সৃষ্টিকর্তার উচ্চারণের অনন্য রীতি ও বৈশিষ্ট্য সৃষ্টিকর্তার অনন্য স্বরূপ ও কর্তৃত্বের এক প্রতীক

আদিপুস্তক ১৭:৪-৬ দেখ, তোমার সঙ্গে আমি সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি, সেই অনুযায়ী তুমি হবে বহুজাতির আদি পিতা। তোমার নাম আর অব্রাম (মহান পিতা) থাকবে না, তোমার নাম হবে অব্রাহাম। কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির আদি পিতা করব। আমি তোমাকে প্রজাবন্ত করব, তোমা থেকে উৎপন্ন করব বহু জাতি। নৃপতিরা জন্মাবে তোমার বংশে।

আদিপুস্তক ১৮:১৮-১৯ অব্রাহাম হবে বিরাট ও শক্তিশালী এক জাতির জনক, তার মাধ্যমেই পৃথিবীর সকল জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে। আমি তাকে এই উদ্দেশ্যে মনোনীত করেছি যেন সে তার পরিবার ও ভাবী বংশধরদের ধর্মসঙ্গত ও ন্যায্য আচরণ করার ও প্রভুর পথে চলার নির্দেশ দেয়, যাতে অব্রাহামের কাছে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি প্রভু পরমেশ্বর পূর্ণ করতে পারেন।

আদিপুস্তক ২২:১৬-১৮ যিহোবা বললেন, তুমি যেহেতু এমন কাজ করেছ, তোমার একমাত্র পুত্রকে উৎসর্গ করতেও অস্বীকার করোনি, তাই আমি আমার নিজের নামে শপথ করেছি: আমি নিশ্চয়ই তোমাকে প্রচুর বর দান করব। আকাশের নক্ষত্ররাজি ও সমুদ্রতটের বালুকারাশির মত আমি তোমার বংশবৃদ্ধি করব। তোমার বংশধরেরা শত্রুদের পুরী অধিকার করবে। আর তোমার বংশজদের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল জাতি আশীর্বাদলাভ করবে। আমি তোমার জন্য এসব করব কারণ তুমি আমার আদেশ মান্য করেছ।

ইয়োবে ৪২:১২ অর্থাৎ ইয়োবের প্রথম জীবনের চেয়ে পরবর্তীকালে যিহোবা তাকে আরও বেশি আশীর্বাদ করেছিলেন: কারণ ইয়োব পেয়েছিলেন চোদ্দ হাজার মেষ, ছয় হাজার উট, দু’হাজার বৃষ, আর এক হাজার গর্দভী।

অনেকেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ অন্বেষণ করতে ও অর্জন করতে চায়, কিন্তু সকলেই এই আশীর্বাদ লাভ করতে পারে না, কারণ ঈশ্বরের নিজস্ব নীতিসমূহ রয়েছে, এবং তিনি তাঁর নিজস্ব পদ্ধতিতে মানুষকে আশীর্বাদ দান করেন। মানুষের কাছে ঈশ্বর যে অঙ্গীকার করেন, এবং মানুষের উপর তিনি যে পরিমাণ অনুগ্রহ বর্ষণ করেন, তা মানুষের চিন্তাভাবনা ও ক্রিয়াকর্মের ভিত্তিতে বণ্টিত হয়। তাহলে, ঈশ্বরের আশীর্বাদের দ্বারা কী প্রদর্শিত হয়? এগুলির মধ্যে মানুষ কী দেখতে পায়? এই পর্যায়ে, কী ধরনের মানুষকে ঈশ্বর আশীর্বাদ দান করেন, এবং মানুষের উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ বর্ষণের নীতিসমূহের বিষয়ে আলোচনা দূরে সরিয়ে রাখা যাক। পরিবর্তে, ঈশ্বরের মানুষকে আশীর্বাদ প্রদানের বিষয়টির দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে জানার উদ্দেশ্য নিয়ে এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিত থেকে।

শাস্ত্র থেকে উপরে উদ্ধৃত চারটি অনুচ্ছেদের সবগুলিই মানুষের প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বাদ সংক্রান্ত। এগুলিতে ঈশ্বরের আশীর্বাদের গ্রহীতাদের সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়, যেমন অব্রাহাম ও ইয়োব, একই সঙ্গে, কী কারণে ঈশ্বর তাঁর আশীর্বাদ প্রদান করলেন, এবং সেই আশীর্বাদগুলিতে কী ছিল সে সম্বন্ধেও বলা আছে। ঈশ্বরের উচ্চারণের কণ্ঠস্বর ও ভঙ্গিমা, এবং যে পরিপ্রেক্ষিত ও অবস্থান থেকে তিনি বাক্যোচ্চারণ করেছিলেন, তা মানুষকে অনুধাবন করার সুযোগ দেয় যে যিনি আশীর্বাদ দান করেন এবং এরকম আশীর্বাদের যারা গ্রহীতা, তারা পরিচয়, মর্যাদা ও সারসত্যের দিক থেকে সুস্পষ্টভাবে স্বতন্ত্র। এই উচ্চারণগুলির কণ্ঠস্বর ও ভঙ্গিমা, এবং যে অবস্থান থেকে এগুলি উক্ত হয়, তা ঈশ্বরেরই অনন্য স্বত্ব, যিনি সৃষ্টিকর্তার পরিচয়ের অধিকারী। তাঁর কর্তৃত্ব ও শক্তিমত্তা আছে, সেই সাথে রয়েছে সৃষ্টিকর্তা রূপে তাঁর সম্মান, এবং সেই মহিমা যা কোনো মানুষের কোনো সংশয় বরদাস্ত করে না।

প্রথমে আদিপুস্তকের সপ্তদশ অধ্যায়ের চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ চরণগুলির দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক: “দেখ, তোমার সঙ্গে আমি সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি, সেই অনুযায়ী তুমি হবে বহুজাতির আদি পিতা। তোমার নাম আর অব্রাম (মহান পিতা) থাকবে না, তোমার নাম হবে অব্রাহাম। কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির আদি পিতা করব। আমি তোমাকে প্রজাবন্ত করব, তোমা থেকে উৎপন্ন করব বহু জাতি। নৃপতিরা জন্মাবে তোমার বংশে।” এই বাক্যগুলি অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বরের স্থাপিত সন্ধিচুক্তি, এবং অব্রাহামের প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বচনও বটে: ঈশ্বর অব্রাহামকে জাতিসমূহের জনকে পরিণত করবেন, তাকে বহুসংখ্যক সন্তানসন্ততি দান করবেন, এবং তার বংশধরদের মধ্য থেকে নানা জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হবে, এবং তার বংশে অনেক নৃপতি জন্ম নেবে। এই বাক্যসমূহের মধ্যে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব কি তোমাদের দৃষ্টিগোচর হয়? আর এজাতীয় কর্তৃত্বকে তোমরা কোন চোখে দেখো? ঈশ্বরের কর্তৃত্বের সারসত্যের কোন দিকটি তোমরা প্রত্যক্ষ করো? এই বাক্যগুলি অভিনিবেশ সহকারে পাঠ করলে, এটি আবিষ্কার করা দুরূহ কিছু নয় যে ঈশ্বরের উচ্চারণের শব্দপ্রয়োগের মধ্যেই ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও পরিচয় সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ঈশ্বর যখন বলেন “তোমার সঙ্গে আমি সন্ধির চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি, সেই অনুযায়ী তুমি হবে … আমি তোমাকে বহু জাতির আদি পিতা করব … আমি তোমাকে প্রজাবন্ত করব …”, তখন সেখানে “তুমি হবে” এবং “আমি করব” এই জাতীয় নিশ্চয়তাপ্রদানের শব্দবন্ধগুলি, যে শব্দগুলির চয়ন ঈশ্বরের পরিচয় ও কর্তৃত্বের সুস্পষ্ট স্বীকৃতি বহন করে, সেই শব্দবন্ধগুলি এক দিক থেকে সৃষ্টিকর্তার বিশ্বস্ততার ইঙ্গিত; আরেক দিক থেকে, সেগুলি ঈশ্বর-প্রযুক্ত বিশেষ শব্দাবলী, যে ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তার পরিচিতির অধিকারী, একই সঙ্গে সেগুলি প্রথাগত শব্দভাণ্ডারের অংশও বটে। কেউ যদি বলে সে আশা করে যে অন্য আরেক ব্যক্তি বহুসংখ্যক সন্তানসন্ততি লাভ করবে, এবং সেই সন্ততি থেকে নানা জনগোষ্ঠী জন্ম নেবে, এবং তাদের মধ্যে থেকে অনেক রাজন্যবর্গের উদ্ভব হবে, তাহলে সন্দেহাতীতভাবে তা এক ধরনের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন, কোনো অঙ্গীকার বা আশীর্বাদদান নয়। তাই, মানুষ এমন বলার স্পর্ধা করে না যে “আমি তোমাকে এটাসেটা বানিয়ে তুলবো, তুমি অমুকতমুক করবে”, কারণ তারা জানে যে তাদের এরকম কোনো ক্ষমতা নেই; এসব তাদের হাতে নেই, এবং তারা যদি এমন কথা বলেও ফেলে, তাহলে তাদের এই কথাগুলি হবে তাদের বাসনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা-চালিত শূন্যগর্ভ অর্থহীন কথা মাত্র। কেউ যদি জানে যে নিজের শুভেচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা তার নেই, তবে কি সে এমন এক মহিমান্বিত কণ্ঠস্বরে বাক্যোচ্চারণ করার স্পর্ধা করে? প্রত্যেকেই নিজেদের বংশধরদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে, এবং আশা পোষণ করে যে তারা উৎকর্ষলাভ করবে এবং প্রভূত সাফল্য উপভোগ করবে। “তাদের কেউ যদি সম্রাট হয়ে ওঠে তাহলে কী বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার হবে! একজন যদি রাষ্ট্র-পরিচালক হয়ে ওঠে তাহলে সেটাও দারুণ ব্যাপার হবে—কেবল তারা গুরুত্বপূর্ণ কেউ একটা যেন হয়!” এই সবই হলো মানুষের ইচ্ছা, কিন্তু মানুষ কেবল ইচ্ছাপ্রকাশই করতে পারে যে তাদের বংশধররা আশীর্বাদধন্য হোক, কিন্তু তাদের কোনো প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ বা বাস্তবায়িত করতে পারে না। মনে মনে, প্রত্যেকেই পরিষ্কার জানে যে এরকম কিছু অর্জন করার ক্ষমতা তার নেই, কারণ এর সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রণের অতীত, তাহলে কেমন করে সে অন্যের নিয়তিকে শাসন করতে পারে? ঈশ্বর এমন বাক্য উচ্চারণ করতে পারেন কারণ ঈশ্বরের সেই কর্তৃত্ব রয়েছে, এবং মানুষের কাছে তিনি যাকিছু অঙ্গীকার করেন তার সবই তিনি সুসম্পন্ন ও বাস্তবায়িত করতে সক্ষম, এবং মানুষকে যে আশীর্বাদ তিনি প্রদান করেন তা-ও সত্যে পরিণত করতে সক্ষম। মানুষ ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল, আর তাই ঈশ্বরের পক্ষে কোনো ব্যক্তিকে প্রচুর সন্তানসন্ততি প্রদান করা ছেলেখেলা মাত্র; কারো উত্তরাধিকারীদের সমৃদ্ধশালী করে তুলতে তাঁর একটি বাক্যই যথেষ্ট। এরকম একটি কর্ম সম্পাদনের জন্য ঈশ্বরকে কখনোই স্বেদ নির্গমন পর্যন্ত পরিশ্রম করে যেতে হবে না, তাঁর মস্তিষ্ককে ভারাক্রান্ত করতে হবে না, অথবা বিভ্রান্ত ও উদ্বিগ্ন হতে হবে না; এটিই হল ঈশ্বরের ক্ষমতা, এটিই ঈশ্বরের কর্তৃত্ব।

আদিপুস্তকের অষ্টাদশ অধ্যায়ের ১৮-তম শ্লোক, “অব্রাহাম হবে বিরাট ও শক্তিশালী এক জাতির জনক, তার মাধ্যমেই পৃথিবীর সকল জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে”, এটি পাঠ করার পর, তোমরা কি ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে অনুভব করতে পারো? তোমরা কি সৃষ্টিকর্তার অনন্যসাধারণতাকে টের পাও? তোমরা কি সৃষ্টিকর্তার সর্বোচ্চ ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে পারো? ঈশ্বরের বাক্যসমূহ ধ্রুব। ঈশ্বর সাফল্যের বিষয়ে তাঁর আত্মবিশ্বাসের দরুন, বা এই আত্মবিশ্বাসের পরিচায়ক হিসাবে এজাতীয় বাক্য উচ্চারণ করেন না; বরং, এগুলি ঈশ্বরের উচ্চারণের কর্তৃত্বের প্রমাণ, এবং এমন এক আদেশ যা ঈশ্বরের বাক্যগুলিকে কার্যায়িত করে। এখানে দুটি অভিব্যক্তি রয়েছে যেগুলি তোমাদের মনোযোগ দাবি করে। যখন ঈশ্বর বলেন “অব্রাহাম হবে বিরাট ও শক্তিশালী এক জাতির জনক, তার মাধ্যমেই পৃথিবীর সকল জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে”, তখন তাঁর এই বাক্যে কি দ্ব্যর্থকতার কোনো উপাদান রয়েছে? উদ্বেগের কোনো উপাদান রয়েছে? ভীতির কোনো উপাদান? তাঁর উচ্চারণের মধ্যে “হবে” ও “করবে” শব্দদ্বয়ের উপস্থিতির দরুন, উপরুল্লিখিত উপাদানগুলি, যেগুলি মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত এবং তাদের মধ্যে প্রায়শই পরিলক্ষিত হয়, সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সেগুলি কখনোই কোনো সম্পর্কে অন্বিত হয়ে ওঠে নি। অন্যদের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের সময় কেউই এরকম শব্দ প্রয়োগ করার সাহস করতো না, কেউই এহেন প্রত্যয়ের সাথে অপর কোনো ব্যক্তিকে বিরাট ও শক্তিশালী এক জাতি প্রদানের, বা তার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল জনগোষ্ঠীর উপর সৌভাগ্য বর্ষণের প্রতিশ্রুতিদানের মতো আশীর্বাদ জ্ঞাপনের স্পর্ধা করতো না। ঈশ্বরের বাক্যসমূহ যত বেশি সুনিশ্চিত, তত বেশি করে সেগুলি একটি বিষয়কে প্রতিপন্ন করে—আর সেই বিষয়টি কী? সেগুলি প্রতিপন্ন করে যে ঈশ্বর এহেন কর্তৃত্বের অধিকারী, প্রমাণ করে যে তাঁর কর্তৃত্ব এইসব কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম, এবং এগুলির নিষ্পাদন অনিবার্য। অব্রাহামকে তিনি আশীর্বাদস্বরূপ যাকিছু প্রদান করেছিলেন সেগুলির সম্পর্কে ঈশ্বর তাঁর অন্তরে সুনিশ্চিত ছিলেন, সংশয়ের লেশমাত্র ছিল না। তদুপরি, এর সমস্তটাই তাঁর বাক্য অনুযায়ী সম্পন্ন হতো, এবং কোনো শক্তি এর সিদ্ধিকে পরিবর্তিত, প্রতিহত, ক্ষতিগ্রস্ত, বা ব্যাহত করতে সক্ষম হতো না। অন্য যা কিছুই ঘটুক না কেন, কোনোকিছুই ঈশ্বরের বাক্যসমূহের সিদ্ধি ও নিষ্পাদনকে স্থগিত বা প্রভাবিত করতে পারতো না। এটাই সৃষ্টিকর্তার মুখোচ্চারিত বাক্যের, এবং সৃষ্টিকর্তার যে কর্তৃত্ব মানুষের প্রত্যাখ্যান সহ্য করে না সেই কর্তৃত্বের শক্তিমত্তা! এই বাক্যগুলি পাঠ করার পর, এখনো কি তুমি সংশয়ান্বিত? এই বাক্যগুলি ঈশ্বরের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল, এবং ঈশ্বরের বাক্যে নিহিত রয়েছে ক্ষমতা, মহিমা, এবং কর্তৃত্ব। এহেন শক্তিমত্তা ও কর্তৃত্ব, এবং ঘটনার সম্পাদনের ক্ষেত্রে এহেন অনিবার্যতা, কোনো সৃজিত বা অসৃজিত সত্তার অর্জনসাধ্য নয়, এবং কোনো সৃজিত বা অসৃজিত সত্তার পক্ষে অনতিক্রম্য। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই মানবজাতির সঙ্গে এরকম কণ্ঠস্বর ও স্বরভঙ্গিমায় বাক্যালাপ করতে পারেন, এবং ঘটনাপ্রবাহ প্রতিপন্ন করেছে যে তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলি সারবত্তাহীন বাক্য, বা বৃথা দম্ভোক্তি নয়, বরং সেগুলি সেই অনন্য কর্তৃত্বের অভিব্যক্তি যা যে কোনো মানুষ, ঘটনা, বা বস্তুর পক্ষেই অনতিক্রম্য।

ঈশ্বর ও মানুষের উচ্চারিত বাক্যেসমূহের মধ্যে পার্থক্যটি কী? ঈশ্বরের উচ্চারিত এই বাক্যগুলি পাঠ করার সময়, তুমি ঈশ্বরের বাক্যের শক্তিমত্তা ও ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে অনুভব করো। মানুষকে যখন এরকম কথা বলতে শোনো তখন তুমি কীরকম বোধ করো? তোমার কি তাদের অত্যধিক উদ্ধত ও প্রগলভ মনে হয়, নিজেদের জাহির করছে এমন মানুষ বলে মনে হয়? তাদের এই ক্ষমতা নেই বলে, তারা এরকম কর্তৃত্বের অধিকারী নয় বলে, এজাতীয় জিনিস অর্জন করতে তারা সম্পূর্ণ অক্ষম। তারা যে তাদের অঙ্গীকারের সম্বন্ধে এতদূর প্রত্যয়ী, এটাই তাদের মন্তব্যের সারশূন্যতাকে প্রতিপন্ন করে। কেউ যদি এধরনের কথাবার্তা বলে, তাহলে নিঃসন্দেহে সে উদ্ধত ও অতি আত্মবিশ্বাসী, এবং নিজেকে সে প্রধান দেবদূতের স্বভাবের এক ধ্রুপদী দৃষ্টান্ত হিসাবে প্রকাশ করছে। এই বাক্যগুলি ঈশ্বরের মুখনিঃসৃত; এখানে কি তুমি ঔদ্ধত্যের কোনো উপাদান টের পাও? ঈশ্বরের বাক্যগুলিকে কি তোমার নেহাতই কৌতুকের সামগ্রী বলে বোধ হয়? ঈশ্বরের বাক্যসমূহ হল কর্তৃত্ব, ঈশ্বরের বাক্যসমূহ বাস্তব সত্য, এবং বাক্যগুলি তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত হওয়ার আগেই, অর্থাৎ, যখন তিনি কোনো কার্য সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেই মুহূর্তে কার্যটি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে। বলা যায়, ঈশ্বর অব্রাহামকে যাকিছু বলেছিলেন সেটাই ছিল অব্রাহামের সাথে ঈশ্বরের স্থাপিত এক সন্ধিচুক্তি, এবং অব্রাহামের কাছে ঈশ্বর-কৃত এক অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার ছিল এক প্রতিষ্ঠিত সত্য, সেই সাথে এক নিষ্পন্ন সত্যও বটে, এবং এই সত্যগুলি ঈশ্বরের চিন্তায় ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হয়ে উঠেছিল। তাই, ঈশ্বরের পক্ষে এধরনের বাক্যোচ্চারণ তাঁর কোনো উদ্ধত স্বভাবের পরিচায়ক নয়, কারণ ঈশ্বর এধরনের কর্ম সাধনে সক্ষম। তাঁর সেই ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব রয়েছে, এবং এই ক্রিয়াকর্মগুলি সম্পন্ন করতে ঈশ্বর সম্পূর্ণরূপে সক্ষম, এবং এগুলির সম্পাদন পুরোপুরি তাঁর সামর্থ্যের সীমার মধ্যেই রয়েছে। এই জাতীয় বাক্য যখন ঈশ্বরের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়, তখন সেগুলি ঈশ্বরের প্রকৃত স্বভাবের এক উদ্ঘাটন ও অভিব্যক্তি, ঈশ্বরের সারসত্য ও কর্তৃত্বের এক নির্ভুল উদ্ঘাটন ও বহিঃপ্রকাশ, এবং সৃষ্টিকর্তার পরিচিতির প্রমাণ হিসাবে এর চেয়ে উপযুক্ত ও যথাযোগ্য আর কিছু নেই। এজাতীয় উচ্চারণসমূহের ধরন, স্বরভঙ্গি, ও শব্দচয়ন অভ্রান্তভাবে সৃষ্টিকর্তার স্বরূপের বৈশিষ্ট্যসূচক নিশানা এবং ঈশ্বরের নিজস্ব পরিচয়ের অভিব্যক্তির সাথে তা নিখুঁতভাবে সঙ্গতিপূর্ণ; এই বাক্যগুলিতে কোনো ভান নেই, কোনো অশুচিতা নেই; এগুলি, সম্পূর্ণরূপে ও চূড়ান্তরূপে, সৃষ্টিকর্তার সারসত্য ও কর্তৃত্বের পূর্ণাঙ্গ প্রতিপাদন। সৃজিত প্রাণীদের ক্ষেত্রে, তাদের এই কর্তৃত্ব বা সারসত্য কোনোটিই নেই, ঈশ্বর-প্রদত্ত ক্ষমতা তো তাদের একেবারেই নেই। মানুষ যদি এধরনের আচরণ প্রদর্শন করে, তবে নিশ্চিতরূপেই তা হবে তার ভ্রষ্ট স্বভাবের এক উদ্গীরণ, এবং এর মর্মমূলে থাকবে মানুষের ঔদ্ধত্য ও লাগামছাড়া উচ্চাকাঙ্ক্ষার অনধিকারচর্চাজনিত অভিঘাত, এবং তা হবে একমাত্র শয়তানের বিদ্বেষপরায়ণ অভিপ্রায়ের অনাবৃতকরণ, যে শয়তান মানুষকে প্রতারিত করতে চায় এবং ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে তাদের প্রলুব্ধ করে। এহেন ভাষার মাধ্যমে যা প্রকাশ পায় ঈশ্বর তাকে কীরূপ জ্ঞান করেন? ঈশ্বর বলবেন যে, তুমি তাঁর স্থান অন্যায়ভাবে অধিকার করতে চাও এবং নিজেকে ঈশ্বর বলে প্রতিপন্ন করতে ও তাঁকে প্রতিস্থাপিত করতে চাও। তুমি যখন ঈশ্বরের উচ্চারণের স্বরভঙ্গিমার অনুকরণ করো, তখন তোমার অভিপ্রায় হল মানুষের অন্তরে ঈশ্বরের স্থানকে প্রতিস্থাপিত করা, অন্যায়ভাবে মানবজাতির উপর নিজের দখল কায়েম করা, যে মানবজাতি বিধিসঙ্গতভাবে ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত। নিঃসন্দেহে এটি শয়তান ভিন্ন আর কারো কাজ নয়; এগুলি স্বর্গের কাছে দুর্বিষহ সেই প্রধান দেবদূতের বংশধরদের কার্যকলাপ! তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ রয়েছে যে কোনোদিন কিছু বাক্য উচ্চারণের মাধ্যমে কোনো বিশেষ উপায়ে, মানুষকে ভুল পথে চালিত ও প্রতারিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে, ঈশ্বরের অনুকরণ করেছে, যাতে মানুষের মনে হয় যেন এই লোকটির কথাবার্তা ও কার্যকলাপ ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও শক্তিমত্তা বহন করছে, যেন এই লোকটির সারসত্য ও পরিচিতি অনন্যসাধারণ, এবং এমনকি যেন এই লোকটির কথাবার্তার স্বরভঙ্গিমা ঈশ্বরের অনুরূপ? কখনো কি তোমরা এরকম কিছু করেছো? তোমাদের কথাবার্তায় তোমরা কি কোনোদিন এমন ইঙ্গিতময় কোনো অঙ্গভঙ্গি সহকারে ঈশ্বরের বাচনভঙ্গিমার অনুকরণ করেছো যা আপাতদৃষ্টিতে, তোমাদের ধারণা মতে যা শক্তিমত্তা ও কর্তৃত্ব সেটি সমেত, ঈশ্বরের স্বভাবের প্রতিনিধিত্ব করে? তোমাদের অধিকাংশ কি প্রায়শই এরকম আচরণ করো, বা করার পরিকল্পনা করো? এখন, সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বকে সম্যকরূপে দেখা, উপলব্ধি করা এবং জানার পর, তোমরা আগে যে কাজ করতে, এবং নিজেদের যে চরিত্রকে প্রকাশ করতে, তার দিকে যখন ফিরে তাকাও, তখন কি তোমাদের মধ্যে বমনেচ্ছার উদ্রেক হয়? তোমরা কি নিজেদের কদর্যতা ও নির্লজ্জতাকে শনাক্ত করতে পারো? এজাতীয় মানুষদের স্বভাব ও সারসত্যকে ব্যবচ্ছেদ করে দেখার পর, এখন কি বলা যায় যে তারা নরকের অভিশপ্ত সন্তান মাত্র? এমন কি বলা যায় যে এমন কাজ যারা করে তাদের প্রত্যেকেই নিজেদের উপর অবমাননা ডেকে আনছে? তোমরা কি এই বিষয়টির চারিত্রিক গুরুত্বকে উপলব্ধি করতে পারছো? বিষয়টি ঠিক কতটা গুরুতর? যে লোকগুলি এইভাবে আচরণ করে তাদের অভিপ্রায় হল ঈশ্বরকে অনুকরণ করা। তারা ঈশ্বর হতে চায়, মানুষকে দিয়ে তারা নিজেদের ঈশ্বর জ্ঞানে অর্চনা করাতে চায়। মানুষের হৃদয়ে ঈশ্বরের স্থানটি তারা অবলুপ্ত করতে চায়, এবং মানুষের মাঝে কার্যরত ঈশ্বরের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়, এবং এই কাজ তারা করে তাদের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার, মানুষকে গ্রাস করার, এবং মানুষকে নিজের দখলে আনার লক্ষ্যকে চরিতার্থ করার নিমিত্ত। প্রত্যেকের অবচেতনেই এধরনের বাসনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা সুপ্ত রয়েছে, এবং প্রত্যেকেই এই প্রকারের ভ্রষ্ট শয়তানোচিত সারসত্যের মধ্যে বাস করে, সে এমন এক শয়তানসুলভ প্রকৃতি যেখানে তারা ঈশ্বরের সঙ্গে বৈরিতার সম্পর্কে নিযুক্ত, ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে, এবং ঈশ্বর হয়ে উঠতে চায়। ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বিষয়ে আমার আলোচনার পর, তোমরা কি এখনো ঈশ্বরের ছদ্মবেশ ধরার বা ঈশ্বরকে অনুকরণ করার ইচ্ছা বা উচ্চাশা পোষণ করো? তোমরা কি এখনো ঈশ্বর হয়ে ওঠার কামনা করো? এখনো কি তোমরা ঈশ্বর হয়ে উঠতে চাও? ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে অনুকরণ করা মানুষের সাধ্য নয়, এবং ঈশ্বরের স্বরূপ ও মর্যাদাকে মূর্ত করে তোলাও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। যে কণ্ঠস্বরে ঈশ্বর বাক্যোচ্চারণ করেন তার অনুকরণ করতে তুমি সক্ষম হলেও, ঈশ্বরের সারসত্যের অনুকরণ করতে তুমি পারবে না। ঈশ্বরের জায়গায় দাঁড়াতে ও তাঁর ছদ্মবেশ ধরতে তুমি সমর্থ হলেও, কোনোদিনই তুমি ঈশ্বর যা করতে মনস্থ করেন তা সম্পন্ন করতে, এবং সকলকিছুকে নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশদান করতে সক্ষম হবে না। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, তুমি চিরকাল এক নগণ্য প্রাণীই রয়ে যাবে, এবং তুমি যতোই দক্ষ ও সমর্থ হও না কেন, যত সংখ্যক প্রতিভার অধিকারীই তুমি হও না কেন, তোমার সমগ্র সত্তাই সৃষ্টিকর্তার আধিপত্যের অধীন। তুমি কিছু দুর্বিনীত কথাবার্তা বলতে সক্ষম হলেও, তা প্রতিপন্ন করে না যে তুমি সৃষ্টিকর্তার সারসত্যের অধিকারী, এবং এও উপস্থাপিত করে না যে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব তোমার অধিগত। ঈশ্বরের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাই হল স্বয়ং ঈশ্বরের সারসত্য। সেগুলি বাহ্যিকভাবে শেখা বা সংযুক্ত করা হয়নি, সেগুলি হল স্বয়ং ঈশ্বরের সহজাত সারসত্য। আর সেই কারণেই সৃষ্টিকর্তা ও সৃজিত প্রাণীদের মধ্যের সম্পর্কটির পরিবর্তন ঘটানো কোনোদিনই সম্ভবপর নয়। জীবকুলের এক সদস্য হিসাবে, মানুষকে অবশ্যই তার নিজ অবস্থান ধরে রাখতে হবে, আর সচেতনভাবে আচরণ করতে হবে। ঈশ্বর তোমার উপর যা যা অর্পণ করেছেন, তা কর্তব্যের সাথে রক্ষা কর। কোনো অনুপযুক্ত কাজ কোরো না, কিংবা এমন কিছু কোরো না যা তোমার ক্ষমতার আয়ত্তের বাইরে অথবা যা ঈশ্বরের কাছে ঘৃণ্য। মহান হওয়ার, কিংবা অতিমানব হয়ে ওঠার, অথবা অন্যদের ঊর্ধ্বে ওঠার চেষ্টা কোরো না, ঈশ্বর হয়ে উঠতেও চেয়ো না। মানুষের এরকম কামনা করা উচিত নয়। মহান কিংবা অতিমানব হয়ে উঠতে চাওয়াটা অযৌক্তিক। ঈশ্বর হয়ে উঠতে চাওয়াটা তো আরোই লজ্জাজনক; এটি ন্যক্কারজনক, আর জঘন্য। যেটা প্রশংসনীয়, আর জীবকুলের অন্য কোনো কিছুর তুলনায় যা বেশি করে ধরে রাখা উচিত, তা হল, প্রকৃত জীব হয়ে ওঠা; এ-ই হল একমাত্র লক্ষ্য যা সকল মানুষের অনুসরণ করা উচিত।

—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ১

পূর্ববর্তী: মানুষের সঙ্গে এক সন্ধিচুক্তি স্থাপন করতে ঈশ্বর তাঁর বাক্যরাজির ব্যবহার করলেন

পরবর্তী: সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব স্থান, কাল, বা ভৌগোলিক পরিসরের দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়, এবং সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব গণনার অতীত

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

পঞ্চম দিবসে, বিবিধ এবং বৈচিত্র্যময় গঠনের জীবন বিভিন্ন উপায়ে সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব প্রদর্শন করে

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, “ঈশ্বর বললেন, জলরাশি পূর্ণ হোক নানা জাতির জলচর প্রাণীতে এবং পৃথিবীর উপরে আকাশে উড়ে বেড়াক পক্ষীকুল। ঈশ্বর সৃষ্টি করলেন...

আদমের প্রতি ঈশ্বরের আদেশ

আদিপুস্তক ২:১৫-১৭ প্রভু পরমেশ্বর মানুষকে এদন উদ্যানে কৃষিকর্ম ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত করলেন। প্রভু পরমেশ্বর মানুষকে নির্দেশ দিলেন,...

প্রথম দিবসে, ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বদান্যতায় মানবজাতির দিন এবং রাতের সূচনা হয় এবং অবিচল থাকে

প্রথম অনুচ্ছেদটির প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাকঃ: “ঈশ্বর বললেন, দীপ্তি হোক! দীপ্তির হল আবির্ভাব। ঈশ্বর দেখলেন, চমৎকার এই দীপ্তি। অন্ধকার থেকে...

তৃতীয় দিবসে, ঈশ্বরের বাক্যসমূহ জন্ম দেয় পৃথিবী এবং সমুদ্রের এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিশ্বে প্রাণসঞ্চার করে

এরপর, পাঠ করা যাক আদিপুস্তক ১:৯-১১-এর প্রথম বাক্যটি: “ঈশ্বর বললেন, আকাশের নীচে সমস্ত জলরাশি এক স্থানে সংহত হোক, প্রকাশিত হোক শুষ্ক ভূমি!”...

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন