প্রতিযোগিতা কষ্টের জন্ম দেয়

04-09-2023

২০২১-এর এপ্রিলে, গির্জা আমার আর চেন শি-র একসঙ্গে সিঞ্চনের কাজ করার ব্যবস্থা করে। খবরটা শুনে আমি কেমন যেন বিব্রত লাগে। চেন শি সক্ষম ছিল, সত্য নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা করত। ভয় হল, একটু অনুশীলনের পরেই সে আমায় ছাপিয়ে যাবে। অতীতে তার কাজের তদারকি করেছিলাম, তাই, সে আমার চেয়ে ভালো কাজ করলে আমি কীভাবে মুখ দেখাবো? পরে লক্ষ করেছিলাম, নেতা তাকে খুব সাহায্য আর সমর্থন করত জরুরি কিছু কাজ নেওয়ার অনুশীলন করাত। বুঝেছিলাম নেতা তাকে উন্নত করতে চাইছে। খুব হতাশ হয়ে গোপনে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবলাম, কঠোর পরিশ্রম করতে চাইলাম যাতে সে আমায় ছাপিয়ে না যায়। সমাবেশেগুলোর আলোচনায় নিজেকে নিয়োজিত করলাম, ব্রাদার-সিস্টারদের কাজের সমস্যা জেনে সেগুলোর সমাধান নিশ্চিত করলাম। কাজ নিয়ে আলোচনায় সপ্রতিভ হলাম, বেশিরভাগ সময়েই অন্যরা সহমত হত। কিছু পর, সিঞ্চনের কাজ ফলপ্রসূ হতে লাগল। আত্মতুষ্ট হলাম, বেশ সম্পন্ন বোধ হল। যেহেতু চেন শি এই ধরনের কাজে নতুন ছিল, সে প্রথমে বিষয়গুলো রপ্ত করতে পারেনি, এবং এটা তার জন্য কঠিন ছিল। জানতাম তাকে কাজের সঙ্গে দ্রুত পরিচিত হতে এবং নীতিগুলো শিখতে সাহায্য করা উচিত, কিন্তু ভীত ছিলাম সে আমায় ছাপিয়ে যাবে, তাই তাকে বিশদ বিবরণ না দিয়ে শুধু একটা সংক্ষিপ্ত, সহজ রূপরেখা দিই। দায়িত্বে সমস্যার কারণে তাকে খারাপ অবস্থায় দেখে আমি গোপনে খুশি হই, ভাবি, আমি এখনও তার চেয়ে বেশি সক্ষম। কিছুদিন পরে, চেন শি ধীরে ধীরে কাজটি বুঝতে পারল, দায়িত্বে কিছু ফল পেল। প্রায়ই ব্রাদার-সিস্টারদের সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে তার আলোচনা শুনতাম টের পেলাম যে তা বেশ ব্যবহারিক ও স্পষ্ট, যা আমায় উদ্বিগ্ন করে তোলে। দেখা গেল আমার চেয়ে তার ক্ষমতা বেশি। এটা চলতে থাকলে সে তার কাজে উন্নতি করেই যাবে, এবং একটা সময়ে অন্যরা নিশ্চিতভাবে তাকে সম্মান করবে। তাতে কি তাকে আমার চেয়ে ভালো মনে হবে বা? আমি আরো বিপন্ন বোধ করলাম। সমাবেশে তাকে দেখলেই, তার আলোচনা লক্ষ্য করতাম। যখন লক্ষ্য করতাম যে তা আলোকিত করে, তখন আমি তার থেকে ভালোভাবে আলোচনা করার উপায় নিয়ে ভাবার চেষ্টা করতাম। একবার, এক সিস্টার অহংকারের কারণে অন্যদের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে পারছিল না, সেটা তার কাজকে প্রভাবিত করছিল। মাথা খাটালাম বুঝতে তার সমস্যার মূল, ঈশ্বরের বাক্যের কোন অনুচ্ছেদ ব্যবহার্য, এবং কীভাবে নিজের অভিজ্ঞতাকে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত করা যায়। কিন্তু নিজের মানসিকতায় ভুল থাকায়, এটা নিয়ে শান্তভাবে ভাবতে পারিনি, শেষ পর্যন্ত কিছু ভাসা-ভাসা উপলব্ধির নিয়ে আলোচনা করি, এবং তার অবস্থা ঠিক হয় না। কিন্তু চেন শি-ও তার নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য যুক্ত করে আলোচনা করে। সিস্টার তা বুঝতে পারে, তার অবস্থার উন্নতির জন্য প্রস্তুত অনুভব করে। এটা দেখে আমার খারাপ লাগল। কেন ঈশ্বর তাকে আলোকিত করেছেন, আমাকে নয়? সে কেন্দ্রে থাকতে পারল, তাই অন্যরা কি ভাববে না যে সে আমার চেয়ে ভালো? এই ভেবে ঠিক করলাম। পরের বার কারো কোনো সমস্যা হলে আমাকে অবশ্যই তা সবার কাছে জাহির করতে হবে, যাতে সবাই দেখতে পায় যে আমি সমস্যা সমাধানের জন্য সত্য নিয়ে আলোচনা করতে পারি। পরে, একজন সিস্টার বলল যে অন্যদের মোকাবিলা করার বিষয়টা তার ভালো লাগছে না। আমি ভাবলাম যে আমার একই ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল, তাই এবার আমি ভালোভাবে আলোচনা করতে পারব। কিন্তু আমি মুখ খোলার আগেই, চেন শি আলোচনা শুরু করে দেয় এবং তার বাস্তব অভিজ্ঞতকে এর সঙ্গে সংযুক্ত করে স্পষ্টভাবে বক্তব্য রাখে, ঠিক আমারই মুখের কথা কড়ে নিয়ে আমার কাছে নিজের উপলব্ধির একটা সহজ বর্ণনা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। সমাবেশের পর চেন শি বেশ ভালো মেজাজে আছে দেখে, আমি আরও বেশি ঈর্ষান্বিত বোধ করলাম এবং তাকে স্বীকারও করতে চাইলাম না। সেই সন্ধ্যায় কিছুতেই ঘুমাতে পারিনি। অন্যরা চেন শির আলোচনা কত পছন্দ করেছে, তা ভেবে আমার খুব বিষণ্ণ লাগল। মনে হচ্ছিল আমি কখনোই তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারব না। তখন জানতাম আমি ভালো অবস্থায় নেই। আলোকপ্রাপ্তি এবং আত্মজ্ঞানলাভের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।

পরে এক সমাবেশে পড়লাম, ঈশ্বর বলেন: “খ্যাতি ও মুনাফাকে আঁকড়ে ধরা মানুষের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য, যে মানবজাতির মধ্যে রয়েছে শয়তানের মন্দ প্রকৃতি। কেউই তার ব্যতিক্রম নয়। সমগ্র ভ্রষ্ট মানবজাতি খ্যাতি ও মর্যাদার জন্যই বাঁচে, এবং সব মানুষই খ্যাতি ও মর্যাদা লাভ করার জন্য যেকোনো মূল্য দিতে পারে। যারা শয়তানের শক্তির অধীনে বাস করে, তাদের সকলের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। অতএব, যে সত্যকে স্বীকার করে না বা উপলব্ধি করে না, যে নীতি অনুসারে কাজ করতে পারে না, সে শয়তানোচিত স্বভাবের মধ্যে বাস করছে। শয়তানোচিত স্বভাব তোমার চিন্তাভাবনার উপর প্রভুত্ব করার জন্য এবং তোমার আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এসেছে; শয়তান তোমাকে সম্পূর্ণভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধনের অধীনে রেখেছে, এবং তুমি যদি সত্যকে গ্রহণ না করো ও শয়তানকে পরিত্যাগ না করো, তাহলে অব্যাহতি লাভ করতে সক্ষম হবে না। … তুমি সকলকে ছাপিয়ে যাবে, অন্যান্যদের থেকে সবকিছু বেশি ভালোভাবে করবে এবং প্রতিটি উপায়ে সকলের থেকে অনবদ্য হয়ে থাকবে, সর্বদা এমনটা ভেবো না। এটা কী ধরনের স্বভাব? (উদ্ধত স্বভাব।) মানুষ সর্বদাই উদ্ধত স্বভাবের অধিকারী, এমনকি তারা যদি সত্যের জন্য সচেষ্ট হতে চায়, ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে চায়, তাহলেও ব্যর্থ হয়। তারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ধত স্বভাবের দ্বারা, যে স্বভাব তাদের সহজেই বিপথগামী করে তোলে। … যখন তোমার এমন স্বভাব থাকে, তুমি সর্বদাই অপরকে অবদমিত করার চেষ্টা করো, সর্বদা তাদের থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো, সর্বদা ঠকাও, সর্বদা মানুষের কাছ থেকে হরণ করার চেষ্টা করো। তুমি অত্যন্ত ঈর্ষাপরায়ণ, তুমি কাউকে মান্য করো না, সর্বদাই নিজেকে আলাদা করে তোলার চেষ্টা করো। এটা সমস্যাদায়ক; শয়তান এভাবেই কাজ করে। তুমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য জীব হতে চাও, তাহলে নিজের স্বপ্ন অনুসরণ কোরো না। নিজের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে উচ্চতর ও সক্ষমতর হওয়ার চেষ্টা করা—এ হল খারাপ বিষয়; ঈশ্বরের সমন্বয়সাধন ও আয়োজনসমূহের প্রতি তোমার অনুগত থাকা উচিত, এবং নিজের পদের ওপরে ওঠা উচিত নয়; শুধুমাত্র এমনটিই যুক্তিযুক্ত(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, যে নীতিগুলি অনুসারে আচরণ করা উচিত)। ঈশ্বরের বাক্য আমার প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করল। আমি সবসময় প্রথম স্থানের জন্য লড়তে চেয়েছিলাম, কারও নীচে থাকতে চাইনি, তাই অন্যদের থেকে উপরে উঠতে চেয়ে ক্রমাগত প্রতিযোগিতা করছিলাম। যেহেতু আমি আগে চেন শি-র কাজ তদারকি করেছিলাম, তাই তার সঙ্গে কাজ করার সময়ে কর্মদক্ষতায় বা সত্যের নিয়ে আলোচনায় আমি তার চেয়ে খারাপ হতে চাইনি। সে প্রথমে আমাকে ছাড়িয়ে যেতে না পারায় খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু যখন তাকে দেখলাম দ্রুত উন্নতি করতে, কিছু সমস্যার সমাধান করতে, এমনকি ব্রাদার-সিস্টারদের অনুমোদন লাভ করতে, আমি অসন্তুষ্ট এবং ঈর্ষান্বিত হয়ে সবসময় তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতাম। আমি এমনকি সত্যের উপর আলোচনা এবং সমস্যা সমাধানের সময় জাহির করতে চেয়েছিলাম, যাতে তারা আমাকে সম্মান করে। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য সঠিক ছিল না। কেবল নাম আর মুনাফায় মন দিয়েছি, গুরুত্ব দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য ভাবার উপরে নয়, তাই নিছক শুষ্ক কিছু মতবাদ নিয়েই আলোচনা করতে পারতাম, যা মোটেও শিক্ষামূলক ছিল না। এই দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেকে নিয়ে ভাবিনি, বরং আমায় আলোকিত না করার জন্য ঈশ্বরকে দোষারোপ করেছি, প্রতিরোধী হয়েছি। কেবল সেই মুহুর্তেই বুঝতে পারলাম আমি কতটা অহংকারী এবং অযৌক্তিক ছিলাম। গির্জা ব্যবস্থা করেছিল আমার এবং চেন শি-র সিঞ্চনের কাজের দায়িত্ব নেওয়ার, তাই আমাদের উচিত ছিল একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করা, নিজেদের ব্যক্তিগত শক্তি ব্যবহার করে, একসঙ্গে নিজেদের দায়িত্বের সুষ্ঠু পালন করা। স্পষ্টতই তার সমক্ষ হতে পারিনি, এবং এবিষয়ে আত্ম-সচেতনতার অভাব ছিল। সবসময় তার চেয়ে ভালো হতে চেয়েছি, চেয়েছি পাদপ্রদীপের আলো, গোপনে মর্যাদার লাভ-ক্ষতি গুনেছি, আমার নিজের দায়িত্ব বা গির্জার কাজকে মোটেও বিবেচনা করিনি। খুব অহংকারী এবং অযৌক্তিক ছিলাম, প্রদর্শন করছিলাম এক শয়তানোচিত স্বভাব, যা ঈশ্বরের কাছে ঘৃণ্য ছিল।

পরে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, মনোভাব শুধরে চেন শি-র সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করার জন্য পথপ্রদর্শন করতে। তারপরে, সত্যের উপর তার আলোচনা আমার চেয়ে আরও স্পষ্ট দেখে এবং প্রতিযোগী মনোভাব টের পেয়ে, নিশ্চিত করলাম প্রার্থনা করে নিজেকে পরিত্যাগ করতে। এভাবে অনুশীলন করে ধীরে ধীরে আমার অবস্থার উন্নতি হয়। কিন্তু যেহেতু নিজের প্রকৃতি এবং সারমর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছিল না আমার, একই সমস্যা কয়েকদিন পরে আবার দেখা দিল। চেন শি আর আমার আয়োজিত ব্রাদার-সিস্টারদের সমাবেশে, বেশিরভাগ আলোচনা সে করত, আমি টুকটাক কিছু বিষয় যোগ করতাম। দু’একবার ঠিক ছিল, কিন্তু বিষয়গুলো যত এগোল, আমি অদৃশ্য অনুভব করলাম, এবং প্রতিটি জমায়েতের শেষেই হতাশ হতাম। আমি কি চিরতরে দোসর হয়েই থাকব? এতে বিষণ্ণ হয়ে আমি গোপনে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠলাম। যেহেতু আমি চেন শি-র থেকে ভালোভাবে সত্য নিয়ে আলোচনা আর সমস্যার সমাধান করতে পারতাম না, তাই সচেষ্টা হলাম কাজগুলোর দেখভাল আর তদারকিতে সিঞ্চনের কাজকে আরও কার্যকর করতে। এটা আমার সামর্থ্য দেখাবে। তাই কোনো কিছুর তদারকির দরকার হলে চেন শি-র সঙ্গে কথা না বলে নিজেই চলে যেতাম। পরে এই বিষয়ে আমি তার থেকে কিছুটা ভালো করতে শুরু করলাম আবার অহংকারী হয়ে উঠলাম। দেখা গেল আমি তার চেয়ে খারাপ ছিলাম না! তারপর থেকে, আলোচনায় এবং সমস্যা সমাধানে তাকে ছাপিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজতে চাইলাম। একবার এক সমাবেশে, দায়িত্ব নিতে চেয়ে, তাকে সর্বক্ষণ এগিয়ে যেতে দিতে না চেয়ে, আমিই সক্রিয়ভাবে এক সিস্টারের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা শুরু করি। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য ভুল ছিল, তার সমস্যা বোঝার আগেই আলোচনা শুরু করে দিই। ফলস্বরূপ, কিছু সুরাহা না করেই অনেক আলোচনা করলাম। বাকিরা আমার ভুল অবস্থায় দেখে আমার সঙ্গে আলোচনা করে, বলে নামযশের জন্য সহকর্মীর সাথে দ্বন্দ্ব না করতে, কারণ তা আমাদের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করবে। তা শোনা আমার জন্য সত্যিই বিব্রতকর এবং বিরক্তিকর ছিল। যেহেতু অনেক সময় নিই, কাজের সমস্যা সমাধানের সময় থাকে না, তাড়াহুড়ো করে সমাবেশ শেষ করতে হয়। বাড়ি যাওয়ার পথে, আমি সমাবেশে আমার আচরণ সম্পর্কে ভাবলাম। যেন তেতো গিলতে হচ্ছিল। আমি কেবল লোকের কাছে নিজেকে চেন শি-র থেকে ভালো প্রতিপন্ন আর জাহির করতে চাইছিলাম, অনেক সময় নষ্ট করি, তাই কাজের সমস্যাগুলোর সমাধান হয়নি, সমাবেশ ফলপ্রসূ হয়নি। গির্জার কাজ এবং গির্জার জীবনে বাধা দিচ্ছিলাম। এই নিয়ে যত বেশি ভাবি, ততই বিব্রত হই, বেশ কষ্ট পাই। জানতাম না কীভাবে ভ্রষ্ট স্বভাবের সমাধান করব। কিছু সময়ের জন্য, নাম এবং লাভের জন্য দ্বন্দ্বের অবস্থায় পৌঁছে, চেন শি-কে তার কাজ এবং অবস্থার সঙ্গে লড়তে দেখেও সাহায্য করতে চাইনি, প্রায়শই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করতাম যে সে নিশ্চেষ্ট, যা তাকে আরও নেতিবাচক করে তোলে। আমাদের দূরত্ব বাড়ে, কাজে ক্ষতি হয়। নেত্রী যখন আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারল, নাম ও লাভের দ্বন্দ্ব এবং সহকর্মীকে উপেক্ষা করার জন্য সে আমায় মোকাবিলা করে বলে যে, তা মন্দ মানবতা দর্শায়। তার কথাগুলো আমায় বিদ্ধ করে, তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, এই অনুরোধ করে যে তিনি যেন আমায় নিজেকে প্রকৃত অর্থে চেনার জন্য আলোকিত করেন, যাতে আমার সমস্যার সমাধান হয়।

তারপর আমি ঈশ্বরের কিছু বাক্য পড়ি। “তোমরা প্রত্যেকে বহুত্বের চূড়ায় উঠে গেছ; তোমরা জনগণের পূর্বপুরুষ পদে আরোহণ করেছ। তোমরা অত্যন্ত উশৃঙ্খল, সমস্ত কীটের মাঝে তোমরা উন্মত্তের মতো ছুটে বেড়াও, একটা আরামের জায়গা খুঁজে বেড়াও আর তোমাদের চেয়ে ক্ষুদ্র কীটদের গ্রাস করার চেষ্টা করো। তোমরা অন্তর থেকে বিদ্বেষপরায়ণ ও অশুভ, যা সমুদ্রের তলদেশে ডুবে যাওয়া অপদেবতাদেরও ছাড়িয়ে গেছে। তোমরা গোবরের তলদেশে বাস করছ, কীটদের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত বিরক্ত করছ যতক্ষণ না তারা শান্তি হারাচ্ছে, কিছুক্ষণ পরস্পরের সাথে লড়াই করছে ও তারপর শান্ত হচ্ছে। তোমরা নিজেদের জায়গা জানো না, তবুও গোবরে একে অপরের সাথে লড়াই করো। এই ধরনের সংগ্রাম থেকে তুমি কী অর্জন করতে পারো? যদি সত্যিই তোমাদের অন্তরে আমার প্রতি সম্মান থাকতো, তাহলে তোমরা কীভাবে আমার পিছনে একে অপরের সাথে যুদ্ধ করতে পারতে? তোমার মর্যাদা যতই উচ্চ হোক না কেন, তুমি কি এখনও গোবরের মধ্যের একটি দুর্গন্ধযুক্ত ক্ষুদ্র কীট নও? তুমি কি পাখনা গজিয়ে আকাশের কপোত হয়ে উঠতে পারবে?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঝরা পাতা যখন শিকড়ের কাছে ফিরবে, তুমি তোমার সমস্ত মন্দ কর্মের জন্য অনুতাপ করবে)। ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে, আমি দেখলাম আমি অমনই ছিলাম। আমি সবসময় নিজেকে খুব বড় ভাবতাম, ভাবতাম সব ক্ষেত্রে চেন শি-র চেয়ে আমার ভালো হওয়া উচিত, কারণ আমি আগে তার তদারকি করতাম। আমি প্রকাশ্যে এবং গোপনে, দুভাবেই তাকে ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য লড়েছি। তার সঙ্গে সিঞ্চনের কাজের দেখভাল নিয়ে আলোচনা করিনি, বরং নিজে থেকে কাজ করেছি, এবং সমাবেশে সমস্যা সমাধান ব্যবহার করতে চেয়ে নিজেকে তার চেয়ে ভালো প্রতিপন্ন করতে, না ভেবেই যে, আদৌ মানুষের প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে পারব কি না, অথবা তা সমাবেশের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করবে কি না। তার কাজে অসুবিধা এবং তার খারাপ অবস্থা লক্ষ্য করে, শুধু তাকে সাহায্য করতেই ব্যর্থ হইনি, বরং তার দুঃখে খুশি হয়েছি, ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে হেয় করেছি, তার কষ্টে মজা পেয়েছি। যা তাকে আরও নেতিবাচক করে তোলে। দেখলাম আমি আদ্যন্ত মানবিকতা বিহীন। এ-ও দেখলাম যে, ঈশ্বর সেইসব কীটদের অনাবৃত করেন যারা নিজেদের মূল্য না জেনে, নিয়ত পায়রার মতো আকাশে উড়তে চায়। খুব লজ্জিত হলাম। মনে হল আমি অত্যন্ত কুৎসিত, বেহায়া। স্পষ্টতই সত্যের বাস্তবিতা আমার বিশেষ ছিল না অন্যদের ব্যবহারিক সমস্যার সমাধান করতে না পেরেও, নিজেকে জাহির অন্যদের অতিক্রম করতে চেয়েছিলাম। যা কেবল সিস্টারকেই আহত করেনি, বরং গির্জার কাজকেও প্রভাবিত করে। যত এই নিয়ে ভাবলাম, তত অপরাধী ও ঋণী বোধ করলাম। ঈশ্বরের খ্রীষ্টবিরোধীদের অনাবৃতকারী কিছু বাক্যও পড়লাম। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “খ্রীষ্টবিরোধীরা যে গোষ্ঠীতেই থাকুক না কেন, তাদের লক্ষ্য কী? ‘আমাকে প্রতিযোগিতায় নামতেই হবে! প্রতিযোগিতা! প্রতিযোগিতা! আমাকে সবচেয়ে উঁচু ও সবচেয়ে পরাক্রমশালী হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় নামতেই হবে!’ এই হল খ্রীষ্টবিরোধীদের স্বভাব; তারা যেখানেই যায়, প্রতিযোগিতা করে ও নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে। তারা হল শয়তানের অনুচর, এবং তারা গির্জার কাজকে বিশৃঙ্খল করে। খ্রীষ্টবিরোধীদের স্বভাবই হল এই: তারা প্রথমেই গির্জার চারিদিকে ভালো করে খুঁজে দেখে যে কে বহু বছর ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাসী আর কার কাছে পুঁজি আছে, কার মধ্যে কোনো প্রতিভা অথবা বিশেষ কোনো দক্ষতা আছে, জীবনে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে ভ্রাতা ও ভগ্নীদের কে উপকারে এসেছে, কাকে অত্যন্ত সম্মান করা হয়, কার অভিজ্ঞতা আছে, ভ্রাতা ও ভগিনীরা কার কথা প্রায়ই বলে, কার কাছে আরো ইতিবাচক কিছু রয়েছে। এই মানুষগুলোর সাথেই তাদের প্রতিযোগিতা। সংক্ষেপে, খ্রীষ্টবিরোধীরা যখনই একদল মানুষের মধ্যে থাকে, তারা যেটা করে থাকে তা হল: তারা পদমর্যাদার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সুনামের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সমস্তকিছুর ক্ষেত্রে তাদের কথাই যাতে শেষ কথা হয় তার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, এবং গোষ্ঠীর মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চূড়ান্ত ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, যা অর্জন করে ফেলতে পারলেই তাদের প্রভূত আনন্দ। … খ্রীষ্টবিরোধীদের স্বভাব এতটাই উদ্ধত, ঘৃণ্য এবং অযৌক্তিক। তাদের না আছে বিবেকবোধ, না আছে চেতনা, সত্যের তো কণামাত্রও নেই। একজন খ্রীষ্টবিরোধীর কাজে-কর্মে স্পষ্ট দেখা যায় যে তারা যা করে তাতে কোনও স্বাভাবিক মানুষের হেতুবোধের অন্তর্গত রয়েছে এমন কোনোকিছুই নেই, এবং যদিও বা তাদের কাছে সত্য নিয়ে আলোচনা করাও হয়, তারা তা স্বীকার করে না। তুমি যা বল তা যত সঠিকই হোক না কেন, তারা তা মেনে নেয় না। তারা শুধুই চায় সুনাম ও পদমর্যাদার অন্বেষণ করে যেতে, যা তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে অন্তরে ধরে রাখে। যতদিন তারা এই পদমর্যাদার উপকার পায়, তারা সন্তুষ্ট থাকে। তাদের বিশ্বাস যে এ হল তাদের অস্তিত্বের মূল্য। তারা যে গোষ্ঠীর মধ্যেই থাকুক না কেন, মানুষকে তাদের প্রদান করা ‘আলো’ ও ‘উষ্ণতা’, তাদের বিশেষ প্রতিভা, তাদের অনন্যতা তারা দেখাবেই। আর যেহেতু তাদের বিশ্বাস যে তারা বিশিষ্ট, তাই তারা স্বাভাবিকভাবেই মনে করে যে তাদের সাথে অন্যদের চেয়ে ভালো আচরণ করা উচিত, তাদের মানুষের সমর্থন ও প্রশংসা পাওয়া উচিত, মানুষের উচিত তাদের সম্মান করা, উপাসনা করা—তারা মনে করে যে এই সবই তাদের প্রাপ্য। এইধরণের মানুষগুলো কি নির্লজ্জ ও অপমানবোধহীন নয়?(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, নবম পরিচ্ছেদ: কেবলমাত্র নিজেদেরকে বিশিষ্ট ভাবে তুলে ধরতে এবং নিজেদের স্বার্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পরিতুষ্ট করতেই তারা তাদের কর্তব্য করে; তারা কখনোই ঈশ্বরের গৃহের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে না, এবং ব্যক্তিগত গৌরবের বিনিময়ে এমনকি সেই স্বার্থ বিক্রয় অবধি করে দেয় (তৃতীয় অংশ))। ঈশ্বর প্রকাশ করেন যে খ্রীষ্টবিরোধীরা কারো সাথে কাজ করতে পারে না। তারা সবসময় পাদপ্রদীপের আলো চায়, অন্যদের তারিফ আর পুজো পেতে চায়। এমন ব্যক্তির স্বভাব বিদ্বেষপূর্ণ—তারা ঈশ্বরের দ্বারা ঘৃণিত এবং অভিশপ্ত হয়। ভেবে বুঝলাম, আমিও খ্রীষ্টবিরোধীর স্বভাব প্রদর্শন করেছিলাম। গির্জা আমার এবং চেন শি-র একসঙ্গে কাজ করার ব্যবস্থা করেছিল, কিন্তু আমি চেয়েছিলাম তারকা হয়ে একাই উজ্জ্বল হতে। চেন শি কে স্পষ্টভাবে আলোচনা করতে, অন্যদের অনুমোদন পেতে দেখে, তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হই, ভাবি, সে গির্জায় থাকলে আমি কখনোই গৌরব পাব না। তার সাথে প্রতিপক্ষের মতো আচরণ করি। তার কাজে অসুবিধা হতে দেখেও তাকে সাহায্য করিনি, এমনকি তাকে একাও ছেড়ে দিই, যে কারণে সে নেতিবাচক বোধ করে। তাকে বারবার উপেক্ষা করার ফলে, তার অবস্থা আরো খারাপ হয়, তবু আমি বিবেকের দংশন বোধ করিনি। পরিবর্তে, ভাবি পাদপ্রদীপের আলোয় প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারব। দায়িত্বের প্রতি তার উৎসাহে ভাটা ফেলতে ইচ্ছা করে তাচ্ছিল্য করি, যাতে সে তার শক্তি প্রয়োগ করতে না পারে। যা তার জন্য সত্যিই বেদনাদায়ক ছিল। আমি শয়তানোচিত বিষ নিয়ে বাঁচছিলাম “শুধুমাত্র একজনই আলফা পুরুষ হতে পারে” এবং “সমস্ত মহাবিশ্বে, কেবল আমিই সর্বোচ্চ রাজত্ব করি।” একা আমিই লক্ষণীয় হয়ে উঠতে চাইছিলাম। তাকে উপেক্ষা করতে আমি কিছুই করা বাকি রাখিনি, সবার সেরা হতে তাকে আহত করেছি। আমার একটুও বিবেক ছিল না। আমি গির্জার মধ্যে কিছু খ্রীষ্টবিরোধীর কথা ভাবলাম। তারা শুধু পরোয়া করে মর্যাদার আর তারিফ পাওয়ার। কাউকে তাদের ছাপিয়ে যেতে দেখলে তা সহ্য করতে পারে না, আর মর্যাদা বিপন্ন হলেই, তারা অন্য ব্যক্তিকে নিপীড়ন করার এবং দণ্ড দেওয়ার জন্য জঘন্য কৌশল প্রয়োগ করে। নিজেদের সব মন্দ কর্মের জন্য তারা শেষ অবধি ঈশ্বরের দ্বারা অনাবৃত এবং পরিত্যক্ত হয়। আমি সবসময় অন্যদের প্রশংসা এবং অনুমোদন চেয়েছিলাম। সহকর্মীকে নিচে রাখতে চেয়েছিলাম, তাকে লক্ষণীয় হতে দিইনি। আমি এক খ্রীষ্টবিরোধীর পথে ছিলাম। ঘুরে না সাঁড়িয়ে, নাম আর লাভের জন্য যুদ্ধ আর গির্জার কাজকে বিশৃঙ্খল করা চালিয়ে গেলে, আমার পরিণতি ঠিক খ্রীষ্টবিরোধীদের মতো হবে, ঈশ্বরের দণ্ড ও অভিশাপ পাব! এমনটা চিন্তা করে ভয় পেলাম, ছুটে গেলাম প্রার্থনা ও অনুতাপ করতে।

আমি বেশ কিছু অনুচ্ছেদ পড়েছিলাম। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “সুনাম ও মর্যাদা ত্যাগ করাটা খুব সহজ নয়—তা নির্ভর করে সত্য অন্বেষণকারী মানুষগুলোর উপর। একমাত্র সত্য উপলব্ধি করার মাধ্যমেই কেউ নিজেকে জানতে পারে, সুনাম ও মর্যাদা অন্বেষণ করার শূন্যতা স্পষ্ট দেখতে পায়, আর মানবজাতির দুর্নীতির সত্যতা চিনতে পারে। একমাত্র তাহলেই সুনাম ও মর্যাদাকে প্রকৃত অর্থে পরিত্যাগ করতে পারা যায়। কলুষিত স্বভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করা সহজ নয়। হয়ত তুমি বুঝতে পেরেছ যে তোমার মধ্যে সত্যের অভাব রয়েছে, তুমি ঘাটতি দ্বারা পরিবৃত, এবং তোমার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির অত্যধিক প্রকাশ, অথচ তবুও তুমি সত্য অন্বেষণের কোনো চেষ্টাই করো না, এবং তুমি ভণ্ডের মতো নিজেকে গোপন করে রাখো, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে যে তুমি সবকিছু করতে পারো। এটাই তোমাকে বিপদে ফেলছে—আজ নয়ত কাল, এর ফল তোমাকে ভুগতেই হবে। তোমাকে স্বীকার করতেই হবে যে সত্য তোমার কাছে নেই, এবং তোমার মধ্যে বাস্তবের সম্মুখীন হওয়ার সাহসও থাকতে হবে। তুমি দুর্বল, তোমার মধ্যে দুর্নীতির প্রকাশ, এবং তুমি সবরকমের ঘাটতি দ্বারা পরিবৃত। এটা স্বাভাবিক—তুমি একজন স্বাভাবিক মানুষ, কোন অতিমানব কিংবা সর্বশক্তিমান নও, এবং তোমাকে অবশ্যই তা জানতে হবে(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, নবম পরিচ্ছেদ: কেবলমাত্র নিজেদেরকে বিশিষ্ট ভাবে তুলে ধরতে এবং নিজেদের স্বার্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পরিতুষ্ট করতেই তারা তাদের কর্তব্য করে; তারা কখনোই ঈশ্বরের গৃহের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে না, এবং ব্যক্তিগত গৌরবের বিনিময়ে এমনকি সেই স্বার্থ বিক্রয় অবধি করে দেয় (তৃতীয় অংশ))। “নিজেদের পরিচালনা করার ক্ষেত্রে তোমাদের নীতিগুলো কী কী? তোমাদের উচিত নিজেদের অবস্থান অনুযায়ী নিজেদের পরিচালনা করা, নিজেদের জন্য সঠিক অবস্থান খুঁজে নেওয়া, এবং করণীয় কর্তব্য সম্পাদন করা; তবেই তুমি একজন বোধসম্পন্ন মানুষ। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, এমন কিছু লোক আছে যাদের কিছু বিশেষ পেশাগত দক্ষতা রয়েছে এবং নীতিগুলো উপলব্ধি করতে পারে, এবং তাদের উচিত সেই বিষয়েরই দায়িত্ব নেওয়া উচিত ও সেই ক্ষেত্রটাকে চূড়ান্তভাবে খতিয়ে দেখা; কেউ কেউ থাকে যারা পরিকল্পনা ও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে, যার ফলে অন্য সকলে নিজের নিজের পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে ও নিজেদের দায়িত্ব আরও ভালভাবে সম্পাদন করতে পারে—তাহলে তাদের পরিকল্পনা প্রদানের কাজই করা উচিত। যদি তুমি তোমার পক্ষে সঠিক অবস্থান খুঁজে বার করতে পারো এবং তোমার ভাই ও বোনদের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে পারো, তাহলেই তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করছ এবং নিজের পদ অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করছ(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, যে নীতিগুলি অনুসারে আচরণ করা উচিত)। “যেহেতু কারো পক্ষেই সবকিছু নিজেনিজে সম্পন্ন করা সহজ নয়, তাই তারা যে ক্ষেত্রের সাথেই যুক্ত থাকুক বা যে কাজই করুক, যদি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর দিকে ইঙ্গিত করার ও তাদের সাহায্য করার জন্য কেউ থাকে, তাহলে সেই কাজ তাদের নিজেনিজে করার চেয়ে অনেক সহজে সম্পন্ন করা যায়। এছাড়াও, মানুষের ক্ষমতা কতদূর কার্যকর, অথবা তারা কী অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে, তারও সীমা রয়েছে। কেউই সব কাজে দক্ষ হতে পারে না, কোনো একজনের পক্ষে সবকিছু জানা, সবকিছু শেখা, সবকিছু সম্পন্ন করা সম্ভব নয়—এটা অসম্ভব, এবং প্রত্যেকেরই সেই বোধ থাকা উচিত। আর তাই, তুমি যা-ই করো না কেন, তা গুরুত্বপূর্ণ হোক বা না হোক, তোমাকে সহায়তা করতে, পরামর্শ দিতে, উপদেশ দিতে, অথবা তোমার সাথে সহযোগিতায় কিছু করতে সর্বদাই কোনো একজনের থাকা উচিত। একমাত্র এইভাবেই নিশ্চিত করা যায় যে তুমি আরও সঠিক ভাবে কাজ করবে, কম ভুল করবে এবং তোমার বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা কম হবে—যেটা একটা ভালো ব্যাপার(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, অষ্টম পরিচ্ছেদ: তারা অপরের থেকে কেবল নিজেদের প্রতিই আনুগত্য আদায় করে, সত্য অথবা ঈশ্বরের প্রতি নয় (প্রথম অংশ))। ঈশ্বরের বাক্যে অনুশীলনের একটা পথ খুঁজে পেলাম। আমায় নাম-যশ খোঁজার ইচ্ছা ত্যাগ করতেই হত, হত স্বস্থানে থেকে নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোর সঠিক মোকাবিলায় সক্ষম হতে, হত সব বিষয়ে গির্জার স্বার্থ ও অন্যদের জীবনে প্রবেশের বিষয়টি বিবেচনা করতে, হত সহকর্মীর সাথে ভালোভাবে কাজ করতে, যাতে আমরা একসঙ্গে গির্জার কাজকে তুলে ধরতে আর দায়িত্বের সুষ্ঠু পালন করতে পারি। অতীতে আমার চেন শি-র কাজের উপর কর্তৃত্ব ছিল, আমার কাজের কিছু অভিজ্ঞতা ছিল, কিন্তু সত্য ও সমস্যা সমাধান নিয়ে আলোচনায় তখনও বেশ দুর্বল ছিলাম। ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ছিল না, অনেক সমস্যা বুঝতে বা সমাধান করতে পারিনি। এগুলো আমার ঘাটতি ছিল। আমার উচিত সেগুলো স্বীকার করা এবং সেগুলোর সম্মুখীন হওয়া। চেন শি-র আলোচনা ব্রাদার-সিস্টারদের জীবনে প্রবেশে প্রদীপ্তিকর ও সহায়ক ছিল। আমার উচিত তাকে সমর্থন করা, তাকে তার শক্তি প্রয়োগ করতে দেওয়া। এইভাবে আমিও তার ক্ষমতা থেকে শিখে নিজের দুর্বলতাগুলো পূরণ করতে পারব, যা আমার জীবনে প্রবেশ এবং গির্জার কাজকে উপকৃত করবে।

পরে, চেন শি-র সঙ্গে সমাবেশে সহকারিতার কাজে, নিশ্চিত করতাম যে আমার অভিপ্রায় সঠিক, শুধুমাত্র যা বুঝেছি, তা নিয়েই আলোচনা করতাম। চেন শি-কে তার অন্তর্দৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা করতে দিতাম, আমি তা সম্পূর্ণ করতাম। অন্যদের তার আলোচনা অনুমোদন করতে দেখলে আমি কখনও-সখনও প্রতিযোগী বোধ করতাম, কিন্তু দ্রুত দেখলাম, আমি সঠিক অবস্থায় নেই, প্রার্থনা করলাম, নিজেকে পরিত্যাগ করলাম, ইচ্ছুক হলাম গির্জার কাজকে অগ্রাধিকার দিতে আর চেন শি-র সাথে সহযোগিতা করতে। তারপর, আমার ঈর্ষা অত শক্তিশালী ছিল না এবং আমি তাকে সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা বন্ধ করলাম। পরিবর্তে, ভাবতাম কীভাবে অন্যদের সমস্যা মেটাতে তার সাথে কাজ করা যায়। আর নিজের ভ্রষ্ট স্বভাবে আটকে না থেকে, কাজে অংশগ্রহণে সক্ষম হলাম। কর্মক্ষেত্রে চেন শি-র সাথে সহযোগিতায় ইচ্ছুক হই, সে সমস্যায় পড়লেই সাহায্য করি। কিছু পর, আমাদের সিঞ্চনের কাজ উন্নত হয় আমরা দুজনেই উন্নতি করতে পারি। আমি সত্যিই শান্তি পাই।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

কর্তন ও মোকাবিলা সামলানোর উপায়

—এক নিষ্ঠামূলক দিনলিপি বুধবার, সতেরোই আগস্ট, দু’হাজার বাইশ, পরিষ্কার আকাশ আমি আজ একটা নতুন কাজ শুরু করেছি। লেখালিখি সংক্রান্ত কাজ। কাজটা...

দায়িত্বের জন্য সত্য অপরিহার্য

২০২১ সালের মে মাসে, আমি একটি নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করি, এবং বেশ কয়েকটি গির্জার কাজের দায়িত্ব নিই। আমি ভাবছিলাম যে আমাকে সত্যিই এর মূল্য...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন