“উন্নীত হওয়া” মানে আসলে কী?
২,০০০ বছর আগে, প্রভু যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে তাঁর মুক্তির কাজ সম্পন্ন করার পর, তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তখন থেকে, সমস্ত বিশ্বাসীরা আকাঙ্ক্ষা করছে আমাদের ত্রাণকর্তার মেঘের উপর থেকে নেমে আসার জন্য তাঁর কাছে উন্নীত হবে বলে। বিশ্বাসীরা যে কোন মুহূর্তে উন্নীত হওয়ার আশা করছে, কিন্তু তারা তাদের সামনে বিপর্যয়গুলোকে উদ্ঘাটিত হতে দেখছে এবং এখনও তারা মেঘারূঢ় হয়ে প্রত্যাবর্তন করা প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারেনি। অনেকেই খুব হতাশ বোধ করছে। তারা ক্রমাগত ভাবছে প্রভু সত্যিই প্রত্যাবর্তন করেছেন কি না এবং কোনো বিশ্বাসীকে এখনও উন্নীত করা হয়েছে কি না, কিন্তু কেউই এখনও অবধি সেরকম কিছু দেখেনি। তারা যা দেখছে তা হল বিপর্যয়গুলো বেড়েই চলেছে, মহামারীগুলো আরও গুরুতর হয়ে উঠছে, এবং আরও বেশি মানুষ বিপর্যয়ে মারা যাচ্ছে, এমনকি কিছু যাজক এবং প্রবীণরাও। মানুষ ভীত বা এমনকি হয়ত প্রভুর দ্বারা পরিত্যক্ত বোধ করছে, তাদের মনে হচ্ছে তারা যে কোনও মুহূর্তে বিপর্যয়ে মারা যেতে পারে। তারা বুঝতে পারছেনা কেন প্রভু প্রত্যাবর্তন করেননি এবং তাদের উন্নীত করেননি এখন যখন বিপর্যয় শুরু হয়ে গিয়েছে। এটা তাদের কাছে বিস্ময়কর যে পূর্বের বজ্রালোক সাক্ষ্য দিচ্ছে যে প্রভু যীশু ইতিমধ্যেই প্রত্যাবর্তন করেছেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অবতার হিসাবে, সত্য ব্যক্ত করছেন এবং অন্তিম সময়ে বিচারকার্য করছেন। অনেকেই যারা সত্যের জন্য আকাঙ্ক্ষা করে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়ে, ঈশ্বরের কণ্ঠস্বরকে চিনতে পারে, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে যায়। তারা প্রতিদিন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করছে, সেগুলোর দ্বারা পুষ্ট এবং লালিতপালিত হচ্ছে, এবং মেষশাবকের বিবাহের ভোজে যোগদান করছে। তারাই প্রভুকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিপর্যয়ের আগে ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে উন্নীত হয়েছে। অনেক ধার্মিক মানুষ বিভ্রান্ত, এই ভেবে, “পূর্বের বজ্রালোককে ভুল হতে হবে প্রভুর প্রত্যাবর্তন হওয়া এবং তাদের উন্নীত হওয়া সম্পর্কে, কারণ বাইবেল বলে, ‘তারপরে অবশিষ্ট আমরা যারার জীবিত থাকব তারা অন্তরীক্ষে প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য তাঁদের সঙ্গে মেঘযোগে উন্নীত হব এবং চিরকাল প্রভুর কাছে থাকব’ (১ থিষলনিকীয় ৪:১৭)। প্রভু যদি প্রত্যাবর্তন করেন, তবে কেন আমাদের উপরে নিয়ে যাওয়া হল না? তাঁর কি মানুষকে আকাশে নিয়ে যাওয়ার কথা নয়? পূর্বের বজ্রালোক বিশ্বাসীরা স্পষ্টতই পৃথিবীতে আছে এখনও, তাহলে তারা কীভাবে উন্নীত হতে পারে?” তাদের কাছে এটার কোনও অর্থে হয় না। আচ্ছা, তাহলে উন্নীত হওয়া বলতে আসলে কি বোঝায়? অনেক মানুষ উন্নীত হওয়ার প্রকৃত অর্থ বোঝে না, কিন্তু মনে কর এর অর্থ হল আকাশে নিয়ে যাওয়া, তাই পৃথিবীতে এখনও যারা আছে তারা কেউ উন্নীত হয়নি। তারা খুব ভুল করে।
প্রভু প্রত্যাবর্তন করার এবং তাদের উন্নীত করার আশা করা সম্পূর্ণ সঠিক, যেমন প্রভু যীশু বিশ্বাসীদের বলেছিলেন তাঁকে স্বাগত জানাতে। কিন্তু পৌল বলেছিলেন “অন্তরীক্ষে প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য তাঁদের সঙ্গে মেঘযোগে উন্নীত হব।” এটা কি ঠিক? প্রভু যীশু কি কখনও বলেছিলেন যে যখন তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন, তিনি বিশ্বাসীদেরকে আকাশে নিয়ে যাবেন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য? তিনি বলেননি। পবিত্র আত্মার কি এই সম্পর্কে কোনও সাক্ষ্য আছে? নেই। পৌল কি এই বিষয়ে প্রভু যীশুর হয়ে কথা বলতে পারেন? প্রভু কি তা স্বীকার করেছিলেন? না। প্রভু বিশ্বাসীদের কীভাবে উন্নীত করবেন তা ঈশ্বরের দ্বারা স্থির করা হয়। প্রভু যীশু বলেছেন, “কিন্তু কেউ জানে না কবে সেইদিন বা সেই ক্ষণ আসবে। স্বর্গের দূতেরাও জানেন না, এমন কি পুত্রও জানেন না, কেবলমাত্র পিতাই জানেন” (মার্ক ১৩:৩২)। পৌল একজন মানুষ ছিলেন, শুধুমাত্র একজন প্রচারক, তাহলে তিনি কি করে জানবেন প্রভু বিশ্বাসীদের কীভাবে উন্নীত করবেন? পৌল যা বলেছিলেন তা সম্পূর্ণরূপে তাঁর নিজের কল্পনার উপর ভিত্তি করে এবং তিনি প্রভুর প্রতিনিধিত্ব করেননি। আমরা অবশ্যই এর উপর ভিত্তি করে প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারি না। আমাদের প্রভু যীশুর বাক্য অনুসরণ করতে হবে যে কীভাবে তিনি অন্তিম সময়ে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বিশ্বাসীদের উন্নীত করেন, কারণ তিনি খ্রীষ্ট, রাজ্যের প্রভু, এবং শুধুমাত্র তাঁর বাক্যেই সত্য এবং কর্তৃত্ব আছে। প্রভুকে তাঁর বাক্য অনুসারে স্বাগত জানানো ভুল হতে পারে না। প্রভু যীশু কি বলেছিলেন তা একবার দেখে নেওয়া যাক। প্রভু যীশু বলেছেন, “বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মনুষ্যপুত্রের আগমন হবে” (মথি ২৪:২৭)। “কাজেই তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকবে, কারণ মনুষ্যপুত্র এমন সময়ে আসবেন, যে সময়ে তাঁর আগমন প্রত্যাশা করবে না” (মথি ২৪:৪৪)। “মাঝরাতে সাড়া পড়ে গেল, ‘দেখো, বর এসেছে, তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও’” (মথি ২৫:৬)। “দেখ, আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে করাঘাত করছি। যে আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়, আমি ভেতরে তার কাছে যাব, তার সঙ্গে পানাহার করব, সেও আমার সঙ্গে পানাহার করবে” (প্রকাশিত বাক্য ৩:২০)। “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে” (যোহন ১০:২৭)। “শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন” (প্রকাশিত বাক্য, অধ্যায় ২, ৩)। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে তাঁর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীতে, প্রভু সর্বদা উল্লেখ করেছেন “মনুষ্যপুত্র”, “মানবপুত্রের আগমন হবে”, “মানবপুত্র আসবেন”, “আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়” এবং “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে”। এই মূল বিবৃতিগুলো আমাদের বলছে যে প্রভু মানবপুত্র হিসাবে দেহরূপে প্রত্যাবর্তন করবেন, পৃথিবীতে আসবেন কথা বলতে, আমাদের দরজায় কড়া নাড়তে। যারা প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনে দরজা খুলে দেয় তারা জ্ঞানী কুমারী যারা প্রভুকে স্বাগত জানায় এবং তাঁর ভোজে যোগ দেয়। তারা প্রভুর সামনে উন্নীত হয়। প্রভু যীশু কখনও বলেননি যে তিনি মানুষদের আকাশে নিয়ে যাবেন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য, বরং তিনি মানুষকে বলেছিলেন তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে, তাঁর সামনে যেতে, এবং তাঁর ভোজে যোগ দিতে। প্রভুকে স্বাগত জানাতে এবং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে, আমাদের তাঁর বাক্য অনুসরণ করতে হবে এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে। যখনই আমরা শুনতে পাব যে বর আসছে বলে কেউ চিৎকার করছে, আমাদের অবশ্যই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতে হবে, আমাদের নিজস্ব কল্পনার উপর ভিত্তি করে আকাশে নিয়ে যাওয়ার জন্য মূর্খের মতো অপেক্ষা করব না। সেটা করলে, আমরা কখনওই প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে এবং তাঁকে স্বাগত জানাতে পারব না। প্রভু মনুষ্যপুত্র হিসাবে প্রত্যাবর্তন করেন এবং আমাদের মধ্যে এসে, আমাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাই যদি আমরা শুধু আকাশে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকি, তাহলে আমরা প্রভুর থেকে ভিন্ন পথে আছি। তাই, মানুষের বিশ্বাস যে তাদের উন্নীত করা হবে প্রভুর সঙ্গে আকাশে সাক্ষাৎ করার জন্য একদমই অযৌক্তিক একটা বিশ্বাস। এটা সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের নিজস্ব বাক্যের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং এটা মানুষের ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাহলে উন্নীত হওয়া আসলে কি? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য আমাদের জন্য এটা স্পষ্ট করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “‘উন্নীত হওয়া’র অর্থ নিম্ন স্থান থেকে উচ্চ স্থানে আনীত হওয়া নয়, যা হয়তো মানুষ কল্পনা করে নিতে পারে; কিন্তু এটা একটা বিশাল ভ্রান্ত ধারণা। ‘উন্নীত হওয়া’ শব্দটি আমার পূর্বনির্ধারণ করা ও তারপরে নির্বাচন করাকে বোঝায়। যাদের আমি পূর্বনির্ধারিত ও নির্বাচিত করেছি তাদের সকলের প্রতিই এটা উদ্দিষ্ট। যারা উন্নীত হয়েছে তারা সকলেই হচ্ছে সেইসব ব্যক্তি যারা প্রথমজাত পুত্র বা পুত্রদের মর্যাদা অর্জন করেছে, বা যারা ঈশ্বরের লোক। এটা মানুষের পূর্বধারণার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি অসঙ্গতিপূর্ণ। ভবিষ্যতে আমার গৃহে যাদের অংশ থাকবে তারা সকলেই হচ্ছে সেইসব মানুষ যারা আমার সম্মুখে উন্নীত হয়েছে। এটা পরম সত্য, অপরিবর্তনীয়, এবং অকাট্য। এটা শয়তানের বিরুদ্ধে প্রতিআক্রমন। যাকেই আমি পূর্বনির্ধারিত করেছি সে আমার সম্মুখে উন্নীত হবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সূচনাকালে খ্রীষ্টের বাক্য, অধ্যায় ১০৪)। “যেহেতু আমরা ঈশ্বরের পদাঙ্ক অনুসন্ধান করছি, সেহেতু আমাদের উচিত ঈশ্বরের ইচ্ছার, তাঁর বাক্যের, তাঁর উচ্চারণের অন্বেষণ করা—কারণ যেখানেই ঈশ্বর-কথিত নতুন বাক্য রয়েছে, সেখানেই ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর রয়েছে, এবং যেখানেই ঈশ্বরের পদাঙ্ক রয়েছে, সেখানেই ঈশ্বরের দ্বারা সংঘটিত কর্মসমূহ বিদ্যমান। যেখানেই ঈশ্বরের অভিব্যক্তিসমূহের প্রকাশ ঘটে, সেখানেই ঈশ্বর আবির্ভূত হন, আর যেখানেই ঈশ্বর আবির্ভূত হন, সেখানেই সত্য, পথ, এবং জীবনের অস্তিত্ব বিদ্যমান হয়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, পরিশিষ্ট ১: ঈশ্বরের আবির্ভাব এক নতুন যুগের সূচনা করেছে)। এটা পুরো বিষয়টা সহজে বুঝিয়ে দেয়, তাই না? “উন্নীত” বলতে আমরা যা ভাবি তা নয়, নিচু থেকে উঁচু জায়গায় নিয়ে যাওয়া, পৃথিবী থেকে আকাশে নিয়ে যাওয়া, সেটা নয়। এটা অত অস্পষ্ট এবং অতিপ্রাকৃত নয়। “উন্নয়ন” ঘটে যখন ঈশ্বর পৃথিবীতে আসেন মনুষ্যপুত্র হিসাবে দেহধারণ করে কথা বলতে এবং কাজ করতে, আমরা তাঁর বাণী শুনি, সেটাকে সত্য এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর হিসাবে গণ্য করি, তারপর সমর্পণ এবং ঈশ্বরের কাজ গ্রহণ করতে পারি। আমরা ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করি, তাঁর দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সিঞ্চন ও লালনপালন হয়, এবং আমরা ঈশ্বরের পরিত্রাণ পাই। এটাই হল ঈশ্বরের সামনে উন্নীত হওয়া। প্রভু যীশু যখন তাঁর মুক্তির কাজ করতে এসেছিলেন, যারা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর হিসাবে তাঁর বাক্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তারপর তাঁকে গ্রহণ করেছে এবং অনুসরণ করেছে, পিতর, যোহন এবং অন্যান্য শিষ্যদের মত, সকলেই ঈশ্বরের সামনে উন্নীত হয়েছিল। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এসেছেন এবং সত্য ব্যক্ত করছেন, বিচারকার্য করছেন। সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ যারা সত্যকে ভালবাসে এবং ঈশ্বরের আবির্ভাবের জন্য আকাঙ্ক্ষা করে, এটা দেখে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য হল সত্য এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর, তাঁর বিচারকার্য গ্রহণ করেছে। তারা প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করে, সেগুলোর দ্বারা তাদের সিঞ্চন ও পুষ্টিপোষকতা হয়, এবং ঈশ্বরের বিচার এবং পরিশুদ্ধি অনুভব করবে। তারা হল সেই জ্ঞানী কুমারী যারা ঈশ্বরের সামনে উন্নীত হয়, এবং মেষশাবকের বিবাহের ভোজে অংশ নেয়, যা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করে: “দেখ, আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে করাঘাত করছি। যে আমার ডাক শুনে দুয়ার খুলে দেয়, আমি ভেতরে তার কাছে যাব, তার সঙ্গে পানাহার করব, সেও আমার সঙ্গে পানাহার করবে” (প্রকাশিত বাক্য ৩:২০)।
আমার মনে হয় এবার আমাদের কাছে উন্নীত হওয়ার অর্থ কী তা স্পষ্ট। প্রভুর সঙ্গে আকাশে সাক্ষাৎ করার কথা ভাবলে এখন মনে হয় না, সেটা অবাস্তব এবং মূর্খতা? প্রভু যীশু বহুবার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন “মানবপুত্রের আগমন হবে” মানুষকে বার বার সতর্ক করেন তাঁর কণ্ঠস্বর শোনার জন্য। তাহলে কেন মানুষ তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য তাঁর নিজস্ব বাক্যের পরিবর্তে মানুষের কথায় চলার উপর জোর দেয়? কেন তারা আঁকড়ে ধরে থাকে অযৌক্তিক বক্তব্য, “অন্তরীক্ষে প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য তাঁদের সঙ্গে মেঘযোগে উন্নীত হব”? এটা কী ধরনের সমস্যা? এটা কি আশীর্বাদের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী হওয়ার ইঙ্গিত নয়? এই কারণে নয় কি যে তারা চায় তাদের সরাসরি ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হোক বিপর্যয়গুলোর থেকে দূরে, যেখানে তারা আশীর্বাদ উপভোগ করবে? এটা নিয়ে ভাবা যাক। যাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনও ক্রমাগত পাপ করে চলেছে তাদের রাজ্যে উন্নীত করা হবে যখন প্রভু আসবেন? তাদের কি এর আশীর্বাদ উপভোগ করার অধিকার আছে? এটা সত্যি যে প্রভু আমাদের পাপ থেকে মুক্তি দিয়েছেন, কিন্তু আমরা অস্বীকার করতে পারি না যে আমরা এখনও আমাদের পাপী প্রকৃতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এবং আমরা পাপ ও ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করেই যাই। আমরা পাপের বন্ধন থেকে রেহাই পাইনি এবং পবিত্রতা অর্জন করিনি। ঈশ্বর পবিত্র এবং ধার্মিক। “পবিত্রতা ছাড়া কোন মানুষ প্রভুকে দেখতে পাবে না” (হিব্রু ১২:১৪)। তাহলে কি নোংরামি ও কলুষে পরিপূর্ণ মানুষ তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে? এটা কি মানুষের কল্পনা নয়, শুধুই খামখেয়ালি চিন্তা নয়? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “তুমি কেবল জানো যে অন্তিম সময়ে যীশু অবতীর্ণ হবেন, কিন্তু ঠিক কীভাবে তিনি অবতীর্ণ হবেন? তোমাদের মতো একজন পাপী, যাকে সদ্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যাকে ঈশ্বর এখনও পরিবর্তিত অথবা ত্রুটিমুক্ত করেন নি, সে কীভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারবে? তোমার ক্ষেত্রে, যে কিনা এখনও তার পুরনো সত্তাতেই রয়েছ, একথা সত্যি যে, যীশু তোমাকে উদ্ধার করেছিলেন এবং ঈশ্বরের পরিত্রাণের কারণে তোমাকে পাপী হিসাবে গণ্য করা হয় না, কিন্তু তাই বলে এর থেকে এমন প্রমাণ হয় না যে তুমি পাপী নও, এবং অশুদ্ধ নও। তোমাকে যদি পরিবর্তিত না করা হয়, তাহলে তুমি কীভাবে সাধুচরিত্র হবে? তোমার অন্তরে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে অশুদ্ধতা, স্বার্থপরতা এবং সঙ্কীর্ণতা, তা সত্ত্বেও তুমি যীশুর সঙ্গে অবতীর্ণ হওয়ার ইচ্ছা রাখ—এমন সৌভাগ্য তোমার কীভাবে হবে? ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তুমি একটি ধাপ হারিয়ে ফেলেছ: তোমাকে কেবল মুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু তোমাকে পরিবর্তিত করা হয় নি। তোমাকে যদি ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হয়, তাহলে স্বয়ং ঈশ্বরকেই ব্যক্তিগতভাবে তোমাকে পরিবর্তিত এবং পরিশোধিত করতে হবে; তুমি যদি শুধুমাত্রই মুক্ত হও, তাহলে তুমি পবিত্রতা অর্জনে অক্ষম হবে। এইভাবে তুমি ঈশ্বরের শুভ আশিসের ভাগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হবে, কারণ ঈশ্বরের মানুষকে পরিচালনার কার্যের একটি পর্যায়ক্রম থেকে তুমি বঞ্চিত হয়েছ, যা ছিল তোমায় নিখুঁত করে তোলার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই, সদ্য মুক্তি লাভ করা একজন পাপী হিসাবে, তুমি প্রত্যক্ষভাবে ঈশ্বরের উত্তরাধিকার লাভ করতে অক্ষম” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অভিধা ও পরিচয় সংক্রান্ত)। “যদিও যীশু মানুষের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সমস্ত মানবজাতির মুক্তি সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং মানুষের পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন; তিনি মানুষকে তার সমস্ত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে মুক্তি দেননি। শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য শুধু যীশুর পাপস্খালনের বলি হওয়া আর মানুষের পাপ বহন করার প্রয়োজন ছিল তাই নয়, বরং মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে তার শয়তানোচিত ভ্রষ্ট স্বভাব থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের আরো মহত্তর কর্মের প্রয়োজন ছিল। এবং তাই, এখন যখন মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, ঈশ্বর মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহরূপে ফিরে এসেছেন এবং শাস্তি ও বিচারের কাজ শুরু করেছেন। এই কাজ মানুষকে এক উচ্চতর জগতে নিয়ে এসেছে। যারা তাঁর রাজত্বের অধীনে আত্মসমর্পণ করে তারা উচ্চতর সত্য উপভোগ করবে এবং বৃহত্তর আশীর্বাদ লাভ করবে। তারা প্রকৃতপক্ষেই আলোতে বাস করবে, এবং তারা সত্য, পথ ও জীবন লাভ করবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা)। প্রভু যীশু মুক্তির কাজ করেছিলেন, যা ছিল শুধু মানুষকে মুক্তি দেওয়ার এবং আমাদের পাপ ক্ষমা করার জন্য, কিন্তু আমাদের পাপী প্রকৃতি রয়ে গেছে। আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে থাকি এবং সম্পূর্ণরূপে আমাদের উদ্ধার করা হয়নি। শুধুমাত্র প্রভু যীশুর দ্বারা আমাদের পাপ ক্ষমা করা যথেষ্ট নয়। আমাদের এখনও প্রভুকে স্বাগত জানাতে হবে এবং তাঁর সামনে উন্নীত হতে হবে, অন্তিম সময়ে তাঁর বিচার গ্রহণ করতে হবে, এবং তারপরে আমরা পাপ থেকে মুক্ত এবং সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার পেতে পারি, এমন মানুষ হই যারা ঈশ্বরের কাছে সমর্পিত ও তাঁকে ভয় পায়। তাহলে আমরা তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে পারব। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে আসেন সত্য ব্যক্ত করেন এবং বিচারকার্য করেন প্রভু যীশুর মুক্তির কাজের উপর ভিত্তি করে। এটা মানুষের পাপী প্রকৃতি এবং কলুষিত স্বভাব সম্পূর্ণরূপে সমাধান করার জন্য, যাতে আমরা পাপ এবং শয়তানের শক্তি থেকে মুক্ত হতে পারি এবং ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার পেতে পারি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আবির্ভূত হয়েছেন এবং অনেক সত্য ব্যক্ত করেছেন, আমাদের সেই সবকিছু বলেছেন যা প্রয়োজন কলুষিত মানুষদের পরিশুদ্ধ করার এবং সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করার জন্য। তিনি ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার রহস্য প্রকাশ করেছেন, যেমন মানবজাতি পরিচালনায় ঈশ্বরের উদ্দেশ্য, শয়তান কীভাবে মানবজাতিকে কলুষিত করে, কীভাবে ঈশ্বরের তিনটে স্তরের কাজ মানুষকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করে, তাঁর অন্তিম সময়ের বিচারকার্যের অর্থ, অবতারের এবং ঈশ্বরের নামের রহস্য, প্রতিটি ধরনের ব্যক্তির পরিণাম এবং গন্তব্য, এবং রাজ্যের সৌন্দর্য। এই কথাগুলো অবিশ্বাস্যভাবে চোখ খুলে দেয় এবং সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসযোগ্য। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বিচারও করেন এবং প্রকাশ করেন মানুষের পাপের মূল ও ঈশ্বরের প্রতি প্রতিরোধ, যা হল আমাদের শয়তানোচিত প্রকৃতি এবং স্বভাব। আমরা শয়তানের দ্বারা কতটা গভীরভাবে কলুষিত তার সত্যও তিনি প্রকাশ করেছেন, এবং কলুষ থেকে রেহাই ও সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার পাওয়ার পথ দেখান আমাদের। ঈশ্বরের মনোনীত মানুষরা প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করে এবং উপভোগ করে। তাঁর বাক্যের দ্বারা আমাদের বিচার করা, শাস্তি দেওয়া, মোকাবিলা করা এবং ছাঁটাই করা হয়, এবং আমাদের সব ধরনের পরীক্ষার অভিজ্ঞতা হয়, আমরা অনেক সত্য শিখি এবং আমাদের শয়তানোচিত প্রকৃতিকে যথাযথভাবে জানতে পারি। দেখি যে আমরা সর্বদা কলুষের মধ্যে বাস, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও তাঁর ঘৃণার উদ্রেক করছি, এবং আমরা যদি অনুতপ্ত ও পরিবর্তিত না হই তবে ঈশ্বরের দ্বারা আমরা নির্মূল এবং দণ্ডিত হব। আমরা ঈশ্বরের ধার্মিক, অপ্রতিরোধ্য স্বভাব অনুভব করি এবং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বিকাশ করি। আমাদের কলুষ ধীরে ধীরে পরিশুদ্ধ এবং পরিবর্তিত হয়, এবং আমরা অবশেষে পাপের বন্ধন থেকে রেহাই পেতে এবং ঈশ্বরের জন্য চমৎকার সাক্ষ্য দিতে পারি। বিপর্যয়ের আগে ঈশ্বর জয়ীদের একটা দল গঠন সম্পন্ন করেছেন, এবং বিপর্যয় আসছে। যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রতিরোধ করে, যারা শয়তানের অধিকৃত, তারা বিপর্যয়ে ধ্বংস হবে। যারা ঈশ্বরের বিচার অনুভব করে এবং পরিশুদ্ধ হয় তারা বিপর্যয়ের মধ্যে ঈশ্বরের সুরক্ষা পাবে, তাঁর রাজ্যে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে, এবং তাদের একটা সুন্দর গন্তব্য হবে। এটাই হল ঈশ্বরের রাজত্বে যথাযথভাবে উন্নীত হওয়া। এই জয়ীরা যারা সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বর দ্বারা রক্ষা পেয়েছে এবং সম্পূর্ণহয়েছে তারা ঈশ্বরের বাণী অনুশীলন করে এবং পৃথিবীতে তাঁর ইচ্ছা পালন করে। তারা ঈশ্বরের রাজ্যের মানুষ। এইভাবে পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজ্য বাস্তবায়িত করা হয়, এবং এটা প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী পূরণ করে: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক। তোমার রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হোক, তোমার ইচ্ছা স্বর্গে যেমন এই পৃথিবীতেও তেমনি পালিত হোক” (মথি ৬:৯-১০)। “আমি দেখলাম, পবিত্র নগরী নূতন জেরুশালেম স্বর্গ থেকে, ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। বরের সঙ্গে মিলনোন্মুখ বধূর মত তার প্রস্তুতি ও সাজসজ্জা। তখন আমি সিংহাসন থেকে উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত এই বাণী শুনলাম: দেখ, ঈশ্বরের উপাসনালয় মানুষের মাঝে, তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন, তারা হবে তাঁর প্রজা। ঈশ্বর স্বয়ং তাদের সঙ্গে থাকবেন, হবেন তাদের ঈশ্বর। তিনি মুছিয়ে দেবেন অশ্রুধারা। থাকবে না আর মৃত্যুর অস্তিত্ব। শোক, আর্তনাদ, আর থাকবে না। পুরাতন সব কিছুই হয়েছে বিলীন” (প্রকাশিত বাক্য ২১:২-৪)। “জগতের রাজা এখন আমাদের প্রভুর অধীন, তাঁর অভিষিক্তের পদানত। রাজত্ব করবেন তিনি যুগে যুগে, চিরকাল” (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫)। ঠিক যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য বলে, “বিজয়কার্য একবার সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, মানুষকে এক সুন্দর পৃথিবীতে আনা হবে। এই জীবন অবশ্য তখনও পৃথিবীতেই থাকবে, কিন্তু এখনকার মানুষের জীবনের থেকে তা পুরোপুরি আলাদা হবে। সমগ্র মানবজাতি বিজিত হওয়ার পরে মানবজাতি যে জীবন লাভ করবে এটাই সেই জীবন, এটা পৃথিবীতে মানুষের জন্য এক নতুন সূচনা হবে, আর মানবজাতির এই ধরনের জীবনলাভই প্রমাণ করবে যে তারা এক সুন্দর এবং নতুন ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে। এটাই হবে পৃথিবীতে ঈশ্বর ও মানুষের জীবনের সূত্রপাত। এইরকম সুন্দর জীবনের ভিত্তি অবশ্যই এমন হতে হবে, যেখানে মানুষকে শোধন ও জয় করার পর, সে সৃষ্টিকর্তার সামনে নিজেকে সমর্পণ করে। আর তাই, মানবজাতি বিস্ময়কর গন্তব্যে প্রবেশের আগে এই বিজয়কার্যই হল ঈশ্বরের কাজের অন্তিম পর্যায়। এই ধরনের জীবন হল পৃথিবীতে মানুষের ভবিষ্যতের জীবন, পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর জীবন, যে রকম জীবনের জন্য মানুষ আকাঙ্ক্ষা করে, যে ধরনের জীবন এই বিশ্বের ইতিহাসে মানুষ আগে কখনো অর্জন করে নি। এটাই ৬,০০০ বছরের ব্যবস্থাপনার কাজের অন্তিম ফলাফল; এটাই মানুষ সবচেয়ে বেশি কামনা করে, আর এটা মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিও বটে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, মানুষের স্বাভাবিক জীবন পুনরুদ্ধার করা এবং তাকে এক বিস্ময়কর গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া)।
“যখন মানুষকে তাদের আদি স্বরূপে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হবে, এবং যখন তারা তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারবে, নিজেদের সমুচিত স্থান বজায় রাখতে পারবে, এবং ঈশ্বরের সকল আয়োজনের প্রতি সমর্পিত হতে পারবে, তখন ঈশ্বর পৃথিবীতে এমন এক দল মানুষকে পাবেন যারা তাঁর উপাসনা করে, এবংসেইসঙ্গে তিনি পৃথিবীতে এমন একটি রাজত্বও প্রতিষ্ঠা করে ফেলবেন যে রাজত্ব তাঁকে উপাসনা করে। পৃথিবীতে তাঁর চিরন্তন বিজয়লাভ ঘটবে এবং যারা তাঁর বিরোধিতা করে তারা সকলেই অনন্তকালের জন্য বিনষ্ট হবে। এর থেকে মানবজাতি সৃষ্টির পিছনে নিহিত তাঁর আসল উদ্দেশ্যটিকে পুনরুদ্ধার হবে; তা সমস্তকিছুর সৃষ্টির জন্যে তাঁর অভিপ্রায়কে পুনরুদ্ধার করবে, এবং পৃথিবীতে, সমস্তকিছুর মধ্যে, এবং তাঁর শত্রুদের মধ্যে তাঁর কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবে। এগুলোই হবে তাঁর সার্বিক বিজয়ের প্রতীকস্বরূপ। তারপর থেকে, মানবজাতি বিশ্রামে প্রবেশ করবে, এবং এমন এক জীবনযাপন আরম্ভ করবে যা সঠিক পথে রয়েছে। ঈশ্বরও মানবজাতির সঙ্গে অনন্ত বিশ্রামে প্রবেশ করবেন, এবং নিজের ও মানুষের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া এক অনন্ত জীবনের সূচনা ঘটাবেন। পৃথিবীর কলুষ এবং আনুগত্যহীনতা অদৃশ্য হয়ে যাবে, এবং সমস্ত অপেক্ষার অবসান হবে, এবং এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে এমন যা কিছু রয়েছে সে সকলের অস্তিত্ব মুছে যাবে। অবশিষ্ট থাকবেন কেবলমাত্র ঈশ্বর এবং থাকবে সেই সকল মানুষ যাদের জন্য তিনি পরিত্রাণ নিয়ে এসেছেন; অবশিষ্ট থাকবে কেবলমাত্র তাঁর সৃষ্টি” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর এবং মানুষ একসাথে বিশ্রামে প্রবেশ করবে)।
এই মুহুর্তে, উন্নীত হওয়া আসলে কী, সে সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ উপলব্ধি তৈরি হয়ে গিয়েছে। উন্নীত হওয়া হল প্রধানত ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শোনা, তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করা, এবং অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের বিচারকার্য গ্রহণ করে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাওয়া। বিপর্যয়গুলির আগে ধর্মীয় বিশ্বের উন্নীত হওয়ার অভিজ্ঞতা কেন হয়নি? প্রধানত কারণ তারা সত্যের সন্ধান করে না বা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শোনে না, বরং জোর দেয় তাদের ধারণা এবং আক্ষরিক বাইবেলের স্তবকগুলোর উপর। তারা কেবলই মানুষের কথা শোনে, কিন্তু প্রভুকে তাঁর বাক্য অনুসারে স্বাগত জানায় না। এই কারণে তারা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। মানুষ শুধু চায় মেঘারূঢ় হয়ে প্রভুর আসার জন্য অপেক্ষা করতে, এবং অবিলম্বে রূপ পরিবর্তন করে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য করতে আকাশে নিয়ে যেতে, তাই তারা শুধু নিষ্ক্রিয়ভাবে অপেক্ষা করে নিজেদের প্রস্তুত না করে বা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শোনার চেষ্টা না করে। তাদের হৃদয় অসাড়। কি করে তারা এই ভাবে প্রভুকে স্বাগত জানাতে পারে? তারা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে, কাঁদবে এবং দাঁতে দাঁত ঘষবে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এখন তিন দশক ধরে তাঁর বিচারকার্য করছেন। বিপর্যয়ের আগে তিনি জয়ীদের একটা দল গঠন সম্পন্ন করেছেন, এবং এখন বিপর্যয় আসছে। যারা ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনে এবং বিপর্যয়ের মধ্যে প্রভুকে স্বাগত জানায় তাদের এখনও উন্নীত হওয়ার একটা সুযোগ আছে। এটাকে বলে বিপর্যয়ের মধ্যেও উন্নীত হওয়া, আর তাদের রেখে দেওয়ার একটা আশা আছে। যারা তাদের ধারণা অনুসারে চলে, যে প্রভুকে মেঘারূঢ় হয়ে আসতে হবে, তারা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে এবং তাদের রক্ষা করা যাবে না। বিপর্যয় শেষ হয়ে গেলে, ঈশ্বর প্রকাশ্যে সমস্ত জাতি ও সমস্ত লোকের কাছে আবির্ভূত হবেন, প্রকাশিত বাক্য ১:৭-এর ভবিষ্যদ্বাণী পূরণ করে, “দেখ, মেঘবাহনে তিনি আসিতেছেন! প্রতিটি নয়ন তাঁকে দেখবে, দেখবে তারাও যারা তাঁকে বিদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর সমস্ত মানবগোষ্ঠী তাঁর জন্য বিলাপ করবে।” সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের কয়েকটা অংশ রয়েছে যা দিয়ে আমরা শেষ করতে পারি। “অনেকে হয়তো আমি যা বলছি তার পরোয়া না করতে পারে, কিন্তু তাও আমি সকল তথাকথিত সন্ত যারা যীশুকে অনুসরণ করে তাদের বলতে চাই যে, তোমরা যখন তোমাদের নিজেদের চোখে যীশুকে স্বর্গ থেকে সাদা মেঘে চড়ে অবতীর্ণ হতে দেখবে, তা হবে ন্যায়পরায়ণতার সূর্যের জনসমক্ষে আবির্ভাব। হয়তো তোমার জন্য তা দারুণ উত্তেজনার এক মুহূর্ত হবে, তবু তোমার জানা উচিত যে, যে সময়ে তুমি স্বর্গ থেকে যীশুকে অবতীর্ণ হতে দেখবে, সেই একই সময়ে তুমিও শাস্তি ভোগ করার জন্য নরকে নিমজ্জিত হবে। সেই সময়েই ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটবে, এবং সেই সময়েই ঈশ্বর শিষ্টকে পুরস্কৃত করবেন এবং দুষ্টকে দণ্ড দেবেন। মানুষের কোনো প্রতীক দেখতে পাওয়ার আগেই ঈশ্বরের বিচার সম্পন্ন হয়ে যাবে, শুধুমাত্র সত্যের অভিব্যক্তিই থেকে যাবে। যারা প্রতীক না খুঁজে সত্যকে স্বীকার করে এবং ফলত যারা পরিশুদ্ধ, তারা ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে ফিরে যাবে এবং সৃষ্টিকর্তার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হবে। কেবলমাত্র যারা এই বিশ্বাসে অনড় থাকবে যে ‘যে যীশু সাদা মেঘে চড়ে আসে না, সে ভণ্ড খ্রীষ্ট’, তারা চিরকালীন দণ্ড ভোগ করবে, কারণ তারা কেবলমাত্র সেই যীশুকে বিশ্বাস করে যিনি প্রতীক প্রদর্শন করেন, কিন্তু সেই যীশুকে স্বীকার করে না যিনি কঠোর রায় ঘোষণা করেন এবং প্রকৃত পথ ও জীবনকে প্রকাশিত করেন। আর তাই এটাই হতে পারে যে যীশু যখন সাদা মেঘে চড়ে সবার সামনে প্রত্যাবর্তন করবেন, কেবল তখনই তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করবেন। তারা অত্যন্ত জেদী, নিজেদের ওপর অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, অত্যন্ত অহংকারী। এরকম অধঃপতিতেরা কীভাবে যীশুর দ্বারা পুরস্কৃত হতে পারে? যারা সত্য স্বীকার করতে সক্ষম, তাদের জন্য যীশুর প্রত্যাবর্তন এক মহান পরিত্রাণ, কিন্তু যারা সত্যকে স্বীকার করতে অক্ষম, তাদের জন্য এটা তিরস্কারের প্রতীক। তোমাদের নিজেদের পথ নিজেদের বেছে নেওয়া উচিত এবং পবিত্র আত্মার ধর্মনিন্দা বা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত না। তোমাদের অজ্ঞ এবং অহংকারী মানুষ হওয়া উচিত না, এমন একজন মানুষ হওয়া উচিত যে পবিত্র আত্মার নির্দেশিকা মান্য করে এবং সত্যকে খোঁজার কামনা করে; একমাত্র এই উপায়েই তোমরা লাভবান হবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যতক্ষণে তুমি যীশুর আধ্যাত্মিক দেহ প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণে ঈশ্বর স্বর্গ ও পৃথিবীকে নতুন করে তৈরি করে ফেলবেন)।
“অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট যে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দিয়েছেন তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।