প্রভুকে স্বাগত জানানোর সুযোগ আমি প্রায় হারাতে যাচ্ছিলাম

01-04-2023

আমি আর আমার স্ত্রী 1995 সালে খ্রিস্টান হয়েছিলাম, তারপর থেকে আমরা সত্যিই আমাদের সাধনায় আগ্রহী ছিলাম, কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা সোলা ফাইড চার্চের সহকর্মী হলাম। তারপর 2000 নাগাদ, সেই গির্জার অনেক সদস্যই পূর্বের বজ্রালোকের সুসমাচার শুনেছিলেন আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে শুরু করেন। তারপর থেকে, যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা সহকর্মীদের সমাবেশে পূর্বের বজ্রালোকের বিরুদ্ধে একটানা প্রচার করছিলেন। একবার, যাজক ওয়াং বলেন যে বাইবেলে, পৌল বলেছে: “আমি একথা জেনে স্তম্ভিত হলাম, যিনি খ্রীষ্টের অনুগ্রহের মাধ্যমে পরিত্রাণ লাভের জন্য তোমাদের আহ্বান করেছিলেন, তাঁকে তোমরা এত শীঘ্র ত্যাগ করে অন্য ‘সুসমাচারের’ দিকে মন দিয়েছ—অবশ্য অন্য ‘সুসমাচার’ নয়—শুধু কিছু লোক খ্রীষ্টের সুসমাচারকে বিকৃত করে তোমাদের বিব্রত করছ। কিন্তু তোমাদের কাছে আমি যে সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, তাছাড়া অন্য সুসমাচার যদি কেউ প্রচার করে, আমরাই করি কিম্বা স্বর্গ থেকে আগত কোন দূতই করুক, তার উপর নেমে আসুক অভিশাপ” (গালাতীয় ১:৬-৮)। তিনি আরো বলেন যে আমাদের প্রভুর পথ অনুসরণ করতে হবে, আর অন্য কোনো সুসমাচার শোনা মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা, শুনলে আমরা অভিশপ্ত হব। তিনি বলেন যে পূর্বের বজ্রালোক প্রচার করে যে প্রভু ইতিমধ্যেই ফিরে এসেছেন আর তাঁর বাণীর মাধ্যমে অন্তিম সময়ের বিচারকার্য করছিলেন, আর বলে যে এটা ছিল অন্য কোনো সুসমাচার। তিনি বলেন আমরা এটা শুনতে পারি না, বিশেষ করে এটা বিশ্বাসই করতে পারি না—সেটা প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। আমাদের তিনি অনুরোধ করে যে কেউ পূর্বের বজ্রালোক সম্পর্কে আমাদের বললেই যেন তাকে অবিলম্বে বের করে দেওয়া হয়। যতবারই আমাদের যাজকরা বাইবেলের এই শ্লোকগুলো তুলে ধরত, ততবারই আমি নীরবে নিজেকে সতর্ক করতাম, “যাজকরা আমাদের পূর্বের বজ্রালোকের সংস্পর্শে আসতে দেবে না, আর সেটা আমাদের নিজেদের ভালোর জন্য। আমি ভালো শাস্ত্র বুঝি না আর আমার মানসিক উচ্চতাও ছোটো, তাই আমি যা হোক একটা কিছু শুনতে পারি না। প্রভুর করুণা আমি অনেক উপভোগ করেছি। তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না!” আমার কিছু বন্ধু আর আত্মীয় আমার কাছে এই সুসমাচার বেশ কয়েকবার প্রচার করেছিল, কিন্তু আমি সেসব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। ভেবেছিলাম আমাকে প্রভুর পথে চলতে হবে, আর আমাকে যে যা বলবে আমার তাই শোনার দরকার নেই। আমি যদি বিপথগামী হই আর তারপর প্রভু প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে কী করব? একদিন আমার ভাগ্নী আমার, আর আমার স্ত্রীর কাছে সুসমাচার প্রচার করতে এল, আমি উদাসীনভাবে বললাম, “বাইবেলে বলা আছে, ‘কিন্তু তোমাদের কাছে আমি যে সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, তাছাড়া অন্য সুসমাচার যদি কেউ প্রচার করে, আমরাই করি কিম্বা স্বর্গ থেকে আগত কোন দূতই করুক, তার উপর নেমে আসুক অভিশাপ’ (গালাতীয় ১:৮)। আমরা প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করি, আর অন্য কোনো পথ অনুসরণ করলে, সেটা ধর্মত্যাগ আর প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে। আমরা অভিশপ্ত হব। তোমার এখনই প্রভুর কাছে দোষ স্বীকার করে অনুতাপ করা উচিত।” যাজক যা বলেছিলেন আমি তাই শুনছিলাম। অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের সুসমাচার জানাতে যারাই আসুক না কেন, আমি তাদের কথা শুনিনি, আর তাদের থেকে ছাড়া পেতে যে অজুহাত মনে আসত সেটাই দেখাতাম।

আরেকবার যখন আমি আর আমার স্ত্রী মাঠে কাজ করছিলাম, তখন ও আমাকে খুব সাবধানে বলল, “প্রভু যীশু ফিরে এসেছেন। তিনিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর।” ও যখন এই কথা বলল তখন বুঝতে পারলাম যে ও শুধু পূর্বের বজ্রালোকের সুসমাচার শুনেছে তাই নয়, সেটা মেনেও নিয়েছিল। আমি রেগে গিয়ে চেঁচিয়ে ওকে বললাম, “যাজকরা বারবার জোর দিয়ে বলেছেন যে আমরা পূর্বের বজ্রালোকের কথা যেন না শুনি। ওনাদের কথা শুনলে না কেন? অন্য কোনো পথ গ্রহণ করার মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা, আর তুমি ঈশ্বরের রাজ্যে ঢুকতে পারবে না!” আমি আরও বেশি বিচলিত হয়ে পড়ছিলাম, আর বাইবেলের এই শ্লোকের কথা ভাবছিলাম: “কারও পাপের ভাগী হয়ো না। নিজেকে শুচিশুদ্ধ রেখ” (১ তিমথির ৫:২২)। আমি ভেবেছিলাম যেহেতু ও নিজেই পূর্বের বজ্রালোক গ্রহণ করে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাই আমি তার পাপের ভাগীদার হতে পারি না। এই বিষয়ে যাজককে তখনই বলেছিলাম যাতে তিনি ওকে ফিরে আসতে অনুরোধ করে। তিনি এই কথা শুনে খুব বিচলিত হয়ে বললেন, “অন্য ধর্মবিশ্বাসের প্রচার করা মানুষদের কথা শোনা মনে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা, আর তাকে গির্জা থেকে বের করে দেওয়া হবে। তার কোনও বই আছে কিনা দেখুন, আর কোনও বই খুঁজে পেলে সেগুলো নষ্ট করে দেবে। তার উপর নজর রাখতে এখুনি বাড়ি ফিরে যান। তাকে একেবারেই বাইরে যেতে আর সেইসব লোকেদের কথা শুনতে দেবে না।” কথাটা শুনে ভাবলাম, “হ্যাঁ! আমার স্ত্রীকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় যাজক যা বলেছে তা করা। নাহলে, প্রভু ওকে প্রত্যাখ্যান করবেন আর ও স্বর্গে যাওয়ার সুযোগ হারাবে।” তারপর থেকে আমি আমার স্ত্রীর উপর কড়া নজর রাখতাম আর যতক্ষণ আমি আশেপাশে থাকতাম ততক্ষণ ওকে পূর্বের বজ্রালোকের লোকেদের সাথে কোনও যোগাযোগ রাখতে দিতাম না। যখন কাজে যেতাম তখন আমাদের দুই মেয়েকে ওর ওপর নজর রাখতে বলতাম। কিন্তু তাও ও লুকিয়ে সমাবেশে যেত। একদিন আমি কাজ থেকে বাড়ি ফিরে এসে আমার স্ত্রীকে দেখতে পেলাম না, জানতাম ও অন্য একটা সমাবেশে ছিল। মাথাটা বেশ গরম হয়ে গিয়েছিল। যা-ই করি না কেন ওর উপর লাগাম রাখতে পারিনি, তাই ভাবলাম আমার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখব যে ও প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে যাবে আর প্রভু ওকে ত্যাগে করবেন সেটা হতে পারে না। ও ফিরে এলে, আমি ওর উপর হাত তুলেছিলাম। এত বছর সংসার করলেও কোনোদিন ওকে আঘাত করিনি। এটা ভেবেই খুব খারাপ লাগছিল, কিন্তু তারপর আমার ভয় হল যে ও ভুল পথে চলে যাবে আর প্রভুর পরিত্রাণ পাবে না। কিন্তু আমি যা-ই করি না কেন, পূর্বের বজ্রালোকের উপর ওর বিশ্বাস অটুট ছিল। কী করতে হবে বুঝতে না পেরে, যাজক ওয়াং ওর বইগুলো নষ্ট করার বিষয়ে যেটা বলেছিলেন সেই কথা ভাবছিলাম। মনে হল উনি ঠিকই বলেছিল, যে পড়ার জন্য বই না থাকলে ও নিজের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে চর্চা করবে কীভাবে? রাগে অন্ধ হয়ে, আমি গোপনে ওর বইগুলো খুঁজে বের করে নষ্ট করে দিলাম, কিন্তু তখনও ওর মধ্যে ফিরে আসার কোনো ইচ্ছা দেখা যায়নি। সব সময় আমার নজর এড়িয়ে সমাবেশে যাওয়ার পথ খুঁজে নিত, আর আমাকে সব সময় বলত যে আমার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়া উচিত, সেটা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর কিনা তা দেখার জন্য। সত্যি কথা বলতে, দোলাচলে ছিলাম। আমার স্ত্রী চিরদিনই খুব সহজ-সরল—কখনও খুব একরোখা ছিল না। বুঝতে পারছিলাম না ও কেন সেই পথ থেকে একটুও সরতে চায়নি। ভাবছিলাম পূর্বের বজ্রালোক এমন কী প্রচার করছিল আর তা ওকে এত জোরালোভাবে কেন আকর্ষণ করেছিল। আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু যখনই যাজক যা বলেছিলেন সেই কথা মনে পড়ত, তখনই নিজেকে সতর্ক করতাম, “আমাদের ধর্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে প্রভুর পথে থাকতে হবে। পথভ্রষ্ট হওয়া মনে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে!” তাই আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করলাম।

একদিন আমি যখন কয়লাখনিতে নেমেছিলাম, তখন একজন সহকর্মী একটা ডেটোনেটর জ্বালাচ্ছিল, সেটা হঠাৎ ফেটে যায়, আর সে ঘটনাস্থলেই অন্ধ হয়ে যায়। আমি দূরে ছিলাম না, কিন্তু পুরোপুরি অক্ষত ছিলাম। আমি ভয়ে কাঁপছিলাম। আমার সহকর্মীর জন্য খুব খারাপ লাগছিল, তবে একইসঙ্গে, খুশি ছিলাম যে ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করেছেন। যখন বাড়ি ফিরলাম তখনও আমার মন শান্ত হয়নি, আমার স্ত্রীকে যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে বললাম। ও বলল, “সে শারীরিকভাবে অন্ধ, কিন্তু তুমি আধ্যাত্মিকভাবে অন্ধ। আমি কত করে তোমায় বলি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী পড়া উচিত, কিন্তু কথা শোনো না, উল্টে তাঁর নিন্দা কর। তুমি অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে এলে ঈশ্বর সুরক্ষা দিয়েছেন বলে, কিন্তু তাঁর তরফে এটা তোমার জন্য সতর্কবার্তাও ছিল!” ওর কথাটা আমার মনে দাগ কেটেছিল। সত্যিই যদি এটা আমার জন্য ঈশ্বরের সতর্কবার্তা হয়ে থাকে তাহলে? কয়েকদিন পর যখন আমি খনিতে কনভেয়ার বেল্ট পরিদর্শন করছিলাম, তখন আমি হঠাৎ মাথা ঘুরে আরেকটু হলেই বেল্টের উপর পড়ে যাচ্ছিলাম। এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম যে গায়ে শীতল ঘাম জমেছিল, জানতাম যে পড়ে গেলে আমি কিমা হয়ে যেতাম। এমন একটা আতঙ্ক চেপে বসেছিল যেটা বলে বোঝাতে পারব না; বাড়ি ফিরে আমার স্ত্রীকে ঘটনাটা বললাম। ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, “ধর্মবিশ্বাসী হিসাবে, আমি নিরাপদে থাকছি না কেন? হচ্ছেটা কী?” ও বলল, “প্রভু যীশু সত্যিই ফিরে এসেছেন। তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। তুমি তাঁকে প্রতিরোধ করেই যাচ্ছ, তাই এটা ঈশ্বরের তোমাকে সতর্ক করে দেওয়া হতেই পারে! তোমায় তাঁর সাথে লড়াই কড়া বন্ধ করতে হবে।” তখন সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম আর মনে হয়েছিল যে আমার ওকে থামানো উচিত নয়। কিন্তু তারপর আমার যাজকের কথা মনে পড়ল যে ও অন্য পথ অনুসরণ করছিল, প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিল, ঈশ্বর আমাকে পরীক্ষা করছিলেন, আর আমায় তাঁর পাশে দাঁড়াতে হবে। আর এই নিয়ে চিন্তা করার সাহস করিনি, এই ভয়ে যে ও আমাকে বুঝিয়ে নিজের দিকে টানতে পারে। আমি ওর সমাবেশে যোগদানের পথে বাধা দিতে থাকলাম আর ওকে নিজের দোষ স্বীকার করে অনুতপ্ত হওয়ার কথা বলতাম। কিন্তু যখন আমি ওকে থামানোর চেষ্টা করলাম, তখন কোনো এক অদ্ভুত কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম আর খোঁড়াতে লাগলাম। আমার এক ফোঁটা শক্তিও ছিল না, এমনকি কাজে যেতেও পারিনি। শুধু মরার মত বিছানায় পড়ে থাকতাম। বারবার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতাম, কিন্তু ভাল হইনি। আমার স্ত্রী আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ডাকতে বলল, বলল যে একমাত্র তিনিই আমাকে বাঁচাতে পারেন। আর কিছু ভেবে না পেয়ে আমি সেটাই করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি নিঃশব্দে আমার মন থেকে ডাকলাম: “হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! সর্বশক্তিমান ঈশ্বর …” আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে আমি ধীরে ধীরে আমার শক্তি ফিরে পেতে শুরু করি। এরকম আরও কয়েকবার হল। যে মুহূর্তে আমি তার পথে দাঁড়াতাম, সেই মুহূর্তে আমার সমস্ত শক্তি হারাতাম, এমনকি কাজও করতে পারতাম না। কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার মুহূর্তেই আমার শক্তি ধীরে ধীরে ফিরে পেতাম। এরপর, আমি আর তেমন একরোখা ছিলাম না, হাল ছেড়ে দিতে শুরু করলাম। ভাবতাম সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কি সত্যিই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু হতে পারেন? পরের বার যখন আমার স্ত্রী আমাকে সত্যিকারের পথ দেখার জন্য অনুরোধ করল, সেবার রাজি হয়ে গেলাম।

সেদিনই কিছু লোককে আমার ভগ্নিপতির বাড়িতে পূর্বের বজ্রালোকের সুসমাচার প্রচার করতে দেখলাম। একজন ভগিনী বিধানের যুগ থেকে শুরু করে অনুগ্রহের যুগ পর্যন্ত ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে বলল, কীভাবে প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে আমাদের পাপ থেকে মানবজাতিকে উদ্ধার করেছিলেন, সেসব জানাল। তারপর সে প্রভু যীশুর কথা আর বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে যোগসূত্র বাঁধল, সেই সঙ্গে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের ফিরে আসা, সত্য প্রকাশ করা আর বিচারকার্য করা, মানুষের পাপী প্রকৃতি থেকে মুক্তি পাওয়া, আমাদের সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ করে বাঁচিয়ে তাঁর রাজ্যে নিয়ে যাওয়া, এসব নিয়ে আলোচনা করল। ধর্মবিশ্বাসীদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়া, জ্ঞানী আর বোকা কুমারী, আরও অনেক বিষয়ে বলল। তাদের আলোচনা একেবারে স্পষ্ট আর বাইবেলের সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। শুনে সত্যিই মন জুড়িয়ে গেল। খ্রিস্টান হিসাবে জীবনে কখনো এমন কিছু শুনিনি। মনে মনে ভাবলাম যে পূর্বের বজ্রালোকের ধর্মোপদেশে স্পষ্টতই পবিত্র আত্মার কাজ ছিল আর মনে হল এটা আমার জন্য সত্যিই সমৃদ্ধকর। কে জানে কেন গির্জার যাজকরা আমাদের এটা থেকে দূরে রেখেছিল, আমি গির্জায় গিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম যাতে তারা পূর্বের বজ্রালোক সম্পর্কেও সব শুনে, এটা সত্য পথ কিনা তা ঠিক করতে পারেন। তাঁদের দেখতে যাওয়ার আগে, তারাই আমার বাড়িতে এল, আমার স্ত্রী পূর্বের বজ্রালোক যাতে ছেড়ে দেয় তার জন্য জোর দিতে লাগল। ও তাদের সাথে দুই বা তিন ঘণ্টা তর্ক করল, যাজক ওয়াং যখন বুঝতে পারল যে ও নিজের ধর্মবিশ্বাস রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তখন ওকে চিৎকার করে বলল, “আপনি শুনতেই চাইছ না, অথচ পূর্বের বজ্রালোককে বিশ্বাস করার উপর জোর দিচ্ছ। এটা ধর্মত্যাগ আর প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা! প্রভুর কাছ থেকে সরে গেলে তুমি নিরাপদ থাকবে না, আর যদি তোমার কিছু হয় তবে গির্জা তোমার সহায় হবে না!” আরেকজন যাজক তাকে জোরে ধমক দিল: “তুমি প্রভুর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ, এখনই তোমাকে তা স্বীকার করে অনুতপ্ত হতে হবে। নাহলে তোমাকে গির্জা থেকে বের করে দেওয়া হবে!” তারা চাইছিল আমি আমার স্ত্রীকে জোর করিয়ে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে প্রভুর কাছে দোষ স্বীকার করাতে। তাঁদের আক্রমণাত্মক রূপ দেখে আমার বিরক্ত লাগল, মনে হল, “যদি ওর ধর্মবিশ্বাস সঠিক নাও হয়, তাহলেও নির্বিচারে ওর বিচার আর নিন্দা করতে পারে না। ওকে ক্ষমাশীল চোখে, ভালবেসে, ধৈর্য ধরে ভালো করে বোঝানো উচিত। সেটাই প্রভুর ইচ্ছা। এত প্রভুত্ব দেখানো কীসের জন্য?”

আমি সেই রাতে এপাশ-ওপাশ করছিলাম, ঘুমাতে পারিনি। কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না তাঁরা যাজক হয়ে ভ্রাতাভগিনীদের সাথে এমন আচরণ করবে কেন। প্রভু আমাদের যে ভালবাসা, সমবেদনা আর সহনশীলতা শিখিয়েছিলেন তা তাদের বিন্দুমাত্র ছিল না। এরা কী ধরনের যাজক? যেটা আমাকে খুব অবাক করেছিল সেটা হচ্ছে, আমার স্ত্রী সম্পর্কে গির্জায় দ্রুত একটা গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, সবাই বলত যে ও পূর্বের বজ্রালোকে বিশ্বাস করে আর ওর মাথাটা গেছে। আমার খুব রাগ হচ্ছিল। একটা সমাবেশে, আমি যাজক ওয়াংকে জিজ্ঞাসা করলাম: “বোঝাই যায় যে আমার স্ত্রীর মাথা ঠিকই আছে, তাহলে তুমি ওকে পাগল বলছ কেন? তাহলে এসব গুজব ছড়াতে পারো কীভাবে?” আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম যখন সে উদাসীন হয়ে বলল, “আমাদের ভয় হচ্ছে অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসীরাও পূর্বের বজ্রালোক অনুসরণ করবে আর প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, শুধুমাত্র আমরা তাদের জীবনের পরোয়া করি বলেই এটা করতে হচ্ছে …” আমি বিশ্বাস করতে পারিনি যে এটা একজন যাজকের মুখ থেকে বেরিয়েছিল। প্রভু যীশু স্পষ্টভাবেই বলেছেন: “তোমাদের বক্তব্য সম্মতিসূচক হলে বল, ‘হ্যাঁ’, আর অসম্মতিসূচক হলে বল, ‘না’। এর অতিরিক্ত সব কথাই শয়তানের প্ররোচনা(মথি ৫:৩৭)। তিনি আমাদের সৎভাবে কথা বলতে শিখিয়েছেন, স্পষ্টভাষী হতে বলেছেন, বলেছেন আমরা মিথ্যা বলতে, প্রতারণা করতে বা বানিয়ে কোনোকিছু বলতে পারব না। কিন্তু যাজকদের ডাহা মিথ্যা বলতে এতটুকুও খারাপ লাগছিল না। যাজক ওয়াং স্পর্ধা দেখিয়ে বললেন যে এটা মণ্ডলীর ভাল হবে ভেবেই করছিলেন। তাঁরা মোটেও ধর্মবিশ্বাসীদের মতো আচরণ করছিল না। সেই সমাবেশে একটা কথাও মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারিনি আর খুব তাড়াতাড়ি সেখানে থেকে চলে এলাম। যাজকদের মিথ্যা ছড়ানোর কারণে অনেক আত্মীয় আর বন্ধুরা আমার স্ত্রীর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছিল আর পুরো পাড়া এই নিয়ে গুঞ্জন করছিল। তাই আমি আর আমার স্ত্রী একটা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। যাজকদের আচরণে আমি আঘাত পেয়েছিলাম, হতাশও হয়েছিলাম আর ক্রমাগত প্রার্থনা করছিলাম: “হে প্রভু, যাজকরা সত্যকে বিকৃত করে আমার স্ত্রীর নামে মিথ্যা ছড়াচ্ছেন, যাতে পূর্বের বজ্রালোকের দিকে ধর্মবিশ্বাসীরা না যায়। তাদের এসব কাজ আমার একেবারেই পছন্দ নয়। প্রভু, পূর্বের বজ্রালোক কী প্রচার করে আমি তা শুনেছি আর আমি মনে করি, এটা চমৎকার, আর সত্যিই বাস্তবিক, কিন্তু আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে ভয় পাচ্ছি। কী করব বুঝতে পারছি না। দয়া করে পথ দেখান, আমাকে বিচক্ষণতা দিন।”

কিছুক্ষণের জন্য মনে হচ্ছিল যেন অথৈ জলে পড়েছি আর পূর্বের বজ্রালোকের লোকেদের সাথে আমার যে আলোচনা হয়েছিল তা নিয়ে ভাবছিলাম। তারা খুব মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার করেছিল আর সত্যিই আন্তরিকভাবে কথা বলেছিল। তাদের সত্যিই ধার্মিক মনে হয়েছিল, তাছাড়া তাদের প্রভুর বাণীর উপর আলোচনা আমার চোখ খুলে দিয়েছিল। এটা মোটেও যাজকদের কথা শোনার মত লাগেনি। কিন্তু যদি এটা সত্য পথ হয়, তবে যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা তা মানবে না বা বিশ্বাসীদের দেখতে দেবে না কেন? ঠিক যখন এই নিয়ে ধাঁধায় পড়েছিলাম, দোলাচলে ছিলাম, তখন হঠাৎ অনুভব করলাম এক মহিমান্বিত আর কর্তৃত্বমূলক কণ্ঠস্বর বলছেন, “সন্দেহ কোরো না, সব সময় বিশ্বাস রেখো!” সেই কণ্ঠস্বর শুনে মনে হল আমি ঈশ্বরের মুখোমুখি হয়েছি, তাঁর কথা শুনছি। এটা আমাকে পুরোপুরি স্তব্ধ করে দিয়েছিল। শুধু একভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর বলতে পারেন ভয় পেয়েছিলাম। প্রকাশিত বাক্যের সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা ভাবছিলাম, “শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন(প্রকাশিত বাক্য ২:৭)। আর ভাবছিলাম যে আমার স্ত্রী সব সময় বলত, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অনেক কথা প্রকাশ করেছেন। সেই কথাগুলোই কি সেই আত্মার মণ্ডলীকে বলা কথা হতে পারে? ঠিক তখনই আমি পূর্বের বজ্রালোক সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার স্ত্রী সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা থেকে ভ্রাতা ঝৌ ঝেংদাও কে আমাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল যাতে তিনি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারে। ভ্রাতাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “পৌল বাইবেলে বলেছে: ‘আমি একথা জেনে স্তম্ভিত হলাম, যিনি খ্রীষ্টের অনুগ্রহের মাধ্যমে পরিত্রাণ লাভের জন্য তোমাদের আহ্বান করেছিলেন, তাঁকে তোমরা এত শীঘ্র ত্যাগ করে অন্য “সুসমাচারের” দিকে মন দিয়েছ—অবশ্য অন্য “সুসমাচার” নয়—শুধু কিছু লোক খ্রীষ্টের সুসমাচারকে বিকৃত করে তোমাদের বিব্রত করছ। কিন্তু তোমাদের কাছে আমি যে সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, তাছাড়া অন্য সুসমাচার যদি কেউ প্রচার করে, আমরাই করি কিম্বা স্বর্গ থেকে আগত কোন দূতই করুক, তার উপর নেমে আসুক অভিশাপ’ (গালাতীয় ১:৬-৮)। যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা সব সময় বলে এর অর্থ হল যে আমরা যদি প্রভুর পথ থেকে বিচ্যুত হই আর অন্য কোনো সুসমাচার শুনি, তার মনে ধর্মত্যাগ আর প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। আমার চিন্তা হয় যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা মানে কি প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে না?” জবাবে তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করল, “যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা এর ব্যাখ্যা এভাবেই করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা মানে প্রভুর পথ থেকে বিচ্যুত হওয়া, অন্য কোনো সুসমাচার গ্রহণ করা আর তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। পৌল যা বলেছে এটাই তার সঠিক ব্যাখ্যা? তারা কি নিশ্চিতভাবে দেখাতে পারে যে ‘অন্য সুসমাচার’ বলতে পৌল অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে রাজ্যের সুসমাচারের কথা বলেছিল? পৌল কি সেটাই বলেছিল?” আমার মুখে কথা আসছিল না। বুঝতে পেরেছিলাম যে পৌল কখনও সেটা বলেনি। তারপরে তিনি এ বিষয়ে আলোচনা করল: “পৌলের এই সতর্কতা দেওয়ার প্রেক্ষাপট কী ছিল দেখতে হবে, প্রভু যীশু তাঁর উদ্ধারের কাজ শেষ করার পরেই, যখন তাঁর স্বর্গ-রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছিল তখন পৌল একথা বলে। অনেক গালাতীয় প্রভু যীশুকে গ্রহণ করেছিল, কিন্তু কেউ কেউ বিভ্রান্ত হয়েছিল আর অন্য সুসমাচারে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল। এসব নিয়েই গালাতীয়দের অনুরোধ করে পৌল তাঁর চিঠিতে একথা লেখে, তাদের সতর্ক করে যে অনুগ্রহের যুগে, শুধু একটাই সুসমাচার ছিল, যা ছিল প্রভু যীশুর উদ্ধারের কাজের সুসমাচার। যদি কেউ অন্য কোনো সুসমাচার প্রচার করে যা প্রভু যীশুর থেকে আলাদা, তাহলে সেটাই ছিল ‘অন্য কোনো সুসমাচার’ যা মানুষকে বিপথে নিয়ে যেত। ঈশ্বর অন্তিম সময়ে তাঁর কাজ সম্পন্ন করেননি পৌল যখন এই কথা বলেছিল তখন কেউ অন্তিম সময়ের সুসমাচার প্রচার করছিল না। এই কারণেই পৌল যা বলেছিল তা অন্তিম সময়ে প্রভুর প্রত্যাবর্তনের সুসমাচার নিয়ে নয়। নির্বিচারে অনুগ্রহের যুগে গির্জায় পৌলের কথা ব্যবহার করে, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের আবির্ভাব আর কাজের নিন্দা করে, তারা বিষয়গুলোকে প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে আর শাস্ত্রের ভুল ব্যাখ্যা করছে। এটা কি অদ্ভুত নয়?”

ঝেংদাওয়ের আলোচনা থেকে, যাজক যা বলেছিল সে সম্পর্কে কিছুটা বুঝলাম, কিন্তু তখনও কিছু সন্দেহ ছিল। প্রভুতে বিশ্বাস করা মনে তাঁর নাম আর তাঁর পথে বিশ্বাস করা। যদি আমি পূর্বের বজ্রালোকের পথ গ্রহণ করি, তাহলে কি প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে না? সে বলল, “ব্যাপারটা ভেবে দেখুন, যখন প্রভু যীশু আবির্ভূত হয়ে তাঁর কাজ করেছিলেন, তখন অনেক লোক যারা যিহোবা ঈশ্বরে বিশ্বাস করত তারা প্রভুর পথের বিষয়ে শুনে তাঁকে অনুসরণ করতে শুরু করেছিল। তাহলে তারা কি যিহোবা ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিল? সেটা কি ধর্মত্যাগ ছিল? নিশ্চয়ই না। তারা মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণ করছিল। তাঁরা ঈশ্বরের একনিষ্ঠ অনুগামী ছিল। কিন্তু যারা একগুঁয়েভাবে ওল্ড টেস্টামেন্টের নীতিকে আঁকড়ে ধরেছিল আর প্রভু যীশুকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাদের যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু আসলে তারাই ঈশ্বরকে সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধ করেছিল। তারা শুধু ঈশ্বরের অতীতের কাজকে সমর্থন করেছিল, কিন্তু ঈশ্বরের বর্তমান কাজ আর বাণী গ্রহণ করেনি বা মানেনি। এমনকি তারা এর নিন্দা করেছিল আর এর বিরুদ্ধে লড়াইও করেছিল। এই কারণে তারাই প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তারপর প্রভু তাদের প্রত্যাখ্যান করে নির্মূল করেছিলেন।” ঝেংদাও আরও বলে, “ঈশ্বরের কাজ সবসময়ই এগিয়ে চলেছে, আর তিনি সব সময় তাঁর পরিচালনামূলক পরিকল্পনা অনুযায়ী আর মানবজাতির প্রয়োজনে নতুন আর উচ্চতর পর্যায়ের কাজ করে চলেছেন। অনুগ্রহের যুগে, প্রভু যীশুর উদ্ধারের কাজ ছিল শুধু আমাদের পাপ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য, তাই আমরা পাপ করার পরে, প্রভু যীশুর কাছে প্রার্থনা করার পর ক্ষমা পেতে পারি। কিন্তু এর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে থাকা পাপী প্রকৃতি থেকে মুক্তি পাইনি। আমরা এখনও পাপ করে স্বীকার করার অন্ধকার চক্রেই পড়ে আছি, পাপের বন্ধন থেকে একেবারেই পালাতে পারছি না। আর আজকের দিনে প্রভুতে বিশ্বাসীরা কী রকম অবস্থায় রয়েছেন বলুন তো? তারা নামযশের জন্য সব সময় মিথ্যা কথা বলে আর প্রতারণা করে, পার্থিব প্রবণতার পিছনে ছোটে, অর্থলোভী হয়। ধর্মবিশ্বাসীদের মধ্যে শুধু ঈর্ষা, ঝগড়া আর পরনিন্দা, কোনো ভালবাসা নেই। সহকর্মীরা চক্রান্তে লিপ্ত আর ক্ষমতা দখলের লড়াই গির্জাগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা প্রত্যাবর্তিত প্রভুর কাজের খোঁজ নিতেও অস্বীকার করে, উল্টে সেটার প্রতিরোধ আর নিন্দা করে গুজব রটান আর অন্যদেরকে সত্য পথ খুঁজতে বাধা দেন। এমনকি কেউ কেউ CCP’ র সাথে সহযোগিতাও করে, অন্তিম সময়ের সুসমাচার প্রচারকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে সাহায্য করে।” সে বলে, “ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ এবং পবিত্র, তাঁর রাজ্য হল পবিত্রভূমি। যারা সব সময় পাপ করে আর তাঁকে প্রতিরোধ করে তাদের ঈশ্বর কীভাবে তাঁর রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারেন? এই কারণেই প্রভু যীশু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আবার আসবেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এসেছেন, সত্য প্রকাশ করছেন আর প্রভু যীশুর উদ্ধারের কাজের ভিত্তিতে বিচারকার্য করছেন। এটা আমাদের পাপী প্রকৃতি মোচনের জন্যই, যাতে আমরা সম্পূর্ণরূপে পাপ পরিত্যাগ করতে পারি, ঈশ্বরের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পেতে পারি আর যাতে তিনি আমাদের তাঁর রাজ্যে নিয়ে যেতে পারেন। এটা প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ করে: ‘যে আমার বাণী গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে তার বিচার হবে অন্যভাবে। শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক(যোহন ১২:৪৮)। ‘তোমাদের আরও অনেক কথা আমার বলার আছে কিন্তু এখন তোমাদের পক্ষে তা হৃদয়ঙ্গম করা কঠিন। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনিই তখন তোমাদের পূর্ণ সত্যের উপলব্ধি দান করবেন। তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, যা তিনি শুনবেন শুধুমাত্র তা-ই বলবেন এবং সমস্ত ভাবী ঘটনার কথা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)।”

ঝেংদাও তখন ঈশ্বরের বাক্যের কয়েকটা অনুচ্ছেদ পড়ল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যদিও যীশু মানুষের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সমস্ত মানবজাতির মুক্তি সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন; তিনি মানুষকে তার সমস্ত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্তি দেননি। শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য শুধু যীশুর পাপস্খালনের বলি হওয়া আর মানুষের পাপ বহন করার প্রয়োজন ছিল তাই নয়, বরং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে তার শয়তানোচিত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের আরো মহত্তর কর্মের প্রয়োজন ছিল। এবং তাই, এখন যখন মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, ঈশ্বর মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহরূপে ফিরে এসেছেন এবং শাস্তি ও বিচারের কাজ শুরু করেছেন। এই কাজ মানুষকে এক উচ্চতর জগতে নিয়ে এসেছে। যারা তাঁর রাজত্বের অধীনে আত্মসমর্পণ করে তারা উচ্চতর সত্য উপভোগ করবে এবং বৃহত্তর আশীর্বাদ লাভ করবে। তারা প্রকৃতপক্ষেই আলোতে বাস করবে, এবং তারা সত্য, পথ ও জীবন লাভ করবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। “যিহোবার কাজের পরে, যীশু মানুষের মধ্যে তাঁর কাজ করার জন্য দেহরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর কাজ বিচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন হয়নি, বরং তা যিহোবার কাজের ভিত্তির উপরেই গড়ে উঠেছিলো। এই কাজ ছিল এক নতুন যুগের জন্য, যা ঈশ্বর আইনের যুগের পরিসমাপ্তি ঘটানোর পর করেছিলেন। একইভাবে, যীশুর কাজ শেষ হওয়ার পরে, ঈশ্বর পরবর্তী যুগের জন্য তাঁর কাজ চালিয়ে নিয়ে যান, কারণ ঈশ্বরের সমগ্র ব্যবস্থাপনা সর্বদা এগিয়ে চলেছে। যখন পুরানো যুগ চলে যাবে, তখন এটি একটি নতুন যুগ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে এবং একবার পুরানো কাজ শেষ হয়ে গেলে, ঈশ্বরের ব্যবস্থাপনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন কাজের উদ্ভব হবে। এই অবতার হল ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতার রূপ, যিনি যীশুর কাজের অনুসরণ করেন। অবশ্যই, এই অবতারত্ব স্বাধীনভাবে ঘটে না; এটি আইনের যুগ এবং অনুগ্রহের যুগের পরে কাজের তৃতীয় স্তর। প্রতিবার যখন ঈশ্বর কাজের একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা করেন, তখন সর্বদা এক নতুন সূচনা হবে এবং তা সর্বদা এক নতুন যুগকে নিয়ে আসবে। এর সাথে সঙ্গতি রেখে ঈশ্বরের স্বভাব, তাঁর কাজ করার পদ্ধতি, তাঁর কাজের স্থান, এবং তাঁর নামেও একই রকম পরিবর্তন হয়েছে। তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, নতুন যুগে ঈশ্বরের কাজকে মেনে নেওয়া মানুষের পক্ষে কঠিন। কিন্তু মানুষ যেভাবেই তাঁর বিরোধিতা করুক না কেন, ঈশ্বর সর্বদা তাঁর কাজ করছেন এবং সর্বদা সমগ্র মানবজাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। এটা পড়ার পর, তিনি বললেন, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বিচারকার্য করেন, আর যদিও এটা প্রভু যীশুর উদ্ধারের কাজ আর বিধানের যুগে যিহোবা ঈশ্বরের কাজ থেকে থেকে আলাদা, তবে এই কাজ ঐ দুই স্তরের কাজের ভিত্তিতেই হয়। এটা অন্তিম সময়ে ঈশ্বর মানবজাতিকে সম্পূর্ণ শুদ্ধ করে বাঁচানোর কাজ করার পর্যায়। কাজের প্রতিটি পর্যায় আগেরটার চেয়ে উচ্চ স্তরের হয়, কিন্তু সেসব একই ঈশ্বরের কীর্তি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু, আর আমাদের জন্য পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার আর শুদ্ধ হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচারকার্য গ্রহণ করা। তবেই আমরা ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশের যোগ্য হতে পারব। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করলে জ্ঞানী কুমারী হওয়া যায় যিনি প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনে তাঁকে স্বাগত। এটা সিংহাসনের সামনে তুলে দেওয়া আর প্রভুর বিয়ের ভোজসভায় যোগদান করা! এটা কীভাবে প্রভুর পথ থেকে বিচ্যুত হওয়া বা তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হতে পারে?” আমি একথা শুনে সত্যিই উত্তেজিত হয়ে গেলাম। বুঝতে পেরেছিলাম যে প্রভু যীশু আমাদের পাপ ক্ষমা করার জন্য উদ্ধারের কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি আমাদের পাপী প্রকৃতি মোচন করেননি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে বিচারকার্য করতে এসেছেন যা আমাদের পাপী প্রকৃতি থেকে মুক্তি পাওয়ার, আমাদের শুদ্ধ হয়ে পরিপূর্ণভাবে রক্ষা পাওয়ার, আর আমাদের পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় যাতে আমরা স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি। আমি জানতাম যে পূর্বের বজ্রালোকের কথা শোনা মানে প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা নয়, বরং তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে তাঁকে স্বাগত জানানো। এটা ছিল মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণ! এটা আমাকে প্রকাশিত বাক্যের এই শ্লোকের কথা মনে করিয়ে দেয়: “মেষশাবক যেখানে যান এঁরাও সেখানে তাঁর অনুসরণ করেন(প্রকাশিত বাক্য ১৪:৪)। এখন যেহেতু প্রভু ফিরে এসেছেন, তাই প্রত্যাবর্তিত প্রভুর বাণী আর কাজ গ্রহণ না করাই হবে একমাত্র বিশ্বাসঘাতকতা! সেই সময়, আমার মনে ঝড় উঠেছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই আমার বহু বছরের প্রতীক্ষিত সেই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু! অবশেষে প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারি! প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে পাব আর আমার জীবদ্দশায় তাঁকে স্বাগত জানাতে পারব-কি মহাশীর্বাদ! তবে আমি কখনো কল্পনাই করিনি যে প্রভুকে এভাবে স্বাগত জানাব। লোকে বছরের পর বছর ধরে আমার কাছে সুসমাচার প্রচার করছিলেন, কিন্তু আমি যাজকদের মিথ্যা কথা শুনতাম, তাই বারবার ঈশ্বরের পথের দরজা বন্ধ করে দিতাম আর আমার স্ত্রীকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করা থেকে দূরে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলাম। যাজকদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে, এমনকি আমার স্ত্রীর ঈশ্বরের বাণীর কপিগুলোও নষ্ট করে দিয়েছিলাম। সত্যিই আমার অভিশাপ প্রাপ্য। আমি ঈশ্বরের সামনে আসার যোগ্য ছিলাম না!

আসলে যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠরা সবাই বাইবেল ভালো করেই জানতেন আর বহু বছর ধরে প্রভুর সেবা করেছিলেন। কীভাবে তাঁরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য শাস্ত্র থেকে বেছে বেছে ভুল ব্যাখ্যা করতে পারেন, এমনকি গুজব রটিয়ে ধর্মবিশ্বাসীদের সত্য পথ খুঁজতে বাধা দিতে পারেন? আমিও সেই সময় এই বিষয়ে বিভ্রান্ত ছিলাম। সমাবেশে ভ্রাতা আর ভগিনীদের সাথে বেশ কিছুটা আলোচনা করার পর এটা আমার কাছে আরও বোধগম্য হয়। প্রভু যীশু যখন কাজ করতে এসেছিলেন তখনকার কথা ভেবে দেখো। কেন ফরিশীরা তাকে নিন্দা আর প্রতিরোধ করার জন্য মিথ্যা বলেছিল? 11 অধ্যায়ে, যোহনের সুসমাচারের 47 থেকে 48 শ্লোকে বলা হয়েছে, “তখন পুরোহিতদের নেতৃবৃন্দ ও ফরিশীরা একটি সভায় মিলিত হয়ে বলল, এখন আমরা কি করব? এই লোকটি ঐশী শক্তিসম্পন্ন সমস্ত কাজ করছে। ওকে যদি এভাবে ছেড়ে দেওয়া যায় তাহলে সমস্ত লোক ওকে বিশ্বাস করবে। তখন রোমীয়েরা এসে আমাদের পবিত্র মন্দির ও আমাদের জাতিকে ধ্বংস করে ফেলবে।” আর মথি ২৩:১৩-১৪-তে, প্রভু যীশু ফরিশীদের তিরস্কার করছেন: “ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের। তোমরা লোকের সামনে স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে দাও। নিজেরা তো প্রবেশ করই না, যারা চায় তাদেরও ঢুকতে দাও না। ভণ্ড শাস্ত্রী ও ফরিশীর দল, ধিক তোমাদের! তোমরা বিধবাদের বিষয়-সম্পত্তি গ্রাস কর, অথচ ধর্মের ভাণ করে লম্বাচওড়া প্রার্থনা আওড়াও; এজন্য বিচারে তোমাদের আরও গুরুতর শাস্তি হবে।” বাইবেলের এই অনুচ্ছেদগুলো আমাদের দেখায় যে ফরিশীদের মিথ্যার কোনো সীমা ছিল না, তারা প্রভু যীশুর বিরুদ্ধে যেত, তাঁর নিন্দা করত আর ধর্মবিশ্বাসীদের বিভ্রান্ত করত, যাতে তাদের নিজেদের সামাজিক মর্যাদা আর জীবনযাপন বজায় রাখতে পারে। তারা দাবি করেছিল যে প্রভু যীশুর পথ নীতি লঙ্ঘন করে, এটা ধর্মবিরুদ্ধ আর মানুষকে বিপথে নিয়ে যায়। তারা তাঁকে অপবাদ দিয়ে আর নিন্দা করে বলেছিল যে তিনি দানবরাজপুত্র বিলজেবাবের মাধ্যমে দৈত্যদের তাড়িয়েছেন। এমনকি প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের সত্যতা ঢাকতে মিথ্যা বলার জন্য তারা সৈন্যদের ঘুষ দিয়েছিল। ফলে অধিকাংশ ধর্মবিশ্বাসীরা বিভ্রান্ত হয়েছিল আর তারা প্রভু যীশুকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাই পরিত্রাণ থেকেও বঞ্চিত হয়েছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আবির্ভূত হয়েছেন আর অন্তিম সময়ে কাজ করছেন। ধর্মজগতের যাজকরা, দেখুন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী কতটা কর্তৃত্বপূর্ণ আর শক্তিশালী, লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের মাঝে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর চিনতে পেরে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অনুসরণ করবে। কাজেই এটা যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য সত্যিই ভীতিপ্রদ। সবাই যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস করত, তাহলে তাঁদের কথা আর কে শুনত? তাঁদের কাছে আর কে অর্ঘ্য দিত? এই কারণেই তাঁরা নিজেদের সামাজিক মর্যাদা আর আয় রক্ষা করার চেষ্টা করতে, উন্মত্তভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিষয়ে অপপ্রচার আর নিন্দা করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি তাদেরকে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে আর প্রভুকে স্বাগত জানানো থেকে বাধা দেন। তাঁদের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নিন্দা আর প্রতিরোধ করা, আর ফরিশীরা প্রভু যীশুর প্রতি যা করেছিল, এই দুটো কি আলাদা? তারা কি খ্রীষ্টবিরোধী নয় যারা মানুষকে ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাওয়া থেকে দূরে রাখে? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর আরেকটা অনুচ্ছেদ পড়ি।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “অনেকেই আছে যারা বিরাট গির্জাগুলিতে বাইবেল পড়ে এবং সারাদিন ধরে সেটি আবৃত্তি করে, তবুও তাদের কেউই ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের মধ্যে কেউই ঈশ্বরকে জানতে সক্ষম নয়, আর তাদের মধ্যে কারোর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তো আরোই কম। তারা সকলে অপদার্থ, জঘন্য মানুষ, প্রত্যেকেই ঈশ্বরকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উচ্চে দণ্ডায়মান। ঈশ্বরের ধ্বজা বহন করাকালীনও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস দাবি করেও তারা মানুষের মাংস ভক্ষণ ও রক্ত পান করে। এই ধরনের মানুষেরা হল মানুষের আত্মা-গ্রাসকারী শয়তান, সঠিক পথে পা-রাখতে চাওয়া মানুষদের ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধাদানকারী প্রধান অপদেবতা, এবং তারা হল ঈশ্বর-অন্বেষণকারীদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বাধাস্বরূপ। তাদের দেখে ‘ভালো অবস্থার’ মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা মানুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী করে তোলা খ্রীষ্টবিরোধী ছাড়া আর কেউ নয়? তাদের অনুগামীরা কীভাবে জানবে যে তারা জীবন্ত শয়তান যারা মানুষের আত্মা গ্রাস করার জন্যই নিবেদিত?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা ঈশ্বরকে জানে না তারা সকলেই ঈশ্বরবিরোধী)। যাজকরা দাবি করে তারা তাদের অনুগামীদের রক্ষা করছে, কিন্তু আসলে তারা নিজেদের সামাজিক মর্যাদা আর আয় রক্ষা করছে। যাজকরা বাইরে থেকে কতটা নিবেদিতপ্রাণ ছিল, আমি শুধু সেটাই দেখতাম, কিন্তু তাদের কাজের পিছনে আসল উদ্দেশ্য আমার চোখে পড়েনি। তাই ওনারা আমাকে বোকা বানাতে পেরেছিলেন। আমরা এই নিয়ে ভাবলে বুঝতে পারব, আমরা জানি যে প্রভুকে স্বাগত জানানো একটা বড় ব্যাপার। যাজক আর বয়োজ্যেষ্ঠ হিসাবে, যখন তারা শুনতে পায় যে কেউ প্রভুর ফিরে আসার সাক্ষ্য দিয়েছে, তাদের তখনই সেটার অনুসন্ধান আর খোঁজখবর করা উচিত, প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে আর তাঁকে স্বাগত জানাতে ভ্রাতাভগিনীদের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। কিন্তু নিজেদের উপাধি আর বেতন নিয়েই বেশি চিন্তা থাকায়, তাঁরা শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা করেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করেন আর সত্য পথের অনুসন্ধানে বাধা দেন। যখন কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করে, তখন তারা সত্য বিকৃত করে, অপবাদ দিয়ে তাদের নামে অপ্রচার চালায়, তাই অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসীরা তাদের নিন্দা আর প্রত্যাখ্যান করে। গির্জার যাজকরা এতটাই কুটিল আর খারাপ! তাদের সামাজিক মর্যাদা আর জীবনযাত্রার জন্য, তারা ভ্রাতাভগিনীদের রাজ্যে প্রবেশের সুযোগ নষ্ট করতে দ্বিধা করে না। যাচ্ছেতাই! গির্জার সেইসব যাজকরা ঈশ্বরবিরোধী খ্রীষ্টবিরোধী। তারা ঈশ্বরের শত্রু। এখন ভাবি আমি আগে এত বোকা আর অজ্ঞ ছিলাম কীভাবে। আমি প্রভুর প্রতি যেভাবে বিশ্বাস করেছিলাম সেটা প্রভুর বাণীর মর্ম না বুঝে যাজকদের মিথ্যা কথা শুনে করেছিলাম, মনেপ্রাণে ধর্মীয় ধ্যানধারণাকে আঁকড়ে ধরেছিলাম আর বারবার ঈশ্বরের পথ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। এমনকি আমার স্ত্রীকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি, যাজকদের সঙ্গে মিলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমাকে তারা প্রায় শেষ করেই দিয়েছিল। কি ভয়ানক ভাবনা! অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের আবির্ভাব আর কাজই গির্জার যাজকদের আসল চেহারা প্রকাশ করেছিল যাতে আমি দেখতে পারি যে তাঁরা ঈশ্বরবিরোধী ফরিশী আর খ্রীষ্টবিরোধী, আর তারপর তাদের প্রতারণা আর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি পাই। ঈশ্বরের কাজ এতটাই প্রায়োগিক!

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

যাজকের দুর্বৃত্তি দেখতে পাওয়া

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আমার অনলাইনে এক সিস্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সে আমাকে বলে প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বররূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন, এবং...

আমার পরিবারের দ্বারা নিপীড়িত হওয়া: এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা

আমি যখন বিশ্বাসে নতুন এসেছিলাম তখন আমার স্বামী আমার পথে বাধা সৃষ্টি করেনি, এবং আমিও তাকে সুসমাচার শুনিয়েছিলাম। কিন্তু সে অর্থ উপার্জনে খুব...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন