কীভাবে সুসমাচার প্রচারে অসুবিধার মোকাবিলা করতে হয়
আমার পুরো পরিবার ক্যাথলিক ছিল, আর সেখানকার গ্রামের বেশিরভাগই তাই ছিল। কিন্তু যেহেতু আমাদের গ্রামের ক্যাথলিক গির্জায় সভাপতিত্ব করার জন্য কোনো যাজক ছিল না, তাই দীর্ঘ সময় ধরে কেউ গির্জায় বাইবেল অধ্যয়ন করতে যেত না। তারপর ২০২০ সালের ২২শে মে, আমি অনলাইনে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়লাম। ঈশ্বরের বাণী পড়ে, আমি নিশ্চিত হলাম যে প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন, তিনিই অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আর আমি খুশি হয়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করলাম। পরে, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর এই অংশটি পড়লাম: “যেহেতু মানুষ ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, সেহেতু তাকে ঈশ্বরের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করে চলতেই হবে; তাকে সর্বত্র ‘মেষশাবকের অনুসরণ’ করে চলতেই হবে। কেবলমাত্র এই ধরনের মানুষেরাই প্রকৃত পথের অনুসন্ধান করে, কেবলমাত্র এরাই পবিত্র আত্মার কার্যের বিষয়ে অবগত” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কার্য এবং মানুষের অনুশীলন)। আমি জানতাম যে ধর্মবিশ্বাসী হিসাবে, আমাদের ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে জানা উচিত আর ঈশ্বরের পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত। গ্রামে অনেক ধর্মবিশ্বাসী ছিল, তাদের কেউ ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শোনেনি বা প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশুকে স্বাগত জানায়নি, তাই আমি সত্যিই তাদেরকে প্রভুর ফিরে আসার অবিশ্বাস্য খবর জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার একটু ভয় হল। আমার মনে হল যে আমার বয়স বেশি নয় আর কীভাবে সুসমাচার ভাগ করে নিতে হয় তা জানতাম না, তাই তারা নিশ্চয়ই আমার কথা শুনবে না। তাছাড়া তারা বছরের পর বছর ধরে ধর্মবিশ্বাসী, তাই তারা কি প্রভু যীশুর প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আমার সাক্ষ্য শুনবে? তাদের কোনো ধারণা বা বিভ্রান্তি থাকলে তার সমাধান করার জন্য আমি কীভাবে আলোচনা করতে পারি? যদি তারা আমার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা আর সুসমাচার প্রচারের বিরোধিতা করে তাহলে আমি কী করব? আমার সাথে তারা কেমন আচরণ করবে? ভাবলাম যে তারা আমাকে ছোট করে দেখবে, আর বলবে, “তুমি তো অনেক ছোট। এসব প্রচার করতে ছুটোছুটি না করে স্কুলে যাচ্ছ না কেন, বা চাকরি করছ না কেন?” আমি এই বিষয়ে অনেক ভাবলাম, তবে জানতাম যে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়াই ঈশ্বরের ইচ্ছা। সুসমাচার প্রচার আর ঈশ্বরের সাক্ষ্য দেওয়া ছিল আমার কর্তব্য।
তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়ে আমার নিজের আত্মবিশ্বাসকে শক্তিশালী করলাম। তাঁর ভাষাতেই পড়ছি: “তোমার কাঁধের বোঝা, তোমার কাজের ভার, তোমার দায়িত্ব সম্পর্কে কি তুমি সচেতন? তোমার ঐতিহাসিক ব্রত সম্পর্কে তোমার চেতনা কোথায়? পরবর্তী যুগে কিভাবে তুমি মালিকের দায়িত্ব পর্যাপ্তভাবে পালন করবে? মালিকের দায়িত্ব সম্পর্কে তোমার কি দৃঢ় ধারণা আছে? সকল বিষয়ের মালিককে কিভাবে ব্যাখ্যা করবে তুমি? এ কি সত্যিই জগতের সকল প্রাণী এবং বস্তুর মালিক? কাজের পরবর্তী পর্যায়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কী পরিকল্পনা আছে তোমার? কতজন মানুষ তোমাকে তাদের পালক রূপে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে? তোমার কাজের ভার কি বেশি? ওরা গরিব, অভাগা, অন্ধ, বিভ্রান্ত, আর্তনাদ করছে অন্ধকারে—পথ কোথায়? কী আকুল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তারা অপেক্ষা করছে সেই আলোর জন্য যা উল্কার মতো সহসা নেমে এসে দূর করে দেবে অন্ধকারের শক্তিকে যা এত বছর ধরে মানুষের ওপর অত্যাচার করে এসেছে! কে জানতে পারবে কতটা উদ্বেগ নিয়ে তারা এর আশায় বসে আছে, কিভাবে তারা আকুল হয়ে দিনরাত এর জন্য অপেক্ষা করছে? এমনকি যেদিন সেই আলো চকিতে ছুটে যায়, সেদিনও মুক্তির আশা হারানো গভীর যন্ত্রণাক্লিষ্ট এই মানুষগুলো বন্দি হয়ে থাকে অন্ধকার কারাকুঠুরিতে। কখন চোখের জল আর ফেলতে হবে না তাদের? এই দুর্বল আত্মাদের দুর্ভাগ্য অবর্ণনীয়। এরা বিশ্রাম পায়নি কোনও দিন, হৃদয়হীন দাসত্ব বন্ধন আর চরম অসহনীয় অবস্থার মধ্যে তারা আটকে আছে দীর্ঘকাল ধরে। কে শুনেছে তাদের আর্তনাদের শব্দ? কে ভেবেছে তাদের দুর্দশার কথা? কখনও কি তোমার মনে হয়েছে ঈশ্বরের হৃদয় কতটা দুঃখিত, কতটা উদ্বিগ্ন? যে নিষ্পাপ মানবজাতিকে তিনি নিজের হাতে সৃষ্টি করেছেন তাদের এত দুঃখভোগ তিনি কিভাবে সহ্য করবেন? আসলে মানুষ হল বিষ-প্রয়োগের শিকার। এবং মানুষ যদিও আজও টিকে আছে, কে জানত যে অশুভ শক্তি অনেক আগেই মানুষের ওপর বিষ প্রয়োগ করেছে? তুমি কি ভুলে গেছ যে তুমিও সেই শিকারদের মধ্যে একজন? ঈশ্বরকে তুমি ভালোবাসো। তাই যারা আজও টিকে আছে তাদের রক্ষা করার জন্য তুমি কি লড়াই করতে চাও না? যে ঈশ্বর মানুষকে ভালোবাসেন আপন রক্ত-মাংসের মতো, তাঁর ঋণ শোধ করার জন্য তুমি কি চাও না তোমার সমস্ত শক্তি নিয়োগ করতে? সর্বোপরি, তোমার অসাধারণ জীবন যাপনের জন্য ঈশ্বর তোমাকে কাজে লাগাচ্ছেন, এই ব্যাপারটা তুমি কিভাবে ব্যাখ্যা করবে? একজন ধর্মনিষ্ঠ, ঈশ্বর-সেবক মানুষের অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য উপযুক্ত দৃঢ়তা আর আত্মবিশ্বাস কি সত্যিই আছে তোমার?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের প্রতি তোমার কীভাবে অগ্রসর হওয়া উচিত?)। আমি শিখেছি যে সুসমাচার প্রচারই আমাদের কর্তব্য। অনেকে এখনও ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শোনেনি আর তারা জানেই না যে প্রভু ফিরে এসে মানুষকে শুদ্ধ করার জন্য বিচারকার্য করছেন। তারা এখনও শয়তানের ভ্রষ্টাচারে পড়ে দুর্দশায় জীবনযাপন করছে। ঈশ্বর আশা করেন যেন আমরা সবাই তাঁর ইচ্ছার কথা বিবেচনা করে উঠে দাঁড়াতে পারি আর ঈশ্বরের সাথে সহযোগিতা করতে পারি। আমরা যে কোনো সমস্যা বা অসুবিধার সম্মুখীন হই না কেন, আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা আর ঈশ্বরের উপর নির্ভর করা উচিত, রাজ্যের সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে আমরা যা করতে পারি তাই করা উচিত। কিন্তু আমি ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে পারিনি—ভেবেছিলাম যে এত অল্প বয়সে সুসমাচার প্রচার করতে পারব না। ভয় পেয়েছিলাম যে গ্রামবাসীরা আমার কথা শুনবে না আর আমাকে ছোট করে দেখবে, তাই আমি নিজের কষ্ট কল্পনা করে নিজেকেই আটকে রেখেছিলাম, দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত ছিলাম। ঈশ্বরের ইচ্ছা বিবেচনা না করে শুধু নিজের কষ্টের কথা ভাবছিলাম, এইসব অসুবিধার সময়, আমার দায়িত্ব পালন করতে আর দায়িত্ব নিতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, আর তাঁর উপর নির্ভর করার কথা ভাবিনি। যখন আমি ভেবে দেখলাম যে কত মানুষ প্রভুর প্রত্যাবর্তন আর অন্ধকার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আকুল হয়ে রয়েছে, তখন মনের মধ্যে একটা তাগিদ এল। মনস্থির করলাম যে আমি অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে আর সাক্ষ্য দিতে যা করতে পারি সব করব, আমার সমস্ত সময় আর শক্তি সুসমাচারের কাজে লাগাব।
এরপর, আমি তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার পরিকল্পনা করতে শুরু করলাম। প্রথমে আমার বাড়িতে দশটা পরিবারের একটা উপদেশ শোনার জন্য আমি একটা কপি শপে গিয়ে কিছু আমন্ত্রণপত্র ছাপালাম। তারা সবাই বেশ অবাক হয়েছিল, আর আমি যা করছিলাম সে সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলছিল। আমি খুব খুশি হলাম। তারপর ভাবলাম যে যদি অনেক লোক সেই সন্ধ্যায় আসে, তাহলে শুধু আমার ছোট্ট সেলফোন নিয়ে উপদেশ শোনার সময় ঈশ্বরের বাণী পড়া প্রত্যেকের পক্ষে কঠিন হবে। তাই আমার এক বন্ধুকে তার ল্যাপটপ ধার দিতে বললাম। সেই সন্ধ্যায়, ১৩ জন ধর্মকথা শুনতে এসেছিল, আর সবারই সেই সমাবেশে ঈশ্বরের বাণী পড়া বেশ ভাল লাগল। যে পড়তে চাইত সে উঠে দাঁড়িয়ে স্বেচ্ছায় পড়ত, আর তাদের এটা পছন্দও হয়েছিল। সমাবেশের পর সবাই খুব খুশি ছিল। তারা বলেছিল যে ঈশ্বরের বাণীগুলো তাদের চমৎকার ও প্রতিপালনক্ষম মনে হয়েছিল, আর একসাথে ঈশ্বরের বাণী পড়ে খুব ভাল লাগছিল। তারা পরের দিন তাদের পরিবারের লোকেদেরও নিয়ে আসতে চেয়েছিল। ঈশ্বরের বাণী শুনতে সবাই কতটা মুখিয়ে ছিল তা দেখে আমার সত্যিই আনন্দ লাগছিল। কিন্তু সবসময় আমার বন্ধুর ল্যাপটপ ধার করা সম্ভব ছিল না, তাই আমি নিজেই একটা কিনতে চাইছিলাম। কিন্তু আমার সমস্ত টাকা জড়ো করেও দেখলাম সেটা একটা ল্যাপটপ কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল না। মনে হল যেন একটা বিড়ম্বনায় পড়লাম। আশেপাশে জিজ্ঞাসা করার পর, জানতে পারলাম যে প্রজেক্টর কম্পিউটারের চেয়ে সস্তা, তাই একটা প্রজেক্টর কেনার জন্য ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, যাতে অন্য গ্রামবাসীরা সেইভাবে ঈশ্বরের বাণী পড়তে পারে। আমি ঋণ নিতে কাউন্টি সীটে গেলাম এবং একটা প্রজেক্টর কিনলাম। পরবর্তী সমাবেশ শুরু করার আগে আমি সবকিছু গুছিয়ে নিলাম। অনেক আগেই গ্রামবাসীরা হাজির হতে থাকে। উনিশজন এসেছিল, পুরো ঘর ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। সেই মুহূর্তে আমি বুঝতে পারলাম যে ঈশ্বরই সব ব্যবস্থা করেছেন, আর খুব উত্তেজিত ছিলাম। আমি স্পীকার খুঁজতে ছুটে গেলাম যাতে সবাই ঈশ্বরের বাণী শুনতে পায়। প্রভুর প্রত্যাবর্তনের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো কীভাবে পূর্ণ হয়েছে আমি সেই সত্য নিয়ে আলোচনা করলাম, কীভাবে তাঁকে স্বাগত জানাতে হয়, কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন, এসব নিয়ে আলোচনা করলাম, আর বললাম যে ঈশ্বর এসেছেন সব রকম মানুষের আসল রূপ তুলে ধরতে। উপস্থিত লোকেরা সবাই উৎসাহ নিয়ে ঈশ্বরের বাণীপাঠে অংশ নিচ্ছিল, আর কিছু বাচ্চাও ঈশ্বরের বাণী পড়তে উৎসাহী ছিল। তারা ঈশ্বরের বাণী শোনার জন্য কতটা ব্যাকুল ছিল তা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম যে এসবই ঈশ্বরের কাজ। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরেও কিছু লোক ছিল, বলেছিল যে তারা সত্যিই এটা উপভোগ করেছিল। গ্রামপ্রধান আর অন্যরাও খুব প্রভাবিত হয়েছিল, আর গ্রামপ্রধান চেয়েছিল যে সমস্ত স্থানীয় মানুষ ঈশ্বরের বাণী শোনার জন্য আসুক। ব্যাপারটা আশ্চর্যের হলেও ভালই ছিল। এসব দেখে আমার ধ্যানধারণা আর কল্পনা সম্পূর্ণভাবে ভুল প্রমাণিত হল—লজ্জা হচ্ছিল। আমি সত্যিই ঈশ্বরের কাজ আর তার মার্গদর্শন প্রত্যক্ষ করলাম, আর সুসমাচার ছড়ানোর জন্য আরও বিশ্বাস পেলাম। এরপর থেকে আমি গ্রামবাসীদের প্রতিদিন উপদেশ শোনার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে লাগলাম, আরও বেশি করে লোক আসতে লাগল। তারা সবাই রোমাঞ্চিত হয়ে বলল, “আমি এর আগে এমন কিছু পড়িনি। ঈশ্বর অবতাররূপে ফিরে এসেছেন আর আমরা তাঁর সাথে মুখোমুখি দেখা করতে পারি। আমরা খুব ভাগ্যবান যে প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারছি।” তারা আশেপাশের মফস্বল থেকে আরও লোকেদের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য একটা অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করল। তারা আমাকে বলল, “তোমার বয়স কম, তাও গ্রামবাসীদের জন্য এটা করছ, আমাদের ঈশ্বরের বাণী শুনতে সাহায্য করছ আর এত নিষ্ঠার সঙ্গে করছ। এর আগে কেউ আমাদের জন্য এরকম কিছু করেনি। আমরা কখনও ভাবিনি তোমার মত কম বয়সের কেউ এটা করবে—সত্যিই দুর্দান্ত।” আমি জানতাম এটা পুরোপুরি ঈশ্বরের কাজ, এটা ভেবেই উত্তেজিত লাগছিল আর আমার বিশ্বাস আরো শক্তিশালী হয়েছিল।
নতুন বিশ্বাসীদের জলদান করার সময় নানান অসুবিধায় পড়েছিলাম। মাঝে মাঝে আমার ইন্টারনেট কানেকশন ভাল থাকত না বলে আমাকে সমাবেশ করার জন্য ঘরে ঘরে যেতে হত। তার চেয়েও খারাপ ব্যাপার ছিল যে ওখানে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল, আর বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলো কাদা হয়ে যেত, তখন সেগুলোর উপর হাঁটা কঠিন হত। জলদান করার জন্য আমায় ব্যস্ত হয়ে বাড়ি বাড়ি দৌড়োতে হতো। মাঝে মাঝে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই আমি কোনো নতুন ধর্মবিশ্বাসীর বাড়িতে ছুটে যেতাম, আর তারা তখনও বাড়ি না ফেরায় আমাকে অপেক্ষা করতে হত। তারপর যখন আমি তাদের সাথে আলোচনা শেষ করতাম, ততক্ষণে বাড়ির রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। এত পরিশ্রমের পর আমার নেতিবাচক বোধ হত আর দুর্বল বোধ করতাম, তাই প্রার্থনা করতাম আর ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করতাম। তারপর আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে এটা পড়লাম: “নিরুৎসাহিত হয়ো না, দুর্বল হয়ো না, আমি তোমার জন্য সবকিছু সহজ করে দেব। রাজ্যের পথ মসৃণ নয়; কোনোকিছুই এত সহজ নয়! তোমরা চাও খুব সহজেই তোমাদের কাছে আশীর্বাদ আসুক, তাই নয় কি? আজ, সবাইকে তিক্ত পরীক্ষাসমূহের সম্মুখীন হতে হবে। এই পরীক্ষাসমূহ ব্যতীত, আমার জন্য তোমাদের প্রেমময় হৃদয় আরো শক্তিশালী হয়ে বিকশিত হবে না এবং আমার জন্য তোমাদের প্রকৃত ভালোবাসা থাকবে না। এমনকি, যদিও এই পরীক্ষাগুলি খুব সাধারণ ঘটনা সংক্রান্তও হয়ে থাকে তাহলেও, এগুলির মধ্যে দিয়েই সকলকে উত্তীর্ণ হতে হবে; তবে পরীক্ষাগুলি কতটা কঠিন হবে তা ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করছে। পরীক্ষাগুলি আমাকৃত আশীর্বাদ, এবং তোমাদের মধ্যে কতজন আমার সম্মুক্ষে এসে নতজানু হয়ে আমার আশীর্বাদ ভিক্ষা করেছ? বোকা সন্তানের দল! তোমরা সবসময় মনে করো আমার কয়েকটি শুভ বাক্যই আমার আশীর্বাদ, কিন্তু এটা স্বীকার করো না যে তিক্ততাও আমারই এক আশীর্বাদ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ৪১)। “দুঃখকষ্টের সম্মুখীন হলে, তোমাকে অবশ্যই দৈহিক উদ্বেগকে দূরে রাখতে এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করতে সক্ষম হতে হবে। … তোমার প্রকৃত আত্মিক উচ্চতা যাই হোক না কেন, তোমার মধ্যে অবশ্যই প্রথমে কষ্ট সহ্য করার ইচ্ছা এবং প্রকৃত বিশ্বাস দুটোই থাকতে হবে, এবং অবশ্যই দৈহিক বাসনা ত্যাগ করার ইচ্ছাও থাকতেই হবে। ঈশ্বরের ইচ্ছাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তোমার ব্যক্তিগত দুঃখকষ্ট সহ্য করা এবং ব্যক্তিস্বার্থের ক্ষতি বহনে ইচ্ছুক হওয়া উচিত। তোমাকে অবশ্যই অন্তরে নিজের সম্পর্কে অনুশোচনা অনুভব করতে সক্ষম হতে হবে: অতীতে, তুমি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম ছিলে, এবং এখন, আত্ম-অনুশোচনা করতে পারো। তোমার মধ্যে যেন অবশ্যই এই বিষয়ে কোনপ্রকার অভাব না থাকে—বিষয়সমূহের মাধ্যমেই ঈশ্বর তোমাকে নিখুঁত করবেন। তুমি এই মানদণ্ড পূরণ করতে না পারলে, তোমাকে নিখুঁত করা যাবে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যাদের নিখুঁত করা হবে তাদের অবশ্যই পরিমার্জনা ভোগ করতে হবে)। ঈশ্বরের বাক্য আমাকে উৎসাহিত করত আর সান্ত্বনা দিত, যেন আমি মনখারাপ না করি বা দুর্বল না হয়ে পড়ি, ঈশ্বর আমাকে পথ দেখাবেন আর সাহায্য করবেন। সুসমাচার প্রচার করতে গিয়ে কিছু শারীরিক অস্বস্তি হয়েছিল আর কিছুটা মূল্যও দিতে হয়েছে, তবে সেসব ছিল অর্থপূর্ণ আর মূল্যবান, সবচেয়ে ন্যায়পরায়ণ কাজ, আর এসব করেই ঈশ্বরের অনুমোদন আর আশীর্বাদ সবচেয়ে বেশি লাভ করা যায়। আমি পিতর, মথি আর প্রভু যীশুর অন্যান্য প্রচারকদের কথা ভাবছিলাম যাঁরা সুসমাচার প্রচার করতে অনেক কষ্ট করেছিলেন, আর কেউ কেউ সুসমাচার প্রচারের চেষ্টা করতে গিয়ে মারাও গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন আর কখনও পিছপা হননি। তাঁদের তুলনায় আমি যে সামান্য কষ্ট পেয়েছি তা উল্লেখ করার মতো ছিল না। আমার অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়েছে, আর রাজ্যের সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমার দায়িত্ব পালন করতে পারার পিছনে ছিল ঈশ্বরের মহত্ত্ব আর অনুগ্রহ। একটু কষ্টের ভয়ে নিজের শরীরের কথা ভাবলে চলত না। আমি কষ্ট করার ইচ্ছা থাকতেই হত। কোনো অসুবিধায় পড়ে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়লে চলত না। এমনকি শারীরিক অস্বস্তি হলেও, সুসমাচার ছড়াতে আর ঈশ্বরের কাজের সাক্ষ্য দিতে, ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমার দায়িত্ব পালন করতে মনস্থির করেছিলাম।
পরে একসময় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, আর বেশ কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডা লেগেছিল। সন্ধ্যায় আমার জ্বর, মাথাব্যথা আর পেটব্যথা হত। এমনকি কথাও বলতে পারতাম না। একজন ভগিনী আমার খারাপ অবস্থা দেখে বলল, “তোমার আজকের রাতের সমাবেশে যাওয়া উচিত নয়।” আমি তখন রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু পরে যখন ভাবলাম যে নতুন ধর্মবিশ্বাসীরা নিজেরাই সমাবেশ করবে, তখন অস্বস্তি লাগছিল। ভাবছিলাম যে অসুস্থ বোধ করা আমার জন্য একটা পরীক্ষা ছিল, তখনও আমাকে নিজের দায়িত্ব ভালভাবে পালন করতে হত। মনে আছে এর আগেও একবার আমি অসুস্থ হয়েছিলাম আর আমার পায়ে আঘাত লেগেছিল, কিন্তু তখনও ফুটবল খেলতে যেতাম। তাহলে এখন কেন আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারব না? এই ভেবে আমি মোটরসাইকেলে চেপে সমাবেশে গেলাম। আশ্চর্যজনকভাবে, আমি যখন পৌঁছলাম তখন অসুস্থ বোধ করিনি। খুব খুশি হয়েছিলাম। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে আমি ভালো হয়ে গিয়েছিলাম।
পরে, এক মাসেরও বেশি পরিশ্রমের পর, যারা মফস্বলের বাইরে কাজ করত তাদের বাদ দিয়ে বেশিরভাগ গ্রামবাসী, অন্তিম সময়ের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সুসমাচার গ্রহণ করেছিল। পরে ভাবলাম, যদিও আমি সমস্ত গ্রামবাসীর কাছে সুসমাচার ছড়িয়ে দিতাম, তবে সেটা ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণের পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। আমি চেয়েছিলাম আরও লোক ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনুক, কারণ এখনও অনেকেই আছে যারা জানে না যে প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন, অনেক সত্য প্রকাশ করছেন, আর মানবজাতিকে শুদ্ধ করে বাঁচানোর কাজ করছেন। তাই আমি অন্য গ্রামে সুসমাচার ছড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। মনে মনে প্রার্থনা করলাম, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, দয়া করে আমাকে পথ দেখান যাতে আমি বিশ্বাস না হারিয়ে এগিয়ে যেতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে যে আমি যে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হই না কেন আপনি আমাকে সাহায্য করবেন।” তারপর, আমি সুসমাচার ছড়াতে পাশের একটা গ্রামে গেলাম। তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমি ৩০ মিনিট ধরে কাদা রাস্তায় নিচের দিকে হেঁটেছিলাম, কিন্তু প্রথম তিনটে বাড়ির সবাই, তাদের সময় নেই বলে ভদ্রভাবে আমাকে ফিরিয়ে দিল। আমি সত্যিই হতাশ আর নিরুৎসাহিত বোধ করেছিলাম। সেই রাতে অনেক দেরিতে বাড়ি ফিরেছিলাম। আমার সুসমাচার প্রচার কেমন হয়েছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে ভগিনী অ্যানি আমাকে ফোন করেছিল, এছাড়া সে আমার সাথে ঈশ্বরের বাণী নিয়ে আলোচনা করেছিল, আমাকে উৎসাহিত আর সাহায্যও করেছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীতে আমি পড়েছিলাম। “যা আমি এখন চাই তা হল তোমার আনুগত্য ও আজ্ঞাকারিতা, তোমার ভালোবাসা ও সাক্ষ্য। যদিও বা তুমি এই মুহূর্তে না জানো সাক্ষ্য কী অথবা ভালোবাসা কী, তোমার নিজের সবকিছু আমার কাছে আনা উচিত, এবং আমাকে তোমার একমাত্র সম্পদ নিবেদন করা উচিত: তোমার আনুগত্য ও আজ্ঞাকারিতা। তোমার জানা উচিত যে আমার দ্বারা শয়তানের পরাজয়ের সাক্ষ্য মানুষের বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের মধ্যেই আছে, যেমন আমার মানুষকে সম্পূর্ণ জয় করার সাক্ষ্য। আমার প্রতি তোমার বিশ্বাসের কর্তব্য হল আমার সাক্ষ্য দেওয়া, আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকা, অন্য কারোর প্রতি নয়, এবং শেষ পর্যন্ত অনুগত থাকা। আমি আমার কাজের পরবর্তী ধাপ শুরু করার আগে তুমি কীভাবে আমার সাক্ষ্য দেবে? কীভাবে তুমি আমার প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত হবে? তুমি কি তোমার সম্পূর্ণ বিশ্বস্ততা তোমার কাজে ন্যস্ত করবে, নাকি সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে দেবে? তুমি কি নিজেকে আমার প্রতিটি ব্যবস্থায় (তা যদি মৃত্যু ও ধ্বংসও হয়) সম্পূর্ণ নিবেদন করবে, নাকি আমার শাস্তি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য মাঝপথে পালাবে? আমি তোমাকে শাস্তিদান করি যাতে তুমি আমার সাক্ষ্য দাও, এবং আমার প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত থাকো। অধিকন্তু, এই সময় শাস্তিদান হল আমার কাজের পরবর্তী ধাপে পৌঁছনোর উপায় এবং আমার কাজকে বাধাহীনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায়। তাই আমি তোমায় প্রাজ্ঞ হতে এবং নিজের জীবনকে ও নিজের অস্তিত্বের তাৎপর্যকে গুরুত্বহীন বালুকণা রূপে গণ্য না করার উপদেশ দিচ্ছি। তুমি কি জানতে পারো আমার ভবিষ্যতের কাজ ঠিক কী হবে? তুমি কি জানো আমি আগামী দিনগুলিতে কীভাবে কাজ করব ও কীভাবে আমার কাজ উন্মোচিত হবে? আমার কাজের বিষয়ে তোমার অভিজ্ঞতার তাৎপর্য, এবং, তদুপরি আমার প্রতি তোমার বিশ্বাসের তাৎপর্য তোমার জানা উচিত। আমি এত কিছু করেছি, কী করে আমি মাঝপথে ছেড়ে দিই, যেমনটা তুমি কল্পনা করো? আমি এত বিস্তৃত কাজ করেছি, কী করে আমি তা ধ্বংস করি? আমি প্রকৃত অর্থেই এই যুগের অন্ত করতে এসেছি, নতুন কাজ শুরু করতে, এবং, সর্বোপরি, রাজ্যমূলক সুসমাচার প্রসার করতে এসেছি। সুতরাং তোমার জানা উচিত বর্তমান কাজ শুধুমাত্র একটি যুগ শুরু করতে এবং আগামী দিনের সুসমাচার প্রচার করতে ভিত্তি স্থাপনের ও ভবিষ্যতে একটি যুগ শেষ করার কাজ। তুমি যেমনটা মনে করো, আমার কাজ ততটা সরল নয়, তা মূল্যহীন আর গুরুত্বহীনও নয়, যেমনটা তুমি বিশ্বাস করো। সেই জন্য আমাকে এখনো তোমায় বলতে হবে, তোমার নিজের জীবন আমার কাজে সমর্পণ করা উচিত, এবং, তদুপরি, তোমার নিজেকে আমার গৌরবে নিবেদন করা উচিত। আমি বহুদিন ধরেই আকাঙ্ক্ষা করেছি তুমি আমার সাক্ষ্য দেবে, এবং আরো দীর্ঘ দিন ধরে আমি আকাঙ্ক্ষা করেছি যে তুমি আমার সুসমাচার প্রচার করবে। তোমাকে বুঝতে হবে আমার হৃদয়ে কী আছে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তুমি বিশ্বাস সম্পর্কে কী জানো?)। ঈশ্বরের এই বাক্য পাঠ করে কিছুটা শক্তি পেলাম। মনে হল যেন ঈশ্বর আমাকে বলছেন যে আমার তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখা উচিত, আর যতই সমস্যার সম্মুখীন হই না কেন, দুর্বল বা নেতিবাচক হলে হবে না, নিরুৎসাহিত বা হতাশ হলে চলবে না, কারণ ঈশ্বর আমাদের পথ দেখাচ্ছেন। যতদিন আমি ঈশ্বরের ইচ্ছার কথা মাথায় রেখে, তাঁর রাজ্যের সুসমাচার প্রচারে যাচ্ছি, ততদিন তিনি আমার জন্য পথ খুলে দেবেন। ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে আমি দেখলাম যে সুসমাচার ছড়ানোর পথ সহজ নয়, এর জন্য কষ্ট করতে আর মূল্য দিতে হয়। নোহ ১২০ বছর ধরে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন আর লোকেরা তাঁকে উপহাস করেছিল, নিন্দা করেছিল আর কলঙ্কিত করেছিল। তিনি কত কষ্ট পেয়েছিলেন, আর যদিও তিনি কাউকে ধর্মান্তরিত করেননি, তবে তিনি তখনও হাল ছেড়ে দেননি বা দুর্বল হয়ে পড়েননি—তিনি সুসমাচার প্রচার করতে থাকেন। নোহ তাঁর ভক্তি আর ঈশ্বরের প্রতি সমর্পণে দৃঢ় ছিলেন। তিনি সৃষ্ট সত্ত্বা হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করে, ঈশ্বরের অনুমোদন আর আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। ঈশ্বর যখন বিশ্ব ধ্বংস করতে বন্যা পাঠিয়েছিলেন, তখন নোহের আটজনের পরিবারকে কিন্তু ঈশ্বর রক্ষা করেছিলেন। তাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন। তারপর আমার কথা ভাবলাম, আমি মাত্র তিনটে পরিবারকে সুসমাচার শুনিয়েছি আর যখন তারা তা গ্রহণ করেনি তখনই আমার মনখারাপ হয়েছিল। ঈশ্বরের প্রতি আমার সত্যিকারের বিশ্বাস ছিল না। আসলে, ঈশ্বর এই অবস্থা, এই অসুবিধা আমার উপর আসতে দিয়েছিলেন, যেহেতু তিনি তাঁর প্রতি আমার বিশ্বাস আর ভক্তিকে নিখুঁত করতে চাইছিলেন। তাই তারা সুসমাচার গ্রহণ করুক বা না করুক, আমাকে সুসমাচার প্রচার করে যেতে হত। এটা আমার কর্তব্য ছিল।
ঈশ্বরের বাণী আমাকে শক্তি দিয়েছিল। পরের দিন সুসমাচার ছড়াতে অন্য আরেকটা গ্রামে গেলাম। তখন একটা প্রার্থনাও করেছিলাম, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে অনুরোধ করছিলাম যাতে তাঁর বাণী বোঝার জন্য সম্ভাব্য সুসমাচার প্রাপকদের জ্ঞান দেন। সেই সন্ধ্যায়, আমি একজনকে সুসমাচার শুনতে আগ্রহী দেখলাম, আরো কী, তারপর, সুসমাচার শোনানোর জন্য অন্যদেরও পেলাম, আর সেই রাতেই ছয় জনকে ধর্মান্তরিত করলাম। আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম, কারণ কিছু সুসমাচার প্রাপক ক্যাথলিক ছিল আর তাদের নানা রকমের ধ্যানধারণা ছিল, কিন্তু যখন আমি তাঁদের সাথে ঈশ্বরের বাণী নিয়ে আলোচনা করলাম তখন তারা বুঝতে পারল, আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের সুসমাচার গ্রহণ করল। তারপর অন্য জায়গায় গেলাম, আর যখনই সুসমাচার প্রচার করতে যেতাম তখনই প্রার্থনা করতাম, ঈশ্বরকে বলতাম যে আমাকে তিনি যেন জ্ঞান দেন আর পথ দেখান, যাতে কীভাবে প্রচার করতে হয় আর ঈশ্বরের বাণীর সাক্ষ্য দিতে হয় তা জানতে পারি। যত বেশি মানুষ ঈশ্বরের সুসমাচার গ্রহণ করেছে, আমার বিশ্বাসও তত বেড়েছে। যদিও মাঝে মাঝে আমি যখন অপরিচিতদের কাছে প্রচার করতে অন্য গ্রামে যেতাম তখন কিন্তু একটু লজ্জা আর ভয় পেতাম, ঈশ্বরের বাণীর মার্গদর্শন আমাকে আত্মবিশ্বাস আর এসবের মুখোমুখি হওয়ার সাহস দিয়েছিল। আমি জানতাম যে আমাকে তাদের সাথে আলোচনা করতেই হবে, এটা আমার কর্তব্য, আর যদি আমি তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার না করতাম, তাহলে আমার অভ্যাস করার আর সুযোগ থাকত না, আরো শিখতে পারতাম না, আর সত্যলাভও হত না। তারপর, ক্রমাগত সুসমাচার প্রচারের অভ্যাস করতে করতে, আর ততটা নার্ভাস হতাম না আর ভয়ও পেতাম না, সেইসঙ্গে দর্শনের সত্য আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছিলাম। নিজেকে সত্যিই স্বচ্ছন্দ আর মুক্ত মনে হত।
সুসমাচার ছড়ানোর এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমি সত্যিই অনেক কিছু পেয়েছি। যদি এই সব অভিজ্ঞতা না পেতাম, তাহলে ঈশ্বরের সর্বশক্তিমান আধিপত্য বুঝতে পারতাম না, আর নিজের দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব বা কষ্টের মধ্য দিয়ে কীভাবে ঈশ্বরের সন্ধান করতে পারি তাও শিখতে পারতাম না।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।