ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: ধর্মীয় ধারণা প্রকাশ করা | উদ্ধৃতি 293

08-05-2023

ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে হলে, তাঁর কাজ মানুষের মধ্যে কী প্রভাব ফেলে, এবং মানুষের জন্য তাঁর ইচ্ছা ঠিক কী: এটাই ঈশ্বর অনুগামী প্রতিটি ব্যক্তির অর্জন করা উচিত। বর্তমানে সমস্ত মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের কাজের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। ঈশ্বর মানুষের ওপর যে কাজ করেছেন, ঈশ্বরের কাজের সামগ্রিকতা, এবং বিশ্ব সৃষ্টির সময় থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত মানুষের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা ঠিক কী—এই জিনিসগুলি মানুষ জানেও না আর বোঝেও না। এই অভাব যে শুধুমাত্র ধর্মের জগতে দেখা যায় তা নয়, বরং এটা সকল ঈশ্বর-বিশ্বাসীর মধ্যেও দেখা যায়। যখন সেই দিন আসবে যেদিন তুমি সত্যিই ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করবে, যখন তুমি সত্যিই তাঁর প্রজ্ঞার প্রশংসা করবে, যখন তাঁর করা সমস্ত কাজ প্রত্যক্ষ করবে, যখন উপলব্ধি করবে ঈশ্বর কী এবং তাঁর কী আছে—যখন তুমি তাঁর প্রাচুর্য, প্রজ্ঞা, বিস্ময়করতা এবং মানুষের ওপর করা সমস্ত কাজ দেখে ফেলবে—তখনই তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে ফেলবে। যখন বলা হয় ঈশ্বর সর্বব্যাপী এবং সকল-প্রাচুর্যমণ্ডিত, তখন তিনি ঠিক কোন উপায়ে সর্বব্যাপী এবং কোন উপায়ে সকল-প্রাচুর্যমণ্ডিত হন? তুমি যদি এটা বুঝতে না পারো, তাহলে তোমাকে ঈশ্বর বিশ্বাসী হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। আমি কেন বলি যে ধর্মীয় জগতের মানুষেরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয় বরং মন্দ কর্মকারী, শয়তানের সমগোত্রীয়? আমি যখন তাদের মন্দ কর্মকারী বলি, তার কারণ এই যে, তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করতে এবং তাঁর প্রজ্ঞা দেখতে অক্ষম। ঈশ্বর কোনো সময়েই তাদের কাছে তাঁর কাজ প্রকাশ করেন না। তারা দৃষ্টিহীন; তারা ঈশ্বরের কাজ দেখতে পারে না, তারা ঈশ্বরের দ্বারা পরিত্যক্ত এবং তাদের মধ্যে ঈশ্বরের পরিচর্যা এবং সুরক্ষার সম্পূর্ণ অভাব থাকে, পবিত্র আত্মার কাজের কথা তো বলার দরকারই নেই। যাদের মধ্যে ঈশ্বরের কাজ থাকে না, তারা সকলেই মন্দ কর্মকারী এবং ঈশ্বর বিরোধী। আমি ঈশ্বর বিরোধী বলতে বোঝাই যারা ঈশ্বরকে জানে না, যারা ঈশ্বরকে মুখে স্বীকার করে তবু তাঁকে জানে না, যারা ঈশ্বরকে অনুসরণ করে তবু তাঁকে মানে না এবং যারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে আনন্দ করে তবু তাঁর সাক্ষী হিসাবে দাঁড়াতে অক্ষম। কারুর মধ্যে ঈশ্বরের কাজের উদ্দেশ্য বা ঈশ্বর মানুষের মধ্যে যে কাজ করেন সে সম্পর্কে উপলব্ধি না থাকলে, সে না পারে ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে, না পারে ঈশ্বরের সাক্ষ্য দিতে। মানুষ যে কারণে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে তা একদিকে তার ভ্রষ্ট স্বভাব এবং অপর দিকে ঈশ্বর সম্পর্কে অজ্ঞতা, এবং ঈশ্বরের কর্মনীতি ও মানুষের প্রতি তাঁর ইচ্ছা সম্পর্কে উপলব্ধির অভাব থেকে উদ্ভূত হয়। এই দুটি দিক একত্রে ঈশ্বরের প্রতি মানুষের প্রতিরোধের ইতিহাস রচনা করে। নব্য বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের বিরোধিতা করে কারণ এই ধরনের বিরোধিতা তাদের প্রকৃতির মধ্যেই নিহিত থাকে, আবার যখন বহু বছর ধরে বিশ্বাসী ব্যক্তিরা ঈশ্বরের বিরোধিতা করে, তা তাদের ভ্রষ্ট স্বভাবের পাশাপাশি ঈশ্বর সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল হিসাবে প্রতীয়মান হয়। ঈশ্বরের দেহধারণের আগে, কোনো ব্যক্তি ঈশ্বরবিরোধী কিনা তা পরিমাপের ভিত্তি ছিল সে স্বর্গের ঈশ্বর প্রণীত আজ্ঞাসমূহ পালন করছে কিনা তা দেখা। উদাহরণস্বরূপ, বিধানের যুগে যে যিহোবার বিধান পালন করত না তাকেই ঈশ্বরবিরোধী হিসাবে বিবেচনা করা হতো; যে যিহোবার উৎসর্গ চুরি করত অথবা যিহোবার দ্বারা অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরোধিতা করত তাকে ঈশ্বরবিরোধী বলা হত এবং পাথর ছুঁড়ে তাকে হত্যা করা হত; যে পিতামাতাকে সম্মান করত না অথবা যে অন্য কাউকে প্রহার করত বা অভিশাপ দিত, তাকেই আইন অমান্যকারী হিসাবে বিবেচনা করা হতো। আর যে সকল মানুষ যিহোবার আইন পালন করত না, তাদেরকেই তাঁর বিরোধিতাকারী হিসাবে ধরা হতো। কিন্তু অনুগ্রহের যুগে এমনটা আর হতো না, তখন যীশুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যে কেউ ঈশ্বরবিরোধী হিসাবে বিবেচিত হতো, এবং তাঁর কথিত বাক্য অমান্যকারীকে ঈশ্বরবিরোধী হিসাবে দেখা হতো। এই সময়ে ঈশ্বরবিরোধিতার সংজ্ঞা আরও সঠিক এবং আরও বাস্তবিক দুইই হয়ে উঠেছিল। ঈশ্বরের দেহরূপে অবতীর্ণ হওয়ার আগে, ঈশ্বরের বিরোধিতা পরিমাপের ভিত্তি ছিল মানুষ স্বর্গের অদৃশ্য ঈশ্বরের উপাসনা এবং অন্বেষণ করছে কিনা তা দেখা। সেই সময়ে ঈশ্বরের বিরোধিতার সংজ্ঞা তত ব্যবহারিক ছিল না, কারণ মানুষ ঈশ্বরকে দেখতে পেত না, বা ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি কেমন ছিল অথবা তিনি কীভাবে কাজ করেছিলেন এবং কথা বলেছিলেন, সে সবই ছিল অজানা। ঈশ্বর সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণাই ছিল না এবং সে ঈশ্বরে অনিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করত, কারণ ঈশ্বর তখনও মানুষের কাছে আবির্ভূত হন নি। তাই মানুষ কীভাবে কল্পনায় ঈশ্বরকে বিশ্বাস করত তা নির্বিশেষে, ঈশ্বর কিন্তু মানুষের নিন্দা করেন নি বা তার কাছে প্রভূত দাবি করেন নি, করণ মানুষ ঈশ্বরকে দেখতে সম্পূর্ণ অক্ষম ছিল। যখন ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করে মানুষের মাঝে কাজ করতে আসেন, সকলে তাঁকে প্রত্যক্ষ করে, তাঁর বাক্য শোনে এবং সকলেই দেহরূপে ঈশ্বরের করা কাজ দেখে। সেই মুহূর্তে মানুষদের সমস্ত পূর্বধারণাই উবে গিয়েছিল। যারা ঈশ্বরকে দেহরূপে আবির্ভূত হতে দেখেছে, তারা যদি স্বেচ্ছায় তাঁকে মান্য করে তবে তাদের নিন্দা করা হবে না, আবার যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের ঈশ্বর বিরোধী বলে গণ্য করা হবে। এই ধরনের মানুষেরা খ্রীষ্টবিরোধী, শত্রু, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করে। যারা ঈশ্বর সম্পর্কে ধারণা পোষণ করলেও তাঁকে মানতে ইচ্ছুক ও প্রস্তুত, তাদের নিন্দা করা হবে না। ঈশ্বর মানুষের অভিপ্রায় ও কর্মের ভিত্তিতে মানুষকে নিন্দিত করেন, তার চিন্তা ও ধারণার জন্য কখনোই নয়। যদি তিনি তার চিন্তা ও ধারণার ভিত্তিতে মানুষকে নিন্দিত করতেন, তবে একজন মানুষও ঈশ্বরের ক্রোধের হাত থেকে বাঁচতে পারত না। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অবতাররূপী ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদেরকে অবাধ্যতার জন্য দণ্ড দেওয়া হবে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদের বিরোধিতার প্রকৃত উৎস হল যে তারা ঈশ্বর সম্পর্কে পূর্বধারণা পোষণ করে, যা তাদের ঈশ্বরের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী কর্মে চালিত করে। এই মানুষেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঈশ্বরের কাজকে প্রতিরোধ করে এবং বিনষ্ট করে। তাদের যে শুধু ঈশ্বরের সম্পর্কে পূর্বধারণা রয়েছে তা-ই নয়, বরং তারা তাঁর কাজে ব্যাঘাতসৃষ্টিকারী কর্মেও লিপ্ত হয়, আর এই কারণেই এই ধরনের মানুষদের নিন্দিত করা হবে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের কাজে ব্যাঘাত ঘটায় না, তারা পাপী হিসাবে নিন্দিত হবে না, কারণ তারা স্বেচ্ছায় মান্য করতে সক্ষম এবং ব্যাঘাত ও অশান্তি সৃষ্টিকারী কার্যকলাপে জড়িত নেই। এই ধরনের মানুষ নিন্দিত হবে না। তবে, মানুষেরা বহু বছর ধরে ঈশ্বরের কাজ উপলব্ধি করা সত্ত্বেও, তারা যদি ঈশ্বর সম্পর্কে পূর্বধারণা পোষণ করতে থাকে এবং অবতাররূপী ঈশ্বরের কাজ জানতে অক্ষম হয়, এবং যদি তারা বহু বছর ধরে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করা সত্ত্বেও, ঈশ্বর-বিষয়ক পূর্বধারণায় পরিপূর্ণ থাকে এবং তখনও তাঁকে জানতে অক্ষম হয়, তাহলে এরপর তারা ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হলেও তাদের হৃদয় ঈশ্বর সম্পর্কে অনেক পূর্বধারণার দ্বারা পরিপূর্ণ হয়, এবং এই ধারণাগুলি প্রকাশ না পেলেও এই ধরনের মানুষেরা ঈশ্বরের কোনও কাজেই লাগে না। তারা ঈশ্বরের জন্য সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে বা তাঁর কাছে সাক্ষ্য দিতে অক্ষম। এই ধরনের ব্যক্তিরা অকেজো এবং নির্বোধ। যেহেতু তারা ঈশ্বরকে জানে না এবং তদুপরি তাঁর সম্পর্কে তাদের ধারণাগুলি ত্যাগ করতে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম, তাই তারা নিন্দিত হয়। এটা এইভাবে বলা যেতে পারে: নব্য বিশ্বাসীদের পক্ষে ঈশ্বরের বিষয়ে ধারণা পোষণ করা বা তাঁর বিষয়ে কিছুই না জানা স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু যে বহু বছর ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাস করছে এবং তাঁর কাজ-বিষয়ক বেশ কিছুটা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তার পক্ষে পূর্বধারণা পোষণ করা স্বাভাবিক হবে না এবং এই রকম ব্যক্তির ঈশ্বরের বিষয়ে কোনো ধারণা না থাকা তো আরোই অস্বাভাবিক হবে। যেহেতু এটা স্বাভাবিক অবস্থা নয়, তাই তারা নিন্দিত হয়। এই অস্বাভাবিক মানুষেরা সকলেই আবর্জনাতুল্য; তারাই সবচেয়ে বেশি ঈশ্বরের বিরোধিতা করে এবং বিনা কারণে ঈশ্বরের অনুগ্রহ উপভোগ করেছে। এমন সব মানুষদের শেষ পর্যন্ত পরিত্যাগ করা হবে!

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, যারা ঈশ্বরকে জানে না তারা সকলেই ঈশ্বরবিরোধী

আরও দেখুন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

Leave a Reply

শেয়ার করুন

বাতিল করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন