চীনে ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ

18-02-2023

জ্যাং লান, দক্ষিণ কোরিয়া

আমি আমার মহিমা ইস্রায়েলে প্রদান করেও তা সরিয়ে নিয়েছি, ফলে সমস্ত ইস্রায়েলবাসীর পাশাপাশি সমগ্র মানবজাতি প্রাচ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে। আমি তাদের আলোকে আনয়ন করেছি যাতে তারা এর সাথে পুনরায় একাত্ম হতে পারে, মিলিত হতে পারে, যাতে তাদের আর অনুসন্ধানের প্রয়োজন না থাকে। যারা পুনরায় আলো এবং ইস্রায়েলে আমার থাকাকালীন মহিমার সন্ধান করছে, তাদের সামনে আমি প্রদর্শন করবো যে আমি বহু পূর্বেই শুভ্র মেঘে আসীন হয়ে মানবজাতির মধ্যে আবির্ভূত হয়েছিলাম, দেখাবো অগণিত শুভ্র মেঘ এবং ফলের গুচ্ছের সমাহার, তদুপরি, তাদের দেখাবো ইস্রায়েলের ঈশ্বর যিহোবাকে। তাদের দেখাবো ইহুদিদের প্রভুকে, যে মশীহের আকাঙ্ক্ষা তারা এতদিন করে আসছে, যাকে যুগ যুগ ধরে রাজাদের দ্বারা নির্যাতিত হতে হয়েছে, আমার সেই পরিপূর্ণ উপস্থিতিকে। আমি সমগ্র বিশ্বে আমার কর্মধারা চালিয়ে যাবো এবং এই মহান কর্মধারা অন্তিম সময়ে মানুষের প্রতি আমার মহিমা এবং কর্মপ্রবাহ প্রকাশ করবে। যারা বহু বছর ধরে আমার প্রতীক্ষা করেছে, যারা আমার শুভ্র মেঘে আসীন হয়ে আবির্ভাবের আকাঙ্ক্ষা করেছে, যে ইস্রায়েল আমার পুনরাবির্ভাবের জন্য অপেক্ষা করেছে, যে সমস্ত মানুষ আমাকে নির্যাতন করেছে, তাদের সকলের সামনেই আমি আমার সম্পূর্ণ মহিমাময় রূপ প্রদর্শন করবো, যাতে সকলে জানতে পারে যে আমি আমার মহিমা বহুকাল আগেই প্রাচ্যে স্থানান্তরিত করেছি, তা আর যিহূদিয়াতে অবশিষ্ট নেই। কারণ অন্তিম সময় ইতিমধ্যেই চলে এসেছে(মেষশাবককে অনুসরণ করুন ও নতুন গীত গান)। ঈশ্বরের বাক্য সত্যই আমাকে মুগ্ধ করেছে। ঈশ্বর শেষ দিনগুলোতে তার গৌরব ইস্রায়েল থেকে পূর্ব অঞ্চল পর্যন্ত স্থাপন করেন। চীনে, যেটা সবচেয়ে বেশী ঈশ্বর বিরোধী একটি দেশ, সেখানে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন, তার কাজ সম্পাদন করেছেন এবং সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে মানবজাতিকে জয় করে তাদের পরিত্রাণের লক্ষ্যে সত্য উন্মোচন করেছেন। এটাই হচ্ছে ঈশ্বরের সর্বময় ক্ষমতা এবং প্রজ্ঞা। চীনে ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজের গভীর অর্থ রয়েছে। অতীতে, আমি ঈশ্বরের কাজের সাথে পরিচিত ছিলাম না। আমার ধারনা মতে, আমি ভাবতাম যে ঈশ্বর ইস্রায়েলেই আবার আবির্ভুত হবেন। শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ার পরেই আমি চীনে ঈশ্বরের আবির্ভাব ও কাজের রহস্য বুঝতে পারলাম।

প্রভুতে আস্থা খুঁজে পাওয়ার পর, আমি একজন উদ্যমী অন্বেষক হয়ে উঠলাম। যখনই আমি সময় পেতাম আমি গির্জার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতাম, এবং আমি প্রতি মাসে একনিষ্ঠভাবে দশমাংশ প্রদান করতাম। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে, আমি একটি কাজের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় আসি, এবং আমি কাজে যতই ব্যস্ত থাকি না কেন, আমি অবশ্যই রবিবার গির্জায় উপস্থিত থাকতাম। কিন্তু পালকের ধর্মশিক্ষা সেই একই পুরনো ধাঁচের হতো। উপস্থিত সকলে হয় ঝিমিয়ে পড়তো নাহয় নিজেদের মধ্যে কথা বলতো। সেখানে উপভোগ্য কিছুই ছিল ন। এক সময়ে, আমি আর গির্জায় যেতে চাইতাম না। কিন্তু, একজন খ্রীষ্টান হিসেবে, গির্জায় উপস্থিত না থাকাটা আমার ভালো লাগতোনা। তাই আমি নিজেই নিজেকে জোর করতাম গির্জায় যাওয়ার জন্য।

তারপর, হঠাৎ একদিন, আমার পুরানো গির্জার বন্ধু সিস্টার জাও এর সাথে দেখা হলো। তিনি তার বাসায় আমাকে আমন্ত্রণ জানালেন এবং তার বান্ধবী সিস্টার লী ও সাথে আসলেন। এই প্রথমবার আমরা একত্রিত হলাম, কিন্তু আমরা খুব সহজেই ঘনিষ্ঠ হয়ে গেলাম। আমরা আমাদের পরিস্থিতি নিয়ে এবং গির্জার জনশূন্যতা নিয়ে আলোচনা করলাম। সিস্টার লী আমাদের জানালেন যে কিভাবে গির্জা জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে কারণ ঈশ্বর নতুন একটি কাজ করছেন, এবং পবিত্র আত্মার কাজ পরিবর্তিত হয়েছে, এবং সেজন্য আমাদের অবশ্যই অনেকটা শুদ্ধ ও বিজ্ঞেরা যেমন প্রভুকে স্বাগত জানানোর লক্ষ্যে ঈশ্বরের উপস্থিতির সন্ধান করে ও তার বাক্য শোনে সেইরকম হতে হবে। তাঁর কথায় আমি খুবই উদ্বুদ্ধ হলাম। তারপর, সিস্টার লী বললেন: “প্রভু যীশু ইতিমধ্যে ফিরে এসেছেন, তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসেবে মনুষ্য রুপ ধারণ করেছেন, এবং তার কাজ সম্পাদনের জন্য চীনে আবির্ভুত হয়েছেন, সত্য উন্মোচন এবং শুদ্ধিকরণ ও বিচারকার্য সম্পাদনের জন্য তিনি এসেছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ক্ষমার যুগ শেষ করে তার রাজত্বের যুগ শুরু করেছেন। সেই সব ব্যক্তি যারা শেষ সময়ে তার কাজ গ্রহণ করেছেন তাদের ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে হাজির করা হয়েছে; তারা ঈশ্বরের বাণী প্রাপ্ত হয়েছেন এবং মেষশাবকের বিবাহ ভোজে অংশগ্রহণ করছেন”। সিস্টার লীর কথায় আমি বিস্মিত হলাম এবং সহজে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না: প্রভু ফিরে এসেছেন? আর তিনি চীনে এসেছেন? পুরাতন ও নতুন নিয়মের সময়ে, ঈশ্বর তার কাজ ইস্রায়েলে করেছেন, এবং এটা বাইবেলে লেখা আছে: “সেদিন তিনি জেরুশালেমের পূর্বে অলিভ পাহাড়ে গিয়ে দাঁড়াবেন। তখন অলিভ পূর্ব-পশ্চিম দুভাগে ভাগ হয়ে যাবে, মাঝখানে থাকবে বিস্তীর্ণ এক উপত্যকা। পাহাড়ের অর্ধেক উত্তর দিকে এবং বাকী অর্ধেক দক্ষিণ দিকে সরে যাবে(সখরিয় ১৪:৪)। শেষ সময়ে, প্রভুর ইস্রায়েলে জৈতুন পাহাড়ে আবির্ভুত হওয়ার কথা। তাহলে তিনি চীনে কিভাবে এলেন? আমি সিস্টার লী কে আমার বিভ্রান্তির কথা জানালাম।

তিনি মুচকি হেসে বললেন: “প্রভুর ফিরে আসার সব ভবিষ্যদ্বাণীই রহস্যময়, আমরা তার মানে বুঝতে পারিনা। শুধুমাত্র কোন ভবিষ্যদবানী পূর্ণ হওয়ার পরে এবং ঈশ্বর তার কার্য কিভাবে সম্পাদন করেন তা দেখার পরেই আমরা বুঝতে পারি যে সেই ভবিষ্যদ্বাণীর অর্থ কী ছিল। ভবিষ্যদ্বাণীর আক্ষরিক অর্থ দ্বারা ঈশ্বরের কাজের সীমা নির্দেশ করা আমাদের উচিত নয়, কারণ তাহলে হয়তো আমরা ঈশ্বরের কাজ প্রতিহত করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, ফরীশীদের দেখো। তারা মশীহের আগমনের ভবিষ্যদ্বাণীর আক্ষরিক অর্থকেই আঁকড়ে ধরে ছিলো, এটা ভেবে যে তিনি যখন আসবেন তাকে মশীহ নামেই ডাকা হবে এবং মশীহ ছাড়া অন্য নামের কেউই খ্রীষ্ট হতে পারবেন না। ফলস্বরুপ, তারা শেষমেশ প্রভু যীশুর কাজকে প্রতিহত ও তাকে নিন্দা করতে লাগলো এবং ঈশ্বরের পরিত্রাণ থেকে বঞ্চিত হলো। আমরা যদি বাইবেলের আক্ষরিক ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে ঈশ্বরের কাজে সীমা নির্দেশ করি, এবং ঈশ্বরের প্রকাশিত রূপ ও কাজের নিরীক্ষণ না করি, তাহলে হয়ত আমরা ফরীশীদের মতোই একই ভুল করবো। শেষ সময়ে, ঈশ্বরের গৃহ থেকেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তার বিচার কার্য শুরু করেন, সেই সব সত্য উন্মোচন করেন যা মানবজাতিকে পূর্বে উদিত একটি উজ্জ্বল আলোর মতো শুদ্ধ ও পরিত্রাণ করে। মাত্র ২০ বছরের মধ্যে, শেষ সময়ের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ সমগ্র চীন জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে, এবং এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশেও পৌছে গেছে। বাক্য দেহে আবির্ভুত হল, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটি সম্ভার অনূদিত হয়েছে ২০টিরও বেশি ভাষায়, এবং বিশ্বব্যাপী অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে যেন লোকেরা অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণ করতে পারে। শেষ সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ করেছে: ‘বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মানবপুত্রের আগমন হবে(মথি ২৪:২৭)। এবং মালাখি ১:১১: ‘কারণ সূর্যের উদয় থেকে আরম্ভ করে তার অস্তাচলে যাওয়া পর্যন্ত পরজাতীয়দের মধ্যে আমার নামের মাহাত্ম্য বিরাজ করবে…, স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু যিহোবা বলেছেন।’” এইসব শুনে হঠাৎ বুঝলাম: প্রভু চীনেই ফিরে এসেছেন, ইস্রায়েলে নয় এবং বাইবেলে অনেক আগেই এই ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিলো।

তারপর, সিস্টার লী সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটি অংশ আমাকে পড়ে শোনান: “আসলে, ঈশ্বর এই বিশ্বের সমস্ত কিছুরই মালিক, সৃষ্ট প্রতিটি অস্তিত্বের ঈশ্বর। তিনি কেবল ইস্রায়েলবাসীদের বা ইহুদিদের নন; যা কিছুই সৃষ্ট হয়েছে তিনি তাদের সবার ঈশ্বর। যেহেতু তাঁর পূর্ববর্তী দুটি পর্বের কাজ ইস্রায়েলেই, চলেছিল, তাই সেখানকার মানুষের মনে এই ধারণা হয়েছিল যে, যিহোবার কার্যকলাপও যেহেতু ইস্রায়েলেই হয়েছে এবং যীশু নিজেও দেহরূপে তাঁর কাজ জুডিয়াতে করেছেন—এবং অন্যান্য নানা কারণে, তাঁর এই কাজ ইস্রায়েলের বাইরে সম্প্রসারিত হয়নি। তাই তাদের ধারণা, মিশরীয় বা ভারতীয়দের মধ্যে ঈশ্বর তাঁর কাজ করেন নি; তাঁর কাজ শুধুমাত্র ইস্রায়েলবাসীদের জন্যই। এই ভাবেই মানুষের মধ্যে গড়ে উঠেছে বিচিত্র সব ধারণা। এবং ঈশ্বরের কর্ম-পরিধিকে তারা একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই গণ্ডীবদ্ধ রাখতে চেয়েছে। তাদের ধারণা, ঈশ্বর শুধুমাত্র তাঁর নির্বাচিত জনগোষ্ঠী এবং ইস্রায়েলেই তাঁর কর্ম সম্পাদন করেন। ইস্রায়েলবাসী ছাড়া অন্য কেউই বা অন্য কোনও স্থানেই তাঁর কর্মের কোনও বৃহত্তর অবকাশ নেই। তারা এমনই গোঁড়া যে ঈশ্বরের অবতারের কর্ম-পরিধিকে তারা ইস্রায়েলের ভৌগোলিক সীমার বাইরেও যেতে দিতে চায় না। এগুলি কি নেহাতই তুচ্ছ মানবোচিত ধারণা নয়? আকাশ ও পৃথিবী এবং সমস্ত কিছু যেখানে তাঁর সৃষ্টি সেক্ষেত্রে তাঁর কাজ কি কেবলমাত্র ইস্রায়েলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে? যদি তাই হত, তাহলে তাঁর এই বিশ্বজোড়া সৃষ্টির অর্থ কী? তিনি জগতের সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর ছয় হাজার বছর ব্যাপী পরিচালনামূলক পরিকল্পনা কেবলমাত্র ইস্রায়েলের জন্য হতে পারে না, তা বিশ্বের সমস্ত মানুষের জন্যই। … ঈশ্বরকে যদি মানুষের ধারণা অনুসারে কাজ করতে হত, তাহলে তিনি কেবল ইস্রায়েলবাসীদেরই ঈশ্বর থাকতেন। পরজাতীয় দেশগুলিতে প্রসারিত হত না তাঁর কর্মক্ষেত্র। সেক্ষেত্রে তিনি শুধুমাত্র ইস্রায়েলবাসীদেরই আরাধ্য ঈশ্বর হতেন, বিশ্বস্রষ্টা হিসাবে বন্দিত হতেন না। ভবিষ্যৎবাণী ছিল যে পরজাতীয় দেশগুলিতে যিহোবার নাম বিপুলভাবে বর্ধিত এবং প্রচারিত হবে। এমন ভবিষ্যৎবাণী কেন করা হয়েছিল? ঈশ্বর যদি কেবল ইস্রায়েলবাসীদের ঈশ্বর হতেন তাহলে তো তাঁর কর্মকাণ্ড কেবল ইস্রায়েলেই হওয়ার কথা। বিশ্বজুড়ে তাঁর কাজ এত বিস্তৃত করতেন না বা এমন এমন ভবিষ্যৎবাণীও করতেন না। যেহেতু তিনি এই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, তাই নিশ্চিতভাবেই তিনি সব পরজাতীয় রাষ্ট্রগুলিতে এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশে এবং স্থানে তাঁর কাজ প্রসারিত করবেন। যেহেতু এই ভবিষ্যৎবাণী তাঁরই করা, তাই তিনি অবশ্যই এটি করবেন; এটাই তাঁর পরিকল্পনা, কারণ, আকাশ ও পৃথিবী এবং সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা তিনিই এবং সৃষ্ট সব কিছুরই তিনি ঈশ্বর। তিনি ইস্রায়েলবাসী বা সমগ্র জুডিয়া-যেখানেই তিনি কাজ করেন তা সমগ্র বিশ্বের এবং সমগ্র মানবজাতির কাজ। অতিকায় লাল ড্রাগনের সেই দেশের মত এক অ-ইহুদি দেশেও তিনি বর্তমানে যে কাজ করে চলেছেন, তাও সমস্ত মানবজাতির জন্যই। পৃথিবীতে তিনি যে কাজ করেছেন, ইস্রায়েল যদি বিশ্বজোড়া তাঁর সেই কাজের ভিত হয়ে থাকে তা হলে পরজাতীয় দেশগুলিতে তাঁর কাজের ভিত হয়ে উঠতে পারে চীন। ‘পরজাতীয় দেশগুলিতে যিহোবার নাম বিপুলভাবে বর্ধিত এবং প্রচারিত হবে’ এই ভবিষ্যৎবাণী তিনি করেছিলেন, তা কি এখনও সফল হয়নি?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর সকল সৃষ্টির প্রভু)

সিস্টার লী তখন বললেন: ঈশ্বরই সৃষ্টির প্রভু, তিনি সমগ্র মহাবিশ্ব শাসন করেন এবং সব মানুষের অদৃষ্টের তত্বাবধান করেন। ঈশ্বর শুধু ইস্রায়েলেরই ঈশ্বর নন, তদুপরি তিনি সমগ্র সৃষ্টিরই ঈশ্বর। ঈশ্বরের যেকোন দেশে যেকোন জাতির মধ্যে কাজ করার অধিকার রয়েছে। তিনি যে দেশেই আবির্ভুত হয়ে কাজ করেন না কেন, তিনি মানবজাতির জন্যই কাজ করেন, তাদেরকে তাদের উন্নতির পথে চালিত করেন। উদাহরনস্বরুপ, আইনের যুগে, ঈশ্বর যিহোবা মোশীকে ব্যবহার করেন ইস্রায়েলে তার আইন প্রচারের জন্য এবং আইনের যুগ শুরু করেন। তারপর, এই দেশকে কেন্দ্র করেই ক্রমশ তার কাজ অন্য দেশেও সম্প্রসারিত করেন, যেন সব জাতি ও দেশের লোকেরা তার নামের গৌরব করেন। ক্ষমার যুগে, প্রভু যীশু যিহুদাতে তার পরিত্রাণের কাজ করেছেন। প্রভু যীশু শুধুমাত্র ইহুদীদেরই পরিত্রাণ করেননি, তিনি সমগ্র মানবজাতিরই পরিত্রাণ করেছেন। এখন, দুই হাজার বছর পরে, প্রভুর ধর্মীয় বাক্য পৃথিবীর প্রতিটি কোনে পৌছে গেছে। শেষ সময়ে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর চীনকে তার কাজের একটি পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছেন, সমগ্র মহাবিশ্বে এটির বিস্তারের পূর্বে। এখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য এবং কাজ উজ্জ্বল আলোর মতো পূর্বদিক থেকে দীপ্তিমান হয়ে পশ্চিমের সব জাতিকে সাক্ষ্য দ্বারা প্রদীপ্ত করছে। ব্যাপক সংখ্যক লোকেরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে ঈশ্বরের স্বর শুনেছে, এবং তার বিচার গ্রহণ করতে ও বাক্যের দ্বারা শুচি হতে তার সিংহাসনের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা দেখতে পাই, যে সময়ই হোক না কেন, যখন ঈশ্বর স্থির করেন যে তিনি আবির্ভুত হবেন এবং লোকেদের মাঝে অথবা কোন দেশে কাজ করবেন, তিনি প্রথমে একটি স্থান নির্বাচন করেন তারপর, সেই জায়গাকে উদাহরনস্বরুপ ব্যবহার করে, ক্রমশ অন্যান্য স্থানেও তাঁর মানুষদের পরিত্রাণের কাজ বিস্তৃত করেন। এটিই ঈশ্বরের কাজের নীতি। আমরা যদি আমাদের ধারনা ও কল্পনা দ্বারা চালিত হই, এটা ভেবে যে যেহেতু ঈশ্বর আইনের যুগে এবং ক্ষমার যুগে ইস্রায়েলে কাজ করেছেন, তাহলে হয়তো তিনি শুধু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, ধর্মীয় বাক্য কেবল ইস্রায়েলের দ্বারাই আসতে পারে, শুধু ইস্রায়েলের লোকেরাই ঈশ্বরের মনোনীত আর তারাই শুধু আশীর্বাদ পাবার যোগ্য, এবং ঈশ্বর অন্য কোন জাতিতে আবির্ভুত হবেন না, তাহলে কি আমরা তাঁর সীমা নির্দেশ করে দিচ্ছি না? ঈশ্বর বলেন, ‘পরজাতীয়দের মধ্যে আমার নামের মাহাত্ম্য বিরাজ করবে’ তাহলে এটা কিভাবে পূর্ণতা লাভ করবে? ঈশ্বর শেষ সময়ে দেহ ধারন করেছেন এবং চীনে তার কাজ করেছেন, নাস্তিকতা দ্বারা শাসিত একটি দেশে, লোকেদের ধারনা চুর্ণ করতে এবং এটা দেখাতে যে তিনি কারো শাসনের অধিনে কাজ করেন না, কিন্তু তাঁর নিজের পরিকল্পনা মত কাজ করেন। তিনি আমাদের এটাও দেখান যে তিনি কেবল ইস্রায়েলের লোকেদেরই পরিত্রাণ করেন না, সকল জাতির লোকদেরই পরিত্রাণ করেন। ঈশ্বর হলেন সমগ্র মানব জাতির ঈশ্বর, নির্দিষ্ট কোন একটি দেশ বা জাতির ঈশ্বর নয়। যখনই ঈশ্বর আবির্ভুত হন এবং কাজ করেন, এটি সবসময়ই খুবই অর্থপূর্ণ, এবং তিনি সবসময় এমন যায়গাই নির্বাচন করেন যা মানুষের পরিত্রানের জন্য সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত।”

সিস্টার লীর সহভগীতা আমাকে খুবই লজ্জিত করে তুলেছিল। এটা জেনে যে ঈশ্বর তার কাজ আইনের যুগে এবং ক্ষমার যুগে করেছিলেন, আমি ভেবেছিলাম যে ঈশ্বর শুধু ইস্রায়েলেই আবির্ভুত হবেন ও কাজ করবেন। যদি ঈশ্বর শেষ সময়েও শুধু ইস্রায়েলেই তার কাজ করতেন তাহলে আমি তাকে সীমায়িত করতাম শুধু ইস্রায়েলের ঈশ্বর হিসেবে এবং তাঁকে সমগ্র মানবজাতির ঈশ্বর বলে অস্বীকার করতাম! সেটা হতো ঈশ্বরের বিরোধিতা করা। ঈশ্বর যেখানে আবির্ভুত হন এবং কাজ করেন তাতে সবসময় তাঁর পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞা প্রতিফলিত হয়। আমরা ঈশ্বরের কাজের বিষয়ে মন্তব্য করার যোগ্য নই, তার কাজকে সীমাবদ্ধ করার তো মোটেই নই। কিন্তু তবুও আমার কিছুটা সন্দেহ ছিলো। চীন নাস্তিক সরকার দ্বারা পরিচালিত একটি দেশ। ঈশ্বরকে অস্বীকার ও প্রতিহত করার জন্য এটি সবচেয়ে খারাপ দেশ। যদি ঈশ্বর ইস্রায়েলে আবির্ভুত হয়ে কাজ করার সংকল্প না করেন, তাহলে কেন আমেরিকা বা যুক্তরাজ্যে কাজ করছেন না? যেখানে খ্রীষ্টধর্মই হচ্ছে প্রধান ধর্ম। কেন সেসব জায়গা ছেড়ে চীনকেই তিনি তাঁর কার্য সম্পাদনের জন্য নির্বাচন করলেন? আমি সিস্টার লী কে এটা জিজ্ঞাসা করলাম। সিস্টার লী এভাবে উত্তর দিলেন: “ঈশ্বর তাঁর কজের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করেই কোন দেশে এবং কোন জায়গায় কাজ করবেন তা নির্ধারণ করেন। তার নির্বাচনের পিছনে সবসময়ই একটি বিশেষ অর্থ থাকে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এই বিষয়ে স্পষ্ট বলেছেন”। তারপরে সিস্টার লী আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের একটি অংশ পড়ে শোনালেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “যিহোবার কাজ ছিল বিশ্ব সৃষ্টি করা, এটি ছিল শুরু; আর এই পর্যায়টি হল কাজের শেষ, এবং এটাই পরিসমাপ্তি। শুরুর দিকে, ইস্রায়েলের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যেই ঈশ্বরের কাজ সম্পাদিত হয়েছিল, এবং সমস্ত স্থানের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র স্থানে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। কাজের শেষ পর্যায়টি বিশ্বের বিচার এবং যুগের পরিসমাপ্তির জন্য বিশ্বের সব দেশের মধ্যে সবচেয়ে অশুদ্ধ দেশে সঞ্চালিত হয়। প্রথম পর্যায়ে, ঈশ্বরের কাজটি সমস্ত স্থানের মধ্যে উজ্জ্বলতম স্থানে নির্বাহিত হয়েছিল, এবং শেষ পর্যায়টি সমস্ত স্থানের মধ্যে সবচেয়ে অন্ধকার স্থানে সম্পাদিত হয়। এই অন্ধকার সরিয়ে আলোর উদ্ভব হবে এবং সমস্ত মানুষদের জয় করা হবে। যখন এই সবচেয়ে অপবিত্র ও অন্ধকারতম স্থানের মানুষদের জয় করা সম্পন্ন হবে এবং সমগ্র মানুষেরা স্বীকার করবে যে একজন ঈশ্বর আছেন, তিনিই সত্য ঈশ্বর, এবং প্রত্যেকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসী হয়ে যাবে, তখন এই ঘটনাটি সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে জয়লাভের কাজ নির্বাহ করতে ব্যবহৃত হবে। কাজের এই পর্যায়টি প্রতীকী: এই যুগের কাজ শেষ হলে, ছয় হাজার বছরের ব্যবস্থাপনার কাজের সম্পূর্ণ পরিসমাপ্তি ঘটবে। অন্ধকারতম স্থানের মানুষদের একবার জয় করা হয়ে গেলে, অন্যান্য সব জায়গায়ও তাই হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যেমন, শুধুমাত্র চীনদেশে জয়ের কাজই অর্থবহ প্রতীকতা বহন করে। চীন সব রকমের অন্ধকারের শক্তির প্রতিমূর্তি এবং চীনের মানুষেরা তাদের সকলের প্রতিনিধি, যারা দেহসর্বস্ব, শয়তান অধিকৃত, এবং রক্তমাংসের। চীনের জনগণই অতিকায় লাল ড্রাগন দ্বারা সবচেয়ে বেশি ভ্রষ্ট হয়েছে, তাদের মধ্যে ঈশ্বরের সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধ রয়েছে, তাদের মানবতা সবচেয়ে হীন ও অপবিত্র, আর তাই তারাই সমস্ত ভ্রষ্ট মানবজাতির আদর্শ। … চীনের জনগণের মধ্যেই দুর্নীতি, অপবিত্রতা, অধার্মিকতা, বিরোধিতা এবং বিদ্রোহ সবচেয়ে পূর্ণরূপে রূপায়িত হয়েছে এবং সমস্ত বৈচিত্র্য সমেত প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে তারা অযোগ্য, অন্যদিকে তাদের জীবন ও মানসিকতা পশ্চাৎপদ, এবং তাদের অভ্যাস, সামাজিক পরিবেশ, জন্ম পরিবার – সবই হীন এবং সবচেয়ে পশ্চাৎপদ। সেইসাথে তারা হীন মর্যাদাসম্পন্ন। এই স্থানের কাজটি প্রতীকী, এবং এই পরীক্ষামূলক কাজ সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হওয়ার পরে ঈশ্বরের পরবর্তী কাজ আরও সহজতর হয়ে উঠবে। কাজের এই ধাপটি সম্পন্ন করতে পারলে পরবর্তী কাজও নিঃসন্দেহে চলতে থাকবে। কাজের এই ধাপটি সম্পন্ন হলে, বৃহৎ সাফল্য সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হবে এবং সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে জয়ের কাজ সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত হবে। সত্যি বলতে, তোমাদের মধ্যে কাজটি সফল হয়ে গেলে, এটি সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে সাফল্যের সমতুল্য হয়ে উঠবে। আমি যে কারণে তোমাদের একটি আদর্শ এবং নমুনা হিসাবে বেছে নিয়েছি তার তাৎপর্য এটাই। বিদ্রোহ, বিরোধিতা, অশুদ্ধতা, অধার্মিকতা – সবই এই মানুষদের মধ্যেই বর্তমান, এবং তাদের মধ্যেই মানবজাতির সমস্ত বিদ্রোহের লক্ষণ প্রতীয়মান। তারা সত্যিই অন্যরকম। এই কারণে, তাদের জয়ের প্রতীক হিসাবে তুলে ধরা হয়, এবং একবার তাদের জয় করা হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তারা অন্যদের জন্য নমুনা এবং আদর্শ হয়ে উঠবে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরের কাজের দর্শন (২))। সিস্টার লী তখন সহভাগ করলেন: “ঈশ্বর তাঁর কাজের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর লক্ষ্য এবং স্থান নির্ধারণ করেন। এটার সবসময়ই একটি নির্দিষ্ট অর্থ থাকে, আর এটা সবসময় মানবজাতির পরিত্রাণের জন্যই তিনি করেন। উদাহরণ স্বরূপ, ঈশ্বর তার কাজের প্রথম দুটি পর্যায় ইস্রায়েলে সম্পন্ন করেছেন কারণ ইস্রায়েলিরা ছিল ঈশ্বরের মনোনীত জাতি। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিল এবং তার আরাধনা করেছিল, তাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের প্রতি ভয় ছিল এবং তারা ছিল সমগ্র মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই তাদের মধ্যে কাজ করে ঈশ্বরের আরাধনাকারী একটি আদর্শ গোষ্ঠী তৈরি করা ঈশ্বরের পক্ষে সহজতম ছিল। আর এইভাবে, ঈশ্বরের কাজ আরো দ্রুত ও সহজে বিস্তৃত হতে পেরেছিল যাতে সমগ্র মানবজাতি ঈশ্বরের উপস্থিতি ও কাজ সম্পর্কে জানতে পারে এবং আরো লোকেরা যেন ঈশ্বরের সম্মুখে আসতে পারে ও তাঁর পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। ঈশ্বরের কাজের প্রথম দুটি পর্যায় ইস্রায়েলে সম্পন্ন করা ছিল সত্যিকার অর্থে প্রতীকী। ঈশ্বর সম্পুর্ণরূপে তার কাজের প্রয়োজন অনুসারে ইস্রায়েলকে নির্বাচন করেছিলেন। শেষ দিনগুলিতে, ঈশ্বর বিচার ও শুদ্ধিকরণের কাজ করেন। তিনি বিচারের জন্য এবং মানবজাতির দুর্নীতি ও অন্যায়পরায়ণতা উন্মোচন করার জন্য সত্য প্রকাশ করেন যাতে তাঁর ন্যায়পরায়ণ, ক্রুদ্ধ ও অনাক্রমণীয় চরিত্র সমগ্র মানবজাতির সামনে প্রদর্শিত হতে পারে। তাই তাঁকে উদাহরণ স্বরূপ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত, সবচেয়ে ঈশ্বর বিরোধী লোকদের নির্বাচন করতে হয়। শুধুমাত্র এটা করেই ঈশ্বরের কাজ সবচেয়ে ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারে। যেমন সবাই জানে, সমগ্র মানবজাতির মধ্যে চীনের লোকেরাই সবচেয়ে অনগ্রসর এবং শয়তান দ্বারা দূষিত। তারাই মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে অপবিত্র, হীনচেতা, ঈশ্বরকে অগ্রাহ্যকারী, এবং ঈশ্বর বিরোধী জাতি। তারা সমগ্র দুর্নীতিগ্রস্ত মানবজাতির আদিরূপ। চীনে বিচার কার্য করার মাধ্যমে, এবং চীনের লোকেদের দুর্নীতিগ্রস্ত স্বভাবকে কাজের লক্ষ্য করে, ঈশ্বর সবচেয়ে সুসম্বদ্ধ ও তীব্রভাবে মানবজাতিকে উন্মোচন করেন, এবং যে সত্য তিনি ব্যক্ত করেন তা সবচেয়ে পরিপুর্ণ এবং তার পবিত্র ও ন্যায়নিষ্ঠ স্বভাব প্রকাশে সক্ষম। ঈশ্বর চীনে তার মনোনীত লোকদের কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত সত্য মানবজাতিকে জয় ও পরিত্রাণ করতে ব্যবহার করেন এবং তাদেরকে তাঁর পবিত্র ও ন্যায়নিষ্ঠ চরিত্র উপলব্ধি করার সুযোগ দেন, যেন তারা সবাই প্রশংসা করার জন্য ঈশ্বরের সম্মুখে উপস্থিত হয়। এটিই ঈশ্বরের কাজের প্রজ্ঞা। যদি সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেরা ঈশ্বর দ্বারা পরিপূর্ণ হতে পারে, তাহলে বাকি মানবজাতিকে পূর্ণতা দান করা শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র, আর এতে শয়তানও পুরোপুরি পরাস্ত হবে। চীনে কাজ করার মাধ্যমে, ঈশ্বর সবচেয়ে যথাযথ সাক্ষ্য ও মহান গৌরব লাভ করবেন। কারন ইস্রায়েলের লোকেরা অথবা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের মত খ্রীষ্টান প্রধান দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত মানবজাতির যথার্থ উদাহরণ নয়, তাদেরকে নিয়ে ঈশ্বরের কাজ বা তাদের পূর্ণতা দান করার মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতিকে জয় এবং পরিত্রাণ করার চুড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত হবেনা। তাই ঈশ্বর বিচার কার্যের প্রয়োজন অনুসারে চীনের লোকেদের নিয়ে যে কাজ করছেন তা খুবই প্রতীকী ও অর্থপূর্ণ। ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য ও স্থান এবং প্রতিটি স্তরে এর চুড়ান্ত প্রভাব থেকে, আমরা দেখতে পাই যে ঈশ্বরের কাজ সত্যই বিচক্ষণ ও বিস্ময়কর”। এটা শুনে, আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম, “হ্যাঁ, ইস্রায়েল একটি ঈশ্বরের উপাসনাকারী জাতি এবং সেখানকার লোকজন মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত। যদি ঈশ্বর ইস্রায়েলে কাজ করার জন্য ফিরে আসতেন, তাহলে ঈশ্বরের বিজয় অর্জনের কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হতোনা। চীন সবচেয়ে অনগ্রসর ও ঈশ্বর বিরোধী একটি জাতি, তাই চীনে বিজয় লাভকরে, শুধু তাঁর জয়লাভের কাজই সম্পন্ন হয়না, তিনি তাঁর সর্বময় ক্ষমতা ও প্রজ্ঞা প্রকাশ করেন। আমি এখন দেখতে পাচ্ছি চীনে শেষ দিনগুলোতে ঈশ্বরের কাজ কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে! আমি ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে জানতাম না কিন্তু নিজের ধারনা ও কল্পনা অনুযায়ী ঈশ্বরের কাজের সীমা নির্দেশ করতাম- আমি কতটা অহংকারীই না ছিলাম”।

সিস্টার লী বলে চললেন: “ঈশ্বর তাঁর কাজ যেভাবে আর যেখানেই করুন না কেন, সেখানে সবসময় রহস্য ও সত্য খুঁজে পাওয়া যায়। প্রভুর ফিরে আসাকে আমরা কীভাবে স্বাগতম জানাবো তা প্রভু যীশু আমাদের বলেছেন: ‘মাঝরাতে সাড়া পড়ে গেল, “বর আসছে, বর আসছে, তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও”(মথি ২৫:৬)। ‘আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে(যোহন ১০:২৭)। ‘দেখ, আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে করাঘাত করছি। যে আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়, আমি ভেতরে তার কাছে যাব, তার সঙ্গে পানাহার করব, সেও আমার সঙ্গে পানাহার করবে(প্রকাশিত বাক্য ৩:২০)। তাই, ঈশ্বরের আগমনে স্বাগত জানানো ও তাঁর প্রকাশের অনুসন্ধান করার জন্য, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি দেখা যে সত্যের প্রকাশ ঘটেছে কিনা এবং ঈশ্বরের কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে কিনা। যেখানেই সত্য প্রকাশিত হোক না কেন, সেখানে ঈশ্বরের কন্ঠস্বরও শোনা যাবে, সেইসাথে তার উপস্থিতি ও কার্যও দেখা যাবে। এ হল অনিবার্য সত্য। যেমনটা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, ‘মানুষ কোনো বিষয়কে যত বেশি করে অসম্ভব হিসাবে বিবেচনা করে, ততই বেশি করে সেই সকল বিষয়ের ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ, ঈশ্বরের প্রজ্ঞা স্বর্গের চেয়েও সুউচ্চ, ঈশ্বরের ভাবনাগুলি মানুষের ভাবনার চেয়ে উঁচু, এবং ঈশ্বরের কার্য মানুষের ধারণাসমূহ এবং কল্পনাশক্তির সীমানা অতিক্রম করে। কোনো কিছু যতই অসম্ভব বলে মনে হয়, ততই তার মধ্যে সত্য খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে; কোনো কিছু যতই মানুষের ধারণা আর কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে যায়, ততই তার মধ্যে ঈশ্বরের ইচ্ছা নিহিত থাকে। এর কারণ হল, তিনি নিজেকে যেখানেই প্রকাশ করুন না কেন, ঈশ্বর তবু ঈশ্বরই থাকেন, এবং তাঁর অবস্থান অথবা তাঁর আবির্ভাবের উপায় অনুসারে তাঁর সারসত্য কখনোই পরিবর্তিত হয় না। তাঁর পদাঙ্ক যেখানেই থাকুক না কেন, ঈশ্বরের স্বভাব একই থাকে, এবং ঈশ্বরের পদাঙ্ক যেখানেই থাকুক না কেন, তিনি হলেন সমগ্র মানবজাতির ঈশ্বর, ঠিক যেমন প্রভু যীশু কেবলমাত্র ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর নন, তিনি এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকার সমস্ত মানুষের ঈশ্বর, এবং, উপরন্তু, তিনি হলেন সমগ্র বিশ্বজগতের একমাত্র ঈশ্বর। অতএব, এস, আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসন্ধানের চেষ্টা করি, এবং তাঁর উচ্চারণসমূহেরর মধ্যে তাঁর আবির্ভাবকে আবিষ্কার করি আর তাঁর পদক্ষেপের সাথে তাল মিলিয়ে চলি! ঈশ্বরই হলেন সত্য, পথ এবং জীবন। তাঁর বাক্য ও তাঁর আবির্ভাব একই সাথে বিদ্যমান হয় এবং তাঁর স্বভাব ও তাঁর পদাঙ্ক সকল সময়ে মানবজাতির কাছে উন্মুক্ত হয়ে রয়েছে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিশিষ্ট ১: ঈশ্বরের আবির্ভাব এক নতুন যুগের সূচনা করেছে)।” সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সম্পুর্ণভাবে আমার দ্বিধা দূর করে দিয়েছে। এগুলো ঈশ্বরের কাজ এবং উপস্থিতির বিষয়ে সব রহস্য উন্মোচন করে, আমার পূর্বের সব ভুল ধারনা পুরোপুরি ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি অনেক বছর ধরে প্রভুর আগমনে স্বাগত জানানোর অপেক্ষা করে আছি, কিন্তু কখনো এটা বুঝিনি যে আমি আমার কল্পনা ও বাইবেলের আক্ষরিক অর্থ অনুসারে ঈশ্বরের কাজ ও আগমনের সীমা নির্দেশ করছিলাম। আমি কতটা অজ্ঞ আর অন্ধই না ছিলাম! বৈঠক শেষ হওয়ার পর, আমি সিস্টার লী কে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রকাশ দ্বারা বাক্যের পার্থিব রূপ ধারন এর একটি প্রতিলিপি আমাকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ার মাধ্যমে, আমি দেখেছি কিভাবে তাঁর বাক্য বাইবেলের অনেক রহস্য উন্মোচন করে, যেমন মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের ছয় হাজার বছরের ব্যবস্থাপনা, বাইবেলের ভিতরের বিবৃতি ও সত্য, ঈশ্বরের নামের অর্থ, পার্থিব রূপ ধারনের রহস্য, কিভাবে ঈশ্বর সব ধরনের মানুষের জন্য গন্তব্য ও ফলাফল নির্ধারণ করেন, কিভাবে এই যুগের সমাপ্তি ঘটবে এবং কিভাবে খ্রীষ্টের রাজ্য এই পৃথিবীতে বাস্তবায়িত করা হবে, এবং আরও অনেক কিছু। ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই এই রহস্য ভেদ করতে পারেন না। ঈশ্বর যেসব বাক্য প্রকাশ করেন তা কর্তৃত্ব, শক্তি ও মর্যাদাপূর্ণ। সেগুলো প্রকৃতপক্ষেই ঈশ্বরের উচ্চারিত বাক্য। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই পুনরাগত প্রভু যীশু। আমি দ্বিধাহীনভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজকে গ্রহণ করলাম, আর আমি এখন মেষের পদচিহ্ন অনুসরণ করছি।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

প্রকৃত খ্রীষ্ট এবং ভন্ড খ্রীষ্টর মধ্যে আমি পার্থক্য করতে পারি

“ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই...

ত্রয়ীর ধাঁধার সমাধান

আমি ২০ বছর আগে এক বয়োজ্যেষ্ঠের দ্বারা খ্রীষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত হই। তিনি আমাকে বলেন যে ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুর মধ্যে প্রকৃত ঈশ্বর একজনই আছেন,...

ধর্মে সত্য অর্জন করা যায় না

আমি ছোটবেলায় প্রভুকে বিশ্বাস করার বিষয়ে আমার মা-বাবার পথই বেছে নিয়েছিলাম, আর আমি সাগ্রহে আমার বিশ্বাস মেনে চলছিলাম। আমি সক্রিয়ভাবে...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন