ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: কর্মের তিনটি পর্যায় | উদ্ধৃতি 27

19-09-2023

অন্তিম সময়ের কার্যে প্রতীক এবং বিস্ময়ের প্রকাশের চেয়ে বাক্য বেশি শক্তিশালী, এবং বাক্যের ক্ষমতা প্রতীক এবং বিস্ময়কে ছাড়িয়ে যায়। সেই বাক্য মানুষের হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা ভ্রষ্ট স্বভাবগুলিকে উন্মোচিত করে। সেগুলিকে নিজে নিজে চিনে নেওয়ার কোনো উপায় তোমার নেই। যখন সেগুলি বাক্যের দ্বারা তোমার সম্মুখে খোলাখুলি ভাবে রাখা হবে, তখন তুমি স্বাভাবিকভাবেই সেগুলিকে আবিষ্কার করতে পারবে; তুমি সেগুলিকে অস্বীকার করতে পারবে না, এবং তুমি পুরোপুরি নিশ্চিত হবে। এটিই কি বাক্যের ক্ষমতা নয়? আজ বাক্যের দ্বারা যে কার্য সম্পাদিত হচ্ছে, এটা তারই ফলাফল। অতএব, রোগ নিরাময় বা মন্দ আত্মা তাড়ানোর মধ্যে মানুষ পাপ থেকে উদ্ধার পায় না, বা প্রতীক ও বিস্ময়ের প্রকাশের দ্বারাও তাকে পরিপূর্ণ করা যায় না। রোগ নিরাময় বা মন্দ আত্মা বিতাড়নের ক্ষমতা মানুষকে কেবল অনুগ্রহ প্রদান করে, কিন্তু মানুষের শরীর তারপরেও শয়তানের আওতায় থাকে, এবং শয়তানের ভ্রষ্ট স্বভাব মানুষের মধ্যে থেকে যায়। অন্যভাবে বললে, যা পরিশুদ্ধ হয় নি, তা এখনো পাপ এবং কলুষতার সঙ্গে সম্পর্কিত। একমাত্র বাক্যের সাহায্যে পরিশোধনের পরেই মানুষ ঈশ্বরের দ্বারা গৃহীত এবং পবিত্র হতে পারে। মানুষের অন্তর থেকে যখন মন্দ আত্মা তাড়ানো হয়েছিল এবং সে মুক্তিলাভ করেছিল, তার অর্থ ছিল এই যে, সে শয়তানের হাত থেকে ছিন্ন হয়ে ঈশ্বরের কাছে ফিরে গিয়েছিল। তথাপি, ঈশ্বরের দ্বারা পরিশুদ্ধ বা পরিবর্তিত না হওয়া অবধি সে একজন ভ্রষ্ট মানুষ। তার মধ্যে এখনো কলুষতা, বিরোধিতা এবং বিদ্রোহ রয়েছে; মানুষ মুক্তিলাভের মাধ্যমে কেবল ঈশ্বরের কাছে ফিরে গিয়েছে, কিন্তু এখনো ঈশ্বরের বিষয়ে তার ন্যূনতম ধারণা নেই, এবং সে এখনও তাঁর বিরোধিতা ও বিদ্রোহ করতে সক্ষম। মুক্তিলাভের পূর্বে শয়তানের অনেক বিষ ইতিমধ্যেই মানুষের মধ্যে রোপণ করা হয়েছিল, এবং হাজার হাজার বছর ধরে শয়তানের দ্বারা কলুষিত হওয়ার পর তার মধ্যে এক ঈশ্বরবিরোধী চরিত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। অতএব, মানুষ যখন মুক্তিলাভ করে, তা যেন সামান্য মুক্তিলাভ ছাড়া কিছুই নয়, যেখানে তাকে উচ্চ মূল্যে ক্রয় করা হয়, কিন্তু তার বিষাক্ত চরিত্র নির্মূল হয় নি। যে মানুষ এত অপবিত্র, ঈশ্বরের সেবা করার যোগ্য হওয়ার আগে তাকে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এই বিচার এবং শাস্তিদানের কার্যের মাধ্যমে মানুষ নিজের অন্তরের কলুষিত এবং ভ্রষ্ট সত্তার পূর্ণ পরিচয় পাবে, এবং সে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত ও পবিত্র হতে পারবে। একমাত্র এই উপায়েই মানুষ ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে প্রত্যাবর্তনের যোগ্য হয়ে উঠবে। এই দিনে যা কার্য সম্পাদিত হয়, তা সকলই হল মানুষ যাতে পবিত্র এবং পরিবর্তিত হতে পারে, তার জন্য; বাক্য দ্বারা বিচার এবং শাস্তির মাধ্যমে, এমনকি শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে মানুষ যাতে কলুষতা দূর করে পবিত্র হতে পারে। একে পরিত্রাণের কার্য হিসেবে গণ্য না করে বরং শুদ্ধিকরণের কার্য বললে বেশি যথার্থ হবে। আসলে, এই পর্যায়টি হল বিজয়লাভের, এবং পরিত্রাণের কার্যের দ্বিতীয় পর্যায়। মানুষ বাক্য দ্বারা বিচার এবং শাস্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের দ্বারা লব্ধ হতে উপনীত হয়, এবং বাক্যের দ্বারামানুষের হৃদয়ের অন্তর্নিহিত অশুদ্ধতা, ধারণা, উদ্দেশ্য, এবং স্বতন্ত্র আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধি, বিচার এবং প্রকাশ করেন। মানুষ যে কারণে এখনো অবধি পাপের ক্ষমা বা মুক্তি পেয়েছে, বলা যায়, ঈশ্বর তার অপরাধ মনে রাখেন নি, এবং সেই অপরাধ অনুযায়ী মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করেন নি। তথাপি, একজন রক্ত-মাংসের মানুষ যতক্ষণ না তার পাপ থেকে মুক্ত হচ্ছে, ততক্ষণ সে অবিরাম তার ভ্রষ্ট, শয়তানের স্বভাব প্রকাশ করে পাপ করে যেতে পারে। মানুষ পাপ এবং ক্ষমার এই অবিরাম চক্রে জীবনযাপন করে চলে। মানবজাতির অধিকাংশই সকালে পাপ করে সন্ধ্যায় তা স্বীকার করে নেয়। অতএব, এই পাপ-উৎসর্গ মানুষের জন্য সর্বদা সক্রিয় থাকলেও, তা মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারে না। এখনও অবধি পরিত্রাণের কার্যের কেবল অর্ধমাত্রই সম্পন্ন হয়েছে, কারণ মানুষের মধ্যে এখনো ভ্রষ্ট স্বভাব রয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, মানুষজন যখন জানতে পেরেছিল যে তারা মোয়াব থেকে এসেছে, তখন তারা অভিযোগ জানিয়েছিল, জীবনযাপনে বিরূপ হয়ে পড়েছিল, এবং অত্যন্ত নেতিবাচক হয়ে উঠেছিল। এটি কি দেখায় না যে, মানুষ এখনো ঈশ্বরের রাজত্বে আত্মসমর্পণ করতে অক্ষম? এটিই কি বিশেষভাবে তাদের ভ্রষ্ট, শয়তানের স্বভাব নয়? তুমি যখন শাস্তি পাও নি, তখন তোমার হাত সবার চেয়ে উপরে তোলা থাকত, এমনকি যীশুর চেয়েও উপরে। এবং তুমি উচ্চস্বরে বলেছিলে: “ঈশ্বরের প্রিয় পুত্র হও! ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ হও! শয়তানের কাছে মাথা নত করার চেয়ে আমরা মৃত্যুবরণ করব! প্রাচীন শয়তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কর! অতিকায় লাল ড্রাগনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কর! অতিকায় লাল ড্রাগন যেন তার ক্ষমতা থেকে নিকৃষ্টভাবে পতিত হয়! ঈশ্বর আমাদের পরিপূর্ণ করুন!” তোমার চিৎকার সকলের চেয়ে জোরে ছিল। কিন্তু এরপর যখন শাস্তির সময় এলো, তখন মানুষের ভ্রষ্ট স্বভাব প্রকাশিত হল। তখন তাদের চিৎকার বন্ধ হল এবং অঙ্গীকার ব্যর্থ হল। এই হল মানুষের ভ্রষ্টাচরণ; এটি পাপের চেয়েও নিকৃষ্ট, যা শয়তান দ্বারা রোপিত এবং মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল। নিজের পাপের বিষয়ে অবগত হওয়া মানুষের জন্য খুব সহজ নয়; তার নিজের বদ্ধমূল চরিত্র চিনতে পারার কোনো উপায় মানুষের জানা নেই, এবং এই জ্ঞান লাভের জন্য তাকে বাক্যের বিচারের উপর নির্ভর করতেই হয়। একমাত্র তখনই সেই মুহূর্ত থেকে মানুষ ধীরে ধীরে পরিবর্তনের পথে এগোতে পারে। অতীতে মানুষ চিৎকার করেছিল কারণ তার নিজের ভ্রষ্ট স্বভাবের বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না। এগুলিই হল মানুষের অন্তঃস্থিত অশুদ্ধতা। মানুষ এই বিচার এবং শাস্তির দীর্ঘ সময়কাল ধরে উদ্বেগের বাতাবরণের মধ্যে ছিল। এগুলির সবই কি বাক্যের দ্বারা অর্জিত ছিল না? সেবাপ্রদানকারীদের বিচারের আগে তুমিও কি উচ্চস্বরে চিৎকার করো নি? “রাজ্যে প্রবেশ করো! যারা এই নাম গ্রহণ করবে, তারা সকলেই রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে! সকলেই ঈশ্বরের শরিক হও!” যখন সেবাপ্রদানকারীদের বিচারের সময় এল, তখন তুমি আর চিৎকার করলে না। একদম শুরুতে সকলেই চিৎকার করেছিল, “হে ঈশ্বর! আপনি আমাকে যেখানেই প্রেরণ করুন, আমি আপনার দ্বারা চালিত হওয়ার জন্য আত্মসমর্পণ করব।” এরপর ঈশ্বরের বাক্য “কে আমার পৌল হবে?” পরে মানুষজন বলেছিল, “আমি রাজি!” এরপর তারা “এবং ইয়োবের বিশ্বাসের কী হবে?” এই বাক্য পড়ে বলেছিল, “আমি নিজের উপর ইয়োবের বিশ্বাসের ভার নিতে রাজি। ঈশ্বর, দয়া করে আমার পরীক্ষা নিন!” এরপর যখন সেবাপ্রদানকারীদের বিচার এল, তখন তারা তৎক্ষণাৎ ভেঙে পড়ল, এবং আর প্রায় দাঁড়াতেই পারল না। এরপর, খুব ধীরে ধীরে তাদের হৃদয়ের অশুদ্ধতা দূর হতে থাকল। এটি কি বাক্য দ্বারাই সাধিত হয় নি? অর্থাৎ, আজ তোমরা যে অভিজ্ঞতা লাভ করলে, তা হল বাক্য দ্বারা অর্জিত ফলাফল, যা যীশু কৃত প্রতীক ও বিস্ময়ের কার্যের চেয়েও বেশি। তুমি ঈশ্বরের যে মহিমা এবং স্বয়ং ঈশ্বরের কর্তৃত্ব দেখো, তা কেবল ক্রুশবিদ্ধকরণের মাধ্যমে, রোগ নিরাময়ের মাধ্যমে, বা মন্দ আত্মা তাড়ানোর মাধ্যমে নয়, বরং আরও বেশি করে তাঁর বাক্যের বিচারের মাধ্যমে দেখো। এটি তোমাকে দেখায় যে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা শুধুমাত্র প্রতীকী কার্য, রোগ নিরাময়, বা মন্দ আত্মা বিতাড়নেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ঈশ্বরের বাক্যের বিচার তাঁর কর্তৃত্ব এবং সর্বশক্তিমানতার প্রতিনিধিত্ব করে।

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, অবতাররূপের রহস্য (৪)

আরও দেখুন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

Leave a Reply

শেয়ার করুন

বাতিল করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন