ব্যর্থতা ও বিপত্তির মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা
আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ ডিসেম্বর ২০২০ সালে মেনে নিয়েছি। কয়েক মাস পর আমি একটি গির্জার নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। গির্জায় অনেক কাজ বাকি ছিল যা শেষ করতে হত এবং অনেক সমস্যা ছিল যেগুলো সমাধান করতে হত। আমি খুব উৎসাহ নিয়ে কাজে ঝাঁপ দিলাম। কিছু দিন পর, আমি গির্জার কাজের সাথে কিছুটা পরিচিত হলাম, কিন্তু তারপরেও আমি অনেক সমস্যার ভেতর ছিলাম। অনেক নবাগতরা সমাবেশে নিয়মিত আসছিল না। তাদের কেউ কেউ অনলাইন গুজব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, কেউ কেউ সত্যিই দর্শনের সত্য বুঝতে পারছিল না এবং কিছু ধর্মীয় ধারণা তাদের কাছে অমীমাংসিত ছিল, আর কেউ কেউ তাদের কাজের ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত সমাবেশে যোগদান করতে পারছিল না। এইসব সমস্যার সম্মুখীন হয়ে, তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আমি ঈশ্বরের ইচ্ছা নিয়ে তাদের সাথে আলোচনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম, কিন্তু তাতে তাদের সমস্যার কোনো সমাধান হল না। আমি সত্যিই হতাশ হয়ে গেলাম। আমি নিজেকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসা করছিলাম কেন আমার সমস্ত পরিশ্রম এভাবে বৃথা যাচ্ছে। ঈশ্বর কেন আমাদের গির্জাকে আশির্বাদ দিচ্ছেন না? ভ্রাতা এবং ভগিনীদেরও অনেকগুলো সমস্যা ছিল এবং তাদের সাথে আমার অনেকগুলো আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। সম্ভবত আমি নেতৃত্বের উপযুক্ত নই? আমি নিজেকে তিরস্কার করেছি: এই সব কিছুর জন্য আমিই দায়ী। আমি যদি দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করি, তাহলে অন্য কেউ নেতা হতে পারবেন, আর কাজটি আরও বেশি সফল হবে। আমি হতাশা বোধ করতে শুরু করলাম এবং দায়িত্বে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলাম, শুধু অপেক্ষা করছিলাম বরখাস্ত হওয়ার জন্য। এমনকি এও ভেবেছিলাম যে ঈশ্বর আমাকে প্রকাশ করার জন্য এবং আমাকে ব্যর্থ করার জন্য আমাকে এরকম অসুবিধায় ফেলেছেন, এবং তিনি সম্ভবত ইতিমধ্যেই আমাকে পরিত্যাগ করেছেন। এ ধরণের ভাবনা আমাকে ভীত করে তুলল। ঈশ্বর কি আমাকে পরিত্যাগ করেছেন? আমি প্রার্থনা এবং অন্বেষণ করছিলাম, তবুও ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারছিলাম না। ঈশ্বর আমাকে পরিত্যাগ করেছেন এই চিন্তা মাঝে মধেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আমি সব সময় বিষণ্ণ, ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করতাম। আমি আসলেই ভীত ছিলাম, এবং অনুভব করলাম যে আমার পবিত্র আত্মা আমার ভেতর আর কাজ করছেন না।
তখন গির্জায় কয়েকজন দলনেতার ঘাটতি ছিল, তাই সুপারভাইজার কিছু নবাগতদের সুপারিশ করেছিলেন। আমি খুব বেশি কিছু না দেখেই সরাসরি তাদের নিয়োগ দিয়েছিলাম। প্রথমে তারা সবাই বলেছিল যে তারা দায়িত্ব নিতে চায়, কিন্তু যখন আনুষ্ঠানিকাভাবে কাজ শুরু হলো, একজন বলল যে তার কাজ আছে এবং সে ব্যস্ত, তাই সে কাজ করতে পারবে না, এবং অন্যজন পারিবারিক সমস্যার কারণে সমাবেশে সময়মত আসতে পারবে না তাই সেও কাজটি করতে পারবে না। আমি শেষ পর্যন্ত স্থির করলাম যে আপাতত, তারা দলনেতা হিসাবে গড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত ছিল না। আমি কাজের মধ্যে এই অসুবিধাগুলো সমাধান করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম, কিন্তু কিছু সময়ের জন্য কোনো ফল পাচ্ছিলাম না। ঠিক ওই সময় সত্যিই আমি এই ব্যর্থতা সহ্য করতে পারছিলাম না। আমি সত্যিই নেতিবাচক ছিলাম, এবং আমি এমনকি প্রতিটি নতুন দিনের আগমনের মুখোমুখি হতে ভয় পেতাম। আমি আর গির্জার কাজ করতে চাইতাম না কারণ আমি প্রচুর কাজ করছি কিন্তু কোনো সাফল্য অর্জন করছি না। আমি ভাবলাম আমি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি কারণ ঈশ্বর আমাকে অযোগ্য হিসেবে প্রকাশ করতে চান, কিন্তু আমি নিজেকে এ ধরণের অবস্থায় নিমজ্জিত করতে চাই না। আমি চাই না দায়িত্বের ব্যর্থতার কারণে আমার অযোগ্যতা প্রকাশ পাক এবং আমি বরখাস্ত হই।
একবার ভক্তিস্তবের সময়, আমি হঠাৎ করে “দায় স্বীকার এবং পদত্যাগের নীতি” বিষয়ক একটি লেখা পেয়ে যাই “যে কোন ভুয়া নেতা বা কর্মী যে সত্যকে গ্রহণ করে না, যে বাস্তবিক কাজ করতে পারে না, এবং যারা, কিছু সময়ের জন্য, পবিত্র আত্মার কাজ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তাদের অবশ্যই দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে” (১৭০ সত্য অনুশীলনের নীতি)। এটা পড়ার পরে আমি আরও নেতিবাচক হয়ে উঠলাম। আমার কী করা উচিত? আমি গির্জার কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারিনি, সুতরাং আমি একজন ভুয়া নেতা। আমার কি দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করা উচিত যাতে একজন যোগ্য ব্যক্তি নেতা হতে পারেন? আমি ইতিমধ্যে তিন মাস ধরে গির্জার কাজ করছিলাম, কিন্তু তারপরেও গির্জার বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারছিলাম না। এবং এই পরিস্থিতিতে, আমি তখনও ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে পারছিলাম না এবং আমি কোনো উন্নতি করতে পারছিলাম না। এমনকি আমি ঈশ্বরকে ভুল বুঝেছিলাম। অন্যরা আমাকে নেতিবাচক ভাববে কিনা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম, এবং ভয় পাচ্ছিলাম আমি যে পদত্যাগের চিন্তা করছি তা নিয়ে তারা আমাকে তিরস্কার করবে কিনা।
একবার এক সমাবেশে ঈশ্বরের বাণীতে এটা পড়েছিলাম: “তুমি একজন সাধারণ মানুষ। তোমাকে অবশ্যই পার হয়ে আসতে হবে অনেক ব্যর্থতা, প্রচুর বিভ্রান্ত মুহূর্ত, বিচারের বহু ভ্রান্তি, এবং অজস্র বিচ্যুতি। তা পুরোপুরি অনাবৃত করতে পারে তোমার ভ্রষ্ট স্বভাবকে, তোমার দুর্বলতা ও ঘাটতিকে, তোমার অজ্ঞতা ও মূর্খতাকে, তোমাকে সক্ষম করে তুলতে পারে নিজেকে পুনরায় পরীক্ষা করতে ও জানতে, এবং ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তা ও সম্পূর্ণ প্রজ্ঞা আর তাঁর প্রকৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে। তাঁর কাছ থেকে তুমি ইতিবাচক বিষয়গুলো লাভ করবে, এবং সত্যের উপলব্ধিতে এসে পৌঁছবে ও বাস্তবতায় প্রবেশ করবে। তোমার অভিজ্ঞতায় এমন অনেক কিছুই থাকবে যা তোমার আশানুরূপ নয়, যেগুলোর বিরুদ্ধে তুমি শক্তিহীন অনুভব করবে। এগুলোর সাথে, তোমাকে সন্ধান করতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে; ঈশ্বরের কাছ থেকেই প্রতিটা বিষয়ের উত্তর তোমাকে লাভ করতে হবে, এবং তাঁর বাক্য থেকে উপলব্ধি করতে হবে প্রতিটা বিষয়ের এবং প্রতি ধরনের মানুষের অন্তর্নিহিত সারমর্ম। একজন সাধারণ, স্বাভাবিক মানুষ এমনই আচরণ করে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, ঈশ্বরবিশ্বাসের ভিত্তিতে রয়েছে ঈশ্বরের বাক্য মহার্ঘরূপে সঞ্চিত করা)। ঈশ্বর অবিশ্বাস্যরকমের জ্ঞানী। ঈশ্বর কীভাবে কাজ করেন সে সম্পর্কে আমি নতুনভাবে উপলব্ধি করলাম। আমি দেখলাম যে প্রত্যেককেই তাদের দায়িত্ব পালনে কিছু ব্যর্থতা এবং বিপত্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল আমি যেন এসবের মাধ্যমে সত্য অন্বেষণ করি আমার দূর্নীতি সমাধান করার জন্য। আমি আমার দায়িত্বে কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতাম এবং কিছু ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা অর্জন করতাম, কিন্তু আমি সত্যের কিংবা ঈশ্বরের ইচ্ছার অনুসন্ধান করিনি। আমি সবসময়ই পদত্যাগের কথা ভেবেছি কারণ আমার মনে হয়েছে আমার দায়িত্বে কোনো সফলতা নেই কিংবা একজন নেতার যা করা উচিত তা আমি করিনি। এমনকি আমি অন্যকে আমার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে বলার সাহসও পাইনি। আমি সত্যিই অজ্ঞ ছিলাম। আমি ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারিনি অথবা ঈশ্বর কেন এরকম আমার সাথে ঘটতে দিলেন। ঈশ্বরের বাণী থেকে দেখলাম যে আমি একজন খুব সাধারণ মানুষ, সুতরাং, দায়িত্বে কোনো সমস্যায় পতিত হওয়া এবং ব্যর্থ হওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। ঈশ্বরের ইচ্ছা এর মধ্যেই নিহিত ছিল। সুতরাং, আমি আমার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে ভ্রাতা এবং ভগিনীদের সাথে খোলামেলা আলাপ করলাম এবং তাদের সাহায্য চাইলাম। দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করার চিন্তার কথাও তাদের বললাম। তারা কেউ আমাকে খাটো করে দেখল না, বরং তারা আমাকে সাহায্য এবং উৎসাহিত করল, আর ঈশ্বরের বাণী নিয়ে আলোচনা করল। সত্যিই আমি অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।
তারা আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কিছু বাণী পড়ে শোনাল। ঈশ্বর বলেন, “ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতালাভের সময়কালে, তুমি যতবারই ব্যর্থ হয়ে থাকো, ভূপতিত হয়ে থাকো, তোমার অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন হয়ে থাকুক, তুমি মোকাবিলার সম্মুখীন হয়ে থাকো, বা অনাবৃত হয়ে থাকো না কেন, এগুলো খারাপ কিছু নয়। যেভাবেই তোমার অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন বা তোমার মোকাবিলা করা হয়ে থাক, বা সে কাজ কোনো নেতা, কর্মী, অথবা তোমার ব্রাদার বা সিস্টারের দ্বারাই হয়ে থাক, তা নির্বিশেষে এগুলো সবই ভালো ব্যাপার। তোমাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে: তুমি যতই কষ্টভোগ করো, আসলে তুমি উপকৃত হচ্ছো। অভিজ্ঞতা আছে এমন যে কেউ এই বক্তব্যের সমর্থন করবে। যা-ই হোক না কেন, অপ্রয়োজনীয় অংশ কর্তিত হওয়া, মোকাবিলার সম্মুখীন হওয়া, বা অনাবৃত হওয়া সবসময়েই ভালো ব্যাপার। এটা দোষী সাব্যস্ত করা নয়। এটা ঈশ্বরের পরিত্রাণ, এবং নিজেকে জানার জন্য তোমার সবচেয়ে ভালো সুযোগ। এটা তোমার জীবনের অভিজ্ঞতার গতি পরিবর্তন করতে পারে। এটা ছাড়া, তুমি তোমার নিজের কলুষতার বিষয়ে সত্যের উপলব্ধিতে পৌঁছনোর সুযোগ, পরিস্থিতি, অথবা প্রেক্ষাপটও লাভ করতে পারবে না। যদি তুমি প্রকৃতই সত্যকে বোঝো, তোমার হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা কলুষিত বিষয়গুলোকে খুঁড়ে বার করতে পারো, যদি স্পষ্টভাবে সেগুলোর প্রভেদ করতে পারো, তাহলে সেটা ভালো ব্যাপার, তা তোমার জীবনে প্রবেশ সংক্রান্ত একটা বড় সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে, এবং তোমার স্বভাব পরিবর্তনের পক্ষে বিরাট উপকারী। নিজের পথের সংশোধন করা ও একজন নতুন মানুষ হয়ে ওঠার জন্য তোমার সবচেয়ে বড় সুযোগ হল নিজেকে প্রকৃতরূপে জানতে সক্ষম হওয়া। একবার যখন তুমি প্রকৃতরূপে নিজেকে জানতে পারবে, তুমি দেখতে সক্ষম হবে যে সত্য যখন কারো জীবন হয়ে ওঠে, তা সত্যিই এক মূল্যবান বিষয়, এবং তুমি সত্যের জন্য তৃষিত হবে, সত্যের অনুশীলন করবে, এবং সত্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করবে। এ এক অসাধারণ বিষয়! যদি তুমি এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারো, আর যখনই ব্যর্থ বা ভূপতিত হবে তখনই যদি আন্তরিকভাবে আত্মানুসন্ধান করে নিজের সম্পর্কে এক প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারো, তাহলে নেতিবাচকতা ও দুর্বলতার মাঝেও তুমি আবার উঠে দাঁড়াতে পারবে। এই চৌকাঠ যদি তুমি অতিক্রম করে ফেলো, তাহলে তুমি সামনের দিকে এক বিরাট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে এবং সত্যের বাস্তবিকতায় প্রবেশ করবে” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, সত্য অর্জন করতে হলে, নিকটবর্তী মানুষ, ঘটনাবলি এবং বস্তুসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে)। “মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের পরিত্রাণ হল তাদের জন্য পরিত্রাণ যারা সত্যকে ভালোবাসে, মানবজাতির সেই অংশের পরিত্রাণ যেখানে ইচ্ছা ও সংকল্প আছে, এবং সেই অংশের পরিত্রাণ যাদের হৃদয়ে সত্যের ও ন্যায়পরায়ণতার প্রতি আকুলতা আছে। একজন ব্যক্তির সংকল্প হচ্ছে তার হৃদয়স্থিত তার সেই অংশ যা ন্যায়পরায়ণতা, মঙ্গলময়তা, ও সত্যের জন্য আকুল, এবং যা বিবেকের অধিকারী। ঈশ্বর মানুষের এই অংশকে উদ্ধার করেন, এবং তার মাধ্যমে তিনি তাদের ভ্রষ্ট স্বভাবের পরিবর্তন ঘটান, যাতে তারা সত্যকে উপলব্ধি করতে ও লাভ করতে পারে, যাতে তাদের কলুষতা পরিশুদ্ধ হতে পারে, এবং তাদের জীবন চরিত্র রূপান্তরিত হতে পারে। তোমার মধ্যে যদি এই বিষয়গুলো না থাকে, তাহলে তোমাকে উদ্ধার করা যাবে না। … এ কথা কেন বলা হয় যে পিতর হল এক ফল? কারণ তার মধ্যে যোগ্য বিষয়গুলো রয়েছে, নিখুঁত হওয়ার যোগ্য বিষয়গুলো। সে সমস্তকিছুর মধ্যে সত্যের সন্ধান করেছিল, তার সংকল্প ছিল, এবং সে তার ইচ্ছায় অটল ছিল; তার বোধ ছিল, সে কষ্ট সহ্য করতে ইচ্ছুক ছিল, এবং সে তার অন্তরে সত্যকে ভালোবাসতো; কোনোকিছু ঘটলে সে সেটাকে ত্যাগ করতো না, এবং সমস্তকিছুর মধ্যে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারতো। এগুলো সবই শক্তিশালী দিক। এই শক্তিশালী দিকগুলোর কোনোটাই যদি তোমার না থাকে, তাহলে তা সমস্যার পরিচায়ক। তোমার পক্ষে সত্যকে অর্জন করা এবং উদ্ধার লাভ করা সহজ হবে না। তুমি যদি না জানো কীভাবে অভিজ্ঞতা লাভ করতে হয়, বা তোমার যদি অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে তুমি অন্যদের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যেহেতু তুমি ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলনে ও অনুভবে অক্ষম, তোমার সাথে কিছু ঘটলে কী করতে হবে তা তুমি জানো না, সমস্যায় পড়লে তুমি হতাশ হয়ে পড়ো, কান্নায় ভেঙে পড়ো, এবং সামান্য বাধা পেলেই নেতিবাচক হয়ে পড়ো, পালিয়ে যাও, আর চিরকালই তুমি সঠিক পথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে ব্যর্থ হও—এই সমস্তকিছুর কারণে, তোমার পক্ষে জীবনে প্রবেশ করা সম্ভব নয়” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, তৃতীয় অংশ)। এটা পড়ার পর একজন ভগিনী আমার সাথে আলোচনা করল: “কী ধরণের বিপত্তি বা ব্যর্থতার সম্মুখীন আমরা হই তা কোনো ব্যাপার নয়, আমাদের উচিত প্রার্থনা করা এবং ঈশ্বরের ইচ্ছার অন্বেষণ করা, সত্যকে এবং আমাদের দায়িত্বকে পরিত্যাগ না করা। নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া সমস্যা সমাধানের কোনো পথ নয়। কেবল অসুবিধা এবং সমস্যা মোকাবেলার মাধ্যমেই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে থাকি। যাতে আমাদের দুর্নীতি ও ত্রুটিগুলি প্রকাশিত হয় এবং আমরা সত্যিই নিজেদেরকে জানতে পারি। সেই অভিজ্ঞতাগুলো ছাড়া, আমাদের দুর্নীতি এবং আমাদের কী অভাব রয়েছে তা দেখার কোনও উপায় নেই। তাহলে আমরা বদলাব কীভাবে? সুতরাং, ব্যর্থতা এবং হোঁচট খাওয়া খারাপ কিছু নয়। সেই সময়েই আমাদের সত্য অন্বেষণ করা উচিত এবং শিক্ষা নেওয়া উচিত—তাহলে আমরা ঈশ্বরকে আর ভুল বুঝব না। আমরা যদি কেবল পদত্যাগ করি, আর অসুবিধার সম্মুখীন হলেই আমাদের দায়িত্ব ছেড়ে দিই, তাহলে কীভাবে ঈশ্বরের কাজ অনুভব করব এবং পরিত্রাণ অনুধাবন করব? আর কীইবা সাক্ষ্য দেব? মানুষের কাছে ঈশ্বরের খুব বেশি চাওয়ার নেই। যখন আমরা সমস্যা ও কষ্টের মুখোমুখি হই তখন যদি আমাদের সংকল্প থাকে, এবং যদি সত্যিকারের প্রার্থনা এবং সত্যের অন্বেষণ করি তাহলে ঈশ্বর আমাদের পথ প্রদর্শন এবং সাহায্য করবেন।” ভগিনীরএই আলোচনা আমাকে সত্যিই আলোকিত করেছিল। আমি বুঝতে পারলাম ব্যর্থতা এবং হোঁচট খাওয়ার অভিজ্ঞতা লাভ হলো ঈশ্বরের ভালোবাসা, এবং সত্য অন্বেষণ ও শিক্ষা গ্রহনের এটা একটা ভালো সুযোগ। আমি চিন্তা করছিলাম কীভাবে পিতর সারা জীবন ধরে অনেক পরীক্ষা, পরিমার্জন, বিপত্তি এবং ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছেন। কখনও কখনও তিনি দৈহিক দুর্বলতায় ভুগেছেন, কিন্তু সে কখনও ঈশ্বর বিশ্বাস হারায়নি। সে সত্যের সাধনায় এবং ঈশ্বরের ইচ্ছার অন্বেষণে রত ছিল, তার যা অভাব ছিল তা সেপূরণ করতো। শেষ পর্যন্ত, সে সত্য বুঝতে ও ঈশ্বরকে জানতে পেরেছিল এবং ঈশ্বরের প্রতি বশ্যতা ও ভালবাসা অর্জন করেছিল। আমার পিতরের মতো শক্ত এবং দৃঢ় সংকল্প হওয়া উচিত, প্রার্থনায় ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হওয়া এবং যখন আমি বাধা এবং ব্যর্থতার সম্মুখীন হই, তখন তাঁর ইচ্ছা অন্বেষণ করা উচিত, আর ভেবে দেখা উচিত আমার কী অভাব রয়েছে ঈম্বরকে ভুল না বুঝে এবং তাঁকে দোষারোপ না করে।
একবার ভক্তিস্তবের সময়, ঈশ্বরের বাণীর একটি অনুচ্ছেদ পাঠ করছিলাম যা আমাকে ঈশ্বরের ইচ্ছা কিছুটা বুঝতে সাহায্য করেছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “মানুষের উচিত ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি মনোযোগী হওয়া ও তাঁর হৃদয়কে উপলব্ধি করা। তাদের অবশ্যই ঈশ্বরকে ভুল বোঝা উচিত নয়। বস্তুত, অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের উদ্বেগের উদ্ভব হয় তাদের নিজেদের স্বার্থ থেকে। সাধারণভাবে বললে, এটা আসলে তাদের কোনো পরিণতি লাভ করতে না পারার ভয়। তারা সবসময় ভাবে, ‘যদি ঈশ্বর আমাকে উন্মোচিত করেন, বহিষ্কার করেন, প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে কী হবে?’ ঈশ্বরের বিষয়ে এ তোমার ভুল ব্যাখ্যা; এ শুধু তোমার চিন্তাভাবনামাত্র। তোমাকে চিহ্নিত করতে হবে যে ঈশ্বরের অভিপ্রায় কী। মানুষকে তাঁর উন্মোচিত করার উদ্দেশ্য তাদের বহিষ্কার করা নয়। মানুষকে উন্মোচিত করা হয় তাদের দোষত্রুটি, ভ্রান্তি, ও তাদের প্রকৃতির সারমর্মকে অনাবৃত করার উদ্দেশ্যে, যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে জানতে আর প্রকৃত অনুতাপে সক্ষম হয়ে ওঠে; অর্থাৎ, মানুষকে উন্মোচিত করার উদ্দেশ্য হল তাদের জীবনকে বিকশিত হতে সাহায্য করা। বিশুদ্ধ উপলব্ধি না থাকলে মানুষের মধ্যে ঈশ্বরকে অপব্যাখ্যা করার এবং নেতিবাচক ও দুর্বল হয়ে পড়ার প্রবণতা থাকে। এমনকি তারা হতাশার কাছে সমর্পণও করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ঈশ্বরের দ্বারা উন্মোচিত হওয়ার অর্থ আবশ্যিকভাবে এই নয় যে তাদের বহিষ্কার করা হবে। এর উদ্দেশ্য হল তোমাকে তোমার নিজের ভ্রষ্টতা সম্পর্কে অবহিত করা, এবং অনুতপ্ত হতে দেওয়া। প্রায়শই, যেহেতু মানুষ বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন, এবং যখন তারা ভ্রষ্টতায় পরিপূর্ণ থাকে তখন সমাধান খোঁজার জন্য সত্যের সন্ধান করে না, তাই ঈশ্বরকে অবশ্যই অনুশাসন প্রয়োগ করতে হবে। আর তাই, কখনো কখনো তিনি মানুষকে উন্মোচিত করেন, তাদের কদর্যতা ও সকরুণ অবস্থাকে অনাবৃত করেন, তাদের আত্ম-উপলব্ধি করতে দেন, যা তাদের জীবনের বিকাশলাভে সহায়তা করে। মানুষকে উন্মোচিত করার দুটো নিহিতার্থ আছে: দুষ্ট মানুষদের কাছে, উন্মোচিত হওয়ার অর্থ হল বহিষ্কৃত হওয়া। যারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে, তাদের কাছে এটা হল তাদের মনে করিয়ে দেওয়া এবং সতর্কীকরণ; তাদের আত্মানুসন্ধান করানো হয়, যাতে তারা তাদের প্রকৃত অবস্থা দেখতে পায়, এবং আর বিপথগামী ও অপরিণামদর্শী না হয়, কারণ সেইভাবে চলতে থাকা বিপজ্জনক হবে। মানুষকে এইভাবে উন্মোচিত করার কারণ হল তাদের মনে করিয়ে দেওয়া, যাতে নিজেদের দায়িত্বপালনের সময় তারা বিশৃঙ্খল ও অমনোযোগী না হয়, কর্তব্যে উদাসীন না হয়, সামান্য কার্যকরী হয়েই এই মনে করে সন্তুষ্ট না হয়ে পড়ে যে তাদের দায়িত্বপালন গ্রহণযোগ্য মান অর্জন করেছে—আসলে যখন ঈশ্বরের প্রয়োজনের পরিমাপে তারা অনেক পিছিয়ে রয়েছে, তবু তারা আত্মতুষ্ট, মনে করে যে তারা সব ঠিকঠাকই করছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, ঈশ্বর মানুষকে অনুশাসিত করবেন, সতর্ক করবেন, ও তাদের মনে করিয়ে দেবেন। কখনও কখনও ঈশ্বর তাদের কদর্যতাকে উন্মোচিত করেন, যা স্পষ্টতই স্মরণ করিয়ে দেওয়ার কাজ করে। এরকম সময়ে তোমার উচিত নিজের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা: এইভাবে দায়িত্ব পালন করা অপর্যাপ্ত, এর মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাব জড়িত, এর মধ্যে অনেক কিছুই আছে যা নেতিবাচক, এটা একেবারেই অগভীর, এবং যদি তুমি অনুতপ্ত না হও, তাহলে তোমাকে দণ্ড দেওয়া হবে। যখন ঈশ্বর তোমাকে অনুশাসন করেন, উন্মোচিত করেন, তার অর্থ আবশ্যিকভাবে এই নয় যে তোমাকে বহিষ্কার করা হবে। এই বিষয়টার প্রতি সঠিকভাবে অগ্রসর হওয়া উচিত। এমনকি যদি তুমি বহিষ্কৃতও হও, তোমার উচিত তা মান্য করা, এবং শীঘ্রই গভীরভাবে চিন্তা করা ও পরিতাপ করা” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অনুশীলন এবং ঈশ্বরকে মান্য করার মাধ্যমেই স্বভাব পরিবর্তন অর্জন করা যায়)। ঈশ্বরের বাণী আমাকে দেখিয়েছে যে মানুষকে প্রকাশ করাই ঈশ্বরের উদ্দেশ্য মানুষকে নির্মূল করা নয়, বরং মানুষ যেন তাদের দুর্নীতি এবং ত্রুটি বুঝতে পারে সেটাই ঈশ্বরের উদ্দেশ্য। যেন তারা সত্য অন্বেষণ করে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য এবং জীবনে দ্রুত উন্নতি লাভ করে। আমি নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। নানান ধরণের অসুবিধা এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আমি সত্যিকার চিন্তা করে দেখিনি এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা অন্বেষণ করিনি কিংবা আমার নিজের সমস্যা বিষয়ে জানতে নিজেকে নিয়ে ভাবিনি। আমি শুধু ভেবেছি যে ঈশ্বর এই ধরণের পরিস্থিতি ব্যবহার করছেন আমাকে প্রকাশ এবং বহিস্কার করার জন্য, যে আমি একজন নেতা হিসাবে উপযুক্ত নয় এবং আমার পদত্যাগ করা উচিত। আমি ঈশ্বরকে ভুল বুঝছিলাম। তখন আমি উপলব্ধি করলাম যে কাজে অনেক সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে এর প্রধান কারণ হলো আমি আন্তরিকভাবে এই দায়িত্ব পালন করিনি। আমার সবসময় মনে হয়েছে যে আমার অনেক কাজ বাকি আছে যেগুলো শেষ করতে হবে, কিন্তু আমি যখন কাজ করতাম তখন আমার কোনো দিকনির্দেশনা বা লক্ষ্য ছিল না। আমার মনে যা আসত আমি কেবল তাই করতাম কোনো ফলাফলের আশা না করে। কিছু মানুষ গুজবে পথভ্রষ্ট হয়েছিলেন এবং আমি তাদের ধারণার সমাধান দিতে সত্যের কোন দিকটা নিয়ে আলোচনা করবো তা খুঁজে দেখিনি যাতে তারা ওইসব গুজব সম্পর্কে বুঝতে পারে এবং সত্যের পথে অটল থাকতে পারে। এবং মানুষকে শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে, আমি কোনো নীতির অন্বেষণ করিনি কিংবা তাদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাওয়ারও চেষ্টা করিন, শুধু অন্ধভাবে কাজগুলো করে গেছি। যার ফলে, আমি সেই দিকটিতেও কিছু করতে পারিনি। নবাগতদের সিঞ্চনের কাজে, আমি তাদের সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য সত্যের কোন দিকগুলিতে আলোচনা করতে পারি সে সম্পর্কে আমি আগে চিন্তা করিনি, তাই আমি এতেও কোনো বাস্তব ফলাফল পাইনি। যদিও বাইরে থেকে দেখে মনে হত যে আমি কঠোর পরিশ্রম করছি, কিন্তু আমি মনোযোগী ছিলাম না আর সময়মত আমাদের কাজের সমস্যাগুলোর সারসংক্ষেপ করছিলাম না, যার অর্থ হলো কোনো কিছুই অর্জিত হচ্ছে না। এবং আমি কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবতে এবং বুঝতেই ব্যর্থ হইনি, যে সত্যগুলিতে প্রবেশ করা উচিত তা সন্ধান করতেও ব্যর্থ হয়েছি। আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল ঈশ্বরের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া, অনুমান করা যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে প্রকাশ করছেন, আমাকে মন্দ হিসেবে দেখাতে। আমি সব সময় নালিশ করতাম, এবং ব্যর্থতা ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে চাইতাম না, তবে সবসময় চাইতাম বিষয়গুলো যেন আমার জন্য সহজ হয়, যেন সব কিছু নির্ঝঁঝাট হয়। খুব সামান্য অসুবিধা বোধ করলেই আমি ঈশ্বরকে ভুল বুঝতাম এবং দোষারোপ করতাম। তাহলে কীভাবে আমি ঈশ্বরের কাজ অনুভব করবো এবং আমার দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবো? আমি এতই অযৌক্তিক ছিলাম। একজন সৃষ্ট সত্তার এমন আচরণ করা উচিত নয়। এটা বুঝতে পেরে আমি অনেক অনুতপ্ত হলাম, এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম: “ঈশ্বর, আপনি আমাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য, আমাকে জীবনে বেড়ে উঠতে দেওয়ার জন্য এই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, কিন্তু আমি আপনার ইচ্ছা বুঝতে পারিনি—আমি আপনাকে ভুল বুঝেছি। আমি এতই অবাধ্য। অনুগ্রহ করে আমাকে পথ প্রদর্শন করুন এবং আমার নিজের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব বুঝতে সাহায্য করুন।” এরপর, আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের একটি অনুচ্ছেদ পড়লাম যা আমাকে নিজেকে বুঝতে সাহায্য করেছিল। ঈশ্বর বলেন, “যারা অন্যদের প্রতি সন্দেহপ্রবণ নয় আমি তাদের নিয়ে তৃপ্ত হই, এবং যারা সহজে সত্যকে গ্রহণ করতে পারে আমি তাদের পছন্দ করি; এই দুই ধরণের মানুষের প্রতি আমি অত্যন্ত যত্নশীল, কারণ আমার চোখে তারা সৎ মানুষ। তুমি যদি প্রতারক হও, তাহলে তুমি সব মানুষ এবং বিষয়ের প্রতি সতর্ক এবং সন্দিগ্ধ হবে এবং এইভাবে আমার প্রতি তোমাদের বিশ্বাস সন্দেহের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি কখনোই এই ধরণের বিশ্বাস স্বীকার করতে পারি নি। প্রকৃত বিশ্বাসের অভাবে তোমরা আরও বেশি করে প্রকৃত ভালোবাসাশূণ্য। তুমি যদি ঈশ্বরের প্রতি সন্দেহপ্রবণ হও এবং ইচ্ছেমতো তাঁর সম্পর্কে অনুমান করতে প্রবৃত্ত হও, তাহলে সব মানুষের মধ্যে প্রশ্নাতীতভাবে তুমিই সর্বাধিক প্রতারক। তুমি অনুমান কর ঈশ্বর কখনও মানুষের মতো হতে পারেন কিনা: ক্ষমার অযোগ্য পাপী, ক্ষুদ্রমনা, ন্যায় ও যুক্তি বর্জিত, ন্যায়বিচারের বোধের অভাবযুক্ত, বিদ্বেষপূর্ণ কৌশলযুক্ত, বিশ্বাসঘাতক ও ধূর্ত, মন্দ ও অন্ধকার দ্বারা তৃপ্ত, ইত্যাদি। ঈশ্বর সম্পর্কে মানুষের ন্যূনতম জ্ঞানের অভাবের কারণেই তাদের এমন চিন্তাধারা নয় তো? এই ধরণের বিশ্বাস পাপের থেকে কোনো অংশে কম নয়! এমনও কিছু মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে যে মূলত তারাই আমাকে তৃপ্ত করে, যারা আমার তোষামোদ এবং পদলেহন করে, এবং যাদের এই ধরণের দক্ষতার অভাব রয়েছে তারা ঈশ্বরের গৃহে অবাঞ্ছিত হবে এবং সেইখানে নিজের স্থান হারাবে। এত বছর পরেও এটাই কি তোমাদের একমাত্র লব্ধ জ্ঞান? এটাই কি তোমরা অর্জন করেছো? এবং আমার সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান শুধু এই ভুল বোঝাবুঝিতে থেমে থাকে না; ততোধিক খারাপ বিষয় হল ঈশ্বরের আত্মার বিরুদ্ধে তোমাদের নিন্দা এবং স্বর্গের বিষয়ে কুৎসা প্রচার। সেই কারণেই আমি বলি যে তোমাদের এইরূপ বিশ্বাস তোমাদেরকে আমার কাছ থেকে কেবল আরও বিপথে চালিত করবে এবং তোমরা আমার আরও বিরোধী হয়ে উঠবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পৃথিবীতে ঈশ্বরকে কীভাবে জানা যাবে)। ঈশ্বরের বাণীতে যা প্রকাশ পেয়েছে তা দেখে সত্যিই লজ্জিত হলাম। আমি ঈশ্বরের প্রতি সন্দিহান ছিলাম এবং যখন ব্যর্থতা ও বিপত্তির সম্মুখীন হতাম তখন তাঁকে ভুল বুঝতাম, তাঁকে মানুষের মতই কঠোর এবং নির্দয় ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম ঈশ্বর যখন কাউকে ব্যবহার করতে চান তিনি তাদের তাঁর অনুগ্রহ উপভোগ করার সুযোগ দেন, অন্যথায়, তিনি তাদের বহিস্কার করেন, তাদের বর্জন করেন এবং তাদের উপেক্ষা করেন। আমি অধার্মিক মানসিকতা নিয়ে ঈশ্বরকে সন্দেহ ও আশংকা করেছিলাম। আমি এতই ধূর্ত ছিলাম! আমি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাসী ছিলাম না, আমি যে সত্যগুলি বুঝতে পেরেছিলাম তা খুব সামান্য এবং আমার অনেক ত্রুটি ছিল, তারপরেও ব্রাদার এবং সিস্টাররা আমাকে একজন নেতা হিসেবে পছন্দ করে, আমাকে অনুশীলনের একটি সুযোগ দিয়েছিল যেন আমি সত্যটা আরো দ্রুত শিখতে পারি এবং সত্যের বাস্তবতায় প্রবেশ করতে পারি। যদিও কখনও কখনও দায়িত্বে যথেষ্ট মনোযোগ না থাকার কারনে সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়নি, তারপরেও গির্জা আমাকে বরখাস্ত করেনি। অন্যরাও আমাকে সাহায্য এবং উৎসাহিত করে গেছে, এবং ঈশ্বরের বাণীর ওপর আমার সাথে আলোচনা করেছে, আমাকে পথ প্রদর্শন করেছেন ঈশ্বরের ইচ্ছা বোঝার জন্য এবং আমার দুর্নীতি ও ত্রুটিগুলো চিনতে পারার জন্য। ঈশ্বর আমার জন্য যা কিছু করছিলেন তা সত্যিকার অর্থে আমাকে শিক্ষিত করে তুলছিল এবং আমাকে রক্ষা করছিল। তিনি এতই দয়ালু এবং অপূর্ব! কিন্তু আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করেছিলাম, এবং সন্দিহান ছিলাম। ঈশ্বরের প্রতি সত্যিকারের বিশ্বাসটা কেমন ছিল? শয়তান আমাকে গভীরভাবে বিষাক্ত করে ফেলেছিল, সবসময় শয়তানের কথা মত চলেছি, যেমন “কাউকে বিশ্বাস করো না কারণ অন্ধকারে তোমার ছায়াও তোমাকে ছেড়ে পালাবে” এবং “আপনি বিদ্বেষপরায়ন হতে পারবেন না, কিন্তু আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।” আমি সবার কাছ থেকে সতর্ক থাকতাম, এমনকি ঈশ্বরের কাছ থেকেও। এ থেকে প্রমাণ হয় যে আমার ধূর্ত স্বভাব সত্যিই খুব গুরুতর ছিল, এবং ঈশ্বর সম্বন্ধে আমার সন্দেহ এবং ভুল বোঝাবুঝিগুলি সম্পূর্ণভাবে সেই জায়গা থেকে এসেছে। অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে, আমি আশঙ্কা করেছিলাম এবং ঈশ্বরকে ভুল বুঝেছিলাম, কিন্তু তারপরেও ঈশ্বর আমাকে সত্য বুঝতে পথপ্রদর্শন করেন, যেন আমি আমার সমস্যাগুলো দেখতে পাই। আমি ঈশ্বরের ভালোবাসা এবং তাঁর পরিত্রান কতটা বাস্তব তা অনুভব করতে পারি। ঈশ্বরের সামনে এসে প্রার্থনা করলাম, তাঁর নিকট পরিতাপ করতে হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম এবং আমার ধূর্ত স্বভাব, ঈশ্বরকে সন্দেহ করা এবং ভুল বোঝা এসব নিয়ে বেঁচে থাকা বন্ধ করলাম।
পরে, ঈশ্বরের বাণীর এই অনুচ্ছেদটি পড়লাম: “যদিও তুমি হয়ত এখন স্বেচ্ছায় তোমার দায়িত্ব পালন করতে পারো, এবং স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করতে পারো ও নিজেকে ব্যয় করতে পারো, কিন্তু যদি তোমার এখনও ঈশ্বর সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি থাকে, অনুমান থাকে, সন্দেহ থাকে, অভিযোগ থাকে, বা এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী মনোভাব ও প্রতিরোধ থাকে, অথবা তুমি তাঁকে প্রতিহত করতে এবং তোমার উপর তাঁর সার্বভৌমত্বকে প্রত্যাখ্যান করতে বিভিন্ন উপায় ও পদ্ধতি ব্যবহার করো—যদি তুমি এগুলোর সমাধান না করো—তাহলে সত্যের পক্ষে তোমার সত্তার উপর প্রভুত্ব করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে, আর তোমার জীবন হয়ে উঠবে ক্লান্তিকর। এইসব নেতিবাচক অবস্থায় পড়ে মানুষকে প্রায়ই সংগ্রাম করতে হয় এবং কঠোর যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়, যেন তারা এক পঙ্কিল জলাভূমিতে নিমজ্জিত, সবসময়েই বেঁচে আছে সত্য ও অসত্যের মাঝে, ঠিক ও ভুলের মাঝে। তারা কী করে সত্যকে আবিষ্কার ও উপলব্ধি করতে পারবে? সত্যের সন্ধান করতে গেলে, প্রথমে সমর্পণ করতে হবে। তারপর, কিছু সময়ের অভিজ্ঞতা লাভ করার পর, তারা কিছু পরিমাণ আলোকপ্রাপ্তি লাভে সক্ষম হবে, যে পর্যায়ে সত্যকে উপলব্ধি করা সহজ। কেউ যদি সর্বক্ষণ বুঝে ওঠার চেষ্টা করতে থাকে যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল এবং সত্য ও মিথ্যা কী তার মধ্যে আটকে পড়ে, তাহলে সত্যকে আবিষ্কার বা উপলব্ধি করার কোনো উপায় তাদের নেই। আর কেউ যদি কখনোই সত্যকে বুঝে উঠতে না পারে তাহলে তার পরিণাম কী? সত্যকে উপলব্ধি করে না পারা জন্ম দেয় ঈশ্বরের সম্পর্কে নানান ধারণা ও ভুলবোঝাবুঝির; ভুলবোঝাবুঝি থাকলে ক্ষোভ অনুভব করা খুবই সহজ; যখন ক্ষোভের উদ্গীরণ হয়, তারা হয়ে ওঠে বিরোধীপক্ষ; ঈশ্বরের বিরোধিতার অর্থ তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, এবং তা এক গুরুতর অধর্ম; এবং অনেক অধর্ম সংঘটনই পরিণত হয় নানাবিধ মন্দত্বে, তাই তখন তাকে দণ্ডপ্রদান করতে হয়। চিরকাল সত্যের উপলব্ধিতে অক্ষম থেকে গেলে এইসবই হয়” (বাক্য, খণ্ড ৩, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের উপদেশ, কেবলমাত্র সত্যের অন্বেষণের মাধ্যমেই ঈশ্বর সম্বন্ধে পূর্বধারণা ও ভুল বোঝাবুঝির সমাধান সম্ভব)। এটা পড়ে যা ঘটেছিল তাতে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি যদি নেতিবাচকতা নিয়েই জীবন যাপন করতে থাকতাম সত্যের অন্বেষণ না করতাম, ভ্রাতা এবং ভগিনীদের সাথে খোলাখুলি আলাপ না করতাম, তাহলে আমাকে আমার ধূর্ত স্বভাব নিয়ে, ঈশ্বরকে ভুল বুঝেই জীবন যাপন করতে হত। তাহলে আমি সহজেই ঈশ্বরকে দোষারোপ এবং প্রতিরোধ করতে পারতাম, যা হতো একটা সীমালঙ্ঘন। আমি হয়ত এমনকি মন্দ কাজ করতাম এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধচারণ করতাম। এটা খুবই ভয়ানক হত! সেই সময়ে আমি ঈশ্বরকে ভুল বুঝছিলাম এবং সন্দেহ করছিলাম, আমার নেতিবাচক অবস্থা কার্যত আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতো। আমি সব সময় প্রকাশিত এবং বহিস্কৃত হওয়ার ভয়ে থাকতাম আমার স্বাধীনতার কোন বোধ ছিল না—বিষয়টা খুবই ক্লান্তিকর ছিল। আমার দায়িত্বে আমি কেবল চেষ্টাই করেছি আর কাজগুলি সম্পূর্ণ করেছি। কিন্তু যখনই সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, আমি ঈশ্বরকে ভুল না বুঝে থাকতে পারিনি এবং আমি পদত্যাগ করতে চেয়েছি। ঈশ্বরের বাণীই আমাকে পথ দেখিয়েছে অন্যদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করতে এবং সত্য অন্বেষণ ও আমার নিজের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাব বিষয়ে জানতে। অন্যথায়, আমি ঈশ্বরকে ভুল বুঝতেই থাকতাম এবং আমার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতাম আর এর পরিণতি হত ভয়াবহ।
আমি পরে ঈশ্বরের বাণীর আরেকটি অনুচ্ছেদ পড়েছিলাম যখন আমি গির্জার কাজে সমস্যার সম্মুখীন হই তখন এটি আমাকে অনুশীলনের জন্য একটি পথ দেখিয়েছিল। ঈশ্বর বলেন, “গির্জায় যে সমস্যাগুলি উদ্ভূত হয়, সেগুলির বিষয়ে এত গুরুতর আশঙ্কায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠনা। গির্জার নির্মাণকালে ভুলত্রুটি অনিবার্য, কিন্তু যখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবে তখন আতঙ্কিত হয়ো না; বরং, শান্ত ও সংযত হয়ে থেকো। আমি কি ইতিমধ্যেই তোমাদের বলিনি? বারবার আমার সম্মুখে এসো এবং প্রার্থনা করো, এবং আমি তোমাকে স্পষ্টভাবে আমার অভিপ্রায়গুলি দেখাব” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ৪১)। আমি ঈশ্বরের বাণী থেকে শিখেছি যে গির্জার কাজে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হওয়াটা অনিবার্য একটি বিষয়। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং ঈশ্বর এটা ঘটতে অনুমতি দেন। যখন আমরা সমস্যার সম্মুখীন হই, তখন যদি সত্যিকার অর্থে প্রার্থনা করি এবং ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি, তিনি আমাদের সামনের পথ দেখাবেন। কিছু নতুন বিশ্বাসী যারা অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ মেনে নিয়েছেন দর্শনের সত্যগুলি তারা পুরোপুরি বোঝেন না এবং এখনও তারা গুজবে বিভ্রান্ত হতে পারেন। আমার আরও বেশি ঈশ্বরের উপর নির্ভর করতে হত এবং তাঁর বাণীগুলো ব্যবহার করতাম শয়তানের কৌশল প্রকাশ করার জন্য এবং নতুন বিশ্বাসীদের সত্য পথে ভিত্তি স্থাপন করতে সাহায্য করার জন্য। ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করার পর, গির্জার কাজে ফিরে যেতাম, আমি আমাদের পূর্ববর্তী কাজে বিদ্যমান ত্রুটি এবং সমস্যাগুলির সারসংক্ষেপ করেছি এবং নতুন বিশ্বাসীরা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তার সাথে সম্পর্কিত সত্যেগুলো দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করেছি, তারপর আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছি। মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য, প্রথমে আমি ওই সমস্ত নীতিগুলোর অন্বেষণ করি এবং মন থেকে প্রার্থনা করি, তারপর সমাবেশে আমি পর্যবেক্ষণ করি কে শিক্ষিত হওয়ার নীতির সাথে খাপ খায়। এভাবে লোক নির্বাচন করলে তা অনেকটা সঠিক হতো। মাঝে মাঝে আমি এখনও আমার দায়িত্বে কিছু ব্যর্থতা এবং অসুবিধার সম্মুখীন হই, কিন্তু আমি এখন এই বিষয়গুলোকে একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করি। ঈশ্বর এই পরিস্থিতিতে আমাকে কী শিক্ষা দিতে চান? আমি প্রার্থনা নিশ্চিত করি, ঈশ্বরের বাণী পড়ি, এবং অনুশীলনের একটি পথ খুঁজি এবং আমি শিখেছি কিভাবে অন্যান্য ভ্রাতা ও ভগিনীদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে হয়। অন্যরা আমাদের কাজে সমস্যা চিহ্নিত করেন, এবং আমি নিজে আমার দোষ ত্রুটি দেখতে সক্ষম। আমি আর বিশ্বাস করি না যে ঈশ্বর আমাকে খারাপ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। বরং, আমি মনে করি এটা হলো নিজেকে নিয়ে ভাবার, নিজেকে জানার, এবং জীবনে উন্নতি করার একটা সুযোগ, একবার একজন সিস্টার আমাকে বললেন, “আমি লক্ষ্য করেছি আপনি নতুন বিশ্বাসীদের সিঞ্চন করার ক্ষেত্রে আরও ধৈর্যশীল হয়েছেন, এবং যখন আপনি সমস্যার সম্মুখীন হন আপনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অন্বেষণের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আরও উন্নতি করেছেন।” এ কথা শুনে খুব অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। যদিও এটা আমার একটা ক্ষুদ্র পরিবর্তন ছিল মাত্র, আমার একটি বাস্তব, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছিল যে মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের ভালবাসা এবং পরিত্রাণ বিশুদ্ধ এবং বাস্তব। ঈশ্বর সর্বদা আমাকে পথ দেখাচ্ছেন, আমাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন—তিনি আমার পাশে আছেন। আমার দায়িত্ব পালন এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমার আরও সংকল্প আছে।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।