মানবজাতির জন্য ঈশ্বর যে দৈনন্দিন খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুত করেন (পর্ব ২)

আমরা এখন কী কী বিষয়ে আলোচনা করলাম? আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম মানবজাতির বসবাসের পরিবেশ নিয়ে, এবং ঈশ্বর সেই পরিবেশের জন্য কী করেছিলেন ও তিনি যা যা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তা নিয়ে। আমরা আলোচনা করেছি তিনি কী আয়োজন করেছিলেন; সৃষ্ট বস্তুসমূহের মধ্যের সম্পর্কগুলি, যা ঈশ্বর মানবজাতির জন্য প্রস্তুত করেছিলেন; এবং ঈশ্বর কীভাবে এই সম্পর্কগুলিকে সাজিয়েছেন যাতে তাঁর সৃষ্টির বস্তুসকল মানবজাতির ক্ষতি করতে না পারে তা নিয়ে। ঈশ্বর তাঁর সৃষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের কারণে মানবজাতির পরিবেশের উপর ঘটতে পারতো এরকম ক্ষতিও প্রশমিত করেছেন, যাতে সমস্ত কিছুই তাদের সর্বোচ্চ উদ্দেশ্য পূরণ করে, এবং মানবজাতিকে উপকারী উপাদান সহ একটি উপকারী পরিবেশ এনে দেয়, আর এইভাবে এই ধরনের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং জীবন ও প্রজনন-চক্রকে অবিচলিতভাবে অব্যাহত রাখতে মানবজাতিকে সক্ষম করে। এরপর, আমরা আলোচনা করেছি মানব শরীরের প্রয়োজনীয় খাদ্য—মানবজাতির দৈনন্দিন আহার ও পানীয় নিয়ে। মানবজাতির বেঁচে থাকার জন্য এটিও একটি জরুরি শর্ত। অর্থাৎ, মানবদেহ শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়েই বেঁচে থাকতে পারে না, শুধু সূর্যালোক, বায়ু কিংবা উপযুক্ত তাপমাত্রাতেই টিকে থাকতে পারে না। মানুষকে পেটও ভরাতে হয়, এবং ঈশ্বর কোনোকিছু উপেক্ষা না করে সেইসব জিনিসের উৎস প্রস্তুত করেছিলেন যার সাহায্যে মানবজাতি তা করতে পারে, সেগুলিই মানবজাতির খাদ্যের উৎস। এমন সমৃদ্ধ ও প্রচুর উৎপাদন—মানবজাতির খাদ্য ও পানীয়ের উৎস—এগুলি দেখার পর তুমি কি একথা বলতে পারো যে ঈশ্বরই মানবজাতির ও তাঁর সৃষ্টির অন্তর্গত সমস্ত বস্তুর সরবরাহের উৎস? সৃষ্টির সময়ে, ঈশ্বর যদি শুধু গাছপালা ও তৃণলতা কিংবা যেকোনো সংখ্যক অন্যান্য জীব সৃষ্টি করতেন, আর এই বিভিন্ন জীব ও গাছপালা যদি শুধুই গাভী আর মেষদের খাওয়ার জন্যই হতো, অথবা জেব্রা, হরিণ ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের পশুর জন্য, মনে করো সিংহ যদি জেব্রা আর হরিণের মতো পশুদের ভক্ষণ করত, আর আর বাঘ ভক্ষণ করত মেষ ও শূকরের মত পশুদের—অথচ মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত কিছুই না থাকত, তাহলে কি চলতো? না, চলতো না। মানবজাতি বেশিদিন অস্তিত্ত্বরক্ষা করতে সমর্থ হতো না। কী হতো যদি মানুষ শুধুই পাতা ভক্ষণ করতো? তাতেও কি কাজ হতো? মেষের জন্য তৈরী যে তৃণ, তা কি মানুষ ভক্ষণ করতে পারতো? কোনো কোনো সময়ে তারা সেই চেষ্টা করলে হয়তো খুব বেশি ক্ষতি হতো না, কিন্তু তারা যদি দীর্ঘকাল এইসব ভক্ষণ করতো, তাহলে তাদের পেট তা সহ্য করতে পারতো না, এবং মানুষ দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতেও পারতো না। এমন কিছু কিছু বস্তুও রয়েছে যা পশুরা খেতে পারে, কিন্তু মানুষের পক্ষে তা বিষাক্ত—পশুরা সেসব খেলে তাদের কোনো ক্ষতি হয় না, কিন্তু মানুষের জন্য বিষয়টি তেমন নয়। অর্থাৎ বলা যায়, ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তাই ঈশ্বরই মানবদেহের নীতি ও গঠন এবং মানুষের কী প্রয়োজন তা সবচেয়ে ভালো জানেন। ঈশ্বর নিখুঁত স্পষ্টতার সাথে জানেন শরীরের গঠন ও উপাদান, শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন এবং এর অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির কার্যকারিতা, এবং কীভাবে সেগুলি বিভিন্ন পদার্থকে শোষণ করে, নির্মূল করে ও বিপাক করে। মানুষ জানে না; কখনও কখনও, তারা অযৌক্তিকভাবে ভক্ষণ করে, বা অবিবেচকের মত আত্ম-যত্নে রত হয়, যার আধিক্য হয়ে ওঠে ভারসাম্যহীনতার কারণ। ঈশ্বর তোমার জন্য যা প্রস্তুত করেছেন তুমি যদি স্বাভাবিক উপায়ে সেগুলি ভোজন করো ও উপভোগ করো, তাহলে তোমার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো সমস্যাই থাকবে না। এমনকি কখনও যদি তুমি খারাপ মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাও এবং তোমার শরীরের রক্ত চলাচলে অচলাবস্থা আসে, তাহলেও তা কোনো সমস্যাই নয়। তোমাকে শুধু একটি বিশেষ প্রকারের উদ্ভিদ ভক্ষণ করতে হবে, আর তাহলেই রক্তের অচলাবস্থা দূর হয়ে যাবে। ঈশ্বর এই সমস্ত কিছুর জন্য বন্দোবস্ত করেছেন। সুতরাং ঈশ্বরের চোখে মানবজাতির স্থান অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় অনেক উঁচুতে। ঈশ্বর প্রত্যেক প্রকারের উদ্ভিদের জন্য একটি পরিবেশ তৈরী করেছেন, প্রতিটি প্রজাতির প্রশুর জন্য তৈরী করেছেন খাদ্য ও একটি পরিবেশ, কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশের জন্য মানবজাতির প্রয়োজনই হল কঠোরতম, এবং সেই প্রয়োজনগুলিকে সামান্যতম উপায়েও উপেক্ষা করা যায় না; তা করা হলে, মানবজাতি আর স্বাভাবিক উপায়ে বিকাশ, জীবনধারণ ও পুনরুৎপাদন অব্যাহত রাখতে সমর্থ হতো না। ঈশ্বরই তাঁর অন্তরে একথা সবচেয়ে ভালোভাবে জানেন। ঈশ্বর যখন এ কাজ করেছিলেন, অন্য সমস্তকিছুর তুলনায় এর উপরেই তিনি অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। তোমার জীবনে যেসব তুচ্ছাতিতুচ্ছ বস্তু তুমি দেখতে পাও বা উপভোগ করতে পারো, অথবা এমন কোনোকিছু যা তুমি জন্মের সময় থেকে দেখে আসছো বা উপভোগ করে আসছো, সেসবের গুরুত্ব হয়তো তুমি অনুভব করতে পারো না, কিন্তু ঈশ্বর অনেক আগে থেকেই, অথবা গোপনে, তোমার জন্য সেসবের আয়োজন করে রেখেছেন। সর্বাধিক সম্ভাব্য পরিসরে, ঈশ্বর মানবজাতির পক্ষে প্রতিকূল এবং মানবদেহের ক্ষতি করতে পারে এমন সমস্ত নেতিবাচক উপাদানগুলি সরিয়ে দিয়েছেন এবং প্রশমিত করেছেন। এ থেকে কী দেখতে পাওয়া যায়? ঈশ্বর যখন সেই সময় মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছিলেন তখন তাদের প্রতি তাঁর যে মনোভাব ছিল তা কি এর মধ্যে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে? কী ছিল সেই মনোভাব? ঈশ্বরের মনোভাব ছিল সতর্ক ও আন্তরিক, এবং তা কোনো শত্রুশক্তির কিংবা বহিরাগত কোনো কারণের বা তাঁর নিজের ব্যতীত অন্যকারোর শর্তের হস্তক্ষেপ সহ্য করেনি। সেই সময়ে মানবজাতির সৃষ্টি ও পরিচালনায় ঈশ্বরের মনোভাব এর মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। আর ঈশ্বরের মনোভাব কী? মানবজাতির অস্তিত্ত্বরক্ষার পরিবেশ এবং যে জীবন মানুষ উপভোগ করে, সেইসাথে তাদের দৈনন্দিন খাদ্য-পানীয় ও প্রাত্যহিক প্রয়োজন, এসবের মাধ্যমেই আমরা দেখতে পাই মানবজাতির প্রতি ঈশ্বরের দায়িত্বশীল মনোভাব যা তিনি বজায় রেখেছেন মানবজাতিকে সৃষ্টি করার সময় থেকে, সেইসাথে মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য সেই সময়ে তাঁর সংকল্প। এই বস্তুগুলির মধ্যে কি ঈশ্বরের প্রামাণিকতা দৃশ্যমান? তাঁর বিস্ময়করতা? তাঁর অতলতা? তাঁর সর্বশক্তিমত্তা? সমগ্র মানবজাতির ও সেইসাথে তাঁর সৃষ্টির সমস্তকিছুর সংস্থানের জন্য ঈশ্বর তাঁর প্রাজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান উপায়গুলি ব্যবহার করেন। আমি এখন তোমাদের এত কিছু বলার পর, তোমরা কি তাহলে বলতে পারো যে ঈশ্বর সমস্ত কিছুর প্রাণের উৎস? (হ্যাঁ।) অবশ্যই তাই। তোমাদের কি কোনো সন্দেহ আছে? (না।) সমস্ত কিছুর জন্য ঈশ্বরের সংস্থান এটি দেখানোর জন্য যথেষ্ট যে তিনিই সমস্ত কিছুর প্রাণের উৎস, কারণ তিনি সেই সংস্থানের উৎস যা সমস্ত কিছুকে সক্ষম করেছে অস্তিত্ব রক্ষায়, বেঁচে থাকতে, পুনরুত্পাদন করতে, ও অব্যাহত থাকতে, এবং স্বয়ং ঈশ্বর ছাড়া আর কোন উৎস নেই। ঈশ্বর সমস্ত কিছুর এবং মানবজাতির যাবতীয় প্রয়োজনের জন্য সংস্থান করেন, তা মানুষের সবচেয়ে মৌলিক পরিবেশগত চাহিদা হোক, তাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনই হোক, কিংবা হোক সত্যের জন্য প্রয়োজন যা তিনি মানুষের আত্মাকে প্রদান করেন। প্রতিটি দিক থেকে, ঈশ্বরের পরিচয় ও তাঁর মর্যাদা মানবজাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; শুধুমাত্র স্বয়ং ঈশ্বরই সমস্ত কিছুর প্রাণের উৎস। অর্থাৎ বলা যায়, এই যে বিশ্বকে মানুষ দেখতে ও অনুভব করতে পারে, ঈশ্বরই তার শাসনকর্তা, প্রভু, এবং প্রদানকারী। মানবজাতির কাছে এটিই কি ঈশ্বরের পরিচয় নয়? এর মধ্যে অসত্য কিছু নেই। তাই তুমি যখন আকাশে পাখিদের উড়ে যেতে দেখো, তোমার জানা উচিত যে যা যা উড়তে সক্ষম সেই সমস্ত কিছু ঈশ্বরই সৃষ্টি করেছেন। এমন জীবন্ত প্রাণীও রয়েছে যারা জলে সাঁতার কাটে, আর তাদের বেঁচে থাকার নিজস্ব উপায় আছে। যেসকল বৃক্ষ ও গাছপালা মাটিতে বসবাস করে, তারা বসন্তে অঙ্কুরিত ও প্রস্ফুটিত হয়, এবং শরতে তারা ফলধারণ করে ও পাতা ঝরাতে শুরু করে, আর শীতকালের মধ্যে তাদের সমস্ত পাতা ঝরে যায় কারণ সেইসব গাছপালা শীতল আবহাওয়া সহ্য করার জন্য প্রস্তুত হয়। এই তাদের বেঁচে থাকার উপায়। ঈশ্বর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন, এবং প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন আকারে ও ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে জীবনধারণ করে এবং নিজের প্রাণশক্তি ও জীবনধারণের আকার প্রদর্শন করতে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। যে যেভাবেই জীবনধারণ করুক না কেন, তারা সকলেই ঈশ্বরের শাসনাধীন। সমস্ত প্রকারের জীবনধারণের উপর ও জীবের উপর শাসনের উদ্দেশ্য কী? তা কি মানবজাতির অস্তিত্ত্বরক্ষার জন্য? তিনি জীবনের সকল বিধান নিয়ন্ত্রণ করেন, সবই মানবজাতির অস্তিত্ত্বরক্ষার জন্য। এ থেকেই দেখা যায় ঈশ্বরের কাছে মানবজাতির বেঁচে থাকা কত গুরুত্বপূর্ণ।

মানবজাতির বেঁচে থাকার ও স্বাভাবিকভাবে পুনরুৎপাদন করার ক্ষমতা ঈশ্বরের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাই, মানবজাতির জন্য ও তাঁর সৃষ্ট সমস্ত কিছুর জন্য ঈশ্বর অবিরাম সংস্থান করে চলেছেন। তিনি ভিন্ন ভিন্নভাবে সকল বস্তুর জন্য সংস্থান প্রদান করেন, আর সমস্ত কিছুর বেঁচে থাকা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে তিনি মানবজাতিকে তার স্বাভাবিক অস্তিত্ব বজায় রেখে সামনের দিকে অগ্রসর হতে সক্ষম করে তোলেন। এই হলো আমাদের আজকের আলোচনার দু’টি আঙ্গিক। এই দু’টি আঙ্গিক কী কী? (বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, ঈশ্বর এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন যেখানে মানুষ বসবাস করে। এটি হল প্রথম দিক। ঈশ্বর সেই সমস্ত পার্থিব বস্তুও প্রস্তুত করেছেন যা মানুষের প্রয়োজন আর যা মানুষ দেখতে ও স্পর্শ করতে পারে।) আমরা আমাদের মূল বিষয়টি এই দুই আঙ্গিকের মাধ্যমে আলোচনা করেছি। আমাদের মূল বিষয়টি কী? (ঈশ্বর সমস্ত কিছুর প্রাণের উৎস।) এই বিষয়ে আমার আলোচনায় কেন এরকম বিষয়বস্তু ছিল সে সম্পর্কে এখন তোমাদের কিছুটা ধারণা হওয়া উচিত। এমন কোনো আলোচনা কি করা হয়েছে যা মূল বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না? একেবারেই না! সম্ভবত, এই কথাগুলি শ্রবণ করার পর, তোমাদের কেউ কেউ কিছুটা উপলব্ধি অর্জন করেছো আর এখন অনুভব করতে পারছ যে এই কথাগুলির ওজন আছে, কথাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাকিদের হয়তো শুধুই কিছুটা তাত্ত্বিক উপলব্ধি হয়েছে এবং তারা মনে করে যে এই কথাগুলি নিজেরা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। বর্তমানে তোমরা এগুলি কীভাবে উপলব্ধি করছ সেসব নির্বিশেষে, যখন তোমাদের অভিজ্ঞতা একটি বিশেষ দিনে উপনীত হয়, যখন তোমাদের উপলব্ধি একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছয়, অর্থাৎ যখন ঈশ্বরের কর্মসমূহ ও স্বয়ং ঈশ্বর সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান বিশেষ একটি স্তরে পৌঁছয়, তখন তোমরা ঈশ্বরের কর্মসমূহের একটি সুগভীর ও অকৃত্রিম সাক্ষ্য দিতে তোমাদের নিজস্ব বাস্তববাদী ভাষা ব্যবহার করবে।

আমি মনে করি তোমাদের বর্তমান উপলব্ধি এখনও অনেকটাই অগভীর ও আক্ষরিক, কিন্তু আমার আলোচনার এই দুটি দিক শ্রবণ করার পর, তোমরা কি অন্ততপক্ষে এইটুকু চিনে উঠতে পারো যে ঈশ্বর মানবজাতির সংস্থানের লক্ষ্যে কী কী উপায় ব্যবহার করেন অথবা মানবজাতিকে ঈশ্বর কী কী বস্তু প্রদান করেন? তোমাদের কি একটি মৌলিক ধারণা, একটি মৌলিক উপলব্ধি আছে? (হ্যাঁ।) কিন্তু যে দু’টি আঙ্গিক থেকে আমি আলোচনা করলাম বাইবেলের সাথে তার কি কোনো সম্পর্ক রয়েছে? রাজ্যের যুগে ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তির সঙ্গে তার কি কোনো সম্পর্ক রয়েছে? (না।) তাহলে আমি এইগুলি নিয়ে কেন আলোচনা করলাম? তা কি এইজন্য যে ঈশ্বরকে জানার জন্য মানুষকে এগুলি উপলব্ধি করতে হবে? (হ্যাঁ।) এই বিষয়গুলি জানা অত্যন্ত জরুরি এবং এগুলি উপলব্ধি করাও অত্যন্ত জরুরি। যেহেতু তোমরা ঈশ্বরকে তাঁর সামগ্রিকরূপে উপলব্ধি করার সন্ধান করতে চাও, নিজেদের শুধুমাত্র বাইবেলে সীমিত রেখো না, এবং ঈশ্বরের দ্বারা মানুষের বিচার ও শাস্তিতেও সীমাবদ্ধ করে রেখো না। আমার একথা বলার উদ্দেশ্য কী? এর উদ্দেশ্য মানুষকে জানানো যে ঈশ্বর শুধুমাত্র তাঁর মনোনীত মানুষদেরই ঈশ্বর নন। তুমি বর্তমানে ঈশ্বরকে অনুসরণ করো, এবং তিনি তোমার ঈশ্বর, কিন্তু তিনি কি তাদেরও ঈশ্বর যারা তাঁকে অনুসরণ করে না? ঈশ্বর কি সমস্ত কিছুর ঈশ্বর? (হ্যাঁ।) তাহলে ঈশ্বরের কার্য ও কর্মের পরিধি কি শুধুমাত্র তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ যারা তাঁকে অনুসরণ করে? (না।) তাঁর কার্য ও কর্মসমূহের পরিসর কী? ক্ষুদ্রতম স্তরে, তাঁর কার্য ও কর্মসমূহের পরিসর ঘিরে থাকে সকল মানবজাতি এবং সৃষ্টির সমস্ত বস্তুকে। সর্বোচ্চ স্তরে, তা ঘিরে থাকে সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডকে, যা মানুষের দৃষ্টির অগোচর। তাহলে, আমরা বলতে পারি যে ঈশ্বর সকল মানবজাতির মধ্যে তাঁর কার্য ও কর্ম সম্পাদন করেন, এবং স্বয়ং ঈশ্বরকে তাঁর সামগ্রিকরূপে জেনে উঠতে পারার জন্য মানুষের পক্ষে তা যথেষ্ট। তুমি যদি ঈশ্বরকে জানতে চাও, তাঁকে প্রকৃতই জানতে চাও, প্রকৃতই তাঁকে উপলব্ধি করতে চাও, তাহলে শুধুমাত্র ঈশ্বরের কার্যের তিনটি পর্যায়ে কিংবা অতীতে তাঁর সম্পাদিত কার্যসমূহের কাহিনীতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রেখো না। তুমি যদি তাঁকে এইভাবে জানার চেষ্টা করো, তাহলে তুমি ঈশ্বরের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করছ, আবদ্ধ করে ফেলছ তাঁকে। তুমি ঈশ্বরকে অত্যন্ত ক্ষুদ্র কোনোকিছু হিসাবে দেখছ। এতে মানুষের উপর কী প্রভাব পড়ে? তুমি কখনোই ঈশ্বরের বিস্ময়করতা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে না, জানতে পারবে না তাঁর ক্ষমতা ও সর্বশক্তিমত্তার বিষয়ে, এবং তাঁর কর্তৃত্বের পরিধি সম্পর্কেও। এরকম একটি ধারণা প্রভাবিত করবে তোমার এই সত্যকে স্বীকার করার ক্ষমতাকে যে ঈশ্বরই সমস্তকিছুর শাসনকর্তা, ও সেইসাথে প্রভাবিত করবে ঈশ্বরের প্রকৃত পরিচয় ও মর্যাদা সম্পর্কে তোমার জ্ঞানকে। অন্য কথায়, তোমার ঈশ্বর সম্পর্কিত উপলব্ধি যদি পরিধির মধ্যে সীমিত থাকে, তাহলে তুমি যা পেতে পারো তা-ও সীমিতই। ঠিক এই কারণেই তোমাকে নিজের পরিধি প্রসারিত করতে হবে এবং নিজের দিগন্ত বিস্তৃত করতে হবে। ঈশ্বরের কার্যের পরিধি, তাঁর ব্যবস্থাপনা, তাঁর শাসন, সেই সমস্ত বিষয় যা তিনি পরিচালনা করেন ও যেসবের উপর তিনি শাসন করেন—তোমার উচিত এই সমস্ত বিষয় উপলব্ধির সন্ধান করা। এই সবের মধ্যে দিয়েই তোমাকে ঈশ্বরের কর্মসমূহ উপলব্ধি করতে হবে। এই উপলব্ধি লাভ করলে নিজের অজান্তেই তুমি অনুভব করতে পারবে যে ঈশ্বর শাসন করেন, পরিচালনা করেন, এবং তাদের মধ্যে প্রতিটি বস্তুর জন্যই তিনি সংস্থান করেন, তুমি একথাও প্রকৃতরূপে অনুভব করতে পারবে যে তুমি সমস্তকিছুর একটি অংশ ও একজন সদস্য। ঈশ্বর যেহেতু সমস্ত কিছুর জন্য সংস্থান করেন, তাই তুমিও ঈশ্বরের শাসন ও সংস্থান গ্রহণ করছ। এই সত্য কেউই অস্বীকার করতে পারে না। সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের শাসনের অধীনে তাদের নিজ নিজ বিধান সাপেক্ষ, এবং ঈশ্বরের শাসনের অধীনে, বেঁচে থাকার জন্য সমস্ত কিছুর নিজ নিজ নিয়মাবলী রয়েছে। মানবজাতির নিয়তি ও প্রয়োজনগুলিও ঈশ্বরের শাসন ও সংস্থানের সঙ্গেই আবদ্ধ। এই কারণেই, ঈশ্বরের আধিপত্য ও শাসনের অধীনে, মানবজাতি এবং সমস্ত কিছু আন্তঃসংযুক্ত, আন্তঃনির্ভরশীল, এবং আন্তঃবিজড়িত। এই হল ঈশ্বরের সমস্ত কিছু সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও মূল্য।

—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ৮

পূর্ববর্তী: মানবজাতির জন্য ঈশ্বর যে দৈনন্দিন খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুত করেন (পর্ব ১)

পরবর্তী: প্রথম পর্ব: ঈশ্বর প্রতিটি প্রকারের ভূখণ্ডের সীমানা নির্ধারণ করেন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

পঞ্চম দিবসে, বিবিধ এবং বৈচিত্র্যময় গঠনের জীবন বিভিন্ন উপায়ে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব প্রদর্শন করে

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, “ঈশ্বর বললেন, জলরাশি পূর্ণ হোক নানা জাতির জলচর প্রাণীতে এবং পৃথিবীর উপরে আকাশে উড়ে বেড়াক পক্ষীকুল। ঈশ্বর সৃষ্টি করলেন...

দ্বিতীয় দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্ব জলরাশির আয়োজন করে, এবং তৈরি করে নভোমণ্ডল এবং মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে মৌলিক একটি স্থান আবির্ভূত হয়

বাইবেলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি পাঠ করা যাক: “ঈশ্বর বললেন, সৃষ্ট হোক নভোমণ্ডল, বিভক্ত করুক জলরাশিকে! ঈশ্বর এইভাবে নভোমণ্ডল সৃষ্টি করে তার...

প্রথম দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বদান্যতায় মানবজাতির দিন এবং রাতের সূচনা হয় এবং অবিচল থাকে

প্রথম অনুচ্ছেদটির প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাকঃ: “ঈশ্বর বললেন, দীপ্তি হোক! দীপ্তির হল আবির্ভাব। ঈশ্বর দেখলেন, চমৎকার এই দীপ্তি। অন্ধকার থেকে...

ষষ্ঠ দিবসে, সৃষ্টিকর্তা কথা বলেন, এবং তাঁর মনের মধ্যে থাকা প্রতিটি জীব একাদিক্রমে আবির্ভূত হয়

ইন্দ্রিয়াতীতভাবে, সৃষ্টিকর্তার সমস্ত সৃষ্টিকার্য পাঁচ দিন ধরে অব্যাহত ছিল, ঠিক তার পরপরই সৃষ্টিকর্তা তাঁর সকল বস্তু সৃষ্টির ষষ্ঠ দিবসকে...

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন