বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচার শুরু

18-02-2023

বিশ্বাস স্থাপন করার পর, কীভাবে প্রার্থনা করতে হয় এবং বাইবেল পড়তে হয় তা আমি শিখতে শুরু করি এবং প্রাত্যহিক জীবনে প্রভুর বাণী অনুসরণ করার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। পরবর্তীতে, আমি অন্তিম সময়ের বিচার সম্পর্কে অনলাইনে প্রচুর ভিডিও দেখি। তারা প্রকাশিত বাক্য থেকে এই ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করেন: “এর পরে আমি বিরাট এক শ্বেত সিংহাসনে সমাসীন একজন পুরুষকে দেখলাম। তাঁর সম্মুখ থেকেপৃথিবী ও আকাশমণ্ডল অন্তর্হিত হল। তাদের জন্য কোন স্থান হইল না। আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র ও মহৎ নির্বিশেষে সমস্ত মৃত ব্যক্তি সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তখন কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল। তারপর আর একটি গ্রন্থ অর্থাৎ জীবনপঞ্জী খোলা হল। ঐ গ্রন্থাবলীতে লিখিত মৃত ব্যক্তিদের কার্যকলাপের বিবরণ অনুযায়ী তাদের বিচার হল(প্রকাশিত বাক্য ২০:১১-১২)। অন্তিম সময়ে, প্রভু যীশু সাদা পোশাকে বিরাট শ্বেত সিংহাসনে বসবেন এবং সবাই তাঁর সামনে নতজানু হয়ে থাকবে। তিনি প্রতিটি ব্যক্তিকে তাদের জীবনের কাজ অনুসারে বিচার করবেন। যারা পাপ করবে তারা শাস্তি পেতে নরকে যাবে, এবং যারা নিষ্পাপ তাদেরকে ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রভুর বিচার কেমন হবে এই ভিডিওগুলি আমার মনে তার একটি পরিপূর্ণ চিত্র তৈরি করেছে। আমি বিশ্বাস করতাম যে ভিডিওতে যেভাবে বলা হয়েছে অন্তিম সময়ে সেভাবেই তার বিচার হবে। তাই আমি প্রভুর শিক্ষা অনুসরণ করার সংকল্প নিয়েছিলাম যাতে আমাদের বিচার করার সময় তিনি আমাকে ঈশ্বরের রাজ্যে স্বাগত জানান।

২০০৪ সালে, ইন্দোনেশিয়াতে একটি ভয়াবহ সুনামি হওয়ার ফলে ২০০,০০০-এরও বেশি লোক মারা যায়। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এটি ছিল ঈশ্বরের ক্রোধ এবং এর মাধ্যমে তিনি আমাদের সতর্ক করছিলেন যে, খুব শীঘ্রই বিচারের দিন আসবে। ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বাসের সমস্ত সময় ধরে আমি প্রভুর শিক্ষা অনুশীলন করার জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমি তার কথাগুলোকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারিনি বা অন্যদেরকে নিজের মতো ভালোবাসতে পারিনি। আমার শ্বাশুড়ি আমার ননদের কাছে আমার সমালোচনা করায় আমি রেগে যাই এবং এর জন্য তার প্রতি আমি ক্ষুব্ধ হই। আমি সম্পদের প্রতি লোভ করেছি এবং পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়েছি। বাইবেলে বলা আছে: “অতএব তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র(লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫)। ঈশ্বর পবিত্র এবং পাপীরা ঈশ্বরের ঈশ্বরের মুখশ্রী দর্শন করতে পারবে না। কিন্তু আমি সর্বদা পাপ করেই যাচ্ছিলামএবং স্বীকারও করছিলাম কিন্তু নিজেকে পাপ থেকে কিছুতেই মুক্ত রাখতে পারছিলাম না। প্রত্যাবর্তিত প্রভু কি আমার বিচার করে আমাকে নরকে পাঠাবেন? তাই আমি কিছু যাজককে জিজ্ঞাসা করলাম যে কীভাবে পাপ থেকে ফিরে আসা যায়। তারা বললেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে পাপস্বীকার করি এবং অনুতপ্ত হই, ততক্ষণ তিনি আমাদের পাপ ক্ষমা করবেন।” কিন্তু এতে আমার সমস্যার সমাধান হয়নি। আমি ঠিক আগের মতোই পাপ করে স্বীকার করতে থাকলাম। যতবার আমি পাপ করতাম, আমি ভয় পেতাম। এক এক করে আমাদের কর্মের বিচার করতে অন্তিম সময়ে প্রভু আসবেন। আমি যদি পাপ করতেই থাকি তাহলে আমার বিচার হবে এবং আমি দোষী সাব্যস্ত হব। তাহলে আমি কীভাবে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারব? আমি খুব উদ্বিগ্ন বোধ করলাম।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার স্বামী অনলাইনে সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করলেন। দিন দিন তাকে আরো বেশি খুশি লাগছিল এবং তার বিশ্বাস আরো বেড়ে যাচ্ছিল। এই বিষয়টি আমাকে তাদের সমাবেশের আলোচনার বিষয় নিয়ে আরো বেশি কৌতূহলী করে তুলেছিল। একদিন আমার স্বামী বললেন, “প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসাবে ফিরে এসেছেন। তিনি বিচারকার্য করছেন।” আমি হতবাক হয়ে গেলাম। যদি প্রভু যীশু ফিরে আসতেন, তাহলে তিনি আসমানে একটি বিরাট শ্বেত সিংহাসনে বসে থাকতেন, এবং এক এক করে আমাদের বিচার করতেন। এই দৃশ্যটি দেখা যায়নি, তাহলে কীভাবে অন্তিম সময়ের বিচারকার্য ইতিমধ্যেই শুরু হতে পারে? আমি আমার স্বামীকে এই কথাটা বললে সে শুধু হেসে বলল, “অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারের কাজ আমরা যেভাবে কল্পনা করি, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। ঈশ্বর মনুষ্যরূপে পৃথিবীতে এসেছেন এবং তিনি আমাদের বিচার করার জন্য সত্য প্রকাশ করছেন।” আমার সন্দেহ বেড়ে গেল এবং আমি ভাবলাম: কীভাবে প্রভু বাণী প্রচার করার মাধ্যমে আমাদের বিচার করতে পারেন? আমি কখনও কোন ধর্মযাজক বা বয়োজ্যেষ্ঠদের এই ধরনের কথা বলতে শুনিনি। আমার স্বামী সবেমাত্র অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ স্বীকার করেছিলেন, তাই তিনি ভালো করে বোঝাতে পারেননি, তাই তিনি আমাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার লোকদের সাথে দেখা করতে বলেন। আমি প্রথমে দেখা করতে না চাইলেও, পরে ভাবলাম, যেহেতু আমার স্বামী একজন চিন্তাশীল মানুষ এবং তার বিশ্বাস অকপট, আর তিনি বিশ্বাস করছিলেন যে প্রভু ফিরে এসেছেন এবং বিচার কাজ করছেন, তাই আমি ভাবলাম যে তার অবশ্যই একটি ভালো কারণ আছে। প্রভু সত্যিই ফিরে এসেছেন কি না তা জানতে আমি তাদের সমাবেশে যোগ দিতে রাজি হই।

সমাবেশে গির্জার একজন ভগিনী আমার প্রশ্নের উত্তর দেন: “প্রকাশিত বাক্যে উল্লেখিত বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচার ছিল প্যাটমোস দ্বীপের একটি সুন্দর দৃশ্য যা দেখে যোহন ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এভাবে বিচার করবেন। কিন্তু এটা ঈশ্বরের কাজের প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করে না। আমরা আমাদের ধারণা এবং কল্পনা ব্যবহার করে এই ভবিষ্যদ্বাণী বোঝার চেষ্টা করতে পারি না। বাইবেল বলে: ‘প্রথমে জেনে রাখ, শাস্ত্রে নবীদের যে সব উক্তি আছে, কোন ব্যক্তি তার নিজের কোন ব্যাখ্যা দিতে পারে না। কারণ ঐশীবাণী কখনও কোন মানুষের কল্পনা অনুযায়ী উচ্চারিত হয়নি। পবিত্র আত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মানুষেরাই ঈশ্বরের বাণী ঘোষণা করেছেন’ (২ পিতর ১:২০-২১)। ভবিষ্যদ্বাণীর ক্ষেত্রে আমাদের হৃদয়ে অবশ্যই ঈশ্বর-ভীতি থাকতে হবে। ভবিষ্যদ্বাণী ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে এবং সেগুলো হয় রহস্যময়, তাই শুধুমাত্র ঈশ্বরই সেগুলোর অর্থ জানেন। সেগুলি পূর্ণ হলেই কেবল মানুষ তা বুঝতে পারে। আমরা যদি সেগুলো আক্ষরিক অর্থে ব্যাখ্যা করি, তাহলে আমাদের ঈশ্বরের কাজকে সীমাবদ্ধ করার এবং ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করার সম্ভাবনা তৈরি হবে। ফরিশীরা শাস্ত্রের আক্ষরিক অর্থ মেনে চলে, তাদের কল্পনা অনুযায়ী, মশীহ একটি প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করবেন এবং ক্ষমতায় আসবেন। কিন্তু ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। প্রভু প্রাসাদে জন্ম গ্রহণ না করে বরং কাঠমিস্ত্রির পুত্র হিসাবে একটি গামলায় জন্মগ্রহণ করেন, এবং তিনি সত্যিই কখনো ক্ষমতায় আসেননি। ফরিশীরা একগুঁয়েভাবে তাদের ধারণাকে আঁকড়ে ধরেছিল এবং তারা প্রভুকে মশীহ হিসাবে স্বীকার করতে অস্বীকার করে। তারা দেখতে পেত যে তাঁর কথা এবং কাজের মধ্যে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ছিল এবং সেগুলো ছিল ঈশ্বর প্রদত্ত, তবুও তারা তাঁর প্রতিরোধ ও নিন্দা করে। তারা শেষ পর্যন্ত প্রভুকে ক্রুশবিদ্ধ করে। তারা ঈশ্বরের স্বভাবকে ক্ষুব্ধ করেছিল এবং তারা ঈশ্বর কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল এবং শাস্তি পেয়েছিল। আমাদেরকে ফরিশীদের কাছ থেকে শিখতে হবে এবং ভবিষ্যদ্বাণী বোঝার চেষ্টা করা যাবে না এবং নিজস্ব ধারণা দিয়ে ঈশ্বরের কাজের সীমানা নির্ধারণ করা যাবে না।”

আমি ভেবেছিলাম, এই সিস্টার যা বলছেন তা অত্যন্ত অর্থবোধক এবং বাইবেলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। ভবিষ্যদ্বাণী ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে এবং তাঁর চিন্তা মানুষের চেয়ে উচ্চতর। ঈশ্বরের জ্ঞানও মানুষের চেয়ে উচ্চতর। ভবিষ্যদ্বাণীগুলো কীভাবে পরিপূর্ণ হবে তার খুঁটিনাটি কেবলমাত্র ঈশ্বরই জানেন। কীভাবে মানুষ কখনো ঈশ্বরের কাজ অনুধাবন করতে পারে? আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি আমার নিজের ধারণা দিয়ে ঈশ্বরের কাজকে সীমাবদ্ধ করতে পারি না। আমি সিস্টারকে জিজ্ঞাসা করলাম, “আপনি সাক্ষ্য দেন যে ঈশ্বর অবতাররূপ ধারণ করেছেন এবং সত্য প্রকাশ ও বিচার কাজ করতে অন্তিম সময়ে পৃথিবীতে এসেছেন? এটার মানে কী? এটা কীভাবে বাইবেলের বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচারের সাথে সম্পর্কিত?”

সিস্টার বাইবেলের এই পদগুলো বের করে দেখালেন: “এর পর আমি মধ্যাকাশে উড্ডীন এক স্বর্গদূতকে দেখলাম। তাঁর কাছে রয়েছে শাশ্বত সুসমাচার, পৃথিবীর সর্বজাতি, গোষ্ঠী, সমাজ ও ভাষাভাষী লোকের কাছে প্রচারের জন্য। তিনি উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন, ‘ঈশ্বরকে সম্ভ্রম কর, তাঁর মর্যাদা স্বীকার কর, কারণ তাঁর বিচারের লগ্ন সমুপস্থিত’” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬-৭)। “পিতা কারও বিচার করেন না, বিচারের ভার সম্পূর্ণরূপে তিনি পুত্রকেই দান করেছেন(যোহন ৫:২২)। “মানবপুত্ররূপে বিচারের অধিকারও তিনি তাঁকে দিয়েছেন(যোহন ৫:২৭)। “যে আমার বাণী গ্রহণ না করে আমাকে প্রত্যাখ্যান করে তার বিচার হবে অন্যভাবে। শেষের দিনে আমার মুখনিঃসৃত সেই বাণীই হবে তার বিচারক(যোহন ১২:৪৮)। এবং এটি আছে পিতর ১-এ: “বিচারের কাল সমাগত, ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে শুরু(১ পিতর ৪:১৭)। তারপর তিনি সবাইকে বললেন: “এই পদগুলোতে বলা আছে ‘তাঁর কাছে রয়েছে শাশ্বত সুসমাচার, পৃথিবীর সর্বজাতি,’ ‘কারণ তাঁর বিচারের লগ্ন সমুপস্থিত’ এবং ‘ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে সুরু।’ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বর অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারের কাজ করতে পৃথিবীতে আসবেন। একজন আরও বলেন, ‘বিচারের ভার সম্পূর্ণরূপে তিনি পুত্রকেই দান করেছেন।’ ‘পুত্র’ এবং ‘মনুষ্য পুত্র’ মানে হল এমন কেউ যে মানুষের থেকে জন্ম নিয়েছে এবং স্বাভাবিক মানবিক গুণাবলীর অধিকারী। ঠিক প্রভু যীশুর মতো, তিনি বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ হলেও, তাঁর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরের আত্মা এবং একটি ঐশ্বরিক সারসত্তা। ঈশ্বরের আত্মা বা তাঁর আধ্যাত্মিক দেহকে মনুষ্যপুত্র বলা যায় না। এই পদগুলো এটাই প্রমাণ করে যে সত্য প্রকাশ করতে এবং বিচারের কাজ সম্পাদন করার জন্য ঈশ্বর অন্তিম সময়ে মনুষ্যপুত্রের অবতাররূপে আসবেন, এবং এই বিচার ঈশ্বরের গৃহ থেকেই শুরু হবে। এর অর্থ হল যারা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনে তাঁর সিংহাসনের সামনে উপস্থিত হবে, প্রথমে তাদেরই বিচার করা হবে।”

তারপর তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীর কিছু অনুচ্ছেদ পড়েন: “ঈশ্বর এক-এক করে মানুষের বিচার করেন না, এবং তিনি একজন-একজন করে মানুষের পরীক্ষাও নেন না; সেভাবে করলে তা বিচারকার্য হবে না। সমগ্র মানবজাতির ভ্রষ্টাচার কি একই নয়? সমগ্র মানবজাতির সারমর্ম কি একই নয়? যা বিচার করা হয় তা হল মানবজাতির ভ্রষ্ট সারমর্ম, মানুষের সেই সারমর্ম যা শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট, এবং মানুষের সমস্ত পাপ। ঈশ্বর মানুষের তুচ্ছ ও গুরুত্বহীন দোষের বিচার করেন না। বিচারকার্য হল প্রতিনিধিত্বমূলক কাজ, এবং তা কোনো এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য বিশেষভাবে নির্বাহ করা হয় না। প্রকারান্তরে, তা হল এমন এক কাজ যেখানে সমগ্র মানবজাতির বিচারের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একদল মানুষের বিচার করা হয়। ব্যক্তিগতভাবে একদল মানুষের উপরে তাঁর বিচারের কাজ নির্বাহ করার মাধ্যমে দেহরূপী ঈশ্বর তাঁর কাজকে ব্যবহার করেন সমস্ত মানবজাতির কাজের প্রতিনিধিত্ব করতে, তার পরে তা ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়। বিচারের কাজ কেমন তাও এর থেকে বোঝা যায়। ঈশ্বর কোনো নির্দিষ্ট ধরনের ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট দলের মানুষের বিচার করেন না, বরং তদপরিবর্তে সমগ্র মানবজাতির অধার্মিকতাকে বিচার করেন—উদাহরণস্বরূপ, মানুষের ঈশ্বর বিরোধিতা, বা মানুষের তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা, বা ঈশ্বরের কাজে মানুষের বিঘ্নপ্রদান, এবং এরকম আরো অনেক। যা বিচার করা হয় তা হলো মানুষের ঈশ্বর বিরোধিতার সারমর্ম, আর এই কাজই হচ্ছে অন্তিম সময়ের বিজয়কার্য। ঈশ্বরের অবতাররূপের যে কাজ ও বাক্য মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে তা হল অন্তিম সময় চলাকালীন মহান শুভ্র সিংহাসনের সামনে সম্পাদিত বিচারকার্য, যা সুদূর অতীতে মানুষ কল্পনা করেছিল। বর্তমানে অবতাররূপী ঈশ্বরের দ্বারা যে কার্য নির্বাহ হয়ে চলেছে তা অবিকল মহান শুভ্র সিংহাসনের সামনের বিচারই(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপী ঈশ্বরের পরিত্রাণই ভ্রষ্ট মানবজাতির অধিক প্রয়োজন)। “মানুষের অবসানকে স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যেই বর্তমানের বিজয়কার্য সম্পাদিত হয়। কেন বলা হয় যে, বর্তমানের শাস্তি এবং বিচার অন্তিম সময়ের মহান শুভ্র সিংহাসনের সামনে হওয়া বিচার? তুমি কি তা দেখতে পাও না? বিজয়কার্য কেন চূড়ান্ত পর্যায়ে? প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষের সমাপ্তি কেমন হবে, সেটা সঠিকভাবে প্রকাশ করার জন্যই কি তা করা হয় না? শাস্তি, বিচার ও বিজয়কার্য চলাকালীন, প্রত্যেককে তাদের প্রকৃত চেহারা দেখানোর এবং পরে তাদের প্রকার অনুসারে শ্রেণিবিভক্ত করার অনুমোদন দেওয়ার জন্যই কি তা করা হয় না? একে মানবজাতিকে জয় করার পরিবর্তে, এমন বলা ভালো যে, এর দ্বারা মানুষের প্রতিটি শ্রেণীর জন্য কী ধরনের সমাপ্তি অপেক্ষা করে রয়েছে, তা-ই দেখানো হচ্ছে। এ হল মানুষের পাপের বিচার করা এবং তারপরে মানুষের বিভিন্ন শ্রেণীকে প্রকাশ করে তারা ধার্মিক না মন্দ তা নির্ধারণ করার বিষয়। বিজয়কার্যের পরে, শিষ্টকে পুরস্কৃত করার এবং দুষ্টকে দণ্ড দেওয়ার সময় আসে। যেসব মানুষ সম্পূর্ণভাবে মান্য করে, অর্থাৎ যাদের সম্পূর্ণভাবে জয় করা হয়েছে—তাদের সমগ্র বিশ্বে ঈশ্বরের কাজ প্রসার করার পরবর্তী ধাপে স্থাপন করা হবে; যাদের জয় করা হয় নি, তাদের অন্ধকারে রেখে দেওয়া হবে এবং তারা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এইভাবে মানুষকে তাদের প্রকৃতি অনুসারে পৃথক করা হবে, যারা মন্দ কাজ করে তাদের মন্দদের সঙ্গে রাখা হবে, যাতে তারা আর সূর্যালোকের মুখ না দেখতে পায়, আর যারা ধার্মিক তাদের ভালোদের সঙ্গে রাখা হবে, যাতে তারা আলোকপ্রাপ্ত হতে পারে এবং সর্বদা আলোতেই বাঁচতে পারে(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য (১))। “অনেকে হয়তো আমি যা বলছি তার পরোয়া না করতে পারে, কিন্তু তাও আমি সকল তথাকথিত সন্ত যারা যীশুকে অনুসরণ করে তাদের বলতে চাই যে, তোমরা যখন তোমাদের নিজেদের চোখে যীশুকে স্বর্গ থেকে সাদা মেঘে চড়ে অবতীর্ণ হতে দেখবে, তা হবে ন্যায়পরায়ণতার সূর্যের জনসমক্ষে আবির্ভাব। হয়তো তোমার জন্য তা দারুণ উত্তেজনার এক মুহূর্ত হবে, তবু তোমার জানা উচিত যে, যে সময়ে তুমি স্বর্গ থেকে যীশুকে অবতীর্ণ হতে দেখবে, সেই একই সময়ে তুমিও শাস্তি ভোগ করার জন্য নরকে নিমজ্জিত হবে। সেই সময়েই ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটবে, এবং সেই সময়েই ঈশ্বর শিষ্টকে পুরস্কৃত করবেন এবং দুষ্টকে দণ্ড দেবেন। মানুষের কোনো প্রতীক দেখতে পাওয়ার আগেই ঈশ্বরের বিচার সম্পন্ন হয়ে যাবে, শুধুমাত্র সত্যের অভিব্যক্তিই থেকে যাবে। যারা প্রতীক না খুঁজে সত্যকে স্বীকার করে এবং ফলত যারা পরিশুদ্ধ, তারা ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে ফিরে যাবে এবং সৃষ্টিকর্তার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হবে। কেবলমাত্র যারা এই বিশ্বাসে অনড় থাকবে যে ‘যে যীশু সাদা মেঘে চড়ে আসে না, সে ভণ্ড খ্রীষ্ট’, তারা চিরকালীন দণ্ড ভোগ করবে, কারণ তারা কেবলমাত্র সেই যীশুকে বিশ্বাস করে যিনি প্রতীক প্রদর্শন করেন, কিন্তু যে যীশু কঠোর বিচার ঘোষণা করেন এবং প্রকৃত পথ ও জীবন উন্মুক্ত করেন, তাঁকে বিশ্বাস করে না। আর তাই এটাই হতে পারে যে যীশু যখন সাদা মেঘে চড়ে সবার সামনে প্রত্যাবর্তন করবেন, কেবল তখনই তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করবেন। তারা অত্যন্ত জেদী, নিজেদের ওপর অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, অত্যন্ত অহংকারী। এরকম অধঃপতিতেরা কীভাবে যীশুর দ্বারা পুরস্কৃত হতে পারে?(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন)

সিস্টার তখন সবাইকে বললেন, “ঈশ্বর আসলে অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারের কাজ আমাদের কল্পনা অনুযায়ী করবেন না, আমরা ভাবি, সবাই ঈশ্বরের সামনে নতজানু হয়ে থাকবে এবং তিনি এক এক করে আমাদের পাপ প্রকাশ করবেন, এবং তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন যে আমরা স্বর্গে যাব নাকি নরকে। ঈশ্বর যদি এইভাবে মানুষের বিচার করেন, তবে স্বর্গে প্রবেশের যোগ্য কাউকে পাওয়া যাবে না। আমরা শয়তানের দ্বারা অনেক বেশি কলুষিত এবং শয়তানী স্বভাব দ্বারা পরিপূর্ণ, তাই প্রভুর প্রতি একবার বিশ্বাস জন্মালে আমরা কিছু সৎ কর্ম করতে পারব, ভালো আচরণ করতে, পরম সত্য প্রচার করতে এবং প্রভুর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে পারব, কিন্তু আমাদের মধ্যে এখনও পাপপূর্ণ স্বভাব আছে। আমরা এখনও পাপ করে স্বীকার করি এবং আমরা প্রভুর শিক্ষাগুলি ধরে রাখতে পারি না। আমাদের চাওয়া পূরণ না হলে আমরা প্রভুকে দোষারোপ করি। আমরা নিজেদের স্বার্থ ও মর্যাদার জন্য মিথ্যা বলি এবং প্রতারণা করি। আমাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে আমরা মানুষকে ঘৃণা করি এবং তাদের উপর প্রতিশোধ নিই… বাইবেলে বলা হয়েছে, ‘পবিত্রতা ছাড়া কোন মানুষ প্রভুকে দেখতে পাবে না’ (হিব্রু ১২:১৪)। আমাদের মতো পাপী মানুষেরা কি স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে? ঈশ্বর যদি আমাদের বর্তমান আচরণের উপর ভিত্তি করে আমাদের বিচার করেন শাস্তি দেন, তাহলে কি আমরা সবাই শাস্তি পাব না এবং ধ্বংস হব না? মানবজাতিকে শেষবারের মতো পাপ থেকে বাঁচানোর জন্য, ঈশ্বর আবার মনুষ্যপুত্রের অবতাররূপে, অন্তিম সময়ে গোপনে আসবেন। তিনি হলেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি সত্য প্রকাশ করবেন এবং মানবজাতির বিচার ও তাদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য কাজ করবেন। প্রকাশিত বাক্যে এটিই হল বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচার। ঈশ্বর তাঁর বিচারের কাজটি করবেন প্রথমে মনুষ্যরূপে অবতীর্ণ হয়ে মানুষকে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করার জন্য সত্য প্রকাশ করে এবং সৎ পথে আসা মানুষদের একটি দল গঠন করার মাধ্যমে। তারপর তিনি বিশাল বিপর্যয় ডেকে আনবেন, ভালোকে পুরস্কৃত করবেন এবং দুষ্টদের শাস্তি দেবেন এবং এই মন্দ প্রাচীন যুগকে ধ্বংস করবেন। পরিশেষে, তিনি সকল মানুষের সামনে প্রকাশ্যে আবির্ভূত হবেন এবং তারপর তাঁর বিচারের কাজ শেষ হবে। মহা বিপর্যয় বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচার শুরু হওয়ার সময় বর্ষিত হয় না, বরং এটি শেষ হওয়ার সময় নামে। সেই সময়, ঈশ্বরের গোপন কাজের সময় যে সকল ভ্রষ্টদের কলুষিত স্বভাব ঈশ্বরের বাণীর বিচারের দ্বারা পরিশুদ্ধ হবে, তারা ঈশ্বরের সুরক্ষায় বিপর্যয় থেকে বাঁচবে এবং তিনি তাদের ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে যাবেন। যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে তাঁর গোপন কাজের সময় অস্বীকার করবে এবং নিন্দা করবে তারা অভূতপূর্ব বিপর্যয়ে ভেসে যাবে, কান্নাকাটি কর এবং ভয়ে কাঁপতে থাকার পরও তারা শাস্তি পাবে।”

তার এই বর্ণনা শুনে আমার হৃদয় আলোকিত হয়ে ওঠে। আমি বুঝতে পারলাম, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচারের কাজ তেমনটি ছিল না যেমনটি আমি ভাবতাম যে ঈশ্বর একটি বিরাট শ্বেত সিংহাসনে বসে এক এক করে মানুষের বিচার করছেন এবং তাদেরকে স্বর্গে বা নিচে নরকে পাঠাচ্ছেন। ঈশ্বরের বিচারের কাজ কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথমত, তিনি মানুষের পাপী স্বভাবকে নির্মূল করার জন্য, তাদেরকে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করার জন্য সত্য প্রকাশ করবেন, তাদেরকে অনুতপ্ত হয়ে নিজেদের পরিবর্তন করার সুযোগ দেবেন। এরপর তিনি সৎকর্মের প্রতিদান এবং মন্দের শাস্তি দিতে প্রকাশ্যে আবির্ভূত হবেন। বিরাট শ্বেত সিংহাসন নিয়ে আমার যা ধারণা ছিল সেটি ঈশ্বরের বিচার কার্যের অন্তিম দৃশ্যে দেখা যাবে। আমি যদি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করি, তবে অনেক দেরি হয়ে যাবে এবং আমি আমার পরিত্রাণের সুযোগ হারাবো। আমি বুঝতে পারি যে, আমার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজটিকে খতিয়ে দেখা উচিত। তাই আমি সিস্টারকে জিজ্ঞাসা করলাম, “ঈশ্বর কীভাবে মানুষের বিচার করবেন এবং তাঁর বাণীর মাধ্যমে মানুষকে পরিশুদ্ধ করবেন?”

তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী সম্বলিত একটি অনুচ্ছেদ পড়েন। “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে শেখানোর জন্য, মানুষের উপাদান প্রকাশ করার জন্য এবং মানুষের কথা ও কাজের বিশ্লেষণ করার জন্য বিভিন্ন সত্য ব্যবহার করেন। এই বাক্যে বিভিন্ন সত্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন মানুষের কর্তব্য, কীভাবে মানুষের ঈশ্বরকে মান্য করা উচিত, কীভাবে মানুষের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা উচিত, কীভাবে মানুষের স্বাভাবিক মানবতাসম্পন্ন জীবনযাপন করা উচিত, সেইসাথে থাকে ঈশ্বরের প্রজ্ঞা এবং স্বভাব ইত্যাদি বিষয়সমূহ। এই সমস্ত বাক্য মানুষের উপাদান এবং তার ভ্রষ্ট স্বভাবের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিশেষ করে, সেই সমস্ত বাক্য, যা অনাবৃত করে মানুষ কীভাবে ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তা আসলে এ সম্পর্কে কথা বলে যে কীভাবে মানুষ শয়তানের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছে এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাঁর বিচারকার্যের সময়, ঈশ্বর কেবলমাত্র কয়েকটি বাক্যের মাধ্যমে মানুষের প্রকৃতি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন না; তিনি দীর্ঘমেয়াদে তা অনাবৃত করেন, মোকাবিলা করেন এবং তাদের অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন করেন। অনাবৃতকরণ, মোকাবিলা এবং অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তনের এই সমস্ত ভিন্ন পদ্ধতি সাধারণ শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা যায় না, সেই সত্যের দ্বারাই প্রতিস্থাপিত করা যায় যার সম্পর্কে মানুষ একেবারেই অসচেতন। শুধুমাত্র এই ধরনের পদ্ধতিকেই বিচার বলা যেতে পারে; শুধুমাত্র এই ধরনের বিচারের মাধ্যমেই মানুষ ঈশ্বরের প্রতি অনুগত হতে পারে, তাঁর সম্বন্ধে দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হতে পারে, এবং ঈশ্বর সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে পারে। এই বিচারের কাজই প্রতিফলিত করে ঈশ্বরের আসল চেহারা সম্পর্কে মানুষের উপলব্ধি, এবং তার নিজের বিদ্রোহের সত্য। বিচারের কাজ মানুষকে ঈশ্বরের ইচ্ছা, তাঁর কাজের উদ্দেশ্য এবং তাঁর দুর্বোধ্য রহস্য সম্পর্কে অনেক বেশি করে বোঝার সুযোগ দেয়। এটি মানুষকে নিজের ভ্রষ্ট সারসত্য এবং সেই ভ্রষ্টাচরণের মূল চিনতে ও জানতে শেখায়, এবং সেইসাথে মানুষের কদর্যতা আবিষ্কার করতে শেখায়। এই সমস্ত প্রভাব বিচারের কাজের মাধ্যমে প্রতিভাত হয়, কারণ এই কাজের সারমর্ম হল ঈশ্বরের সত্য, পথ এবং জীবনকে তাঁর অনুগামীদের কাছে উন্মুক্ত করার কাজ। এই কাজ ঈশ্বরের বিচারের কাজ(বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্ট সত্যের দ্বারাই বিচারের কাজ করেন)

সে তর আলাপ-আলোচনা চালিয়ে গেল, বলল, “মানুষের বিচার ও মানুষকে পরিশুদ্ধ করার কাজ করার জন্য সত্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে, ঈশ্বর কেবল কিছু কথাই বলেননি বা কিছু অনুচ্ছেদই লেখেননি। বরং তিনি মানবজাতিকে শুদ্ধ ও উদ্ধার করার সকল সত্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের সত্য প্রকাশ করবেন যেমন শয়তান কীভাবে মানুষকে ভ্রষ্ট করে, কীভাবে ঈশ্বর মানুষকে উদ্ধার করবেন, ঈশ্বর কাকে আশীর্বাদ করবেন, কাকে ধ্বংস করবেন, কে উদ্ধার পাবে এবং রাজ্যে প্রবেশ করবে, এরকম আরও অনেক কিছু। তিনি বিশেষ করে মানুষের ঈশ্বর-বিরোধী শয়তানী স্বভাব প্রকাশ এবং বিশ্লেষণ করেন এবং আমাদের মধ্যে থাকা সমস্ত শয়তানোচিত স্বভাব এবং বিষ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে। আমরা প্রকাশিত বাক্যে এবং ঈশ্বরের বাণীর বিচারের মধ্যে শয়তান দ্বারা আমাদের নিজেদের ভ্রষ্ট হওয়ার সত্যটি দেখতে পাই। আমরা আমাদের পাপী, ঈশ্বর-বিরোধী স্বভাব এবং এর মূল কারণ জানতে পারি, এবং আমরা দেখতে পাই যে আমাদের শয়তানী স্বভাব আমাদের মধ্যে কতটা গভীরভাবে রয়েছে, যেমন অহংকার, প্রতারণা, মন্দ স্বভাব এবং সত্যকে অবজ্ঞা করা। উদাহরণ স্বরূপ, যদিও আমরা প্রভুর জন্য নিজেদের উৎসর্গ করতে পারি এবং অবিশ্বাসীদের দ্বারা উপহাস ও অপবাদ সহ্য করতে পারি, এবং আমরা প্রভুকে অস্বীকার করি না বা কারাগারে পাঠানোর পরেও ঈশ্বরের রাজ্য নিয়ে সুসমাচার প্রচার করা বন্ধ করি না, যখন দুর্যোগ আঘাত হানে এবং আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নেই বলে মনে হয়, তখন আমরা অভিযোগ করি এবং ঈশ্বরকে দোষারোপ করি, আমরা আমাদের করা প্রচেষ্টার জন্য আক্ষেপ করি, এবং আমরা এমনকি ঈশ্বরকে অস্বীকার ও তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি। আমরা দেখতে পাই যে, আমরা যে প্রচেষ্টা করেছি তা শুধুমাত্র ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও আশীর্বাদ এবং একটি মুকুট এবং পুরস্কার পাওয়ার জন্য। এ ধরনের প্রচেষ্টাগুলো অশুদ্ধ। আমরা কেবল ঈশ্বরের সাথে চুক্তি করছি এবং প্রভুকে ঠকাচ্ছি। ঠিক তখনই আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা শয়তানের দ্বারা কতটা কলুষিত, এবং আমরা ঈশ্বরকে সম্মান করি না এবং আমরা বিবেকহীন বা যুক্তিহীন। ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমে, আমরা ঈশ্বরের ধার্মিক, মহিমান্বিত স্বভাব সম্পর্কে জানতে শুরু করি। আমরা ঈশ্বরকে সম্মান করতে শুরু করি, সত্যিই নিজেদেরকে ঘৃণা করতে শুরু করি এবং দৈহিক ইচ্ছা ত্যাগ করে সত্য অনুশীলন করতে আগ্রহী হই। আমাদের ভ্রষ্ট স্বভাব পরিশুদ্ধ হতে শুরু করে এবং আমরা প্রকৃত মানব সদৃশ যাপন আরম্ভ করি। বছরের পর বছর ধরে ঈশ্বরের বাণীর দ্বারা যাদের বিচার হয়ে আসছে তাদের হৃদয়ের গভীর থেকে জানুন যে ঈশ্বরের বিচার প্রকৃতপক্ষে মানুষকে পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তন করতে পারে, এবং এটিই হল মানুষের জন্য ভালবাসা এবং পরিত্রাণ।”

আমি তার সাহচর্যে থেকে দেখেছি ঈশ্বরের বিচার কাজ কতটা বাস্তবসম্মত। ঈশ্বর আসলে তাঁর বাণী প্রকাশ করেন আমাদের বিচার করতে এবং আমাদের কলুষ ও পাপের মূল কারণ প্রকাশ করতে, আমাদের পরিবর্তনের পথ দেখাতে এবং আমাদেরকে পরিশুদ্ধ ও উদ্ধার করতে। আমি আগে যখনই পাপ করেছি, আমি প্রভুর কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি কিন্তু তারপর আমি আবার পাপ করেছি কারণ আমি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের বিচার গ্রহণ করিনি। অবশেষে আমি এখন পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার এবং পরিশুদ্ধ হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছি।

তারপর আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অনেক বাণী পড়েছি সেইসাথে ব্রাদার এবং সিস্টারদের দ্বারা লিখিত অনেক সাক্ষ্য পড়েছি। আমি নিশ্চিত হয়েছি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণীই চির সত্য এবং মানুষকে পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তন করতে পারে। আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রভু যীশু হিসাবে চিনতে পেরেছি এবং অন্তিম সময়ের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছি এবং কাজ গ্রহণ করেছি। আমি আগের কথা ভাবলাম, আমি কল্পনার মধ্যে বাস করতাম, বিরাট শ্বেত সিংহাসনের বিচারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি জানতাম না যে ঈশ্বর গোপনে ইতিমধ্যে এসেছেন সত্য প্রকাশ করতে এবং ঈশ্বরের গৃহ থেকে বিচারের কাজ শুরু করতে। আমি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের পরিত্রাণ প্রায় হারাতে বসেছিলাম! আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তিনি তাঁর করুণা ও অনুগ্রহের জন্য আমাকে তাঁর বাণী শুনিয়েছেন, যাতে আমি তাঁর সিংহাসনের সামনে উপস্থিত হতে পারি এবং খ্রীষ্টের আসনের সামনে বিচার পাওয়ার ও পরিশুদ্ধ হওয়ার সুযোগ পেতে পারি। ধন্যবাদ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতি!

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

প্রকৃত খ্রীষ্ট এবং ভন্ড খ্রীষ্টর মধ্যে আমি পার্থক্য করতে পারি

“ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই...

চীনে ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ

জ্যাং লান, দক্ষিণ কোরিয়া “আমি আমার মহিমা ইস্রায়েলে প্রদান করেও তা সরিয়ে নিয়েছি, ফলে সমস্ত ইস্রায়েলবাসীর পাশাপাশি সমগ্র মানবজাতি প্রাচ্যে...

অবশেষে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনলাম

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার অনেক রকমের কাজ ছিল। ভেনিজুয়েলার সুক্রে রাজ্য সরকারের পে-রোল সুপারভাইজার ছিলাম। আমাকে প্রতিদিন বেতনের সমস্যা আর...

Leave a Reply

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন