আ বাউন্ডেন ডিউটি

31-03-2023

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে, আমি অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজকে গ্রহণ করেছি। এরপর থেকে আমি প্রায়ই সমাবেশে যোগ দিতাম এবং আমি যা বুঝতাম না সে সম্পর্কে আমার ব্রাদার ও সিস্টারদের জিজ্ঞাসা করতাম। আমি ঈশ্বরের বাণী সক্রিয়ভাবে মেনেও চলেছি এবং অন্যদেরকেও মেনে চলতে উৎসাহিত করেছি। একবার গ্রুপ লিডার আমাকে বলেন: “আপনি সমাবেশে সবাইকে সুন্দরভাবে সহায়তা করেন এবং সবকিছু সুন্দরভাবে বোঝেন, আপনি কি সমাবেশের পরিচালনাকারী হতে চান?” আমি এটা বিশ্বাস করতে পারিনি: তিনি চান যে আমি সমাবেশ পরিচালনা করি? আমি অনেক দিন ধরে এই সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি যখন প্রভুতে বিশ্বাস করতাম, তখন আমি সবসময় তাদেরকে ঈর্ষা করতাম যারা ধর্ম প্রচারের জন্য ঘুরে বেড়াত। এমনকি আমি একজন যাজকও হতে চেয়েছিলাম যেন আমিও একদিন সবার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের মতো ধর্ম প্রচার করতে পারি। এবং অন্যদের প্রশংসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারি। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছে। আমরা যারা সমাবেশে মিলিত হতাম তাদের মধ্যে একমাত্র আমিই পরিচালনাকারী হিসাবে নির্বাচিত হই এবং আমি বুঝতে পারি যে আমি অন্য সবার চেয়ে ভাল ছিলাম। আমার নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয়েছিল এবং কোনও রকম দ্বিধা ছাড়াই আমি প্রস্তাবটি গ্রহণ করি। আমি সমাবেশের জন্য আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, ব্রাদার আর সিস্টাররা সমস্যাগুলি আমাকে জানানোর সাথে সাথে আমি সমাধান করতাম এবং আমি সমাধান করতে না পারলে গ্রুপ লিডারের কাছে সাহায্য চাইতাম। এর কিছু দিন পরে, গ্রুপ লিডার আমাকে বলেন যে আমি খুব ভালোভাবে সবকিছু পরিচালনা করছি এবং আমার প্রতি তার আস্থা আরও বেড়ে গেছে। আমি অবিশ্বাস্যভাবে নিজেকে গর্বিত মনে করেছি। পরবর্তীতে, কিছু কাজের চাপের কারণে, গির্জার লিডার, সিস্টার আইভি, আমাকে পরম সত্য প্রচার করার জন্য নিযুক্ত করেন। আমার প্রধান দায়িত্ব ছিল উপদেশ শোনার জন্য মানুষদের আমন্ত্রণ জানানো। আমি এটা মেনে নিতে পারিনি কারণ আমার মনে হয়েছিল যে একজন পরম সত্য-প্রচারকের মর্যাদা একজন পরিচালনাকারীর চেয়ে কম। পরিচালনাকারীদের লিডার বলে মনে করা হয়—এই পদ আমাকে অন্যদের নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করে এবং আমাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখে, সেখানে মানুষদের উপদেশ শোনার জন্য আমন্ত্রণ জানানোটা ছিল একটি পরোক্ষ কাজ এবং অন্যরা কেউ এটি লক্ষ্য করবে না। আমি নিজেই নিজেকে অভিযোগ করি: “কেন আমাকে এই কাজে নিযুক্ত করা হলো? আমি কি যথেষ্ট ভালো নই?” আমি এটা ঠিক বুঝতে পারিনি। এমনকি লিডারকে নিয়ে আমার মনে পক্ষপাতমূলক চিন্তা-ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছিল, এই ভেবে যে তিনি আমাকে নিয়ে খুব বেশি ভাবেন না। পরম সত্য প্রচার করা কীভাবে ঈশ্বরের অর্পিত একটি দায়িত্ব এবং কর্তব্য যা প্রত্যেকেরই পালন করা উচিত সে সম্পর্কে তিনি আমাকে জানান। এরপরই কেবল আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও কাজটি করতাম। কিন্তু আমি মন থেকে পরম সত্য প্রচার করার কাজটি করতাম না এবং আমি সর্বদা সমাবেশ পরিচালনা করার কাজে ফিরে যেতে চাইতাম। এমনকি আমি এটাও ভাবতাম যে পরম সত্য প্রচার করা আমার জন্য সঠিক কাজ নয়, এবং আমি সমাবেশের আয়োজক হিসাবে আরও অনেক ভাল কাজ করতে পারব।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, একদিন, উচ্চ পর্যায়ের একজন লিডার আমাকে বললেন: “আমার কাছে একটি সুসংবাদ আছে, আপনি গির্জার একজন লিডার নির্বাচিত হয়েছেন।” আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি তখনও সত্যটা বুঝতে পারিনি, আমি কীভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে পারি? কিন্তু আমি জানতাম যে এটা ঈশ্বরের মহিমা, তাই আমি এটা মেনে নিলাম। পরে, লিডার আমাকে বলেন যে আমার প্রধান কাজ হবে পরম সত্য প্রচার করা। “পরম সত্য প্রচারের কাজ” শুনেই আমার মনে তখনও প্রথম সেই কথাটিই এসেছিল যে এটি একটি কম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এটি শুধুমাত্র সত্য সন্ধানকারীদের সাথে জড়িত, এটি আমাকে পরিচিত হতে সাহায্য করবে না। আমি গোপনে অভিযোগ করতে শুরু করি এবং এই কাজে আমি কোনও উৎসাহ খুঁজে পাই না। আমি পরম সত্য প্রচারের কাজের দায়িত্বে থাকতে চাইনি। পরবর্তীতে, দায়িত্ব পালনের সময় আমি কেবল সমাবেশগুলি পরিচালনা করার উপর মনোনিবেশ করতাম এবং পরম সত্য প্রচারের কাজে খুব কম মনোযোগ দিতাম। যখন একজন উচ্চ স্তরের লিডার পরম সত্য প্রচারের কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, আমার খুব একটা ভাল অভিজ্ঞতা ছিল না এবং কিছু বলারও ছিল না। পরম সত্য প্রচারের কাজে গির্জা কেন ভালো ফলাফল পাচ্ছিল না তা আমি জানতাম এবং ব্রাদার এবং সিস্টারেরা জানতেন না কীভাবে পরম সত্য প্রচার করতে হয়, যার কারণ ছিল আমার অবহেলা। আমার খুব খারাপ লাগছিল। পরে আমি লিডারদের কাছে আমার অবস্থার কথা খুলে বলি এবং তারা সহযোগিতা করেন এবং কীভাবে পরিস্থিতির সমাধান করা যায় তা নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করেন। তারা আমাকে পরম সত্য প্রচারের কাজকে এগিয়ে নেওয়ার উপর মনোযোগ দিতে বলেন। আমার নিজেকে সত্যিই অপরাধী মনে হচ্ছিল। একজন লিডার হিসাবে আমার পরম সত্য প্রচারের কাজে দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল, কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি এবং ফলস্বরূপ, পরম সত্য প্রচারের কাজে কাজে আমরা খারাপ ফলাফল পাই। আমি যখন এই সব বুঝতে পারলাম, তখন আমার খুব খারাপ লেগেছিল।

একটি সমাবেশের সময় আমি ঈশ্বরের বাণী সম্বলিত একটি অনুচ্ছেদ দেখতে পাই যা আমাকে নিজের সম্পর্কে বোঝার ক্ষেত্রে কিছুটা সাহায্য করে। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “নিজেদের কর্তব্যের প্রতি তোমাদের যে মনোভাবকে সঠিক এবং ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলা যেতে পারে, সেই মনোভাব কেমন হওয়া উচিত? প্রথমত, কে এগুলির ব্যবস্থাপনা করছে, কোন স্তরের নেতা এগুলি আরোপ করছে—তা খুঁটিয়ে না দেখে ঈশ্বরের থেকে আগত হিসাবেই গ্রহণ করতে হবে তোমায়। তুমি তা বিশ্লেষণ করতে পারো না, ঈশ্বর-প্রদত্ত হিসাবেই তোমার কাছে তা গ্রহণীয়। এ হল এক শর্ত। উপরন্তু, তোমার কর্তব্য নির্বিশেষে, উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ কোরো না। ধরো তুমি বললে, ‘এটা ঈশ্বরের অর্পিত কার্য, ঈশ্বরের গৃহের কাজ ঠিকই, কিন্তু এটা করলে লোকজন আমাকে হীন ভাবতে পারে। অন্যান্যদের কাজ তাদেরকে সকলের থেকে আলাদা করে তোলে। আর আমাকে এই কাজ অর্পণ করা হয়েছে, যেটা আমাকে আলাদা তো করবেই না, বরং লোকচক্ষুর আড়ালে রেখে দেবে, এটা অন্যায়! আমি এই দায়িত্ব পালন করব না। আমার ওপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করা উচিত, যা আমাকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে দেবে, এবং আমার নিজের সুনাম বৃদ্ধি করবে—এবং যদি এটা থেকে আমার সুনাম অর্জন না হয়, বা আলাদা হয়ে উঠতেও না পারি, তাহলেও যেন এটা থেকে আমার উপকার হয় এবং শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারি’। এমন মনোভাব কি গ্রহণযোগ্য? বাছবিচার করার মানে হল ঈশ্বরের থেকে আগত জিনিস গ্রহণে আপত্তি করা; তা তোমার নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচন করার মতো বিষয়। এটা দায়িত্ব গ্রহণ করা নয়, বরং তা প্রত্যাখ্যান করা, এ যেন তোমার বিদ্রোহী মনোভাবেরই প্রকাশ। এই ধরনের বাছবিচারে তোমার নিজস্ব পছন্দ এবং আকাঙ্ক্ষার অশুদ্ধতা মিশে থাকে, যখন তুমি নিজের লাভের কথা ভেবে, নিজের সুনামের ইত্যাদির কথা বিবেচনা করো, সেক্ষেত্রে দায়িত্বের প্রতি সমর্পণের মনোভাব তোমার থাকে না। তোমার দায়িত্বের প্রতি কী মনোভাব থাকা উচিত? প্রথমত, তুমি তা বিশ্লেষণ করবে না, কে এটা তোমায় বরাদ্দ করেছে সে বিষয়ে চিন্তা করবে না, পরিবর্তে, তা ঈশ্বর-প্রদত্ত হিসাবেই, তোমার প্রতি ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব হিসাবেই গ্রহণ করবে, এবং ঈশ্বরের আয়োজন ও তোমার ওপর আরোপিত দায়িত্ব তোমার গ্রহণ করা উচিত। দ্বিতীয়ত, উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ করতে যেও না, এবং এই দায়িত্ব তোমাকে আলাদা করে তুলবে কি না, লোকের সুনজরে আনবে না লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখবে—এইসব ভেবে তোমার দায়িত্বের প্রকৃতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না। এই বিষয়গুলি বিবেচনা কোরো না। এগুলো ছাড়াও অন্যান্য মনোভাবও রয়েছে: আনুগত্য এবং সক্রিয় সহযোগিতা(বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, পর্যাপ্তভাবে দায়িত্ব পালন করা বলতে কী বোঝায়?)। ঈশ্বরের বাণী পড়ার পর আমি বুঝতে পারলাম যে কোনও দায়িত্বই কম বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, গির্জায় আমরা যে কাজই করি না কেন, আমরা সবাই সৃষ্ট জীব হিসাবে আমাদের কর্তব্য পালন করছি। আমাদের কম বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ্যে পার্থক্য করা উচিত নয় এবং সেগুলিকে কোনও ব্যক্তি প্রদত্ত হিসাবে মনে করা উচিত নয়। এগুলিই হল সেই দায়িত্বসমূহ যা আমাদের পূরণ করতেই হবে। নিজেকে নিয়ে ভাবার পর দেখলাম যে, আমি সবসময় আমার নিজের পছন্দগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়েছি, শুধুমাত্র সেই সমস্ত কাজগুলোকে বেছে নিয়েছি যেগুলো আমাকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে প্রকাশ করবে। প্রতিবারই, যে কাজ আমার পছন্দ মতো হতো না এবং যেগুলো আমাকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে প্রকাশ পেতে সাহায্য করত না, আমি সেগুলো গ্রহণ করতাম না এবং গোপনে সেগুলোর প্রতিরোধ ও অভিযোগ করতাম। যখন লিডার আমাকে সমাবেশ পরিচালনা করার দায়িত্ব দিলেন, যেহেতু সেই কাজটি আমি পছন্দ করতাম, তাই আমি এতে সন্তুষ্ট ছিলাম এবং এই কাজটি আমাকে সবার থেকে আলাদা করেছিল, আমি খুশি ছিলাম এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে দায়িত্ব পালন করছিলাম। কিন্তু যখন লিডার আমাকে পরম সত্য প্রচার করার দায়িত্ব দিলেন, আমি ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম কারণ এই দায়িত্ব আমাকে সবার থেকে আলাদা করবে না, এবং আমার বিশ্বাস ছিল যে সে আমাকে নিয়ে কম ভাবত, তাই আমি হতাশ, দুঃখিত হয়েছিলাম এবং এমনকি তার প্রতি বিরূপও ছিলাম। আমি কী কাজ করব তা বাছাই করা নিয়ে খুঁতখুঁতে ছিলাম, সেগুলিকে ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রদত্ত বলে স্বীকার করতাম না এবং সত্যিকার অর্থে নিজেকে সমর্পণ করতাম না। কারণ আমার কর্তব্য সম্পর্কে আমার ধারণা ভুল ছিল, আমি আমার পরম সত্য প্রচারের কাজকে অযৌক্তিক এবং সামান্য বলে মনে করতাম। ফলস্বরূপ, আমরা খারাপ ফলাফল পেতাম এবং প্রত্যক্ষভাবে পরম সত্য প্রচারের কাজ বিলম্বিত হত। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছিলাম। আমাকে যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল তা আমি পছন্দ করি বা না করি, গির্জার কাজের জন্য এটি প্রয়োজনীয় থাকা পর্যন্ত আমার নিজেকে সমর্পণ করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত ছিল। এটা আমার প্রথমে বিবেচনা করা উচিত ছিল, কিন্তু আমি সবসময় আমার নিজের পছন্দ অনুযায়ী কর্তব্য নিয়ে ভেবেছি। আমি সত্যিই অবাধ্য এবং অবিশ্বাসী ছিলাম। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! আমি খুব খুশি হয়েছিলাম যে আমি ঈশ্বরের বাণী সম্বলিত অনুচ্ছেদটি পড়ে আমার ত্রুটিগুলো ধরতে পেরেছি। আমি একটি প্রতিজ্ঞা করি: আমাকে যে দায়িত্বই দেওয়া হোক না কেন, আমি তা পালন করব।

আমি আমার চিন্তাকে দূরে রেখে নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম: আমি কেন এমন করি যে যদি কোনও দায়িত্ব আমার পছন্দ এবং ইচ্ছা অনুসারে হয় এবং সবার থেকে আমাকে আলাদা করে, তবেই আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই, কিন্তু দায়িত্ব পছন্দ না হলে, আমি তা করতে চাই না এমনকি অভিযোগ করি এবং আত্মসমর্পণও করি না? আমি ঈশ্বরের বাণীর মধ্যে উত্তর খুঁজে পেয়েছি। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “সাধারণ মানুষের তুলনায় খ্রীষ্টবিরোধীদের কাছে নিজেদের মর্যাদা এবং সম্মান অনেক বেশি উপভোগ্য, সেটা তাদের স্বভাব ও সারমর্মেই নিহিত রয়েছে; তা কোনো সাময়িক উৎসাহ অথবা পারিপার্শ্বিক অবস্থার ক্ষণস্থায়ী প্রভাব নয়—সেটি তাদের জীবনের অংশ, তাদের অস্থিমজ্জায় মিশে থাকে, এবং সেহেতু, সেটিই তাদের সারমর্ম। অর্থাৎ বলা যায় যে, খ্রীষ্টবিরোধীরা যেকোনো কিছু করার সময়, নিজেদের মর্যাদা ও সুনামকেই সর্বাগ্রে বিবেচনা বিষয়; এছাড়া কোনোকিছুই নয়। মর্যাদা ও সুনাম হল খ্রীষ্টবিরোধীদের প্রাণস্বরূপ, তাদের আজীবনের লক্ষ্য। তাদের করা সকল কাজের ক্ষেত্রেই তারা সর্বপ্রথম এই মর্মে বিবেচনা করে: ‘এতে আমার মর্যাদার কী হবে? আর আমার সুনামের কী হবে? এটি করলে কি আমি সম্মান পাব? লোকেদের মনে কি আমার মর্যাদা উন্নীত হবে?’ তারা সর্বপ্রথম এই চিন্তাই করে, এবং এটিই পর্যাপ্তভাবে প্রমাণ করে যে তাদের স্বভাব ও সারসত্য খ্রীষ্টবিরোধী-সম; তারা সমস্যাকে অন্য কোনোভাবে বিবেচনা করে না। বলা যেতে পারে যে, খ্রীষ্টবিরোধীর কাছে, মর্যাদা এবং সুনাম অতিরিক্ত কোনো প্রয়োজন নয়, অপ্রাসঙ্গিক কিছু যা তাদের না হলেও চলে যায়, এমন তো আরোই নয়। তারা খ্রীষ্টবিরোধীদের প্রকৃতিরই অংশ, এই বিষয়গুলি তাদের কাছে অস্থিমজ্জাগতভাবে সহজাত। নিজেরা মর্যাদা এবং সুনামের অধিকারী কিনা, সেবিষয়ে খ্রীষ্টবিরোধীরা উদাসীন নয়; তেমন উদাসীনতা তাদের মনোভাব নয়। তাহলে, তাদের মনোভাব কী? মর্যাদা এবং সুনাম তাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে, দৈনন্দিন অবস্থার সাথে, তারা নিয়ত যে উদ্দেশ্যে সচেষ্ট থাকে তার সাথে, অঙ্গাঙ্গীভাবে সংযুক্ত। এবং সেহেতু, খ্রীষ্টবিরোধীদের জন্য, মর্যাদা এবং প্রতিপত্তিই হল জীবন। তারা যেভাবেই বসবাস করুক, যে পরিবেশেই বাস করুক, যে কাজই করুক না কেন, তারা যা কিছু করার জন্য চেষ্টা করে, তাদের লক্ষ্য তথা জীবনের দিশা যে অভিমুখেই থাকুক না কেন, সকলই সুনাম এবং উচ্চ মর্যাদাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। এবং এই লক্ষ্য পরিবর্তিত হয় না; তারা কখনোই এই ধরনের বিষয়গুলিকে পরিহার করতে পারে না। এই হল খ্রীষ্টবিরোধীদের আসল চেহারা এবং সারমর্ম(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, নবম পরিচ্ছেদ: কেবলমাত্র নিজেদেরকে বিশিষ্ট ভাবে তুলে ধরতে এবং নিজেদের স্বার্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পরিতুষ্ট করতেই তারা তাদের কর্তব্য করে; তারা কখনোই ঈশ্বরের গৃহের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে না, এবং ব্যক্তিগত গৌরবের বিনিময়ে এমনকি সেই স্বার্থ বিক্রয় অবধি করে দেয় (তৃতীয় অংশ))। ঈশ্বরের বাণী থেকে আমি দেখেছি কিভাবে খ্রীষ্টবিরোধীরা বিশেষ খ্যাতি এবং মর্যাদা পেতে চায়। তারা সবসময় বাকিদের মধ্যে সবার উপরে থাকতে চায় এবং মানুষের মনে জায়গা করে নিতে চায়। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, কিভাবে অন্যদের শ্রদ্ধা এবং প্রশংসা অর্জন করা যায় এটাই হয় সবসময় তাদের কাছে প্রথম বিবেচ্য বিষয়। খ্যাতি ও মর্যাদা না পেলে সাধারণ মানুষও একটু নিচে নামতে পারে, কিন্তু খ্রীষ্ট বিরোধীদের ক্ষেত্রে, তারা আক্ষরিক অর্থেই কাজ করতে পারে না এবং তারা এটিকে অবিশ্বাস্যভাবে যন্ত্রণাদায়ক বলে মনে করে, স্পষ্ট করে বলতে গেলে, সেখানে তারা খুব কমই টিকে থাকতে পারে। খ্রীষ্টবিরোধীদের জন্য খ্যাতি এবং সামাজিক মর্যাদাই হল তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। আমারও সেই একই স্বভাব ছিল: সবসময় খ্যাতি, মর্যাদা এবং অন্যদের প্রশংসা পেতে চাইতাম। ভাই-বোনদের মধ্যে, আমি সবসময় আমার বাবা-মায়ের প্রিয় হতে চাইতাম। আমার বন্ধুদের মধ্যে, আমি সবচেয়ে জনপ্রিয় হতে চাইতাম। স্কুলে, আমি আমার শিক্ষকদের সমর্থন পেতে চাইতাম এবং প্রভুতে বিশ্বাসী হিসাবে, আমি ধর্ম প্রচারকদের মতো হতে চাইতাম, জনতার সামনে ধর্মোপদেশ দিতে এবং সবার প্রশংসা অর্জন করতে চাইতাম। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করার পরে, আমি তখনও একই জিনিস অন্বেষণ করতাম: আমি ভাবতাম যে, সমাবেশ পরিচালনা করার মাধ্যমে আমি নিজেকে প্রমাণ করতে পারব, অন্যের প্রশংসা অর্জন করতে পারব এবং লিডারদের কাছে অনেক বেশি সম্মানিত হতে পারব। তাই যখন আমাকে সমাবেশ পরিচালনা করার জন্য নিযুক্ত করা হল, তখন আমি খুব খুশি হলাম এবং আমি সকলের দ্বারা সম্মানিত এবং প্রশংসিত হতে পছন্দ করতাম। কিন্তু পরম সত্য প্রচারের দায়িত্বটি ছিল সবার অগোচরে করার মতো একটি কাজ যা কেউ গুরুত্ব দেবে না। যদি আমাকে “লিডার” উপাধিও দেওয়া হয়, তবুও আমি তা গ্রহণ করব না, কারণ আমার মতে এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নয়, এবং সবসময় ভাবতাম আমি কখন আবার সমাবেশ পরিচালনা করতে পারব। যখন আমার প্রত্যাশা পূরণ হল না, তখন আমি তাচ্ছিল্য সহকারে আমার কাজ করতে শুরু করি, যার ফলে পরম সত্য প্রচারের কাজের ফলাফল খারাপ হয়। অতীতে, দায়িত্বে থাকাকালে সব কাজ সঠিকভাবে করার জন্য যে প্রার্থনা করতাম তা সত্য এবং সৎ ছিল না—আমি ঈশ্বরের সাথে প্রতারণা করছিলাম! আমি কেবল আমার মর্যাদা এবং সুনাম বজায় রাখার জন্য এবং ব্রাদার এবং সিস্টারদের প্রশংসা অর্জন করার জন্য আমার দায়িত্ব পালন করতাম, ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয়। আমি আমার খ্রীষ্টবিরোধী স্বভাবকে বিপথে পরিচালিত করতাম এবং ঈশ্বরের নিষিদ্ধ পথগুলো অনুসরণ করতাম। এই সব বুঝতে পেরে আমি খুব ভয় পেলাম। কতটা বিপজ্জনক! আমি নীরবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম: “হে ঈশ্বর, আমি অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থানে আছি—আমি খ্যাতি এবং মর্যাদার পেছনে ছুটেছি এবং ভুল পথে চলেছি। আমি প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রস্তুত এবং পরিত্রাণের জন্য আপনার কাছে প্রার্থনা করছি।”

আমি একটি সমাবেশে ঈশ্বরের বাণী সম্বলিত একটি অনুচ্ছেদ পড়েছিলাম যা পরম সত্য প্রচারের কাজের ক্ষেত্রে আমার ত্রুটিপূর্ণ উপলব্ধি সংশোধন করতে সাহায্য করেছে। ঈশ্বরের বাক্যে বলা হয়েছে, “আমি সমস্ত মানুষকে সতর্ক এবং অবহিত করছি যে, সুসমাচারের প্রচার কোনো নির্দিষ্ট ধরন অথবা গোষ্ঠীর মানুষের বিশেষ বৃত্তি নয়; তা ঈশ্বরের অনুগামী প্রত্যেক ব্যক্তির বৃত্তি। সত্যের এই দিকটির বিষয়ে আমি লোকজনকে উপলব্ধি করাতে চাইছি কেন? আর তাদেরই বা কেন এটা জানা দরকার? কারণ, সুসমাচারের প্রচার প্রতিটি সৃষ্ট সত্তা এবং প্রত্যেক ঈশ্বর-অনুগামীর লক্ষ্য তথা বৃত্তি, নবীন বা প্রবীণ, নারী বা পুরুষ নির্বিশেষে, তা সকলেরই অবশ্য গ্রহণীয়। যদি এই অভীষ্ট তোমার কাছে আসে, এবং সেই উদ্দেশ্যে নিজেকে ব্যয় করার, মূল্য পরিশোধের, এবং এমনকি জীবন উৎসর্গ করারও প্রয়োজন ঘটে, তাহলে তোমার কী করা উচিত? তোমার তা গ্রহণ করা উচিত, কারণ তুমি তা গ্রহণে দায়বদ্ধ। এ-ই হল সত্য এবং তোমার তা উপলব্ধি করা উচিত। এ কোনো সরল মতবাদ-খণ্ড নয়; এ হল সত্য। আর কোন বিষয়টি একে সত্য করে তোলে? এর কারণ হল যে, কালপ্রবাহ, অথবা যুগান্তর, অথবা ভৌগোলিক অবস্থান ও মহাকাশের পরিবর্তন নির্বিশেষে, সুসমাচারের প্রচার এবং ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন হল চিরন্তনভাবে ইতিবাচক বিষয়; সেটির অর্থ ও মান অপরিবর্তনীয়। তা কালান্তর অথবা ভৌগোলিক অবস্থান-পরিবর্তনের সাথে বদলায় না। তা চিরন্তনভাবে বিদ্যমান, এবং প্রত্যেক সৃষ্ট সত্তার উচিত তা গ্রহণ ও অনুশীলন করা। এ-ই হল শাশ্বত সত্য। কেউ কেউ বলে, ‘আমি সুসমাচার প্রচারের কাজ করছি না’। বিষয়টি তেমন হলেও, সুসমাচার প্রচারের সত্য হল এমন একটি বিষয়, যা মানুষদের উপলব্ধি করা উচিত। যেহেতু এই সত্য হল দর্শনের পরিসরভুক্ত এক বিষয়, সেহেতু, সকল ঈশ্বরবিশ্বাসীদের তা অবশ্যই উপলব্ধি করা উচিত; এটি হল এমন একটি বিষয়বস্তু, যা কোনো মানুষের ঈশ্বরবিশ্বাস দৃঢ়-সংঘবদ্ধ করে, এবং এটি কোনো মানুষের জীবন-প্রবেশের পক্ষে উপকারী। উপরন্তু, তোমার দায়িত্ব যা-ই হোক না কেন, তোমাকে অবিশ্বাসীদের মোকাবিলাও করতে হবে, সেহেতু, তোমার উপরেও ন্যস্ত রয়েছে সুসমাচার প্রচারের দায়িত্ব। সুসমাচার প্রচারের সত্য উপলব্ধি করতে পারলে, তুমি অন্তরে অবগত হবে যে: ‘ঈশ্বরের নতুন কাজের বিষয়ে, এবং তিনি মানুষদের উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে যে কাজ করছেন সেই কাজের বিষয়ে সুসমাচারের প্রচারই আমার বৃত্তি; স্থান-কাল নির্বিশেষে, আমার অবস্থান, ভূমিকা অথবা বর্তমানে সম্পাদিত কর্তব্য নির্বিশেষে, এগিয়ে এসে ঈশ্বরের নতুন কাজের সুসংবাদ প্রচার করার বিষয়ে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। সুযোগ বা অবসর পেলে তা করে যাওয়াই আমার আবশ্যিক কর্তব্য’। অধিকাংশ মানুষের বর্তমান চিন্তাধারা কি এমনই? (না।) অধিকাংশ মানুষ কী ভাবে? ‘বর্তমানে আমার একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে; আমি পড়াশুনা এবং নির্দিষ্ট পেশা এবং বিশেষ দক্ষতাভিত্তিক বৃত্তিতে নিযুক্ত আছি, তাই সুসমাচার প্রচারের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ এটি কী ধরনের মনোভাব? এ হল দায়িত্ব এবং লক্ষ্য এড়িয়ে যাওয়ার মনোভাব, এ হল এক নেতিবাচক মনোভাব, এবং এহেন মনোভাবের অধিকারী কোনো ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি সহানুভূতিশীল নয়, এবং তাঁর প্রতি অবাধ্য। তুমি যে-ই হও না কেন, যদি তোমার মধ্যে সুসমাচার প্রচারের বিষয়ে কোনো দায়িত্ববোধ না থাকে, তবে কি তোমার মধ্যে বিবেক ও যুক্তিবোধের অভাব পরিলক্ষিত হয় না? তুমি যদি সহযোগিতা, দায়িত্ব গ্রহণ, এবং সমর্পণের বিষয়ে সচেষ্ট এবং সক্রিয় না হও, তাহলে তুমি কেবলই নেতিবাচক এবং নিষ্ক্রিয় প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছ। এই মনোভাব তোমার একেবারেই গ্রহণ করা উচিত নয়। তুমি যে দায়িত্বেই নিয়োজিত থাকো, তোমার দায়িত্ব যে পেশা বা বিশেষত্বের সাথেই জড়িত থাকুক না কেন, তোমার কাজের সমস্ত ফলাফলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মানবজাতির উদ্ধার সংক্রান্ত ঈশ্বরের কাজের সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ায়, এবং সেই কাজের সাক্ষ্য বহনে, সক্ষম হওয়া। এ-ই হল কোনো সৃষ্ট সত্তার ন্যূনতম কর্তব্যকর্ম(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, প্রথম পরিচ্ছেদ: তারা মানুষকে স্বপক্ষে নিয়ে আসতে চায়)। ঈশ্বরের বাণী পড়ার পর, আমি কাঁদতে লাগলাম—আমার নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। ঈশ্বরের বাণী আমাকে স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে পরম সত্য প্রচারের কাজ হল ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব এবং প্রত্যেকের অবশ্য কর্তব্য এবং লক্ষ্য। গির্জায় আমরা যে দায়িত্বই পালন করি না কেন, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য একই: আর তা হল ঈশ্বরের পরম সত্য বাণী ছড়িয়ে দেওয়া। আমার ক্ষেত্রে, আমি পরম সত্য প্রচার করতে পছন্দ করতাম না এমনকি ভুলবশতঃ আমি এটাও ভাবতাম যে পরম সত্য প্রচারের কাজে আমার কোন ভূমিকা নেই। আমি ভাবতাম যে যতক্ষণ আমি সমাবেশ পরিচালনা করব এবং ব্রাদার এবং সিস্টারদের সমস্যার সমাধান করব, ততক্ষণই আমি আমার দায়িত্ব পালন করব এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করব। পরম সত্য প্রচারের কাজ যে আসলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমি বুঝতাম না। শুধুমাত্র তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে পরম সত্য ছড়িয়ে দেওয়া হল ঈশ্বরের অত্যন্ত জরুরী একটি অভিপ্রায়। পরম সত্য প্রচারের কাজ হল মানবজাতিকে বাঁচানোর কাজ, যা সরাসরি ঐশ্বরিক বিধান প্রচার করে, যা মানুষকে ঈশ্বরের কাজ বুঝতে এবং রক্ষা পাওয়ার জন্য তাঁর কাছে আত্মসমর্পন করার সুযোগ দেয়। এটি সত্যিই একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু ঐশ্বরিক বিধান প্রচার করার মত মানসিকতা আমার ছিল না এবং আমার কাজের প্রতি আমরা সামান্যতম দায়িত্ববোধও ছিল না। যখন লিডার আমাকে পরম সত্য প্রচার করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তখনও আমি প্রতিহত করেছি, প্রত্যাখ্যান করেছি এবং আমার দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছি। আমার বিবেক আর বিচারবুদ্ধির অভাব ছিল! যদি কেউ আমাকে উপদেশ শোনার জন্য আমন্ত্রণ না করত, আমাকে পরম সত্য না জানাতো এবং ঐশ্বরিক বিধান প্রচার না করত, আমি কখনই ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পেতাম না এবং অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ করার সুযোগ পেতাম না। আমি যদি আমার পরম সত্য প্রচার করার ভূমিকা পালন করতে না পারি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করি, তাহলে ঈশ্বর আমাকে তাঁর বিশ্বাসী ও অনুসারী হিসেবে গণ্য করবেন না, তিনি মনে করবেন আমার মধ্যে বিবেক ও মানবতাবোধের অভাব আছে। আমি আমার পরম সত্য প্রচার করার দায়িত্বকে অস্বীকার করেছি এবং প্রত্যাখ্যান করেছি, এমনকি আমি সমাবেশ পরিচালনার কাজে মনোনিবেশ করার জন্য পরম সত্য প্রচারের কাজও পরিত্যাগ করতে চেয়েছিলাম। এখন ভাবি, সেটি একটি বিশাল ভুল ছিল। আমি নো হ-এর গল্প সম্পর্কে ভাবতাম: নো হ যখন ঈশ্বরের বাণী শুনেছিলেন তখন তার মনে কোনো সন্দেহ ছিল না এবং তিনি তার নিজের স্বার্থের কথা ভাবেন নি। তিনি কেবল ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে চেয়েছিলেন, তাঁর ইচ্ছাকে মান্য করতে চেয়েছিলেন এবং ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে নৌকাটি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি পরম সত্য প্রচার করার জন্য তার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। নো হ-এর অভিজ্ঞতাকে আমার অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক বলে মনে হয়েছে। আমি ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি সমর্পণ করতে চাইতাম এবং আমার দায়িত্ব নো হ-এর মত ভালোভাবে পালন করতে চাইতাম। আমাকে সত্যের এই দিকটি বুঝতে এবং আমার ত্রুটিগুলো বুঝতে সাহায্য করার জন্য আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রস্তুত ছিলাম এবং আমাকে যে কাজই দেওয়া হোক না কেন, আমি অবশ্যই পরম সত্য প্রচার করব!

এরপর থেকে, আমি পরম সত্য প্রচার করার দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করি। আমার তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না এবং বিভিন্ন ধরনের মানুষের কাছে উপদেশ দেওয়া আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে অন্যথায় আমি সকল প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি, কিন্তু আমি ছেড়ে দিইনি। আমি ঈশ্বরের বাণীর কথা ভাবতাম, যেখানে বলা হয়েছে: “তুমি যে দায়িত্বেই নিয়োজিত থাকো, তোমার দায়িত্ব যে পেশা বা বিশেষত্বের সাথেই জড়িত থাকুক না কেন, তোমার কাজের সমস্ত ফলাফলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মানবজাতির উদ্ধার সংক্রান্ত ঈশ্বরের কাজের সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ায়, এবং সেই কাজের সাক্ষ্য বহনে, সক্ষম হওয়া। এ-ই হল কোনো সৃষ্ট সত্তার ন্যূনতম কর্তব্যকর্ম(বাক্য, খণ্ড ৪, খ্রীষ্টবিরোধীদের উন্মোচন, প্রথম পরিচ্ছেদ: তারা মানুষকে স্বপক্ষে নিয়ে আসতে চায়)। এই অনুচ্ছেদটি সত্যিই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা ছিল এক কর্তব্য। আমি সমর্পণ করতে প্রস্তুত ছিলাম। এই কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে, কিন্তু আমি জানতাম যে, আমি যতক্ষণ ঈশ্বরের কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করব, তিনি আমাকে পথ দেখাবেন। ধন্যবাদ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে!

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

একটি ঘরোয়া যুদ্ধের নেপথ্যে

২০১০ সালের প্রথম দিকে, আমার স্ত্রী টিভিতে কিছু গুজব এবং নেতিবাচক প্রচার দেখেছিল যা কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা ছড়ান হয়েছিল সর্বশক্তিমান...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন