কীভাবে আমি অহংকার থেকে মুক্তি পেলাম
২০১৯ সালের জুন মাসে আমি অন্তিম সময়ের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করি এক বছর পরে আমি গির্জার নেতা নির্বাচিত হই। অনুশীলনের এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলাম, আর তাই আনন্দের সঙ্গে আমার কর্তব্য পালনে মনোযোগ দিই, তা অনুসরণ করি এবং কাজ বুঝতে পারি এবং আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সমস্যার সমাধান করি। কিছুদিন পরে, অধিকাংশ নবাগতই স্বাভাবিকভাবে সমাবেশে যোগ দিত, তারা সুসমাচার প্রচার করত এবং নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করত। আমার অন্যান্য কাজেরও মোটামুটি একটা ভালো ফল দেখা যাচ্ছিল। আর আমি কিছুটা গর্বিতও বোধ করছিলাম। আমি ভাবছিলাম, “আমার নেতৃত্বে বাস্তব সমস্যাগুলোর সব চটজলদি সমাধান হয়ে যাচ্ছিল, আর আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমাকে শ্রদ্ধা করে। আগের নেতার চেয়ে আমি নিশ্চয়ই অনেক ভালো।”
একটি সমাবেশের পরে, একজন ভগিনী বলে যে গির্জায় মানুষকে গ্রহণ করার নীতি সে এখনও বুঝতে পারছে না এবং সে আমার সহকারিতা চায়। আমার সহযোগী ভগিনী ইলিনাও তা শুনতে চায়, সুতরাং সেই নীতি নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করি এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দিই। আলোচনার পর, আমি শুনলাম অধিকাংশ ভ্রাতা ও ভগিনীরাই বলছে যে তারা বুঝতে পেরেছে, যা আমাকে খুবই আনন্দ দেয় এবং আমার মনে হয় এইসব সমস্যার সমাধান আমার পক্ষে সহজ। ধীরে ধীরে আমি উদ্ধত হয়ে উঠলাম। যখন আমি অন্য কারো কাজ পরিদর্শন করতাম, আমি দেখতাম কয়েকজন নেতা তাদের দলের পরিস্থিতি বুঝতে পারছে না এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনে গড়িমসি করছে, আর এতে আমি অধৈর্য হয়ে পড়তাম, আর তাই তাদের তিরস্কার করতাম এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইতাম না। যখন আমি দেখলাম যে কেউ কেউ আমার কথায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়ছে, এর আগে যখন বুঝতাম যে আমি রাগ প্রকাশ করে ফেলেছি তখন একটু অপরাধবোধে ভুগতাম। কিন্তু পরে আমি ভাবলাম, “আমি গির্জার হয়ে কাজ করছি, এবং কঠোর না হলে আমি ফলাফল পাবো না।” এরপরে আমি আর নিজেকে নিয়ে ভাবিনি, এবং বিষয়টি তখনকার মতো মিটে যায়।
সুসমাচার সংক্রান্ত এক সমাবেশের আগে আমি সমাবেশের বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সিঞ্চনকারী দলের নেতার সঙ্গে দেখা করি। প্রথমে আমি তাদের মতামত জানানোর কথা বলি, কিন্তু দীর্ঘ সময় পরেও কেউ কোনো কথা বলেনি, আর মাত্র একজন ভগিনী সামান্য আলোচনা করে। সেই সময়, আমি খুব রেগে যাই। আমার মনে হয়েছিল এরা সকলে এতই অকর্মণ্য যে কেউ সমাবেশের বিষয়টিও বলতে পারছে না, তাদের উপর আমি আর রাগ সংবরণ করতে পারছিলাম না, কিন্তু আমার আশঙ্কা ছিল, এর প্রভাব সেই সন্ধ্যার সমাবেশে পড়বে, তাই, মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। আমি ভাবলাম “এদের কারোরই কোনো মতামত নেই, তাই আমিই প্রথমে আলোচনা করব। সমাবেশে সকলেই যদি আমার ধারণার ভিত্তিতে আলোচনা করে, তাহলে আমরা কিছুটা ফলাফল অর্জন করতে পারবো।” এই কথা ভেবে, আমি শান্তভাবে আমার ভাবনা নিয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি। আমি বলি, এই সমাবেশ সত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আবর্তিত, তাই তাদের প্রথমে একটি এবং পরে আর একটি বিষয়ের উপর আলোচনা করা উচিত এই কথা বলে আমি আরো বলি, “তোমরা যদি মনে করো আমি যা বলছি তা উপযুক্ত, তাহলে স্বচ্ছন্দে তা ব্যবহার করো, কিন্তু তোমাদের কাছে যদি আরো ভালো ধারণা থাকে তাহলে তোমরা তোমাদের মতো করে আলোচনা করতে পারো।” কিন্তু সমাবেশে, আমি দেখলাম, আমার নির্দেশ অনুযায়ী কয়েকজন ভগিনী কোনো কথাই বলল না, আর বাকিরা সক্রিয়ভাবে আলোচনাই করলো না। আমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলাম এবং রাগ আমার বশে থাকছিলো না, কিন্তু আমার আশঙ্কা হচ্ছিল, এতে সমাবেশে আসা নতুন সদস্যরা অপ্রস্তুত হয়ে পড়তে পারে আমি কোনোমতে রাগ সংবরণ করলাম। সমাবেশের পরে আমরা প্রত্যাশিত ফলাফল পাইনি, আর আমার খুব দুঃখ হল। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে, আমি বললাম, “আজকের সমাবেশের ফলাফল সম্পর্কে তোমাদের কী প্রতিক্রিয়া? কী সমস্যা বা ঘাটতি তোমাদের চোখে পড়ল তা আমাকে বলো।” একজন ভগিনী বললো, সে আলোচনার জন্য নিজের মনকে যথেষ্ট শান্ত করতে পারেনি, কয়েকজন ভগিনী বলে যে সমাবেশটি খুবই স্বল্প সময়ের ছিল, এবং অন্যান্যরা একইভাবে বলে যে সমাবেশে যথেষ্ট সময় ছিলো না…। এই কথা শুনে আমার আবার খুব রাগ হল। আমি ভাবলাম, “আমি তোমাদের ত্রুটিগুলি নিয়ে শান্তভাবে তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা নিজেদের সমস্যা নিয়ে ভাবতে পারোনি, তার ওপর নানান, অজুহাতও খুঁজেছ। আমার সত্যিই তোমাদের একটা শিক্ষা দেওয়া উচিত।” এরপরে, আমি তাদের ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ পাঠাই এবং তাদের সমালোচনা করার জন্যই সেটি ব্যবহার করি। আমি বলি, সমাবেশের বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় তারা খুবই নিষ্ক্রিয় ছিল এবং তারা অজুহাত খাড়া করেছে এবং সমাবেশ ঠিকমত না হওয়ার পরেও নিজেদের নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেনি। কোনো ভ্রাতা বা ভগিনী একটি শব্দও উচ্চারণ করার সাহস দেখায়নি। পরে আমি ভাবি, যে আমার কথাগুলো কি খুব রূঢ় ছিল। ভ্রাতা ও ভগিনীদের সঙ্গে এইরকম আচরণ করা ঠিক হয়নি। কিন্তু তারপর আমি ভাবি, “তারা যাতে নিজেদের বুঝতে পারে সেইজন্যই আমি এটা করেছি।” আমার মনে হয়েছিল যে যে আমি ঠিক কাজই করেছি এবং আমার নিজের সমস্যা নিয়ে আমি ভাবিনি। এরপরে, আমি আমার নেতাকে জানাই যে সিঞ্চনকারীদের কর্মদক্ষতা কম এবং নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। তিনি যেন আমার কাছে ভালো সিঞ্চনকারীদের পাঠান। এবং আমি এমনকি একজন সিস্টারকে বরখাস্তও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার নেতা আমার সঙ্গে আলোচনা করে বললেন, “কয়েকদিন হল তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েছে, তাছাড়া তাদের আত্মিক উচ্চতাও খুব একটা বেশি নয়। তাদের কাছ থেকে আমরা খুব বেশি কিছু আশা করতে পারি না এবং আমাদের সাহায্য ও সহকারিতা তাদের প্রয়োজন।” তিনি আরো জানান যে, অনেক নবাগতই সম্প্রতি ঈশ্বরের নতুন কাজ গ্রহণ করেছে, তাই আমার জন্য এখন কোনো সিঞ্চনকারী দেওয়া সম্ভব নয়। একথা শুনে আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাজি হই।
পরে, আমি দেখলাম যে আমার সহযোগী ইলিনা কাজের বিষয়ে আমার সঙ্গে খুব বেশি কথা বলেনা। কাজের বিষয়ে কোনো সমস্যার কথাই সে আমাকে বলতে চাইত না এবং অনেকবারই সহকর্মী সমাবেশে বহু কর্মীই সক্রিয়ভাবে আলোচনা করেনি, এতে আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি কয়েকদিন পরেই আমার নেতা আমার সমস্যাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন, “ইলিনা জানিয়েছে যে সমাবেশে মানুষকে তিরস্কার করা ও তাদের মোকাবিলা করার একটা প্রবণতা তোমার রয়েছে এইভাবে আলাপ-আলোচনা করলে মানুষ অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে, তাই তোমাকে এই নিয়ে যথাযথভাবে ভাবতে হবে…।” আমি ভাবলাম, “আমি তাদের সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করছিলাম। তারা নিজেদের সম্পর্কে জানেনা আর এখন বলছে যে তারা অপ্রস্তুত বোধ করছে, কিন্তু আমি তাদের কখনো অপ্রস্তুত বোধ করতে বলিনি। যদি তারা অপ্রস্তুত বোধ করে তাহলে সেটা তাদের নিজেদের সমস্যা।” পরে, আমার অপরাধবোধও হল, এবং আমি বুঝতে পারলাম যে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সঙ্গে সহযোগিতা করার সময় আমি আমার কলুষিত স্বভাব দেখিয়েছি, যার ফলে তারা অপ্রস্তুত বোধ করেছে। আমি ইলিনার সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনার জন্য গেলাম, এবং আমি বললাম, “আমি এমন একজন মানুষ যে সরাসরি কথা বলে, আর প্রায়ই রেগে যায়। মাঝে মাঝে আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের দুর্নীতি ও ঘাটতির যথাযথ ব্যবস্থা নিই না, এবং আমি মানুষের সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলি, যা তাদের অপ্রস্তুত করে দেয়।” আমি অবাক হয়ে গেলাম যখন ইলিনা বলল যে “আমার মনে হয় তুমি দাম্ভিক, নিজের নৈতিকতা নিয়ে উদ্ধত এবং তোমার ভয়ানক মেজাজ, আর তুমি সকলকে অবজ্ঞা এবং তিরস্কার করে আনন্দ পাও।” এই কথা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। আমি ভাবি, “আমি মানছি আমি উদ্ধত, কিন্তু আমি একেবারেই তোমাদের কাউকে অবজ্ঞা করিনি! আমি এখনই তোমার সঙ্গে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করছি, কিন্তু তুমিও নিজেকে জানোনা, আর এখন আমার সমস্যা খুঁড়ে বার করছো।” নিজের সমালোচনা আমি সহ্য করতে পারিনি, তাই আমিও কর্তব্যপালনে তার কিছু ত্রুটির কথা তুলে ধরলাম। কিন্তু ইলিনা যখন তৎক্ষণাৎ আমার কথাগুলো মেনে নিল তখন আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি লজ্জিত বোধ করলাম, কিছুটা অস্বস্তিতেও পড়লাম, তাই আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম এই কথা বলতে, “ঈশ্বর, আমি জানি এই বিষয়টি আপনার সমন্বয়সাধন এবং ব্যবস্থাপনার অংশ। আমার ভগিনী আমার সমস্যার কথা জানিয়েছে, কিন্তু আমি তা স্বীকার অথবা গ্রহণ করতে পারিনি। ঈশ্বর, দয়া করে আমাকে আলোকিত করুন এবং নিজের সম্পর্কে ভাবতে সাহায্য করুন।”
তারপর, ইলিনার কথা অনুযায়ী আমি দাম্ভিক, নিজের নৈতিকতা নিয়ে উদ্ধত এবং অন্যকে অবজ্ঞা করি, আমি ভাবতে শুরু করি, কিন্তু এই নিয়ে প্রায় তিনদিন ভাবনাচিন্তা করার পরও আমি তা দেখতে পেলাম না আমি ইলিনার কাছে যাই এবং তাকে বলি সবকিছু আমাকে বুঝিয়ে বলতে। সে বলে, “শেষবার সমাবেশের সার সংক্ষেপ আলোচনার সময়, তুমি আমাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট সমস্যা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করোনি, তুমি হঠাৎ করেই আমাদের সকলের মোকাবিলা করতে শুরু করে দাও।” আমি ভাবলাম, “শুধু এই একবারের জন্য তুমি বলছো আমি দাম্ভিক, এবং অন্যকে অবজ্ঞা করতে চাই?” আমি বুঝিয়ে বলি, “তোমাদের মোকাবিলা করার জন্য আমারও একটি যুক্তি ছিল। প্রথমে আমি ভুলগুলো খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম, যখন দেখলাম তোমরা কেউই নিজেদের চেনোনা, তখনই আমার মাথা গরম হয়ে গেল।” আমি ভেবেছিলাম ইলিনা বুঝতে পারবে, কিন্তু সে সঙ্গে সঙ্গে বলল, “আমার মনে হয়, তুমি খুবই দাম্ভিক। তুমি নিজের ধারণাকেই সত্যি বলে মনে করো আর দাবি করো যে সকলেই তোমার কথা শুনবে।” তার মুখে একথা শুনে শুনে আমি কেবলই বিভ্রান্ত বোধ করি। আমার মনে হল, আমি ভুল শুনলাম, তাই নিশ্চিত হতে তাকে আবার জিজ্ঞাসা করলাম, এবং সে স্পষ্টভাবে আমাকে বলল, “সেটা ঠিক।” আমার ভয় করতে লাগলো আর আমি ভাবলাম, “ও যা বলছে তা একেবারেই অর্থহীন! আমার এত কীকরে দুঃসাহস হবে যে আমি ভাববো আমার ধারণাই সত্যি? আমি কখনও সেইভাবে ভাবিনি।” কিন্তু আমি জানতাম, আমার এইভাবে সমালোচিত হওয়ার পিছনে ঈশ্বরের কোনো সু-অভিপ্রায় আছে, তাই আমি দ্রুত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম এবং তাঁকে বললাম আমাকে আলোকিত করুন যাতে আমি নিজেকে নিয়ে ভাবতে এবং নিজেকে জানতে পারি।
পরে, নিষ্ঠাপালনের সময় আমি ঈশ্বরের বাক্যের দুটি অনুচ্ছেদ পড়ি। “কেউ কেউ বলে যে তাদের কোনো ভ্রষ্ট স্বভাব নেই, তারা উদ্ধত নয়। এরা কেমন মানুষ? এরা হল বোধহীন মানুষ, এছাড়াও, এরা হল সর্বাধিক নির্বোধ ও উদ্ধত। আসলে, এরাই হল সকলের চেয়ে বেশি উদ্ধত ও বিদ্রোহী; যতই কেউ বলে যে তার ভ্রষ্ট স্বভাব নেই, সে হয় ততই অহংকারী এবং নিজের নৈতিকতার বিষয়ে উদ্ধত। যখন অন্যান্যরা নিজেদের জানতে সক্ষম, ঈশ্বরের বিচার গ্রহণে সক্ষম, সেখানে তুমি তা পারছ না কেন? তুমি কি ব্যতিক্রম? তুমি কি কোনো সন্ত? তুমি কি শূন্যে বাস করো? তুমি স্বীকারই করো না যে, মানবজাতি শয়তানের দ্বারা গভীরভাবে ভ্রষ্ট হয়েছে, যে, সকলেরই একটা ভ্রষ্ট স্বভাব রয়েছে। এর অর্থ হল, তুমি একেবারেই সত্য উপলব্ধি করো না, এবং সবার মাঝে তুমি হলে সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী, অজ্ঞ এবং উদ্ধত” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, উদ্ধত স্বভাবই মানুষের ঈশ্বরপ্রতিরোধের মূল)। “আমি দেখেছি যে, অনেক নেতাদের শুধুমাত্র মানুষকে বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতাটুকুই আছে, তারা কেবল উচ্চ অবস্থান থেকে মানুষকে উপদেশ দিতেই পারে, মানুষের সাথে একই স্তরে এসে আলোচনা করতে পারে না; তারা মানুষের সাথে স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ করতে অক্ষম। কিছু মানুষ যখন কথা বলে, সবসময় মনে হয় যেন তারা কোনো বক্তৃতা দিচ্ছে বা প্রতিবেদন তৈরি করছে; তাদের কথাগুলো সবসময় শুধু অন্যান্য লোকেদের অবস্থার প্রতিই নির্দেশিত হয়, তারা নিজেদের বিষয়ে কখনোই খোলাখুলি কথা বলে না, তারা নিজেদের ভ্রষ্ট স্বভাবকে কখনোই কাটাছেঁড়া করে না, বরং শুধু অন্য লোকেদের সমস্যা নিয়ে বিশ্লেষণ করে, যাতে অন্যান্যরা সে বিষয়ে জানতে পারে। এবং তারা এমনটা কেন করে? তারা এই ধরনের উপদেশের প্রচার করতে, এই ধরনের বলতে দায়বদ্ধ কেন? এটাই প্রমাণ যে তাদের নিজেদের সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই, তাদের মধ্যে বোধের অভাব খুব বেশি, তারা যে খুবই উদ্ধত ও অহংকারী। তারা মনে করে, যেহেতু তারা অন্য লোকেদের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব চিনে ফেলতে পারে, তাই সেই ক্ষমতাই প্রমাণ করে তারা অন্যদের থেকে সুউচ্চ, অন্যদের চেয়ে বেশি বিচক্ষণ, অন্যান্য লোকেদের চেয়ে কম ভ্রষ্ট। অন্যদের সমালোচনা করা এবং বক্তৃতা দিতে পারা, অথচ তাদের নিজেদের উন্মুক্ত করতে না পারা, তাদের ভ্রষ্ট স্বভাব অনাবৃত বা ব্যবচ্ছেদ না করা, তাদের প্রকৃত রূপ না দেখানো, তাদের উদ্দেশ্যের বিষয়ে কিছুই না বলা, শুধুমাত্র অন্যরা ভুল করেছে বলে তাদের বক্তৃতা দেওয়া—এটা শুধু নিজেদের বড় করে এবং উন্নত করে দেখানো” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, রাজ্যের যুগে ঈশ্বরের প্রশাসনিক ফরমানসমূহের বিষয়ে)। ঈশ্বরের বাক্য আমার প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করল। সব মানুষই শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট এবং তাদের মধ্যে শয়তানসুলভ স্বভাব আছে। আমিও নিশ্চিতভাবেই কোনো শূন্যতার মধ্যে বাস করি না। আমিও শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট হয়েছি। সুতরাং আমার স্বভাবও উদ্ধত না হয়ে যায় কোথায়? ভগিনী আমাকে যে উদ্ধত স্বভাব আর অবজ্ঞা করার কথাটা বলেছে সেটা আসলে ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে। কিন্তু আমি আসলে ভেবেছিলাম সে আমার সঙ্গে আচরণের সময় খুবই রূঢ়ভাবে কথা বলেছে আমি এতটাই অসংবেদনশীল ছিলাম যে নিজেকে একেবারেই চিনতে পারিনি। ঈশ্বরের বাক্য বলে যদি নেতারা সত্যের উপর সহকারিতা না করতে পারে, অন্যদের প্রতিবিধান না করে, বিশ্লেষণ না করে অথবা তাদের না জানে, অথচ তাদের উপদেশ দেওয়ার সময় তিরস্কার, অবজ্ঞা করে এবং সবসময় ভাবে যে তারা অন্য সকলের থেকে উন্নত। তাহলে তারা হল সবথেকে উদ্ধত এবং বিদ্রোহী মানুষ। বুঝতে পারলাম যে কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে আমি ঠিক এই রকমই আচরণ করেছি। আমার উপর যে কাজের দায়িত্ব ছিল, তা যখন ফলপ্রসূ হত, অথবা যখন আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমাকে অনুমোদন করত, তখন আমি নিজেই নিজের প্রশংসা করতে শুরু করি আর ভেবে নিই যে আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের থেকে অনেক উন্নত। যখন আমি দেখতাম যে তারা ধীরগতিতে কাজ করছে, আমার মনে হত যে তারা নিজেদের ভার ঠিকমত বহন করছে না, তাই আমি মেজাজ হারাতাম, তাদের তিরস্কার করতাম, দোষারোপ করতাম, মনে হত তারা খুব খারাপ, যে ভগিনীর কর্ম দক্ষতা কম বলে আমার মনে হয়েছিল আমি তাকে বহিষ্কার করতে চেয়েছিলাম। সে তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম কি না, তা বিবেচনা পর্যন্ত করতে চাইনি। যখন আমরা সমাবেশের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম, আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা তাদের অসুবিধার বিষয়ে প্রশ্ন করার বদলে নীরব ছিল, আমি তাদের একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আলোচনা করার জন্য জোর করি, যার ফলে অনেকেই অপ্রস্তুত বোধ করতে থাকে। সমাবেশের সময়, যখন তারা আমার ধারণা অনুযায়ী আলোচনা করেনি, আমি মেজাজ গরম করে তাদের মোকাবিলা করতে চেয়েছিলাম। যখন আমি তাদের সমস্যার কথা উল্লেখ করছিলাম, কিন্তু তারা তা স্বীকার করতে চায়নি, আমি মনে মনে তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করি, এমনকি তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণও করি। তাদের এই কাজ করার মত আত্মিক উচ্চতা রয়েছে কিনা তা আমি বিবেচনা করিনি পরে নেতা বলে যে, ইলিনা আমার কারণে অপ্রস্তুত হয়েছে, আমাকে আত্মবীক্ষণ করতে হবে, কিন্তু আমি তাতে গুরুত্ব দিইনি, এবং ভাবি ইলিনা যাতে নিজেকে আরো ভালোভাবে চিনতে পারে সেইজন্যই তার সাথে এইভাবে মোকাবিলা করেছি। আমার মনে পড়ে ইলিনা একবার আমাকে বলেছিল এমন একজন নবাগত ছিল যে সভায় আমি উপস্থিত থাকলে কোনোরকম আলোচনার সাহস করত না। সেই সময় আমি তা নিয়ে কিছুই ভাবিনি। একমাত্র এখনই আমি দেখছি যে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমার জন্য অপ্রতিভ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমি নিজের সমস্যা সম্পর্কে জানতাম না, এবং ভার বহন না করার জন্য তাদের অপছন্দ করতাম। আমি সত্যিই খুব উদ্ধত ছিলাম! আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের নিজের সমতুল্য ভাবিনি, তাদের সমস্যা এবং ত্রুটিগুলো বোঝা বা সেগুলো বিচার-বিবেচনার কোনো চেষ্টাও করিনি। পরিবর্তে তাদের অবজ্ঞা করে তিরস্কার করেছি। যখন আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা আমার সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করেছে, আমি নিজেকে একেবারেই চিনতে পারিনি আমি নিজের সপক্ষে যুক্তি সাজাতে ও নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছিলাম। আমার মনে হত, আমি শুধু সরাসরি কথা বলেছি আর মেজাজ করে ফেলেছি। আমি সকলকে অবজ্ঞা এবং তিরস্কার করি, সেকথা আমি স্বীকার করতেই পারিনি। আমি সবসময় সকলকেই নিজেদের জানতে বলেছি, কিন্তু নিজের ভ্রষ্টাচারের কথা ভাবিনি। আমার সবসময় মনে হত আমিই সঠিক, আর অন্য সকলেই ভুল। আমি এতটাই উদ্ধত এবং অযৌক্তিক ছিলাম।
পরে আমি ঈশ্বরের বাণীর আর একটি অধ্যায় পড়ি। “যদি নিজের অন্তরে তুমি প্রকৃতই সত্য উপলব্ধি করে থাকো, তবে কীভাবে সত্য অনুশীলন করতে হয় এবং ঈশ্বরকে মান্য করতে হয়, তা তুমি জানবে এবং স্বাভাবিকভাবেই সত্য অন্বেষণের পথে পদার্পণ করবে। তুমি যে পথে চলো সেটা যদি সঠিক হয়, ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তাহলে পবিত্র আত্মার কাজ তোমাকে ত্যাগ করবে না—সেক্ষেত্রে ঈশ্বরের প্রতি তোমার বিশ্বাসঘাতকতা করার সম্ভাবনা খুবই কমে যাবে। সত্যের অনুপস্থিতিতে মন্দ কর্ম করা সহজ এবং তোমার ইচ্ছা না থাকলেও তা করে ফেলবে। যেমন ধরো, তোমার স্বভাব যদি উদ্ধত ও দাম্ভিক হয়, তাহলে ঈশ্বরের বিরোধিতা করতে তোমাকে নিষেধ করলেও কোনো লাভই হবে না, তা থেকে তুমি নিজেকে আটকাতে পারবে না, এটা তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তুমি স্বেচ্ছায় তা করবে না; বরং তোমার উদ্ধত ও দাম্ভিক প্রকৃতিই তোমাকে দিয়ে তা করাবে। তোমার ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিকতার ফলে তুমি ঈশ্বরকে হীন চোখে দেখবে এবং তাঁকে তোমার মূল্যহীন মনে হবে; এই স্বভাবের জন্য তুমি নিজেই নিজেকে উচ্চে স্থাপন করবে, ক্রমাগত নিজের প্রদর্শন করবে; এগুলো তোমাকে দিয়ে অন্যদের অবজ্ঞা করাবে, তোমার হৃদয়ে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে থাকতে দেবে না; এগুলো তোমার হৃদয় থেকে ঈশ্বরের স্থান কেড়ে নেবে এবং শেষ পর্যন্ত তোমাকে দিয়েই ঈশ্বরের স্থানে বসিয়ে দাবি করাবে যাতে মানুষ তোমার প্রতি সমর্পণ করে, এবং তোমাকে তোমার নিজস্ব চিন্তা, আদর্শ ও পূর্বধারণাগুলোকেই সত্য মনে করিয়ে সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলবে। ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিক প্রকৃতির আধিপত্যে মানুষ এতটাই মন্দ কাজ করে!” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অন্বেষণের মাধ্যমেই স্বভাবের পরিবর্তন অর্জন করা যায়)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমি বুঝতে পারি যে যারা দাম্ভিক এবং নিজের নৈতিকতা নিয়ে উদ্ধত স্বভাবের তারা নিজেদের উচ্চ আসনে বসায়, অন্যদের তাচ্ছিল্য করে এবং মনে করে তারা সবসময়েই সঠিক তারা নিজেদের ধারণাকেই সত্য বলে মনে করে আর যেকোনো সময়েই মন্দ কাজ করতে এবং ঈশ্বরকে প্রতিহত করতে পারে। অন্যান্যদের সঙ্গে আমার আগের যোগাযোগের কথা আমি ভাবলাম: অন্যরা যাতে নিজেদের জানতে পারে সেজন্য কখনো আমি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করিনি বা নিজের কলুষিত স্বভাবকে বিশ্লেষণ করিনি। পরিবর্তে আমি অবজ্ঞার সঙ্গে তাদের বিশ্লেষণ করেছি এবং তাদের প্রকাশ ঘটিয়েছি। যখন তারা বুঝতে পারেনি, আমি রেগে গিয়েছি, তাদের তাচ্ছিল্য করেছি এবং তাদের মোকাবিলা করেছি, যা তাদের অপ্রস্তুত করে দিয়েছে। তাদের সমস্যা আছে কিনা তা তারা সাহস করে আমাকে বলেনি, যার ফলে তাদের কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি হয়েছে এবং গির্জার জীবনের কার্যকারিতার উপর প্রভাব পড়েছে। সবকিছুই হয়েছে আমার দাম্ভিক স্বভাবের জন্য। আমি ভাবলাম ঈশ্বর কীভাবে সত্য প্রকাশ করে মানুষকে দয়া করেন এবং আমাদের দুর্নীতিকে প্রকাশ্যে আনেন। ঈশ্বর কখনও গ্রহণ অথবা অনুশীলনের জন্য আমাদের উপর জোর খাটান না। পরিবর্তে, তিনি ধৈর্য সহকারে মানুষকে পথনির্দেশ দেন এবং তারা যাতে তাঁর বাক্য ও কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে, তার জন্য ব্যবস্থা করে দেন। অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মানুষ ধীরে ধীরে নিজেদের জানতে পারে, সত্যের অনুশীলন করে, এবং জীবনে উন্নত হয়। মানুষের সঙ্গে আচরণের জন্য ঈশ্বরেরও নীতি আছে। ঈশ্বর মানুষের আত্মিক উচ্চতা এবং যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে তাদের সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করেন। আমরা যা করতে পারি তার থেকে বেশি তিনি দাবি করেন না। তিনি আমাদের উঁচু অথবা নিচু নজরে দেখেন না। একজন ক্ষুদ্র সৃষ্ট জীব ছাড়া আমি আর কিছুই নই, কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে কিছু উপলব্ধি ভাগ করে নিতে পারি বলে, আমি দাবি করতাম যে মানুষ আমার কথাই শুনবে। আমি মানুষের বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা করিনি, এবং প্রত্যেকের কাছে আমার দাবি ছিল অত্যন্ত বেশি। মানুষ যখন আমার প্রত্যাশিত মানে পৌঁছতে পারতো না, আমি তাদের অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য করতাম, এমনকি তাদের বহিষ্কার করার কথাও ভাবতাম আমি যা করেছিলাম তার সারবত্তা নিয়ে আমি ভাবতে থাকি। নিজের ধারণাকে আমি সত্য বলে মনে করেছি, স্থান ও কাল নির্বিশেষে আমার দৃষ্টিভঙ্গিই যে সঠিক সেই নিয়েই জেদ ধরেছি। আর আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের আমার কথা শোনার জন্য বলেছি। আমি একেবারেই আমার কর্তব্য পালন করিনি। আমি কি কেবলই ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করছিলাম না? আমি জানতাম না যে আমার দম্ভ ও নিজের নৈতিকতা নিয়ে ঔদ্ধত্যই আমাকে নিয়ন্ত্রণ করছিলো এবং আমি এমন পাপকাজ করেছিলাম যা ঈশ্বরকে প্রতিরোধ এবং আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের ক্ষতি করেছে। আমি ভয়ানক ছিলাম এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে শাস্তিই আমার প্রাপ্য! এই কথা অনুধাবন করার পর, আমি ঈশ্বরের কাছে এই ভেবে কৃতজ্ঞ ছিলাম যে তিনি সঠিক সময়ে আমাকে নিজেকে নিয়ে ভাবার অনুমতি দিয়ে এবং আমার ভগিনীর উপদেশের মাধ্যমে বিপথে যাওয়ার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন। কেবলমাত্র তখনই আমি দেখতে পাই যে আমার মধ্যে সত্যের বাস্তবতার অভাব ছিলো। আমি তখনো নিজের মতামত এবং উপলব্ধিকে সত্য হিসাবে মানতে পারতাম। এবং ভ্রাতা ও ভগিনীদের আমার কথা শুনতে বাধ্য করতে পারতাম। আমি অত্যন্ত উদ্ধত ছিলাম এবং নিজের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।
পরে, এক ভগিনী আমাকে ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ পাঠায়। “যদি গির্জার নেতা বা কর্মী হিসাবে তোমাকে ঈশ্বরের মনোনীত মানুষদের সত্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করার এবং ঈশ্বরের যথাযথ সাক্ষ্য বহনের নেতৃত্ব দিতে হয়, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মানুষকে ঈশ্বরের বাক্য পাঠে আরো বেশি সময় ব্যয় করতে এবং সত্যের আলোচনা করতে পথ দেখানো, যাতে ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিরা মানুষকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য এবং তাঁর কাজের অভিপ্রায় সম্পর্কে গভীরতর জ্ঞান লাভ করতে পারে, ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং মানুষের থেকে তাঁর যে বিভিন্ন চাহিদা রয়েছে সেগুলো উপলব্ধি করতে পারে, যার ফলে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে। … তুমি যদি কেবল মতবাদের বাক্যগুলির পুনরাবৃত্তি করে যাও, এবং মানুষকে বক্তৃতা দাও, আর তাদের সাথে মোকাবিলা করো তাহলে তুমি কি মানুষকে সত্যের উপলব্ধি দান করতে ও সত্যের বাস্তবতার মধ্যে তাদের প্রবেশ করাতে পারবে? যে সত্যের বিষয়ে তুমি আলোচনা করো তা যদি বাস্তব না হয়, যদি তা শুধুই মতবাদের বাক্যাবলী হয়, তাহলে যতই তুমি তাদের সাথে মোকাবিলা করো আর তাদের বক্তৃতা দাও, তা কোনো কাজে আসবে না। তুমি কি মনে করো যে মানুষ তোমাকে ভয় পাচ্ছে, তুমি তাদের যা করতে বলছো তা-ই করছে, এবং আপত্তি করার সাহস দেখাচ্ছে না, এগুলো তাদের সত্যোপলব্ধি করা ও আজ্ঞাকারী হয়ে ওঠার সঙ্গে সমার্থক? এটা একটা গুরুতর ভ্রান্তি; জীবনে প্রবেশ করা এত সহজ কাজ নয়। একজন নতুন কর্মকর্তা যেমন বেশ জোরালো একটা ভাবমূর্তি তৈরী করতে চায়, কিছু নেতাও সেরকম, তারা তাদের সদ্যোলব্ধ কর্তৃত্ব ঈশ্বরের মনোনীত মানুষদের উপর আরোপ করতে চেষ্টা করে যাতে প্রত্যেকে তাদের কাছে সমর্পণ করে, তারা ভাবে যে এতে তাদের কাজ সহজতর হবে। তোমার যদি সত্যের বাস্তবিকতার অভাব থাকে, তাহলে অচিরেই তোমার প্রকৃত আত্মিক উচ্চতা অনাবৃত হয়ে যাবে, তোমার যথার্থ স্বরূপ প্রকাশিত হয়ে যাবে, এবং তোমাকে বহিষ্কার করাও হতে পারে। কিছু প্রশাসনিক কাজে, মোকাবিলা, অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন, এবং অনুশাসন, অল্প পরিমাণে হলে সেটা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু তুমি যদি সত্যের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতে অসমর্থ হও, তাহলে অন্তিমে এসে তবুও তুমি সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, এবং কাজের ফলাফলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। গির্জার মধ্যে যে কোনো সমস্যা দেখা দিলেই তুমি যদি লোকজনকে উপদেশ দিতে থাকো ও দোষারোপ করতে থাকো—যদি সবসময় তোমার একমাত্র কাজ হয় শুধু মেজাজ হারানো—তাহলে এ তোমার কলুষিত স্বভাবের বহিঃপ্রকাশ, এবং তুমি তোমার ভ্রষ্ট আচরণের কদর্য রূপকে প্রদর্শিত করেছো। সবসময় তুমি যদি মানুষকে এমন কর্তৃত্বব্যঞ্জকভাবে ভর্ৎসনা করো, তাহলে যত সময় যাবে, মানুষ তোমার কাছ থেকে জীবনের সংস্থান গ্রহণ করতে অসমর্থ হবে, তারা বাস্তব কিছু অর্জন করবে না, পরিবর্তে তারা তোমাকে প্রত্যাখ্যান করবে ও তোমার প্রতি বীতশ্রদ্ধ বোধ করবে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। নেতা হিসাবে ঈশ্বর আমাদের নির্দেশ দেন সমস্যা সমাধানের জন্য সত্য নিয়ে আলোচনা করার শিক্ষা নিতে এবং সত্যকে উপলব্ধির জন্য মানুষকে পথনির্দেশ দিতে, সামান্য বিচ্যুতির জন্য তাদের তিরস্কার বা মোকাবিলা না করতে, অন্যদের ভীতসন্ত্রস্ত করতে নিজেদের ক্ষমতা জাহির না করতে, এগুলি হল ভণ্ড নেতার কাজ। যখন থেকে নেতা হিসাবে সেবাদানে নিযুক্ত ছিলাম, আমি যে শুধু কোনো ব্যবহারিক কাজ করিনি তাই নয়, আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের জীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনোরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারিনি, এবং আমি সবসময় অন্ধের মত আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের তিরস্কার ও মোকাবিলা করেছি, যার ফলে তারা আমার সম্পর্কে অপ্রস্তুত বোধ করতো, আমাকে ভয় পেতো, এবং এড়িয়ে যেত আর এর ফলে গির্জার কাজে প্রভাব পড়ত এবং তা ব্যাহত হত। আমার মনে পড়ল, গত মাসে একজন ভণ্ড নেতাকে বরখাস্ত করা হয়েছে কারণ সে কোনো ব্যবহারিক কাজ করেনি, তার ভ্রাতা ও ভগিনীরা দায়িত্ব পালনে যে সব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল সে তার সমাধান করতে পারেনি, এবং সে সবসময় অন্ধভাবে সকলের মোকাবিলা করতো এবং তাদের বিরুদ্ধে ভুল কাজের অভিযোগ আনত, যার ফলে অপ্রস্তুত হয়ে তারা কাঁদত। তারা দুর্বল এবং নেতিবাচক অবস্থায় ছিল এবং ভাবত যে তারা তাদের কর্তব্য পালন করতে পারবে না। এই ভণ্ড নেতার কার্যকলাপের ফলে গির্জার কাজে এবং ভ্রাতা ও ভগিনীদের জীবনে প্রবেশে গুরুতর ক্ষতি হয়। আমিও কি সেইরকমই ভণ্ড নেতা নই? আমার কাছে সত্যের বাস্তবতা ছিল না এবং আমি সত্যের অনুসরণ অথবা স্বভাবগত পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিইনি। আমি কেবল আমার উদ্ধত স্বভাব নিয়ে মানুষকে অন্ধভাবে তিরস্কার করেছি এবং তাদের মোকাবিলা করেছি। আমি ভণ্ড নেতা এবং খ্রীষ্টবিরোধীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছিলাম। এইভাবে চলতে থাকাটা বিপজ্জনক।
পরে, আমি ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ দেখি। “নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীদের অবশ্যই ঈশ্বরের বাক্যসমূহের সহকারিতা করতে সক্ষম হতে হবে, তাদের ঈশ্বরের বাক্যসমূহ থেকে অনুশীলনের একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে, এবং অবশ্যই মানুষকে নেতৃত্ব দিতে হবে ঈশ্বরের বাক্যসমূহ উপলব্ধি করানোয়, তাদের দৈনন্দিন জীবনে ঈশ্বরের বাক্যসমূহের অনুভব গ্রহণ তথা সেগুলিতে প্রবেশ করানোয়, ঈশ্বরের বাক্যসমূহকে তাদের নৈমিত্তিক জীবনের অন্তর্ভূক্ত করানোয়, যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে ঈশ্বরের বাক্যসমূহ ব্যবহার করে সেগুলির সমাধান করানোয়; তেমনই, কর্তব্য পালনের সময় তারা যে নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হয় সেগুলির মোকাবিলা করতেও, তাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যসমূহ ব্যবহারে মানুষকে নেতৃত্ব দিতে হবে” (বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। নেতা ও কর্মীদের প্রায়ই সত্য এবং নীতির উপর আলোচনা করা উচিত, যাতে তারা অন্যদের সত্য অনুধাবন এবং তার বাস্তবতায় প্রবেশের পথ দেখাতে পারে। অন্যেরা তাদের দায়িত্ব পালনে যেসব সমস্যা এবং বাধার সম্মুখীন হয় তা তাদের বোঝা উচিত এবং তার সমাধান করা উচিত, যাতে অন্যেরা তাদের দায়িত্ব পালনের সময়ে এবং তাদের বাস্তব জীবনে, সত্যের অনুশীলনের শিক্ষা নিতে পারে এবং জীবনে উন্নতি করতে পারে। এটাই নেতা ও কর্মীদের কাজ। আমি যা করেছি, তা নয়, মানুষের অসুবিধা না বোঝা, তাদের, তাদের সমস্যার সমাধানের জন্য সত্য নিয়ে আলোচনা না করা, এবং সবসময় তাচ্ছিল্যের মনোভাব নিয়ে তাদের দোষারোপ করা এবং তাদের কাছ থেকে দাবি করা। এমনকি ছাঁটাই এবং মোকাবিলারও আলাদা নীতি আছে। মানুষের মোকাবিলা করার জন্য আমরা মতবাদের কথা ব্যবহার করতে পারিনা, এবং আমরা নিজেদের ধারণা এবং ক্রোধের উপর ভিত্তি করে অন্যদের অবজ্ঞাভরে তিরস্কার করতে পারি না। ছাঁটাই এবং মোকাবিলার জন্যও বিভিন্ন পরিস্থিতি ও পরিপ্রেক্ষিতকে নির্ণয় করতে হয়। কেউ যদি এমন কিছু করে যাতে গির্জার কাজে ব্যাঘাত ঘটে বা তাতে বাধা সৃষ্টি হয়, তার ভ্রাতা ও ভগিনীদের জীবনে প্রবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এবং বারংবার আলোচনার পরও যদি তার পরিবর্তন না হয়, তাহলেই তাদের ছাঁটাই এবং মোকাবিলা করা উচিত। কিছু মানুষ তাদের কর্তব্য পালনে গোলমাল করে এবং সহকারিতা সত্ত্বেও তারা অনুতাপ করে না, এবং তাদের ছাঁটাই এবং মোকাবিলা করা উচিত। মানুষ যখন জেনেশুনে পাপ করে অথবা সত্যকে জেনেও তার অনুশীলন করে না, তাদেরও ছাঁটাই এবং মোকাবিলা করা উচিত। যখন আমরা অন্যদের মোকাবিলা করি, আমাদের সমস্যার সারমর্মের সম্পর্কে যথাযথভাবে জানা উচিত এবং সত্য সম্পর্কে আলোচনা করা উচিত, যাতে তারা জানতে পারে তাদের ভুল কোথায়, কোন ভ্রষ্ট স্বভাব তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে, এবং তাদের কার্যকলাপের সারবত্তা কী। সেইসঙ্গে ছাঁটাই, মোকাবিলা এবং মানুষের দুর্নীতি প্রকাশ করার সময় ব্রাদার ও সিস্টারদের সমকক্ষ হয়ে ওঠা দরকার আমাদের। আমরা দুর্নীতিগ্রস্থ নই এই ভেবে নিয়ে আমরা নিজেদের বাদ দিতে পারি না। কিন্তু আমি ছাঁটাই এবং মোকাবিলার নীতি ঠিক বুঝতে পারিনি। যখন আমি দেখলাম আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা তাদের কর্তব্যে গোলমাল অথবা গড়িমসি করছে, সত্যের উপর সহকারিতার করে তাদের সাহায্যের বদলে, আমি তাদের তিরস্কার এবং মোকাবিলা করি। যার ফলে, নিজেদের সম্পর্কে জ্ঞান লাভের পরিবর্তে তারা আমার বিষয়ে অপ্রতিভ হয়ে পড়ে। আসলে, আমার নেতারা আমাকে বলেছিলেন যে কয়েকজন ভ্রাতা ও ভগিনী সবে তাদের কাজ শুরু করেছে, তারা কিছু কিছু নীতি বোঝে না, তাই অবধারিতভাবেই কিছু ত্রুটি ও বিচ্যুতি হবে, এবং এইরকম পরিস্থিতিতে আমার তাদের মোকাবিলা করা উচিত নয়। পরিবর্তে আমার উচিত তাদের খামতি এবং সমস্যাগুলো বোঝা, ভালোবেসে তাদের সমর্থন ও সাহায্য করা এবং সত্যের নীতি বুঝতে তাদের পথনির্দেশ দেওয়া। আমি যদি তাদের আরো সাহায্য এবং পথনির্দেশ দিতাম, এবং কীভাবে অনুশীলন করতে হয় তা জানার পরও যদি তারা অনুতাপ বা নিজেদের পরিবর্তন না করত, তাহলে আমার উচিত ছিল তাদের সমকক্ষ হিসাবে বিবেচনা করা, তাদের সমস্যার সারমর্ম দেখিয়ে দেওয়া, ঈশ্বরের বাক্য ও নীতি অনুযায়ী তাদের নিজেদের জানতে সাহায্য করা। একমাত্র এইভাবে অনুশীলনই ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, এবং তা গির্জার কাজে এবং আমাদের ভ্রাতা ও ভগিনীদের জীবনে প্রবেশে সাহায্য করে। যাই হোক না কেন, একমাত্র সত্য অনুসারে অনুশীলনই মানুষের উপকার করে।
একদিন, আমার নেতা একটি বিষয়ের অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য গোষ্ঠীতে এক মেসেজ পাঠায়, কিন্তু আমার সহযোগী এনং গোষ্ঠীর নেতারা সময়মত উত্তর দেয়নি। আমি ভাবলাম, “আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা সক্রিয়ভাবে সাড়া দিলো না কেন? তারা তদের কর্তব্য সম্পর্কে বড্ড বেশি নিষ্ক্রিয়।” আমাদের সমাবেশের সময় আমি প্রসঙ্গটি উত্থাপন করি, আর সকলেই চুপ করে ছিল, আমি অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের নিয়ে অভিযোগ করি যে তারা কর্তব্য পালনে দেরি করে, তারা নিষ্ক্রিয়। আমি আমার বক্তব্য শেষ করার পরেও তারা নীরব ছিল, আর আমার মনে হয়, “আমি কি আবার আমার উদ্ধত স্বভাব প্রকাশ করে ফেললাম আর আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের অপ্রতিভ করে দিলাম?” সেই মুহূর্তে আমি আমার কম্পিউটারের দিকে তাকালাম এবং বুঝলাম যে আমার আলোচনার সময় আমার মাইক্রোফোনটা মিউট হয়ে গিয়েছিল। আর তারফলে আমি যা বলেছিলাম সেটাতে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমি নীরবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালাম, কিন্তু সেইসঙ্গে, আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত হলাম এবং আবার ঔদ্ধত্য দেখানোর জন্য নিজের উপর ঘৃণা হল। আমি আমার মাইক্রোফোন অন করলাম। এবং শান্তভাবে তাদের জিজ্ঞাসা করলাম তারা সময়মতো বার্তার উত্তর দেয়নি কেন। সে সময়েই আমি জানতে পারলাম যে আমার সহকারীর ইন্টারনেট নেই, এবং অন্যান্যরা নীতি আয়ত্ত করতে পারেনি অথবা পরিস্থিতি বুঝতে পারেনি এবং কীভাবে উত্তর দিতে হয় সেটা তারা জানত না। নীতি অনুযায়ী কীভাবে এই কাজ করতে হয় সে বিষয়ে ধৈর্যসহকারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। এবং তারপর আমার নেতাকে কাজের অবস্থা সম্পর্কে জানালাম। যখন আমি এইভাবে অনুশীলন করলাম, আমার একটু স্বস্তি হল।
পরে, আমি ঈশ্বরের বাণীর আর একটি অনুচ্ছেদ পড়লাম। “ঈশ্বরের দ্বারা বিজিত হওয়ার পর, যুক্তিবোধের যে সাধারণ বৈশিষ্ট্য দিয়ে মানবজাতির সজ্জিত হওয়া উচিত, তা হল উদ্ধতভাবে কথা না বলাকে নিশ্চিত করা। তাদের উচিত অকিঞ্চিৎকর অবস্থান গ্রহণ করা, ‘ভূমিতে পতিত বিষ্ঠার ন্যায়’, এবং এমন কিছু বিষয় বলা যা সত্য; এটাই সবচেয়ে ভালো হবে। বিশেষত, ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহনের সময় তুমি যদি উপাদানসম্পন্ন কিছু নিজের হৃদয় থেকে বলতে পারো, তার মধ্যে যদি কোনো ফাঁপা বা আড়ম্বরপূর্ণ কথা না থাকে, কোনো কাল্পনিক মিথ্যা না থাকে, তাহলে তোমার স্বভাব সত্যিই পরিবর্তিত হয়েছে, এবং ঈশ্বরের দ্বারা বিজিত হওয়ার পর তোমার মধ্যে এই পরিবর্তনই হওয়া উচিত। তুমি যদি এইটুকু বোধেরও অধিকারী না হও, তাহলে তোমার মধ্যে সত্যিই মানব সদৃশ কোনো আভাসই নেই। ভবিষ্যতে, যখন সমস্ত দেশ ও অঞ্চলে ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিদের ঈশ্বর জয় করে ফেলবেন, তখন ঈশ্বরের প্রশংসাসূচক বৃহৎ কোনও সমাবেশে তুমি যদি আবার উদ্ধত আচরণ করতে শুরু করো, তাহলে তোমাকে পরিত্যাগ ও বহিষ্কার করা হবে। এখন থেকে, লোকেদের সর্বদাই যথাযথ আচরণ করতে হবে, নিজেদের মর্যাদা ও অবস্থান চিনে নিতে হবে, এবং তাদের পুরনো পথে আর প্রত্যাবর্তন করা চলবে না” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অন্বেষণের মাধ্যমেই স্বভাবের পরিবর্তন অর্জন করা যায়)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমি বুঝলাম যে আমি এক ক্ষুদ্র সৃষ্ট জীব, একজন যে গভীরভাবে কলুষিত এবং আমার উচিত আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সমপর্যায়ে নিজে আনা এবং নিজের কর্তব্য ভালোভাবে পালন করা। একেই বলে বোধ থাকা। এখন, যখন আমি গির্জার কাজ অনুসরণ করি, আমি কখনোই চট করে রেগে যাব না এবং আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের তিরস্কার করবো না। এখন আমি তাদের অসুবিধার কথা বোঝার জন্য আমি সচেতনভাবে চেষ্টা করি, এবং আমি সকলের সঙ্গেই সত্যের অনুসন্ধান করি। ধীরে ধীরে, আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সঙ্গে আমি সুন্দরভাবে ভাবে সহযোগিতা করতে পেরেছি। ঈশ্বরের বাক্যই আমার মধ্যে এই পরিবর্তন অর্জন করেছে, এবং আমাকে উদ্ধার করার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।