অধ্যায় ৭

আমাদের চারপাশে গড়ে ওঠা পরিবেশ আমাদের আত্মার পশ্চাদপসরণকে ত্বরান্বিত করে। পবিত্র আত্মা চিন্তিত হল কিনা, সেই বিষয়টাকে এড়িয়ে গিয়ে মনকে শক্ত করে কোনও কাজ করবে না। চালাকি করার চেষ্টা করবে না। আত্মতুষ্টি ও আত্মতৃপ্তিতে ভুগবে না বা তোমার কষ্টগুলোকে বেশি বড় করে দেখবে না। শুধুমাত্র একটাই কাজ করতে হবে। তা হল, কায়মনোবাক্যে ঈশ্বরের এবং সত্যের সাধনা করে যাওয়া। তুমি ঈশ্বরের বাক্যগুলোকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে না বা সেই বাক্যগুলোকে এক কান দিয়ে শুনে আর এক কান দিয়ে বের করে দিতে পারবে না। তোমাকে খুব যত্ন নিয়ে সেই বাক্যগুলোর প্রকৃত অর্থ বুঝতে হবে, তোমার প্রার্থনার বাণীগুলোকে বারে-বারে আওড়াতে হবে, সেগুলোর প্রতিটি শব্দের মধ্যে থাকা জীবনকে উপলব্ধি করতে হবে। তোমাকে এগুলো আত্মস্থ করার জন্য সময় দিতে হবে। তা না-করে সেগুলোকে শুধু গড়গড় করে পড়ে মিছে সময় নষ্ট কোরো না। তোমার প্রত্যেক কাজে ঈশ্বরের বাক্যের উপর তুমি আস্থা রাখো কি? শিশুর মতো অহংকার করে কথা বোলো না। তারপর যখন সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, তখন সব গোলমাল পাকিয়ে দিও না। প্রতিটি দিনের প্রতিটি ঘণ্টায় তোমার আত্মাকে তোমায় সক্রিয় রাখতেই হবে। এক মুহূর্তের জন্যও আয়েস করলে চলবে না। তোমার আত্মাকে তীক্ষ্ণ হতে হবে। তুমি যে-কোনও ব্যক্তি বা ঘটনা বা জিনিসের মুখেই পড়ো না কেন, ঈশ্বরের মুখোমুখি হলেই তুমি একটা পথ পেয়ে যাবে। রোজ তোমাকে ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করতে হবে। একটুও অমনোযোগী না-হয়ে সেই বাক্যগুলোর প্রকৃত অর্থ তোমাকে বুঝতে হবে। তোমাকে আরও বেশি করে সচেষ্ট হতে হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সব কাজ তোমাকে খুব ভালো করে করতে হবে। সম্পূর্ণ সত্যকে তোমায় নিজের আয়ুধ করে নিতে হবে; যাতে ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্পর্কে তোমার কোনও ভুল ধারণা না-হয়। তোমার নিজের অভিজ্ঞতার পরিসরকে বাড়াতে হবে এবং ঈশ্বরের বাক্যকে উপলব্ধি করার উপর জোর দিতে হবে। অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই তুমি ঈশ্বর সম্পর্কে আরও বেশি করে নিশ্চিত হতে পারবে। অভিজ্ঞতা ছাড়া ঈশ্বরের অস্তিত্বকে নিশ্চিত বলে দাবি করাটা ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের ধ্যান-ধারণাগুলো স্পষ্ট হতে হবে! জাগো! আর শুয়ে-বসে থেকো না। উন্নতির লক্ষ্যে সচেষ্ট না-হয়ে বিশৃঙ্খল কাজ করে যাওয়া মানে তুমি সত্যিই একেবারে অন্ধ। তোমাকে পবিত্র আত্মার কাজের উপর মনোযোগ দিতেই হবে, পবিত্র আত্মার কণ্ঠকে মন দিয়ে শুনতে হবে, ঈশ্বরের বাক্যগুলোকে শোনার জন্য কান খোলা রাখো। তোমার কাছে যেটুকু সময় পড়ে রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগাও। যা মূল্য পরিশোধ করতে হয়, তা করো। তোমার কাছে যদি ইস্পাত থাকে, তাহলে সেটাকে জায়গা বুঝে কাজে লাগাও। সেটা দিয়ে একটা ধারালো তরোয়াল তৈরি করো। যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সেটাকে আয়ত্ত করো। ঈশ্বরের বাক্যকে কাজে প্রতিফলিত করার উপর জোর দাও। তুমি যদি ঈশ্বরের বাক্যকে সঙ্গে না-নিয়ে চলো, তাহলে বাইরে তুমি যত ভালো কাজই করো না-কেন, তার কোনও মূল্য থাকবে না। শুধুই মুখেন মারিতং জগৎ করলে, ঈশ্বর সেটাকে মেনে নেন না। তোমার আচরণ, স্বভাব, বিশ্বাস, সাহস, ও অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমেই পরিবর্তন আসবে।

সময় ঘনিয়ে এসেছে! পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল জিনিসকেও ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। কোনও সমস্যা ও বিপদই আমাদের আর রুখতে পারবে না, আমাদের ভয় দেখাতে পারবে না। এমনকি যদি আকাশও মাথায় ভেঙে পড়ে, তা-ও নয়। এই রকম দৃঢ় সংকল্প না-থাকলে তোমার পক্ষে একজন সার্থক মানুষ হয়ে ওঠাটা এক কথায় খুব কঠিন হবে। যাদের চিত্ত খুব দুর্বল, যারা কাপুরুষের মতো জীবনকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়, তারা ঈশ্বরের মুখোমুখি দাঁড়াবার উপযুক্ত নয়।

সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন একজন বাস্তববাদী ঈশ্বর। আমরা যতই অজ্ঞ হয়ে থাকি না কেন, তিনি আমাদের দেখে করুণা করবেনই, তিনি নিজের হাত দিয়ে আমাদের অবশ্যই রক্ষা করবেন, তিনি আমাদের পরিপূর্ণ করে তুলবেন-ই তুলবেন। আমরা যত দিন মন থেকে ঈশ্বরকে সত্যি-সত্যিই চাইব, আমরা যত দিন ভাল করে তাঁর বাক্যগুলো মেনে চলব এবং উৎসাহ হারিয়ে ফেলব না, যত দিন পর্যন্ত আমরা তাঁকে আকুল ভাবে চাইব, তত দিন তিনি আমাদের সবাইকে অতি অবশ্যই সমান চোখে দেখবেন। আমাদের মধ্যে যে-জিনিসের অভাব থাকবে, তা তিনি নিশ্চিত ভাবে পূরণ করবেন। তিনি আমাদের সবাইকে সন্তুষ্ট করবেন। এ সবই হল সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দয়া।

কেউ যদি পেটুক ও অলস হয়, কেউ যদি নিজের আখের গুছিয়ে জীবন কাটাতে থাকে, এবং অন্য সমস্ত কিছুর ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকে, তাহলে তাকে কিছু না-কিছু হারাতেই হবে। এটাকে সে এড়াতে পারবে না। সমস্ত জিনিস ও ঘটনার উপর আছে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আধিপত্য! আমরা যদি সর্বদা মনে-প্রাণে তাঁকেই খুঁজতে থাকি, তাঁর সঙ্গে একাত্ম অনুভব করি এবং তাঁর সাথে সহকারিতা করি, তাহলে আমরা যা খুঁজছি তা তিনি আমাদের সামনে তুলে ধরবেনই, তিনি অবশ্যই নিজেকে আমাদের সামনে প্রকাশ করবেনই। তখন আমাদের মন আনন্দ ও শান্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতায় ধীর-স্থির হয়ে উঠবে। তাঁর বাক্য মেনে কাজ করতে পারাটা খুবই দরকার। শুধুমাত্র তাঁর ইচ্ছাকে উপলব্ধি করতে পারলেই এবং তাঁর বাক্যের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে পারলেই তাকে প্রকৃত অভিজ্ঞতা বলে বিবেচনা করা হয়।

আমরা যদি ঈশ্বরের বাক্য বুঝতে পারি, বাক্যের মধ্যে থাকা তাঁর ইচ্ছাকে উপলব্ধি করতে পারি, তবেই ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতা আমাদের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে এবং তা আমাদের জীবন হয়ে উঠবে। বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া তুমি কেমন করে ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতায় প্রবেশ করবে? ঈশ্বরের বাক্যকে তোমরা নিজের জীবনে গ্রহণ করতে না-পারলে, তোমার স্বভাব কখনোই পাল্টাবে না।

পবিত্র আত্মার কাজ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে! তুমি যদি সেটাকে ভালো মতো অনুসরণ না-করো, এবং প্রশিক্ষণ না-নাও, তাহলে পবিত্র আত্মা যে-গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলাটা তোমার পক্ষে খুব কঠিন হয়ে যাবে। একেবারে সমস্ত কিছুকে আমূল বদলে ফেলার কাজটা তাড়াতাড়ি করে ফেলো। পাছে শয়তানের পায়ের তলায় তোমাকে যাতে পিষে যেতে না-হয়। আগুন ও নরকাগ্নির জ্বালানির পুকুরে তোমাকে যাতে গিয়ে পড়তে না-হয়। সেখানে পড়লে পালাবার আর পথ থাকবে না। এখনই এগিয়ে যাও, এবং পারলে ঈশ্বরকে খোঁজো, যাতে তোমাকে পিছনে পড়ে থাকতে না হয়।

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৬

পরবর্তী: অধ্যায় ৮

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন