অধ্যায় ৩৬

সর্বশক্তিমান প্রকৃত ঈশ্বর, সিংহাসনে আসীন রাজা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তথা সমস্ত জাতি ও সব মানুষকে শাসন করেন এবং এই স্বর্গের নীচে যা কিছু আছে সবই ঈশ্বরের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়। এই ব্রহ্মাণ্ড এবং এই পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী দেখতে পাবে। এই পর্বতমালা, নদনদী, সরোবর, ভূখণ্ড, মহাসাগর এবং সমস্ত জীবকুল প্রকৃত ঈশ্বরের মুখমণ্ডলের আভায় নিজেদের অবগুণ্ঠণ সরিয়ে উদ্ভাসিত হয়েছে। স্বপ্ন থেকে জেগে ওঠার মতো তারা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, ঠিক যেমন করে শক্ত মাটি ভেদ করে অঙ্কুর গজিয়ে ওঠে!

আহা! একমাত্র ঈশ্বরই জগতের সামনে আবির্ভূত হন। কার সাধ্য তাঁকে বাধা দেয়? ভয়ে সবাই কেঁপে ওঠে। সবাই সর্বতোভাবে নিঃসংশয়, সবাই বারংবার তাঁর ক্ষমা ভিক্ষা করে যায়। সবাই তাঁর সামনে নতজানু হয়ে তাঁর বন্দনাগান গায়। মহাদেশ, মহাসাগর, পর্বতমালা, নদনদী সব তাঁরই মহিমাকীর্তন করে নিরন্তর! মৃদুমন্দ বাতাস নিয়ে বসন্ত আসে। সঙ্গে নিয়ে আসে বাসন্তী বারিধারা। সমস্ত মানু্ষের মতো জলস্রোতও আনন্দ আর বিষাদ নিয়ে প্রবাহিত হয়। নিজের ঋণ স্মরণ করে ও আত্ম-সমালোচনায় দগ্ধ হয়ে সে অশ্রুমোচন করে। নদী, সরোবর, জলের প্রতিটি তরঙ্গ প্রকৃত ঈশ্বরের পবিত্র নাম গান করে, তাঁর গুণকীর্তন করে! এই বন্দনাধ্বনি অসাধারণ স্বচ্ছ ও নির্মল! পুরোনো যা কিছু এক সময় শয়তানের হাতে ভ্রষ্ট হয়েছিল সবই নতুন করে জেগে উঠবে এবং সব কিছু পরিবর্তিত হয়ে সম্পূর্ণ এক নতুন জগতে প্রবেশ করবে…

এই সেই পবিত্র ভেরী। এবং এর নিনাদ শুরু হয়েছে! কান পেতে শোনো। মধুর এই ধ্বনি! এই ধ্বনি হল সমস্ত জাতি, সমস্ত মানুষের কাছে রাজাধিরাজের বার্তা, চরমমুহূর্ত সমাগত। আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা সমাপ্ত। এই পৃথিবীতে প্রকাশ্যে আমার রাজ্য শুরু হল। আগে যা ছিল জাগতিক রাজ্য তা এখন থেকে আমার রাজ্য আমিই ঈশ্বর। আমার সিংহাসন থেকে সাতটি ভেরীর ধ্বনি ছড়িয়ে পড়বে এবং অত্যাশ্চর্য সব ঘটনা ঘটবে! পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তের মানুষ হিমানী-সম্প্রপাতের বেগে এবং বজ্রবিদ্যুতের শক্তি নিয়ে ছুটে আসবে। কেউ আসবে সমুদ্রপথ বেয়ে জলযানে, কেউ আবার আসবে বিমানে চড়ে। কেউ আসবে নানান আকার-আকৃতির যানে চড়ে। আবার কেউ আসবে ঘোড়ার পিঠে। ভালো করে চেয়ে দেখো। কান পেতে শোনো। সবরকম রঙের এই ঘোড়াগুলির আরোহীদের চৈতন্য জেগে উঠেছে। তারা সাহসী, তারা শক্তিমান যেন। মৃত্যুকে অগ্রাহ্য করে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটছে। ঘোড়ার হ্রেষাধ্বনি আর একমাত্র ঈশ্বরের জন্য মানুষের ক্রন্দনধ্বনির মাঝে কত নারী, পুরুষ, শিশু মুহূর্তের মধ্যে ঘোড়ার ক্ষুরের নীচে নিষ্পেষিত হয়ে যাবে। কেউ মৃত্যুবরণ করবে, কেউ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে, কেউ ক্ষতবিক্ষত হবে, তাদের শুশ্রুষা করার কেউ থাকবে না। তীব্র যন্ত্রণায় তারা আর্তনাদ করবে। বিদ্রোহের পুত্রগণ! এটাই কি তোমাদের শেষ পরিণতি নয়?

পরমানন্দে আমার সন্তানদের দিকে আমি তাকাই যারা আমার কথা শুনতে পায় এবং সমস্ত দেশ, সমস্ত ভূখণ্ড থেকে তারা একত্রিত হয়। একমাত্র ঈশ্বর যাদের মুখে বিরাজ করেন তারাই ঈশ্বরের বন্দনাগান গায় এবং পরমানন্দে সীমাহীন উল্লম্ফনে মেতে ওঠে। জগতের কাছে তারা প্রকৃত ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করে যা প্রবল জলোচ্ছ্বাসের মতো শোনায়। সমস্ত মানুষ এসে আমার রাজ্যে ভিড় জমাবে।

ঘুমে যারা অচেতন আমার সাতটি ভেরীর আওয়াজ তাদের জাগিয়ে তুলবে। তাড়াতাড়ি ওঠো, এখনও খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি! নিজের জীবনের দিকে তাকাও। চোখ খুলে তাকিয়ে দেখো এখন সময় কী হয়েছে। এখন আর খোঁজাখুঁজির কী আছে? চিন্তা করার কী আছে? আর আঁকড়ে ধরে রাখার মতো কীই-বা আছে? আমার জীবন লাভ করা আর নিজেদের আঁকড়ে ধরে রাখা সমস্ত ভালোবাসার ধন লাভ করার মধ্যে যে মূল্যগত পার্থক্য র‍য়েছে তা কি বিবেচনা করে দেখেছ? কোনটা তোমাদের কাছে বেশি মূল্যবান? আর অবাধ্যতা কোরো না, বিলাসে গা ভাসিয়ে দিও না। এই সুযোগ হাতছাড়া কোরো না। এই সময় আর ফিরে আসবে না। সোজা হয়ে দাঁড়াও। নিজেদের আত্মাকে জাগিয়ে তোলো। যেভাবেই হোক না কেন শয়তানের সমস্ত চক্রান্ত ও কারসাজিকে ধরে ফেল এবং সেগুলোকে ব্যর্থ করে দিয়ে শয়তানের বিরুদ্ধে জয়ী হও, যাতে তোমাদের জীবনের অভিজ্ঞতা প্রগাঢ় হয় এবং আমার স্বভাব অনুসারে তোমরা চলতে পারো; যাতে তোমাদের জীবন আরো পরিণত ও পোক্ত হয় এবং তোমরা সারা জীবন আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারো। দুর্বল নয়, নির্ভয় হও। রাস্তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামনের দিকে তাকিয়ে এক পা এক পা করে সোজা এগিয়ে যাও!

আবার যেদিন সাতটি ভেরী বেজে উঠবে, সেদিন হবে বিচারের ডাক—বিদ্রোহের পুত্রদের বিচার, সমস্ত জাতির ও সমস্ত মানুষের বিচার। প্রতিটি জাতি সেদিন ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সমর্পণ করবে। ঈশ্বরের দীপ্ত মুখ সমস্ত জাতি ও সমস্ত মানুষের কাছে উদ্ভাসিত হবে। সকলে সেদিন পুরোপুরি নিঃসংশয় হবে এবং তারা প্রকৃত ঈশ্বরের কাছে নিরন্তর প্রার্থনা করবে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আরো মহিমান্বিত হবেন এবং আমি ও আমার পুত্ররা এই মহিমার সমান ভাগীদার হব, রাজত্বেও আমরা সমান অংশীদার হব এবং সমস্ত জাতি ও সমস্ত মানুষের বিচার করব, দুষ্টের দমন করব, আর, যারা আমার আপন তাদের রক্ষা করব, তাদের ওপর করুণাধারা বর্ষণ করব এবং এই রাজ্যকে আরো শক্তিশালী ও মজবুত করব। এই সাতটি ভেরী বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বহু মানুষ রক্ষা পাবে, তারা কাছে ফিরে এসে নতজানু হবে এবং চিরকাল আমার বন্দনা গাইবে!

এই সাতটি ভেরী আবার যেদিন বেজে উঠবে সেদিনই এই যুগের সমাপ্তি ঘটবে। এই ভেরীর ধ্বনি দুষ্ট শয়তানের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা করবে এবং পৃথিবীর বুকে সর্বসমক্ষে এক নতুন জীবনের সূচনা করবে! এই ভেরীনিনাদ এই সিংহাসনের চারপাশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই নিনাদ স্বর্গ ও মর্ত্যকে আলোড়িত করে তু্লেছে। এটাই আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার জয় যা শয়তানের বিচার। শাস্তি হিসাবে পুরোনো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আবার সেই অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে! এই ভেরী নিনাদের অর্থ হল অনুগ্রহের দরজাটা এবার বন্ধ হয়ে যাবে। পৃথিবীতে এই রাজ্যের নতুন অধ্যায় শুরু হবে এবং সেটা হওয়াই সঠিক ও সমূচিত। যারা তাঁকে ভালোবাসে ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেন। তাঁর রাজ্যে এরা যখন ফিরে যাবে তখন পৃথিবীর মানুষের ওপর নেমে আসবে দুর্ভিক্ষ, মহামারী। ঈশ্বরের সাতটি পাত্র ও সাতটি দুর্দশা পরপর নেমে আসবে। স্বর্গ ও মর্ত্যের বিলয় ঘটবে কিন্তু আমার বাণীর কোনো বিনাশ নেই!

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৩৫

পরবর্তী: অধ্যায় ৩৭

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন