প্রভু যীশুর প্রত্যাবর্তন সম্বন্ধে বাইবেলের ৬টি ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছে
জিঞ্জি করেছেন এখন ইতিমধ্যেই অন্তিম সময়ের সমাপ্তিকাল এবং ঘন ঘন বিভিন্ন দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে উল্লিখিত অন্তিম...
ঈশ্বরের আবির্ভাবের জন্য যারা আকুলভাবে অপেক্ষা করছেন তাদের সবাইকে স্বাগত জানাই!
খ্রিষ্টান হিসাবে, প্রার্থনা হ’ল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ এবং ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে সরাসরি উপায়। আমরা সকলেই আশা করি যে আমাদের প্রার্থনা হয়তো প্রভু শুনবেন, কিন্তু আমরা প্রায়শই প্রভুর সাড়া পাই না অথবা তাঁর উপস্থিতি অনুভব করি না যা আমাদের জন্য হতাশাজনক: কেন এমন হয়? কেন ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনছেন না? কী ধরণের প্রার্থনা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আসুন আজ এই বিষয়ে সহযোগিতা সহকারিতা করে এই তিনটি সমস্যার সমাধান করি, তাহলে হয়তো আমাদের প্রার্থনা ঈশ্বর শুনবেন।
বেশিরভাগ সময়, আমরা আমাদের প্রার্থনার দৈর্ঘ্য বা শব্দের মতো বিশদ বিবরণের প্রতি মনোযোগ দিই, অথবা আমরা মধুর কথার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের সংকল্প প্রদর্শন করার প্রয়াস করি, কিন্তু আমরা কদাচিৎ ঈশ্বরের কাছে আমাদের হৃদয়কে প্রকৃতপক্ষে উন্মুক্ত করি। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা সাধারণত বলি: “হে ঈশ্বর, আমি আপনাকে ভালবাসব, আপনার জন্য নিজেকে ব্যয় করব, এবং আমি যত বড় বিপদের সম্মুখীন হই বা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যাই না কেন আমি কখনোই হাল ছেড়ে দেবো না। আমি সারাজীবন আপনাকে অনুসরণ করবো!” অথবা, “হে ঈশ্বর তোমার বাক্য আমার কাছে এক প্রজ্বলিত প্রদীপের ন্যায় যা আমার পথকে আলোকিত করে, তোমার বাক্যর প্রতি অনুরক্ত থেকে আমি সব কিছু করবো, এবং তোমার ইচ্ছা পূরণ করবো!” তবে, প্রতিকূলতা এবং বিপত্তির সম্মুখীন হলে, অথবা বাড়িতে কোনও সমস্যা দেখা দিলে আমরা প্রায়শই ঈশ্বরের বাক্যর অনুশীলন করতে অপারগ থাকি এবং তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে উৎসাহী হই না। এমনকি আমরা ঈশ্বরকে ভুল বুঝি, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি, তাঁর কাজের প্রতি নিরুৎসাহ বোধ করি এবং সেইসাথে বিপথে চালিত হয়ে তাঁর থেকে দূরে চলে যাই, বাস্তব পরিস্থিতিতে আমাদের এই আচরণ প্রমাণ করে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের প্রার্থনাতে আন্তরিকতার অভাব, তার পরিবর্তে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য আবেগভরে মনোরম-শব্দযুক্ত বড় বড় কথা বলি। তাছাড়াও, আমাদের এই ধরণেরধরনের আচরণ দেখে যাতেন, অন্যরা যাতে আমাদের সম্বন্ধে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন, ঈশ্বর ও অন্যরা যাতে দেখেন যে আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি এবং তাঁর প্রতি আমরা বিশ্বস্ত, কিন্তু বাস্তবে আমাদের প্রার্থনা কপটতা ও প্রতারণা দ্বারা পূর্ণ। সেগুলি মূলত, ঈশ্বরকে বোকা বানানো এবং প্রতারণা করার চেষ্টা। কীভাবে আমরা আশা করতে পারি যে ঈশ্বর আমাদের এই ধরণের প্রার্থনা শুনবেন? যীশু একবার এই নীতিমূলক গল্পটি বলেছিলেন: “দুজন লোক মন্দিরে গেল প্রার্থনা করতে। একজন ফরিশী ও অন্যজন কর-আদায়কারী। সেই ফরিশী দাঁড়িয়ে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘হে ঈশ্বর, তোমায় আমি কৃতজ্ঞতা জানাই যে, আমি অত্যাচারী, অসাধু লোকদের মত ব্যভিচারী কিম্বা ঐ কর-আদায়কারীর মত নই। আমি সপ্তাহে দুবার উপবাস করি, আমার সমস্ত আয়ের দশমাংশ আমি দান করি।’ কিন্তু সেই কর-আদায়কারী আকাশের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারল না। দূরে দাঁড়িয়ে বুক চাপড়ে বলতে লাগল, ‘হে ঈশ্বর, এই পাপীকে দয়া কর।’ তোমাদের আমি বলছি, ঐ ফরিশীর চেয়ে বরং এই ব্যক্তিই ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে নিজের ঘরে ফিরে গেল। যে নিজের গৌরব করে, তাকে নত করা হবে কিন্তু যে নিজেকে নত করে, সে গৌরবান্বিত হবে” (লুক ১৮:১০-১৪)। এটা বোঝা কঠিন নয় যে ফড়িশী অত্যন্ত গর্বিত ভাবে প্রার্থনা করেছিলেন, বাহ্যত তিনি নিজের পাপের বিষয়ে অজ্ঞাত থেকে, নিজের প্রদর্শনীয় ভাল আচরণের ভিত্তিতে নিজেকে জাহির করছিলেন। তিনি স্ব-সেবামূলক ভাবে ঈশ্বরের কাছে চমৎকার কথা বলে এবং কর-আদায়কারীকে (কর আদায়কারী) নীচু করে ঈশ্বরের প্রতি তার আনুগত্যের বড়াই করেছিলেন। এই ধরণের ভন্ডামীপূর্ণ প্রার্থনা ঈশ্বরের দ্বারা প্রশংসিত হতে পারে না। কর-আদায়কারীটির প্রার্থনা আন্তরিক ছিল, সে পাপী ছিলো এবং তার জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে খোলাখুলিভাবে ঈশ্বরের কাছে তার পাপ স্বীকার করেছিল। তাছাড়াও, সে ঈশ্বরের নিকট তার অনুতাপ স্বীকার করার ইচ্ছা প্রকাশ করে ঈশ্বরের করুণা ভিক্ষা করেছিলো। যীশু কর আদায়কারীর প্রার্থনায় আন্তরিকতা দেখে তার প্রশংসা করেছিলেন।
যীশুর নীতিকথা আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, যে যদি কেউ অত্যধিক গর্বিত ভাবে নিজেকে জাহির করে, শূন্যগর্ভ কথা ফাঁপা বা ঈশ্বরের অনুগ্রহ ভাজন হওয়ার জন্য বা তাঁকে ঠকানোর জন্য মধুর কথা বলে তাহলে ঈশ্বর সেই ব্যক্তির এই ধরণের আচরণকে ঘৃণা করেন। ঈশ্বর চান যে আমরা আমাদের হৃদয়কে উন্মুক্ত রেখে আমাদের প্রকৃত চিন্তাগুলি প্রকাশ করে, সত্য বলে, ঈশ্বরের সাথে আন্তরিকভাবে যোগাযোগ করি। প্রভু যীশু বলেছিলেন, “যখন প্রকৃত উপাসকেরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে। পিতা এমন উপাসকেরই সন্ধান করেন। ঈশ্বর আত্মাস্বরূপ। তাঁর উপাসনা যারা করবে, আত্মায় ও সত্যেই তাদের উপাসনা করতে হবে” (যোহন ৪:২৩-২৪)। এবং ঈশ্বরের বাক্যর আর একটি অনুচ্ছেদ হল: “ঈশ্বর মানুষের কাছে নূন্যতম যা চান তা হল মানুষ যেন তাঁর কাছে হৃদয় উন্মুক্ত করতে সমর্থ হয়। মানুষ যদি তার সত্যিকারের হৃদয় ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করে এবং তার হৃদয়ের সত্য তাঁর সামনে তুলে ধরে, তার অর্থ ঈশ্বর তার মাধ্যমে কাজ করতে চান। ঈশ্বর মানুষের ছলনাপূর্ণ হৃদয় চান না, বরং তিনি চান বিশুদ্ধ ও সৎ হৃদয়। মানুষ যদি তার অন্তর থেকে ঈশ্বরের সাথে কথা না বলে, তাহলে ঈশ্বর তার হৃদয়কে পরিচালিত করবেন না বা তার মধ্যে কাজ করবেন না। অতএব, প্রার্থনার মূল বিষয় হল তোমার অন্তর থেকে ঈশ্বরের সাথে কথা বলা, তোমার ত্রুটি বা বিদ্রোহী স্বভাব সম্পর্কে তাঁকে বলা, তাঁর সামনে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উন্মুক্ত করা; তবেই ঈশ্বর তোমার প্রার্থনার প্রতি আগ্রহী হবেন, অন্যথায় তিনি তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, প্রার্থনার অনুশীলন বিষয়ে)। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের কাছে মুক্তমনা ও আন্তরিক হতে হবে, তাঁকে আমাদের অন্তর্নিহিত চিন্তাভাবনা এবং সত্য বলতে হবে, ঈশ্বরকে আমাদের প্রকৃত অবস্থা এবং সমস্যা সম্পর্কে বলতে হবে এবং ঈশ্বরের নির্দেশনা চাইতে হবে। শুধুমাত্র তখনই ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনবেন। যখন আমরা প্রার্থনা করি, তখন ঈশ্বরকে আমাদের জীবনের দুঃখকষ্ট ও সমস্যার কথা বলতে পারি, এবং ঈশ্বরের ইচ্ছার সন্ধান অনুসন্ধান করতে পারি। অথবা আমরা ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হয়ে তাঁর কাছে নিজের হৃদয়কে উন্মুক্ত করে আমাদের প্রতিদিনের কৃত পাপ ও দুর্নীতি সম্পর্কে ব্যক্ত করতে পারি। এই হল ঈশ্বরের সাথে সকল বিষয়ে আন্তরিক কথাবার্তা বলা। যেমন আমরা প্রায়শই জগতের প্রতি মোহাবিষ্ট হয়ে সমাজের প্রবণতাকে অনুসরণ করার আকুল আকাঙ্ক্ষা অনুভব করি, পার্থিব আনন্দে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি এবং আমরা ঈশ্বরের সামনে আমাদের মনকে প্রশান্ত রাখতে পারিনা, আমরা ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করতে পারি: “হে ঈশ্বর! আমি অনুভব করি যে আমার হৃদয়ের অন্তর্নিহিত সত্যের প্রতি আমার ভালবাসা নেই, কিন্তু বাইরের জগতের উজ্জ্বলতা সম্পর্কে আমি সদা চিন্তা করি। এমনকি কোনো সমাবেশে, প্রার্থনায় অথবা আপনার বাক্য পাঠ করাকালীনও আমার মনকে স্থির করতে পারিনা। আমি জৈবদেহ পরিত্যাগ করতে চাই, কিন্তু আমি তা করতে অক্ষম। হে ঈশ্বর! আপনার তেজ যেন আমার অসাড় হৃদয়কে নাড়া দেয়, আমাকে শয়তানের প্রলোভনকে জয় করার জন্য বিশ্বাস এবং শক্তি প্রদান করে, এবং আপনার সামনে আমার হৃদয়কে প্রশান্ত রাখে।” এই রকম বেশ কিছু আন্তরিক প্রার্থনার পর, পবিত্র আত্মা আমাদের এটি দেখার জন্য চালিত করবে যে সেই সামাজিক প্রবণতা অনুসরণ করার ফলে তা কিভাবে আমাদের পাপের জীবনে নিক্ষেপ করবে এবং আমরা ঈশ্বরের থেকে আরো বেশি দূরে সরে যাব। পবিত্র আত্মা আমাদের স্পর্শ করবে, এবং সত্যের প্রতি ভালবাসার উপযুক্ত হৃদয় আমাদের প্রদান করবে। তারপরে আমরা ব্যবহারিক উপায়ে, জৈবদেহ পরিত্যাগ করতে এবং শয়তানের প্রলোভন এবং বিচ্যুতি প্রতিহত করতে সক্ষম হব—এই ফলাফল আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময় শুধুমাত্র হৃদয় থেকে কথা বলেই অর্জন করতে পারি। তবে, যদি আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময় আমাদের হৃদয়কে উন্মুক্ত করতে না পারি, পরিবর্তে ঈশ্বরের কাছে নিজেদের অনুগ্রহ ভাজন করার জন্য মধুর কথা ব্যবহার করে তাঁকে প্রতারণা করার চেষ্টা করি, তাহলে ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনাও শুনবেন না এবং আমাদের হৃদয়ও স্পর্শ করবেন না। আমরা শয়তানের প্রলোভন বুঝতে বা প্রতিহত করতে অক্ষম হব, এবং অনিবার্যভাবে মন্দ প্রবণতা অনুসরণ করে, ঈশ্বরের থেকে আরো দূরে সরে গিয়ে শয়তানের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হব। অতএব, যদি আমরা চাই যে ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনুন, তাহলে আমাদের অবশ্যই তাঁর সামনে খোলামেলা এবং সত্যবাদী হতে হবে। আর এটাই হল প্রথম পদক্ষেপ যা আমাদের নিতে হবে।
অধিকাংশ ভাই এবং বোনেরা বিশ্বাস করে যে যেহেতু আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তিনি আমাদের আশীর্বাদ এবং অনুগ্রহ করবেন। আমরা প্রায়ই পার্থিব সুবিধার জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি ও প্রার্থনা করি যেমন তিনি যেন আমাদের সুস্থ রাখেন, আমাদের বাড়িতে শান্তি প্রদান করেন, অথবা আমাদের সন্তানরা যাতে একটা ভাল চাকরি পায় ইত্যাদি। আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন যদি আমরা ক্রমাগত নিজেদের জৈবিক স্বার্থের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তাহলে সত্যিই কি ঈশ্বরের সাথে সত্যিই যোগাযোগ করা যায়, নাকি প্রকৃতপক্ষে তাঁর আরাধনা করা হয়? উত্তর হ’ল না। এই ধরণের প্রার্থনা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাওয়ার প্রচেষ্টা মাত্র; তারা তাঁর কাছে নানা বস্তুজিনিষ দাবি করছে এবং তারা চাইছে তিনি যেন আমাদের নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করেন। এটা ঈশ্বর হিসাবে তাঁর প্রতি যথাযথ আচরণ করা হল না। এই ধরণের প্রার্থনা শুধুমাত্র ঈশ্বরের রোষই জাগিয়ে তুলতে পারে, এবং তিনি তাদের কথা শোনেন না।
খ্রিষ্টান হিসাবে, আমাদের কেবল পার্থিব সুখ-সুবিধার জন্য ঈশ্বরের অনুগ্রহ এবং তাঁর আশীর্বাদ পেতে চাইলে হবে না। এর কারণ হল এই সকল জিনিস আমাদেরকে ক্ষণস্থায়ী পার্থিব সৌভাগ্য উপভোগ করতে দেয়, কিন্তু ভাবেও আমাদের জীবনের আত্মিক উন্নতিতে সামান্যতম সাহায্যও করে না। সেগুলি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি প্রকৃত আনুগত্য বা ভীতি অর্জন করতে সাহায্য করে না। আমাদের প্রার্থনা এবং মিনতিগুলির মধ্য দিয়ে সত্যকে অনুধাবন, ঈশ্বরের বাক্যগুলির বাস্তবায়ন এবং আমাদের জীবনে আত্মিক বৃদ্ধির উপর আরো বেশি মনোযোগ নিবদ্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র এই ধরনের প্রার্থনাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রভু যীশু বলেছেন, “তাই অন্নবস্ত্র সম্বন্ধে চিন্তা করে মনকে উতলা করো না। জগতের সমস্ত জাতিই এগুলির সন্ধানে থাকে। এগুলি যে তোমাদের দরকার—এ কথা তোমাদের পিতা জানেন। তাই এগুলির পরিবর্তে তাঁর রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপর হও। তাহলে তার সঙ্গে এ সবই লাভ করবে” (লুক ১২:২৯-৩১)। শ্বরের ইচ্ছা আমরা যেন তাঁর বাক্য অনুসারে অনুশীলন ও জীবনযাপন করে তাঁর বাক্যর মাধ্যমে সত্য ও জীবন উভয়ই লাভ করি যাতে ঈশ্বরের সাথে সহাবস্থান করার যোগ্যতা অর্জন করে অবশেষে তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি। এইরূপে, আমাদের প্রার্থনাকে কেন্দ্রীভূত করতে হবে কীভাবে তাঁর বাক্যগুলিকে অনুশীলন ও অনুভব করা যায়; এইভাবে তিনি তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, আমরা অব্যাহত ভাবে আরও বেশি করে সত্যকে বুঝতে পারব, এবং আমরা ঈশ্বরের বাক্যগুলো মেনে চলতে সক্ষম হব। আমরা সবাই নিজেদের চেহারা, মর্যাদা, সম্পদ বা স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য কীভাবে প্রায়শই মিথ্যা বলি এবং প্রতারণামূলক কাজ করি তা ভেবে দেখুন। আমরা ভাল করেই জানি যে এইগুলি পাপ, কিন্তু আমরা নিজেদেরকে পাপ করা থেকে বিরত রাখতে পারি না। এমনকি যদি আমরা মিথ্যা নাও বলি, আমরা আমাদের অন্তরে নিজের নাম, সুবিধা এবং অবস্থান রক্ষা করার জন্য কী বলবো এবং আমাদের স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য কি করা উচিৎ সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছি। যখন আমরা সচেতন হই যে আমাদের মিথ্যা বলার বা অসৎ কিছু করার তাগিদ আছে তখন ঈশ্বরের সামনে এসে আমাদের প্রার্থনা করতে হবে, “হে ঈশ্বর! আমি দেখেছি যে আমি একটি শিশুর সরলতা বা সততা অর্জন করতে অক্ষম, কিন্তু তবুও নিজেকে মিথ্যা বলা বা প্রতারণা করা থেকে বিরত রাখতে পারিনা। আমি এইভাবে চলতে থাকলে আপনি অবশ্যই আমাকে ঘৃণা করবেন। হে ঈশ্বর! সত্যিই আমার আপনার পরিত্রাণের প্রয়োজন-আপনি আমাকে একজন সৎ ব্যক্তি হতে পরিচালিত করুন, এবং যদি আমি আবার মিথ্যা বলি বা প্রতারণা করি, আপনি আমাকে শাস্তি দেবেন।” এভাবে প্রার্থনা করার পর, যখন আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য আবার মিথ্যা বলার ইচ্ছা জাগবে, তখন আমরা আমাদের অন্তরে পবিত্র আত্মার তিরস্কার অনুভব করব। আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারব ঈশ্বর চান আমরা সৎ ব্যক্তি হই, এবং তিনি খুশী হয়ে যারা সৎ তাদেরই আশীর্বাদ করেন। আমরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য মিথ্যা কথা বলতে পারি না, কারণ এটি ঈশ্বরের কাছে বিরক্তিকর। একবার আমরা এই সমস্তগুলি উপলব্ধি করতে পারলে, আমরা হৃদয় থেকে আমাদের চতুর মতলবগুলিকে পরিত্যাগ করতে, তথ্য থেকে সত্যের অনুসন্ধান করতে, এবং সরাসরি ও স্পষ্টভাবে কথা বলতে সক্ষম হব। সর্বদা এইভাবে অনুশীলন করলে আমাদের অজান্তেই কম মিথ্যা কথা বলব, এবং আমরা একবারে একজন সৎ ব্যক্তি হওয়ার সত্যের বাস্তবতায় এক ধাপ প্রবেশ করতে সক্ষম হব। এটি জীবনে উন্নতির বিকাশের জন্য প্রার্থনার ফল। প্রভু যীশু বলেছেন, “তাই তোমাদের বলছি, চাও, তোমাদের দেওয়া হবে। সন্ধান কর পাবে, দ্বারে আঘাত কর, দ্বার খুলে দেওয়া হবে। যে চায় সে পায় এবং যে সন্ধান করে, সে সন্ধান পায়। যে দ্বারে করাঘাত করে, তার জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হয়” (লুক ১১:৯-১০)। স্পষ্টতই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঈশ্বরের কাছে সত্যকে বোঝার জন্য প্রার্থনা করি এবং প্রভুর বাক্যগুলিকে বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখি এবং সত্যতে প্রবেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি, ততক্ষণ ঈশ্বর আমাদের সত্যকে বুঝতে এবং বাস্তবে প্রবেশ করতে পথ দেখাবেন, এবং আমরাও একটু একটু করে আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনে উন্নতি করতে সক্ষম হব।
কখনও কখনও আমাদের জীবনে আমরা এমন কিছু সমস্যার সম্মুখীন হই যেগুলি আমাদের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, যেমন কর্মক্ষেত্রে অথবা বাড়ীতে কোনও সমস্যা, বা হয়তো কিছু ধরণের আকস্মিক বিপত্তির মুখোমুখি হওয়া। যখন এই জিনিসগুলি ঘটে, তখন আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই ঈশ্বরের কাছে এই অপ্রীতিকর পরিবেশকে দূর করার জন্য এবং আমাদের শান্তি ও সুখ দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করি। এমনকি যদি আমরা কঠোর পরিশ্রম করি অথবা ঈশ্বরের সেবা করার জন্য আমাদের সম্পর্ক এবং চাকরি ত্যাগ করি, যদি আমরা কোনও বড় অসুখের মতো সমস্যার সম্মুখীন হই আমরা নিজেদের শান্ত করতে পারিনা এবং ঈশ্বরের ইচ্ছাকে জানতে চাই, এবং প্রার্থনা করি যাতে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষ্য দিয়ে তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারি। পরিবর্তে, আমরা ঈশ্বরের কাছে আমাদের অসুস্থতা নিরাময়ের জন্য প্রার্থনা করি যাতে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অসুস্থতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাই। ঈশ্বর যখন আমাদের অনুরোধে রাজি হন, আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই এবং তাঁর স্তব করি, কিন্তু যখন তিনি আমাদের সুস্থ করেন না তখন আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস হারাই ও হতাশ হয়ে পড়ি; আমরা নেতিবাচকতার মধ্যে বাস করি, তাঁর সম্পর্কে অভিযোগ করি এবং এমনকি তাঁর জন্য আমাদের প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহ বোধ করতে পারি। আমরা এর থেকে দেখতে পাচ্ছি যে আমরা নিজেদের জৈবিক স্বার্থের প্রতি খুব বেশি মোহিত; আমরা আমদের হৃদয়ে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে ভালবাসি না বা চাই না। আমরা প্রায়ই আমাদের প্রার্থনায় অযৌক্তিক অনুরোধ করি স্বার্থপর ও ঘৃণ্য ভাবে তাঁর কাছে দাবি করি যেন তিনি আমাদের চাহিদা অনুসারে কাজ করেন। আমরা সৃষ্টি হিসাবে স্রষ্টার উপাসনা একেবারেই যথাযথভাবে করিনা। তবে কেন ঈশ্বর এই ধরণের প্রার্থনা শুনবেন? তাহলে কিভাবে আমাদের প্রার্থনা করা উচিৎ যাতে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারি? তাঁর বাক্য আমাদের সেই পথে পরিচালিত করে: “যখন তুমি অসুবিধার সম্মুখীন হও, সত্বর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর: ‘হে ঈশ্বর! আমি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে চাই, আপনার হৃদয়ের সন্তুষ্টির জন্য চূড়ান্ত কষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত, এবং যত বড় বাধারই সম্মুখীন হই না কেন, তবুও আমি অবশ্যই আপনাকে সন্তুষ্ট করবো। এমন কি যদি আমার সমস্ত জীবন বিসর্জন দিতে হয়, তবুও আমি অবশ্যই আপনাকে সন্তুষ্ট করবো!’ এই সংকল্প নিয়ে যখন এইভাবে প্রার্থনা করবে, তখন তুমি নিজ সাক্ষ্যে অটল থাকতে সক্ষম হবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরকে ভালোবাসাই প্রকৃত ঈশ্বর-বিশ্বাস)। “পরিমার্জনা চলাকালীন মানুষের কীভাবে ঈশ্বরকে ভালোবাসা উচিত? ঈশ্বরের পরিমার্জনা গ্রহণ করার জন্য তাঁকে ভালোবাসার সংকল্প করেই তা করা উচিত: পরিমার্জনা চলাকালীন তুমি অন্তরে এমন পীড়িত হও, যেন তোমার হৃদয়ে একটা ছুরি মোচড় দেওয়া হচ্ছে, তবু তুমি ঈশ্বরপ্রেমী হৃদয় ব্যবহার করে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে ইচ্ছুক, এবং দৈহিক ইচ্ছার তুষ্টিবিধানে অনিচ্ছুক বোধ করো। ঈশ্বর-প্রীতির অনুশীলন বলতে একেই বোঝায়। তুমি অন্তরে কষ্টভোগ করো, এবং তোমার যন্ত্রণা এক নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছে গেলেও এখনও তুমি ঈশ্বরের সম্মুখে এসে প্রার্থনা করতে ইচ্ছুক: ‘হে ঈশ্বর! আমি আপনাকে ত্যাগ করতে পারব না। যদিও আমার মধ্যে অন্ধকার রয়েছে, তাও আমি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে চাই; আপনি আমার হৃদয়কে জানেন, এবং আমি চাইব যে আপনি আমার মধ্যে আপনার ভালোবাসা আরও নিয়োগ করুন’” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, একমাত্র পরিমার্জনার অভিজ্ঞতা লাভ করেই মানুষ প্রকৃত ভালোবাসার অধিকারী হতে পারে)।
যখন আমাদের জীবনে দুঃখ-কষ্ট আসে, তখন আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ইচ্ছাকে অনুসন্ধান করতে হবে এবং প্রার্থনা করতে হবে যাতে আমরা সাক্ষ্য দিতে পারি এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারি। আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরকে ভালবাসতে এবং সন্তুষ্ট করতে হবে, এবং তাঁর সাক্ষ্যের জন্য শারীরিক কষ্ট সহ্য করতেও ইচ্ছুক হতে হবে এবং নিজেদের স্বার্থের জন্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধুমাত্র এই ধরণের প্রার্থনাই ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, এবং এটিতেও সেই ধরণের নীতি এবং যুক্তি রয়েছে যা সৃষ্ট জীব হিসাবে আমাদের মধ্যে থাকা উচিৎ। উদাহরণ স্বরূপ, ইয়োবেজোব তার সমস্ত সম্পত্তি এবং তার সন্তানদের আদালতের বিচারের মাধ্যমে হারিয়েছিলেন এবং তিনি নিজেও মাথা থেকে পা পর্যন্ত ফোড়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন; তিনি প্রচণ্ড মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করেন। কিন্তু কেন তাকে এই সকল কষ্ট পেতে দিয়েছেন তা নিয়ে তিনি ঈশ্বরের কাছে বিলাপ করেননি, বা ঈশ্বরকে তার কষ্ট দূর করতে বলেননি। পরিবর্তে প্রথমে তিনি নিজেকে সমর্পণ করে ঈশ্বরের ইচ্ছা খোঁজার জন্য প্রার্থনা করে ছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন যে তার মালিকানাধীন সমস্ত কিছু তার নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি, বরং ঈশ্বরের দ্বারা প্রদত্ত ছিল; ঈশ্বর দেন বা নিয়ে নেন, সৃষ্ট জীব হিসাবে আমাদের স্বাভাবিকভাবেই ঈশ্বরের বিধি ও ব্যবস্থাপনার কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আমাদের ঈশ্বরের কাছে কোনও চাহিদা বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকা উচিৎ নয়। এই কারণে মানুষ হিসাবে আমাদের অধিকারী হওয়া উচিৎ। ইয়োবে বলেছিল “আমি নগ্ন অবস্থায় মায়ের জঠর থেকে বাইরে এসেছিলাম, এবং নগ্ন অবস্থাতেই আমি সেখানে ফিরে যাবো: যিহোবা দিয়েছিলেন, আবার যিহোবাই ফিরিয়ে নিয়েছেন; যিহোবার নাম ধন্য হোক” (ইয়োবে ১:২১)। ইয়োবেজোব শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের প্রতি তার শ্রদ্ধা, আনুগত্য এবং বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে ঈশ্বরের জন্য একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী সাক্ষ্য বহন করেছিলেন। আমাদের ইয়োবেরজোবের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ এবং যখন আমাদের ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কিছুর সম্মুখীন হই, তখন আমাদের প্রথমে ঈশ্বরের সামনে নিজেকে শান্ত করতে হবে এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা খোঁজার জন্য প্রার্থনা করতে যেতে হবে, এবং প্রার্থনা করতে হবে যাতে আমরা সাক্ষ্য দিতে পারি এবং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারি। এটি আমাদের অনুশীলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। এইভাবে, ঈশ্বর আমাদের পথ দেখাতে পারেন; তিনি আমাদের সঙ্কটাবস্থায় সাহায্য করার জন্য বিশ্বাস এবং শক্তি দিতে পারেন, যাতে আমরা পরীক্ষার মাধ্যমে ঐশ্বরিক বিধানে দৃঢ় থাকতে পারি।
এই তিনটি বিষয়কে আমাদের প্রার্থনায় সংকল্প নিতে হবে। যতক্ষণ আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই নীতিগুলি অনুসারে অনুশীলন করি, আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা সকল ভাই ও বোনেরা এমন পুরস্কার লাভ করব যা আমরা কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।
জিঞ্জি করেছেন এখন ইতিমধ্যেই অন্তিম সময়ের সমাপ্তিকাল এবং ঘন ঘন বিভিন্ন দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে উল্লিখিত অন্তিম...
লিখেছেন মিংবিয়ান সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, পূর্বের বজ্রালোক খোলাখুলিভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছে যে অন্তিম দিনগুলিতে প্রভু যীশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের...
লিখেছেন চীনের জিয়াওমো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঈশ্বরের ঘনিষ্ঠতা লাভের দ্বারা, ঈশ্বরের সাথে প্রকৃত ভাব বিনিময় দ্বারাই কেবল ঈশ্বরের সাথে একটি...
সম্পাদকের নোট: সাম্প্রতিক কয়েক বছরে “রক্তাভ চাঁদ” এর মত মহাজাগতিক ঘটনা বারংবার দেখা গেছে। অতিমারী, ভূমিকম্প এবং দুর্ভিক্ষের মত বিভিন্ন...