দ্বিতীয় দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্ব জলরাশির আয়োজন করে, এবং তৈরি করে নভোমণ্ডল এবং মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে মৌলিক একটি স্থান আবির্ভূত হয়

বাইবেলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি পাঠ করা যাক: “ঈশ্বর বললেন, সৃষ্ট হোক নভোমণ্ডল, বিভক্ত করুক জলরাশিকে! ঈশ্বর এইভাবে নভোমণ্ডল সৃষ্টি করে তার ঊর্ধ্বস্থিত জলরাশি থেকে নিম্নস্থ জলরাশিকে পৃথক করলেন: ঠিক তেমনই ঘটল।” (আদিপুস্তক ১:৬-৭)। কী কী পরিবর্তন ঘটল যখন ঈশ্বর বললেন “সৃষ্ট হোক নভোমণ্ডল, বিভক্ত করুক জলরাশিকে”? শাস্ত্রে বলা হয়েছে: “ঈশ্বর এইভাবে নভোমণ্ডল সৃষ্টি করে তার ঊর্ধ্বস্থিত জলরাশি থেকে নিম্নস্থ জলরাশিকে পৃথক করলেন।” ঈশ্বর যখন এই বাক্য বললেন ও তা সম্পাদন করলেন, তখন তার ফল কী হয়েছিল? এর উত্তর নিহিত আছে অনুচ্ছেদের শেষ অংশে: “ঠিক তেমনই ঘটল।”

এই দু’টি সংক্ষিপ্ত বাক্য চমৎকার একটি দুর্দান্ত ঘটনাকে নথিবদ্ধ করে, এবং বর্ণনা করে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য—সেই অসাধারণ উদ্যোগ যার মধ্যে ঈশ্বর জলরাশিকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, এবং সৃষ্টি করেছিলেন এমন এক স্থান যেখানে মানুষের অস্তিত্ব বজায় থাকতে পারে …

এই চিত্রটিতে মুহূর্তের মধ্যে ঈশ্বরের চোখের সামনে জলরাশি ও নভোমণ্ডল আবির্ভূত হয়, এবং তা ঈশ্বরের বাক্যসমূহের কর্তৃত্ব বিভক্ত হয়ে যায়, এবং ঈশ্বরের নিযুক্ত পন্থায় এক “ঊর্ধ্ব” ও এক “অধঃ”-তে পৃথক হয়ে যায়। অর্থাৎ, ঈশ্বর-সৃষ্ট আকাশমণ্ডল শুধু নিচের জলরাশিকে আচ্ছাদিতই করেনি, বরং জলরাশিকে উপরেও তুলে ধরেছে…। এতে মানুষ তাঁর কর্তৃত্বের শক্তিময়তা এবং সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক জলরাশিকে সঞ্চালিত ও আদিষ্ট আদেশ করা এবং নভোমণ্ডল সৃষ্টি করার দৃশ্যের বিভূতির প্রতি শুধু হতবাক হয়ে চেয়ে থেকেছে, আর প্রশংসায় শিহরিত হয়েছে। ঈশ্বরের বাক্যসমূহের মধ্যে দিয়ে, ঈশ্বরের শক্তির মধ্য দিয়ে, এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্বের মধ্যে দিয়ে, ঈশ্বর আরও এক মহান কীর্তি অর্জন করেছিলেন। তা কি ঈশ্বরের কর্তৃত্বের শক্তি নয়? ঈশ্বরের কাজগুলির বিশ্লেষণের জন্য শাস্ত্রের ব্যবহার করা যাক: ঈশ্বর তাঁর বাক্যসমূহ বলেন, আর ঈশ্বরের এই বাক্যসমূহের কারণে জলরাশির মধ্যস্থলে এক গগনপট বিদ্যমান হয়। ঠিক একই সময়ে, ঈশ্বরের এই বাক্যসমূহের কারণেই, এই স্থানে এক অসাধারণ পরিবর্তন ঘটে, এবং তা কোনো সাধারণ অর্থে পরিবর্তন ছিল না, ছিল একপ্রকার প্রতিস্থাপন, যেখানে শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছিল একটা কিছুর। তা ছিল সৃষ্টিকর্তার চিন্তাপ্রসূত, এবং শূন্য থেকে কিছু একটায় পরিণত হয়েছিল সৃষ্টিকর্তার উচ্চারিত বাক্যসমূহের কারণেই, উপরন্তু, সেই মুহূর্ত থেকেই, তা সৃষ্টকর্তার নিমিত্তই বিদ্যমান ও অবিচল থাকবে, এবং সৃষ্টিকর্তার চিন্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে তা স্থানান্তরিত, পরিবর্তিত, এবং পুনর্নবীকৃত হবে। এই অনুচ্ছেদটির মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার এই সমগ্র বিশ্বজগৎ-সৃষ্টিতে তাঁর দ্বিতীয় কার্যটি বর্ণিত হয়। তা ছিল সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব ও শক্তির অন্য এক অভিব্যক্তি, সৃষ্টিকর্তার অপর এক অগ্রণী উদ্যোগ। তা ছিল বিশ্বপ্রতিষ্ঠার পর থেকে সৃষ্টিকর্তার অতিবাহিত দ্বিতীয় দিবস, আর এটি তাঁর জন্য ছিল এক বিস্ময়কর দিবস: তিনি আলোকের মধ্যে হেঁটে গিয়েছিলেন, তিনি গগনমণ্ডল আহূত করেছিলেন, তিনি জলরাশির আয়োজন তথা জলরাশিকে শাসন করেছিলেন, এবং তাঁর কার্য, তাঁর কর্তৃত্ব, এবং তাঁর শক্তি নিযুক্ত হয়েছিল নতুন দিবসে …

ঈশ্বর তাঁর বাক্যসমূহ বলার পূর্বে কি জলরাশির মধ্যস্থলে নভোমণ্ডল ছিল? একেবারেই নয়! এবং কী হল ঈশ্বরের এই বাক্যগুলি বলার পর: “সৃষ্ট হোক নভোমণ্ডল”? ঈশ্বর যে বস্তুগুলি চেয়েছিলেন সেগুলি অবির্ভূত হল; জলরাশির মধ্যস্থলে দেখা দিল নভোমণ্ডল, এবং জলরাশি পৃথক হয়ে গেল, কারণ ঈশ্বর বললেন: “বিভক্ত করুক জলরাশিকে”। এইভাবে, ঈশ্বরের বাক্যসমূহ অনুসরণ করে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব এবং শক্তির ফলস্বররূপ সকল জিনিসের মাঝে মাঝে দু’টি নতুন বস্তু, দু’টি সদ্যজাত পদার্থের আবির্ভাব ঘটল। এই দু’টি নতুন বস্তুর আবির্ভাব সম্পর্কে তোমরা কী অনুভব করো? তোমরা কি সৃষ্টিকর্তার শক্তির মাহাত্ম্য অনুভব করো? তোমরা কি সৃষ্টিকর্তার অনন্য ও অসামান্য বলবত্তা অনুভব করো? ঈশ্বরের কর্তৃত্বের কারণেই এহেন বলবত্তা তথা ক্ষমতার মাহাত্ম্য, এবং এই কর্তৃত্ব হল স্বয়ং ঈশ্বরেরই এক উপস্থাপনা, এবং স্বয়ং ঈশ্বরেরই এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।

এই অনুচ্ছেদটি কি তোমাদের আরও একবার ঈশ্বরের অনন্যতার এক সুগভীর চেতনা প্রদান করে? সত্যি বলতে কি, এটা একেবারেই যথেষ্ট নয়; সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব ও শক্তি এর বাইরেও বহুদূর ব্যাপ্ত। তাঁর অনন্যতা নিছকই এই কারণে নয় যে তাঁর অধিকৃত সারসত্য অন্য যেকোনো জীবের চেয়ে আলাদা, বরং এই কারণেও, যে, তাঁর কর্তৃত্ব ও শক্তি অসাধারণ, সীমাহীন, সকলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, এবং সকলের চেয়ে উচ্চে দণ্ডায়মান, উপরন্তু, কারণ তাঁর কর্তৃত্ব, এবং তাঁর যা আছে ও তিনি যা, তা জীবন সৃষ্টি করতে ও অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে পারে, এবং সৃষ্টি করতে পারে প্রতিটি আকর্ষণীয় ও অসামান্য মুহুর্ত ও লহমা। ঠিক একই সময়ে, তিনি তাঁর সৃষ্ট প্রাণকে শাসন করতে ও অলৌকিক ঘটনাগুলির উপর এবং তাঁর সৃষ্টি করা প্রতিটি মুহুর্ত ও লহমার উপর সার্বভৌমত্ব ধারণ করতে সক্ষম।

—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ১

পূর্ববর্তী: প্রথম দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বদান্যতায় মানবজাতির দিন এবং রাতের সূচনা হয় এবং অবিচল থাকে

পরবর্তী: তৃতীয় দিবসে, ঈশ্বরের বাক্যসমূহ জন্ম দেয় পৃথিবী এবং সমুদ্রের এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিশ্বে প্রাণসঞ্চার করে

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

চতুর্থ দিবসে, ঈশ্বর আবার তাঁর কর্তৃত্ব প্রয়োগ করায় মানবজাতির বিভিন্ন ঋতু, দিন এবং বছরগুলি সৃষ্টি হয়

সৃষ্টিকর্তা তাঁর পরিকল্পনা সম্পাদনের জন্য তাঁর বাক্যসমূহের ব্যবহার করেছিলেন, এবং এইভাবে তিনি তাঁর পরিকল্পনার প্রথম তিন দিবস অতিবাহিত...

প্রথম দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বদান্যতায় মানবজাতির দিন এবং রাতের সূচনা হয় এবং অবিচল থাকে

প্রথম অনুচ্ছেদটির প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাকঃ: “ঈশ্বর বললেন, দীপ্তি হোক! দীপ্তির হল আবির্ভাব। ঈশ্বর দেখলেন, চমৎকার এই দীপ্তি। অন্ধকার থেকে...

পঞ্চম দিবসে, বিবিধ এবং বৈচিত্র্যময় গঠনের জীবন বিভিন্ন উপায়ে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব প্রদর্শন করে

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, “ঈশ্বর বললেন, জলরাশি পূর্ণ হোক নানা জাতির জলচর প্রাণীতে এবং পৃথিবীর উপরে আকাশে উড়ে বেড়াক পক্ষীকুল। ঈশ্বর সৃষ্টি করলেন...

ঈশ্বর হবাকে সৃষ্টি করলেন

আদিপুস্তক ২:১৮-২০ তারপর প্রভু পরমেশ্বর বললেন, মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তাকে তার যোগ্য এক সঙ্গিনী দেব। প্রভু পরমেশ্বর মৃত্তিকা থেকে...

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন