ঈশ্বরকে তোমার অনন্য প্রভু হিসাবে গ্রহণ করাই হল পরিত্রাণ অর্জনের প্রথম পদক্ষেপ
ঈশ্বরের কর্তৃত্ব সংক্রান্ত সত্য হল সেই সত্য যা প্রতি মানুষের গুরুত্ব সহকারে সম্মান করা উচিত, হৃদয় দিয়ে তার অভিজ্ঞতা লাভ ও তাকে অনুধাবন করা উচিত, প্রতিটি মানুষের জীবনের সঙ্গেই এইসব সত্যের সম্পর্ক রয়েছে; প্রতিটি মানুষের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, প্রত্যেক মানুষ জীবনে যে সব গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণের মধ্য দিয়ে যায় তার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে; ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান এবং যে আচরণের সঙ্গে তারা ঈশ্বরের কর্তৃত্বের সম্মুখীন হবে তার সঙ্গে এবং স্বাভাবিকভাবে প্রতিটি মানুষের চূড়ান্ত গন্তব্যের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে। তাই একে জানতে এবং বুঝতে সমগ্র জীবনের সমতুল জীবনীশক্তি লেগে যায়। যখন তুমি ঈশ্বরের কর্তৃত্বের দিকে প্রত্যক্ষভাবে তাকাও, যখন তুমি তাঁর সার্বভৌমত্বকে গ্রহণ করো, তুমি ধীরে ধীরে ঈশ্বরের কর্তৃত্বের অস্তিত্ব সম্পর্কিত যে সত্য, তা উপলব্ধি করতে এবং অনুধাবন করতে পারবে। কিন্তু তুমি যদি কখনও ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে চিনতে না পারো এবং কখনও তাঁর সার্বভৌমত্বকে স্বীকার না করো, তাহলে তুমি যতই দীর্ঘজীবী হও না কেন, ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞানও তুমি অর্জন করতে পারবে না। যদি তুমি ঈশ্বরের কর্তৃত্ব যদি প্রকৃতপক্ষে না জানো এবং বুঝতে না পারো, তাহলে যখন তুমি পথের শেষ প্রান্তে পৌঁছবে, এমন কি কয়েক দশক ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেও, জীবনে প্রদর্শন করার মত তোমার কিছুই থাকবে না, এবং স্বাভাবিকভাবেই, মানুষের ভাগ্যের উপর ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞানও তোমার থাকবে না। এটা কি খুবই দুঃখজনক নয়? সুতরাং, তুমি জীবনে যতই পথ হাঁটো না কেন, এখন তোমার বয়স যতই হোক না কেন, তোমার অবশিষ্ট যাত্রা যতই দীর্ঘ হোক না কেন, প্রথমে তোমাকে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব অবশ্যই স্বীকার করতে হবে ও তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে, এবং এই সত্যটি মেনে নিতে হবে যে ঈশ্বর তোমার অনন্য প্রভু। মানুষের ভাগ্যের উপর ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে এই সত্যগুলির স্পষ্ট, নির্ভুল জ্ঞান এবং উপলব্ধি প্রত্যেকের জন্য একটি বাধ্যতামূলক পাঠ; মানুষের জীবনকে জানা এবং সত্য অর্জনের এটিই হলো মূলকথা। এই হল ঈশ্বরকে জানার জীবন, এর অধ্যয়নের মৌলিক পাঠক্রম, প্রত্যেককে প্রতিদিন যার মুখোমুখি হতে হবে, যা কেউ এড়াতে পারবে না। যদি কেউ এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সংক্ষিপ্ত পথ নিতে চায়, তবে আমি তোমাকে এখনই বলছি, তা অসম্ভব! তুমি যদি ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে চাও, তাহলে তার সম্ভাবনা আরও কম! ঈশ্বর মানুষের একমাত্র প্রভু, ঈশ্বরই মানুষের ভাগ্যের একমাত্র কর্তা, এবং তাই মানুষের পক্ষে নিজের ভাগ্য নির্ধারণ করা অসম্ভব, এর বাইরে পা রাখা তার পক্ষে অসাধ্য। মানুষ যতই ক্ষমতাশালী হোক, অন্যের ভাগ্যের উপর সে প্রভাব ফেলতে পারে না—তার সমন্বয়সাধন, আয়োজন, নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তন তো আরোই পারে না। একমাত্র স্বয়ং ঈশ্বর, যিনি অনন্য, মানুষের জন্য সব কিছুই নির্দেশ করেন। কারণ স্বয়ং ঈশ্বর, যিনি অনন্য শুধুমাত্র তিনিই অনন্য কর্তৃত্বের অধিকারী যা মানুষের ভাগ্যের উপর সার্বভৌমত্ব রাখে, একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই মানুষের অনন্য প্রভু। ঈশ্বরের কর্তৃত্ব কেবল সৃষ্ট মানবজাতির উপরেই নয়, মানুষের কাছে দৃশ্যমান নয় এমন অ-সৃষ্ট অস্তিত্বের উপরে, নক্ষত্রের উপরে, মহাজগতের উপরেও সার্বভৌমত্ব ধারণ করে। এটি একটি অবিসংবাদিত সত্য, একটি সত্য যা প্রকৃতই বিদ্যমান, যার পরিবর্তন কোন ব্যক্তি বা বস্তু করতে পারে না। যদি তোমাদের মধ্যে এমন কেউ থাকে যে তার বর্তমান নিয়ে অসন্তুষ্ট, যদি তুমি বিশ্বাস কর যে তোমার কিছু বিশেষ দক্ষতা বা ক্ষমতা আছে, এবং এখনও ভাবছ যে ভাগ্যের দৌলতে তুমি তোমার বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারো বা তার থেকে কোনোভাবে অব্যাহতি পেতে পারো; মানুষিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি তোমার নিজের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করো এবং তোমার সহকর্মীদের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে খ্যাতি এবং সৌভাগ্য লাভে সচেষ্ট হও; তাহলে আমি বলছি, তুমি শুধু নিজের জন্য কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করছো, শুধুই সমস্যা ডেকে আনছো, নিজের কবর নিজেই খনন করছো! শীঘ্রই বা পরে, একদিন, তুমি আবিষ্কার করবে তুমি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে এবং তোমারপ্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তোমার উচ্চাকাঙ্ক্ষা, ভাগ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইচ্ছা এবং তোমার নীচ আচরণ তোমাকে এমন পথে নিয়ে যাবে যেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের পথ থাকবে না এবং এর জন্য তোমাকে একটি তিক্ত মূল্য দিতে হবে। যদিও বর্তমানে তুমি পরিণতির তীব্রতা দেখতে পাচ্ছো না, যতই তুমি ক্রমাগত অনুভব করবে এবং গভীরভাবে উপলব্ধি করবে যে ঈশ্বর মানুষের ভাগ্য-বিধাতা, ততই তুমি ধীরে ধীরে উপলব্ধি করবে যে আমি আজ যা বলছি, এবং তার বাস্তব প্রভাব। প্রকৃতই তোমার হৃদয় ও আত্মা আছে কিনা এবং তুমি সত্যকে ভালোবাসো কি না তা নির্ভর করে ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব এবং সত্যের প্রতি তোমার মনোভাব কী তার উপর। স্বাভাবিকভাবে, এতেই নির্ধারিত হয় তুমি প্রকৃতই ঈশ্বরের কর্তৃত্ব জানতে এবং উপলব্ধি করতে পারবে কিনা। যদি তুমি তোমার জীবনে কখনও ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব এবং তাঁর ব্যবস্থাগুলি অনুভব না করে থাকো, ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে ন্যূনতম স্বীকৃতি না দিয়ে থাকো এবং গ্রহণ না করে থাকো, তাহলে তুমি একেবারেই মূল্যহীন, এবং যে পথ তুমি নিয়েছো বা যে বিকল্প তুমি নির্বাচন করেছ, তাতে তুমি নিঃসন্দেহে ঈশ্বরের ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যানের বিষয় হবে। কিন্তু যারা, ঈশ্বরের কাজে, তাঁর পরীক্ষাকে মেনে নিতে পারে, তাঁর সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করতে পারে, তাঁর কর্তৃত্বের কাছে সমর্পণ করতে পারে, এবং ধীরে ধীরে তাঁর বাক্যের বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে, তারা ঈশ্বর সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান, তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রকৃত উপলব্ধি অর্জন করতে পারবে; তারাই প্রকৃতপক্ষে হয়ে উঠবে সৃষ্টিকর্তার অধীন। শুধুমাত্র এই ধরনের মানুষই প্রকৃত সুরক্ষা পাবে। কারণ তারা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব উপলব্ধি করেছে, এবং তা গ্রহণ করেছে, মানুষের ভাগ্যের উপর ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের সত্যতা সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি, তার প্রতি তাদের সমর্পণ, বাস্তব এবং নির্ভুল। যখন তারা মৃত্যুর মুখোমুখি হবে, ইয়োবের মত তার মৃত্যুতে অকম্প মন থাকবে, সে সমস্ত বিষয়ে ঈশ্বরের সুসমন্বয় ও ব্যবস্থার কাছে সমর্পণ করবে, কোনো ব্যক্তিগত পছন্দ বা ব্যক্তিগত আকাঙ্খা ছাড়াই। কেবলমাত্র এমন ব্যক্তিই একজন প্রকৃত, সৃষ্ট মানুষ হিসাবে স্রষ্টার কাছে ফিরে আসতে সক্ষম হবে।
—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ৩