ঐশ্বরিক উচ্চারণকে কেন আমরা বলি যে বাক্য দেহে আবির্ভূত হল?

12-03-2022

বাইবেল থেকেই আমরা সবাই জেনেছি যে, ঈশ্বরের আত্মা সরাসরি বলা, কোনো ভবিষ্যদ্বক্তার মাধ্যমে বলা বা ঈশ্বরের অবতার হিসাবে প্রভু যীশুর দ্বারা কথিত, সকলই ঈশ্বরের উচ্চারণ। ঈশ্বরের যে কোনো বাক্যেই যে কর্তৃত্ব এবং শক্তি আছে তা বুঝতে মানুষ সমর্থ হয়। এগুলি সবই সত্য এবং অনস্বীকার্য। ঈশ্বরের বাক্য যারা ক্রমাগত পড়ে তারা উপলব্ধি করে তাঁর কর্তৃত্ব, সর্বশক্তিমানতা এবং সেগুলির মধ্যে প্রজ্ঞার প্রকাশ। এছাড়াও তারা উপলব্ধি করে তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব; এইভাবে ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যেই প্রতিফলিত হয় তাঁর পরিচয় এবং অবস্থান। ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতারের বলা সব বাক্য সংকলনের মাধ্যমেই বাক্য দেহে আবির্ভূত হল। এগুলি সব সংকলিত হয়েছিল দয়ার যুগে ঈশ্বর যখন মানবজাতির ত্রাণের কাজটি সমাপ্ত করেন এবং, ঈশ্বরের স্থান থেকে আরম্ভ করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর শেষ দিনগুলিতে বিচারের কাজ শুরু করেন। তাঁর অন্তিম দিনগুলিতে বলা এইসব বাক্যই হল ঈশ্বরের বাক্য, যা বলা হয়েছিল সমগ্র মানবজাতির উদ্দেশ্যে। সর্বশক্তিমান ইশ্বর তাদের কাছে উন্মোচিত করেছিলেন তাঁর ছয় হাজার বর্ষব্যাপী কর্মপরিকল্পনা, তাঁর তিন পর্যায়ের কাজের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য, তাঁর অবতারের রহস্য, অন্তিম দিনগুলিতে বিচারের রহস্য, এবং মানবজাতির সমাপ্তি ও গন্তব্যের রহস্য। আরো প্রকাশ করেছিলেন শয়তান প্ররোচিত মানবজাতির দুর্নীতির প্রকৃত সারমর্ম ও সত্য, এবং মানবজাতিকে দেখিয়েছিলেন কোন পথে সত্যের অনুশীলন করা যাবে, জীবনের অবস্থান পরিবর্তন হবে এবং আরও অনেক কিছু—এই ভাবেই প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সম্পূর্ণ করেছিলেনঃ “যার শুনবার কান আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা মণ্ডলীগুলোকে কি বলছেন” (প্রকাশিত বাক্য ২:৭)। “যিনি সেই সিংহাসনের উপর বসে ছিলেন তাঁর ডান হাতে আমি একটা বই দেখলাম। বইটার ভিতরে ও বাইরে লেখা ছিল এবং সাতটা মোহর দিয়ে সীলমোহর করা ছিল। পরে আমি একজন শক্তিশালী স্বর্গদূতকে জোর গলায় এই কথা বলতে শুনলাম, ‘কে এই সীলমোহরগুলো ভেংগে বইটা খুলবার যোগ্য?’ কিন্তু স্বর্গে বা পৃথিবীতে কিম্বা পৃথিবীর গভীরে কেউই সেই বইটা খুলতে পারল না, ভিতরে দেখতেও পারল না। তখন আমি খুব কাঁদতে লাগলাম, কারণ এমন কাউকে পাওয়া গেল না যে ঐ বইটা খুলবার বা দেখবার যোগ্য। পরে নেতাদের মধ্যে একজন আমাকে বললেন, ‘কেঁদো না। যিহূদা বংশের সিংহ, যিনি দায়ূদের বংশধর, তিনি জয়ী হয়েছেন। তিনিই ঐ সাতটা সীলমোহর ভেংগে বইটা খুলতে পারেন’” (প্রকাশিত বাক্য ৫:১-৫)। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাণী সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত গ্রন্থের ভবিষ্যদ্বাণীগুলিকে পূর্ণ করেছে। একমাত্র ঈশ্বরই তাঁর নিজস্ব ব্যবস্থাপনা-পরিকল্পনার রহস্য উন্মোচন করতে পারেন, এবং একমাত্র ঈশ্বর, স্রষ্টা হিসাবে তাঁর পরিচয়ে, সমস্ত মানবজাতির কাছে তাঁর বক্তব্য বলতে পারেন, বিচার করতে পারেন এবং মানবজাতির দুর্নীতির সত্যতা প্রকাশ করতে পারেন, এবং বিবিধ মানবগোষ্ঠীর সমাপ্তি ও গন্তব্য নির্ধারণ করতে পারেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের উচ্চারণে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে এবং প্রতিটি শব্দই ঈশ্বরের ঐশ্বরিকত্ব এবং অস্তিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। সুতরাং একথা আমরা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, মানবজাতির উদ্দেশ্যে তাঁর অন্তিম দিনগুলিতে বলা এবং গির্জার উদ্দেশ্যে পবিত্র আত্মার বলা প্রতিটি শব্দবন্ধই প্রকাশ করে সর্বশক্তিমান ইশ্বর বাক্য দেহে আবির্ভূত হল।

কথা বলার জন্য ঈশ্বর যখনই দেহ ধারণ করেন তখনই তিনি সর্বদা এমন শব্দ উচ্চারণ করেন যা মানুষকে উপদেশ দেয় এবং দাবি করে, এমন শব্দ যা বিচার করে, শাস্তি দেয় এবং দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষদের প্রকাশ করে, সেইসাথে এমন শব্দ যা তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং আরও অনেক কিছু। সত্য, পথনির্দেশ এবং জীবনের সমস্ত অভিব্যক্তিই হল ঈশ্বরের বাক্য। এগুলি ঈশ্বরের স্বভাব এবং তিনি কে ও তাঁর কী আছে, তার প্রতিনিধিত্ব করে। প্রভু যীশু যখন তাঁর কাজ করতে এসেছিলেন, তখন তিনি যে ভাবে অনেক কথা প্রকাশ করেছিলেন তা এইরকমঃ “পাপ থেকে মন ফিরাও, কারণ স্বর্গ-রাজ্য কাছে এসে গেছে” (মথি ৪:১৭)। “সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে দরকারী আদেশ হল, ‘তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত অন্তর, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’ তার পরের দরকারী আদেশটা প্রথমটারই মত-‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।’ মোশির সমস্ত আইন-কানুন এবং নবীদের সমস্ত শিক্ষা এই দু’টি আদেশের উপরেই নির্ভর করে আছে” (মথি ২২:৩৭-৪০)। “ভণ্ড ধর্ম-শিক্ষক ও ফরীশীরা, ধিক্‌ আপনাদের! আপনারা লোকদের সামনে স্বর্গ-রাজ্যের দরজা বন্ধ করে রাখেন। তাতে নিজেরাও ঢোকেন না আর যারা ঢুকতে চেষ্টা করছে তাদেরও ঢুকতে দেন না” (মথি ২৩:১৩)। প্রভু যীশুর কথার মধ্যে রয়েছে মানুষের কাছে ঈশ্বরের দাবি এবং সেই সঙ্গে তাদের বিচারের কথাও। সৃষ্টিকর্তা হিসাবে নিজের পরিচয়ে ঈশ্বর এইসব কথা মানুষকে বলেছিলেন, এবং প্রভু যীশু যে ভাবে বলেছিলেন, তা থেকে আমরা বুঝতে পারি ঈশ্বরের বাক্য হলো সত্য, কর্তৃত্বব্যঞ্জক এবং তা সম্পূর্ণভাবে প্রতিভাত করে ঈশ্বরের পরিচয় এবং অবস্থান। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বলা বাক্য এবং প্রভু যীশু আগে যা বলেছেন তা একই; অবতাররূপে মানুষের কাছে বলা ঈশ্বরের সব বাক্য। এগুলি থেকে প্রকাশিত হয় ঈশ্বরের প্রকৃতি এবং পবিত্রতার সারাংশ, সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় তাঁর পরিচয় এবং অবস্থান। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কেবল তাঁর ছয়-হাজার বছরের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার রহস্যই প্রকাশ করেন না, বরং সমগ্র মানবজাতির দুর্নীতির সারমর্ম এবং উৎসও প্রকাশ করেন, এমনকি মানুষের হৃদয় ও মনের যে সব কলুষতা সম্পর্কে তারা সচেতন নয়, সেগুলিও প্রকাশ করেন। এইসব বাক্য পড়ে মানুষ তা মনেপ্রাণে স্বীকার করে। একই সঙ্গে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি তাদের উপর শয়তানের অন্ধকার প্রভাব অপসারণের এবং শুদ্ধ হওয়ার এবং পরিত্রাণ অর্জনের পথ দেখায়। এইসব বাক্য মানুষকে সেই সত্যের সন্ধান দেয় যা অনুশীলন করা উচিত, এবং যা তাদের বিশ্বাসে প্রবিষ্ট হয়, যেমন কীভাবে একজন সৎ ব্যক্তি হতে হবে, কীভাবে ঈশ্বরকে ভালবাসতে এবং আত্মসমর্পণ করতে হবে, কীভাবে তাঁর ভয়ে ভীত হতে হবে এবং মন্দ থেকে দূরে থাকতে হবে, কীভাবে তাকে সেবা করতে হবে, কীভাবে সাধারণভাবে মানব জীবন যাপন করতে হবে এবং এই রকম আরো অনেক কিছু। অন্তিম দিনগুলিতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত সত্যের বিভিন্ন দিক প্রভু যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ ও সম্পন্ন, দুই-ই করে: “তোমাদের কাছে আরও অনেক কথা আমার বলবার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো সহ্য করতে পারবে না। কিন্তু সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তখন তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে পূর্ণ সত্যে নিয়ে যাবেন। তিনি নিজ থেকে কথা বলবেন না, কিন্তু যা কিছু শোনেন তা-ই বলবেন, আর যা কিছু ঘটবে তাও তিনি তোমাদের জানাবেন” (যোহন ১৬:১২-১৩)। সমগ্র মানবজাতির কাছে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেই বা বলতে পারেন? আর কেই বা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে সরাসরি প্রকাশ এবং মানুষের কাছে দাবি করতে পারেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেই বা সত্য অথবা কলুষিত মানবজাতির সারমর্ম বুঝতে পারেন? মানবহৃদয়ের গভীরতম প্রদেশে লুকিয়ে থাকা শয়তানি প্রকৃতি কে প্রকাশ করতে পারেন? অন্তিম দিনগুলিতে ঈশ্বরের বিচারের কাজ কে সম্পন্ন করতে পারেন এবং শয়তানের প্রভাব থেকে মানুষকে সর্বতোভাবে কে ভাবে রক্ষা করতে পারেন? কোনো কীর্তিমান, মহৎ ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী, বা ধর্মতত্ত্ববিদ সত্য প্রকাশ করতে বা সমগ্র মানবজাতির সঙ্গে কথা বলতে পারেন না, মানব-কলুষের সারমর্ম দেখতে বা শয়তানের দখল থেকে তাদের বাঁচাতে পারে না। সৃষ্টিকর্তাই একমাত্র এই ধরনের ক্ষমতা ও শক্তির অধিকারী। ঈশ্বরের এই অনন্য ক্ষমতা ও শক্তির সম্পূর্ণ প্রকাশ ঘটে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে; এগুলি হল তাঁর পরিচয় এবং সারমর্মের উদ্ভাস। সুতরাং, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যগুলি হল ঈশ্বরের এবং পবিত্র আত্মার বাক্য, এবং এগুলি সমস্ত সন্দেহের উর্ধ্বে।

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।👇

সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উদ্দেশ্যগুলি কী কী?

সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা বাইবেলে বর্ণিত ঈশ্বরের বাক্য এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বলা বাক্য দেহে আবির্ভূত হল-এর কথাকে সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ...

রাজ্যের যুগে ঈশ্বর কেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম পরিগ্রহণ করলেন

বহু সংখ্যক মানুষ এ কথা বুঝতে পারেন না যে প্রভু যীশুর পুনরাগত রূপই যখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তখন, অন্তিম সময়ে প্রভু যীশু যখন বিচারের কাজ করতে...

খ্রিষ্ট ধর্ম এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার মধ্যে পার্থক্য

অবতাররূপী প্রভু যিশুর ত্রাণের কাজ অনুসরণ করে খ্রিষ্টধর্মের উদ্ভব হয়; একটি খ্রিষ্টান গির্জাই দয়ার যুগের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে। অন্তিম...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন