ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: অবতার জন্ম | উদ্ধৃতি 134

25-09-2023

বাস্তববাদী ঈশ্বর সম্বন্ধে তোমার কি জানা উচিত? আত্মা, ছবি এবং বাক্য মিলে গঠিত হন স্বয়ং বাস্তববাদী ঈশ্বর, এবং এই হল স্বয়ং বাস্তববাদী ঈশ্বরের প্রকৃত অর্থ। তুমি যদি কেবল ছবিটিকে চেনো—যদি তুমি তাঁর অভ্যাস এবং ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে অবগত হও—কিন্তু আত্মার কর্ম সম্বন্ধে অথবা আত্মা দেহধারণ করে যে কর্ম সম্পাদন করেন সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল না হও, এবং যদি তুমি কেবল আত্মা ও বাক্যের প্রতি মনোযোগী হও, এবং কেবলমাত্র আত্মার সমীপে প্রার্থনা করে যাও, কিন্তু বাস্তববাদী ঈশ্বরের মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা যে কর্ম সম্পাদন করে চলেছেন সে বিষয়ে অবগত না হও, তাহলে এর থেকে আরেকবার প্রমাণিত হয় যে তুমি এখনও বাস্তববাদী ঈশ্বরকে চিনে উঠতে পার নি। বাস্তববাদী ঈশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞানের অন্তর্গত হল তাঁর বাক্যসমূহকে জানা ও অনুভব করা, পবিত্র আত্মার কার্যের নিয়মাবলী ও নীতিসমূহ উপলব্ধি করা, এবং ঈশ্বরের আত্মা কীভাবে দেহধারণপূর্বক স্বীয় কার্য সম্পাদন করেন তা অনুধাবন করা। এর মধ্যে এই সংজ্ঞাও অন্তর্গত যে, দেহধারণপূর্বক ঈশ্বরের দ্বারা সম্পাদিত প্রতিটি ক্রিয়াকলাপের পরিচালনা করছেন আত্মা, এবং তাঁর কথিত বাক্য আদতে আত্মার প্রত্যক্ষ অভিব্যক্তি। সুতরাং, বাস্তববাদী ঈশ্বরকে জানার জন্য, মনুষ্যত্ব এবং দেবত্বের মধ্যে ঈশ্বর কীভাবে কর্ম সম্পাদন করেন সে বিষয়ে জানার গুরুত্ব অপরিসীম; এটিই, পালাক্রমে, আত্মার অভিব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত, যার সাথে সমস্ত মানুষ বিজড়িত হয়।

আত্মার অভিব্যক্তির বিভিন্ন দিকগুলি কী? কখনও ঈশ্বর কার্য করেন মনুষ্যত্বের মাঝে, কখনও করেন দেবত্বে—কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই পূর্ণ কর্তৃত্ব আত্মার। মানুষের মধ্যে আত্মার যেমন প্রকৃতি, তেমনই তাদের বাহ্যিক অভিব্যক্তি। আত্মা স্বাভাবিক ধারাতেই কর্ম করেন, কিন্তু আত্মার মাধ্যমে তাঁর নির্দেশনার দুইটি অংশ রয়েছে: একটি অংশ হল মনুষ্যত্বের মাঝে তাঁর কর্ম, অপর অংশটি হল দেবত্বের মাধ্যমে তাঁর কর্ম। তোমার এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন। পরিস্থিতি অনুসারে আত্মার কর্মের পরিবর্তন ঘটে: যখন তাঁর মানবীয় কর্মের প্রয়োজন ঘটে, তখন আত্মা সেই মানবীয় কর্মের নির্দেশ দেন, এবং যখন তাঁর দৈব কর্মের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তখন সেই কর্ম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দেবত্বের প্রত্যক্ষ আবির্ভাব ঘটে। যেহেতু ঈশ্বর দেহীরূপে কার্য করেন এবং দেহধারণপূর্বক আবির্ভূত হন, সেহেতু তিনি মনুষ্যত্ব এবং দেবত্ব উভয়ের মধ্যেই তাঁর কর্ম সম্পাদন করেন। মনুষ্যত্বের মাঝে তাঁর কর্মের নির্দেশনা করেন আত্মা এবং সেই কর্ম সম্পাদনের উদ্দেশ্য হল মানুষের দৈহিক প্রয়োজনীয়তা চরিতার্থ করা, তাঁর সাথে তাদের সংযোগ সহজতর করা, তাদের ঈশ্বরের বাস্তবিকতা এবং স্বাভাবিকত্ব প্রত্যক্ষ করতে অনুমোদিত করা, এবং তাদের চাক্ষুষ করার সুযোগ দেওয়া যে, ঈশ্বরের আত্মা দেহধারণ করেছেন এবং মানুষের মধ্যেই রয়েছেন, মানুষের সাথেই বসবাস করছেন, এবং মানুষের সাথে মেলামেশা করছেন। দেবত্বের মধ্যে তাঁর কর্ম সম্পাদনের উদ্দেশ্য হল মানুষকে জীবনের রসদ যোগানো এবং সকল বিষয়ে এক ইতিবাচক দিক থেকে মানুষকে পথপ্রদর্শন করা, এমন ভাবে মনুষ্যস্বভাবের পরিবর্তনসাধন করা যাতে তারা যথার্থভাবে আত্মার দেহধারণপূর্বক আবির্ভাব প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হয়। মূলতঃ, দেবত্বের মধ্যে ঈশ্বরের কর্ম ও বাক্যের মাধ্যমেই মানবজীবনের বিকাশ প্রত্যক্ষভাবে অর্জিত হয়। মানুষ যদি দেবত্বের মধ্যে ঈশ্বরের কর্মকে গ্রহণ করে একমাত্র তাহলেই তারা স্বীয় স্বভাবের পরিবর্তনসাধনে সক্ষম হয়, এবং কেবলমাত্র তখনই তাদের আত্মা পরিতৃপ্ত হতে পারে; এর সাথে যদি মানবতায় ঈশ্বরের কর্ম—অর্থাৎ, ঈশ্বরের দ্বারা মানবতার পরিচালন, মদত ও সরবরাহ—সংযুক্ত হয়, কেবলমাত্র তাহলেই ঈশ্বরের কর্মের ফল পূর্ণত অর্জন করা সম্ভবপর হয়। যে স্বয়ং বাস্তবিক ঈশ্বরের কথা ইদানীং বলা হয়, তিনি মনুষ্যত্ব এবং দেবত্ব উভয় পরিসরেই তাঁর কর্ম সম্পাদন করেন। বাস্তবিক ঈশ্বরের আবির্ভাবের মাধ্যমে, তাঁর স্বাভাবিক মানবীয় কর্ম ও জীবন এবং তাঁর সম্পূর্ণ ঐশ্বরিক কর্ম উভয়ই অর্জিত হয়। তাঁর মনুষ্যত্ব ও দেবত্ব একীভূত হয় এবং উভয়ের কর্মই বাক্যের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়; মনুষ্যত্বে হোক অথবা দেবত্বে, তিনি বাক্য উচ্চারণ করেন। ঈশ্বর যখন মনুষ্যত্বের মধ্যে কাজ করেন, তিনি মনুষ্যত্বের ভাষাতেই কথা বলেন, যাতে মানুষেরা অংশগ্রহণ এবং উপলব্ধি করতে পারে। যাতে তাঁর বাক্যসমূহ সকল মানুষকে সরবরাহ করা যায় সেগুলি তাই সরলভাবে কথিত এবং সহজেই বোধগম্য হয়; জ্ঞানী অথবা স্বল্পশিক্ষিত যেমন মানুষই হোক না কেন, সকলেই ঈশ্বরের বাক্যকে গ্রহণ করতে পারে। দেবত্বের মধ্যে ঈশ্বরের সম্পাদিত কর্মও বাক্যের মাধ্যমেই নিষ্পন্ন হয়, কিন্তু তা সংস্থান-বন্দোবস্তে ঠাসা, জীবনে পরিপূর্ণ, মানবীয় ধারণাসমূহের দ্বারা অকলুষিত, এর সঙ্গে মানবিক পছন্দ-অপছন্দের কোনো সম্বন্ধ নেই, এবং তা মানবীয় সীমাবদ্ধতার ঊর্দ্ধে, তা যে কোনও প্রকারের স্বাভাবিক মানবতার সীমানার অতীত; দেহে সম্পাদিত হলেও, তা আত্মার প্রত্যক্ষ অভিব্যক্তি। মানুষ যদি কেবল মনুষ্যত্বের মধ্যে সম্পাদিত ঈশ্বরের কর্মটুকুই গ্রহণ করে, তাহলে তারা নির্দিষ্ট একটা গণ্ডীর মধ্যেই নিজেদের আবদ্ধ করে রাখবে, এবং সেক্ষেত্রে তাদের সামান্যতম পরিবর্তন সাধন করতে হলেও নিয়মিত মোকাবিলা, অপ্রয়োজনীয় অংশের কর্তন এবং অনুশাসনের প্রয়োজন রয়ে যাবে। পবিত্র আত্মার কর্ম অথবা উপস্থিতি ব্যতিরেকে অবশ্য তারা সর্বদাই তাদের পুরনো পন্থা অবলম্বন করবে; কেবলমাত্র দেবত্বের মাধ্যমে সংঘটিত কর্মের মাধ্যমেই এই ব্যাধি এবং ত্রুটি সংশোধিত হতে পারে, এবং একমাত্র তখনই মানুষকে সম্পূর্ণ করা যেতে পারে। দীর্ঘকালীন বোঝাপড়া অথবা কর্তনের পরিবর্তে যা প্রয়োজন তা হল ইতিবাচক ব্যবস্থাদান, সমস্ত ঘাটতি পূরণ করার উদ্দেশ্যে, মানুষের সকল পরিস্থিতির উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যে, এবং তাদের জীবনকে, তাদের প্রতিটি উচ্চারণকে, তাদের প্রত্যেক ক্রিয়াকলাপকে পরিচালিত করার জন্য, এবং তাদের অভিপ্রায় ও প্রেরণাসমূহকে উন্মোচিত করার উদ্দেশ্যে বাক্যের ব্যবহার করা। এ-ই হল বাস্তববাদী ঈশ্বরের প্রকৃত কার্য। সুতরাং, বাস্তববাদী ঈশ্বরের প্রতি তোমার মনোভাবে, তাঁকে স্বীকৃতি এবং মান্যতাদান করে তৎক্ষণাৎ তাঁর মানবতার সামনে তোমার আত্মসমর্পণ করা উচিৎ, এবং অধিকন্তু তোমার উচিত তাঁর ঐশ্বরিক কর্ম এবং বাক্যসমূহকেও গ্রহণ এবং মান্য করা। ঈশ্বরের দেহধারণপূর্বক আবির্ভূত হওয়ার অর্থ হল এই যে, তাঁর স্বাভাবিক মানবতা এবং তাঁর দেহধারী অবতাররূপের মাধ্যমেই ঈশ্বরের আত্মার সকল কর্ম ও সকল বাক্য, যথাক্রমে সম্পাদিত এবং কথিত হয়ে চলেছে। বাক্যান্তরে, ঈশ্বরের আত্মা দেহধারণপূর্বক একাধারে তাঁর মানবীয় কর্ম পরিচালন এবং ঐশ্বরিক কর্ম সম্পাদন করেন, এবং অবতাররূপী ঈশ্বরের মধ্যে মানবতার মাঝে ঈশ্বরের সম্পাদিত কর্ম এবং তাঁর বিশুদ্ধ ঐশ্বরিক কর্মকাণ্ড—উভয়ই পরিলক্ষিত হয়। এ-ই হল বাস্তববাদী ঈশ্বরের দেহরূপে আবির্ভূত হওয়ার প্রকৃত তাৎপর্য। তুমি যদি তা স্পষ্টভাবে দেখতে পাও, তাহলে তুমি ঈশ্বরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবে; তখন তুমি তাঁর দেবত্বে সম্পাদিত কর্মকে অধিকতর গুরুত্বদান, অথবা তাঁর মনুষ্যত্বে সম্পাদিত কর্মকে অযথা তাচ্ছিল্য করা—উভয় থেকেই বিরত থাকবে, তখন তুমি কোনো চরম অবস্থান গ্রহণ করবে না এবং ঘুরপথেও যাবে না। সামগ্রিকভাবে, বাস্তববাদী ঈশ্বরের অর্থ হল, পবিত্র আত্মার পরিচালনা মোতাবেক মনুষ্যত্ব এবং দেবত্বের মধ্যে তাঁর সম্পাদিত কর্ম তাঁর দেহরূপের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, যার ফলে মানুষ দেখতে সক্ষম হয় যে তিনি সুস্পষ্ট ও জীবন্ত, বাস্তব এবং প্রকৃত।

ঈশ্বরের আত্মা মনুষ্যত্বের মাঝে যে কর্ম সম্পাদন করেন তার কিছু ক্রান্তিকালীন পর্যায় রয়েছে। মানবতাকে নিখুঁত করে তোলার মাধ্যমে, তিনি তাঁর মানবতাকে আত্মার পরিচালনা গ্রহণে সমর্থ করেন, অতঃপর তাঁর মানবতা গির্জাগুলিকে সরবরাহ ও নেতৃত্বদানে সক্ষম হয়। এ হল ঈশ্বরের স্বাভাবিক কর্মের এক অভিব্যক্তি। অতএব, তুমি যদি স্পষ্টভাবে ঈশ্বরের মানবীয় কর্মের নীতিসমূহ দেখতে পাও, তাহলে ঈশ্বরের মনুষ্যত্বের মধ্যে সম্পাদিত কর্ম-বিষয়ে তোমার কোনও অপধারণা পোষণ করার সম্ভাবনা কম। আর যাই হোক না কেন, ঈশ্বরের আত্মা কখনোই ভ্রান্ত হতে পারেন না। তিনি নির্ভূল এবং সকল ভ্রান্তি রহিত; তিনি ভ্রান্তভাবে কিছু করেন না। ঐশ্বরিক কর্ম হল ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রত্যক্ষ অভিব্যক্তি, যা মানবতার হস্তক্ষেপ বিরহিত। যেহেতু এই ঐশ্বরিক কর্মের প্রত্যক্ষ উৎস আত্মা, সেহেতু একে আর আলাদা ভাবে নিখুঁত করে তুলতে হয় না। কিন্তু তিনি যে দেবত্বের মধ্যে কাজ করতে পারেন তা তাঁর স্বাভাবিক মানবতার কারণেই; এর মধ্যে অতিপ্রাকৃত কিছু নেই, এবং এমন মনে হয় যেন এই কার্য কোনও স্বাভাবিক ব্যক্তির দ্বারাই সম্পাদিত হয়েছে। ঈশ্বর মূলতঃ দেহরূপের মাধ্যমে ঈশ্বরের বাক্যকে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে ও দেহীভাবে ঈশ্বরের আত্মার কর্ম সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যেই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আবির্ভূত হয়েছেন।

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, তোমার জানা উচিত যে বাস্তববাদী ঈশ্বরই স্বয়ং ঈশ্বর

আরও দেখুন

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

Leave a Reply

শেয়ার করুন

বাতিল করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন