দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন সত্যের অন্বেষণ

04-09-2023

কয়েক বছর আগে আমি সুসমাচার প্রচার শুরু করি। আমি মনস্থির করেছিলাম যে এই দায়িত্বটা ভালভাবে পালন করার জন্য আমি ঈশ্বরের উপর নির্ভর করব। তাই, ঈশ্বরের বাক্য পাঠ, নিজেকে সত্য দিয়ে প্রস্তুত করা, আর নীতি বিষয়ে শেখার জন্য আমি প্রতিদিন অনেক সময় ব্যয় করতাম। আমি কিছু বুঝতে না পারলে, সেটার সম্পর্কে আমি অন্যদের জিজ্ঞাসা করতাম। শীঘ্রই, আমি আমার নিজের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হই এবং আমি ঈশ্বরের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ হই। সেই সময়ে, আমি আমার দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত ছিলাম, এবং ফলাফল ক্রমশ আরো ভাল হতে থাকে। একটা সময় পর, আমাকে দলনেত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হল। আমি খুব খুশি হলাম, এবং ভাবলাম, “আমাকে আরো মূল্য দিতে হবে, আমার প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করতে হবে, এবং আরো মানুষদের ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজকে গ্রহণ করাতে হবে। শুধুমাত্র এটাই প্রমাণ করবে যে আমি দায়িত্বপূর্ণ, কার্যকরী এবং আমি সত্যকে অনুসরণ করি। এইভাবে, আমার ভ্রাতা ও ভগিনীরা অবশ্যই আমাকে সমর্থন করবে এবং আমার প্রশংসা করবে।”

সেই কয়েক মাসে, আমি ঘুম থেকে উঠেই আমার দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে যেতাম। মাঝে মাঝে আমি খেতেও ভুলে যেতাম। আমি উপাসনা এবং ঈশ্বরের বাণী পাঠকেও উপেক্ষা করতাম। আমার মনে হল যে উপাসনা, এবং ঈশ্বরের বাণী পড়া আমার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে নিচ্ছে, যে এটা আমার দায়িত্ব পালনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করেছে। সমাবেশে, অন্যদের ঈশ্বরের বাণী পড়তে এবং তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুনতে শুনতে, আমি আমার দায়িত্ব সম্পর্কে চিন্তা করতাম। আমি পারিনি আমার হৃদয়কে শান্ত করে ঈশ্বরের বাণী নিয়ে চিন্তা করতে, অন্যদের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধির কথা শোনা তো অনেক দুরের ব্যাপার। ক্রমশ, আমার প্রতিদিনের উন্মুক্ত করা দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো আমি আর চিনতে পারলাম না। আমি আরো উদ্ধত হয়ে উঠলাম এবং আমার কর্তব্যে অন্যদের সঙ্গে ভালভাবে কাজ করতে পারলাম না। যখন আমি দেখলাম যে আমার সঙ্গীর কাজ ভালোভাবে করা হয়নি, তখন আমি তাকে অবজ্ঞা করলাম। আমার মনে হল যে সে দুই বছর ধরে সুসমাচার প্রচার করেছে, তবুও সে আমার মতো ভালো ছিল না, আমি ছিলাম এক শিক্ষানবীশ। আমি যদি আরও কিছু সময় থাকি তাহলে আমি অবশ্যই তার চেয়ে আরো ভালো হয়ে যাব। মাঝে মাঝে, যখন আমি মনে করতাম আমি সঠিক, আমি আমার নিজস্ব ধারণা অনুসরণ করতে চাই, আমি তার সঙ্গে কিছু আলোচনা করতে বা এমনকি তাকে জানাতেও চাইতাম না। যখন সে আমার পরিদর্শনমূলক কাজের অগ্রগতি জানতে চাইল, আমি তাকে সেটাও বলতে চাইনি। আমি ভাবলাম, আমি যদি তাকে বলি, যখন আমাদের নেতারা কাজের কথা জিজ্ঞেস করতে আসবেন, সে-ই কাজের অগ্রগতি এবং বিস্তারিত তথ্য জানাবে, এবং সেটা আমার খ্যাতির আলো কেড়ে নেবে। আমি সবসময় আমাদের নেতাদের সামনে বলেছি যে আমার সঙ্গী তার কর্তব্যে দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিল। পরে যখন নেতারা আমার অবস্থা জানতে পারলেন, তাঁরা আমার সঙ্গে সম্প্রীতিপূর্ণ সহযোগিতা সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করলেন, এবং বললেন যে আমি অন্যদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করিনি, আমার সঙ্গীকে অবজ্ঞা করেছি, এবং অন্যদের ত্রুটিগুলোর উপর নজর দিয়েছি, যা ছিল ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু আমি নিজেকে একদমই চিনতাম না। আমি তখনও মনে করছিলাম যে সে দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিল বলেই আমরা একসঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে পারিনি, তাই আমি তাকে অবজ্ঞা করেছিলাম। পরে নেতৃবৃন্দ দেখলেন যে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর থেকে আমি শিক্ষা পাইনি, তাই তারা আমার বিরূদ্ধে পদক্ষেপ নিলেন খুব উদ্ধত এবং অযৌক্তিক হওয়ার কারণে, এবং বললেন যে এটা আমার দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে, তাই তারা আমাকে নিজের সম্পর্কে ভাবতে বললেন। আমি তখন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম, ভেবেছিলাম আমি আমার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিদিন অনেক রাত অবধি জেগে থাকি, আমি কষ্ট পেতে পারি, মূল্য দিতে পারি এবং আমার দায়িত্বে কার্যকর হতে পারি। আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব উন্মোচিত হলে তাতে কী যায় আসে? আমি আমার দায়িত্ব পালনে এত কার্যকর থাকা সত্ত্বেও কেন আমার সঙ্গে এইভাবে মোকাবিলা করা হল? এই সবকিছুতে আমি দুঃখিত বোধ করলাম, তাই আমি ঈশ্বরের সামনে গিয়ে প্রার্থনা করলাম এবং বললাম তাঁর ইচ্ছা উপলব্ধির জন্য আমাকে দিকনির্দেশ দিতে।

একদিন, আমার উপাসনার সময়, আমি ঈশ্বরের বাণীর এই অংশটা পড়লাম, “কেউ সত্যের অন্বেষণ করে কি না তুমি কীভাবে তা মূল্যায়ন করবে? যে মূল বিষয়টার প্রতি নজর দিতে হবে সেটা হল, দায়িত্ব সম্পাদন এবং কাজ করার ক্ষেত্রে তারা কী প্রকাশ ও অভিব্যক্ত করছে। এর থেকে তুমি কোনো ব্যক্তির স্বভাব প্রত্যক্ষ করতে পারো। তাদের স্বভাব থেকেই তুমি প্রত্যক্ষ করতে পারো যে তারা কোনো পরিবর্তন অর্জন করেছে কি না বা জীবনে কোনো প্রবেশ লাভ করেছে কি না। যদি কারোর কাজ করার সময় ভ্রষ্ট স্বভাব ছাড়া আর কিছুই প্রকাশিত না হয় এবং যদি সত্যের কোনো বাস্তবিকতা একেবারেই তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তারা নিশ্চিতভাবেই সত্য অন্বেষণকারী কোনো ব্যক্তি নয়। যারা সত্যের অন্বেষণ করে না, তারা কি জীবনে প্রবেশ করতে পারে? একেবারেই না। তারা প্রতিদিন যা কিছু করে, তাদের ছুটে বেড়ানো, নিজেকে ব্যয় করা, যন্ত্রণা ভোগ করা, যে মূল্য তারা প্রদান করে, যা কিছুই করুক না কেন সেগুলো সবই সেবার অংশ, আর তারা হল সেবা-প্রদানকারী। কেউ যত বছর ধরেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করুক না কেন, সবচেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে তারা সত্যকে ভালোবাসে কি না। একজন ব্যক্তি কী করতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে, সেটা থেকেই প্রত্যক্ষ করা যায় সে কী ভালোবাসে এবং অন্বেষণ করে। কোনো একজন যা যা করে তার মধ্যে বেশিরভাগ কাজই সত্যের নীতি এবং ঈশ্বরের চাহিদার সাথে সঙ্গত হয়, তাহলে সে এমন একজন মানুষ যে সত্যকে ভালোবাসে এবং সত্যের অন্বেষণ করে। যদি সে সত্য অনুশীলন করতে পারে এবং তার দৈনন্দিন কাজকর্মগুলো তার দায়িত্ব সম্পাদনের জন্যই করা হয়ে থাকে, তাহলে সে জীবনে প্রবেশ লাভ করেছে এবং সে সত্যের বাস্তবিকতার অধিকারী। কিছু কিছু বিষয়ে তার কাজকর্ম হয়ত অনুপযুক্ত হতে পারে, বা সে হয়ত সত্যের নীতি যথাযথভাবে উপলব্ধি না করতে পারে, অথবা হয়ত তার মধ্যে পক্ষপাতিত্ব থাকে, বা কখনো কখনো সে অহংকারী ও নিজের নৈতিকতা বিষয়ে উদ্ধত হতে পারে, তার নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দিতে পারে, এবং হয়ত সত্যকে স্বীকার করতে ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু তা সত্ত্বেও যদি পরবর্তীকালে সে অনুতাপ করতে ও সত্যের অনুশীলন করতে পারে, তাহলে তা থেকে নিঃসন্দেহে প্রমাণ হয় যে সে জীবনে প্রবেশ লাভ করেছে এবং সে সত্য অন্বেষণ করে। যদি কেউ তার দায়িত্ব সম্পাদনের সময় যা প্রদর্শন করে তা শুধুই ভ্রষ্ট মনোভাব, এক গুচ্ছ মিথ্যাচার, কর্তৃত্ব-ফলানোর মনোভাব, প্রশ্রয়, প্রভূত ঔদ্ধত্য ছাড়া কিছুই না হয়, যদি তারা নিজেই নিজের আইন হয়ে ওঠে, এবং যা খুশি তাই করে, তাহলে সে যত বছর ধরেই ঈশ্বরে বিশ্বাসী থাকুক বা যত ধর্মপদেশই শুনে থাকুক না কেন, শেষ পর্যন্ত যদি এই ভ্রষ্ট স্বভাবের সামান্যতম পরিবর্তনও না হয়ে থাকে, তাহলে সে অবশ্যই সত্যের অন্বেষণকারী ব্যক্তি নয়। এমন অনেক লোক আছে যারা বহু বছর ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাসী, যারা বাহ্যিকভাবে মন্দকর্মকারী নয়, এবং কিছু সৎকর্মও করে। তারা বেশ আবেগের সাথে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাদের জীবন চরিত্রের একেবারেই পরিবর্তন হয় না, এবং ভাগ করে নেওয়ার মতো সামান্য অভিজ্ঞতা বা সাক্ষ্যও তাদের নেই। এই ধরনের লোকেরা করুণার পাত্র নয় কি? এত বছর ঈশ্বরে বিশ্বাস করার পরও এদের সামান্যতম অভিজ্ঞতা ও সাক্ষ্যেরও অভাব। এরা সম্পূর্ণরূপে সেবা-প্রদানকারী। এরা সত্যিই করুণার পাত্র!(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অনুশীলনেই রয়েছে জীবনে প্রবেশ)। ঈশ্বরের বাণী প্রকাশ করেছে যে যারা সত্যের অনুসরণ করে না তাদের জীবনে প্রবেশের সুযোগ নেই। প্রতিদিন, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব ছাড়া আর কিছুই প্রকাশ করে না। এমনকি যদি তারা পারেও চেষ্টা করতে, কষ্ট পেতে, এবং মূল্য দিতে, তারা যা করছে তা হল সেবা প্রদান। এই ধরনের মানুষ যত বছরই বিশ্বাস করুক না কেন পরিবর্তিত হবে না, এবং তারা সেবা-প্রদানকারীই থাকবে। যখন আমি দেখলাম যে ঈশ্বর বলেছেন যারা সত্যের অনুসরণ করে না তারা সেবা-প্রদানকারী, তখন আমার খুব খারাপ লাগল। আমি আমার চোখের জল আটকাতে পারলাম না। আমি বুঝলাম যে আমার মত মানুষই ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত হয়। আমি আমার দায়িত্বে কষ্ট পেতে এবং মূল্য দিতে পারি, কিন্তু আমি সত্যের অনুসরণ করিনি বা আমার স্বভাব পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করিনি। আমি উপাসনা, ঈশ্বরের বাণী পড়া এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভকে সময় নষ্ট বলে মনে করেছি। আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সঙ্গে সমাবেশে, আমি পারিনি আমার হৃদয়কে শান্ত করতে এবং ঈশ্বরের বাণী চিন্তা করতে, বা আমি শুনিনি অন্যদের অভিজ্ঞতা এবং ঈশ্বরের বাণী উপলব্ধির কথা। যখন আমি আমার দায়িত্বে উদ্ধত স্বভাব দেখালাম, আমি সত্য অনুসন্ধান করতে এবং সমাধান করতে ঈশ্বরের সামনে আসিনি। বরং, আমি আমার সঙ্গীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলাম, তার ঘাটতিগুলো ধরে ফেলেছিলাম, এবং নিজেকে একদমই বুঝতে পারিনি। আমার নেতারা আমার সমস্যার কথা তুলে ধরায়, আমি যুক্তি দিয়ে নিজেকে সমর্থন করেছিলাম। এমনকি আমার মনে হয়েছিল যেহেতু আমি কার্যকরীভাবে আমার দায়িত্ব পালন করছি, আমি কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব উন্মোচিত করলেও, নেতাদের আমার সঙ্গে মোকাবিলা করা উচিত নয়। আমার কর্মের দিকে তাকিয়ে, আমি সত্য অনুসরণের কোনো প্রকাশ দেখিনি। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর থেকে আমি শিক্ষা নিইনি, অথবা আমার নিজের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধানের জন্য সত্যের অনুসন্ধান করিনি। আমি শুধু প্রতিদিন যা উন্মুক্ত করেছি তা ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব। আমি আমার দায়িত্ব পালনে কার্যকর হলেও, ঈশ্বরের চোখে, আমি কেবল শ্রম ব্যয় করছিলাম এবং সেবা করছিলাম। অতীতে, আমি ভাবতাম যারা সর্বোচ্চ মূল্য দেয় এবং যারা কর্তব্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর তারা সত্যের অনুসরণ করে, এবং ঈশ্বর তাদের অনুমোদিত করেন। আমি বুঝতে পারিনি যে এটা কেবলমাত্র আমার স্বকপোলকল্পিত ভাবনা ছিল। ঈশ্বর কেউ সত্য অনুসরণ করে কিনা বিচার করেন তাদের বাহ্যিক প্রচেষ্টা এবং ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং তারা তাদের জীবন চরিত্র পরিবর্তন করতে পারে কিনা, তারা ঈশ্বরের বাণী অনুসারে জীবনযাপন করে এবং সত্যের নীতি অনুসারে কাজ করে কিনা তার ভিত্তিতে। আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর যদি সমাধান না হত, এবং আমি তখনও আমার উদ্ধত স্বভাবের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মিশতে পারতাম, এবং শুধুমাত্র খ্যাতি এবং মর্যাদা অনুসরণ করার জন্য আমার দায়িত্ব পালন করতাম, ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমার কর্ম সমর্থন করতেন না। এটা বুঝতে পেরে, আমি কীভাবে আমার উদ্ধত স্বভাবের সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে ঈশ্বরের বাক্যের কিছু অংশ ভোজন এবং পান করলাম, কীভাবে সম্প্রীতির সঙ্গে সহযোগিতা করা যায় এবং কীভাবে খ্যাতি এবং মর্যাদা এড়ানো যায়। ঈশ্বরের বাণীর মাধ্যমে, আমি অবশেষে দেখলাম যে আমার স্বভাব সত্যিই খুব উদ্ধত ছিল। আমি সবসময় আমার সঙ্গীর দুর্বলতার সঙ্গে আমার শক্তির তুলনা করি, তাই আমি সবসময় মনে করতাম যে আমি তার চেয়ে ভাল এবং তাকে অবজ্ঞা করতাম। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আমার সঙ্গীকে জানাতে আমার অনিচ্ছা এবং আমাদের নেতাদের সামনে তার ত্রুটিগুলো নিয়ে আলোচনা করার প্রবণতা—এই দুইয়ের মাধমেই আমি খ্যাতি এবং মর্যাদার জন্য তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এটা বুঝতে পেরেই, আমি সক্রিয়ভাবে আমার সঙ্গীকে আমার দুর্নীতির সম্পর্কে জানালাম। ক্রমশ, আমার সঙ্গী এবং আমি একসঙ্গে সম্প্রীতির সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম হলাম, এবং আমাদের কাজও মসৃণভাবে এগোল। আমি এটাও বুঝতে পারলাম যে ঈশ্বরের নির্দেশনার দ্বারাই আমাদের কাজ কার্যকর হতে পেরেছে। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ইচ্ছা চরিতার্থ করতে আমার নিজের জন্য এই কৃতিত্ব নেওয়া উচিত নয়। আমার ঈশ্বরকে এই গৌরব দেওয়া উচিত। এই অভিজ্ঞতার পরে, আমি ঈশ্বরের কাছে খুব কৃতজ্ঞ ছিলাম। আমার নেতারা আমার সঙ্গে মোকাবিলা না করলে, আমি নিজেকে নিয়ে কিছুতেই ভাবতাম না, এবং আমি বুঝতে পারতাম না গুরুতর পরিণতি শুধুমাত্র খ্যাতি এবং মর্যাদার জন্য কাজ করার এবং জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ না করার। এভাবে চলতে থাকলে আমি আরও উদ্ধত হয়ে যেতাম। যখন আমি এই ব্যাপারগুলো বুঝতে পারলাম, আমি বিবেকবানভাবে জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করলাম, আমি আমার দায়িত্ব পালনে প্রতিদিন যা প্রদর্শন এবং চিন্তা করতাম, তা লিখতাম, এবং এই বিষয়ে ঈশ্বরের বাণী পড়তাম। কিছু সময় এইভাবে অনুশীলন করার পর, আমি অনুভব করলাম যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে, আমি আমার দায়িত্বে প্রতিদিন কিছু না কিছু অর্জন করেছি এবং আমি খুব পরিপূর্ণ অনুভব করলাম।

পরে আমি নেত্রী নির্বাচিত হলাম। আমি জানতাম আমার অনেক ঘাটতি ছিল, সত্যের উপলব্ধি ছিল অগভীর এবং তার বাস্তবতা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, তাই আমি ভীত ছিলাম যে আমি সমস্যার সমাধান করার জন্য সত্য নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে পারব না, যা অন্যদের জীবনে প্রবেশে বিলম্ব ঘটাতে পারে। আমি প্রায়ই প্রার্থনায় ঈশ্বরের কাছে আমার সমস্যা এবং অসুবিধাগুলো নিয়ে যেতাম, সত্যের সন্ধান করতাম, এবং আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো জানতে চেষ্টা করতাম, এবং ঈশ্বরের বাণী থেকে সমস্যা মোকাবিলা করার নীতিগুলো খুঁজতাম। সেই সময়ে, আমি অনুভব করেছিলাম যে আমি আমার দায়িত্বে অনেক অর্জন করেছি। কিন্তু পরে জানত পারলাম কিছু নেতা এবং কর্মীকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে দায়িত্বজ্ঞানহীন হওয়ার কারণে এবং কাজে বিলম্ব ঘটানোর জন্য, এবং আমার সহকর্মী এবং অংশীদারদের প্রতিনিয়ত বরখাস্ত করা হত, ব্যবহারিক কাজ না করার জন্য, এবং যখন তাদের বরখাস্ত করা হয়েছিল, সবাইকে কারণ বলা হয়েছিল। আমি বিশেষভাবে চিন্তিত ছিলাম যে, একদিন, যদি আমি আমার কাজটি ভালোভাবে না করি, আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের দ্বারা বরখাস্ত এবং উন্মোচিত হব, যার মাধ্যমে তারা সবাই জানতে পারবে আমি ঠিক কী ধরনের মানুষ। সেটা খুবই বিব্রতকর হবে! ভবিষ্যতে আমি কীভাবে আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের মুখোমুখি হব? আমি উন্মোচিত ও বরখাস্ত হয়ে বিব্রত হতে চাইনি। সেই মুহূর্ত থেকে, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে একজন নেত্রী হিসাবে, আপনার ভ্রাতা ও ভগিনীদের চোখ সবসময় আপনার দিকে থাকে, এবং আপনার সঙ্গীও আপনাকে পর্যবেক্ষণ করছে। একমাত্র আপনার দায়িত্বে কার্যকর থাকলেই আপনি একজন নেতা হিসাবে টিকে থাকতে পারবেন এবং সকলের সহায়তা ও সমর্থন পাবেন। আপনি যদি অকার্যকর হন, তবে আপনার প্রকাশিত এবং প্রতিস্থাপিত হওয়া কেবলই সময়ের ব্যাপার। তাই, আমি আমার দায়িত্ব পালনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেই, আমি আমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের সঙ্গে তাদের কাজ সম্পর্কে কথা বলতাম। আমি তাদের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতাম, কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রের সমস্যার বা বিচ্যুতির তদারকি করতাম, দেখতাম কোথায় অগ্রগতি ধীর, শিখতাম কীভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়, ইত্যাদি। ক্রমশ, আমি ঈশ্বরের বাণী পড়া, ঈশ্বরের কাছাকাছি যাওয়া, ভক্তিমূলক লেখ্য তৈরি করা, এবং আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো নিয়ে চিন্তা করাকে প্রাধান্য দেওয়া বন্ধ করে দিলাম। মাঝে মাঝে আমি বুঝতে পারতাম যে আমি দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব প্রকাশ করেছি, এবং আমাকে ঈশ্বরের সামনে যেতে হবে, ঈশ্বরের বাণী পড়তে হবে, এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে, কিন্তু আমি জানতাম ঈশ্বরের বাণী পড়তে, ভাবতে এবং চিন্তা করতে সময় লাগবে, তাই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে আমি নিজেকে বলতাম, “দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো গভীরভাবে প্রোথিত এবং মাত্র কয়েক দিনে সমাধান করা যায় না। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধান এখন না করলেও তা আমার দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে না। এই মুহূর্তে, আমার দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি সময় পেলে সমস্যার সমাধান করার জন্য ঈশ্বরের বাণী পড়ব। এখনই দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবের সমাধান করার জন্য আমার কোনো তাড়া নেই।” আর তাই, আমি প্রতিদিন কাজে এত ব্যস্ত থাকতাম, যে আমি ঈশ্বরের গৃহের এই প্রয়োজনীয়তাকেও গুরুত্বের সঙ্গে নিইনি যে নেতাদের ও কর্মীদের সাক্ষ্যমূলক নিবন্ধ লিখতে হয়। আমার কাছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আমি আমার কাজ ভালোভাবে করতাম এবং কার্যকর ছিলাম, যা নিজেই সাক্ষ্য ছিল। তাছাড়া, আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, এবং আমার নিবন্ধ লেখার সময় থাকত না। মাঝে মাঝে, আমি বুঝতে পারতাম আমার অবস্থা ভুল ছিল, যে আমার উচিত নয় সবসময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা এবং সত্যের সাধনা ছেড়ে দিয়ে জীবনে প্রবেশের পদ্ধতিকে স্থবির করে দেওয়া। আমি যদি এত কাজ করতাম কিন্তু কোনো সত্য অর্জন বা জীবনে প্রবেশে কোনো অগ্রগতি না করতাম, সেটা কি লজ্জার হত না? তার পরে, আমি অনেক শক্তি পেলাম। আমি কিছু সময়ের জন্য স্বাভাবিক আধ্যাত্মিক অনুশীলন বজায় রাখলাম, এবং আমার দুর্নীতি এবং সমস্যা সমাধানের জন্য ঈশ্বরের বাণী ভোজন এবং পান করলাম। কিন্তু সেই সময়টা অতিবাহিত হওয়ার পর, যখন আমি দেখলাম যে আমার দুই সঙ্গীকে বরখাস্ত করা হয়েছে ব্যবহারিক কাজ না করার জন্য এবং দৈহিক আরাম কামনা করার জন্য, আমার হৃদয় আবার উদ্বেগে ভরে উঠল। আমি অবিলম্বে কর্মক্ষেত্রে ১২০% দিতে শুরু করলাম। যখনই আমি আমার দায়িত্বে বিচ্যুতি বা ভুল লক্ষ্য করতাম, আমি নিরন্তর কাজ করতে শুরু করলাম। এইভাবে, যখন আমার উর্ধ্বতনরা বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন, আমি সময়মতো উত্তর দিতে পারতাম এবং তারা দেখত আমি ব্যবহারিক কাজ করছি।

যেহেতু আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, এবং আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর পরীক্ষা করা এবং সমাধান করার দিকে মনোনিবেশ করিনি, আমি আরো বেশি উদ্ধত হয়ে উঠলাম, কোনো ঘটনা ঘটলে সত্যের অনুসন্ধান করতাম না, এবং আমার নিজস্ব ধারণা অনুযায়ী সবকিছু করতাম। আমার দায়িত্বে থাকা একজন ভিডিও তৈরির কাজের কর্মকর্তা প্রায়ই গড়িমসি এবং স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজ করত, তাই আমার ঊর্ধ্বতনরা আমাকে নীতি অনুযায়ী তাকে বরখাস্ত করতে বলেন। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম তার কিছু গুণ এবং ক্ষমতা আছে, এবং তাকে প্রতিস্থাপন করলে ভিডিওর কাজের অগ্রগতি এবং ফলাফলকে প্রভাবিত করবে, তাই আমি তাকে অনেকদিন পর্যন্ত বরখাস্ত করলাম না। ফলস্বরুপ, তাদের তৈরি করা ভিডিওটি বারবার পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যা গির্জার কাজকে বিলম্বিত করেছিল। শেষ পর্যন্ত, আমার ঊর্ধ্বতনরা সরাসরি তাকে তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করলেন। যখন আমি দেখলাম যে আমার ঔদ্ধত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা গির্জার কাজে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে, অবশেষে আমি একটু সচেতনতা অর্জন করলাম। এত বড়ো বিষয়ে কেন আমি নিজের ধারণা সম্পর্কে উদ্ধত এবং জেদি হলাম? কেন আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে নীতিগুলো সন্ধান করার কথা ভাবলাম না? তারপর এই সময়ে আমি আমার অবস্থার কথা ভাবলাম। আমি প্রতিদিন কাজে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে আমি ঈশ্বরের কাছে যেতে পারিনি। ঈশ্বরের বাণী পড়ার বিষয়ে আমি নিরুৎসাহ এবং উদাসীন ছিলাম। আমি দুর্নীতি উন্মুক্ত করেছি, কিন্তু সত্য অনুসন্ধান করতে বা সময়মতো দুর্নীতির সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছি, তাই যখন সমস্যাগুলো সামলানোর সময় এসেছিল, তখন আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার কথা ভাবিনি, এবং শুধুমাত্র বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য আমার নিজের ব্যক্তিগত বিচারের উপর নির্ভর করেছি।

আবার এমন অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করার পর, আমি খুব বিরক্ত ছিলাম, কিন্তু আমি জানতাম না এটাকে কীভাবে ঠিক করব। একদিন, আমি ঈশ্বরের বাণীতে পড়লাম, “ঈশ্বরের প্রতি মনোনিবেশ এবং সমস্ত কিছুতে তাঁর ওপরে নির্ভর করাই হল মহত্তম প্রজ্ঞার পরিচয়(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, বিশ্বের মন্দ প্রবণতার প্রতি অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমেই ঈশ্বর বিশ্বাসের সূচনা করতে হবে)। এটা সত্যি। আমি পারি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে, তাঁর উপর নির্ভর করতে, এবং নিজেকে জানার জন্য তাঁর নির্দেশনা চাইতে। তাই, আমি প্রায়ই প্রার্থনা করার জন্য ঈশ্বরের কাছে আমার সমস্যা নিয়ে যেতাম। আমি ক্রমাগত ভেবেছি এবং চিন্তা করেছি কেন এই সমস্যাটি সমাধান করা হয়নি। একদিন আমার উপাসনা চলাকালীন, আমি ঈশ্বরের বাণীতে পড়লাম, “আজকের কার্যের পরিপ্রেক্ষিতে, মানুষ এখনও ‘মন্দির ঈশ্বর অপেক্ষা মহত্তর’ শব্দগুলির মাধ্যমে যা উপস্থাপিত হয়েছে, সেই একই ধরনের কাজই করবে। উদাহরণস্বরূপ, নিজেদের দায়িত্ব পালন করাকে মানুষ তাদের কাজ হিসাবে দেখে; ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করা ও অতিকায় লাল ড্রাগনের সঙ্গে লড়াই করাকে তারা মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সমর্থনে রাজনৈতিক আন্দোলন হিসাবে দেখে; নিজেদের দক্ষতার সদ্ব্যবহার করার কর্তব্যকে তারা তাদের পেশাগত বৃত্তিতে পরিণত করে, কিন্তু ঈশ্বরে ভীতি ও মন্দ কর্ম পরিত্যাগের মতো বিষয়কে তারা এক পালনীয় ধর্মীয় মতবাদের অতিরিক্ত কোনোকিছু বলে গণ্য করে না; এবং ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। এই আচরণগুলি মূলগতভাবে ‘মন্দির ঈশ্বর অপেক্ষা মহত্তর’-র সাথে অভিন্ন নয় কি? পার্থক্যটি হল, দু’হাজার বছর আগে, বাস্তব ইঁট-কাঠের মন্দিরে মানুষ তাদের ব্যক্তিগত কারবারগুলি নিষ্পন্ন করছিল, কিন্তু আজকাল, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় এমন মন্দিরে মানুষ তাদের ব্যক্তিগত ব্যবসায় নির্বাহ করে থাকে। যেসব মানুষ নিয়মকানুনকে মূল্যবান জ্ঞান করে, তারা নিয়মকে ঈশ্বরের থেকে মহান বলে মনে করে, যেসব মানুষ পদমর্যাদা পছন্দ করে, তারা পদমর্যাদাকে ঈশ্বরের থেকে মহান বলে মনে করে, যারা নিজেদের পেশাগত বৃত্তিকে কে ভালোবাসে তারা তাদের পেশাগত বৃত্তিকে ঈশ্বরের থেকে মহান বলে মনে করে, ইত্যাদি—তাদের এইসব অভিব্যক্তি আমাকে বলতে প্ররোচিত করে: ‘মানুষ মুখের কথায় ঈশ্বরকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বন্দনা করে, কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে সবকিছুই ঈশ্বর অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এর কারণ হল, যেইমাত্র মানুষ নিজ-নিজ ঈশ্বরানুসরণের পথে স্বীয় প্রতিভা প্রদর্শনের, অথবা তাদের নিজস্ব ব্যবসায় বা বৃত্তি নির্বাহের কোনো সুযোগ দেখতে পায়, তখনই তারা নিজেদের ঈশ্বর থেকে দূরবর্তী করে ফেলে, এবং তাদের অতিপ্রিয় পেশাদারী জীবনে তারা নিজেদের নিক্ষিপ্ত করে। ঈশ্বর তাদের যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, এবং তাঁর অভিপ্রায়ের ন্যায় বিষয়গুলি বহু পূর্বেই পরিত্যক্ত হয়েছে(বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, ঈশ্বরের কর্ম, ঈশ্বরের স্বভাব এবং স্বয়ং ঈশ্বর ৩)। ঈশ্বরের বাণী থেকে, আমি বুঝতে পারি যে আমার কাজে অত ব্যস্ত থাকার মূল কারণ ছিল আমি খ্যাতি এবং মর্যাদা অনুসরণ করছিলাম। যখন আমি দেখলাম যে ব্যবহারিক কাজ না করায় কিছু নেতা ও কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তখন ভয় পেলাম যে আমার পরিণামও তাদের মতো হবে, তাদের ব্যর্থ পথে যেতে চাইনি। আমি ভেবেছিলাম যেহেতু তারা ব্যবহারিক কাজ করে না, আমি আরও ব্যবহারিক কাজ করব। এইভাবে, আমাকে বরখাস্ত করা হবে না, আমি নেত্রী হিসাবে আমার পদ রক্ষা করতে পারব, আমি অন্যদের দ্বারা উন্মোচিত এবং বিশ্লেষিত হব না, এবং আমি বিব্রত হব না। আমি সত্যের সাধনার চেয়ে আমার খ্যাতি এবং মর্যাদাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করতাম, তাই আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে এবং আরও কাজ করতে আগ্রহী ছিলাম। যতক্ষণ পর্যন্ত ভ্রাতা ও ভগিনীরা দেখছে যে আমি কাজ পর্যবেক্ষণ করছি এবং সমস্যার সমাধান করছি, এবং আমি একজন ভাল নেত্রী যে ব্যবহারিক কাজ করতে পারে, সবাই অবশ্যই আমার সহায়তা এবং আমাকে সমর্থন করবে, এবং আমি গির্জায় একটা জায়গা পাব। আমি খ্যাতি এবং মর্যাদার সাধনায় পাগল হয়ে ছুটতে গিয়ে আমি ঈশ্বরের প্রয়োজন ভুলে গিয়েছিলাম। ঈশ্বর চান মানুষ সত্য এবং জীবনে প্রবেশের অনুসরণ করুক, কিন্তু আমি সেটা গুরুত্বসহকারে নিইনি। আমি যা সঠিক ভেবেছিলাম তাই আঁকড়ে ধরেছিলাম, যেমন “দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো গভীরভাবে প্রোথিত,” “দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধানে কোনো তাড়া নেই” এবং “এই সামান্য দুর্নীতি আমার দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে না, আমার কাজের ফলাফল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ,” এবং “আমি এখন আমার দায়িত্ব নিয়ে খুব ব্যস্ত, আমার সময় নেই, আমি সময় পেলে ঈশ্বরের বাক্য পড়ব এবং সত্যের অনুসরণ করব।” আমি এই কথাগুলোকে ব্যবহার করেছিলাম জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ না করার অজুহাত হিসাবে, এবং খ্যাতি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য আমার কাজ করার কারণ হিসাবে। আমার খ্যাতি এবং মর্যাদা রক্ষা করতে, আমি আমার দায়িত্ব পালনের ধ্বজায় নিজের প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি, এবং আমি সারা দিন ব্যয় করেছি আরো কাজ এবং আরো ফলাফল দেওয়া সম্পর্কে। আমি এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম আমার মর্যাদা এবং স্বার্থ রক্ষা করতে, এবং আমার উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ইচ্ছা চরিতার্থ করতে। আমি কত ঘৃণ্য এবং লজ্জাজনক ছিলাম!

পরে, আমি ঈশ্বরের বাণীর আরো কয়েকটি অংশ পড়লাম যা আমাকে সাধনা সম্পর্কে আমার ভুল মতামতের বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি দিল। ঈশ্বর বলেন, “এত বছর ধরে পবিত্র আত্মার কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার পরও, পৌলের প্রায় কোনোই পরিবর্তন হয় নি। তথাপি সে প্রায় তার স্বাভাবিক অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছিল, এবং তথাপি সে পূর্বের পৌলই ছিল। বিষয়টা শুধুমাত্র এমন ছিল যে, কার্য নির্বাহের বহু বছর কষ্ট সহ্য করার পর, সে শিখেছিল কীভাবে ‘কাজ’ করতে হয়, এবং সহ্যশক্তি রপ্ত করেছিল, কিন্তু তার পুরানো প্রকৃতি—তার অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং সুযোগসন্ধানী প্রকৃতি—তা তখনও রয়ে গিয়েছিল। অত বছর ধরে কাজ করার পরেও সে তার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবকে জানে নি, বা সে তার পুরানো স্বভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতেও পারেনি, এবং তা তখনও তার কাজের মধ্যে স্পষ্টতই প্রতীয়মান ছিল। তার মধ্যে নিছকই অধিকতর কাজের অভিজ্ঞতা ছিল, কিন্তু শুধুমাত্র এহেন যৎসামান্য অভিজ্ঞতাই তার পরিবর্তন সাধনের পক্ষে পর্যাপ্ত ছিল না, এবং তা অস্তিত্ব সম্পর্কে অথবা তার অন্বেষণের তাৎপর্য সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। … মানুষ উদ্ধার হতে পারে কিনা, তা সে কত পরিমাণে কাজ করে, বা সে কতটা নিবেদিত, তার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং সে পবিত্র আত্মার কাজ জানে কি না, সে সত্যের অনুশীলন করতে পারে কি না, এবং অন্বেষণের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি সত্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কি না, তার উপর নির্ভর করে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ভর করছে মানুষ কোন পথে চলবে তার উপর)। “তুমি যদি অনেক কাজ করে থাকো এবং অন্যরা তোমার থেকে শিক্ষা লাভ করে থাকে, কিন্তু তবুও যদি তোমার নিজের কোনো পরিবর্তন না হয়ে থাকে, এবং তুমি কোনো সাক্ষ্য বহন না করে থাকো, অথবা কোনো প্রকৃত অভিজ্ঞতাও তোমার না থাকে, যার ফলে জীবনের শেষপ্রান্তে তোমার সম্পাদিত কোনো কাজই সাক্ষ্য বহন না করে, তাহলে আদৌ কি তুমি এমন একজন যার কোনো পরিবর্তন হয়েছে? তুমি কি এমন একজন যে সত্যের অন্বেষণ করে? সেই সময়ে, পবিত্র আত্মা তোমায় ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু তোমায় ব্যবহার করার সময় তিনি কেবল তোমার ব্যবহার্য অংশই কাজে লাগিয়েছিলেন, এবং তিনি তোমার অব্যবহার্য অংশের ব্যবহার করেন নি। তুমি যদি পরিবর্তিত হওয়ার অন্বেষণ করে থাকো, তাহলে, ব্যবহৃত হওয়ার প্রক্রিয়াটির সময়ে তুমি ক্রমশ নিখুঁত হয়ে উঠবে। তবুও, শেষ পর্যন্ত তুমি অর্জিত হবে কিনা, সেই বিষয়ে পবিত্র আত্মা কোনোপ্রকার দায় স্বীকার করেন না, এবং তা তোমার অন্বেষণ-পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল। যদি তোমার ব্যক্তিগত স্বভাবের কোনো পরিবর্তন না ঘটে থাকে, তাহলে এর কারণ হল, অন্বেষণের প্রতি তোমার দৃষ্টিভঙ্গি ভ্রান্ত। যদি তোমায় কোনো পুরস্কার প্রদান না করা হয়, তাহলে তা তোমার নিজস্ব সমস্যা, এবং এর কারণ হল, তুমি নিজেই সত্যের বাস্তবিক অনুশীলন করো নি, এবং তুমি ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করতে অক্ষম। এবং তাই, তোমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়, এবং তোমার ব্যক্তিগত প্রবেশের চেয়ে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ অন্য কিছুই নয়! কিছু লোক শেষ পর্যন্ত বলবে, ‘আমি তোমার জন্য এত কাজ করেছি, এবং যদিও আমি হয়তো উদযাপন করার মতো কৃতিত্ব অর্জন করতে পারি নি, কিন্তু আমি আমার প্রচেষ্টায় অধ্যবসায়ী ছিলাম। তুমি কি জীবনের ফল ভক্ষণের উদ্দেশ্যে আমাকে স্বর্গে প্রবেশ করতে দিতে পারো না?’ আমার দ্বারা কাঙ্ক্ষিত মানুষেরা কী ধরনের হয় তা তোমাদের জানতেই হবে; যারা অপবিত্র তাদের এই রাজত্বে প্রবেশাধিকার নেই, যারা অপবিত্র তাদের অধিকার নেই এই পবিত্রভূমিকে কলুষিত করার। হয়তো তুমি অনেক কিছু করেছ, হয়তো অনেক বছর ধরে কাজ করেছ, কিন্তু তবুও, শেষ অবধি যদি শোচনীয়ভাবে অপবিত্র থেকে যাও, তাহলে আমার রাজ্যে প্রবেশের জন্য তোমার ইচ্ছা স্বর্গের আইন অনুসারে গ্রাহ্য করা হবে না! বিশ্বের ভিত্তিপত্তন থেকে আজ অবধি, আমি কখনোই তাদের সহজে আমার রাজ্যে প্রবেশাধিকার দিইনি যারা হীনভাবে আমার কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই বিধান স্বর্গীয়, এবং কেউ তা খণ্ডন করতে পারে না! তোমার অবশ্যই জীবনের অন্বেষণ করা উচিত। আজ, যাদের নিখুঁত করে তোলা হবে, তারা পিতরের সমগোত্রীয়: তারা নিজেদের স্বভাব পরিবর্তন করতে চায়, এবং তারা ঈশ্বরের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ায়, এবং ঈশ্বরসৃষ্ট জীবরূপে স্বীয় দায়িত্ব পালনে ইচ্ছুক। একমাত্র এই ধরনের মানুষকেই নিখুঁত করে তোলা হবে। তুমি যদি কেবলমাত্র পুরষ্কারের দিকেই চেয়ে থাকো, এবং নিজের জীবন চরিত্রের পরিবর্তনসাধনে সচেষ্টা না হও, তাহলে তোমার সকল প্রচেষ্টা বিফল হবে—এ এক অপরিবর্তনীয় সত্য!(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ভর করছে মানুষ কোন পথে চলবে তার উপর)। “পিতর এবং পৌলের সারমর্মের ভিন্নতা থেকে তোমার উপলব্ধি করা উচিত যে, যারা জীবনের অন্বেষণ করে না, তারা সকলেই পণ্ডশ্রম করছে! তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করো এবং ঈশ্বরের অনুসরণ করো, এবং তাই তোমাকে তোমার অন্তরে ঈশ্বরকে ভালবাসতে হবে। তোমাকে অবশ্যই নিজের ভ্রষ্ট স্বভাব পরিত্যাগ করতে হবে, তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করায় সচেষ্ট হতে হবে, এবং তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরসৃষ্ট জীব হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যেহেতু তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করো এবং ঈশ্বরের অনুসরণ করো, তাই তোমার উচিত তাঁকে সমস্তকিছু নিবেদন করা, এবং তোমার ব্যক্তিগত পছন্দ অথবা দাবি জানানো উচিত নয়, এবং তোমার উচিত ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করা। যেহেতু তুমি এক ঈশ্বরসৃষ্ট জীব, সেহেতু তোমার সেই প্রভুকে মান্য করা উচিত যিনি তোমায় সৃষ্টি করেছেন, কারণ সহজাতভাবেই তোমার নিজের উপর কোনো আধিপত্য নেই, এবং নিজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও তোমার নেই। যেহেতু তুমি এমন একজন ব্যক্তি যে ঈশ্বরে বিশ্বাসী, তাই তোমার উচিত পবিত্রতা এবং পরিবর্তনের অন্বেষণ করা। যেহেতু তুমি এক ঈশ্বরসৃষ্ট জীব, তাই তোমার উচিত নিজের কর্তব্যে একনিষ্ঠ থাকা এবং নিজের স্থান বজায় রাখা, এবং একেবারেই উচিত নয় নিজের দায়িত্ব অতিক্রম করা। তা তোমায় বাধাদানের উদ্দেশ্যে নয়, বা মতবাদের মাধ্যমে তোমায় রোধ করার উদ্দেশ্যেও নয়, বরং এ হল এমন এক পথ যার মাধ্যমে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করতে পারো, এবং যারা ন্যায়পরায়ণতার পালন করে তারা সকলেই তা অর্জন করতে পারে, এবং তাদের অর্জন করা উচিত(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ভর করছে মানুষ কোন পথে চলবে তার উপর)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ার পর, আমি অবশেষে বুঝতে পারলাম যে আমার বিশ্বাসে কী অন্বেষণ করতে হবে সে সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি ভুল ছিল। কেউ ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করে কি না তারা কতটা কাজ করে বা গির্জায় তাদের মর্যাদা কতটা তার উপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে তারা সত্যকে অনুসরণ করে কিনা এবং তাদের জীবন চরিত্রের পরিবর্তন অর্জন করে কি না তার ওপর। আপনি যদি শুধুমাত্র খ্যাতি এবং মর্যাদার জন্য কাজ করেন, কিছু সময়ের জন্য আপনি আপনার মর্যাদা রাখতে পারলেও, জীবন অভিজ্ঞতার প্রকৃত সাক্ষ্য ছাড়া, ঈশ্বরের ঘরে টিকে থাকা অসম্ভব। একটা না একটা সময়ে, আপনি নির্মূল হবেনই। পৌলের কথা ভাবুন। তিনি বহু বছর ঘুরেছেন এবং ব্যয় করেছেন, খুব কষ্ট পেয়েছেন, প্রচার করেছেন এবং অনেক মানুষকে অর্জন করেছেন, কিন্তু তাঁর সমস্ত কাজই ছিল খ্যাতি, মর্যাদা, পুরস্কার এবং মুকুটের জন্য। তিনি একদমই সত্যের অনুসরণ করেননি, তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব বদলাননি, নিজেকে বড়ো প্রমাণিত করার জন্য তিনি প্রায়ই তাঁর কষ্ট এবং কারাবাসের অভিজ্ঞতার কথা বলতেন, এবং তিনি একটু জ্ঞান অর্জন করার পর গির্জাগুলোতে চিঠি লিখেছিলেন নিজেকে জাহির করার জন্য। এছাড়াও তিনি খুব প্রতিযোগিতামূলক ছিলেন এবং অন্য কোনো প্রচারকের কাছে নতি স্বীকার করেননি। তিনি সবসময় সাক্ষ্য দিতেন যে তিনি অন্যান্য প্রচারকদের উপরে ছিলেন এবং এতটাই উদ্ধত ছিলেন যে তিনি সমস্ত যুক্তি হারিয়েছিলেন। পৌল কখনোই তাঁর জীবন চরিত্র পরিবর্তনের চেষ্টা করেননি, এবং ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করার তাঁর প্রকৃতি সম্পর্কে তাঁর কোনো উপলব্ধি ছিল না। তিনি নিজের কাজকেও ঈশ্বরের সঙ্গে লেনদেনের জন্য ব্যবহার করার পুঁজি হিসাবে মনে করেছিলেন। তিনি আরও বেশি উদ্ধত হয়ে উঠেছিলেন এবং সাক্ষ্যও দিয়েছিলেন যে তিনি খ্রীষ্ট হিসাবে বাঁচছিলেন। পৌল ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করার খ্রীষ্টবিরোধী পথে চলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত, তিনি ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুদ্ধ করেছিলেন, ঈশ্বর তাঁকে নরকে পাঠিয়েছিলেন যাতে তিনি অনন্ত শাস্তি পান। আমি সবসময় খ্যাতি এবং মর্যাদা অনুসরণ করেছি এবং কখনোই আমার জীবন চরিত্র পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করিনি। আমি কি পৌলের মত একই পথে হাঁটছিলাম না? যখন দেখলাম আমার সঙ্গীদের একের পর এক বরখাস্ত করা হচ্ছে, আমি ভয় পেয়েছিলাম আমাকেও বরখাস্ত করা হবে, তাই আমার খ্যাতি এবং মর্যাদা বজায় রাখতে, আমি আরো বেশি করে কাজ করেছি। যখন আমার কাজ কোনো ফলাফল দিত, আমি ভাবতাম যে আমি ভালো করেছি, আমার স্বভাব ক্রমশ উদ্ধত হতে থাকে, এবং আমি সত্য বা নীতির সন্ধান না করেই আমার দায়িত্ব পালন করতাম। আমার ঊর্ধ্বতনরা আমাকে নীতি অনুসারে সেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে বলেছিলেন, কিন্তু আমার মনে হয়েছিল যে সে তখনও অবদান রাখতে পারে, তাই আমি তাকে বরখাস্ত করতে চাইনি। ফলস্বরূপ, যেহেতু এই অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে দায়িত্বে রাখা হয়েছিল, ভিডিওটি বারবার পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যা কাজের অগ্রগতিকে বিলম্বিত করেছিল এবং গির্জার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমি দেখলাম যে নিজের ধারণা সম্পর্কে আমার ঔদ্ধত্য এবং জেদ ছিল আমার খ্যাতি এবং মর্যাদা অর্জনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এবং জীবনে প্রবেশের কোনো গুরত্ব ছিল না। আমি যত বেশি খ্যাতি এবং মর্যাদা অনুসরণ করেছি, আমার হৃদয়ে ঈশ্বরের জন্য জায়গা তত কমে গিয়েছে। কোনো ঘটনা ঘটলে আমি সত্যের সন্ধান করিনি। আমি সম্পূর্ণভাবে নিজের উপর নির্ভর করেছিলাম। অতীতে, আমি ভাবতাম যে আমি যদি আরো ব্যবহারিক কাজ করি, তবে আমাকে বরখাস্ত করা হবে না। কিন্তু এখন বুঝলাম যে শুধুমাত্র কাজে মনোনিবেশ করে এবং আমার খ্যাতি এবং মর্যাদা রক্ষা করে, এবং আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধান না করে, আমি কেবল আরো উদ্ধত হয়ে উঠতে পারি এবং ঈশ্বরকে আরো প্রতিরোধ করতে পারি। যদি আমি এভাবে চলতে থাকি, ঠিক পৌলের মত, আমি ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত এবং নির্মূল হব। ঈশ্বর সবার সঙ্গে ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত আচরণ করেন। যারা ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে তারা সকলেই এমন মানুষ যারা সত্যকে অনুসরণ এবং অনুশীলন করে এবং তাদের জীবন চরিত্র পরিবর্তন করে। আপনি যদি বহু বছর ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন জীবন চরিত্র সামান্য পরিবর্তন ছাড়া, ঈশ্বরের সামান্য জ্ঞানার্জন ছাড়া, অথবা জীবনের অভিজ্ঞতার কোনো সাক্ষ্য অর্জন ছাড়া, এবং শুধুমাত্র ঈশ্বরের জন্য সেবা করতে পারেন, এই ধরনের মানুষ ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। এটা ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা দ্বারা নির্ধারিত হয়। আমার মনে পড়ে কীভাবে, যখন আমি শুধুমাত্র আমার খ্যাতি এবং মর্যাদা বজায় রাখার জন্য কাজের উপর মনোনিবেশ করতাম, আমি প্রায়ই সত্য অনুসরণ না করার কারণ এবং অজুহাত পেয়ে যেতাম, যেমন “দুর্নীতির স্বভাবগুলো গভীরভাবে প্রোথিত এবং রাতারাতি সমাধান করা যায় না” এবং “এই সামান্য দুর্নীতি আমার দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে না, আমার কাজের পরিণতিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” এই কারণগুলোর কোনোটাই সত্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলো গভীরভাবে গেঁথে আছে এবং একবারে তা পরিবর্তন করা যায় না, কিন্তু সেগুলোকে একটু একটু করে বের করতে হবে, ঈশ্বরের বাণী প্রয়োগ করে বিশ্লেষণ করতে হবে, এবং তারপর ঈশ্বরের বাণীতে অনুশীলনের একটা পথ খুঁজে পেতে হবে। শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমরা সত্য অর্জন করতে এবং দুর্নীতির সমাধান করতে পারি। আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধান না হলে, আমরা যেকোনো মুহূর্তে এমন কিছু করতে পারি যা গির্জার কাজকে ব্যাহত করে। সেগুলো কীভাবে আমাদের দায়িত্বকে প্রভাবিত করবে না? আমার ঔদ্ধত্য এবং আমার নিজস্ব ধারণা অনুযায়ী আমার দায়িত্ব পালনের ইচ্ছার জন্য, যে কর্মকর্তা প্রকৃত কাজ করেনি তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে আমার ব্যর্থতার ফলে কাজের বড় ক্ষতি হয়েছিল। এছাড়াও, আমি সবসময় আমার দায়িত্বকে একটা অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করেছি ঈশ্বরের বাণী না পড়ার বা নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য ঈশ্বরের সামনে না যাওয়ার, কিন্তু এই অজুহাতের একদমই কোনো মানে হয় না। নিজের দায়িত্ব পালন করা হল ঈশ্বরের কাজ অনুভব করার সবচেয়ে ভাল উপায়। জীবনে প্রবেশ শুরু হয় দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই। আপনার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে প্রকাশিত অবস্থাগুলো, তৈরি হওয়া ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে, চিন্তা করার, সত্য সন্ধানের, এবং শিক্ষা পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের সামনে আনা যেতে পারে। আমি শুধুমাত্র কাজের উপর মনোনিবেশ করেছি, খ্যাতি এবং মর্যাদা অনুসরণ করেছি এবং জীবনে প্রবেশ করিনি। আমি কত অন্ধ আর অজ্ঞ ছিলাম! তাই, আমি ঈশ্বরের সামনে শপথ করলাম যে আমি আর খ্যাতি এবং মর্যাদার জন্য কাজ করব না, এবং আমি আরো সত্য এবং জীবনে প্রবেশের অনুসরণ করব।

পরে, আমি ঈশ্বরের বাণীর আরেকটা অংশ পড়েছিলাম এবং অনুশীলনের কিছু পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। “ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাসের ক্ষেত্রে, নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের পাশাপাশি প্রধান বিষয় হল সত্য উপলব্ধি করা, সত্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করা, আর জীবনে প্রবেশের জন্য আরও সচেষ্ট হওয়া। যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, এগুলিই হল শিক্ষণীয় বিষয়, এগুলি হালকাভাবে চলে যেতে দিও না। তোমাদের একে অপরের সাথে আলোচনা করা উচিত, আর তখনই তোমরা পবিত্র আত্মা দ্বারা আলোকিত ও প্রদীপ্ত হবে এবং তোমরা সত্য উপলব্ধি করতে পারবে। এই আলোচনার মাধ্যমেই তোমরা অনুশীলনীয় পথ পাবে, ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা কীভাবে লাভ করতে হয় তা জানতে পারবে। আর তোমাদের অজান্তেই কিছু কিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তোমাদের কাছে অস্পষ্ট থাকা বিষয়ের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসবে, আর তুমি ক্রমে আরো বেশি করে সত্য দেখতে পাবে। এইভাবে তোমার অজান্তেই আত্মিক উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। তোমাকে অবশ্যই সত্যের বিষয়ে নিজেকে ব্যয় করার লক্ষ্যে সচেষ্ট থাকতে হবে এবং সত্যের প্রতি হৃদয় সমর্পণ করতে হবে। … যারা সর্বদা কেবল মতবাদের শূন্যগর্ভ কথাগুলোই বলে চলে, ফাঁকা বুলি আওড়ায়, যাদের বক্তব্য বাগাড়ম্বরে পরিপূর্ণ, যারা নিয়ম মেনে চলে, কখনো সত্য অনুশীলনে মনোযোগী হয় না, তারা যত বছর ধরেই বিশ্বাসী থাকুক না কেন, কিছুই অর্জন করতে পারে না। তাহলে যারা কিছু অর্জন করতে পারে, তারা কারা? যারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব আন্তরিকভাবে পালন করে এবং সত্যের অনুশীলন করতে ইচ্ছুক, যারা ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বকে নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে গ্রহণ করে, যারা সানন্দে গোটা জীবন ঈশ্বরের জন্য ব্যয় করে, যারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে চক্রান্ত করে না, যাদের পা মাটিতে দৃঢ়ভাবে থাকে এবং যারা ঈশ্বরের সমন্বয়সাধনের প্রতি অনুগত থাকে, তারাই হল সেই অর্জনকারী ব্যক্তিবর্গ। তারা নিজ দায়িত্ব পালনের সময় সত্যের নীতি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় এবং সবকিছু সঠিকভাবে করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করে, ঈশ্বরের সাক্ষ্যের প্রভাব অর্জনের এবং ঈশ্বরের ইচ্ছাকে সন্তুষ্ট করার প্রতি মনযোগী হয়। নিজ দায়িত্ব পালনের সময় সমস্যার সম্মুখীন হলে, তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে তাঁর ইচ্ছার গভীরতা পরিমাপে উন্মুখ হয়, তারা ঈশ্বর প্রদত্ত সমন্বয়সাধন ও আয়োজন মান্য করতে সক্ষম হয়, আর তাদের সমস্ত কাজেই তারা সত্যকে অন্বেষণ ও অনুশীলন করে। তারা পাখি পড়া বুলির মতো করে মতবাদ না আওড়ালেও বা আড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য না রাখলেও, নিজেদের পা মাটিতে দৃঢ়ভাবে রেখে, মনোযোগ সহকারে নীতি মেনে কাজ সম্পাদনের প্রতি লক্ষ্য নিবদ্ধ রাখে। তারা যা কিছু করে সবেই কঠোরভাবে প্রয়াসী হয়, সবকিছু উপলব্ধির জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করে, এবং অনেক বিষয়ে তারা সত্য অনুশীলন করতে সক্ষম হয়, তারপর তারা জ্ঞান এবং উপলব্ধি অর্জন করে, এবং তারা শিক্ষালাভ করতে এবং প্রকৃতপক্ষেই কিছু অর্জন করতে সক্ষম হয়। যখন তাদের ভুল চিন্তাভাবনা আসে বা অবস্থা ঠিক থাকে না, তখন তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে এবং সেগুলি সমাধানের জন্য সত্যের অনুসন্ধান করে; তারা যতটুকু সত্যই উপলব্ধি করুক না কেন, তাদের অন্তরে সেগুলির প্রতি উপলব্ধি রয়েছে, এবং তারা অভিজ্ঞতা ও সাক্ষ্যের কথা বলতে সক্ষম। এই ধরনের লোকেরাই পরিশেষে সত্য অর্জন করে(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, ঈশ্বরবিশ্বাসে যা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা হল তাঁর বাক্যের অনুশীলন ও অভিজ্ঞতা)। ঈশ্বরের বাণীতে, আমি সত্যকে অনুসরণ করার জন্য অনুশীলনের একটা পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। ঘটনা ঘটলে, আমাদের অবশ্যই প্রার্থনা করতে, ভাবতে, সত্যের সন্ধান করতে এবং নিজেদেরকে জানতে ঈশ্বরের সামনে যেতে হবে। আমাদের অবশ্যই প্রতিটি বিষয়ে আন্তরিকভাবে আচরণ করতে এবং তাদের থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এই সময় ঈশ্বরের গৃহ নেতা ও কর্মীদের নিবন্ধ লেখার অনুশীলন করতে বলেছিল, যাতে আমরা আমাদের ক্ষমতা উন্নত করতে পারি এবং সত্যের শক্তি অর্জন করতে পারি। আমরা যদি নিবন্ধ লেখার অনুশীলন না করি, তাহলে আমরা ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার উপযুক্ত নই। আমাদের মর্যাদা থাকলেও, একটা না একটা সময়ে আমরা নির্মূল হয়ে যাব। আমি ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্পর্কে আরো বুঝতে পারলাম। ঈশ্বরের গৃহ চায় নেতা ও কর্মীরা সত্য অনুসরণ করুক এবং তাদের জীবনে প্রবেশ ঘটুক। যে নেতারা সত্যের অনুসরণ করে না তারা টিকে থাকতে পারে না এবং একটা না একটা সময়ে নির্মূল হবে। অতীতে, আমি শুধুমাত্র কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, এবং আমার নিজের জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ করতাম না। বহু বছর ধরে, আমি একটাও ভালো সাক্ষ্যমূলক নিবন্ধ লিখিনি। আসলে, আমি আমার দায়িত্ব পালনে অনেক বাধা, ব্যর্থতা এবং বিচ্যুতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম, আমি অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব অনাবৃত করেছিলাম, এবং কিছু কর্তন ও মোকাবিলার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আমি যদি সত্যের অনুসরণ করতে এবং জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ করতে চাইতাম, তবে আমাকে নিবন্ধ লেখার মাধ্যমে শুরু করতে হত। তাই, আমি প্রথমে ছাঁটাই এবং মোকাবিলা বেছে নিয়েছিলাম যা আমার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল এবং ভাবলাম ঠিক কেন আমাকে কর্তন এবং মোকাবিলা করা হয়েছিল। প্রতিদিন যখন আমি খেতাম, লন্ড্রি করতাম এবং ঘুমানোর আগে, ভাবতাম সেই সময় যা ঘটেছিল তার প্রেক্ষাপট নিয়ে, আমি কী দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব প্রকাশ করেছি, আমি ঈশ্বরের বাণীর কোন অংশ ভোজন এবং পান করেছি, ঈশ্বরের বাণীতে আমি অনুশীলনের কোন পথ খুঁজে পেয়েছি, কোন ভুল চিন্তা এবং দৃষ্টিভঙ্গি আমি চিনতে পেরেছি। আমি যতই ভাবলাম, আমার অভিজ্ঞতা ততই পরিষ্কার হয়ে গেল, যা আরো পরিষ্কার করে দিল কর্তন এবং মোকাবিলার থেকে আমার কী শিক্ষা নেওয়া উচিত, এবং ঈশ্বরের বাণী থেকে, আমি আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব সম্পর্কে আরও উপলব্ধি অর্জন করলাম। আমার এটাও মনে হল যে নিবন্ধগুলো লিখে, আমি ঈশ্বরের সামনে নিজেকে শান্ত করতে এবং আমার অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করতে পারি, ঈশ্বরের বাণী সম্পর্কে ভাবতে, এবং চিন্তা করতে এবং নিজেকে জানতে পারি, যে সবই আমার জীবনে প্রবেশের জন্য অবিশ্বাস্যভাবে সহায়ক ছিল। আমি কত অজ্ঞ ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম যে জীবনে প্রবেশকে অনুসরণ করা এবং নিবন্ধ লেখা আমার সময় নষ্ট করবে এবং আমার দায়িত্বে আমার কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করবে। এখন, আমি দেখছি এটা আমাকে অকার্যকর করে না; বরং, আমি যখনই আমার অবস্থা সম্পর্কে ভাবি এবং ঈশ্বরের বাণী ব্যবহার করে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করি, সেটা আমাকে আমার সমস্যা আরও স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। অতীতে, আমি সবসময় আমার খ্যাতি এবং মর্যাদার জন্য কাজ করেছি, এবং প্রায়ই সেগুলো হারানোর ভয় পেয়েছি। আমি ভয় পেয়েছিলাম যে আমি যদি ভুল করি, আমার নেতারা আমার সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করবেন। আমার দায়িত্বে যদি কোনো বিচ্যুতি ও ভুল থাকে, আমার নেতারা আমার সমস্যাগুলো দেখিয়ে দেওয়ার পরে বা আমাকে কর্তন এবং মোকাবিলা করার পরে, আমি স্বীকার করেছি যে কর্তন এবং মোকাবিলা করা হয়েছিল আমার নিজের ভালোর জন্য, আমাকে সাহায্য করার জন্য, কিন্তু এটা আমাকে সবসময় দুঃখিত করে দিত, এবং আমি সন্দেহ করতাম যে আমার নেতারা মনে করবেন আমার কাজ কোনো ক্ষমতা, কোনো যোগ্যতা নেই, এবং প্রয়োজনীয় কিছু করার শক্তি নেই, অথবা যদি আমার নেতারা অনেক সমস্যা আবিষ্কার করেন, সেটা হবে আমার দায়িত্ব পালনের শেষ। আমার সবসময় মনে হত আমি কোনো ভার বহন করছি। যখন আমি জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ করলাম এবং প্রতিদিন আমার পরিবেশ থেকে শিক্ষা নিলাম, এবং মাঝে মাঝে আমার নেতারা আমার দায়িত্বে পালনের মধ্যে সমস্যা দেখতেন এবং আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতেন, আমি বুঝতে পারলাম আমি আর আগের মত বিষণ্ণ হচ্ছিলাম না, আমার নেতারা আমাকে কীভাবে দেখেন তা নিয়ে আমি সবসময় চিন্তিত ছিলাম না। আমি যা ভুল করেছি তার জন্য আমি অনুশোচনা অনুভব করতাম, ভাবতাম কেন আমার বিচ্যুতি হয়েছে এবং আমার কোন দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব বা ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ভুল হয়েছে, এবং একবার আমি সেগুলো বুঝতে পারলেই, আমি ঈশ্বরের বাণীতে উত্তর খুঁজতে এবং সবকিছু শুধরে নিতে পারতাম। আমি যখন এইভাবে অনুশীলন করলাম, তখন আমার দায়িত্ব আগের মত ক্লান্তিকর মনে হল না।

আমিও জীবনে প্রবেশের দিকে মনোনিবেশ করার মাধুর্যের স্বাদ পেয়েছি, তাই আমি ঈশ্বরের সামনে গিয়ে প্রার্থনা করলাম আমি ঈশ্বরের বাণীর উপর ভিত্তি করে নিজের সম্পর্কে ভাবব এবং সত্যকে আরও অনুসরণ করব। মাঝে মাঝে, যখন আমার দায়িত্বে ব্যস্ততা থাকে, এবং সকালে ঈশ্বরের বাণী পড়ার সময় পাই না, খাবারের সময় বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে, আমি ভাবি সম্প্রতি আমি কোন অবস্থায় ছিলাম, আমি কোন দুর্নীতি প্রকাশ করছি, এবং ঈশ্বরের বাণীর কোন অংশ আমার পড়া উচিত নিজের সম্পর্কে ভাবার জন্য। একবার যখন আমি এই বিষয়গুলো ভেবে নিই, তখন আমি সময় পেলে ঈশ্বরের বাণীর প্রাসঙ্গিক অংশগুলো পড়ি। আমি আর আগের মতো ভাবি না, যে এটা কোন ব্যাপার না যদি আপাতত আমার দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবগুলোর সমাধান না হয় এবং আমি সময় পেলে পরে সেগুলোর সমাধান করতে পারব। এখন যেহেতু কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে, আমার প্রকাশ করা ভাবনাগুলো নিয়ে আমি আরও সংবেদনশীল হয়েছি, আমি ক্রমাগত কিছু বিচ্যুতি দেখতে পাই যা আমার দায়িত্বের মধ্যে উপস্থিত হয়, এবং আমি ঈশ্বরের বাণীতে অনুশীলনের পথ খুঁজে পাই। আরও বেশি করে, আমি মনে করি যে ঈশ্বরে আমার বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সত্যের অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের বাণীগুলোকে সচেতনভাবে অনুভব এবং সবকিছু বোঝার জন্য কঠোর চেষ্টা করতে হবে। যতক্ষণ আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করব, জীবনে প্রবেশের আমাদের বোঝা বহন করব এবং সত্যের জন্য আকাঙ্ক্ষা করব, আমরা ঈশ্বরের নির্দেশনা পাব। তাছাড়া আমরা সত্যও বুঝতে পারব এবং আমাদের চারপাশে যা ঘটে তার থেকে শিক্ষাও নিতে পারব।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

সত্য পথ গ্রহণে এত বাধা কেন?

২০০৮ সাল থেকে, আমি আর আমার মা প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখতে শুরু করি, তারপর, স্থানীয় একটা গির্জায় সমাবেশে যোগ দিতে লাগলাম। পরে, গির্জার ডীকনও...

মিথ্যা বলার যন্ত্রণা

২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে, আমি অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ মেনে নিই। সমাবেশগুলিতে আমি দেখেছি যে ব্রাদার ও সিস্টাররা তাদের...

আরাম অন্বেষণের পরিণামসমূহ

গির্জায় আমার কাজই হল ভিডিও বানানো। ভিডিও বানানোর সময়, যখন কোনো কঠিন প্রজেক্ট থাকে, তখন বারবার প্রত্যেক ফ্রেমের উদ্দিষ্ট প্রভাব যাচাই করে...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন