গির্জার নেতা কোনও আধিকারিক নয়
আমার নাম ম্যাথিউ, তিন বছর আগে আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ গ্রহণ করি। ২০২০ সালের অক্টোবরে গির্জার নেতা হই। বুঝতে পারি যে তা খুব বড় এক দায়িত্ব কিছুটা চাপও অনুভব করি, তবে সত্যিই খুব গর্বিতও হই। মনে হল যে আমাকে সেই দায়িত্বের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে কারণ অন্যদের তুলনায় আমার যোগ্যতা বেশি ছিল। নিজের কাজ খুবই গুরুত্ব সহকারে নিই, অন্যদের কাজে কোনও সমস্যা হলে তাদেরও সাহায্যার্থে সহকারিতার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। সময়ের সাথে সাথে মনে হতে থাকে, আমি কিছু কিছু সমস্যার সমাধানে সমর্থ, এবং যেখানেই আমার প্রয়োজন হত, সেখানেই গিয়ে তাকে সহকারিতা করতাম। আমি সবার কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছি যে আমি এক চমৎকার নেতা সমস্যা-সমাধানে পটু।
তারপর এক মন্দ কর্মকারী গির্জায় গুজব ছড়াতে শুরু করে। সে সমাবেশ-দলগুলোতে কমিউনিস্ট পার্টির রটানো ঈশ্বরের নিন্দামূলক মিথ্যাগুলো ছড়াচ্ছিল, ঈশ্বরের গৃহের কাজকে বিচার করে সে সত্যের অপলাপ ও মিথ্যাচার করছিল। সে মানুষকে বিপথে, ঈশ্বর থেকে দূরে, নিয়ে যেতে চেয়েছিল। আমি যত বেশি সম্ভব সমাবেশ আর আলোচনার ব্যবস্থা করতে থাকি, নিজেকে শত্রু দলগুলির বিরুদ্ধে সৈন্যদের নেতৃত্ব দিয়ে চলা কোনও সেনাপতি বলে মনে হত! প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে আমি সবাইকে রক্ষা করতে পারি যাতে তারা দেখতে পায় যে আমি গুরুভার বহন করতে পারি, যে আমি দায়িত্ববান। কিন্তু বাস্তবে, খুবই দুর্বল লাগত। কিছু কিছু বিভ্রম কীভাবে খণ্ডন করব, তা নিজেও জানতাম না সেগুলো আমাকেও প্রভাবিত করছিল। কিন্তু অন্যদের কাছে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে চাইনি। নিজেকে বড় আর শক্তিশালী হিসাবে দেখাতে চেয়ছিলাম, ভেবেছিলাম, এ-ই হল এক যথার্থ নেতা হওয়া। নিজের অবস্থা নিয়ে আমি কখনোই কিছু খুলে বলিনি, কারণ ভেবেছিলাম, নেতা হিসাবে কোনও দুর্বলতা প্রকাশ করলে, আমাকে আর ক্ষমতাবান মনে হবে না। তারা আমার সম্পর্কে কী ভাববে? তারা কি ভাববে যে আমি নিছক মতবাদই আওড়াতে পারি, সত্যের বাস্তবিকতার অভাব রয়েছে আমার? ভেবেছিলাম, গির্জার এক নেতা হিসাবে, আমাকেও কোনও রাষ্ট্রপতি বা সেনাধ্যক্ষের মতো কঠোর হতে হবে। নিজের দুর্বলতা কারও কাছে প্রকাশ করলে চলবে না! তাই সমাবেশগুলোতে, সর্বক্ষণ ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে আমার “গভীর” উপলব্ধি আর আমার নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কেই বলতাম। নিজের ব্যর্থতা ও কলুষগুলোর বিষয়ে শুধু উপর উপর ছুঁয়ে গিয়েই ঠিক করে করা কাজগুলোর নিয়েই বলা শুরু করে দিতাম তাড়াতাড়ি। সমাবেশগুলোতে কখনও ঘুম পেলে, তা স্বীকার করতাম না, এবং কোনও সমস্যা হলে, বলতাম অচিরেই নিজের দুর্বলতা সামাধানের পথ পেয়ে যাব। কীভাবে নতুন বিশ্বাসীদের জলদান করেছি, তাদের শেখার সুযোগ দিয়েছি, তা বলতাম যাতে নিজের সৎকার্যসমূহ জাহির করা যায়। নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া সময়, ঈশ্বরের জন্য আমার করা ত্যাগগুলো নিয়েই কথা বলতে পছন্দ করতাম, সবার কদর পেতে বলতাম কীভাবে রাত জেগে কাজ করেছি। সিস্টার ম্যারিনেট, আমার সঙ্গী, আমার খুবই তারিফ করত কারণ আমি সবসময়ই তার অবস্থার সাথে প্রাসঙ্গিক এমন ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে তার সহায়তা করতাম। সে প্রশংসা করলে আমি খুবই খুশি হতাম। যে ব্রাদার-সিস্টাররা নবাগতদের সদ্য জলদান করা শুরু করেছিল, তারাও আমার খুব কদর করত। একবার এক সিস্টার সমস্যায় পড়লে তাকে ডেকে তা নিয়ে তার সাথে আলোচনা করি। আলোচনার পর সে বলে, ঈশ্বরের ইচ্ছা সে উপলব্ধি করেছে, তখন আমি আত্মতুষ্ট হই। তাকে কখনোই বলিনি যে আমার সহায়তামূলক আলোচনা পূর্ণতই ছিল ঈশ্বরের নির্দেশনা, তা ঈশ্বরের আলোকদান থেকে এসেছে, তাই সকল গৌরব কেবল তাঁরই প্রাপ্য। আমার আলোচনার পর কিছু ব্রাদার-সিস্টার “আমেন” বলে ওঠে, অথবা “ম্যাথিউ একেবারে সঠিক,” অথবা “ম্যাথিউ-র সহকারিতা পেয়ে আমি খুবই কৃতজ্ঞ।” মাঝেমধ্যে তারা আমার সাথে প্রশংসার স্বরে কথা বলত, তাদের কাজে আমার মতামত আর নির্ণয় চাইত। বুঝতে পারতাম, তাদের হৃদয়ে আমি এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছি। তারা আমায় কত সম্মান করে দেখে, কিছুটা অস্বস্তি বোধ করি। কিন্তু আমি সমাদর পাওয়ার এই অনুভূতিটা পছন্দ করতাম। এটা আমায় আনন্দ দিত। তারপর একদিন, একটা বিবৃতিমূলক ভিডিও দেখি: “জাহির করার ফলে যে ক্ষতি হয়েছে।” সেটা সত্যিই মর্মস্পর্শী ছিল। জনৈকা সিস্টার, যে নেত্রীও ছিল, সে সর্বক্ষণ তার কাজে নিজের বড়াই করত। সে ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করে অসুস্থতার দ্বারা অনুশাসিত হয়। মূল বিষয়টি ছিল, তার আচরণ ঈশ্বরের ঘৃণার উদ্রেক ঘটায়। ভিডিওটা দেখে আমার চোখে জল এসে গেছিল বুঝতে পেরেছিলাম, তারিফ আদায়ের জন্য নিজেকে জাহির করে আমি ঈশ্বরের বিরোধিতা করছিলাম। খ্রীষ্টবিরোধীর পথ অবলম্বন করছিলাম। কখনোই বুঝতে পারিনি যে নিজেকে জাহির করাটা এত গুরুতর সমস্যা হতে পারে। নিজেকে বোঝাতে লাগলাম, “আমি ঈশ্বরের ক্রোধের উদ্রেক ঘটিয়েছি।” আমি সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম এবং কী করব বুঝতে পারছিলাম না।
তারপর ঈশ্বরের বাক্যের এই ছত্রটি পড়ি যা আমায় নিজের কলুষ বুঝতে সাহায্য করে। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “নিজেকে উচ্চে স্থাপন করা ও নিজের সাক্ষ্যপ্রদান করা, নিজেকে জাহির করা, এমন চেষ্টা করা যাতে লোকজন তাদেরকে বিরাট কিছু ভাবে—ভ্রষ্ট মানবজাতি এইসব করতে সক্ষম। মানুষ যখন শয়তানোচিত প্রকৃতির দ্বারা পরিচালিত হয় তখন তাদের সহজাত প্রতিক্রিয়া এরকমই হয়, এবং সমগ্র ভ্রষ্ট মানবজাতির জন্যেই তা সত্যি। সাধারণত কীভাবে মানুষ নিজেদের উচ্চে স্থাপন করে আর নিজের সাক্ষ্যপ্রদান করে? তারা কীভাবে এই লক্ষ্যে পৌঁছয়? তারা সাক্ষ্য দেয় যে কত বেশি কাজ তারা করেছে, কত কষ্টভোগ তারা করেছে, নিজেদের তারা কত বেশি পরিমাণে ব্যয় করেছে, আর কী মূল্য তারা প্রদান করেছে। এইগুলোকেই তারা নিজেদের উচ্চে স্থাপন করার জন্য মূলধন হিসাবে ব্যবহার করে, যা মানুষের মনে তাদের এক উচ্চতর, দৃঢ়তর, আরও স্থিতিশীল স্থান প্রদান করে, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাদের সম্মান করে, প্রশংসা করে, শ্রদ্ধা করে, এমনকি তাদের উপাসনা করে, আদর্শজ্ঞান করে, এবং অনুসরণ করে। এই লক্ষ্যে উপনীত হতে মানুষ এমন অনেক কিছু করে যা উপরিভাগে ঈশ্বরের সাক্ষ্যপ্রদান করে, কিন্তু আসলে তাদের নিজেদেরই উচ্চে স্থাপন করে, নিজেদেরই সাক্ষ্য দেয়। এইভাবে কাজ করা কি যুক্তিযুক্ত? এগুলো যৌক্তিকতার পরিধির বাইরে। এদের কোনো লজ্জা নেই: এরা নির্লজ্জভাবে সাক্ষ্যপ্রদান করে যে ঈশ্বরের জন্য তারা কী করেছে এবং তাঁর জন্য কত কষ্টভোগ করেছে। তারা এমনকি তাদের প্রতিভা, মেধা, অভিজ্ঞতা, বিশেষ দক্ষতা, নিজেদের পরিচালনা করার জন্য তাদের চতুর কৌশল, মানুষের সঙ্গে খেলা করার জন্য তাদের পদ্ধতি, ও এরকম আরও অনেক কিছু জাহির করে। নিজেদের উচ্চে স্থাপন করার ও নিজেদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তাদের পদ্ধতি হল নিজেদের জাহির করা ও অন্যদের হেয় করা। এছাড়াও তারা নিজেদের মুখোশের আড়ালে রাখে এবং ছদ্মবেশ ধারণ করে, নিজেদের দুর্বলতা, দোষত্রুটি, ও ঘাটতি মানুষের কাছ থেকে গোপন করে যাতে মানুষ সবসময় শুধু তাদের ঔজ্জ্বল্যটুকুই দেখতে পায়। তারা যখন নেতিবাচক বোধ করে, সেকথা অন্যদের এমনকি বলার সাহসটুকুও করে না; মানুষের কাছে উন্মুক্ত হওয়ার ও তাদের সাথে আলোচনা করার সাহসেরও অভাব রয়েছে তাদের, আর যখন তারা কিছু ভুল করে, তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে তা গোপন করতে ও ঢাকা দিয়ে রাখতে। কর্তব্য পালনের সময়ে তারা গির্জার কাজের যে ক্ষতি করেছে সেকথা কখনোই উল্লেখ করে না। তবে নিজেদের সামান্য কিছু অবদান থাকলে বা ছোটোখাটো কোনো সাফল্য অর্জন করে থাকলে সেগুলো জাহির করতে তারা এতটুকু দেরি করে না। তারা কত যোগ্য, তাদের ক্ষমতা কত বেশি, তারা কত ব্যতিক্রমী, আর সাধারণ মানুষের চেয়ে তারা কত উন্নত, সেকথা সারা পৃথিবীকে জানাতে তারা অধীর হয়ে ওঠে। এটা কি তাদের নিজেদের উচ্চে স্থাপন করার এবং নিজেদের সাক্ষ্যপ্রদান করার একটা উপায় নয়? কোনো বিবেক ও বোধ সম্পন্ন মানুষ কি কখনো নিজেকে উঁচুতে স্থাপন করে আর নিজেই নিজের সাক্ষ্য দেয়? না। তাহলে যখন মানুষ তা করে, সাধারণত কোন স্বভাব প্রকাশিত হয়? প্রকাশিত স্বভাবগুলোর মধ্যে একটা প্রধান হচ্ছে ঔদ্ধত্য, তারপর আসে প্রতারণা, যার সাথে জড়িত আছে তাদের যাতে মানুষ বিশিষ্ট শ্রদ্ধার স্থান দেয় তার জন্য সম্ভাব্য সমস্তকিছু করা। তাদের গল্পগুলো একদম নিশ্ছিদ্র; তাদের কথাবার্তায় স্পষ্টতই রয়েছে অভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্র, অথচ তারা এই সত্যিটা লুকোতে চায় যে তারা দম্ভ প্রদর্শন করছে। তারা যা বলে তার পরিণাম হিসাবে মানুষ অনুভব করতে বাধ্য হয় যে তারা অন্যদের চেয়ে উন্নত, কেউই তাদের সমকক্ষ নয়, অন্য সকলেই তাদের চেয়ে নিকৃষ্ট। এবং এই পরিণাম কি অনৈতিক উপায়ে অর্জিত নয়? এই উপায়ের নেপথ্যে কী স্বভাব রয়েছে? এর মধ্যে কি কোনো নীতিবিগর্হিত উপাদান রয়েছে? এ হল এক ধরনের দুষ্ট স্বভাব” (বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, চতুর্থ পরিচ্ছেদ: তারা নিজেদের মহিমান্বিত হিসাবে তুলে ধরে এবং নিজেদের সাক্ষ্য নিজেরাই দেয়)। ঈশ্বরের বাক্য আমার মনে সরাসরি আঘাত করে। আমার মধ্যে যা লুকিয়ে ছিল তা স্পষ্ট দেখতে পাই। একজন শক্তিশালী ও নিখুঁত মানুষ হিসাবে নিজের একটা ভাবমূর্তি বানাতে চাইছিলাম আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনার সময়ে নিজের “বীরত্বপূর্ণ” কীর্তিকলাপ নিয়ে বড়াই করতাম, নিজের সাফল্য নিয়ে কথা বললেও ব্যর্থতা নিয়ে খুব কমই বলতাম। আমি দুর্বল বা নেতিবাচক হলে বা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে, বা এমনকি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকার সময়েও, শুধুই বলতাম, “আমি ভালো আছি। একটু পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু ঈশ্বরের সাহায্যে আমি তা অতিক্রম করব।” কিন্তু আসলে, আমি সত্যিই যন্ত্রণায় ছিলাম। কর্তব্যের জন্য কত কষ্ট পেয়েছি, সর্বক্ষণ তা নিয়েই কথা বলতাম, নিজের দায়িত্বশীলতা জাহির করতাম। কিন্তু বিষয়গুলো আসলে এমন ছিল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নামযশের স্বার্থেই নিজের দায়িত্বে ত্যাগস্বীকার করেছি। অন্যদের তারিফ পেয়ে আমার ভিতর কিছু একটা নাড়া দেয়, জানতাম যে তা ভালো নয়। কিন্তু তারপরও সেটা থামানোর জন্য কিছু করিনি। লোকজনকে আমার প্রশংসা করতে নিষেধ করিনি কারণ তাদের কদর আর তারিফ চাইতাম, চাইতাম তাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের যে স্থান আছে, তা-ও ছাপিয়ে যেতে। আমি কি প্রধান দেবদূতের মতোই উদ্ধত ছিলাম না? অন্যদেরকে ঈশ্বরের সামনে না এনে, বরং নিজের কাছেই নিয়ে আসছিলাম। আমি ব্রাদার-সিস্টারদের হৃদয়ে ঈশ্বরের স্থান নিতে চলেছি বুঝে ভয়ে কাঁপতে লাগলাম, মনে মনে জানতাম যে আমার আচরণ ঈশ্বর ঘৃণা করেন। সত্যের মুখোমুখি হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, “হে ঈশ্বর, আমি নিজেকে জাহির করছিলাম, যাতে সবাই আমাকে দেখে এক উচ্চস্তরের ব্যক্তি হিসাবে, এমন একজন হিসেবে, যা তাদের সব সমস্যার মেটাতে পারে। অন্যায়ভাবে আপনার মহিমা দখল করার চেষ্টা করছি। হে ঈশ্বর, আমি আপনার কাছে অনুতাপ করতে চাই।” খুবই অনুশোচনা হচ্ছিল। তারপর ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি লিখি, চিঠিতে আমার প্রকৃত স্বরূপ এবং বড়াই করার বিষয়টি তুলে ধরি, এবং প্রতিটি সমাবেশ-দলের কাছে তা পাঠাই। সবাইকে স্পষ্টভাবে বলি, তাদের আমার প্রশংসা করা অনুচিত। কয়েকজনকে চিনতাম যারা আমার সবিশেষ সমাদর করত, আমি নিজেকে বিশদে বিশ্লেষণ করা তাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে বার্তা পাঠাই। কিছুদিন পর, সিস্টার ম্যারিনেট আমায় অকপটে বলল, সে আগে আমার সমাদর করত, তার হৃদয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল আমার। এটা শুনে সত্যিই লজ্জা পাই মনে হল, এটাই বুঝি আমার মন্দত্বের প্রমাণ। তক্ষুনি নিজের কদর্যতা দেখতে পেলাম। অন্যের তারিফ কুড়োতে নিজেকে জাহির করছিলাম। সকল হেতুবোধ হারিয়ে ফেলেছিলাম। তা কীভাবে দায়িত্বপালন হতে পারে? ঈশ্বর আমাকে নেতৃস্থানীয় পদে উন্নীত করেছেন, আর আমি কিনা এভাবে তাঁকে প্রতিদান দিলাম? চরম এমন লজ্জা পাই। কিন্তু এখনও নিজের কলুষ মেটাতে সত্যের সন্ধান করিনি, তাই অচিরেই আবার আগের মতো হয়ে উঠি।
গির্জার অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে একটি অনলাইন সমাবেশ হয়। ব্রাদার-সিস্টাররা অত্যন্ত বেশি সরল করে আলোচনা করছে ভেবে আমি অস্থির হয়ে উঠি। ভাবি, তাদের আলোচনা ছিল অগভীর, অন্য নেতৃবৃন্দও মহৎ কিছুও বলছিল না। সবার সাথে আমার নিজস্ব উপলব্ধি ভাগ করে নিয়ে তাদের দেখাতে চাই যে ভালো আলোচনা কী, যাতে তারা আমার বক্তব্য থেকে অনেককিছু শেখে। তাদের পথ দেখাতে চেয়েছিলাম। তাই বক্তব্যটা মনে মনে গুছিয়ে নিই। আমি আরও আলোকিতকারী কিছু বলব ভেবেছিলাম, যাতে ভিড়ের থেকে আলাদা হয়ে উঠে কিছু ভাবগম্ভীর আলাপ-আলোচনা করতে পারি। আমার আলোচনাটাকে সবচেয়ে ভালোভাবে তুলে ধরতে কী বলা যায় ভাবতে থাকি। ভীষণভাবে প্রমাণ করতে চাইছিলাম যে আমার উপলব্ধি উচ্চতর পর্যায়ের, যাতে অন্যরা আমার অন্তর্দৃষ্টির প্রশংসা করে। অনেক দৃষ্টান্ত ও রূপক ব্যবহার করি যাতে তারা জানতে পারে যে আমি বিস্তারিত, সমৃদ্ধ সাহকারিতা প্রদানে সক্ষম। বক্তব্য রাখার পর, সবাইকে “আমেন” বলতে শুনে সত্যিই আনন্দিত হই। তারপর চ্যাট উইন্ডোটা চেক করি ব্রাদার-সিস্টারেরা আমার করা আলোচনা নিয়ে ভালো কিছু বলেছে কি না দেখতে। সমাবেশের শেষদিকে, ব্রাদার জেন কিছু আলোচনা করে, কিন্তু আমরা যেমনটা সবসময় করি তা অনুসারে আলোচনার ভিত্তি হিসাবে ঈশ্বরের বাক্য উদ্ধৃত না করে, আমার করা আলোচনা উল্লেখ করে সে, বলে যে আমার সহকারিতার ভিত্তিতেই আমাদের কাজ করা উচিত। দেখতে পাই, আবার নিজের বড়াই করছি যাতে অন্যরা আমাকে আদর্শ গণ্য করে। তখন সত্যিই অস্বস্তি হয়। সম্প্রতি আলোচনা করা ঈশ্বরের কিছু বাক্য মনে পড়ে। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “ব্রাদার ও সিস্টারদের যদি পরস্পরকে ভরসা করে গোপন কথা বলতে পারার মতো নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠতে হয়, পরস্পরকে সাহায্য করতে হয়, এবং একে অপরের জন্য সংস্থান জোগাতে হয়, তাহলে প্রত্যেককে তাদের নিজের নিজের প্রকৃত অভিজ্ঞতার কথা বলতে হবে। যদি তুমি নিজের সত্যিকারের অভিজ্ঞতার সম্পর্কে কিছুই না বলো—শুধুই যদি আক্ষরিক মতবাদের অতিসরল কথাবার্তা বলো, ঈশ্বরবিশ্বাস সম্পর্কিত কিছু সুপরিচিত কথা আর বহুব্যবহারে জীর্ণ নীতিবাক্যগুলোকে তোতাপাখির মতো আউড়ে যেতে থাকো, এবং তোমার নিজের অন্তরে কী আছে সে বিষয়ে একেবারেই উন্মুক্ত না হও—তাহলে তুমি একজন সৎ মানুষ নও, এবং সৎ মানুষ হয়ে ওঠার সামর্থও তোমার নেই” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সৎ ব্যক্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে মৌলিকতম অনুশীলন)। “ঈশ্বরের সাক্ষ্যবহনের সময়, তোমার মূলত বেশি করে বলা উচিত কীভাবে ঈশ্বর মানুষের বিচার করেন ও তাদের শাস্তি দেন, মানুষের পরিমার্জনের জন্য ও তাদের স্বভাব পরিবর্তনের জন্য তিনি কী ধরনের পরীক্ষার ব্যবহার করেন। তোমার এ বিষয়েও বলা উচিত যে তোমার অভিজ্ঞতায় কী পরিমাণ কলুষতা প্রকাশিত হয়েছে, তুমি কতটা সহ্য করেছ, ঈশ্বরকে প্রতিরোধের জন্য তুমি কতকিছু করেছ, এবং পরিশেষে কীভাবে ঈশ্বর তোমাকে জয় করেছেন; ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে তোমার যে পরিমাণ প্রকৃত জ্ঞান আছে সে সম্পর্কে কথা বলো, আর বলো তোমার কীভাবে ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করা উচিত ও তাঁর ভালোবাসার মূল্য তাঁকে পরিশোধ করা উচিত। তোমাদের এই ধরনের ভাষায় এবং সহজ উপস্থাপনায় উপাদানগুলো প্রকাশ করতে হবে। শূন্যগর্ভ মতবাদ নিয়ে কথা বোলো না। আরও বাস্তবসম্মতভাবে কথা বলো, হৃদয় থেকে কথা বলো। তোমার এইভাবে অভিজ্ঞতালাভ করা উচিত। লোকদেখানোর চেষ্টায় আপাতদৃষ্টিতে গভীর মনে হয় এরকম শূন্যগর্ভ তত্ত্ব দিয়ে নিজেকে সজ্জিত কোরো না; এরকম করলে তুমি নিজেকে উদ্ধত ও বোধহীন করে তুলবে। তোমার উচিত নিজের প্রকৃত অভিজ্ঞতার বাস্তব বিষয়গুলো সম্পর্কে বেশি করে বলা, আর আরও বেশি করে অন্তর থেকে কথা বলা; অন্যদের জন্য এটাই সবচেয়ে উপকারী, আর তাদের দেখার জন্য সবচেয়ে যথাযথ” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অন্বেষণের মাধ্যমেই স্বভাবের পরিবর্তন অর্জন করা যায়)। “যদি তুমি সত্যের সাধনা না করো, এবং সর্বদাই মানুষকে জয় করতে চাও, সবসময়েই নিজের উচ্চাশা ও আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে চাও, মর্যাদালাভের জন্য তোমার আকুলতাকে পরিতুষ্ট করতে চাও, তাহলে তুমি খ্রীষ্টবিরোধীদের পথে চলেছ। যারা খ্রীষ্টবিরোধীদের পথে চলে, তাদের মধ্যে কি এমন কিছুই আছে, যা সত্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? তাদের মধ্যের কোন বিষয়গুলো সত্যের বিরোধী? কীসের স্বার্থে তারা কাজ করে? (মর্যাদা লাভের স্বার্থে।) যারা মর্যাদা লাভের স্বার্থে কাজ করে তাদের মধ্যে কী প্রকাশিত হয়? কেউ কেউ বলে, ‘তারা সবসময় তাত্ত্বিক মতবাদের কথা বলে, কখনোই সত্যের বাস্তবিকতার আলোচনা করে না, সর্বদা নিজেদের স্বার্থের কথা বলে, কখনোই ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করে না বা তাঁর সাক্ষ্যপ্রদান করে না। যাদের মধ্যে এই বিষয়গুলো প্রকাশিত হয়, তারা মর্যাদা লাভের জন্যই কাজ করে।’ এটা কি ঠিক? (হ্যাঁ।) কেন তারা তাত্ত্বিক মতবাদের কথা বলে আর নিজেদেরকে জাহির করে? কেন তারা ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করে না বা তাঁর সাক্ষ্যপ্রদান করে না? কারণ তাদের হৃদয়ে শুধু মর্যাদা আর খ্যাতিই রয়েছে—ঈশ্বর সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। এই ধরনের মানুষেরা মর্যাদা ও কর্তৃত্বকে আদর্শজ্ঞান করে, খ্যাতি তাদের কাছে অসীম গুরুত্বপূর্ণ, খ্যাতি ও মর্যাদা তাদের জীবন হয়ে উঠেছে; তাদের হৃদয়ে ঈশ্বর অনুপস্থিত, তারা ঈশ্বরে ভীত নয়, তাঁকে মান্যও করে না; তারা যা করে তা হল শুধুই নিজেদেরকে উচ্চে স্থাপন করা, নিজেদের সাক্ষ্য দেওয়া, আর অন্যের প্রশংসা পাওয়ার জন্য নিজেদেরকে জাহির করা। অর্থাৎ, মানুষের সহানুভূতি ও প্রশংসা অর্জনের জন্য, তারা প্রায়ই নিজেদের সম্বন্ধে, তারা কী করেছে সেই সম্পর্কে, তারা কত কষ্টভোগ করেছে, কীভাবে তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছে, মোকাবিলার সম্মুখীন হয়ে তারা কত সহিষ্ণু ছিল, এইসব নিয়ে বড়াই করে। এরা এবং খ্রীষ্টবিরোধীরা একই ধরনের মানুষ, তারা পৌলের পথে চলে। আর তাদের চূড়ান্ত পরিণতি কী? (তারা খ্রীষ্টবিরোধীতে পরিণত হয় এবং অপসারিত হয়।)” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, মর্যাদালাভের প্রলোভন ও বন্ধন থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়)। ঈশ্বরের বাক্য থেকে বুঝতে পারি, মনখুলে নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে হবে, অকপটে কথা বলতে হবে, ফাঁকা বুলি আওড়ানো আর নিজেকে জাহির করার জন্য মামুলি মন্তব্য করা এড়িয়ে চলতে হবে। কোনও প্রকৃত নেতা তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা এবং ঈশ্বরের বাক্যের উপলব্ধি ভাগ করে নেয়, অন্যদেরকে সত্য উপলব্ধির পথ দেখায়, তাদের ঈশ্বরের সামনে নিয়ে আসে। কোনও খ্রীষ্টবিরোধী অন্যদের তারিফ আর কদর পেতে অন্যদেরকে তার সামনে নিয়ে আসতে, লোকদেখানো অসার আলোচনা করে। নিজের ক্ষেত্রে, মানুষকে অনুশীলনের পথ না বলে শুধুই ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছিলাম। কোনো বাস্তব সমস্যার সুরাহা করিনি। আমার উদ্দেশ্য ছিল না তাদের সত্য বুঝতে আর ঈশ্বরের বাক্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করতে সাহায্য করা, বরং তা ছিল তাদের প্রশংসা পাওয়া। নিজেকে জাহির করার ফলাফল খুবই স্পষ্ট হল। অন্যরা আমার মুখাপেক্ষী ছিল ঈশ্বরের বাক্যের সাক্ষ্য দেওয়ার বদলে তারা আমার উপদেশগুলোকেই উল্লেখ্য হিসাবে ব্যবহার করত। মানুষ সবসময় এইরকম সব কথা বলত: “ম্যাথিউ-র উপদেশের জন্য বদান্যতায়” অথবা “ঠিক যেমন ব্রাদার ম্যাথিউ বলেছে।” আমি ভাবলাম, পৌল কীভাবে সবসময় বড়াই করত, প্রভু যীশুর বাক্যের সাক্ষ্য দিত না। যার ফলে বিশ্বাসীরা ২,০০০ বছর ধরে পৌলের কথার প্রশংসা আর সেগুলোর সাক্ষ্য দিয়ে চলেছিল। আমিও কি পৌলের মতো একই কাজ করছি না ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সেই একই খ্রীষ্টবিরোধীর পথে চলছি না? ভীষণ ভয় পেয়ে যাই, নিজের প্রতি ঘৃণা হয়। আমি একটা প্রার্থনা করি, “হে ঈশ্বর, আমিও একই ভুল করছি। আপনার বাক্য আমায় পথ দেখিয়েছে, কিন্তু নিজের দর্প চরিতার্থ করতে এখনও শয়তানের অনুসরণ করে চলেছি। আমি আবারও শয়তানের ভূমিকা পালন করছি। হে ঈশ্বর, অনুগ্রহ করে সহায় হোন, উদ্ধার করুন!”
এক সন্ধ্যায়, সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়, আমি এই অনুচ্ছেদটি দেখি: “তোমরা কি জানো ঈশ্বরের সেবা করার ক্ষেত্রে মানুষের সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধ কাজ কী? কিছু নেতা ও কর্মীরা সবসময়েই অন্যরকম হওয়ার চেষ্টা করে, বাকিদের সবার চেয়ে উৎকৃষ্ট হতে চায়, নিজেদের জাহির করতে চায়, এবং তারা আসলে কত যোগ্য তা ঈশ্বরকে দেখানোর জন্য নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করতে চায়। যদিও, তারা সত্যের উপলব্ধির দিকে এবং ঈশ্বরের বাক্যের বাস্তবতায় প্রবেশের দিকে মনোযোগ দেয় না। এটা চরম মূর্খতাপূর্ণভাবে কাজ করার উপায়। ঠিক এটাই কি উদ্ধত স্বভাবের বহিঃপ্রকাশ নয়? … ঈশ্বরের সেবায় মানুষ বহুদূর অগ্রসর হতে চায়, বিশাল কিছু করতে চায়, মহান কথাবার্তা বলতে চায়, বিরাট কাজ করতে চায়, বড় বড় সমাবেশ আয়োজন করতে চায়, আর সুমহান নেতা হয়ে উঠতে চায়। তোমার যদি সবসময় এত সুবৃহৎ উচ্চাশা থাকে, তাহলে তুমি ঈশ্বরের প্রশাসনিক ফরমানগুলোকে লঙ্ঘন করবে; যারা এমন করে তাদের শীঘ্রই মৃত্যু হবে। ঈশ্বরের সেবায় তুমি যদি শিষ্টাচারপূর্ণ না হও, ধর্মপ্রাণ না হও, বিচক্ষণ না হও, তবে আজ নয় কাল তুমি তাঁর স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করবেই” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। ঈশ্বরের এই বাক্য আমায় স্তব্ধ করে দেয়। এই উদ্ঘাটনের মাধ্যমে আমি নিজের মহত্ব অর্জনের তীব্র উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বাসনা দেখতে পাই। নিজের বাগ্মিতা প্রদর্শনের জন্যই সমাবেশ পরিচালনা করতে চাইতাম। নিজেকে জাহির করতে পছন্দ করতাম, সুযোগ পেলেই তা করতাম। চাইতাম সবাই আমার প্রশংসা করুক এবং সবাই বলুক, “ব্রাদার ম্যাথিউ এত চমৎকার সমাবেশের আয়োজন করেন! তার চেয়ে ভালো নেতা আর কেউ নেই!” এইসব বাসনার তাড়নায়, অংশ নেওয়া সবকটা সমাবেশেই আমি আত্মপ্রচার আর নিজেকে জাহির করেছি, এই আশায় যে অন্যরা আমার তারিফ আর পুজো করবে। আমি এই ধরনের নেতৃত্বদানই পছন্দ করতাম। কিন্তু এটা পড়ে: “তোমার যদি সবসময় এত সুবৃহৎ উচ্চাশা থাকে, তাহলে তুমি ঈশ্বরের প্রশাসনিক ফরমানগুলোকে লঙ্ঘন করবে; যারা এমন করে তাদের শীঘ্রই মৃত্যু হবে।” কেঁপে উঠলাম, হৃদয়ের গভীরে ভীতি বোধ করলাম। ভাবতাম ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করছি, কিন্তু বুঝতে পারলাম যে, আমি তাঁর ঘৃণার উদ্রেক ঘটাচ্ছিলাম। নিজের উপরেও ঘৃণা হল। শুধুই চেয়েছিলাম মহৎ কিছু করতে, সুউচ্চ কিছু প্রচার করতে। ঈশ্বরের সাক্ষ্য দেওয়ায় বা সত্যের পালনে অনুপ্রাণিত হইনি, আমি ব্রাদার-সিস্টারদের জীবনের কোনও দায়ভারও বহন করিনি। এর সম্পূর্ণটাই ছিল নিজেকে মহৎ হিসাবে দেখানোর, অন্যদের মনে এক বিশেষ স্থান পাওয়ার জন্য। তা ক্ষুব্ধ করে ঈশ্বরের প্রশাসনিক ফরমানকে, যা বলেছে: “মানুষের নিজেকে বড় ভাবা অথবা নিজেকে মহিমান্বিত করা উচিত নয়। তার উচিত ঈশ্বরের উপাসনা করা এবং তাঁকে মহিমান্বিত করে তোলা। … ৮. ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষদের অবশ্যই ঈশ্বরকে মান্য এবং বন্দনা করতে হবে। কোনো ব্যক্তিকে মহিমান্বিত বা উন্নীত করবে না; প্রথমে ঈশ্বরকে তারপরে সেই উন্নীত ব্যক্তিকে, তারপরে তৃতীয় স্থানে নিজেকে বসিও না। তোমার হৃদয়ে যেন কোনো ব্যক্তির আসন না স্থাপিত হয়, মানুষজনকে—বিশেষত যাদের তুমি শ্রদ্ধা করো—তাদেরকে যেন ঈশ্বরের সমতুল্য বা সমকক্ষ হিসাবে বিবেচনা কোরো না। এটা ঈশ্বরের কাছে অসহনীয়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, রাজ্যের যুগে ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিদের অবশ্য পালনীয় দশটি পরিচালনামূলক আজ্ঞা)। শুধুমাত্র নিজের বড়াই করা-ই যে প্রশাসনিক ফরমানকে ক্ষুব্ধ করেছিল, তা নয় বরং যা আরও খারাপ ছিল তা হল, যারা আমার তারিফ করছিল তাদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছিলাম, ঈশ্বরের প্রতিরোধ করছিলাম। এর পরিণতি ভয়াবহ এবং তা অবশ্যই ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করবে। প্রবল ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করার জন্য তাঁর পক্ষে আমায় ক্ষমা করা অসম্ভব। অত্যন্ত কষ্টে ছিলাম। প্রার্থনা করলাম, “হে ঈশ্বর, আমি সত্যিই যন্ত্রণায় আছি। জানতাম না যে আমি আপনার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছি, আমি অনুতপ্ত হতে চাই। হে ঈশ্বর, অনুগ্রহ করে আমায় আপনার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে সাহায্য করুন।”
ভয়ে দিশাহারা হয়ে থাকালীন ঈশ্বরের বাক্যের এই ছত্রটি পড়ি: “বর্তমানে ঈশ্বর তোমাদের বিচার করেন, শাস্তি দেন এবং নিন্দা করেন, কিন্তু তোমাকে অবশ্যই জানতে হবে যে এই নিন্দার উদ্দেশ্য হল নিজেকে জানা। তিনি নিন্দা করেন, অভিশাপ দেন, বিচার করেন এবং শাস্তি দেন যাতে তুমি নিজেকে জানতে পারো, যাতে তোমার স্বভাবের পরিবর্তন হতে পারে এবং তদুপরি, যাতে তুমি নিজের মূল্য জানতে পারো, এবং উপলব্ধি করতে পারো যে ঈশ্বরের সমস্ত কাজই ধার্মিক এবং সেগুলি তাঁর স্বভাব এবং কাজের প্রয়োজনীয়তা অনুসারেই সাধিত হয়, তিনি মানুষের পরিত্রাণের জন্য তাঁর পরিকল্পনা অনুসারেই কাজ করেন এবং তিনিই হলেন সেই ধার্মিক ঈশ্বর, যিনি মানুষকে ভালোবাসেন, উদ্ধার করেন, বিচার করেন এবং শাস্তি দেন। যদি তুমি শুধু এটা জানো যে তোমার মর্যাদা নিম্নমানের, তুমি ভ্রষ্ট এবং অবাধ্য এক ব্যক্তি, কিন্তু এটা না-জানো যে, ঈশ্বর তোমার উপরে করা কাজের মাধ্যমে বিচার ও শাস্তির দ্বারাই তাঁর পরিত্রাণ সহজপ্রকাশ্য করতে চাইছেন, তাহলে তোমার অভিজ্ঞতা লাভের কোনো উপায়ই নেই, সামনে এগোবার যোগ্যতা তো আরোই নেই। ঈশ্বর হত্যা বা ধ্বংস করতে আসেন নি, বরং বিচার করা, অভিশাপ দেওয়া, শাস্তিদান এবং উদ্ধারের জন্য এসেছেন। তাঁর ৬,০০০ বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত—প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষের ফলাফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত—এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজ হবে পরিত্রাণের স্বার্থে; এর প্রধান লক্ষ্য তাঁকে ভালোবাসা মানুষদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সম্পূর্ণ করা—এবং তাদেরকে তাঁর রাজত্বে এনে সমর্পিত করা” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তোমার উচিত মর্যাদার আশীর্বাদকে সরিয়ে রেখে ঈশ্বরের মানুষকে পরিত্রাণ করার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করা)। এটা পড়ে শান্তি পাই। ভেবেছিলাম আমি ক্ষমার অযোগ্য ভাবে ঈশ্বরকে ক্ষুব্ধ করেছি, কিন্তু বিষয়টা তা ছিল না। ঈশ্বর আমার অনুশাসন করছিলেন, কিন্তু তিনি আমাকে ঘৃণা করেননি। তিনি আমাকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা, সহিষ্ণুতা ও ক্ষমা দেখতে পেলাম। জানতাম, এবার আমায় সত্য খুঁজে নিজের কলুষ মেটাতে হবে।
আরেক ছত্র ঈশ্বরের বাক্য পড়লাম: “একজন সৎ ব্যক্তি হতে গেলে, তোমাকে প্রথমে অবশ্যই নিজের হৃদয় উন্মুক্ত করতে হবে যাতে সকলে তা ভালোভাবে দেখতে পারে, তুমি কী ভাবছ তা প্রত্যক্ষ করতে পারে, এবং তোমার প্রকৃত রূপ সঠিকভাবে দেখতে পারে; নিজেকে আড়াল করার বা আচ্ছাদিত করার চেষ্টা তুমি একেবারেই করবে না। শুধুমাত্র তাহলেই অন্যরা তোমাকে বিশ্বাস করবে এবং তোমাকে একজন সৎ মানুষ হিসাবে বিবেচনা করবে। এটাই সবচেয়ে মৌলিক অনুশীলন, এবং সৎ ব্যক্তি হওয়ার পূর্বশর্ত। যদি তুমি সর্বদাই ভান করো, সর্বদা পবিত্রতা, আভিজাত্য, মহত্ত্ব ও উন্নত চরিত্রের মানুষ হওয়ার ভান করো, যদি মানুষকে তোমার দুর্নীতি ও ত্রুটি প্রত্যক্ষ করতে না দাও, যদি মানুষের সামনে একটা নকল প্রতিমূর্তি উপস্থাপন করো যাতে তারা বিশ্বাস করে তোমার মধ্যে সততা রয়েছে, তুমি খুবই মহান, আত্ম-ত্যাগী, ন্যায়বান এবং নিঃস্বার্থ—এটা কি প্রতারণা ও মিথ্যাচার নয়? কিছুকাল অতিবাহিত হওয়ার পরে মানুষ কি তোমাকে স্পষ্ট করে দেখতে পাবে না? অতএব, কোনো ছদ্মরূপ ধারণ কোরো না, নিজেকে আবৃত করে রেখো না; পরিবর্তে, নিজেকে ও নিজের হৃদয়কে উন্মুক্ত রাখো যাতে অন্যরা তা দেখতে পারে। যদি তুমি অন্যদের দেখার জন্য নিজের হৃদয় উন্মুক্ত রাখো, যদি তোমার সমস্ত চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনাই উন্মুক্ত রাখতে পারো—ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয়ই—সেটাই কি সততা নয়? যদি তুমি অন্যদের দেখার জন্য নিজেকে উন্মুক্ত রাখো, তাহলে ঈশ্বরও তোমাকে দেখবেন ও বলবেন, ‘যদি তুমি অন্যদের দেখার জন্য নিজের হৃদয় উন্মুক্ত রেখেছ, তাহলে আমার সামনে তুমি নিশ্চিতরূপেই সৎ।’ তুমি যদি শুধু তখনই ঈশ্বরের সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করো যখন অন্যরা তোমাকে দেখতে পাচ্ছে না, এবং অন্যদের সাথে থাকলে সর্বদাই মহান ও উন্নত বা নিঃস্বার্থ হওয়ার ভান করো, তাহলে ঈশ্বর তোমার বিষয়ে কী ভাববেন, তিনি কী বলবেন? তিনি বলবেন, ‘তুমি একেবারেই একজন প্রতারণাপূর্ণ মানুষ; তুমি সম্পূর্ণরূপে কপট ও ঘৃণ্য; এবং তুমি একজন সৎ মানুষ নও।’ এইভাবে ঈশ্বর তোমার নিন্দা করবেন। যদি তুমি একজন সৎ মানুষ হতে চাও, তাহলে তুমি ঈশ্বরের সম্মুখে রয়েছ না অন্যদের সামনে, তা নির্বিশেষে তোমাকে নিজের অন্তরের আভ্যন্তরীণ অবস্থা ও মনের কথাগুলোর একটা বিশুদ্ধ ও উন্মুক্ত বিবরণ দিতে সক্ষম হতে হবে। তা অর্জন করা কি সহজ? তার জন্য প্রয়োজন একটা সময়ের প্রশিক্ষণ, ও সেইসাথে নিয়মিত প্রার্থনা এবং ঈশ্বরের উপর নির্ভরতা। সমস্ত বিষয়ে নিজের হৃদয়ের কথা সরল ও উন্মুক্তভাবে বলতে পারার জন্য তোমার নিজেকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এই ধরণের প্রশিক্ষণের ফলে তুমি উন্নতি লাভ করতে পারবে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সৎ ব্যক্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে মৌলিকতম অনুশীলন)। এই ছত্রটি ঈশ্বরের আমার প্রতি চাহিদা বুঝতে সাহায্য করল। তিনি চেয়েছেন যে আমি যেন একজন সৎ মানুষ হই। অর্থাৎ, আমাকে নিজের কলুষ এবং সৎ চিন্তাগুলো অন্যদের সামনে তুলে ধরা শিখতে হবে, যাতে তারা আমার দুর্বলতা আর অসুবিধাগুলো দেখতে পায়। যদি নিজের ব্যর্থতা আর দুর্বল দিকগুলো প্রকাশ না করে কেবলই নিজের বড়াই করে চলি যাতে আলোচনার মাধ্যমে নিজের একটা ভুয়ো ভাবমূর্তি গড়ে তোলা যায়, তবে তা হবে এক মিথ্যা। তা অন্যদের কাছে বা ঈশ্বরের প্রতি সৎ থাকা হবে না। সেদিন বুঝলাম, আমাকে একজন সৎ মানুষ হতেই হবে। নিজের ভ্রান্ত ধারণাগুলো নিয়েও কিছুটা উপলব্ধি অর্জন করলাম। ভাবতাম, কোনও নেতাকে হতে হবে এমন এক বীর যার কোনও দুর্বলতা নেই, যেন বিশ্বচরাচরে কোনও এক অধিকর্তা, অন্যদের চেয়ে উচ্চ পর্যায়ে অবস্থিত, সবার সেরা। কিন্তু ঈশ্বর তা চান না। ঈশ্বর সরল, সৎ মানুষদের চান। এই ধরনের লোকেরা তাদের দোষত্রুটি খোলাখুলি বলে, তারা সত্যকে ভালোবাসে এবং অনুশীলন করে। তারা ব্রাদার-সিস্টারদের জীবনে প্রবেশের দিকে মন দেয়, সত্যের নীতিগুলি সন্ধান করে, নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা মেটাতে চায় না। প্রভু যীশু যা বলেছিলেন তা মনে পড়ল: “তোমরা নিজেদের ‘রব্বি’ বলে অভিহিত হতে দিয়ো না: কারণ তোমাদের একজন মাত্র গুরু আছেন এবং তোমরা সকলে পরস্পর ভাই। … এই পৃথিবীতে তোমরা কাউকে পিতা বলে সম্বোধন করো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই। তোমাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, সে হবে তোমাদের সেবক। যে নিজেকে উন্নত করে, তাকে অবনত করা হবে, আর যে নিজেকে নত করে তাকেই উন্নত করা হবে” (মথি ২৩:৮-১২)। নেতা হিসাবে পুরোটা সময় ভান করে গিয়েছি, এই আশায় যে মানুষ আমাকে আদর্শ মনে করবে। বুঝতে পারলাম, ঈশ্বরের চাহিদা থেকে আমি সত্যিই বহু দূরে ছিলাম। নেতা সেবকের ভূমিকা পালন করে, তাকে দায়িত্ব নিতে হয়। সবসময় নিজের দায়িত্বের বিষয়ে স্মরণে রাখতে হয় যে, সেটির উদ্দেশ্য হল ব্রাদার-স্টারদের জলদান ও সাহায্য করা, তাদের সমস্যা মেটাতে সত্যের সন্ধান করা। নেতা কোনও আধিকারিক নয়, সকলের ঊর্ধ্বেও নয়। ঈশ্বর হলেন সৃষ্টিকর্তা, আর অবস্থান নির্বিশেষে সব মানুষই হল সৃষ্ট সত্ত্বা। আমাদের সকলের উচিত সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করা। সেই মুহূর্তে, উপলব্ধি করি নিজের ভূমিকা ও কর্তব্য, বুঝি যে আমায় এক সৃষ্ট সত্তার স্থান থেকে নিজ দায়িত্বের সুষ্ঠু পালন করতে হবে। সেই সময় থেকে আমার মানসিকতায় পরিবর্তন আসে, আমি সৎ হওয়ার চেষ্টা শুরু করি। নিজের বড়াই করছি লক্ষ্য করামাত্র তা নিয়ে খোলাখুলি বলতাম, নিজের দোষ-ত্রুটি অনাবৃত করতাম। মাঝে মাঝে তা যন্ত্রণাদায়ক হত, কিন্তু সেটা আমায় দেখাল যে বস্তুতই কতটা অসৎ ছিলাম আমি। অনেক ছল করেছি, অন্যদেরকে প্রচুর বোকা বানিয়েছি। যতই উন্মুক্ত হলাম, ততই নিজের স্বরূপ ও প্রকৃত আত্মিক উচ্চতা দেখতে পেলাম। বুঝতে পারলাম যে আমি কিছুই নই। আমার করা সমস্ত আলোচনায়, নিজেকে মহান হিসাবে দেখিয়েছি, মতবাদ দিয়ে লোকজনকে উৎসাহিত আর সাহায্য করছি। কিন্তু এখন শুরু করলাম ব্রাদার-সিস্টারদের নিজের প্রকৃত অবস্থার কথা বলা, অকপট হওয়া। তাদের মতো আমারও একই রকমের সমস্যা ছিল, একই ধরনের বিকৃতি ছিল, আমি নেতা হলেও আমরা আসলে সমানই ছিলাম। শুধু আমাদের আলাদা-আলাদা দায়িত্ব ছিল। এটা করার সময়ে নিজেকে অন্যদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান বলে মনে হয়নি। বরং তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমিও শিখতে পারলাম অন্যদের আলোচনা থেকে আলোকপ্রাপ্তি অর্জন করলাম। আগে অন্যদের আলোচনার দিকে মন প্রায় দিতামই না, ঔদ্ধত্যের সাথে ভাবতাম, আমিই অন্যদের আলোকদান করছি। ঈশ্বরের বাক্যের সুবাদে আমি অন্যদের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুললাম, তাই তাদেরকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারলাম, তাদের প্রকৃত অবস্থা দেখতে পেলাম। তাদের সহায়তা করার সময় আমি দেখেছি যে ঈশ্বরের আয়োজনে আমি তাদের থেকে অনেককিছু অর্জন করতে পেরেছি। আমাদের আলাপ-আলোচনা থেকে আমি অনেক কিছু শিখলাম। আমার ঔদ্ধত্য আর নিজেকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া কমে গেল, ব্রাদার-সিস্টারদের সাথে সমানভাবে চলতে পারলাম। আমার যৌক্তিকতাবোধ স্বাভাবিক হয়ে এল, মাঝেমাঝে আলোচনার সময়ে নেতা হিসাবে হিসাবে আমার অবস্থানের কথা ভুলেই যেতাম। আমার মধ্যে এই পরিবর্তনের জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
মাঝে মাঝে নিজেকে জাহির করতে ধরে ফেলি তা আমায় দেখায় যে শয়তান আমাকে কত গভীরভাবে ভ্রষ্ট করেছে। তা নিছকই এক ক্ষণিকের বিষয় নয়, বরং আমার গভীরে নিহিত। সত্যের পরিপোষণ ছাড়া, ঈশ্বরের উদ্ঘাটন ও পথপ্রদর্শন না থাকলে, ব্রাদার-সিস্টারদের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম রেখে ঈশ্বরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যেতাম। এটাই ঘটনা। পরিবর্তন আনায় ব্যর্থ হওয়া সত্যিই বিপজ্জনক। এটিই ছিল একমাত্র সত্য যা আমায় নিজের শয়তানোচিত স্বভাব থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করেছিল। অন্যথায়, আমি খ্রীষ্টবিরোধী হয়ে উঠতাম, দণ্ডিত হতাম। ঈশ্বরের নির্দেশনার সুবাদে আমি নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছি, এখন আমি নেতা হিসাবে নিজের ভূমিকা সম্বন্ধে বিশুদ্ধতর পরিপ্রেক্ষিতের অধিকারী। যা আরও জরুরি তা হল, ঈশ্বর আমায় নিজের শয়তানোচিত স্বভাব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া থেকে উদ্ধার করছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ধন্যবাদ!
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।