যখন প্রভু যীশু ক্রুশের উপর বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” তখন প্রকৃতপক্ষে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?
প্রভু যীশুর প্রতি যাদের বিশ্বাস আছে তারা মনে করে যখন প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল”, তিনি বলতে চাইছিলেন ঈশ্বরের মানবজাতিকে বাঁচাবার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। তাই সকলেই নিশ্চিত বোধ করে যে, প্রভু যখন প্রত্যাবর্তন করেন, কারণ তাঁর আর কোনো পরিত্রাণের কাজ করার থাকবে না, বরং শুধুমাত্র বিশ্বাসীদের স্বর্গে তুলে আনবেন যাতে তারা প্রভুর সাক্ষাৎ পায়, স্বর্গে আমাদের নিয়ে যাওয়াটাই তাঁর একমাত্র কাজ হবে। প্রভুর উপর আস্থা থাকা বিশ্বাসীরা এ কথাই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। এই কারণে অনেকেই তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে, অলসভাবে অপেক্ষা করে কবে প্রভু এসে সরাসরি তাদের নিজের রাজ্যে নিয়ে যাবেন। কিন্তু মহাবিপর্যয়গুলি এসে গেছে এবং অনেকেই প্রভুর আগমন দেখতে পায় না এবং তাদের বিশ্বাস কমতে থাকে এবং তারা হতাশ হয়ে ওঠে। এমনকী অনেকের সন্দেহও হল: প্রভুর প্রতিশ্রুতি কি আদৌ সত্য ছিল? তিনি কি আসছেন না কি আসছেন না? প্র্রকৃতপক্ষে, অনেক দিন আগেই প্রভু যীশু গোপনে মানষ্যপুত্র হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন, প্রকাশ করেছেন বহু সত্য এবং ঈশ্বরের ঘর থেকেই শুরু করেছেন বিচারের কাজ। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই ঈশ্বরের কন্ঠস্বর শোনার চেষ্টা করছে না অথবা, গির্জাগুলিকে বলা পবিত্র আত্মার বাক্য শুনতে সচেষ্ট হচ্ছে না, এবং তারা বরাবরই ধারণা করে চলেছে সাদা মেঘে আসীন হয়ে প্রভু আবির্ভূত হবেন এবং তাদের স্বর্গে নিয়ে যাবেন, ফলে তারা প্রভুকে স্বাগত জানানোর সুযোগ হারাচ্ছে। এই আফশোস সারাজীবন থেকে যাবে। ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় প্রভুর যীশুর বাক্যকে মানুষ যেভাবে ব্যখ্যা করে তার সঙ্গে এটি নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত: “সম্পূর্ণ হল।”
এটি থেকেই শুরু করা যাক। এত সংখ্যক বিশ্বাসী কেন মনে করে যে, প্রভু যীশু যখন বলেন “সম্পূর্ণ হল”—তার অর্থ মানুষকে পরিত্রাণের কাজ ঈশ্বর শেষ করলেন? এর কোনো ভিত্তি কি বাইবেলে আছে? পবিত্র আত্মা কি এমনটা নিশ্চিত করেছেন? প্রভু কি কখনও বলেছিলেন যে মানুষের পরিত্রাণের জন্য তিনি আর কোনও কাজ করবেন না? পবিত্র আত্মা কি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে এই কথার উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে? আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি: না। তা হলে প্রত্যেকে প্রভু যীশুর এই বাক্যের অর্থ তখনই ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে বলে কেন মনে করে? এমনটা একটু অস্বাভাবিক, তাই নয় কি? ঈশ্বরের বাক্য বোঝা সহজ ব্যাপার নয়। এটি কথিত হয়েছে ২ পিতর ১:২০ “প্রথমে জেনে রাখ, শাস্ত্রে যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে তা কোনো একজনের নিজস্ব ব্যাখ্যা নয়।” নিজের ইচ্ছামত ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা করা খুবই গুরুতর ব্যাপার। ফরিশীদের কথা স্মরণ করুন—মশীহর ভবিষ্যদ্বাণী তারা নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা করেছিলো, এবং তার ফলে মশীহরা আসেন এবং তাঁরা দেখেন যে প্রভু যীশু তাঁদের ব্যাখ্যার সঙ্গে মেলেন না। তাই তারা প্রভু যীশুর কাজের নিন্দা করে এবং এমনকি তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে। ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন হয় তারা। প্রভু যীশুর অভিশাপ যেন সরাসরি তাদের উপর বর্ষিত হয়। তারা ছিল অভিশপ্ত!
অর্থাৎ, ক্রুশবিদ্ধ প্রভু যীশু যখন বলেছিলেন, “সম্পূর্ণ হল” তিনি কী বলতে চেয়েছিলেন? এটি বুঝতে হলে অন্তিম সময়ে প্রভুর প্রত্যাবর্তনের যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে তা মনোযোগ দিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে, বিশেষ করে সেই সব ব্যাপার যা প্রভু যীশু নিজে করবেন বলেছিলেন, এবং স্বর্গরাজ্যের যে কাহিনি তিনি বলেছিলেন। এই বিষয়গুলি তাঁর অন্তিম সময়ের কাজের সাথে সরাসরি জড়িয়ে আছে। এই সব ভবিষ্যদ্বাণী এবং রূপক-কাহিনি সম্পর্কে আমাদের একটি প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে যাতে আমরা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারি প্র্রভু যীশু প্রকৃতপক্ষে কী বলতে চেয়েছিলেন যখন তিনি ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় এই বাক্য বলেছিলেন। যদি আমরা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে নাও পারি তা হলেও এই ধারণা করা অনুচিত হবে যে মানবজাতির পরিত্রাণের কাজ ঈশ্বর সম্পন্ন করেছেন। এটি একটি যুক্তিহীন এবং হাস্যকর। ধারণা প্রকৃতপক্ষে আমরা যদি প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী এবং স্বর্গরাজ্যের রূপক-কাহিনীগুলি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করি, তা হলে স্বর্গরাজ্য এবং প্রভুর প্রত্যাবর্তনের পরের কাজ সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা লাভ করব। তা হলে “সম্পূর্ণ হল”, তাঁর এই উক্তির ভুল ব্যাখ্যা আর করব না। প্রভু যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন” (যোহন ১৬:১২-১৩)। “কেউ যদি আমার কথা শোনে, এবং অবিশ্বাস করে, আমি তার বিচার করি না: কারণ আমি এই জগৎকে বিচার করতে আসি নি, এসেছি জগতের উদ্ধার করতে। যে আমার বাক্য গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে, তারও বিচারকারী রয়েছে: শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক” (যোহন ১২:৪৭-৪৮)। “পিতা কারও বিচার করেন না, বিচারের ভার সম্পূর্ণরূপে তিনি পুত্রকেই দান করেছেন। … তাঁকে তিনি বিচারকার্য নির্বাহের দায়িত্বও দিয়েছেন, কারণ তিনি মানবপুত্র” (যোহন ৫:২২, ২৭)। এবং ১ এ পিতর এটি বলেছিলেনঃ “বিচারের কাল সমাগত, ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে শুরু” (১ পিতর ৪:১৭)। প্রকাশিত বাক্যে আমরা দেখি “দেখ, যিনি ‘যিহুদা-কেশরী’ ও ‘দাউদকুলতিলক’ তিনি জয়ী হয়েছেন। তিনিই সাতটি সীলমোহর ভেঙ্গে ঐ গ্রন্থ খুলে পাঠ করতে পারেন” (প্রকাশিত বাক্য ৫:৫)। “শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন” (প্রকাশিত বাক্য ২:৭)। স্বর্গরাজ্যের বর্ণনায় প্রভু যীশু বহু রূপক-কাহিনী ব্যবহার করেছিলেন, যেমন “আবার স্বর্গরাজ্য একখানি টানাজালের মত। জালটি সমুদ্রে ফেলা হল এবং তাতে সব রকমের মাছ ধরা পড়ল। জাল বোঝাই হতে গেলে লোকে সেটিকে টেনে ডাঙ্গায় তুলল। তারা ভাল মাছগুলি বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং যে মাছগুলি নেবার মত নয় সেগুলি বাইরে ফেলে দিল। জগতের অন্তিমকালে ঠিক এ রকমই হবে। স্বর্গদূতেরা এসে ধার্মিকদের মধ্যে থেক দুষ্টদের আলাদা করে অগ্নিকুণ্ডে ফেলে দেবে। সেখানেই তারা অনুশোচনা ও আক্ষেপ করবে” (মথি ১৩:৪৭-৫০)। এই সব ভবিষ্যদ্বাণী এবং রূপক-কাহিনি থেকে আমরা জানতে পারি যে প্রভু যীশু বলেছিলেন, প্রত্যাবর্তনের পরে তিনি অনেক কাজ করবেন। কিন্তু এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল সত্যের প্রকাশ এবং বিচারকার্য করা। সর্বৈব সত্যের পথে তিনি মানবজাতিকে চালিত করবেন এবং প্র্রকৃতি অনুযায়ী তাদের বাছাই করবেন। যাদের নিখুঁতকরণ সম্ভব তাদের নিখুঁত করবেন, এবং যাদের নির্মূল করা দরকার তাদের নির্মূল করবেন। স্বর্গরাজ্য সম্পর্কে প্রভু যীশু যা কিছু বলেছেন তার সবই এই সময় উপলব্ধি হবে। সেই গম, আগাছা এবং মাছ ধরা জালের কথা ভাবো সেই মূর্খ এবং জ্ঞানী কুমারীর কথা, মেষ ও ছাগ এবং সৎ ও মন্দ ভৃত্যের কথা। ঈশ্বরের ঘর থেকে শুরু হওয়া বিচারের কাজ পৃথক করে দেবে গম ও আগাছা, সৎ এবং মন্দ ভৃত্য, যারা সত্যকে ভালোবাসে এবং যারা আরামের জন্য লালায়িত। জ্ঞানী কুমারীরা মেষের বিবাহ-ভোজে যোগ দেবে এবং ঈশ্বরের দ্বারা পরিশুদ্ধ হবে। তা হলে মূর্খ কুমারীদের কী হবে? বিপর্যয়ের মুখে পড়বে তারা, কাঁদবে এবং আর্তনাদ করবে, কারণ তারা ঈশ্বরের কন্ঠস্বর শোনেনি। এই হল বিচারকার্য যা সকলকে তাদের চরিত্র অনুযায়ী বাছাই করবে, পুরস্কৃত হবে সৎ এবং শাস্তি পাবে মন্দরা, এবং এ ভাবেই সম্পূর্ণ হবে প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণী। “যে অন্যায় অধর্ম করে সে এর পরেও অধর্মাচরণ করুক, যে কলুষিত সে কলুষিত থাকুক। যে ধার্মিক সে ধর্মাচরণ করুক। যে পবিত্র সে পবিত্র থাকুক” (প্রকাশিত বাক্য ২২:১১)। “দেখ, আমি শীঘ্রই আসছি, প্রত্যেকের কর্মানুযায়ী যে প্রতিফল আমি দেব তা-ও আমি সঙ্গে নিয়ে আসছি” (প্রকাশিত বাক্য ২২:১২)। প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী যখন আমরা প্রকৃতভাবে বুঝব, তখন আমরা জানব যে অন্তিম সময়ে প্রভুর প্রত্যাবর্তনের মূল অর্থ হল সত্য প্রকাশ এবং বিচারকার্য করা, প্র্রত্যেকের চরিত্র অনুযায়ী বাছাই করে তাদের পরিণতি নির্ধারণ করা। তা হলে আমরা কি প্রকৃতই দাবি করতে পারি যে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় প্রভু যীশু যখন বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” তখন তার অর্থ ছিল মানবজাতিকে পরিত্রাণের কাজ সম্পূর্ণ করা হল? আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা কি এখনও মূর্খের মত অপেক্ষা করব যে মেঘে আসীন হয়ে প্রভু যীশু অবতীর্ণ হবেন এবং তাঁর দর্শন দিতে আমাদের স্বর্গে নিয়ে যাবেন? আমরা কি এখনও অযথা নিন্দা করব সেই সব প্রকাশিত সত্যের যা ঈশ্বর প্রকাশ করেন তাঁর অন্তিম সময়ের কাজে? আমরা কি নির্লজ্জভাবে অস্বীকার করব যে মানব শরীরে এবং মনুষ্যপুত্র হয়েই ঈশ্বর প্রত্যাবর্তন করেছেন অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ করার জন্য? মহাবিপর্যয় ইতিমধ্যেই এসে গেছে, এবং বহু ধার্মিক মানুষ এখনও ঈশ্বরের প্রত্যাবর্তনের স্বপ্নেই বিভোর হয়ে ভাবছেন যে তিনি তাদের কখনও পরিত্যাগ করবেন না। জেগে ওঠার সময় হয়েছে। তারা যদি জেগে না ওঠে, যখন বিপর্যয় শেষ হবে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর প্রকাশ্যে সকল মানুষের সামনে আবির্ভূত হবেন, স্বর্গ এবং পৃথিবীকে ঈশ্বর নতুনভাবে গড়ে তুলবেন, এবং তথাকথিত ধর্মজগতের মানুষরা ক্রন্দন ও দাঁতে দাঁত ঘষে যাবে। প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণী এভাবেই পূর্ণ হবে: “দেখ, মেঘবাহনে তিনি আসিতেছেন! প্রতিটি নয়ন তাঁকে দেখবে, দেখবে তারাও যারা তাঁকে বিদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর সমস্ত মানবগোষ্ঠী তাঁর জন্য বিলাপ করবে” (প্রকাশিত বাক্য ১:৭)।
অনেকেই এ প্রশ্ন করতে বাধ্য প্রভু যীশু প্রকৃতপক্ষে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন যখন তিনি ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” আসলে এটি খুবই সহজ। প্র্রভু যীশুর বাক্য সবসময়েই খুব বাস্তবসম্মত, সুতরাং যখন তিনি এমন বলেছিলেন, তিনি নিশ্চিতভাবে উদ্ধার কাজের প্রসঙ্গই উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু মানুষ জোর করে বুঝতে চায় প্রভুর এই বাস্তব বাক্য হল মানুষের উদ্ধার নিয়ে ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কিত, কিন্তু এটি সর্বতোভাবে যুক্তিহীন ভাবনা, কারণ, মানবজাতির উদ্ধারকার্য ঈশ্বর আংশিকভাবে সম্পন্ন করেছিলেন। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বাকী ছিল—অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারকার্য। কেন আপনি ভেবে যাবেন যে “সম্পূর্ণ হল” বাক্যের অর্থ হল ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে? তা কি অলীক এবং অযৌক্তিক নয়? প্রথমত প্রভু যীশু কেন ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন? প্রকৃতপক্ষে এর মধ্য দিয়ে তিনি কী সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন? কী ফল হয়েছিল? সব বিশ্বাসীরাই এটি জানেন, কারণ, বাইবেলে খুব স্পষ্টভাবে তা নিবন্ধিত আছে। মানুষকে মুক্তি দিতেই প্রভু যীশু এসেছিলেন। ক্রুশবিদ্ধ হয়ে প্রভু যীশু মানুষের জন্য পাপস্খালন করেছিলেন, প্রতিটি মানুষের পাপ গ্রহণ করেছিলেন যাতে মানুষ আর নিন্দিত না হয় এবং আইনত মৃত্যুদন্ড না পায়। যাতে মানুষ তাদের পাপের ক্ষমা পেতে পারে যতক্ষণ তারা প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখবে এবং প্রার্থনা করবে ও তাঁর কাছে স্বীকার করে নেবে, এবং ঈশ্বরের অবিশ্বাস্য অনুগ্রহে বাধিত হবে। এই হল করুণার মাধ্যমে পরিত্রাণ, এবং এই ছিল প্রভু যীশুর মুক্তিকার্যের পরিণতি। যদিও আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ীই আমাদের পাপস্খালন হয়, তবুও কেউই অস্বীকার করবেন না যে আমরা অবিরত পাপ করে চলি। পাপ করা, স্বীকার করে নেওয়া এবং আবার পাপে লিপ্ত হওয়ার এক চক্রে আমরা জীবন যাপন করে চলেছি। পাপ করা থেকে আমরা আদতেই মুক্ত হই না। এতে কী বোঝা যায়? এর অর্থ হল আমাদের প্রকৃতি এখনও পাপপূর্ণ এবং স্বভাব শয়তানোচিত, তাই আমাদের পাপস্খালন হলেও পাপের পর পাপ করার সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাই না। এর ফলে সব বিশ্বাসীরা বিভ্রান্ত হয়ে যায়—এ খুবই বেদনাদায়ক বিষয়। ঈশ্বরের বাক্য বলে, “অতএব তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র” (লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫)। ঈশ্বর ধার্মিক এবং পবিত্র, সুতরাং যারা অশুদ্ধ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে না। সুতরাং, যে সব মানুষ ক্রমাগতই পাপ করে এবং ঈশ্বরের বিরোধিতা করে তারা কী ভাবে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য হবে? মানুষ যেহেতু সম্পূর্ণভাবে পাপমুক্ত এবং শুদ্ধ হয় নি, তাই মানুষকে ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সত্যই কি শেষ হয়েছে? ঈশ্বরের পরিত্রাণই সম্পূর্ণ পরিত্রাণ—মধ্যপথে তাঁর কাজ তিনি কখনই ছেড়ে দেন না। সেই কারণেই প্রভু যীশু বহুবার তাঁর প্রত্যাবর্তনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। বেশ কছু কাল আগেই অন্তিম সময়ে তিনি প্রত্যাবর্তন করেছেন, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অবতাররূপে। বিচারকার্য করার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্য প্রকাশ করেছেন প্রভুর মুক্তির কাজের উপর ভিত্তি করে। এই কাজ হল দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব থেকে মানুষকে শুদ্ধ করতে যাতে আমরা পাপের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পারি। এ হল শয়তানের শক্তি থেকে আমাদের সম্পূর্ণ মুক্ত করতে এবং শেষ পর্যন্ত স্বর্গরাজ্যে নিয়ে আসতে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ সমাধা না হওয়া পর্যন্ত মানুষকে পরিত্রাণের কাজ ঈশ্বরের সম্পূর্ণ হবে না।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যদিও যীশু মানুষের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সমস্ত মানবজাতির মুক্তি সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন; তিনি মানুষকে তার সমস্ত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্তি দেননি। শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য শুধু যীশুর পাপস্খালনের বলি হওয়া আর মানুষের পাপ বহন করার প্রয়োজন ছিল তাই নয়, বরং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে তার শয়তানোচিত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের আরো মহত্তর কর্মের প্রয়োজন ছিল। এবং তাই, এখন যখন মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, ঈশ্বর মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহরূপে ফিরে এসেছেন এবং শাস্তি ও বিচারের কাজ শুরু করেছেন। এই কাজ মানুষকে এক উচ্চতর জগতে নিয়ে এসেছে। যারা তাঁর রাজত্বের অধীনে আত্মসমর্পণ করে তারা উচ্চতর সত্য উপভোগ করবে এবং বৃহত্তর আশীর্বাদ লাভ করবে। তারা প্রকৃতপক্ষেই আলোতে বাস করবে, এবং তারা সত্য, পথ ও জীবন লাভ করবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)।
“এই বিচার ও শাস্তিদানের কার্যের মাধ্যমে মানুষ নিজের ভিতরের কলুষিত ও ভ্রষ্ট সত্তার সম্বন্ধে জানতে পারবে, এবং সে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত ও শুদ্ধ হতে সক্ষম হবে। একমাত্র এই উপায়েই মানুষ ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে প্রত্যাবর্তনের যোগ্য হয়ে উঠবে। এখনকার দিনে যে সমস্ত কার্য সম্পাদিত হয়, তা সকলই মানুষকে শুদ্ধ ও পরিবর্তিত করার জন্য; বাক্য দ্বারা বিচার ও শাস্তির মাধ্যমে, এবং সেইসাথে পরিমার্জনের দ্বারা, মানুষ যাতে কলুষতা দূর করতে ও পরিশুদ্ধ হতে পারে। এই পর্যায়ের কাজকে পরিত্রাণের কাজ হিসেবে গণ্য না করে বরং শুদ্ধিকরণের কাজ বললে বেশি যথার্থ হবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪))।
“নির্যাসগত ভাবে, ঈশ্বরের শাস্তিবিধান ও বিচারের কাজের উদ্দেশ্য হল মানবজাতিকে চরম বিশ্রামের স্বার্থে পরিশুদ্ধ করা; এই পরিশোধন ছাড়া, মানবজাতির কাউকেই প্রকার অনুযায়ী নানা শ্রেণীতে ভাগ করা যাবে না, বা বিশ্রামে প্রবেশ করানো যাবে না। এই কাজই হল মানুষের বিশ্রামে প্রবেশ করার একমাত্র পথ। শুধুমাত্র ঈশ্বরের শুদ্ধিকরণই মানুষকে তার অ-ন্যায়পরায়ণতা থেকে পরিশুদ্ধ করবে, এবং শুধুমাত্র তাঁর শাস্তিবিধান ও বিচারের কাজই মানবজাতির সেই সব আনুগত্যহীন সদস্যদের আলোয় নিয়ে আসবে, এবং এইভাবে উদ্ধারযোগ্য মানুষদের আলাদা করবে যাদের উদ্ধার করা সম্ভব নয় তাদের থেকে, এবং, যারা থেকে যাবে তাদের আলাদা করবে যারা থাকবে না তাদের থেকে। এই কাজ শেষ হলে যাদের থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তারা সকলেই পরিশুদ্ধ হবে এবং মানবিকতার এক উন্নততর পর্যায়ে প্রবেশ করবে যে পর্যায়ে তারা পৃথিবীতে এক সুন্দরতর দ্বিতীয় জীবন উপভোগ করবে; অর্থাৎ তারা তাদের মানব জীবনের বিশ্রামের দিন শুরু করবে ও ঈশ্বরের সঙ্গে সহাবস্থান করবে। যাদের থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না, তাদের শাস্তিবিধান ও বিচার করার পর তাদের প্রকৃত চরিত্র সম্পূর্ণরূপে অনাবৃত হবে, যার পর তাদের সকলকে ধ্বংস করা হবে, এবং শয়তানের মতোই, আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অনুমতি পাবে না। ভবিষ্যতের মানবজাতিতে এই ধরনের মানুষ আর অন্তর্ভুক্ত হবে না; এই ধরনের মানুষ অন্তিম বিশ্রামের দেশে প্রবেশ করার উপযুক্ত নয়, এবং ঈশ্বর ও মানুষের যৌথ বিশ্রামের দিনে অংশ নেওয়ারও উপযুক্ত নয়, কারণ তারা শাস্তির লক্ষ্য, তারা দুষ্ট ও অ-ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি। … ঈশ্বরের দুষ্টকে শাস্তি দেওয়ার ও সাধু ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করার চূড়ান্ত কাজের সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যই হল সমস্ত মানুষকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিশুদ্ধ করা যাতে তিনি সম্পূর্ণ পবিত্র এক মানবজাতিকে শাশ্বত বিশ্রাম দিতে পারেন। তাঁর এই পর্যায়ের কাজই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; এ হল তাঁর ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ণ কাজের অন্তিম পর্যায়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর এবং মানুষ একসাথে বিশ্রামে প্রবেশ করবে)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য খুবই স্পষ্ট। অনুগ্রহের যুগে প্রভু যীশুর মুক্তির কাজ ছিল শুধুমাত্র মানুষের পাপের ক্ষমার জন্য। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের বিচারকার্য হল মানুষকে সর্বতোভাবে নিষ্কলুষ করে তার পরিত্রাণ করা। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাাক্য মানুষের বিদ্রোহী, ঈশ্বর-বিরোধী প্রকৃতি ও সারমর্মের বিচার এবং উন্মোচন করে আমাদের শয়তানি স্বভাব এবং দুর্নীতিকে জানতে দেয়। এটি আমাদের দেখায় যে আমরা শয়তানি স্বভাবে ভরা, যেমন ঔদ্ধত্য, ধূর্ততা এবং দুষ্টতা সামান্যতম মানবিকতা রহিত। মানুষের কাছে এটিই একমাত্র পথ যাতে সেই সত্য তারা জানতে পারে যে কত গভীরভাবে তারা শয়তানের দ্বারা কলুষিত, যাতে তারা প্রকৃতই নিজেদেরকে ঘৃণা করে এবং সত্যকার অনুশোচনা করে, তারপর ঈশ্বরের কাছে অনুতপ্ত হয়। তারপর তারা দেখতে পাবে সত্য কতটা মূল্যবান এবং ঈশ্বর-বাক্যের অনুশীলনে মনোযোগী হবে এবং বাস্তব সত্যে প্রবেশ করবে। ফলে ক্রমে ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্ত হয়ে তারা নিজ জীবনের পরিবর্তন শুরু করবে, এবং শেষ পর্যন্ত প্রকৃতভাবে ঈশ্বরে সমর্পিত ও ঈশ্বর-ভীত হবে এবং তাঁর বাক্য অনুযায়ী জীবন যাপন করবে। এইভাবে মানুষ সর্বতোভাবে শয়তানি শক্তি মুক্ত হবে এবং ঈশ্বরের পরিত্রাণ পাবে, তবেই তারা ঈশ্বরের সুরক্ষা পাবে এবং অন্তিম সময়ে বিপুল বিপর্যয়ের মধ্যেও বেঁচে থাকবে, এবং প্রবেশ করবে সুদৃশ গন্তব্যে যা মানবগোষ্ঠীর জন্য ঈশ্বর প্রস্তুত রেখেছেন। এতে সম্পুর্ণ হবে উদঘাটনের ভবিষ্যদ্বাণী ২১:৩-৬। “তখন আমি সিংহাসন থেকে উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত এই বাণী শুনলাম: ‘দেখ, ঈশ্বরের উপাসনালয় মানুষের মাঝে, তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন, তারা হবে তাঁর প্রজা। ঈশ্বর স্বয়ং তাদের সঙ্গে থাকবেন, হবেন তাদের ঈশ্বর। তিনি মুছিয়ে দেবেন অশ্রুধারা। থাকবে না আর মৃত্যুর অস্তিত্ব। শোক, আর্তনাদ, আর থাকবে না। পুরাতন সব কিছুই হয়েছে বিলীন।’ সিংহাসনে যিনি আসীন, তিনি বললেন, ‘দেখ, আমি সব কিছুই নবায়িত করছি।’ তিনি আমাকে বললেন, ‘একথা লিখে রাখ, কারণ এ সবই বিশ্বাস্য ও সত্য।’ এর পরে তিনি বললেন, ‘সুসম্পন্ন হল। আমিই আল্ফা এবং ওমেগা, আদি ও অন্ত। যে তৃষ্ণার্ত তাকে আমি জীবন জলের উৎস থেকে বিনামূল্যে পান করতে দেব।’” এখানে, ঈশ্বর বলেছেন “সুসম্পন্ন হল।” প্রভু যীশু যা বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল” তার থেকে এটি সম্পুর্ণ পৃথক। দুটির প্রসঙ্গ পৃথক, দুই বিশ্বের। প্রভু যীশু যখন ক্রুশের উপর বলেছিলেন “সম্পূর্ণ হল”, তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে তাঁর মুক্তির কাজ সম্পূর্ণ হল। উদঘাটন পুস্তকে “সুসম্পন্ন হল” এই বাক্যবন্ধে ঈশ্বর বলতে চেয়েছেন মানবজাতির মুক্তির জন্য তাঁর কাজ সম্পূর্ণ হল, যখন ঈশ্বরের আবাস মানুষের সাথে হয়, তখন তিনি তাদের মধ্যে বাস করবেন, এবং তারাই তাঁর স্বর্গরাজ্যের প্রজা, যেখানে আর কান্না, মৃত্যু বা দুঃখ থাকবে না। এটিই হল ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার একমাত্র বৈশিষ্ট্য।
এই মুহূর্তে, এটি সবার কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত যে প্রভু যীশুর ক্রুশের উপরে বলা বাক্যের অর্থ ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজ সমাধা হয়েছে বাস্তবে ঈশ্বরের কাজের সম্পূর্ণ বিপরীত এবং তা নিছকই মানুষের ধারণা মাত্র। এটি প্রভুর বাক্যর ভুল ব্যাখ্যা যা প্রতারণামূলক এবং বিভ্রান্তিকর, এবং কতজন মানুষ যে এটি করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা অন্ধভাবে এটিকে আঁকড়ে ধরে আছে, শুধু অপেক্ষায় আছে মেঘে আসীন হয়ে প্রভু হঠাৎ আবির্ভূত হবেন যাতে তাদের স্বর্গরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত অনেক সত্য পরীক্ষায় অস্বীকৃত হয়ে, সর্বতোভাবে নষ্ট করছে প্রভুর সাক্ষাৎ লাভের সুযোগ। এবং অবশ্যই তারা কোনোভাবেই পাপ থেকে অব্যাহতি বা সম্পূর্ণাউদ্ধার পাবে না। তাহলে সারাজীবনের বিশ্বাস শূন্য হয়ে যাবে, এবং তারা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে ঈশ্বরের দ্বারা নির্মূল হতে বাধ্য।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট যে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দিয়েছেন তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।