এখন আমি হৃদয় থেকে কথা বলতে পারি
যখন আমি অন্য কোনো ব্রাদার বা সিস্টারের সঙ্গে আমার কর্তব্য সাধন করতাম, যদি আমি কোনো ব্যক্তিগত ত্রুটি লক্ষ্ করি বা এমন কিছু কাজ দেখি যা সত্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, আমি ভালোভাবেই জানতাম যে আমার একবার মনে করিয়ে তেওয়া উচিত বা সাহায্য করা উচিত, কিন্তু আমি সাধারণত এসব বিষয় এড়িয়ে যেতাম যাতে কাউকে অসন্তুষ্ট না করতে হয়। সাম্প্রতিক অতীতেই, কিছু ঘটনা ঘটে যা আমাকে এই আচরণের অপকারিতা ও পরিণতি বুঝতে এবং ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে।
জানো, সম্প্রতি, একদিনের একটি সমাবেশের শেষে, একজন দায়িত্বে থাকা সিস্টার আমাকে বলল যে আমরা যারা সিঞ্চনের কাজ করছি, তাদের মধ্যে থেকে সুসমাচার প্রচারের জন্য কিছু জনকে আমাদের বেছে নেওয়া দরকার, এবং সে সিঞ্চন ও সুসমাচার উভয় কাজের গুরুত্বেই জোর দেয়। সে আমাদের এই বিষয়টি নীতির নিরিখে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে এবং দলগতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে বলে। আমাকে অবাক করে, ব্রাদার জেমস, যার সঙ্গে আমি আমার কর্তব্যে কাজ করতাম, পরের দিন শুরুতেই আমাকে কল করে এবং জানায় যে সে ইতোমধ্যেই কিছু ব্রাদার ও সিস্টারকে নির্বাচন করে তাদের একত্রিত হওয়ার আয়োজন করেছে। সে আমাকে বলে তাদের কর্তব্যের পরিবর্তন সম্পর্কে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আলাপচারিতা করতে। তাকে এ কথা বলতে শুনে আমি মনে মনে ভাবলাম, “এ কি তোমার তরফ থেকে একরকম হঠকারী ও আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত নয়? আমরা সবাই মিলে এটা আলোচনা করিনি, আর তাছাড়া, প্রত্যেকে এখন তাদের নিজের নিজের কাজ করছে। যদি তুমি অন্ধভাবে এই পরিবর্তন করো এবং দেখা যায় যে এটি ঠিক সিদ্ধান্ত নয়, তাতে কি গির্জার কাজে প্রভাব পড়বে না?” আমি সত্যি যা ভেবেছিলাম তা ব্রাদার জেমসকে জানাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি দ্বন্দ্বে পড়ে যাই যখন শুনি ফোনে তাকে কত উত্তেজিত শোনাচ্ছিল। আমি তাকে এ কথা বললে সে হয়ত ক্ষুব্ধ হত, যে সে খুবই হঠকারিতার বশে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল এবং তার এত অদূরদর্শী হয়ে কাজ করা উচিত নয়। যদি আমি তার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করতাম, সে কি ভাবত না আমি তার চিন্তাকে প্রত্যাখ্যান করছি ও আমি উদ্ধত? এইসব ভাবনার বশীভূত হয়ে আমি একটি কথাও বলিনি। তার প্রস্তাবের বিষয়ে আমার দুশ্চিন্তা থাকলেও, আমি তার আমন্ত্রণ স্বীকার করি এবং তার সঙ্গে সমাবেশের উদ্যোক্তা হিসেবে ব্রাদার ও সিস্টারদের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাজি হই।
ফোন রেখে দেওয়ার পর, আমি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করা ঈশ্বরের বাক্যের এই অংশটি দেখি: সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “তোমায় অবশ্যই নিজে বিচার-বিবেচনা না করে অন্যদের ধারণার সাথে অন্ধ ভাবে সম্মত হলে চলবে না; বরং, যে সকল বস্তু সত্যের অনুবর্তী নয় তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দাঁড়ানোর সাহস তোমায় অবশ্যই রাখতে হবে। যদি কোনও একটি বিষয়কে স্পষ্টতই ভুল বলে জানো এবং তবুও তা উন্মোচনের সাহস তোমার না থাকে, তাহলে তুমি সত্য অনুশীলনকারী ব্যক্তি নও” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ১২)। জানো, আমার মনে হল ওই বাক্যগুলি সরাসরি আমাকেই বলা হয়েছে। এ ছিল ঈশ্বর প্রকৃতই আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থল কীভাবে দেখতে পান সে বিষয়ে সত্যই এক গভীর উপলব্ধি। আমি কি ঠিক সেরকমই ব্যক্তি নই যাদের স্বরূপ ঈশ্বরের বাক্যে উন্মোচিত হয়েছে, যে স্পষ্টত জানে কোনোকিছু ভুল অথচ চুপ করে থাকে? না, আমার আর এরকম ব্যক্তি হওয়া উচিত নয়। তাই আমি সাহস করে কথা বলতে উদ্যত হলাম। কিন্তু যখন আমি ব্রাদার জেমস কতটা উত্তেজিত ছিল তা ভাবলাম, আমি আশঙ্কা করছিলাম সে মনে করবে আমি এই অবস্থান নিয়ে তার সঙ্গে কলহ করছি। খানিক অন্তর্দ্বন্দ্বের পর আমি নিজেকে শান্ত করলাম, এই ভেবে যে আমি ঠিক করছি কিনা সে বিষয়ে আমি এতটা নিশ্চিত হতে পারি না। এমন কিছু থাকতেই পারে যা আমি দেখতে পাচ্ছি না। এবং সেই কারণে, আমি সত্যকে বিসর্জন দিই, অন্তরের অপরাধবোধ উপেক্ষা করি, এবং ব্রাদার জেমসকে কিছু বলিনি। আমি পরে ব্রাদার জেমসের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজের আয়োজন শুরু করি।
এর মধ্যে আমি দায়িত্বে থাকা সিস্টারকে এ কথা জানাই। এটা শোনার পর, সে আমাকে ও জেমসকে একইসঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে কড়াভাবে তিরস্কার করে বলল, “কর্মীবদলের পরিকল্পনা ও আয়োজনের নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। সুসমাচার প্রচার বা সিঞ্চনের কাজের জন্য লোক বাছতে হবে তাদের ব্যক্তিগত ক্ষমতার ভিত্তিতে যাতে গির্জার কাজের ক্ষতি না হয়। তোমরা বিক্ষিপ্তভাবে কিছু লোককে গিয়ে সুসমাচার ভাগ করে নিতে বলছ, যাতে গির্জার কাজের শৃঙ্খলাভঙ্গ হচ্ছে, তাই না? তোমরা সত্য নীতির সন্ধান করছ না বা সকলের সঙ্গে আলোচনা করছ না। এটা, প্রকৃতপক্ষে, স্বেচ্ছাচার।” জানো, যখন তাকে তা বলতে শুনলাম, আমি সত্যিই তখন হতাশ এবং অপরাধী বোধ করলাম। আমি জানতাম এ ছিল ঈশ্বরের কর্তন ও আমার সাথে মোকাবিলা, এবং সে একেবারেই ঠিক বলেছিল। আমরা স্বেচ্ছাচার করছিলাম এবং নীতির অনুসরণ করছিলাম না। আত্মমন্থনের মাধ্যমে, আমি অবশেষে বুঝলাম যে আমার প্রত্যাখ্যান ও প্রতিহত করা উচিত সেই সবকিছুই যা গির্জার পক্ষে উপকারী নয়, এবং যদিও আমি কিছু সম্পূর্ণত না বুঝে থাকি, আমার তবুও নিজের ভাবনা-চিন্তা বলা উচিত এবং সন্ধান ও আলাপচারিতায় অন্যদের সঙ্গে শামিল হওয়া উচিত। আমি শুধু অন্ধের মতো অনুসরণ করে যেতে পারি না, কারণ তাতে গির্জার কাজের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু ব্রাদার জেমসের সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্ষা করার এবং সে যাতে আমার সম্পর্কে খারাপ না ভাবে তা নিশ্চিত করার চেষ্টায়, তার সমস্যাটির দিকে ইঙ্গিত করার আগেই আমি গির্জার কাজকে বিঘ্নিত করাতে প্রস্তুত হয়ে উঠেছিলাম। আমি বুঝলাম কত কৌশলী, স্বার্থপর আর ঘৃণ্য ছিলাম আমি। আমি এ নিয়ে যতই ভাবলাম, ততই নিজেকে মূর্খ মনে হল, এবং আমি নিজের প্রতি বিরক্তি ও ঘৃণায় পূর্ণ হয়ে উঠলাম।
পরে এ বিষয়ে আমার ভাবনায়, আমি বোঝার চেষ্টা করেছি কেন আমি সত্যের অনুশীলন না করে সর্বদাই নিজের স্বার্থ সুরক্ষিত করছিলাম। এই যন্ত্রণা নিয়েই আমি ঈশ্বরের সম্মুখে প্রার্থনা করি: “হে ঈশ্বর, আমি আমার শয়তানি স্বভাবের বশবর্তী হয়ে কাজ করি। আমি সত্য অনুশীলন করি না, এমনকি যখন তা আমার কাছে স্পষ্ট, তখনো। আমি বুঝতে পারছি আমি কত গভীরভাবে শয়তানের দ্বারা কলুষিত হয়েছি। হে ঈশ্বর, দয়া করে আমায় রক্ষা করো।” এবং পরবর্তীকালে, আমি ঈশ্বরের বাক্যের এই অংশটি দেখি: “সেই মানুষগুলিই যথার্থ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে যারা ঈশ্বরের বাক্যকে পালন করতে এবং সত্যের অনুশীলন করতে ইচ্ছুক। যারা ঈশ্বরের প্রতি তাদের সাক্ষ্যে দৃঢ় থাকতে পারে, তারাই তাঁর বাক্যকে কাজে পরিণত করতে ইচ্ছুক এবং প্রকৃত অর্থে সত্যের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম। যেসব মানুষ চাতুরি ও অন্যায়ের শরণ নেয় তাদের সত্যে ঘাটতি আছে, আর তারা সবাই ঈশ্বরের লজ্জার কারণ হয়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা সত্যের অনুশীলন করে না তাদের জন্য একটি সাবধানবাণী)। “যারা সত্যের অনুশীলন করে না ঈশ্বরের পরিবার তাদের অবস্থান অনুমোদন করে না, ঈশ্বরের পরিবার তাদের অবস্থানও অনুমোদন করে না যারা ইচ্ছাকৃতভাবে গির্জাকে টুকরো টুকরো করে। যাইহোক, এখন বিতাড়ন কার্য সম্পাদনের সময় নয়; অন্তিমে কেবল এই ধরণের মানুষগুলিকে অনাবৃত করা হবে আর এদের নির্মূল করা হবে। এর বেশি আর কোনো অনাবশ্যক কাজ এই লোকগুলির জন্য ব্যয় করা হবে না; যারা শয়তানের অধিকারভুক্ত তারা সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, পক্ষান্তরে যারা সত্যের অনুসন্ধান করে তারা পারে। যে সব মানুষ সত্যের অনুশীলন করে না তারা সত্যের পথ বিষয়ে শ্রবণের অনুপযুক্ত আর সত্যের সাক্ষ্য বহনের অযোগ্য। এককথায়, সত্য এদের শ্রবণেন্দ্রিয়ের জন্য নয়; বরং সত্য নির্দেশিত হয় তাদের উদ্দেশ্যে যারা এর অনুশীলন করে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা সত্যের অনুশীলন করে না তাদের জন্য একটি সাবধানবাণী)। জানো আমার প্রতি ঈশ্বরের বাক্য অবিশ্বাস্যরকম তীক্ষ্ণ ছিল। এক প্রকৃত ঈশ্বর বিশ্বাসী ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করতে ইচ্ছুক হয়, এবং কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে তারা ঈশ্বরের পক্ষে দাঁড়িয়ে সত্যের সন্ধান করতে ও অনুশীলন করতে পারে। যারা সত্যের অনুশীলন করতে পারে না, তারা তাদের কলুষিত শয়তানি স্বভাবের অনুসরণ করে, শয়তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে ও গির্জাকে অবজ্ঞা করে। আমি বুঝলাম যে মানুষকে তোষণকারী হয়ে ও সত্যের অনুশীলনে ব্যর্থ হয়ে আমি শয়তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম। প্রতিবার আমি যখন এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি যাতে গির্জার স্বার্থ রক্ষার জন্য আমাকে অবস্থান নিতে হত, আমি সত্যের অনুশীলন থেকে বিরত থেকেছি লোককে অসন্তুষ্ট বা তাদের হৃদয়ে আমার স্থান হারানোর আশঙ্কায়। আমি জানতাম যে যদি আমি এভাবেই চালিয়ে যেতাম, আমি ঈশ্বরের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ও অপসৃত হতাম। জানো, সেই মুহূর্তে, আমি শুধু জনতোষণকারীদের কাজের প্রকৃতি বুঝতে পারি, কিন্তু আমার শয়তানোচিত দুর্নীতির মূল বিষয়ে আমার তেমন কোনো বোধ ছিল না, এবং এক ব্রাদার আমার ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করে দেওয়ার পরেই আমার নিজের সম্পর্কে গভীরতর জ্ঞান লাভ হয়।
আমার মনে আছে, একবার যখন ব্রাদার মাইকেল এবং আমি একসঙ্গে সিঞ্চনের কাজ করছিলাম, সে খোলাখুলিভাবে বলে, “ব্রাদার ম্যাথ্যু, আমাদের দলগত কাজ আজকাল ক্রমশ কমে যাচ্ছে, তুমি প্রায় কখনোই ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্দেশ করো না, এবং আমাকে তুমি সত্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কিছু করতে দেখলেও কিছুই বলো না। এভাবে আমি কী করে কোনো উন্নতির দিকে যাব? আমি সমস্যা বোঝার জন্য সাহায্য চাই এবং অগ্রগতির জন্য কর্তন ও মোকাবিলার মুখোমুখি হতে চাই।” জানো, সে যখন এ কথা বলল আমার খুবই খারাপ লাগল, এবং আমি নিজের মাথায় আমাদের সব পারস্পরিক লেনদেনের স্মৃতিচারণা করলাম। আমি সম্প্রতি লক্ষ করেছি যে সে তার কর্তব্যে যন্ত্রবৎ কাজ করে যাচ্ছিল, নতুন বিশ্বাসীদের সমাবেশে শুধুই নিয়মরক্ষা করছিল। আমরা যে বিষয়গুলি নির্ধারণ করতাম সে বিষয়ে সে সরাসরি আলাপচারিতা করত তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আসল সমস্যা ও জটিলতা সামলানোর কোনো চেষ্টা না করে, যা সমস্যা সমাধান এবং লাভ অর্জন করার নীতির দ্বারা নির্ধারিত। এই সমাবেশগুলির ফল আশানুরূপ ছিল না এবং কিছু নবাগত সময়মতো তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারত না। আমি এসব কোনোকিছুই তার কাছে উল্লেখ করিনি এই আশঙ্কায়, যে সে অসন্তুষ্ট হবে এবং আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হবে। আমি এই সব সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছি। এবং, তুমি জানো, ব্রাদার মাইকেল ঠিক বলেছিল—আমি তার সমস্যা লক্ষ করেছি কিন্তু তাকে কখনো বলিনি। আমি মন জুগিয়ে চলছিলাম, সবার সেরা বন্ধুর মতো আচরণ করছিলাম। আমি জানতাম যে জনতোষণকারীর মতো মনোভাব আমায় তখনো নিয়ন্ত্রণ করছিল, আমাকে সত্যের অনুশীলন থেকে বিরত করছিল। কী করব বুঝতে না পেরে, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি: “হে ঈশ্বর, দয়া করে আমাকে আমার নিজের কলুষিত প্রকৃতি জানতে পথনির্দেশ দাও এবং আমার কলুষিত শয়তানি স্বভাবের শৃঙ্খল মোচন করো।”
তারপর, আমি ঈশ্বরের বাক্যের একটি অংশ পড়ি। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হচ্ছে: “মানবপ্রকৃতি তুমি কীভাবে বোঝ? মানুষের জগতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যবোধ থেকে তা নির্ণয় করাই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা শয়তানের বংশধর, তারা সবাই নিজেদের জন্যই বাঁচে। তাদের জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতি মূলত শয়তানের প্রবাদ থেকেই আসে, যেমন, ‘প্রত্যেক মানুষই নিজের জন্য এবং শয়তান সবচেয়ে পিছনের জনকে দখল করে’ সেই সমস্ত বিশিষ্ট শয়তান রাজাগণ, মহান ব্যক্তিগণ এবং পৃথিবীর দার্শনিকদের উচ্চারিত কথাই মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে। … শয়তান মানুষকে রাষ্ট্রীয় সরকার এবং বিখ্যাত ও মহান মানুষদের শিক্ষা এবং প্রভাবের দ্বারা কলুষিত করে। তাদের শয়তানোচিত বাক্যই মানুষের জীবন ও প্রকৃতি হয়ে উঠেছে। ‘প্রত্যেক মানুষই নিজের জন্য এবং শয়তান সবচেয়ে পিছনের জনকে দখল করে’—এটা খুব পরিচিত এক শয়তানী প্রবাদ, যা প্রত্যেকের মধ্যেই সঞ্চারিত হয়েছে, এবং এটাই মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে। এই ধরনের আরও অনেক জীবনযাপনের দর্শনের কথা রয়েছে। শয়তান মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য, তাদের প্রতারণা এবং ভ্রষ্ট করার জন্য প্রত্যেক দেশের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিকে ব্যবহার করে, যাতে মানবজাতি ধ্বংসের সীমাহীন অতল গহ্বরে পতিত হয় ও সেখানেই আচ্ছন্ন হয়ে থাকে, এবং পরিশেষে, ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করে শয়তানের অনুগামী হওয়ার কারণে তারা ঈশ্বরের দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। মানবসমাজে বেশ কিছু দশক ধরে কিছু ব্যক্তি সরকারী কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেছে। তাদের এই নিম্নলিখিত প্রশ্নটি করার কথা একবার কল্পনা করে দেখো: ‘আপনি এই ক্ষমতায় থেকে কত সুচারুভাবে কাজ করেছেন, আপনার জীবনযাপনের মূল বিখ্যাত প্রবাদগুলি কী কী?’ তারা হয়তো বলবে, ‘এটাই আমার একমাত্র উপলব্ধি যে: “উপহার প্রদানকারীদের জন্য কর্মকর্তারা কোনোকিছুই কঠিন করে না, আর যারা তোষামোদ করে না, তারা কিছুই অর্জন করে না।”’ তাদের কর্মজীবন এই শয়তানী দর্শনের ভিত্তিতেই গঠিত। এই কথাগুলি কি এই ধরনের মানবপ্রকৃতির প্রতিনিধি নয়? পদ অর্জনের জন্য বেআইনিভাবে যেকোনো উপায় ব্যবহার করা তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে, আনুষ্ঠানিক পদ এবং কর্মক্ষেত্রের সাফল্যই তাদের লক্ষ। মানুষের জীবনে, আচার-আচরণে এবং ব্যবহারে শয়তানের অনেক বিষ এখনও রয়ে গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তাদের জীবনযাপনের দর্শন, কাজ করার ধরণ এবং নীতিসমূহ—সকলই অতিকায় লাল ড্রাগনের বিষে পূর্ণ, আর সেই সবকিছুরই উৎস শয়তান। সুতরাং, মানুষের অস্থি-মজ্জার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত সকল বস্তুই হল শয়তানের বস্তু” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, মানব-প্রকৃতি জানার উপায়)। জানো, ঈশ্বরের এই বাক্যগুলি আমাকে মূল সমস্যাটি দেখিয়ে দেয়। আমি সবসময় মিষ্টি কথার মানুষ সাজছিলাম কারণ শয়তান আমাদের সমাজ ও শিক্ষাকে ব্যবহার করে আমার মধ্যে জীবন যাপনের দর্শন এবং হেত্বাভাসগুলি প্রোথিত করে, যেমন, “প্রত্যেক মানুষই নিজের জন্য এবং শয়তান সবচেয়ে পিছনের জনকে দখল করে,” “অন্যের ভাবনা ও যুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভালো ভালো কথা বলো, কারণ স্পষ্টভাষীতা অন্যকে ক্ষুব্ধ করে”, এবং আরো অনেক কিছু। তারা আমার আচরণের নীতি হয়ে দাঁড়ায়। আসলে, যখন আমি ছোটো ছিলাম, আমি আমার কথায় ও কাজে বেশ অকপট ছিলাম; আমি যা কিছু দেখতাম সে বিষয়েই খোলাখুলি কথা বলতাম। আমি যদি দেখি স্কুলে ক্লাসের কোনো বন্ধুকে হেনস্থা করা হচ্ছে, আমি প্রতিবাদ করে তাদের রক্ষা করতাম যার ফলে আমি নিজেও হেনস্থার শিকার হতাম। যখন আমি বন্ধুদের মধ্যে ব্যক্তিগত ত্রুটি দেখতাম বা তাদের খারাপ কিছু করতে দেখতাম, আমি স্পষ্ট মতামত জানাতাম। তারা সাধারণত খুব খুশী হত না এবং আমার ওপর রেগে যেত, এমনকি আমাকে উপেক্ষাও করত। আমি ক্ষমা চাইতাম ও তাদের মার্জনা চাইতাম যাতে সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যায়। এইসব অভিজ্ঞতার ফলে, আমি ভাবতে শুরু করি, এই পৃথিবীতে বাঁচতে গেলে, স্পষ্টবাদীতা সবসময় ভালো নয়, এবং আমাকে তা অকারণ সমস্যায় ফেলবে। সেই সময় থেকে, আমি লাজুক ও পলায়নতৎপর হয়ে পড়ি এবং আমাদের সম্পর্ক বাঁচানোর জন্য আমার মুখ বন্ধ রাখি যখন আমি কাউকে অনুচিত কিছু করতেও দেখি। এই কাজ করার মাধ্যমে, আমি দেখি যে অন্যদের সঙ্গে আমার সম্পর্কঅনেক বেশি “সৌহার্দ্রপূর্ণ” হয়ে ওঠে এবং আমি প্রায় সকলের সঙ্গেই মিশতে পারি। কোনো কোনো লোক এমনকি আমার প্রশংসাও করে। ধীরে ধীরে আমি শয়তানি দর্শনকে গ্রহণ করতে থাকি, যেমন “যখন তুমি জানো কিছু অন্যায় হচ্ছে, কম বলাই শ্রেয়”, “নীরবতা স্বর্ণালী,” “অন্যের ভাবনা ও যুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভালো ভালো কথা বলো, কারণ স্পষ্টভাষীতা অন্যকে ক্ষুব্ধ করে,” এবং “বুদ্ধিমান মানুষ আত্মরক্ষায় পটু, শুধু ভুল করা থেকে বিরত থাকতে চায়”। এবং আমি এদের বাঁচার মন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম, আমার আচরণের দিকনির্দেশকারী নীতি হিসেবে। জানো, এই দুনিয়ায়, যারা তোষামোদ ও তোষণ প্রয়োগ করে, যারা সবসময় বোঝার চেষ্টা করে হাওয়া কোন দিকে বইছে, যারাকৌশলগতভাবে দ্বিরাচারী তারা বেশ সফল। তারা অনেক সময়েই বুদ্ধিমত্তার ও আবেগ-সাক্ষরতার আদর্শ হিসেবে সমাদৃত হয়। কিন্তু যে সাংবাদিকরা সত্য বলেন বা সামাজিক অসাম্য প্রকাশ্যে আনেন তারা অনেক সময়েই ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন হন। ভালো হলে তাদের চাকরি যায়, খারাপ পরিস্থিতিতে মানুষ তাদের ওপর প্রতিশোধ নেয় এবং এমনকি তাদের প্রাণ সংশয়ও হতে পারে। গোটা সমাজ শয়তানি চিন্তা ও যুক্তিকে পুজো করে, এবং তা আমাকে আরো নিশ্চিত করে যে এই দর্শনগুলি অনুসরণ করা জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয়। এবং এই জন্য একবার যদি আমরা এই শয়তানি ধর্মদ্রোহীতা ও হেত্বাভাসগুলি স্বীকার করে নিই, এই পার্থিব দর্শনগুলি, আমাদের জীবন ও জগতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী বিকৃত হয়ে যায়। আমার বিশ্বাস অর্জন করার পর, আমি শিখি যে ঈশ্বর আমাদের কাছে সততা প্রত্যাশা করেন, কিন্তু তবুও এই শয়তানি দর্শনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে আমি স্পষ্টভাবে সত্য বুঝলেও তার অনুসরণ করিনি। আমি গির্জার জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে কিছু বলতে চাইনি যখন আমি দেখি ব্রাদার মাইকেল যন্ত্রবৎ কাজ করছিল ও সমাবেশগুলি ফলপ্রসূ হচ্ছিল না। আমি জানতাম যে ব্রাদার জেমস একতরফা কাজ করছিল এবং এতে গির্জার কাজের ক্ষতি হবে, কিন্তু আমি তাকে থামাইনি। আমি এমনকি অবহেলা ভরে ঈশ্বরের প্রদীপ্তি থেকেও মুখ ফিরিয়ে ছিলাম, তাকে সাহায্য করার বদলে যাতে আমি তাকে অসন্তুষ্ট না করি বা আমার সম্পর্কে খারাপ ভাবার সুযোগ না দিই। আমি দেখি যে আমি শয়তানের টিকে থাকার নীতিগুলি অনুযায়ী জীবন যাপন করছিলাম, আরো আরো স্বার্থপর, ঘৃণ্য, শঠ ও প্রতারক হয়ে উঠছিলাম। আমি গির্জার স্বার্থরক্ষা করতে পারিনি এবং সম্পূর্ণরূপে দায়িত্বজ্ঞান ও দায়বিহীন ছিলাম। আমি যেভাবে বাঁচছিলাম তা নিন্দার্হ ছিল। তারপর আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি ও তাঁকে বলি শয়তানের শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত হতে ও তাঁর বাক্য অনুশীলনে আমায় সাহায্য করতে, কারণ নিজে নিজে এ কাজ করা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য ছিল।
প্রার্থনার পর, আমি হৃদয়ে অনেক বেশি শান্তি অনুভব করি, তারপর আমি আমার অভিজ্ঞতা বিষয়ে ব্রাদার ও সিস্টারদের কাছে উন্মুক্ত হই। এবং, জানো, ঈশ্বরের বাক্যের কিছু অংশ আমার মনে পড়ে: “আমার রাজ্যে তাদেরই প্রয়োজন যারা সৎ, যারা কপট বা শঠ নয়। খাঁটি ও সৎ মানুষ কি পৃথিবীতে অপ্রিয় নয়? আমি ঠিক তার বিপরীত। সৎ মানুষের আমার কাছে আসাটা গ্রহণযোগ্য; আমি এই ধরনের ব্যক্তির দ্বারা আনন্দিত বোধ করি, এবং আমার এই ধরনের ব্যক্তির প্রয়োজনও। ঠিক এটিই হল আমার ন্যায়পরায়ণতা” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ৩৩)। “তোমাদের জানা উচিৎ যে যারা সৎ তাদের ঈশ্বর পছন্দ করেন। সারসত্য হলো, ঈশ্বর নিষ্ঠাবান, এবং তাই তাঁর বাক্যে সবসময় আস্থা রাখা যায়। উপরন্তু, তাঁর কার্য ত্রুটিহীন এবং প্রশ্নাতীত। সেই কারণে, ঈশ্বর তাদের পছন্দ করেন যারা তাঁর সাথে সম্পূর্ণভাবে সৎ থাকে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তিনটি সাবধানবাণী)। জানো, ঈশ্বরের সত্তা পবিত্র ও ন্যায়পরায়ণ, তাই তিনি যা বলেন ও করেন তা বিশ্বাসযোগ্য। কোনোকিছুই শয়তানের দর্শনের দ্বারা কলুষিত নয়। ঈশ্বরের কাছে কালো কালোই এবং সাদা সাদাই—কোনো মধ্যপন্থা নেই! এতে আমার মনে পড়ে যায় প্রভু যীশুর কিছু বাণী: “তোমাদের বক্তব্য সম্মতিসূচক হলে বল, ‘হ্যাঁ’, আর অসম্মতিসূচক হলে বল, ‘না’। এর অতিরিক্ত সব কথাই শয়তানের প্ররোচনা” (মথি ৫:৩৭)। ঈশ্বর সবসময়েই আমাদের সৎ মানুষ হওয়াই প্রয়োজনীয় মনে করেছেন এবং এ-ই হল সত্য। শয়তানের এই দুনিয়ায় সৎ মানুষের কদর নেই এবং তাদের যাপন কষ্টকর। কিন্তু ঈশ্বরের গৃহে তা নয়। ঈশ্বর চান সেই মানুষদের যারা সৎ, যাদের সুবিচারের বোধ আছে, যাদের সত্যকে প্রকাশ্যে আনার সাহস আছে এবং যারা সত্যকে অনুশীলন করতে পারে। শুধু তারাই ঈশ্বরের অনুমোদন পেতে পারে এবং ঈশ্বর তাদেরই ভালোবাসেন ও স্বীকার করেন। এতে আমার বিজয়ীদের সম্পর্কে প্রকাশিত বাক্যের কিছু কথা মনে পড়ে যাচ্ছে: “এঁদের মুখে কোন মিথ্যা উচ্চারিত হয়নি, এঁরা নিষ্কলঙ্ক” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৫)। এই বাক্য থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে ঈশ্বর তাদেরই ভালোবাসেন যারা সৎ এবং তাদের অপছন্দ করেন যারা প্রবঞ্চক, শঠ ও শুধু অন্যদের তোষামোদ করতে জানে। এরকম মানুষেরা অবশেষে ঈশ্বরের দ্বারা নির্মূল হতে বাধ্য। এই হল দুনিয়া ও ঈশ্বরের গৃহের মধ্যে পার্থক্য। আমি অবশেষে বুঝলাম যে সত্যই ঈশ্বরের গৃহের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, তাই আমার কাউকে অসন্তুষ্ট করার ভয়ে সত্যের অনুশীলনে ব্যর্থ হওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে, আমার শয়তানকে অনুসরণ করে এবং সত্যের অনুশীলনে ব্যর্থ হয়ে ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করায় আশঙ্কিত হওয়া উচিত। অন্য কারোর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত বা নিন্দিত হওয়া ভয়ের নয়। কেউ আমার সম্পর্কে কী ভাবল তা আমার অন্তিম পরিণতি নির্ধারণ করবে না; শুধুমাত্র ঈশ্বরই আমার পরিণতি নির্ধারণ করতে পারেন, এবং ঈশ্বর আমার ও তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নিয়ে কী ভাবছেন সে বিষয়েই মনোযোগ দেওয়া উচিত, অন্যের সঙ্গে আমার সম্পর্কের বিষয়ে নয়। আমি সবসময় অন্যের সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্ষা করতাম, বারবার সত্যের প্রতি বিমুখ হয়ে। কিন্তু শেষে আমি বুঝি যে আমার যা অনুসরণ করা উচিত তা হল ঈশ্বরের অনুমোদন, এবং ঈশ্বরের বাক্যের অনুশীলন, সৎ মানুষ হওয়া, এবং ব্রাদার ও সিস্টারদের সঙ্গে স্পষ্টভাষী ও খোলা মনের হওয়া। বস্তুত, ব্রাদার ও সিস্টারদের অভিজ্ঞতা থেকে, আমরা দেখতে পাই যে অন্যদের মনে করিয়ে দেওয়া বা মতামত দেওয়া তাদের অসন্তুষ্ট করে না, আমরা যা ভেবেছি। যদি অন্য মানুষটি সত্য-সন্ধানী হন, যদিও এতে সেই মুহূর্তে তাদের গৌরব আহত হয়, তারা ঘটনার পরে সত্যের সন্ধান করে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং ব্রাদার ও সিস্টাররা পরস্পরের নিকটবর্তী হয়। শুধুমাত্র এ-ই হল স্বাভাবিক পারস্পরিকতার সম্পর্ক।
জানো, তারপর আমি সত্য বলা এবং সৎ মানুষ হওয়ার অনুশীলন করতে শুরু করি। পরে আমি জানতে পারি যে এক ব্রাদার টম নবাগতদের সঙ্গে তার সমাবেশগুলি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছিল না, নিয়মরক্ষা করছিল মাত্র। আমি এই বিষয়ে আলাপচারিতায় তার সঙ্গে কথা বলতে চাই, কিন্তু আমি দোনামনা করছিলাম। যদি আমি তার সমস্যা উল্লেখ করতাম, সে মনে করতে পারে যে আমি তার থেকে অতিরিক্ত আশা করছি এবং সে আমাকে আর পছন্দ করবে না। আমি চিন্তিত ছিলাম যে এর ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ কথোপকথন প্রভাবিত হবে কিনা। যখন সে সব চিন্তা মাথায় আসত, আমি তৎক্ষণাৎ আমার অতীতের ব্যর্থতার কথা ভাবতাম, তাই আমি সত্যের অনুশীলনের দিকনির্দেশ করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম। একদিন একটি সমাবেশের পর, আমি ব্রাদার টমকে খুঁজে বার করলাম ও তার কর্তব্যে দায়িত্বহীনতা এবং সমাবেশের প্রতি অবহেলাপূর্ণ মনোভাবের প্রতি অঙ্গুলিনির্দেশ করলাম। তারপর আমরা গির্জার জীবনের নীতিগুলির ওপর আলাপচারিতা করি যাতে আমাদের কর্তব্য সম্পর্কে ঈশ্বরের ইচ্ছা আরো ভালো করে বোঝা যায়। আমি আনন্দিত ও বিস্মিত হয়ে দেখলাম শুধু সে ক্ষুব্ধ হয়নি তা-ই নয়, বরং সে আমাকে তার ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানালো। সে অনুশীলনের এক পথও খুঁজে পেল। পরে এক সমাবেশে সে উল্লেখ করে, “কোনো ব্রাদার বা সিস্টার যদি পরামর্শ দেন, আমাদের বিচ্যুতি বা ভুল ধরিয়ে দেন তা সত্যিই আমাদের কাছে সহায়ক হতে পারে।” তারপর, আমি লক্ষ করি সে সমাবেশে আরো দায়িত্ব নিতে শুরু করে। আমি রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম। আমি বুঝি যে যারা প্রকৃত অর্থে সত্যের সাধনা করে, তারা আমার সত্য ভাষণের জন্য আমায় অপছন্দ করবে না—আমি বড়ো বেশি ধূর্ততা অবলম্বন করছিলাম, সবসময় অন্যের মনে কী আছে বোঝার চেষ্টা করছিলাম ও অন্যকে খাটো করে দেখছিলাম। আমি এই প্রকৃত বোধও অর্জন করি যে সৎ মানুষ হওয়া এবং সত্য বলা ভ্রাতা ও ভগিনীদের জীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ও গির্জার কাজের ক্ষেত্রে খুবই লাভদায়ক।
এই অভিজ্ঞতা আমাকে ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে এবং সৎ হওয়ার কারণে প্রত্যাখ্যাত হওয়াকে ভয় না পেতে সাহায্য করে। আমি কৃতজ্ঞ বোধ করি ঈশ্বরের বাক্যের প্রদীপ্তি ও পথনির্দেশের কারণে, আমার নিজের ধূর্ত প্রকৃতির বিষয়ে আমাকে অবহিত করা এবং শয়তানের দর্শন বুঝতে দেওয়ার কারণে। এতে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ ও পবিত্র সত্তার বিষয়েও আমার চোখ খুলে যায়। আমি অন্তর থেকে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই এবং ঈশ্বরের ভালোবাসার অধিকারী এক সৎ মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে আগ্রহী হই, যে আর ঈশ্বর বা মানুষকে বোকা বানাতে চায় না! আমেন, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতি ধন্যবাদ!
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।