ইয়োবের সাক্ষ্যের দ্বারা পরবর্তী প্রজন্মকে দেওয়া সতর্কবাণী ও আলোকপ্রাপ্তি
ঈশ্বরের কোনো ব্যক্তিকে সম্পূর্ণভাবে অর্জন করার প্রক্রিয়াকে উপলব্ধি করার সাথে একই সময়েই মানুষ ঈশ্বরের ইয়োবকে শয়তানের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারবে। তখন মানুষ আর ইয়োবের যন্ত্রণা দেখে বিহ্বল নয়, এর তাৎপর্য তাদের মধ্যে নতুন সমাদর পেয়েছে। তারা নিজেরা ইয়োবের মতো প্রলোভনের সম্মুখীন হবে কি না সে বিষয়ে আর উদ্বিগ্ন নয়, এবং ঈশ্বরের পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়াকে আর প্রতিরোধ বা অস্বীকার করে না। ইয়োবের বিশ্বাস ও আনুগত্য, এবং তার শয়তানকে অতিক্রম করার সাক্ষ্য, মানুষের কাছে বিরাট বড় সহায়তার এবং উৎসাহের উৎস হয়ে রয়েছে। ইয়োবের মধ্যে তারা নিজেদের পরিত্রাণের আশা প্রত্যক্ষ করে, আর এটাও দেখে যে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস, আনুগত্য ও ভীতির মাধ্যমে শয়তানকে পরাজিত করা ও তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব। তারা দেখে যে যতক্ষণ তারা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব ও আয়োজন মেনে চলবে, যতক্ষণ সবকিছু হারানোর পরেও ঈশ্বরকে পরিত্যাগ না করার দৃঢ় সংকল্প ও বিশ্বাস বজায় রাখতে পারবে, ততক্ষণ তারা শয়তানকে অপমানিত এবং পরাজিত করতে পারে, তারা এও দেখে যে শয়তানকে ভীত করে তুলতে ও প্রহারের মাধ্যমে পশ্চাদপসরণে বাধ্য করতে তাদের প্রয়োজন শুধুমাত্র নিজের সাক্ষ্যে অটল থাকার দৃঢ় সংকল্প ও অধ্যবসায়—এমনকি তার জন্য যদি প্রাণও হারাতে হয়। ইয়োবের সাক্ষ্য পরবর্তী প্রজন্মগুলোর জন্য একটা সতর্কবাণী, এবং এই সতর্কবাণী তাদের বলে যে তারা যদি শয়তানকে পরাজিত না করে, তাহলে তারা কখনোই শয়তানের অভিযোগ ও হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবে না, বা কখনোই শয়তানের নিপীড়ন ও আক্রমণ থেকে অব্যাহতি পাবে না। ইয়োবের সাক্ষ্য পরবর্তী প্রজন্মকে আলোকিত করেছে। এই আলোকপ্রাপ্তি মানুষকে শেখায় যে তারা নিখুঁত ও ন্যায়নিষ্ঠ হলে শুধুমাত্র তবেই ঈশ্বরে ভীতি অর্জন ও মন্দ কর্ম পরিত্যাগে সক্ষম হবে; এটা তাদের শেখায় যে শুধু ঈশ্বরে ভীতি অর্জন ও মন্দ কর্ম পরিত্যাগে সক্ষম হলে তবেই তারা ঈশ্বরের শক্তিশালী ও দৃঢ় সাক্ষ্য বহন করতে পারবে; ঈশ্বরের শক্তিশালী ও দৃঢ় সাক্ষ্য বহন করতে পারলে তবেই তারা নিজেদের শয়তানের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে পারবে এবং ঈশ্বরের পথনির্দেশ ও সুরক্ষার ছায়ায় জীবনযাপন করতে পারবে—আর শুধুমাত্র তখনই তারা প্রকৃতপক্ষে উদ্ধার লাভ করবে। যারা পরিত্রাণের অন্বেষণ করে তাদের সকলেরই উচিত ইয়োবের ব্যক্তিত্ব ও জীবনের সাধনা অনুকরণ করা। সে তার সমগ্র জীবনকালে যা যাপন করেছিল এবং তার পরীক্ষার সময়কালে যে আচরণ করেছিল, সেগুলো তাদের সকলের কাছে একটা মূল্যবান সম্পদ যারা ঈশ্বরে ভীতি অর্জন ও মন্দ কর্ম পরিত্যাগের পথের সাধনা করতে চায়।
—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, ঈশ্বরের কর্ম, ঈশ্বরের স্বভাব এবং স্বয়ং ঈশ্বর ২