৩. সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উদ্ভব এবং বিকাশ
করুণার যুগে, প্রভু যীশু তাঁর অনুগামীদের প্রতিশ্রুতি দেন, “তোমাদের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করতে আমি যখন যাচ্ছি তখন আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যেতে নিশ্চয়ই আবার ফিরে আসব যাতে আমি যেখানে থাকব সেখানে তোমরাও থাকতে পার” (যোহন ১৪:৩)। তিনি আরো ভবিষ্যদ্বাণী করেন “বিদ্যুতের ঝলক যেমন হঠাৎ পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত সমগ্র আকাশকে আলোকিত করে, ঠিক সেইভাবে মনুষ্যপুত্রের আগমন হবে” (মথি ২৪:২৭)। তাঁর প্রতিশ্রুতি এবং পূর্ববর্তী ঘোষণা অনুযায়ী, অন্তিম সময়ে ঈশ্বর আবার দেহরূপ ধারণ করে পৃথিবীর প্রাচ্যে-চীনে অবতীর্ণ হন—তাঁর বাক্যের মাধ্যমে যীশুখ্রিষ্টের মুক্তির কাজের ভিত্তিতে বিচার, শাস্তিবিধান, শুদ্ধিকরণ এবং পরিত্রাণের কাজ করতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাইবেলের বাণী, “বিচারের কাল সমাগত, ঈশ্বরের আপনজনদের দিয়েই তা হবে শুরু” (১ পিতর ৪:১৭)। এবং “শোনার মত কান যার আছে সে শুনুক, পবিত্র আত্মা সকল মণ্ডলীকে কী বলছেন” (প্রকাশিত বাক্য ২:৭) পূরণ হয়েছে। ঈশ্বরের অন্তিম পর্বের কাজের সঙ্গে করুণার যুগ শেষ হয় এবং রাজ্যের যুগের সূচনা হয়। চীনের মূল ভূখণ্ডেসর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সুসমাচারের নীতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তেই, সর্ব ধর্ম এবং স্তরের মানুষ যারা সত্যনিষ্ঠ এবং ঈশ্বরের জন্য আকুল, তারা সকলেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যকে পড়ে এবং তাকেই পরম সত্য এবং ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। তারা নিশ্চিত হয়ে যায় যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই হলেন প্রভু যীশুর পুনরাগমনের রূপ এবং তারা একের পর এক সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের শরণে আসে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা স্থাপিত হয়। তথ্য দ্বারা একথা প্রমাণিত যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উত্থান হয় সম্পূর্ণত ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজের ফলে, কোনো মানুষ এর স্থাপনা করেনি। তার কারণ, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জায় নির্বাচিত মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামে উপাসনা করে, তাঁর কাজকে মেনে চলে এবং তাঁর প্রকাশিত সব সত্যকে গ্রহণ করে। তাই এটা স্পষ্টই বোঝা যায় যে এই নির্বাচিত মানুষেরা অন্য মানুষকে বিশ্বাস করার পরিবর্তে তারা অন্তিম সময়ের দেহরূপী ঈশ্বর যীশুখ্রিষ্টের প্রতি বিশ্বাসী, যিনি বাস্তবিক ঈশ্বর, দেহধারী আত্মা। বাইরে থেকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর একজন সাধারণ মানুষের থেকে কোনোভাবেই পৃথক নন। কিন্তু বস্তুত তিনি হলেন ঈশ্বরের শক্তির দেহরূপ এবং তিনিই সত্য, পথ এবং জীবন। তাঁর কাজ এবং বাক্য হল ঈশ্বরের শক্তির প্রত্যক্ষ প্রকাশ এবং দেহরূপে ঈশ্বরের আবির্ভাব। তাই তিনি হলেন দেহধারী বাস্তবিক ঈশ্বর।
অন্তিম সময়ের খ্রিষ্ট, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনে তাঁর পরিচর্যার কাজ শুরু করেন। তারপর তিনি লক্ষ লক্ষ বাক্য প্রকাশ করেন এবং অন্তিম সময়ে মহান সাদা সিংহাসনের বিচারের কাজ শুরু করেন। ঠিক যখনই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে বলা রয়েছে, “বিচারের কাজটি ঈশ্বরের নিজস্ব, তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারাই সম্পন্ন হওয়া উচিত; তাঁর পরিবর্তে মানুষ তা করতে পারে না। যেহেতু বিচার ব্যবস্থা হল মানবজাতিকে জয়ের জন্য সত্যের ব্যবহার, তাই প্রশ্নাতীত ভাবে ঈশ্বর এখনও মানুষের মধ্যে এই কাজটি সম্পাদন করার জন্য অবতার রূপে উপস্থিত হবেন। অর্থাৎ, অন্তিম সময়ে খ্রীষ্ট এই সত্য বিশ্বজুড়ে মানুষদের শিক্ষা দিতে এবং তাদের কাছে সমস্ত সত্য প্রকাশ করতেই ব্যবহার করবেন। এটিই হল ঈশ্বরের বিচারের কাজ” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, খ্রীষ্ট সত্যের দ্বারাই বিচারের কাজ করেন)। “অন্তিম সময়ে ঈশ্বরবাক্য রচনার কাজ সম্পাদিত করেন এবং সেগুলি সবই পবিত্র আত্মার বাক্য। কারণ, ঈশ্বরই হলেন পবিত্র আত্মা এবং তিনি রক্ত-মাংসের দেহও ধারন করেন। সুতরাং, পবিত্র আত্মার বাক্য, যা আগেও বলা হয়েছে, সেগুলিই বর্তমানের ঈশ্বরের অবতারের বাক্য। … ঈশ্বরকে তাঁর বাক্য উচ্চারণ এবং কার্য সম্পাদনের জন্য অবশ্যই মানবদেহ ধারণ করতে হয়। অন্যথায়, তাঁর কাজ কখনোই উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে পারত না” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যে সব মানুষ ঈশ্বরকে তার ধারণার মধ্যেই সীমায়িত করে রাখে, তারা কীভাবে ঈশ্বরের প্রকাশ লাভ করবে?)। অন্তিম সময়ের খ্রিষ্টের আবির্ভাব এবং বাক্য উচ্চারণের ফলে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্যের অনুসন্ধানী এবং সত্যের জন্য ব্যাকুল আরো বেশি মানুষকে জয় ও শুদ্ধিকরণ করেছেন এবং সেইসঙ্গে ঈশ্বরের বিচার এবং শাস্তিবিধানের মধ্যেও তাঁর আবির্ভাব এবং মুক্তিদাতার প্রত্যাবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার অস্তিত্ব সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বা অন্তিম সময়ের প্রত্যাবর্তনকারী প্রভু যীশু খ্রিষ্টের আবির্ভাব এবং কাজের জন্য, সেইসঙ্গে তাঁর সুবিচার এবং শাস্তিবিধানের জন্য গড়ে উঠেছে। এই গির্জায় তারাই রয়েছে যারা প্রকৃতপক্ষে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজকে গ্রহণ করে এবং যারা ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারা বিজিত এবং তার দ্বারা রক্ষিত। এটি সম্পূর্ণত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দ্বারা এবং এর নেতৃত্ব এবং লালন পালনও করেছেন তিনি, কোনোভাবেই কোনো মানুষ তা স্থাপন করেনি। এই সত্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সকল নির্বাচিত মানুষই স্বীকার করে। দেহরূপী ঈশ্বর কাকে ব্যবহার করবেন, তা তিনি নিজেই আগে থেকে নির্ধারিত করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তাদের মনোনীত এবং পরীক্ষা করেন। ঠিক যেমনভাবে যীশু ব্যক্তিগতভাবে তাঁর বারো জন শিষ্যকে মনোনীত এবং নিযুক্ত করেছিলেন। যারা ঈশ্বরের দ্বারা নির্বাচিত হয়, তারা কেবল তাঁর কাজে সহযোগিতা করে এবং কখনো ঈশ্বরের পরিবর্তে তাঁর কাজ নিজেরা করতে পারেনা। যেহেতু দুর্নীতিপরায়ণ মানুষের কাছে সত্য থাকেনা, তারা সত্য প্রকাশও করতে পারেনা, গির্জা প্রতিষ্ঠার কোনো ক্ষমতাই তাদের নেই। যারা ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত, অথবা তাঁর মনোনীত বা অনুগতরা কেউই গির্জার প্রতিষ্ঠা করেনি। করুণার যুগের গির্জা পৌল বা অন্য কোনো প্রচারকের তৈরি করা নয়, বরং সেগুলি প্রভু যীশুর কাজের ফল এবং তাঁরই দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। একইভাবে অন্তিম সময়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা ঈশ্বরের ব্যবহৃত কোনো মানুষের হাতে তৈরি হয়নি, তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজের ফল। ঈশ্বরের ব্যবহৃত মানুষ কেবল গির্জার দেখাশোনা বা পরিচর্যার কাজ করে, মানুষের কর্তব্য করে। ঈশ্বরের মনোনীত মানুষের নেতৃত্ব, দিকনির্দেশ এবং তাদের খুঁজে আনার দায়িত্ব হল সেই মানুষের যাকে ঈশ্বর ব্যবহার করেছেন, আর তারা কেবল সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকেই বিশ্বাস করে এবং তাঁরই বাক্য এবং কাজের অনুগামী। এই সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। অন্তিম সময়ে দেহরূপী ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজের কারণে সব রকমের ধর্মীয় স্তরে প্রভুর প্রকৃত বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকেই শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। তারা দেখে যে প্রভু যীশু ইতিমধ্যেই এসেছেন এবং শেষপর্যন্ত ঈশ্বরের ঘর থেকে বিচারের কাজ শুরু করেন। এই মানুষেরা সকলেই নিশ্চিত হয় যে ফিরে আসা প্রভু যীশুই হলেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং এর ফলে তারা তাঁর অন্তিম সময়ের কাজকে গ্রহণ করে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যাদের জয় করেছেন তারা তাঁর অধীনে আসে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সব মনোনীত ব্যক্তিরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে অনুসরণ ও তাঁর উপাসনা করে। চীনের মনোনীত মানুষরাই প্রথম ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তিপ্রদানের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে, তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের সংস্পর্শে এসেছে এবং তাঁর বিশালত্ব ও রোষ দেখেছে। তাই তারা ঈশ্বরের বাক্যের কাছে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয়েছে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে নতমস্তকে নিজেদের সমর্পণ করেছে আর স্বেচ্ছায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তিপ্রদানকে মান্য ও গ্রহণ করেছে। তারা সদর্থেই অনুতপ্ত এবং পরিবর্তিত হয়েছে এবং সেই কারণেই তারা ঈশ্বরের পরিত্রাণ লাভ করেছে।
সঠিকভাবে বলতে গেলে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যে মানবজাতিকে বাঁচাবার জন্য ঈশ্বরের কর্মপরিকল্পনার কথা প্রকাশিত হওয়ার ফলে তাঁর মনোনীত মানুষেরা জানতে পারে যে প্রতি যুগে ঈশ্বরের নতুন নাম হয়; আর এই নতুন নামের তাৎপর্যই হল ঈশ্বর নতুন নতুন কাজ করেন এবং তাছাড়াও ঈশ্বর একটি যুগের অবসান ঘটিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেন। প্রতি যুগে ঈশ্বরের নতুন নাম গ্রহণের অর্থ কতই মহান এবং গভীর! এর মধ্যেই নিহিত আছে ঈশ্বরের কাজের তাৎপর্য। ঈশ্বর তাঁর নাম ব্যবহার করে প্রতিটি যুগের পরিবর্তন ঘটান এবং সেই যুগে তাঁর কাজের গুরুত্ব বোঝান, সেইসঙ্গে সেই যুগে তিনি যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করতে চান, তাও বোঝান। আইনের যুগে তিনি যিহোবা নাম ব্যবহার করেন যাতে আইন ও নির্দেশ জারি করা যায় এবং পৃথিবীতে মানবজাতির জীবনকে নেতৃত্ব দেওয়া যায়। যিহোবা নামটি ঈশ্বরের বিশাল এবং রুষ্ট স্বভাবকে বোঝায়, যে স্বভাব মানুষকে দয়াও করে আবার অভিশাপও দেয়। করুণার যুগে তিনি যীশু নাম ব্যবহার করেন যাতে মানুষের মুক্তির কাজ করতে পারেন এবং তাঁর স্বভাবের করুণা এবং প্রেমপূর্ণ দয়া প্রকাশ করতে পারেন। রাজ্যের যুগের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম গ্রহণ করেন যাতে তিনি বিচারের কাজ করতে পারেন যা শুরু হবে ঈশ্বরের ঘর থেকে। সেইসঙ্গে মানুষকে পবিত্র করা, পরিবর্তিত করা, পরিত্রাণ করা এবং তাঁর ন্যায়পরায়ণও বিশাল স্বভাব প্রকাশ করা যা কোনো মানুষের কোনো অপরাধ সহ্য করে না। ঈশ্বরের নতুন নাম তাঁকে নির্বিচারে ডাকার মতো নয়, বরং তা হল এমন এক নাম যা ঈশ্বর স্বয়ং নিজের জন্য এবং নিজের কাজের প্রয়োজনের জন্য নেবেন। কাজের প্রতি পর্যায়ে ঈশ্বরের নামের মূল উৎস রয়েছে বাইবেলে এবং অন্তিম সময়ে প্রভু যীশু যে নাম নেবেন তা দীর্ঘদিন আগে বাইবেলের প্রকাশিত বাক্যে ভবিষ্যদ্বাণীকরা আছে: “যে জয়ী হবে আমি তাকে আমার ঈশ্বরের মন্দিরের স্তম্ভস্বরূপ করব, সে কখনও স্থানচ্যূত হবে না। তার উপরে আমি লিখব আমার ঈশ্বরের নাম। লিখব আমার ঈশ্বরের নতুন নগরীর নাম—নতুন জেরুশালেম যা স্বর্গ থেকে, আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। আর লিখব আমার নিজের নতুন নাম” (প্রকাশিত বাক্য ৩:১২)। “প্রভু পরমেশ্বর বলেন, ‘আমিই আল্ফা ও ওমেগা’। তিনি আছেন, ও ছিলেন ও তাঁর আবির্ভাব আসন্ন। তিনিই সর্বশক্তিমান” (প্রকাশিত বাক্য ১:৮)। “তখন আমি বিরাট জনসমাবেশের কোলাহন, জলধি কল্লোল ও প্রচণ্ড বজ্রনাদের মত এক ধ্বনি শুনতে পেলাম, সেই ধ্বনিতে ঘোষিত হচ্ছিল: ‘হাল্লেলুয়া, আমাদের আরাধ্য ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু পরমেশ্বর রাজত্বগ্রহণ করেছেন’” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৬)। রাজ্যের যুগে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম প্রকাশিত বাক্যের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে অবিকল মিলে গেছে। ঈশ্বর হলেন সর্বশক্তিমান, তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের উপর কর্তৃত্ব কায়েম করেছেন, এবং তিনিই আদি ও অন্ত; অন্তিম দিনে ঈশ্বর সত্য প্রকাশ করা এবং ঈশ্বরের ঘর থেকে বিচারের কাজ শুরু করার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করেন। তাই এরপর থেকে মানুষ ঈশ্বরের অবতারকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং খ্রিষ্টের অবতারকে ব্যবহারিক ঈশ্বর হিসাবে নামাঙ্কিত করে। এইভাবেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার নামকরণ হয়।
রাজ্যের সুসমাচারের নীতি যখন চীনের মূল ভূখন্ডে ছড়িয়ে পড়ল, তখন ঈশ্বর বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে পবিত্র শক্তির সব কাজ পুনরুদ্ধার করে তা এই গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে কেন্দ্রীভূত করেন যারা ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজকে গ্রহণ করেছে এবং যারা ঈশ্বরের দ্বারা পূর্বনির্ধারিত এবং ঐকান্তিকভাবে সত্যের পথে থাকতে চেয়েছে। যেহেতু পবিত্র আত্মার সব কাজ স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে, সব শ্রেণীই পবিত্র আত্মার কাজ হারিয়ে ফেলে এবং নিষ্ফলাজমিতে পরিণত হয়, যেখানে মানুষের কাছে সত্যের পথ অবলম্বন করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এতে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অবিকল মিলে যায়, “প্রত্যক্ষ করো, সেই দিন আসছে, যেদিন আমি পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ প্রেরণ করবো, রুটির দুর্ভিক্ষ নয়, তৃষ্ণার জলের দুর্ভিক্ষও নয়, বরং যিহোবার বাক্য শোনার দুর্ভিক্ষ” (আমোস ৮:১১)। পবিত্র আত্মার নির্দেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর যেসব মানুষ সত্যের পথ অবলম্বন করে এবং সদর্থেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তারা খ্রিষ্টবিরোধীদের এবং দুষ্ট দলদাসদের সব নির্দেশ এবং বাধা অতিক্রম করে এবং শেষপর্যন্ত ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে এবং চিনতে পারে; আর তার ফলে আরো বেশী সংখ্যক মানুষ ঈশ্বরের সিংহাসনের কাছে ফিরে আসে। সর্বত্রই সর্ব ধর্মের এক হওয়ার এবং সব রাষ্ট্রের পর্বতের দিকে প্রবহমান হওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। সদর্থেই ঈশ্বরে বিশ্বাসী অন্যান্য গোষ্ঠীর বহুসংখ্যক মানুষ ফিরে আসতেই অধিকাংশ গোষ্ঠী, যেগুলির আগে নিছক নামমাত্র অস্তিত্ব ছিল তারা ভেঙে পড়তে লাগলো। ঈশ্বরের কাজের পদচারণা থামাবার ক্ষমতা কার আছে? ঈশ্বরের মনোনীত মানুষদের তাঁর কাছে ফিরে আসার পথে কে বাধা সৃষ্টি করতে পারে? যেন সমগ্র ধর্মীয় সম্প্রদায়কেই সঠিক পথে ফিরে এসেছে। ফিরে আসার এই প্রবল স্রোত যেন শক্তিশালী ঢেউয়ের গর্জন-ঈশ্বরের কাজের পথে কোনো শক্তিই বাধা সৃষ্টি করতে পারেনা! ঈশ্বর আবির্ভূত হয়ে তাঁর কাজ শুরু করার ফলে চীনের সরকার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উপর অবিরাম নিপীড়ন চালিয়ে যেতে থাকে। তারা প্রবল বিক্ষোভের সঙ্গে সন্ধান করেছে অন্তিম সময়ের খ্রিষ্টের এবং সেইসঙ্গে যারা ঈশ্বরকে অনুসরণ এবং তাঁর সাক্ষ্য বহন করেছে, এবং ঈশ্বরের মনোনীত মানুষদের উপর নির্মমভাবে নিপীড়ন চালিয়েছে, যাতে ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজকে নষ্ট করে ফেলা যায়। তারা অসংখ্য জরুরি বৈঠক ডাকে যেখানে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জাকে কীভাবে বিনষ্ট করা যায় তার কৌশল নিয়ে আলোচনা করে। তারা নানা রকমের গোপন তথ্য প্রকাশ করে এবং নারকীয় পথ অবলম্বন করে: সর্বত্র ইস্তাহার জারি করে, টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার করে সাধারণের জন্য নির্দেশ জারি করে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জাকে কালিমালিপ্ত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব ও অপবাদ ছড়াতে থাকে; তারা বলপূর্বক মানুষের মধ্যে পাপের শিক্ষা এবং ভুল তথ্য ছড়াতে থাকে এবং মানুষের মগজ ধোলাই করতে থাকে; নিজেদের থ্রি সেলফ গির্জার মাধ্যমে তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এর মধ্যে ছিল গুপ্তচর পাঠিয়ে প্রকাশ্য তদন্ত এবং গোপন অনুসন্ধান, তৃণমূল স্তরকে নিয়ন্ত্রণ, পড়শিদের দ্বারা নজর রাখার নির্দেশ এবং বড়ো পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা; তারা মানুষের ঘরবাড়িতে ইচ্ছামত তল্লাশি চালিয়ে সেখানে লুঠতরাজ, সম্পত্তি নিষিদ্ধ করা এবং জরিমানার মাধ্যমে টাকা লুঠ করা এবং অসৎ উপায়ে টাকা একত্র করার মত কাজ করতে থাকে; ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিদের গোপনে গ্রেপ্তার ও আটক করে তাদের শ্রমিক—শিবিরে বন্দি করে এবং বলপূর্বক অত্যাচারের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করে, জীবন্ত মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে বাদ দেয় এবং প্রবল প্রহারে তাদের প্রাণনাশ করে; এমন কি সশস্ত্র পুলিশ ও বাহিনীর সাহায্যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জাকে দমন করার চেষ্টাও করে; এইরকম আরো অনেক ঘৃণ্য কাজ করে তারা। চীনা সরকার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার অনেক খ্রিস্টানকে অমানবিকভাবে গ্রেপ্তার ও নিপীড়ন করে। এরা সকলেই ঈশ্বরের মনোনীত মানুষ। এদের সম্পত্তি বেআইনিভাবে লুঠ করার যন্ত্রণা ছাড়াও এদের উপর প্রবল শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালায়, এমন কি তাদের মধ্যে অনেকের প্রাণনাশও করে। সরকারের কার্যকলাপ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত অন্তত একশো চৌষট্টি জন খ্রিস্টানকে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে বলা, ৪৩ বছরের পুরুষ ঝাই ইয়ংজিয়াং-এর কথা। আনহুই প্রদেশের সুইক্সি কাউন্টির উগোউ শহরের বাসিন্দা এই খ্রিস্টান ব্যক্তিকে ১৯৯৭ সালের ৩০ এপ্রিল ভোরবেলা স্থানীয় পুলিশ গোপনে গ্রেপ্তার করে এবং তার উপর নারকীয় অত্যাচার চালায়। ১০ মে, ঝাইয়ের পরিবার তার শবদেহ শেষকৃত্য সম্পাদনের স্থানে দেখতে পায়। তার রক্তাক্ত দেহ কালো এবং বেগুনি রঙের হয়ে গিয়েছিল এবং মাথায় একাধিক ভারি চোট ছিল। জিয়াংসু প্রদেশের শুয়াং কাউন্টিতে বসবাসকারী ৪২ বছর বয়স্ক পুরুষ খ্রিস্টান ইয়ে আইঝুং-কে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ চীনা সরকারের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সে তখন গির্জার জন্য জিনিস কিনছিল। গ্রেপ্তারের পর তৃতীয় দিনে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। হেনান প্রদেশের কুইং হে জেলার পিংইয়ু কাউন্টির বাসিন্দা সেইসময় সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার এক বিশিষ্ট নেত্রী ৪৬ বছরের জিয়াং গুইঝিকে ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি চীনা সরকারের পুলিশ হেনান প্রদেশের সিনমি শহর থেকে গোপনে গ্রেপ্তার ও কারারূদ্ধ করে। পুলিশ আধিকারিকরা তার বিরুদ্ধে বেআইনি বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে এবং স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্মম অত্যাচার চালায়। ১২ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা শারীরিক নির্যাতনের ফলে জিয়াং-এর মৃত্যু হয়। এছাড়াও হাজার হাজার খ্রিস্টানদের গ্রেপ্তার ও কারারূদ্ধ করে চীনা পুলিশ। কারোর শরীরে মাদক প্রবেশ করানো হয়, পরবর্তীকালে তাদের স্কিৎজোফ্রেনিয়ার মতো মানসিক রোগ দেখা দেয়; কেউ কেউ অত্যাচারে এমন পঙ্গু হয়ে পড়ে যে তারা নিজেদের দেখাশোনা করতেও অক্ষম হয়ে যায়; কাউকে শ্রমিক-শিবিরে বন্দি করে রাখা হয়, এবং মুক্তির পরে তাদের উপর ক্রমাগত নজরদারি চালায় চীনা সরকার এবং তাদের সবরকম স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। গড় সংখ্যাতত্ত্ব অনুযায়ী ২০১১ থেকে ২০১৩ এই দুই বছরের স্বল্প সময়ের মধ্যে ঈশ্বরের মনোনীত ৩৮০,৩৮০ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং আটক করে মূল ভূখণ্ডের চীনা পুলিশ। এদের মধ্যে ৪৩,৬৪০ জনের উপর বেআইনি জিজ্ঞাসাবাদের সময় সব রকমের অত্যাচার হয়; ১১১,৭৪০ জনের বিরুদ্ধে বেআইনি অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং নির্লজ্জভাবে তাদের উপর জরিমানা চাপানো হয় আর ২৪৩,৬১৩,০০০-এরও বেশি চীনা মুদ্রার পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়; ৩৫,৩৩৩ জনের বাড়িতে লুঠতরাজ চালানো হয় এবং অন্তত ১,০০০,০০০,০০০ চীনা মুদ্রার পরিমাণ সম্পত্তি এবং গির্জায় নিবেদিত সম্পদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে বাজেয়াপ্ত করে বা আত্মসাৎ করে সরকারি দপ্তরের আধিকারিক বা পুলিশ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার খ্রিস্টানদের চীনা সরকারের গ্রেপ্তার এবং নিপীড়নের কথা বলতে গেলে এই সংখ্যা হল নেহাতই কাঁচা সংখ্যাতত্ত্ব, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সকল খ্রিস্টানদের কথা বলতে গেলে এ হল হিমবাহের অগ্রভাগ মাত্র। বস্তুত সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর কাজ শুরু করার পর থেকে চীনা সরকার অসংখ্য খ্রিস্টানদের গ্রেপ্তার, নিপীড়ন, গোপন এবং নিয়ন্ত্রণ করেছে। তারা সবরকমের নির্মম পথ অবলম্বন করে রক্তাক্তভাবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জাকে দমন করে চীনের মূল ভূখণ্ডকে সন্ত্রাসের জগতে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। এছাড়াও সব গোষ্ঠীর দ্বারা গির্জার নামে অপবাদ, নিন্দা এবং আক্রমণ করা হয়েছে। এর ফলে ছড়িয়ে পড়ে গুজব, অপবাদ, নির্যাতন এবং অভিশাপ। গোটা সমাজ এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সব ধরনের অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে দুর্নীতিপরায়ণ মানুষের প্রতিরোধ এবং নিপীড়ন সদর্থেই চরমে পৌঁছে যায়।
মানবজাতি শয়তানের দ্বারা দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও, ঈশ্বর কোনো সময়েই মানবজাতিকে বাঁচানোর কর্মপরিকল্পনাকে থামাননি। তবে মানবজাতি এই সত্য জানেনা, ঈশ্বরকেও তারা আরো কম জানে। তার ফলে যতবার ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করে নতুন কাজ শুরু করেছেন, তিনি ক্ষমতাসীন মানুষ এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত এবং নিপীড়িত হয়েছেন। দুহাজার বছর আগে, যখন যীশু দেহরূপ ধারণ করেন, তাঁকে গ্রেপ্তার ও নিপীড়ন করে রোম সরকার এবং ইহুদি বিশ্বাসীরা এবং শেষে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হয়। অন্তিম সময়ে বিচারের কাজ করার জন্য ঈশ্বর মানবরূপে ফিরে আসেন, চীনা সরকার তাঁর উপর নির্মম অত্যাচার করে এবং তাঁকে অনুসন্ধান করতে থাকে এবং সেইসঙ্গে তাকে খ্রিষ্টধর্মের সব গোষ্ঠীর কাছ থেকেই তাঁকে অভিশাপ, নিন্দা, মিথ্যা অভিযোগ এবং প্রত্যাখ্যান সহ্য করতে হয়। এই হল মানুষের দুর্নীতি এবং পাপের স্পষ্ট ইঙ্গিত। আমরা একথা অনুমান করতে পারি যে শয়তানের এই দুর্গে, যেখানে শয়তানের ক্ষমতাসম্পন্ন কালো মেঘের ভারে ভারাক্রান্ত, সেখানে ঈশ্বরের পক্ষে তাঁর কাজ চালিয়ে যাওয়া কতটা দুরূহ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঈশ্বর হলেন সর্বশক্তিমান, তাঁর আছে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা। শয়তানের শক্তি যতই তীব্র হোক না কেন, যেমনভাবেই তারা প্রতিরোধ এবং আক্রমণ চালাক না কেন, শেষপর্যন্ত সবই নিষ্ফল হয়ে যায়। মাত্র ২০ বছরের মধ্যে চরম অত্যাচারের মধ্যেও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার চীনের মূল ভূখণ্ডেরসর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে। দেশের মধ্যে লক্ষ লক্ষ গির্জা গড়ে উঠেছে এবং লক্ষাধিক মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সমর্পণ করেছে। প্রায় তাৎক্ষনিকভাবে সব গোষ্ঠীই জনশূন্য হয়ে পড়ে কারণ ঈশ্বরের মেষ তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছে এবং সেই কণ্ঠস্বরকে অনুসরণ করে তারা ইতিমধ্যেই ফিরে এসে ঈশ্বরের কাছে নতজানু হয়েছে। ঈশ্বর নিজে তাদের লালন-পালন এবং পথনির্দেশ করেছেন। এই ঘটনা বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীকে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি করেছে “সকল জাতি সেদিকে স্রোতসম ধাবিত হবে” (যিশাইয় ২:২)। এটি অনিবার্য যে অন্তিম পর্বে ঈশ্বরের সকল প্রকৃত অনুগামীরাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছেই আসবে, কারণ ঈশ্বর দীর্ঘদিন আগেই তা পরিকল্পনা এবং পূর্বনির্ধারণ করেছেন। কেউই তা পরিবর্তন করতে পারবে না! যেসব ভণ্ডবিশ্বাসী কেবল উদরপূর্তির জন্য ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছে এবং সব পাপী, খ্রিষ্টবিরোধী এবং নকল মেষ পালকের অভিনয় করেছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে প্রতিহত এবং তাঁর নিন্দা করেছে তাদের সকলের সত্য ঈশ্বর স্বয়ং প্রকাশ করেছেন এবং তাদের ঈশ্বরের কাজে নির্মূল দিয়েছেন। সমগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী ঈশ্বরের কাজের মাধ্যমে বিনষ্ট ও বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাজ শেষ পর্যন্ত মহিমান্বিত ভাবেই শেষ হয়েছে। এই সময়ে, চীনা সরকারের প্রবল প্রতিরোধ এবং রক্তাক্ত দমননীতি সত্ত্বেও ঈশ্বরের রাজত্বের নীতি বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। ঈশ্বরের কাজকে নির্মূল এবং বাতিল করার চীনা সরকারের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। যেসব দুষ্ট শক্তি ঈশ্বরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে তারা ঈশ্বরের রাজকীয় এবং রোষপূর্ণ দণ্ডেসম্পূর্ণ বিনষ্ট ও বিপর্যস্ত হয়েছে। ঠিক যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, “আমি যাদের ভালোবাসি তারা সকলেই নিশ্চিতভাবে অনন্তকাল বেঁচে থাকবে, আর যারা আমার বিরোধিতা করবে তারা নিশ্চিতভাবে আমার দ্বারা অনন্তকালের জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। কারণ আমি হলাম ঈর্ষাপরায়ণ ঈশ্বর এবং মানুষকে তাদের কৃতকর্মের জন্য কোনোরকম নিষ্কৃতি দেবনা। আমি সমগ্র বিশ্বের উপর নজর রাখবো, এবং, বিশ্বের প্রাচ্যে ন্যায়পরায়ণতা, মহিমা, ক্রোধ এবং শাস্তি সহ আবির্ভূত হয়ে, আমি মানবতার বিবিধ পৃষ্ঠপোষকদের কাছে আত্মপ্রকাশ করবো!” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি ঈশ্বরের বাক্য, অধ্যায় ২৬)। “আমার রাজত্ব সমগ্র মহাবিশ্বের উপরে গড়ে উঠছে এবং আমার সিংহাসন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আধিপত্য বিস্তার করছে। দেবদূতদের সহায়তায আমার মহৎ অভীষ্ট শীঘ্রই ফলপ্রসূ হবে। আমার সমস্ত পুত্র এবং লোকেরা অধীর আগ্রহে আমার প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষা করছে, আমার সঙ্গে তারা পুনরায় মিলিত হতে উৎসুক এবং আর কখনও বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। আমার সঙ্গে একত্রে থাকার আনন্দে আমার রাজত্বের অসংখ্য জনতা কি আনন্দ-উৎসবে মেতে না উঠে থাকতে পারে? এই পুনর্মিলন কি কোনও মূল্য না দিয়েই হওয়া সম্ভব? সকল মানুষের দৃষ্টিতে আমি সম্মানিত, প্রতিটি মানুষের কথায় আমি ঘোষিত। উপরন্তু, যখন আমি প্রত্যাবর্তন করব, আমি সমস্ত শত্রু-শক্তিকে জয় করব। সময় এসে গেছে! আমার কাজ শুরু হবে! মানবজাতির মধ্যে আমি রাজত্ব করব! আমি ফিরে আসতে চলেছি! এবং আমার যাত্রা শুরু হতে চলেছে। সকলের প্রত্যাশা এটি, এটিই তাদের কামনা। আমার এই আবির্ভাবের দিনটি সমগ্র মানবজাতিকে প্রত্যক্ষ করতে দেবো এবং তারা সকলেই পরমানন্দে আমার আগমনের দিনটিকে স্বাগত জানাবে!” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি ঈশ্বরের বাক্য, অধ্যায় ২৭)। রাজ্যের সুসমাচার ছড়িয়ে পড়তেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা আরো বড়ো হয়ে ওঠে এবং অনুগামীর সংখ্যা অবিরাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। আজ তা সব থেকে বেশি সমৃদ্ধ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্য—অন্তিম সময়ের খ্রিষ্টের বাণী—দীর্ঘদিন ধরে হাজার হাজার গৃহে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আরো বেশি মানুষ তা গ্রহণ করেছেন। ঈশ্বরের বাক্য তাঁর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। এই অবিসংবাদিত সত্য সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করে যে “ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারাই সমস্ত অর্জন সম্ভব!”
“আদিতে ছিল বাক্য, এবং সেই বাক্য ছিল ঈশ্বরের সাথে, এবং বাক্যই ছিল ঈশ্বর” (যোহন ১:১)। শুরুতে ঈশ্বর স্বর্গ এবং পৃথিবীর সৃষ্টি করেন এবং তার মধ্যে সবকিছু সৃষ্টি করেন বাক্য দিয়ে এবং মানবজাতিকে নেতৃত্ব দেন বাক্যের সাহায্যে। অন্তিম সময়েও ঈশ্বর সবকিছু সম্পন্ন করেন বাক্য দিয়ে। ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিদের শুদ্ধিকরণ এবং পরিপূর্ণতা এবং খ্রিষ্টের রাজত্বের বাস্তবায়ন এই দুটিই লাভ করা যাবে ঈশ্বরের বাক্যের সাহায্যে। বস্তুত সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উদ্ভব হয়েছে ঈশ্বরের বাক্য থেকে, তার বিকাশ হচ্ছে ঈশ্বরের বাক্যের দিকনির্দেশে এবং তাছাড়াও চীনা সরকারের নির্মম দমননীতি ও নিপীড়ন এবং খ্রিষ্টবিরোধী ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রবল নিন্দা এবং বিরোধিতা সত্ত্বেও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার সমৃদ্ধির মধ্যে অস্বাভাবিক কিছুই নেই। এর থেকে ঈশ্বরের বাক্যের কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা প্রকাশিত হয়। একথা বলাই যায়, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আবির্ভাব এবং কাজ ছাড়া সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার উদ্ভব হয় না এবং ঈশ্বরের প্রকাশ করা বাক্য ছাড়া সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার অস্তিত্ব সম্ভব নয়। আজ তিনি তাঁর মনোনীত ব্যক্তিদের লালন-পালন এবং সমৃদ্ধ করছেন তাঁর প্রকাশিত বাক্য দিয়ে, আর যারা তাঁর কাজকে গ্রহণ করেছে তারা তাঁর বাক্যের মাধ্যমে তাঁর পথনির্দেশকে উপভোগ করছে এবং মানবজাতিকে রক্ষা করার যে কাজ তিনি করছেন তার অভিজ্ঞতা লাভ করছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, “সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে আমি আমার কাজ করছি, এবং প্রাচ্যে অবিরাম বজ্রপাত চলছে, যাতে সব রাষ্ট্র এবং সম্প্রদায় কেঁপে উঠছে। আমারই কন্ঠস্বর মানুষকে আজকের এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমিই সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছি, যাতে সকল মানুষ আমার কন্ঠস্বরের দ্বারা পরাজিত হয়, এই স্রোতে তারা সামিল হয়, এবং আমার কাছে তারা আত্মসমর্পণ করে। কারণ দীর্ঘদিন হল আমি আমার মহিমা সমগ্র বিশ্ব থেকে পুনরুদ্ধার করেছি এবং প্রাচ্যে তাকে নতুন করে প্রকাশ করেছি। আমার মহিমা প্রত্যক্ষ করতে কে না ব্যাকুল হয়? আমার প্রত্যাবর্তনের জন্য কে না অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে? আমার পুনরাবির্ভাবের আকুল আকাঙ্ক্ষা করে না এমন কে আছে? আমার মাধুর্যের জন্য কে না উদগ্রীব? আলোকের সম্মুখে আসতে কে না চায়? কনানের সমৃদ্ধির প্রতি কে না আগ্রহী? মুক্তিদাতার প্রত্যাবর্তনের জন্য কে না অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে? যিনি ক্ষমতায় মহান, তাঁর উপাসনা কে না করে? সমগ্র বিশ্ব জুড়ে আমার কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়বে। আমি আমার নির্বাচিত মানুষদের সম্মুখীন হবো এবং তাদের উদ্দেশ্যে আরো কথা বলবো। শক্তিশালী বজ্র যেমন পর্বত আর নদীতে আলোড়ন সৃষ্টি করে, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড আর মানবজাতির কাছে আমার উচ্চারিত বাক্যও তেমন। তাই আমার বাক্য মানবজাতির কাছে সম্পদ হয়ে উঠেছে, এবং সব মানুষই আমার বাক্য সযত্নে লালন করছে। সেই বজ্রপাতের ঝলকে পূর্ব থেকে পশ্চিম আলোকিত। আমার বাক্য এমনই যে মানুষ তা উপেক্ষা করতে পারে না, আবার একই সাথে তার গভীরতার পরিমাপও করতে পারে না, অথচ তার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পায়। আমার আবির্ভাবে সকল মানুষই আনন্দিত এবং উচ্ছ্বসিত, যেন কোনো শিশু সদ্য জন্মলাভ করেছে। আমার কণ্ঠস্বরের সাহায্যে আমি সকল মানবজাতিকে আমার সম্মুখে আনবো। এরপর আমি আনুষ্ঠানিকভাবে মানবজাতির মধ্যে প্রবেশ করব, যাতে তারা আমার উপাসনা করতে আসে। আমার মহিমার বিকিরণে এবং আমার বাক্যের সাহায্যে আমি বাধ্য করবো যাতে সব মানুষ আমার সম্মুখে আসে এবং প্রাচ্যের বজ্রপাত দেখে, এবং সেই সঙ্গে দেখতে পায় যে আমি প্রাচ্যের ‘অলিভ পর্বত’-এ অবতরণ করেছি। তারা দেখতে পাবে যে, আমি ইতিমধ্যেই দীর্ঘদিন এই পৃথিবীতে আছি এবং তা ইহুদিদের পুত্র হিসাবে নয়, প্রাচ্যের বজ্রপাত হিসাবে। কারণ অনেকদিন হল আমি পুনরুত্থিত হয়েছি, মানবজাতির মধ্য থেকে প্রস্থান করেছি, এবং তারপর মানবজাতির মধ্যে পুনরাবির্ভূত হয়েছি আপন মহিমায়। আমিই সে, যাকে অগণিত যুগ আগে থেকেই উপাসনা করা হচ্ছে, এবং আমিই সেই শিশু যাকে অগণিত যুগ আগে ইসরায়েলীরা পরিত্যাগ করেছিল। আমিই হলাম বর্তমান যুগের সর্বমহিম সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! সকলে আমার সিংহাসনের সামনে এসে আমার মহিমময় মুখাবয়ব দেখুক, আমার কন্ঠস্বর শুনুক এবং আমার কীর্তি দেখুক। এই হল আমার সার্বিক ইচ্ছা; এই হল আমার পরিকল্পনার শীর্ষবিন্দু এবং সমাপ্তি, আর আমার ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য: যাতে সব রাষ্ট্র আমার উপাসনা করে, সব মুখেই আমার স্বীকৃতি শোনা যায়, সকল মানুষের বিশ্বাস আমাতেই স্থিত হয় এবং সকলেই আমার অধীনস্থ হয়” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সপ্ত বজ্রের নিনাদ—ভবিষ্যদ্বাণী করছে যে রাজ্যের সুসমাচার মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে)। ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যের কারণে তাঁর মহান পরিত্রাণ লাভ করেছে। চীনের মূল ভূখন্ডে ঈশ্বরের কাজ শেষপর্যন্ত মহিমান্বিত ভাবেই শেষ হয়েছে। এখন ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিরা তাঁর বাক্যকে ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং সব দেশ ও স্থান তাঁর কীর্তির সাক্ষ্য বহন করছে। ঈশ্বরের বাক্য সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে এবং শীঘ্রই তিনি সকল রাষ্ট্র এবং মানুষের সমক্ষে প্রকাশ্যে আবির্ভূত হবেন। সব দেশ ও স্থানের মানুষ, যারা ঈশ্বরের আবির্ভাবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, তারা স্বপ্নেও ভাবতে পারছেনা যে তাদের কাঙ্ক্ষিত ঈশ্বর ইতিমধ্যেই গোপনে পৃথিবীর প্রাচ্যে—চীনে অবতীর্ণ হয়ে এসেছেন এবং বিজয় ও পরিত্রাণের এক পর্যায় গড়ে তুলেছেন।
যুগের অন্তিম লগ্নে, সেই অন্তিম সময়ে ঈশ্বর অবতাররূপে গোপনে অবতীর্ণ হন বিশালাকার লাল ড্রাগনের বাসভূমি চীনে যেখানে একনায়কের রাজত্ব এবং নাস্তিকতার দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। তাঁর বহুবিধ প্রজ্ঞা এবং শক্তিতে ঈশ্বর শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন এবং তাঁর কর্মপরিকল্পনার মূল অংশ–অর্থাৎ শয়তানের সার্বিক পরাজয় এবং সমগ্র মানবজাতির পরিত্রাণ—বাস্তবায়িত করে চলেন। তবুও চীনের ক্ষমতাসীন দলের অতিকল্পিত অভিযোগ, নিন্দা, মিথ্যা প্রচার এবং অপবাদের কারণে, যারা সত্য সম্পর্কে অবগত নয় তাদের অনেকেই চীনা সরকারের গুজবকে সত্য ভেবে বিশ্বাস করে। বিশেষ করে ধর্মীয় সম্প্রদায় ঈশ্বরের আবির্ভাব সম্পর্কে এখনও চালিয়ে যাচ্ছে অপবাদ এবং নিন্দা। নাস্তিক চীনা সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে তারা বিরোধিতা করে চলেছে ঈশ্বরের কাজের। কী দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা! এই মানুষরা আশাই করে না যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরোধিতা তারা করছে, তিনিই প্রত্যাবর্তিত অবিকল প্রভু যীশু। ঈশ্বর যখন জনসমক্ষে আবির্ভূত হবেন, তখন এদের কাছে কান্না, আর্তনাদ এবং বুক-চাপড়ানো ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। প্রকাশিত বাক্যর শব্দাবলীর সঙ্গে এটি সম্পূর্ণই মিলে যায়, “দেখ, মেঘবাহনে তিনি আসিতেছেন! প্রতিটি নয়ন তাঁকে দেখবে, দেখবে তারাও যারা তাঁকে বিদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর সমস্ত মানবগোষ্ঠী তাঁর জন্য বিলাপ করবে। অবশ্যই করবে, আমেন” (প্রকাশিত বাক্য ১:৭)। অন্তিম সময়ের বিশাল শ্বেত সিংহাসনের বিচার অনেক আগেই শুরু হয়েছে। এখন আরও বৃহৎ আকার ধারণ করেছে বিপর্যয়, প্লেগে বিধ্বস্ত বিশ্ব, দুর্ভিক্ষ, বন্যা, কীট-পতঙ্গের মড়ক এবং অন্যান্য বিপর্যয় ক্রমাগতই ঘটে চলেছে। বিপুল এক বিপর্যয় নেমে আসবে আমাদের উপরে এবং ঈশ্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শাস্তির বিধান শুরু করবেন বিশালাকার লাল ড্রাগন এবং অন্যান্য সব অশুভ শক্তি ওপর, যারা তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “আমার রাজ্যের অগণিত সৃষ্টি পুনরুজ্জীবিত হতে শুরু করেছে এবং পুনরায় তাদের জীবনীশক্তি অর্জন করছে। পৃথিবীর অবস্থা পরিবর্তনের ফলে এক দেশ থেকে অন্য দেশের সীমারেখাও বদলাতে শুরু করেছে। আমি আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলাম যে, যখন ভূমি ভূমির থেকে বিচ্ছিন্ন হবে, এবং ভূমি ভূমির সাথে একত্রিত হবে, সেই সময়ে আমি সমস্ত দেশকে টুকরো টুকরো করে ফেলব। সেই সময় আমি সমগ্র সৃষ্টিকে নতুন করে গড়ব এবং সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ডের পুনর্বিভাগ করব, যাতে বিশ্বে আবার শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং পুরাতন থেকে নবীনে বদল ঘটে—এই আমার পরিকল্পনা এবং এই আমার কাজ। যখন বিশ্বের সমস্ত জাতি এবং মানুষ আমার সিংহাসনের কাছে ফিরে আসবে, তখন আমি স্বর্গের সমস্ত প্রাচুর্য মানবজগতকে অর্পণ করব, যাতে আমার সৌজন্যে সেই পৃথিবী অতুলনীয় প্রাচুর্যে পূর্ণ হয়। তবে যতদিন সেই পুরাতন পৃথিবীর অস্তিত্ব থাকবে, আমি আমার ক্রোধ পৃথিবীর সকল জাতির উপর নিক্ষেপ করবো, প্রশাসনিক ফরমানসমূহ ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে প্রকাশ্যে জারি করবো, এবং যারা এই নির্দেশ লঙ্ঘন করবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির বিধান।
কথা বলার জন্য আমি যখন মহাবিশ্বের দিকে মুখ ফেরাবো, তখন সমগ্র মানবজাতি আমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাবে, এবং তারপর মহাবিশ্ব জুড়ে আমার সমস্ত কাজ প্রত্যক্ষ করবে। যারা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, অর্থাৎ যেসব মানুষ তাদের কর্মের দ্বারা আমার বিরোধিতা করে, তারা সকলেই আমার শাস্তির আওতায় পড়বে। মহাকাশের অগণিত নক্ষত্রকে আমি নতুন করে গড়বো, আমার সৌজন্যে সূর্য এবং চন্দ্রের নবীকরণ হবে—আকাশ আর আগের মত থাকবে না এবং পৃথিবীর অগণিত সৃষ্টির নবীকরণ হবে। সবই আমার বাক্যের দ্বারা পূর্ণ হবে। এই বিশ্বের বহু রাষ্ট্রেরই নতুন করে বিভাজন হবে এবং আমার রাজত্বের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে, যাতে বিশ্বের বর্তমান জাতিগুলি চিরকালের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এবং গড়ে উঠবে এমন একটি রাজ্য, যে আমার উপাসনা করে। পৃথিবীর সমস্ত জাতি ধ্বংস হবে, কোনোটিরই অস্তিত্ব থাকবে না। এই বিশ্বের যেসব মানুষ শয়তানের অধীনে আছে তারা সকলেই নির্মূল হবে, এবং যারা শয়তানের উপাসক তারা সকলেই আমার দ্বারা প্রজ্বলিত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে—অর্থাৎ, আমার স্রোতের অনুগামীরা ছাড়া আর সকলেই ভস্মীভূত হয়ে যাবে। আমি অসংখ্য মানুষকে শাস্তি দেওয়ার সময় ধর্মীয় জগতের যাদের আমার কাজের দ্বারা বিভিন্ন মাত্রায় জয় করা হয়েছে, তারা আমার রাজ্যে ফিরে আসবে, কারণ তারা দেখবে সাদা মেঘে আসীন সেই একক পবিত্র সত্তার আবির্ভাব। নিজস্ব প্রকার অনুযায়ী সমস্ত মানুষ বিভাজিত হবে, এবং তাদের কর্ম অনুযায়ী শাস্তির বিধান পাবে। যারা আমার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল তারা ধ্বংস হবে; যাদের পার্থিব ক্রিয়াকলাপ আমাকে জড়িত করে নি, তারা যেমন ভাবে নিজেদের মুক্ত করেছে সেই কারণে আমার পুত্র এবং আমার লোকেদের শাসনের অধীনে পৃথিবীতে বিদ্যমান থাকবে। অগণিত মানুষ ও অগণিত জাতির সামনে আমি নিজেকে প্রকাশ করব। আমার নিজের কণ্ঠে আমি সারা পৃথিবী ধ্বনিত করে আমার কাজের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করবো, যাতে সমগ্র মানবজাতি তা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে পারে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি ঈশ্বরের বাক্য, অধ্যায় ২৬)। মানবজাতির ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই কীভাবে সকল মন্দ শক্তি যারা স্পষ্টভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে এবং উন্মত্তভাবে ঈশ্বরকে প্রতিহত করে, তারা ঈশ্বরের দ্বারা বিনষ্ট হয়। চার হাজার বছর আগে, তাদের মর্মান্তিক পাপের ফলে সদম ও গোমোরা শহর স্বর্গ থেকে ঈশ্বর প্রেরিত আগুন এবং গন্ধক দ্বারা দগ্ধ হয়ে পড়ে। একইভাবে যীশু খ্রিষ্টকে প্রতিহত করা এবং তাঁর নিন্দা করা এবং খ্রিষ্টানদের নিপীড়ন করার কারণে ঈশ্বর প্রেরিত বিপর্যয়ে রোম সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যায়। এইরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে। অন্তিম দিনে ঈশ্বরের নিন্দা এবং তাঁকে প্রতিহত করা যেকোনো মন্দ শক্তিকেই ঈশ্বর অভিশাপ দেবেন এবং নিশ্চিতভাবে তারা তাঁর দ্বারা ধ্বংস হবে। এই হল সঠিকভাবে ঈশ্বরের ন্যায় বিচারের স্বভাব।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেছেন, “মানুষের মাঝে রাজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে, মানুষের মাঝে তা গঠিত হচ্ছে, এবং মানুষের মাঝে তা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে; এমন কোনো শক্তি নেই যা আমার রাজ্যকে ধ্বংস করতে পারে। … তোমরা নিশ্চিতভাবে, আমার আলোকের পথপ্রদর্শনের অধীনে, অন্ধকারের বাহিনীর নাগপাশ ছিন্ন করে বিনির্গত হবে। অন্ধকারের মধ্যে, তুমি নিশ্চয়ই যে আলো তোমাদের পথপ্রদর্শক সেই আলোকে হারিয়ে ফেলবে না। তোমরা নিশ্চিতরূপে সমগ্র সৃষ্টির প্রভু হয়ে উঠবে। অবশ্যই তোমরা শয়তানের সম্মুখে এক বিজেতা হয়ে দাঁড়াবে। অতিকায় লাল ড্রাগনের পতনের পর, আমার বিজয়ের সাক্ষ্য বহন করতে তোমরা নিশ্চয়ই অগণিত লোকারণ্যের মাঝে উঠে দাঁড়াবে। নিশ্চিতভাবেই তোমরা আসোয়ান ভূমিতে দৃঢ় ও অকম্পিতভাবে দণ্ডায়মান হবে। যে যন্ত্রণা তোমরা সহন করো, তার মাধ্যমেই তোমরা আমার আশীর্বাদের উত্তরাধিকার লাভ করবে, এবং নিশ্চিতরূপে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে আমার মহিমা বিকিরণ করবে” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি ঈশ্বরের বাক্য, অধ্যায় ১৯)। “এই তিন-পর্যায়ের কাজ যখন সমাধা হবে, তখন এই কাজের সাক্ষ্য বহনের জন্য গড়ে উঠবে এক মানবগোষ্ঠী যারা ঈশ্বরকে জেনেছে। এই গোষ্ঠীর সকলেই ঈশ্বরকে জানবে এবং সত্যকে বাস্তবায়িত করতে পারবে। তারা মানবিকতা এবং বোধের অধিকারী হবে এবং সকলেই ঈশ্বরের পরিত্রাণের কাজের তিনটি পর্যায় জানবে। এই কাজই শেষপর্যন্ত সম্পন্ন হবে, এবং এই ব্যক্তিগণই হল ৬,০০০ বছরের ব্যবস্থাপনার স্ফটিককরণ-স্বরূপ; এবং তা হবে শয়তানের চূড়ান্ত পরাজয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সাক্ষ্য। ঈশ্বরের কাছে যারা এই সাক্ষ্য বহন করে নিয়ে যেতে পারবে, তারা পাবে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি এবং আশীর্বাদ এবং শেষপর্যন্ত তারাই হবে সেই গোষ্ঠী যারা ঈশ্বরের কর্তৃত্বের অধিকারী হয়ে উঠবে এবং বহন করবে ঈশ্বরের সাক্ষ্য। হয়তো তোমাদের মধ্যে সকলেই এইগোষ্ঠীর সদস্য হবে অথবা অর্ধেক অথবা মুষ্টিমেয় কয়েকজন—এর সবই নির্ভর করবে তোমাদের প্রচেষ্টার উপর” (বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বরকে জানার পথ হল তাঁর কাজের তিনটি পর্যায় জানা)। ঈশ্বরের বাক্য অবশ্যই সম্পূর্ণ সিদ্ধ হবে এবং সেই সিদ্ধি হবে চিরকালের জন্য। রাজত্বের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং তা প্রাচুর্যে পূর্ণ। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ইতিমধ্যেই চীনের মুল ভূখণ্ডে উত্তীর্ণ মানুষদের একটি গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন। অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। চীনে তাঁর গোপন আবির্ভাবের সময় ঈশ্বর যে প্রাথমিক কাজ করেছিলেন এখন তা সগৌরবে সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি শীঘ্রই সমস্ত জাতি ও দেশে প্রকাশ্যে আবির্ভূত হবেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জার দ্বারা যে সব মানুষ মনোনীত হয়েছে সেই উত্তীর্ণ গোষ্ঠীকে চীন দেশেই গড়ে তুলেছেন ঈশ্বর। পবিত্র লক্ষ্যের দায়িত্ব নিয়ে তারাই সাক্ষ্য দেবে ঈশ্বরের কাজের, সমস্ত জাতি ও দেশের কাছে তারাই ঘোষণা করবে ঈশ্বরের পবিত্র নাম। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের রাজত্বের নীতি খুব দ্রুতই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। বাক্য দেহে আবির্ভূত হল বিনামূল্যে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে যাতে সব দেশের মানুষ তা খুঁজে পান এবং খুঁটিয়ে পড়তে পারেন। এগুলি যে ঈশ্বরের বাক্য তা কেউই অস্বীকারের সাহস পাবে না, এগুলির সত্যতা অস্বীকারের সাহসও কারোরই হবে না। স আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যারা সত্যের জন্য তৃষ্ণার্ত এবং আলোর জন্য আকুল সেই সকল মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ অনুসন্ধান করতে এবং তা খুঁটিয়ে পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বহু গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সারা বিশ্বের একাধিক বৃহৎ রাষ্ট্র এবং এলাকায়, কারণ আরও বেশি সংখ্যার মানুষ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসছে। ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে মানবজাতি ধীরে ধীরে জাগ্রত হচ্ছে এবং সত্যকে জানতে এবং স্বীকার করতে শুরু করেছে। ঈশ্বরের বাক্য সমগ্র মানবজাতিকে নেতৃত্ব দেবে এবং পূরণ করবে সব কিছু। যারা সত্যই ঈশ্বরে বিশ্বাস করে এবং সত্য-পথের অনুসন্ধান করে, সেই সব মানুষ নিশ্চিতভাবে ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে এবং তাঁর সিংহাসনের সামনে নতজানু হবে এবং সমগ্র মানবজাতি জানবে যে ঈশ্বর এসেছেন, আবির্ভূত হয়েছেন এবং তাঁর নাম সমগ্র মানবজাতির মধ্যে অবশ্যই বিপুলভাবে প্রচারিত হবে।
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।