ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: ঈশ্বরের কাজ সম্বন্ধে জানা | উদ্ধৃতি 207

18-09-2023

আজকের যুগেও এমন কিছু মানুষ আছে যারা এখনও উপলব্ধি করতে পারছে না যে ঈশ্বর নতুন কাজের সূত্রপাত করেছেন, অইহুদি দেশগুলিতেই শুরু করেছেন তাঁর নতুন কর্মধারা। নতুন এক যুগের সূচনা এবং নতুন কাজের উদ্যোগ নিয়েছেন ঈশ্বর এবং তা তিনি সম্পন্ন করবেন মোয়াবের বংশধরদের মধ্যেই। এটা কি তাঁর নবীনতম কাজ নয়? এই ধরনের কাজ হতে ইতিহাসে কেউ কখনও দেখেনি। এমনকি, শোনেও নি, প্রশংসা করা তো দূরের কথা। ঈশ্বরের প্রজ্ঞা, বিস্ময়কর ক্ষমতা, অতলতা, মহত্ত্ব এবং পবিত্রতা সবই তাঁর এই অন্তিম সময়ের কর্ম-পর্যায়ে প্রকাশিত হবে। প্রাচীন এবং প্রথাগত ধ্যান-ধারণাগুলি ভেঙে এইগুলি কি নতুন কাজ হিসাবে অভিষিক্ত হবে না? অনেকেই আছে যাদের ধারণা হল: “মোয়াবকে ঈশ্বর অভিশাপ দিয়েছিলেন যে তার বংশধরদের তিনি পরিত্যাগ করবেন। যদি তাই হয়, তাহলে এখন তিনি কীভাবে তাদের উদ্ধার করবেন?” এরা হল সেই অইহুদি যাদেরকে ঈশ্বর অভিসম্পাত করেছিলেন এবং যারা ইসরায়েল থেকে বিতাড়িত হয়েছিল; ইসরায়েলবাসীরা তাদেরকে বলত “অইহুদি কুকুর।” প্রত্যেকেরই চোখে, এরা শুধু অইহুদি কুকুরই নয়, বরং, নিকৃষ্টতম—বিনাশের সন্তান অর্থাৎ ঈশ্বরের নির্বাচিত মানুষ নয়। ইসরায়েলের ভৌগোলিক সীমানায় জন্মালেও তারা ইসরায়েলের জনগোষ্ঠীর কেউ নয় এবং এরা বহিষ্কৃত হয়েছিল অইহুদি দেশগুলিতে। মানবজাতির মধ্যে এরা হীনতম। এই হীনতম হওয়ার কারণেই ঈশ্বর এদের মধ্যেই করবেন তাঁর নতুন যুগ সূচনার কাজ, কেননা এরাই হল ভ্রষ্ট মানবতার প্রতিনিধি। নির্দিষ্ট ও নির্বাচিত মানুষের মধ্যে এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যেই ঈশ্বরের কর্মধারা চলে। এই সব মানুষের মধ্যে ঈশ্বর আজ যে কাজ শুরু করেছেন, সেগুলিও তাঁর সৃষ্টির উপরেই বিদ্যমান। নোহ এবং তার বংশধররা ঈশ্বরেরই সৃষ্টি। রক্ত-মাংসের প্রতিটি পার্থিব প্রাণীই ঈশ্বর-সৃষ্ট। সমগ্র সৃষ্টির মধ্যেই ঈশ্বরের কর্মধারা প্রবাহিত। সৃষ্টির পরে কে অভিশপ্ত হবে বা আশীর্বাদ পাবে সে বিচার করে তাঁর সৃষ্টিকর্ম চলে না। তাঁর নির্বাচিত মানুষ অথবা যারা অভিশপ্ত নয় শুধু তাদের গণ্ডীতেই তাঁর কর্মপরিচালনা আবদ্ধ থাকে না, কারণ, তাঁর ইচ্ছা হল সর্বত্রই বিস্তৃত হোক তাঁর কর্ম-পরিধি, তাই নিশ্চিতভাবে প্রতিটি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং তিনি সেই সব মানুষের মধ্যেই কাজ করবেন, যারা তাঁর কাজের উপযোগী। তাই, প্রচলিত সব ধারণা ভেঙেই তিনি কাজ করেন, তাঁর কাছে তখন নিরর্থক হয়ে পড়ে কে “অভিশপ্ত”, কে “শাস্তিপ্রাপ্ত” আর কেই বা “আশীর্বাদধন্য”! নির্বাচিত ইসরায়েলবাসীদের মত ইহুদিরাও ভাল মানুষ; উত্তম যোগ্যতার অধিকারী এবং মানবিক গুণসম্পন্ন। আদিতে, এদের মধ্যেই অভিযান শুরু করেন যিহোবা এবং তাঁর প্রথম কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু বর্তমানে এই অভিযান তাদের মধ্যেই আবার চালানো নিরর্থক। নিঃসন্দেহে তারাও সৃষ্টির অংশ এবং বহু ইতিবাচক গুণের অধিকারী কিন্তু এই পর্যায়ের কাজ তাদের মধ্যে চালানো অর্থহীন। সমগ্র মানবগোষ্ঠীর জয় বা অনুপ্রাণিত করার কাজ ঈশ্বর এখনও সমাধা করে উঠতে পারেন নি। এবং ঠিক এই পরিস্থিতিতেই তিনি অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশের মানুষের মধ্যে কাজ করতে চাইছেন। পুরনো সব ধ্যান-ধারণা ভেঙে, তাঁরই অনুগ্রহের যুগের সব সৃষ্টির অবসান ঘটিয়ে তিনি সূচনা করতে চলেছেন নতুন এক যুগের। বর্তমানেও তিনি যদি ইসরায়েলবাসীদের মধ্যেই কাজ করতেন তাহলে তাঁর ছয় হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার মেয়াদ যখন শেষ হত, তখন সকলেই মনে করত যে তিনি শুধুমাত্র ইসরায়েলবাসীদেরই ঈশ্বর এবং তারাই ঈশ্বর-নির্বাচিত এবং তাঁর আশীর্বাদ এবং সুরক্ষার আশ্বাসের একমাত্র উত্তরাধিকারী। অন্তিম সময়ে অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশের পরজাতীয় জাতির মাঝে ঈশ্বরের অবতাররূপ ধারণ ঈশ্বরই যে সমস্ত সৃষ্টির ঈশ্বর, সেই কার্য সম্পন্ন করে। এই অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশেই তিনি তাঁর কর্মের মুখ্য অংশটি সমাধা করেন। তিন পর্বের কাজের মূল কথা হল—মানুষের পরিত্রাণ, তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিরই উপাস্য যেন হন ঈশ্বর। ফলে প্রতি পর্যায়ই গভীর অর্থবহ। নিরর্থক বা মূল্যহীন কোন কাজই তিনি করেন না। এই পর্যায়ের কাজ যেমন পূর্ববর্তী দুটি যুগের অবসান ঘটিয়ে নতুন এক যুগের সূচনা করবে তেমনই আর এক দিকে মানুষের বিশ্বাসের সব প্রাচীন ধ্যান-ধারণা এবং জ্ঞানকে ধূলিসাৎ করে দেবে। আগের দুই যুগের কাজ হয়েছিল তখনকার মানুষের বিভিন্ন ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী। তবে, এই পর্যায়ে, মানুষের চিন্তা-ভাবনা সম্পূর্ণ বর্জিত হবে এবং মানবজাতির মধ্যে প্রোথিত হবে ঈশ্বরের বিজয়-নিশান। মোয়াবের বংশধরদের মধ্যে কাজ করে এবং জয়ী হয়ে ঈশ্বর তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস গড়ে তুলেছিলেন যে এই বিশ্বের প্রতিটি মানুষকেই ঈশ্বর পরাজিত করতে পারেন এবং এটিই হল এই পর্যায়ের সুগভীর তাৎপর্য ও অমূল্য দিক। এখনও যদি মনে করো যে তোমার মর্যাদা একান্তই নগণ্য এবং তুমি নেহাতই তুচ্ছ, তবু মনে মনে বুঝবে যে বিশ্বের সবচাইতে আনন্দের ঘটনার মুখোমুখি তুমি, উত্তরসূরি হিসাবে সেই মহান আশীর্বাদে পেয়েছ ঐশী সুরক্ষার আশ্বাস এবং হতে পারো ঈশ্বরের মহান কর্ম-সম্পাদনের শরিক। ঈশ্বরের প্রকৃত রূপ তোমার কাছে দৃশ্যমান, তুমি জেনেছ তাঁর সহজাত স্বভাব এবং ঈশ্বরের ইচ্ছাই তোমার কাজ। আগের দুই পর্যায়ের কাজ ঈশ্বর করেছিলেন ইসরায়েলে। অন্তিম সময়ের এই কাজ যদি ইসরায়েলেই সম্পন্ন হত, তাহলে ঈশ্বর-সৃষ্ট সকলেই ভাবত যে একমাত্র ইসরায়েলবাসীরাই তাঁর নির্বাচিত জনগোষ্ঠী—কিন্তু তাতে ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যেত। ইসরায়েলে তাঁর দুই পর্বের কাজের সময়কালে অইহুদি দেশগুলিতে নতুন কোনও কাজের বা নতুন যুগের সূচনার আভাস ছিল না। বর্তমান পর্যায়ের কাজ অর্থাৎ নতুন যুগের সূচনা করার কাজ প্রথম শুরু হয়েছিল অইহুদি দেশগুলিতে। উপরন্তু তার সূত্রপাত হয় মোয়াবের বংশধরদের মধ্যেই এবং সূচিত হয় নতুন যুগ। মানুষের মধ্যে থাকা সমস্ত প্রাচীন ধারণা ও বিশ্বাসকে সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ এবং নিশ্চিহ্ন করে দেন তিনি, অবশিষ্ট রাখেন না কিছুই। তাঁর বিজয়কার্যের মাধ্যমে তিনি চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছেন মানুষের পূর্বধারণাসমূহ, জ্ঞান অর্জনের প্রাচীন ও পূর্বে প্রচলিত পন্থাসমূহ। তিনি মানুষকে দেখাতে চান যে ঈশ্বর-সান্নিধ্যের জন্য কোনও বিধি-নিষেধ নেই, কোনো প্রাচীনতা নেই ঈশ্বরের। তাঁর সমস্ত কাজই সম্পূর্ণ মুক্ত ও স্বাধীন এবং তিনি যে কাজই করেন তা সম্পূর্ণ সঠিক। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে তিনি যে কাজই করুন না কেন, তাতেই তুমি অবশ্যই সম্পূর্ণ সমর্পণ করবে। তাঁর সমস্ত কাজেরই একটি নির্দিষ্ট অর্থ আছে এবং তা সম্পন্ন হয় একান্তভাবেই তাঁর ইচ্ছা এবং প্রজ্ঞায়—কোনোভাবেই প্রভাবিত হয় না মানুষের পছন্দ বা ধারণায়। কোনোকিছু তাঁর কাজের পক্ষে উপকারী হলে তবেই তিনি তা করেন নতুবা নয়—তা সে যতই উত্তম কাজ হোক না কেন। তাঁর কর্মপরিকল্পনার অর্থ এবং উদ্দেশ্য অনুসারে তিনি স্থান এবং তাঁর কর্মের ফলভোগীদের নির্বাচন করেন। প্রাচীন নিয়ম নীতি ও কর্মপদ্ধতিকে তিনি আঁকড়ে রাখেন না—বরং কাজের তাৎপর্য অনুযায়ী গড়ে ওঠে তাঁর নতুন কর্মপরিকল্পনা। শেষ পর্যন্ত তাঁর পূর্ব পরিকল্পিত অভীষ্টই সিদ্ধ হয় এবং তার নিখাদ প্রভাব পড়ে। আজকের দিনেও তুমি যদি এই কথাগুলি না বুঝে থাকো, তাহলে তাঁর কাজের কোনও প্রভাবই তোমার ওপর পড়বে না।

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ঈশ্বর সকল সৃষ্টির প্রভু

আরও দেখুন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

Leave a Reply

শেয়ার করুন

বাতিল করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন