সুসমাচার প্রচারের এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা
যে অভিজ্ঞতাটি আমার মনে গভীরতম ছাপ রেখেছে তা ঘটে ২০২১ সালের এপ্রিলে। অনলাইনে ক্যাথলিক ব্রাদার রাফায়েলের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার কাছে সুসমাচার প্রচারের সময়, দেখেছিলাম তার ক্ষমতা খারাপ ছিল না এবং সে দ্রুত সত্য বুঝেছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ে সে তা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বলে অনুভব করে। সে অন্বেষণ ও অনুসন্ধানে ইচ্ছুক ছিল, সমাবেশে সক্রিয় অংশ নিত।
আমাকে অবাক করে, একদিন এক সিস্টার আমাকে বার্তা পাঠাল, রাফায়েল তাদের পুরনো ক্যাথলিক যাজকের কাছে চলে গেছে, সে আর সমাবেশে আসছে না। শুনে হতবাক হয়ে গেলাম। তাকে অবশ্যই অনেক ভুল ধারণা বোঝানো হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, এবং জানলাম যে আমরা যা বলছি তাতে সে বিভ্রান্ত হয়েছে, কিন্তু কী বিষয়ে বিভ্রান্ত ছিল তা বলল না। জানতাম না তার সঙ্গে কীভাবে আলোচনা করা উচিত, মাথায় কিছু এলো না, জানতাম না কী করব। ঈশ্বরকে ডাকতে থাকলাম, তাকে পথ দেখানোর জন্য যেন সে ঈশ্বরের মেষ হয়, বলি তার সঙ্গে আলোচনায় যথাসাধ্য করব। পরে সিস্টার অনিলা এবং আমি রাফায়েলকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানাই। সে এসেছিল উত্তেজিত হয়ে, এক গুচ্ছ ধর্মীয় মতবাদ আওড়াতে আওড়াতে, বলছিল প্রভু যীশুর প্রতি তাঁর ভক্তির কথা, তাঁর বিশ্বাসের দৃঢ়তার কথা, এবং কীভাবে ঈশ্বরের অবতারের পক্ষে নারী হওয়া অসম্ভব সে কথা। অনুভব করেছিল যেহেতু প্রভু যীশু পুরুষরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং স্বর্গের ঈশ্বরকে “পিতা” বলেছিলেন, এবং যেহেতু ধর্মীয় জগতের লোকেরা স্বর্গের ঈশ্বরকে “পিতা ঈশ্বর” বলে ডাকে, প্রভুর পুরুষরূপে ফিরে আসা উচিত, তাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নারীরূপে আবির্ভূত হয়ে কাজ করাটা তার কাছে অগ্রহণযোগ্য। তার ভাষার উগ্রতা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম বুঝতে পারছিলাম না কোথা থেকে শুরু করব। সেই মুহুর্তে, হঠাৎ মনে পরল সুসমাচার ছবি ভক্তির রহস্য: দ্বিতীয় ভাগ-এর কথা, এই ছায়াছবিতে আলোচনা করা সত্য সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে। তড়িঘড়ি বললাম, “ব্রাদার, আমি বিশ্বাস করি প্রভু যীশুতে আপনার বিশ্বাস সত্যিই দৃঢ়, কিন্তু আসুন এক মুহুর্তের জন্য ভাবি: আমরা প্রায়ই প্রভু যীশুর কাছে প্রার্থনা করি, কিন্তু আমরা কি সত্যিই তাঁকে চিনি? আমরা কি সত্যিই জানি যে প্রভু যীশু স্বয়ং ঈশ্বরের অবতার? আমরা কি সত্যিই জানি যে তিনিই সত্য, পথ এবং জীবন? সাহস করে কি বলতে পারি, প্রভু যীশুর ঐশ্বরিক সারসত্য জানি? নিশ্চয়তা কি দিতে পারি, যে প্রভু যীশু ফিরে এলে, সত্যিই তাঁকে চিনতে পারব? ঠিক কেন আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি? তা কি তাঁর জাত-কুল বা চেহারার জন্য?” এর উত্তরে রাফায়েল কিছু বলেনি। তারপর তাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কিছু বাক্য পড়ে শোনাই। “মানুষের ঈশ্বরবিশ্বাসের সারমর্ম হল ঈশ্বরের আত্মার প্রতি বিশ্বাস, এবং এমনকি তাদের ঈশ্বরের অবতারের প্রতি বিশ্বাসেরও কারণ হল যে, ঈশ্বরের এই মানবদেহ আদতে ঈশ্বরের আত্মারই দেহরূপ, অর্থাৎ, এই ধরনের বিশ্বাসও আত্মার উপরই বিশ্বাস। আত্মা এবং দেহরূপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু যেহেতু এই দেহরূপ আত্মা থেকেই আগত, এবং বাক্য দেহধারণ করেছে, সেহেতু মানুষ যা বিশ্বাস করে তা আদতে ঈশ্বরের অন্তর্নিহিত সারসত্য” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর এবং তাঁর কাজকে যারা জানে শুধুমাত্র তারাই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে)। “অবতার গ্রহণের অর্থই হল ঈশ্বরের আত্মা দেহরূপে আবির্ভূত হন, অর্থাৎ ঈশ্বর দেহরূপে আবির্ভূত হন; সেই দেহরূপ যে কার্য নির্বাহ করেন তা হল আত্মার কার্য, যা দেহরূপের দ্বারা বাস্তবে পরিণত, এবং প্রকাশিত হয়। ঈশ্বরের দেহরূপ ভিন্ন আর কেউ তাঁর অবতাররূপের সেবাব্রত সম্পাদন করতে পারে না; অর্থাৎ, একমাত্র ঈশ্বরের অবতাররূপ, এই স্বাভাবিক মানবতা—এ ছাড়া আর কেউই—এই দৈব কার্য প্রকাশ করতে পারে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের অধিষ্ঠিত দেহরূপের সারসত্য)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ে শোনানোর পর, আলোচনা করলাম: “আমরা সবাই জানি প্রভু যীশু ছুতার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, দেখতে সাধারণ ছিলেন, বাহ্যিকভাবে অন্যদের থেকে আলাদা ছিলেন না, কিন্তু তাঁর দেহ ছিল ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিহিত, তিনি ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বরের অবতার। তিনি ইহুদি ছিলেন বলে যে আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি, তা নয় বা মরিয়মের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে, তার লিঙ্গ বা চেহারার কারণে তো আরো নয়। তাঁকে বিশ্বাস করি কারণ তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের আত্মার সারসত্য রয়েছে, কারণ তিনিই সত্য, পথ এবং জীবন। একমাত্র তিনিই সত্য প্রকাশ করতে এবং ঐশ্বরিক কাজ করতে পারতেন। একইভাবে, কেন এখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি? কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু, তিনি হলেন প্রভু যীশুর আত্মা যিনি আবারও সাধারণ মানুষের দেহ ধারণ করেছেন, আমাদের মধ্যে বাস করছেন, সত্য প্রকাশ করছেন, এবং অন্তিম সময়ে বিচার ও শুদ্ধির কাজ করছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু উভয়েরই উৎস এক, এবং উভয়ে ঈশ্বরের আত্মার সারসত্য ধারণ করেন। ঈশ্বরের এই অবতার যে পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুন না কেন, তাঁর চেহারা ও লিঙ্গ যাই হোক না কেন, সেসব তাঁর সারসত্য বদলাতে পারে না। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অনেক সত্য প্রকাশ, অন্তিম সময়ে বিচারকার্য করেছেন। এটাই প্রমাণ করতে যথেষ্ট যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন ঈশ্বরের আত্মার অবতার এবং তিনিই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু।”
ধীরে ধীরে সে অন্বেষণে ইচ্ছুক হয়ে উঠল, এবং বলল আমার সঙ্গে সে একমত, কিন্তু সে তখনও বুঝতে পারছিল না কেন ঈশ্বর এবার নারীরূপ অবতীর্ণ হয়েছেন। তাকে কিছুটা সহজ হতে দেখে, জিজ্ঞাসা করলাম: “দেহের মধ্যে কাজ করার জন্য ঈশ্বর কোন রূপ বা লিঙ্গ বেছে নেবেন তা কি আমরা নির্ণয় করতে পারি? মা যখন আমাদের জন্ম দেন, আমরা তার চেহারা বেছে নিতে পারি না, সে দেখতে যেমনই হোক, আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে। শিশুদের কাছে এই যৌক্তিকতাই থাকা উচিত। তা-ই কি নয়?” রাফায়েল মাথা নেড়ে বলল, “অবশ্যই, আমাদের নির্বাচন করার অধিকার নেই।” আমি বলে গেলাম: “একইভাবে, দেহধারণের জন্য ঈশ্বর কোন দেহ বেছে নেবেন, তা পুরুষের না নারীর, তা কি আমরা ঠিক করতে পারি? যদি বলি ঈশ্বর পুরুষ হয়ে এলে গ্রহণ করব, কিন্তু নারী হয়ে এলে করব না, তা কি অযৌক্তিক নয়? ঈশ্বরের অবতারের লিঙ্গ ঈশ্বরের নিজস্ব এবং তাঁর পছন্দের বিষয়। মানুষ হিসেবে আমরা মন্তব্য করার যোগ্য নই। ঈশ্বর হলেন সৃষ্টির প্রভু। ঈশ্বরের প্রজ্ঞা স্বর্গের চেয়ে উঁচু এবং তাঁর চিন্তা মানুষের চেয়েও উঁচু। তুচ্ছ মানুষ হয়ে আমরা কীভাবে ঈশ্বরের কাজে তাঁর প্রজ্ঞার তল পাব? আমাদের ঈশ্বরের আবির্ভাব আর কাজ নিয়ে বাছবিচার করার কোনো অধিকার নেই। ঈশ্বর দেহধারণ করেছেন, এবং যতক্ষণ তিনি সত্য প্রকাশ ও ঈশ্বরের কাজ করছেন, লিঙ্গ নির্বিশেষে তিনি স্বয়ং ঈশ্বর, আমাদের তাঁকে গ্রহণ ও মান্য করা উচিত। কেবল এটিই যুক্তিযুক্ত, তা বুদ্ধিমান মানুষের কাজ।” আমার আলোচনা রাফায়েল গুরুত্ব সহকারে শুনছিল এবং নস্যাৎ করেনি।
তখন তাকে বাইবেলের কিছু অনুচ্ছেদ পড়ে শোনাই: “আদিতে ছিল বাক্য, এবং সেই বাক্য ছিল ঈশ্বরের সাথে, এবং বাক্যই ছিল ঈশ্বর” (যোহন ১:১)। “সেইরকম পৃথিবী ছিল বিশৃঙ্খল। সেখানে প্রাণের চিহ্নমাত্র ছিল না। সুগভীর জলধি ছিল তমসাবৃত। জলধির উপরে বিরাজিত ছিল ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি” (আদিপুস্তক ১:২)। “তখন ঈশ্বর আপন সাদৃশ্যে মানুষ সৃষ্টি করলেন। ঐশ্বরিক সাদৃশ্যে নর ও নারীরূপে তাদের তিনি গড়লেন” (আদিপুস্তক ১:২৭)। “সুতরাং তোমরা নিজেদের ভালোকরে সতর্ক রেখো; কারণ যিহোবা যেদিন হোরেবে আগুনের মাঝখান থেকে তোমাদের সাথে কথা বলেছিলেন সেই দিন তোমরা কোনওরকম সাদৃশ্য দেখতে পাওনি: পাছে তোমরা নিজেদের কলুষিত করে ফেলো, আর নিজেদের পরিণত করো মর্মান্তিক প্রতিমূর্তিতে, যেকোনো আকৃতি সদৃশ হয়ে ওঠো, নারী অথবা পুরুষসদৃশ, পৃথিবীর যেকোনো বন্যজন্তুসদৃশ, কোনো এক ডানাওয়ালা মোরগসদৃশ, যে আকাশে উড়ে বেড়ায়” (দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১৫-১৭)। আলোচনা করি: “বাইবেলের এই অনুচ্ছেদগুলোতে দেখি ঈশ্বর মূলত আত্মা, তাঁর কোনো স্থির রূপ নেই, উপাসনা করার জন্য মানুষকে তাঁর কোনো প্রতিমূর্তি গড়ার অনুমতি দেন না তিনি। আদিপুস্তকে আছে, শুরুতে, ঈশ্বর প্রথমে পুরুষকে, তারপর নারীকে তাঁর নিজ প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেন। তাহলে কি ঈশ্বরকে পুরুষ বা নারী বলা যেতে পারে? যদি বলেন ঈশ্বর পুরুষ, তবুও তিনি নারীকে নিজের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন, বা যদি বলেন নারী, তবুও তিনি পুরুষকে তাঁর নিজের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন। কি দাঁড়াল? ঈশ্বর ধার্মিক, তিনি পুরুষ ও নারীকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন। প্রথমবার তিনি পুরুষরূপে অবতীর্ণ হন এবং অন্তিম সময়ে তিনি নারীরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন, মানে তিনি উভয় লিঙ্গের সঙ্গেই ন্যায্য আচরণ করেন। ঈশ্বর যদি দুইবারই পুরুষ হিসাবে অবতীর্ণ হতেন তবে নারীদের প্রতি অন্যায় হতো। ঈশ্বরকে পুরুষ বা নারী বলা তাঁকে সীমাবদ্ধ করা, যা তাঁর সর্বাধিক ঘৃণার্হ। প্রতিবার ঈশ্বর দেহধারণ করেন মানবতাকে উদ্ধারের জন্য, আর দেহধারণের মানে মানুষের রূপ নেওয়া, হয় পুরুষের বা নারীর। যাই হোক, লিঙ্গ নির্বিশেষে ঈশ্বর যেভাবেই অবতীর্ণ হন, তাঁর সারসত্য চিরন্তন অপরিবর্তনীয়।” এই কথা শুনে রাফায়েল কিছুটা জেগে উঠে বলল, “অন্তিম সময়ে একজন নারী হিসেবে ঈশ্বরের দেহধারণ সত্যিই অর্থবহ!”
তারপর তাকে কয়েক ছত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পাঠাই। “ঈশ্বরের সম্পাদিত কাজের প্রতিটি পর্যায়েরই নিজস্ব ব্যবহারিক তাৎপর্য রয়েছে। অনেককাল আগে, যীশু যখন এসেছিলেন, তখন তিনি পুরুষ রূপে এসেছিলেন, আর এইবার যখন ঈশ্বর আসেন, তখন তাঁর রূপ নারী। এর থেকে তুমি দেখতে পাবে যে পুরুষ ও নারী, ঈশ্বরের এই উভয় সৃষ্টিই তাঁর কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, এবং তাঁর কাছে কোনো লিঙ্গ ভেদ নেই। যখন তাঁর আত্মা আসেন, তিনি ইচ্ছামতো যে কোনো দেহ ধারণ করতে পারেন, এবং সেই দেহ তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে; যতক্ষণ এটি তাঁর অবতাররূপ দেহ, ততক্ষণ তা পুরুষ হোক বা নারী, সে ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যীশু যখন এসেছিলেন, তখন তিনি যদি নারী হিসাবে আবির্ভূত হতেন, অর্থাৎ যদি পবিত্র আত্মা শিশুপুত্রর পরিবর্তে এক শিশুকন্যাকে ধারণ করতেন, সেক্ষেত্রেও সেই কাজের পর্যায়টি একইভাবেই সম্পন্ন হত। যদি তাই হতো, তাহলে কাজের বর্তমান পর্যায়টি তার পরিবর্তে একজন পুরুষের দ্বারা সম্পন্ন করতে হত, কিন্তু তা সত্ত্বেও কাজটি সম্পন্ন হত। কাজের প্রতিটি পর্যায়ে সম্পাদিত কাজেরই নিজস্ব তাৎপর্য আছে; কাজের কোনো পর্যায়েরই কখনো পুনরাবৃত্তি করা হয় না, বা অন্য কোনো পর্যায়ের সঙ্গে তা বিরোধও ঘটায় না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, দু’টি অবতার অবতাররূপের তাৎপর্য সম্পূর্ণ করে)। “যদি ঈশ্বর শুধুমাত্র একজন পুরুষ হিসাবে দেহধারণ করতেন, তাহলে মানুষ তাঁকে পুরুষ হিসাবে, পুরুষদের ঈশ্বর হিসাবে, সংজ্ঞায়িত করত, আর কখনোই তাঁকে নারীদের ঈশ্বর হিসাবে বিশ্বাস করত না। পুরুষদের তাহলে ধারণা হত যে ঈশ্বর পুরুষের মতো একই লিঙ্গের, ঈশ্বর পুরুষদের প্রধান—কিন্তু নারীদের কী হত? এটা অন্যায়; এটা কি পক্ষপাতমূলক আচরণ নয়? যদি এমন হতো, তাহলে ঈশ্বর যাদের উদ্ধার করেছেন, তারা সকলেই তাঁর মতো পুরুষই হত, এবং কোনো একজন নারীকেও উদ্ধার করা হত না। মানবজাতিকে সৃষ্টির সময়, ঈশ্বর আদমকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনি হবাকে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি শুধু আদমকে সৃষ্টি করেন নি, বরং তাঁর প্রতিমূর্তিরূপে পুরুষ ও নারী উভয়কেই তিনি তৈরি করেছিলেন। ঈশ্বর শুধু পুরুষদের ঈশ্বর নন—তিনি নারীদেরও ঈশ্বর” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (৩))। “ঈশ্বর শুধুমাত্র পবিত্র আত্মা, আত্মা, সাতগুণ তীব্রতর আত্মা বা সর্বব্যাপী আত্মা নয়, বরং একজন মানুষও বটে—একজন সাধারণ মানুষ, একজন ব্যতিক্রমী সাধারণ মানুষ। তিনি শুধু পুরুষই নন, বরং একজন নারীও বটে। তাঁরা শুধুমাত্র মানুষের কাছে জন্ম নেওয়ার কারণেই একে অন্যের অনুরূপ এবং তাঁদের পার্থক্যের বিষয় হল একজন পবিত্র আত্মা দ্বারা প্রসূত আর অপরজন মানুষের কাছে জন্মগ্রহণ করলেও সরাসরি আত্মা থেকে আনিত। তাঁরা এই কারণে অনুরূপ যে উভয়েই হলেন পিতা ঈশ্বরের কাজ সম্পন্নকারী, ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার। এবং তাঁদের পার্থক্য হল একজন মুক্তির কার্য সমাধা করেছিলেন আর অপরজন জয়ের কাজ করেন। তাঁরা উভয়েই পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করেন, কিন্তু একজন হলেন প্রেমময় উদারতা ও করুণায় পরিপূর্ণ মুক্তিদাতা আর অপরজন হলেন ক্রোধ ও বিচারে পূর্ণ ন্যায়পরায়ণতার ঈশ্বর। একজন হলেন মুক্তির কার্যের সূচনাকারী সর্বোচ্চ অধিনায়ক, অন্যজন হলেন জয়ের কাজ সম্পন্নকারী ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর। একজন হলেন শুরু, অপরজন শেষ। একজন পাপবর্জিত দেহরূপ, অপরজন হলেন সেই দেহরূপ যিনি মুক্তি সম্পন্ন করেন, কাজ চালিয়ে যান এবং কখনও পাপাচারী হন না। উভয়ই একই আত্মা, কিন্তু তাঁরা ভিন্ন দেহরূপে বাস করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে রয়েছে কয়েক হাজার বছরের ব্যবধান। তবুও, তাঁদের সমস্ত কাজ পারস্পরিকভাবে একে অন্যের পরিপূরক, কখনোই পরস্পরবিরোধী নয় এবং সেগুলি একই সঙ্গে উচ্চারিত হতে পারে। দুজনেই মানুষ, তবে একজন ছিল একটি শিশু বালক এবং অপরজন ছিল একজন শিশু বালিকা” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের বিষয়ে তোমার উপলব্ধি কী?)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ে অনিলা আলোচনা করল: “ঈশ্বরের কাজ সর্বদা নতুন, কখনও পুরানো হয় না, পুনরাবৃত্ত হয় না। ঈশ্বরের কাজ নিয়ত নবীকরণকৃত, পরিবর্তিত ও উন্নত হয়। ঈশ্বর একই কাজ বারবার করলে মানুষ সম্ভবত তাঁকে সীমাবদ্ধ করে ফেলত এবং তাঁর সম্পর্কে আমাদের প্রকৃত জ্ঞান থাকত না। ঈশ্বর প্রথমবার দেহধারণ করেছিলেন পুরুষ হিসেবে, তাহলে প্রভু আবার পুরুষ হিসাবে দেহধারণ করলে পরিণতি কি হবে? মানুষ তাঁকে পুরুষ হিসাবে সীমাবদ্ধ করে ফেলবে, ভাববে ঈশ্বর শুধু পুরুষদেরই স্বীকৃতি দেন, অনুগ্রহ করেন, তিনি নারীদের ভালোবাসেন না, এড়িয়ে চলেন, এবং তাই, নারীরা চিরকাল বৈষম্যের শিকার হবে। এটা কি সঠিক উপলব্ধি? এটা কি নারীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত? এটা কি ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গত? এগুলো কি কেবলই মানুষের ধারণা এবং কল্পনা নয়? ঈশ্বর ধার্মিক, এবং নারী-পুরুষ তাঁর কাছে সমান। ঈশ্বর একবার পুরুষরূপে এবং একবার নারীরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। এটা খুবই অর্থবহ! অন্তিম সময়ে নারীরূপে ঈশ্বরের দেহধারণ সকলের ধারণাকে উল্টে দিয়েছে, ঈশ্বর সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ও সীমাবদ্ধ ধারণাকে বদলে দিয়েছে, এবং মানুষকে দেখিয়েছে যে ঈশ্বর শুধু পুরুষদের ঈশ্বর নন, নারীদেরও ঈশ্বর। ঈশ্বর সমস্ত মানবজাতির ঈশ্বর। কেউ তাদের ধারণা ব্যবহার করতে পারে না ঈশ্বরকে পুরুষ বা নারী হিসাবে সীমাবদ্ধ করতে।”
আমি আরও বললাম: “আসলে, ঈশ্বর তাঁর অবতারে যে রূপই গ্রহণ করুন না কেন, তাঁর সারসত্য অপরিবর্তনীয়। তাঁরা অবতাররূপী ঈশ্বরের আত্মা, স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্বকারী, এবং দৈবিক কাজ সম্পাদনে সক্ষম। অনুগ্রহের যুগে, ঈশ্বর দেহধারণ করেন, মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়ে ক্রুশবিদ্ধ হন। প্রভু যীশু পুরুষ ছিলেন, মানবমুক্তির উদ্দেশ্যে ক্রুশবিদ্ধ হতে পেরেছিলেন। ঈশ্বর যদি সেই প্রথম বারেই নারীরূপে অবতীর্ণ হতেন, তিনি তখনও মুক্তির কাজটি সম্পূর্ণ করতে এবং মানুষকে অনুশোচনার পথ দেখিয়ে সত্য প্রকাশে সক্ষম হতেন। অতএব, ঈশ্বরের অবতারের লিঙ্গ এবং চেহারা জরুরি নয়, তাঁর মধ্যে মহত্বের বহিঃপ্রকাশ আছে কি না, তা-ও জরুরি নয়। জরুরি হল তার মধ্যে ঈশ্বরের সারসত্য আছে কি না, তিনি সত্য বলেন কিনা, এবং মানুষকে উদ্ধার করেন কি না। প্রকৃত পথ অন্বেষণে এই বিষয়গুলোতেই আমাদের গভীর মনোযোগ দেওয়া উচিত।” তারপর তাকে আরেক ছত্র ঈশ্বরের বাক্যে শোনাই। “যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী হবেন, এবং যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের অভিব্যক্তির অধিকারী হবেন। যেহেতু ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করেছেন, সেহেতু তিনি সেই কাজ নিয়ে আসবেন যা তিনি করতে চান, এবং যেহেতু তিনি দেহরূপে এসেছেন, তিনি যা তা তিনি স্বরূপ প্রকাশ করবেন এবং সেই সত্যটি মানুষের সামনে নিয়ে আসতে সমর্থ হবেন, তাকে জীবন দান করবেন এবং তার জন্য পথ চিহ্নিত করবেন। যে দেহরূপে ঈশ্বরের সারসত্য নেই তাকে ঈশ্বরের অবতার বলে গণ্য করা হয় না; এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা তা যদি মানুষ অনুসন্ধান করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই যে স্বভাব তিনি প্রকাশ করেন এবং যে সকল বাক্য তিনি বলেন, তার থেকেই তা জানতে হবে। অর্থাৎ, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা, এবং এটিই প্রকৃত পথ কিনা, তা সুনিশ্চিত করতে অবশ্যই তাঁর সারসত্যের ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। এবং তাই, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কি না, তা নির্ণয় করার মূল বিষয়টি তাঁর বাহ্যিক চেহারার পরিবর্তে তাঁর সারসত্য (তাঁর কাজ, তাঁর কথন, তাঁর স্বভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের), উপর নির্ভরশীল। মানুষ যদি শুধু তাঁর বাইরের চেহারাটাই খুঁটিয়ে দেখে, এবং এর ফলে তাঁর সারসত্যকে উপেক্ষা করে, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে সেই মানুষটি অজ্ঞানতিমিরে আচ্ছন্ন এবং অজ্ঞ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। আলোচনা চালিয়ে যাই: “ঈশ্বরের বাক্য খুব স্পষ্ট। কেউ ঈশ্বরের অবতার কি না, তা নিশ্চিত করা যায় তিনি সত্য প্রকাশ এবং ঈশ্বরের কাজ করতে পারেন কি না তা দিয়ে। আপনি যদি প্রকৃত পথের অনুসন্ধানে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর না শোনেন, পরিবর্তে চেহারা এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে অবতারত্ব বিচার করেন, তাহলে আপনিও কি ফরিশীদের যীশুকে প্রতিরোধ করার মতোই ভুল করছেন না? ফরিশীরা দেখেছিল প্রভু যীশুর পারিবারিক পটভূমি ও চেহারা ছিল মশীহ সম্পর্কে তাদের পূর্বধারণা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, তাই তারা স্বাভাবিকভাবেই প্রভু যীশুর নিন্দা করেছিল তাঁর বাক্যের বা কাজের তিলমাত্র অনুসন্ধান না করে। শেষ পর্যন্ত, তারা যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে, ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করে, তাই তারা অভিশপ্ত হয়। মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য না পড়লে, তাঁর কণ্ঠ না শুনলে, ঈশ্বর-অবতারের নারীরূপ তাদের পূর্বধারণার সঙ্গে মেলে না বলে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে নস্যাৎ ও প্রতিরোধ করে, তা কি ঈশ্বরকে আবার ক্রুশবিদ্ধ করা নয়?”
এই আলোচনার পর, রাফায়েল বলল সে অনুসন্ধান করে যাবে, পরের সন্ধ্যায় তাকে একটি সমাবেশে আমন্ত্রণ জানালে, সে তৎক্ষণাৎ রাজি হয়। কিন্তু অবাক হলাম, যখন সে পরের সন্ধ্যায় এলো না, ফোনও ধরল না। চিন্তায় পরলাম। তাই রোজ সকালে, ঘুম থেকে উঠেই তাকে ঈশ্বরের কিছু বাক্য পাঠাতাম, একদিন সে জবাব দেবে এই আশায়। কিন্তু সে কখনোই আমার বার্তা পড়ল না, আমি আশাই ছেড়ে দিচ্ছিলাম। পরে, অন্যান্য ব্রাদার-সিস্টারেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। আমি আবার হতাশ হয়ে পড়ি, ভেবেছিলাম এটাই হওয়ার ছিল। ঠিক যখন পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিতে যাচ্ছিলাম, তখন একটি নিবন্ধ পড়লাম এক সিস্টার জনৈক ইতালীয়র কাছে সুসমাচার প্রচারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। আমি সেই ব্রাদারকে জানতাম যার কাছে সে প্রচার করেছিল, আমরা একসাথে সুসমাচার প্রচারে করেছিলাম। সেই ব্রাদারের ছিল উচ্চ মানবিকতা এবং সত্যের বিশুদ্ধ উপলব্ধি, আশা করিনি সেই সিস্টারের সুসমাচার প্রচারের সময় সেই ব্রাদারের মধ্যে এত পূর্বধারণা থাকবে, বা সে দুই মাসেরও বেশি যোগাযোগ বন্ধ রাখবে। তবুও সিস্টার হাল ছাড়েনি। কেবল অপেক্ষা করত, তার সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ খুঁজত, যতক্ষণ না পর্যন্ত, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য তার ধারণাগুলো একে একে সমাধান করে, আর সে ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করে। সিস্টারের অভিজ্ঞতা বেশ মর্মস্পর্শী ছিল তা আমায় লজ্জিত করে। ভাবলাম, ঈশ্বরের সামনে আসা প্রতিটি মানুষের পিছনে, ঈশ্বর কত বড় মূল্য দিয়েছেন। ঈশ্বরের মানুষকে উদ্ধারের আন্তরিক অভিপ্রায় বুঝলে তাঁর ইচ্ছার প্রতি মন দেওয়া উচিত। কিন্তু সামান্য অসুবিধায়, আমি পিছিয়ে গিয়ে হাল ছেড়ে দিচ্ছিলাম। আমার মধ্যে অধ্যবসায়ের অভাব ছিল। কোথায় ছিল আমার আনুগত্য ও সাক্ষ্য? তারপর ঈশ্বরের বাক্য পড়লাম। “সুসমাচার প্রচারের ক্ষেত্রে, তোমাকে অবশ্যই প্রথমে তোমার কর্তব্য পালন করতে হবে। যে কাজ তুমি করতে পারো এবং তোমার করা উচিত, সেই কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিবেক এবং বোধকে অনুসরণ করতে হবে। প্রকৃত পথ বিবেচনাকারী ব্যক্তির যা কিছুই ধারণা থাকুক না কেন অথবা যে প্রশ্নই সে করুক না কেন তোমাকে অবশ্যই স্নেহপূর্বক সেগুলির সমাধান প্রদান করতে হবে। যদি তুমি সত্যিই সমাধান প্রদানে অক্ষম হও, তাহলে সেই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কিছু ঈশ্বরের বাক্যের অনুচ্ছেদ তাদের পড়াতে পারো অথবা অভিজ্ঞতামূলক সাক্ষ্যের কিছু ক্লিপ বা প্রাসঙ্গিক সুসমাচার সাক্ষ্য সম্পর্কিত ছায়াছবি তাদের দেখাতে পারো। এটা কার্যকর হওয়া সম্পূর্ণরূপে সম্ভব; অন্তত তুমি নিজের দায়িত্ব পালন করবে এবং বিবেকের কাছে অভিযুক্ত বোধ করবে না। কিন্তু যদি তুমি অবহেলাপূর্ণ হও এবং নিজের পথে তালগোল পাকিয়ে ফেলো, তবে তুমিই জিনিসগুলো পূর্বাবস্থায় আনার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ, এবং সেই ব্যক্তিকে অর্জন করা সহজ হবে না। অন্যদের কাছে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে, কোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ‘দায়িত্ব’ শব্দটিকে কীভাবে বুঝতে হবে? সুনির্দিষ্টভাবে, কী উপায়ে এটির অনুশীলন এবং প্রয়োগ করা উচিত? ঠিক আছে, তোমাদের বুঝতে হবে যে প্রভুকে স্বাগত জানানোর পরে এবং অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার পরে, যারা তাঁর আবির্ভাবের জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে আছে তাদের কাছে তাঁর কাজের সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তোমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাহলে, তুমি কীভাবে তাদের মধ্যে সুসমাচার ছড়িয়ে দেবে? অনলাইনেই হোক বা প্রত্যক্ষ জীবনে, যে উপায়ে মানুষদের অর্জন করা যায় এবং যা কার্যকর-সেই সমস্ত উপায়ে তোমার এগুলি ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। সুসমাচারের প্রচার এমন কোনো বিষয় নয় যা তোমার ইচ্ছা হলে করো, যখন মেজাজ ভালো থাকে তখন করো, আর যখন থাকে না তখন করো না। তোমার যাকে উপযুক্ত মনে হয় তাকে বেছে নাও, তোমার পছন্দের ব্যক্তিদের কাছে সুসমাচার ছড়িয়ে দাও এবং যাদের পছন্দ নয় তাদের কাছে প্রচার করো না-এটা তোমার পছন্দ অনুযায়ীও করা হয় না। ঈশ্বরের চাহিদা এবং তাঁর গৃহের নীতি অনুসারে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। ঈশ্বরের সৃষ্ট জীব হিসাবে তোমার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা উচিত, প্রকৃত পথের বিবেচনাকারী ব্যক্তিদের প্রতি তোমার বোঝা সত্য, ঈশ্বরের বাক্য এবং ঈশ্বরের কাজের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তুমি যা কিছু করতে সক্ষম তা তোমার করা উচিত। এটাই হল ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার অর্থ। সুসমাচার প্রচার করার সময় একজন ব্যক্তির কী করা উচিত? তাদের উচিত নিজেদের দায়িত্ব পালন করা, তাদের যথাসাধ্য করা, এবং প্রতিটি মূল্য পরিশোধে ইচ্ছুক থাকা” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সুসমাচারের প্রচার এমন এক কর্তব্য যার প্রতি সকল বিশ্বাসী মর্যাদাবদ্ধ)। “তাহলে, প্রকৃত পথের অনুসন্ধান করছে এমন এক মানুষের প্রতি কীরূপ আচরণ হওয়া উচিত? সুসমাচার প্রচারের ক্ষেত্রে যতক্ষণ তারা ঈশ্বরের গৃহের দ্বারা নির্ধারিত নীতিগুলি মেনে চলবে, ততক্ষণ তাদের কাছে সুসমাচার প্রচারের এক বাধ্যবাধকতা আমাদের রয়েছে; এবং এমনকি যদি তাদের বর্তমান মনোভাব হীন ও অগ্রহণযোগ্যও হয়ে থাকে, তবু অবশ্যই আমাদের ধৈর্য অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু কতক্ষণ ও কোন মাত্রা পর্যন্ত আমরা ধৈর্যশীল থাকবো? যতক্ষণ না তারা তোমায় প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের ঘরে তোমায় ঢুকতে দেয় না, এবং কোনো আলোচনাতেই কোনো কাজ হয় না, এবং তাদের ডাকাডাকি করে, বা অন্য কারো মারফৎ আমন্ত্রণ পাঠিয়েও কোনো সুরাহা হয় না, এবং তারা তোমাকে না চেনার ভান করে। পরিস্থিতি এমনতর হলে তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার কোনো পন্থা নেই। সেই ক্ষণেই তুমি তোমার দায়িত্ব পূরণ করে ফেলেছো। একেই কর্তব্য-পালন বলে। যতক্ষণ বিন্দুমাত্রও আশা অবশিষ্ট রইবে, ততক্ষণ তোমার সাধ্যের মধ্যে প্রতিটি উপায়ের কথা তোমার ভেবে দেখা উচিত এবং তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করার জন্য ও তাঁর কার্যের সাক্ষ্যে বহন করার জন্য তোমার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। উদাহরণ হিসাবে ধরা যাক, দুই বা তিন বছর যাবৎ কারো সঙ্গে তোমার যোগাযোগ আছে। বহুবার তার কাছে তুমি সুসমাচার প্রচারের ও ঈশ্বরের হয়ে সাক্ষ্যদানের চেষ্টা করেছো, কিন্তু তার তা গ্রহণ করার কোনো অভিপ্রায় নেই। তা সত্ত্বেও তার উপলব্ধির ক্ষমতা বেশ ভালো, এবং সে সত্যিই একজন সম্ভাব্য সুসমাচার গ্রাহক। তোমার কী করা উচিত? সর্বপ্রথম, তুমি অবশ্যই তার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দেবে না, বরং তার সাথে স্বাভাবিক আচরণ বজায় রাখবে, এবং তার কাছে ঈশ্বরের বাক্য পাঠ ও তাঁর কার্যের সাক্ষ্যে বহন চালিয়ে যাবে। তার উপর আশা ছেড়ো না; শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রাখো। কোনো এক অজানা দিনে, সে জেগে উঠে অনুভব করবে যে প্রকৃত পথের বিষয়ে অনুসন্ধান করার সময় হয়েছে। এই কারণেই সুসমাচার প্রচারের ক্ষেত্রে অন্তহীন স্থৈর্য ও অধ্যবসায়ের অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা করার দরকারটা কী? কারণ এটি এক সৃজিত সত্তার কর্তব্য। যেহেতু তোমার সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে, সেহেতু তার কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করা তোমার বাধ্যবাধকতা ও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তার প্রথমবার ঈশ্বরের বাক্য ও সুসমাচার শ্রবণের পর থেকে তার ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্ত পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়কালে, অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যস্থতা ঘটবে, এবং তা সময়সাপেক্ষ। সেই সময়কালে ধৈর্য ও অপেক্ষার প্রয়োজন হয়, যতদিন না সে ঘুরে দাঁড়ায় এবং তুমি তাকে ঈশ্বরের সম্মুখে নিয়ে আসো, তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনো। এ-ই হল তোমার বাধ্যবাধকতা। বাধ্যবাধকতা বিষয়টি কী? তা এমন এক দায়িত্ব যা এড়িয়ে যাওয়া যায় না, যা পালন করতে কেউ দায়বদ্ধ। এ হল ঠিক একজন মায়ের তার সন্তানের প্রতি আচরণের মতো। সন্তান যতই অবাধ্য বা দুষ্টু হোক না কেন, অথবা যদি সে অসুস্থ হয় ও খেতে না চায়, তখন তার মায়ের বাধ্যবাধকতা কী? যেহেতু সে জানে যে তুমি তার সন্তান, তাই সে তোমায় পরম স্নেহ করে, এবং তোমায় ভালোবাসে ও তোমার যত্ন নেয়। তুমি তাকে মা বলে স্বীকৃতি দাও কি না দাও তাতে কোনো ফারাক পড়ে না, এবং তার প্রতি তুমি কেমন আচরণ করো তাতেও কিছু আসে যায় না—তবু সবসময় সে তোমার পাশে থাকে, ক্ষণিকের জন্য তোমায় ছেড়ে যায় না, যতক্ষণ না তুমি তাকে মা বলে বিশ্বাস করে তার আলিঙ্গনে ফিরে যাও। এইভাবে, সদাসর্বদা সে তোমার উপর লক্ষ্য রাখে ও তোমার যত্ন নেয়। দায়িত্ব বলতে একেই বোঝায়; এ-ই হল দায়বদ্ধ হওয়ার অর্থ। যারা সুসমাচার প্রচারের কাজে নিযুক্ত, তারা যদি এইভাবে, মানুষের প্রতি এই ধরনের ভালোবাসা নিয়ে, অনুশীলন করতো, তাহলে তখন তারা সুসমাচার প্রচারের নীতিকে উচ্চে তুলে ধরতো, এবং ফলাফল অর্জন করতে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম হতো” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সুসমাচারের প্রচার এমন এক কর্তব্য যার প্রতি সকল বিশ্বাসী মর্যাদাবদ্ধ)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ে আমি লজ্জা ও দুঃখ পেলাম। সুসমাচার কর্মীদের পালনীয় দায়িত্বগুলো ঈশ্বর স্পষ্ট বলেছেন। প্রত্যেক সম্ভাব্য সুসমাচার গ্রাহকের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা অনুসারে তাদের সাথে পৃথক আচরণ করা প্রয়োজন। নিজস্ব ধারণা, কল্পনা বা কুসংস্কারের উপর নির্ভর করে তাদের সীমাবদ্ধ করা যায় না, হাল ছেড়ে দেওয়া তো দূর অস্ত। তাদের উপযুক্ত সুসমাচার গ্রাহক হিসাবে ভাবলে, যথাসাধ্য করতে হবে তাদের কাছে ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজের সাক্ষ্য দিতে তাদের ঈশ্বরের সামনে নিয়ে যেতে। এই নীতিগুলোই সুসমাচার প্রচারে ব্যবহার্য। তবে, ব্রাদার রাফায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায়, অচিরেই ধৈর্য ও সহানুভূতি হারাই। সময়টা কঠিন হওয়ায় তার সাথে আলোচনার চেষ্টা করিনি, সে আমাদের উপেক্ষা করায়, ফোনের উত্তর না দেওয়ায়, মেসেজ না পড়ায়, মনে হয়েছিল, কী-ই বা আর করা যায়? আমার যা আলোচনা করার ছিল করেছিলাম, কিন্তু রাফায়েল প্রকৃত পথ গ্রহণ করে না, আমিও অগত্যা তাকে নিয়ে ভাবা বন্ধ করি। কিন্তু খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। বারবার মনে হচ্ছিল তার প্রকৃত বিশ্বাস আছে, ভালো যোগ্যতা আর সমঝদারি আছে, কিন্তু যাজকের তাকে পথভ্রষ্ট করে ধর্মীয় পূর্বধারণায় আটকে রেখেছিল। সেই সংকটময় মুহূর্তে নিষ্ক্রিয় না থেকে উচিত ছিল তাকে সাহায্য করা। নচেৎ, কোনো ভালো সুসমাচার কর্মীর দায়িত্ব পালন করা হবে না। তাই সাহায্য করার আশায় তাকে এক সাক্ষ্যমূলক প্রবন্ধ পাঠাই। সে পড়ুক বা না পড়ুক, আমাকে যথাসাধ্য করতেই হত।
কিছুদিন পর, সে আমায় বার্তা পাঠায়: “আমি এই পুরো সময় ধরে প্রার্থনা করেছি। কিছু না বললেও, জানি যে ঈশ্বর আমাদের হৃদয়ের খোঁজ করেন। আমার হৃদয় সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ডাকছে আলোকিত করে পথ দেখাতে, পাছে ভুল করে তাঁকে ক্ষুব্ধ করি।” খুব অনুপ্রাণিত হলাম, উত্তরে সে বলল: “জগৎ খুবই কলুষিত ও মন্দ। মানুষের ঈশ্বরের কাছে যাওয়া দুষ্কর। মন্দের বিরুদ্ধে একমাত্র অস্ত্র হল সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য এবং বাইবেল।” সে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য স্বীকার করল, যা প্রমাণ করেল যে, সে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বুঝতে পেরেছে, তাকে ফিরে পাওয়ার আশা আছে। কিন্তু জানতাম সে প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ভয় হচ্ছিল সে যেকোনো সময় আমার বার্তা পড়া বন্ধ করে দেবে। খুব চিন্তিত ছিলাম, তাই নিজেকে শান্ত করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম। প্রার্থনার সময়, ঈশ্বরের বাক্যের একটি অংশ মনে পড়ল, “ঈশ্বর কোনোভাবেই মানবজাতিকে লঘুভাবে, বা শেষ সম্ভাব্য মুহূর্ত অবধি না দেখে, পরিত্যাগ করতেন না।” সেটা পড়তে তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের বাক্যের অনুচ্ছেদটা খুঁজে বের করলাম। “নিম্নলিখিত অনুচ্ছেদটি যোনা পুস্তিকার ৪:১০-১১ স্তবকে লিপিবদ্ধ আছে: ‘যিহোবা বললেন, তুমি এই লাউগাছটির জন্য কোন পরিশ্রম করনি, এর যত্নও করনি। রাতারাতি এটি বেড়ে উঠেছিল এবং পরের দিন শুকিয়ে গেছে। এর জন্য যদি তোমার এত দুঃখ হয় তাহলে ভেবে দেখো, এই মহানগরী নীনবী, যার মধ্যে রয়েছে এক লক্ষ কুড়ি হাজারেরও বেশী মানুষ—যারা নিজেদের দক্ষিণ হস্তের সাথে বাম হাতের তফাৎ ধরতে পারে না, আর আছে অসংখ্য পশু, তাদের জন্য কি আমার মমতা থাকবে না?’ এগুলি ঈশ্বর ও যোনার মধ্যে কথোপকথন থেকে গৃহিত যিহোবা ঈশ্বরের প্রকৃত বাক্য। এই বাক্য বিনিময় যদিও সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তা মানবজাতির প্রতি সৃষ্টিকর্তার দরদ এবং মানবজাতিকে পরিত্যাগ করতে তাঁর অনাগ্রহে কানায় কানায় পূর্ণ” (বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ২)। “যদিও যোনাকে নীনবীর মানুষদের কাছে যিহোবা ঈশ্বরের বাক্যগুলি ঘোষণা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু না সে যিহোবা ঈশ্বরের অভিপ্রায় উপলব্ধি করেছিল, না উপলব্ধি করেছিল নগরীর মানুষদের জন্য তাঁর উদ্বেগ ও প্রত্যাশা। এই তিরস্কারের মাধ্যমে ঈশ্বর বলতে চেয়েছেন যে, মানুষ হল ঈশ্বরের নিজের হাতে উৎপাদিত ফসল, এবং প্রত্যেকটি মানুষের উপর তিনি শ্রমসাধ্য প্রচেষ্টা ব্যয়িত করেছেন, প্রতিটি মানুষ তাদের কাঁধে ঈশ্বরের প্রত্যাশা বহন করে, এবং প্রত্যেক মানুষ ঈশ্বরের জীবনের রসদ উপভোগ করে; প্রতিটি মানুষের জন্য ঈশ্বর কষ্টসাধ্য প্রচেষ্টাস্বরূপ মূল্য চুকিয়েছেন। এই তিরস্কার যোনাকে এও জানিয়েছিল যে যোনা নিজে লতাগাছটির প্রতি যে পরিমাণ সহানুভূতিশীল, ঈশ্বর মানুষের প্রতিও ঠিক ততটাই সহানুভূতিশীল, যে মানুষ তাঁর নিজের হাতের সৃজন। ঈশ্বর কোনোভাবেই মানবজাতিকে লঘুভাবে, বা শেষ সম্ভাব্য মুহূর্ত অবধি না দেখে, পরিত্যাগ করতেন না” (বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ২)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ে অনুপ্রাণিত হলাম, রাফায়েলকে বললাম: “ভ্রাতা, আপনি একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বুঝতে পারেন। ঈশ্বর অন্তিম সময়ে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং আমাদের জন্য লক্ষ লক্ষ সত্য বাক্য জারি করেছেন, আমাদের পাপের দাসত্ব থেকে উদ্ধার করে তাঁর রাজ্যে নিতে এসেছেন। আশা করি আমাদের ভাগ্য এবং পরিণতি সম্পর্কে এই বিষয়টি আপনি পুরোপুরি বিবেচনা করতে পারেন। আমি আপনার জন্য প্রার্থনা করব। ঈশ্বর আপনার হৃদয় খুলে দিন এবং আপনাকে শীঘ্রই তাঁর গৃহে ফিরে আসতে দিন।” তারপর তাকে ঈশ্বরের বাক্যের তিনটি অনুচ্ছেদের পাঠ পাঠিয়ে প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রইলাম। সেগুলোর মধ্যে একটি তাকে চিন্তা করাতে পেরেছিল এবং এক সন্ধিক্ষণে নিয়ে এসেছিল।
ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “যারা সত্য স্বীকার করতে সক্ষম, তাদের জন্য যীশুর প্রত্যাবর্তন এক মহান পরিত্রাণ, কিন্তু যারা সত্যকে স্বীকার করতে অক্ষম, তাদের জন্য এটা তিরস্কারের প্রতীক। তোমাদের নিজেদের পথ নিজেদের বেছে নেওয়া উচিত এবং পবিত্র আত্মার ধর্মনিন্দা বা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত না। তোমাদের অজ্ঞ এবং অহংকারী মানুষ হওয়া উচিত না, এমন একজন মানুষ হওয়া উচিত যে পবিত্র আত্মার নির্দেশিকা মান্য করে এবং সত্যকে খোঁজার কামনা করে; একমাত্র এই উপায়েই তোমরা লাভবান হবে। আমি তোমাদের ঈশ্বর-বিশ্বাসের পথে সযত্নে চলার উপদেশ দিই। প্রথমেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ো না; এছাড়াও, ঈশ্বরের প্রতি তোমার বিশ্বাসে উদ্দেশ্যহীন এবং ভাবনাহীন হয়ো না। তোমাদের ন্যূনতম এটা জানা উচিত যে, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তাদের অন্তত বিনয়ী এবং সম্ভ্রমপূর্ণ হওয়া উচিত। যারা সত্য শুনেও তা প্রত্যাখ্যান করে, তারা মূর্খ এবং অজ্ঞ। যারা সত্য শুনেও উদ্দেশ্যহীনভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হয় বা তাকে নিন্দা করে, তারা অহংকারে আচ্ছন্ন। যারা যীশুকে বিশ্বাস করে, তারা কেউই অন্যকে নিন্দা বা অভিসম্পাত করার যোগ্য নয়। তোমাদের সকলকে এমন হতে হবে, যারা বিচক্ষণ এবং যারা সত্যকে স্বীকার করে। হয়তো সত্যের পথের বিষয়ে শুনে বা জীবনের বাক্য পড়ে তুমি বিশ্বাস করো যে, এই বাক্যগুলির ১০,০০০এর মধ্যে একটি হয়তো তোমার ধারণা এবং বাইবেলের সঙ্গে সুসঙ্গত, আর তারপর তোমার ১০,০০০তম বাক্য অবধি অনুসন্ধান চালানো উচিত। আমি এখনো তোমায় বিনয়ী হতে, অতি আত্মবিশ্বাসী না হতে, এবং নিজেকে অতি উচ্চে উন্নীত না করতেই উপদেশ দিই। তোমার হৃদয়ে ঈশ্বরের প্রতি সামান্য সম্মান থাকলেই তুমি মহত্তর আলোক অর্জন করবে। তুমি যদি এই বাক্যগুলিকে সযত্নে পরীক্ষা করো এবং বারংবার চিন্তা করো, তাহলেই তুমি বুঝতে পারবে এগুলি সত্য কিনা, এগুলিই জীবন কিনা। হয়তো মাত্র কিছু বাক্য পড়েই কিছু মানুষ এই বাক্যগুলিকে অন্ধভাবে নিন্দা করে বলবে, ‘এটা পবিত্র আত্মার কিছু আলোকপ্রাপ্তির চেয়ে বেশি কিছু নয়,’ অথবা ‘এ এক ভণ্ড খ্রীষ্ট মানুষকে বোকা বানাতে এসেছে’। যারা এসব বলে, তারা অজ্ঞতার বশে অন্ধ! তুমি ঈশ্বরের কার্য এবং প্রজ্ঞা সম্বন্ধে খুবই কম বোঝো, এবং আমি তোমাকে আবার শূন্য থেকে শুরু করার উপদেশ দিই! অন্তিম সময়ে ভণ্ড খ্রীষ্টদের আগমনের কারণে ঈশ্বরের অভিব্যক্ত বাক্যকে অন্ধভাবে নিন্দা করা একেবারেই অনুচিত, এবং শঠতার প্রতি তোমার ভয়ের কারণে পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দা করাও তোমার অনুচিত। সেটা কি খুবই দুঃখের বিষয় হবে না? যদি অনেক পরীক্ষার পরেও তুমি বিশ্বাস করতে থাকো যে এই বাক্যগুলি সত্য নয়, প্রকৃত পথ নয়, এবং ঈশ্বরের অভিব্যক্তি নয়, তাহলে অবশেষে তোমাকে দণ্ড ভোগ করতে হবে, এবং তুমি আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকবে। তুমি যদি এত সাধারণ এবং স্পষ্টভাবে কথিত সত্য স্বীকার করতে না পারো, তাহলে কি তুমি ঈশ্বরের পরিত্রাণ লাভের অনুপযুক্ত নও? তুমি কি তাহলে এমন কেউ নও যে ঈশ্বরের সিংহাসনের কাছে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে যথেষ্ট আশীর্বাদপ্রাপ্ত নয়? ভেবে দেখো! হঠকারী বা আবেগপ্রবণ হয়ো না, এবং ঈশ্বর-বিশ্বাসকে নিছক খেলা হিসেবে দেখো না। তোমার গন্তব্যের স্বার্থে, প্রত্যাশার স্বার্থে, জীবনের স্বার্থে ভাবো, আর নিজেকে ঠকিয়ো না। তুমি কি এই বাক্যগুলিকে স্বীকার করতে পারো?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন)। রাফায়েল সেদিন ঈশ্বরের বাক্যের এই অনুচ্ছেদ পড়ে এবং তার অনুভূতি ও উপলব্ধি সম্পর্কে একটি দীর্ঘ বার্তা পাঠায়। জানতাম সে অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগছে, উদ্বিগ্ন যে ভুল পথ বাছবে, এবং ভয় পাচ্ছিল যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা হল যীশুর বিশ্বাস ভাঙা। তাকে পাঠানোর জন্য এক ছত্র ঈশ্বরের বাক্য পেলাম আর আলোচনা করলাম: “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নয়। প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশুর আবির্ভাব এবং কাজের কারণে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কেউ নতুন সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছে বলে নয়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বিচারকার্যের জন্য সত্য প্রকাশ করেন, অনুগ্রহের যুগ শেষ করে রাজ্যের যুগের সূচনা করেন। স্বয়ং ঈশ্বরের অবতার ব্যতীত, পৃথিবীতে এমন কোনো নেতা, বা মহান বা বিখ্যাত ব্যক্তি নেই যে সত্য প্রকাশ করতে পারে, মানুষকে নেতৃত্ব দিতে বা উদ্ধার করতে পারে। একজনও নেই! যদিও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ যীশু বা যিহোবার থেকে আলাদা, সারসত্যে তারা একই ঈশ্বর। যিহোবা, যীশু এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হল বিভিন্ন যুগে ঈশ্বরের বিভিন্ন নাম। কিন্তু ঈশ্বরের নাম বা কাজ যেভাবেই পরিবর্তিত হোক, তাঁর সারসত্য অপরিবর্তনীয়। তিনি চিরন্তন ঈশ্বর। ঈশ্বর বলেন, ‘যীশু যে কাজ করেছিলেন তা যীশুর নামের প্রতিনিধিত্ব করেছিল, এবং তা অনুগ্রহের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেছিল; আর যে কাজ যিহোবা করেছিলেন, তা যিহোবার প্রতিনিধিত্ব করেছিল, এবং বিধানের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। তাঁদের কাজ ছিল দুটি ভিন্ন যুগে সম্পাদিত একই আত্মার কাজ। … এই দু’টি কাজকে দু’টি ভিন্ন নামে ডাকা হলেও, একই আত্মা কাজের এই দুটি পর্যায় সম্পন্ন করেছিলেন, আর সেই কাজ নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সম্পাদিত হয়েছিল। যেহেতু তাদের নাম ছিল ভিন্ন, এবং কাজের বিষয়বস্তুও ছিল ভিন্ন, তাই যুগও ছিল ভিন্ন। যখন যিহোবা এসেছিলেন, সেটা ছিল যিহোবার যুগ, এবং যখন যীশুর আগমন হয়েছিল, তখন সেটা ছিল যীশুর যুগ। এবং তাই, প্রতিটি আগমনের সাথে, ঈশ্বরকে একটি নামে ডাকা হয়, তিনি একটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন, এবং তিনি একটি নতুন পথের সূচনা করেন; এবং প্রতিটি নতুন পথে তিনি একটি নতুন নাম গ্রহণ করেন, যা দর্শায় যে ঈশ্বর চিরনতুন এবং তিনি কখনও পুরনো নন, এবং তাঁর কাজের অগ্রগতি কখনো থেমে থাকে না। ইতিহাস সর্বদা অগ্রসর হয়ে চলেছে, এবং ঈশ্বরের কাজও সর্বদা অগ্রসর হয়ে চলেছে। তাঁর ছয়-হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সমাপ্তির জন্য, একে অবশ্যই সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। প্রতিদিন তাঁকে নতুন কাজ করতে হবে, প্রতি বছর তাঁকে নতুন কাজ করতে হবে; তাঁকে নতুন পথের সূচনা করতে হবে, নতুন যুগের সূচনা করতে হবে, নতুন ও বৃহত্তর কাজ শুরু করতে হবে, এবং নতুন নাম ও নতুন কাজ আনতে হবে। … যিহোবার কাজ থেকে যীশুর কাজ পর্যন্ত, এবং যীশুর কাজ থেকে বর্তমান পর্যায় পর্যন্ত, এই তিনটি পর্যায় এক নিরবচ্ছিন্ন যোগসূত্রে ঈশ্বরের ব্যবস্থাপনার ব্যাপ্তিকে বিধৃত করে, এবং তা সবই এক আত্মার কাজ। পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে ঈশ্বর সর্বদাই মানুষকে পরিচালনার কাজ করে চলেছেন। তিনিই আদি এবং অন্ত, তিনিই প্রথম এবং অন্তিম, এবং তিনিই সেই একক যে একটি যুগের সূচনা করেন এবং তিনিই সে যে সেই যুগকে সমাপ্ত করেন। বিভিন্ন যুগে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে তিনটি পর্যায়ের কাজ, অভ্রান্তভাবে এক আত্মার কাজ। যারা এই তিনটি পর্যায়কে পৃথক করে, তারা সকলেই ঈশ্বরের বিপক্ষে অবস্থান করে। এবার তোমার এই কথা বোঝা উচিত যে প্রথম পর্যায় থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত কাজ একক ঈশ্বরের কাজ, একক আত্মার কাজ। এই বিষয়ে কোনও দ্বিধা থাকতে পারে না’ (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (৩))। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সুস্পষ্ট। ঈশ্বরের কাজ তিন পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায় ছিল বিধানের যুগের কাজ, যেখানে যিহোবা বিধান জারি করে পৃথিবীতে মানুষের জীবন পরিচালনা করেছিলেন। দ্বিতীয় পর্যায় ছিল অনুগ্রহের যুগে মুক্তির কাজ, এবং এই প্রথম ঈশ্বর মানুষের পাপস্খালনের বলি হতে দেহধারণ করেছিলেন। কাজের তৃতীয় পর্যায় হল অন্তিম সময়ের বিচারকার্য যেমন প্রকাশিত বাক্যে বলা আছে। এই তিনটি পর্যায় হল মানুষকে উদ্ধারের জন্য ঈশ্বরের সামগ্রিক পরিচালনামূলক পরিকল্পনা। ঈশ্বর প্রতিটি যুগে ভিন্ন কাজ করেন, কিন্তু তিনটি পর্যায়ের কাজই একই ঈশ্বর করেন। একটি সহজ উদাহরণ দিচ্ছি। ঈশ্বরের পরিচালনামূলক কার্যকে গৃহনির্মাণের সাথে তুলনীয়। বিধানের যুগ হল গৃহের ভিত, ভিত ছাড়া, গৃহনির্মাণ একেবারেই সম্ভব না। অনুগ্রহের যুগ হল গৃহের কাঠামো, কাঠামো ছাড়া, গৃহ দাঁড়াতে পারে না। রাজ্যের যুগ হল ছাদের মতো। এই চূড়ান্ত ধাপ ছাড়া গৃহ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, বাতাস বা বৃষ্টিকে রুখতে পারে না, তাই এই তিনটি ধাপের প্রতিটিই অপরিহার্য। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাসের অর্থ এই নয় যে আমরা প্রভু যীশুকে ত্যাগ করেছি, ভিন্ন ঈশ্বরে বিশ্বাস করা তো দূরের কথা। আমরা শুধু মেষশাবকের পদচিহ্নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছি। বর্তমানে বিশ্বে অনেক প্রধান ধর্ম আছে, ঈশ্বরবিশ্বাসীরা দু’হাজারেরও বেশি সম্প্রদায়ে বিভক্ত। প্রাক্তন সম্প্রদায় নির্বিশেষে, আন্তরিক বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের আবির্ভাবের তৃষ্ণা নিয়ে অনেক ব্রাদার-সিস্টার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করছে, তাঁর বাক্যের সিঞ্চন ও পুষ্টি গ্রহণ করছে। এই তথ্য দিনের মতো স্পষ্ট। এটি বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীও পূরণ করে: ‘এই পরিকল্পনা সমগ্র বিশ্ব, স্বর্গ ও মর্ত্যের সব কিছুই খ্রীষ্টের মাঝে সম্মিলিত করার সঙ্কল্প যা কাল পূর্ণ হলে খ্রীষ্টেরই মাঝে তিনি রূপায়িত করবেন’ (ইফিসীয় ১:১০)। ‘এবং অন্তিম সময়ে এরকম ঘটবে, যিহোবার গৃহসমেত পর্বত সকল পর্বতের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং সকল গিরিশৃঙ্গের উপর উন্নীত হবে; এবং সকল জাতি সেদিকে স্রোতসম ধাবিত হবে’ (যিশাইয় ২:২)।” আমার কথা শোনার পর, সে একটি প্রার্থনা ইমোজি পাঠিয়ে বলে: “ঠিক বলেছেন, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই হলেন একমাত্র সত্য ঈশ্বর, আমাদের সকলের উচিত তাঁর নামের ছত্রছায়ায় আসা। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমায় ডাকেন। তিনি আমার হৃদয়, আমার উদ্বেগ এবং আমার ভয় জানেন।” আমি তখন তাকে কিছু সুসমাচার ছায়াছবি এবং ঈশ্বরের বাক্য পাঠাই। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনাও করি, এবং বলি, সে সমাবেশে আসুক বা না আসুক, আমায় যথাসাধ্য করতেই হবে, অপেক্ষা, সন্ধান ও সমর্পণ শিখতে হবে।
চার দিন পর, সে এক অপ্রত্যাশিত বার্তা পাঠায়, জিজ্ঞেস করে, সে সমাবেশে যোগ দিতে পারবে কি না। আরো বলে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য তার কাছে চরম মূল্যবান। তা থেকে সে বাইবেলের অনেক সত্য ও রহস্য বুঝেছে। ঈশ্বরের বাক্য তাকে আকৃষ্ট করেছে। সেই মুহূর্তে কেঁদে ফেলি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই! সে বলে, আমার পাঠানো ঈশ্বরের বাক্য পড়ে সেগুলোতে করা প্রশ্নগুলো তাকে দ্বন্দ্বে ফেলেছে। সে এ-ও বলে: “নিজের বিশ্বাসে এতটা নির্লিপ্ত হতে বা তা খেলাচ্ছলে নিতে পারিনি, তাই অন্বেষণ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। প্রভুর প্রত্যাবর্তন আমার কাছে খুব জরুরি, তাঁকে স্বাগত জানানোর সুযোগ হারিয়ে শেষমেশ তাঁকে ক্ষুদ্ধ বা ত্যাগ করতে চাই না।” খুবই উত্তেজিত আর ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ হলাম! দেখলাম ঈশ্বরের বাক্যের কর্তৃত্ব এবং শক্তি সত্যিই মহান! ঈশ্বরের বাক্যেই সে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করে।
এই অভিজ্ঞতা সত্যিই আমাকে স্পর্শ করে উপলব্ধি করায়, যেমনই সম্ভাব্য সুসমাচার গ্রাহকের মুখোমুখি হই, তাদের ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বোঝার সামর্থ্য থাকলে, তাদের ঈশ্বরের গৃহে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা উচিত। কেবল এইভাবে দায়িত্ব পালন করলেই আমাদের ঋণ ও অনুশোচনা থাকবে না। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! ঈশ্বরের জয় হোক!
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।