স্বর্গরাজ্যের পথে কে আমার পথরোধ করে?

01-04-2023

২০২০ সালের আগস্ট মাসে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার একটি অনলাইন সমাবেশে একজন সিস্টার আমাকে আমন্ত্রণ করলেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়ে, অনুসন্ধান এবং তদন্ত করে, আমি নিশ্চিত অনুভব করলাম যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী ঈশ্বরেরই কণ্ঠস্বর, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই ছিলেন প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। আমি ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম, ভীষণ ভাবে আলোড়িত হলাম। আমার ভাইয়েরাও প্রভুর প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ছিলেন। আমি জানতাম খুব শীঘ্র তাদেরকে এই সুসংবাদটি আমাকে দিতে হবে যেন তারাও অন্তিম সময়ে প্রভুর কাজ মেনে নেয়। সুতরাং, আমার তৃতীয় ভাইয়ের কাছে আমি সুমাচার প্রচার করলাম, এবং সে আমাদের বড়ভাইয়ের কাছে, গির্জার লিডারের ঈশ্বরের প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে বললো। অপ্রত্যাশিতভাবে, আমার বড় ভাই জানতে পেরে, সে রাতেই তিনি তড়িঘড়ি করে আমার বাড়িতে চলে এলেন … “হোশিয়, তুমি নাকি বলেছ যে প্রভু যীশু ইতিমধ্যেই এসে গেছেন এবং তিনি তাঁর পরবর্তী ধাপের কাজ করছেন? এটা কীভাবে সম্ভব? প্রভু যীশু আমাদের পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। যখন তিনি ফিরে আসবেন, তিনি সরাসরি আমাদের স্বর্গরাজ্যে উঠিয়ে নিয়ে যাবেন। এটা কীভাবে সম্ভব যে তিনি নতুন করে কাজ করবেন?” “ব্রাদার, আমার ওপর রেগে যাবেন না। যদিও প্রভু যীশু আমাদের পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন, তারপরেও আমরা পাপ করতে পারি, আমাদের পাপী প্রকৃতি এখনও আছে। ঈশ্বর বলেন, ‘অতএব তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র(লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫)। ভাই, আমরা যদি পবিত্র না হই তাহলে আমরা প্রভুকে দেখতে পারবনা, এবং আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবনা যদি আমরা পাপ থেকে শুচি না হই। আমাদের পাপপূর্ণ প্রকৃতিকে দূর করার জন্য এবং গোড়ায় পাপের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বিচারের কাজ করার জন্য আমাদের এখনও ঈশ্বরের প্রয়োজন—” “প্রভু যীশু আমাদের সমস্ত পাপ বহন করার জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। প্রভু আমাদের আর পাপী হিসেবে গণ্য করেন না। তুমি বলছ আমরা শুদ্ধ হইনি, কিন্তু এটা তোমার নিজের ধারণা। বাইবেল তা বলে না। তুমি কি জাননা বাইবেল কী বলে? ‘কেননা অন্তরে বিশ্বাস করলে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয় এবং মুখের স্বীকারোক্তিতে লাভ করা যায় পরিত্রাণ’ (রোমীয় ১০:১০)। প্রভুর প্রতি বিশ্বাসের কারণে আমরা কি ইতিমধ্যেই পরিত্রাণপ্রাপ্ত ন‌ই? প্রভুকে কেন এখনও নতুন করে কাজ করতে হবে?” “ভাই, আপনি যা বলেছন তা সাধু পৌলের কথা, প্রভু যীশুর কথা নয়। প্রভু যীশু কখনও বলেননি যে যারা বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ পায় তারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে। প্রভু যীশু খুব স্পষ্ট করে বলেছেন কে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। ‘যারা আমাকে “প্রভু”, “প্রভু”, বলে ডাকে তারা সকলেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়, কিন্তু যে আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করবে সে-ই শুধু স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে(মথি ৭:২১)। ভাই, স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের জন্য আমাদের ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে হবে এবং ঈশ্বরের কথা অনুসারে কাজ করতে হবে। আমরা কি এই শর্ত পূরণ করি? আমরা এখনও প্রায়শই পাপ করি, এবং আমরা প্রভুর বাক্য পালন করতে পারি না। প্রভু যীশু আমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসতে বলেন। আমরা কি তা করতে সক্ষম? আমরা ভালোবাসতে তো পারিই না, বরং আমরা পারি ঈর্ষান্বিত হতে, তাদের ঘৃণা করতে, এবং আমরা প্রায়শই পাপের মধ্যে বাস করি। আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য নই। এই কারণেই ঈশ্বর অন্তিম সময়ে কথা বলতে এবং বিচার কাজের জন্য প্রত্যাবর্তন করবেন। তিনি এটা করেন মানুষের পাপপূর্ণ প্রকৃতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, আমাদের পাপের সমস্যার মূলে সমাধান করার জন্য, এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মানুষকে বিশুদ্ধ করতে ও পরিত্রাণ দিতে। প্রভু যীশু স্বয়ং ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ‘যে আমার বাণী গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে তার বিচার হবে অন্যভাবে। শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক(যোহন ১২:৪৮)। এবং বাইবেল বলে, ‘বিচারের কাল সমাগত, ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে শুরু(১ পিতর ৪:১৭)।” “যথেষ্ট হয়েছে! তুমি দাবি করছ যে প্রভু যখন প্রত্যাবর্তন করবেন তখন তিনি আরেক ধাপ কাজ করবেন। তারমানে হল প্রভু যীশুর মুক্তির কাজ অর্থহীন? এটা কি বৃথা হবে না?” আমি ভাইয়েরকথা শুনে কিছুটা উদ্বিগ্ন বোধ করলাম। আমি কীভাবে আলোচনা করতে পারি যাতে তিনিঈশ্বরের কাজ বুঝতে পারেন এবং তার পূর্বধারণা থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে পারেন? তখন আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর কথা ভাবছিলাম যা আমাকে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে। “যদিও যীশু মানুষের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সমস্ত মানবজাতির মুক্তি সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন; তিনি মানুষকে তার সমস্ত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্তি দেননি। শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য শুধু যীশুর পাপস্খালনের বলি হওয়া আর মানুষের পাপ বহন করার প্রয়োজন ছিল তাই নয়, বরং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে তার শয়তানোচিত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের আরো মহত্তর কর্মের প্রয়োজন ছিল। এবং তাই, এখন যখন মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, ঈশ্বর মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহরূপে ফিরে এসেছেন এবং শাস্তি ও বিচারের কাজ শুরু করেছেন। এই কাজ মানুষকে এক উচ্চতর জগতে নিয়ে এসেছে। যারা তাঁর রাজত্বের অধীনে আত্মসমর্পণ করে তারা উচ্চতর সত্য উপভোগ করবে এবং বৃহত্তর আশীর্বাদ লাভ করবে। তারা প্রকৃতপক্ষেই আলোতে বাস করবে, এবং তারা সত্য, পথ ও জীবন লাভ করবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। ঈশ্বরের বাণী আমার হৃদয়কে স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল করে তুলল। আমি আমার ভাইকে বললাম, “যে ঈশ্বর বিচারের কাজ করার জন্য অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করবেন এর অর্থ এই নয় যে প্রভু যীশুর মুক্তির কাজ অর্থহীন। প্রভু যীশু মানুষের পাপ ক্ষমা করেছিলেন যাতে তারা আইন দ্বারা আর নিন্দিত এবং মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত না হয়, কিন্তু প্রভু যীশু যা করেছিলেন তা ছিল কেবল মুক্তির কাজ, মানুষকে শুদ্ধ ও উদ্ধার করার কাজ নয়। আমরা সবাই এখনও পাপের মধ্যে বসবাস করছি। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারের কাজ ছাড়া, আমরা পাপ থেকে বাঁচতে পারব না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারব না।” তিনিআমার যুক্তি খণ্ডন করতে পারছেন না দেখে খুব রেগে গিয়ে বললেন, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস তোমার খুব অল্প সময়ের, কিন্তু শিখে ফেলেছ অনেক বেশি। আমি যেটাই বলছি, সেটাই ভুল প্রমাণ করছ, সুতরাং তোমাকে বলার মত আমার আর কিছুই নেই!” এরপর তিনি রেগে গিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি ভাবলাম, “তিনি প্রভুতে বিশ্বাস করেন এবং প্রতিদিন প্রভুর আগমনের জন্য আকুল হয়ে থাকেন, তাহলে কেন, প্রভুর প্রত্যাবর্তনের কথা শুনে, ব্যাপারটা ভেবে না দেখে বরং ক্ষেপে গেলেন? মনে হয় ধর্মীয় বিষয়ে তার এত বেশি পূর্ব ধারণা আছে যে সে এটাকে ঠিক মেনে নিতে পারছেন না। আমাকে তার সাথে আলোচনা করার আরেকটি সুযোগ খুঁজে বের করতে হবে।”

অল্প কিছুদিন পরেই, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি জানতে পেরে আমার দুই বউদি আমার বাড়িতে এসেছিলেন … “হোশিয়, তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস কর, আর তুমি সেই নামেই প্রার্থনা কর, প্রভুর নামে নয়। এটি প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং ধর্মত্যাগী হওয়া।” “ভাল কথা, আপনারা এটা বলছেন ছো কারণ আপনারা এখনও বিষয়টা বুঝতে পারেন নি। আপনারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়েন নি, এবং আপনারাজানেন না যে তিনিই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু এক আত্মা এবং এক ঈশ্বর। ঈশ্বর শুধুমাত্র বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করেন। বিধানের যুগে, ঈশ্বরের নাম ছিল যিহোবা, কিন্তু অনুগ্রহের যুগে, ঈশ্বরের নাম ছিল যীশু। ঈশ্বরের নাম পরিবর্তিত হয়েছে, কিন্তু আপনারা কি বলতে পারেন যে প্রভু যীশু এবং যিহোবা এক ঈশ্বর ছিলেন না? আপনারা কি বলতে পারেন যে প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করা মানে যিহোবা ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ছিল? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, প্রভু যীশু এবং যিহোবা হলেন এক ঈশ্বর। এখানে, আমি আপনাদের একটা ভিডিও দেখাব, তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন।” সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “একসময় আমি যিহোবা নামে পরিচিত ছিলাম। আমাকে মশীহ নামেও ডাকা হত, এবং মানুষ একসময় স্নেহ ও সম্মানভরে পরিত্রাতা যীশু নামেও আমাকে সম্বোধন করত। যদিও আজ, আমি আর সেই অতীতকালের পরিচিত যিহোবা বা যীশু নই; আমি সেই ঈশ্বর যিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন, সেই ঈশ্বর যিনি যুগের অবসান ঘটাবেন। আমি স্বয়ং ঈশ্বর যিনি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে জেগে ওঠেন, সম্পূর্ণ স্বভাব নিয়ে, এবং কর্তৃত্ব, সম্মান, ও মহিমায় পরিপূর্ণ অবস্থায়। মানুষ আমার সঙ্গে কখনো যুক্ত হয় নি, আমাকে কখনো চেনে নি, এবং সর্বদা আমার স্বভাব সম্পর্কে অজ্ঞ হয়েই থেকেছে। বিশ্ব সৃষ্টির কাল থেকে শুরু করে আজ অবধি একজন মানুষও আমাকে দেখে নি। ইনি হলেন সেই ঈশ্বর, যিনি অন্তিম সময়ে মানুষের কাছে আসেন কিন্তু মানুষের মাঝেই প্রচ্ছন্ন থাকেন। তিনি সত্য এবং বাস্তব, জ্বলন্ত সূর্য এবং প্রোজ্জ্বল শিখার মতো শক্তি ও কর্তৃত্বে পরিপূর্ণ হয়ে মানুষের মাঝে বসবাস করেন। এমন একজনও মানুষ বা একটিও বস্তু নেই যাকে আমি আমার বাক্যের দ্বারা বিচার করবো না, এবং জ্বলন্ত আগুনের দ্বারা শুদ্ধ করবো না। অবশেষে সকল জাতি আমার বাক্যের দ্বারা আশীর্বাদ লাভ করবে, এবং আমার বাক্যের জন্যই খণ্ড-বিখণ্ড হবে। এইভাবে অন্তিম সময়ে সকল মানুষ দেখবে যে আমিই সেই ফিরে আসা পরিত্রাতা, এবং আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিনি সমগ্র মানবজাতিকে জয় করেন। এবং সবাই দেখবে যে একসময় আমি ছিলাম মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি, কিন্তু অন্তিম সময়ে আমি হয়ে উঠি সূর্যের লেলিহান শিখা, যা সবকিছু ভস্মীভূত করে, এবং আমিই সেই ন্যায়পরায়ণতার সূর্য, যা সবকিছু প্রকাশিত করে। অন্তিম সময়ে এটিই আমার কার্য। আমি এই নাম এবং এই স্বভাব গ্রহণ করলাম, যাতে সকলে দেখতে পায় যে আমি ধার্মিক ঈশ্বর, এক জ্বলন্ত সূর্য, এক লেলিহান শিখা, এবং যাতে সকলে একমাত্র সত্য ঈশ্বর হিসেবে আমার উপাসনা করে, এবং যাতে তারা আমার প্রকৃত রূপ দেখতে পায়: আমি কেবলমাত্র ইসরায়েলীদের ঈশ্বর নই, এবং আমি শুধুমাত্র মুক্তিদাতা নই; আমি সমগ্র আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্রের সকল জীবের ঈশ্বর(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)। ঈশ্বরের বাণী পড়ার পর, আমি বউদিদের সাথে আলোচনা করলাম, “ঈশ্বরের নাম যুগের সাথে এবং ঈশ্বরের কাজের পর্যায়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। ঈশ্বর বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নাম ধারণ করেন, প্রতিটি যুগের জন্য একটি নাম, এবং একেকটা নাম একেকটা যুগে ঈশ্বরের কাজের প্রতিনিধিত্ব করে। বিধানের যুগে, ঈশ্বর ‘যিহোবা’ নামে আদেশ জারি করেছিলেন এবং মানবজাতিকে পৃথিবীতে বাস করতে শিখিয়েছিলেন। অনুগ্রহের যুগে, ঈশ্বরের আত্মা প্রভু যীশুরূপে দেহধারণ করে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং মানবজাতির জন্য মুক্তির কাজ করেছেন। অন্তিম সময়ে, ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অবতাররূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। সত্য প্রকাশ করতে এবং বিচারের কাজ ও মানুষকে শুদ্ধ করতে। বাইরে থেকে, ঈশ্বরের নাম ও কাজ বদলে গেলেও, ঈশ্বরের সারসত্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। ইনি সর্বদা একই ঈশ্বর যিনি মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য কাজ করেন।” আমি তাদেরকে একটি উদাহরণ দিলাম। কেউ একজন হাসপাতালে কাজ করতে পারে, এবং সবাই তাকে “ডাক্তার” বলে ডাকে। কিন্তু একদিন, তিনি শেখানোর সিদ্ধান্ত নেন, তখন সবাই তাকে “শিক্ষক” বলে ডাকে। এবং পরে, একই ব্যক্তি একটি গির্জায় ধর্ম প্রচার করতে যান, তখন সবাই তাকে “যাজক” বলে ডাকে। আপনারাদেখলেন তো? তার কাজ বদলে গেছে সাথে তার নামটাও বদলে গেছে। কিন্তু তিনি একই ব্যক্তি। তিনি এখনও সেই একই ব্যক্তি আছেন। ঠিক একইভাবে, ঈশ্বর একেক যুগে একেক নাম ব্যবহার করেন, কিন্তু ঈশ্বরের সত্তা এবং পরিচয় বদলে যায় না। যখন আমরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামে প্রার্থনা করি, তখন আমরা প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছি না এবং ধর্মত্যাগ করছি না, আমরা প্রভুকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। কথা বলতে বলতে হঠাৎ আমার বড় ভাই ও তৃতীয় ভাই এসে হাজির। বড় ভাই রেগে গিয়ে আমাকে বাধা দিল। “ওর সাথে আর কথা বোলো না। ওর সাথে কথায় জিততে পারবে না। তুমি যাই বলবে, ওর কাছে তারই উত্তর আছে, সুতরাং কথা বলে লাভ আছে?” “হোশিয়, তুমি ভুল জিনিসে বিশ্বাস করো। এখন থেমে যাও।” “তুমি বলছ যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন প্রত্যাবর্তনকারী প্রভু যীশু। যাও যাজক কে গিয়ে সে কথা বলো, যদি যাজক বলেন যে এটা সত্য পথ, তাহলে সবাই মিলে এটা বিশ্বাস করা যাক, আর যদি তা না হয়, তাহলে গির্জায় ফিরে এসো এবং আমাদের মত বিশ্বাস করো। তোমরা সবাই রক্তের ভাই, তোমরা একেকজন একেক পথে যেতে পারো না।” আমি যখন দেখলাম আমার ভাই ও বোনেরা যাজককে কীভাবে ভক্তি করে, তখন তাদের বললাম, “আমাদের বিশ্বাসীদের উচিত সর্বোপরি ঈশ্বরের অনুগত হওয়া এবং তাঁকে সম্মান করা। লোকজন যা বলে তা আমরা অন্ধভাবে মানতে পারি না। বিশেষ করে যখন প্রভুকে স্বাগত জানানোর কথা আসে, তখন আমরা যাজককে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে পারি না। প্রভু যীশু বলেছিলেন ঈশ্বরের মেষ শাবক তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পান। আমাদের উচিত ঈশ্বরের বাণী শোনার উপর মনোযোগ দেওয়া যাতে আমরা প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারি।” আমি তাদের এও বললাম, “যখন প্রভু যীশু কাজের জন্য প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, তখন যারা ইহুদী ধর্মে বিশ্বাসী তারা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে চায়নি। প্রভু যীশুকে প্রতিরোধ ও নিন্দা করতে তারা অন্ধভাবে ফরীশীদের অনুসরণ করেছিল। ফলস্বরূপ, তারা প্রভুর পরিত্রাণ হারায়। এটা হলো আমাদের জন্য শিক্ষা।” কিন্তু আমি যাই বলি না কেন, আমার ভাই ও বৌদিরা শুনবে না, এবং তারা জোর দিয়ে বলছিল যে যাজক ভুল হতেই পারে না। তাদের মনোভাব দেখে, আমি চিন্তা করলম, “তারা খুবে বেশি যাজক পূজারী যদি যাজক এটা মেনে নেন, তাহলে তারাও মেনে নিবে।”

২০২১ সালের জানুয়ারিতে একদিন, যাজক এবং নেতৃবৃন্দ আমার বাড়িতে এসেছিলেন, এবং তাদের কাছে সুমাচার প্রচার করার একটা সুযোগ নিয়ে নিলাম। “মথি ২৪:৩৭ এ বলা আছে, ‘নোহের সময়ে যা ঘটেছিল, মনুষ্যপুত্রের আবির্ভাবের সময়েও ঠিক তাই ঘটবে।’ এবং ২৪:৪৪ এ বলা আছে, ‘কাজেই তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকবে, কারণ মনুষ্যপুত্র এমন সময়ে আসবেন, যে সময়ে তাঁর আগমন প্রত্যাশা করবে না।’ লুক ১৭:২৪-২৫ এ বলা আছে, ‘বিদ্যুৎ ঝলকে যেমন আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, তেমনি করে মনুষ্যপুত্রও তাঁর দিনে উদ্ভাসিত হবেন। কিন্তু প্রথমে তাঁকে দুঃখ যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে এবং এ যুগের লোক তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে।’ ভবিষ্যদ্বাণীতে উল্লেখ আছে, ‘মনুষ্যপুত্র আসছেন’ এবং ‘মনুষ্যপুত্র আসেন।’ সুতরাং, মনুষ্যপুত্র কে? মনুষ্যপুত্রকে ঈশ্বরের অবতার হিসেবে বোঝানো হয়েছে। প্রভু যীশু ছিলেন মনুষ্যপুত্র কারণ তিনি ছিলেন ঈশ্বরের আত্মার অবতার। একটা আত্মাকে মনুষ্যপুত্র বলা যায় না। সুতরাং, ভবিষ্যদ্বাণী বলে যে প্রভু অন্তিম সময়ে মনুষ্যপুত্র হিসাবে প্রত্যাবর্তন করবেন, যার অর্থ তিনি দেহ ধারণ করে আসবেন। যদি প্রভু যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ পুনরুত্থানের পরে মেঘের উপর নেমে আসে এবং মহান গৌরব সহ সকলের কাছে উপস্থিত হন, তখন কার সাহস আছে তাঁকে প্রতিরোধ এবং নিন্দা করবে? তবুও প্রভু যীশু বলেছেন, ‘প্রথমে তাঁকে দুঃখ যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে এবং এ যুগের লোক তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে।’ এই ভবিষ্যদ্বাণী কীভাবে পূর্ণ হয়? শুধুমাত্র যদি ঈশ্বর দেহধারণ করে মনুষ্যপুত্র রূপে অবতীর্ণ হন, যিনি একজন সাধারণ এবং স্বাভাবিক ব্যক্তি হিসাবে আবির্ভূত হন, এমন একটি বেশে যে মানুষ চিনতে পারবে না, তখন কি তিঁনি নিন্দিত এবং প্রত্যাখ্যাত হবেন। অতএব, প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, প্রভু অন্তিম সময়ে অবতার হয়ে ফিরে আসবেন, এবং এটি একেবারে নিশ্চিত।” “বাইবেলের এই সমস্ত শ্লোকে উল্লেখ রয়েছে ‘মনুষ্যপুত্র’ এবং এর অর্থ হলো প্রভু যীশু।” “ভ্রাতা এলিয়ান, প্রভু যীশু স্পষ্টভাবে বলেন। এগুলি প্রভুর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী, প্রভু যীশুর নয়।” “বাইবেল বলে, ‘তখন আকাশের বুকে মনুষ্যপুত্রের আগমনের চিহ্ন প্রকাশ পাবে, আর পৃথিবীর সমস্ত জাতি বক্ষে করাঘাত করে বিলাপ করবে। তারা মনুষ্যপুত্রকে মহাপরাক্রমে মহিমান্বিত হয়ে মেঘবাহনে আসতে দেখবে(মথি ২৪:৩০)। প্রভু মেঘের ওপর সওয়ার হয়ে ফিরে আসবেন, কিন্তু তুমি বলছ তিনি দেহ ধারণ করে আসবেন। এই বিষয়গুলো কি বিরোধপূর্ণ নয়? আমরা প্রভু যীশুর জন্য অপেক্ষা করছি যিনি মেঘের উপর অবতরণ করবেন। এখন, সময় ঘনিয়ে এসেছে, সব ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, এবং প্রভু আমাদের স্বর্গরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মেঘের উপর আসতে চলেছেন। প্রভুর উপর এত বছরের বিশ্বাসের পরেও তুমি প্রায় সেখানেই আছ, কিন্তু তুমি, সবকিছু বাদ দিয়েছ।” “যাজক জ্যাক্সন, আপনি এইমাত্র যে ভবিষ্যদ্বাণীটি উল্লেখ করেছেন তাও সত্য, কিন্তু ঈশ্বরের দেহধারণ আর তাঁর মেঘের ওপরে অবতরণ পরস্পর বিরোধী নয়। আমি প্রথমে এই প্রশ্নটি বুঝতে পারিনি। পরে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়ে আমি উপলব্ধি করলাম যে প্রভুর প্রত্যাবর্তন ঘটবে দুটি ধাপে। প্রথমে তিনি সত্য প্রকাশ এবং বিচার কাজের জন্য মনুষ্যপুত্র হিসাবে গোপনে আসবেন, অতঃপর একদলকে বিজয়ী করার পর, ঈশ্বর বিপর্যয় পাঠাবেন ভালোকে পুরস্কৃত করার জন্য এবং মন্দকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। বিপর্যয়ের পরে, ঈশ্বর মেঘের উপর অবতরণ করবেন এবং সকলের কাছে প্রকাশ্যে উপস্থিত হবেন। সেই সময়, যারা প্রতিরোধ করেছিল এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নিন্দা করেছিল তারা কাঁদবে এবং দাঁতে দাঁত ঘষবে, যা সম্পূর্ণরূপে মেঘের উপর প্রভুর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করে, ‘দেখ, মেঘবাহনে তিনি আসিতেছেন! প্রতিটি নয়ন তাঁকে দেখবে, দেখবে তারাও যারা তাঁকে বিদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর সমস্ত মানবগোষ্ঠী তাঁর জন্য বিলাপ করবে(প্রকাশিত বাক্য ১:৭)।” তখন যাজক ও অন্যরা অবাক হয়ে চুপ হয়ে গেল। আমি তাদের কাছে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ পড়ে শোনালাম। “তোমরা যখন তোমাদের নিজেদের চোখে যীশুকে স্বর্গ থেকে সাদা মেঘে চড়ে অবতীর্ণ হতে দেখবে, তা হবে ন্যায়পরায়ণতার সূর্যের জনসমক্ষে আবির্ভাব। হয়তো তোমার জন্য তা দারুণ উত্তেজনার এক মুহূর্ত হবে, তবু তোমার জানা উচিত যে, যে সময়ে তুমি স্বর্গ থেকে যীশুকে অবতীর্ণ হতে দেখবে, সেই একই সময়ে তুমিও শাস্তি ভোগ করার জন্য নরকে নিমজ্জিত হবে। সেই সময়েই ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটবে, এবং সেই সময়েই ঈশ্বর শিষ্টকে পুরস্কৃত করবেন এবং দুষ্টকে দণ্ড দেবেন। মানুষের কোনো প্রতীক দেখতে পাওয়ার আগেই ঈশ্বরের বিচার সম্পন্ন হয়ে যাবে, শুধুমাত্র সত্যের অভিব্যক্তিই থেকে যাবে। যারা প্রতীক না খুঁজে সত্যকে স্বীকার করে এবং ফলত যারা পরিশুদ্ধ, তারা ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে ফিরে যাবে এবং সৃষ্টিকর্তার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হবে। কেবলমাত্র যারা এই বিশ্বাসে অনড় থাকবে যে ‘যে যীশু সাদা মেঘে চড়ে আসে না, সে ভণ্ড খ্রীষ্ট’, তারা চিরকালীন দণ্ড ভোগ করবে, কারণ তারা কেবলমাত্র সেই যীশুকে বিশ্বাস করে যিনি প্রতীক প্রদর্শন করেন, কিন্তু সেই যীশুকে স্বীকার করে না যিনি কঠোর রায় ঘোষণা করেন এবং প্রকৃত পথ ও জীবনকে প্রকাশিত করেন। আর তাই এটাই হতে পারে যে যীশু যখন সাদা মেঘে চড়ে সবার সামনে প্রত্যাবর্তন করবেন, কেবল তখনই তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করবেন। তারা অত্যন্ত জেদী, নিজেদের ওপর অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, অত্যন্ত অহংকারী। এরকম অধঃপতিতেরা কীভাবে যীশুর দ্বারা পুরস্কৃত হতে পারে? যারা সত্য স্বীকার করতে সক্ষম, তাদের জন্য যীশুর প্রত্যাবর্তন এক মহান পরিত্রাণ, কিন্তু যারা সত্যকে স্বীকার করতে অক্ষম, তাদের জন্য এটা তিরস্কারের প্রতীক। তোমাদের নিজেদের পথ নিজেদের বেছে নেওয়া উচিত এবং পবিত্র আত্মার ধর্মনিন্দা বা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত না। তোমাদের অজ্ঞ এবং অহংকারী মানুষ হওয়া উচিত না, এমন একজন মানুষ হওয়া উচিত যে পবিত্র আত্মার নির্দেশিকা মান্য করে এবং সত্যকে খোঁজার কামনা করে; একমাত্র এই উপায়েই তোমরা লাভবান হবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন)। ঈশ্বরের কর্তৃত্বপূর্ণ বাক্য শুনে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর যাজক কথা বললেন। “তুমি এইমাত্র বললে যে এগুলো ঈশ্বরের নতুন বাণী? ঠিক। ঈশ্বরের বাণী সব বাইবেলে আছে, এবং বাইবেলের বাইরে ঈশ্বরের কোনো বাণী নেই। যদি কিছু থেকে থাকে তবে সেগুলি বাইবেলের সংযোজন। প্রকাশিত বাক্যে সুস্পষ্ট বলা আছে, ‘যারা এই গ্রন্থের ভাবোক্তির বাণী শোনে, তাদের প্রত্যেককে আমি সতর্ক করে দিচ্ছি: যদি কেউ এর সঙ্গে আর কিছু যোগ করে তাহলে ঈশ্বর এই গ্রন্থে উল্লিখিত সমস্ত আঘাতে তাকে জর্জরিত করবেন। যদি কেউ এই ভাবোক্তি গ্রন্থ থেকে কিছু হরণ করে তাহলে ঈশ্বর জীবনগ্রন্থ থেকে, পবিত্র নগর থেকে, এবং এই গ্রন্থে বর্ণিত বিষয়াদি থেকে তার অংশ বাদ দেবেন(প্রকাশিত বাক্য ২২:১৮-১৯)।” “যাজক জ্যাক্সন, যখন এখানে বলা আছে কিছু যোগ বা বিয়োগ করা যাবে না, এটা মানুষকে সতর্ক করে দিচ্ছে যে তারা প্রকাশিত বাক্য পুস্তকে ভবিষ্যদ্বাণীগুলিকে যথেচ্ছভাবে যুক্ত বা মুছে ফেলবে না, এর মানে এই নয় যে ঈশ্বর আর নতুন বাণী বলবেন না। প্রভু যীশু নিজেই বলেছেন, ‘তোমাদের আরও অনেক কথা আমার বলার আছে কিন্তু এখন তোমাদের পক্ষে তা হৃদয়ঙ্গম করা কঠিন। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনিই তখন তোমাদের সব সত্যের দিকনির্দেশনা দেবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)। প্রভু যীশু খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন, যখন তিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করবেন, তখন তিনি আমাদের সমস্ত সত্যের দিকে পরিচালিত করার জন্য অনেক বাণী প্রকাশ করবেন। আপনার উপলব্ধি অনুযায়ী, ঈশ্বর যখন অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করবেন তখন তিনি আর বাণী প্রকাশ করবেন না। তাহলে প্রভু যীশুর এই বাণীগুলো কিভাবে পূর্ণ ও সম্পন্ন হবে? ঈশ্বর সত্য, জীবনের উৎস, জীবন্ত জলের চির প্রবাহিত ঝর্ণা। আপনি ঈশ্বরের বাক্য এবং কাজকে বাইবেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন, যেন ঈশ্বর কেবল বাইবেলেই এই কথাগুলো বলতে পারেন। এটা কি ঈশ্বরকে সীমাবদ্ধ ও ছোট করা নয়?” আমার কথা শুনে যাজক জ্যাক্সন কথা বলা বন্ধ করে দিলেন। আমি ভাবলাম, “আমি যাজকদের ভক্তি করতাম। আমি ভেবেছিলাম তারা বাইবেলের সাথে পরিচিত এবং ঈশ্বরের জ্ঞান তাদের রয়েছে। আমি হতবাক যে, তারা বাইবেল বোঝে না, এমনকি তারা ঈশ্বরের কাজকেও সীমাবদ্ধ করে।” আমি হতাশ হয়েছিলাম।

বেশ কিছু তর্ক বিতর্কের পর, যাজক যখন দেখলেন যে আমি আমার বিশ্বাসে অটল রয়েছি, তখন তিনি আমাকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের হেত্বাভাস বা কুতর্ক ব্যবহার করতে লাগলেন। আমি ঈশ্বরের বাণী ব্যবহার করে তার প্রত্যেকটা কুতর্ক খন্ডন করেছি, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের সাক্ষ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা একটা কথাও শুনলেন না। এবং বিতর্কের শেষে, যাজক জ্যাক্সন যখন দেখলেন যে তিনি আমার যুক্তি আর খণ্ডন করতে পারছেন না তখন তিনি আর একটা কথাও বললেন না। তার সাথে আসা এলিয়ান আমাকে বললেন, “হোশিয়, আমরা চাই তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা বন্ধ কর কারণ তোমার জীবনের জন্য আমরা দায়বদ্ধ হবো। আমরা ভালবাসা থেকেই এটা করছি। আমরা ভয় পাচ্ছি তুমি ভুল পথ গ্রহণ করবে। যারা তোমার মতো বাইবেল বোঝে তাদের উচিত গির্জার নেতা হওয়া এবং আমাদের কাজে সহযোগিতা করা। তাহলে খুবই ভালো হবে।” যখন তাকে এই কথা বলতে শুনলাম, তখন আমি বাইবেলে প্রভু যীশুকে প্রলুব্ধকারী শয়তানের বাণীগুলোর কথা ভাবছিলাম, “এরপর শয়তান যীশুকে নিয়ে গেল খুব উঁচু একটি পাহাড়ে। এবং সে তাঁকে জগতের রাজ্যপাট ও সেগুলোর বৈভব দেখাল। তারপর সে যীশুকে বলল তুমি যদি ভূমিষ্ঠ হয়ে আমাকে প্রণাম কর তাহলে এ সবই আমি তোমাকে দিয়ে দেব” (মথি ৪:৮-৯)। তারা আমাকে যে গির্জার নেতা হওয়ার কথা বলছিল এটা ছিল আসলে শয়তানের একটা প্রলোভন। তারা ভেবেছিল যদি তারা আমাকে প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা দিয়ে প্রলুব্ধ করে তবে আমি তাদের সাথে যাব। প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল! তারা প্রভুর আগমনের সংবাদ শুনেছে, কিন্তু তারা সত্য অন্বেষণ এবং তদন্ত না করে বরং আমাকে সত্য পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ব্যাপারটা ছিল খুবই ছলনাপূর্ণ! তাই, আমি তাদের প্রত্যাখ্যান করেছি। “আমি গির্জায় ফিরে যাচ্ছি না। এখন, প্রভু যীশু নতুন কাজ করার জন্য প্রত্যাবর্তন করেছেন। তিনি আর অনুগ্রহের যুগের গির্জায় কাজ করেন না। তাহলে গির্জায় গিয়ে আমার কী উপকারটা হবে? আমাদের উচিত ঈশ্বরের নতুন কাজ মেনে নেয়া এবং ঈশ্বরকে অনুসরণ করা, তা না হলে প্রভু আমাদের পরিত্যাগ করবেন এবং আমাদের নিক্ষিপ্ত করবেন। এটা ঠিক সেই সময়ের মত যখন প্রভু যীশু কাজ করতে এসেছিলেন। শিষ্যরা প্রভু যীশুর বাণী শুনেছিলেন, প্রভুর কণ্ঠস্বর চিনতে পেরেছিলেন, প্রভুর অনুসরণ করেছিলেন এবং প্রভুর পরিত্রাণ পেয়েছিলেন, আর যারা মন্দিরের আইন পালন করত প্রভু তাদের পরিত্যাগ এবং নিক্ষিপ্ত করেছিলেন। এই সত্য সম্পর্কে আপনাদের সবচেয়ে বেশি সচেতন হওয়া উচিত। প্রভু অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আমরা যদি তাঁর কণ্ঠস্বর না শুনি, তাহলে আমরা কীভাবে তাঁকে স্বাগত জানাব? প্রভু যীশু বলেছেন, ‘আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে(যোহন ১০:২৭)। প্রকাশিত বাক্যেও এ বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা আছে, ‘শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন(প্রকাশিত বাক্য, অধ্যায় ২, ৩)। ‘দেখ, আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে করাঘাত করছি। যে আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়, আমি ভেতরে তার কাছে যাব, তার সঙ্গে পানাহার করব, সেও আমার সঙ্গে পানাহার করবে(প্রকাশিত বাক্য ৩:২০)। যাজক জ্যাক্সন, প্রভুকে স্বাগত জানাতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রভুর কণ্ঠস্বর শোনা। যদি কেউ সাক্ষ্য দেয় যে তিনি প্রত্যাবর্তন করেছেন, আমাদের অবশ্যই পূর্বধারণাগুলিকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে, আমাদের অনুসন্ধান এবং তদন্ত করতে হবে। অন্যথায়, আমরা প্রভুকে স্বাগত জানাতে এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারব না।” “আমাদের ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনার দরকার নেই, আমাদের শুধু অপেক্ষা করতে হবে প্রভু তাঁর স্বর্গরাজ্যে আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য কখন মেঘের উপর অবতরণ করবেন। যদি সেই দিন আসে যেদিন প্রভু যীশু মেঘের ওপর অবতরণ করবেন আর আমরা সেদিন কাঁদছি আর দাঁতে দাঁত ঘষছি, তখন আমরা তার দায়ভার বহন করব। কিন্তু আমি অবশ্যই তোমার কাছে বিষয়গুলি পরিষ্কার করব। তুমি যদি ভুল বিশ্বাস কর এবং ভুল পথে যাও তাহলে আমাদের দোষারোপ করবে না। এখন যদি তুমি সবকিছু ঘুরিয়ে দিতে চাও, তুমি এখনও গির্জায় ফিরে যেতে পার। আমি তোমাকে এ বিষয়ে ভাবার জন্য আরও কয়েক দিন সময় দেব। এখন থেকে সাত দিন, এরপর গির্জায় এসে আমাকে উত্তর দেবে। এবং আমি তোমাকে সতর্ক করছি, গির্জায় তুমি তোমার এই সুসমাচার প্রচার করতে পারবে না। যদি আমাদের গির্জার কেউ তোমার কারণে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে শুরু করে, তাহলে আমি তোমাকে দেখে নেব!” যাজক কথা শেষ করার পর, তিনি আমার পরিবারকে বললেন, “আমরা অনেক বলেছি, কিন্তু সে শোনেনি। আপনারা তার পরিবার, তাই আপনারাই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন।” তারপর, যাজক ক্ষুব্ধ হয়ে চলে গেলেন।

আমার পরিবার আমার ওপর ভীষণ চটে গেল যখন তারা দেখল যে আমি যাজকের কথা শুনলাম না, সুতরাং তারা সবাই আমাকে গালিগালাজ করতে চলে এলো। এবং এমনকি আমার দ্বিতীয় ভাই আমাকে আক্রমণের হুমকি দিলো। “আমরা যাজককে ডাকলাম, আর তুমি আমাদের বিব্রত করলে। যাজক অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু তুমি একটা কথাও শোননি, এবং তুমি এখনও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করার জন্য জোর দিয়ে যাচ্ছো। তাই আমি তোমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবো!” “দয়া করে শোনো, আমি কি ভুল করেছি যে তুমি আমাকে মারতে চাচ্ছো? প্রভু এসেছেন। আমি কেবলমাত্র তাঁর কন্ঠস্বর শুনেছি এবং তাঁকে স্বাগত জানিয়েছি। তোমরা আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করছো কেন? তুমি কি এখনও ঈশ্বরে বিশ্বাসী?” “তুমি এমনকি যাজকের কথাও শুনো না। তোমার সমস্যা কি?” “তুমি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করো নাকি যাজককে বিশ্বাস করো? শুধু আমার অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ মেনে নেয়ার জন্য, যাজক আমাকে এভাবে বাধা দেন এবং বিরক্ত করেন। আমি মনে করি যাজক এবং সেই নেতারা হলো ভণ্ড ফরিশী। এখন ঈশ্বর প্রত্যাবর্তন করেছেন, তিনি নতুন কাজ করছেন, এবং তিনি অনেক সত্য প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তারা নিজেরা সত্য অন্বেষণ এবং তদন্ত করে না, এবং তারা প্রভুকে স্বাগত জানাতে অন্যদের বাধা দেয়। এমনকি তারা আমাকে সত্য পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পদমর্যাদা ব্যবহার করে আমাকে প্রলুব্ধ করেছে, বলে এটা আমার জীবনের জন্য। এটা কি নিছক একটা মিথ্যা কথা নয়? ওরা আমাকে ফাঁদে ফেলে আমাকে ধ্বংস করতে চায়! প্রভু যীশু ফরিশীদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন এই বলে, ‘ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না। … একটি লোককে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও, আর কাউকে যখন তা করতে পার তখন তাকে নিজেদের চেয়েও বড় নরকের সন্তান করে তোল(মথি ২৩:১৩, ১৫)। তাহলে যাজক এবং নেতা এবং ফরীশীদের মধ্যে পার্থক্য কি? তোমরা কিভাবে তাদের পাশে দাঁড়াও?” “যদি যাজক তোমাকে বহিষ্কার করে, তাহলে তোমার সঙ্গে আমাদের মধ্যে আর ভাইয়ের সম্পর্ক থাকবেনা, আর তুমি বাঁচো কি মরো তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা। তোমার কাছে আমরা যত টাকা পাই সব ফেরত দাও। দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা ফেরত চাই।”

তাদের এত হৃদয়হীন হতে দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। যখন তারা সমস্যায় পড়েছিল, আমি তাদের সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখন তারা আমার সাথে এইরকম আচরণ করছে। যে ভাইদের আগে ভালো জানতাম তারা কিভাবে এরকম হলো? এই ধরনের লোকেরা কীভাবে আমার পরিবারের সদস্য হয়? সেই রাতে, আমি বিছানায় শুয়েছিলাম এবং ঘুমাতে পারিনি। ভাবতে ভাবতে এতটাই কষ্ট হচ্ছিল যে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, ঈশ্বরকে বললাম আমাকে বিশ্বাসে অটল রাখতে এবং তাঁর ইচ্ছা উপলবদ্ধি করার জন্য আমাকে দিক নির্দেশনা দিতে। যাতে আমি জানতে পারি কীভাবে এসব পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা লাভ করতে হয়। প্রভু যীশু কি বলেছেন সে কথা আমি স্মরণ করলাম, “এ কথা মনে করো না যে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি্, শান্তি নয়, আমি এসেছি খড়্গ দিতে। আমি এসেছি পুত্রকে তার পিতার বিরুদ্ধে, কন্যাকে তার মাতার বিরুদ্ধে, পুত্রবধূকে তার শাশুড়ীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে। ফলে মানুষের আপনজনেরাই মানুষের শত্রু হয়ে উঠবে(মথি ১০:৩৪-৩৬)। “জগতসংসার যদি তোমাদের ঘৃণা করে, জেনো, তোমাদের আগে জগত আমাকেই ঘৃণা করেছে(যোহন ১৫:১৮)। প্রভুর বাণী সত্য, এবং প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পূর্ণ হয়েছিল। অন্তিম সময়ে আমি ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করেছি শুধুমাত্র একারণেই, আমার যাজক এবং আমার ভাইয়েরা আমাকে বাধা দেবার এবং নিগৃহীত করার চেষ্টা করছে। তারা আমাকে ঘৃণা করে না, তারা ঘৃণা করে ঈশ্বরকে। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে যা কিছু ঘটেছিল তা চিন্তা করার পরে, আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ ছিলাম। ঈশ্বরের বাণী আমাকে ভেঙ্গে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেছে এবং আমার যাজক ও পরিবারের বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করেছে, এবং তাদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বিচক্ষণতাও দিয়েছে।

একদিন, এক বোন আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন এবং আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ পাঠিয়েছেন। “নিরুৎসাহিত হয়ো না, দুর্বল হয়ো না, আমি তোমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট করে তুলব। রাজ্যের পথ অতটাও মসৃণ নয়, কোন কিছুই এত সহজ নয়! তোমরা চাও খুব সহজেই তোমাদের কাছে আশীর্বাদ আসুক, তাই নয় কি? আজ, সবাইকে তিক্ত পরীক্ষাসমূহের সম্মুখীন হতে হবে। এই পরীক্ষাসমূহ ব্যতীত, আমার জন্য তোমাদের প্রেমময় হৃদয় আরো শক্তিশালী হয়ে বিকশিত হবে না এবং আমার জন্য তোমাদের প্রকৃত ভালোবাসা থাকবে না। এমনকি, যদিও এই পরীক্ষাগুলি খুব সাধারণ ঘটনা সংক্রান্তও হয়ে থাকে তাহলেও, এগুলির মধ্যে দিয়েই সকলকে উত্তীর্ণ হতে হবে; তবে পরীক্ষাগুলি কতটা কঠিন হবে তা ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করছে। পরীক্ষাগুলি আমাকৃত আশীর্বাদ, এবং তোমাদের মধ্যে কতজন আমার সম্মুক্ষে এসে নতজানু হয়ে আমার আশীর্বাদ ভিক্ষা করেছ? বোকা সন্তানের দল! তোমরা সবসময় মনে করো কয়েকটি শুভ বাক্যই আমার আশীর্বাদ। কিন্তু এটা স্বীকার করো না যে তিক্ততাও আমারই এক আশীর্বাদ। যারা আমার তিক্ততার ভাগীদার হবে, তারা অবশ্যই আমার মাধুর্যও লাভ করবে। তোমাদের কাছে এটাই আমার অঙ্গীকার এবং আশীর্বাদ। আমার বাক্য ভোজন, পান ও উপভোগে দ্বিধা কোরো না। অন্ধকার দূরীভূত হলে, আলোকের আগমন ঘটে। ভোরের আগেই অন্ধকার প্রগাঢ়তম হয়, তারপর আকাশ ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে থাকে, এবং, অতঃপর সূর্যোদয় হয়। ভয় পেয়োনা বা সংকুচিত হয়ে থেকো না(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ৪১)। তিনি আমার সঙ্গে আলাপ করলেন, “আমরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি এবং প্রভুকে স্বাগত জানাই, কিন্তু শয়তান চায় না যে আমরা ঈশ্বরের দ্বারা পরিত্রাণ পাই বা লাভবান হই, তাই শয়তান আমাদের বাধা প্রদান এবং বিরক্ত করার জন্য বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করে। কিন্তু ঈশ্বর এতে সম্মতি দেন, কেন? মানুষের বিশ্বাস সত্য না মিথ্যা ঈশ্বর তা প্রকাশ করতে চান। যাদের বিশ্বাস অকৃত্রিম, ঈশ্বরের মেষপাল, তারাই পরীক্ষায় দাঁড়াতে পারে। শয়তান তাদের যতই বিরক্ত করুক না কেন, তারা ঈশ্বরকে অনুসরণ করে চলতে পারে। যারা ঈশ্বরের নয়, যারা মিথ্যা বিশ্বাস করে, শয়তান তাদের বিরক্ত করলে তারা সরে যাবে। এটাই শয়তানের ষড়যন্ত্রের উপর ভিত্তি করে প্রয়োগ করা ঈশ্বরের প্রজ্ঞা। এখন যাজক এবং পরিবার দ্বারা আপনি যে বিরক্ত এবং বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন এটা একটা পরীক্ষা। এই অভিজ্ঞতা লাভ করার পরে, আপনি কিছু সত্য বুঝতে পারবেন এবং কিছু জিনিস স্পষ্টভাবে দেখতে পাবেন। আপনিও জানবেন কিভাবে নির্ণয় করতে হয় কে প্রকৃত বিশ্বাসী আর কে কপট বিশ্বাসী, আর ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস গড়ে তুলুন, আর এটা এমন এক জিনিস যা আমরা আরামদায়ক পরিবেশে লাভ করতে পারি না। সুতরাং এই কষ্ট সার্থক।” বোনের আলোচনা শোনার পর, আমি বুঝতে পারলাম যাজক এবং আমার পরিবারের আমাকে যে বাধাগ্রস্ত এবং বিরক্ত করেছে তা আপাতভাবে মানুষের কাজ বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু বাস্তব সত্য হলো, এই বিরক্তটা করেছে শয়তান, সে চেষ্টা করেছে আমি যেন ঈশ্বরের পরিত্রাণ হারাই। শয়তান সত্যিই ঘৃণ্য। এই ঘটনার মাধ্যমে, আমি যাজকের বিষয়ে কিছু বিচক্ষণতা অর্জন করেছি, এবং আমার ঈশ্বরকে অনুসরণ করার ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়ে উঠল। কিছু দিন পরে, আমি এখনও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি দেখে, আমার কাকাও আমাকে বুঝিয়ে নিরস্ত করতে এসেছেন। “হোশিয়, আমার কথাটা শুধু শোন। তুমি ফিরে এসো। যাজক তোমাকে বহিষ্কার করলে তুমি কি করবে? ভবিষ্যতে তোমার কোনো সমস্যা হলে বা তুমি অসুস্থ হলে কে তোমাকে সাহায্য করবে?” “আমি অবশেষে প্রভুকে স্বাগত জানিয়েছি, সুতরাং যাই হোক না কেন, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অনুসরণ করব। আমি গির্জায় ফিরে যাব না।” “যাজক যতটা জানেন তুমি ততটা জানো না। ঈশ্বরে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে, আমাদের যাজকের কথা শুনতে হবে।” “প্রভু যীশু যখন কাজে এসেছিলেন, ইহুদি ধর্মে বিশ্বাসীরাও মনে করত ফরিশীরা ভালো জানে এবং তারাও প্রভুর প্রতিবাদ ও নিন্দা করে ফরিশীদের অনুসরণ করতো। ফলস্বরূপ, তারা অভিশপ্ত এবং শাস্তি পেয়েছে। ঈশ্বরে বিশ্বাসী হিসাবে, আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের কথা শুনতে হবে। যদি যাজকের কথা এবং কাজ ঈশ্বরের বাণীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, আমরা তাদের কথা শুনতে পারি না। আমি যাজককে বলেছিলাম যে ঈশ্বর অনেক সত্য প্রকাশ করার জন্য অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেন, যা বাইবেল এবং প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীতে প্রমাণিত, এবং এটা অস্বীকার করার কোন উপায় তাদের ছিল না, কিন্তু সত্য অন্বেষণের কোনো আকাঙ্ক্ষাই তাদের নেই, প্রভুকে স্বাগত জানানো থেকে আমাকে বিরত করার চেষ্টা করেছিল, এবং আমাকে আমার কোনো ভাই বা বোনের সাথে বিষয়টি আলাপ করতে দিতনা। আপনি কি মনে করেন তারা যা করেছে তা ঈশ্বরের কথার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? কাকা, আপনি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ বিষয়ে অন্বেষণ বা অনুসন্ধান করেননি। যাজক যা বলেছে আপনি তাই শুনেছেন। আপনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী কখনও পড়েন নি, তাহলে আপনি কীভাবে জানবেন যে তারা সত্য না মিথ্যা? এ যেন নদী পার হওয়ার মতো। যদি কেউ একজন বলে জল গভীর তো আরেকজন বলে জল অগভীর, আপনি কার কথা বিশ্বাস করবেন? আপনি যদি নিজের মধ্যে ভেসে যান তবে আপনি কি সত্য জানতে পারবেন না? আপনি যদি প্রভুতে বিশ্বাস করেন, কিন্তু তাঁর কথা না শোনেন এবং যাজকের কথা শোনার জন্য জোর দেন, শেষ পর্যন্ত, যাজক যদি নরকে যায়, আপনিও কি নরকে যাবেন না? এক অন্ধ কি আরেক অন্ধকে গর্তে নিয়ে যাচ্ছে না?” “তুমি কি ভয় পাচ্ছ না যে যাজক তোমার নামে সরকারের কাছে অভিযোগ করবেন এবং তোমাকে গ্রেফতার করা হবে?” “তারা যদি সরকারের কাছে আমার নামে অভিযোগ করে তাতেও আমার যায় আসেনা আবার সরকার আমার সাথে যাই করুক না কেন আমার যায় আসে না, এমনকি আমি যদি নির্যাতিতও হই, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকেই অনুসরণ করবো।” সেই দিন, আমার কাকা আমাকে ক্রমাগত বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু আমি তার কথা শুনিনি। এক সপ্তাহ পরে, যাজক যাতে আমাকে আবার বিরক্ত না করেন, সেজন্য আমি নিজেই যাজক এবং নেতাদের কাছে গেলাম, তাদের বললাম আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমি গির্জায় ফিরে যাচ্ছিনা, এবং তাদের বললাম তারা যেন আমার সাথে আর কথা না বলেন। অপ্রত্যাশিতভাবে, যাজক হাল ছেড়ে দিতে নারাজ, এবং আমাকে বললেন, “এই যে পূর্বের বজ্রালোক বলে যেটা বিশ্বাস করো সেটা প্রভুর প্রত্যাবর্তন নয়। তুমি যদি বিশ্বাস করতেই থাকো তবে তুমি প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছো।” আমি তাকে বললাম, “প্রভু যীশু তাঁর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, ‘বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মনুষ্যপুত্রের আগমন হবে(মথি ২৪:২৭)। পূর্বের বজ্রালোক কি তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করে না?” যখন যাজক জ্যাক্সন দেখলেন যে তিনি আমাকে খণ্ডন করতে পারছেন না, তিনি রেগে গেলেন এবং ঈশ্বরের কাজের বিচার এবং নিন্দা শুরু করলেন। তার কথায় আমার ভীষণ রাগ হলো। আমি স্মরণ করলাম যে প্রভু যীশু বলেছেন, “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে(যোহন ১০:২৭)। ঈশ্বরের মেষপাল তাঁর কন্ঠস্বর শুনতে পান। যাজক এবং নেতারা ঈশ্বরের কন্ঠস্বর বুঝতে পারে না, এবং তারাই আবার ঈশ্বরের বিচার করেন। তারা ঈশ্বরের মেষ নয়। তারা শয়তানের। আমি তাদের বললাম, “অতীতে, ফরিশীরা প্রভু যীশুর বিচার ও নিন্দা করত। এখন আপনি যখন শুনেছেন যে প্রভু প্রত্যাবর্তন করেছেন তখন আপনি অন্বেষণ বা অনুসন্ধান করছেন না। এমনকি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীগুলো এত ভালভাবে উচ্চারিত হয়েছে তা দেখেও, আপনি এখনও নিন্দা এবং প্রতিরোধ করেন। আপনারা কি তাহলে আধুনিক ফরিশী নন?” যখন এই কথা বললাম যাজক ও নেতারা খুব রেগে গেলেন, তাই তারা আমাকে বাধ্য করার অন্য উপায় অবলম্বন করেছিল। “যেহেতু তুমি নিশ্চিত যে তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে চাও, তারপর একটি ঘোষণা পত্র লেখ যেখানে তোমার স্বাক্ষর করা থাকবে আর তুমি বলবে তুমি প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করোনা।” “আমি ওখানে স্বাক্ষর করবো কেন? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই হলেন প্রত্যাবর্তনকারী প্রভু যীশু, এবং আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, আর সেটাই হলো প্রভু যীশুকে স্বাগত জানানো। তাহলে কীভাবে আপনারা বলছেন যে আমি প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করিনা? এটা কি সত্যকে বিকৃত করছে না? আপনার মতে, যখন প্রভু যীশু কাজে এসেছিলেন, তখন পিতর এবং যোহনের মতো প্রভুর শিষ্যরা উপাসনালয় ছেড়ে প্রভু যীশুকে অনুসরণ করেছিলেন। আপনি কি বলতে পারেন যে তারা যিহোবা ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো? অবশ্যই না। তারা ঈশ্বরের নতুন কাজের প্রতি আনুগত্য এনেছিলো। একইভাবে, এখন প্রভু যীশু নতুন কাজ করতে ফিরে এসেছেন, এবং আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করে মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। এটা কীভাবে প্রভু যীশুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হতে পারে? আমি এমন কিছুতে স্বাক্ষর করব না!” “তুমি অবশ্যই এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করবে, এবং তোমার ভাইদের ও তোমার বাবা-মাকেও স্বাক্ষর করতে হবে, এটা প্রমাণ করার জন্য যে তুমি নিজেই গির্জা ছেড়ে চলে গেছো, এমন নয় যে আমরা আমরা তোমাকে বহিষ্কার করেছি।” সেই মুহুর্তে, আমি যাজকের উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম। যদি আমি ঘোষণা করি যে আমি প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করি না এবং তার পরিবর্তে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, এর অর্থ কি এই নয় যে আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু যে এক ঈশ্বর তা অস্বীকার করলাম? আমি যদি স্বাক্ষর করি, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অস্বীকার এবং নিন্দা করার জন্য তাদের পক্ষে প্রমাণ হয়ে উঠবে। তারা এতই অশুভ এবং দুষ্ট ছিল! যদি তারা এই ঘোষণাটি ভিয়েতনামের সরকারের কাছে নিয়ে যায় তবে আমি নির্যাতিত হব। এই ছিল তাদের ঘৃণ্য উদ্দেশ্য। সেই রাতে, আমরা রাত দশটা পর্যন্ত তর্ক করেছি, কিন্তু আমি যাই বলি না কেন, যাজক যেন কিছুই বুঝতে চাইছিলেন না, এবং তিনি অভদ্র এবং অযৌক্তিক আচরণ করছিলেন, তাই তাদের বলার মতো আমার আর কিছুই বাকি ছিল না। পরের দিন, আমার পরিবার এই খবর শুনে আমার বাড়িতে এসে অভিযোগ তুলল “তোমার বাবা আর আমি অনেক কষ্টে তোমাকে মানুষ করেছি, আর এখন তুমি আমাদের পরিত্যাগ করছো? তোমার কি বিবেক বলতে কিছু নেই!” “মা! আমি তোমাদের পরিত্যাগ করিনি। আমি অনেকবার তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছি, কিন্তু তোমরা তা বিশ্বাস কর না। তোমরা ঈশ্বরের কথা শোনো না, তোমরা শুধু যাজকের কথা শোনো। এটি তোমাদের নিজেদের পছন্দ।” “এখন থেকে, তুমি আমার সন্তান না!” “এখন থেকে আমরা আমাদের আলাদা পথে যাব। আমরা আর ভাই নই। ভবিষ্যতে তোমার যত অসুবিধাই হোক না কেন, আমরা তোমাকে সাহায্য করব না।” “তাহলে সেটা তোমার ব্যাপার। আমি শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, আর এ কারণেতুমি আমাকে এভাবে অত্যাচার করছ, তোমাদের আর ঈশ্বরের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে বলছো, সুতরাং অবশ্যই আমি ঈশ্বরকে বেছে নেবো। কিন্তু আমি কখনো বলিনি যে তোমরা আমার বাবা-মা ভাই নও। ওগুলো তোমাদের কথা।”

এর পরে, আমি গির্জায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমি ভেবেছিলাম যাজক এবং নেতারা আমাকে আর বিরক্ত করবেন না। অপ্রত্যাশিতভাবে, এপ্রিলের একদিন, গির্জার সহকর্মী যিনি অর্থ পরিচালনা করেন তিনি আমার কাছে এসেছিলেন এবং আমি প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করিনা এমন ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে গির্জায় যাওয়ার জন্য জোর করতে লাগলেন। আমি প্রচন্ড রেগে গিয়েছিলাম। এই লোকেরা আমাকে একা থাকতে দেবে না। কেন তারা মনে এত ঘৃণা পুষে রাখে? তাকে বিদায় করার পর, আমি নিজেকে শান্ত করলাম এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম, এবং আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদের কথা ভাবলাম। “ঈশ্বর যখন তাঁর কর্ম সম্পাদন করেন, কোনো ব্যক্তির প্রতি যত্নবান হন, এবং সেই ব্যক্তিকে পরীক্ষা করেন, এবং যখন সেই ব্যক্তির প্রতি সমর্থন এবং অনুমোদন প্রদান করেন, শয়তান নিকটে থেকেই অনুসরণ করে, সেই ব্যক্তিকে ঠকানোর এবং তার ক্ষতিসাধনের জন্য সচেষ্ট থাকে। ঈশ্বর যদি সেই ব্যক্তিকে অর্জন করতে চান, তাহলে শয়তানও তখন তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ঈশ্বরের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, নানাবিধ কূটচক্রান্তের মাধ্যমে সে ঈশ্বরের কর্মকে প্রলোভন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত তথা ব্যহত ও বিঘ্নিত করে, তার গোপন অভিপ্রায় সার্থক করার উদ্দেশ্যে। কী এই অভিপ্রায়? সে চায় না যে ঈশ্বর কাউকে অর্জন করুন; ঈশ্বর যাদের অর্জন করতে আকাঙ্ক্ষা করেন, সে তাদের ছিনিয়ে নিজের অধিকারে আনতে চায়, সে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের নেতৃত্ব দিতে চায় যাতে তারা তারই উপাসনা করে, যাতে মন্দ কর্ম সংঘটনে এবং ঈশ্বরের বিরোধিতায় তারা তার সাথে যুক্ত হয়। এ কি শয়তানের অশুভ অভিপ্রায় নয়? তোমরা প্রায়শই বলো যে শয়তান অত্যন্ত দুষ্ট, অত্যন্ত খারাপ, কিন্তু তোমরা কি সেটা দেখেছ? মানবজাতি কত খারাপ তা তোমরা দেখতে পারো; আসল শয়তান যে কত খারাপ, তা তোমরা দেখো নি। তবুও, ইয়োবের বিষয়ে তোমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছিলে শয়তান ঠিক কতটা দুষ্ট। এই বিষয়টি শয়তানের ঘৃণ্য চেহারা ও তার সারমর্ম অতিশয় স্পষ্ট করে তুলেছে। ঈশ্বরের সাথে যুদ্ধ এবং তাঁর অনুগমনের মাধ্যমে, শয়তানের উদ্দেশ্য হল সেই সকল কার্যের ধ্বংসসাধন যা ঈশ্বর করতে চান, ঈশ্বর যাঁদের অর্জন করতে চান তাদের অধিগ্রহণ এবং নিয়ন্ত্রণ, এবং ঈশ্বর যাদের অর্জন করতে চান তাদের প্রত্যেকের নির্বাপণ। তারা নির্বাপিত না হলে, তখন শয়তান তাদের দখল করে নেয়, যাতে সে তাদের ব্যবহার করতে পারে—এই হল তার উদ্দেশ্য(বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ৪)। ঈশ্বরের বাণীগুলো চিন্তা করার পরে, আমি শয়তানের কৌশলগুল আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম। আমি দেখেছি যে এই যাজক এবং অগ্রজরা হলো শয়তানের অংশভুক্ত। তারা ছিল শয়তানের দোসর। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বাসকে বাধা ও বিঘ্নিত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিল যেন আমি ঈশ্বরের পথ থেকে সরে যাই। প্রভু যীশুকে অস্বীকার করে লিখিত একটি ঘোষণাপত্রে আমাকে স্বাক্ষর করার জন্য বলেছিলো যাতে তারা আমাকে দোষারোপ করার একটা অজুহাত পেয়ে যায়। তাদের অন্তর এতটাই কুৎসিত ছিল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা শয়তানের ভূমিকা পালন করেছে। পরে, আমার পরিবারও যাজকের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছিল, তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে যাজক চিঠিতে আমার স্বাক্ষর নিয়ে তারপর সরকারের কাছে আমার নামে অভিযোগ করবে, এবং মা আমাকে বললো, “হোশিয়, ওই চিঠিতে সই করবে না। যাজক খুবই ভয়ানক। ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তুমি কোনো ভুল করনি, তারপরেও সে তোমার সাথে এমন আচরণ করছে। তুমি যদি কোনো অত্যাচারের শিকার হও, আমি তাকে রেহাই দেব না।” এই যাজকদের আমি খুবই ভক্তি করতাম। আমি ভেবেছিলাম যে তারা প্রভুর সেবা করেছে সুতরাং তাদের সাহায্য করা মানে হলো প্রভুকে ভালবাসা, তাই আমি প্রায়ই তাকে উপহার দিতাম, টাকা ও জিনিসপত্র উভয়ই। যখন তাদের গাড়ি ভেঙ্গে যায়, আমি সবসময় মেরামত করার টাকা দিই, তা যত টাকাই লাগুক। এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এখন তাদের আসল চেহারা দেখতে পাচ্ছি। ভেড়ার পাল রক্ষার নামে তারা মানুষকে সঠিক পথ অনুসন্ধান করতে বাধা দেয়, এবং অন্যদের প্রভুকে স্বাগত জানানো এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। তারা আমাদের সবাইকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, যাতে আমরা তাদের আরও অর্থ দান করি এবং তাদের সমর্থন করি। তারা হলো প্রতিবন্ধকতা যারা মানুষকে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীতে ঠিক যেমনটা বলা আছে, “অনেকেই আছে যারা বিরাট গির্জাগুলিতে বাইবেল পড়ে এবং সারাদিন ধরে সেটি আবৃত্তি করে, তবুও তাদের কেউই ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের মধ্যে কেউই ঈশ্বরকে জানতে সক্ষম নয়, আর তাদের মধ্যে কারোর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তো আরোই কম। তারা সকলে অপদার্থ, জঘন্য মানুষ, প্রত্যেকেই ঈশ্বরকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উচ্চে দণ্ডায়মান। ঈশ্বরের ধ্বজা বহন করাকালীনও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস দাবি করেও তারা মানুষের মাংস ভক্ষণ ও রক্ত পান করে। এই ধরনের মানুষেরা হল মানুষের আত্মা-গ্রাসকারী শয়তান, সঠিক পথে পা-রাখতে চাওয়া মানুষদের ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধাদানকারী প্রধান অপদেবতা, এবং তারা হল ঈশ্বর-অন্বেষণকারীদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বাধাস্বরূপ। তাদের দেখে ‘ভালো অবস্থার’ মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা মানুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী করে তোলা খ্রীষ্টবিরোধী ছাড়া আর কেউ নয়? তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা জীবন্ত শয়তান যারা মানুষের আত্মা গ্রাস করার জন্যই নিবেদিত?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা ঈশ্বরকে জানে না তারা সকলেই ঈশ্বরবিরোধী)। আমি ঈশ্বরের সুরক্ষার জন্য কৃতজ্ঞ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীই আমাকে পথ দেখিয়েছে এবং ধাপে ধাপে আমাকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে। শয়তানের চালাকি আমাকে বুঝতে সাহায্য করেছ, স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে কীভাবে যাজকরা সত্যকে ঘৃণা করেন এবং ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করেন, শয়তানের দাস এবং খ্রীষ্টবিরোধীদের দাসত্ব থেকে আমাকে পুরোপুরি মুক্ত করেছে, এবং ঈশ্বরের গৃহে প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছি। আমার হৃদয় ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়েছিল! এখন, আমি প্রতিদিন ঈশ্বরের বাণী প্রচার উপভোগ করি, ব্রাদার-সিস্টারদের সাথে সুসমাচার প্রচার করে ঈশ্বরের সাক্ষ্য দিই, নিজেকে পরিপূর্ণ ও সুখী বোধ করি! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ!

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

যাজকের দুর্বৃত্তি দেখতে পাওয়া

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আমার অনলাইনে এক সিস্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সে আমাকে বলে প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বররূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন, এবং...

যখন আমার পরিবার আমাকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা থেকে বিরত করতে চেষ্টা করেছিল

২০১৮-এর মার্চ মাসে, আমার আত্মীয়েরা আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের সুসমাচার শোনায় এবং আমায় অনলাইন সমাবেশে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন