এ কথা কি সত্যি যে ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে?
পরিত্রাতা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আবির্ভূত হয়েছেন এবং অন্তিম সময়ে কাজ করছেন এবং তিনি লক্ষ লক্ষ সত্য প্রকাশ করেছেন। তিনি মানবজাতিকে সম্পূর্ণ রূপে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করতে ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু করে বিচারের কাজ করছেন। বাক্য দেহে আবির্ভূত হল, তাঁর বাক্যের একটি সংকলন অনলাইন পাওয়া যাচ্ছে। এ শুধু ধর্মীয় বিশ্বকেই নয় বরং সারা বিশ্বকেই আলোড়িত করেছে। প্রতিটি দেশ ও বর্গ থেকেই, যারা সত্যকে ভালোবাসে ও ঈশ্বরের আবির্ভাবের আকাঙ্খা করে, তাদের কেউ কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য পড়েছে, এবং দেখেছে যে তা সত্য ও পবিত্র আত্মার উচ্চারণ। তারা ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনেছে ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রত্যাবর্তিত প্রভু যীশু বলে চিনতে পেরেছে, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে এসেছে। ঠিক যেমন প্রভু যীশু বলেছেন, “আমার নিজের মেষপাল আমার ডাক শোনে, তাদের আমি চিনি এবং তারা আমাকে অনুসরণ করে” (যোহন ১০:২৭)। কিন্তু যদিও ধর্মীয় জগতের অনেকে স্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সত্য, তা শক্তিশালী ও কর্তৃত্বপূর্ণ, যেহেতু তাঁর বাক্য বাইবেলে মুদ্রিত নেই, তারা তাকে মান্যতা দেয় না। তারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে, এবং তার বাইরে এর কোনোটিই নেই। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য হল সত্য, কিন্তু যেহেতু সেগুলি বাইবেলে নেই, সেগুলি কী করে ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য হতে পারে? এবং কিছু মানুষ, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সদস্যদের বাক্য দেহে আবির্ভূত হল পড়তে দেখে, বাইবেলের না পড়ে, এ আচরণের নিন্দা করে, এই বলে যে বাইবেল থেকে বিচ্যূতি হল ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, এ হল ধর্মদ্রোহিতা। এর থেকে আমার মনে পড়ে যায় ইহুদি ফরিশীদের, যারা প্রভু যীশুর বিচার, নিন্দা ও তাঁর বিরূদ্ধে লড়াই করেছিল কারণ তাঁর কাজ ও বাক্য শাস্ত্রকে অতিক্রম করেছিল এবং তাঁকে মশীহ ডাকা হত না। তারা এমনকী তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল, এবং এর পরিণতি স্বরূপ ঈশ্বরের দ্বারা দণ্ডিত ও অভিশপ্ত হয় ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের সর্বনাশ ঘটায়। এ এক চিন্তার উদ্রেককারী শিক্ষা! আজ অনেক ধর্মীয় মানুষ জোর দিয়ে বলে যে ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য সবই বাইবেলে আছে ও তার বাইরে কিছুই থাকতে পারে না। তারা, এই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ ও বাক্যকে অস্বীকার ও নিন্দা করে। কেউ কেউ স্পষ্টত স্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সত্য, কিন্তু তবু তার পর্যালোচনা করে না, এবং ফলত তারা বিপর্যয়ের পূর্বে প্রভুকে স্বাগত জানানোর সুযোগ হারাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে, তারা বিপর্যয়কবলিত হয়েছে। “ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে, ও তার বাইরে কিছুই থাকতে পারে না।” এই ধারণা অগণিত মানুষকে প্রভুকে স্বাগত জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে, অকথ্য ক্ষতি করেছে। এই ধারণায় বস্তুত কী ভুল আছে? আমি এ বিষয়ে যা জানি তা ভাগ করে নেব।
এ বিষয়ে প্রবেশের আগে স্পষ্ট করে নেওয়া যাক বাইবেল কোথা থেকে এসেছে। এটি দুটি অংশে রচিত: পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম। ইহুদিদের যিহোবার প্রতি আস্থা আছে এবং তারা পুরাতন নিয়মের শাস্ত্রটি ব্যবহার করে আবার খ্রীষ্টানরা প্রভু যীশুতে বিশ্বাসী বলে নতুন নিয়ম ব্যবহার করে। পুরাতন ও নতুন নিয়ম উভয়েই ঈশ্বর তাঁর কাজ শেষ করার শত শত বৎসর পর মানুষের দ্বারা সংকলিত। বাইবেল আকাশ থেকে পড়েনি, এবং ঈশ্বর অবশ্যই তা নিজে লিখে আমাদের হাতে তুলে দেননি। এটি সেই আমলের ধর্মীয় নেতাদের যৌথ উদ্যোগে সংকলিত হয়েছিল। তারা অবশ্যই পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি ও পথনির্দেশ পেয়েছিল—কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু বাইবেল মানুষের দ্বারা সংকলিত, কোনোভাবেই পুরাতন নিয়মে নতুন নিয়মের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্তি সম্ভব নয়, এবং ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজের কথা নতুন নিয়মে থাকতে পারে না, কারণ মানুষ ভবিষ্যৎ দেখতে পায় না। যেসব পদ ও পুস্তক বাইবেলে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে সেগুলি নির্বাচিত, এবং নবীদের ও প্রেরিত-শিষ্যদের সব লেখাই বাইবেলে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বেশ কিছু বাদ দেওয়া বা মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো সমস্যা নেই। যেহেতু এটি মানুষের দ্বারা সংকলিত হয়েছিল, কিছু নির্বাচন, নিষ্কাশন এবং বাদ থাকা স্বাভাবিক। মানুষ যেখানে ভুল করে তা হল ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে এ বিষয়ে জোর দেওয়া, যেন সেই যুগগুলিতে ঈশ্বর শুধু এ সবই বলেছেন ও করেছেন। এটা কী ধরণের সমস্যা? নবীদের কিছু পুস্তক পুরাতন নিয়মে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, এবং এমন কিছু পুস্তক যা আমরা জানি, যেমন হনোক ও ইষ্রার পুস্তক বাইবেলে নেই। এবং আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে অন্য অনেক প্রচারকেরও অবশ্যই এমন পুস্তক আছে যা নতুন নিয়মে নেই, বলাই বাহুল্য, প্রভু যীশু তিন বছর ধরে প্রচার করেছেন এবং নিশ্চয়ই অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু বাইবেলে তার যৎসামান্যই আছে। যেমন প্রচারক যোহন বলেছে, “এ ছাড়াও যীশু আরও অনেক কাজ করেছিলেন। সে সব যদি সবিস্তারে লেখা হত, তাহলে আমার মনে হয়, এত বই লেখা হত যে সারা পৃথিবীতে তার স্থান সঙ্কুলান হত না” (যোহন ২১:২৫)। স্পষ্টতই বাইবেলে বর্ণিত ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য নিতান্তই সীমিত! আমরা সন্দেহাতীতভাবে জানি যে না পুরাতন, না নতুন নিয়মে ঈশ্বরের সম্পূর্ণ কাজ ও বাক্য অন্তর্ভুক্ত আছে, যা সেই যুগে ঘটেছিল। এ সত্য সবাই স্বীকার করবে। ধর্মীয় জগতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা বাইবেল বা কীভাবে তা সংকলিত হয় তা বোঝে না। তারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে এবং বাইবেল বহির্ভূত সবকিছু অস্বীকার ও নিন্দা করে। এ কি ঐতিহাসিক তথ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ? এই বক্তব্য কি ঈশ্বরের কাজের বিচার নয়? তাঁকে প্রতিরোধ করা নয়? বাইবেল ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সংকলিত এবং মানুষের দ্বারা সংকলিত, তাহলে মানুষ কী করে ঈশ্বরের পরবর্তী পর্যায়ের কাজ সময়ের আগেই বাইবেলে লিখবে? তা অসম্ভব কারণ মানুষের ভবিষ্যদ্দৃষ্টি নেই। যারা পুরাতন নিয়ম সংকলন করে তারা প্রভু যীশুর সময়ে জীবিত ছিল না এবং তারা প্রভু যীশুর কাজ প্রত্যক্ষ করেনি। কী করে তারা তাঁর কাজ ও বাক্য, এবং প্রেরিত-শিষ্যদের পুস্তক সময়ের আগেই পুরাতন নিয়মে অন্তর্ভুক্ত করবে? এমনও হওয়া অসম্ভব যে যারা নতুন নিয়ম সংকলন করেছিল তারা ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য যা অন্তিম সময়ের, যা দু-হাজার বছর পরের তা আগে থেকে শাস্ত্রে লিখে যেতে পারত। আজ সমস্ত ধর্মীয় জগৎ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য প্রত্যক্ষ করেছে। কেউ কেউ তা পর্যালোচনা করে স্বীকার করেছে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সব বাক্য সত্য ও কর্তৃত্বপূর্ণ। কিন্তু যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য ও নাম বাইবেলে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, এবং তাদের সেখানে পাওয়া সম্ভব নয়, তারা অস্বীকার করে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর স্বয়ং ঈশ্বরের আবির্ভাব। তাদের ভুল কি সেই ফরিশীদের মতোই নয় যারা প্রভু যীশুকে প্রতিরোধ ও নিন্দা করেছিল? ফরিশীরা ভেবেছিল যে যেহেতু প্রভু যীশুর নাম মশীহ নয়, এবং তাঁর কাজ ও বাক্য শাস্ত্রানুসারী নয়, তারা অস্বীকার করতে পারে যে তিনিই মশীহ। আজকের ধর্মীয় মানুষেরা দেখে যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়নি এবং তাঁর বাক্যও এতে পাওয়া যায় না, তাই তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ ও বাক্যকে অস্বীকার ও নিন্দা করে। তারা পুনরায় ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ করার পাপ করছে। প্রকৃতপক্ষে, যদিও বাইবেলে অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের কাজ অন্তর্ভুক্ত নেই, অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের নতুন নামের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী আছে, যেমন যিশাইয়র এই অংশটি: “এবং সকল অইহুদি তোমার ন্যায়পরায়ণতা প্রত্যক্ষ করবে, আর সকল রাজা প্রত্যক্ষ করবে তোমার মহিমা: এবং তুমি অভিহিত হবে এক নতুন নামে, যে নাম হবে যিহোবার মুখনিঃসৃত” (যিশাইয় ৬২:২)। এবং প্রকাশিত বাক্যে আমরা দেখতে পাই: “যে জয়ী হবে আমি তাকে আমার ঈশ্বরের মন্দিরের স্তম্ভস্বরূপ করব, সে কখনও স্থানচ্যূত হবে না। তার উপরে আমি লিখব আমার ঈশ্বরের নাম। লিখব আমার ঈশ্বরের নতুন নগরীর নাম—নতুন জেরুশালেম যা স্বর্গ থেকে, আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। আর লিখব আমার নিজের নতুন নাম” (প্রকাশিত বাক্য ৩:১২)। “‘আমিই আল্ফা ও ওমেগা’। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান” (প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। “হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। বাইবেলে এই ভবিষ্যদ্বাণীও আছে যে ঈশ্বর অন্তিম সময়ে অধিকতর বলবেন ও কাজ করবেন, যেমন প্রভু যীশু বলেছিলেন: “আমার এখনও অনেককিছুই তোমাদের বলার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো বহন করতে পারবে না। সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তিনি তোমাদের সকল সত্যের পথে পরিচালিত করবেন। তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, যা তিনি শুনবেন শুধুমাত্র তা-ই বলবেন এবং সমস্ত ভাবী ঘটনার কথা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন” (যোহন ১৬:১২-১৩)। প্রকাশিত বাক্যে এক চেতাবনিও আছে যা সাতবার উল্লেখ করা হয়েছে: “শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন” (প্রকাশিত বাক্য, অধ্যায় ২, ৩)। প্রকাশিত বাক্যে এ-ও বলা আছে যে অন্তিম সময়ে ঈশ্বর মুদ্রাঙ্কিত গ্রন্থ খুলবেন, স্পষ্টতই, ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে ঈশ্বরের অন্তিম সময়ে গির্জার প্রতি বক্তব্য রাখার এবং মানুষকে সকল সত্যের দিকে চালিত করার। কী করে অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের এই কাজ ও বাক্য আগে থেকেই বাইবেলে থাকা সম্ভব? তা অসম্ভব! এই সব ভবিষ্যদ্বাণী ও অনস্বীকার্য তথ্য সত্ত্বেও কেন এত মানুষ চোখ খোলা থাকা সত্ত্বেও অন্ধ হয়ে বিচার করছে এবং জোরাজুরি করছে যে ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে, এবং তার বাইরে কিছু পাওয়া যায় না? স্পষ্টত, এখন, যখন ঈশ্বর আবির্ভূত হয়ে কাজ করছেন, তখন তাঁর বিচার ও প্রতিরোধের স্পর্ধা প্রকাশকারী এই ব্যক্তিরা ঈশ্বরের কাজ বোঝে না, এবং সত্যের কণামাত্রও বোঝে না। তারা ঈশ্বরের দ্বারা নিন্দিত ও অপসৃত হয় এবং ইতোমধ্যেই তারা বিপর্যয় কবলিত হয়েছে। এতে বাইবেলের এই শ্লোকগুলি পরিপূরণ হয়: “জ্ঞানের অভাবে মূর্খেরা মারা পড়ে” (হিতোপদেশ ১০:২১)। “প্রজ্ঞার অভাবে আমার প্রজারা ধ্বংস হচ্ছে” (হোশেয় ৪:৬)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কিছু বাক্য দেখা যাক। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “বাইবেলে লিপিবদ্ধ বিষয়গুলি সীমিত আকারে রয়েছে; এগুলি ঈশ্বরের সামগ্রিক কার্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। চারটি সুসমাচারে সবমিলিয়ে একশোর থেকেও কম সংখ্যক অধ্যায় রয়েছে, যেগুলিতে সীমিত সংখ্যক ঘটনা লেখা আছে, যেমন যীশুর ডুমুর গাছকে অভিশাপ দেওয়া, পিতরের দ্বারা প্রভুকে তিনবার অস্বীকারের ঘটনা, ক্রুশবিদ্ধ হওয়া এবং পুনরুত্থানের পরে শিষ্যদের কাছে যীশুর আবির্ভাব, উপবাস সম্পর্কিত শিক্ষা, প্রার্থনা সম্পর্কিত শিক্ষা, বিবাহবিচ্ছেদ সম্পর্কিত শিক্ষা, যীশুর জন্ম ও বংশতালিকা, যীশুর শিষ্যদের নিয়োগ, এবং এমন আরও অনেক কিছু। যাইহোক, মানুষ বাইবেলে লিপিবদ্ধ এই বিষয়গুলিকে সম্পদ হিসাবে শ্রদ্ধা করে, এমনকি বর্তমানের কাজকে এগুলির বিপরীতে তুলনা করে। এমনকি তারা বিশ্বাস করে যে যীশু তাঁর জীবৎকালে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা কেবল এতটুকুই, যেন ঈশ্বর কেবল এতটুকুই করতে সক্ষম এবং এর বেশি করতে পারেন না। এটা কি অযৌক্তিক নয়?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (১))।
“সর্বোপরি, কে বড়: ঈশ্বর না বাইবেল? কেন ঈশ্বরকে বাইবেল অনুসারে কাজ করতেই হবে? এ কি হতে পারে যে ঈশ্বরের বাইবেলকে অতিক্রম করার অধিকার নেই? ঈশ্বর কি বাইবেল থেকে সরে গিয়ে অন্য কাজ করতে পারেন না? কেন যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সাব্বাথ পালন করেননি? তাঁকে যদি সাব্বাথের আলোকে এবং পুরাতন নিয়মের আদেশ অনুসারে অনুশীলন করতে হতো, তাহলে যীশু কেন আগমনের পরে সাব্বাথ পালন করেননি, বরং পা ধুয়েছেন, মাথা ঢেকেছেন, রুটি টুকরো করেছেন, এবং মদিরা পান করেছেন? পুরাতন নিয়মের আদেশগুলির মধ্যে কি এই সব অনুপস্থিত নয়? যীশু যদি পুরাতন নিয়মকে সম্মান করতেন, তবে কেন তিনি এই মতবাদগুলি অগ্রাহ্য করেছেন? তোমার জানা উচিত কোনটি প্রথমে এসেছে, ঈশ্বর নাকি বাইবেল! সাব্বাথের প্রভু হওয়ার কারণে, তিনি কি বাইবেলের প্রভুও হতে পারেন না?” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বাইবেল সম্পর্কিত (১))।
“বাইবেলের বাস্তবতা কেউই জানে না: যে এটি ঈশ্বরের কাজের একটি ঐতিহাসিক দলিল ছাড়া আর কিছু নয়, এবং ঈশ্বরের কাজের পূর্ববর্তী দুটি পর্যায়ের এক প্রমাণপত্র, আর এটি তোমাকে ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য সম্বন্ধে কোনো জ্ঞানই দেয় না। যারা বাইবেল পড়েছে, তারা প্রত্যেকেই জানে যে এটিতে বিধানের যুগ এবং অনুগ্রহের যুগে ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের দুটি পর্যায় নথিভুক্ত রয়েছে। পুরাতন নিয়মে ইসরায়েলের ইতিহাস এবং সৃষ্টির সময় থেকে বিধানের যুগের শেষ পর্যন্ত যিহোবার কাজ বর্ণিত রয়েছে। নতুন নিয়মে রয়েছে এই পৃথিবীতে যীশুর কর্মকাণ্ডের আলেখ্য, যা রয়েছে চারটি সুসমাচারের বইতে, এবং সেইসাথে আছে পৌলের কাজের কথা—এগুলো কি ঐতিহাসিক দলিল নয়? অতীতের জিনিস বর্তমানে তুলে আনলে তা আসলে শুধুই ইতিহাস এবং তা যতই সত্য বা বাস্তব হোক না কেন, সেটি ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই নয়—ইতিহাস বর্তমানকে প্রতিফলিত করতে পারে না, কারণ ঈশ্বর ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকান না! আর তাই, যদি তুমি কেবল বাইবেলের আক্ষরিক অর্থই বোঝো এবং ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষিত কাজের বিষয়ে তোমার কিছুমাত্র জ্ঞান না থাকে এবং যদি তুমি ঈশ্বরবিশ্বাসী হয়েও পবিত্র আত্মার কাজে অনাগ্রহী থাকো, তাহলে তুমি ঈশ্বরের প্রকৃত সন্ধানের বিষয়ে কিছুই বোঝো না। যদি তুমি ইসরায়েলের ইতিহাস অধ্যয়ন করার জন্য, স্বর্গ-মর্ত্যে ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টির ইতিহাস জানার জন্য বাইবেল পড়, তবে তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী নও। কিন্তু বর্তমানে, যেহেতু তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে জীবনযাপন করছো, কেবল নিষ্প্রাণ অক্ষর, মতবাদ বা ইতিহাসের অনুসরণ না করে যেহেতু তুমি ঈশ্বরের জ্ঞানের অনুসরণ করছো, তাই তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বর্তমানের ইচ্ছার অন্বেষণ করতে হবে এবং অবশ্যই পবিত্র আত্মার কাজের নির্দেশনা পেতে হবে। তুমি যদি কেবল একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ হতে, তবে তোমার বাইবেলের সাধারণ পাঠ করাই স্বাভাবিক ছিল—কিন্তু তুমি তো তা নও, তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসীদের একজন এবং তাই তোমার ঈশ্বরের বর্তমান ইচ্ছাকেই সর্বোত্তমভাবে সন্ধান করা সাজে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বাইবেল সম্পর্কিত (৪))।
“তুমি যদি বিধানের যুগে সম্পাদিত কাজ দেখতে চাও, এবং দেখতে চাও ইসরায়েলীরা কীভাবে যিহোবার পথ অনুসরণ করেছিল, তাহলে তোমাকে অবশ্যই পুরাতন নিয়ম পড়তে হবে; তুমি যদি অনুগ্রহের যুগের কাজ বুঝতে চাও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই নতুন নিয়ম পড়তে হবে। কিন্তু অন্তিম সময়ের কাজকে তুমি কীভাবে দেখবে? তোমাকে অবশ্যই আজকের ঈশ্বরের নেতৃত্ব স্বীকার করতে হবে, এবং আজকের কাজে প্রবেশ করতে হবে, কারণ এটি নতুন কাজ, এবং কেউ তা আগে থেকে বাইবেলে লিপিবদ্ধ করেনি। বর্তমানে, ঈশ্বর দেহে আবির্ভূত হয়েছেন এবং চীনে অন্যান্য মনোনীত ব্যক্তিদের বেছে নিয়েছেন। ঈশ্বর এই লোকেদের মধ্যে কাজ করেন, তিনি পৃথিবীতে তাঁর কাজ অব্যাহত রাখেন এবং অনুগ্রহের যুগের কাজ থেকে পুনরারম্ভ করেন। বর্তমানের কাজটি এমন একটি পথ যে পথে মানুষ কখনও হাঁটেনি এবং এমন একটি পথ যা কেউ কখনও দেখেনি। এটি এমন একটি কাজ যা আগে কখনও করা হয়নি—এটি পৃথিবীতে ঈশ্বরের সাম্প্রতিকতম কাজ। সুতরাং, যে কাজ আগে কখনও করা হয়নি তা ইতিহাস নয়, কারণ এখন হলো বর্তমান এবং এখনও তা অতীতে পরিণত হয় নি। মানুষ জানে না যে ঈশ্বর পৃথিবীতে, ইসরায়েলের বাইরে, এক বৃহত্তর, নতুনতর কাজ করেছেন, যে এটি ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সীমা অতিক্রম করেছে, নবীদের ভবিষ্যদ্বাণীকে ছাপিয়ে গেছে, যে এটি ভবিষ্যদ্বাণীর বাইরে নতুন এবং বিস্ময়কর কাজ, ইসরায়েল অতিক্রম করে সংঘটিত নতুনতর কাজ, এবং এমন কাজ যা জনগণ বুঝতে বা কল্পনাও করতে পারে না। কীভাবে বাইবেলে এই ধরনের কাজের সুস্পষ্ট লিপি থাকতে পারে? কে বর্তমানের কাজের প্রতিটি খুঁটিনাটি, বাদ না দিয়ে, আগাম লিপিবদ্ধ করতে পারতো? কে এই শক্তিশালী, প্রজ্ঞাপূর্ণ, প্রচলিত প্রথা অস্বীকার করা কাজকে সেই জীর্ণ পুরনো বইতে লিপিবদ্ধ করতে পারতো? আজকের কাজটি ইতিহাস নয়, এবং তুমি যদি আজকের নতুন পথে হাঁটতে চাও, তবে তোমাকে অবশ্যই বাইবেল থেকে বিদায় নিতে হবে, তোমাকে অবশ্যই বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী বা ইতিহাসের বইগুলি অতিক্রম করতে হবে। তবেই তুমি সঠিকভাবে নতুন পথে চলতে সক্ষম হবে এবং তবেই তুমি নতুন রাজ্যে এবং নতুন কাজে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। … একটি উচ্চতর উপায় থাকা সত্ত্বেও, কেন নিম্ন মানের, সেকেলে উপায়ে পড়বে? নতুন বাক্য এবং নতুন কাজ থাকা সত্ত্বেও, কেন পুরানো ঐতিহাসিক নথি আঁকড়ে রাখবে? নতুন বাক্য তোমাকে জ্ঞান প্রদান করতে পারে, যা প্রমাণ করে যে এটি নতুন কাজ; পুরানো লিপি তোমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না, বা তোমার বর্তমান চাহিদাগুলি পূরণ করতে পারে না, যা প্রমাণ করে সেগুলি ইতিহাস, বর্তমানের কাজ নয়। সর্বোচ্চ উপায় হল নতুন কাজ এবং নতুন কাজের সাথে তুলনায়, অতীতের পথ যতই উচ্চ স্তরের থাকুক না কেন, এটি কেবলই ইতিহাস যার দিকে মানুষ ফিরে তাকায় এবং তথ্যনির্দেশ হিসাবে এর মূল্য যাই হোক না কেন, এটি তবুও পুরানো উপায়। এটি ‘পবিত্র গ্রন্থ’-তে লিপিবদ্ধ করা থাকলেও, পুরানো উপায় হলো ইতিহাস; ‘পবিত্র গ্রন্থ’-তে এটির কোনও উল্লেখ না থাকলেও, নতুন উপায় হলো বর্তমানের কথা। এই পথটি তোমাকে বাঁচাতে পারে এবং এই পথটিই তোমাকে পরিবর্তন করতে পারে, কারণ এটি পবিত্র আত্মার কাজ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, বাইবেল সম্পর্কিত (১))।
“যে বাস্তব সত্য আমি এখানে ব্যাখ্যা করতে চাই তা হল: ঈশ্বর যা এবং তাঁর যা আছে তা শাশ্বতভাবে অফুরন্ত ও অসীম। ঈশ্বর জীবন ও সকল বস্তুর উৎস; কোনো সৃজিত সত্তা তাঁর তল পেতে পারে না। সব শেষে, আমি অবশ্যই প্রত্যেককে স্মরণ করিয়ে দেওয়া অব্যাহত রাখব: আর কখনো ঈশ্বরকে পুস্তকের মধ্যে, বাক্যের মধ্যে, বা তাঁর অতীত উচ্চারণের মধ্যে গণ্ডীবদ্ধ করো না। ঈশ্বরের কার্যের চরিত্রকে বর্ণনা করার জন্য কেবল একটি শব্দই আছে: অভিনব। তিনি পুরাতন পন্থা গ্রহণ বা তাঁর কার্যের পুনরাবৃত্তি পছন্দ করেন না; উপরন্তু, তিনি চান না মানুষ তাঁকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডীর মধ্যে সীমায়িত রেখে পূজা করুক। এ-ই হল ঈশ্বরের স্বভাব” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, উত্তরকথন)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য সব স্পষ্ট করে দেয়, তাই না? বাইবেল হল বিধানের যুগ ও অনুগ্রহের যুগে ঈশ্বরের কাজের দুটি পর্যায়ের নথি। এটি এক ঐতিহাসিক গ্রন্থ এবং তা ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। ঈশ্বর হলেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের প্রাণের উৎস। তিনি সহস্রাব্দাধিক কাল ধরে কথা বলছেন ও কাজ করছেন, এবং তিনি মানুষের জীবন ধারণের উপাদানের এক অফুরান উৎস, যিনি সর্বদাই আমাদের সম্মুখে চালিত করেন। তাঁর বাক্য জীবিত জলের সদা বহমান ঝর্ণা। ঈশ্বরের কাজ ও বাক্য কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দ্বারা রূদ্ধ করা যায় না, বাইবেলের দ্বারা তো তা আরোই সম্ভব নয়। তিনি কখনো আরো কথা বলা এবং নতুন কাজ সম্পাদন করা বন্ধ করেননি তাঁর পরিচালনামূলক পরিকল্পনা ও মানুষের প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে। বিধানের যুগে যিহোবা ঈশ্বর পৃথিবীতে মানুষের জীবনকে দিকনির্দেশ দিতে আইন প্রনয়ণ করেছিলেন, যখন বাইবেল বলে আদৌ কিছু ছিল না। প্রভু যীশু অনুগ্রহের যুগে অনুশোচনার পথের প্রচার করেন এবং মুক্তির কার্য করেন, পুরাতন নিয়মকে অতিক্রম করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অন্তিম সময়ে এসেছেন এবং ঈশ্বরের গৃহ থেকে শুরু করে বিচারের কাজ করছেন। তিনি সাতটি সীলমোহর এবং মুদ্রাঙ্কিত গ্রন্থ খুলে সেই সকল সত্য প্রকাশ করছেন যা মানুষকে সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ ও রক্ষা করতে পারে। এ হল নতুন উন্নততর কাজের পর্যায় যা অনুগ্রহের যুগের উদ্ধারের কাজের ভিত্তিতে করা হয়। এ হল নবীনতর এবং আরো প্রায়োগিক কাজ, এবং আগে থেকে বাইবেলে অন্তর্ভূক্ত হতে পারত না। এর থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের কাজ সর্বদাই নতুন ও কখনোই পুরনো নয়, তাঁর নতুন কাজ বাইবেলে যা আছে তাকে অতিক্রম করে যায়, ও মানুষকে নতুন পথ ও এক উচ্চতর সত্য দেয়। সুতরাং আমাদের বিশ্বাস শুধুমাত্র বাইবেল-নির্ভর হতে পারে না, এবং আমরা অবশ্যই বলতে পারি না যে ঈশ্বরের সব কাজ ও বাক্য বাইবেলে আছে। আমাদের পবিত্র আত্মার কাজের অনুসন্ধান করতে হবে এবং ঈশ্বরের পদক্ষেপের সঙ্গে পা মেলাতে হবে, ঈশ্বরের সমকালীন বাক্যগুলির রসদ ও পথনির্দেশ প্রাপ্তির জন্য। ঠিক যেমন প্রকাশিত বাক্যে বলা হয়েছে: “মেষশাবক যেখানে যান সেখানেই যারা তাঁকে অনুসরণ করে এরাই তারা” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৪)। এরা হল জ্ঞানী কুমারী যারা মেষশাবকের বিবাহভোজে অংশ নিতে পারে এবং অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের পরিত্রাণ অর্জন করে।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তিরিশ বছর যাবৎ তাঁর অন্তিম সময়ের বিচারের কাজ করছেন এবং তিনি দশলক্ষাধিক বাক্য প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথনগুলি সংখ্যায় প্রচুর এবং তাতে কিছুরই অভাব নেই। তারা বাইবেলের রহস্য উন্মোচন করে এবং ঈশ্বরের ৬,০০০ বৎসরব্যাপী পরিচালনার পরিকল্পনার সব রহস্যও উদ্ঘাটিত করে, যেমন তাঁর মানবজাতিকে পরিচালনা করার লক্ষ্য, কীভাবে শয়তান মানুষকে কলুষিত করে, কীভাবে ঈশ্বর মানুষকে শয়তানের শক্তি থেকে ধাপে ধাপে রক্ষা করেন, কীভাবে ঈশ্বর মানবজাতির পরিশোধন করেন এবং তাঁর পরীক্ষা ও পরিমার্জনা মাধ্যমে পবিত্র করে তোলেন, অন্তিম সময়ে তাঁর বিচারকার্যের তাৎপর্য, অবতার-রহস্য এবং তাঁর নাম, বাইবেলের প্রকৃত কাহিনি, মানুষের সব ধরণের পরিণতি, মানুষের অন্তিম গন্তব্য, এবং কীভাবে খ্রীষ্টের রাজ্য পৃথিবীতে বাস্তবায়িত হতে পারে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বিচার ও অনাবৃত করেন মানুষের কলুষিত হওয়ার সত্য, এবং তাদের ঈশ্বর-বিরোধী, শয়তানসুলভ প্রকৃতি। তিনি আমাদের পাপ থেকে মুক্তির ও ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ধার পাওয়ার পথ দেখান, যেমন কীভাবে প্রকৃত অর্থে অনুশোচনা করতে হয়, কীভাবে দৈহিক ইচ্ছা ত্যাগ করে সত্যের সাধনা করতে হয়, কীভাবে সৎ মানুষ হতে হয়, কীভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে হয়, কীভাবে ঈশ্বরে ভীতি এবং মন্দ কর্ম পরিত্যাগ করতে হয়, কীভাবে ঈশ্বরের জ্ঞান ও তাঁর প্রতি সমর্পণ ও ঈশ্বরের জন্য ভালোবাসা অর্জন করতে হয়। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য বিধানের যুগে ও অনুগ্রহের যুগের ঈশ্বরের বাক্যের থেকেও সংখ্যায় বহু বেশি এবং উন্নত, এবং ঈশ্বরের পরিত্রাণ অর্জনের জন্য এই সব সত্যই আমাদের অধিকারে থাকা প্রয়োজন। তারা অবিশ্বাস্যরকম দৃষ্টি উন্মোচনকারী ও তৃপ্তিদায়ী, এবং তা আমাদের সবকিছুতে অনুশীলনের এক পথ প্রদর্শন করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে আমরা পাই আমাদের সব সংগ্রাম ও আমাদের বিশ্বাস সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর ও সমাধান। রাজ্যের যুগে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য দেহে আবির্ভূত হল-ই বাইবেল এবং এই হল অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের দ্বারা মানুষকে প্রদত্ত শাশ্বত জীবনের পথ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য ভোজন, পান ও অনুশীলন করে, বিচারের অধীন হয়ে, তাঁর বাক্যের দ্বারা ভৎর্সৃত হয়ে এবং কিছু সত্য বুঝে, ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিগণ ঈশ্বরের প্রকৃত উপলব্ধি অর্জন করে। তাদের কলুষিত স্বভাব বিভিন্ন মাত্রায় পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তিত হয়, এবং তারা অবশেষে পাপের বন্ধন থেকে মুক্ত হয় ও শয়তানকে পরাজিত করার সাক্ষ্য বহন করে। তারা হল সেই বিজয়ী যাদের বিপর্যয়ের আগেই ঈশ্বর সম্পুর্ণ করেছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম, কাজ এবং বাক্য বাইবেলে নথিবদ্ধ না থাকতে পারে, কিন্তু যে ফললাভ হয়েছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ ও বাক্যের মাধ্যমে যে প্রকৃত পরিণতি অর্জিত হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীকে পরিপূরণ করে। ঈশ্বরের নির্বাচিত জনেদের সাক্ষ্য এখন ভিডিও ও সিনেমা হিসেবে অনলাইনে সুলভ, যা বিশ্বের কাছে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজের সাক্ষ্য বহন করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য মহান আলোর মতো, যা পূর্ব থেকে পশ্চিমে ভাস্বর হয়ে উঠে সমগ্র পৃথিবীকে আলোকিত করছে। পৃথিবীর প্রতি কোণ থেকে আরো আরো মানুষ, যারা সত্যকে সত্যকে ভালোবাসে, তারা প্রকৃত পথের অনুসন্ধান করছে, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অভিমুখী হচ্ছে। এ এক মহাতরঙ্গ যা সারা পৃথিবীকে বিধৌত করছে ও যা কোনো শক্তি থামাতে পারে না। ঠিক যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, “একদিন যখন সমগ্র মহাবিশ্ব ঈশ্বরের প্রত্যাগমন করবে, মহাবিশ্বব্যাপী ঈশ্বরের কর্মকেন্দ্র তাঁরই কথনকে অনুসরণ করবে; অন্যত্র, কিছু মানুষ দূরভাষযন্ত্র ব্যবহার করবে, কিছু মানুষ বিমান ব্যবহার করবে, কিছু মানুষ নৌকোয় সাগর পাড়ি দেবে, এবং কিছু মানুষ ঈশ্বরের কথন গ্রহণের জন্য লেজার ব্যবহার করবে। সবাই বন্দনা করবে, সবাই আকুল হবে, সবাই ঈশ্বরের কাছে আসবে, সবাই ঈশ্বরের কাছে সমবেত হবে, এবং সবাই ঈশ্বরের অর্চনা করবে—আর এই সবই হবে ঈশ্বরের কর্ম। এটা মনে রেখো! ঈশ্বর নিশ্চিতভাবেই আবার অন্য কোথাও তাঁর কাজ শুরু করবেন না। ঈশ্বর যে ঘটনাটি ঘটাবেন তা হলো: তিনি সমগ্র মহাবিশ্বের সমস্ত মানুষকে তাঁর সামনে আসতে ও পৃথিবীতে ঈশ্বরের অর্চনা করতে বাধ্য করবেন, অন্যান্য স্থানে তাঁর কাজ থেমে যাবে, এবং মানুষ বাধ্য হবে প্রকৃত পথ খুঁজতে। বিষয়টি হবে যোষেফের মত; সবাই তাঁর কাছে এসেছিলো খাদ্যের জন্য, এবং তাঁর কাছে নতমস্তক হয়েছিল, কারণ তাঁর কাছে খাদ্যবস্তু ছিলো। দুর্ভিক্ষ এড়ানোর জন্য মানুষ বাধ্য হবে প্রকৃত পথটি খুঁজে নিতে। সমগ্র ধর্মীয় সম্প্রদায় চরম দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হবে, এবং একমাত্র বর্তমান ঈশ্বরই প্রাণবারির প্রস্রবণ, মানুষের উপভোগের জন্য বরাদ্দ সতত প্রবহমান প্রস্রবণের অধিকারী এবং মানুষ তাঁর কাছে আসবে এবং তাঁর ওপর নির্ভর করবে। ঈশ্বরের কর্মের প্রকাশ ঘটবে তখনই এবং তখনই ঈশ্বর মহিমান্বিত হয়ে উঠবেন; সমগ্র মহাবিশ্বব্যাপী সমস্ত মানুষ এই বিশেষত্বহীন ‘মানুষ’ টির উপাসনা করবে। সেই দিনটিই কি ঈশ্বরের মহিমার দিন হয়ে উঠবে না? … যেদিন সারা রাজ্য আনন্দমুখর হবে সে দিনটিই হবে ঈশ্বরের মহিমার দিন, এবং যে মানুষ তোমাদের কাছে এসে ঈশ্বরের সুসমাচার গ্রহণ করবে, সেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করবে, এবং যে সব দেশ ও জনজাতি তা করবে তারা ঈশ্বরের আশীর্বাদ ও তত্ত্বাবধান পাবে। ভবিষ্যতের অভিমুখ হবে এইরকম: যারা ঈশ্বরের মুখনিঃসৃত কথন লাভ করবে তারা পৃথিবীতে চলার একটা পথ পাবে, আর যারা ঈশ্বরের বাক্য লাভ করবে না এক পা অগ্রসর হতেও তাদের কঠিন সমস্যা হবে—সে তারা ব্যবসায়ী বা বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ বা শিল্পপতি যাই হোক না কেন, এবং তারা সঠিক পন্থা খুঁজতে বাধ্য হবে। ‘সত্যকে সঙ্গে রাখলে তুমি সারা পৃথিবী ঘুরতে পার, সত্য বিনা তুমি কোথাও পৌঁছতে পারবে না’ বাক্যবন্ধটির অর্থ এই” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সহস্রবর্ষীয় রাজত্বের যুগ উপস্থিত)। রাজ্যের যুগ হল বাক্যের যুগ। ঈশ্বর মানবজাতিকে জয় করতে, পরিশুদ্ধ করতে এবং উদ্ধার করতে তাঁর বাক্য ব্যবহার করছেন, এবং জয়ীদের একটি গোষ্ঠী সম্পূর্ণ করেছেন। এতেই ঈশ্বরের বাক্যের কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা সম্পূর্ণত দৃশ্যমান হয়। কিন্তু ধর্মীয় বিশ্ব বাইবেল আঁকড়ে থাকে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার ও পরিশোধনকে অস্বীকার করে। এই ব্যক্তিরা নিজেদের পুরনো পাপ করা, স্বীকারোক্তি করা ও পুনরায় পাপ করার জীবনেই আটকে আছে, এবং ঈশ্বরের কাজের দ্বারা ইতোমধ্যেই অপসৃত হয়েছে, বিপর্যয় কবলিত হয়ে কাঁদছে ও দাঁতে দাঁত ঘষছে। তারা এখনো প্রভুর মেঘারূঢ় হয়ে এসে তাদের স্বর্গ-রাজ্যে উন্নীত করে অনন্ত জীবন দানের অপেক্ষা করছে। এ কী অলীক কল্পনা নয়? ঠিক যেমন প্রভু যীশু বলেছেন, “তোমরা অধ্যবসায় সহকারে শাস্ত্রপাঠ কর, মনে কর তার মধ্যেই পাবে অনন্ত জীবন। কিন্তু সেই শাস্ত্র আমারই সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছে। অথচ জীবন লাভের জন্য তোমরা আমার কাছে আসতে চাও না” (যোহন ৫:৩৯-৪০)। যারা বাইবেল আঁকড়ে থাকতে চায় তারা সত্য বা জীবন লাভ করবে না। শুধুমাত্র যারা খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে, যারা খ্রীষ্টকে অনুসরণ ও তাঁর কাছে সমর্পণ করে তারাই সত্য এবং জীবন অর্জন করবে। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, এখন মানবজাতিকে পরিশুদ্ধ ও সম্পূর্ণ উদ্ধার করতে সত্য প্রকাশ করছেন। আমরা যদি সত্য ও জীবন চাই, আমাদের বাইবেলকে অতিক্রম করে ঈশ্বরের পদচিহ্নের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার ও পরিশোধনকে স্বীকার ও তাতে সমর্পণ করতে হবে। এ-ই হল পাপমুক্ত হয়ে ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র পথ, এবং বিপর্যয়কালে ঈশ্বরের দ্বারা সুরক্ষিত হয়ে তাঁর রাজ্যে প্রবেশেরও একমাত্র পথ। যারা বাইবেল ছাড়তে চায় না ও ঈশ্বরের অতীতের কাজ ও বাক্যেই আটকে থাকে, যারা ঈশ্বর অন্তিম সময়ে আমাদের যে সত্যের পথ প্রদর্শন করেন তা অস্বীকার করে, তারা মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করার জন্য ঈশ্বরের কাজ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হবে, এবং শুধুমাত্র বিপর্যয় কবলিত ও দণ্ডিত-ই হতে পারে। ঠিক যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, “ঈশ্বরের কাজ কখনই এমন কারো জন্য অপেক্ষা করে না যে তাঁর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অক্ষম, এবং ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাব এইরকম কোনও মানুষের প্রতি দয়া দেখায় না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্ট সত্যের দ্বারাই বিচারের কাজ করেন)।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের আর একটি অংশ দিয়ে আমরা শেষ করব: “অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট যে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দিয়েছেন তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন)।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।