খ্যাতি এবং মুনাফার অন্বেষণ-বিষয়ক প্রতিফলন
২০২১-এরর মে মাসে, আমি দলনেতা হিসেবে নির্বাচিত হই। দুইদল ব্রাদার-সিস্টারের সিঞ্চনের দায়িত্ব পাই, অচিরের, আমার জন্য আরও ব্রাদার-সিস্টারদের সিঞ্চনের ব্যবস্থা করে নেতা। তা শুনে সত্যিই খুশি হই। ভাবলাম, ব্রাদার-সিস্টারদের সিঞ্চন করে অর্জন করব প্রভূত আলোকপ্রাপ্তি, সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা ও আরও সত্যের উপলব্ধি। জীবনে প্রবেশে তাদের হওয়া সমস্যাগুলোর যদি সমাধান করতে পারি, ব্রাদার-সিস্টারেরা অবশ্যই বলবে যে আমি ভালো এবং সত্য বুঝি। তাই, দায়িত্বে নিবেদিত হই, প্রায়শই আলোচনার জন্য সমাবেশে যাই, সমস্যার সম্মুখীন ব্রাদার-সিস্টারদের সাহায্যার্থে ঈশ্বরের বাক্যের অন্বেষণ করি। কিছুদিন পর থেকে, ব্রাদার-সিস্টারেরা আমার কাছে আলোচনার জন্য প্রশ্ন নিয়ে এলে আমি খুবই খুশি হতাম।
পরে, আরও বেশি মানুষ ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করায়, গির্জার জনসংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকে। একদিন এক সভায়, আমি জানলাম যে গির্জার এক নেতা আসবে নবাগতদের জলদান আর আমার কাজের তত্ত্বাবধান করতে। ব্রাদার-সিস্টারদের কোনো সমস্যার থাকলে তারা তাকেও জিজ্ঞাসা করতে পারে। সহকর্মী হিসেবে এক নেতা আসছে শুনে আদৌ খুশি হই নি। আমাকে আগে জলদান করা সেই নেতার ভালো যোগ্যতা ছিল। তার উপলব্ধি ছিল আমার থেকে বেশি। আমি ভাবলাম, “এখন সে আমার সহকর্মী হতে আসছে, তা হলে কি ব্রাদার-সিস্টারেরা তাদের প্রশ্ন নিয়ে আমার কাছে আর আসবে? তারা কি আমার বদলে নেতাকেই জিজ্ঞাসা করবে না? তাহলে ভবিষ্যতে কে আর আমার সমাদর করবে? ব্রাদার-সিস্টারদের হৃদয় মন আমার ভালো ভাবমূর্তি মুছে যাবে।” এসব ভেবে আমি নেতার সাথে সহযোগিতা করতে চাই নি। একই সময়ে, আমি বিপর্যস্ত বোধ করি। নিজেকে বলি, “এ হতে দিতে পারি না। ব্রাদার-সিস্টারদের মনে নিজের স্থান ধরে রাখতে হবে। তাদেরকে বলতেই হবে যে, কিছু হলে বা ঈশ্বর বাক্যর কোনো ছত্র খুঁজতে চাইলে, তারা আমায় বলতেই পারে আমি তাদের সাহায্য করব।” তখন থেকেই ব্রাদার-সিস্টারদের কোনো দূরবস্থা বা সমস্যার কথা শুনলে, সহকারিতার জন্য ছুটতাম, নেতা সেখানে আগেই পৌঁছে যেতে পারে, এই ভয়ে। প্রত্যেক ব্রাদার-সিস্টারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইতাম যে তাদের কোনো সাহায্য দরকার কি না, বলতাম যেকোনো সমস্যায় বা ধন্দে আমার সাহায্য তারা চাইতেই পারে। তা করে ভাবলাম, নেতা তাদের সাথে যোগাযোগ করলে, ব্রাদার-সিস্টারেরা বলবে যে আমিই তাদের সাহায্য করেছি। কিন্তু ঘটনা আমার পরিকল্পনামাফিক অত সহজ পথে গেল না। তাদের অনেক সমস্যার বিষয়ে আমার দখল ছিল না, সমাধানের উপায় জানতাম না, কিন্তু নেতাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই নি। ভাবলাম, “তাকে জিজ্ঞাসা করলে, সে কি ভাববে না যে আমি সত্য বুঝি না এবং ঈশ্বরের বাক্য বেশি পড়ি না? সে কি ভাববে না যে আমি সমস্যা সমাধানে অপারগ? সে ব্রাদার-সিস্টারদের সমস্যার সমাধান করে দিলে, তারাও কি ভাববে না যে আমি অযোগ্য এবং তাদের সাহায্যে অপারগ? তাদেরকে নিজের অক্ষমতা দেখাতে চাই নি। আমি চাইতাম যে তারা জানুক আমি এই দায়িত্ব পালনে সক্ষম, যাতে কোনো প্রশ্ন এলে তারা আমাকেই জিজ্ঞাসা করে।” কিন্তু আমার পক্ষে নিজের থেকে তদের সাহায্য করা কঠিন ছিল। কিছু বিষয় ছিল আমার অভিজ্ঞতার অতীত, সেসব বিষয়ে আলোচনার উপায়ান্তর ছিল না জানা, আর মাঝমধ্যে বহুদিন লেগে যেত ঈশ্বরের বাক্যের অংশ খুঁজে তাদের সমস্যার সমাধান করতে, তারা কোনো প্রশ্ন নিয়ে এলে আমি সময় দিতে পারতাম না। এভাবেই একমাস দ্রুত কেটে গেল, এবং যেহেতু আমি তাদের সময়মতো সাহায্য করতে পারি নি, তাদের সমস্যার সুরাহা হল না, তাদের দূরবস্থা চলতেই থাকল। না-বোঝা সমস্যাগুলো নেতাকে বললে, আমরা একত্রে ঈশ্বরের বাক্য খুঁজে তাদের সাহায্য করতে পারতাম, তাদের সমস্যা দ্রুত সমাধান হত। কিন্তু তা করি নি, কারণ শুধু তাদের মনে নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই চেয়েছিলাম। তা করাকালীন সামান্য অপরাধবোধ হত। জানতাম যে, এইভাবে চললে, তাদের জীবনে প্রবেশের পথে আমি প্রবল বাধা তৈরি করব, এবং সেই দায়িত্বের সুষ্ঠু পালন করব না।
একদিন একছত্র ঈশ্বরের বাক্য চোখে পড়ল, যা ব্যক্ত করে কর্তব্যের প্রতি মানুষের ভুল মনোভাব। “ঈশ্বর মানুষের উপর যে কার্যসকল অর্পণ করেন, সেগুলিই হল কর্তব্য; সেগুলি হল মানুষের পূরণীয় উদ্দেশ্য। তবে, এই কর্তব্য অবশ্যই তোমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত কোনো কাজ নয়, আবার জনতার মধ্যে থেকে আলাদা হয়ে ওঠার পরিপন্থী ভারও নয়। কেউ কেউ তাদের কর্তব্যকে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় জড়িত হওয়ার উদ্দেশ্যে একটা সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করে, এবং গোষ্ঠীচক্র তৈরি করে; কেউ নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য, কেউ নিয়তির উপর সবকিছুর ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা সন্তুষ্ট করার জন্য; কেউ বা নিজেদের অন্তরের শূন্যতা পূরণ করার জন্য এমনটা করে, তারা ভাবে যে, যতক্ষণ তারা নিজেদের কর্তব্য পূরণ করবে, তারা ঈশ্বরের গৃহে এবং মানুষের জন্য ঈশ্বরের আয়োজিত গন্তব্যে অংশীদারিত্ব লাভ করবে। কর্তব্যের প্রতি এহেন মনোভাব সঠিক নয়; ঈশ্বর এতে বিরক্ত হন, এবং এই বিষয়টির অবশ্যই সত্বর সমাধান করতে হবে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, পর্যাপ্তভাবে দায়িত্ব পালন করা বলতে কী বোঝায়?)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমি উপলব্ধি করি আমাদের কর্তব্য ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব পালন, ব্যাক্তিগত কিছু করা নয়, দায়িত্বপালন যেন অন্যের তারিফ আদায়ের উপায় হিসাবে বিবেচিত না হয়, বা অন্যদের নিজ-অনুসারী করার অভিপ্রায়ে খ্যাতি ও মর্যাদার অন্বেষণ অনুচিত। আমাদের উচিত দায়িত্বকে বাধ্যবাধকতা হিসাবে দেখে ঈশ্বরের চাহিদানুসারে তা পালন করা। কিন্তু দায়িত্বের প্রতি আমার মনোভাব কী ছিল? আমার দায়িত্বপালন ছিল খ্যাতি ও ব্যক্তিস্বার্থের জন্য, নিজের বাসনা তৃপ্ত করার জন্য। চেয়েছিলাম ব্রাদার-সিস্টারদের প্রশংসা ও বন্দনা, সমস্যা সমাধান করতে তাদের আমার কাছে আসা। তাদের প্রতি আমার কোনো আন্তরিকতা ছিল না, আদৌ তাদের সাহায্য করতেই চাইনি, কিন্তু চেয়েছিলাম তারা যেন আমাকে নিয়ে ভালো ধারণা রাখে, যাতে আমায় নিয়ে আলোচনা করাকালীন তারা বলে যে আমি তাদের সাহায্য করি, আমি একজন ভালো আর দয়ালু লোক। এভাবে, আমি সন্তুষ্ট হতে পারব। দায়িত্বকে ব্যবহার করেছি খ্যাতি, স্বার্থ, মর্যাদা আর লোকজনের মনে স্থান পেতে, যাতে তারা ঈশ্বরের বদলে সমস্যার সমাধান করতে আমার কাছে আসে। আমি এক ব্যক্তিগত উদ্যোগ চালাচ্ছিলাম। তখনই বুঝতে পারি দায়িত্বের প্রতি আমার মনোভাব ভুল। এমনকি ব্রাদার-সিস্টারদের সাহায্য করতে পারলেও, দায়িত্বের সুষ্ঠু পালন আমার উদ্দেশ্য ছিল না, যা কোনোভাবেই ঈশ্বরকে তৃপ্ত করে না।
পরে, ঈশ্বরের বাক্যর একটি অনুচ্ছেদে দেখি খ্রীষ্টবিরোধীরা উন্মোচিত হয়েছে, যা আমার অবস্থার সাথে খাপ খায়। “খ্রীষ্টবিরোধীরা প্রসঙ্গ নির্বিশেষে, যে দায়িত্বই সম্পাদন করুক না কেন, তারা এমন অনুভূতি প্রদানে সচেষ্ট থাকবে যেন তারা দুর্বল নয়, তারা সর্বদাই শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, কখনোই নেতিবাচক নয়। তাদের বাস্তবিক আত্মিক উচ্চতা বা ঈশ্বরের প্রতি বাস্তব মনোভাব তারা কখনোই প্রকাশ করে না। প্রকৃতপক্ষে, হৃদয়ের গভীরে তারা কি সত্যিই বিশ্বাস করে যে, তাদের পক্ষে করা সম্ভব নয় এমন কোনো কাজই নেই? তারা কি আসলেই বিশ্বাস করে যে তারা দুর্বলতা ও নেতিবাচকতাবিহীন, বা দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশমুক্ত? একেবারেই তা নয়। তারা ছদ্ম-অভিনয়, বিষয়সকল গোপন করে রাখায়, বেশ পারদর্শী। তারা লোকজনকে নিজেদের শক্তিশালী ও সম্মানীয় দিকটাই দেখাতে ভালোবাসে; তাদের যে দিকটা দুর্বল ও আসল, সেই দিকটা তারা লোকেদের দেখাতে চায় না। তাদের উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার: তারা সাধারণভাবে নিজেদের মুখরক্ষা করতে চায়, মানুষের হৃদয়ে তাদের স্থান রয়েছে রক্ষা করতে চায়। তারা ভাবে যে, যদি অপরের সামনে তারা নিজস্ব নেতিবাচকতা এবং দুর্বলতার কথা খোলাখুলি প্রকাশ করে, যদি তারা নিজেদের অবাধ্য এবং ভ্রষ্ট দিকটা প্রকাশ করে ফেলে, তবে তা তাদের উচ্চতা এবং মর্যাদার পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর হবে—মূল্যের চেয়েও বেশি সমস্যা হবে। তাই তারা বরং তাদের দুর্বলতা, বিদ্রোহী মনোভাব, এবং নেতিবাচকতা নিজেদের মধ্যেই কঠোরভাবে আটকে রাখবে। এবং যদি এমন কোনো দিন আসে, যেদিন প্রত্যেকেই তাদের দুর্বল এবং অবাধ্য দিকটি প্রত্যক্ষ করে, যখন দেখে যে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত, একেবারেই পরিবর্তন হয়নি তাদের, তখনও তারা অভিনয়টা চালিয়েই যেতে থাকবে। তারা ভাবে যে, যদি তারা স্বীকার করে যে তাদের স্বভাব দুর্নীতিগ্রস্ত, যে তারা সাধারণ মানুষ, এমন একজন যে ক্ষুদ্র এবং তুচ্ছ, তখন তারা লোকেদের হৃদয়ে নিজেদের স্থান হারিয়ে ফেলবে, প্রত্যেকের শ্রদ্ধা ও উপাসনা হারিয়ে ফেলবে, এবং এইভাবে, পূর্ণত ব্যর্থ হয়ে পড়বে। এবং সেহেতু, যা-ই হোক না কেন, তারা মানুষের কাছে সহজে উন্মুক্ত হবে না; যা-ই হোক না কেন, তারা অন্য কাউকে তাদের ক্ষমতা ও মর্যাদা প্রদান করবে না; পরিবর্তে, তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে, এবং কখনোই হাল ছেড়ে দেবে না” (বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, নবম পরিচ্ছেদ: কেবলমাত্র নিজেদেরকে বিশিষ্ট ভাবে তুলে ধরতে এবং নিজেদের স্বার্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পরিতুষ্ট করতেই তারা তাদের কর্তব্য করে; তারা কখনোই ঈশ্বরের গৃহের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে না, এবং ব্যক্তিগত গৌরবের বিনিময়ে এমনকি সেই স্বার্থ বিক্রয় অবধি করে দেয় (দশম অংশ))। ছত্রটি পড়ে বুঝি যে খ্রীষ্টবিরোধীরা পছন্দ করে মর্যাদা। অন্যের মনে নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তারা কখনোই নিজেদের সমস্যার কথা বলে না, পাছে সকলে তাদের দুর্বলতা জেনে যায়, এই ভয়ে। দায়িত্বপালনে সমস্যা হলেও তারা এমন ভান করে যাতে অন্যরা তাকে সর্বশক্তিমত্ত ও সত্যের সমঝদার ভাবে। এমনটাই ছিল আমার অবস্থা। ব্রাদার-সিস্টারদের সমস্যার সমাধান করতে না পেরেও কারো সাহায্য চাইনি। চেয়েছিলাম মানুষের মনে এক উজ্জ্বল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে, যাতে ব্রাদার-সিস্টারেরা ভাবে আমার কোনো ত্রুটি বা ঘাটতি নেই, আমি সমস্যা সমাধানে তাদের সাহায্য করতে পারি, যাতে তাদের আর কাউকে জিজ্ঞাসা করতে না হয়। আমি ভয় পেয়েছিলাম যে নেতা তাদের সাহায্য করবে, যার ফলে তাদের হৃদয়ে আমার অবস্থান ও ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। অবস্থান বজায় রাখতে, নিজের সমাধানের অতীত সমস্যাগুলিও সুরাহা করতে পারার ভান করেছিলাম। নেতাকে জিজ্ঞাসা না করে নিজে খুঁজতে গিয়ে বহু সময় নষ্ট করেছি। এর ফলে, আমি নিজের দায়িত্বে অকার্যকর হই এবং ব্রাদার সিস্টারদের জীবনে প্রবেশ ব্যহত হয়। দেখলাম যে আমার স্বভাব খুবই ভ্রষ্ট, আমি এক ভণ্ড। আমি ভাবি কীভাবে, অনুগ্রহের যুগে, ফরিশীরা বাহ্যত বিনয়ী ও সহনশীল ছিল। প্রায়শই রাস্তার মোড়ে প্রার্থনা করত, অন্যদের শাস্ত্রব্যাখ্যা করত। মানুষের মনে তাদের ভাবমূর্তি ছিল উজ্জ্বল, কিন্তু অন্তরে তারা ছিল ভণ্ড, অহংকারী, দুষ্ট, তাদের কোন আনুগত্য বা ঈশ্বর-ভীতি ছিল না, তাদের কাজকর্ম ঈশ্বরের বাক্যের পালন ছিল না। পরিবর্তে, তারা শিষ্ট আচরণ দিয়ে মানুষকে প্রতারিত ও বিভ্রান্ত করত যাতে অন্যরা তাদের বন্দনা ও প্রশংসা করে। বুঝতে পারলাম যে, আমি ফরিশীদের মতোই ভণ্ড, ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করার জন্য খ্রীষ্টবিরোধীর পথে চলেছি।
পরে, আমি এক ছত্র ঈশ্বরের বাক্য দেখি। “খ্রীষ্টবিরোধীদের আচরণের সারসত্য হল প্রতিনিয়ত নানাবিধ উপায় ও পদ্ধতির ব্যবহার করে পদমর্যাদা পাওয়ার, মানুষকে জয় করার ও মানুষকে দিয়ে তাদের অনুসরণ ও সম্মান করানোর লক্ষ্য অর্জন করা। হয়ত তাদের মনের গভীরে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না, তবে একটা বিষয় নিশ্চিত: এমনকি যখন তারা মানুষের জন্য ঈশ্বরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না, তখনও কিন্তু তারা তাদের মধ্যে পদমর্যাদা ও ক্ষমতা লাভ করতে চায়। এমনকি সেই দিনটাও যদি আসে যখন তারা উপলব্ধি করে যে তারা পদমর্যাদার জন্য ঈশ্বরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, এবং তারা নিজেদের কিছুটা সংযত করে, কিন্তু তারা তখনও পদমর্যাদা ও প্রতিপত্তির অন্বেষণে নানাবিধ পদ্ধতি প্রয়োগ করে; তাদের মনের মধ্যে একটা বিষয় স্পষ্ট যে তারা অপরের অনুমোদন ও প্রশংসা জয় করে বৈধ পদমর্যাদা নিশ্চিত করবে। সংক্ষেপে, যদিও খ্রীষ্টবিরোধীরা যা যা করে সেগুলো সবই তাদের দায়িত্ব পালনের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হয়, কিন্তু তার পরিণতি হল মানুষকে প্রতারিত করা, মানুষকে তাদের উপাসনা ও অনুসরণ করানো—যে ক্ষেত্রে, এইভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করার অর্থ হল তাদের মহিমান্বিত করা ও তাদের সাক্ষ্য বহন করা। মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা, এবং গির্জায় পদমর্যাদা ও ক্ষমতা অর্জন করার জন্য তাদের যে উচ্চাকাঙ্খা, তা কখনোই বদলাবে না। এই হল একজন পুরোদস্তুর খ্রীষ্টবিরোধী। ঈশ্বর যাই বলুন বা করুন না কেন, এবং তিনি মানুষের কাছ থেকে যাই চেয়ে থাকুন না কেন, খ্রীষ্টবিরোধীরা তাদের যা করা উচিত তা করে না অথবা ঈশ্বরের বাক্য ও প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের কর্তব্য পালন করে না, তাঁর উচ্চারণের ও সত্যের সামান্যতম অর্থ উপলব্ধির ফল হিসাবে তারা নিজেদের পদমর্যাদা ও ক্ষমতার অন্বেষণও পরিত্যাগ করে না। তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বাসনা তবুও থেকেই যায়, তাদের হৃদয় অধিকার করে ও তাদের সমগ্র অস্তিত্বকেই নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের আচরণ ও চিন্তাভাবনাকে নির্দেশিত করে, এবং তাদের চলার পথ নির্ধারণ করে দেয়। এই হল এক প্রকৃত খ্রীষ্টবিরোধী। কোনো খ্রীষ্টবিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কী দেখতে পাওয়া যায়? কেউ কেউ বলে, ‘মানুষকে অর্জন করার জন্য খ্রীষ্টবিরোধীরা ঈশ্বরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তারা ঈশ্বরকে স্বীকার করে না।’ তারা যে ঈশ্বরকে স্বীকার করে না, এমনটা কিন্তু নয়; তারা ঈশ্বরকে প্রকৃতপক্ষেই স্বীকার করে এবং তাঁকে বিশ্বাস করে, তারা তাঁকে অনুসরণ করতে এবং সত্য অন্বেষণেও ইচ্ছুক, কিন্তু তাদের মধ্যে একটা বিষয় কখনোই পরিবর্তিত হবে না: ক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতি তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও অভিলাষ কখনোই পরিবর্তিত হবে না, আবার ব্যর্থতা বা বাধার কারণে, বা ঈশ্বর তাদের পাশে সরিয়ে রেখেছেন বা ত্যাগ করেছেন বলে, তারা তাদের ক্ষমতা বা মর্যাদার অন্বেষণে হাল ছেড়ে দেবে না। খ্রীষ্টবিরোধীদের প্রকৃতি এমনই” (বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, পঞ্চম পরিচ্ছেদ: তারা মানুষকে ঠকায়, প্রলুব্ধ করে, ভয় দেখায়, আর নিয়ন্ত্রণ করে)। ঈশ্বর বলেন, খীষ্টবিরোধীরা খ্যাতি ও মর্যাদার পিছনে ছোটে, যাতে মানুষ তাদের অনুসরণ করে, আর তারা মানুষের দখল ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা মেটাতে পারে। মানুষকে দখল করার জন্য তারা ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ঠিক সেপথেই চলেছিলাম। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিলাম, তাঁকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম, এ-ও জানতাম যে সবকিছুর উপরই রয়েছে ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব, তিনিই পরম। তিনিই সৃষ্টিকর্তা, আমাদের উচিত তাঁর পূজা করা, মর্যাদা আর মানুষের দখলদারির জন্য তাঁর প্রতিযোগী হওয়া নয়। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম দায়িত্বেরর মাধ্যমে লোকের তারিফ আর পুজো পেতে, তাদের হৃদয়ে একটি স্থান অর্জন করতে। আমার উপাসনা করলে, মানবহৃদয়ে ঈশ্বরের স্থান থাকবে না, সমস্যায় পড়লে, প্রার্থনা এবং ঈশ্বরকে ভরসা না করে তারা আমার কাছে আসবে। আমি খ্রীষ্টবিরোধীর পথে হাঁটছিলাম। ধর্মীয় জগতের যাজক ও অগ্রজদের কথা ভাবি, যদিও তারা সুসমাচার প্রচার করে, বাইবেল ব্যাখ্যা করে, আশীর্বাদ দেয়, আর কিছু সৎকর্মও করে, কিন্তু এসবের উদ্দেশ্য বিশ্বাসীদের তাদের মুখাপেক্ষী ও অনুগামী করে ফেলা। কোনো প্রশ্ন এলে, বিশ্বাসীরা যাজকদের কাছে গিয়ে তাদের নির্দেশনাই গ্রহণ করবে। এমনকি প্রভুর আগমন-বার্তা শুনে সন্ধান আর খোঁজ করতে চাইলেও, যাজকের সায় চায় তারা। তা কি নিজেকে ঈশ্বর হিসাবে দেখানো নয়? এই ধর্মীয় নেতারা মানুষের উপর দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ রাখে, তাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের স্থান নেই, তারা প্রকাশ্যেই ঈশ্বরের শত্রু। আমিও তেমনই ছিলাম। চেয়েছিলাম ব্রাদার-সিস্টারদের আমার অনুগামী করতে, কোনো সহকর্মী চাই নি, চেয়েছিলাম প্রলোভন মারফত তাদের মর্যাদা পেতে, তাদের বলেছিলাম, যেকোনো সমস্যা নিয়ে এলেই তাদের সাহায্য করব। আসলে আমি নিজেও সদ্যই বিশ্বাসী হয়েছিলাম, অভিজ্ঞতাও ছিল স্বল্প। ব্রাদার-সিস্টারদের অবস্থার ও সমস্যার গভীরে যেতে পারতাম না। একা তাদের সাহায্য করতে না পেরেও নেতার সাহায্য চাইনি। ছিলাম প্রবলভাবে উদ্ধত আর যুক্তিহীন। অতীতে কোনো সমাবেশে খ্রীষ্টবিরোধীদের নিয়ে বলতে গিয়ে, সর্বদাই শঙ্কিত হয়েছি, কারণ ভীত ছিলাম যে আমি নিজেই খ্রীষ্টবিরোধীতে পরিণত হবো, কিন্তু মনে হত একমাত্র উচ্চস্তরীয় নেতারাই খ্রীষ্টবিরোধিতার পথে চলে খ্রীষ্টবিরোধী হতে পারে, উচ্চ-মর্যাদা বিহীন এক দলনেতা রূপে আমি সে পথে হাঁটব না। বুঝতে পারি যে, এই মনোভাব ভ্রান্ত। ঈশ্বরের বাক্যর বিচার ছাড়া আমি জানতেই পারতাম না, হয়তো আরও মন্দ কাজ করে ফরিশীদের মতোই ঈশ্বর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ও নির্মূল হতাম। তা বোঝার পথ দেখানো জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই, জানতাম, খ্যাতি, মুনাফা আর মর্যাদার পিছনে না ছুটে অনুতাপ করতে হবে, এবং ঈশ্বরের চাহিদামাফিক দায়িত্বপালন করতে হবে।
পরে, আরেক ছত্র ঈশ্বরের বাক্য পড়ি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “ঈশ্বর যখন চান যে লোকজন তাদের দায়িত্ব ভালোভাবে পূরণ করুক, তখন তিনি তাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক কাজ সম্পূর্ণ করতে, বা কোনো মহান অঙ্গীকার সম্পন্ন করতে বলেন না, আবার কোনো সুবিশাল উদ্যোগ সম্পাদন করতেও বলেন না। ঈশ্বর চান যে, মানুষেরা যেনবিনয়পূর্ণ ভাবে তাদের যথাসাধ্য করতে সক্ষম হয়, এবং তাঁর বাক্য অনুসারে জীবনযাপন করে। ঈশ্বর তোমাদের মহান বা সম্মানীয় হওয়ার জন্য বলেন না, কোনো অলৌকিক ক্রিয়াকাণ্ড সাধিত আবার তোমার মধ্যে কোনো আনন্দদায়ক চমকও প্রত্যক্ষ করতে চান না। তিনি এহেন বস্তু চান না। ঈশ্বর তোমার থেকে শুধু চান, তুমি যেন তাঁর বাক্য অনুসারে অবিচলিতভাবে অনুশীলন করতে পারো। যখন তুমি ঈশ্বরের বাক্য শোনো, তখন যা কিছুই উপলব্ধি করো না কেন, যা বুঝেছ তা-ই সম্পাদন কোরো, যা শুনেছ তা স্মরণে রেখো, এবং তারপর, যখন অনুশীলনের সময় আসবে, তখন ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে অনুশীলন করো, যাতে ঈশ্বরের বাক্য তোমার জীবন, তোমার বাস্তবিকতা এবং জীবনযাপন হয়ে উঠতে পারে। এইভাবেই ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন। তুমি সর্বদাই মহত্ত্ব, আভিজাত্য এবং মর্যাদার অনুসন্ধান করছ; সর্বদাই উচ্চকিত প্রশংসালাভের অনুসন্ধান করো। ঈশ্বর যখন এইসব প্রত্যক্ষ করেন, তখন তিনি কেমন বোধ করেন? ঈশ্বর তা ঘৃণা করেন, এবং তিনি তোমার থেকে দূরে সরে যাবেন। তুমি মহত্ত্ব, আভিজাত্য এবং অন্যদের থেকে উচ্চতর, বিশিষ্ট, অসামান্য ও উল্লেখযোগ্য হওয়ার মতো বিষয়গুলি যত বেশি অনুসরণ করবে, ঈশ্বরের চোখে তুমি তত বেশি ঘৃণ্য হবে। যদি তুমি নিজের বিষয়ে প্রতিফলন না করো, অনুতপ্ত না হও, তাহলে ঈশ্বর তোমাকে অবজ্ঞা ও পরিত্যাগ করবেন। ঈশ্বরের চোখে ঘৃণার্হ, এমন একজন যাতে না হয়ে ওঠো, তা নিশ্চিত করো; বরং ঈশ্বর যাকে ভালোবাসেন, এমন একজন ব্যক্তি হয়ে ওঠো। তাহলে, কেউ ঈশ্বরের ভালোবাসা কীভাবে অর্জন করতে পারে? আনুগত্য সহকারে সত্যকে গ্রহণের মাধ্যমে, সৃষ্ট সত্তার অবস্থানে দণ্ডায়মান হয়ে, মাটিতে পা রেখে ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ করার মাধ্যমে, নিজের কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে, একজন সৎ ব্যক্তি হওয়ার চেষ্টা করে, এবং মানবসদৃশ জীবনযাপনের মাধ্যমে। এটাই যথেষ্ট, ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ না করা, বা অমূলক স্বপ্ন না দেখা, খ্যাতি, লাভ ও মর্যাদার অনুসন্ধান না করা, বা ভিড়ের থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা না করার বিষয়ে মানুষজনকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়াও, তারা অবশ্যই যেন তেমন কোনো মহান বা অতিমানবীয় ব্যক্তি হওয়ার চেষ্টা না করে, যে কিনা মনুষ্যশ্রেষ্ঠ, এবং যে অন্যদেরকে তার উপাসনা করতে বাধ্য করে। এটাই হল কলুষিত মানবতার আকাঙ্ক্ষা এবং এ-ই হল শয়তানের পথ; ঈশ্বর এই ধরনের ব্যক্তিগণকে উদ্ধার করেন না। যদি মানুষ অবিরাম খ্যাতি, লাভ এবং মর্যাদার অন্বেষণ করে, অনুতাপ করতে অস্বীকার করে, তবে তাদের কোনো প্রতিকার নেই, এবং তাদের শুধু একটাই পরিণতি হবে: বহিষ্কৃত হওয়া। বর্তমানে, তোমরা যদি শীঘ্র অনুতাপ করতে পারো, তবে এখনও সময় আছে, কিন্তু যখন সেই দিন আগত হবে এবং ঈশ্বরের কাজ সমাপ্ত হবে, সেদিন বিপর্যয় আরো সুবিশাল হয়ে উঠবে এবং অনুতাপ করার মতো কোনো সুযোগই আর তোমরা পাবে না। যখন সময় আসবে, তখন খ্যাতি, লাভ ও মর্যাদার অনুসন্ধানকারী, অনুতাপ প্রত্যাখ্যানকারী সেই মানুষদের সকলকেই পরিহার করা হবে। ঈশ্বরের কাজে কোন ধরনের মানুষ উদ্ধার পায়, এবং মানুষের প্রতি তাঁর পরিত্রানের অর্থ কী, সেই বিষয়ে তোমাদের সকলেরই পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। ঈশ্বর চান যে মানুষ তাঁর সম্মুখে আসুক, তাঁর বাক্য শ্রবণ করুক, সত্যকে স্বীকার করুক, তাদের ভ্রষ্ট স্বভাব পরিহার করুক, এবং ঈশ্বর যেমন আদেশ করেন বা বলেন সেই অনুসারে অনুশীলন করুক, অর্থাৎ মানুষের ধারণা এবং কল্পনা বা শয়তানোচিত দর্শন অনুসারে জীবনযাপন না করে, এবং মনুষ্যসুলভ ‘সুখ’ অন্বেষণের পরিবর্তে, তাঁর বাক্য অনুসারে জীবনযাপন করুক। যদি কেউ ঈশ্বরের বাক্য না শুনে, সত্য স্বীকার না করে, এখনও শয়তানের দর্শন অনুসারে জীবনযাপন করে, অনুতাপে করতে না চায়, তাহলে এই ধরনের মানুষ ঈশ্বরের দ্বারা উদ্ধার লাভ করবে না। যখন তুমি ঈশ্বরকে অনুসরণ করো, তখন অবশ্যই তা করার অবশ্যই একটা কারণ হল যে তুমি ঈশ্বরের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছ—তাহলে ঈশ্বর তোমাকে নির্বাচন করেছেন, এর অর্থ কী? তা বোঝায় তোমায় এমন একজনে পরিণত করা, যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, যে প্রকৃতই ঈশ্বরকে অনুসরণ করে, যে ঈশ্বরের জন্য সমস্ত কিছু পরিত্যাগ করতে পারে, এবং যে ঈশ্বরের পথ অনুসরণে সক্ষম, এমন একজন যে তাঁর শয়তানোচিত স্বভাব পরিহার করেছে এবং আর শয়তানকে অনুসরণ করে না, বা শয়তানের রাজত্বের অধীনে বাস করে না। যদি তুমি ঈশ্বরকে অনুসরণ করো এবং ঈশ্বরের গৃহে দায়িত্ব পালন করো, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য লঙ্ঘন করো, প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর বাক্য অনুসারে কাজ বা অভিজ্ঞতালাভ না করো, এমনকি ঈশ্বরের বিরোধীতাও করতে পারো, তাহলে তুমি কি ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদন লাভ করবে? একেবারেই না। এর মাধ্যমে আমি কী বোঝালাম? কর্তব্যপালন প্রকৃতপক্ষে কঠিন নয় বা তা নিবেদিতভাবে গ্রহণযোগ্য মান পর্যন্ত সম্পাদন করাটাও কঠিন নয়। তোমাকে তোমার জীবন উৎসর্গ করতে হবে না, বা বিশেষ বা কঠিন কিছু করতে হবে না, শুধুমাত্র সতত এবং অবিচলিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য এবং নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে, নিজস্ব ধারণা যুক্ত না করে, বা নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন না করে, সত্য অন্বেষণের পথে চলতে হবে। মানুষ যদি তা করতে পারে, তবে তাদের একটা মূলত মানবিক বাহ্যিক রূপ রয়েছে। যখন তারা ঈশ্বরের প্রতি প্রকৃতই অনুগত হবে এবং একজন সৎ ব্যক্তি হয়ে উঠবে, তখনই তারা প্রকৃত মানব-সদৃশতার অধিকারী হবে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন সমন্বয়পূর্ণ সহযোগিতার)। ঈশ্বরের বাক্যে আমি তাঁর ইচ্ছাকে বুঝি। আজ, মানুষকে উদ্ধার করতে ঈশ্বর বহু বাক্য প্রকাশ করেছেন এই আশায় যে, আমরা তাঁর বাক্য শুনব, পালন করব, সৃষ্ট জীব রূপে স্থান গ্রহণ করে তাঁর বাক্য ও ইচ্ছামাফিক দায়িত্বপালন করব, নিজেদের ভ্রষ্ট স্বভাব দূর করে উদ্ধার পাব। দায়িত্বের প্রতি আমরা সঠিক উদ্দেশ্য রাখব, সুনাম ও মর্যাদা বজায় রাখতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিপ্ত হব না। পরিবর্তে, সযত্নে সত্যের অনুসরণ ও সৃষ্ট জীব রূপে দায়িত্ব পালন করব। ঈশ্বর বাক্যের নির্দেশনার সুবাদে, অনুশীলনীয় এক পথ খুঁজে পেয়েছি।
কিছুদিন পর, এক সিস্টার তার সমস্যার কথা জানিয়ে সাহায্য চায়। সমস্যাটা আমার পক্ষে কিছুটা কঠিন ছিল। তা সমাধানের উপায় জানা ছিল না। বুঝলাম যে আগের মতো আচরণ করে গেলে চলবে না, চলবে না নিজের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য নেতার সহযোগিতায় নারাজ হলে, তাই নেতাকে এই সমস্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি। বলি যে, “এই সমস্যার সমাধানে তুমি কি আমায় সাহায্য করবে?” সে ঈশ্বরের বাক্যর উপযুক্ত অংশ খুঁজে দিয়ে আমার কাছে পাঠায়, এবং আমরা একসাথে সেই সমস্যার সমাধান করি। এর পর থেকে, কোনো সমস্যা এলেই, নেতার সাহায্য চেয়ে তার সাথে সহযোগিতা করি, এখন আমি আগের মতো একা একা কাজ করি না। টের পাই যে ব্রাদার-সিস্টারদের সাহায্য করা নিয়ে আমার মনোভাব বদলে গেছে। অতীতে, নিজের ভাবমূর্তি ও সুনাম রক্ষার্থে তা করতাম, কখনো নেতাকে জিজ্ঞাসা করিনি। ভয় হত, সে সমস্যার সমাধান করে দিলে কেউ আর আমার কদর করবে না। এখন, তারা আমার কদর করে কি না, তা নিয়ে ভাবি না। পরিবর্তে, ভাবি কীভাবে ব্রাদার-সিস্টারদের সমস্যার আরও ভালো সমাধান করা যায়, সক্রিয়ভাবে নেতার সাথে সহযোগিতা করি। এইভাবে অনুশীলন আমায় গভীর স্বাচ্ছন্দ্য দেয়।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।