সকল বস্তু ও জীবিত সত্তার উপর সৃষ্টিকর্তার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্যের ঘটনাটিই সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের বাস্তব অস্তিত্বের সাক্ষ্য দেয়

অনুরূপভাবে, ইয়োবের উপর যিহোবার আশীর্বাদ বর্ষণের ঘটনাটি ইয়োবের পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে। ঈশ্বর ইয়োবকে কী প্রদান করেছিলেন? “প্রভু পরমেশ্বর ইয়োবকে প্রথম জীবনের চেয়ে শেষ জীবনে আরও বেশী আশীর্বাদ করলেন। ইয়োব চোদ্দ হাজার মেষ, ছয় হাজার উট, দুহাজার বৃষ এবং এক হাজার গর্দভীর মালিক হলেন।” (ইয়োব ৪২:১২)। মানুষের পরিপ্রেক্ষিত থেকে, ইয়োবকে যা প্রদান করা হয়েছিল সেই সামগ্রীগুলি কী? সেগুলি কি মানবজাতির দৃষ্টিতে ধনসম্পদ ছিল? এই সম্পত্তি লাভের পর, ইয়োব কি সেই যুগে অত্যন্ত ধনবান হয়ে উঠতো না? তাহলে, কীভাবে সে এরকম ধনসম্পদের অধিকারী হল? কীসের দরুন তার এই বিত্তলাভ ঘটলো? বলাই বাহুল্য—ঈশ্বরের আশীর্বাদের কারণেই ইয়োব এই সম্পত্তির অধিকার লাভ করেছিল। এই ধনসম্পদকে ইয়োব কোন দৃষ্টিতে দেখেছিল, এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদ বিষয়েই বা তার বিবেচনা কীরূপ ছিল—এসব নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা করবো না। ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রসঙ্গে বলতে হয়, সকল মানুষই, দিনরাত, ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা করে, অথচ তার জীবৎকালে কতখানি ধনসম্পদ সে অর্জন করতে সক্ষম, বা সে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করতে পারে কি না তার উপর মানুষের কোনো হাত নেই—এটা একটা তর্কাতীত সত্য! ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে মানুষের উপর যেকোনো সম্পদ অর্পণ করার, মানুষকে যেকোনো আশীর্বাদ লাভের সুযোগ দেওয়ার, কিন্তু তবু ঈশ্বরের আশীর্বাদ দানের একটি নীতি আছে। কী ধরনের মানুষকে ঈশ্বর আশীর্বাদ দান করেন? নিশ্চিতভাবেই, যে মানুষদের তিনি পছন্দ করেন তাদেরই আশীর্বাদ দান করেন। অব্রাহাম ও ইয়োব দুজনেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করেছিল, কিন্তু তাদের প্রাপ্ত আশীর্বাদ অভিন্ন ছিল না। অব্রাহামকে ঈশ্বর বালুরাশি ও নক্ষত্ররাজির সমসংখ্যক বংশধর দানের মাধ্যমে আশীর্বাদধন্য করেছিলেন। অব্রাহামের উপর আশীর্বাদ বর্ষণের দ্বারা, তিনি একজন একক মানুষের বংশধরসমূহকে, এবং একটি রাষ্ট্রকে, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধিশালী করে তুলেছিলেন। এর মাধ্যমে, ঈশ্বরের কর্তৃত্ব মানবজাতিকে শাসিত করেছিল, সকল বস্তু ও জীবিত সত্তার মধ্যে যে মানবজাতি ঈশ্বরের শ্বাসবায়ুকে তার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে গ্রহণ করেছিল। ঈশ্বরের কর্তৃত্বের সার্বভৌমত্বের অধীনে, এই মানবজাতি ঈশ্বরের নির্ধারিত গতিতে বংশবৃদ্ধি করেছিল, এবং ঈশ্বর নির্ধারিত এক পরিসরের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। নির্দিষ্ট করে, এই রাষ্ট্রের টিকে থাকার ক্ষমতা, প্রসারণের হার, এবং সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল—এই সবকিছুই ছিল ঈশ্বরের বন্দোবস্তের অঙ্গ, এবং এই সবকিছুর নীতি অব্রাহামের নিকট ঈশ্বর যে অঙ্গীকার করেছিলেন সম্পূর্ণরূপে তার ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। অর্থাৎ, পরিস্থিতি যা-ই হোক, ঈশ্বরের অঙ্গীকার অবাধে অগ্রসর হতো এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্বের প্রযত্নের অধীনে বাস্তবায়িত হতো। অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের অঙ্গীকার মতো, জগতে যতই উথাল-পাথাল ঘটুক না কেন, যুগকাল নির্বিশেষে, মানবজাতিকে যে বিপর্যয়ই সহ্য করতে হোক, অব্রাহামের বংশধরেরা কিন্তু সমূলে বিনষ্ট হওয়ার ঝুঁকির সম্মুখীন হতো না, এবং তাদের রাষ্ট্রও বিলুপ্ত হতো না। এদিকে, ইয়োবের উপর বর্ষিত ঈশ্বরের আশীর্বাদ তাকে অত্যন্ত বিত্তশালী করে দিল। তাকে ঈশ্বর যা প্রদান করেছিলেন তা হলো একদল জীবন্ত, শ্বাসরত প্রাণী, যেগুলির খুঁটিনাটি বিবরণও—তাদের সংখ্যা, বংশবিস্তারের হার, বেঁচে থাকার হার, তাদের শরীরে চর্বির পরিমাণ, ইত্যাদি—সবকিছুই ঈশ্বরের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। এই জীবন্ত সত্তাগুলির যদিও বাক্‌শক্তি ছিল না, তবু তারাও সৃষ্টিকর্তার বন্দোবস্তের অঙ্গ ছিল, এবং তাদের জন্য ঈশ্বরের বন্দোবস্তের অন্তরালবর্তী নীতিটি ইয়োবকে ঈশ্বর যে আশীর্বাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার ভিত্তিতেই সাব্যস্ত হয়েছিল। অব্রাহাম ও ইয়োবকে ঈশ্বর যে আশীর্বাদ দান করেছিলেন তাতে প্রতিশ্রুত বিষয়গুলি স্বতন্ত্র হলেও, যে কর্তৃত্ব নিয়ে সৃষ্টিকর্তা সকল বস্তু ও জীবন্ত সত্তাকে পরিচালিত করেছিলেন তা অভিন্ন ছিল। ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার প্রতিটি অনুপুঙ্খ অব্রাহাম ও ইয়োবের কাছে তাঁর ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গীকার ও আশীর্বাদের মধ্যে অভিব্যক্ত হয়, এবং আরেকবার তা মানবজাতির কাছে প্রতিপন্ন করে যে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব মানুষের কল্পনার সীমাকে অতিক্রম করে বহুদূর প্রসারিত। এই অনুপুঙ্খগুলি মানুষকে আরেকবার জানায় যে, সে যদি ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিষয়ে অবগত হতে চায়, তাহলে একমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে দিয়ে ও ঈশ্বরের কার্যের অভিজ্ঞতা লাভের মাধ্যমেই তা অর্জিত হতে পারে।

সকলকিছুর উপর সার্বভৌমত্বের বিষয়ে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব মানুষকে একটি বাস্তব সত্যকে প্রণিধান করার সুযোগ দেয়: এমন নয় যে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব কেবলমাত্র এই বাক্যগুলির মধ্যেই অন্তর্ধৃত “এবং ঈশ্বর বললেন, আলোর আবির্ভাব হোক, আর আলোকের অভ্যুদয় হলো, এবং, নভোমণ্ডল গঠিত হোক, আর মহাকাশ সৃষ্টি হলো, এবং, স্থলভূমি দেখা দিক, আর শুকনো জমি মাথা চাড়া দিলো”, বরং, তদুপরি, যেভাবে তিনি আলোর বিদ্যমানতা অব্যাহত রাখলেন, নভোমণ্ডলকে অন্তর্হিত হতে দিলেন না, এবং স্থলভূমিকে চিরকাল জলরাশি থেকে পৃথক রাখলেন, এবং সেই সঙ্গে যেভাবে তিনি তাঁর সৃষ্ট বস্তুসকলের উপর, অর্থাৎ আলোক, মহাকাশ, ও স্থলভূমির উপর আধিপত্য করলেন ও সেগুলিকে পরিচালিত করলেন তার মধ্যেও তাঁর কর্তৃত্ব মূর্ত হয়ে ওঠে। মানবজাতির উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রদানের মধ্যে আর কোন বিষয় তুমি লক্ষ্য করো? স্পষ্টতই, অব্রাহাম ও ইয়োবকে আশীর্বাদ প্রদানের পরেই ঈশ্বরের পদক্ষেপ স্থগিত হয়ে যায়নি, কারণ তখন সবেমাত্র তিনি তাঁর কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে শুরু করেছিলেন, এবং তিনি তাঁর প্রতিটি বাক্যকে বাস্তবতায় পরিণত করতে চেয়েছিলেন, এবং চেয়েছিলেন তাঁর কথিত প্রতিটি খুঁটিনাটি সত্য হয়ে উঠুক, আর তাই, পরবর্তী বছরগুলিতে, যা কিছু তাঁর অভিপ্রেত ছিল সেগুলির সম্পাদন তিনি অব্যাহত রাখেন। ঈশ্বরের কর্তৃত্ব আছে বলেই হয়তো মানুষ মনে করে যে ঈশ্বরের কেবল বাক্যোচ্চারণ করাই যথেষ্ট, এবং কোনো অঙ্গুলিহেলন ব্যতিরেকেই, সমস্ত বিষয় ও সকলকিছু নিষ্পন্ন হয়ে যায়। এরকম কল্পনা নিতান্তই হাস্যকর! বাক্যের মাধ্যমে মানুষের সাথে ঈশ্বরের সন্ধিচুক্তি স্থাপন, এবং বাক্যের প্রয়োগে ঈশ্বরের সমস্তকিছু সম্পাদনের বিষয়ে তুমি যদি শুধুমাত্র একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গিই গ্রহণ করো, এবং যাবতীয় কিছুর অস্তিত্বের উপর ঈশ্বরের কর্তৃত্বই যে আধিপত্য ধারণ করে, তার ইশারা ও বাস্তব সত্যগুলি প্রত্যক্ষ করতে যদি অসমর্থ হও, তাহলে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিষয়ে তোমার উপলব্ধি নেহাতই শূন্যগর্ভ ও হাস্যকর! মানুষ যদি ঈশ্বরকে এই রকম বলে কল্পনা করে, তাহলে, বলতেই হবে, ঈশ্বর সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান খাদের শেষ কিনারার দিকে চালিত হয়ে এক কানাগলিতে পৌঁছে গেছে, কারণ মানুষের কল্পিত ঈশ্বর নিছক নির্দেশ জারি করে এমন এক যন্ত্রবিশেষ, কর্তৃত্বের অধিকারী ঈশ্বর নন। অব্রাহাম ও ইয়োবের দৃষ্টান্তগুলির মাধ্যমে তুমি কী দেখেছো? তুমি কি ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার বাস্তব দিকটি প্রত্যক্ষ করেছো? অব্রাহাম ও ইয়োবকে আশীর্বাদ দানের পর, ঈশ্বর আর সেই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকেন নি, বা তাঁর সংবাদবাহকদের কাজে নিযুক্ত করে ফলাফল দেখার জন্য অপেক্ষাও করেন নি। বরং তার সম্পূর্ণ বিপরীতবর্তী হয়ে, ঈশ্বর বাক্যোচ্চারণ করা মাত্র, ঈশ্বরের কর্তৃত্বের নির্দেশনায়, সমস্তকিছু ঈশ্বরের মনোবাঞ্ছা পূরণের কাজ শুরু করে দিলো, এবং ঈশ্বরের দরকার মতো মানুষজন, জিনিসপত্র, ও সামগ্রী প্রস্তুত করা হল। অর্থাৎ, ঈশ্বরের মুখ থেকে বাক্যগুলি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই, সমগ্র ভূভাগ জুড়ে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব প্রযুক্ত হতে শুরু করলো, এবং অব্রাহাম ও ইয়োবের কাছে যে অঙ্গীকার তিনি করেছিলেন সেগুলির সম্পাদন ও পরিপূরণের এক কার্যক্রম তিনি চালু করে দিলেন, এবং সেই সাথেই তাঁর অভীষ্ট কার্যের প্রতিটি ধাপ ও প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে যা যা করা প্রয়োজন সেগুলির জন্য সমস্ত রকমের যথোচিত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিও তিনি নিয়ে ফেললেন। এই সময়টায়, ঈশ্বর শুধুমাত্র তাঁর বার্তাবাহকদেরই সুদক্ষভাবে পরিচালিত করেননি, তাঁর সৃষ্ট সকল বস্তুকেও পরিচালিত করেছিলেন। অর্থাৎ, তাঁর কর্তৃত্ব প্রয়োগের পরিসরের মধ্যে কেবলমাত্র বার্তাবাহকরাই ছিল না, বরং সৃষ্টির সমস্ত বস্তুই ছিল, যেগুলো তাঁর অভীষ্ট কার্যের সিদ্ধির লক্ষ্যে সুকৌশলে পরিচালিত হয়েছিল; এগুলিই ছিল ঈশ্বরের কর্তৃত্ব প্রয়োগের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি। তোমাদের কল্পনায়, কারো কারো ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিষয়ে পশ্চাদুল্লিখিত উপলব্ধি থাকতে পারে: ঈশ্বরের কর্তৃত্ব আছে, এবং ঈশ্বরের ক্ষমতাও রয়েছে, তাই ঈশ্বরের কেবল তৃতীয় স্বর্গে, বা কোনো একটা নির্দিষ্ট স্থানে থাকলেই চলে, এবং তাঁর কোনো সুনির্দিষ্ট কাজ করার দরকার নেই, এবং ঈশ্বরের সমগ্র ক্রিয়াকর্ম তাঁর ভাবনার মধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে যায়। কেউ কেউ এমনও ভাবতে পারে যে, ঈশ্বর যদিও অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন, কিন্তু তাঁর কিছু করারই প্রয়োজন পড়ে নি, এবং কেবল বাক্যোচ্চারণ করাই তাঁর পক্ষে যথেষ্ট ছিল। সত্যি কি এমনই ঘটেছিল? স্পষ্টতই না! ঈশ্বর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী হলেও, তাঁর কর্তৃত্ব প্রকৃত ও বাস্তব, শূন্যগর্ভ নয়। ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার প্রামাণিকতা ও বাস্তবতা ক্রমান্বয়ে প্রকাশিত ও মূর্ত হয়ে ওঠে তাঁর সকলকিছুর সৃজনের মধ্যে, যাবতীয় কিছুর উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে, এবং মানবজাতিকে পথপ্রদর্শন ও পরিচালিত করতে তাঁর অনুসৃত পদ্ধতির মধ্যে। মানবজাতি ও সকল বস্তুর উপর ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের প্রতিটি পদ্ধতি, প্রতিটি পরিপ্রেক্ষিত, এবং প্রতিটি অনুপুঙ্খ, এবং তাঁর দ্বারা নিষ্পন্ন সকল কার্য, আর সেই সাথে সকল বস্তু সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি—এই সবকিছুই আক্ষরিকভাবে প্রতিপন্ন করে যে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা শূন্যগর্ভ বাগাড়ম্বর মাত্র নয়। তাঁর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা অবিরত, এবং সকল বস্তুর মধ্যেই, প্রদর্শিত ও প্রকাশিত হয়। এই প্রকাশ ও উদ্ঘাটনগুলি ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বাস্তব অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়, কারণ তিনি তাঁর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করছেন তাঁর কার্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, সমস্তকিছুকে নির্দেশদান করতে, এবং সমস্তকিছুকে প্রতিটি মুহূর্তে শাসন করতে; স্বর্গদূতরাই হোক কি ঈশ্বরের বার্তাবহ—কারো পক্ষেই ঈশ্বরের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বকে প্রতিস্থাপিত করা সম্ভব নয়। অব্রাহাম ও ইয়োবেকে কোন আশীর্বাদ প্রদান করা হবে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঈশ্বর—এই সিদ্ধান্ত ঈশ্বরকেই নিতে হতো। ঈশ্বরের বার্তাবহরা নিজেরা গিয়ে অব্রাহাম ও ইয়োবের সাথে সাক্ষাৎ করলেও, তাদের এই কাজের ভিত্তি ছিল ঈশ্বরের আদেশসমূহ, এবং তাদের পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছিল ঈশ্বরের কর্তৃত্বের অধীনে, এবং একইভাবে, এই দূতেরাও ছিল ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের অধীন। বাইবেলে লিপিবদ্ধ নথিতে যদিও মানুষ ঈশ্বরের বার্তাবাহকদেরই অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখে, যিহোবা ঈশ্বরকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু করতে সেখানে দেখা যায় না, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, একমাত্র যিনি সত্যিই ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রয়োগ করেন তিনি স্বয়ং ঈশ্বর, এবং এ ব্যাপারে কোনো মানুষের কোনো সংশয় অনুমোদনযোগ্য নয়! যদিও তুমি লক্ষ্য করেছো যে স্বর্গদূত ও বার্তাবাহকেরা প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী এবং তারা অলৌকিক কর্মও সম্পাদন করেছে, অথবা ঈশ্বরের দ্বারা অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালন করেছে, কিন্তু তাদের কাজকর্মগুলি করা হয় নিতান্তই ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বসমূহ সম্পন্ন করার স্বার্থে, এবং কোনোক্রমেই সেগুলি ঈশ্বরের কর্তৃত্বের এক প্রদর্শন নয়—কারণ সমস্তকিছু সৃষ্টি করার ও শাসন করার যে কর্তৃত্ব সৃষ্টিকর্তার রয়েছে, তা কোনো মানুষ বা বস্তুর নেই, বা তারা এর অধিকারী নয়। সুতরাং, কোনো মানুষ বা বস্তুই সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে বা প্রদর্শন করতে পারে না।

—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ১

পূর্ববর্তী: সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব স্থান, কাল, বা ভৌগোলিক পরিসরের দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়, এবং সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব গণনার অতীত

পরবর্তী: সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব অপরিবর্তনীয় এবং অপ্রতিরোধ্য

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

দ্বিতীয় দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্ব জলরাশির আয়োজন করে, এবং তৈরি করে নভোমণ্ডল এবং মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে মৌলিক একটি স্থান আবির্ভূত হয়

বাইবেলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি পাঠ করা যাক: “ঈশ্বর বললেন, সৃষ্ট হোক নভোমণ্ডল, বিভক্ত করুক জলরাশিকে! ঈশ্বর এইভাবে নভোমণ্ডল সৃষ্টি করে তার...

পঞ্চম দিবসে, বিবিধ এবং বৈচিত্র্যময় গঠনের জীবন বিভিন্ন উপায়ে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব প্রদর্শন করে

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, “ঈশ্বর বললেন, জলরাশি পূর্ণ হোক নানা জাতির জলচর প্রাণীতে এবং পৃথিবীর উপরে আকাশে উড়ে বেড়াক পক্ষীকুল। ঈশ্বর সৃষ্টি করলেন...

ষষ্ঠ দিবসে, সৃষ্টিকর্তা কথা বলেন, এবং তাঁর মনের মধ্যে থাকা প্রতিটি জীব একাদিক্রমে আবির্ভূত হয়

ইন্দ্রিয়াতীতভাবে, সৃষ্টিকর্তার সমস্ত সৃষ্টিকার্য পাঁচ দিন ধরে অব্যাহত ছিল, ঠিক তার পরপরই সৃষ্টিকর্তা তাঁর সকল বস্তু সৃষ্টির ষষ্ঠ দিবসকে...

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন