অধ্যায় ৯৮
তোমাদের প্রত্যেকের উপর যাবতীয় কিছু নেমে আসবে এবং সেগুলি তোমাদের আমার সম্পর্কে আরো বেশি জানার এবং আমার বিষয়ে আরো বেশি নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ করে দেবে। সেগুলি তোমাদের আমাকে অর্থাৎ একমাত্র স্বয়ং ঈশ্বরকে জানার, আমাকে অর্থাৎ সর্বশক্তিমানকে জানার, আমাকে অর্থাৎ স্বয়ং অবতাররূপী ঈশ্বরকে জানার সুযোগ দেবে। এরপর, আমি দেহ থেকে নির্গত হব, সিয়োনে, কনানের পুণ্যভূমিতে প্রত্যাবর্তন করব, যা আমার আবাসস্থল ও আমার গন্তব্য, সেই মূল ঘাঁটি যেখানে আমি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছিলাম। বর্তমানে, তোমাদের কেউই আমি বক্তব্যের অর্থ উপলব্ধি করো না; এমন একজন ব্যক্তিও নেই যে এই বাক্যগুলির অর্থ অনুধাবনে সক্ষম। একমাত্র যখন সবকিছু তোমাদের কাছে প্রকাশিত হবে তখনই তোমরা উপলব্ধি করবে এই বাক্যগুলি কেন আমি উচ্চারণ করছি। আমি এই পৃথিবীর নই, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের তো আরোই নই, কারণ আমিই একমেবাদ্বিতীয়ম ঈশ্বর স্বয়ং। আমি নিজ হস্তে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডকে ধারণ করি, আমিই স্বয়ং এর দায়িত্বে রয়েছি, এবং মানুষ শুধুমাত্র আমার কর্তৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে, আমার পবিত্র নাম উচ্চারণ করতে পারে, আমার উদ্দেশ্যে হর্ষধ্বনি করতে এবং আমার স্তুতি করতে পারে। সবকিছুই ধীরে ধীরে তোমাদের কাছে প্রকাশিত করা হবে। যদিও কোনোকিছুই প্রচ্ছন্ন নেই, তবুও এখনো তোমরা আমার কথা বলার রীতি বা আমার বাক্যগুলির স্বরভঙ্গির মর্মোদ্ধার করতে পারো না। তোমরা এখনো আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার বিষয়বস্তুটি উপলব্ধি করো না। আমি যাকিছু বলেছি তার মধ্যে যে বিষয়গুলো তোমরা উপলব্ধি করোনি সেগুলির সম্বন্ধে পরে সবই আমি তোমাদের বলব, কারণ, আমার কাছে সবকিছুই সরল ও স্পষ্ট, সেখানে তোমাদের কাছে, তা অত্যন্ত দুরূহ, এবং তোমরা আদৌ তা একেবারেই উপলব্ধি করো না। এই কারণেই, আমি আমার বাচনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনব, এবং কথা বলার সময় আমি আর বিভিন্ন বিষয়কে একসঙ্গে জুড়ে দেব না, প্রতিটি বিষয় আমি একে একে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করব।
মৃতাবস্থা থেকে পুনরুজ্জীবিত করার অর্থ কী? এর অর্থ কি দেহরূপে গতায়ু হওয়া এবং মৃত্যুর পর শরীরে প্রত্যাবর্তন? এরই অর্থ কি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান লাভ? এটা কি এমনই সহজ? আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর; এর সম্বন্ধে তুমি কী জানো? তুমি একে কীভাবে উপলব্ধি করো? আমার প্রথম অবতারত্বের সময় মৃত্যুর পর আমার পুনরুত্থানকে সত্যিই কি আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করা যায়? ঐ সমস্ত ভাষ্যে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে প্রক্রিয়াটা কি ঠিক তেমনই ছিল? আমি বলেছি যে আমি যদি খোলাখুলি ভাবে না বলি এবং আমি যদি মানুষকে স্পষ্টভাবে না বলি, তাহলে কেউই আমার বাক্যের অর্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না। যুগযুগান্তব্যাপী এমন একজন মানুষও আসেনি যে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান এভাবেই ঘটে বলে ভাবেনি। এই পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে আজ অবধি, কেউই এর প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করেনি। আমাকে কি সত্যিই ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল? এবং, মৃত্যুর পর, আমি কি সমাধি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম? এরকম কি সত্যিই ঘটেছিল? এটা কি সত্যি হতে পারে? যুগের পর যুগ ধরে কেউই এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করেনি, এই ঘটনা থেকে কেউই আমাকে জেনে উঠতে পারেনি এবং এমন একজন ব্যক্তিও নেই যে এই ঘটনাকে বিশ্বাস করে না; সকলেই মনে করে এই ঘটনাটি সত্যি। তারা জানে না যে আমার প্রতিটি বাক্যের একটা অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে। তাহলে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান সঠিক কী? (অদূর ভবিষ্যতে তোমরা এর অভিজ্ঞতা লাভ করবে, তাই আমি অগ্রিম তোমাদের এ বিষয়ে অবগত করছি)। কোনো সৃজিত সত্তাই মৃত্যু বরণ করতে চায় না; তারা সবাই বেঁচে থাকতে চায়। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, দেহের মৃত্যু প্রকৃত মৃত্যু নয়। যখন কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে আমার আত্মাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, তখন সেই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। তাই শয়তানের দ্বারা কলুষিত ওই সব দানবকে (যাদের কোনো বিশ্বাস নেই, যারা অবিশ্বাসী) আমি মৃত বলি। এই পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে, যাদের আমি মনোনীত করেছি তাদের প্রত্যেককে আমি আমার আত্মা প্রদান করেছি। তবে, সৃষ্টিলগ্নের পরবর্তীকালে একটা পর্যায়ের পর, মানুষ কিছুকালের জন্য শয়তানের কবলে চলে গিয়েছিল। তাই আমি চলে যাই, এবং মানুষের যন্ত্রণাভোগ শুরু হয় (আমার অবতাররূপ ধারণকালে যখন আমায় ক্রুশবিদ্ধ করা হয় তখন যে যন্ত্রণা আমি সহ্য করেছিলাম, যার কথা বলা হয়)। তবে, আমার দ্বারা পূর্বনির্ধারিত সময়ে (যখন মানুষকে পরিত্যাগ করে যাওয়ার পর আবার আমি ফিরে এলাম), আমার পূর্বনির্দিষ্ট লোকদের আমি পুনরুদ্ধার করলাম, এবং আরেকবার আমার আত্মা আমি তোমাদের মধ্যে স্থাপন করলাম যাতে তোমরা আবার জীবন লাভ করো। একেই বলে “মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান”। বর্তমানে, যারা প্রকৃতই আমার আত্মাতে বাস করে তারা ইতিমধ্যেই সকল সীমা অতিক্রম করে এসেছে, এবং তারা সবাই শরীরে বাস করে। তবে, কিছুদিনের মধ্যেই, তোমরা সকলেই তোমাদের চিন্তাধারা, তোমাদের পূর্বধারণা এবং সমস্ত পার্থিব বন্ধন পরিত্যাগ করবে। তবে এটা, সেই বিষয় নয়, মানুষ যাকে যন্ত্রণাভোগের অন্তে মৃত্যু থেকে পুনর্জীবনলাভ বলে মনে করে। তোমরা এখন যেভাবে বেঁচে আছ তা আধ্যাত্মিক শরীরে বেঁচে থাকার পূর্বশর্ত; এটা আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের প্রয়োজনীয় পথ। যে স্বাভাবিক মানবতাকে ছাপিয়ে যাওয়ার কথা আমি বলি তার অর্থ হল কোনো পরিবার, ভার্যা, সন্তান, ও মনুষ্যোচিত চাহিদা না থাকা। এটা হল আমার প্রতিমূর্তিকে যাপনের উপর পুরোপুরি মনঃসংযোগ করা, আমার অভ্যন্তরে প্রবেশের বিষয়ে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করা এবং আমাকে ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ে চিন্তা না করা; যেখানেই তুমি যাও সেটাই তোমার গৃহ। এটাই হল স্বাভাবিক মানবতাকে ছাপিয়ে যাওয়া। তোমরা আমার এই বাক্যগুলির পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা করেছ; তোমাদের উপলব্ধি খুবই অগভীর। সমস্ত দেশ ও সকল মানুষের কাছে ঠিক কীভাবে আমি আবির্ভূত হব? বর্তমানে দেহরূপে? না! সময় যখন আসবে, তখন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি দেশে আমি আমার শরীরীরূপে আবির্ভূত হব। নিজেদের পরিচালিত করার জন্য বিদেশীদের যেদিন তোমাদের প্রয়োজন পড়বে সেইদিন এখনো আসেনি। সেসময় তাদের পরিচালিত করার জন্য তোমায় দেহ থেকে নির্গত হয়ে শরীরে প্রবেশ করতে হবে। এটা সত্য, কিন্তু মানুষের কল্পনামতো এটা “মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান” নয়। নির্দিষ্ট সময়ে, তোমরা তোমাদের অজ্ঞাতসারেই দেহ থেকে বেরিয়ে আসবে এবং আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করে আমার সঙ্গে সমস্ত দেশকে শাসন করবে। এখনো সেই সময় হয়নি। যখন আমি তোমাদের দেহরূপে থাকা প্রয়োজন মনে করব, তখন তোমরা দেহরূপে থাকবে (আমার কাজের প্রয়োজন অনুসারে, এখনো তোমাদের চিন্তাকুল থাকতেই হবে এবং দেহরূপেই বাস করতে হবে, যাতে তোমরা এখনো সেই কাজগুলিই করতে পারো যা আমার পদক্ষেপগুলি অনুসারে তোমাদের দেহরূপেই সম্পন্ন করা প্রয়োজন; নিষ্ক্রিয়ভাবে অপেক্ষা কোরো না, কারণ তাতে কালবিলম্ব ঘটবে)। গির্জার পরিচালক হিসাবে আধ্যাত্মিক শরীরে কাজ করার জন্য যখন তোমাদের আমার প্রয়োজন হবে, তখন তোমরা দেহ থেকে বেরিয়ে আসবে, তোমাদের চিন্তাভাবনা পরিত্যাগ করবে, এবং জীবনধারণের জন্য সম্পূর্ণভাবে আমার উপর নির্ভর করবে। আমার ক্ষমতা ও আমার প্রজ্ঞার উপর বিশ্বাস রাখো। ব্যক্তিগতভাবে আমার দ্বারা সবকিছুই সাধিত হবে। তোমাদের শুধু অপেক্ষা এবং উপভোগ করতে হবে। তোমাদের উপর সমস্ত আশীর্বাদ বর্ষিত হবে, তোমরা এক অক্ষয় ও অনন্ত সংস্থান লাভ করবে। সেই দিন যখন আসবে, সেদিন কীভাবে এই কার্য আমি সম্পাদন করি তার নীতি তোমরা উপলব্ধি করতে পারবে, তোমরা আমার চমকপ্রদ কর্মগুলিকে জানবে, এবং কীভাবে আমি আমার প্রথমজাত পুত্রদের সিয়োনে ফিরিয়ে আনি তাও তোমরা অন্তরঙ্গম করবে। এই বিষয়টি যতটা জটিল বলে তোমরা কল্পনা করো সত্যিই তা ততটা জটিল নয়, কিন্তু যতটা সরল বলে মনে করো ততটা সরলও নয়।
আমি জানি যে আমি যখন তোমাদের একথা বলি তখন তোমরা আমার বাক্যগুলির নেপথ্যের উদেশ্যকে অনুধাবন করতে আরোই অক্ষম হয়ে পড়ো এবং আরো বেশি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাও। আমি আগে যা বলেছি তার সঙ্গে তোমরা বিষয়টিকে মিশিয়ে ফেলবে যার ফলে তোমরা কিছুই উপলব্ধি করতে পারবে না, এবং মনে হবে যেন সমাধানের কোনো পথ নেই। তবে, উদ্বিগ্ন হয়ো না। আমি তোমাদের সবকিছুই বলব। আমি যা কিছু বলি তাদের প্রতিটির অর্থ রয়েছে। আমি বলেছি যে বিদ্যমান বস্তুগুলোকে আমি অনস্তিত্বে পর্যবসিত করতে পারি এবং শূন্যতা থেকে অজস্র বস্তু তৈরি করতে পারি। মানুষের কল্পনায়, দেহ থেকে শরীরে প্রবেশ করতে হলে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হতে হবে। অতীতে, আমি এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমার সবচেয়ে বড় অলৌকিক কর্মগুলিকে প্রতীয়মান করে তুলেছি, কিন্তু আজকের পরিস্থিতি আর অতীতের মতো নেই। আমি সরাসরি তোমাদের দেহ থেকে শরীরে নিয়ে যাব। এটা কি আরো বড় এক সংকেত ও অলৌকিক কর্ম নয়? এটা কি আমার সর্বশক্তিমত্তার আরো বৃহৎ প্রকাশ নয়? আমার নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে, এবং আমার নিজস্ব অভিপ্রায় রয়েছে। কে আমার হাতের মধ্যে নেই? আমার কার্য বিষয়ে আমি অবগত। যতই হোক, বর্তমানে আমার কর্মের পদ্ধতি অতীতের থেকে আলাদা। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে আমি আমার কর্মপদ্ধতিতে সামঞ্জস্য বিধান করি। যখন আমি ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলাম, সেটা ছিল অনুগ্রহের যুগ, কিন্তু এটা হল চূড়ান্ত যুগ। আমার কার্যের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে; অতীতে এই কাজের যে গতি ছিল এখন আর তা নেই, এবং অতীতের কাজের গতির চেয়ে এখন কোনোমতেই তা মন্থরতর নয়। বরং, অতীতের চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে তা অগ্রসর হচ্ছে। একে বর্ণনা করার সত্যিই কোনো উপায় নেই, এবং এত বেশি জটিল প্রক্রিয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। যেকোনো কাজ করার স্বাধীনতা আমার রয়েছে। একথা কি সত্যি নয় যে কীভাবে আমার ইচ্ছা সম্পূর্ণ হবে এবং কীভাবে আমি তোমাদের নিখুঁত করব তা নির্ধারণ করার জন্য আমার কর্তৃত্বের একটি বাক্যই যথেষ্ট? যা কিছু আমি বলি তার প্রত্যেকটি নিশ্চিতভাবেই সম্পন্ন হবে। অতীতে, আমি প্রায়শই বলেছি যে আমি যন্ত্রণাভোগ করব, এবং পূর্বে যে যন্ত্রণা আমি সহ্য করেছিলাম তার উল্লেখ করার অনুমতি মানুষকে আমি দিইনি; তার উল্লেখের অর্থ অর্থ ছিল আমার নিন্দা করা। এর কারণ হল আমিই স্বয়ং ঈশ্বর এবং আমার কাছে কোনো দুঃখকষ্ট নেই; তুমি যখন এই যন্ত্রণার কথা উল্লেখ করো তখন তুমি মানুষকে কাঁদাও। আমি একথা বলেছি যে ভবিষ্যতে কোনো দীর্ঘশ্বাস ও কোনো অশ্রু থাকবে না। একে এই দিক থেকে ব্যাখ্যা করা উচিত, এবং তাহলেই আমার বাক্যের অর্থ উপলব্ধি করা যাবে। “মানুষ কিছুতেই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে না” কথাটির অর্থ হল মানুষের সব পূর্বধারণা ও চিন্তাধারা ভেঙে আমি বেরিয়ে আসতে পারি, দেহের সব আবেগ ভেঙে আমি বিনির্গত হতে পারি, পার্থিব সত্তা হওয়ার সব চিহ্ন মুছে দিয়ে আমি দেহরূপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, এবং যেখানে সবাই আমাকে অস্বীকার করছে সেখানেও আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারি। আমিই যে একমাত্র স্বয়ং ঈশ্বর তা প্রমাণের জন্য এটাই যথেষ্ট। আমি বলেছি, “প্রত্যেক প্রথমজাত পুত্র দেহরূপ থেকে আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করবেই, আমার সঙ্গে রাজা হয়ে রাজত্ব করার জন্য এই পথ তাদের গ্রহণ করতেই হবে”। এই বাক্যের অর্থ হল, অতীতে যে বিষয়গুলির তোমরা কল্পনা করেছিলে সেগুলির যখন সম্মুখীন হবে, তখন তোমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দেহ থেকে বেরিয়ে আসবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে সেই রাজপুত্র ও রাজাদের বিচার করার জন্য শরীরে প্রবেশ করবে। এই সময়ে যে বিষয়গুলি ঘটছে তার উপর ভিত্তি করে তাদের বিচার করা হবে। তবে, বিষয়টা যতটা জটিল বলে তোমরা কল্পনা করো ততটা নয়—এই মুহূর্তের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। মৃত্যু থেকে তোমাদের উত্থানের প্রয়োজন হবে না এবং এমনকি তোমাদের যন্ত্রণা সহ্য করারও দরকার পড়বে না (কারণ এই পৃথিবীতে তোমাদের যন্ত্রণা ও দুঃখকষ্টের ইতিমধ্যেই অবসান ঘটেছে এবং আমি ইতিপূর্বেই বলেছি যে এর পর থেকে আমি আর আমার প্রথমজাত পুত্রদের মোকাবিলা করব না)। তোমাদের অজান্তেই আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের মাধ্যমে প্রথমজাত পুত্ররা, যেমন বলা হয়েছিল যেই অনুসারে, তাদের আশীর্বাদ উপভোগ করবে। আমি কেন বলি যে এটাই আমার করুণা ও অনুগ্রহ? কেবলমাত্র মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পরেই যদি কেউ আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করতে পারতো, তাহলে সেটা মোটেই করুণাপূর্ণ ও অনুগ্রহপূর্ণ হতো না। তাই এটাই আমার করুণা ও অনুগ্রহের সবচেয়ে সুস্পষ্ট প্রকাশ এবং, তদুপরি, এটা আমার পূর্বনির্ধারণ ও আমার দ্বারা মানুষের নির্বাচনকে প্রকাশ করে। আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহ যে কতটা কঠোর এটি তা পর্যাপ্তভাবে দেখাতে সক্ষম। যার প্রতি ইচ্ছা আমি তার প্রতি অনুগ্রহপূর্ণ হব, এবং আমার প্রতি ইচ্ছা তার প্রতি করুণাময় হব। এ বিষয়ে কেউ বিতর্ক বা বিতণ্ডা করবে না। এর সবকিছু আমিই নির্ধারণ করব।
মানুষ এটা অনুধাবন করে উঠতে পারে না, এবং যতক্ষণ না শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসে ততক্ষণ তারা নিজেদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যায়, এবং তবু এখনো তারাই নিজেদের বন্ধনে আবদ্ধ করে। মানুষের ভাবনা সত্যিই সীমাবদ্ধ, তাই তাদের মনুষ্যোচিত ভাবনা ও পূর্বধারণাসমূহ ত্যাগ করতে হবে। এই কারণেই, সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিতে, এবং সবকিছু পরিচালনা করতে আমাকে দেহ থেকে বেরিয়ে এসে আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করতে হবে। সকল মানুষ ও সমস্ত দেশকে শাসন এবং আমার ইচ্ছা পূরণ করার এটাই একমাত্র উপায়। এটা আর বেশি দূরে নেই। আমার সর্বশক্তিমত্তায় তোমাদের বিশ্বাস নেই, এবং আমি কে তাও তোমরা জানো না। তোমরা মনে করো যে আমি কেবল একজন মানুষ মাত্র, এবং আমার দেবত্ব তোমরা আদৌ দেখতে পাওনা। আমি যখন বিষয়গুলিকে সম্পূর্ণ করতে চাইব তখনই সেগুলি সম্পূর্ণ হবে। শুধু আমার মুখ থেকে একটি বাক্য নিঃসৃত হওয়ার অপেক্ষা। যে মানবতার দিকটির মাধ্যমে সম্প্রতি আমি বাক্য উচ্চারণ করেছি, সেই দিকটির প্রতি এবং আমার প্রতিটি গতিবিধির প্রতিই তোমরা শুধু মনোযোগ দিয়েছ, কিন্তু আমার দেবত্বের দিকটিতে তোমরা মনোনিবেশ করোনি। অর্থাৎ, তোমরা মনে করো যে আমারও চিন্তাধারা ও পূর্বধারণাসমূহ রয়েছে। কিন্তু আমি বলেছি যে আমার চিন্তাভাবনা, ধারণাসমূহ এবং মন, আমার প্রত্যেক গতিবিধি, যা কিছু আমি করি, যা কিছুই আমি বলি, তাদের সবই স্বয়ং ঈশ্বরের সামগ্রিক প্রকাশ। তোমরা কি এই সবকিছুই ভুলে গেছ? তোমরা সব বিভ্রান্ত মানুষ! তোমরা আমার বাক্যগুলির অর্থ উপলব্ধি করো না। আমার উক্তিসমূহের মাধ্যমে আমি আমার স্বাভাবিক মানবতার দিকটি তোমাদের প্রত্যক্ষ করার সুযোগ দিয়েছি (আমার দৈনন্দিন জীবনে, বাস্তবতায় তোমাদের আমি আমার স্বাভাবিক মানবতাকে চাক্ষুষ করতে দিয়েছি, কারণ এই সময়ে আমার বাক্য থেকে আমার স্বাভাবিক মানবতার দিকটিকে তোমরা এখনো উপলব্ধি করতে পারো না), তা সত্ত্বেও তোমরা আমার স্বাভাবিক মানবতাকে উপলব্ধি করো না, তোমরা শুধুমাত্র এমনকিছু আয়ত্তে পেতে চেষ্টা করো যাকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায়, এবং তোমরা আমার সম্মুখে লাগামহীন। তোমরা অন্ধ! তোমরা অজ্ঞ! তোমরা আমাকে জানো না! এতদিন ধরে আমি বৃথাই কথা বলেছি! তোমরা আদৌ আমাকে জানো না, এবং আমার স্বাভাবিক মানবতাকে তোমরা আদৌ সম্পূর্ণ স্বয়ং ঈশ্বরের অংশ হিসাবে গণ্য করো না। কীভাবে আমি ক্রুদ্ধ না হয়ে পারি? কীভাবে আমি আবার করুণাময় হতে পারি? অবাধ্যতার এই সন্তানদের আমি শুধু আমার ক্রোধের মাধ্যমে জবাব দিতে পারি। তোমরা এতই ধৃষ্ট যে তোমরা আদৌ আমাকে জানো না! তোমরা মনে করো যে আমি ভুল করেছি! আমি কি ভুল করতে পারি? অবতাররূপ ধারণের জন্য আমি কি অসতর্কভাবে যেকোনো পার্থিব দেহকে বেছে নেব? আমার মানবতা ও আমার দেবত্ব দুটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ যারা একত্রে সম্পূর্ণ স্বয়ং ঈশ্বরকে গড়ে তোলে! এবার তোমাদের এ বিষয়ে পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়া উচিত! আমার বাক্যগুলি ইতিমধ্যেই তাদের শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছে গেছে, এবং আমার বাক্যগুলিকে আরো বিশদে আর ব্যাখ্যা করা যাবে না!