অধ্যায় ৯৯

আমার কার্যের গতিবেগ ত্বরান্বিত হচ্ছে বলে কেউই আমার পদক্ষেপের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না, এবং কেউই আমার চিন্তা ভেদ করতে পারে না, অথচ অগ্রগমনের এটিই একমাত্র পথ। এই-ই হল পূর্বকথিত “মৃতাবস্থা থেকে পুনরুত্থান” শব্দবন্ধের “মৃতাবস্থা” (শব্দটি আমার ইচ্ছা অনুধাবনে অপারগতা, আমার বাক্যসমূহ থেকে আমার বক্তব্য উপলব্ধি করার অক্ষমতাকে নির্দেশ করে; এ হল “মৃতাবস্থা”-র আরেক ব্যাখ্যা, এবং তা “আত্মার দ্বারা পরিত্যক্ত হওয়া” বোঝায় না)। যখন তোমরা এবং আমি এই দশা থেকে আধ্যাত্মিক শরীরে উত্তীর্ণ হবো, তখন “মৃতাবস্থা থেকে পুনরুত্থিত হওয়া”-র প্রকৃত অর্থ সিদ্ধ হবে (অর্থাৎ, এই-ই হল মৃতাবস্থা থেকে পুনরুত্থানের প্রকৃত অর্থ)। বর্তমানে, যে অবস্থায় তোমরা সকলে বিদ্যমান তা হল: তোমরা আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারো না এবং তোমরা আমার পদাঙ্ক খুঁজে পাও না। উপরন্তু, তোমাদের আত্মায় তোমরা শান্ত হতে পারো না, সেহেতু মানসিকভাবে তোমরা অস্বস্তি বোধ করো। যথাযথভাবে এই ধরনের অবস্থাই হল আমার উল্লেখিত “যন্ত্রণাভোগ”, এবং মানুষের পক্ষে অসহনীয় এই যন্ত্রণাভোগের মধ্যেই, একদিকে তোমরা নিজেদের ভবিষ্যতের চিন্তা করছো, এবং অন্যদিকে তোমরা স্বীকার করছো আমার দহন ও আমার বিচারকে, যা চতুর্দিক থেকে তোমাদের লক্ষ্য করে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে এবং তোমাদের আঘাত করছে। তদুপরি, আমার কথনের স্বরভঙ্গি ও ধরন থেকে তোমরা কোনো নিয়ম উপলব্ধি করতে পারো না, এবং একদিনের উচ্চারণের মধ্যেই নানাবিধ স্বরভঙ্গি রয়েছে, যার ফলস্বরূপ তোমরা নিরতিশয় কষ্টভোগ করো। এগুলিই হল আমার কার্যের পর্যায়। এ হল আমার প্রজ্ঞা। ভবিষ্যতে, এ ব্যাপারে তোমরা তীব্রতর যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা লাভ করবে, যার সমস্তকিছুরই উদ্দেশ্য হল সকল ভণ্ড মানুষকে প্রকাশিত করা—বিষয়টি এবার পরিষ্কার হওয়া উচিত! এভাবেই আমি কার্যসাধন করি। এরকম যন্ত্রণার প্রণোদনা লাভের মাধ্যমে, এবং মৃত্যুসম এই ব্যথার অভিজ্ঞতা লাভের পর, তোমরা নতুন এক ক্ষেত্রে প্রবেশ করবে। তোমরা আধ্যাত্মিক শরীরে প্রবেশ করবে, এবং আমার সঙ্গে সকল রাষ্ট্র ও সকল মানুষের উপর আধিপত্য করবে।

সাম্প্রতিককালে আমি কেন এক কঠোরতর স্বরভঙ্গিতে বাক্যোচ্চারণ করছি? আমার স্বরভঙ্গি কেন এতো ঘনঘন পরিবর্তিত হয়েছে, এবং আমার কার্যসাধনের পদ্ধতিই বা কেন এতো পুনঃপুন বদলে গিয়েছে? এই বিষয়গুলিতে আমার প্রজ্ঞা নিহিত রয়েছে। এই নাম যারা গ্রহণ করেছে তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যেই আমার বাক্যসমূহ উক্ত হয় (আমার বাক্যসমূহ যে নিষ্পাদনসাধ্য তা তারা বিশ্বাস করুক বা না করুক), সেকারণেই আমার বাক্যসমূহ সকলের দ্বারাই শ্রুত ও দৃষ্ট হওয়া বিধেয়, এবং সেগুলি অবশ্যই অবদমিত রাখা হবে না, কারণ কার্যসাধনের আমার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে এবং আমার প্রজ্ঞা রয়েছে। মানুষদের বিচার করতে, তাদের প্রকাশিত করতে, এবং মানব-প্রকৃতিকে অনাবৃত করতে আমি আমার বাক্যসমূহকে ব্যবহার করি। এই উপায়ে আমি আমার মনোনীত ব্যক্তিদের বেছে নিই, এবং যারা আমার দ্বারা পূর্বনির্দিষ্ট বা নির্বাচিত নয় তাদের বহিষ্কার করি। এই সমস্তকিছুই আমার প্রজ্ঞা, এবং এ-ই হল আমার কার্যের বিস্ময়করতা। আমার কার্যের এই পর্যায়ে এ-ই হল আমার পদ্ধতি। মানুষের মাঝে এমন কেউ কি রয়েছে যে আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারে? মানুষের মাঝে এমন কেউ কি রয়েছে যে আমার দায়ভারের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন হতে পারে? কার্যসাধন যিনি করছেন তিনি হলেন আমি, ঈশ্বর স্বয়ং। এমন একদিন আসবে যবে তোমরা এই বাক্যসমূহের তাৎপর্য আনুপুঙ্খিকভাবে উপলব্ধি করবে, এবং কেন আমি এই বাক্যগুলি বলতে চাই তা তোমাদের কাছে সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমার প্রজ্ঞা অশেষ, সীমাহীন, ও অপরিমেয়, এবং মানুষের পক্ষে তা সম্পূর্ণরূপে অভেদ্য। আমার সম্পাদিত কার্যাদি থেকে মানুষ কেবল এর অংশমাত্র দেখতে পায়, কিন্তু যা তারা দেখে তা ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ। তোমরা যখন এই পর্যায় থেকে পরবর্তী পর্যায়ে সম্পূর্ণরূপে উত্তীর্ণ হয়ে যাবে, তখন তোমরা তা সুস্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হবে। মনে রেখো! বর্তমান সময়টিই সবচেয়ে মূল্যবান যুগ—তোমাদের দেহরূপে থাকাকালীন এটিই সর্বশেষ পর্যায়। এই মুহূর্তে তোমাদের জীবন কায়িক জীবনের অন্তিম পর্যায়। তোমরা যখন দেহরূপ থেকে আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশ করবে, সেই ক্ষণে সকল যন্ত্রণা তোমাদের ত্যাগ করবে। তোমরা নিরতিশয় আহ্লাদিত ও উল্লসিত হবে, এবং আনন্দে অবিরাম উল্লম্ফন দেবে। তবে তোমাদের পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে যে আমার কথিত এই বাক্যগুলি কেবল প্রথমজাত পুত্রদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কারণ শুধুমাত্র প্রথমজাত পুত্রেরাই এই আশীর্বাদের যোগ্য। আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ হল শ্রেষ্ঠতম আশীর্বাদ, সর্বোচ্চ আশীর্বাদ, এবং মহার্ঘতম উপভোগের সামগ্রী। অধুনা যে বস্তুগুলি তোমরা আহার ও পরিধানের নিমিত্ত প্রাপ্ত হও, সেগুলি দেহের উপভোগের অতিরিক্ত অন্য কিছু নয়; সেগুলি অনুগ্রহ, এবং এই বস্তুগুলির বিষয়ে আমার কিছুমাত্র শিরঃপীড়া নেই। আমার কার্যের কেন্দ্রবিন্দু নিহিত রয়েছে পরবর্তী পর্যায়ে (আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করা ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সম্মুখীন হওয়া)।

আমি বলেছি যে অতিকায় লাল ড্রাগন ইতিমধ্যেই আমার দ্বারা উৎখাত ও বিধ্বস্ত হয়েছে। আমার বাক্যকে তোমরা কীভাবে অবিশ্বাস করো? তোমরা এখনো কেন আমার দরুন উৎপীড়ন ও দুর্ভোগ সহ্য করতে চাও? এ কি তোমাদের পক্ষে এক অনাবশ্যক মূল্য পরিশোধ করা নয়? তোমাদের আমি বহুবার স্মরণ করিয়েছি যে আমি স্বয়ং যখন ব্যক্তিগতভাবে কার্য সম্পাদন করি তখন তোমাদের শুধুমাত্র উপভোগ করা দরকার। পদক্ষেপ গ্রহণে তোমরা এতো আগ্রহী কেন? কীভাবে উপভোগ করতে হয় তা সত্যিই তোমরা জানো না! তোমাদের জন্য সমস্তকিছু আমি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করে রেখেছি—তোমাদের কেউই কেন তা আমার কাছে দাবি করতে আসোনি? আমার বক্তব্য নিয়ে তোমরা এখনও সংশয়ান্বিত! তোমরা আমায় উপলব্ধি করো না! তোমরা মনে করো আমি বুঝি সারহীন শ্রুতিমধুর উক্তি করছি; বস্তুতই, তোমরা নির্বোধ! (আমার উল্লেখিত পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির অর্থ হল, তোমাদের উচিত আমার প্রতি অধিকতর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং আমার সম্মুখে আরো বেশি করে প্রার্থনা করা, যে সময়ে আমি স্বয়ং আমার সমুদয় বিরোধিতাকারীদের উপর অভিশাপ বর্ষণ করতে, এবং তোমাদের সকল উৎপীড়নকারীদের শাস্তি প্রদান করতে কার্য সম্পাদন করবো। আমার বাক্যসমূহের বিষয়ে তোমরা কিছুমাত্র অবগত নও! আমার সকল রহস্য আমি তোমাদের কাছে প্রকাশিত করি, কিন্তু তোমাদের মধ্যে কয়জন প্রকৃতই সেগুলি উপলব্ধি করো? তোমাদের কতজন সেগুলি গভীরভাবে উপলব্ধি করো? আমার সিংহাসন কী? আমার লৌহদণ্ড-ই বা কী? তোমাদের মধ্যে কে এ বিষয়ে অবগত? যখন আমার সিংহাসনের উল্লেখ করা হয়, তখন অধিকাংশ মানুষ মনে করে সেখানে বুঝি আমি উপবেশন করি, কিংবা তা আমার বাসস্থানকে নির্দেশ করে, অথবা তা আমাকে, আমার সত্তাকেই, নির্দেশ করে। এই সমস্তই হল ত্রুটিপূর্ণ উপলব্ধি—ভ্রান্ত উপলব্ধির এক বিপর্যাস মাত্র! এই ব্যাখ্যাগুলির কোনোটিই সঠিক নয়, তা-ই নয় কি? এভাবেই তোমরা সকলে তা উপলব্ধি ও প্রণিধান করো—এ শুধু উপলব্ধির এক চরম বিচ্যুতি মাত্র! কর্তৃত্ব কী? কর্তৃত্ব ও সিংহাসনের মধ্যে কী সম্পর্ক রয়েছে? সিংহাসন হল আমার কর্তৃত্ব। আমার প্রথমজাত পুত্রেরা যখন আমার সিংহাসনকে ঊর্ধ্বে উত্তোলিত করে ধরবে, সেক্ষণেই আমার কাছ থেকে তারা কর্তৃত্ব গ্রহণ করবে। কেবল আমারই কর্তৃত্ব রয়েছে, সেহেতু একমাত্র আমারই সিংহাসন রয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, আমার প্রথমজাত পুত্রেরা যখন আমার মতোই একইভাবে যন্ত্রণাভোগ করবে, তখন তারা আমি যা এবং আমার যা আছে, তা স্বীকার করবে, এবং আমার নিকট থেকে সমস্তকিছু গ্রহণ করবে; এই পদ্ধতিতেই তারা প্রথমজাত পুত্রের পদমর্যাদা অর্জন করবে। এটি তখনই ঘটবে যখন আমার প্রথমজাত পুত্রগণ আমার সিংহাসনকে ঊর্ধ্বে উত্তোলিত করে ধরবে, এবং সেই সময়টিতেই তারা আমার কাছ থেকে কর্তৃত্বও গ্রহণ করবে। এখন বিষয়টি তোমাদের উপলব্ধি করা উচিত! আমার সকল বক্তব্যই সুস্পষ্ট ও পূর্ণত দ্ব্যর্থহীন, যাতে সকলেই তা প্রণিধান করতে পারে। তোমাদের নিজস্ব পূর্বধারণাগুলি একপাশে সরিয়ে রাখো, এবং তোমাদের নিকট আমার দ্বারা উদ্ঘাটিত রহস্যসমূহ গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করো! তাহলে লৌহদণ্ড কী? পূর্ববর্তী পর্যায়ে তা আমার রূঢ় বাক্যসমূহকে নির্দেশ করেছিল, কিন্তু বর্তমানে তা অতীতের থেকে ভিন্নতর: অধুনা লৌহদণ্ড আমার কার্যাবলীকে নির্দেশ করে, যা হল কর্তৃত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিপুল বিপর্যয়। সেকারণেই, লৌহদণ্ড শব্দটি সর্বদাই কর্তৃত্বের সঙ্গে একসূত্রে উল্লেখিত হয়। লৌহদণ্ডের আদি অর্থটি বৃহৎ বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে কথিত হয়—তা কর্তৃত্বের অংশবিশেষ। বিষয়টি সকলকেই পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে এবং একমাত্র এভাবেই তারা আমার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করতে এবং আমার বাক্যসমূহ থেকে উদ্ঘাটন প্রাপ্ত হতে পারে। যে-ই পবিত্র আত্মার কার্য লাভ করেছে, সে-ই নিজ হস্তে লৌহদণ্ড ধারণ করে, এবং সে-ই কর্তৃত্বের বাহক এবং যেকোনো বিপুল বিপর্যয় কার্যকর করার অধিকার তারই রয়েছে। এ হল আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের মধ্যে একটি।

সমস্তকিছু ও সকল বিষয় তোমাদের কাছে উন্মোচিত (এটি সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত অংশকে নির্দেশ করে), এবং সমস্তকিছু ও সকল বিষয় তোমাদের কাছে প্রচ্ছন্ন (এটি আমার বাক্যাবলীর গোপন অংশকে নির্দেশ করে)। আমি প্রজ্ঞার সাথে বাক্যোচ্চারণ করি: স্বীয় বাক্যাবলীর কিছু অংশের আক্ষরিক অর্থটুকুই শুধু তোমাদের আমি উপলব্ধি করতে দিই, সেখানে অবশিষ্ট বাক্যসমূহের অর্থ তোমাদের অনুধাবন করতে দিই (কিন্তু অধিকাংশ মানুষ উপলব্ধি করতে অক্ষম), কারণ এ-ই হল আমার কার্যের পর্যায়ক্রম। তোমরা যখন এক নির্দিষ্ট আত্মিক উচ্চতায় উপনীত হবে, কেবল তখনই আমি তোমাদের আমার বাক্যসমূহের প্রকৃত অর্থ বলতে পারবো। এ-ই হল আমার প্রজ্ঞা, এবং এগুলিই হল আমার বিস্ময়কর কার্যকলাপ (যাতে তোমাদের নিখুঁত করে তোলা যায়, এবং শয়তানকে সর্বতোভাবে পর্যুদস্ত এবং প্রেতাত্মাদের অপদস্থ করা যায়)। অন্য এক জগতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত তোমরা সম্পূর্ণরুপে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না। আমায় এভাবেই তা করতে হবে কারণ মানুষের পূর্বধারণায় এমন অনেক বিষয় রয়েছে মানুষ কিছুতেই যেগুলির তল পায় না, এবং এমনকি আমি সুস্পষ্টভাবে বললেও তোমরা উপলব্ধি করবে না। মানুষের মন, সবকিছু সত্ত্বেও, সীমাবদ্ধ, এবং অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলি শুধুমাত্র তোমরা আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করার পরেই আমি তোমাদের জ্ঞাপন করতে পারি; অন্যথায়, মানবদেহ সে কাজের উপযুক্ত নয়, এবং এতে কেবল আমার ব্যবস্থাপনা বিঘ্নিতই হতে পারে। আমি যে “আমার কার্যপরম্পরা”-র উল্লেখ করি এ-ই হল তা-র প্রকৃত অর্থ। তোমাদের পূর্বধারণায়, তোমরা আমায় কতখানি উপলব্ধি করো? তোমাদের উপলব্ধি কি ত্রুটিশূন্য? তা কি আত্মার অভ্যন্তরস্থ জ্ঞান? সুতরাং, তোমাদের আমায় অপর একটি জগতে উত্তীর্ণ হতে দিতে হবে যাতে তোমরা আমার কার্য সম্পূর্ণ করতে এবং আমার ইচ্ছা পালন করতে পারো। তাহলে এই অন্য জগৎটি সঠিক কী? মানুষ যেমন ভাবে তা কি সত্যিই সেই ধরনের এক অতীন্দ্রিয় দৃশ্য? তা কি বস্তুতই বায়ুর মতো কিছু, যা দেখা বা অনুভব করা যায় না, অথচ যার অস্তিত্ব রয়েছে? যেমনটি আমি বলেছি, দেহের মধ্যে স্থিতির যে অবস্থা তা হল রক্ত-মাংস ও আকার-আকৃতির অধিকারী হওয়ার অবস্থা। এ হল সম্পূর্ণরূপে সত্য ও সন্দেহাতীত, এবং প্রত্যেককে অবশ্যই তা বিশ্বাস করতে হবে। এ হল দেহমধ্যে প্রকৃত অবস্থা। উপরন্তু, দেহের ভিতর এমন কোনো বস্তু নেই যা মানুষ ঘৃণা করে। কিন্তু এই অবস্থাটি ঠিক কী? মানুষ যখন দেহ থেকে আধ্যাত্মিক শরীরে উৎক্রান্ত হবে, তখন আবশ্যিকভাবে এক বৃহৎ গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটবে। অর্থাৎ, তারা নিজেদের দৈহিক আবাস ভেঙে বিনির্গত হবে, এবং বলা যায় যে প্রত্যেকে তার নিজ-নিজ গোত্রকে অনুসরণ করবে: দেহ দেহের কাছে জড়ো হবে এবং শরীর শরীরের নিকট একত্রিত হবে। এ সময় যারা তাদের গৃহ, তাদের পিতা-মাতা, পত্নী, পতি, পুত্র, ও কন্যাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নির্গত হয়, তারা আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করতে আরম্ভ করে। অন্তিমে, আধ্যাত্মিক জগতের পরিস্থিতিটি দাঁড়ায় এই রকম: প্রথমজাত পুত্রেরা একত্রিত হয়ে নৃত্য-গীতে নিরত হয়, আমার পবিত্র নামে স্তুতি ও উল্লাসধ্বনি প্রকাশ করে। এ এক মনোরম ও চিরনতুন দৃশ্য। সকলেই আমার প্রিয় পুত্র, অনন্ত কালব্যাপী নিরন্তর আমার গুণকীর্তন করছে, আমার পবিত্র নাম চিরকাল ঊর্ধ্বে ধারণ করে রাখছে। আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের পর এ-ই হল পরিস্থিতি, একই সঙ্গে তা আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের পরবর্তীকালীন কার্যও বটে, এবং এই পরিস্থিতি সম্বন্ধেই, গির্জাকে আধ্যাত্মিক জগতে পরিচালিত করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েই, আমি বক্তব্য রেখেছিলাম। অধিকন্তু, আমার সত্তাই আমার কর্তৃত্ব, ক্রোধ, ও বিচার বহন করে, এবং তার চেয়েও যা গুরুত্বপূর্ণ, সকল রাষ্ট্র ও সকল মানুষকে শাসনের নিমিত্ত আমার লৌহদণ্ড বহন করে, ব্রহ্মাণ্ডের সমুদয় রাষ্ট্রে, সমস্ত দেশে ও সকল মানুষের মাঝে আবির্ভূত হয়। সকল মানুষ ও সমগ্র বিশ্বজগতের মাঝে তা আমার সাক্ষ্য বহন করে, স্বর্গ ও ধরিত্রীকে যা প্রকম্পিত করে, যার দরুন সকল মানুষ এবং পর্বতোপরি, নদীগর্ভস্থ, হ্রদমধ্যস্থ, এবং পৃথিবীর প্রান্তের যাবতীয় বস্তু আমার বন্দনা করে ও আমায় মহিমান্বিত করে, এবং জানতে পারে আমাকে, স্বয়ং ঈশ্বরকে, যিনি সমস্তকিছুর সৃষ্টিকর্তা, এবং সকলকিছুকে পথপ্রদর্শন ও পরিচালিত করেন, সমস্তকিছুর বিচার করেন, যাবতীয় কিছু নিষ্পন্ন করেন, সকলকিছুকে শাস্তিদান করেন, এবং সমস্তকিছুকে ধ্বংস করেন। তখন, এ-ই হল আমার ছবির প্রকৃত অবয়ব।

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৯৮

পরবর্তী: অধ্যায় ১০০

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন