ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: কর্মের তিনটি পর্যায় | উদ্ধৃতি 26

21-09-2023

অন্তিম সময়ের কার্য হল বাক্য উচ্চারণ করা। বাক্যের দ্বারা মানুষের মধ্যে অসামান্য পরিবর্তন আনা যায়। বাক্য গ্রহণের মাধ্যমে এখন মানুষের মধ্যে যে পরিবর্তন এসেছে, তা অনুগ্রহের যুগে প্রতীক ও বিস্ময়গুলিকে গ্রহণ করার তুলনায় অনেক বৃহত্তর। কারণ অনুগ্রহের যুগে মানুষের উপর হাত রাখা এবং প্রার্থনার মাধ্যমে মন্দ আত্মা তাড়ানো হত, কিন্তু মানুষের অন্তর্নিহিত ভ্রষ্ট স্বভাব তখনও থেকে যেত। মানুষের রোগ নিরাময় হত এবং তার পাপ ক্ষমা করা হত, কিন্তু তার অন্তরের ভ্রষ্ট, শয়তানী স্বভাবগুলি শুদ্ধ করার কার্য তখনও বাকি ছিল। মানুষকে কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের জন্য উদ্ধার করা হত এবং তার পাপ ক্ষমা করা হত, কিন্তু মানুষের পাপী প্রবৃত্তি বিলুপ্ত হয় নি এবং তা এখনো রয়ে গেছে। ঈশ্বরের অবতার রূপের মাধ্যমে মানুষের পাপ ক্ষমা করা হত, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, তার মধ্যে আর পাপ ছিল না। মানুষের পাপ এক পাপ-উৎসর্গের দ্বারা ক্ষমা করা হত, কিন্তু কীভাবে সে আর কখনো পাপ করবে না, অথবা কীভাবে তার পাপী প্রবৃত্তি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে সে রূপান্তরিত হবে, এই সমস্যা সমাধানের কোনো উপায় তার জানা ছিল না। মানুষের পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল, এবং তার কারণ ছিল ঈশ্বরের ক্রুশবিদ্ধকরণ, কিন্তু এরপরেও মানুষ তার পুরনো ভ্রষ্ট, শয়তানী স্বভাব নিয়েই বেঁচে ছিল। এই কারণে মানুষকে তার ভ্রষ্ট, শয়তানী স্বভাব থেকে সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করতে হবে, যাতে তার পাপী প্রবৃত্তি পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়, আর কখনো না জন্মায়, এবং যাতে মানুষের স্বভাব রূপান্তরিত হয়। এর জন্য মানুষকে জীবনে অগ্রগতির পথ অবলম্বন করতে হবে, জীবনের প্রকৃত পথ এবং নিজের স্বভাব পরিবর্তনের প্রকৃত পন্থাকে আঁকড়ে ধরতে হবে। এছাড়াও, মানুষকে এই পথের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে, যাতে তার স্বভাব ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয় এবং সে আলোক-জ্যোতির নীচে বাঁচতে পারে, যাতে তার সব কাজ ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী হয়, যাতে সে নিজের ভ্রষ্ট, শয়তানী স্বভাবকে দূর করতে পারে, এবং যাতে শয়তানের তামসিক প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে সে সম্পূর্ণরূপে পাপমুক্ত হয়। একমাত্র তখনই মানুষ সম্পূর্ণ পরিত্রাণ পাবে। যে সময়ে যীশু তাঁর কার্য নির্বাহ করছিলেন, তখন তাঁর বিষয়ে মানুষের জ্ঞান ছিল অস্পষ্ট। মানুষ চিরকাল তাঁকে দায়ূদের পুত্র ভেবে এসেছে, এবং তাঁকে একজন মহান ভাববাদী ও মানুষের ত্রাণের কাণ্ডারী এক হিতৈষী প্রভু হিসেবে বিশ্বাস করেছে। কিছু মানুষ শুধু তাদের বিশ্বাসের জোরে কেবলমাত্র তাঁর পোশাকের প্রান্তের ছোঁওয়ায় নিরাময় লাভ করেছিল। অন্ধ তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছিল, এমনকি মৃত ব্যক্তি তার প্রাণ ফিরে পেয়েছিল। তথাপি, মানুষ তার অন্তর্নিহিত ভ্রষ্ট, শয়তানী স্বভাব আবিষ্কার করতে অক্ষম ছিল, এবং জানত না, কীভাবে তা দূর করা সম্ভব। মানুষ অনেক অনুগ্রহ পেয়েছে, যেমন দৈহিক শান্তি ও আনন্দ, পরিবারের একজনের বিশ্বাসের ফলে সমগ্র পরিবারের আশীর্বাদ লাভ, রোগের নিরাময়, ইত্যাদি। বাকিগুলি ছিল মানুষের সৎ কাজ এবং ধার্মিকতার প্রকাশ; কেউ যদি এইসবের ভিত্তিতে বেঁচে থাকতে পারতো, তাহলেই তাকে একজন বিশ্বাসী হিসেবে গ্রহণ করা হত। শুধুমাত্র এই ধরনের বিশ্বাসীরাই মৃত্যুর পর স্বর্গে প্রবেশ করতে পারে, যার অর্থ তারা উদ্ধার পেয়েছে। কিন্তু জীবৎকালে এই মানুষেরা জীবনের প্রকৃত পথ বুঝতে পারে নি। তারা কেবল চক্রাকারে পাপ করেছে এবং পাপস্বীকার করেছে, কিন্তু নিজেদের স্বভাব পরিবর্তনের কোনো পথ খোঁজে নি: অনুগ্রহের যুগে এমনই ছিল মানুষের অবস্থা। মানুষ কি পরিপূর্ণ পরিত্রাণ পেয়েছে? না! অতএব, সেই কার্যের পর্যায়টি সম্পন্ন হওয়ার পরেও বিচার এবং শাস্তির কার্য বাকি রয়ে গিয়েছিল। এই পর্যায়টি হল বাক্যের দ্বারা মানুষকে পবিত্র করা, এবং তার অনুসরণের জন্য পথ দেখানো। কেবল মন্দ আত্মা তাড়ানো দিয়ে এই পর্যায়টি ফলপ্রসূ বা অর্থবহ হবে না, কারণ তা মানুষের পাপী প্রবৃত্তিকে নির্মূল করবে না, এবং মানুষ তার পাপের জন্য ক্রমাগত ক্ষমা পেতে পেতে স্থবির হয়ে পড়বে। পাপ-উৎসর্গের দ্বারা মানুষ তার পাপের ক্ষমা পেয়েছে, কারণ ক্রুশবিদ্ধকরণের কার্য সম্পন্ন হয়েছে, এবং ঈশ্বর শয়তানের উপর জয়লাভ করেছেন। কিন্তু মানুষের অন্তঃস্থিত ভ্রষ্ট স্বভাবের জন্য সে এখনো পাপ করতে পারে এবং ঈশ্বরের বিরোধিতা করতে পারে, এবং ঈশ্বর এখনো মানবজাতিকে অর্জন করেন নি। এই কারণে কার্যের এই পর্যায়ে ঈশ্বর বাক্যের দ্বারা মানুষের ভ্রষ্ট স্বভাব উন্মোচন করেন, এবং তাকে সুপথে চলতে বাধ্য করেন। এই পর্যায়টি আগের পর্যায়ের চেয়ে বেশি অর্থবহ এবং ফলপ্রসূ, কারণ এখন এই বাক্যই মানুষকে তার জীবনীশক্তি প্রদান করে, এবং তার স্বভাবকে সম্পূর্ণ নবীকরণে সাহায্য করে; এটি অনেক বেশি পুঙ্খানুপুঙ্খ কার্যের পর্যায়। অতএব, অন্তিম সময়ের অবতার ঈশ্বরের অবতার রূপের তাৎপর্য পূরণ করেছে, এবং মানুষের পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাকে সম্পন্ন করেছে।

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪)

আরও দেখুন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

Leave a Reply

শেয়ার করুন

বাতিল করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন