কাজ এবং প্রবেশ (৬)
কর্ম এবং প্রবেশ সহজাতভাবেই ব্যবহারিক; এরা নির্দেশ করে ঈশ্বরের কাজ এবং মানুষের প্রবেশকে। ঈশ্বরের প্রকৃত রূপ এবং তাঁর কাজের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করার বিষয়ে মানুষের সম্পূর্ণ অক্ষমতাই তার প্রবেশের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অসুবিধা সৃষ্টি করেছে। আজ পর্যন্ত, অনেকেই এখনো জানে না অন্তিম সময়ে ঈশ্বর কোন কাজ সম্পন্ন করবেন, বা ঈশ্বর সুখ-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে দেহধারণের জন্য কেন এত অসহনীয় অপমান সহ্য করেছেন। ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য থেকে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনার অভিপ্রায়, এইগুলোর বিষয়ে মানুষ সম্পূর্ণভাবে অন্ধকারে রয়েছে। বিভিন্ন কারণে, ঈশ্বর তাদের থেকে যে প্রবেশ দাবী করেন মানুষ সে বিষয়ে সর্বদা নিরুৎসাহ ও সন্দিহান[১] থেকেছে, যা দেহরূপে ঈশ্বরের কাজে সবচেয়ে বেশী অসুবিধা সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে সমস্ত মানুষই বাধা হয়ে উঠেছে, এবং আজ পর্যন্ত তারা স্পষ্ট নয়। এই কারণে, আমি মনে করি মানুষের উপর ঈশ্বর যে কাজ করেন সেই বিষয়ে এবং ঈশ্বরের জরুরী অভিপ্রায় সম্পর্কে আমাদের আলোচনা করা উচিত, যাতে তোমাদের সকলকে ঈশ্বরের বিশ্বস্ত সেবকে পরিণত করা যায়, যে ইয়োবের মতো ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যানের বদলে বরং সমস্ত অপমান সহ্য করবে, মৃত্যুবরণও করে নেবে; এবং যে পিতরের মতো নিজের সমস্ত সত্তা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করে দেবে এবং অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের অর্জিত অন্তরঙ্গ হয়ে উঠবে। আশা করি সমস্ত ভাই ও বোনেরা ঈশ্বরের স্বর্গীয় ইচ্ছার প্রতি তাদের সমস্ত কিছু প্রদান করতে পারবে ও নিজেদের সমস্ত সত্তাকে উৎসর্গ করতে পারবে, তারা ঈশ্বরের গৃহে পবিত্র সেবক হয়ে উঠতে পারবে, ঈশ্বরের অসীম প্রতিশ্রুতি উপভোগ করতে পারবে, যাতে পিতা ঈশ্বরের হৃদয় শীঘ্রই শান্তিপূর্ণ বিশ্রাম উপভোগ করতে পারে। ঈশ্বরকে যারা ভালোবাসে, তাদের সবার আদর্শ হওয়া উচিত “পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করা”। এই কথাগুলোকেই প্রবেশের ক্ষেত্রে মানুষের পথপ্রদর্শক হিসাবে ব্যবহার করা উচিত এবং তার কর্মনির্দেশক কম্পাস হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। এই সংকল্পই মানুষের মধ্যে থাকা উচিত। পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজ সম্পূর্ণ সম্পাদন করা ও ঈশ্বরের দেহরূপের কাজে সহযোগিতা করা—এটাই সেই দিন পর্যন্ত মানুষের কর্তব্য, যেদিন ঈশ্বরের কাজ পরিসমাপ্ত হবে এবং মানুষ ঈশ্বরকে আনন্দসহকারে বিদায় জানাবে কারণ তিনি স্বর্গের পিতার কাছে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করছেন। এটাই কি সেই দায়িত্ব নয় যা মানুষের পূর্ণ করা উচিত?
অনুগ্রহের যুগে যখন ঈশ্বর তৃতীয় স্বর্গে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, সেইসময় ঈশ্বরের সমস্ত মানবজাতিকে মুক্ত করার কাজ প্রকৃতপক্ষে ইতিমধ্যেই তার সর্বশেষ অংশে পৌঁছে গিয়েছিল। পৃথিবীতে শুধু রয়ে গিয়েছিল সেই ক্রুশ যা যীশু তাঁর পিঠে বহন করেছিলেন, সেই উত্তম বস্ত্রখণ্ড যার মধ্যে তাঁকে মুড়ে রাখা হয়েছিল, এবং সেই কাঁটার মুকুট ও উজ্জ্বল লাল গাউন যা যীশু পরিধান করেছিলেন (এই জিনিসগুলোর মাধ্যমেই ইহুদিরা তাঁকে ব্যঙ্গ করত)। অর্থাৎ, যীশুর ক্রুশবিদ্ধকরণের কাজের ফলে প্রচণ্ড চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ার পর সমস্তকিছু আবার থিতু হয়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই, যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছিল, সমস্ত জায়গার গির্জায় নেতৃত্বদান ও জলসিঞ্চনের কাজ। তাদের কাজের বিষয়বস্তুগুলো ছিল এইরকম: তারা সবাইকে অনুশোচনা করতে বলতো, তাদের পাপ স্বীকার করতে এবং বাপ্তিষ্ম হতে বলতো; এবং সকল প্রেরিত শিষ্যরা এগিয়ে এসেছিল যীশুর ক্রুশবিদ্ধকরণের অন্তর্নিহিত কাহিনী, তার বিশুদ্ধ বিবরণ, প্রচার করতে, এবং তাই সকলেই যীশুর সামনে তাদের পাপস্বীকার করার জন্য সাষ্টাঙ্গ না হয়ে পারেনি; এবং তাছাড়াও, প্রেরিত শিষ্যরা সমস্ত জায়গায় গিয়ে যীশুর কথিত বাক্য ছড়িয়ে দিয়েছিল। এই সময় থেকেই অনুগ্রহের যুগে গির্জা নির্মাণের সূচনা হয়েছিল। সেই যুগে যীশু যা করেছিলেন তা হচ্ছে মানুষের জীবন ও স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা নিয়েও কথা বলা। শুধুমাত্র, যেহেতু সেটা ছিল ভিন্ন যুগ, তাই সেই কথিত বাক্য ও অনুশীলনের অনেককিছুই ছিল আজকের থেকে বহুলাংশে পৃথক। অবশ্য, সারমর্মের দিক থেকে তারা একই: দুটোই সুনির্দিষ্ট এবং যথাযথরূপে ঈশ্বরের আত্মার দেহরূপেরই কাজ। এই ধরনের কাজ ও কথিত বাক্য সমস্ত সময় ধরে আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে, এবং এই কারণেই এই ধরনের বিষয়গুলো এখনও আজকের দিনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোচিত হয়, এবং তা সম্পূর্ণভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে। যখন যীশুর কাজ পরিসমাপ্ত হল এবং গির্জাগুলোও ইতিমধ্যেই যীশু খ্রীষ্টের সঠিক পথে চলে এসেছিল, তা সত্ত্বেও ঈশ্বর তাঁর কাজের আর একটা পর্যায়ের জন্য তাঁর পরিকল্পনার সূচনা করলেন, তা ছিল অন্তিম সময়ে তাঁর দেহে আবির্ভূত হওয়ার বিষয়। মানুষের চোখে, ঈশ্বরের ক্রুশবিদ্ধকরণ ইতিমধ্যেই ঈশ্বরের অবতাররূপের কাজে উপসংহার টেনে দিয়েছিল, সমস্ত মানবজাতিকে মুক্ত করে দিয়েছিল, এবং তাঁকে মৃতস্থানের চাবি আয়ত্ত করতে দিয়েছিল। সকলেই মনে করে যে ঈশ্বরের কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে, ঈশ্বরের দৃষ্টিকোণ থেকে, তাঁর কাজের শুধুমাত্র একটা ক্ষুদ্র অংশই সম্পন্ন হয়েছিল। তিনি যা করেছিলেন তার সবই ছিল মানবজাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য; তিনি মানবজাতিকে জয় করেননি, মানুষের শয়তানোচিত মুখাবয়বের পরিবর্তন করা তো ছেড়েই দিলাম। এই কারণেই ঈশ্বর বলেন, “যদিও আমার অবতাররূপী দেহ মৃত্যু যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গেছে, কিন্তু তা আমার অবতাররূপ গ্রহণের সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য ছিল না। যীশু আমার প্রিয় পুত্র এবং সে আমার জন্যই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিল, কিন্তু সে আমার কাজ সম্পূর্ণ সমাপ্ত করেনি। সে তার কিছু অংশ সম্পন্ন করেছে মাত্র।” এইজন্যে ঈশ্বর তাঁর অবতার রূপের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর পরিকল্পনার দ্বিতীয় অংশের সূচনা করেছিলেন। ঈশ্বরের চূড়ান্ত অভিপ্রায় ছিল শয়তানের থাবা থেকে উদ্ধার করা সমস্ত মানুষকে নিখুঁত করে তোলা এবং তাদের অর্জন করা, এই কারণেই ঈশ্বর আবারও একবার সাহসের সাথে দেহরূপে অবতীর্ণ হওয়ার বিপদের সম্মুখীন হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। “অবতার” বলতে এমন একজনকে বোঝায় যিনি গৌরব বহন করে আনেন না (কারণ ঈশ্বরের কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি), কিন্তু যিনি ঈশ্বরের প্রিয় পুত্রের পরিচয়ে আবির্ভূত হন, এবং যিনি খ্রীষ্ট, যাঁর প্রতি ঈশ্বর খুবই সন্তুষ্ট। এই কারণেই একে বলা হয়েছে “সাহসের সাথে বিপদের সম্মুখীন হওয়া”। এই অবতার দেহরূপ নিতান্তই ক্ষুদ্র শক্তিসম্পন্ন এবং তাঁকে অবশ্যই অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে[২], এবং তাঁর শক্তি স্বর্গস্থ পিতার কর্তৃত্বের একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। তিনি কেবল দেহরূপের সেবাব্রত পূর্ণ করেন, অন্য কাজের মধ্যে নিযুক্ত না হয়ে পিতা ঈশ্বরের কাজ ও তাঁর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করেন, এবং তিনি কাজের শুধুমাত্র একটা অংশই সম্পন্ন করেন। এই কারণেই পৃথিবীতে আগমনের সাথে সাথেই তাঁকে “খ্রীষ্ট” নামে অভিহিত করা হয়েছিল—এটাই হল এই নামের নিহিত অর্থ। যে কারণে বলা হয় যে এই আগমন প্রলোভনকে সঙ্গী করে আনে তা হল, কাজের শুধুমাত্র একটা অংশই সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। এছাড়াও, যে কারণে পিতা ঈশ্বর তাঁকে “খ্রীষ্ট” এবং “প্রিয় পুত্র” নামে অভিহিত করলেও তাঁকে সমস্ত মহিমা অর্পণ করেননি, সুনির্দিষ্টভাবে সেই কারণ হল যে এই দেহরূপী অবতার কাজের শুধুমাত্র একটা অংশ সম্পাদনের জন্যেই এসেছেন; স্বর্গস্থ পিতার প্রতিনিধিত্ব করতে নয়, বরং তাঁর প্রিয় পুত্রের সেবাব্রত পূরণ করতে এসেছেন। যখন প্রিয় পুত্র নিজের কাঁধে নেওয়া সমস্ত অর্পিত দায়িত্ব পূরণ করবেন, তখন পিতা তাঁকে সম্পূর্ণ মহিমার পাশাপাশি পিতার পরিচয়ও প্রদান করবেন। কেউ বলতে পারে যে এটাই “স্বর্গের নিয়ম”। যেহেতু দেহরূপে যিনি এসেছেন, এবং স্বর্গস্থ পিতা, এই দুজন ভিন্ন দুই জগতে রয়েছেন, তাই তাঁরা দুজন কেবল আত্মায় একে অপরের দিকে চেয়ে আছেন, স্বর্গস্থ পিতা তাঁর প্রিয় পুত্রের উপর নজর রেখেছেন কিন্তু পুত্র দূর থেকে পিতাকে দেখতে পারছেন না। যেহেতু দেহরূপ যে কর্মসম্পাদনে সমর্থ তা অত্যন্ত নগণ্য এবং যে কোনো মুহূর্তে তাঁর নিহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই বলা যেতে পারে যে তাঁর এই দেহরূপে আগমন চূড়ান্ত বিপদে পরিপূর্ণ। যেখানে শয়তান সবচেয়ে বেশী কেন্দ্রীভূত সেইখানে প্রিয় পুত্রকে স্থাপন করা, এটা ঈশ্বরের তাঁর প্রিয় পুত্রকে আরও একবার বাঘের থাবার সামনে ছেড়ে দেওয়ার সমতুল্য, যেখানে তাঁর জীবন বিপদসংকুল। এই ভয়ানক পরিস্থিতিতেও, ঈশ্বর তাঁর প্রিয় পুত্রকে কলুষতা ও অনৈতিকতায় পূর্ণ এক স্থানের মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁকে “প্রাপ্তবয়স্ক করে তোলার জন্য”। এর কারণ হল, ঈশ্বরের কাজ সঙ্গত ও স্বাভাবিক মনে করানোর এটাই একমাত্র উপায়, এবং পিতা ঈশ্বরের সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ করার ও মানবজাতির মধ্যে তাঁর কাজের শেষ অংশ সম্পূর্ণ করার এটাই একমাত্র উপায়। পিতা ঈশ্বরের কাজের একটা পর্যায় সম্পন্ন করা ছাড়া যীশু আর কিছু করেননি। অবতাররূপের দেহ আরোপিত সীমাবদ্ধতা এবং যে কাজ সম্পন্ন করতে হবে তার ভিন্নতার কারণে, যীশু নিজেও জানতেন না যে দেহরূপে দ্বিতীয় প্রত্যাবর্তনও করতে হবে। সুতরাং কোনো বাইবেল ব্যাখ্যাকর্তা বা কোনো নবীই স্পষ্টভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণী করার সাহস করেনি যে অন্তিম সময়ে ঈশ্বর আবার অবতার রূপ পরিগ্রহ করবেন, অর্থাৎ তিনি দেহরূপে তাঁর কাজের দ্বিতীয় অংশ সম্পন্ন করার জন্য আবার দেহে আবির্ভূত হবেন। এই কারণেই কেউ বুঝতে পারেনি যে ইতিমধ্যে অনেক আগে থেকেই ঈশ্বর নিজেকে দেহরূপে আড়াল করে রেখেছেন। এতে খুব আশ্চর্যের কিছু নেই, কারণ যেহেতু যীশু শুধুমাত্র তাঁর পুনরুত্থান ও স্বর্গে উন্নীত হওয়ার পরেই তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, অতএব ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতাররূপ পরিগ্রহের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী নেই, এবং তা মানুষের মস্তিষ্কের কাছে অগম্য। বাইবেলের এতগুলো ভবিষ্যদ্বাণীর গ্রন্থের কোনোটাতেই এমন একটা শব্দও নেই যেখানে এটা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ যীশু যখন কর্ম সম্পাদনের জন্য এসেছিলেন, তখন আগে থেকেই একটা স্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যে একজন কুমারী মেয়ে গর্ভবতী হবে এবং এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে, যার অর্থ হল তিনি পবিত্র আত্মার মাধ্যমে গর্ভে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর তবুও বলেছিলেন যে এতে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে, তাহলে বর্তমানে এই ঘটনা ঘটলে বিপদ কতটাই না বেশি হবে? এতে আশ্চর্যের কিছু নেই যে ঈশ্বর বলেছেন এই অবতাররূপ যে পরিমাণ বিপদের সম্মুখীন, তা অনুগ্রহের যুগের বিপদের তুলনায় হাজার গুণ বেশি। বিভিন্ন স্থানে ঈশ্বর ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে তিনি আসোয়ানের ভূমিতে একদল বিজয়ীকে অর্জন করবেন। যেহেতু পৃথিবীর পূর্বে অবস্থিত এই স্থানেই বিজয়ীদের অর্জন করতে হবে, সুতরাং ঈশ্বর তাঁর দ্বিতীয় অবতার রূপে যেখানে পদার্পণ করবেন তা নিঃসন্দেহে আসোয়ানের ভূমিই হবে, ঠিক যেখানে অতিকায় লাল ড্রাগন কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে। সেখানে, ঈশ্বর অতিকায় লাল ড্রাগনের বংশধরদের অর্জন করবেন যাতে সে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত ও লজ্জিত হয়। ঈশ্বর জাগ্রত করতে চলেছেন এই সমস্ত মানুষকে যারা কষ্টভোগের ভারে ভারগ্রস্ত, যাতে তাদের জাগিয়ে তোলা যায় যতক্ষণ না তারা সম্পূর্ণভাবে সজাগ হচ্ছে, এবং যাতে তাদের কুয়াশা থেকে বার করে আনা যায় এবং তাদের দিয়ে অতিকায় লাল ড্রাগনকে পরিত্যাগ করানো যায়। তারা তাদের স্বপ্ন থেকে জেগে উঠবে, অতিকায় লাল ড্রাগনের উপাদান চিনতে পারবে, ঈশ্বরকে তাদের সম্পূর্ণ হৃদয় নিবেদন করতে সক্ষম হয়ে উঠবে, অন্ধকার শক্তির নিপীড়ন থেকে জেগে উঠবে, পৃথিবীর পূর্বদিকে উঠে দাঁড়াবে, এবং ঈশ্বরের জয়ের প্রমাণ হয়ে উঠবে। একমাত্র এই উপায়েই ঈশ্বর তাঁর মহিমা অর্জন করবেন। একমাত্র এই কারণে, ইসরায়েলে যে কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল তাকে ঈশ্বর সেই ভূমিতে নিয়ে এসেছেন যেখানে অতিকায় লাল ড্রাগন কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকে, এবং প্রস্থানের প্রায় দু’হাজার বছর পরে আরো একবার তিনি দেহে আবির্ভূত হয়েছেন অনুগ্রহের যুগের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মানুষ খালি চোখে যা দেখে তা হচ্ছে ঈশ্বর দেহরূপে নতুন কাজ শুরু করছেন। কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গিতে, তিনি অনুগ্রহের যুগের কাজই চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু শুধুমাত্র কয়েক হাজার বছরের ব্যবধানে, এবং তাঁর কাজের স্থান ও পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন এনে। যদিও বর্তমানের কাজে দেহরূপের শরীর যে প্রতিমূর্তি ধারণ করেছে তা যীশুর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে মনে হয়, কিন্তু একই সারমর্ম ও একই মূল থেকেই তাঁরা উদ্ভূত, এবং তাঁরা একই উৎস থেকেই এসেছেন। বাহ্যিকভাবে তাঁদের হয়তো অনেক পার্থক্য আছে, কিন্তু তাঁদের কাজের অভ্যন্তরীণ সত্য একেবারে অভিন্ন। আসলে, এই যুগগুলো দিন ও রাতের মতোই আলাদা। তাহলে ঈশ্বরের কাজে কীভাবে একই অপরিবর্তিত প্রক্রিয়া অনুসৃত হবে? বা তাঁর কাজের বিভিন্ন পর্যায় কীভাবে একে অপরের পথে আসবে?
যীশু একজন ইহুদির রূপ পরিগ্রহ করেছিলেন, ইহুদিদের পোশাক পরেছিলেন, ইহুদিদের খাদ্যাভ্যাসেই বড় হয়েছিলেন। এটা তাঁর স্বাভাবিক মনুষ্যোচিত দিক। কিন্তু বর্তমানের দেহরূপ ধারণ করা অবতার এশিয়াবাসী এক নাগরিকের চেহারা নিয়েছেন এবং অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশে বড় হয়েছেন। এইগুলো কোনোভাবেই ঈশ্বরের অবতারের অভিপ্রায়ের বিরোধী নয়। বরং, তারা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠে ঈশ্বরের অবতাররূপ পরিগ্রহণের প্রকৃত তাৎপর্যকে সম্পূর্ণতর পরিপূর্ণতা এনে দেয়। দেহরূপী অবতারকে “মানবপুত্র” বা “খ্রীষ্ট” নামে উল্লেখ করা হয় বলেই বর্তমানের খ্রীষ্টের বহিরাবরণকে যীশু খ্রীষ্টের মতো সেই একই নামে অভিহিত করা যাবে না। সর্বোপরি, এই দেহরূপকে “মানবপুত্র” বলা হয় এবং তিনি এক দেহরূপী শরীরের প্রতিমূর্তিতে রয়েছেন। ঈশ্বরের কাজের প্রতিটি পর্যায়ে যথেষ্ট পরিমাণে গভীর কিছু অর্থ থাকে। যীশু পবিত্র আত্মার মাধ্যমে গর্ভে অবতীর্ণ হয়েছিলেন কারণ তাঁকে পাপীদের মুক্ত করতে হতো। তাঁকে পাপমুক্ত থাকতেই হত। কিন্তু শুধুমাত্র একেবারে শেষে, যখন তাঁকে পাপী দেহের মতো হয়ে উঠতে এবং পাপীদের পাপ গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল, তখন তিনি তাদের অভিশপ্ত ক্রুশ থেকে উদ্ধার করেছিলেন, সেই ক্রুশ, যার মাধ্যমে ঈশ্বর মানবজাতিকে শাস্তি দিয়েছিলেন। (এই ক্রুশ মানবজাতিকে অভিশাপ ও শাস্তি দেওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাধনী; যেখানেই অভিশাপ ও শাস্তিপ্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়, তা নির্দিষ্টভাবে পাপীদের নির্দেশ করে।) এর উদ্দেশ্য ছিল, যাতে সকল পাপীরা অনুশোচনা করতে পারে, এবং ক্রুশবিদ্ধকরণের মাধ্যমে, তাদের পাপ স্বীকার করানো যায়। অর্থাৎ, সমগ্র মানবজাতিকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে, ঈশ্বর রক্তমাংসের শরীরে অবতাররূপ ধারণ করেছিলেন, যিনি পবিত্র আত্মার দ্বারা গর্ভে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপর ধারণ করেছিলেন। দৈনন্দিন জীবনের ভাষায় বর্ণনা দিলে, তিনি সমস্ত পাপীর বিনিময়ে একটা পবিত্র দেহ উৎসর্গ করেছিলেন, যা কিনা যীশুকে শয়তানের সামনে “পাপস্খালনের বলি” হিসাবে উপস্থাপিত করার মাধ্যমে শয়তানের পদদলিত করা অপাপবিদ্ধ মানবজাতিকে ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তার সামনে “মিনতি করার” সমতুল্য। এই কারণেই মুক্তির কাজের এই পর্যায় সম্পাদন করার জন্য পবিত্র আত্মার দ্বারা গর্ভধারণ প্রয়োজনীয় ছিল। এটা ছিল পিতা ঈশ্বর এবং শয়তানের মধ্যকার যুদ্ধের একটা প্রয়োজনীয় শর্ত, একটা “শান্তি চুক্তি”। এই কারণেই শুধুমাত্র যীশুকে শয়তানের হাতে তুলে দেওয়ার পরেই এই পর্যায়ের কাজ পরিসমাপ্ত হয়েছিল। যাই হোক, ঈশ্বরের মুক্তির কাজ বর্তমানে এক অভূতপূর্ব মহত্ত্বের মাত্রা অর্জন করেছে, এবং শয়তানের কাছে দাবী করার মতো আর কোনো অজুহাত নেই, তাই অবতার রূপ পরিগ্রহণের জন্য ঈশ্বরের আর প্রয়োজন নেই পবিত্র আত্মার দ্বারা গর্ভে অবতীর্ণ হওয়ার। যেহেতু ঈশ্বর সহজাতভাবেই পবিত্র এবং অপাপবিদ্ধ, তাই ঈশ্বর এই অবতাররূপে আর অনুগ্রহের যুগের যীশু নেই। তাহলেও, তিনি তবুও অবতাররূপ গ্রহণ করছেন পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছার স্বার্থে এবং তাঁর অভিপ্রায়কে সম্পূর্ণ করার জন্য। নিশ্চিতভাবেই এটা বিষয়গুলোকে ব্যাখ্যা করার কোনো অযৌক্তিক উপায় নয়? ঈশ্বরের অবতারকে কি কিছু প্রদত্ত নিয়মাবলী মেনে চলতেই হবে?
বহু মানুষ ঈশ্বরের অবতার রূপ পরিগ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী খুঁজে পাওয়ার আশায় বাইবেলের মধ্যে প্রমাণ খোঁজে। মানুষ তার বিভ্রান্ত ও অসংলগ্ন ভাবনাচিন্তা নিয়ে কীভাবে একথা জানবে যে ঈশ্বর বহু পূর্বেই বাইবেলের অভ্যন্তরে “কাজ করা” বন্ধ করে দিয়েছেন, এবং যেসব কাজ তিনি অনেকদিন ধরেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন কিন্তু মানুষকে কখনো জানাননি, তার দায়িত্ব গ্রহণ করার প্রবৃত্তি ও উদ্যম নিয়ে বাইবেলের সীমানা “অতিক্রম” করে গেছেন? মানুষের মধ্যে বোধের বড়ই অভাব। ঈশ্বরের স্বভাবের সামান্যতম স্বাদ পাওয়ার পরেই তারা মঞ্চে উঠে পড়ে এবং সম্পূর্ণ নির্বিকারভাবে ঈশ্বরের কাজের পরিদর্শন করার জন্য উচ্চমানের “হুইলচেয়ারে” বসে পড়ে, এমনকি তারা এতদূর চলে যায় যে দুনিয়ার সমস্তকিছু নিয়েই আড়ম্বরপূর্ণ ও এলোমেলো কথা বলে তারা ঈশ্বরকে শিক্ষা দিতেও শুরু করে। এরকম অনেক “প্রবীণ ব্যক্তি” মোটা চশমা পরে, দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে সেই “পুরনো পাঁজি” র (বাইবেল) হলুদ হয়ে যাওয়া পাতাগুলো খোলে, যেগুলো সে সারাজীবন ধরে পড়ে আসছে। বিড়বিড় উচ্চারণ এবং উদ্দীপনায় জ্বলে ওঠা চোখ নিয়ে সে একবার প্রকাশিত বাক্যের বইয়ের দিকে ফেরে, একবার দানিয়েলের বইয়ের দিকে, এবং একবার যিশাইয়ের বইয়ের দিকে ধাবিত হয়, যেগুলো সকলের খুবই সুপরিচিত। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শব্দে পরিপূর্ণ পাতার পর পাতার দিকে সে তাকিয়ে নিঃশব্দে পড়তে থাকে, তার মস্তিষ্ক নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে। হঠাৎ সে দাড়িতে হাত বোলানো বন্ধ করে দাড়িগুলো টানতে শুরু করে। মাঝে মাঝে কেউ দাঁড়ি ছেঁড়ার শব্দ শুনতে পায়। এই অস্বাভাবিক আচরণে কেউ বিস্মিত হয়ে পড়ে। “এত বল প্রয়োগ কেন? ও কী ব্যাপারে এত পাগলামো করছে?” ওই বৃদ্ধ মানুষটার দিকে আর একবার তাকালে আমরা দেখি তার ভ্রূ এখন ক্রোধ প্রকাশ করছে। তার রূপালী হয়ে যাওয়া ভ্রূ-এর চুলগুলি রাজহংসীর পালকের মতো ঠিক তার চোখের পাতা থেকে দুই সেন্টিমিটার উপরে নুইয়ে পড়েছে, যেন তা আকস্মিকভাবে হয়েছে কিন্তু তাহলেও সেটা নিখুঁত, সেই বয়স্ক মানুষটা তার চোখ সেই বইয়ের পাতায় এমনভাবে আটকে রেখেছে যেন সেই পাতাগুলোয় ছত্রাক জমেছে। একই পৃষ্ঠা বারংবার পড়ার পর সে লাফিয়ে ওঠে এবং কারো সাথে সামান্য কথা[৩] বলার মতো বিড়বিড় করতে থাকে, যদিও তার চোখের দ্যুতি পঞ্জিকা থেকে সরেনি। হঠাৎই সে পাতা উল্টে “অন্য জগতে” চলে যায়। তার নড়াচড়া এতই ব্যস্তসমস্ত[৪] ও ভীতিপ্রদ যে মানুষকে তা প্রায় আশ্চর্য করে তোলে। সে যখন নীরব ছিল, তখন যে ইঁদুরটা গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছিল আর স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে ভেবে সবে স্বস্তি বোধ করতে শুরু করেছিল, হঠাৎ করেই এখন এই অপ্রত্যাশিত নড়াচড়ায় এতটাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে যে দ্রুত দৌড়ে আবার গর্তে ঢুকে যায় এবং একখণ্ড ধোঁয়ার মতো অদৃশ্য হয়ে যায়, যাতে আর তাকে দেখতে না পাওয়া যায়। এবং এবার ওই বৃদ্ধের বাম হাত তার দাড়িতে হাত-বোলানোর যে গতিবিধি ক্ষণিকের জন্য স্থগিত করেছিল তা আবার শুরু করে, উপর-নিচ, উপর-নিচ। সে তার আসন ছেড়ে সরে যায়, বইটা পড়ে থাকে ডেস্কের উপর। দরজার ফাটল আর খোলা জানলা দিয়ে বাতাস ভেতরে এসে বইটাকে নির্দয়ভাবে বন্ধ করে দিচ্ছিল, তারপর আবার খুলে দিচ্ছিল। এই দৃশ্যের মধ্যে রয়েছে এক অব্যক্ত অসহায়তা, এবং ঝোড়ো বাতাসে বইয়ের খড়খড় শব্দ ছাড়া, সমস্ত সৃষ্টি যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে মনে হচ্ছিল। সে তার হাতদুটো পিছনে নিয়ে তার ঘরে পায়চারি করছিল, এই থামছে, এই আবার শুরু করছে, মাঝেমধ্যে মাথা নাড়াচ্ছে, আর তার মুখ থেকে বারবার একই কথা বেরিয়ে আসছে, “ওহ! ঈশ্বর! তুমি কি সত্যিই এটা করবে?” মাঝেমাঝে মাথা নাড়িয়ে নাড়িয়ে এ কথাও বলছে, “হে ঈশ্বর! কে তোমার কাজ অনুধাবন করতে পারে? তোমার পদচিহ্ন খোঁজা কি খুবই কঠিন নয়? আমি বিশ্বাস করি যে যথেষ্ট কারণ ছাড়া তুমি এমন কিছু করো না যাতে সমস্যার সৃষ্টি হয়।” এই মুহূর্তে, এই বৃদ্ধ মানুষটা তার ভ্রূদুটো জোড়া করে চোখ কুঁচকে বন্ধ করে, একটা বিব্রত অবস্থা প্রদর্শন করে, এবং একটা যন্ত্রণাদায়ক অভিব্যক্তিও প্রকাশ করে, যেন সে এখন একটা ধীর এবং সুচিন্তিত গণনা করতে চলেছে। বেচারা বৃদ্ধ মানুষটা! সারাজীবন কাটিয়ে তারপর “দুর্ভাগ্যক্রমে” এমন অন্তিম সময়ে এই বিষয়ে এসে পড়া। এ নিয়ে কী করা যেতে পারে? আমিও বিভ্রান্ত, এবং এ বিষয়ে কিছু করার ক্ষমতাহীন। এই যে তার পুরোনো পঞ্জিকা সময়ের সাথে সাথে হলুদ হয়ে যাচ্ছে এর জন্য কাকে দোষারোপ করা যায়? তার দাড়ি এবং ভ্রুযুগল যে নিরলসভাবে সাদা বরফের মতো তার মুখের বিভিন্ন অংশ ঢেকে ফেলছে, সেই দোষ কাকে দেওয়া যায়? বিষয়টা এমন যেন তার দাড়ির কেশরাশি তার প্রবীণত্বের প্রতিনিধিত্ব করছে। এরপরেও কে জানত যে মানুষ এত মাত্রায় মূর্খ হয়ে উঠতে পারে যে সে পুরাতন এক পঞ্জিকায় ঈশ্বরের উপস্থিতির খোঁজ করতে পারে? একটা পুরাতন পঞ্জিকায় কতগুলো পৃষ্ঠা থাকতে পারে? তা কি সত্যিই সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে ঈশ্বরের সমস্ত কর্ম লিপিবদ্ধ করতে পারে? কার দুঃসাহস আছে সেই নিশ্চয়তা দেওয়ার? তবুও মানুষ শব্দগুলোর ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে আর চুল চেরা বিশ্লেষণের[৫] মাধ্যমে ঈশ্বরের আবির্ভাবের সন্ধান করার ও ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণ করার কথা সত্যিসত্যিই ভাবে, আশা করে এইভাবে জীবনে প্রবেশ করবে। এইভাবে জীবনে প্রবেশ করা কি শুনতে যতটা সহজ মনে হয় ততটাই সহজ? এটা কি একটা ভুল বিবেচনা নয় যা সবচাইতে যুক্তিহীনভাবে ভ্রান্ত? তোমার কি মনে হয় না এটা খুবই হাস্যকর?
পাদটীকা:
১. “সন্দিহান” বলতে বোঝানো হয়েছে যে ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে মানুষের স্বচ্ছ অন্তর্দৃষ্টি নেই।
২. “নিতান্তই ক্ষুদ্র শক্তিসম্পন্ন এবং তাঁকে অবশ্যই অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে” এটা ইঙ্গিত করে যে দেহরূপের সমস্যা প্রভূত, এবং সম্পাদিত কার্য খুবই সামান্য।
৩. “সামান্য কথা” হল ঈশ্বরের কাজ নিয়ে গবেষণা করার সময়ে মানুষজনের কদর্য রূপের একটা রূপক।
৪. সেই “বৃদ্ধ ব্যক্তি” যখন বাইবেলের উল্লেখ করে, তার তখনকার উদগ্রীব, দ্রুত গতিবিধিকে “ব্যস্তসমস্ত” বলা হয়েছে।
৫. “শব্দগুলোর ব্যাখ্যা আর চুলচেরা বিশ্লেষণ” কথাটা ব্যবহার করা হয়েছে সেইসব ভ্রান্ত ধারণার বিশেষজ্ঞদের ব্যঙ্গ করার জন্য, যারা শব্দের চুল চেরা বিশ্লেষণ করে, কিন্তু সত্যের সন্ধান করে না বা পবিত্র আত্মার কাজের বিষয়ে জানে না।