সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্য | দু’টি অবতার অবতাররূপের তাৎপর্য সম্পূর্ণ করে
13-06-2023
ঈশ্বরের সম্পাদিত কাজের প্রতিটি পর্যায়েরই নিজস্ব ব্যবহারিক তাৎপর্য রয়েছে। অনেককাল আগে, যীশু যখন এসেছিলেন, তখন তিনি পুরুষ রূপে এসেছিলেন, আর এইবার যখন ঈশ্বর আসেন, তখন তাঁর রূপ নারী। এর থেকে তুমি দেখতে পাবে যে পুরুষ ও নারী, ঈশ্বরের এই উভয় সৃষ্টিই তাঁর কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, এবং তাঁর কাছে কোনো লিঙ্গ ভেদ নেই। যখন তাঁর আত্মা আসেন, তিনি ইচ্ছামতো যে কোনো দেহ ধারণ করতে পারেন, এবং সেই দেহ তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে; যতক্ষণ এটি তাঁর অবতাররূপ দেহ, ততক্ষণ তা পুরুষ হোক বা নারী, সে ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যীশু যখন এসেছিলেন, তখন তিনি যদি নারী হিসাবে আবির্ভূত হতেন, অর্থাৎ যদি পবিত্র আত্মা শিশুপুত্রর পরিবর্তে এক শিশুকন্যাকে ধারণ করতেন, সেক্ষেত্রেও সেই কাজের পর্যায়টি একইভাবেই সম্পন্ন হত। যদি তাই হতো, তাহলে কাজের বর্তমান পর্যায়টি তার পরিবর্তে একজন পুরুষের দ্বারা সম্পন্ন করতে হত, কিন্তু কাজটি একইভাবে শেষ হত। কাজের প্রতিটি পর্যায়ে সম্পাদিত কাজেরই নিজস্ব তাৎপর্য আছে; কাজের কোনো পর্যায়েরই কখনো পুনরাবৃত্তি করা হয় না, বা অন্য কোনো পর্যায়ের সঙ্গে তা বিরোধও ঘটায় না। সেইসময়, যীশুর কাজ চলাকালীন, তাঁকে একমাত্র পুত্র বলা হত, এবং “পুত্র” বলতে পুংলিঙ্গ বোঝায়। বর্তমান পর্যায়ে কেন একমাত্র পুত্র কথাটি উল্লেখ করা হয় না? কারণ কাজের প্রয়োজনে যীশুর সময় থেকে বর্তমানে লিঙ্গের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়েছে। ঈশ্বরের কাছে লিঙ্গের কোনো ভেদাভেদ নেই। তিনি তাঁর ইচ্ছানুসারে কাজ করেন, এবং তাঁর কাজের ক্ষেত্রে তিনি কোনো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েন না, বরং তিনি বিশেষভাবে মুক্ত। তবুও কাজের প্রতিটি পর্যায়েরই নিজস্ব ব্যবহারিক গুরুত্ব আছে। ঈশ্বর দু’বার দেহধারণ করেছিলেন, এবং এটি স্বতঃসিদ্ধ যে, অন্তিম সময়ে তাঁর অবতাররূপ ধারণই শেষবার। তিনি তাঁর সব কাজগুলি সকলকে জানাতে এসেছেন। যদি এই পর্যায়ে তিনি দেহরূপে আবির্ভূত হয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করে মানুষকে প্রত্যক্ষদর্শন না করাতেন, মানুষ তাহলে চিরকাল এই ধারণাই আঁকড়ে ধরে থাকতো যে ঈশ্বর শুধুমাত্র পুরুষ, নারী নন। এর আগে, সমস্ত মানবজাতি বিশ্বাস করত যে, ঈশ্বর কেবল পুরুষ হতে পারেন, এবং একজন নারীকে কখনোই ঈশ্বর বলা যায় না, কারণ সমস্ত মানবজাতি পুরুষকে নারীর উপর কর্তৃত্বের অধিকারী বলে মনে করত। তারা বিশ্বাস করত যে, কোনো নারীই কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারে না, শুধুমাত্র পুরুষেরাই পারে। তার চেয়েও বড় কথা, তারা এমনও বলত যে, পুরুষই নারীর কর্তা এবং নারীর পুরুষকে মান্য করতে হবে এবং সে পুরুষকে অতিক্রম করতে পারে না। অতীতে, যখন এমন বলা হত যে, পুরুষই নারীর কর্তা, তখন এ কথা আদম ও হবাকে নির্দেশ করে বলা হতো, যারা সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল—পুরুষ এবং নারীর প্রতি নয়, কারণ তারা যিহোবার দ্বারা আদিতেই সৃষ্টি হয়েছিল। অবশ্যই, একজন নারীর তার স্বামীকে মান্য করা ও ভালোবাসা উচিত, এবং একজন স্বামীরও পরিবারের ভরণপোষণ ও অবলম্বন দিতে শেখা উচিত। এগুলোই যিহোবার দ্বারা নির্ধারিত আইন ও ফরমানসমূহ যা মানবজাতিকে পৃথিবীতে তাদের জীবনে মেনে চলতে হবে। যিহোবা নারীকে বলেছিলেন, “স্বামীর প্রতি থাকবে তোমার আসক্তি এবং সে তোমার উপরে করবে কর্তৃত্ব”। তিনি এরকম বলেছিলেন যাতে মানবজাতি (অর্থাৎ, পুরুষ ও নারী উভয়েই) যিহোবার আধিপত্যের অধীনে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, এবং যাতে মানবজাতির জীবনের একটি কাঠামো থাকে এবং তারা যথাযথ শৃঙ্খলার বাইরে না পড়ে। সুতরাং যিহোবা পুরুষ ও নারীর কীভাবে আচরণ করা উচিত সে বিষয়ে উপযুক্ত নিয়ম তৈরি করেছিলেন, যদিও এই নিয়ম শুধুমাত্র পৃথিবীতে বসবাসকারী সৃষ্ট জীবের জন্যই ছিল, এবং ঈশ্বরের অবতাররূপের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক ছিল না। ঈশ্বর কীভাবে তাঁর সৃষ্ট জীবের সমান হতে পারেন? তাঁর কথাগুলি কেবল তাঁর সৃষ্ট মানবজাতির প্রতিই নির্দেশিত ছিল; মানবজাতি যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, সেই জন্যই তিনি নারী ও পুরুষের জন্য নিয়ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আদিতে, যখন যিহোবা মানবজাতি সৃষ্টি করেছিলেন, তিনি পুরুষ এবং নারী, দু’রকমের মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন; এবং সেইজন্যই তাঁর অবতার দেহরূপে পুরুষ ও নারী বিভাজন রয়েছে। তিনি আদম ও হবাকে কথিত তাঁর বাক্যের উপরে ভিত্তি করে তাঁর কাজ নির্ধারিত করেন নি। যে দু’বার তিনি দেহধারণ করেছেন, তা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারিত হয়েছিল যখন তিনি প্রথম মানবজাতি সৃষ্টি করেছিলেন সেই সময়ের চিন্তাধারা অনুসারে; অর্থাৎ, পুরুষ ও নারী কলুষিত হওয়ার আগেই, তিনি তাদের উপর ভিত্তি করে তাঁর দুটি অবতাররূপের কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন। যে আদম ও হবা সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল, তাদের কথিত যিহোবার বাক্যগুলি যদি মানবজাতি গ্রহণ করত, এবং তাদের ঈশ্বরের অবতাররূপের কাজে প্রয়োগ করত, তাহলে যীশুকেও কি তাঁর স্ত্রীকে তাঁর উচিত মতো ভালোবাসতে হত না? এইভাবে ঈশ্বর কি ঈশ্বর থাকতেন? এবং এরকম হলে, ঈশ্বর কি এরপরেও তাঁর কাজ শেষ করতে সক্ষম হতেন? যদি ঈশ্বরের অবতার দেহরূপের নারী হওয়াটা ভুল হয়, তাহলে নারী সৃষ্টি করাটাও কি ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ মাত্রার ভুল হত না? যদি মানুষ এখনো এটাই বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বরের নারী হিসাবে অবতাররূপ ধারণ করা ভুল হবে, তাহলে যীশু, যিনি বিবাহ করেননি, এবং তাই তাঁর স্ত্রীকে ভালোবাসতে অক্ষম ছিলেন, তিনিও কি বর্তমান অবতারের মতোই ভুল হবেন না? যেহেতু তুমি বর্তমান ঈশ্বরের অবতারের সত্যতা পরিমাপ করার জন্য হবার কাছে যিহোবার কথিত বাক্য ব্যবহার করো, তাহলে প্রভু যীশু, যিনি অনুগ্রহের যুগে দেহরূপ ধারণ করেছিলেন, তাঁর বিচার করার জন্য তোমাকে অবশ্যই আদমকে বলা যিহোবার বাক্যগুলি ব্যবহার করতে হবে। এইগুলি কি এক এবং অভিন্ন নয়? যে পুরুষ সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয় নি, তুমি যেহেতু তার মতানুসারে প্রভু যীশুর পরিমাপ করো, তাই তুমি আজকের অবতারের সত্যতাকে সেই নারীর অনুযায়ী বিচার করতে পারো না যে সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। এটা অন্যায় হবে! এইভাবে ঈশ্বরকে বিচার করার অর্থ প্রমাণ করে যে তোমার মধ্যে যৌক্তিকতার অভাব আছে। যখন যিহোবা দু’বার দেহরূপ ধারণ করেছিলেন, তাঁর দেহরূপের লিঙ্গ সেই পুরুষ এবং নারীর সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল যারা সর্পের দ্বারা প্রতারিত নয়; সর্প দ্বারা প্রতারিত না হওয়া পুরুষ এবং নারীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি দুইবার দেহধারণ করেছিলেন। একথা মনে কোরো না যে যীশুর পুরুষত্ব এবং আদম, যে সর্পের দ্বারা প্রতারিত, তার পুরুষত্ব একইরকম ছিল। তাঁরা দু’জন সম্পূর্ণভাবে সম্পর্কহীন, দুই ভিন্ন প্রকৃতির পুরুষ ছিলেন। নিশ্চিতভাবে এটা হতে পারে না যে, যীশুর পুরুষত্ব প্রমাণ করে যে তিনি সমস্ত নারীর প্রধান কিন্তু সমস্ত পুরুষের নন? তিনি কি সমস্ত ইহুদির (নারী এবং পুরুষ মিলিয়ে) রাজা নন? তিনি স্বয়ং ঈশ্বর, কেবলমাত্র নারীদের নয়, সেইসাথে পুরুষদেরও প্রধান। তিনি সমস্ত জীবের প্রভু এবং প্রধান। তুমি কীভাবে যীশুর পুরুষত্বকে নারীর প্রধান হবার প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত করতে পারো? তা কি ধর্মনিন্দা হবে না? যীশু একজন পুরুষ, যিনি ভ্রষ্ট হন নি। তিনি ঈশ্বর; তিনি খ্রীষ্ট; তিনিই প্রভু। কীভাবে তিনি আদমের মত একজন পুরুষ হতে পারেন যে ভ্রষ্ট ছিল? যীশু হলেন ঈশ্বরের সবচেয়ে পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিহিত দেহ। কীভাবে তুমি বলতে পারো যে, তিনি হলেন সেই ঈশ্বর যিনি আদমের পুরুষত্বের অধিকারী? সেক্ষেত্রে ঈশ্বরের সমস্ত কাজই কি ভুল হয়ে যাবে না? যিহোবা কি যীশুর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতেন আদমের সেই পুরুষত্ব, যে সর্প দ্বারা মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছিল? বর্তমান সময়ের অবতার, যিনি যীশুর থেকে লিঙ্গে পৃথক কিন্তু প্রকৃতিতে একই, তিনি কি ঈশ্বরের অবতারের কাজের আরেকটি দৃষ্টান্ত নন? তুমি কি এখনো এটা বলার সাহস রাখো যে ঈশ্বরের অবতার নারী হতে পারেন না, কারণ নারীই প্রথম সর্পের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল? তুমি কি এখনো একথা বলার সাহস রাখো যে, যেহেতু নারীরা সবচেয়ে অপরিচ্ছন্ন এবং মানবজাতির ভ্রষ্টাচারের উৎস, তাই ঈশ্বর কখনোই নারীদেহে অবতীর্ণ হতে পারেন না? তুমি কি এখনো এই কথা অবিরত বলে যেতে সাহস করবে যে, “নারীর সর্বদা পুরুষকে মেনে চলা উচিত এবং কখনোই ঈশ্বরকে প্রকাশ করা বা প্রত্যক্ষভাবে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করা উচিত নয়”? তুমি অতীতে বুঝতে পারো নি, কিন্তু তুমি কি এখন ঈশ্বরের কাজ, বিশেষ করে ঈশ্বরের অবতার রূপের, নিন্দা করতে পারো? যদি এটা তোমার কাছে পরিষ্কার না হয়, তাহলে সবচেয়ে ভালো নিজের জিহ্বাকে সতর্ক রাখা, পাছে তোমার অজ্ঞতা ও মূর্খতা প্রকাশ পায় এবং তোমার কদর্যতা অনাবৃত হয়ে পড়ে। এমন ভেবো না যে তুমি সব বোঝো। আমি তোমাকে বলছি, যা তুমি দেখেছো এবং অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, তা আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার এক সহস্রাংশ বোঝার জন্যও তোমার কাছে যথেষ্ট নয়। তাহলে কেন তুমি এমন উদ্ধত আচরণ করো? যে সামান্য প্রতিভা এবং ছিটেফোঁটা জ্ঞান তোমার আছে, তা যীশুর কাছে এক সেকেন্ডের জন্যও তাঁর কাজে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট নয়! কতটুকু অভিজ্ঞতা সত্যিই আছে তোমার? তুমি সারাজীবন ধরে যা দেখেছ, শুনেছ এবং কল্পনা করেছ, তা আমার এক মুহূর্তের কাজের চাইতেও কম। খুঁতখুঁতানি অথবা ছিদ্রান্বেষণ থেকে বিরত থাকো। তুমি চাইলেই উদ্ধত হতে পারো, কিন্তু তুমি ক্ষুদ্র পিপীলিকার মতো একটি প্রাণীর চাইতে বেশি কিছু নও! তুমি তোমার উদরে যা ধারণ করে রেখেছো তা একটি পিপীলিকার উদরে যা আছে তার চাইতেও কম! এরকম একেবারেই ভেবো না যে, শুধুমাত্র তুমি কিছু অভিজ্ঞতা এবং প্রবীণত্ব লাভ করেছ বলেই তোমার বন্য ইঙ্গিত করা এবং বড় বড় কথা বলার অধিকার আছে। তোমার অভিজ্ঞতা এবং তোমার প্রবীণত্ব কি আমারই উচ্চারিত বাক্যের ফলাফল নয়? তুমি কি বিশ্বাস করো সেগুলো তোমার নিজের পরিশ্রম এবং কষ্টের বিনিময়ে প্রাপ্ত? আজ তুমি দেখতে পাচ্ছো আমি দেহে আবির্ভূত হয়েছি, এবং শুধু সেই কারণে তোমার মধ্যে রয়েছে কল্পনার আধিক্য, আর সেখান থেকে ধারণার অন্ত নেই। যদি আমার অবতাররূপের জন্য না হত তাহলে তুমি অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হলেও তোমার এত ধারণা থাকত না; এবং এই অবতার-রূপের থেকেই কি তোমার মধ্যে ধারণার জন্ম হয় না? যদি যীশু প্রথমবারের জন্য দেহধারণ না করতেন তাহলে কি তুমি অবতাররূপের বিষয়ে জানতেও পারতে? প্রথম অবতাররূপ তোমাকে জ্ঞান দান করেছেন বলেই কি তোমার দ্বিতীয় অবতাররূপকে বিচার করবার চেষ্টা করার ধৃষ্ঠতা নয়? কেন একজন আজ্ঞাকারী অনুগামী হওয়ার বদলে তুমি তা নিয়ে পড়াশোনা করছ? তুমি যখন এই স্রোতের মধ্যে প্রবেশ করেছো, এবং ঈশ্বরের অবতারের সম্মুখে এসেছ, তিনি কি তাঁকে নিয়ে গবেষণা করার অনুমতি তোমাকে দেবেন? তুমি তোমার নিজের পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে পারো, কিন্তু তুমি যদি ঈশ্বরের “পারিবারিক ইতিহাস” নিয়ে গবেষণা করার চেষ্টা করো, আজকের ঈশ্বর কি তোমাকে সেই গবেষণা করার অনুমতি দেবেন? তুমি কি অন্ধ নও? তুমি কি নিজের প্রতি অপমান ডেকে আনছো না?
যদি শুধু যীশুর কাজই সম্পন্ন হতো, এবং তা অন্তিম সময়ের এই পর্যায়ের কাজের দ্বারা পরিপূর্ণ না হতো, তাহলে মানুষ চিরকাল এই ধারণা আঁকড়েই থেকে যেত যে একা যীশুই ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র, অর্থাৎ, ঈশ্বরের মাত্র একটিই পুত্র আছে, এবং এরপরে অন্য নামে যেই আসুক, সে একমাত্র ঈশ্বরের পুত্র হতে পারে না, স্বয়ং ঈশ্বর তো কিছুতেই নয়। মানুষের এরকম ধারণা আছে যে, যিনি পাপস্খালনের বলি হিসাবে কাজ করেন, বা যিনি ঈশ্বরের তরফে ক্ষমতা গ্রহণ করেন, এবং সমস্ত মানবজাতিকে মুক্তি দেন, তিনিই একমাত্র ঈশ্বরের পুত্র। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, যিনি আসছেন তিনি যতক্ষণ একজন পুরুষ, ততক্ষণ তাঁকে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র ও ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এমন মানুষও আছে যারা বলে যীশু যিহোবার পুত্র, তাঁর একমাত্র পুত্র। এই ধরণের ধারণা কি অত্যধিক নয়? যদি কাজের এই পর্যায় অন্তিম যুগে সম্পন্ন না হত, তাহলে ঈশ্বরের বিষয়ে সমগ্র মানবজাতি অন্ধকারে আবৃত থাকতো। এমনটা হলে, পুরুষ নিজেকে নারীর চাইতে উচ্চতর বলে মনে করত, এবং নারীরা কখনোই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত না, এবং একজন নারীকেও উদ্ধার করা যেত না। মানুষ সবসময় বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর একজন পুরুষ, এবং অধিকন্তু, তিনি সর্বদা নারীকে তুচ্ছ করেছেন এবং তাকে পরিত্রাণ দেবেন না। এমনটাই যদি হত, তাহলে এটা কি সত্যি হত না যে, সমস্ত নারী যারা যিহোবার দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল, এবং যারা আবার ভ্রষ্টও হয়েছিল, তাদের কখনোই উদ্ধার পাওয়ার সুযোগ থাকত না? যিহোবার তাহলে নারী, অর্থাৎ হবাকে, সৃষ্টি করাটাই কি ভিত্তিহীন হয়ে পড়ত না? এবং নারীকে কি অনন্তকালের জন্য ধ্বংস করা হত না? এই কারণের জন্যই, অন্তিম সময়ের কাজের পর্যায়টি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল সমগ্র মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য, কেবল নারীকে নয়। কেউ যদি মনে করে যে, ঈশ্বরকে যদি নারীরূপে অবতীর্ণ হতে হতো, তবে তা হতো শুধুমাত্র নারীকে উদ্ধার করার জন্যই, তাহলে সেই ব্যক্তি একজন মূর্খ!
আজকের কাজ অনুগ্রহের যুগের কাজকে এগিয়ে দিয়েছে; অর্থাৎ সমগ্র ছয় হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার অধীনের কাজই সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। যদিও অনুগ্রহের যুগ শেষ হয়েছে, কিন্তু ঈশ্বরের কাজে উন্নতি ঘটেছে। কেন আমি বারবার বলি যে কাজের এই পর্যায় অনুগ্রহের যুগ এবং বিধানের যুগের উপর ভিত্তি করে তৈরি? কারণ, আজকের দিনের কাজ অনুগ্রহের যুগে যুগে সম্পন্ন কাজেরই ধারাবাহিকতা, এবং বিধানের যুগে সম্পন্ন কাজের চাইতে অগ্রগতিপ্রাপ্ত। এই তিনটি পর্যায় দৃঢ়ভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত, শৃঙ্খলের প্রতিটি অংশ পরবর্তি অংশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে আবদ্ধ। কেন আমি একথাও বলি যে, কাজের এই পর্যায়টি যীশুর দ্বারা সম্পন্ন কাজের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে? ধরে নেওয়া যাক, এই পর্যায়টি যীশুর দ্বারা সম্পন্ন কাজের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে নি, তাহলে এই পর্যায়ে অন্য একটি ক্রুশবিদ্ধকরণ ঘটত, এবং পূর্বতন ধাপের পরিত্রাণমূলক কাজগুলি আবার নতুন করে করতে হত। তা হতো অর্থহীন। এবং তাই, কাজটি সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এমন নয়, বরং যুগ সামনের দিকে এগিয়েছে, এবং কাজের মাত্রা আগের চাইতে উচ্চতর করা হয়েছে। এটা বলা যেতে পারে যে কাজের এই পর্যায়টি বিধানের যুগের ভিত্তির উপরে তৈরী, এবং যীশুর কাজের প্রস্তরের উপর নির্মিত। ঈশ্বরের কাজ ধাপে ধাপে নির্মিত, এবং এই ধাপটি কোনো নতুন সূচনা নয়। শুধুমাত্র কাজের এই তিনটি পর্যায়ের সমন্বয়কেই ছয় হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা বলে গণ্য করা যেতে পারে। এই পর্যায়ের কাজ অনুগ্রহের যুগের কাজের ভিত্তির উপরে সম্পন্ন করা হয়েছে। যদি এই দুই পর্যায়ের কাজের মধ্যে সম্পর্ক না থাকত, তাহলে ক্রুশবিদ্ধকরণ আবার এই পর্যায়ে পুনরাবৃত্ত হয় না কেন? কেন আমি মানুষের পাপ বহন করি না, বরং পরিবর্তে প্রত্যক্ষভাবে মানুষের বিচার করতে ও তাকে শাস্তি দিতে আসি? মানুষের বিচার ও শাস্তির কাজ, এবং বর্তমানে পবিত্র আত্মার মাধ্যমবাহিত না-হয়েই আমার আসা, ক্রুশবিদ্ধকরণের পর এগুলো যদি না ঘটতো, তাহলে মানুষের বিচার ও শাস্তির যোগ্যতা আমার থাকতো না। নির্দিষ্টভাবে, যেহেতু আমি ও যীশু এক, তাই আমি মানুষকে প্রত্যক্ষভাবে বিচার করতে ও শাস্তি দিতে এসেছি। এই পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণভাবে পূর্ববর্তী পর্যায়ের কাজের উপরে ভিত্তি করে নির্মিত। এই কারণে একমাত্র এই ধরণের কাজই মানুষকে ধাপে ধাপে পরিত্রাণের মধ্যে আনতে পারে। যীশু এবং আমি এক আত্মার থেকে এসেছি। যদিও আমরা দেহে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কহীন, কিন্তু আমাদের আত্মা এক; যদিও আমরা যা করি তার বিষয় এবং যে কাজ আমরা হাতে নিই সেগুলি এক নয়, তবু সারসত্যে আমরা একই; আমাদের দেহ ভিন্ন রূপ ধারণ করে, কিন্তু তা যুগের পরিবর্তনের জন্য ও আমাদের কাজের প্রয়োজনের ভিন্নতার জন্য; আমাদের সেবাব্রত ভিন্ন, তাই আমরা যে কাজ সামনে আনি এবং যে স্বভাব আমরা মানুষের কাছে প্রকাশ করি, সেগুলোও আলাদা। সেই কারণেই, মানুষ আজ যা দেখে এবং বোঝে, তা অতীতের থেকে আলাদা, যার কারণ হচ্ছে যুগের পরিবর্তন। যদিও তারা লিঙ্গ ও দেহরূপে ভিন্ন, এবং তারা একই পরিবারে জন্মায় নি, একই সময়ের মধ্যে তো নয়ই, কিন্তু তাদের আত্মা তবুও এক। তাদের দেহের মধ্যে রক্তসম্পর্ক বা কোনো দৈহিক আত্মীয়তা না থাকলেও, এটা অস্বীকার করা যায় না যে, তারা দুটি ভিন্ন সময়কালে ঈশ্বরের অবতাররূপ। তারা যে ঈশ্বরের অবতার তা অকাট্য সত্য। যদিও, তারা একই রক্তসম্পর্কের নন এবং একই মানবীয় ভাষায় কথা বলেন না (একজন ছিলেন এক পুরুষ যিনি ইহুদিদের ভাষায় কথা বলতেন, এবং অপরজন এক নারী যিনি শুধুমাত্র চৈনিক ভাষা বলেন)। এই সব কারণের জন্যই তাঁরা তাঁদের যথোচিত কাজ করতে ভিন্ন দেশে এবং ভিন্ন সময়কালে জীবনযাপন করেছেন। যদিও এটা সত্য যে তাঁরা একই আত্মা, তাঁদের একই সারসত্য, কিন্তু তাঁদের দেহের বাহ্যিক আবরণের মধ্যে কোনো চূড়ান্ত মিল নেই। তাঁরা একই মানবতার অংশীদার, কিন্তু যতদূর তাঁদের দেহের বাহ্যিক চেহারা এবং তাঁদের জন্মের পরিস্থিতি বিবেচ্য, তাঁরা একইরকম নন। এই বিষয়গুলির কোনো প্রভাব তাঁদের সংশ্লিষ্ট কাজে বা মানুষের তাঁদের সম্পর্কিত জ্ঞানের উপরে পড়ে না, কারণ চূড়ান্ত বিশ্লেষণে, তাঁরা একই আত্মা এবং কেউ তাঁদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। এমনকি যদিও তাঁরা রক্তের দ্বারা সম্পর্কিত নন, এবং তাঁদের দেহ ভিন্ন বংশজাত, কিন্তু তাঁদের সমগ্র সত্তাই তাঁদের আত্মার চালিকাশক্তি, যা তাঁদের জন্য বিভিন্ন সময়কালে বিভিন্ন কাজ বরাদ্দ করে। যিহোবার আত্মা যীশুর আত্মার পিতা নন, এবং যীশুর আত্মাও যিহোবার আত্মার পুত্র নন: তাঁরা এক এবং একই আত্মা। একইভাবে, আজকের ঈশ্বরের অবতার এবং যীশু রক্তের দ্বারা সম্পর্কিত নন, কিন্তু তাঁরা এক, কারণ তাঁদের আত্মা একই। ঈশ্বর করুণা এবং প্রেমময় উদারতার কাজ করতে পারেন, পাশাপাশি ধার্মিক বিচার ও মানুষের শাস্তিবিধানের কাজও করতে পারেন, এবং মানুষকে অভিশাপ দেওয়ার কাজও করতে পারেন; এবং শেষে, তিনি এই পৃথিবী ধ্বংস করার ও দুষ্টের দণ্ডদানের কাজ করতে পারেন। তিনি কি এইসবই নিজে করেন না? এটাই কি ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তা নয়? তিনি মানুষের জন্য আইন ঘোষণা এবং আদেশ জারি উভয়ই করতে সক্ষম ছিলেন, এবং তিনি প্রথমযুগের ইস্রায়েলীদের পৃথিবীতে তাদের জীবন যাপনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়েছিলেন, এবং সমস্ত ইস্রায়েলীদেরকে তাঁর আধিপত্যের অধীনে রেখে মন্দির ও বেদী নির্মাণে তাদের পথনির্দেশ দিতেও সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর কর্তৃত্বের কারণে তিনি পৃথিবীতে দুই হাজার বছর ইস্রায়েলের মানুষদের সঙ্গে বাস করেছিলেন। ইস্রায়েলীরা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সাহস পায় নি; সকলেই যিহোবাকে শ্রদ্ধা করতো এবং তাঁর আদেশ পালন করতো। এমনই ছিল সেই কাজ যা তাঁর কর্তৃত্বের গুণের দ্বারা এবং তাঁর সর্বশক্তিমত্তার দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল। তখন, অনুগ্রহের যুগ চলাকালীন, যীশু সমস্ত পতিত মানবজাতিকে (শুধুমাত্র ইস্রায়েলীদের নয়) মুক্তি দিতে এসেছিলেন। তিনি মানুষের প্রতি করুণা এবং প্রেমময় উদারতা প্রদর্শন করেছিলেন। যে যীশুকে মানুষ অনুগ্রহের যুগে দেখেছিল, তিনি ছিলেন প্রেমময় উদারতায় পূর্ণ, এবং সবসময় তিনি মানুষের প্রতি ভালোবাসাপূর্ণ ছিলেন, কারণ তিনি মানবজাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে এসেছিলেন। ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি মানবজাতিকে তাদের পাপের জন্য ক্ষমা করতে সক্ষম ছিলেন যতক্ষণ না তাঁর ক্রুশবিদ্ধকরণ মানবজাতিকে সম্পূর্ণরূপে পাপ থেকে মুক্ত করতে পেরেছিল। এই সময়ে ঈশ্বর মানুষের সামনে করুণা এবং প্রেমময় উদারতা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন; অর্থাৎ তিনি মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি হয়েছিলেন এবং মানুষের পাপের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, যাতে তারা চিরতরে ক্ষমা পায়। তিনি ছিলেন ক্ষমাশীল, সহানুভূতিশীল, ধৈর্যশীল এবং প্রেমময়। এবং সেই সকলে যারা যীশুকে অনুগ্রহের যুগে অনুসরণ করত, একইভাবে তারাও সব বিষয়ে ধৈর্যশীল এবং প্রেমময় হতে চেয়েছিল। তারা দীর্ঘ কষ্ট ভোগ করেছিল, এবং প্রহৃত, অভিসম্পাতপ্রাপ্ত বা প্রস্তরাহত হয়েও কখনো পাল্টা আঘাত করে নি। কিন্তু অন্তিম পর্যায়ে এটি আর হতে পারে না। যীশু এবং যিহোবা একই আত্মার হলেও তাঁদের কাজ সমগ্রভাবে এক ছিল না। যিহোবার কাজ একটি যুগকে শেষ করে নি, বরং যুগকে পথনির্দেশ দিয়েছিল, পৃথিবীতে মানবজাতির জীবনের সূচনা করেছিল, এবং আজকের কাজ হল অইহুদি দেশগুলির মধ্যে যারা গভীরভাবে ভ্রষ্ট হয়েছে তাদের জয় করা, এবং শুধুমাত্র চীনে ঈশ্বরের নির্বাচিত মানুষদের নয়, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ও মানবজাতিকে নেতৃত্ব দেওয়া। তোমার মনে হতে পারে যে, এই কাজ কেবল চীনেই সম্পাদিত হচ্ছে, কিন্তু আসলে এটি ইতিমধ্যেই বিদেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। কেন চীনের বাইরের মানুষ বারবার প্রকৃত পথ খুঁজছে? এর কারণ হল, আত্মা ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করে দিয়েছেন, এবং আজকের কথিত বাক্যগুলি সারা বিশ্বের মানুষের দিকে নির্দেশিত। এর দ্বারা ইতিমধ্যেই অর্ধেক কাজ চলমান অবস্থায় আছে। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত, ঈশ্বরের আত্মা এই বিশাল কাজ গতিময় রেখেছেন, এবং অধিকন্তু, বিভিন্ন যুগে এবং বিভিন্ন জাতির মধ্যে তিনি বিভিন্ন কাজ করেছেন। বিভিন্ন যুগের মানুষ তাঁর ভিন্ন ভিন্ন স্বভাব দেখতে পায়, যা তাঁর নানান কাজের মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রকাশিত হয়। তিনি করুণা এবং প্রেমময় উদারতায় পূর্ণ ঈশ্বর; তিনি মানুষের জন্য পাপস্খালনের বলি এবং মানুষের মেষপালক; কিন্তু আবার তিনিই মানুষের বিচার, শাস্তি এবং অভিশাপ। তিনি পৃথিবীতে দুই হাজার বছর ধরে মানুষকে জীবনযাপন করার নেতৃত্ব দিতে পারেন, এবং তিনি ভ্রষ্ট মানবজাতিকে পাপ থেকে মুক্তিও দিতে পারেন। আজ তিনি সেই মানবজাতিকে জয় করতেও সক্ষম যারা তাঁকে চেনেনা, এবং তাদের নিজের রাজত্বের অধীনে প্রণত করতেও সক্ষম, যাতে সবাই তাঁর কাছে সম্পূর্ণভাবে সমর্পণ করে। শেষে, তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে মানুষের মধ্যে যা কিছু অশুদ্ধ এবং অধর্ম রয়েছে, তাকে ভস্মীভূত করবেন, তাদের দেখানোর জন্য যে তিনি শুধুমাত্র করুণাময় এবং প্রেমময় ঈশ্বর নন, শুধুমাত্র প্রজ্ঞা এবং বিস্ময়ের ঈশ্বর নন, শুধুমাত্র পবিত্র ঈশ্বর নন, তিনি সেই ঈশ্বরও, যিনি মানুষকে বিচার করেন। মানবজাতির মধ্যে মন্দ লোকের জন্য তিনি দহনশীল, বিচার ও শাস্তিস্বরূপ; যাদের নিখুঁত করা হবে, তাদের জন্য তিনি ক্লেশ, পরিমার্জনা ও পরীক্ষা, আবার সেইসাথে স্বাচ্ছন্দ্য, ভরণপোষণ, বাক্যের সংস্থান, মোকাবিলা এবং অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন। এবং যারা বহিষ্কৃত হয়েছে, তাদের কাছে তিনি শাস্তি এবং প্রতিশোধ। তাহলে বলো, ঈশ্বর কি সর্বশক্তিমান নন? তিনি যে কোনো এবং সমস্ত কাজ করতে সক্ষম, শুধু ক্রুশবিদ্ধকরণ নয়, যেমনটা তুমি কল্পনা করো। ঈশ্বর সম্বন্ধে তোমার ধারণা বড়োই ক্ষুদ্র! তুমি কি বিশ্বাস করো যে, তিনি যা করতে পারেন তা হল কেবল তাঁর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতিকে মুক্ত করা, এটুকুই? আর তারপর তুমি তাঁকে স্বর্গ পর্যন্ত অনুসরণ করবে জীবন বৃক্ষের ফল খেতে এবং জীবন নদের জল পান করতে? … এটি কি এত সহজ হতে পারে? বলো, তুমি কী অর্জন করেছ? যীশুর জীবন কি তোমার রয়েছে? তুমি অবশ্যই যীশুর দ্বারাই মুক্তি পেয়েছ, কিন্তু ক্রুশবিদ্ধ হওয়া ছিল স্বয়ং যীশুর কাজ। একজন মানুষ হিসাবে তুমি কোন কর্তব্য পালন করেছ? তোমার কেবল বাহ্যিক ভক্তি রয়েছে, কিন্তু তুমি তাঁর পথ বোঝো না। তুমি কি তাঁকে এভাবেই প্রকাশ করো? তুমি যদি ঈশ্বরের জীবন লাভ না করে থাকো বা তাঁর ধার্মিক স্বভাব সামগ্রিকভাবে না দেখে থাকো, তাহলে তুমি নিজেকে প্রকৃত জীবনের অধিকারী একজন বলে দাবি করতে পারো না, এবং তুমি স্বর্গরাজ্যের দ্বার অতিক্রম করার যোগ্য নও।
ঈশ্বর শুধুমাত্র আত্মা নন, তিনি দেহরূপও ধারণ করতে পারেন। তার চেয়েও বেশি, তিনি গৌরবের দেহরূপ। যদিও তোমরা যীশুকে দেখো নি, কিন্তু তৎকালীন ইস্রায়েলীরা, অর্থাৎ সমসাময়িক ইহুদিরা তাঁকে প্রত্যক্ষ করেছিল। তিনি প্রথমে ছিলেন একজন রক্তমাংসের শরীর, কিন্তু ক্রুশবিদ্ধ হবার পরে তিনি মহিমার প্রতিমূর্তিতে পরিণত হন। তিনি সর্বব্যাপী আত্মা এবং তিনি সর্বত্র কাজ করতে পারেন। তিনি যিহোবা, যীশু বা মশীহ হতে পারেন; পরিশেষে তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরও হতে পারেন। তিনি ন্যায়পরায়ণতা, বিচার এবং শাস্তি; তিনি অভিশাপ এবং ক্রোধ; কিন্তু তিনি করুণা এবং প্রেমময় উদারতাও। তাঁর সম্পাদিত সমস্ত কর্মই তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম। তুমি তাঁকে কী ধরণের ঈশ্বর বলবে? তুমি ব্যাখ্যা করতে পারবে না। তুমি যদি সত্যিই ব্যাখ্যা করতে না পারো, তাহলে তোমার ঈশ্বর সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়। এইরকম সিদ্ধান্তে উপনীত হোয়ো না যে, ঈশ্বর একটি পর্যায়ে মানবজাতির মুক্তির কাজ করেছেন বলে তিনি চিরকাল কেবলমাত্র করুণা ও প্রেমময়তার ঈশ্বর। তুমি কি নিশ্চিত হতে পারো যে, তিনি শুধুমাত্র ক্ষমাশীল এবং প্রেমময় ঈশ্বর? যদি তিনি শুধুই একজন ক্ষমাশীল এবং প্রেমময় ঈশ্বর হবেন, তাহলে তিনি কেন অন্তিম সময়ে যুগের অবসান ঘটাবেন? কেন তিনি নানান বিপর্যয় পৃথিবীতে পাঠাবেন? মানুষের ধারণা এবং ভাবনা অনুযায়ী, ঈশ্বরের ক্ষমাশীল এবং প্রেমময় হওয়া উচিত, যাতে মানবজাতির শেষতম মানুষটিও সুরক্ষিত হতে পারে। কিন্তু অন্তিম সময়ে কেন তিনি এতরকম বিপর্যয়, যেমন ভূমিকম্প, মহামারী এবং দুর্ভিক্ষ পাঠান এই মন্দ মানবজাতিকে ধ্বংস করার জন্য, যারা ঈশ্বরকে একজন শত্রু মনে করে? কেন তিনি মানুষকে এই বিপর্যয়গুলি ভোগ করতে দেন? তিনি কীরকম ঈশ্বর, তা তোমাদের মধ্যে কেউ ব্যাখ্যা করতে বা বলতে সাহস পাবে না। তোমার কি বলার সাহস আছে যে তিনিই আত্মা? তুমি কি সাহস করে বলতে পারো যে তিনি যীশুর দেহরূপ ছাড়া আর কেউ নন? এবং একথাও কি তুমি সাহস করে বলতে পারো যে, তিনি এমন এক ঈশ্বর যিনি মানবজাতির স্বার্থে চিরকাল ক্রুশবিদ্ধ হবেন?
—বাক্য, খণ্ড ১. ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য
The Bible verses found in this video are from পবিএ বাইবেল CL Bible (BSI) (BENGALCL-BSI) and the copyright to the Bible verses belongs to the Bible Society of India. With due legal permission, they are used in this production.
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।👇
অন্যান্য ধরণের ভিডিও