম, এবং প্রতিটা দিন খুব সন্তোষজনক ও আনন্দময় মনে হয়।

কিছুদিনের মধ্যেই, কথাটা ছড়িয়ে পড়ল যে আমি গির্জা ছেড়েছি। দুই মাস পরে জানতে পারলাম যে একজন ভগিনী অনলাইনে একটা গ্রুপে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা থেকে একটা ভিডিও পোস্ট করেছিল, তাই যাজকরা গির্জা তালাবন্ধ করতে শুরু করল এবং একটা বার্তা প্রকাশ করল যে, একজন গির্জা ছেড়ে যাওয়ার কারণে, গির্জা পূর্বের বজ্রালোকের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করছে। আমি এই খবর শুনে কষ্ট পেলাম, আর যাজকদের জন্য দুঃখ হল, কিন্তু আমি আগের থেকেও বেশি নিশ্চিত হলাম যে ধর্মীয় জগতের বেশিরভাগ যাজক সত্য পছন্দ করে না। তাদের প্রকৃতিই এমন যে তারা সত্যকে তিরস্কার আর ঘৃণা করে। তারা ভাবে যে তারা বাইবেল এবং ঈশ্বরকে জানে, কিন্তু আসলে তারা এমন অন্ধ যারা অন্ধদের খাদের কিনারে দিকে নিয়ে চলেছে। এখনও ঈশ্বরের অনেক মেষ প্রভুর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত না জানিয়ে বাইরে বিচরণ করছে। আমাকে তাদের কাছে রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে হত, আমার দায়িত্ব পালন করতে আর ঈশ্বরের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হত। তাই, আমি ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের সুসমাচার প্রচার করতে শুরু করলাম, এবং দেখলাম যে, যারা যথার্থভাবেই ঈশ্বরবিশ্বাসী, তারা একের পর এক ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসছে, এটা দেখে আমি খুব খুশি আর উত্তেজিত হই। মনে হয় যেন প্রতিটা দিন পরিপূর্ণ আর অর্থবহুল। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমাকে ধর্ম পরিত্যাগের পথপ্রদর্শন করার জন্য, আমাকে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে, ঈশ্বরের অন্তিম সময়ে কার্যের অভিজ্ঞতা লাভ করতে দেওয়ার জন্য। এই জন্য, নিজেকে সত্যিই ধন্য মনে করি।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

প্রকৃত খ্রীষ্ট এবং ভন্ড খ্রীষ্টর মধ্যে আমি পার্থক্য করতে পারি

“ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই...

আমি জীবনের সজীব জল উপভোগ করেছি

প্রভুর প্রতি আমার পরিবারের বিশ্বাস তিন প্রজন্মের। ছোটোবেলায় আমি আমার পরিবারের সাথে গির্জায় যাওয়া শুরু করেছিলাম। আমি যখন বড়ো হলাম, তখন...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন