রক্ষাকর্তা যখন ফিরে আসবেন, তিনি কি তখনও যীশু নামেই অভিহিত হবেন?

25-07-2023

অন্তিম সময়ে, রক্ষাকর্তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে এসে গেছেন, তিনি সত্য প্রকাশ করছেন, মানবজাতিকে সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করতে আবির্ভূত হয়েছেন ও কাজ করছেন। যেহেতু বাক্য দেহে আবির্ভূত হল বইটা সারা পৃথিবীর জন্য অনলাইনে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই সবজায়গার মানুষই দেখেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই সত্য, এবং তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনেছে। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের মুখ না দেখে থাকতে পারে, কিন্তু তারা নিশ্চিত যে তাঁর বাক্য সম্পূর্ণরূপে পবিত্র আত্মার বাক্য, ঈশ্বর মানবজাতির উদ্দেশ্যে কথা বলছেন, এবং বাক্য দেহে আবির্ভূত হচ্ছে। তারা অবশেষে মনুষ্যপুত্রের আবির্ভাব ও কাজকে প্রত্যক্ষ করেছে, এবং ঈশ্বরের পদচিহ্ন খুঁজে পেয়েছে। রোমাঞ্চিত হয়ে তারা সবাই এই সংবাদ ভাগ করে নেওয়ার জন্য চারিদিকে ছুটে বেড়াচ্ছে, আনন্দের সাথে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করছে, ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে আসছে। তারা প্রতিদিন ঈশ্বরের সাম্প্রতিক বাক্য ভোজন ও পান করছে, যতই পাঠ করছে তত বেশি আলোকপ্রাপ্তি লাভ করছে, ঈশ্বরের বাক্যের সিঞ্চন ও মেষপালন উপভোগ করছে। তারা প্রচুর সত্য শিখতে পারছে এবং তাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে, সাক্ষ্য দিচ্ছে যে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য রক্ষাকর্তা পৃথিবীতে এসেছেন। বিশ্বাস ও শক্তিতে তারা প্লাবিত হচ্ছে, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পাচ্ছে। তাদের অন্বেষণে ও জীবনের দিকনির্দেশে সঠিক লক্ষ্য রয়েছে, এবং তারা ঈশ্বরের জন্য নিজেদের যথাসাধ্য দিচ্ছে, ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করছে। পৃথিবীজুড়ে আরও বেশি লোক প্রকৃত পথের অনুসন্ধান করছে। এখন যেহেতু সমস্তরকম বিপর্যয় নেমে আসতে শুরু করেছে, তাই সকলেই সন্ধান করতে বাধ্য হয়েছে প্রকৃত পথের, পবিত্র আত্মার পদচিহ্নের, এবং রক্ষাকর্তার আবির্ভাব ও কাজের। এটাই অনিবার্য প্রবণতা। পৃথিবীর সমস্ত দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে, অনেকেই প্রকৃত পথ গ্রহণ করছে এবং প্রতিদিন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অভিমুখী হয়ে উঠছে। অনেক দেশে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা স্থাপিত হচ্ছে, যিশাইয়-র এই স্তবককে সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত করে তুলছে: “এবং অন্তিম সময়ে এরকম ঘটবে, যিহোবার গৃহসমেত পর্বত সকল পর্বতের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং সকল গিরিশৃঙ্গের উপর উন্নীত হবে; এবং সকল জাতি সেদিকে স্রোতসম ধাবিত হবে(যিশাইয় ২:২)। যখন অনেকেই ক্ষুধার্তভাবে প্রকৃত পথের অনুসন্ধান করছে, তখন কেউ কেউ আছে যারা নিশ্চিত করেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই সত্য, সেগুলো কর্তৃত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী, কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের একজন সাধারণ মানুষের মতো চেহারা দেখে, তিনি প্রভু যীশুর আধ্যাত্মিক আকারে আবির্ভূত হননি এবং অলৌকিক চিহ্ন ও নিদর্শন প্রকাশ করেননি দেখে, তারা সেখানেই আটকে পড়েছে এবং তাঁকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করছে। আবার কিছু মানুষ সন্দেহের ছায়ামাত্র না রেখে দেখতে পেয়েছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই সকল সত্য, কিন্তু যেহেতু সেগুলো বাইবেলে লিপিবদ্ধ নেই, তাই তারা নিশ্চয়তা অনুভব করে না যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। তারা এখানেই আটকে যায়, এবং তাঁকে স্বীকার করে না। আবার অন্য কিছু মানুষও আছে যারা স্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই সত্য এবং তা ঈশ্বরের থেকে আগত, কিন্তু যেহেতু তারা দেখে যে বাইবেলে লেখা আছে, “যীশু খ্রীষ্ট কাল যেমন ছিলেন, আজও তেমনি আছেন এবং চিরকাল একই থাকবেন” (হিব্রু ১৩:৮), তাই তারা বিশ্বাস করে যীশু নামটা কখনও বদলাবে না। তারা মনে করে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম যীশু নয়, এবং বাইবেলে কোথাও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নামের উল্লেখ নেই, তাই তারা স্বীকার করবে না যে তিনিই পৃথিবীতে অবতীর্ণ রক্ষাকর্তা। তারা মনে করে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে গ্রহণ করলে তা প্রভু যীশুর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হবে, তাই তারা সেখানেই আটকে পড়ে, এবং তাঁকে স্বীকার করে না। এই তিনটে পরিস্থিতিই একটামাত্র অন্তর্নিহিত সমস্যার কাছে ফিরে আসে: সর্বশক্তিমান ঈশ্বর দেখতে ঠিক একজন সাধারণ মানুষের মতো, এবং তিনি যা বলেন তা সবই সত্য, এবং তা শক্তিশালী ও কর্তৃত্বপূর্ণ, কিন্তু তিনি যীশু নামে অভিহিত নন এবং তিনি যীশুর আধ্যাত্মিক আকারে আবির্ভূত হননি, তাই তারা স্বীকার করবে না যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। একমাত্র মানুষের পূর্বধারণা ও কল্পনার ভিত্তিতেই এটা বোধগম্য, কিন্তু ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজের মধ্যে এমন অনেক রহস্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা মানুষের কাছে অতল। সত্যের সন্ধান না ক’রে, এবং ঈশ্বরের বাক্য, ও তাঁর কাজের ঘটনাগুলো অনুযায়ী বিষয়গুলো নির্ধারণ না ক’রে, কেউ সঠিক উত্তর খুঁজে পেতে পারে না। বাইবেলের আক্ষরিক শব্দ ও তাদের পূর্বধারণা আঁকড়ে থাকা, সেই খ্রীষ্টকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করা যিনি সত্য প্রকাশ করেন, এক অকল্পনীয় পরিণাম বয়ে আনবে। এ ঠিক ইহুদিধর্মের সেই মানুষদের মতো যারা প্রভু যীশুর মুক্তি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিল এবং অভিশপ্ত হয়েছিল। এই যন্ত্রণাময় শিক্ষা বহুদিন ধরেই আমাদের ঠিক সামনে রয়েছে। এখন যেহেতু রক্ষাকর্তা এসেছেন, আমরা কল্পনা করতে পারি যে সত্যের সন্ধানে ব্যর্থ হওয়ার পরিণাম কী হবে। ভালো কথা, রক্ষাকর্তা যখন ফিরে আসবেন, তিনি কি তখনও “যীশু” নামেই অভিহিত হবেন? এই বিষয়ে আমি আমার নিজের সামান্যকিছু উপলব্ধি ভাগ ক’রে নেবো।

প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে, কীভাবে নিশ্চিত হবো যে ইনিই অবতীর্ণ রক্ষাকর্তা। আমরা নিছক এটার উপর নির্ভর করতে পারি না যে তাঁর নাম প্রভু যীশু কি না, তিনি প্রভু যীশুর মতো দেখতে কি না। মূল বিষয় হলো যে তিনি সত্য অভিব্যক্ত করতে এবং ঈশ্বরের কাজ করতে পারেন কি না, তিনি মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করতে পারেন কি না। যতক্ষণ তিনি সত্য প্রকাশ করছেন, ঈশ্বরের কণ্ঠ প্রকাশ করছেন এবং মানবজাতিকে উদ্ধারের কাজ করছেন, ততক্ষণ এতে কিছু যায় আসে না যে তিনি কী নামে অভিহিত বা তাঁকে কত সাধারণ দেখতে। আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে তিনিই দেহরূপে ঈশ্বর, প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। তিনিই পৃথিবীতে আগত রক্ষাকর্তা। আমরা যদি শুধু তাঁর নাম বা তাঁর বাহ্যিক রূপকেই দেখি, তাহলে ভুল হয়ে যাওয়া খুবই সহজ। আমরা সবাই জানি যে ঈশ্বর বিধানের যুগে এসেছিলেন যিহোবা নাম নিয়ে, এবং অনুগ্রহের যুগে যীশু নাম নিয়ে। তিনি আর যিহোবা নামে অভিহিত হননি, বরং যীশু নাম গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু প্রভু যীশুই ছিলেন অবতাররূপী যিহোবা ঈশ্বর। তিনি ছিলেন মনুষ্যপুত্র রূপে দেহরূপ পরিহিত যিহোবা ঈশ্বর, যিনি মানবজাতির কাছে আবির্ভূত হতে ও কাজ করতে এসেছিলেন। প্রভু যীশু এবং যিহোবা ঈশ্বর ছিলেন একই আত্মা, এবং এক ঈশ্বর। প্রভু যীশুর প্রকাশিত অনুশোচনার পথ ও রাজ্যের রহস্য, সেইসঙ্গে তাঁর মুক্তির কাজ, সম্পূর্ণভাবে প্রমাণ করেছে যে তিনিই ছিলেন দেহরূপী ঈশ্বর, একমাত্র সত্য ঈশ্বরের মূর্তরূপ, এবং রক্ষাকর্তা। ইহুদিধর্মের মধ্যে যারা ছিল তারা সেই সময় তা দেখতে পারেনি। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই চিনতে পেরেছিল যে প্রভু যীশুর পথ শক্তিশালী ও কর্তৃত্বপূর্ণ, কিন্তু যেহেতু তিনি মশীহ নামে অভিহিত ছিলেন না, এবং একজন সাধারণ মানুষের মতো দেখতে ছিলেন, তাই তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে ও তিরস্কার করে। প্রভু যীশুর পথ যত সুউচ্চই হোক, তারা সেটার সন্ধান বা তদন্ত করেনি, বরং ধর্মনিন্দার অপরাধে তাঁকে অভিযুক্ত করে, এমনকি তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে। তারা ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত ও দণ্ডিত হয়েছিল। কোথায় ভুল হয়েছিল তাদের? তারা জানতো না যে অবতার কী, এবং জানতো না যে সত্য প্রকাশের মাধ্যমে ঈশ্বরের অবতারের দেবত্ব প্রদর্শিত হয়েছে, তাই মনুষ্যপুত্র যত বেশি সত্যই প্রকাশ করে থাকুন বা তাঁর কাজ যত বিশালই হোক, তারা তাঁকে ঈশ্বর হিসাবে স্বীকার করতো না। তারা তাঁকে মানুষ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছিল; এই বিষয়ে তারা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত ছিল এবং বিশ্বাস করতে অস্বীকার করেছিল। এর ফলশ্রুতি হিসাবে, তারা ঈশ্বরের পরিত্রাণ হারায় এবং পরিশেষে দণ্ড ও অভিশাপ লাভ করে। এ কি মনুষ্যোচিত মূর্খতা ও অজ্ঞতা নয়? এবং এখন, যদিও ধর্মীয় জগতের অনেকেই চিনতে পেরেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যই সত্য এবং তা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে, তারা তবুও আক্ষরিক শাস্ত্রবাক্য আঁকড়ে ধরে থাকে, তাদের পূর্বধারণা ও কল্পনার অনুসরণ করে, জোর দিতে থাকে যে ঈশ্বরের নাম হল যীশু এবং তা কখনও বদলাবে না, আর যখন তিনি ফিরবেন তখনও এই নামেই অভিহিত হবেন। যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যীশু নামে অভিহিত নন, এবং তিনি যীশুর প্রতিমূর্তিরূপে মেঘে চড়ে অবতীর্ণ হননি, তাই তারা মেনে নিতে একেবারেই অস্বীকার করে যে তিনিই প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু। তারাও কি সেই ইহুদিদের মতো একই ভুল করছে না? এর ফলে, তারা এখনও প্রভুকে স্বাগত জানায়নি, তাই তারা বিশাল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে, বুক চাপড়াবে, কাঁদবে, আর দাঁতে দাঁত ঘষবে। প্রভুকে স্বাগত জানানোর এবং বিপর্যয়ের পূর্বে উন্নীত হওয়ার তাদের যে প্রত্যাশা তা একেবারেই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এ কি দুঃখজনক নয়? এ কথা কি সত্যি যে ঈশ্বরের যীশু নাম কখনোই পরিবর্তিত হবে না? তা কি বাইবেলে ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারা সমর্থিত? বস্তুত, বাইবেল বহু আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে প্রভু এক নতুন নামে আসবেন। যিশাইয় স্পষ্টভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করছে: “এবং সকল অইহুদি তোমার ন্যায়পরায়ণতা প্রত্যক্ষ করবে, আর সকল রাজা প্রত্যক্ষ করবে তোমার মহিমা: এবং তুমি অভিহিত হবে এক নতুন নামে, যে নাম হবে যিহোবার মুখনিঃসৃত(যিশাইয় ৬২:২)। আর প্রকাশিত বাক্য বলছে: “যে জয়ী হবে আমি তাকে আমার ঈশ্বরের মন্দিরের স্তম্ভস্বরূপ করব, সে কখনও স্থানচ্যূত হবে না। তার উপরে আমি লিখব আমার ঈশ্বরের নাম। লিখব আমার ঈশ্বরের নতুন নগরীর নাম—নতুন জেরুশালেম যা স্বর্গ থেকে, আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। আর লিখব আমার নিজের নতুন নাম(প্রকাশিত বাক্য ৩:১২)। এই দুই স্তবকই স্পষ্টভাবে ঈশ্বরের এক নতুন নাম গ্রহণের উল্লেখ করছে। যেহেতু এ এক নতুন নাম, যা তাঁর আগে কখনও ছিল না, তাই এটা নিশ্চিত যে যখন তিনি ফিরে আসবেন তখন যীশু নামে অভিহিত হবেন না। তাহলে তাঁর নতুন নাম কী? সে নাম হল সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। এটা প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে নিখুঁতভাবে সঙ্গতিপূর্ণ: “আমিই আল্‌ফা ও ওমেগা। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান(প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। “হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন(প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। এবং অন্যান্য স্তবক, যেমন প্রকাশিত বাক্য ৪:৮, ১১:১৭, এবং ১৬:৭, এগুলোতেও “সর্বশক্তিমান” নামের উল্লেখ করা হয়েছে। স্পষ্টতই, অন্তিম সময়ে প্রভু যখন ফিরে আসবেন, তাঁকে বলা হবে সর্বশক্তিমান, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহই নেই। ঈশ্বরের যীশু নাম কখনোই পরিবর্তিত হবে না, আমাদের অন্তিম সময়ের রক্ষাকর্তা যীশু নামেই অভিহিত হবেন, এই বিশ্বাস পুরোপুরিভাবে মানুষের একটা পূর্বধারণা যা দূরদূরান্তেও বাস্তবের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

এই বিষয়ে, কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে, ঈশ্বর কেন তাঁর নাম পরিবর্তন করবেন? এর অন্তর্নিহিত অর্থ কী? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্যের এই সমস্ত রহস্যই প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়টা ভালো করে বোঝার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের দিকে দেখে নেওয়া যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “কেউ কেউ বলে ঈশ্বরের নাম পরিবর্তিত হয় না। তাহলে, যিহোবার নাম যীশু হয়ে গেল কেন? ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে মশীহ আসবেন, তাহলে যীশু নামক একজন লোক এলেন কেন? ঈশ্বরের নাম পাল্টে গেল কেন? এই ধরনের কাজ কি অনেক আগেই সম্পন্ন হয়নি? ঈশ্বর কি আজ নতুন কাজ করতে পারেন না? পূর্বকালের কাজ পরিবর্তিত হতে পারে, এবং যীশুর কাজ যিহোবার কাজের অনুসরণ করে চলতে পারে। তাহলে যীশুর কাজটি কি অন্য কাজের দ্বারা অনুসৃত পারে না? যিহোবার নাম যদি যীশুতে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে যীশুর নামও কি বদলাতে পারে না? এগুলির কোনোটাই অস্বাভাবিক নয়; মানুষ আসলে অত্যন্ত সরলমনষ্ক। ঈশ্বর সর্বদাই ঈশ্বর থাকবেন। তাঁর কাজ যতই পরিবর্তিত হোক না কেন এবং তাঁরনামের যেভাবেই পরিবর্তন ঘটুক না কেন, তা নির্বিশেষে তাঁর স্বভাব ও প্রজ্ঞা সদা অপরিবর্তনীয় থাকবে। যদি তুমি মনে করো যে, ঈশ্বরকে শুধু যীশু নামেই ডাকা যায়, তাহলে তোমার জ্ঞান খুবই সীমিত(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যে সব মানুষ ঈশ্বরকে তার ধারণার মধ্যেই সীমায়িত করে রাখে, তারা কীভাবে ঈশ্বরের প্রকাশ লাভ করবে?)

প্রত্যেক যুগেই, ঈশ্বর নতুন কোনও কাজ করেন এবং নতুন নামে অভিহিত হন; তিনি কীভাবে একই কাজ বিভিন্ন যুগে করবেন? কীভাবে তিনি পুরনোকে আঁকড়ে ধরে থাকবেন? তাঁর যীশু নাম গৃহীত হয়েছিল মুক্তির কার্যের জন্য, তাহলে অন্তিম সময়ে যখন তাঁর পুনরাবির্ভাব হয়, তখনও তাঁর নাম কি অভিন্ন থাকতে পারে? তিনি কি এখনও মুক্তির কার্যই করে যাবেন? কেন যিহোবা এবং যীশু এক হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন যুগে তাঁরা বিভিন্ন নামে অভিহিত হন? তা কি তাঁদের কর্মের যুগগুলি ভিন্ন হওয়ার জন্যই নয়? ঈশ্বরের সামগ্রিকতার প্রতিনিধিত্ব কি একটিমাত্র নামের দ্বারা সম্ভব? সেই কারণে, ভিন্ন এক যুগে ঈশ্বরকে ভিন্ন এক নামেই অভিহিত করতে হবে, এবং যুগের পরিবর্তন করার জন্য ও সেই যুগের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তাঁকে সেই নাম ব্যবহার করতে হবে। কারণ কোনও একটি নাম সম্পূর্ণরূপে স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না, এবং প্রতিটি নাম একটি নির্দিষ্ট যুগে ঈশ্বরের স্বভাবের শুধু একটি অস্থায়ী দিকের প্রতিনিধিত্বই করতে সক্ষম; সেই নামের একমাত্র প্রয়োজন হল তাঁর কর্মের প্রতিনিধিত্ব করা। সুতরাং ঈশ্বর সমগ্র একটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তাঁর স্বভাবের উপযোগী যে কোনও নাম চয়ন করতে পারেন(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (৩))

ইস্রায়েলে আমার কার্য নির্বাহ করার সময় আমি ‘যিহোবা’ নাম গ্রহণ করেছিলাম, এবং এই নামের অর্থ ইস্রায়েলীদের ঈশ্বর (ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ) যিনি মানুষকে করুণা করতে পারেন, অভিশাপ দিতে পারেন, এবং তাদের জীবনযাপনকে দিশা দেখাতে পারেন; যে ঈশ্বর অসীম ক্ষমতার অধিকারী এবং জ্ঞানে পরিপূর্ণ। ‘যীশু’ হলেন ইম্মানুয়েল, যার অর্থ স্নেহ ও মমতায় পরিপূর্ণ পাপস্খালনের বলি, এবং যা মানুষকে মুক্তি দেয়। তিনি অনুগ্রহের যুগের কার্য নির্বাহ করেছিলেন, তিনিই অনুগ্রহের যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন, এবং পরিচালনামূলক পরিকল্পনার কেবলমাত্র একটি অংশের কার্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। … শুধুমাত্র যীশুই হলেন মানবজাতির মুক্তিদাতা, এবং তিনি হলেন সেই পাপস্খালনের বলি, যা মানবজাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করেছিল। বলা যায়, যীশুর নামটি অনুগ্রহের যুগ থেকে এসেছিল, এবং সে যুগে মুক্তির কার্যের জন্যই তাঁর উদ্ভব হয়। অনুগ্রহের যুগের মানুষদের পুনর্জন্ম ও উদ্ধারের সুযোগ দিতেই যীশুর নামের উদ্ভব হয়, এবং এটি সমগ্র মানবজাতির মুক্তির এক বিশেষ নাম(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)

মানুষ যদি এখনো অন্তিম সময়ে পরিত্রাতা যীশুর আগমনের অপেক্ষা করে, এবং এখনও আশা করে যে যিহুদীয়ার রূপের প্রতিমূর্তি রূপে তিনি আবির্ভূত হবেন, তাহলে সমগ্র ছ’হাজার বছরব্যাপী পরিচালনামূলক পরিকল্পনা মুক্তির যুগেই স্তব্ধ হয়ে যেত, এবং আর অগ্রসর হতে পারত না। তাছাড়াও অন্তিম সময় কখনোই আসতো না, এবং এই যুগটি কোনোদিনই শেষ করা যেত না। এর কারণ, পরিত্রাতা যীশু শুধুমাত্র মানবজাতির মুক্তি এবং পরিত্রাণের জন্যই। কেবলমাত্র অনুগ্রহের যুগের সকল পাপীর জন্যই আমি যীশুর নাম নিলাম, কিন্তু এটা সেই নাম নয় যা দিয়ে আমি সমগ্র মানবজাতির বিনাশ ঘটাবো। যদিও যিহোবা, যীশু, এবং মশীহ, সকলেই আমার আত্মার প্রতিনিধি, কিন্তু এই নামগুলি কেবলমাত্র আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার বিভিন্ন যুগকে চিহ্নিত করে, আমার সামগ্রিক সত্তার প্রতিনিধিত্ব করে না। পৃথিবীর মানুষ আমাকে যেসব নামে ডাকে, সেগুলি আমার সম্পূর্ণ স্বভাব এবং আমার সামগ্রিক সত্তাকে স্পষ্ট করতে পারে না। এগুলি নিতান্তই কিছু নাম যার দ্বারা আমাকে বিভিন্ন যুগে সম্বোধন করা হয়। এবং তাই যখন শেষ যুগ—অন্তিম সময়ের যুগ—এসে উপস্থিত হবে, তখন আমার নাম আবার বদলে যাবে। আমাকে তখন যিহোবা, যীশু বা মশীহ নামে ডাকা হবে না—আমাকে স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলে সম্বোধন করা হবে, এবং এই পরিচয়েই আমি একটি সমগ্র যুগের অবসান ঘটাব(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)

আমার মনে হয় এখন আমরা ঈশ্বরের নাম পরিবর্তনের তাৎপর্য বুঝতে পেরেছি। ঈশ্বর সর্বদাই নতুন, কখনও পুরনো নন, এবং তাঁর কাজ সবসময়েই এগিয়ে চলেছে। যুগের পরিবর্তন ও তাঁর কাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাঁর নামও পরিবর্তিত হয়ে চলে। তাঁর কাজের প্রতিটা পর্যায়ের সাথে, প্রতিটা নতুন যুগের সাথে, ঈশ্বর এক একটা নির্দিষ্ট অর্থবহ নাম গ্রহণ করেন, সেই যুগে তিনি যে কাজ করছেন এবং যে স্বভাব প্রকাশ করছেন তাকে উপস্থাপিত করতে। এর প্রেক্ষিতে, আমরা ঈশ্বরকে শুধু যিহোবা ও যীশু এই দুটো নামের মধ্যে সীমাবদ্ধ করবো না। আমরা আমাদের নিজস্ব পূর্বধারণা ও কল্পনার মধ্যে ঈশ্বরকে সীমাবদ্ধ করবো না। আমরা সকলেই জানি যে ঈশ্বরের যা আছে এবং তিনি যা তা সমস্তকিছুকে ঘিরে রয়েছে। তিনি সম্পূর্ণরূপে জ্ঞানী এবং সর্বশক্তিমান! মানুষের কোনো ভাষাই তা ব্যক্ত করতে পারে না, তাহলে একটা-দুটো নাম কী করে পারবে? যেকোনো সংখ্যক নামই ঈশ্বরের যা আছে এবং তিনি যা তাকে সম্পূর্ণরূপে উপস্থাপিত করতে পারে না। এই কারণেই প্রতি যুগের জন্য ঈশ্বর পৃথক নাম গ্রহণ করেন। ঈশ্বর বিধানের যুগে যিহোবা নামে অভিহিত ছিলেন, এবং তিনি সেই নামে বিধান ও আদেশ জারি করেছিলেন। তিনি পৃথিবীতে মানবজাতির জীবনকে পথনির্দেশ দিয়েছেন, তাদের জানতে দিয়েছেন পাপ কী, কীভাবে তাদের জীবনযাপন করা উচিত, কীভাবে যিহোবা ঈশ্বরের উপাসনা করা উচিত। যিহোবা হল সেই নাম যা বিধানের যুগের জন্য ঈশ্বর ঠিক করেছিলেন, এবং তা শুধু তাঁর সেই যুগের কাজ, এবং তাঁর সেই সময়ে অভিব্যক্ত করুণা, মহিমা, ও ক্রোধের স্বভাবকে উপস্থাপিত করে। বিধানের যুগের শেষে, মানুষ শয়তানের দ্বারা আরও বেশি ক’রে ভ্রষ্ট হয়েছিল, আরও বেশি পাপপূর্ণ হয়েছিল। কেউই বিধানের অনুসরণ করেনি। এরকম যদি চলতে থাকতো, তাহলে তারা সকলেই বিধান অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হতো এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হতো। মানবজাতিকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে, ঈশ্বর ব্যক্তিগতভাবে মনুষ্যপুত্ররূপে কাজ করতে দেহধারণ করেছিলেন, যীশু নামের অধীনে মুক্তির কার্য করেছিলেন। তিনি অনুগ্রহের যুগ শুরু করেছিলেন এবং বিধানের যুগকে সমাপ্তিতে নিয়ে এসেছিলেন। প্রভু যীশু মানবজাতিকে অনুতাপের পথ এনে দিয়েছেন এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করেছেন, আমাদের শান্তি ও আনন্দ এবং প্রভূত অনুগ্রহ প্রদান করেছেন। অবশেষে, তিনি ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন, সমগ্র মানবজাতিকে মুক্ত করেছেন। যীশু নামটা ছিল অনুগ্রহের যুগের জন্য ঈশ্বরের নির্ধারিত নাম, এবং তা সেই যুগে তাঁর কাজ ও সেইসাথে তাঁর ভালোবাসা ও করুণার স্বভাবকে উপস্থাপিত করেছিল। ঈশ্বরের কাজের এই দুটো পর্যায় থেকে আমরা দেখতে পাই যে তাঁর প্রতিটা নামেরই বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। সেগুলো সেই নির্দিষ্ট যুগে ঈশ্বরের কাজ ও স্বভাবকে উপস্থাপিত করে। এ বিষয়ে চিন্তা করা যাক। প্রভু যীশু যদি যিহোবা নামটাই অনুগ্রহের যুগেও রেখে দিতেন, তাহলে বিধানের যুগে ঈশ্বরের কাজ স্তব্ধ হয়ে যেত। তাহলে ভ্রষ্ট মানবজাতি কখনোই মুক্তিলাভ করতো না, এবং আমরা সকলেই আমাদের পাপের জন্য বিধান অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হতাম ও মৃত্যুদণ্ড পেতাম। কখনোই আজকের দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারতাম না। অন্তিম সময়ের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই—প্রভু যীশু যদি যীশু নাম নিয়েই ফিরে আসতেন, তাহলে ঈশ্বরের কাজ শুধু মুক্তির পর্যায়েই থেকে যেত, এবং মানুষ শুধুমাত্র প্রভু যীশুর প্রদত্ত মুক্তি আর পাপের ক্ষমাই লাভ করতো। আমাদের সবার যে পাপপূর্ণ প্রকৃতি রয়েছে তার সমাধান হতো না। পাপ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার ও পরিশুদ্ধ হওয়ার কোনো উপায় আমাদের থাকতো না, এবং আমরা কখনোই স্বর্গ-রাজ্যের যোগ্য হয়ে উঠতে পারতাম না। অন্তিম সময়ে তাঁর প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রভু যীশু অনেকবার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ করার জন্য তিনি সত্য প্রকাশ করবেন এবং বিচারের কাজ করবেন, পাপ থেকে মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করবেন, এবং আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে যাবেন। ঠিক যেমন প্রভু যীশু বলেছেন, “কেউ যদি আমার কথা শোনে, এবং অবিশ্বাস করে, আমি তার বিচার করি না: কারণ আমি এই জগৎকে বিচার করতে আসি নি, এসেছি জগতের উদ্ধার করতে। যে আমার বাক্য গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে, তারও বিচারকারী রয়েছে: শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক(যোহন ১২:৪৭-৪৮)। “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন(যোহন ১৬:১২-১৩)। সুতরাং অন্তিম সময়ে, যখন ঈশ্বর এক নতুন যুগের ও তাঁর নতুন কাজের সূচনা করছেন, তখনও কি তিনি সত্যিই যীশু নামে অভিহিত হবেন? অবশ্যই না। প্রভু যীশু অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসাবে কাজ করার জন্য ফিরে এসেছেন, রাজ্যের যুগের সূচনা করছেন এবং অনুগ্রহের যুগকে সমাপ্ত করছেন। ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু ক’রে বিচারের কাজ করার জন্য তিনি সত্য প্রকাশ করছেন, যাতে পাপ এবং শয়তানের শক্তি থেকে মানবজাতিকে সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করা যায়, জয়ীদের একটা দল সম্পূর্ণ করা যায়। এর পর, মন্দকে দণ্ড ও ভালোকে পুরষ্কার দেওয়ার জন্য তিনি বিশাল বিপর্যয়গুলো বর্ষণ করবেন, অন্ধকার, অশুভ পুরনো যুগকে নিশ্চিহ্ন করবেন, আর তখন পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজ্য বাস্তবায়িত হবে। এটা প্রকাশিত বাক্যের এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোকে সম্পূর্ণরূপে সার্থক করে: “আমিই আল্‌ফা ও ওমেগা। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান(প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। “হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন(প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “একসময় আমি যিহোবা নামে পরিচিত ছিলাম। আমাকে মশীহ নামেও ডাকা হত, এবং মানুষ একসময় স্নেহ ও সম্মানভরে পরিত্রাতা যীশু নামেও আমাকে সম্বোধন করত। যদিও আজ, আমি আর সেই অতীতকালের পরিচিত যিহোবা বা যীশু নই; আমি সেই ঈশ্বর যিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন, সেই ঈশ্বর যিনি যুগের অবসান ঘটাবেন। আমি স্বয়ং ঈশ্বর যিনি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে জেগে ওঠেন, সম্পূর্ণ স্বভাব নিয়ে, এবং কর্তৃত্ব, সম্মান, ও মহিমায় পরিপূর্ণ অবস্থায়। মানুষ আমার সঙ্গে কখনো যুক্ত হয় নি, আমাকে কখনো চেনে নি, এবং সর্বদা আমার স্বভাব সম্পর্কে অজ্ঞ হয়েই থেকেছে। বিশ্ব সৃষ্টির কাল থেকে শুরু করে আজ অবধি একজন মানুষও আমাকে দেখে নি। ইনি হলেন সেই ঈশ্বর, যিনি অন্তিম সময়ে মানুষের কাছে আসেন কিন্তু মানুষের মাঝেই প্রচ্ছন্ন থাকেন। তিনি সত্য এবং বাস্তব, জ্বলন্ত সূর্য এবং প্রোজ্জ্বল শিখার মতো শক্তি ও কর্তৃত্বে পরিপূর্ণ হয়ে মানুষের মাঝে বসবাস করেন। এমন একজনও মানুষ বা একটিও বস্তু নেই যাকে আমি আমার বাক্যের দ্বারা বিচার করবো না, এবং জ্বলন্ত আগুনের দ্বারা শুদ্ধ করবো না। অবশেষে সকল জাতি আমার বাক্যের দ্বারা আশীর্বাদ লাভ করবে, এবং আমার বাক্যের জন্যই খণ্ড-বিখণ্ড হবে। এইভাবে অন্তিম সময়ে সকল মানুষ দেখবে যে আমিই সেই ফিরে আসা পরিত্রাতা, এবং আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিনি সমগ্র মানবজাতিকে জয় করেন। এবং সবাই দেখবে যে একসময় আমি ছিলাম মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি, কিন্তু অন্তিম সময়ে আমি হয়ে উঠি সূর্যের লেলিহান শিখা, যা সবকিছু ভস্মীভূত করে, এবং আমিই সেই ন্যায়পরায়ণতার সূর্য, যা সবকিছু প্রকাশিত করে। অন্তিম সময়ে এটিই আমার কার্য। আমি এই নাম এবং এই স্বভাব গ্রহণ করলাম, যাতে সকলে দেখতে পায় যে আমি ধার্মিক ঈশ্বর, এক জ্বলন্ত সূর্য, এক লেলিহান শিখা, এবং যাতে সকলে একমাত্র সত্য ঈশ্বর হিসেবে আমার উপাসনা করে, এবং যাতে তারা আমার প্রকৃত রূপ দেখতে পায়: আমি কেবলমাত্র ইসরায়েলীদের ঈশ্বর নই, এবং আমি শুধুমাত্র মুক্তিদাতা নই; আমি সমগ্র আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্রের সকল জীবের ঈশ্বর(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিত্রাতা ইতিমধ্যেই একটি “সাদা মেঘে” চড়ে প্রত্যাবর্তন করেছেন)

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলো স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ। যিহোবা, যীশু, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, এগুলো সবই একমাত্র সত্য ঈশ্বরের নাম। বিধানের যুগ, অনুগ্রহের যুগ, এবং রাজ্যের যুগের জন্য তিনি বিভিন্ন নাম গ্রহণ করেন। যদিও তাঁর কাজ ও তাঁর নাম যুগের সাথে পরিবর্তিত হয়, এবং তিনি বিভিন্ন উপায়ে আবির্ভূত হন, কিন্তু তাঁর সারমর্ম কখনো বদলায় না, এবং তাঁর স্বভাব, আর তাঁর যা আছে এবং তিনি যা, তা কখনো পরিবর্তিত হবে না। চিরন্তনভাবে তিনি এক ঈশ্বর, এক আত্মা, যিনি মানবজাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য, মুক্ত করার জন্য, এবং সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করার জন্য কাজ করছেন। অন্তিম সময়ে, তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসাবে অবতাররূপ ধারণ করেছেন, এবং যদিও তিনি যীশু নামে অভিহিত নন এবং তিনি দেখতেও একজন সাধারণ মানুষের মতো, কিন্তু মানবজাতিকে যা পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করে সেই সকল সত্য তিনি প্রকাশ করেছেন, ঈশ্বরের গৃহ থেকে আরম্ভ ক’রে বিচারের কাজ করছেন। তিনি তাঁর বাক্যের দ্বারা মানুষের বিচার করেন ও তাদের অনাবৃত করেন, শয়তানের দ্বারা আমাদের গভীরভাবে ভ্রষ্ট হওয়াকে ও আমাদের শয়তানোচিত প্রকৃতিকে উন্মুক্ত করেন, এবং আমাদের যে পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার হওয়া প্রয়োজন সেই সত্যের সমস্ত দিক তিনি আমাদের দেখান। তাঁর মনোনীত ব্যক্তিরা প্রতিদিন তাঁর বাক্য ভোজন ও পান করে, তাঁর বাক্যের দ্বারা বিচার, শাস্তি, মোকাবিলা, পরীক্ষা, ও পরিমার্জনের সম্মুখীন হওয়াকে স্বীকার করে, এবং তাদের ভ্রষ্ট স্বভাব ধীরে ধীরে পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তিত হয়। তারা ক্রমশ মন্দ থেকে ও শয়তানের শক্তি থেকে নিষ্কৃতি পায় এবং ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে উদ্ধারলাভ করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ইতিমধ্যেই বিপর্যয়ের পূর্বে জয়ীদের এক দল সম্পূর্ণ করেছেন, ঈশ্বরের প্রজ্ঞা ও সর্বশক্তিমানতার সম্পূর্ণ প্রদর্শন করেছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কার্যনির্বাহের সময়, কমিউনিস্ট পার্টির শয়তানোচিত শক্তির নিরন্তর নৃশংস নিপীড়ন ও গ্রেপ্তার, এবং ধর্মীয় জগতের খ্রীষ্টবিরোধী শক্তিগুলোর উন্মত্ত তিরস্কার ও ধর্মনিন্দা সত্ত্বেও, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রসারলাভ করেছে, সমগ্র ভূমণ্ডল পরিভ্রমণ করেছে। এটাই প্রদর্শন করে যে ঈশ্বরের মহৎ কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর শয়তানের উপর সম্পূর্ণরূপে বিজয়প্রাপ্তি করছেন এবং সমস্ত মহিমা অর্জন করছেন। বিশাল বিপর্যয়গুলো ইতিমধ্যেই আরম্ভ হয়েছে আর ধর্মীয় জগৎ বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়েছে, কিন্তু তাদের অনেকেই এখনও জেদির মতো প্রভু যীশু নামটাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে, মেঘে চড়ে তাঁর আসার অপেক্ষা করছে। তারা এটা স্বীকার করতে প্রত্যাখ্যান করে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যত বেশি সত্যই প্রকাশ করুন, বা তাঁর কাজ যত মহানই হোক। এমনকি তাঁর আবির্ভাব ও কাজকে তারা উন্মত্তের মতো নিন্দা ও প্রতিরোধ করে। সেই ফরিশীদের থেকে এরা কীভাবেই বা আলাদা, যারা মশীহর নাম আঁকড়ে ধরে রেখে পাগলের মতো প্রভু যীশুর প্রতিরোধ করেছিল? এরা সবাই কি মূলত সেইসব মানুষ নয় যারা ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করছে? তারা অকারণেই প্রভু যীশুর নামকে আঁকড়ে ধরে থাকে, কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে পাগলের মতো প্রতিরোধ করে ও তাঁর নিন্দা করে। আপনাদের কী মনে হয়, এদের জন্য কী পরিণাম অপেক্ষা করে আছে?

শেষ করার জন্য, আসুন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটা ভিডিও দেখা যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “ফরিশীরা কেন যীশুর বিরোধিতা করেছিল, তার উৎস কি তোমরা জানতে চাও? তোমরা কি ফরিশীদের সারসত্য জানতে চাও? তারা মশীহের বিষয়ে কল্পনায় পরিপূর্ণ ছিল। উপরন্তু, তারা বিশ্বাস করত যে মশীহ আসবেন, তবুও তারা জীবনের সত্যের অনুসরণ করত না। আর তাই, আজও তারা মশীহের অপেক্ষা করে, কারণ জীবনের প্রকৃত পথের কোনো জ্ঞান তাদের নেই এবং তারা জানে না সত্যের পথ কী। তোমরাই বলো, এমন মূর্খ, জেদী আর অজ্ঞ লোকেরা কীভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করবে? কীভাবে তারা মশীহকে প্রত্যক্ষ করবে? তারা যীশুর বিরোধিতা করেছিল, কারণ তারা পবিত্র আত্মার কাজের অভিমুখ জানত না, যীশুর কথিত সত্যের পথের বিষয়ে জানত না, এবং তদুপরি, তারা মশীহকে বোঝে নি। এবং যেহেতু তারা কখনো মশীহকে দেখে নি বা তাঁর সঙ্গলাভ করে নি, তাই তারা যেকোনো উপায়ে মশীহের সারসত্যের বিরোধিতা করে কেবলমাত্র তাঁর নামকেই আঁকড়ে ধরে থাকার ভুল করেছিল। এই ফরিশীরা সারমর্মে ছিল জেদী, উদ্ধত, এবং সত্য অমান্যকারী। তাদের ঈশ্বর বিশ্বাসের নীতিই ছিল: আপনার ধর্মোপদেশ যতই গভীর হোক না কেন, আপনার কর্তৃত্ব যতই উচ্চ হোক না কেন, আপনাকে যতক্ষণ না মশীহ নামে সম্বোধন করা হচ্ছে, ততক্ষণ আপনি খ্রীষ্ট নন। এই বিশ্বাস কি অযৌক্তিক এবং হাস্যকর নয়? আমি তোমাদের আরও জিজ্ঞাসা করি: যীশুর বিষয়ে তোমাদের ন্যূনতম জ্ঞান না থাকায় তোমাদের পক্ষে প্রথমদিকের ফরিশীদের মতো ভুল করা খুব সহজ নয় কি? তুমি কি সত্যের পথ উপলব্ধি করতে সক্ষম? তুমি কি সত্যিই প্রতিশ্রুতি দিতে পারো যে, তুমি খ্রীষ্টের বিরোধিতা করবে না? তুমি কি পবিত্র আত্মার কার্য অনুধাবন করতে সক্ষম? তুমি যদি না-ই জানো যে তুমি খ্রীষ্টের বিরোধিতা করবে কিনা, তাহলে আমি বলি যে তুমি ইতোমধ্যেই মৃত্যুর কিনারায় জীবনযাপন করছ। যারা মশীহকে জানত না, তারা সকলেই যীশুর বিরোধিতা করতে, যীশুকে প্রত্যাখ্যান করতে, তাঁকে অপবাদ দিতে সক্ষম ছিল। যেসব লোকেরা যীশুকে উপলব্ধি করে না, তারা সকলেই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতে এবং তাঁর নিন্দা করতে সক্ষম। উপরন্তু, তারা যীশুর প্রত্যাবর্তনকে শয়তানের প্রতারণা বলে ভাবতে সক্ষম, এবং আরও বেশি মানুষজন দেহরূপে প্রত্যাবৃত্ত যীশুকে তিরস্কার করবে। এইসব কি তোমাদের ভীত করে না? তোমরা যার সম্মুখীন হবে, তা হল পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দা, গির্জাগুলির প্রতি পবিত্র আত্মার সকল বাক্যের বিনষ্টিকরণ, এবং যীশুর দ্বারা প্রকাশিত সবকিছুর বর্জন। তোমরা যদি এত বিমূঢ় হয়ে থাকো, তাহলে তোমরা যীশুর থেকে কী অর্জন করবে? তোমরা যদি তোমাদের ত্রুটিগুলি বুঝতে অনড়ভাবে অস্বীকার করো, তাহলে যীশু যখন সাদা মেঘে চড়ে দেহরূপে প্রত্যাবর্তন করবেন, তখন তোমরা তাঁর কার্য কীভাবে বুঝতে পারবে? আমি তোমাদের বলি: যেসব লোকেরা সত্যকে গ্রহণ করে না, তবু অন্ধভাবে সাদা মেঘে চড়ে যীশুর আগমনের প্রতীক্ষা করে, তারা নিশ্চিতভাবে পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দা করবে, এবং তারাই সেই শ্রেণী, যাদের ধ্বংস করা হবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

প্রভু যীশু মানবজাতিকে মুক্ত করেছিলেন, সুতরাং অন্তিম সময়ে তাঁর প্রত্যাগমন-কালে তিনি কেন বিচারের কাজ করবেন?

২,০০০ বছর আগে, অবতাররূপী প্রভু যীশু মানবজাতির মুক্তির জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, পাপ উৎসর্গের রূপে এবং তাঁর মুক্তির কাজকে সম্পূর্ণ করেছিলেন।...

কেন আমরা শুধুমাত্র ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনার মাধ্যমেই প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারি?

এখন সব বিশ্বাসীরাই প্রভু যীশুর মেঘে চড়ে আগমনের জন্য আকুল, কারণ বিপর্যয় ক্রমশই আরো সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে এবং সবরকমের ব্যাধির তীব্রতা বাড়ছে,...

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আস্থা রাখা কি প্রভু যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা?

অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাবের পর ত্রিশ বছর কেটে গেছে এবং ১৯৯১ সালে কাজ ও সত্যের প্রকাশ শুরু করেছিলেন। তিনি প্রকাশ...

অবতারত্ব কী?

আমরা সবাই জানি যে দু’হাজার বছর আগে, মানুষকে মুক্তি দিতে ঈশ্বর মানুষের পৃথিবীতে প্রভু যীশুর অবতার গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রচার করেছিলেন,...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন