আরামের জন্য তৃষ্ণা আমাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল
২০১৯ সালে গির্জার ভিডিওর কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমাকে যখন আমি গির্জার নেত্রীও ছিলাম। সেই সময় আমি নিজের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করার শপথ নিয়েছিলাম। তারপরে, আমি সত্যিই নিজের কর্তব্যে আমার হৃদয়কে নিযুক্ত করেছিলাম এবং আমি যে সিস্টারের সাথে কাজ করতাম তার থেকে শিখেছিলাম কীভাবে গির্জার কাজ করতে হয়। আমি ছোট-বড় প্রতিটি সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতাম, এবং আমি প্রতিদিন ভিডিও পর্যালোচনা করতাম। প্রতিটি দিনই আমার জন্য ব্যাস্ত হত। কিন্তু কিছুদিন পর আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, এবং ধীরে ধীরে নিজের প্রাথমিক দৃঢ়তা আমি হারিয়ে ফেললাম। এইরকম ব্যস্ত জীবন যাপন করে আমি আরও প্রতিরোধী অনুভব করলাম। বিশেষ করে যখন ভিডিও পর্যালোচনা করতাম, আমাকে সত্যিই সুবিবেচনা করতে এবং বেশ ভাবতে হত, এবং তারপর আমার সামনে আসা যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তিসঙ্গত পরামর্শ দিতে হত। আমার কাছে তা মানসিকভাবে ক্লান্তিকর ছিল, আমি এটা করতে চাইছিলাম না। এর পরে, ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করার সময় আমি ঢিলে দিতে শুরু করলাম এবং কয়েকটা ভিডিও আমি শুধু উপর-উপর দেখেই ছেড়ে দিতাম। কখনও কখনও স্পষ্টভাবে সমস্যা থাকলেও তা উপেক্ষা করে যেতাম যাতে আমায় কোনো একটা সমাধানের কথা ভাবতে না হয়, তাই শুধুই চুপ করে থাকতাম। আমি আমার দায়িত্বে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিলাম, যার ফলে ভিডিওগুলো বারবার সংশোধনের জন্য ফেরত আসছিল। এতে অনেক মানুষের পরিশ্রম নষ্ট হচ্ছিল। এইগুলো গুরুতর পরিণতি ছিল, কিন্তু আমি আত্ম-সমীক্ষা করিনি। এমনকি আমার এ-ও মনে হয়েছিল যে এটা সরাসরি আমার সাথে সম্পর্কিত নয়, এবং এর কারণ হল অন্যদের ভিডিওতে থাকা অনেক সমস্যা।
একবার, আমি আমার হাতে আসা একটা ভিডিও নিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছিলাম, যার জন্য কিছু নতুন মতামতের প্রয়োজন ছিল। সবাই নানা রকমের মতামত দিচ্ছিল যা আমাকে বেশ বিভ্রান্ত করছিল। ভাবতেই খুব ক্লান্ত লাগছিল, তাই ভাবলাম, তাদেরকেই একটা পরিকল্পনা করতে দেব। আমি সামগ্রিক কাজ অনুসরণ করছি, এই অজুহাতে তাদের দিকে কাজগুলো ঠেলে দিলাম, যাতে আমি তত্ত্বাবধান না করার এবং খোঁজখবর না নেওয়ার যুক্তি দিতে পারি। কিন্তু যেহেতু এর আগে কেউ এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি, তারা কিছু নীতি ভালোভাবে বুঝতে পারেনি, এবং তারা জানত না কীভাবে এই ধরনের জটিল কাজ পরিচালনা করতে হয়। এই কারণে, কোনো অগ্রগতি হল না, এবং ভিডিওটার উপর কাজ বন্ধ হয়ে গেল। আমার সহকর্মী সিস্টার লিয়া দেখেছিল যে আমরা অকার্যকর ছিলাম এবং আমাদের অগ্রগতি ধীর ছিল, তাই সে একটি সতর্কবার্তা দিল এবং আমাদের কাজে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করল। আমি অভিযোগ করলাম যে সে আমাদের উপর বেশি কড়াকড়ি করছে এবং অন্যান্য ব্রাদার ও সিস্টাররাও আমার সঙ্গে তার করা ব্যবস্থার বিরোধিতা করল। এটা লিয়া কে খুব সীমাবদ্ধ বোধ করাল এবং তারপর প্রতিবারই আমাদের সাথে কাজের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করার সময় সে খুব সতর্ক থাকত। এতে বহু বিলম্ব হয়েছিল, যা আমাদের অগ্রগতিকে আটকে দিয়েছিল। আমি সাধারণত পেশাদারি দক্ষতা শেখা নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন ছিলাম না, এবং মনে করতাম যে প্রশিক্ষণের উপকরণকে একত্রিত করা বেশ পরিশ্রমের কাজ, তাই আমি সবসময় তা লিয়ার উপর দিয়ে দিতাম। অনেক সময় আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকার আছিলায় প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতাম না। এইভাবে, আমি নিজের দায়িত্বে শিথিল এবং উদাসীন হয়ে পড়ি। একবার, আমি কাজের আলোচনার জন্য আগে থেকে প্রস্তুতিও নিইনি, যার ফলে সবার সময় নষ্ট হয়েছিল।
তারপর একদিন, সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় একটা ধাপে পা ফসকে পড়ে গিয়ে আমার গোড়ালি মচকে গেল। আমার সাথে কেন এমন হয়েছিল তা ভাবিনি, শুধু ভেবেছিলাম যে গোড়ালিতে আঘাতের কারণে আমি কিছুটা বিশ্রাম পেতে পারি। লিয়া বেশ কয়েকবার আমাকে প্রকাশ আর আমার সাথে মোকাবিলা করে, এই বলে যে আমি দায়িত্বে কোনো ভার নিই না, যে তা গির্জার কাজকে বিলম্বিত করছে এবং অন্যদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তার আলাপ-আলোচনার পরে আমি কয়েক দিনের জন্য আরও সক্রিয় হতাম, এবং তারপর আবার শিথিল হতে শুরু করতাম। আমি বুঝতে পারিনি সমস্যাটি কতটা গুরুতর, শুধুই নিজেকে ছাড় দিয়ে যেতাম, এই ভেবে যে আমি শুধু একটু অলস, কিন্তু আমি তো উদ্ধত হচ্ছি না, বা স্বৈরাচারী হয়ে অন্যদের অপ্রতিভ ও নিপীড়িত করছি না, তাই এটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। যাইহোক, আমার ক্ষমতা এবং কিছু পেশাদারি দক্ষতা ছিল, তাই আমাকে বরখাস্ত করা হবে না। আর তাই, লিয়ার সতর্কবার্তায় কান দিইনি এবং সেগুলোকে একদমই গুরুত্ব দিইনি। আমি নিজের দায়িত্বে শিথিল হয়ে রইলাম এবং এমনকি কিছু কাজকে অপ্রয়োজনীয় বোঝা হিসাবেও দেখতাম। নিজের দায়িত্বে এত শিথিল হওয়ার ফলে অনেক ভিডিও সংশোধনের করার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছিল এবং সেগুলো মুক্তি পেতে বহু সময় লেগে গিয়েছিল।
একদিন সকালে, এক ঊর্ধ্বতন নেত্রী হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে এল এবং বলল যে আমাদের দায়িত্ব কোনো ফল দিচ্ছিল না, এবং ইতিমধ্যেই দেখিয়ে দেওয়া সমস্যাগুলো আবার আবার করে সৃষ্টি হয়েই চলেছিল। সে জিজ্ঞেস করেছিল ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে। সে এ-ও জিজ্ঞাসা করেছিল যে আমরা এই দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম কি না, এবং বলেছিল যে সবকিছু এইভাবে চলতে থাকলে আমরা সকলেই বরখাস্ত হব। এটা শুনে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি গির্জার একজন নেত্রী ছিলাম এবং আমাদের কাজেরও পুরোভাগেই ছিলাম, তাই সবকিছু গোলমাল হওয়ার জন্য আমি সরাসরি দায়ী ছিলাম। তা সম্পূর্ণরূপে আমার ঢিলেমির কারণে হয়েছিল। এটা নিয়ে ভেবে আমি বুঝলাম যে একটা বড় ভুল করে ফেলেছি। ঊর্ধ্বতন নেত্রী শীঘ্রই জানতে পারল আমি কীভাবে আমার দায়িত্ব পালন করছিলাম এবং আমাকে বরখাস্ত করল। সে আমাকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করল, অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন করল, এই বলে যে গির্জা আমাকে গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব দিয়েছিল, কিন্তু এত সমস্যা এবং অসুবিধা দেখেও আমি একটুও পাত্তা দিইনি। আমি শুধু নিজের নিজের দৈহিক আরামের কথা ভেবে, মাসের পর মাস আমাদের ভিডিওগুলোর অগ্রগতি স্থগিত করে দিয়েছিলাম। এটা সত্যিই কাজে বাধা সৃষ্টি করেছিল। আমি সম্পূর্ণ বিবেকহীন ছিলাম! গির্জা আমাকে বিকশিত করছিল, কিন্তু আমি ঈশ্বরের ইচ্ছার বিষয়ে মোটেও চিন্তা করিনি, এবং তা অবিশ্বাস্যভাবে হতাশাজনক ছিল। আমি একজন নেত্রী হয়েও নিজের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করিনি। কিছুই শিখি নি এবং অগ্রগতিতে অক্ষম রয়ে যায়, বিকশিত হওয়ার যোগ্য ছিলাম না। সে বলেছিল যে আমি অনুতপ্ত এবং পরিবর্তিত না হলে আমাকে বহিষ্কার করা হবে। তার কথাগুলো আমার কাছে সত্যিই একটা কঠিন আঘাত ছিল। হতভম্ভ হয়ে গেলাম, নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম: এত মাস ধরে কী করছিলাম? কীভাবে বিষয়গুলো এই জায়গায় এলো? তার মুখে আমি বিকশত হওয়ার যোগ্য নই শুনে মনে হয়েছিল আমার সত্যিই কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আমি সত্যিই বিচলিত ছিলাম এবং অনুভব করছিলাম যেন সমস্ত শক্তি আমার থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। নিজেকে ঘৃণা করেছিলাম নিজের দায়িত্ব পালন না করার জন্য, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
বরখাস্ত হওয়ার পর, আমি এক হতাশাময় নেতিবাচক অবস্থায় ডুবে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল সবাই আমার স্বরূপ অবশ্যই দেখতে পেয়েছে, এবং একটা খারাপ উদাহরণ হিসাবে আমাকে একপাশে ঠেলে দেবে, এবং ঈশ্বরও আমায় ঘৃণা করবেন। আমার সাথে মোকাবিলা করার সময় নেত্রী যা বলেছিল সেই কথা সত্যিই মর্মে গিয়ে বিঁধেছিল। মনে হয়েছিল বুঝি অনাবৃত ও বহিষ্কৃত হয়েছি। সেই দিনগুলো সত্যিই বেদনাদায়ক ছিল। তারপর একদিন আমি ঈশ্বরের বাক্যর একটা অনুচ্ছেদ পড়লাম যা সত্যিই আমার মর্ম ছুঁল। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “যদি তুমি ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত হও, এবং নিজের দায়িত্ব আন্তরিকতার সাথে পালন করো, তাহলেও কি তুমি মোকাবিলার বা অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তনের সম্মুখীন হয়ে নেতিবাচক আর দুর্বল থাকতে পারো? তুমি যদি সত্যিই নেতিবাচক ও দুর্বল হও, তাহলে কী করা উচিত? (আমাদের উচিত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ও তাঁর উপর নির্ভর করা, ঈশ্বর যা চান, তা নিয়ে চেষ্টা ও চিন্তা করা, আত্মানুসন্ধান করা যে কোথায় আমাদের ভুল হয়েছিল, কী কী ভ্রান্তি আমাদের হয়েছে; যে সমস্ত ক্ষেত্রে আমাদের পতন ঘটেছে, আমাদের আবার সেখান পর্যন্ত আরোহন করতে হবে।) ঠিক তাই। নেতিবাচকতা আর দুর্বলতা বড় সমস্যা নয়। ঈশ্বর সেগুলোর নিন্দা করেন না। যতক্ষণ কেউ আবার সেখানে আরোহন করতে পারে যেখান থেকে তাদের পতন ঘটেছিল, নিজেদের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, স্বাভাবিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেটুকুই যথেষ্ট। কেউই তোমার বিরুদ্ধে কিছু পোষণ করবে না, তাই নিরন্তর নেতিবাচক হয়ে থেকো না। যদি তুমি নিজের কর্তব্যকে পরিত্যাগ ক’রে তা থেকে পলায়ন করো, তবে তুমি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করবে। বিভিন্ন সময়ে সকলেই নেতিবাচক ও দুর্বল অবস্থায় থাকে—শুধু সত্যের সন্ধান করো, তাহলেই নেতিবাচকতা ও দুর্বলতার সহজেই সমাধান হয়ে যাবে। ঈশ্বরের বাক্যের একটা অধ্যায় পাঠ করে অথবা সামান্য কয়েকটা বন্দনাগীতি গেয়েই কিছু মানুষের অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়; তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় নিজেদের হৃদয় উন্মুক্ত করতে পারে এবং তাঁর গুণগান করতে পারে। তাদের সমস্যার কি সমাধান হয়নি? মোকাবিলার সম্মুখীন হওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় অংশ কর্তিত হওয়া আসলে খুবই ভালো ব্যাপার। এমনকি যে সকল বাক্যের দ্বারা তোমার মোকাবিলা বা কর্তন করা হয় সেগুলো যদি সামান্য কঠোরও হয়, সামান্য তীক্ষ্ণও হয়, তবে তার কারণ হল তুমি যথেষ্ট বোধহীনের মতো কাজ করেছ, এবং তুমি নিজের অজান্তেই নীতি লঙ্ঘন করেছ—এরকম পরিস্থিতিতে তোমার মোকাবিলা না হওয়া কীভাবে সম্ভব হতে পারতো? এই পদ্ধতিতে তোমার সাথে মোকাবিলা করা হয় আসলে তোমাকে সাহায্য করার জন্য, এ আসলে তোমার প্রতি ভালোবাসা। তোমার এটা বোঝা উচিত, এবং অভিযোগ করা উচিত নয়। সুতরাং, কর্তন ও মোকাবিলা যদি নেতিবাচকতা ও অভিযোগ বাড়িয়ে তোলে, তবে তা মূর্খতা ও অজ্ঞতা, তা চেতনাহীনের মতো আচরণ” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। ঈশ্বরের বাক্য পড়ে, আমার চোখ দিয়ে খালি জল ঝরতে লাগলো। নেত্রী আমার মোকাবিলা করার সময়ে সবই ঠিক বলেছিল, এবং আমি কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছিলাম কারণ আমি যা করেছিলাম তা খুবই বিরক্তিকর ছিল। কিন্তু আমি নিজের উপর হাল ছেড়ে দিতে পারতাম না। আমি কেন ব্যর্থ হলাম তা নিয়ে আমাকে সত্যিই ভাবতে হত, পরিবর্তিত ও অনুতপ্ত হতে হত। এটাই সঠিক পন্থা ছিল। তাই আমি প্রার্থনা করলাম, ঈশ্বরকে বললাম এই ব্যর্থতা সম্পর্কে আমার আত্মচিন্তনে সহায় হতে।
একদিন, আমি ঈশ্বরের কিছু বাক্য শুনলাম যা ভণ্ড নেতৃবৃন্দকে অনাবৃত ও ব্যবচ্ছেদ করে যা আমার কিছুটা আত্মোপলব্ধিতে সহায় হল। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “ভণ্ড নেতারা বাস্তব কাজ করে না, কিন্তু তারা জানে কীভাবে একজন কর্মকর্তা হয়ে উঠতে হয়। নেতা হয়ে প্রথমেই তারা কী করে? তারা মানুষকে জয় করার চেষ্টা শুরু করে। তারা এই পন্থা গ্রহণ করে যে ‘একজন নতুন ব্যাবস্থাপককে অবশ্যই জোরালো অভিঘাত সৃষ্টি করতে হবে’: প্রথমে তারা মানুষকে জয় করার জন্য কিছু কিছু কাজ করে, মানুষের জীবনধারণ সহজ করে তোলার জন্য কিছু নতুন বিষয়ের প্রবর্তন করে, মানুষের কাছে ভালো একটা ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করে, সবাইকে দেখাতে চায় যে তারা জনগণের সাথে সুসঙ্গত, যাতে সবাই তাদের প্রশংসা করে আর বলে যে তারাই তাদের বাবা-মায়ের মতো, এর পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে। তারা মনে করে এখন তাদের জনসমর্থন রয়েছে, আর তাদের অবস্থানও নিরাপদ, এখন তাদের পদমর্যাদার সুযোগসুবিধা উপভোগ করাই সঠিক ও যথাযথ। তাদের আদর্শবাক্য হল হল, ‘জীবন শুধু খাদ্যগ্রহণ আর বেশভূষা-সজ্জিত হওয়ার জন্য’, ‘প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করুন, কারণ জীবন সংক্ষিপ্ত’, এবং ‘আজকের সুখ আজই ভোগ করে নিন, আগামীকালের জন্য দুশ্চিন্তা আগামীকাল করবেন’। প্রতিটা দিনকে তারা সেইদিনটার মতো করে উপভোগ করে, যত বেশি সম্ভব আনন্দ উপভোগ করে, ভবিষ্যতের কোনো চিন্তা করে না, একথা তো বিবেচনাই করে না যে একজন নেতার কী দায়িত্ব পূর্ণ করা উচিত আর কী কাজ সম্পাদন করা উচিত। সমগ্র কাজের একটা বিষয় হিসাবে তারা আক্ষরিক মতবাদের কিছু শব্দ ও বাক্যাংশ তোতাপাখির মতো আউড়ে চলে, আর দেখানোর জন্য সামান্যকিছু কাজ করে, কিন্তু প্রকৃত কোনো কাজ তারা করে না। গির্জার কোনো সমস্যাকে সম্পূর্ণভাবে সমাধান করার জন্য তারা সেটার গভীরে প্রবেশ করতে চায় না। এরকম অগভীরভাবে কাজ করার অর্থ কী? এ কি প্রতারণা নয়? এই ধরনের নকল নেতাদের উপরে কি কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা যায়? এরা কি ঈশ্বরের গৃহের নেতা ও কর্মী নির্বাচনের নীতি ও শর্তের সাথে সঙ্গত? (না।) এই মানুষদের কোনো বিবেক বা চেতনা নেই, এরা সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ববোধবর্জিত, অথচ তবুও এরা গির্জার নেতা হিসাবে স্বীকৃত আধিকারিকের পদে থেকে কাজ করতে চায়—এরা এত নির্লজ্জ কেন? দায়িত্ববোধ আছে এমন কিছু কিছু মানুষ নিম্ন যোগ্যতাসম্পন্ন, তারা নেতা হতে পারে না—আর যাদের দায়িত্ববোধ নেই সেই মনুষ্যরূপ আবর্জনাদের কথা তো বলারই অযোগ্য; নেতা হওয়ার যোগ্যতা তাদের এমনকি আরোই কম। কর্মবিমুখ এই ভণ্ড নেতারা ঠিক কতটা অলস? তারা কোনো একটা বিষয় খুঁজে পায়, তারা জানে যে সেটা একটা সমস্যার বিষয়, কিন্তু সেটাকে উপেক্ষা করে আর সেদিকে কোনো মনোযোগই দেয় না। তারা এতটাই দায়িত্বজ্ঞানহীন! তারা হয়ত ভালো বক্তা হতে পারে, এবং মনে হতে পারে যে তাদের সামান্য যোগ্যতা রয়েছে, কিন্তু গির্জায় যখন বিভিন্নরকম সমস্যার সৃষ্টি হয়, সেগুলোর সমাধান করার ক্ষমতা তাদের নেই। গির্জার সমস্যাগুলো জমা হতে হতে পারিবারিক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির মতো বৃদ্ধি পেলেও এই নেতারা তা নিয়ে নিজেদের উদ্বিগ্ন করে না, অথচ গতানুগতিকতার অংশ হিসাবে কিছু চপল কাজকর্ম করার দিকে জোর দেয়। আর এর চূড়ান্ত পরিণাম কী? তারা কি গির্জার কাজ অবিন্যস্ত করে ফেলে না? সেটাকে বিনষ্ট করে ফেলে না? গির্জায় বিশৃঙ্খলা আর বিভাজন সৃষ্টি করে না? এটাই হল অপরিহার্য পরিণাম” (বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। “এই অলস ভণ্ড নেতারা কখনোই বাস্তববাদী কাজকর্ম করে না এবং এমন আচরণ করে যেন তাদের নেতৃত্ব কোনো এক কর্মকর্তার পদ, তারা তাদের পদমর্যাদালব্ধ সমস্ত সুযোগসুবিধা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে। নেতা হিসাবে যে কর্তব্য তাদের পালন করার কথা, যে কাজ তাদের করার কথা, তারা সেগুলোকে একটা দায়ভার, একটা বিরক্তিকর বিষয় হিসাবে বিবেচনা করে। গির্জার কাজের প্রতি তাদের অন্তরে তারা অবাধ্যতায় পরিপূর্ণ: তাদের যদি কোনো কাজের প্রতি নজর রাখতে বলা হয় বা সেই কাজের সাথে জড়িত সমস্যা খুঁজে বার করতে ও সেগুলোর তদারক করে সমাধান করতে বলা হয়, তারা অনিচ্ছায় ভরে ওঠে। অথচ নেতা ও কর্মীদের এই কাজই করার কথা, এটাই তাদের কর্তব্য। তুমি যদি তা না করো—যদি তা করতে অনিচ্ছুক হও—তাহলে কেন তুমি তা সত্ত্বেও নেতা বা কর্মী হতে চাও? তুমি কি ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করো, না কি কর্মকর্তার পদের সুযোগসুবিধাগুলো উপভোগ করার জন্য? তুমি যদি কোনো কর্মকর্তার পদেই অধিষ্ঠিত হয়ে থাকতে চাও তাহলে একজন নেতা হওয়া কি লজ্জাজনক নয়? এদের থেকে নীচ চরিত্রের আর কেউ হতে পারে না—এদের কোনো আত্মসম্মান নেই, এরা একেবারেই নির্লজ্জ” (বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। ঈশ্বরের এই বাক্য পড়ে আমি সত্যিই লজ্জিত হয়েছিলাম। আমি ঠিক সেই ধরনের অলস নেত্রী ছিলাম। শুরু থেকেই, ভেবেছিলাম, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কেবল যে কর্তৃত্বের সাথে কথা বলে তা-ই নয়, অন্যদের সম্মানও অর্জন করে, তাই এই পদমর্যাদার জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম আর কষ্ট সহ্য করেছিলাম। আমি সবাইকে একটা মিথ্যা ধারণা দিয়েছিলাম, যাতে তারা মনে করেছিল যে আমি অনেক দায়িত্ব নিতে পারি। একবার আমি এই অবস্থানে এলে এবং অন্যরা আমাকে বিশ্বাস করলে, আমি নিজের আসল রূপ দেখিয়েছিলাম। নিজের পদমর্যাদার সঙ্গে আসা শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতি উপভোগ করতে শুরু করেছিলাম সেই সমস্ত কাজ এবং সেইসব অসুবিধা দেখেও গ্রাহ্য করতে চাইনি। আমার কাছে তা ছিল ভারস্বরূপ, তাই আমি ভেবেছিলাম কীভাবে ভার কমানো যায়, এবং কম উদ্বেগ করা যায়। ভিডিও পর্যালোচনা করার মানসিক ক্লান্তি ঘৃণা করতাম, তাই আমি নির্বিচারে বেপরোয়া পরামর্শ দিতাম এবং অন্যাদের দিয়ে বারবার তা সম্পাদনা করাতাম, যা জনশক্তির অপচয় করত। যখন আমার দায়িত্বে থাকা কোনো ভিডিওতে সমস্যা দেখা দিত, তা সমাধানের জন্য মাথা খাটাতাম না, বরং নিজের পদমর্যাদা ব্যবহার করে কৌশলগত ভাবে অন্য লোকেদের উপর সেই কজের ভার চাপিয়ে দিয়ে আর খোঁজখবর নিতাম না। তাতে না হত সমস্যাগুলোর সমাধান, না হত কাজের কোনোও অগ্রগতি। দলগত প্রশিক্ষণ এড়াতে আমি সব ধরনের ছুতো দিতাম, সম্ভব হলেই তা হস্তান্তর করে দিতাম। জরুরি কাজের পরিকল্পনায় ঢিলেমি আর অভিযোগ করতাম, যা আমার সহকর্মীকে সীমাবদ্ধ করেছিল। আমি অনেককিছু তাড়াতাড়ি সামলাতে না পারায় আমাদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছিল…। আমি যাকিছু করেছি সেসব ভেবে, সত্যিই নিজেকে আঘাত করতে চেয়েছিলাম। একটু মর্যাদা পেয়েই আমি কেবল আরাম চেয়েছিলাম, ক্রমাগত চতুর হচ্ছিলাম, ধোঁকা দিচ্ছিলাম। নিজের কাজকে খেলাচ্ছলে নিয়েছিলাম, আমার কোনোই দায়িত্ববোধ ছিল না। আমি তৎক্ষণাৎ সমস্যার সমাধান করিনি এবং গির্জার কাজকে নষ্ট হতে দেখেও উদাসীন ছিলাম। কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তাদের থেকে আমার কাজগুলো কীভাবে আলাদা ছিল? তারা মর্যাদা দখলের জন্য সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করে এবং সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান করে না। তারা শুধু চায় ভোজন এবং পান করতে এবং নিজেদের ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত লাভের জন্য ব্যবহার করতে। এটা খারাপ আর নির্লজ্জ। আমি ঠিক তেমনই ছিলাম। গির্জা আমাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিয়েছিল, কিন্তু আমি শুধু দৈহিক আরাম এবং স্বস্তিরই পরোয়া করতাম। আমার মানবিকতার অভাব ছিল, আমি কোনো বাস্তব কাজ করিনি। নিজের দায়িত্ব অবহেলা করে গির্জার কাজকে আমি গুরুতরভাবে বিলম্বিত করেছিলাম। আমি ছিলাম স্বার্থপর ও জঘন্য, এবং আমার মধ্যে মানবিকতার সম্পূর্ণ অভাব ছিল। তারপর স্পষ্ট দেখতে পেলাম যে আমি কত অলস, স্বার্থপর এবং ঘৃণ্য ছিলাম। প্রতারণা করে একটা অবস্থানে পৌঁছেছিলাম, কিন্তু কোনো বাস্তব কাজ করিনি। আমার চরিত্র ছিল নিকৃষ্ট ও অবিশ্বাসযোগ্য। আমার সত্যিই নৈতিকতার বোধ ছিল না। এসব ভেবে আমি হৃদয়ে যন্ত্রণা অনুভব করেছিলাম। প্রার্থনা করেছিলাম, “হে ঈশ্বর, আমার মানবিকতার খুব অভাব। আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম কিন্তু নিজের কাজ সঠিকভাবে করিনি, যা গির্জার কাজকে বাধাগ্রস্ত করেছে। হে ঈশ্বর, আমার বরখাস্ত হওয়া আপনার ন্যায়পরায়ণতা ছিল। আমি অনুতপ্ত এবং পরিবর্তিত হতে চাই—দয়া করে আমাকে নিজেকে চেনার পথ দেখান।”
আত্মচিন্তনের সময়ে মনে পড়ল, অন্যরা কীভাবে এই বিষয়ে আমার সাথে অনেকবার আলাপ-আলোচনা করেছিল এবং এমনকি আমাকে সতর্ক আর আমার মোকাবিলাও করেছিল, কিন্তু সেদিকে মন দিইনি। আমার মনে হয়েছিল অলস হওয়া এবং শারীরিক আরাম চাওয়া বড় কোনো সমস্যা নয়, আমি কাউকে ব্যাথা বা বাধা দিচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম আমার দক্ষতা আছে আর আমি কাজটা জানি বলে, অলস হওয়ার জন্য গির্জা আমায় বরখাস্ত করবে না। এগুলো যে কেবলমাত্র আমার নিজস্ব ধারণা এবং কল্পনা ছিল, তা ঈশ্বরের বাক্য পড়ার আগে বুঝতেই পারিনি। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “কার সমস্যা বেশি গুরুতর: অলস ব্যক্তিদের, নাকি দুর্বল যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষদের? (অলসদের।) কেন অলস ব্যক্তিদের সমস্যা বেশি গুরুতর? (দুর্বল যোগ্যতাসম্পন্নরা নেতা বা কর্মী হতে পারবে না, কিন্তু তাদের যোগ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো দায়িত্ব পালন করার সময় তারা কিছুটা কার্যকরী হতে পারে। যারা অলস তারা কিছুই করতে পারে না; এমনকি যদি তাদের যোগ্যতা থাকেও, তা দিয়ে তারা কিছুই করে না।) অলস ব্যক্তিরা কিছুই করতে পারে না। এক কথায়, তারা আবর্জনামাত্র, তাদের অলসতার কারণে বাতিল। অলস ব্যক্তিদের যোগ্যতা যত ভালোই হোক, তা নিছকই দর্শনধারী বৈশিষ্ট্যের বেশি কিছু নয়; তাদের উত্তম যোগ্যতা কোনো কাজের নয়। এর কারণ, তারা অত্যন্ত অলস, তারা জানে তাদের কী করার কথা, কিন্তু তা করে না; এমনকি যদি কোনো একটা সমস্যা আছে বলে তারা জানে, তাহলেও তা সমাধানের জন্য সত্যের সন্ধান করে না; তারা জানে নিজেদের কাজকে কার্যকরী করে তোলার জন্য তাদের কত অসুবিধা ভোগ করা উচিত, কিন্তু এত মূল্যবান কষ্টভোগ করতে তারা অনাগ্রহী। তার ফলে, তারা কোনো সত্যই অর্জন করে না, আর কোনো বাস্তব কাজও করে না। মানুষের যে কষ্ট সহ্য করার কথা তারা সেগুলো সহ্য করতে চায় না; তারা জানে শুধু স্বাচ্ছন্দ্যের লোভ, দৈহিক উপভোগ, আনন্দ আর অবসরের উপভোগ, এবং এক স্বাধীন, নিরুদ্বেগ জীবনের আনন্দ। তারা কি একেবারে অকাজের নয়? যারা কষ্ট সহ্য করতে পারে না তারা বেঁচে থাকার উপযুক্ত নয়। যে-ই সবসময় পরজীবীর মতো বেঁচে থাকতে চায় তার বিবেক বা চেতনা নেই; সে একটা পশুর মতো, এমনকি সেবা প্রদানের কাজেরও অনুপযুক্ত। যেহেতু সে কষ্ট সহ্য করতে পারে না, তাই যে সেবা সে প্রদান করে তা-ও নিকৃষ্ট, আর যদি সে সত্য অর্জন করতে চায়, সেই আশা আরোই কম। যে কষ্টভোগ করতে পারে না এবং সত্যকে ভালোবাসে না সে একজন অকর্মণ্য, এমনকি সেবা প্রদানের কাজেরও উপযুক্ত নয়। সে একটা পশু, তার মধ্যে একবিন্দুও মানবিকতা নেই। এরকম মানুষদের বহিষ্কার করা ছাড়া অন্যকিছুই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গত নয়” (বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। “তুমি ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বগুলিকে কীভাবে বিবেচনা করো তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি খুবই গুরুতর একটি বিষয়। ঈশ্বর মানুষের উপর যা অর্পণ করেছেন, তা যদি তুমি সম্পূর্ণ করতে না পারো, তাহলে তুমি তাঁর উপস্থিতিতে বসবাসের উপযুক্ত নও এবং তোমার শাস্তি পাওয়া উচিত। এটা স্বর্গের দ্বারা অভিষিক্ত এবং পৃথিবী দ্বারা স্বীকৃত যে, ঈশ্বর মানুষদের উপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন তা তাদের সম্পূর্ণ করা উচিত; এটি তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব, এবং তাদের জীবনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। যদি তুমি ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বকে গুরুত্ব সহকারে না নাও, তাহলে তুমি তাঁর সাথে শোচনীয়তমভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করছো; এতে তুমি যিহূদার চেয়েও বেশি শোচনীয়, এবং তোমার অভিশপ্ত হওয়া উচিত” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, মানব-প্রকৃতি জানার উপায়)। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য পড়ে বুঝলাম যদিও আপাতদৃষ্টিতে কারুর কোনো ক্ষতি হয় নি, আদতে নিজের দায়িত্বকে হালকাভাবে নিয়ে আমি গির্জার কাজ আটকে দিয়েছিলাম। সেটা ছিল ঈশ্বরের প্রতি গুরুতর বিশ্বাসঘাতকতা, এমনকি যিহূদার চেয়েও ঘৃণ্য। দায়িত্ব পালনের সময় যা যা করেছিলাম তা ভেবে কাঁপছিলাম। আমি অনেকবার অন্যদের আলাপ-আলোচনা উপেক্ষা করেছিলাম, ভেবেছিলাম যে দায়সারাভাবে কাজ করাটা মন্দ নয়, এমনকি ভুলবশত এটাও ভেবেছিলাম যে, আমি কাজটা জানতাম আর আমার ক্ষমতা ছিল বলে গির্জা আমার আলস্যের কারণে আমায় বরখাস্ত করবে না। আমি খুব অসংবেদনশীল আর একরোখা ছিলাম, যা শোচনীয় এবং হাস্যকর দুই-ই ছিল, এবং আমি দেখতে পারিনি যে তা কতটা বিপজ্জনক ছিল। ঈশ্বর স্পষ্টভাবে বলেছেন, তিনি এমন লোকদের ঘৃণা করেন যারা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অলস ও কৌশলী, তারা ঘৃণ্য এবং তাদের মানবিকতা নিকৃষ্ট, তা ঈশ্বরের আস্থার যোগ্য নয়। যাদের ক্ষমতা কম কিন্তু কষ্ট পেতে ইচ্ছুক, তারাই তুলনায় বেশি ভালো। তারা নিজেদের দায়িত্বের বিষয়ে খাঁটি। তারা হৃদয় দিয়ে কাজ করে আর দায়িত্ববান হয়। কিন্তু নিজের ক্ষেত্রে, ভাবতাম আমি সত্যিই খারাপ নই কারণ আপাতদৃষ্টিতে আমার কিছুটা ক্ষমতা আছে, যখন প্রকৃতপক্ষে, কোনো সৃষ্ট সত্তার দায়িত্ব পালনের সবচেয়ে মৌলিক কাজগুলোও আমি করতে পারতাম না। এটা কী ধরনের মানবিকতা আর ক্ষমতা? সেই সময়ে আমি সত্যিই নিজের সম্পর্কে সত্যটা দেখতে পেলাম, এবং বুঝলাম কেন নেত্রী বলেছিল আমি বিকশিত হওয়ার যোগ্য নই, এবং অনুতপ্ত ও পরিবর্তিত না হলে আমায় বহিষ্কার করা হবে। এই ধরনের মানবিকতার সাথে, অলস আর শঠ দুটোই হয়ে, নিজের কর্তব্যের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ না নিয়ে, আমি ভরসাযোগ্য ছিলাম না, আমাকে বরখাস্ত ও অপসৃত করা উচিত ছিল। নষ্ট করা সমস্ত সময়ের কথা ভেবে আমি ঈশ্বরের কাছে খুব ঋণী বোধ করলাম। আমি শুধু চাইছিলাম তখন থেকে ভালোভাবে সত্যের অন্বেষণ করতে, ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার আর তাঁর প্রেমের প্রতিদান দেওয়ার জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করতে।
আমাকে পরে লিখিত পাঠ্য-বিষয়ক কাজের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল। অনেক কাজ ছিল এবং প্রতিটা দিনই ব্যস্তভাবে কাটতো, তাই নিজেকে সতর্ক করতে থাকলাম যাতে দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করি আর আবার দৈহিক ইচ্ছার কাছে নতিস্বীকার না করি। নিজের দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নিতে পেরেছিলাম। কিছুদিন পরে, মনে হয়েছিল আমি কিছুটা বদলে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের কাজের চাপ বাড়ার সাথে সাথে কিছু অসুবিধা দেখা দিল, এবং আমার আসল প্রকৃতি আবার ফুটে ওঠা শুরু করল। ভাবছিলাম, কাজটা মানসিকভাবে ক্লান্তিকর, তাই বেশি জটিল সমস্যাগুলো অন্যদেরকেই সমাধান করতে দেব। একজন সিস্টার প্রায়ই বলত যে আমি দায়সারা কাজ করছি, এবং আমাকে সতর্ক করে দিত যে দায়িত্বটা যেন আরও গুরুত্ব সহকারে নিই। তা করব বলতাম, কিছুদিন ভালো করে কাজটা করতামও, কিন্তু তারপর জটিল কিছু এলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তাম। ভাবতাম, তা বেশ কষ্টকর, সামলানোর পক্ষে বড়ই ক্লান্তিকর, তাই সেটা ফেলে রাখতাম। এভাবেই দিনের পর দিন কেটে গেল। আমাদের দলের দুজন সিস্টারকে বদলি করা হয়েছিল কারণ তারা ভালো ফল অর্জন করছিল না। হঠাৎ আমার একটা আশঙ্কার অনুভূতি হল। আমি নিজের দায়িত্ব তাদের থেকে খুব একটা বেশি ভালোভাবে করছিলাম না, এবং লক্ষ্য করেছিলাম যে অন্যরা আমার চেয়ে বেশি উন্নতি করছিল। দলে আমিই নিকৃষ্টতম ছিলাম। যদিও তখনও নিজের দায়িত্ব পালন করছিলাম, তবু বেশ অস্বস্তি বোধ হল উদ্বেগ হল যে এরপর আমাকে বদলি করা হবে। পরে আমার অবস্থা নিয়ে এক সিস্টারর সাথে কথা বলেছিলাম, এবং সে বলেছিল, এমন নয় যে আমার ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু আমি খুব ঢিলেমি করতাম। বেশ কিছুটা সময় ধরে সেই দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তখনও বেশ কিছু মৌলিক ভুলভ্রান্তি করছিলাম, তার অর্থ হল কাজের প্রতি আমার মনোভাবে কিছু সমস্যা ছিল। তার কথা শুনে আমার ভিতরে আলোড়ন সৃষ্টি হল। ভাবলাম, ইতিমধ্যেই নিজের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করার সংকল্প নিয়েছি, তাহলে কেন আমার এখনও এমন মনোভাব আছে? ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে এটার কারণ খুঁজলাম।
একদিন, আমি ঈশ্বরের বাক্যর একটা অনুচ্ছেদ পড়লাম যা আমায় নিজের এই সমস্যা নিয়ে আরও স্পষ্টতা দিল। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “কিছু মানুষ যে কাজই করুক বা যে কর্তব্যই পালন করুক, তারা তাতে সাফল্যলাভে অক্ষম, তা তাদের জন্য অত্যধিক, মানুষের যে দায়বদ্ধতা পূর্ণ করা উচিত বা যে দায়িত্ব পালন করা উচিত, এরা সেসবে অসমর্থ। এরা কি আবর্জনাস্বরূপ নয়? তবু কি এরা মানুষ হিসাবে অভিহিত হওয়ার যোগ্য? জ্ঞানবোধহীন, মানসিক বৈকল্যের শিকার, ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধক মানুষরা ছাড়া এমন কি জীবিত কেউ আছে যাদের নিজের নিজের কর্তব্য ও দায়িত্ব পালন করা অবশ্যকরণীয় নয়? কিন্তু এই ধরনের মানুষেরা সবসময় গোপনে দুষ্কর্মকে প্রশ্রয় দেয় আর অনৈতিক কাজ করে, এবং নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে চায় না; যার নিহিতার্থ হল যে তারা কোনো প্রকৃত মানুষের মতো আচরণ করতে চায় না। ঈশ্বর তাদের যোগ্যতা ও প্রতিভা দিয়েছেন, তিনি তাদের একজন মানুষ হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন, তবুও তারা তাদের দায়িত্বপালনে সেগুলোকে ব্যবহার করতে পারে না। তারা কিছুই করে না, অথচ সমস্তকিছু উপভোগ করতে চায়। এমন কোনো ব্যক্তি কি মানুষ নামে অভিহিত হওয়ার যোগ্য? তাদের যে কাজের দায়িত্বই দেওয়া হোক—তা গুরুত্বপূর্ণ হোক বা সাধারণ, কঠিন হোক বা সহজ—তারা সর্বদা অযত্নবান ও অগভীর, সবসময় অলস ও অনির্ভরযোগ্য। যখন সমস্যার উদ্ভব হয়, তারা সেগুলোর দায় অন্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে; তারা কোনো দায়িত্বই নেয় না, নিজেদের পরজীবী জীবনই যাপন করে যেতে চায়। তারা কি অকর্মণ্য আবর্জনাস্বরূপ নয়? সমাজে কাকেই বা বেঁচে থাকার জন্য নিজের উপর নির্ভর করতে হয় না? মানুষ পূর্ণবয়স্ক হলে তাকে নিজেকেই নিজের সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হয়। তার বাবা-মা তাদের দায়িত্ব সম্পূর্ণ করেছে। এমনকি যদি তাদের বাবা-মায়েরা তাদের সাহায্য করতে আগ্রহীও হয়, তারা নিজেরাই তাতে অস্বস্তি বোধ করবে, উপলব্ধি করবে, ‘সন্তানকে বড় করে তোলার কাজ আমার বাবা-মা সম্পূর্ণ করেছেন। আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, শারীরিকভাবে সক্ষম—আমার উচিত স্বাধীনভাবে বাঁচতে সমর্থ হওয়া।’ অন্ততঃপক্ষে এইটুকু চেতনা কি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের থাকা উচিত নয়? কারোর যদি সত্যিই চেতনা থাকে, তাহলে তারা নিজেদের বাবা-মায়ের বদান্যতার উপরে ভরসা করে যাওয়া অব্যাহত রাখতে পারবে না; তারা অন্যের হাসির খোরাক হওয়ার ভয়ে, লজ্জিত হওয়ার ভয়ে, ভীত হবে। তাহলে, একজন নিষ্কর্মা অলস ব্যক্তির কি চেতনা আছে? (না।) তারা সবসময় বিনা প্রচেষ্টায় কিছু পেতে চায়, কখনোই দায়িত্ব নিতে চায় না, সর্বদা বিনামূল্যে সুবিধাভোগের সন্ধানে থাকে, তাদের দৈনিক উদরপূর্ণ খাদ্য চাই—তাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকার মতো কাউকে চাই, সেই খাবার সুস্বাদুও হওয়া চাই—আর এই সবকিছুই কোনো কাজ না করেই। এ কি পরজীবীসুলভ মনোবৃত্তি নয়? আর যারা পরজীবীস্বরূপ মানুষ তাদের কি বিবেক ও চেতনা আছে? তাদের কি মর্যাদা ও সততা আছে? একেবারেই না; এরা সবাই বিনামূল্যের আতিথ্য নেওয়া নিষ্কর্মা, সকলেই বিবেক ও বোধহীন বর্বর। এদের কেউই ঈশ্বরের গৃহে থেকে যাওয়ার যোগ্য নয়” (বাক্য, খণ্ড ৫, নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের দায়িত্বসমূহ)। আমি ঈশ্বরের বাক্য থেকে জানলাম, বিবেক ও চেতনাসম্পন্ন মানুষ নিজেদের কর্তব্যের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দেয়, কর্তব্যের জন্য যথাসাধ্য করে, দায়িত্বশীল হয়। অথচ যেসব অকর্মণ্যদের মধ্যে স্বাভাবিক মানবিকতার অভাব রয়েছে, তারা কখনও কষ্ট পেতে বা অসুবিধায় পড়তে ইচ্ছুক নয়, তারা কেবল কৌশল দিয়ে কাজ চালায়, নিজেদের দায়িত্ব বা বাধ্যবাধকতার প্রতি তাদের কোনো চিন্তা থাকে না। এমনকি যদি ঈশ্বর তাদের ক্ষমতা, প্রতিভা আর দায়িত্বপালনের সুযোগ দেন, তবুও, যেহেতু তারা কিছুই শেখে না, যেহেতু সর্বদা দৈহিক আরাম উপভোগ করতে চায়, এবং যেহেতু তাদের কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না, তাই শেষ পর্যন্ত তারা কিছুই করতে পারে না, তারা অকেজো হয়ে যায়। মনে হল, ঈশ্বর এই অপদার্থ লোকদের যেমন বর্ণনা দিয়েছেন, আমিও ঠিক তেমনই ছিলাম। আমি বরখাস্ত হওয়ার পর, গির্জা আমাকে লিখিত পাঠ্য নিয়ে কাজ করতে দেয়, যা আমাকে জন্য অনুতপ্ত হওয়ার একটা সুযোগ ছিল, কিন্তু আমি তা লালন করতে জানতাম না, এবং পরিবর্তে, নিজের কর্তব্যের প্রতি আমি সেই একই অকর্মণ্য মনোভাব বজায় রেখেছিলাম। ভালো করেই জানতাম যে সমস্যাগুলো সামলানোর সময়ে আমি ঢিলে দিতাম, তবু চাইনি উন্নতি করতে বা আরও মানসিক শক্তি বা সময় দিয়ে বিষয়গুলো চিন্তা করতে। ফলে আমার দায়িত্বে কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না। তা নিয়ে খুবই বিচলিত ছিলাম। কেন আমি কোনোরকমের অসুবিধা থেকে পিছিয়ে গিয়েছিলাম, কোনোরকমের কষ্ট থেকে লুকিয়ে পড়েছিলাম?
একবার নিষ্ঠাপালনকালে ঈশ্বরের কিছু বাক্য পড়লাম যা আমাকে এই সমস্যার মূল সম্পর্কে কিছু উপলব্ধি দিল। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “আজ, আমি যে বাক্যগুলি বলি তা তোমরা বিশ্বাস করো না, এবং তোমরা সেগুলির প্রতি মনোযোগ দাও না। যখন এই কাজটি ছড়িয়ে পড়ার দিন আসবে এবং তুমি এর সম্পূর্ণতা চাক্ষুষ করবে, তখন তুমি অনুতাপ করবে এবং সেই সময় তুমি হতবাক হয়ে যাবে। আশীর্বাদ আছে, তবুও তুমি সেগুলি উপভোগ করতে জানো না, এবং সত্য আছে, তবুও তুমি তার অন্বেষণ করো না। তুমি কি নিজের প্রতি অবজ্ঞা বয়ে আনছ না? আজ, যদিও ঈশ্বরের কাজের পরবর্তী পর্যায়ের এখনও সূচনা হয়নি, কিন্তু তোমার কাছে যে দাবিগুলি করা হয়েছে এবং তোমাকে যা নিয়ে জীবন যাপন করতে বলা হয়েছে, তা মোটেই অতিরিক্ত কিছু নয়। অনেক কাজ, এবং অনেক সত্য রয়েছে; সেগুলি কি তোমার দ্বারা পরিচিত হওয়ার যোগ্য নয়? ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার কি তোমার আত্মাকে জাগ্রত করতে অক্ষম? ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার কি তোমাকে নিজেকে ঘৃণা করাতে অক্ষম? তুমি কি শান্তি ও আনন্দ এবং যৎসামান্য দৈহিক স্বাচ্ছন্দ্য সহকারে শয়তানের প্রভাবের অধীনে বসবাস করে সন্তুষ্ট? তুমি কি সব মানুষের চেয়ে নীচ নও? যারা পরিত্রাণ চাক্ষুষ করেছে অথচ তা অর্জন করার জন্য সাধনা করে না তাদের চেয়ে অধিক মূর্খ আর কেউ নেই; এরা এমন মানুষ যারা দেহসর্বস্বতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শয়তানকে উপভোগ করে। তুমি আশা করো যে ঈশ্বরের প্রতি তোমার বিশ্বাস কোনো বাধা-বিপত্তি বা যন্ত্রণা বা সামান্যতম কষ্টেরও সম্মুখীন হবে না। তুমি সর্বদাই সেই জিনিসগুলির অন্বেষণ করো যা মূল্যহীন, এবং তুমি জীবনের সাথে কোনো মূল্য সংযোজন করো না, বরং সত্যের সামনে তোমার নিজের অসংযত চিন্তাভাবনাগুলি রেখে দাও। তুমি এতটাই মূল্যহীন! তুমি শূকরের মত বাস করো—তোমার আর শূকর আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য কী? যারা সত্যের সাধনা করে না, এবং তার পরিবর্তে দেহসর্বস্বতাকে ভালবাসে, তারা কি সবাই পশু নয়? আত্মা বিহীন ঐ মৃত ব্যক্তিরা কি সব চলমান শবদেহ নয়? তোমাদের মধ্যে কত বাক্য বলা হয়েছে? তোমাদের মাঝে কি খুব সামান্য কাজ করা হয়েছে? কতকিছুই না আমি তোমাদের মধ্যে প্রদান করেছি? তাহলে তুমি কেন তা অর্জন করনি? তোমার অভিযোগ করার মত কী আছে? এমনটা নয় কি যে দৈহিক সুখকে এতোটাই ভালোবেসেছ বলে তুমি কিছুই অর্জন করোনি? এবং এর কারণ কি এই নয় যে তোমার চিন্তাভাবনা অত্যন্ত অসংযত? এর কারণ কি এই নয় যে তুমি অতীব নির্বোধ? তুমি যদি এইসকল আশীর্বাদ অর্জন করতে অক্ষম হও, তাহলে কি তুমি তোমাকে উদ্ধার না করার জন্য ঈশ্বরকে দোষ দিতে পারো? … তোমার মতো কাপুরুষ, যে সর্বদা দেহসর্বস্বতার পিছনে ছুটছে—তোমার কি হৃদয় আছে, তোমার কি আত্মা আছে? তুমি কি একটি পশু নও? বিনিময়ে কিছু না চেয়ে আমি তোমাকে প্রকৃত পথ দিই, তবুও তুমি তা অন্বেষোণ করো না। তুমি কি আদৌ ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের একজন? আমি তোমাকে প্রকৃত মানব জীবন দান করি, তবুও তুমি অন্বেষণ করো না। তুমি কি শূকর বা কুকুরের চেয়ে কোনোভাবেই পৃথক নও? শূকররা মানুষের জীবনকে অনুসন্ধান করে না, তারা পরিশুদ্ধ হওয়ার সাধনা করে না, এবং তারা জীবন কী তা বোঝে না। প্রতিদিন, পেট ভরে খাদ্য গ্রহণ করার পরে, তারা কেবলই নিদ্রা যায়। আমি তোমাকে প্রকৃত পথ দিয়েছি, তবুও তুমি তা অর্জন করনি: তুমি শূন্যহস্ত। তুমি কি এই জীবনযাপন চালিয়ে যেতে চাও, একটি শূকরের জীবন? এমন মানুষের বেঁচে থাকার তাৎপর্য কী? তোমার জীবন নিন্দনীয় এবং তুচ্ছ, তোমার জীবনযাপন আবর্জনা ও লাম্পট্যের মাঝে, এবং তুমি কোন লক্ষ্যের অনুসরণ করো না; তোমার জীবন কি সকলের চেয়ে তুচ্ছ নয়? তোমার কি ঈশ্বরের দিকে মুখ তুলে তাকাবার দুঃসাহস আছে? তুমি যদি এইভাবেই অনুভব করতে থাকো, তাহলে কি তুমি কিছু অর্জন করতে পারবে? প্রকৃত পথ তোমাকে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তা অর্জন করতে পারবে কিনা তা নির্ভর করে তোমার নিজের ব্যক্তিগত অন্বেষণের উপর” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পিটারের অভিজ্ঞতাঃ তার শাস্তি ও বিচারের জ্ঞান)। এই অনুচ্ছেদটা বারবার পড়লাম। যতবারই আমি “পশু,” “একটি শূকর বা কুকুর,” এবং বিশেষ করে “ইতর” শব্দগুলো পড়লাম, মনে হল যেন আমাকে কেউ চড় মারছে। আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম: “আমি ঠিক কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি? সেটা কি শুধু আরাম উপভোগ করার জন্য? ঈশ্বরের এত বাক্য পড়ার পরেও কেন আমার জীবনের অন্বেষণগুলো এত নীচ?” মনে হল আমি সত্যিই শয়তানের দ্বারা গভীরভাবে কলুষিত হয়েছি। শয়তানোচিত দর্শন যেমন “জীবন মানে শুধু ভোজন করা এবং পোষাক পরা,” “আনন্দের জন্য দিনটি দখল করুন, কারণ জীবন সংক্ষিপ্ত,” এবং “আজকের মদ আজ পান করুন, এবং, আগামীকালের জন্য আগামীকাল চিন্তা করুন” এগুলোই আমার জীবনযাপনের বাণী হয়ে উঠেছিল। শারীরিক আরাম এবং ভোগ আমার জীবনের প্রধান সাধনা ছিল। মনে আছে আমার সব সহপাঠীরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার আগে পাগলের মতো পড়াশোনা করছিল, কিন্তু আমার কাছে সেটা খুব চাপের ছিল, তাই আমি আরাম করার জন্য খেলার মাঠে যেতাম। ভাবতাম আমার উচিত জীবনে নিজের সাথে ভালো আচরণ করা এবং প্রতিটি মুহূর্ত যেমন আসে তেমন উপভোগ করা, আগামীকাল যা-ই নিয়ে আসুক না কেন। আমার সহপাঠীরা বলত যে আমি সত্যিই নিরুদ্বেগ ছিলাম আর আমি ভাবতাম যে সেটা বেঁচে থাকার একটা ভালো উপায়। কোনো চাপ বা দুশ্চিন্তা ছাড়াই রোজ খুশি থাকতাম। সেইরকমের জীবনই চাইতাম। আমি বিশ্বাস অর্জন করার আর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করিনি। যখন জটিল বা কঠিন কিছু আসত, আমি সেটাকে ঝামেলা মনে করে এড়িয়ে যেতে চাইতাম, সামান্য শারীরিক অস্বস্তি বা ধকল নিতে অনিচ্ছুক ছিলাম। আমার ভালো লাগত কোনো কাজের দায়িত্ব না নিয়ে এমনি ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু এভাবে বেঁচে থেকে আমি ঠিক কী অর্জন করেছিলাম? নিজের দায়িত্বে কোনো অগ্রগতি করিনি, এবং নিজের চরিত্র ও মর্যাদা নষ্ট করেছিলাম কারণ আমি দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিলাম আর গির্জার কাজ আটকে রেখেছিলাম। ঈশ্বর বিতৃষ্ণ হয়েছিলেন এবং ব্রাদার-সিস্টাররা বিরক্ত হয়েছিল। বেঁচে থাকার এই শয়তানোচিত দৃষ্টিভঙ্গিগুলো অনেক ক্ষতি করে। এইভাবে জীবনযাপন করে আমার কোনো সততা বা মর্যাদা ছিল না, ছিলাম পশুর মতো, সম্পূর্ণ অলস, এবং জীবনের কোনো লক্ষ্য ছাড়া। সেটা জঘন্য ছিল! বাস্তবে, আমি যখন সমস্যার সম্মুখীন হতাম, সেই পরিস্থিতি ব্যবহার করে সত্যের সন্ধান করা এবং তা উপলব্ধি ও অর্জন করা ছিল আমার জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা। কিন্তু আমি তা আগলে রাখিনি এবং সত্য অর্জনের অনেক সুযোগ খুইয়ে ফেলি। বাইবেল বলেছে, “এবং মূর্খদের সমৃদ্ধিই তাদের ধ্বংস করে ফেলবে” (হিতোপদেশ ১:৩২)। এটা খুবই সত্যি। ঈশ্বরের বাক্যেও বলে, “মানুষের দেহ হল ঠিক এই সর্পের মতোই: উপাদানগতভাবে, সেটি মানুষের জীবনে ক্ষতি করে—এবং যখন সেটি পুরোপুরিভাবে সফল হয়ে যায়, তখন তোমার জীবন বরবাদ হয়ে যায়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরকে ভালোবাসাই প্রকৃত ঈশ্বর-বিশ্বাস)। কীভাবে আমি বারবার নিজের দায়িত্বকে লঘুভাবে নিয়েছি, বহু মূল্যবান মুহূর্ত নষ্ট করেছি, তা ভেবে আমি খুবই বিব্রত হলাম, অঝোরে কাঁদতে থাকলাম। মনে হল, আমি ঈশ্বরের কাছে খুবই ঋণী। অনুশোচনায় ভরে গেলাম এত মন্দ কাজ করার জন্য অনুতপ্ত হলাম। এই সবকিছুই আমার ঈশ্বর-বিশ্বাসের ইতিহাসের উপর অমোচনীয় কলঙ্ক, এবং আমি সবসময় তা নিয়ে অনুশোচনা করব! হৃদয়ের গভীর থেকে নিজেকে ঘৃণা করলাম। অশ্রুজলে প্রার্থনা করলাম, “ঈশ্বর, আমি আপনাকে হতাশ করেছি। সত্যের অনুসরণ না করেই বছরের পর বছর ধরে বিশ্বাসী থেকেছি, শুধুমাত্র ক্ষণস্থায়ী দৈহিক আরামের জন্য। আমি কত হীন! ঈশ্বর, আমি অবশেষে দেহসর্বস্বতার সারমর্ম দেখেছি, আর যদিও নিজের অধর্মগুলোকে কোনোকিছু দিয়ে পূরণ করতে পারবো না, আমি চাই অনুতাপ করতে, সত্যের অনুসরণ করতে এবং একটি নতুন সূচনা করতে।”
একজন সিস্টার পরে আমাকে ঈশ্বরের বাক্যর একটি অনুচ্ছেদ পাঠায় যার মধ্যে আমি অনুশীলনের আর প্রবেশের একটা পথ খুঁজে পাই। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “মানুষের যখন চিন্তাভাবনা থাকে, তখন তাদের কাছে বেছে নেওয়ার মতো বিকল্পও থাকে। যদি তাদের সাথে কিছু ঘটে এবং তারা ভুল বিকল্প বেছে নেয়, তাহলে তাদের উচিত নিজেকে পরিবর্তিত করে সঠিক বিকল্প বেছে নেওয়া; তাদের অবশ্যই নিজেদের ভুলকেই আঁকড়ে ধরে থাকা উচিত নয়। এরকম একজন মানুষই হল বুদ্ধিমান। কিন্তু যদি সে জানে যে সে ভুল বিকল্প বেছে নিয়েছে, তবুও নিজেকে পরিবর্তিত না করে, তাহলে সে এমন একজন যে সত্যকে ভালোবাসে না, আর এরকম একজন মানুষ প্রকৃতরূপে ঈশ্বরকে চায় না। উদাহরণস্বরূপ ধরে নেওয়া যাক, নিজের দায়িত্ব পালনের সময় তুমি অযত্নবান, অনিয়মানুবর্তী হতে চেয়েছিলে। তুমি কাজে শিথিল হওয়ার চেষ্টা করেছো, ঈশ্বরের পরীক্ষা এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেছো। এরকম ক্ষেত্রে, প্রার্থনার জন্য দ্রুত ঈশ্বরের সম্মুখে এসো, আর গভীরভাবে চিন্তা করো যে তা কাজের সঠিক পথ ছিল কি না। তারপর এই বিষয়ে চিন্তা করো: ‘আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি? এরকম কর্মশিথিলতা মানুষের নজর এড়িয়ে যেতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরকে ফাঁকি দিতে পারবে কি? উপরন্তু, আমার ঈশ্বর-বিশ্বাস কর্মবিমুখ হওয়ার জন্য নয়, উদ্ধার লাভ করার জন্য। আমার এরকম আচরণ স্বাভাবিক মানবতার বহিঃপ্রকাশ নয়, অথবা তা ঈশ্বরের প্রিয়ও নয়। না, বাইরের জগতে আমি শিথিল হতে পারি আর যা খুশি করতে পারি, কিন্তু এখন আমি ঈশ্বরের গৃহে রয়েছি, ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের অধীনে রয়েছি, ঈশ্বরের দৃষ্টির অনুসন্ধানের অধীনে রয়েছি। আমি একজন মানুষ, আমাকে অবশ্যই নিজের বিবেক অনুযায়ী কাজ করতে হবে, আমার যা ইচ্ছা তাই করতে পারি না। আমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ করতে হবে, আমি অযত্নবান ও দায়সারা হতে পারি না, কাজে শিথিল হতে পারি না। তাহলে শিথিল না হওয়ার জন্য, অযত্নবান ও দায়সারা না হওয়ার জন্য, আমার কীভাবে কাজ করা উচিত? আমাকে কিছু প্রচেষ্টা ব্যয় করতে হবে। আমি এখনই অনুভব করলাম যে সেভাবে কাজ করায় অনেক অসুবিধা ছিল, আমি কষ্ট এড়িয়ে যেতে চেয়েছি, কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি: সেভাবে কাজ করায় হয়ত অনেক অসুবিধা থাকতে পারে, কিন্তু তা কার্যকরী, আর তাই সেভাবেই কাজ করা উচিত।’ কাজ করতে করতেও যদি তুমি কষ্টের ভয় পাও, সেরকম সময়ে তোমার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা উচিত: ‘হে ঈশ্বর! আমি অলস, প্রতারণাপূর্ণ, আমি অনুনয় করছি তুমি আমায় অনুশাসন করো, তিরস্কার করো, যাতে আমার বিবেকে সচেতনতা অনুভব করি, এবং লজ্জাবোধ করি। আমি অযত্নবান ও দায়সারা হতে চাই না। আমি অনুনয় করছি তুমি আমায় পথনির্দেশ দাও এবং আলোকিত করো, যাতে আমি আমার বিদ্রোহী মনোভাব আর কদর্যতা দেখতে পাই।’ তুমি যখন এইভাবে প্রার্থনা করো, আত্মানুসন্ধান করো এবং নিজেকে জানার চেষ্টা করো, তখন তা এক অনুশোচনাবোধ উৎপন্ন করে, আর তুমি নিজের কদর্যতাকে ঘৃণা করতে সক্ষম হয়ে ওঠো, তোমার হৃদয়ের অসমীচীন অবস্থা পরিবর্তিত হতে আরম্ভ করে, এবং তুমি একথা চিন্তা ক’রে নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে সমর্থ হও, ‘আমি অযত্নবান আর দায়সারা কেন? কেন সর্বদা আমি কাজে শিথিল? এরকম আচরণ বিবেক বা চেতনাবর্জিত—আমি কি এখনও তেমন একজনই রয়েছি যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে? আমি কেন কোনো বিষয়কে গুরুতর হিসাবে নিই না? আমার কি আরও একটু সময় আর প্রচেষ্টা ব্যয় করা উচিত? এটা বিরাট কোনো ভার নয়। আমার এটাই করা উচিত; যদি এটুকুও না করতে পারি, তাহলে কি আমি মানুষ হিসাবে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত?’ এর ফলে, তুমি একটা সংকল্প করো এবং একটা শপথ উচ্চারণ করো, ‘হে ঈশ্বর! আমি তোমায় নিরাশ করেছি, আমি সত্যিই অত্যন্ত গভীরভাবে ভ্রষ্ট, আমার বিবেক বা বোধ নেই, মানবিকতা নেই, আমি অনুতাপ করতে চাই। আমি মিনতি করছি আমায় ক্ষমা করো, আমি নিশ্চয়ই পরিবর্তিত হবো। যদি আমি অনুতপ্ত না হই, কামনা করছি তাহলে তুমি আমায় দণ্ড দিও।’ পরবর্তীকালে, তোমার মানসিকতায় পরিবর্তন আসে, আর তুমি বদলাতে শুরু করো। তুমি বিচক্ষণতার সাথে তোমার দায়িত্ব পালন ও সম্পাদন করো, অযত্ন বা দায়সারাভাব হ্রাস পায়, এবং এখন তুমি কষ্টভোগ করতে ও মূল্য প্রদান করতে সক্ষম হয়ে উঠেছো। তুমি অনুভব করো যে এই উপায়ে নিজের দায়িত্ব পালন করাই সুন্দর, আর তোমার হৃদয় শান্ত ও আনন্দময় হয়ে ওঠে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, ঈশ্বরবিশ্বাসের ভিত্তিতে রয়েছে ঈশ্বরের বাক্য মহার্ঘরূপে সঞ্চিত করা)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে দেখলাম মানুষ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে মৌলিক দায়িত্ব হল নিজেদেরকে নিজেদের কর্তব্যের মধ্যে নিক্ষেপ করা। তা যতই কঠিন হোক না কেন, তা সহজ হোক বা জটিল, আমাদের উচিত গুরুত্ব সহকারে এবং আন্তরিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা। আমাদের উচিত যথাসাধ্য করা। এটাই কর্তব্যের প্রতি সঠিক মনোভাব। ঈশ্বরের বাক্য আমাদেরকে অনুশীলনের পথও দেখায়। শঠ ও চতুর হতে চাইছি বুঝতে চাইলে, আমাদের ঈশ্বরের পরীক্ষাকে গ্রহণ, তাঁর কাছে প্রার্থনা, এবং দৈহিক ইচ্ছাকে পরিত্যাগ করতে হবে। ঈশ্বরের বাক্য চিন্তা করে, মানুষের জন্য তাঁর উপলব্ধি এবং সমবেদনাকে অনুভব করতে পারি আমি। তিনি অনুশীলনের ও প্রবেশের এই পথগুলো সম্পর্কে খুবই স্পষ্ট, যাতে আমরা মানবসদৃশ জীবনযাপন করতে পারি। ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং প্রয়োজন উপলব্ধি করে, একটা প্রার্থনা করলাম এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজের দৈহিক ইচ্ছা পরিত্যাগ করলাম।
একবার, যখন আমি আবার একটা বড়সড় সমস্যায় পড়েছিলাম এবং আমার মধ্যে দায়সারা আর উদাসীন হয়ে কাজ করার তাগিদ জন্মেছিল, তখন একটা প্রার্থনা করেছিলাম: “ঈশ্বর, আমি আবার আমার দায়িত্বে ছলচাতুরি করার কথা ভাবছি, কিন্তু আমি এমনটা করতে চাই না। দয়া করে আমাকে দৈহিক ইচ্ছা ত্যাগের, সত্যের অনুশীলনের, আর নিজের দায়িত্বের সুষ্ঠু পালনের পথ দেখান।” প্রার্থনা করার পর, আমার মনে হল, অন্য লোকেরা আমাকে শঠ ও চতুর হিসেবে দেখবে না, ঈশ্বর দেখবেন। তিনি দেখবেন যে আমি সত্য অনুশীলন করছিলাম নাকি দৈহিক ইচ্ছার পথে চলছিলাম। তখন নিজের হৃদয়কে শান্ত করে তা নিয়ে বিবেচনা করি, আর অজান্তেই কিছু নীতি আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। সমস্যাটা সত্যিই দ্রুত সমাধান হয়ে গিয়েছিল। এভাবে কয়েকবার অনুশীলন করার পর, নিজের হৃদয়ে বেশ প্রশান্তি অনুভব করলাম, মনে হল যে এটা দায়িত্বপালনের এক দুর্দান্ত উপায়। এছাড়াও, দায়িত্ব থেকে বদলি হওয়া নিয়ে আগের সেই আতঙ্কও অদৃশ্য হয়ে গেল।
ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারা আমার জন্য ঈশ্বরের পরিত্রাণ ছিল, এবং ঈশ্বরের বাক্যের বিচার ও ভরণপোষণের মাধ্যমে আমি একটু একটু করে জেগে উঠেছিলাম।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।