সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের অধীনে, সমস্ত জিনিসই নিখুঁত

পক্ষী ও মৎস্যের ন্যায় জঙ্গম তথা বৃক্ষ ও পুষ্পের ন্যায় স্থাবর উভয় প্রকার সত্ত্বাই, এবং ষষ্ঠ দিবসে সৃষ্ট গবাদি পশু, কীটপতঙ্গ এবং বন্যপ্রাণী সহ সকল জীবই ঈশ্বরসৃষ্ট—ঈশ্বরের চোখে এরা সকলেই ভালো ছিল, এবং উপরন্তু, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, এই সকল জীবই, তাঁর পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে, পরিপূর্ণতার চরম উৎকর্ষতা অর্জন করেছিল, এবং তারা যেসকল মান অর্জন করুক বলে ঈশ্বর চেয়েছিলেন, তারা তা অর্জন করতে পেরেছিল। সৃষ্টিকর্তা তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী যেভাবে কাজটি করতে চেয়েছিলেন সেইভাবে ধাপে ধাপে কাজটি করেছিলেন। যে বস্তুসকল তিনি সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, সেগুলি একাদিক্রমে আবির্ভূত হয়েছিল, এবং প্রতিটির আবির্ভাবই ছিল সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের প্রতিফলন, তাঁর কর্তৃত্বের স্ফটিককরণ; এই স্ফটিককরণের কারণে, সকল জীব সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ এবং সংস্থানসমূহের কারণে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ না থেকে পারে না। ঈশ্বরের অলৌকিক কাজগুলি উদ্ভাসিত হওয়ামাত্রই, বিশ্বচরাচর ক্রমান্বয়ে, ঈশ্বর সৃষ্ট সকল বস্তুর সহ, স্ফীত হয়ে উঠেছিল, এবং তা এক চরম বিশৃঙ্খলা ও অন্ধকার থেকে স্বচ্ছতা ও উজ্জ্বলতায়, মৃত্যুসম স্তব্ধতা থেকে সজীবতায়, এবং সীমাহীন প্রাণশক্তির পরিপূর্ণতায় রূপান্তরিতে হয়েছিল। মহান থেকে ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র থেকে আণুবীক্ষণিক—সকল সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে এমন কিছুই ছিল না যা সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দ্বারা সৃজিত হয়নি, এবং প্রতিটি জীবের অস্তিত্বেরই একটি অনন্য এবং অন্তর্নিহিত প্রয়োজনীয়তা এবং মূল্য ছিল। আকৃতি ও গঠনের তারতম্য নির্বিশেষে, তাদের সৃষ্টি হয়েছিল সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বে থাকার জন্যই। কখনও কখনও মানুষ কোনো কুৎসিত-দর্শন কীটকে দেখে বলবে, “পোকাটা কি ভয়ঙ্কর, এমন কুৎসিত জিনিস ঈশ্বরের দ্বারা তৈরি হতেই পারে না—তিনি এত কদর্য কোনোকিছু তৈরি করতেই পারেন না।” কি অজ্ঞ এই দৃষ্টিভঙ্গী! বরং তাদের বলা উচিত ছিল, “পোকাটি অত্যন্ত কুৎসিত চেহারার হলেও, এটি ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্ট, আর তাই এর নিশ্চয়ই নিজস্ব অনন্য উদ্দেশ্য রয়েছে।” ঈশ্বরের ভাবনায়, তিনি তাঁর সৃষ্ট বিভিন্ন সজীব বস্তুকে সকল প্রকার অবয়ব, এবং সমস্ত ধরনের কার্যকারিতা ও উপযোগিতা প্রদান করতে চেয়েছিলেন, এবং সেহেতু, ঈশ্বরসৃষ্ট বস্তুগুলির কোনোটিই পরস্পর-সদৃশ নয়। বাহ্যিক চেহারা থেকে শুরু করে তাদের তাদের অভ্যন্তরীণ গঠন, তাদের জীবনযাপনের অভ্যাস থেকে শুরু করে তাদের দখলকৃত অবস্থান—সকলই পৃথক। গাভীর অবয়ব গাভীর ন্যায়, গর্ধভের অবয়ব গর্ধভের ন্যায়, মৃগের অবয়ব মৃগ-সদৃশ, এবং হস্তীর অবয়ব হস্তীসম। তুমি কি বলতে পার যে কোনটি দেখতে সবচেয়ে ভালো এবং কোনটি সবচেয়ে কুৎসিত? তুমি কি বলতে পার যে কোনটি সবচেয়ে দরকারি, এবং কোনটির অস্তিত্বের প্রয়োজন সবচেয়ে কম? কিছু কিছু মানুষ হাতিকে যেমন দেখতে, তা পছন্দ করে, অথচ ক্ষেতে চাষ করার জন্য কিন্তু কেউ হাতির ব্যবহার করে না; কিছু কিছু মানুষের পছন্দ সিংহ এবং বাঘের চেহারা, কারণ এদের চেহারা সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিত্তাকর্ষক, কিন্তু তুমি কি তাদের পোষা জন্তু হিসাবে রাখতে পার? সংক্ষেপে, যখন অগণিত সৃষ্টির কথা ওঠে, তখন মানুষের উচিত সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের প্রতি বিনম্রভাবে সমর্পণ করা, অর্থাৎ, সমস্ত কিছুর জন্য সৃষ্টিকর্তার দ্বারা নির্ধারিত আদেশের প্রতি বিনম্রতা-সহযোগে সমপর্ণ করা; এটাই হল প্রাজ্ঞতম মনোভাব। সৃষ্টিকর্তার মূল অভিপ্রায়গুলির অনুসন্ধান এবং সেগুলির প্রতি আনুগত্যের মনোভাবই হল সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বকে প্রকৃত-অর্থে এবং সুনিশ্চিতভাবে গ্রহণ করা। এটি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে উত্তম, তাহলে মনুষ্যকর্তৃক ছিদ্রান্বেষণের হেতু কী?

এইভাবে, সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের অধীন সকল বস্তুকে সৃষ্টিকর্তার সার্বভৌমত্বের নিমিত্ত এক নব ঐকতান গাইতে হবে, আরম্ভ করতে হবে নতুন দিবসে তাঁর কার্যের এক গৌরবান্বিত মুখবন্ধ, এবং, এই মুহূর্তে, সৃষ্টিকর্তা তাঁর পরিচালনামূলক কার্যের এক নতুন পৃষ্ঠার উন্মোচনও করবেন। সৃষ্টিকর্তার নিযুক্ত বিধান অনুযায়ী, বসন্তে নবীন অঙ্কুরোদগম, গ্রীষ্মে পরিপক্কতা, শরতে ফসল আহরণ এবং শীতে তা সংরক্ষণের নিয়ম অনুসারে, সকল বস্তু সৃষ্টিকর্তার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হবে, এবং তারা নিজ নিজ নতুন দিন, নবসূচনা ও নবীন জীবনধারাকে স্বাগত জানাবে। তারা বেঁচে থাকবে এবং সৃষ্টিকর্তার কর্তৃত্বের অধীনে প্রতিটি দিবসকে স্বাগত জানাতে অনন্তকাল ধরে ধারাবাহিকভাবে পুনরুৎপাদন করে যাবে …

—বাক্য, খণ্ড ২, ঈশ্বরকে জানার প্রসঙ্গে, স্বয়ং অনন্য ঈশ্বর ১

পূর্ববর্তী: ষষ্ঠ দিবসে, সৃষ্টিকর্তা কথা বলেন, এবং তাঁর মনের মধ্যে থাকা প্রতিটি জীব একাদিক্রমে আবির্ভূত হয়

পরবর্তী: সৃষ্ট এবং অসৃষ্ট কোনো জীবই সৃষ্টিকর্তার পরিচয়ের প্রতিস্থাপন করতে পারে না

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

ষষ্ঠ দিবসে, সৃষ্টিকর্তা কথা বলেন, এবং তাঁর মনের মধ্যে থাকা প্রতিটি জীব একাদিক্রমে আবির্ভূত হয়

ইন্দ্রিয়াতীতভাবে, সৃষ্টিকর্তার সমস্ত সৃষ্টিকার্য পাঁচ দিন ধরে অব্যাহত ছিল, ঠিক তার পরপরই সৃষ্টিকর্তা তাঁর সকল বস্তু সৃষ্টির ষষ্ঠ দিবসকে...

ঈশ্বর হবাকে সৃষ্টি করলেন

আদিপুস্তক ২:১৮-২০ তারপর প্রভু পরমেশ্বর বললেন, মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তাকে তার যোগ্য এক সঙ্গিনী দেব। প্রভু পরমেশ্বর মৃত্তিকা থেকে...

তৃতীয় দিবসে, ঈশ্বরের বাক্যসমূহ জন্ম দেয় পৃথিবী এবং সমুদ্রের এবং ঈশ্বরের কর্তৃত্ব বিশ্বে প্রাণসঞ্চার করে

এরপর, পাঠ করা যাক আদিপুস্তক ১:৯-১১-এর প্রথম বাক্যটি: “ঈশ্বর বললেন, আকাশের নীচে সমস্ত জলরাশি এক স্থানে সংহত হোক, প্রকাশিত হোক শুষ্ক ভূমি!”...

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন